কুড়িগ্রাম
কুড়িগ্রামে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে মাছ ব্যবসায়ী নিহত
কুড়িগ্রামের ভুরুঙ্গামারীতে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে এক মাছ ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন। সোমবার সকালে উপজেলার দক্ষিণ ধলডাঙ্গা গ্রামের এই ঘটনা ঘটে।
নিহত আবু সাঈদ (৫০) একই গ্রামের মুনছের আলীর ছেলে।
আরও পড়ুন: লাইনে সংস্কারের সময় বিদ্যুৎস্পৃষ্টে লাইনম্যানের মৃত্যু
শিলখুড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান (আসাদ) জানান, সোমবার সকালের দিকে ঘরে টিভির লাইন চেক করতে গিয়ে অসাবধানতাবশত সকেটের ভেতরে হাতের নখ ঢুকে পড়লে তিনি বিদ্যুতায়িত হন। পরে তার স্ত্রীর চিৎকারে বাড়ির লোকজন এসে আবু সাঈদকে উদ্ধার করে ভুরুঙ্গামারী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
আরও পড়ুন: কুড়িগ্রামে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে স্কুলছাত্র নিহত
ভুরুঙ্গামারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলমগীর হোসেন বলেন, ঘটনাটি আমি শুনেছি। ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে।
আটকের ৮ ঘণ্টা পর বাংলাদেশিকে ফেরত দিল বিএসএফ
কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী উপজেলার মইদাম সীমান্তে শূন্য রেখা থেকে এক বাংলাদেশিকে আটকের আট ঘণ্টা পর পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে ফেরত দিয়েছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী (বিএসএফ)। পরে তাকে আইন অনুযায়ী থানা পুলিশের নিকট সোপর্দ করা হয়।
আটক কামাল হোসেন শেখ (৩৮) উপজেলার পাথরডুবি ইউনিয়নের দক্ষিণ বাঁশজানি গ্রামের আবুল হোসেনের ছেলে।
বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ময়দান বিওপি ক্যাম্পের বরাত দিয়ে উপজেলার পাথরডুবি ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুস সবুর বলেন, গত শনিবার বিকালে আন্তর্জাতিক মেইন পিলার নং ৯৭৭ এর সাব পিলার ৭ এসের পাশ থেকে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ কোচবিহার জেলার দিনহাটা থানার ১২৯ বিএসএফ দিঘলটারী ক্যাম্পের বিএসএফ সদস্যরা কামাল হোসেন নামে এক বাংলাদেশিকে ধরে নিয়ে যায়।
পরে বিএসএফ'র হেফাজতে থাকা বাংলাদেশিকে ফেরত আনার জন্য বিজিবির পক্ষ থেকে বিএসএফকে চিঠি পাঠানো হয়। ওইদিন দিবাগত রাতেই বিজিবি-বিএসএফ পর্যায়ে আন্তর্জাতিক মেইন পিলার ৯৭৫/৮ এস ও ৭৮/১২ এর স্থানে পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে আটক কামাল হোসেনকে বিজিবির কাছে হস্তান্তর করে বিএসএফ। রাত সাড়ে ১২ টার দিকে বিজিবি সদস্যরা কামাল হোসেনকে ভূরুঙ্গামারী থানায় সোপর্দ করে।
