আন্দোলন
পোশাক শ্রমিকদের আন্দোলনে বিএনপির কালো হাত আছে: কাদের
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, পোশাক কারখানায় শ্রমিক আন্দোলনে স্পষ্টত বিএনপি ও তার দোসরদের কালো হাত আছে।
শুক্রবার (১০ নভেম্বর) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে যৌথ সভায় ওবায়দুল কাদের এসব কথা বলেন।
উসকানি ও গুজবে নিরীহ শ্রমিকদের বিভ্রান্ত না হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, শ্রমিক অধিকাংশ দাবি সমাধান হয়ে গেছে। বাকীটা সমাধানে শ্রমিকেরা এগিয়ে আসবেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিষয়টি মনিটরিং করছেন।
শ্রমিকদের কাজে যোগদানের আহ্বান জানিয়ে সেতুমন্ত্রী বলেন, শ্রমিকেরা নিজেদের ক্ষতি নিজেরা করবে না। শ্রমিকেরা বিভ্রান্ত হলে ক্ষতিটা দেশের এবং শ্রমিকের নিজের হবে। গুজব রটনাকারীদের ক্ষতি হবে না।
আরও পড়ুন: বিএনপি নেতৃত্বাধীন শক্তিকে প্রতিহত ও পরাজিত করতে হবে: কাদের
কাদের বলেন, বিএনপির নেতৃত্বে বিরোধীদলের আন্দোলনের নামে চোরাগোপ্তা হামলাকে প্রতিরোধ করতে হবে এবং নির্বাচনের পরিবেশ বজায় রাখতে হবে। মনে রাখতে হবে ভিন্নমতের প্রতিকূল স্রোতের সঙ্গে লড়াই করে যাচ্ছি আমরা।
তিনি বলেন, আজকে বিভিন্নভাবে সরকার বিরোধী চক্রান্ত চলছে, দেশে বিদেশে সরকারবিরোধী তৎপরতা চলছে।
কাদের আরও বলেন, ২৮ তারিখে তাদের(বিএনপি) আন্দোলন ব্যর্থতায় পর্যবসিত- এটা বলা যায়। এখন স্বাভাবিক আন্দোলন ব্যর্থ হওয়ার পর তারা অস্বাভাবিক পথে চলতে শুরু করেছে। তাদের পুরনো রাজনীতির অভ্যাস অগ্নিসন্ত্রাসের উপাদান যুক্ত করেছে। এসব করে তারা শেখ হাসিনাকে হটানোর জন্য সর্বশেষ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। প্রকাশ্যে পারছে না, চোরাগোপ্তা হামলা করছে।
যৌথসভায় উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ, আফম বাহাউদ্দীন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, মির্জা আজম, সুজিত রায় নন্দী, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার আব্দুস সবুরসহ মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগ এবং সহযোগী সংগঠনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকরা।
আরও পড়ুন: পাড়া-মহল্লায় আগুনসন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে জনপ্রতিরোধ গড়ে তুলুন: তথ্যমন্ত্রী
গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে: রিজভী
গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
বিএনপি ও সমমনা দলগুলোর ডাকা ৪৮ ঘণ্টার অবরোধের মধ্যে বুধবার ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘দল যেসব কর্মসূচি ঘোষণা করবে, আমাদের নেতা-কর্মীরা তা পালন করবে। আমাদের গন্তব্য হয় জেলখানা অথবা মহাসড়ক।
আরও পড়ুন: পদত্যাগ করে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনে অংশ নিন: প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে রিজভী
রিজভী বলেন, ‘এই দুইয়ের মাঝখানে কিছুই নেই।’
তিনি আরও বলেন, ‘তারা আমাদের জেলে নিয়ে যেতে পারে, নানাভাবে আঘাত করতে পারে, নির্যাতন করতে পারে, কিন্তু আমরা সবকিছু মেনে নেব এবং গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার না হওয়া পর্যন্ত এই যাত্রা অব্যাহত থাকবে।’
ঢাকা মহানগর পূর্ব ছাত্রদলের সদস্য সচিব আল-আমিনকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সাদা পোশাকের সদস্যরা তুলে নিয়েছে উল্লেখ করে রিজভী বলেন, ‘আমাদের একজন ছাত্রনেতা কোথায় আছেন বা কেমন আছে তা আমরা জানি না। শেখ হাসিনার আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও তাদের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো প্রতিদিন এসব কাজ করছে।’
