কুড়িগ্রাম
কুড়িগ্রামে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ, কৃষিতে ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা
কুড়িগ্রামে গত দু’দিন ধরে চলছে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ। এর ফলে জনজীবনে দেখা দিয়েছে ভোগান্তি। শনিবারও সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। জেলা জুড়ে তাপমাত্রা ৮ ডিগ্রির নীচে অবস্থান করায় কৃষিতে ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কাকরছে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ। এদিকে তীব্র শীতের কারণে কুড়িগ্রাম হাসপাতালে বাড়ছে শীতজনিত রোগীর সংখ্যা।
কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. পুলক কুমার সরকার জানান, শনিবার হাসপাতালে ২৯৬জন রোগী ভর্তি আছে। এর মধ্যে শিশু ওয়ার্ডে ৪৮ জন এবং ডায়রিয়া আইসোলেশনে ৩৯ জন। শীতজনিত কারণে শিশুরা যাতে সমস্যায় না পরে এজন্য গরম কাপড়ে ঢেকে রাখতে পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। এছাড়াও তাদের পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। সুষম খাবার দিতে হবে। ডায়রিয়া হলে খাবার স্যালাইন অব্যাহত রাখতে হবে। রোগ নিয়ন্ত্রণের বাইরে গেলে নিকটস্থ হাসপাতালে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
এদিকে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপপরিচালক মো. আব্দুর রশীদ জানান, তাপমাত্রা ৮ ডিগ্রির নীচে অবস্থান করলে কৃষিতে কিছুটা ক্ষয়ক্ষতি হবে। আলুতে লেট ব্লাইডের আক্রমণ হতে পারে। এছাড়াও বোরা বীজতলা লালচে হয়ে ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারে। কৃষকরা ইতোমধ্যে ১০ হাজার হেক্টর জমির উপরে প্লান্টেশন শুরু করেছে।
তিনি বলেন, আমরা ক্ষয়ক্ষতি কমাতে আলুর ক্ষেত্রে ছত্রাক নাশক স্প্রে করার কম্পোজিশন কৃষকদের মাঠ পর্যায়ে জানিয়ে দিচ্ছি। এছাড়াও আমাদের কর্মকর্তারা মাঠ পর্যায়ে তদারকি করছে। আগামী ৩১ জানুয়ারি জেলার বিভিন্ন জায়গায় ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন থাকায় আমাদের লোকবল সেখানে সম্পৃক্ত থাকায় এখন পর্যন্ত ক্ষয়ক্ষতির তথ্য হাতে আসেনি। চলতি বছর জেলায় ৬ হাজার ৮৮৫ হেক্টর বোরো বীজতলা ও ৭ হাজার ২৪০ হেক্টর জমিতে আলু আবাদ করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: শৈত্যপ্রবাহ অব্যাহত থাকবে পারে: আবহাওয়া অধিদপ্তর
রৌমারীতে ভারতীয় নাগরিক আটক
কুড়িগ্রামের রৌমারীতে সীমান্তে পাষান আলী (৩২) নামে একজন ভারতীয় নাগরিককে আটক করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ বিজিবি-৩৫ ব্যাটালিয়ন। শনিবার, ২৯ জানুয়ারি সকাল ৯ টার দিকে উপজেলার দাঁতভাঙ্গা ইউনিয়নের ডিগ্রিরচর ১০৫২ এর ৬ সাব পিলার দিয়ে আন্তর্জাতিক সীমানা লংঘন করে বাংলাদেশে অবৈধভাবে প্রবেশ করায় তাকে আটক করা হয়।
আটক পাষান আলী ভারতের আসাম রাজ্যের ধুবরী জেলার সুখচর থানার কুয়াডাঙ্গা গ্রামের মৃত ছাত্তার আলীর ছেলে।
দাঁতভাঙ্গা বিজিবি ক্যাম্পের সুবেদার খালেদুর রহমান জানান, পাষান আলী নদী পথে অবৈধভাবে ভারত থেকে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে প্রবেশ করেন গত শুক্রবার দিবাগত রাতে। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সীমান্তে টহলরত হাবিলদার ফরহাদ হোসেনের নেতৃত্বে বিজিবির সদস্যরা তাকে আটক করেন। আটক ব্যক্তি চোরাচালান ব্যবসার সঙ্গে জড়িত বলেও জানান। তাকে রৌমারী থানায় সোপর্দ করেছে বিজিবি।
রৌমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোন্তাছের বিল্লাহ্ বলেন, ভারতীয় নাগরিক পাষান আলীর বিরুদ্ধে অনুপ্রবেশের দায়ে মামলা হয়েছে। তাকে রবিবার কুড়িগ্রাম জেল হাজতে পাঠানো হবে।
আরও পড়ুন: আবাসিক হোটেলে অসামাজিক কার্যকলাপ, ৭ নারীসহ আটক ১৫
উখিয়ায় রোহিঙ্গা যুবক আটক, ৫ লাখ ইয়াবা জব্দ
মানিকগঞ্জে জামিনে এসে খুন হলেন যুবক, আটক ১
সংযোগ সড়ক না থাকায় কাজে আসছে না ৩১ লাখ টাকার সেতু
কুড়িগ্রাম সদরের মোগলবাসা ইউনিয়নের ৩১ লাখ ৫০ হাজার টাকা ব্যয়ে সিতাইঝাড় সেতুটি নির্মিত হয়। কিন্তু দুই পাড়ের সংযোগ সড়ক না থাকায় গত চার বছর ধরে সেতুটি অকেজো হয়ে পড়ে আছে। সংযোগ সড়কের অভাবে তিন ইউনিয়নের শত শত মানুষ সেতু দিয়ে চলাচল করতে না পারায় আক্ষেপ প্রকাশ করেছেন অনেকে।
আরও পড়ুন: ইঁদুরের গর্তে দু-মুঠো খেয়ে বাঁচার স্বপ্ন!
প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস সূত্র জানায়, কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার মোগলবাসা ইউনিয়নের সিতাইঝাড় গ্রামের হাদের গোয়ালের বাড়ির পেছনে ত্রাণ ও পুর্নবাসন কেন্দ্রের অর্থায়নে ৩১ লাখ ৫০ হাজার টাকা ব্যায়ে নির্মিত এই সেতুটি। সেতুর কাজ শেষ হওয়ার আগেই বন্যার পানিতে দুই পাড়ের সংযোগ সড়ক বিছিন্ন হয়ে যায়।
এবার ইউপি নির্বাচনে আব্দুল হাই মাস্টার
জনগণের সেবক হওয়ার অদম্য ইচ্ছে নিয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান, জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর এবার ইউপি নির্বাচনে দাঁড়িয়ে বেশ আলোচনার জন্ম দিয়েছেন আব্দুল হাই মাস্টার। তিনি কুড়িগ্রামের চর ভূরুঙ্গামারী উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক।
আগামী ৩১ জানুয়ারি ষষ্ঠ ধাপে আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী সদর ইউনিয়ন, পাথরডুবি ও শিলখুড়ি ইউনিয়নে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ভুরুঙ্গামারী সদর ইউনিয়নে মোটরসাইকেল মার্কা নিয়ে এবার স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন আব্দুল হাই মাস্টার।
এর আগে আব্দুল হাই মাস্টার উপজেলার সোনাহাট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ছিলেন। তারপর ২০০৯ সালে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে উপজেলা চেয়ারম্যান হিসেবে নির্বাচিত হন। পরে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাকের পার্টির ব্যানারে ভূরুঙ্গামারী নাগেশ্বরী তিন আসনে নির্বাচন করে পরাজিত হন। সেই থেকে প্রতিটি নির্বাচনে হারলেও অংশ গ্রহণ করতে পিছপা হননি আব্দুল হাই মাস্টার।
আরও পড়ুন: কুড়িগ্রাম সদর থানার এসআই এর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা
এবারেও তিনি চেয়ারম্যান পদে ইউপি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তবে তার নির্বাচনী প্রচার প্রচারণা ও অনান্যদের চেয়ে ভিন্ন রকম।
এই নির্বাচনে তার কোনো কর্মী নেই, নেই কোন শোডাউন। নেই কোন মিটিং মিছিল। প্রার্থী নিজেই মাউথপিস হাতে নিয়ে অটোরিকশায় করে তার মোটরসাইকেল মার্কায় ভোট চেয়ে বেড়াচ্ছেন।
কুড়িগ্রাম সদর থানার এসআই এর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা
কুড়িগ্রাম সদর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আব্দুল জলিলের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। রবিবার দুপুরে পঞ্চগড় নারী শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতের বিচারক মো. মেহেদী হাসান তালুকদার এই গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।
আরও পড়ুন: ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা
আদালত সূত্রে জানা গেছে, জেলা শহরের রৌশনাবাগ এলাকার আসমা প্রধান নামে এক নারী ২০২০ সালের ৩০ এপ্রিল জমি সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে পঞ্চগড় সদর থানায় একটি ডায়েরি করেন। সেই ডায়েরি তদন্ত করতে গিয়ে পঞ্চগড় সদর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আব্দুল জলিল বিধবা ওই নারীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন। এরপর তিনি ভুয়া কাবিন নামার বলে শারিরীক সম্পর্ক গড়ে তোলেন। একসময় বিয়ের কাবিননামা চাইতে গেলে জলিল বিয়ের কথা অস্বীকার করেন। বাধ্য হয়ে ভূক্তভোগী ওই নারী ২০২০ সালের ৬ অক্টোবর পঞ্চগড় নারী শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতে ২০০০ সালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা করেন। আদালত মামলাটি তদন্তের জন্য অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে দায়িত্ব দেন। গত ২০ জানুয়ারি অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। রবিবার (২৩ জানুয়ারি) আদালত মামলাটি আমলে নেন এবং ওই উপপরিদর্শকের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।
ভুক্তভোগী আসমা প্রধান জানান, পুলিশের উপপরিদর্শক আব্দুল জলিল ভুয়া কাবিননামা করে আমার সঙ্গে শারিরীক সম্পর্ক গড়ে তোলে। আর কোন নারী যেন সেবা নিতে গিয়ে নির্যাতন বা ধর্ষণের শিকার না হয় এজন্য তিনি তার শাস্তি দাবি করেন।
মামলায় বাদী পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মেহেদী হাসান মিলন পুলিশের উপপরিদর্শক আব্দুল জলিলের বিরুদ্ধে পঞ্চগড় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের আদালত গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন বলে নিশ্চিত করেছেন।
আরও পড়ুন: আবরারের মৃত্যু: প্রথম আলোর সম্পাদকসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা
পঞ্চগড় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট আজিজার রহমান আজু জানান, প্রাপ্ত অনুসন্ধান প্রতিবেদনের ভিত্তিতে আদালতের বিচারক মামলাটি আমলে নিয়ে তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।
উল্লেখ্য, পুলিশের উপপরিদর্শক আব্দুল জলিল একসময় পঞ্চগড় সদর থানায় কর্মরত ছিলেন। বর্তমানে তিনি কুড়িগ্রাম সদর থানায় উপপরিদর্শক হিসেবে কর্মরত রয়েছেন।
বাঁশের সাঁকোই ৩০ হাজার মানুষের ভরসা
কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার নাওডাঙ্গা ইউনিয়নের বারো মাসিয়া নদীর ওপর নড়োবড়ো বাঁশের সাঁকোয় ছয়টি গ্রামের ৩০ হাজার মানুষের চলাচলের একমাত্র ভরসা। প্রায় ৪০ বছর ধরে তারা এভাবে নদী পারাপার করে আসছে। জনপ্রতিনিধিরা সেতু নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দিলেও বাস্তবায়ন না হওয়ায় স্থানীয়রা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
জানা গেছে, ফুলবাড়ী উপজেলার নাওডাঙ্গা ইউনিয়নের বারো মাসিয়া নদীর ওপর নড়বড়ে বাঁশের সাঁকোটি নিজেদের উদ্যোগে তৈরি করেছে গ্রামের মানুষ।
আরও পড়ুন: বাগেরহাটে এবার মিলল সাড়ে ছয়শ’ বছর আগের তৈজসপত্র!
