যুদ্ধ
মারিউপোলের ইস্পাত কারখানায় রুশ হামলা জোরদার
ইউক্রেনের দক্ষিণাঞ্চলীয় বন্দর নগরী মারিউপোলের আজভস্টাল ইস্পাত কারখানায় হামলা জোরাদার করেছে রাশিয়ান বাহিনী।
মারিউপোলের মেয়র জানিয়েছেন, আজভস্টাল ইস্পাত কারখানায় প্রচণ্ড লড়াই চলছে। ধ্বংসপ্রাপ্ত এই বন্দর নগরীটি ইউক্রেনীয় প্রতিরোধের শেষ শক্ত ঘাঁটির প্রতিনিধিত্ব করছে।
ইউক্রেনীয় সামরিক ইউনিটের কমান্ডার বলেছেন, রাশিয়ান সৈন্যরা কারখানার ভেতরে প্রবেশ করেছে।
রাশিয়ান সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, তারা ইউক্রেন জুড়ে পাঁচটি রেলস্টেশনে বৈদ্যুতিক শক্তি সুবিধা ধ্বংস করার জন্য সমুদ্র এবং বায়ুচালিত ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করেছে।
বুধবার রাতে সারা দেশের শহরগুলোতে বিমান হামলার সাইরেন বেজে ওঠে এবং রাজধানী কিয়েভের নিকটবর্তী, মধ্য ইউক্রেনের চেরকাসি এবং ডিনিপ্রো এবং দক্ষিণ-পূর্বে জাপোরিঝিয়াতে হামলার খবর পাওয়া গেছে।
ডিনিপ্রো কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, একটি রেল স্টেশনে হামলা হয়েছে।
সোশ্যাল মিডিয়ায় ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে সেখানে একটি সেতুতে হামলা হয়েছে।
তবে হতাহত বা ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ সম্পর্কে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।
এদিকে হামলার প্রতিক্রিয়ায় রাতের ভিডিও ভাষণে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, ‘যুদ্ধক্ষেত্রে এই সমস্ত অপরাধের আইনগতভাবে এবং বাস্তবিকভাবে শক্ত জবাব দেয়া হবে।’
অপরদিকে, আগামী ৯ মে রাশিয়া ইউক্রেনের বিরুদ্ধে 'সর্বাত্মক যুদ্ধ' ঘোষণা করবে-এরকম একটি জল্পনা নাকচ করে দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট পুতিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ।
পেসকভ বলেন, এমনটা হওয়ার কোন সম্ভাবনা নেই এবং এসব জল্পনা অর্থহীন।
রাশিয়া এই দিনটিকে ১৯৪৫ সালে নাৎসি জার্মানির বিরুদ্ধে সোভিয়েত ইউনিয়নের 'বিজয় দিবস' হিসেবে পালন করে থাকে।
পড়ুন: রাশিয়ার তেলের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিচ্ছে ইইউ
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বিপুল সংখ্যক শিশুর অপুষ্টি ঝুঁকি বাড়িয়েছে: জাতিসংঘ
রাশিয়া-ইউক্রেনের যুদ্ধ অন্যান্য সংকটের সঙ্গে লক্ষাধিক শিশুর অপুষ্টি ঝুঁকি বাড়িয়েছে। কারণ বিশ্বব্যাপী খাদ্য মূল্যের ওপর ইতোমধ্যে এ যুদ্ধের ব্যাপক প্রভাব পড়েছে।
বৃহস্পতিবার জাতিসংঘ এ তথ্য জানিয়েছে।
জাতিসংঘের শিশু তহবিল (ইউনিসেফ) জানিয়েছে, রাশিয়া তার প্রতিবেশী দেশ ইউক্রেনে আক্রমণ করার ছয় সপ্তাহ পার হয়েছে। এসময়ে মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকায় অনেক পণ্যের আমদানি ব্যাহত হয়েছে। এ অঞ্চলসমূহের ৯০ শতাংশেরও বেশি খাদ্য বিদেশ থেকে আসে।