তিনি বলেন, বিএনপির নেতা-কর্মীরা যাতে আন্দোলন চালিয়ে যেতে না পারে সেজন্য সামগ্রিক নৈরাজ্যকর ও ভীতিকর পরিবেশ সৃষ্টি করা হচ্ছে, কিন্তু সরকার ব্যর্থ হবে।
গাজীপুরের কোনাবাড়ীতে উন্নত মজুরির দাবিতে আন্দোলনরত গার্মেন্টস শ্রমিকদের উপর পুলিশের হামলায় এক নারী শ্রমিক নিহত হওয়ার ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান রিজভী।
তিনি দাবি করেন, দেশব্যাপী অবরোধের মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় ৫১৫ জনের বেশি নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং ১৮টি মামলায় ১ হাজার ৯২০ জনকে আসামি করা হয়েছে। ‘২৮ অক্টোবরের মহাসমাবেশের পর থেকে এ পর্যন্ত ১২ হাজার ৪৪৫ জন নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার ও ৫৭৯টি মামলা করা হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘এত নিপীড়ন, নির্যাতন ও নাশকতার মধ্যে দুই দিনের অবরোধের প্রথম দিন চলছে। এই কর্মসূচি সফল হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘সারাদেশে দূরপাল্লার কোনো যানবাহন চলাচল করেনি। কারণ তারা যাত্রী পায়নি। তার মানে আমাদের কর্মসূচির প্রতি মানুষের সমর্থন রয়েছে।’
আরও পড়ুন: রাজপথে বিরোধী দলের ব্যাপক উপস্থিতি সরকারকে বিভ্রান্ত করছে: রিজভী
টিক্কা ও নিয়াজির চরিত্রে অভিনয় করছেন কাদের: রিজভী
বিজয় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে: রিজভী
বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, বেশ কয়েকজন নেতাকে গ্রেপ্তার করা হলেও ‘বিজয় অর্জিত না হওয়া পর্যন্ত’ সরকারের পতনের জন্য বিএনপির এক দফা আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।
তিনি বলেন, ‘বিজয় না হওয়া পর্যন্ত এই আন্দোলন অব্যাহত থাকবে। রবিবার সকাল থেকে আমাদের ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ শান্তিপূর্ণভাবে পালন করা হবে।’
শুক্রবার (৩ নভেম্বর) ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি নেতা এ কথা বলেন।
এদিকে অবরোধ পালনের সময় সরকারের কোনো প্ররোচনায় সাড়া না দিতে বিএনপি ও সমমনা বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান।
আরও পড়ুন: বিএনপির ঢাকা উত্তরের সদস্য সচিব আমিনুলসহ ৪ জন গ্রেপ্তার: রিজভী
তিনি আরও বলেন, জনগণের ভোটাধিকার পুনরুদ্ধারের জন্য তারা আন্দোলন করছেন, যাতে তারা নির্ভয়ে তাদের পছন্দের প্রার্থীকে নির্বাচিত করতে পারেন।
তিনি বলেন, জনগণের ন্যায়সঙ্গত দাবি আদায়ের জন্য এটি একটি আদর্শ আন্দোলন। যারা গণতন্ত্র ও স্বাধীনতার পক্ষে এবং স্বৈরাচারী শাসনের বিরুদ্ধে, তারা সবাই এই গণতান্ত্রিক আন্দোলনকে সমর্থন করবে এবং এর সঙ্গে থাকবে।
রিজভী বলেন, নির্বাচনের প্রাক্কালে গভীর রাতে ভোট কারচুপির মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদের শেষ অধিবেশন বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত হয়েছে।
তিনি বলেন, এই সংসদের সংসদ সদস্যরা আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক সুবিধা অর্জনের জন্য বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান ও তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার ও অপপ্রচার চালাচ্ছেন।
রিজভী বলেন, ‘তারা সাধারণ মানুষের জন্য ভালো কিছু করেনি।’
তিনি বলেন, ‘২৭২ কার্যদিবসের এই সংসদ আওয়ামী লীগের গুঞ্জনের আস্তানায় পরিণত হয়েছে। গত পাঁচ বছরে এই অবৈধ পার্লামেন্টে প্রায় ১৬৫টি বিল পাস হয়েছে এবং এর প্রায় সবগুলোই গণবিরোধী। এরপর তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের ভোটে নির্বাচিত সংসদ সদস্যদের মাধ্যমে এই অবৈধ সংসদে গৃহীত অবৈধ আইনগুলো বুড়িগঙ্গা নদীতে নিক্ষেপ করা হবে।
একাদশ জাতীয় সংসদের কার্যক্রম পরিচালনায় বিপুল পরিমাণ অর্থের অপচয় হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