ভূরুঙ্গামারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলমগীর হোসেন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, অবৈধভাবে ভারত যাওয়ায় তার বিরুদ্ধে বাংলাদেশ পার্সপোর্ট আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে। রবিবার দুপুরে কামাল হোসেনকে কুড়িগ্রাম কোর্টে প্রেরণ করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: জাফলংয়ে গুলিতে নিহত যুবকের লাশ হস্তান্তর করলো বিএসএফ
পাটগ্রাম সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি আহত
কুড়িগ্রামে ট্রাকচাপায় চালকের সহকারি নিহত
কুড়িগ্রাম পৌরশহরে ট্রাকচাপায় অপর একটি দাঁড়িয়ে থাকা ট্রাকের হেলপার আলম মিয়া (৫০) নিহত হয়েছেন। গুরুতর আহত হয়েছেন আরও একজন। শনিবার ভোর ৫টার দিকে শহরের জিয়া বাজার এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
স্থানীয়রা জানান, চিলমারী থেকে নাগেশ্বরী-গামী একটি ট্রাক কুড়িগ্রাম জিয়া বাজার এলাকায় পৌঁছালে সেখানে দাঁড়িয়ে থাকা অন্য একটি ট্রাকের পাশে থাকা আলম মিয়াকে ধাক্কা দিলে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। ঘাতক ট্রাকটির চালকও গুরুতর আহত হয়েছেন। তাকে কুড়িগ্রাম সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এবং তারা পুলিশ হেফাজতে রয়েছেন।
এদিকে খবর পেয়ে কুড়িগ্রাম ফায়ার সার্ভিস ও সদর থানা পুলিশ উদ্ধার কাজ চালাচ্ছেন।
সদর থানার ডিউটি অফিসার নাজমুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, ঘটনাস্থলে পুলিশ রয়েছে। ঘাতক ট্রাকটিকেও আটক করা হয়েছে। বিস্তারিত পরে জানানো হবো।
আরও পড়ুন: কুড়িগ্রামে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে স্কুলছাত্র নিহত
কুড়িগ্রামে ছুরিকাঘাতে যুবক নিহত!
৫ ভারতীয় নাগরিক ফের কুড়িগ্রাম কারাগারে
বাংলাদেশে অবৈধভাবে অনুপ্রবেশের দায়ে সাজাপ্রাপ্ত ভারতীয় ৫ নাগরিককে দেশে পাঠানোর উদ্যোগ বাতিল হয়ে গেছে। ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ রাষ্ট্রীয় কাগজপত্র না পাওয়ার কথা জানিয়ে তাদেরকে নিতে অপারগতা প্রকাশ করে।
মঙ্গলবার দুপুর আড়াইটার সময় পাঁচ ভারতীয় নাগরিককে লালমনিরহাট জেলার বুড়িমারী স্থলবন্দর থেকে পুনরায় কুড়িগ্রাম কারাগারে স্থানান্তর করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন কুড়িগ্রামের জেল সুপার মো. ইসমাইল হোসেন।
কুড়িগ্রামের পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট এস.এম আব্রাহাম লিংকন জানান, মাদক বহন ও পাসপোর্ট ছাড়াই অবৈধভাবে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের দায়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সাত ভারতীয় নাগরিককে আটক করে মামলা দিয়ে আদালতে সোপর্দ করে। দীর্ঘ কারাভোগের পর সাজার মেয়াদ শেষ হলেও আসামি হস্তান্তরের জটিলতায় এদের কেউ কেউ ছয়মাস থেকে একবছর ধরে বিনা বিচারে কারাগারে ছিলেন।
আরও পড়ুন: কুড়িগ্রাম: অবৈধ অনুপ্রবেশের দায়ে ৫ ভারতীয়কে দেশে ফেরত পাঠানোর উদ্যোগ
