শিক্ষার্থী
করোনার ছুটি শেষে শাবিপ্রবিতে ফিরেছে শিক্ষার্থীরা: মানসিক স্বাস্থ্যের বিষয়ে থাকছে নজরদারি
বৈশ্বিক মহামারি করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের ফলে দীর্ঘদিন বন্ধ ছিল সারাদেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। দীর্ঘদিনের ছুটি কাটিয়ে দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো খুলে দেয়া হয়েছে। ভার্চুয়াল থেকে সশরীরে ক্লাসে ফিরেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বস্তরের শিক্ষার্থীরা। আর এই ক্লাসে ফেরা শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্যের বিষয়টিতে নজরদারীতে এনেছে সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (শাবিপ্রবি)।শিক্ষার্থীদের জন্য ইতোমধ্যে অনলাইন প্ল্যাটফর্মে বিশ্ববিদ্যালয়ে মানসিক স্বাস্থ্য সেবায় সার্বক্ষণিক কাজ করছে ‘সাস্ট মনের কথা’ ফেসবুক পেইজ। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রকল্যাণ ও নির্দেশনা পরিচালকের অধীনে অনলাইন প্ল্যাটফর্মে মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক সেবাটি পরিচালনা হচ্ছে। এতে কাজ করছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কাউন্সেলিং সাইকোলজিস্ট ফজিলাতুন্নেছা শাপলা।বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে সংযুক্ত শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা, কর্মচারী কারও মানসিক সমস্যা দেখা দিলে সরাসরি সম্ভব না হলে অনলাইন প্ল্যাটফর্মে ‘সাস্ট মনের কথা’ ফেসবুক পেইজের মাধ্যমে যোগাযোগ করে সার্বক্ষণিক মানসিক বিষয়ক স্বাস্থ্য সেবা পাওয়া যাবে। এই মানসিক স্বাস্থ্য সেবায় সর্বদা গোপনীয়তা রক্ষা করে সেবা দেয়া হচ্ছে। এছাড়াও শিক্ষার্থীদের জন্য প্রতিটি বিভাগে ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য পুরুষ ও নারী আলাদাভাবে দুইজন করে শিক্ষক ছাত্র উপদেষ্টা বিদ্যমান।
আরও পড়ুন: করোনার দীর্ঘ ছুটিতে নতুন আঙ্গিকে শাবিপ্রবির চিকিৎসা কেন্দ্রকরোনাকালীন প্রথম থেকেই অনলাইন কার্যক্রমে সচল ব্যবস্থাপনা চালু রেখেছিল শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। তবে শিক্ষার্থীদের স্বশরীরে অংশগ্রহণের মাধ্যমে ক্লাসের আক্ষেপটি দেখা যায় শিক্ষার্থীদের মাঝে। এছাড়াও দীর্ঘ এই ছুটিতে বিশ্ববিদ্যালয়টির বাংলা বিভাগের ২০১৮-১৯ বর্ষের শিক্ষার্থী তোরাবি বিনতে হক, একই বিভাগের ২০১৯-২০ বর্ষের আছিয়া আকতার, পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৭-১৮ বর্ষের তৌহিদুল আলম প্রত্যয়ের আত্মহত্যা ও রসায়ন বিভাগের ২০১৯-২০ বর্ষের শিক্ষার্থী সাব্বির আহমেদের সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যু কাঁদিয়েছে শাবিপ্রবিয়ানদের হৃদয়কে। চলতি বছরের ৬ মে বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১২-১৩ বর্ষের রসায়ন বিভাগের শিক্ষার্থী আলমগীর কবির ও ১৬ অক্টোবর মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মোহাম্মদ মাহফুজুর রহমান দেশের বাইরে উচ্চ শিক্ষার জন্য পড়াশোনা করতে গিয়ে আত্মহত্যার মতো ঘটনাগুলো শাবিপ্রবির শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মাঝে হৃদয় বিদারক পরিবেশ তৈরি করেছে।দীর্ঘ ছুটির পর ক্যাম্পাসে ফেরা নিয়ে কথা হয় শিক্ষার্থীদের সাথে। বাংলা বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষ প্রথম সেমিস্টারের শিক্ষার্থী ফারজানা আকতার বলেন, কোভিড-১৯ শুরু হওয়ার পর থেকে গত দেড় বছরে শাবিপ্রবি থেকে অত্যন্ত দুঃখজনকভাবে কিছু মানুষকে আমরা হারিয়েছি। এর মধ্যে পাঁচজন আত্মহত্যা করেছেন, যাদের মধ্যে একজন শিক্ষকও ছিলেন। একজন মানুষ কতোটা অসহায় হলে আত্মহত্যার মতো কঠিনতম সিদ্ধান্তে চলে যায় তা হয়তো আমরা জানি না। কিন্তু কোনো কঠিন পরিস্থিতিতে মানসিক ও শারিরীকভাবে সুস্থ্ থাকার জন্য একজন মনোবিজ্ঞানীসহ ছাত্র উপদেষ্টা-ছাত্র কল্যাণ উপদেষ্টা এবং শ্রদ্ধেয় শিক্ষক মহোদয়গণ অনলাইনে নানা সময়ে বিভিন্ন সেশন, আলোচনা অনুষ্ঠান ইত্যদির আয়োজন করে এসেছেন।
