যুদ্ধ
বিমান বাহিনীর সদস্যদের দক্ষতা বৃদ্ধির আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর সদস্যদের জাতীয় লক্ষ্য অর্জনে পেশাগত দক্ষতা, শৃঙ্খলা ও দেশপ্রেম বজায় রাখার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, ‘কঠোর পরিশ্রম, শৃঙ্খলা ও দেশপ্রেম ছাড়া লক্ষ্য অর্জন করা অসম্ভব। আশা করি আপনারা এগুলো সম্পর্কে সচেতন হবেন এবং সেই অনুযায়ী নিজেকে গড়ে তুলবেন।‘
বুধবার বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর (বিএএফ) বহরে ‘গ্রোব জি-১২০ টিপি’ প্রশিক্ষণ এয়ারক্রাফ্ট অন্তর্ভুক্তি অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যশোরে বিএএফ ঘাঁটি বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমানে অনুষ্ঠিত অনুষ্ঠানে যোগ দেন।
আরও পড়ুন: নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য কিনতে বিশেষ কার্ড পাবেন ১ কোটি মানুষ: প্রধানমন্ত্রী
শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ যুদ্ধে নয় শান্তিতে বিশ্বাস করে, কারণ দেশের পররাষ্ট্রনীতিতে স্পষ্টভাবে উল্লেখ আছে সকলের সঙ্গে বন্ধুত্ব কারও সঙ্গে বৈরিতা নয়।
তিনি বিমান বাহিনীর সদস্যদের মধ্যে প্রযুক্তি, যুদ্ধ ও অন্যান্য সমস্ত প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে যথাযথ প্রশিক্ষণ এবং জ্ঞানের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়ে বলেন, যদি আমাদের ওপর কখনও হামলা হয় সে চিন্তা মাথায় রেখে অবশ্যই আমাদের দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার দক্ষতা অর্জন করতে হবে।
আরও পড়ুন: শাহজালাল বিমানবন্দর সম্প্রসারণের কাজে গতি আনার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিমান বাহিনীর ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য উন্নত ও যুগোপযোগী ফ্লাইট প্রশিক্ষণ নিশ্চিত করার জন্য, সরকার ইতোমধ্যেই ডিজিটাল ককপিটের সঙ্গে অত্যাধুনিক ফ্লাই-বাই-ওয়্যার ও ওয়াইএকে- ১৩০ কমব্যাট ট্রেনার, কে-৮ ডব্লিউ জেট ট্রেনার, এল-৪১০ পরিবহন প্রশিক্ষক, এডাব্লিউ ১১৯ কেএক্স,হেলিকপ্টার প্রশিক্ষক এবং বাহিনীকে বিভিন্ন ধরনের সিমুলেটর দিয়েছে।
তিনি বলেন, এরই ধারাবাহিকতায় আজ ১২টি গ্রোব জি-১২০ প্রশিক্ষণ এয়ারক্রাফ্ট বিমান বাহিনীর বহরে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। দ্বিতীয় পর্যায়ে আরও কয়েকটি গ্রোব জি-১২০ প্রশিক্ষণ বিমান বাহিনীতে যুক্ত করা হবে বলেও জানান তিনি।
আরও পড়ুন: বাঙালি জাতির মাথা উঁচু করে চলার স্লোগান ‘জয় বাংলা’: প্রধানমন্ত্রী
মূল্যবৃদ্ধির পেছনে আ’লীগ জড়িত: ফখরুল
ভোজ্যতেলসহ নিত্যপণ্যের মূল্য বৃদ্ধির জন্য আওয়ামী লীগের সমালোচনা করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, যারা আওয়ামী লীগ করে তারা দ্রুত টাকা কামানোর জন্য নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম বাড়াচ্ছেন।
তিনি বলেন, ‘আপনারা (সরকার) লুটপাট, চুরি-ডাকাতিতে লিপ্ত হওয়ায় চাল, তেল ও পেঁয়াজের দাম বাড়ছে। যারা দাম বাড়াচ্ছেন তারা সবাই আওয়ামী লীগের লোক, আওয়ামী লীগের সদস্য।’