রিজভী অভিযোগ করেন, ক্ষমতাসীন দল একতরফা নির্বাচনের মাধ্যমে আবারও ক্ষমতায় টিকে থাকার চেষ্টা করছে।
তিনি বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন, পুলিশ ও প্রশাসন তাদের সব শক্তি নিয়ে মাঠে রয়েছে। আমরা সারা দেশ থেকে খবর পাচ্ছি যে, শেখ হাসিনা ও তার সরকার প্রশাসনকে ব্যবহার করে বিএনপিকে নির্বাচন থেকে দূরে রাখতে নতুন নোংরা মিশন শুরু করেছে।’
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রায় ২ কোটি সুবিধাভোগী ও কার্ডধারীদের সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী কর্মসূচির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে।
তিনি বলেন, ‘গত কয়েকদিন ধরে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য ও নেতারা প্রতিটি নির্বাচনী এলাকার প্রতিটি উপজেলায় সরকারের বিভিন্ন বিভাগ থেকে সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী প্রকল্পের আওতায় প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সুবিধাপ্রাপ্তদের সঙ্গে বৈঠক করছেন। ডিসি, এসপি, ইউএনও ও ওসিরা বৈঠকে যোগ দিচ্ছেন। আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকা মার্কায় ভোট দেওয়ার জন্য জনগণকে উদ্বুদ্ধ করাই এসব সমাবেশের উদ্দেশ্য।’
আওয়ামী লীগের নির্বাচনী প্রতীক নৌকা।
রিজভী বলেন, জনগণকে হুমকি দেওয়া হচ্ছে যে, আগামী নির্বাচনে ভোটকেন্দ্রে না গেলে এই সুবিধা গ্রহণের জন্য তারা যে কার্ড ব্যবহার করেন তা বাতিল করা হবে।
তিনি বলেন, ‘ভোটকেন্দ্রে বিদেশিদের সন্তোষজনক ভোটার উপস্থিতি দেখানোর জন্য শেখ হাসিনা এই ভয়ানক কৌশল নিয়েছেন।’
রিজভী বলেন, শুক্রবার বিকাল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত মাত্র ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে বিএনপির ২৯২ জন নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: সরকারের কোনো কৌশলই বিএনপির আন্দোলন দমন করতে পারবে না: রিজভী
বিএনপি নেতা মুজিবুর রহমান সারোয়ারকে আটক করেছে পুলিশ: রিজভী
সরকারের কোনো কৌশলই বিএনপির আন্দোলন দমন করতে পারবে না: রিজভী
বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, বর্তমান সরকারের পতন আসন্ন। বিরোধী দলের চলমান এক দফা আন্দোলন দমনে তাদের কোনো কৌশল কাজ করবে না।
এক বিবৃতিতে তিনি আরও বলেন, অবরোধ কর্মসূচিতে ভীত হয়ে সরকার বিএনপির নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তার করছে, রিমান্ডে নিয়ে নিপীড়ন চালাচ্ছে।
আরও পড়ুন: আব্বাস ও আলালের গ্রেপ্তারের নিন্দা রিজভীর
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীকে গ্রেপ্তারের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন তিনি।
তিনি বলেন, 'বিএনপি দেশের সবচেয়ে বড় ও জনপ্রিয় রাজনৈতিক দল এবং জনগণের সঙ্গে এর সম্পর্ক রয়েছে। সুতরাং আন্দোলন দমনে আপনাদের (সরকারের) কোনো কৌশল সফল হবে না।
তিনি আরও বলেন, গণহারে গ্রেপ্তারের মাধ্যমে বিএনপির নেতৃত্ব দুর্বল করা যাবে না। যিনি কারাগার থেকে বের হবেন তিনিই আন্দোলনের নেতৃত্ব দেবেন।
বিএনপির এই নেতা বলেন, আন্দোলনের মাধ্যমে সরকারের পদত্যাগ ও নির্দলীয় নির্বাচনকালীন সরকার ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার দাবি আদায়ে জনগণ বদ্ধপরিকর। এই অবৈধ সরকারের শিগগিরই পতন ঘটবে।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার একতরফাভাবে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন করে আবারও রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখলের চেষ্টা করছে। এই ঘৃণ্য উদ্দেশ্য অর্জনের জন্য তারা বিএনপির শীর্ষ নেতাদের কারারুদ্ধ করার ঘৃণ্য খেলায় লিপ্ত হয়েছে।