ইউনিসেফ আরও জানিয়েছে, গম, রান্নার তেল এবং জ্বালানিসহ প্রয়োজনীয় জিনিসের দামও বেড়েছে। যদি এই পরিস্থিতি চলতে থাকে তবে ‘এটি শিশুদের ওপর; বিশেষ করে মিশর, লেবানন, লিবিয়া, সুদান, সিরিয়া এবং ইয়েমেনে মারাত্মকভাবে প্রভাব ফেলবে।’
আরও পড়ুন: রেলস্টেশনে রাশিয়ার রকেট হামলায় ৩০ জনের বেশি নিহত: ইউক্রেন
ইউনিসেফের মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকার আঞ্চলিক পরিচালক অ্যাডেল খোদর বলেন, খাদ্যের দামের অভাবনীয় বৃদ্ধি ঘটেছে। চলমান সংঘাত, রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা, মহামারি ও ইউক্রেনের যুদ্ধের কারণে অনেক পরিবার খাবার কিনতে হিমশিম খাচ্ছে।
অ্যাডেল বলেছেন, এধরনের একাধিক সমস্যার কারণে ‘অপুষ্টিতে আক্রান্ত শিশুদের সংখ্যা মারাত্মকভাবে বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে’।
ইউনিসেফের মতে, মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকার প্রতি ১০টির মধ্যে চারটিরও কম শিশু সঠিকভাবে বেড়ে ওঠার জন্য প্রয়োজনীয় খাদ্য গ্রহণ করে।
আরও পড়ুন: জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলে রাশিয়ার সদস্যপদ স্থগিত
এই অঞ্চলটি ইতোমধ্যেই উচ্চ হারে অপুষ্টি ও মাইক্রোনিউট্রিয়েন্টের ঘাটতির আবাসস্থল। যার অর্থ হল প্রায় প্রতি পাঁচজনের মধ্যে একজন শিশু খর্বাকার এবং প্রায় একই সংখ্যক শিশু ওজন স্বল্পতায় ভুগছে।
মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকার দেশগুলোর পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়ে উঠছে। কেননা ইউক্রেন যুদ্ধের সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়েছে এ অঞ্চলে।
ইয়েমেনে ৪৫ শতাংশ শিশু খর্বাকার এবং ৮৬ শতাংশের বেশি শিশু রক্তশূন্যতায় ভুগছে। যার সবচেয়ে সাধারণ কারণগুলোর মধ্যে একটি হচ্ছে পুষ্টি ঘাটতি।
ইউনিসেফ আরও সতর্ক করেছে যে, সুদানে শিশু মৃত্যুহার ১৩ দশমিক ৬ শতাংশ। ৩৬ দশমিক ৪ শতাংশ শিশু খর্বাকার এবং প্রায় অর্ধেক সংখ্যক শিশু রক্তশূন্যতায় ভুগছে।
লেবাননে ৯৪ শতাংশ কমবয়সী শিশু তাদের প্রয়োজনীয় খাবার পায় না। যেখানে ৪০ শতাংশের বেশি নারী এবং পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুরা রক্তশূন্যতায় ভুগছে।
সিরিয়ায় ২০২১ সালে গড়ে সব ধরণের খাবারের দাম প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। দেশটির প্রতি চারজন শিশুর মধ্যে মাত্র একজন পর্যাপ্ত স্বাস্থ্যকর খাবার পায়।
আরও পড়ুন: পশ্চিমা দেশের কাছে আরও অস্ত্রের আবেদন ইউক্রেনের
রাশিয়ার পক্ষে যুদ্ধে করতে চান অনেক বাংলাদেশি, দূতাবাসের না
ইউক্রেনের বিরুদ্ধে অভিযানে রাশিয়ার পক্ষে যোগ দিতে চান অনেক বাংলাদেশি। কিন্তু ঢাকাস্থ রুশ দূতাবাস জানিয়েছে, ইউক্রেনে রাশিয়ার পরিচালিত বিশেষ সামরিক অভিযানে বাংলাদেশ থেকে স্বেচ্ছাসেবকদের যোগদানের কোনো প্রয়োজন নেই। পরিকল্পনা অনুযায়ী অভিযান চলছে।