শুক্রবার নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে জাতীয়তাবাদী কৃষকদল আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ফখরুল বলেন, নিত্যপ্রয়োজনীয় সব পণ্যের দাম ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে যাওয়ায় নিম্ন মধ্যবিত্ত, মধ্যবিত্ত ও নিম্ন আয়ের মানুষ অসহায় হয়ে পড়েছে।
পড়ুন: দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছে সরকার: স্থানীয় সরকারমন্ত্রী
তিনি বলেন, ‘এই সরকার কোনো কিছুরই পরোয়া করে না। তাদের মন্ত্রীরা সুন্দর সুন্দর কাপড় গায়ে দিয়ে চমৎকার চমৎকার জায়গায় ফুল নিয়ে বসে বিবৃতি দিচ্ছেন যে সারা বিশ্বে দাম বাড়ছে, আমাদের ক্রয়ক্ষমতাও বাড়ছে।’
বিএনপি নেতা বলেন, নিত্যপ্রয়োজনীয় সব জিনিসপত্রের অস্বাভাবিক দাম সামলাতে মানুষ হিমশিম খাচ্ছে। যারা সিঙ্গাপুর, ব্যাংকক, টরন্টো এবং নিউইয়র্কে কেনাকাটা করেন তাদের ক্রয়ক্ষমতা বেড়েছে, তবে আমাদের অসহায় মানুষ, কৃষক, শ্রমিক এবং মেহনতি জনগণের ক্রয় ক্ষমতা বাড়েনি।
রাশিয়া ও ইউক্রেনের যুদ্ধের কারণে পণ্যের দাম বাড়ছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এ বক্তব্যের সমালোচনা করে ফখরুল বলেন, ‘এটা কি আরেকটা মিথ্যা কথা নয়? কারণ যুদ্ধের আগে থেকেই দাম বাড়ছে।
পড়ুন: দ্রুত সময়ের মধ্যে ভোজ্যতেলের দাম কমে আসবে: আইনমন্ত্রী
ইউক্রেনে জীবন ও বন্ধু ফেলে গেছে ১০ লাখ শিশু
নিজের শহর খারকিভে বোমা পড়তে শুরু করার পর, আন্নামারিয়া মাসলোভস্কা তার বন্ধু, তার খেলনা ও তার জীবন ইউক্রেনে রেখে নিরাপত্তার আশায় পশ্চিমে তার মায়ের সঙ্গে এক দিনের যাত্রা শুরু করে।
অবশেষে অন্যান্য শত শত ইউক্রেনীয় উদ্বাস্তুদের সঙ্গে ট্রেনে করে হাঙ্গেরিয়ান সীমান্ত অতিক্রম করার পর ১০ বছর বয়সী আন্নামারিয়া বলে, ভাইবারে পাঠানো বার্তাগুলোর উত্তর না পেয়ে খারকিভে রেখে আসা তার বন্ধুদের নিয়ে সে খুব উদ্বিগ্ন।
সীমান্ত শহর জাহনির ট্রেন স্টেশনের ভেতর থেকে স্পষ্ট ইংরেজিতে আন্নামারিয়া বলে, ‘আমি সত্যিই তাদের মিস করি। কারণ আমি তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারি না। আমি সত্যিই উদ্বিগ্ন, কারণ আমি জানি না তারা কোথায় আছে।’
আন্নামারিয়া, যে শুধু তার মায়ের কাছে বেড়ে উঠেছে, সে দশ লাখেরও বেশি শিশুর মধ্যে একজন, যারা রাশিয়া প্রথম আক্রমণ করার পর থেকে দুই সপ্তাহেরও কম সময়ে ইউক্রেন থেকে পালিয়ে গেছে, যাকে ইউনিসেফের মুখপাত্র জেমস এল্ডার বলেছেন ‘একটি ঐতিহাসিক প্রথম অন্ধকার ।’
এর মানে হল যে শিশুরা ২০ লাখেরও বেশি লোকের প্রায় অর্ধেককে প্রতিনিধিত্ব করে যারা যুদ্ধ থেকে পালিয়ে গেছে। এটি এমন একটি প্রস্থান, যাকে জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইউরোপে দ্রুততম ক্রমবর্ধমান শরণার্থী সংকট বলে অভিহিত করেছে।
যুদ্ধ থেকে পালিয়ে আসা বেশিরভাগই ইউক্রেনের পশ্চিম সীমান্তের দেশগুলোতে প্রবেশ করেছে। যেমন হাঙ্গেরি, পোল্যান্ড, স্লোভাকিয়া, রোমানিয়া এবং মলদোভা। বেশিরভাগই পোল্যান্ডে চলে গেছে। পোলিশ বর্ডার গার্ড এজেন্সি অনুসারে, পোল্যান্ডে ১৩ লাখ ৩০ হাজার শরণার্থী পাড়ি দিয়েছে।
মোলদোভার প্রধানমন্ত্রী নাটালিয়া গ্যাভ্রিলিয়া রবিবার সিএনএনকে বলেছেন, তার দেশে প্রতি আট শিশুর মধ্যে একজন শরণার্থী।