রিজভী অভিযোগ করেন, ফ্যাসিবাদী সরকার বিএনপির নেতৃত্ব নির্মূল করতেই দলের জ্যেষ্ঠ নেতাদের গ্রেপ্তার করছে। জ্যেষ্ঠ নেতাদের ৮/১০ দিনের রিমান্ডে নিয়ে অবর্ণনীয় নির্যাতন করা হচ্ছে।
সরকার ভেবেছিল, এভাবে গ্রেপ্তার ও নির্যাতন করা হলে বিএনপির আন্দোলন দমন করা হবে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীকে গুলশানের একটি বাসা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: বিএনপি নেতা মুজিবুর রহমান সারোয়ারকে আটক করেছে পুলিশ: রিজভী
বিএনপির ঢাকা উত্তরের সদস্য সচিব আমিনুলসহ ৪ জন গ্রেপ্তার: রিজভী
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মহাসমাবেশ শুক্রবার
সংসদ ভেঙে দিয়ে জাতীয় সরকারের অধীনে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজন, সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন পদ্ধতির প্রবর্তন এবং বর্তমান নির্বাচন কমিশন বাতিলের দাবিতে শুক্রবার (৩ নভেম্বর) মহাসমাবেশ করবে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ।
বৃহস্পতিবার (২ নভেম্বর) বেলা ১২টায় পুরানা পল্টনের কার্যালয়ে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এক সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানান দলটির নায়েবে আমির মুফতী ফয়জুল করীম।
সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে মহাসমাবেশ সফলে প্রশাসন, পরিবহন মালিক শ্রমিক, সাংবাদিক সকলের সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, আমাদের কাছে তথ্য এসেছে যে কোথাও কোথাও প্রশাসন ও আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে নেতা-কর্মীদের ভয়ভীতি দেখিয়ে মহাসমাবেশে না আসার জন্য চাপ প্রয়োগ করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, যেখানে প্রশাসনের অনুমতি হয়েছে, সেখানে ভয়ভীতি প্রদর্শন মেনে নেয়া হবে না।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সরকার পতনে মহাসমাবেশ থেকে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
আরও পড়ুন: রাজধানীতে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের বিক্ষোভ সমাবেশ
তিনি সারাদেশে সকল জেলা, থানা, ইউনিয়ন ওয়ার্ডের ইসলামী আন্দোলন এবং সকল সহযোগী সংগঠনের সকল নেতাকর্মী, ছাত্র-শিক্ষক, শ্রমজীবী, পেশাজীবীসহ সকল শ্রেণী পেশার মানুষকে আগামীকালের মহাসমাবেশে উপস্থিত হয়ে সমাবেশকে সফল করার আহবান জানান।
বিরোধী দলের কর্মসূচিতে আহত হয়ে মৃত্যুবরণকারী সাংবাদিক, পথচারী ও পুলিশের মৃত্যুতে গভীর দুঃখ প্রকাশ করে তাদের মাগফিরাত কামনা করে মুফতী ফয়জুল করীম বলেন, আমাদের মহাসমাবেশ হবে সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ। সংঘাত সহিংসতা কাম্য নয়।
মহাসমাবেশ নিয়ে কোন প্রকার অপপ্রচার এবং বিভ্রান্তিতে কান না দেয়ার আহ্বান জানিয়ে ফয়জুল করীম বলেন, আগামীকালের মহাসমাবেশ স্মরণকালের সর্ববৃহৎ জনসমুদ্রে পরিণত হবে। দেশবাসীকে কোন অপপ্রচার ও বিভ্রান্ত না হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
দেশ, ইসলাম ও মানবতার পক্ষে এ সমাবেশ গুরম্নত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখবে উল্লেখ করে, তিনি বলেন সাম্প্রতিক সময়ের আন্দোলনে যারা আহত, নিহত হয়েছে তাদের প্রতি সমবেদনা জানান। অন্যায়ভাবে যে সকল রাজনৈতিক নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে, অবিলম্বে তাদের মুক্তিরও দাবি জানান তিনি।
আরও পড়ুন: মহানবীকে নিয়ে অবমাননাকর মন্তব্য: ইসলামী আন্দোলনের গণমিছিলে পুলিশের বাধা
নির্বাচন কমিশনের সংলাপে অংশ করবেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যেখানে আমরা নির্বাচন কমিশন বাতিলের দাবি করছি, যে নির্বাচন কমিশন প্রার্থীর মৃত্যু কামনা করেন, সে নির্বাচন কমিশনের সংলাপে অংশগ্রহণের প্রশ্ন কিভাবে আসতে পারে?