আরও পড়ুন: ক্যান্সারে মারা গেলেন শাবিপ্রবির শিক্ষার্থী
তিনি বলেন, প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী যারা মাত্র দেড় মাস ক্যাম্পাসে কাটানোর পর দীর্ঘ দেড় বছর বাড়িতে কাটিয়ে এখন একজন দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী হিসেবে ক্যাম্পাসে ফিরছেন তাদেরসহ সকল শিক্ষার্থীদের নানা সমস্যায় কিংবা কঠিন কোনো পরিস্থিতিতে তাঁরা পরামর্শ দিয়ে যাবেন এবং শিক্ষার্থীরাও পরিবেশ-পরিস্থিতির এই নানা উত্থান-পতনে হতাশাগ্রস্থ না হয়ে মানসিকভাবে শক্তিশালী থাকার চেষ্টা করবেন বলে আশা রাখছি।অর্থনীতি বিভাগের চতুর্থ বর্ষ প্রথম সেমিস্টারের শিক্ষার্থী প্রবাল বড়ুয়া বলেন, দীর্ঘ দেড় বছর পর আমরা সশরীরে ক্লাসে উপস্থিত হয়েছি। এই মহামারিতে যদি মানসিক অবস্থা চিন্তা করি তাহলে একপ্রকার বলা যায় শোচনীয় অবস্থায় ছিল। অনলাইন ক্লাসে যেহেতু আমাদের পাঠদান সম্পন্ন হচ্ছিল, ডিভাইস সমস্যা, নেটওয়ার্ক সমস্যা, ফ্যামিলির সমস্যা আরও অনেক ধরনের সমস্যার কারণে ক্লাসে ভালোভাবে উপস্থিত হতে পারি নি। যেহেতু ক্লাসগুলো এখন সশরীরে হচ্ছে সেহেতু ক্লাসগুলোতে আমরা নিয়মিত উপস্থিত হতে পারছি এবং আমরা মানসিকভাবে সতেজ থাকতে পারছি।
হলগুলোতে অবস্থানরত শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্যসেবা নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের প্রাধ্যক্ষ মোহাম্মদ সামিউল ইসলাম বলেন, একাডেমিক পড়াশোনার পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের এক্সট্রা কারিকুলার এক্টিভিটিজ বিশেষ করে খেলাধুলা ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের উপর গুরুত্ব দিতে হবে। ইনডোর- আউটডোর খেলাধুলা এবং এক্সট্রা কারিকুলার কর্মকান্ড শিক্ষার্থীদের নির্মল মানসিক স্বাস্থ্য গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম ছাত্রী হলের প্রাধ্যক্ষ ড. জায়েদা শারমীন বলেন, করোনার মতো মহামারি মোকাবেলার অভিজ্ঞতা আমাদের সকলের জন্যই আসলে বিরাট এক চ্যালেঞ্জ হিসেবেই এসেছে। আর এই চ্যালেঞ্জের বড় একটা বিষয় হচ্ছে মানসিক স্বাস্থ্যের সঠিক পরিচর্যা নিশ্চিত করা। শিক্ষার্থীদের জন্য এ বিষয়টি আরও বড় ধরনের গুরুত্ব বহন করে বলে আমি মনে করি।
আরও পড়ুন: ওরা আর কখনো শাবিপ্রবি ক্যাম্পাসে ফিরবে না
তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার কারণে অনেক দিন বাসায় থাকায় একদিকে যেমন তাদের মধ্যে একঘেয়েমিতা দেখা দিয়েছে তেমনি কিছুটা সেশন জ্যাম তৈরির ফলে চাকরির বাজারে প্রবেশের প্রতিবন্ধকতাও একটি বড় অংশের মধ্যে হতাশার জন্ম দিয়েছে। এ ধরনের মানসিক চাপ মোকাবেলায় আমাদের সকলকে ধৈর্যের সাথে একযোগে কাজ করতে হবে। শিক্ষক –শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা -কর্মচারী সকলের মানসিক বিষয়টি প্রয়োজন অনুযায়ী গুরুত্ব সহকারে বিবেচনার জন্য কাউন্সেলিং সেলের নানা ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ ও তাতে সকলের অংশগ্রহন নিশ্চিত করতে হবে।