যেহেতু ১৮ থেকে ৬০ বছর বয়সী ইউক্রেনীয় পুরুষদের দেশ ছেড়ে যাওয়ার অনুমতি নেই৷ তাই উদ্বাস্তুদের বেশিরভাগই শিশু, নারী, শিশুদের মা এবং শিশুদের দাদি নানীরা, যারা নিরাপত্তার সন্ধানে দেশত্যাগ করেছেন।
এই নীতির উদ্দেশ্য হল ইউক্রেনীয় ভূখণ্ডে অনুপ্রবেশকারী রুশ বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য পুরুষদের প্রয়োজন।
আন্নামারিয়ার নিজ শহর খারকিভ, ১৫ লাখ বাসিন্দা নিয়ে ইউক্রেনের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর। এই শহরে রুশ বাহিনী ভারি বোমাবর্ষণ করেছে। গত সপ্তাহে শহরের সেন্ট্রাল ফ্রিডম স্কোয়ারে একটি সরকারি ভবনে ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় কমপক্ষে ছয়জন নিহত হওয়ার আগে রুশ সীমান্তের কাছে শহরের আবাসিক এলাকায় কয়েকদিন ধরে গোলাবর্ষণ করা হয়।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি এই হামলাকে ‘অকপট, ছদ্মবেশী সন্ত্রাসী হামলা’ বলে অভিহিত করেছেন।
আন্নামারিয়া, যদিও তার বয়স মাত্র ১০, সে এখন উদ্বাস্তু, তবে সে হলিউডের অভিনেত্রী হতে চায় এবং স্পষ্ট ইংরেজি বলতে পেরে সে গর্বিত৷
আন্নামারিয়া বলে, ‘আমি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে একজন অভিনেত্রী হতে চাই এবং ইংরেজি আমার খুব প্রিয় ভাষা। বিশ্বের মানুষের একটি বড় অংশ এটি জানে এবং অন্য দেশে এটি বলাও খুব সহজ।’
আন্নামারিয়া ও তার মা ভিক্টোরিয়া, হাঙ্গেরির রাজধানী বুদাপেস্টে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছিল। কিন্তু এরপর তারা কোথায় যাবে তা জানে না। আন্নামারিয়া বলে, সে প্যারিসের ডিজনিল্যান্ড দেখতে চেয়েছিল।
যুদ্ধ শেষ হয়ে গেলে সে খারকিভে ফিরে যেতে চায় এবং রাশিয়ার সহিংস হামলায় বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে পড়া তার বন্ধুদের সঙ্গে আবারও যোগাযোগ করতে চায়।
আন্নামারিয়া বলে, ‘যদি যুদ্ধ বন্ধ হয়ে যায়, আমি সত্যিই বাড়ি যেতে চাই। কারণ সেখানে আমার বন্ধুরা আছে, আমার বাড়ির পিছনে সুন্দর পার্ক, সুপারমার্কেট, সেন্টার এবং খেলার মাঠ আছে। খারকিভ, এটা আমার হৃদয়ের টুকরার মত।’
আরও পড়ুন: রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ: গোলাবর্ষণ এবং নাগরিকদের দেশত্যাগ অব্যাহত
রাশিয়া থেকে তেল আমদানিতে নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা বাইডেনের
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ: গোলাবর্ষণ এবং নাগরিকদের দেশত্যাগ অব্যাহত
ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসনের দ্বিতীয় সপ্তাহ শেষ হয়ে গেলেও গোলাবর্ষণ এবং অবরুদ্ধ শহরগুলো থেকে বেসামরিক নাগরিকদের বাড়ি-ঘর ছেড়ে স্থানান্তরের প্রক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে।
রাশিয়ার আগ্রাসন শুরুর পর থেকে কমপক্ষে দুই মিলিয়ন মানুষ ইউক্রেন থেকে পালিয়ে গেছে। যাদের মধ্যে প্রায় অর্ধেকই নারী ও শিশু এবং বেশিরভাগ মানুষ প্রতিবেশী দেশ পোল্যান্ডে আশ্রয় নিয়েছে।
ইতোমধ্যে রুশ সেন্যরা ইউক্রেনের দক্ষিণের বেশ কিছু এলাকা দখল করেছে। এছাড়া অন্যান্য অঞ্চলে ইউক্রেনীয় বাহিনীর প্রচণ্ড প্রতিরোধের সম্মুখীন হয়েছে।