বৃহস্পতিবার বাংলাদেশে রাশিয়ার দূতাবাস আরও জানিয়েছে, বাংলাদেশি নাগরিকদের কাছ থেকে অসংখ্য চিঠি পেয়েছে। যারা ইউক্রেন ও ডনবাসের ‘মুক্তি আন্দোলনে’ ‘অবৈতনিক ভাবে’ অবদান রাখতে তাদের ইচ্ছা প্রকাশ করেছে।
দূতাবাস জানিয়েছে, ‘আমরা বাংলাদেশি জনগণের এই মহৎ আকাঙ্ক্ষার প্রশংসা করি। তবে, সফলভাবে রাশিয়ার সশস্ত্র বাহিনীর নির্ধারিত লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য অর্জনের সঙ্গে সঙ্গে পরিকল্পনা অনুযায়ী বিশেষ সামরিক অভিযান চলছে।’
আরও পড়ুন: রাশিয়ান প্রকল্পে আর্থিক লেনদেনের বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে সরকার: পররাষ্ট্র সচিব
মিত্র ডোনেৎস্ক পিপলস রিপাবলিক এবং লুগানৎস্ক পিপলস রিপাবলিককে সাহায্য করার পাশাপাশি ইউক্রেনের রুশভাষী জনগোষ্ঠীকে রক্ষা করার লক্ষ্যে ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২২ থেকে ‘বিশেষ সামরিক অভিযান’ শুরু করে।
রাশিয়ার পক্ষ থেকে অভিযানে যোগ দিতে ইচ্ছুক বিদেশি স্বেচ্ছাসেবকদের যুদ্ধের অঞ্চলে যাওয়ার জন্য সহায়তা করার ব্যাপারে রাশিয়ান ফেডারেশনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী সের্গেই শোইগু এর প্রস্তাবিত উদ্যোগকে ১১ মার্চ রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন অনুমোদন করেছেন।
আরও পড়ুন: রাশিয়ার সঙ্গে বাণিজ্যের জন্য বিকল্প মাধ্যমে চেষ্টা করবে বাংলাদেশ: অর্থমন্ত্রী
ঢাকা-মস্কো গঠনমূলক দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা জোরদার করবে: পুতিন
১২ রুশ কূটনীতিককে বহিষ্কার করল গ্রিস
গ্রীসে রাশিয়ান কূটনৈতিক এবং কনস্যুলার মিশনের ১২ সদস্যকে বহিষ্কারের ঘোষণা দিয়েছে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
বুধবার মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ১৯৬১ সালের কূটনৈতিক সম্পর্কের ভিয়েনা কনভেনশন এবং কনস্যুলার সম্পর্কের ১৯৬৩ সালের ভিয়েনা কনভেনশন অনুসারে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। রাশিয়ান রাষ্ট্রদূতকে এই সিদ্ধান্ত সম্পর্কে আগে অবহিত করা হয়েছে।
বিবৃতিতে কূটনীতিকদের প্রস্থান সম্পর্কে কোনো নির্দিষ্ট সময়সূচি জানানো হয়নি।
পড়ুন: মারিউপোলে ৫ হাজারের বেশি বেসামরিক নাগরিক নিহত
ইউক্রেন ‘টার্নিং পয়েন্টে’: জেলেনস্কি
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, তার দেশ এখন টার্নিং পয়েন্টে রয়েছে। এছাড়া হামলা কমিয়ে দেয়া হচ্ছে রাশিয়া যে দাবি করেছে তা নিয়েও জেলেনস্কি সন্দেহ প্রকাশ করেছেন।
তিনি বলেন, রাশিয়ার সাথে অব্যাহত আলোচনা কেবল ‘কথার কথা’।
রাশিয়ার হামলা কমিয়ে দেয়ার প্রতিশ্রুতি বিষয়ে জেলেনস্কি বলেন, ‘আমরা জানি যে এটি প্রত্যাহার নয় বরং বিতাড়িত হওয়ার পরিণতি। তবে আমরা এটাও দেখছি যে রাশিয়া এখন ডনবাসে নতুন হামলার জন্য তার বাহিনীকে কেন্দ্রীভূত করছে এবং আমরাও এর জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি ‘