বিশ্ববিদ্যালয়ের কাউন্সেলিং সাইকোলজিস্ট ফজিলাতুন্নেছা শাপলা বলেন, দীর্ঘ ছুটি কাটিয়ে শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে ফিরেছে। অনেক শিক্ষার্থীর কাছে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশটা আগের মতোন নাও মনে হতে পারে এডজাস্টমেন্টের ক্ষেত্রে। সকল শিক্ষার্থীদের জন্য আমাদের দরজা খোলা। অনলাইন, সশরীরে, মুঠোফোনে আমাদের মানসিক স্বাস্থ্যসেবা অব্যাহত আছে। ডিপার্টমেন্ট ও হলগুলোতে শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্য সেবায় কাউন্সেলিং, ফলোআপ, মেডিসিনের বিষয়গুলোতে সেবা থাকছে।শাবিপ্রবি প্রক্টর সহযোগী অধ্যাপক ড.আলমগীর কবীর বলেন, আমাদের শৃঙ্খলা কমিটি শিক্ষার্থীদের সার্বিক নিরাপত্তায় বিবেচনায় তৎপর। বর্তমানে করোনার এই দীর্ঘ ছুটি শেষে ক্যাম্পাসে ফেরা অনেক শিক্ষার্থী মানসিক সমস্যা নিয়ে আমাদের কাছে এসেছে। আমরা প্রতিটা ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের সমাধানে চেষ্টা করছি। এই বিষয়গুলো আমাদের নজরে রয়েছে।
আরও পড়ুন: ফেসবুকে চাকরির সুযোগ পেলেন শাবিপ্রবির দুই শিক্ষার্থীবিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রকল্যাণ ও নির্দেশনা পরিচালক অধ্যাপক জহীর উদ্দিন আহমদ জানান, লম্বা একটি ছুটি কাটিয়ে আমাদের শিক্ষার্থীরা আমাদের মাঝে ফিরে এসেছে। দীর্ঘ একটা সময় শিক্ষার্থীরা তাদের ব্যস্ততা ভুলে অন্য একটি পরিবেশে মিশে ছিল। আর এই সময়টিতে হল, মেস, বাসা, বিভাগ যেকোনো পরিস্থিতিতে কোনো মানসিক সমস্যা তৈরি হলে শিক্ষার্থীদের বলবো আমাদের কাছে চলে আসতে । আমরা শিক্ষার্থীদের জন্য অনলাইন ও অফলাইন দুই জায়গাতেই এই মানসিক স্বাস্থ্য সেবা চালু রেখেছি। শিক্ষার্থীদের মানসিক সমস্যার সংকট নিরসনে আমাদের সাইকোলজিস্টসহ শিক্ষক উপদেষ্টাদের আন্তরিকভাবে স্বাস্থ্য সেবা তাদের মানসিক ভীতি দূর করতে সহায়তা করবে। আমরা চাই প্রতিটা শিক্ষার্থী মানসিক সুস্থতার মাধ্যমে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা জীবন পার করে তাদের ভবিষ্যত জীবনেও সুন্দর দৃষ্টান্ত স্থাপন করুক।শাবিপ্রবি উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ বলেন, শিক্ষার্থীদের সবধরনের সমস্যা নিরসনে আমাদের শিক্ষকরা কাজ করে যাচ্ছে। প্রতিটি বিভাগ, হলসহ সকল দপ্তরে শিক্ষার্থীদের প্রতি আন্তরিকতার কমতি নেই। এছাড়াও মানসিক স্বাস্থ্যসেবায় আমাদের প্রতিটি দপ্তরে নির্দেশনা দেয়া আছে। স্ব স্ব জায়গা থেকে শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্যসেবায় সকলে একযোগে কাজ করে যাচ্ছে।
শিক্ষার্থীরা সঠিক সময়ে নতুন বই পাবে: শিক্ষামন্ত্রী
শিক্ষামন্ত্রী ডা.দীপু মনি বলেছেন, শিক্ষার্থীরা নতুন বছরেও সঠিক সময়ে বই হাতে পাবে বলে আশা করছি। বইগুলো মুদ্রণের ক্ষেত্রে যদি কোনও ভুলত্রুটি থাকে সেগুলোর বিষয়েও যথেষ্ট সতর্কতা মানা হচ্ছে। তারপরেও যদি ভুল থাকে, তাহলে অবশ্যই তা সংশোধনের ব্যবস্থা করা হবে।
শনিবার দুপুরে চাঁদপুর শহরের বাবুরহাট এলাকায় সদর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
এসময় তিনি বলেন, বিএনপি নিজেদেরকে রাজনৈতিক দল হিসেবে দাবি করলেও, তারা মূলত অপরাজনীতি করে। এরমধ্যে মানুষ হত্যাসহ যত ধরনের অপরাধ আছে সবকিছুর সাথে বিএনপি জড়িত। বিএনপি সাম্প্রদায়িক রাজনীতি করে সেটিও অপরাজনীতি। স্থানীয় সরকার নির্বাচনেও বিএনপি সবসময় নেতিবাচক ভূমিকায় থাকে। এটিও তাদের চরিত্রের একটি অংশ।
শিক্ষামন্ত্রী আরও বলেন, একদিকে তারা বলছে, স্থানীয় সরকার নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে না, অপরদিকে আমরা দেখছি সব জায়গায় তাদের প্রার্থী দেয়া হচ্ছে। বিএনপি'র জন্য এটি নতুন কিছু না। বিএনপি সব সময়ই মুখে বলে একরকম, কাজে আরেক রকম করে।
