কুড়িগ্রাম
৫০ বছরেও সেতু নির্মাণ হয়নি, ভেঙে যাওয়া সাঁকোই শেষ ভরসা
কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে ভেঙে যাওয়া বাঁশের সাঁকোয় হামাগুড়ি দিয়ে ঝুঁকির মধ্যে পারাপার করছে মানুষ। প্রতিবছর স্থানীয় উদ্যোগে সাঁকোটি মেরামত করা হলেও সরকারিভাবে সেতু নির্মাণের উদ্যোগ না নেয়ায় বিপাকে রয়েছে ওই এলাকার হাজার হাজার মানুষ।
ঝুঁকিপূর্ণ সাঁকো দিয়ে পারাপার করতে প্রায়শই ঘটছে ছোটখাটো দুর্ঘটনা। স্থায়ীভাবে সাঁকো নির্মাণের দাবি জানিয়েছে এলাকাবাসী।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, জেলার ফুলবাড়ী উপজেলার নাওডাঙ্গা ইউনিয়নের শিমুলবাড়ী গ্রামে নবিউলের ঘাটে বারোমাসিয়া নদীর ওপর নির্মিত বাঁশের সাঁকোটি জরাজীর্ণ অবস্থার মধ্যে রয়েছে। চলতি বছরে বন্যার তীব্র স্রোতে সাঁকোর মাঝামাঝি জায়গায় কয়েকটি খুটি ভেঙে সাঁকোটি বেঁকে হেলে পরেছে। এরই উপর দিয়ে ঝুঁকির মধ্যে চলাচল করছে মানুষ। ভারি বস্তা বা সামগ্রী পারাপার করতে হিমশিম অবস্থা তাদের।
আরও পড়ুন: ধানক্ষেতের মাঝে ৪০ লাখ টাকার সেতু, ব্যবহার হয় ‘সেলফি’ তোলায়!
স্কুল-কলেজে যাওয়া শিক্ষার্থীরা সাইকেলকে লাঠি হিসেবে ব্যবহার করে সতর্কভাবে পারাপার করছে। ধান কাটার মৌসুমে বিপাকে পরে চাষিরা। এসময় নৌকা সংগ্রহ করে ধান,পাট,ভুট্টাসহ শাক-সবজি অতিরিক্ত পয়সা গুণে পার করতে হয়।
ঘটনাস্থল ঘুরে দেখা যায়, কুড়িগ্রাম জেলায় সরকারিভাবে ১৬টি নদ-নদীর কথা উল্লেখ থাকলেও বারোমাসিয়া নামে কোন নদীর কথা উল্লেখ নেই। স্থানীয় সংবাদকর্মী অনীল চন্দ্র সরকার জানান, বারোমাসিয়া বা বাণিদহ নদীটি ধরলা নদীর একটি উপশাখা নদী। যা সরাসরি ভারত থেকে প্রবেশ করে কুড়িগ্রামে মূল ধরলা নদীতে মিশে গেছে। ধরলা নদী এবং বারোমাসিয়া নদীর পানির রঙ সম্পূর্ণ আলাদা। ফলে বারোমাসিয়া নদীটি আলাদা বৈশিষ্ট্য বহন করছে। নদীটি ভারতের কুচবিহার জেলার দিনহাটা থানার সীমান্তবর্তী মরাকুটি গ্রাম দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে নাওডাঙ্গা ইউনিয়নের গোড়কমন্ডপ গ্রাম দিয়ে। স্থানীয়ভাবে এটিকে বাণিদহ বা বারোমাসিয়া নদী বলা হয়ে থাকে। এর দৈর্ঘ্য প্রায় ৫ কিলোমিটার। এই উপশাখা নদীর উপর দুটি বাঁশের সাঁকো রয়েছে। একটি গতমাসে নির্মাণ করা হলেও নবীউলের ঘাটের সাঁকোটি বন্যায় ভেঙ্গে পরায় শোচনীয় অবস্থা হয়েছে।
আরও পড়ুন: কুড়িগ্রামে সাঁকো ছাড়া অচল সেতু!