জাতির উদ্দেশ্যে দেয়া রাতের ভিডিও ভাষণে ইউক্রেনের পেসিডেন্ট এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘যদি আমরা সত্যিই স্বাধীনতার জন্য এবং গণতন্ত্র রক্ষার জন্য একসাথে লড়াই করি, তবে এই কঠিন সময়ে ট্যাংক, যুদ্ধবিমান ও অস্ত্র চাওয়ার অধিকার আমাদের রয়েছে। স্বৈরশাসকের পাশাপাশি স্বাধীনতাকে সশস্ত্র হতে হবে।’
ভাষণে বুধবার ঘোষণা করা অতিরিক্ত ৫০০ মিলিয়ন সহায়তা জন্য তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে ধন্যবাদ জানান।
এদিকে বুধবার রাশিয়ান বাহিনী কিয়েভ এবং উত্তরাঞ্চলীয় শহর চেরনিহিভের আশেপাশের এলাকা ও দেশের অন্যান্য অংশে আক্রমণ আরও জোরদার করেছে বলে ইউক্রেনীয় কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
শান্তি আলোচনায় ইউক্রেনীয় প্রতিনিধিদলের প্রধান ডেভিড আরাখামিয়া জানিয়েছেন, ভিডিওর মাধ্যমে ইউক্রেন ও রাশিয়ার মধ্যে শুক্রবার পুনরায় আলোচনা শুরু হবে।
পড়ুন: কিয়েভ ও চেরনিহিভ থেকে সামরিক তৎপরতা কমাবে মস্কো
ইসরায়েলে বন্দুকধারীর হামলায় নিহত ৫
রাশিয়া-ইউক্রেন দীর্ঘস্থায়ী যুদ্ধ দেশের পরিবহন ও কৃষি উৎপাদন খরচকে প্রভাবিত করবে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ দীর্ঘায়িত হলে বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম আরও বাড়ায় দেশের পরিবহন ও কৃষি উৎপাদন খরচের ওপর প্রভাব পড়বে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন।
বুধবার ঢাকা-১০ আসনের আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য শফিউল ইসলামের করা এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
এ সময় পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এটি বাংলাদেশের পরিবহন খরচ ও কৃষি উৎপাদনের ওপর প্রভাব ফেলবে।
জাতীয় সংসদের স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে এই প্রশ্নোত্তর পর্ব অনুষ্ঠিত হয়।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, বর্তমানে ব্যারেল প্রতি তেলের দাম গত নয় বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ রয়েছে।
তিনি জানান, বাংলাদেশ বর্তমানে প্রতি বছর ৫০ লাখ টন ডিজেল, ১৩ লাখ টন অপরিশোধিত তেল, দুই লাখ টন ফার্নেস অয়েল এবং এক লাখ ২০ হাজার টন অকটেন আমদানি করে।
বর্মমানে বাংলাদেশ যে দামে জ্বালানি কিনে দেশের বাজারে বিক্রি করছে, তাতে প্রতিদিন ১৫০ কোটি ডলারের বেশি লোকসান গুণতে হচ্ছে বলে জানান মন্ত্রী।
আরও পড়ুন: মানবিক কারণে ইউক্রেনের পক্ষে ভোট দিয়েছে বাংলাদেশ: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
এছাড়া বাংলাদেশ রাশিয়া ও ইউক্রেন থেকে খুব বেশি গম আমদানি না করলেও বৈশ্বিক বাজার পরিস্থিতির কারণে গম সরবরাহেও এর প্রভাব পড়বে।