আরও পড়ুন:ঝরে পড়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা এখনও নিশ্চিত না: শিক্ষামন্ত্রী
এরপর শিক্ষামন্ত্রী মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবন উদ্বোধন উপলক্ষে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন। জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিস এর সভাপতিত্বে সভায় আরও বক্তব্য দেন বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. সৈয়দা বদরুন নাহার, বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কালাম চিশতী, পুলিশ সুপার মিলন মাহমুদ, এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী ইউনুস বিশ্বাস, চাঁদপুর সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম নাজিম দেওয়ান, ফরিদগঞ্জ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অ্যাড.জাহিদুল ইসলাম রোমান প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে চাঁদপুর জেলা সদরের বীর মুক্তিযোদ্ধারা, জনপ্রতিনিধি, আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, মহিলা আওয়ামী লীগসহ অঙ্গ সংগঠনের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন:সংক্রমণ কমে গেলে ক্লাস বাড়ানো হবে: শিক্ষামন্ত্রী
১২ বছরের অধিক শিক্ষার্থীদের করোনা টিকা দেয়ার প্রস্তুতি চলছে: শিক্ষামন্ত্রী
রাবি শিক্ষার্থীকে রাতভর নির্যাতনের অভিযোগ
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের থিয়েটার বিভাগের এক শিক্ষার্থীকে রাতভর শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে একই বিভাগের ১০ থেকে ১২ জন সিনিয়রের বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার রাতভর তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ শামসুজ্জোহা হলের ছাদে এ নির্যাতন করা হয়।
ভুক্তভোগী সামি এম সাজিদ থিয়েটার বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র এবং প্রধান অভিযুক্তরা হলেন একই বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী তপু ও রুবেল এবং দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ আল মাসুদ।
ভুক্তভোগীর কয়েকজন বন্ধুর মতে, থিয়েটার বিভাগের কয়েকজন সিনিয়র সাজিদকে শামসুজ্জোহা হলের ছাদে ডেকে পাঠান। এরপর তাকে ভোর ৪টায় ছাড়ে। পরে অসুস্থ অনুভব করলে শুক্রবার দুপুরে তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে ভর্তি করা হয়।
এদিকে অভিযোগ অস্বীকার করে আব্দুল্লাহ আল মাসুদ বলেন, থিয়েটার বিভাগের কয়েকজন সিনিয়র ও সাজিদ শামসুজ্জোহা হলের ছাদে ছিলেন এবং সাজিদকে নির্যাতন করা হয়নি।
থিয়েটার বিভাগের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আমিরুজ্জামান বলেন, সাজিদকে কয়েকজন সিনিয়র সারারাত নির্যাতন করেছে বলে তারা শুনেছেন। তিনি বলেন, ‘পুরো ঘটনা জেনে আমরা আইনি ব্যবস্থা নেব।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর লিয়াকত আলী জানান, বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল টিম পর্যবেক্ষণ করছে। জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আরও পড়ুন: রাবি শিক্ষার্থীদের আবাসিক ও পরিবহন ফি মওকুফ
রাবিতে ভিসি সোবহানের দেয়া ১৩৮ জনের নিয়োগ স্থগিত
রাবির নতুন উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার
ঢাবির ‘ক’ ইউনিটের ফল প্রকাশ,পাসের হার ১০.৭৬
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান অনুষদভুক্ত ‘ক’ ইউনিটের অধীনে ২০২০-২০২১ শিক্ষাবর্ষে প্রথম বর্ষ স্নাতক (সম্মান) শ্রেণির ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয়েছে। এতে ১০ দশমিক ৭৬ শতাংশ শিক্ষার্থী পাস করেছেন।
বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের অধ্যাপক আব্দুল মতিন চৌধুরী ভার্চুয়াল ক্লাসরুমে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান আনুষ্ঠানিকভাবে এ ফল প্রকাশ করেন। এ সময় প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল, জীব বিজ্ঞান অনুষদের ডিন ও ‘ক’ ইউনিট ভর্তি পরীক্ষার প্রধান সমন্বয়কারী অধ্যাপক ড. মিহির লাল সাহা, অনলাইন ভর্তি কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মো. মোস্তাফিজুর রহমানসহ সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন।
এ বছর ‘ক’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় এক হাজার ৮১৫টি আসনের বিপরীতে ৯৪ হাজার ৫০৯ জন শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেন। তাদের মধ্যে ১০ হাজার ১৬৫ জন শিক্ষার্থী উত্তীর্ণ হয়েছেন।
আরও পড়ুন: ঢাবিতে সশরীরে ক্লাস-পরীক্ষা শুরু
শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার ওয়েবসাইট থেকে ফল জানতে পারবেন। এছাড়া তারা মোবাইল ফোন থেকে এসএমএস করেও ভর্তি পরীক্ষার ফল জানতে পারবেন।
ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ সকল শিক্ষার্থীকে আগামী ৯ নভেম্বর বিকাল ৩টা থেকে ২১ নভেম্বর বিকাল ৫টার মধ্যে ভর্তি পরীক্ষার ওয়েবসাইটে বিস্তারিত ফরম ও বিষয়ের পছন্দক্রম ফরম পূরণ করতে বলা হয়েছে।
এছাড়া ফলাফল নিরীক্ষণের জন্য শিক্ষার্থীরা নির্ধারিত ফি প্রদান সাপেক্ষে ৪ নভেম্বর থেকে ১০ নভেম্বরের মধ্যে জীব বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অফিসে আবেদন করতে পারবেন।
উল্লেখ্য, গত ১ অক্টোবর এ ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।
আরও পড়ুন: ঢাবিতে ‘আলী রীয়াজ স্নাতকোত্তর গবেষণা পুরস্কার ট্রাস্ট ফান্ড’ গঠন
সকল শিক্ষার্থীর জন্য খুলেছে ঢাবির হল, থাকবে না গণরুম
১১ দফা দাবিতে বিএম কলেজ অচলের হুমকি শিক্ষার্থীদের
বরিশাল সরকারি ব্রজমোহন (বিএম) কলেজের আবাসিক হল ফি বৃদ্ধির প্রতিবাদসহ ১১ দফা দাবি আদায়ে কলেজের সকল কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়ার হুমকি দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টায় কলেজ ক্যাম্পাসের জিরো পয়েন্টে আবাসিক হলের কয়েক’শ শিক্ষার্থী পথসভা করে। পরে নতুন বাজার-কেন্দ্রীয় নথুল্লাবাদ বাস টার্মিনাল সড়কে বিক্ষোভ মিছিল শেষে অধ্যক্ষ বরাবর দাবি সম্বলিত স্মারকলিপি দেয় শিক্ষার্থীরা। দাবি পূরণ না হলে ক্লাস বা আবাসিক হলে ফিরবে না বলে জানিয়েছে তারা। কলেজ প্রশাসনের ক্ষমতার আওতাধীন দাবি পূরণের জন্য আশ্বাস দিয়েছেন কলেজ অধ্যক্ষ প্রফেসর ড. মোহাম্মদ গোলাম কিবরিয়া।
আরও পড়ুন: নারায়ণগঞ্জে হকার হত্যা মামলার আসামি বরিশাল থেকে গ্রেপ্তার
পথসভায় শিক্ষার্থী আবু রায়হান বলেন, করোনাকালীন বন্ধের পর রহস্যজনক কারণে আবাসিক হলের ফি বৃদ্ধি করা হয়েছে। এমনিতেই হলগুলোর সংস্কার দরকার, ঝুঁকি নিয়ে আবাসিক হলে বসবাস করেও যদি অতিরিক্ত অর্থ গুণতে হয় তবে তা অমানবিক। তাই অতি দ্রুত হলগুলোকে বসবাস উপযোগী, বিদ্যুৎ লাইন সংস্কার,ডায়েনিং এর ব্যবস্থা, হলের নিরাপত্তায় প্রাচীর নির্মাণ করতে হবে। তাছাড়া আবাসিক হলের পুকুরগুলো হোস্টেলের নামে পুনরায় বরাদ্দ দিতে হবে।
তিনি বলেন, যদি ১১ দফা দাবির বাস্তবায়ন না হয় তবে শিক্ষার্থীরা আবাসিক হলে বা ক্লাসে যাবে না। দাবি আদায় না হলে কলেজের সকল কার্যক্রম বন্ধ করে কঠোর আন্দোলন করা হবে। এতে জেল-জুলুম আসলেও শিক্ষার্থীরা পিছপা হবে না বলে জানান তিনি।পথসভার পরে নতুন বাজার-কেন্দ্রীয় নথুল্লাবাদ বাস টার্মিনাল সড়কে বিক্ষোভ মিছিল শেষে প্রশাসনিক ভবনে গিয়ে কলেজ অধ্যক্ষ প্রফেসর ড. মোহাম্মদ গোলাম কিবরিয়ার কাছে ১১ দাবি সম্বলিত স্মারকলিপি দেন।