সাঁকো পারাপার করার সময় সাঁকোর ওপারের ঝাউকুটি গ্রামের স্কুল শিক্ষার্থী মমিনুল (১৪) ও আজমেরী (১৩) জানায়, তারা প্রতিদিন ভয়ে ভয়ে সাঁকোটি পার হয়। ভাঙা জায়গাটি পার হতে গিয়ে মনে হয় এই বুঝি সাঁকোটি ভেঙ্গে পরে যাবে।
মাথায় ধানের বস্তা নিয়ে পার হতে গিয়ে শাহাদত (৪৫) নামে এক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী বলেন, ‘ভারি জিনিস নিয়া বাঁশের হাঙ্গরাত যাওয়া আমার খুব কষ্ট হয়। একনা সাইকেল পার করা, ভার ধরি যাওয়া খুব কষ্ট হয়।’
এই গ্রামের কৃষক হামিদ মিয়া জানান, ‘ছয় বছর আগে এখানে একটা ঘাট ছিল। তখন আমরা নৌকা দিয়ে পারাপার করছি। তারপরে জনগণের কাছে বাঁশ কালেকশন করি আমরা একটা বাঁশের সাঁকো দিছি। এবার সাঁকোটি ভেঙে গেছে। এখন পারাপারে খুবই সমস্যা।’
আরও পড়ুন: আগামী জুনের মধ্যে পদ্মা সেতু উন্মুক্ত করে দেয়া হবে: সেতুমন্ত্রী
বালাহাট স্কুল এন্ড কলেজের সহকারি শিক্ষক ও মৎস ব্যবসায়ী আতাউর রহমান রতন জানান, স্কুল কলেজের ছাত্র-ছাত্রীসহ এই এলাকার উৎপাদিত পণ্য এই ব্রীজের ওপর খুব ঝুঁকি নিয়ে পার করতে হয়। সাঁকোটির দৈর্ঘ্য প্রায় ১২০ ফুট। প্রতিদিন প্রায় ১০ থেকে ১২ হাজার মানুষ পারাপার করে। প্রতিবছর আমরা নিজেদের উদ্যোগ সাঁকোটি পারাপারের উপযোগী করি। স্বাধীনতার ৫০ বছর পেরিয়ে গেলেও সরকারিভাবে কোন উদ্যোগ নেয়া হয়নি। আমরা এখানে একটি স্থায়ী সেতু চাই।
ফুলবাড়ী উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) সুমন দাস বলেন, ইতোমধ্যে জনদুর্ভোগ কমাতে দুটি জরাজীর্ণ সেতু আমরা ঠিক করার উদ্যোগ নিয়েছি। এছাড়াও এরকম কোন বিষয় আমাদের নজরে আসলে আমরা সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে ব্যবস্থা নেয়ার চেষ্টা করি। যাতে জনদুর্ভোগ কমিয়ে জনগণের কল্যাণ নিশ্চিত করা যায়।
উদ্ধারকৃত গন্ধগোকুল কুড়িগ্রাম বন বিভাগের কাছে হস্তান্তর
কুড়িগ্রাম পৌরসভার নিমবাগান এলাকা থেকে একটি বিলুপ্ত প্রজাতির গন্ধগোকুল উদ্ধার করা পর সেটি বন বিভাগের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
মঙ্গলবার দুপুরে পুলিশ সুপার সৈয়দা জান্নাত আরার উদ্যোগে উদ্ধারকৃত গন্ধগোকুলটিকে বন বিভাগের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মমিনুল ইসলামের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
আরও পড়ুন: বাগেরহাটে ২০ ফুট দীর্ঘ অজগর উদ্ধারের পর অবমুক্ত
এ ব্যাপারে বন কর্মকর্তা মো. মমিনুল ইসলাম জানান, উদ্ধারকৃত গন্ধগোকুলটিকে নিরাপদ কোন জঙ্গলে অবমুক্ত করা হবে। আবাসস্থল ও খাদ্য সংকটের কারণে গন্ধগোকুলসহ বিলুপ্ত প্রজাতির বন্য প্রাণি এখন মহাসংকটে রয়েছে।
এসময় বন কর্মকর্তার সাথে আরও উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মো. রুহুল আমিন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাহমুদুল হাসান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার উৎপল কুমার রায়, সদর থানার অফিসার ইনচার্জ কান মো. শাহরিয়ার, কুড়িগ্রাম প্রেসক্লাবের সভাপতি এডভোকেট আহসান হাবীব নীলু প্রমুখ।
আরও পড়ুন: হালদা নদীতে আরও একটি মৃত ডলফিন উদ্ধার