মঙ্গলবার (৩১ মে) সকালে কুড়িগ্রাম জেলা কারাগার কর্তৃপক্ষ পাঁচ ভারতীয় নাগরিককে পার্শ্ববর্তী লালমনিরহাট জেলার বুড়িমারী স্থলবন্দর চেকপোস্ট দিয়ে বিএসএফ’র কাছে হস্তান্তরের উদ্যোগ নেয়। তবে কাগজপত্রের জটিলতার কারণে তাদেরকে চেকপোস্ট থেকে আবারও কুড়িগ্রাম কারাগারে নেয়া হয়েছে।
এর ফলে এই ৫ নাগরিক ছাড়াও আরও ২ ভারতীয় নাগরিককে এখন সাজাভোগের পর বিনা অপরাধে কারাগারে সাজাভোগ করতে হবে।
বুড়িমারী চেকপোস্ট থেকে ফেরত প্রদানকারী ৫ ভারতীয় নাগরিক হলেন, কুচবিহার জেলার আলম মিয়া, আসামের ধুবরী জেলার মো. নুরুজ্জামান, দক্ষিণ মাইনকারচর জেলার সেলিম মিয়া, জাহাঙ্গীর আলম ও মাহা আলম শেখ।
আরও পড়ুন: ভারত থেকে অনুপ্রবেশকালে ঝিনাইদহে আটক ১০
কুড়িগ্রামে বৃষ্টিতে ৪শ’ হেক্টর কৃষি জমির ক্ষতি
কুড়িগ্রামে বৃষ্টিতে ৪১২ হেক্টর জমির ক্ষতি হয়েছে। ক্ষয়ক্ষতি টাকার অংকে কয়েক কোটি টাকা ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে।
কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপপরিচালক কৃষিবিদ আব্দুর রশীদ জানিয়েছেন, আমরা প্রাথমিকভাবে ক্ষয়ক্ষতির তথ্য হাতে পেয়েছি। যার ষাট ভাগ পুরোটাই নষ্ট হয়ে যেতে পারে। যা পরবর্তীতে আমরা টাকার অংকে বের করতে পারবো।
এদিকে কুড়িগ্রামের রাজারহাট আবহাওয়া কৃষি পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের সহকারি পরিচালক মো. আব্দুর সবুর জানিয়েছেন, জলবায়ু পরিবর্তন ও পূবালী বায়ু চাপের কারণে গত কয়েক বছরের তুলনায় এপ্রিল ও মে মাসে সর্বাধিক ৯৯০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। যা জুন মাস পর্যন্ত স্থায়ী থাকবে। চলতি বছরের এপ্রিল মাসে মোট বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে ৪৭২ মিলিমিটার। এছাড়াও মে মাসে সোমবার (২৩ মে) পর্যন্ত বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে ৫১৮ মিলিমিটার। অধিক বৃষ্টিপাতের কারণে জেলার নীচু জমিতে লাগানো বোরো ধান ও বিভিন্ন ধরনের শাকসবজির ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হয়।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের পরিসংখানে জানা যায়, গত দুই মাসে টানা বৃষ্টিপাতের কারণে ৪১২ হেক্টর ফসলাদি পানিতে নিমজ্জিত হয়। এরমধ্যে বোরো ধান ২৬৫ হেক্টর, পাট ৯৫ হেক্টর, চিনা ২০ হেক্টর, শাকসবজি ১২ হেক্টর, তিল ১০ হেক্টর, কাউন ৫ হেক্টর এবং রাধুনী হর্স ৫ হেক্টর।
আরও পড়ুন: সুনামগঞ্জে কমছে বন্যার পানি, বাড়ছে দুর্ভোগ
কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার রামখানা ইউনিয়নের নাখারজান এলাকার শিয়ালকান্দা গ্রামের অবস্থাপন্ন কৃষক সুমন জানান, রোদ না ওঠার ফলে আমার ঘরে রক্ষিত প্রায় ৩০মন ধানে পচন ধরেছে। পাইকাররা এসে ধান দেখে না কিনেই চলে যাচ্ছেন। ৬০০ টাকাতেও তারা ধান কিনতে চাইছেন না।