আরও পড়ুন: বরিশালে ঢাবির ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত
স্মারকলিপি গ্রহণের পর অধ্যক্ষ শিক্ষার্থীদের জানান,‘উত্থাপিত দাবি পূরণের সকল ক্ষমতা কলেজ প্রশাসনের হাতে নেই। কলেজ প্রশাসনের ক্ষমতার আওতাধীন দাবি পূরণের জন্য শিক্ষার্থীদের সাথে আলোচনায় বসা হবে বলে জানান অধ্যক্ষ।
গাজীপুরে বাস উল্টে নিহত ২
গাজীপুরের ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের মেম্বারবাড়ী এলাকায় মহাসড়কের উপর বাস উল্টে এক শিক্ষার্থীসহ দুইজন নিহত হয়েছে। দুর্ঘটনায় বেশ কয়েকজন বাস যাত্রী আহত হয়েছে।
সোমবার (১ নভেম্বর) বেলা সোয়া ১০টার দিকে এঘটনা ঘটে। নিহত কণা (২০) জেলা শ্রীপুর উপজেলার তালতলী গ্রামের মোস্তফা কামালের মেয়ে। সে গাজীপুরের সালনায় অবস্থিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে যাচ্ছিল। এঘটনায় নিহত অপর জনের পরিচয় এখনও জানা যায়নি।
পুলিশ, প্রত্যক্ষদর্শী ও বাসের অন্যান্য যাত্রীরা জানান, ময়মনসিংহ থেকে ছেড়ে আসা শৌখিন পরিবহন বাসটি মহাসড়কে বেপরোয়া ভাবে ঢাকার দিকে যাচ্ছিল। মহাসড়কের মেম্বারবাড়ি এলাকায় বাসটি পৌঁছালে সামনের দিকের অপর বাসটিকে বেপরোয়া গতিতে ওভার টেকিং করতে গিয়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে মহাসড়কের উপর উল্টে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই বাসের যাত্রী কণা ও অজ্ঞাত পথচারী নিহত হয়। এঘটনায় বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে। তাদের স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
মাওনা হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামাল হোসেন জানান, দুর্ঘটনা কবলিত বাসটিকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। মহাসড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।
আরও পড়ুন: কুমিল্লায় মাইক্রোবাস- লরির সংঘর্ষে নিহত ২
মাগুরায় বাস-ট্রাক মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহত ২
১৮ মাস বন্ধ থাকার পর ১০ নভেম্বর খুলছে বুয়েটের হল
১৮ মাসব্যাপী মহামারিজনিত কারণে বন্ধ থাকার পর বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) কর্তৃপক্ষ ১০ নভেম্বর থেকে স্নাতক ছাত্রদের জন্য তাদের ছাত্রাবাসগুলি পুনরায় খোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এছাড়াও, ১৩ নভেম্বর থেকে পুনরায় সশরীরে ক্লাস শুরু হবে।
রবিবার অনুষ্ঠিত একাডেমিক সেশন পর্যালোচনা কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়। উপাচার্য প্রফেসর সত্য প্রসাদ মজুমদারের সভাপতিত্বে সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন প্রো ভাইস চ্যান্সেলর, ফ্যাকাল্টি ডিন, বিভাগের চেয়ারম্যান ও হল প্রভোস্টরা।
অন্তত একটি ডোজ ভ্যাকসিন দেয়ার প্রমাণ দেখানোর পরে শুধুমাত্র স্নাতকের ছাত্রদের হলে প্রবেশের অনুমতি দেয়া হবে।তবে স্নাতকোত্তর ছাত্রদের শহীদ স্মৃতি হল পরে চালু করা হবে।
আরও পড়ুন: কিউএসের বিশ্বসেরা বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকায় নেই ঢাবি-বুয়েট
ইউনিভার্সিটির ছাত্রকল্যাণ (ডিএসডব্লিউ) এর পরিচালক ডা.মিজানুর রহমান ইউএনবিকে বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা অনলাইনের মাধ্যমে অনুষ্ঠিত হবে। এর পরে হল খোলা হবে।