আব্দুল মোমনে বলেন, যদি যুদ্ধ চলতে থাকে, তাহলে পণ্যবাহী জাহাজের ভাড়া এবং বীমা ফি বৃদ্ধিরও ঝুঁকি রয়েছে।
এদিকে রাশিয়ার সঙ্গে লেনদেন সম্পর্কে তিনি বলেন, বাংলাদেশের যেসব প্রতিষ্ঠান রাশিয়ার সঙ্গে চুক্তি করেছে, তাদের বকেয়া পরিশোধের ব্যাপারে সতর্ক হওয়া উচিত। কারণ বৈশ্বিক আন্তঃব্যাংক লেনদেন সম্পর্কিত সুইফট সিস্টেমে বেশ কয়েকটি রুশ ব্যাংকের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আপনারা যদি নিষেধাজ্ঞার আওতায় থাকা ব্যাংকের মাধ্যমে অর্থ লেনদেন করেন টাকা আটকে যেতে পারে। আর এই টাকা পরবর্তীতে উদ্ধার করা সম্ভব নাও হতে পারে।
যুদ্ধের কারণে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণে বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে বলেও সতর্ক করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
বাংলাদেশ ২০১৮ সালে এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি নির্মাণের জন্য রাশিয়ার সঙ্গে ১৩৮ কোটি ডলার ঋণের একটি চুক্তি স্বাক্ষর করে।
মোমেন বলেন, রাশিয়ার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ওপর পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা লেনদেনকে জটিল করে তুলতে পারে।
তিনি বলেন, চলমান প্রকল্পগুলোর জন্য অর্থায়ন এবং ঋণ পরিশোধের বিকল্প পদ্ধতি কী হতে পারে তা নিয়ে রাশিয়া ও বাংলাদেশের মধ্যে আলোচনা চলছে।
আরও পড়ুন: পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বাংলাদেশে নবনিযুক্ত অনাবাসিক রাষ্ট্রদূত ও হাইকমিশনারদের সাক্ষাৎ
গণতন্ত্র কার্যকরে সব দলের রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় অংশ নেয়া প্রয়োজন: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ: শরণার্থীর সংখ্যা প্রায় ৪০ লাখ
রুশ আগ্রাসনের কারণে ইতোমধ্যে প্রায় ৪০ লাখ লোক শরণার্থী হিসেবে ইউক্রেন ছেড়েছে। তবে সম্প্রতি শরণার্থীর ঢল কিছুটা হ্রাস পেয়েছে।
স্থানীয় সময় মঙ্গলবার দেশটির বর্ডার গার্ড ও বিভিন্ন সাহায্যকারী সংস্থা এসব তথ্য জানিয়েছে।
এছাড়া দেশের পক্ষে যুদ্ধ করতে কিছু ইউক্রেনীয়কে তাদের দেশে আটকে রাখা হয়েছে, কেউ কেউ আবার নিজেদের বাড়ি ছাড়লেও শেষ পর্যন্ত যুদ্ধ কোনদিকে আগায় তা বোঝার জন্য দেশের অন্য প্রান্তে বসে অপেক্ষা করছে। কিছু বয়স্ক ও অসুস্থব্যক্তি এবং কিছু মানুষ নিজ ইচ্ছায়ই এখনও নিজেদের বাড়িতেই রয়ে গেছে।
২৪ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হওয়া রুশ আগ্রাসনের পর বোমা হামলা থেকে বাঁচতে প্রথম দুই সপ্তাহেই ইউক্রেনের যুদ্ধ-পূর্ব জনসংখ্যার চার কোটি ৪০ লাখের মধ্যে প্রায় ২৫ লাখ দেশ ছেড়ে চলে যায়।
সোমবার জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থার (ইউএনএইচসিআর) ঘোষিত সর্বশেষ পরিসংখ্যান অনুসারে, মোট শরণার্থীর সংখ্যা এখন ৩০ লাখ ৮৭ হাজারে পৌঁছেছে।