সদর উপজেলার বেলগাছা ইউনিয়নের কালিরভিটা গ্রামের কৃষক জিতেন জানান, বৃষ্টি এবার কৃষকদের সর্বনাশ করেছে। আমার জীবনে এমন অসময়ে বৃষ্টি আর দেখিনি। একটু বৃষ্টি থামলেই শুকনো উঠোন নিয়ে লংকাকাণ্ড বেঁধে যায় গৃহিণীদের মধ্যে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপপরিচালক কৃষিবিদ আব্দুর রশীদ জানান, এখন পর্যন্ত ৮৩ ভাগ বোরো ধান কর্তন করা হয়েছে। রোদ না থাকায় কৃষকদের একটু সমস্যা হচ্ছে। এছাড়া উৎপাদন আশানুরূপ হয়েছে।
আরও পড়ুন: সিলেটে বন্যা: গ্যাস, বিদ্যুৎ ও বিশুদ্ধ পানির সংকটে নগরবাসী
নদীর পানি কমায় সিলেটে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি
রৌমারীতে মা ও ৫ মাসের শিশুকে গলা কেটে হত্যা
কুড়িগ্রামের রৌমারীতে মা ও তার পাঁচ মাসের শিশুকে গলা কেটে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। শুক্রবার রাত ৮টার দিকে উপজেলার সদর ইউনিয়নের নতুন বন্দর গ্রামে এই ঘটনা ঘটে।
নিহত শিশু হাবিব (৫ মাস) উপজেলার শৌলমারী ইউনিয়নের ওকড়া কান্দা গ্রামের সাহেব আলীর ছেলে। আর নিহত মা হাফসা আক্তার হারেছা (২০) সাহেব আলীর স্ত্রী এবং উপজেলার সদর ইউনিয়নের নতুনবন্দর গ্রামের আব্দুর রশিদের মেয়ে।
স্থানীয় ও রৌমারী থানা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, নতুনবন্দর এলাকার একটি পুকুরের পাড়ে এক শিশুর লাশ ও পুকুরে একটি নারীর লাশ দেখতে পায় পথচারীরা। পরে তারা রৌমারী থানায় খবর দিলে পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার করে এসময় মায়ের শ্বাস-প্রশ্বাস চলছিল বুঝতে পেয়ে তাকে দ্রুত রৌমারী হাসপাতালে নিয়ে আসে। পরে রৌমারী হাসপাতালের চিকিৎসক তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেন। ময়মনসিংহ হাসপাতালে নেয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।
আরও পড়ুন: কুড়িগ্রামে ছুরিকাঘাতে যুবক নিহত!
হাফসার বাবা আব্দুর রশিদ বলেন, আমার মেয়ে হাফসা আক্তার হারেছার সঙ্গে একই উপজেলার শৌলমারী ইউনিয়নের বাহাদুরের ছেলে সাহেব আলীর সঙ্গে দেড় বছর হল বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে তাদের মধ্যে দাম্পত্য কলহ চলে আসছিল। এর মধ্যে গত পাঁচ মাস আগে তাদের ঘরে একটি ছেলে সন্তান জন্ম নেয়। তার সন্তান আমার বাড়িতেই হয়েছে। এর মধ্যে মেয়ের জামাই তার সন্তানের খোঁজ পর্যন্ত নেয়নি। ছেলেটি অসুস্থ্য হলে গতকাল সকাল ৮টার নৌকায় তার উকিল বাবার সঙ্গে কুড়িগ্রামের যায় ডাক্তার দেখাতে। এরপর সকালে তাদের লাশ পড়ে ছিল আমাদের বাড়িতে আসার পথের একটি পুকুর পাড়ে-এই বলতেই তিনি আবেগে অজ্ঞান হয়ে পড়েন।
রৌমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোন্তাছের বিল্লাহ বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে নিহত শিশুর লাশ ও গলাকাটা অবস্থায় তার মাকে উদ্ধার করা হয়েছে। মাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ময়মনসিংহ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু পথে তিনি মারা যান। দুজনের লাশ আগামীকাল কুড়িগ্রাম হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হবে। মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