ইউক্রেনের কর্মকর্তারা বলছেন, বুধবার রাশিয়া ও ইউক্রেনের অন্তঃসত্বা নারী, নারী ও শিশু এবং অন্যদের জন্য সুমি শহর ছেড়ে যাওয়ার মতো একটি মানবিক করিডোরের ব্যাপারে একমত হয়েছে। এর আগে মঙ্গলবার অনেক বিদেশি ছাত্রসহ প্রায় পাঁচ হাজার বেসামরিক নাগরিকদের নিয়ে একটি লাল ক্রস লোগো দ্বারা চিহ্নিত বাস শহর ছেড়ে বাইরে যায়।
আরও পড়ুন: ফের যুদ্ধবিরতির ঘোষণা রাশিয়ার
বিদ্যুত বিচ্ছিন্ন শহরগুলোতে জীবন ক্রমশ অসহনীয় হয়ে উঠেছে এবং খাদ্য ও ওষুধের সঙ্কট তীব্র হচ্ছে। বন্দর নগরী মারিউপোল; বেশ কয়েক দিন ধরে এখানে পানি, বিদ্যুৎ, স্যানিটারি সিস্টেম এবং মোবাইল নেটওয়ার্ক ছাড়া রয়েছে। শহরটির রাস্তায় অগণিত লাশ পড়ে রয়েছে।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি অঙ্গীকার করেছেন যে, তার দেশ তার শহর, মাঠ এবং নদীতীরে’ সর্বত্র তারা রাশিয়ার আক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করবে।
বেসামরিক নাগরিকদের কি নিরাপদে সরিয়ে নেয়া হচ্ছে?
বুধবার উত্তর-পূর্ব সীমান্তের শহর সুমি থেকে পোল্টাভা শহরে ১২ ঘণ্টা-দীর্ঘ যাত্রার পরিকল্পনা করা হয়েছে। ইউক্রেনীয় কর্মকর্তারা বলছেন, শহর থেকে ত্রাণ বহনকারী প্রায় দুই ডজন বাস দেশ ত্যাগে আগ্রহী নাগরিকদের নিয়ে যাবে।
ইউক্রেনের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেছেন, মঙ্গলবার সুমি থেকে এক হাজার ৭০০ বিদেশি শিক্ষার্থীসহ পাঁচ হাজার জনকে সরিয়ে নেয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: রাশিয়া থেকে তেল আমদানিতে নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা বাইডেনের
ইউক্রেনের কর্মকর্তারা বলেছেন, তারা বেসামরিক নাগরিকদের জন্য রাশিয়ার কাছাকাছি কোনো নিরাপদ করিডোর স্থাপনের জন্য মস্কোর দেয়া প্রস্তাব গ্রহণ করবে না। তারা নাগরিকদের ইউক্রেনের পশ্চিমমুখী বিভিন্ন দেশে নিরাপদ প্রত্যাবাসন করাতে চায়।
মঙ্গলবার রুশ গোলাবর্ষণের কারণে নাগরিকদের স্থানান্তরের প্রচেষ্টা ভেস্তে যায়।
ইউক্রেনের উপ-প্রধানমন্ত্রী জানায়, মারিউপোল থেকে বেসামরিক লোকদের সরিয়ে নেয়া সম্ভব হয়নি। কারণ রাশিয়ার সেনারা মঙ্গলবারও শহরে মানবিক পণ্যবাহী ইউক্রেনের একটি কনভয়ে গুলি চালায়।
তবে রাশিয়া জোর দিয়ে বলেছে যে তারা ইউক্রেনের পাঁচটি শহর ছেড়ে বেসামরিক নাগরিকদের জন্য মানবিক করিডোর দিতে প্রস্তুত। নাগরিকদের স্থানান্তরে আগে নেয়া প্রচেষ্টা ভেস্তে যাওয়ায়, দুই পক্ষ একে অপরকে দোষারোপ করছে।
আরও পড়ুন: ২০ লাখ শরণার্থী ইউক্রেন থেকে পালিয়েছে: জাতিসংঘ
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ: যেমন আছে নারী ও শিশুরা
যেকোন যুদ্ধেই সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে পড়ে নারী ও শিশুরা। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধেও এর ব্যতিক্রম হচ্ছে না। রুশ বাহিনীর হামলার পর ইউক্রেনীয় নারী ও শিশুরা চরম মানবিক বিপর্যয়ের মধ্যে পড়েছে। এপি’র আলোকচিত্রীদের তোলা ছবিতে তা স্পষ্টভাবে ফুটে উঠেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশে চীন: ইউক্রেন যুদ্ধের আগুনে ঘি দিয়েন না
চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনকে বলেছেন, ইউক্রেন যুদ্ধের ‘আগুনে ঘি দেয়’ এমন যেকোনো পদক্ষেপের বিরোধিতা করে চীন। এ সময় ব্লিঙ্কেন বলেন, কোন দেশ স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের নীতির পক্ষে দাঁড়িয়েছে, তা বিশ্ব দেখছে।
শনিবার চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ফোনালাপকালে এসব কথা হয় বলে জানিয়েছে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং তাৎক্ষণিক সঙ্কট সমাধানের জন্য আলোচনার আহ্বান জানিয়েছেন। পাশাপাশি একটি ভারসাম্যপূর্ণ ইউরোপীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা তৈরির বিষয়ে আলোচনা করেছেন।
আরও পড়ুন: পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা ‘যুদ্ধ ঘোষণার’ শামিল: পুতিন
ওয়াং বলেন, ন্যাটোর পূর্ব দিকে সম্প্রসারণের ফলে রাশিয়ার নিরাপত্তার ওপর পরা নেতিবাচক প্রভাবের দিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের মনোযোগ দেয়া উচিত।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর জানায়, আলোচনাকালে ব্লিঙ্কেন জোর দিয়ে বলেন, রাশিয়ার আগ্রাসনের প্রতিক্রিয়ায় বিশ্ব ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করছে এবং মস্কোকে যে উচ্চ মূল্য দিতে হবে তা নিশ্চিত করছে।
ইউক্রেনে আগ্রাসনের পর রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ এবং অন্যদের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করেছে চীন।
চীন জানায়, সব জাতির সার্বভৌমত্ব ও আঞ্চলিক অখণ্ডতাকে সম্মান করা উচিত। তবে এ নিষেধাজ্ঞাগুলো নতুন সমস্যা তৈরি করে এবং রাজনৈতিক সমঝোতার প্রক্রিয়াকে ব্যাহত করে।
আরও পড়ুন: ইউক্রেনের আকাশ সীমায় ‘নো-ফ্লাই জোন’ নিয়ে পুতিনের হুঁশিয়ারি
এবার রাশিয়ার বিরুদ্ধে সিঙ্গাপুরের নিষেধাজ্ঞা
ইউক্রেনে যুদ্ধ: নো-ফ্লাই জোন প্রত্যাখ্যানের জন্য ন্যাটোর নিন্দা জেলেনস্কির
দেশজুড়ে নো-ফ্লাই জোন বাস্তবায়নে অস্বীকৃতি জানানোর জন্য ন্যাটো নেতাদের নিন্দা করেছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির জেলেনস্কি।
শনিবার ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাজধানী কিয়েভ থেকে দেয়া এক জ্বালাময়ী বক্তৃতায় ভ্লাদিমির জেলেনস্কি বলেন, পশ্চিমাদের মধ্যস্থতায় অনীহা রাশিয়াকে ইউক্রেনের একের পর এক শহর ও গ্রামে বোমাবর্ষণ চালিয়ে যেতে ‘সবুজ সঙ্কেত’ দিয়েছে।
অন্যদিকে ন্যাটোর যুক্তি হলো, নো-ফ্লাই জোনের ফলে মস্কোর সঙ্গে সংঘর্ষ বাড়বে।
তবে জেলেনস্কি বলেছেন, তিনি ন্যাটোর এই মতের সঙ্গে একমত নন। সরাসরি পদক্ষেপ ‘ন্যাটোর বিরুদ্ধে সরাসরি রুশ আগ্রাসনকে উস্কে দিতে পারে’ বলে তিনি মনে করেন না।
আরও পড়ুন: ইউক্রেনের ২ শহরে যুদ্ধবিরতির ঘোষণা রাশিয়ার
জেলেনস্কি বলেন, এই যুক্তিটি ‘যারা দুর্বল ও আত্মবিশ্বাসহীন তাদের মনগড়া’। পশ্চিমাদের অবস্থানে বোঝা যায় যে তারা সব দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামকে ইউরোপের প্রধান লক্ষ্য বলে মনে করে না’।
তিনি আরও বলেন, ‘আজ থেকে যারা মারা যাবে তারা আপনাদের কারণে মারা যাবে। আপনাদের দুর্বলতা ও অনৈক্যের কারণে মারা যাবে।’