তবে, আগের ২৪ ঘন্টায় শুধুমাত্র ৪৫ হাজার মানুষ ইউক্রেনের সীমানা অতিক্রম করেছে।
আরও পড়ুন: নিরপেক্ষ অবস্থান নিয়ে আলোচনার জন্য প্রস্তুত জেলেনস্কি
পোলিশ সীমান্ত রক্ষীদের একজন মুখপাত্র আনা মিচালস্কা বলেন, যারা যুদ্ধ শুরু হলে চলে যাওয়ার জন্য দৃঢ়প্রতিজ্ঞ ছিল তারা প্রথম দিকেই দেশ ছেড়েছে।
ইউএনএইচসিআর বলেছে, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইউরোপের সবচেয়ে খারাপ শরণার্থী সংকটের সূত্রপাত করেছে এই যুদ্ধ। পোল্যান্ড, রোমানিয়া, মলদোভা, হাঙ্গেরি, স্লোভাকিয়ায় বিপুল সংখ্যক ইউক্রেনীয় আশ্রয় নিয়েছে। শুধুমাত্র পোল্যান্ডেই ২৩ লাখ শরণার্থী আশ্রয় নিয়েছে। অন্যদিকে রোমানিয়ায় রয়েছে প্রায় ছয় শরণার্থী। এছাড়াও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এক লাখ শরণার্থীকে আশ্রয় দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
সিরিয়ায় ১১ বছর ধরে চলা বিধ্বংসী যুদ্ধেও এত দ্রুত, এত অধিক সংখ্যক শরণার্থী সংকট তৈরি হয়নি।
পোল্যান্ডে ইউএনএইচসিআর-এর জ্যেষ্ঠ জরুরি সমন্বয়কারী অ্যালেক্স মুন্ড বলেছেন, আমরা আশা করি নতুন করে শরণার্থীর ঢল হ্রাস পাবে। তবে আমি বিশ্বাস করি যুদ্ধের একটি রাজনৈতিক সমাধান না হওয়া পর্যন্ত, এটা হওয়ার কোনও গ্যারান্টি আছে।
আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থাও (আইওএম) অনুমান করেছে, ইউক্রেনের আরও ৬৫ লাখ মানুষ রুশ আগ্রাসনের ফলে তাদের বাড়িঘর থেকে বিতাড়িত হয়েছে, কিন্তু তারা দেশের অভ্যন্তরে বাস্তুচ্যুত হয়ে রয়েছে।
আরও পড়ুন: দোহা ফোরামে জেলেনস্কির ভিডিও বার্তা
রাশিয়াকে থামাতে বিলম্ব করেছে ইউরোপ: জেলেনস্কি
মারিউপোলবাসীদের আত্মসমর্পণের আহ্বান রাশিয়ার
ইউক্রেনের শহর মারিউপোল অবরুদ্ধ করার পর এবার রাশিয়া শহরটির নাগরিকদের আত্মসমর্পনের আহ্বান জানিয়েছে। বিনিময়ে তারা ইউক্রেনীয়দের শহরের বাইরে নিরাপদ স্থানান্তরের ব্যবস্থা করে দেয়া ও হামলা বন্ধ করার আশ্বাস দেয়। তবে ইউক্রেন রাশিয়ার এই প্রস্তাব প্রত্যাখান করেছে।
যুদ্ধের শুরু থেকেই কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ এই শহরটির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে তীব্র লড়াই চলেছে দুই পক্ষের মধ্যে।
রুশ কর্নেল জেনারেল মিখাইল মিজিনসেভ বলেছেন,তারা মারিউপোল শহরের বাসিন্দাদের নিরাপদ স্থানান্তরের জন্য দুটো করিডোরের অনুমতি দেবে। একটি পূর্বে রাশিয়ার দিকে, অন্যটি পশ্চিমে ইউক্রেনের অন্যান্য অংশের দিকে।
মারিউপোলের বাসিন্দাদের রাশিয়ার এই প্রস্তাবে সাড়া দেয়ার জন্য সোমবার ভোর ৫টা পর্যন্ত সময় দেয়া হয়েছিল। তারা এ প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করলে রাশিয়া কী ব্যবস্থা নেবে তা এখনও জানায়নি রাশিয়া।