আরও পড়ুন: কুড়িগ্রামে হত্যা মামলায় ৮ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
কুড়িগ্রামে তিস্তার ভাঙনে নদীগর্ভে বিলীন হচ্ছে বাড়ি-ঘর
কুড়িগ্রামের উলিপুরে তিস্তা নদীর তীব্র ভাঙন শুরু হয়েছে। গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে ভাঙনে দলদলিয়া ইউনিয়নের অর্জুন ও লালমসজিদ এলাকার প্রায় ১০টি বাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।
এছাড়া গত দুই মাসের ব্যবধানে আরও অর্ধশতাধিক পরিবারের বাড়িঘর নদী গর্ভে চলে গেছে। নিঃস্ব এসব পরিবারের মানুষজন উঁচু বাঁধের রাস্তায় আশ্রয় নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন।
সরেজমিন উপজেলার দলদলিয়া ইউনিয়নের গ্রাম দুটিতে গিয়ে দেখা যায়, ভাঙনের শিকার পরিবারগুলোর সহায় সম্বল চোখের নিমিষেই নদী গর্ভে চলে যাচ্ছে।
ক্ষতিগ্রস্ত এসব পরিবারের অভিযোগ পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) কর্মকর্তাদের সঙ্গে বারবার যোগাযোগ করা হলেও ভাঙন রোধে কোনো উদ্যোগ নেয়া হয়নি। ফলে আমাদের সব কিছু তিস্তা নদী গর্ভে চলে যাচ্ছে।
ভুরুঙ্গামারীতে কালবৈশাখীর তান্ডবে দুই শতাধিক বসতবাড়ি লন্ডভন্ড
কুড়িগ্রামের ভুরুঙ্গামারীর পাঁচটি ইউনিয়নের কিছু এলাকায় কালবৈশাখী ঝড়ে দুই শতাধিক বসতবাড়ি, গাছপালা ও বোরো ধান খেতের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া গেছে। এতে হতাহতের কোন খবর পাওয়া যায়নি।
বুধবার (১৮ মে) ভোর চারটার দিকে ভুরুঙ্গামারী সদর, পাইকেরছড়া, চর ভুরুঙ্গামারী, শিলখুড়িসহ বঙ্গসোনাহাট ইউনিয়নের বেশ কিছু এলাকায় হঠাৎ বৃষ্টির সঙ্গে কালবৈশাখী ঝড় ও বজ্রপাত শুরু হয়। যা প্রায় ঘন্টাব্যাপী চলমান থাকে। এতে কালবৈশাখী তান্ডবে দুই শতাধিক বসতবাড়ি, গাছপালা, বোরো ধান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
স্থানীয় সাংবাদিক মেসবাহুল জানান, ভোররাতে হঠাৎ তার পাইকেরছড়া গ্রামে কালবৈশাখী ঝড় ও বজ্রপাত শুরু হয়। ঝড়ে তার গ্রামের রব্বানী, আমিনুল ও জলিলের বসত ঘর ভেঙে পড়াসহ বেশ কিছু বসতবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
এছাড়াও এলাকার কয়েকটি স্থানে গাছ বৈদ্যুতিক তারের ওপর উপড়ে পড়া ও বৈদ্যুতিক সিড়ি পরে যাওয়া বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। এতে করে দুর্ভোগে রয়েছেন কালবৈশাখী ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো বলেও তিনি জানান।
পাইকেরছড়া ইউনিয়ন পরিষদের ১নং ওয়ার্ড সদস্য আবু সাহাদাত মো. বজলুর রহমান বলেন, ভোররাত চারটার দিকে শুরু হওয়া কালবৈশাখী ঝড়ে আমার ওয়ার্ডের ২০-২৫টি পরিবারের বসতবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অনেক স্থানে গাছপালা উপড়ে পড়েছে। এবং ঝড় ও বৃষ্টিতে অন্তত ১শ’ একর জমির পাকা ও আধাপাকা বোরো ধান খেত হেলে পড়াসহ পানিতে তলিয়ে গেছে। ঝড়ে আমার বসতবাড়ির দুটি ঘরসহ গাছপালা ভেঙে পড়েছে। সেগুলো মেরামতে কাজ করছি আমি, যোগ করেন তিনি।