জানা গেছে, মঙ্গলবার দুপুরে শহরের নিমবাগান এলাকায় এক ব্যক্তিকে খাঁচায় করে গন্ধগোকুলটিকে নিয়ে যাওয়ার সময় ডিউটিরত অবস্থায় সদর থানা পুলিশের একটি টিম লোকটিকে চ্যালেঞ্জ করে। এসময় তিনি খাঁচা ফেলে পালিয়ে যায়। পরে পুলিশ সদস্যরা গন্ধগোকুলটিকে উদ্ধার করে সদর থানায় নিয়ে আসে। পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে গন্ধগোকুলটিকে বনবিভাগের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
বাল্যবিয়ে ঠেকিয়ে সাহসিকতা সম্মাননা পেল কুড়িগ্রামের ৭ কিশোরী
নিজেদের বাল্যবিয়ে ঠেকিয়ে সাহসিকতা সম্মাননা পেয়েছে কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরীর সাত কিশোরী। করোনাকালীন সময়ে নিজের বাল্যবিয়ে নিজেই ঠেকানোয় সাহসী এই সাত কিশোরীকে সম্মাননা দিয়েছে উপজেলা প্রশাসন।
সোমবার উপজেলা পরিষদ সভাকক্ষে জাতীয় যুব দিবসের একটি অনুষ্ঠানে মেয়ে শিশুদের সক্ষমতা বৃদ্ধিতে এ সম্মাননাসহ শিক্ষা উপকরণ, নগদ অর্থ ও মনীষীদের বই উপহার দেয়া হয়।
উপজেলা বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ কমিটির সদস্য জাকিয়া সুলতানা বুবলীর অর্থায়নে এবং সিডা ও প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের আর্থিক ও কারিগরী সহযোগিতায়, আরডিআরএস বাংলাদেশ বিল্ডিং বেটার ফিউচার ফর গার্লস (বিবিএফজি) প্রজেক্টের সার্বিক সহযোগিতা করে।
আরও পড়ুন: কুড়িগ্রামে নিজের বাল্যবিয়ে ঠেকিয়ে সংবর্ধনা পেলো মোনালিসা
সম্মানপ্রাপ্ত সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী জান্নাতী খাতুন, উপজেলার হাসনাবাদ ইউনিয়নের হাউসেরহাট গ্রামের আব্দুল আজিজের মেয়ে। বাবা পেশায় একজন কৃষি শ্রমিক। অল্প বয়সে বিয়ে করার মোটেও ইচ্ছে নেই তার।
স্বপ্ন উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে একজন আদর্শ শিক্ষক হওয়ার। কিন্তু দারিদ্রতা তাদের প্রতিকূল অবস্থানে থাকায় তার সে স্বপ্ন ভঙ্গের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। এক সময় বাবা মায়ের বাধ্যবাধকতায় বিয়েও ঠিক হয় তার। পাত্রপক্ষও সেজেগুজে চলে আসেন বিয়ের প্রস্তুতি নিয়ে। কিন্তু অনড় জান্নাতী। এত কম বয়সে কোনোমতেই বিয়ে করবে না সে। বিয়ের পিড়িতে বসে বধূ সেজে নিজেকে সাময়িক রঙিন করার থেকে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করে জীবনকে রঙিন করতে চায় এ কিশোরী।
এমন স্বপ্ন জান্নাতীসহ আরও ৬ কিশোরীর। তারাও ঠেকিয়েছে নিজের বাল্যবিয়ে। এদের কেউ দশম শ্রেণিতে কেউ নবম শ্রেণিতে, আবার কেউ দেবে এসএসসি পরীক্ষা। তবে কারোরই ইচ্ছে নেই বিয়ের পিঁড়িতে বসার। তাদের প্রত্যেকেই প্রতিষ্ঠত হতে চায় নিজ নিজ যোগ্যতায়।
আরও পড়ুন: বাগেরহাটে দেড় বছরে ৩১৭৮ জন শিক্ষার্থীর বাল্যবিয়ে
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নূর আহমেদ মাছুম, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান আমিনা বেগম, যুব উন্নয়ন অফিসার মনজুর আলম, বিবিএফজি প্রজেক্টের উপজেলা সমন্বয়কারী রবিউল ইসলাম প্রমুখ।
এ ব্যাপারে জাকিয়া সুলতানা বুবলী বলেন, যাতে কিশোরী মেয়েরা পরিবারে, সমাজে ও প্রতিষ্ঠানে সুরক্ষিত থেকে লেখাপড়া চালিয়ে যেতে পারে এবং নিজেদের জীবনকে প্রতিষ্ঠিত করতে উৎসাহী হয় সেদিকটা বিবেচনা করে তাদেরকে এ উপহার দেয়া হয়েছে।
কুড়িগ্রামে দাদার শেষকৃত্যের পরেই বিদ্যুৎস্পৃষ্টে নাতির মৃত্যু
কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলায় দাদার শেষকৃত্য শেষে সমাধিস্থলে বৈদ্যুতিক বাল্ব লাগানোর সময় অসাবধানতাবশত বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে।
রবিবার (৩১ অক্টোবর) রাতে উপজেলার বিদ্যানন্দ ইউনিয়নের বাণীরকুটি গ্রামে এ ঘটনা। নিহত যুবক রামকৃষ্ণ ঝিনুক (২০) বিদ্যানন্দ ইউনিয়নের বাণীরকুটি গ্রামের রঞ্জিত রায়ের ছেলে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রবিবার বিকেল থেকে শুরু হওয়া নিহত যুবকের দাদা হরেকান্ত রায়ের শেষকৃত্যের আনুষ্ঠানিকতা রাতে গিয়ে শেষ হয়।দাদার সমাধিস্থল আলোকিত করার জন্য রামকৃষ্ণ ঝিনুক বৈদ্যুতিক বাল্ব লাগানোর সময় সকেট সেটিং করতে গিয়ে অসাবধানতাবশত বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়লে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।
আরও পড়ুন: সিরাজগঞ্জে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে চাচি-ভাতিজার মৃত্যু
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে স্থানীয় ইউপি সদস্য খোরশেদ আলম বলেন, নিহত যুবকের দাদার শেষকৃত্য সম্পন্নের পরেই বৈদ্যুতিক বাল্ব লাগানোর সময় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে নাতি রামকৃষ্ণ ঝিনুক মারা গেছেন। আমি ঘটনাস্থলে রাত দুটো পর্যন্ত উপস্থিত ছিলাম।
রাজারহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাজু সরকার জানান, বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে এক যুবকের মৃত্যুর ঘটনায় থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে।
আরও পড়ুন: বগুড়ায় বিদ্যুৎস্পৃষ্টে চাচা-ভাতিজাসহ নিহত ৩
তিস্তা নদী ভাঙনে দিশেহারা কুড়িগ্রামের মানুষ
কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলার বিদ্যানন্দ ইউনিয়নের রামহরি গ্রামের অসুস্থ্ কৃষক সুবির উদ্দিন (৭০) চোখের পানি মুছতে মুছতে বললেন, ‘দুই দিনোত চাইর একর জমি তিস্তা গিলি খাইল বাহে। হামারগুলার বাড়ীঘর, জায়গাজমি সউগ শ্যাষ। হামরা এ্যালা কোটে যাই, কোটে থাকি। থাকপের কোন জায়গা নাই।’
তার বাড়ী লাগোয়া ছোট ভাই মহির উদ্দিনের ছেলে রহিমুদ্দি (৪৪) জানায়, ‘ওই যে পানি দেখছেন। ওই জায়গায় হামার দুই ভাই আর চাচার বাড়ি আছিল। বাড়ির পাশোত এক একর জমিত আলু লাগাইছিনু। নদীতে সব ধ্বংস। এখন হামরা নিঃস্ব হয়া গেইলং।’
এরকম সরব আর নিরব কান্না ভেসে বেড়াচ্ছে কুড়িগ্রামের তিস্তা নদী তীরবর্তী এলাকাকে ঘিরে। গত এক সপ্তাহে তিস্তা লন্ডভন্ড করে দিয়েছে এখানকার মানুষের জীবন-জীবিকা আর স্বপ্নকে।
আরও পড়ুন: স্বপ্নভঙ্গের বেদনায় তিস্তাপাড়ের কৃষকেরা
বৃহস্পতিবার সরজমিন এসব এলাকায় ঘুরে দেখা গেছে ভাঙনের তান্ডব লীলা। প্রচন্ড স্রোতের তোড়ে রামহরি গ্রামের বাড়ীঘর আর গ্রামের ফসলি জমির নদীতে বিলিন হয়ে যাচ্ছে।
এই গ্রামের আব্দুল করিমের ছেলে কৃষক আব্দুল জলিল (৫২) জানান, ‘৬ বিঘা জমিতে ধান লাগাইছি। আর ১০/১২দিন পর কাটা যাইতো। সেই আধাপাকা ধানের জমির অর্ধেকটা নদী ভাঙনে শ্যাষ হয়া গেল। এখন বাকী ধান গরুকে খাওয়ার জন্য কাটা লাগছে।’