এর আগে শুক্রবার ন্যাটোর সেক্রেটারি-জেনারেল জেনস স্টলটেনবার্গ সতর্ক করে বলেছেন, নো-ফ্লাই জোন প্রবর্তন ‘ইউরোপের আরও অনেক দেশকে জড়িত করতে পারে এবং অনেক বেশি দুর্ভোগের কারণ হতে পারে।’
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনও নো-ফ্লাই জোন প্রবর্তনের কথা অস্বীকার করেছেন। তিনি বিবিসিকে বলেছেন, তিনি নিশ্চিত যে ইউক্রেন রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধে জিততে পারে।
আরও পড়ুন: রাশিয়ায় বিবিসিসহ একাধিক বিদেশি গণমাধ্যম নিষিদ্ধ
পুতিনের বিচারের জন্য বিশেষ ট্রাইবুনাল চায় ইউক্রেন
ইউক্রেনের যুদ্ধে অস্ত্র হাতে গাজীপুরের তাইয়েফ
ইউক্রেনে যুদ্ধের ময়দানে আছেন গাজীপুরের মোহাম্মেদ তাইয়েফ। মা-বাবার নিষেধ অমান্য করেই বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া এই তরুণ যুদ্ধে গেছেন। আর তাই পরিবার, আত্মীয় স্বজন ও গ্রামবাসী তাকে নিয়ে প্রবল উৎকণ্ঠায় রয়েছেন। ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে বসবাসরত তাইয়েফের মা- বাবা-ভাইয়ের প্রতিটা মুহূর্ত কাটছে যুদ্ধ যন্ত্রণায়।
গাজীপুরের কাপাসিয়ার পাবুর গ্রামের সন্তান হাবিবুর রহমান পরিবার নিয়ে ইউক্রেনে যুদ্ধাবস্থার মাঝে রয়েছেন। ব্যবসায়ী হাবিবুর রহমান দীর্ঘদিন থেকেই বসবাস করছেন ইউক্রেনে। তার দুই ছেলে মোহাম্মেদ তাইয়েফ ও মোহাম্মেদ কারিম। কিয়েভেস্কি টেকনিক্যাল ইউনিভার্সিটিতে পড়ুয়া বড় ছেলে তাইয়েফ, ইউক্রেনের হয়ে রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধে নেমেছেন।
হাবিবুর রহমান বলেন,‘ছেলে যুদ্ধে যাক এটা চাননি তারা। তবু ইউক্রেনের হয়ে যুদ্ধে গেছে। বর্তমানে কিয়েভ থেকে প্রায় দেড়শ’ কিলোমিটার দূরে আছে যুদ্ধের মাঠে।’
আরও পড়ুন: ইউক্রেনে বাংলাদেশি জাহাজে রকেট হামলা, নিহত এক নাবিক
তিনি বলেন,‘যদিও তাইয়েফ যুদ্ধক্ষেত্র থেকে প্রায়ই আমাদের সঙ্গে ফোনে কথা বলে, তবুও আমরা তাকে নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি।’
পরিবার নিয়ে ইউক্রেনের বসবাসরত হাবিবুর রহমান একদিকে যেমন ছেলেকে নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন, তেমনি গোটা পরিবার নিয়ে যুদ্ধ যন্ত্রনায়ও ভুগছেন। তাদের ঘরে পর্যাপ্ত নগদ অর্থ থাকলেও খাদ্য সঙ্কটে পড়েছেন তারা। মরণাস্ত্রের হামলায় বারবার প্রকম্পিত হয়ে উঠেছে গোটা শহর, ভয়ে নির্ঘুম রাত কাটছে তাদের।
তাইয়েফ যুদ্ধে গেছে, এ খবর শুনে কাপাসিয়ায় বসবাসরত তার দাদি গোল মেহের জানালা ধরে দিন-রাত তাকিয়ে থাকেন অজানার উদ্দেশ্যে। বিলাপ করছেন, দোয়া করছেন যুদ্ধ থেকে অক্ষত অবস্থায়, সুস্থ ফিরে আসুক নাতি। ছেলে হাবিবুর আর তার পরিবারের সবাই রক্ষা পাক যুদ্ধের ছোবল থেকে। আত্মীয়-স্বজন, পাড়া-প্রতিবেশি উৎকণ্ঠায় রয়েছেন।
এলাকার সবাই চাইছে তাদের প্রিয় মানুষ হাবিবুরের পরিবারের লোকজন নিরাপদে থাকুক, সুস্থ হয়ে আবার ফিরে আসুক এই বাংলার মাটিতে।
আরও পড়ুন: আটকা পড়া ২৮ বাংলাদেশি নাবিককে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেয়া হয়েছে: পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী
কাপাসিয়া সদর ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মকবুল হোসেন মুকুল জানান, হাবিবুর রহমান প্রায় ৩০ বছর ধরে ইউক্রেনে পরিবার নিয়ে বাস করছেন। তিনি শুনেছেন হাবিবুরের এক ছেলে যুদ্ধে গেছে।
কিয়েভের সাধারণ নাগরিকরা রুশ বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধে অস্ত্র তুলে নিচ্ছে।
২৪ ফেব্রুয়ারি রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন প্রতিবেশি দেশ ইউক্রেনে একটি ‘বিশেষ সামরিক অভিযান’ শুরু করেছেন।
রুশ বাহিনী কিয়েভের দিকে অগ্রসর হতে শুরু করলে ইউক্রেনের সরকার দেশের প্রতিরক্ষায় সমস্ত নাগরিককে অস্ত্র হাতে তুলে নেয়ার আহ্বান জানায়।
বৃহস্পতিবার জাতির উদ্দেশ্যে প্রকাশিত একটি ভিডিও ভাষণে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির জেলেনস্কি ইউক্রেনীয়দের প্রতি দেশ রক্ষায় প্রতিরোধ চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
এর আগে এক টুইট বার্তায় জেলেনস্কি বলেছেন, ‘যারা দেশকে রক্ষা করতে চায়, আমরা তাদের অস্ত্র দেব।’
আরও পড়ুন: জাতিসংঘে ইউক্রেন সঙ্কট নিয়ে ভোট দেয়া থেকে বিরত বাংলাদেশ
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ: ভ্যাকসিন প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান জটিলতার মুখে
রাশিয়ার উদ্ভাবিত করোনার টিকা উৎপাদনকারী দক্ষিণ কোরীয় একটি ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানি ব্যবসায়িক জটিলতার মুখে পড়েছে। ইউক্রেনে আগ্রাসনের জন্য মার্কিন নেতৃত্বাধীন পশ্চিমা জোট রাশিয়ার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করায় এই পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়েছে বলে তারা জানিয়েছে।
সম্প্রতি রাশিয়ান ডাইরেক্ট ইনভেস্টমেন্ট ফান্ডের (আরডিআইএফ) বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে মার্কিন নেতৃত্বাধীন পশ্চিমা জোট। কারণ এই প্রতিষ্ঠানটি প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ঘনিষ্ঠ মিত্রদের দ্বারা পরিচালিত। এই প্রতিষ্ঠানটি বিশ্বব্যাপী স্পুটনিক টিকার বাজারজাত করে।
সিউল-ভিত্তিক প্রতিষ্ঠান জিএল রাফার একজন কর্মকর্তা কিম গি-ইয়ং বলেছেন, নিষেধাজ্ঞার ফলে সরাসরি টিকা উৎপাদনে বাধা তৈরি করবে না, কারণ টিকা সরবরাহের বিষয়টি নিষেধাজ্ঞার বাইরে রয়েছে।
তবে প্রতিষ্ঠানটি আর্থিক দিক থেকে সম্ভাব্য সমস্যাগুলো নিয়ে উদ্বিগ্ন। কারণ দক্ষিণ কোরিয়া মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা জোটের সঙ্গে মিলে বিশ্বব্যাপী পেমেন্ট সিস্টেম থেকে রাশিয়ার প্রধান ব্যাঙ্কগুলোকে বিচ্ছিন্ন করার সিদ্ধান্তে যোগ দিয়েছে।
কিম বলেন,এই মুহূর্তে আমরা এই পরিস্থিতি কীভাবে মোকাবিলা করব,তা নিয়ে উদ্বিগ্ন।
আরও পড়ুন: পুতিনকে ‘মূল্য’ দিতে হবে, হুঁশিয়ারি বাইডেনের
জিএল রাফা নামের প্রতিষ্ঠানটি এখন পর্যন্ত এক ডোজ স্পুটনিক লাইট ভ্যাকসিনের পাঁচ মিলিয়ন ডোজ টিকা মজুদ করে রেখেছে। কিন্তু রাশিয়া টিকাদান কর্মসূচি বিলম্বিত করার কারণে সেগুলোর একটিও এখন পর্যন্ত ব্যবহার করা হয়নি।
আরডিআইএফ-এর সঙ্গে দুই-ডোজ স্পুটনিক-ভি এর ১৫০ মিলিয়ন ডোজ তৈরির একটি চুক্তি রয়েছে জিএল রাফার। এবং তারা দক্ষিণ কোরিয়ার কোম্পানিগুলির একটি কনসোর্টিয়ামে অংশ নেবে, যার ফলে তারা স্পুটনিক-ভি এর আরও ৫০০ মিলিয়ন ডোজ তৈরির জন্য চুক্তিবদ্ধ হয়েছে, তবে এই টিকাগুলো এখনও উৎপাদিত হয়নি।