আরও পড়ুন: কুড়িগ্রামে ঝড়ে গাছচাপায় নারীর মৃত্যু
কুড়িগ্রামে তিন দিনের বৃষ্টিতে জলমগ্ন পাকা ধান বিনষ্টের আশঙ্কা
গত তিনদিনের বৃষ্টিতে কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার আটটি ইউনিয়নে জলমগ্ন হয়ে পড়েছে শত শত বিঘা আধাপাকা বোরো ধান। এসব ইউনিয়নের নদী অববাহিকায় এবং মরাখাল সংলগ্ন এলাকার জলমগ্ন থাকা পাকা ধানগুলোর অর্ধেকটা এখন চিটা হয়ে গেছে। বিপাকে পরে বাধ্য হয়েই সেই আধাপাকা ধান কেটে নিয়ে যাচ্ছে কৃষক।
কুড়িগ্রাম সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. জাকির হোসেন জানান, চলতি মৌসুমে জেলায় এক লাখ ১৬ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়েছে। এরমধ্যে সদর উপজেলায় টার্গেট অর্জিত হয়েছে ১৩ হাজার ১২০ হেক্টর জমিতে। ইতোমধ্যে সদরে ২৫ ভাগ ধান কর্তন করা হয়েছে। বাকী ধানগুলো এখনও জমিতে পড়ে রয়েছে। এসব ধান নিয়ে চিন্তিত রয়েছে কৃষক। গত তিনদিন অফিস বন্ধ থাকায় এখন পর্যন্ত কৃষি বিভাগের কাছে বোরোধান জলমগ্ন হওয়ার কোন পরিসংখ্যান নেই।
আরও পড়ুন: ধানের ন্যায্যমূল্য পাচ্ছে না কিশোরগঞ্জের হাওরের ধানচাষিরা
স্ত্রীর সঙ্গে অভিমান করে কুড়িগ্রামে যুবকের ‘আত্মহত্যা’
কুড়িগ্রামের ভুরুঙ্গামারীতে স্ত্রীর সঙ্গে অভিমান করে এক যুবক বিষপানে আত্মহত্যা করেছেন বলে খবর পাওয়া গেছে। মঙ্গলবার রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
নিহত ফরিদ মিয়া (২৯) উপজেলার সদর ইউনিয়নের পূর্ব বাগভান্ডার গ্রামের আশরাফ আলীর ছেলে।
পরিবার সূত্রে জানা গেছে, অভাবের সংসারে স্ত্রী ববিতা বেগমের সঙ্গে প্রায় বিভিন্ন বিষয়ে ঝগড়া লাগতো ফরিদ মিয়ার। গত ঈদের দু’দিন আগে স্ত্রীর সঙ্গে ঝগড়ার সূত্রে অভিমান করে বাড়ি থেকে ঢাকা চলে যান ফরিদ।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে গলায় ফাঁস দিয়ে কলেজছাত্রীর ‘আত্মহত্যা’
সোমবার দুপুরে সে ঢাকা থেকে বাড়িতে যায়। বিকালে পুনরায় স্ত্রীর সঙ্গে কেনা কাটা নিয়ে ঝগড়া লাগে। এক পর্যায়ে রাত সাড়ে ৯টার দিকে ঘরের দরজা বন্ধ করে ঘরে থাকা ইদুর মারার দুটি বড়ি ও এক বোতল কিটনাশক পান করে। পরে স্থানীয়রা তাকে মুমুর্ষূ অবস্থায় উদ্ধার করে ভুরুঙ্গামারী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিয়ে যায়। সেখানে অবস্থার অবনিত হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে কুড়িগ্রাম সদর হাসপাতালে পাঠান।
সেখানেও অবস্থার অবনতি হলে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। মঙ্গলবার ভোর সাড়ে ৪টার দিকে তার মৃত্যু হয়।
ভুরুঙ্গামারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলমগীর হোসেন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে।
আরও পড়ুন: রৌমারীতে পুলিশ কনস্টেবলের ‘আত্মহত্যা’