বিরোধী দলের কর্মসূচির প্রতি সমর্থন আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিরোধী দলের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচির প্রতি আমাদের সমর্থন আছে।
জাতীয় সরকারের রূপরেখা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধির সমন্বয়ে জাতীয় সরকার গঠিত হবে।
সংবাদ সম্মেলনটি সঞ্চালনা করেন সংগঠনটির যুগ্ম মহাসচিব গাজী আতাউর রহমান।
আরও পড়ুন: সিলেট ও রাজশাহী সিটি নির্বাচন বয়কটের ঘোষণা ইসলামী আন্দোলনের
সরকার পতনের আন্দোলন নভেম্বরেই চূড়ান্ত পর্যায়ে নিতে চায় বিএনপি
ক্ষমতাসীন দলের ভয়াবহ পরিণতির হুঁশিয়ারির মধ্যে বিএনপি ও অন্যান্য বিরোধী দলগুলো সরকার পতনের জন্য কঠোর কর্মসূচি নিয়ে আন্দোলনের চূড়ান্ত পর্যায় শুরু করতে যাচ্ছে। ফলে আগামী মাসের শুরুতে রাজনৈতিক পরিস্থিতি উত্তপ্ত হতে পারে।
বিএনপির একাধিক জ্যেষ্ঠ নেতা ইউএনবিকে বলেন, আগামী ২৮ অক্টোবর তাদের দল ঢাকায় জনসভা করতে পারে। সেই জনসভা থেকেই তারা রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ সরকারি অফিস অভিমুখে পদযাত্রা অথবা অফিস ঘেরাও, সচিবালয় বা নির্বাচন কমিশনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন এবং ঢাকার প্রবেশপথ অবরোধের মতো কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করতে পারে।
তবে আগামী ২৩ সেপ্টেম্বর বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে কর্মসূচি চূড়ান্ত করা হবে বলে জানিয়েছেন তারা।
বিএনপির নেতারা বলেন, তাদের কর্মসূচির মূল লক্ষ্য হচ্ছে আগামী নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা রোধ করা এবং অন্তবর্তীকালীন নিরপেক্ষ সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে সরকারকে বাধ্য করা।
এদিকে, সরকারের পদত্যাগ এবং বিদেশে চিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তিসহ এক দফা দাবিতে বুধবার রাজধানীতে জনসভা করবে বিএনপি।
সমাবেশ থেকে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আগামী ২৮ অক্টোবর ঢাকায় মহাসমাবেশের ঘোষণা দেবেন। কঠোর কর্মসূচি এড়ানোর জন্য তাদের এক দফা আন্দোলন মেনে নিতে সরকারকে শেষ সতর্কবার্তা দেওয়ার কথাও রয়েছে তার।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএনপির স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য ইউএনবিকে বলেন,নভেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করতে পারে নির্বাচন কমিশন। তাই তফসিল ঘোষণার অন্তত দুই সপ্তাহ আগে আমরা কঠোর কর্মসূচি শুরু করতে চাই। ‘আমরা মনে করি, আমাদের আন্দোলন ইতিবাচক ফল বয়ে আনবে এবং নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার জন্য কঠিন পরিস্থিতি তৈরি করবে।’
আরও পড়ুন: চূড়ান্ত আন্দোলনের জন্য প্রস্তুত হোন, পেছনে ফিরে তাকানোর সময় নেই: ফখরুল
যেসব রাজনৈতিক দল যুগপৎ আন্দোলন করছে, তাদের সঙ্গে বৈঠকে বসে চূড়ান্ত পর্যায়ের আন্দোলনের সম্ভাব্য কর্মসূচি নিয়ে মতামত নিয়েছেন বিএনপি নেতারা।
বেশিরভাগ দলই সচিবালয় ও নির্বাচন কমিশন (ইসি) ঘেরাও বা গুরুত্বপূর্ণ কার্যালয়ের দিকে পদযাত্রার মতো কর্মসূচির পরামর্শ দিয়েছে।
এছাড়া রাজধানীসংলগ্ন জেলা গুলো থেকে ঢাকা অভিমুখে রোড মার্চ, ইসি ও সুপ্রিম কোর্ট অভিমুখে পদযাত্রা এবং শেষ পর্যায়ে হরতাল-অবরোধসহ আরও কিছু কঠোর কর্মসূচির সুপারিশও করা হয়।
অন্যদিকে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছেন, বিএনপি যদি রাজধানী অবরোধের মতো কর্মসূচি নেয়, তাহলে তাদের ভয়াবহ পরিণতি ভোগ করতে হবে।
আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এক যুব সমাবেশে ওবায়দুল কাদের বলেন,‘আমরাও প্রস্তুত। বিএনপি ঢাকা অবরোধের চেষ্টা করলে তাদের অবরুদ্ধ করা হবে। বিএনপিকে অবরুদ্ধ করে রাখা হবে এবং পালানোর কোন পথ থাকবে না। তারা (হেফাজত কর্মীরা) কি রাতের অন্ধকারে শাপলা চত্বর থেকে পালিয়ে যায়নি? বিএনপিকে আরও ভয়াবহ পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হবে।’
তিনি আরও অভিযোগ করেন, গত বছরের ডিসেম্বরের মতো এবারও সারাদেশ থেকে বিএনপির নেতা-কর্মীরা ঢাকায় জড়ো হতে শুরু করেছে। ‘হোটেলের সব কক্ষ বুক করা হয়েছে। তারা ফ্ল্যাট ভাড়া নিচ্ছেন। তারা আবারও সরকারকে উৎখাত করার স্বপ্ন দেখছে।’