সাঁকোর পশ্চিম পাড়ে রয়েছে পশ্চিম কান্তাপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ঝাউকুটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, চর গোরুকমন্ডপ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়,ফয়জুল উলুম মাদরাসা, গোরুকমন্ডপ কমিউনিটি ক্লিনিক। পূর্ব পাশে রয়েছে পশ্চিম ফুলমতি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বালাহাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, নাওডাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বালার হাট আর্দশ স্কুল অ্যান্ড কলেজ, নাওডাঙ্গা স্কুল অ্যান্ড কলেজ ও পশ্চিম ফুলমতি উচ্চ বিদ্যালয় ও কমিউনিটি ক্লিনিক। নদীর দুপাশে গ্রামগুলোর যোগাযোগের সংযোগস্থল হওয়ায় এ সাঁকো দিয়ে হাজারও মানুষ প্রতিদিন যাতায়াত করেন। এতে হরহামেশাই দুর্ঘটনা ঘটে।
রোগী থাকলে দুর্ভোগের মাত্রা বেড়ে যায় কয়েকগুণ। অবহেলিত এ অঞ্চলের মানুষদেরকে ভোটের সময় জন প্রতিনিধিরা সেতু নির্মাণের আশ্বাস দিয়ে আসলেও তা বাস্তবায়ন করেনি। এমন অভিযোগ দু’পারে মানুষের। ফলে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে কান্তাপাড়া, ঝাউকুটি চরগোরুক, পশ্চিম ফুলমতি, জামাকুটি ,কলাবাগা গ্রামের অধিবাসীরা। মানুষগুলোর ভাগ্য পরিবর্তন সম্ভাবনা থাকলেও প্রধান বাধা এ বারো মাসিয়া ইন্দুর ঘাটের বাশেঁ সাঁকো। নিজের চাহিদায়মতে চাঁদা সংগ্রহ করে বাঁশের সাকোঁটি তৈরি করা হয়েছে।
নাওডাঙ্গা স্কুল অ্যান্ড কলেজ দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী নুর মোহাম্মদ আলী বলে, ‘এই সাঁকো দিয়ে চলাচল করতে আমাদের খুব কষ্ট হয়। একবার পা পিচলে পড়ে আহত হয়েছি। এখানে একটা ব্রিজ হলে ভালোই হতো।’
আরও পড়ুন: লাল বাঁধাকপি চাষ: বদলে দিয়েছে কৃষক বেলালের ভাগ্য
পশ্চিম ফুলমতি গ্রামের মীর হোসেন বলেন, ‘একটি সেতুর অভাবে ৪০ বছর ধরে জীবনের সঙ্গে যুদ্ধ করে বেঁচে আছি। সুস্থ মানুষ সাঁকো দিয়ে চলাচল করতে গিয়ে প্রায়ই দুর্ঘটনায় পড়ছেন, অসুস্থদের অবস্থা বলার মতো নয়। বেশি সমস্যা হয় প্রসূতিদের নিয়ে। জন প্রতিনিধিরা কথা দিয়ে ভোট নেন। ভোট পার হলে তারা আর খোঁজ রাখেন না।’
রৌমারীতে নদী থেকে অজ্ঞাত ব্যক্তির লাশ উদ্ধার
কুড়িগ্রামের রৌমারীর সোনাভরি নদী থেকে অজ্ঞাত এক ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার বিকেলে উপজেলার ইউনিয়নের উত্তর বন্দরের গ্রামে ওই নদী থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়।
নিহত ওই ব্যক্তি বাকপ্রতিবন্ধী ছিল বলে জানায় স্থানীয়রা।
আরও পড়ুন: নীলফামারীতে বৃদ্ধের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার
পুলিশ ও এলাকাবাসী জানায়, নিহত ওই ব্যক্তির বয়স আনুমানিক ৪৫ বছর। সে বাকপ্রতিবন্ধী এবং ১০ বছর আগে রৌমারীতে এসে ভারটেক্স স্কুলের বারান্দায় বসবাস শুরু করে। তার পরিচয় কেউ জানে না। মঙ্গলবার বিকেলে উত্তর বন্দবের এলাকায় সোনাভরি নদীতে তার লাশ ভাসতে দেখে স্থানীয়রা। পরে পুলিশে খবর দিলে পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার করে।
আরও পড়ুন: শার্শায় খাল থেকে ইজিবাইক চালকের লাশ উদ্ধার
রৌমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তদন্ত আবু সাইদ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, খবর পেয়ে লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। তবে কি কারণে এ ঘটনা ঘটেছে তা তদন্ত চলছে।
ফেলানী হত্যার ১১ বছর: ন্যায় বিচারের প্রতীক্ষায় পরিবার
কুড়িগ্রাম সীমান্তে কিশোরী ফেলানী হত্যার ১১ বছরেও ন্যায় বিচার পায়নি তার পরিবার। ২০১১ সালের ৭ জানুয়ারি ভোরে জেলার ফুলবাড়ী উপজেলার অনন্তপুর সীমান্ত দিয়ে বাবা নুর ইসলামের সাথে ভারত থেকে বাংলাদেশে ফিরছিলেন ফেলানী। এসময় মই বেয়ে কাঁটাতার পেরোনোর সময় ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) সদস্য অমিয় ঘোষের গুলিতে নিহত হয় ফেলানী। বাবা নুর ইসলাম প্রাণে বেঁচে গেলেও মেয়ে ফেলানীর মরদেহ দীর্ঘ সময় ঝুলে থাকে কাঁটাতারে।
পরে এ নিয়ে দেশ-বিদেশে সমালোচনার ঝড় উঠলে ২০১৩ সালের ১৩ আগস্ট ভারতে ১৮১ বিএসএফ ব্যাটালিয়নের সদর দফতরে স্থাপিত জেনারেল সিকিউরিটি ফোর্স আদালতে ফেলানী হত্যার বিচার শুরু হয়। ওই বছরের ৬ সেপ্টেম্বর অভিযুক্ত বিএসএফ সদস্যকে নির্দোষ ঘোষণা করে রায় দেয় নিজ বাহিনীর আদালত।
ফেলানীর বাবা-মা রায় প্রত্যাখ্যান করলে ২০১৪ সালের ২২ সেপ্টেম্বর পুনর্বিচার কার্যক্রম শুরু করে ভারত। পরের বছর ২ জুলাই অভিযুক্তকে আবারও নির্দোষ ঘোষণা করে রায় দেয়া হয়।
এরপর ফেলানী হত্যার ন্যায় বিচারের আশায় ভারতের সুপ্রিম কোর্টে যৌথভাবে রিট আবেদন করেন ফেলানীর বাবা ও মানবাধিকার সংগঠন সুরক্ষা মঞ্চ। পরবর্তীতে ২০১৫ সালে প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে গঠিত পূর্ণাঙ্গ ব্রেঞ্চ রিট আবেদনটি গ্রহণ করলেও একাধিকবার শুনানির তারিখ পরিবর্তন হওয়ায় এখনও ন্যায় বিচার পায়নি ফেলানীর পরিবার।
ফেলানীর মা জাহানারা বেগম বলেন, মেয়ে হত্যার বিচার চেয়ে মানবাধিকার সংস্থাসহ অনেকের কাছে আমারা গিয়েছি, কিন্তু ১১ বছরেও ন্যায় বিচার পেলাম না।
আরও পড়ুন: সীমান্ত হত্যার প্রতিবাদে ফেলানীর বাড়িতে আলোকচিত্র প্রদর্শনী
বাবা নুর ইসলাম বলেন, দুই দুই বার কুচবিহারে গিয়ে সাক্ষ্য দিয়েছি। বিএসএফ সদস্য অমিয় ঘোষের নৃশংসতার বর্ননা দিয়েছি। তারপরও ন্যায্য বিচার পাইনি। তবে ভারতের সুপ্রীম কোর্টে ন্যায় বিচার পাওয়ার আশা ছাড়িনি।