আরডিআইএফ মার্কিন নিষেধাজ্ঞার সমালোচনা করেছে এবং বলেছে যে এই নিষেধাজ্ঞার ফলে স্পুটনিক-ভি বিতরণ মন্থর হয়ে যাবে।
আরও পড়ুন: ইউক্রেনকে ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহ করল নরওয়ে ও জার্মানি
যুদ্ধ নিয়ে নতুন আলোচনায় রাজি ইউক্রেন ও রাশিয়া
ইউক্রেনে আটকা পড়া নাবিকদের নিরাপত্তায় সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে: নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী
ইউক্রেনে আটকে পড়া বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের জাহাজ ‘এম ভি বাংলার সমৃদ্ধি’র নাবিকদের নিরাপত্তায় সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। বাংলাদেশি নাবিকদের উদ্ধার বা নিরাপদে সরিয়ে নিতে কূটনৈতিক পর্যায়ে ব্যাপক তৎপরতা চালানো হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
বৃহস্পতিবার দুপুরে সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে এসব কথা বলেন প্রতিমন্ত্রী।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, জাহাজে ২৯ জন নাবিক ছিল। থার্ড ইঞ্জিনিয়ার হাদিসুর রহমানকে হারিয়ে ফেলায় আমাদের ২৮ জন নাবিক আছে। নিহত হাদিসুরের মরদেহ আমাদের সংরক্ষণে আছে। তাঁর মরদেহ দেশে ফেরত আনার বিষয়টি নির্ভর করছে যুদ্ধ পরিস্থিতির ওপর। আমরা হাদিসুরের পরিবারের পাশে দাঁড়াব। পরিবারের জন্য যা যা করণীয় সরকারের পক্ষ থেকে তা করা হবে। তিনি জানান, হাদিসুরের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা হয়েছে। তাদেরকে সমবেদনা জানিয়েছি।
আরও পড়ুন: ইউক্রেনে বাংলাদেশি জাহাজে রকেট হামলা, নিহত এক নাবিক
খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, আমি, মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাম্মদ মেজবাহ উদ্দিন চৌধুরী এবং বিএসসি’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক কমডোর সুমন মাহমুদ সাব্বির পোল্যান্ডে বাংলাদেশ দূতাবাসের কর্তকর্তা এবং জাহাজের ক্যাপ্টেনের সঙ্গে কথা বলেছি। নাবিকদের নিরাপত্তাই প্রথম কথা। জাহাজের ক্রুদের আতংকিত হয়ে ভুল সিদ্ধান্ত না নেয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে। তাদেরকে সাহস দেয়ার চেষ্টা করছি। প্রধানমন্ত্রী এ বিষয়ে উদ্বিগ্ন আছেন। প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা দিয়েছেন। বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশন, নৌপরিবহন অধিদপ্তর ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে যোগাযোগ করছে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন,এই মুহূর্তে কূটনৈতিকভাবে যতটুকু কথা বলা দরকার, আমরা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে করছি। তিনি জানান, যুদ্ধের মিসাইলে জাহাজটি আক্রান্ত হয়েছে। আমরা যখন জানব কারা আক্রমণ করেছে, তখন তার ব্যাপারে আমরা কথা বলব।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশি জাহাজে রকেট হামলা: ভিডিও বার্তা পাঠিয়ে উদ্ধারের আকুতি নাবিকদের