আরও পড়ুন: আওয়ামী লীগ দেশও হারিয়েছে, বিদেশও হারিয়েছে: আমীর খসরু
তবে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, দুর্গাপূজার পর ঢাকাকে কেন্দ্র করে কর্মসূচি দিয়ে চূড়ান্ত আন্দোলন শুরু করা হবে।
তিনি বলেন, তাদের একমাত্র লক্ষ্য হচ্ছে একটি অপ্রতিরোধ্য আন্দোলনের মাধ্যমে একটি বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচনের স্বার্থে বর্তমান সরকারের পতন নিশ্চিত করা।
তিনি বলেন, বিরোধী দলীয় নেতা-কর্মীরা নতুন উদ্যম ও আকাঙ্ক্ষা নিয়ে চূড়ান্ত আন্দোলনে অংশ নেবেন এবং যেকোনো মূল্যে তা সফল করবেন।
বিএনপি নেতা বলেন, 'ইনশাল্লাহ আমরা আমাদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মাধ্যমে এই ভয়ানক ফ্যাসিবাদী সরকারকে পরাজিত করতে সক্ষম হব।
আগামী নির্বাচন সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য করতে নিরপেক্ষ সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করে ক্ষমতা ছাড়ার আহ্বান জানান তিনি।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বলেন, দুর্গাপূজার পর কঠোর কর্মসূচি দিয়ে আন্দোলনের চূড়ান্ত পর্ব শুরু করতে প্রস্তুত তারা।
তিনি বলেন, বর্তমান সরকারের অধীনে আগামী নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার যে কোনো পদক্ষেপ প্রতিহত করতে আমরা বিভিন্ন কঠোর কর্মসূচি নিয়ে রাজপথে থাকব। নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন করতে হবে। আমরা অবশ্যই বিজয়ী হব'।
বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেছেন, সফল আন্দোলনের মাধ্যমে দাবি আদায়ে সর্বাত্মক প্রস্তুতি নিতে বিরোধী দলগুলোর সঙ্গে বৈঠক করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, ' কিভাবে আমাদের আন্দোলনকে শক্তিশালী করা যায় এবং সম্ভাব্য কর্মসূচি গ্রহণ করা যায়, তা নিয়ে আমরা বিরোধী দল ও জোটের সঙ্গে আলোচনা করছি। আমরা আত্মবিশ্বাসী যে আমরা আমাদের আন্দোলন জোরদার করার মাধ্যমে সরকারকে আমাদের দাবি মেনে নিতে বাধ্য করতে সক্ষম হব।
সমমনা দলগুলোর পাশাপাশি তারা ইসলামী দলগুলোর সঙ্গেও তাদের আন্দোলনে যোগ দিতে এবং তা সফল করতে আলোচনা করছে।
আরও পড়ুন: পর্দার আড়ালে আসলে কিছুই হয়নি: ফখরুল
বিএনপির আন্দোলনে জনসমর্থন নেই: হাছান মাহমুদ
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বক্তব্য দেখে মনে হচ্ছে পশ্চিমা দেশগুলো ইসরাইলের মতো বিএনপিকে উৎসাহিত করছে, কিন্তু বাস্তবে বিএনপির তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিকে কেউ সমর্থন করে না।
তিনি বলেন, পশ্চিমা দেশগুলোর অবস্থান পরিষ্কার, তারা ইসরায়েলকে সমর্থন করে। একদিকে পশ্চিমা দেশগুলো মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত ইসরাইলকে উৎসাহ দিচ্ছে, অন্যদিকে মির্জা ফখরুল বলছেন, তারাও (পশ্চিমা দেশগুলো) তাদের সমর্থন করছে। কিন্তু বিএনপির আন্দোলনে কারো সমর্থন নেই।
আরও পড়ুন: হেরে যাওয়ার ভয়ে বিএনপি নির্বাচন বর্জন করতে চায়: হাছান মাহমুদ
সচিবালয়ে সমসাময়িক বিষয় নিয়ে সোমবার (১৬ অক্টোবর) গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
বিএনপির বিদেশ নির্ভরতার কথা উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, জনগণের ওপর বিএনপির কোনো আস্থা নেই। তাই জনগণের দিকে না তাকিয়ে বিএনপি এখন কাকের মতো দূরদেশ থেকে কে কী বলেছে, তার দিকে তাকিয়ে আছে।
নির্বাচনের আগে সংলাপের বিষয়ে বিদেশি সুপারিশের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, জনগণই ক্ষমতার মালিক। তারাই সিদ্ধান্ত নেবে কে দেশ চালাবে আর কে চালাবে না।
বন্ধুপ্রতীম দেশগুলোর যে কেউ যেকোনো কিছু সুপারিশ করতে পারে, কিন্তু মানুষ কী চায় সেটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচনকালীন সরকার গঠনের কোনো প্রয়োজন বা বাধ্যবাধকতা নেই।
তিনি বলেন, চলমান সরকার নির্বাচনকালীন সরকার হিসেবে কাজ করবে।
ফিলিস্তিন ইস্যুতে বিএনপির নীরবতার বিষয়ে জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ইসরাইল ফিলিস্তিনিদের হত্যা করছে। কিন্তু মানবতাবিরোধী এই অপরাধের বিষয়ে বিএনপি নীরব।