ডা. মিজানুর রহমান আরও নিশ্চিত করেছেন যে, বুয়েটের প্রায় ৮২ শতাংশ শিক্ষার্থী ইতোমধ্যে একটি ডোজ করোনা ভ্যাকসিন পেয়েছে এবং প্রায় ৬৮ শতাংশ তাদের ভ্যাকসিনের ডোজ সম্পন্ন করেছে।
বাংলাদেশে করোনা প্রাদুর্ভাবের পর গত বছরের ১৮ মার্চ থেকে অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মতো বুয়েটের ছাত্রাবাসগুলোও বন্ধ ছিল।
আরও পড়ুন: চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের চ্যালেঞ্জ: ডিসিসিআই-বুয়েটের সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর
ঝরে পড়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা এখনও নিশ্চিত না: শিক্ষামন্ত্রী
শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, করোনা মহামারিতে ঠিক কত ভাগ শিক্ষার্থী ঝরে পড়েছে, তা এখনও নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। আমরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে ৯০ ভাগের বেশি শিক্ষার্থীর অ্যাসাইনমেন্ট জমা পাচ্ছি। তার মানে তারা ঝরে পড়েনি। এখনও অনেক বাবা-মা তাদের সন্তানদের স্কুলে পাঠানো নিয়ে ভয়ে আছেন। যার ফলে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতির হার এখনও শতভাগ নয়। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে গেলে শিক্ষার্থীদের উপস্থিত আরও বৃদ্ধি পাবে। তখন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো মুখরিত হয়ে উঠবে।
শনিবার দুপুরে চাঁদপুর শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে কমিউনিটি পুলিশিং ডে ২০২১ উপলক্ষে আলোচনা সভা, ক্রেস্ট ও সনদ প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
আরও পড়ুন: অসাম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক দেশ গড়তে মুক্তিযুদ্ধ করেছিলাম: শিক্ষামন্ত্রী
সেগুনবাগিচা থেকে ঢাবি শিক্ষার্থীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার
রাজধানীর সেগুনবাগিচায় একটি আবাসিক হোটেল থেকে আদনান সাকিব (২৫) নামে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) এক শিক্ষার্থীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
বুধবার দিবাগত রাত দেড়টায় শাহবাগ থানা পুলিশ তার লাশ উদ্ধার করে। পরে ময়নাতদন্তের জন্য ভোরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠায়।
নিহত আদনান সাকিব নীলফামারী ডিমলা উপজেলার উত্তর সোনাখুলি গ্রামের আব্দুল মালেকের ছেলে। তিনি ঢাবির আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র।
আরও পড়ুন: কৃষ্ণচূড়া গাছ কাটার প্রতিবাদে ঢাবি শিক্ষার্থীদের নতুন গাছ রোপণ
শাহবাগ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) পলাশ সাহা জানান, গতকাল রাতে সাকিবের নিখোঁজের বিষয়ে শাহবাগ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন তার স্ত্রী। এরপর তার ফোন নাম্বার ট্র্যাকিং করে লোকেশন পাওয়া যায় সেগুনবাগিচা কর্ণফুলী আবাসিক হোটেল। রাত দেড়টার দিকে হোটেলে গিয়ে রেজিস্ট্রেশনে তার নাম দেখা যায়। তখন হোটেলটির দ্বিতীয় তলায় ১০৭ নম্বর রুমে গিয়ে তাকে ডাকাডাকি করা হলেও কোন সাড়াশব্দ না পেয়ে একপর্যায়ে রুমের দরজা ভাঙা হয়। ভিতরে ঢুকে দেখা যায় ফ্যানের সাথে তার লাশ ঝুলছে।
স্বজন ও বন্ধুদের বরাত দিয়ে তিনি আরও জানান, সাকিব দীর্ঘদিন ধরে মানসিকভাবে সমস্যায় ভুগছিল। সবকিছুই ভুলে যেতেন তিনি। এসব কারণে হতাশাগ্রস্ত ছিলেন। গত পরশু সন্ধ্যার পর থেকে তার পরিবার তার সাথে ফোনে যোগাযোগ করতে পারছিল না। এজন্য গতকাল বুধবার রাতে থানায় জিডি করেন তারা।
আরও পড়ুন: ঢাবি শিক্ষার্থীর রহস্যজনক মৃত্যু