ফেলানী হত্যাকাণ্ডে পিতা নুর ইসরামের আইন সহায়তাকারী কুড়িগ্রাম পাবলিক প্রসিকিউটর এস এম আব্রাহাম লিংকন জানান, একাধিকবার তারিখ বদলের পর ২০১৮ সালের ২৮ আগস্ট শুনানির তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছিল। ভারতরে সুপ্রিম র্কোটের বিচারপতি এন ভি রামানা ও বিচারপতি মোহন এম সান্তনা গৌদ্ধারকে নিয়ে গঠিত দ্বৈত বেঞ্চে শুনানির জন্য আইটেম নম্বর-৩ হিসেবে তালিকাভুক্ত থাকলেও শেষ পর্যন্ত তা হয়নি। অথচ সুপ্রিম র্কোট থেকে বিবাদীকে শোকজ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে তারা শোকজের জবাব দিয়েছেন। কিন্তু পরর্বতীতে আর শুনানি অনুষ্ঠিত হয়নি। বর্তমানে কার্যতালিকা থেকে বাদ পড়ে আছে রিটটি। করোনার কারণে রিটটির সর্বশেষ অবস্থা জানেন না তিনি।
অ্যাডভোকেট আব্রাহাম লিংকন ন্যায্য বিচারের আশা ব্যক্ত করে বলেন, ‘জেনারেল সিকিউিরিটি ফোর্স কোর্টে বাদী ছিল বিএসএফ, আসামি ছিল বিএসএফ এবং বিচারকও ছিল বিএসএফ। ফলে ন্যায্য বিচার পাওয়া যায়নি। সুপ্রিম কোর্টে ন্যায্য বিচার পাওয়া যাবে। আর এই রিট নিস্পত্তি করতে সুপ্রিম কোর্ট যে পর্যবেক্ষণ দেবেন তাতে দু-দেশের সীমান্ত ব্যবস্থাপনায় ইতিবাচক প্রভাব রাখবে বলে প্রত্যাশা করছি।’
প্রসঙ্গত, ফেলানীর বাবা নুর ইসলাম পরিবার নিয়ে ভারতে থাকতেন এবং সেখানে ইট ভাটায় কাজ করতেন। কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরীর রামখানার কলোনীটারী গ্রামে মেয়ে ফেলানীর বিয়ে ঠিক হয়েঠিল। তাই মেয়েকে নিয়ে বাংলাদেশে ফিরতে ২০১১ সালরে ৬ জানুয়ারি মেয়েকে নিয়ে রওনা হন বাংলাদেশে। ৭ জানুয়ারি এ হত্যাকাণ্ড ঘটে।
আরও পড়ুন: শিবগঞ্জ সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি যুবক নিহতের অভিযোগ
প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী: হিলি সীমান্তে বিএসএফকে বিজিবি’র মিষ্টি উপহার
কুড়িগ্রামে শ্বশুরবাড়িতে এসে স্ত্রীকে হত্যার অভিযোগ
কুড়িগ্রামের ভুরুঙ্গামারীতে দাম্পত্য কলহের জেরে শ্বশুরবাড়িতে এসে ধারালো অস্ত্র দিয়ে স্ত্রীকে হত্যা করার অভিযোগ উঠেছে স্বামীর বিরুদ্ধে। সোমবার রাতে উপজেলার পাইকেরছড়া ইউনিয়নের পাইকেরছড়া গ্রামে এই ঘটনা ঘটে।
নিহত গৃহবধূ শাহিদা বেগম (৪০) একই গ্রামের শাহজাহান আলীর মেয়ে।