ইউক্রেনের উপ-প্রধানমন্ত্রী ইরিনা ভেরেশচুক এই প্রস্তাবের জবাবে ‘না’ বলেছেন।
দেশটির প্রাভদা নিউজকে দেয়া সাক্ষাৎকারে ইরিনা বলেন,রাশিয়া অস্ত্র প্রত্যাহারের আত্মসমর্পণ নিয়ে কোনো কথা হতে পারেনা। আমরা ইতোমধ্যে রাশিয়ান পক্ষকে আমাদের সিদ্ধান্ত জানিয়েছি।
তিনি আরও বলেন, আমি তাদের কাছে আট পৃষ্ঠার একটি চিঠিতে বলেছি, সময় নষ্ট না করে, করিডোর খুলুন।
বার্তা সংস্থা ইন্টারফ্যাক্স ইউক্রেন অনুসারে, মারিউপোলের মেয়র পিওর আন্দ্রুশচেঙ্কোও রাশিয়ার এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছেন। তিনি এক ফেসবুক পোস্টে বলেছেন, রাশিয়ানদের কথার জবাব এবং অভিশাপ দেয়ার জন্য তাকে সকাল পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে না।
আরও পড়ুন: যুদ্ধের মূল্য রাশিয়াকে প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে দিতে হবে: জেলেনস্কি
এর আগে রাশিয়ার অনুমোদিত নিরাপদ করিডোর দিয়ে মারিউপোল এবং অন্যান্য ইউক্রেনীয় শহরগুলোর বাসিন্দাদের সরিয়ে নেয়ার অধিকাংশ প্রচেষ্টাই ব্যর্থ হয়েছে।
সোমবার এক ভিডিও ভাষণে ইউক্রেনের রাষ্ট্রপতি ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, বোমাবর্ষণ থেকে বাঁচতে প্রায় ৪০০ বেসামরিক লোক একটি আর্ট স্কুলে আশ্রয় নিয়েছিল। ওই স্কুলটা রুশ বোমার আঘাতে বিধ্বস্ত হয়েছে।
তিনি বলেন, তারা সবাই ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়েছে। আমরা জানি না তাদের মধ্যে কতজন এখনও বেঁচে আছে।
জেলেনস্কি আরও বলেন, শুধু জানি আমরা নিশ্চিতভাবেই সেই পাইলটকেও গুলি করে হত্যা করব, যে এই বোমাটি ফেলেছে। যেমন আমরা ইতোমধ্যে প্রায় ১০০ জন গণহত্যাকারীকে শেষ করেছি।
জেলেনস্কি সিএনএনকে বলেন, ইউক্রেনীয়রা রুশ সেনাদের ফুল দিয়ে অভ্যর্থনা জানায়নি, তাদের হাতেও অস্ত্র রয়েছে।’
এদিকে বন্দর নগরী মারিউপোলের কর্মকর্তারা এবং সাহায্যকারী সংস্থাগুলো বলছে, মারিউপোলে খাদ্য, পানীয় এবং বিদ্যুতের অভাব তীব্র হয়ে উঠছে। যুদ্ধের কারণে মানবিক সাহায্য এসেও পৌঁছাতে পারছে না।
শহরটিতে তিন সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে বোমাবর্ষণ করছে রুশ বাহিনী এবং যুদ্ধের সবচেয়ে খারাপ প্রভাব পড়েছে এই শহরে।
শহরটির স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এই শহরের অন্তত দুই হাজার ৩০০ জন মানুষ মারা গেছেন। তাদের অধিকাংশকে গণকবরে সমাহিত করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: ৯ হাজার মানুষ অবরুদ্ধ মারিউপোল ত্যাগ করেছেন: জেলেনস্কি
ইউক্রেনের রাজধানী ও লভিভের উপকণ্ঠে রুশ হামলা
‘আফগানিস্তান যুদ্ধের অবশিষ্ট অস্ত্রের বিস্ফোরণে ৪ শিশু নিহত’
আফগানিস্তানের দক্ষিণাঞ্চলীয় কান্দাহার প্রদেশে একটি অবিস্ফোরিত অস্ত্র বিস্ফোরণে চার শিশু নিহত হয়েছে। শনিবার দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই তথ্য নিশ্চিত করেছে।
মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, যুদ্ধের অবশিষ্ট বিস্ফোরক বিস্ফোরিত হয়ে শাহ ওয়ালি কোট জেলায় ঘটনাটি ঘটে। নিহত শিশুরা প্রত্যন্ত গ্রামে খেলছিল।
সরকারী সূত্র অনুসারে,যুদ্ধ পরর্তী সময়ে ল্যান্ডমাইন, অ্যান্টি-পার্সোনেল মাইন এবং যুদ্ধের অবশিষ্ট বিস্ফোরক বিস্ফোরিত হয়ে দেশে প্রতি মাসে প্রায় ১২০ জনের মৃত্যু বা পঙ্গুত বরণের ঘটনা ঘটেছে।
এর আগে শুক্রবার,পূর্ব পাকতিয়া প্রদেশে একটি বিস্ফোরণে দুই বেসামরিক ব্যক্তি নিহত ও তিনজন আহত হয়।
আরও পড়ুন: মিয়ানমারের গাড়ি দুর্ঘটনায় ৭ জন নিহত
যুদ্ধের মূল্য রাশিয়াকে প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে দিতে হবে: জেলেনস্কি
যুদ্ধের মূল্য রাশিয়াকে প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে দিতে হবে: জেলেনস্কি
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, তার দেশের ওপর আক্রমণ করার জন্য ‘প্রজন্মের’ পর প্রজন্ম ধরে মূল্য দিতে হবে রাশিয়াকে।
শনিবার ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট একটি ভিডিও বার্তায় ক্রেমলিনকে ইচ্ছাকৃতভাবে ‘একটি মানবিক বিপর্যয়’ তৈরি করার জন্য অভিযুক্ত করেছেন এবং রক্তপাত বন্ধ করার জন্য রাশিয়ারুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে তার সঙ্গে দেখা করার আবেদন করেছেন।
উল্লেখ্য মস্কো তার বিপর্যস্ত শক্তির সমর্থনে একটি গণসমাবেশ করার পর এই মন্তব্য করে জেলেনস্কি।
জেলেনস্কি বলেন, রাশিয়া যে দুই লাখ মানুষ নিয়ে সমাবেশ করেছে, সেই পরিমাণ সেনা মস্কো ইউক্রেনে মোতায়েন করেছে।
আরও পড়ুন: ৯ হাজার মানুষ অবরুদ্ধ মারিউপোল ত্যাগ করেছেন: জেলেনস্কি
তিনি বলেন, মস্কোর এই ইভেন্টটি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইউরোপের বৃহত্তম স্থল সংঘাতের ঝুঁকির চিত্র তুলে ধরেছে।
তিনি আরও বলেন, নিজের অবস্থার দিকে তাকান। দেখুন মস্কোর সেই স্টেডিয়ামে ১৪ হাজার লাশ এবং আরও কয়েক হাজার আহত এবং পঙ্গু হয়েছে। এগুলি পুরো আক্রমণ জুড়ে রাশিয়ার ব্যয়।
শুক্রবার ২০১৪ সালে ইউক্রেন থেকে ক্রিমিয়াকে রাশিয়ায় সঙ্গে যুক্ত করার অষ্টম বার্ষিকী উপলক্ষ্যে আয়োজিত অনুষ্ঠানে পুতিন তার দেশের সামরিক বাহিনীর প্রশংসা করেন।
২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে রুশ আক্রমণের পর তিন সপ্তাহ ধরে রাশিয়ার আগ্রাসন অব্যাহত রয়েছে।
কিয়েভের আঞ্চলিক প্রশাসন জানিয়েছে, রুশ হামলায় শনিবার উত্তর-পশ্চিম কিয়েভের শহরতলি বুচা, হোস্টোমেল, ইরপিন এবং মোশচুনের আগুন লেগেছে।
সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত অবরুদ্ধ বন্দর নগরী মারিউপোলে ইউক্রেনীয় ও রুশ বাহিনীর মধ্যে লড়াই চলছে।
আরও পড়ুন: ইউক্রেনের রাজধানী ও লভিভের উপকণ্ঠে রুশ হামলা
দক্ষিণ কোরিয়ায় ওমিক্রনে মৃত্যুর হার দ্রুত বাড়ছে