রামহরি ভূঁইয়াটারী গ্রামে রাহেলা বেগম (২৬) এর বাড়ীর কাছেই এসেছে নদী। স্বামী মমিনুল আর দুই সন্তানকে নিয়ে ভীষণ দুশ্চিন্তায় রয়েছেন তারা। রাহেলা জানান, ‘এবার নিয়া চারবার বাড়ী ভাঙছে। আমরা কামলা খাটি জীবন চালাই। নজিমুদ্দি ভূঁইয়া আমাদের দুরবস্তা দেখি এখানে থাকপের দিছে। এখন বাড়ি ভাঙলে আমাদের থাকবার বা বাঁচার কোন পথ থাকপে না।’ তার সাথেই বাড়ী ঢাকার গার্মেন্টস কর্মী আমিনুল ইসলামের। তার স্ত্রী পারভীন (২৮) জানান, ‘এই জায়গাতে ১০ বছর ধরি আছি। এতদূরে নদী আসবে কল্পনাই করি নাই। এখন বাড়ী ভাঙতে হবে ভাবতেই বুকটা হু-হু করি উঠছে।’
সবচেয়ে বেশি ভাঙছে ঘরিয়ালডাঙ্গা ইউনিয়নের উজানে সরিষাবাড়ী আর গতিয়াসাম এলাকায়। এখানে প্রতিনিয়ত ভাঙছে তিস্তা নদী। গতিয়াসাম বগুড়া পাড়ায় দেড় থেকে দুইশ জন শ্রমিক কাজ করছে বাড়ী ভাঙ্গার কাজে। প্রতিটি বাড়ি থেকেই শোনা যাচ্ছে হাতুড়ির শব্দ। যত্নে লাগানো গাছগুলোও কাটছে কেউ কেউ। সড়ানো হচ্ছে আধাপাকা ঘরের ইট,বেড়া আর টিনের চাল। সবার চোখে মুখে হতাশা আর বোবা কান্না।
আরও পড়ুন: তিস্তায় মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নের চেষ্টা করছে সরকার: ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী
এই গ্রামে নদী ভাঙনের শিকার লালবানু (৫০) সাংবাদিক দেখে ক্ষোভ নিয়ে জানালেন, ‘তোমরাগুলা ছবি তুলি কি করবেন। হামরা মরি যাই, আর তোমরা ছবি তোলেন। হামার যে ক্ষতি হয়া গেইল। তা কি সরকার দিবে।’
কলেজ পড়ুয়া শাওন সরকার (২২) জানায়, এখানে মন্ত্রী আসে, এমপি আসে, জেলা প্রশাসক, ইউএনও স্যার আসে। শুধু দুঃখ প্রকাশ করে শেষ। কিন্তু কোন কাজ হয় না। আমরা এই মূহূর্তে নদী ভাঙন রোধে দ্রুত কাজ চাই।
স্ত্রীর সঙ্গে অভিমান করে ২৭ বছর পর বাড়ি ফিরলেন স্বামী!
স্ত্রীর সঙ্গে অভিমান করে কোলের শিশু সন্তানকে রেখে নিরুদ্দেশ হোন এক পিতা। এদিকে স্বামীর ফিরে আসার অপেক্ষায় একমাত্র সন্তানকে নিয়ে স্ত্রী কাটিয়ে দেন জীবনের ২৭টি বছর। অবশেষে প্রায় এক মাস আগে পরিবার-স্বজনদের নিকট ফিরে আসেন জহর উদ্দিন ওরফে বাচ্চু।
সিনেমার গল্পকেও হার মানানো বাস্তব চরিত্রের মানুষটি কুড়িগ্রামের সদরের পৌরসভার বাসিন্দা মৃত কান্দুরাম মাবুদের ছেলে জহির উদ্দিন ওরফে বাচ্চু (৬৫)। পেশায় কৃষক জহির উদ্দিন ১৯৯১ সালে পাশের কাঁঠালবাড়ি ইউনিয়নের আগমনী গ্রামের জাহেদা বেগমকে (৫০) বিয়ে করেন। বিয়ের পর থেকে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বনিবনা ছিল না।
বিয়ের পর ছয় মাসের শিশু সন্তান জাহিদুল ইসলামকে রেখে নিরুদ্দেশ হন জহির উদ্দিন। ফেরেন প্রায় তিন বছর পরে। এরপর আবারও সংসারে তুচ্ছ ঘটনায় অভিমান করে ১৯৯৪ সালে একেবারই নিরুদ্দেশ হন তিনি। পরিবারের লোকজন অনেক খোঁজাখুঁজির পরেও তার সন্ধান না পেয়ে হাল ছেড়ে দেন। দীর্ঘ ২৭ বছর পর হঠাৎ গত ৩০ সেপ্টেম্বর নিজ জন্মস্থানে ফিরে আসেন জহির উদ্দিন। এ সময় আবেগ আপ্লুত হয়ে পড়েন পরিবার ও প্রতিবেশিরা।
আরও পড়ুন: ভরণপোষণ না দেয়ায় সন্তানদের বিরুদ্ধে ৭৫ বছর বয়সী বৃদ্ধার মামলা
জহির উদ্দিন বলেন, স্ত্রীর সঙ্গে অভিমান করে মাত্র ৩৬ বছর বয়সে বাড়ি ছাড়েন। বাসে করে চলে যান যশোরের অভয়নগর উপজেলার সুন্দলী ইউনিয়নের গোবিন্দুপর গ্রামে। সেখানকার সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সঙ্গে মিলে মিশে কাটিয়েছেন জীবনের এই দীর্ঘ সময়। কেউ তার ঠিকানা না জানলেও তাকে বেশ ভালোবাসতেন। সবাই তাকে ‘বাচ্চু ভাই’ বলে ডাকতেন।