একটি বড় শক্তি অসন্তুষ্ট হতে পারে, তাই নীরব থেকে বিএনপি আসলে এই বর্বরতা, নৃশংসতা, যুদ্ধাপরাধ ও ইসরায়েলের পক্ষ নিয়েছে।
আরও পড়ুন: ফিলিস্তিনের বিষয়ে মত প্রকাশের স্বাধীনতা খর্ব করছে ইউরোপীয় দেশগুলো : ড. হাছান মাহমুদ
খালেদা জিয়ার সুস্থতার জন্য দোয়া কামনা হাছান মাহমুদের
সঠিক পথে আন্দোলন, এবার ভোটার ছাড়া নির্বাচন হবে না: ফখরুল
তাদের আন্দোলন সঠিক পথে রয়েছে দাবি করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বাংলাদেশে এবার ভোটার ছাড়া কোনো নির্বাচন হবে না।
রবিবার (১৫ অক্টোবর) এক সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন।
ফখরুল বলেন, এটা অনস্বীকার্য যে- গণতন্ত্রের প্রতি পশ্চিমা দেশগুলোর অঙ্গীকার নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচনের জন্য চলমান আন্দোলন পরিচালনায় তাদের দলীয় নেতা-কর্মীদের উৎসাহিত করেছে।
আরও পড়ুন: আওয়ামী লীগের অধীনে নির্বাচন শেয়ালের কাছে মুরগি বর্গা দেওয়ার মতো: ফখরুল
তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী গতকাল (শনিবার) যা বলেছেন, তার মানে এমন- তোরা যে যা বলিস ভাই আমার সোনার হরিণ চাই। তার মানে আমেরিকা, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, রাজনৈতিক দলগুলো যাই বলুক না কেন, তিনি ক্ষমতায় থাকতে চান।’
তিনি বলেন, ক্ষমতা দখল ও রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যবহার করে বেআইনিভাবে ক্ষমতায় থাকা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একই কায়দায় আগামী নির্বাচন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। ‘রাজনৈতিক সংকটের পেছনে এটাই কারণ।’
তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনা যদি ভোটার ছাড়া আগামী নির্বাচন করতে চান, তাহলে এবার তা হবে না। আপনি ২০১৪ ও ২০১৮ সালের মতো নির্বাচন ২০২৪ সালে করতে পারবেন না। এটা এবার সম্ভব হবে না, কারণ জনগণ এবার আপনাকে প্রতিহত করার জন্য ঘুরে দাঁড়িয়েছে।’
রাজধানীর একটি হোটেলে ‘বাংলাদেশে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে স্থানীয়-আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের ভূমিকা এবং এখনই আমাদের করণীয়’ শীর্ষক সেমিনারের আয়োজন করে বিএনপি। সেমিনারে আলোকচিত্রী বাবুল তালুকদারের লেখা ‘নো কমেন্টস’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করা হয়।
ফখরুল বলেন, গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে যারা একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধ করেছিল, তারাই বাংলাদেশকে গণতান্ত্রিক দেশে পরিণত করতে আবারও আন্দোলন শুরু করেছে। ‘একটি দায়িত্বশীল গণতান্ত্রিক দল হিসেবে, আমরা গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য সমস্ত গণতান্ত্রিক ও দেশপ্রেমিক শক্তির সঙ্গে এই সংগ্রাম শুরু করেছি।’
তিনি বলেন, সমাজে অনেক হতাশাবাদী মানুষ আছে, কিন্তু বিএনপির নেতা-কর্মীদের মধ্যে হতাশার কোনো চিহ্ন তিনি দেখেননি।
তিনি বলেন, ‘যারা আমাদের সঙ্গে আছেন এবং একযোগে আন্দোলন করছেন তাদের মধ্যেও কোনো হতাশা নেই। আমরা বিশ্বাস করি যে আমরা এই লড়াইয়ে অবশ্যই জয়ী হব কারণ আমরা সঠিক পথে এবং সত্যের পথে রয়েছি।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, সবাইকে মনে রাখতে হবে, একটি গণতান্ত্রিক শক্তির পক্ষে ফ্যাসিবাদী শাসনের বিরুদ্ধে লড়াই করা সহজ কাজ নয়। গত এক বছরে ২২ জন সাধারণ মানুষসহ এই সংগ্রামে আমাদের অনেক নেতা-কর্মী প্রাণ হারিয়েছেন এবং এক হাজারেরও বেশি বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন।
তিনি বলেন, সরকারের দমনের পদক্ষেপের অংশ হিসেবে প্রায় ৪৫ লাখ বিরোধী দলীয় নেতা-কর্মীকে ‘মিথ্যা’ মামলায় জড়ানো হয়েছে।
মির্জা ফখরুল বলেন, গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরে পেতে এদেশের মানুষ সব ধরনের ত্যাগ স্বীকার করতে প্রস্তুত।
আরও পড়ুন: পর্দার আড়ালে আসলে কিছুই হয়নি: ফখরুল