পুলিশ জানায়, হোটেলে রেজিস্ট্রেশনে দেখা গেছে পরশু সন্ধ্যায় আদনান ওই আবাসিক হোটেলের ১০৭ নম্বর রুম ভাড়া নেয় এবং হোটেল কর্তৃপক্ষকে ভার্সিটির ভর্তি পরীক্ষা দিতে হোটেলে উঠেছে বলে জানিয়েছে। তার রুমে পুলিশ একটি সুইসাইডাল নোট উদ্ধার করেছে। যাতে তার মৃত্যুর জন্য কারও দোষ নেই বলে উল্লেখ আছে।
প্রাথমিকভাবে এটা আত্মহত্যা মনে হলেও বিস্তারিত তদন্ত করে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
ফেসবুকে চাকরির সুযোগ পেলেন শাবিপ্রবির দুই শিক্ষার্থী
জনপ্রিয় সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং ও টেক্সট জায়ান্ট সাইট ফেসবুকে চাকরির সুযোগ পেলেন সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের(শাবিপ্রবি) কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের দুই শিক্ষার্থী।
চাকরির সুযোগ পাওয়া মওদুদ আহমেদ শাহরিয়ার ও এম. নাজিম উদ্দিন দুজনই বিশ্ববিদ্যালয়ের সিএসই বিভাগের ২০১৩-১৪ বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন।জানা যায়, চাকরির বিষয়টি ফেসবুক কর্তৃপক্ষ ই-মেইলের মাধ্যমে নিশ্চিত করেছেন। মওদুদ আহমেদ শাহরিয়ার ও এম.নাজিম উদ্দিন দুজনই ইংল্যান্ডের ফেসবুকের ইউরোপিয়ান সদর দপ্তরে সফটওয়ার প্রকৌশলি হিসেবে যোগদান করবেন। চলতি বছরের জুন মাসে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ যোগাযোগ করেন তাদের সাথে। বেশ কিছু ধাপে ভাইবার মাধ্যমে দক্ষতা যাচাই প্রক্রিয়া করে ফেসবুকে যোগদানের জন্য তাদেরকে নিয়োগের প্রস্তাবপত্র পাঠানো হয়। কোনো প্রকার জটিলতা না দেখা দিলে ২০২২ সালে ফেসবুকের এই দপ্তরে যোগদান করবেন বলে জানিয়েছেন দুজনেই।
আরও পড়ুন: ওরা আর কখনো শাবিপ্রবি ক্যাম্পাসে ফিরবে নানিজের অনুভূতি জানিয়ে মওদুদ আহমেদ শাহরিয়ার বলেন, বিষয়টা আমার জন্য অবশ্যই খুশির খবর। ফেসবুকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের, বিভিন্ন সংস্কৃতির সফটওয়্যার প্রকৌশলীদের সাথে কাজ করার অভিজ্ঞতা হবে। আশা করি এই অভিজ্ঞতা পরবর্তীতে আরও বড় কাজে সাহায্য করবে। ছাত্র অবস্থায় বিশ্ববিদ্যালয়ে কম্পিটিটিভ প্রোগ্রামিংয়ের সাথে যুক্ত ছিলাম, ওই সময় অর্জিত দক্ষতা ফেসবুকের ভাইভায় উত্তীর্ণ হতে সাহায্য করেছে। যথাযথ সহায়তা পেলে বাংলাদেশ থেকে আরও অনেক শিক্ষার্থী বিশ্বের বড় সফটওয়্যার কোম্পানিগুলোতে কাজ করার সুযোগ পাবে বলে মনে করি।এম. নাজিম উদ্দিন বলেন, আমি খুবই আনন্দিত গুগল ও ফেসবুকের মতো পৃথিবীর টপ টেক জায়ান্ট থেকে অফার পেয়ে। সবকিছু বিবেচনায় আমি ফেসবুকের অফার গ্রহণ করেছি। প্রস্তুতির সময়টুকু মোটেই সহজ ছিল না। আমি ধন্যবাদ জানাতে চাই আমার মা-বাবা, বন্ধু, সিনিয়রসহ সকলকে যারা আমাকে এই লম্বা প্রস্তুতির সময়টুকুতে সহযোগিতা করেছে, সাপোর্ট দিয়েছে। সত্যিকার অর্থে, ২০১৪ সালে যখন প্রোগ্রামিং শুরু করি, তখন থেকেই স্বপ্ন ছিল পৃথিবীর টপক্লাস ইঞ্জিনিয়ারদের সাথে টেক জায়ান্টে জব করার।
আরও পড়ুন: করোনার দীর্ঘ ছুটিতে নতুন আঙ্গিকে শাবিপ্রবির চিকিৎসা কেন্দ্রতিনি আরও বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় শেষ হওয়ার পর থেকেই প্রস্তুতি নেয়া শুরু করি গুগল, ফেসবুকের জন্য। প্রথম কয়েকবার আবেদন করে ব্যর্থও হই। কিন্তু সবসময় ই নিজের উপর বিশ্বাস ছিল। অবশেষে এই বছর জুন মাসে ফেসবুক ও গুগল থেকে যোগাযোগ করে তাদের প্রতিষ্ঠানগুলোতে ভাইভা দেওয়র জন্য। প্রায় দুই মাসব্যাপী ছয়টা করে ইন্টারভিউ নেয় গুগল ও ফেসবুক। সবগুলো ইন্টারভিউ ভালো হওয়ার পর দুই কোম্পানি থেকেই অফার করে। সবকিছু বিবেচনায় আমি ফেসবুকের লন্ডন অফিসের অফার গ্রহণ করি। কোনো জটিলতা না থাকলে আগামী ফেব্রুয়ারিতে যোগদান করব।