জহির উদ্দিনের ভাতিজা শফিকুল ইসলাম অশ্রুসিক্ত কণ্ঠে বলেন, আমার চাচা ফিরে আসবে আমরা কখনই ভাবতে পারিনি। অনেক খোঁজ করার পরেও না পেয়ে আশায় ছেড়ে দিয়েছি। কিন্তু আমার ফুফাতো বোন খবর পাঠায় চাচা ফেরত এসেছেন। পরে তাকে বাসায় এনে রাখার ব্যবস্থা করি। তার স্ত্রী-সন্তানকে খবর দিই। তারা এসে দেখে গেছেন। বর্তমানে বয়স বেড়ে যাওয়ায় চাচা একটু অসুস্থ রয়েছেন। তার একমাত্র সন্তান তার বাবাকে এতো দিন দেখেনি। কিছুদিন থাকার পর তার কর্মস্থল ঢাকাতে চলে গেছেন।
তিনি আরও বলেন, সুন্দলী ইউনিয়ন পরিষদের চৌকাদার শেখর এবং তার স্ত্রী সব থেকে কাছের ছিল চাচার। বয়স বেড়ে যাওয়ায় তাদের পরামর্শে গত মাসে ফেরত আসেন তিনি। চাচা সেখান থেকে আসতে না চাওয়ায় চেয়ারম্যান, সচিবসহ অনেকেই বুঝিয়েছেন যে, তুমি জন্মস্থানে গিয়ে দেখো পরিবারের কেউ না থাকলে তুমি সেখানকার একটু মাটি নিয়ে এসো। যেন তোমার মৃত্যুর পর তোমাকে সেই মাটি দিয়ে কবর দিতে পারে এখানকার মানুষ। এমন অনেক কথা বার্তা দিয়ে বুঝিয়ে চাচাকে ফেরত পাঠায় তারা। বর্তমানে চাচা আমার বাড়িতেই আছেন।
আরও পড়ুন: যশোরে জোড়া মাথার নবজাতকের জন্মের কয়েক ঘণ্টার পর মৃত্যু
জহির উদ্দিনের স্ত্রী জাহেদা বেগম বলেন, ২৭টি বছর ধরে একমাত্র সন্তানকে ভিক্ষা করে, মানুষের বাড়িতে কাজ করে বড় করেছেন। আর আশায় ছিলেন ছেলের বাবা ফিরে আসবেন। একমাত্র সন্তানের মুখের দিকে তাকিয়ে অন্য কোথাও বিয়েও করেননি তিনি।
সুন্দলী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বিকাশ রায় কপিল বলেন,তার মধ্যস্ততায় ২৬ অক্টোবর মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বাচ্চুকে তার পরিবারের কাছে হন্তান্তর করা হয়।
ইউপি চেয়ারম্যান বলেন, ইউনিয়নের প্রতিটি মানুষ তাকে ভালোবাসতেন। গাছের প্রতি তার ভালোবাসা ছিল। অনেক গাছ সে লাগিয়েছে। তার ব্যবহার ভালো ছিল। মুসলিম হলেও তিনি প্রতিটি হিন্দু মানুষ মারা গেলে সৎকারে অংশ নিতেন। ইউনিয়নে কারও বাড়ি ভালো রান্না হলে তাকে দাওয়াত দেয়া হতো। এক কথায় সবার সঙ্গে তার সুসস্পর্ক ছিল। তার পরিবারের লোকের কাছে তাকে ফেরত পাঠাতে পেরে একদিকে আমাদের দুঃখ হলেও বড় আনন্দ তিনি তার পরিবার পেয়েছেন।
আরও পড়ুন: স্বপ্নভঙ্গের বেদনায় তিস্তাপাড়ের কৃষকেরা
কুড়িগ্রামে দু’টি মাথা বিশিষ্ট কন্যা শিশুর জন্ম
কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার মোগলবাসা ইউনিয়নে এক দম্পতির ঘরে দু’টি মাথা বিশিষ্ট নবজাতকের জন্ম হয়েছে।
সেকান্দার আলী (৩২) ও আফরোজা বেগম (২২) নামে এই দম্পতি মোগলবাসা ইউনিয়নের ৬নং ওর্য়াডের ব্যাপারি পাড়া গ্রামের বাসিন্দা। সেকান্দার আলী পেশায় একজন মুদির দোকানি।
আরও পড়ুন: কন্যা শিশু জন্ম দেয়ায় তাড়িয়ে দিল স্বামীর পরিবার
জানা গেছে, গত শনিবার ওই দম্পতি কুড়িগ্রামে একটি ডায়গনিস্টিক সেন্টারে পরীক্ষা করে জানতে পারেন তার গর্ভে দুই মাথা বিশিষ্ট একটি সন্তান রয়েছে। পরে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী গত শনিবারেই সন্ধ্যায় রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে সিজারের মাধ্যমে ওই দম্পতি দুই মাথা বিশিষ্ট এক নবজাতকের জন্ম দেয়। তাদের এটাই প্রথম সন্তান।