স্থানীয় ও নিহতের পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, শাহিদার সঙ্গে প্রায় ২৪ বছর পূর্বে একই গ্রামের মৃত আব্বাছ আলীর ছেলে আবুবকর সিদ্দিকের (৪৪) সাথে বিয়ে হয়। দাম্পত্য কলহের জেরে কিছু দিন আগে শাহিদা বেগম ছোট সন্তানকে নিয়ে বাবার বাড়িতে চলে আসে। সোমবার (৩ ডিসেম্বর) রাতে শাহিদার স্বামী আবুবকর সিদ্দিক শ্বশুরবাড়িতে আসে। রাত ৩টার দিকে শাহিদাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে গলা কেটে হত্যা করে পালিয়ে যায় আবুবকর। এ ঘটনায় তার ছোট মেয়ে ও মা আহত হয়েছে।
আরও পড়ুন: কুড়িগ্রামে ভাঙন কবলিত পরিবারদের পাশে প্রশাসন
সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আবু মো. বজলুর রহমান বলেন, সংবাদ পাওয়ার পর ঘটনাস্থলে এসে আহতদেরকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠাই এবং ভুরুঙ্গামারী থানা পুলিশকে খবর দেই।
ভুরুঙ্গামারী থানার উপপরিদর্শন (এসআই) আতাউর রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, খবর পেয়ে ভোর ৪টার দিকে নিহতের লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। নিহতের গলায় ধারালো অস্ত্রের আঘাতর চিহ্ন রয়েছে।
আরও পড়ুন: কুড়িগ্রামে ১৩০ টাকায় পুলিশের চাকরি পেলেন ৪৩ জন
কুড়িগ্রামে সব্যসাচী লেখক সৈয়দ হকের ৮৬তম জন্মদিন পালিত
সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হকের ৮৬তম জন্মদিন পালিত হয়েছে। সোমবার দিবসটি উপলক্ষে কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজ মাঠের পাশে কবির সমাধিতে জেলা প্রশাসনসহ বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন পুষ্পার্ঘ অর্পণ করে শ্রদ্ধা জানান।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রেজাউল করিম, কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ আব্দুল মান্নান, উপাধ্যক্ষ মির্জা নাসির উদ্দিন, পাবলিক প্রসিকিউটর আব্রাহাম লিংকন, সৈয়দ হকের সহধর্মিনী সৈয়দ আনোয়ারা হক এবং প্রেস ক্লাবের সভাপতি আহসান হাবিব নীলুসহ কবির পরিবারের সদস্যরা। এরপর এক সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভায় কবির সহধর্মিনী কবির সমাধিস্থলে দ্রুত স্মৃতি কমপ্লেক্স নির্মাণের দাবি জানান।
আরও পড়ুন: সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হককে হারানোর দিন আজ
সবশেষে কবির স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নিরবতা পালন করে বিশেষ দোয়া করা হয়।
দেশবরেণ্য এই কথা সাহিত্যিক ১৯৩৫ সালের ২৭ ডিসেম্বর কুড়িগ্রাম শহরে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ২০১৬ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর ঢাকার একটি হাসপাতালে মারা যান। মৃত্যুর পর কবির ইচ্ছানুযায়ী তাকে নিজ জেলা কুড়িগ্রামের সরকারি কলেজ মাঠের পাশে সমাহিত করা হয়।
আরও পড়ুন: জন্মদিনে লেখক শামসুল হককে স্মরণ
সঞ্জীব চৌধুরীর কবিতা সমগ্র ‘তোমাকেই বলে দেব’ প্রকাশিত