আরও পড়ুন: মাকে হত্যা করে বাবা জেলে: ২ শিশুর পাশে কুমিল্লা পুলিশ
সদরের মোগলবাসা বাসা ইউনিয়নের ৬নং ওর্য়াডের ইউপি সদস্য (মেম্বার) মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘আমার ওর্য়াডের মুদি ব্যবসায়ী সেকেন্দার আলীর স্ত্রী দু’টি মাথা বিশিষ্ট এক কন্যা শিশুর জন্ম নেয়। সন্তান ও মা সুস্থ আছেন বলে জানতে পেরেছি।’
কুড়িগ্রামে ট্রাকচাপায় এসএসসি পরীক্ষার্থী নিহত
কুড়িগ্রামের উলিপুর পৌরসভা এলাকায় উলিপুর-রাজারহাট সড়কের মহেশের বাজ এলাকায় ট্রাকচাপায় এক এসএসসি পরীক্ষার্থী নিহত হয়েছে।
সোমবার (২৫ অক্টোবর) সকাল ৭টার দিকে কুড়িগ্রামের উলিপুর পৌরসভা এলাকার ২নং ওয়ার্ডে উলিপুর-রাজারহাট সড়কের মহেশের বাজারে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
আরও পড়ুন: সিরাজগঞ্জে পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় মা-ছেলেসহ নিহত ৩
নিহত তানজিদ ইসলাম (১৮) উলিপুর পৌরসভা এলাকার নিজাইখামার গ্রামের মৃত বক্তার আলীর ছেলে ও বাকরেরহাট উচ্চ বিদ্যালয়ের এসএসসি পরীক্ষার্থী।
স্থানীয়রা জানান, প্রতিদিনের মতো সোমবার সকাল ৭টার দিকে সাইকেলে চড়ে বাড়ি হতে প্রাইভেট পড়তে যাচ্ছিল তানজিদ ইসলাম। উলিপুর-রাজারহাট সড়কের মহেশের বাজার এলাকায় পৌঁছালে পেছন থেকে আসা বালুবোঝাই ট্রাক ধাক্কা দিলে তানজিদ ইসলাম সাইকেল থেকে রাস্তায় থেকে ছিটকে পড়ে। এসময় ট্রাকের পেছনের চাকার নিচে পড়ে ওই শিক্ষার্থী মাথা থেতলে গিয়ে ঘটনাস্থলেই নিহত হয়।
আরও পড়ুন: বাগেরহাটে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ২ আরোহী নিহত
উলিপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) বাতেন বলেন, ‘ঘটনাস্থলে পুলিশসহ জনপ্রতিনিধি রয়েছেন। এখানে ট্রাকটি রয়েছে। এই মুহূর্তে আর কোন মন্তব্য করতে পারছি না।’
কুড়িগ্রামে ক্ষতিগ্রস্ত মন্দির পরিদর্শনে ভারতীয় সহকারী হাইকমিশনার
কুড়িগ্রামের উলিপুরে দুর্গাপূজা চলাকালে ভাঙচুর এবং অগ্নিসংযোগে ক্ষতিগ্রস্ত মন্দিরগুলো পরিদর্শন করেছেন রাজশাহী রেঞ্জের দায়িত্বে থাকা ভারতীয় সহকারী হাইকমিশনার সঞ্জিব কুমার ভাটি।
মঙ্গলবার (১৯ অক্টোবর) দুপুরে উলিপুরের থেতরাই এবং গুনাইগাছ ইউনিয়নের মোট চারটি মন্দির পরিদর্শন করেন তিনি। গুনাইগাছ ইউনিয়নের পশ্চিম কালুডাঙ্গা ব্রাহ্মণপাড়া সর্বজনীন মন্দির, নেফরা শ্রী শ্রী দুর্গা মন্দির, পশ্চিম কালুডাঙা সার্বজনীন দেবী মন্দির এবং থেতরাই ইউনিয়নের হোকডাঙ্গা ভারতপাড়া সার্বজনীন দুর্গা মন্দির পরিদর্শন করেন ভারতীয় সহকারী হাইকমিশনার।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের উলিপুর উপজেলা কমিটির সভাপতি সৌমেন্দ্র প্রসাদ পান্ডে (গবা), উপজেলা চেয়ারম্যান গোলাম হোসেন মন্টু, কুড়িগ্রাম রামকৃষ্ণ মিশনের সাধারণ সম্পাদক উদয় শংকর চক্রবর্তী, উলিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইমতিয়াজ কবির।
পরিদর্শনকালে ভারতীয় সহকারী হাইকমিশনার হামলার শিকার মন্দিরগুলোর কমিটির সদস্য এবং ভুক্তভোগী লোকজনের সঙ্গে কথা বলেন। তবে তিনি সংবাদিকদের সঙ্গে কোনো কথা বলতে রাজি হননি।
বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের উলিপুর উপজেলা কমিটির সভাপতি সৌমেন্দ্র প্রসাদ পান্ডে (গবা) জানান, ভারতীয় সহকারী হাইকমিশনার ঘটনাস্থলের সার্বিক পরিস্থিতি এবং ক্ষয়-ক্ষতির পরিমাণ দেখার জন্য উলিপুরে আসেন।
উল্লেখ্য, গত ১৪ অক্টেবর রাতে কুমিল্লার ঘটনাকে কেন্দ্র করে উলিপুর উপজেলার গুনাইগাছ ইউনিয়নের পশ্চিম কালুডাঙ্গা ব্রাহ্মণপাড়া দুর্গা মন্দির, পশ্চিম কালুডাঙ্গা সার্বজনীন দুর্গা মন্দির, পশ্চিম কালুডাঙ্গা গোবিন্দ মন্দির,নেফড়া সার্বজনীন দুর্গা মন্দির ও থেতরাই ইউনিয়নের হোকডাঙ্গা ভারতপাড়া সার্বজনীন দুর্গা মন্দির ভাংচুর এবং পরের দিন রাতে বেগমগঞ্জ ইউনিয়নের একটি দুর্গা মন্দিরসহ ৮টি মন্দিরে হামলা চালিয়ে প্রতিমা ভাঙচুর, মন্দিরে অগ্নিসংযোগ করে দুর্বৃত্তরা। এ সময় তারা মন্দির সংলগ্ন বাড়ি-ঘর ভাংচুর এবং লুটপাটও করে।
এ ব্যাপারে উলিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইমতিয়াজ কবির জানান, মন্দিরে হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় উলিপুর থানা পুলিশ এখন পর্যন্ত ছয়টি মামলায় ২৬ জনকে আটক করেছেন। বাকিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলমান রয়েছে বলেও জানান তিনি।
আরও পড়ুন: বিষপানে কুড়িগ্রামে স্কুলশিক্ষিকার ‘আত্মহত্যা’
কুড়িগ্রামের চরে টিকাদান শুরু
কুড়িগ্রামে ট্রাক্টরের চাকায় পিষ্ট হয়ে মৃত্যু ১
বিষপানে কুড়িগ্রামে স্কুলশিক্ষিকার ‘আত্মহত্যা’
কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী উপজেলায় বিষপান করে এক স্কুলশিক্ষিকার আত্মহত্যা করেছে বলে খবর পাওয়া গেছে। উপজেলার বঙ্গ সোনাহাট ইউনিয়নের মধ্য ভরতের ছড়া গ্রামে রবিবার দিবাগত রাতে এই ঘটনা ঘটে।
নিহত হুরুন্নেছা বেগম শিল্পী (৩৯) উপজেলার মধ্য ভরতেরছড়া বিএসসি মোড় এলাকার রফিকুল ইসলামের স্ত্রী ও সোনাহাট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা।
আরও পড়ুন: ৯৯৯ এ কল: বিষ পান করা ব্যক্তিকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি
স্থানীয়দের বরাতে বঙ্গসোনাহাট ইউনিয়নের (ইউপি) চেয়ারম্যান শাহজাহান আলী মোল্লা জানান, প্রায় ২২ বছর আগে উপজেলার গছিডাঙ্গা দলবাড়ী কুড়ারপাড় গ্রামের মো. হাছেন আলী মাস্টারের মেয়ে হুরুন্নেছা শিল্পী সাথে বিএসসি মোড়ের আনোয়ার মাস্টারের ছেলে রফিকুল ইসলামের বিয়ে হয়। তাদের ঘরে দুটি মেয়ে সন্তান রয়েছে। বেশ কয়েকদিন থেকে স্বামী রফিকুল ইসলামের সাথে স্কুলশিক্ষিকা হুরুন্নেছা বেগম শিল্পীর প্রায়ই ঝগড়া হতো। পারিবারিক এই কলহের জের ধরে সোমবার রাত আনুমানিক সাড়ে ১২টার দিকে স্বামীর সাথে অভিমান করে ঘরে থাকা ইঁদুর মারা বিষপান করেন তিনি। পরে তাকে মুমূর্ষু অবস্থায় ভূরুঙ্গামারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে ওই রাতেই তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পথেই তিনি মারা যান।
আরও পড়ুন: ‘আমার লাশ যেন ময়নাতদন্ত না হয়’, চিরকুট লিখে স্কুলছাত্রীর আত্মহত্যা
এ বিষয়ে ভূরুঙ্গামারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলমগীর হোসেন বলেন, জেনেছি ওই স্কুলশিক্ষিকা বিষ খেয়ে ‘আত্মহত্যা’ করেছেন। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন অনুযায়ী বিস্তারিত জানানো যাবে।’