তিনি বলেন, ‘আমাদের নেত্রী খালেদা জিয়া বন্দি অবস্থায় খুব অসুস্থ হলেও কখনো মাথা নত করেননি। একইভাবে আমাদের সব নেতা-কর্মী তাদের দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। সুতরাং, আমি বিশ্বাস করি আমাদের সংগ্রাম অবশ্যই সফল হবে এবং আমরা গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করতে সক্ষম হব।’
তিনি বলেন, তাদের দলও একটি বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন চায় যেখানে জনগণ তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে সক্ষম হবে।
ফখরুল পর্যবেক্ষণ করেন যে, ‘আমাদের বিশ্বাস করতে হবে যে পশ্চিমা বিশ্ব গণতন্ত্রের প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তাদের অঙ্গীকার ও চেতনা আমাদের সাহস দেয় এবং এগিয়ে যেতে সহায়তা করে। এটা অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই। একই সঙ্গে আমাদের এটাও মনে রাখতে হবে যে, আমরা যারা সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছি, ভবিষ্যতে আন্দোলনকে আরও শক্তিশালী করার জন্য আরও দৃঢ়সংকল্প নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে।’
তিনি বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার পদাঙ্ক অনুসরণ করে রাজপথে রাজনৈতিক সমস্যা সমাধানের জন্য তারা আন্দোলন করছেন।
তিনি বলেন, ‘আমরা অবশ্যই চূড়ান্ত বিজয় অর্জন করতে সক্ষম হব।’
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, ড. আবদুল মঈন খান, সেলিমা রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান, শাহজাহান ওমর, বরকতউল্লাহ বুলু প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
আরও পড়ুন: আওয়ামী লীগ দেশের অর্থনীতি ধ্বংস করেছে: ফখরুল
জাতীয় নির্বাচনের আগে আন্দোলনের নামে অগ্নিসংযোগ ঘটলে সহ্য করা হবে না: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, তার সরকার আগামী জাতীয় নির্বাচনের আগে আন্দোলনের নামে কোনো ধরনের অগ্নিসংযোগ ও নৃশংসতায় সহনশীলতা দেখানো হবে না।
সোমবার লন্ডনের ওয়েস্টমিনস্টারের মেথোডিস্ট সেন্ট্রাল হলে তার সম্মানে আয়োজিত এক কমিউনিটি সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ‘আন্দোলনের নামে নির্বাচনের আগে যদি অগ্নি সন্ত্রাস বা একই ধরনের ঘটনা অথবা জনগণের ওপর হামলা হয়, তাহলে রেহাই পাওয়ার কোনো সুযোগ থাকবে না।’
প্রধানমন্ত্রী দেশবাসীকে স্মরণ করিয়ে দেন, বিএনপি-জামায়াত জোট তথাকথিত আন্দোলনের নামে ২০১৩-২০১৪ সালে 'মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা, সরকারি-বেসরকারি সম্পত্তি ধ্বংস, বাস, ট্রেন ও লঞ্চসহ যানবাহনে পেট্রলবোমা নিক্ষেপ' করে দেশজুড়ে ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছিল।
আরও পড়ুন: প্রধানমন্ত্রীর যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য সফর শেষ হচ্ছে আজ
তিনি বলেন, অগ্নিসংযোগের ঘটনায় নারীসহ অনেকে গুরুতর দগ্ধ হয়েছেন এবং তারা তাদের আঘাত নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন।
তিনি সতর্ক করে বলেন, ‘অগ্নিসন্ত্রাসের মাধ্যমে মানুষ হত্যা এবং দেশের সম্পদ ধ্বংস করাই তাদের আন্দোলন। এর আগে তারা ২৯ জন পুলিশ সদস্যকে হত্যা করেছে। দুর্দশাগ্রস্ত মানুষের জীবন নিয়ে এমন কোনো চেষ্টা করা হলে কোনো ক্ষমা করা হবে না।’
অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন এবং আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ উপস্থিত ছিলেন।
যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের সভাপতি সুলতান শরীফের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ সাজেদুর রহমান ফারুক।
আরও পড়ুন: মালদ্বীপের নির্বাচিত প্রেসিডেন্টকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী
আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি ক্ষমতায় থাকাকালে জনগণের ভোটাধিকার নিয়ে ধোঁকাবাজি করেছিল।
তিনি বলেন, ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি বিএনপি একটি প্রহসনমূলক নির্বাচন করে এবং নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসার দেড় মাসের মধ্যেই দেশের জনগণ তাদের ক্ষমতা থেকে উৎখাত করে।
তিনি আরও বলেন, ‘দেশের জনগণ কখনোই ভোট কারচুপিকারীদের ক্ষমতায় বসতে দেয় না।’
প্রধানমন্ত্রী দেশবাসীকে স্মরণ করিয়ে দেন, বিএনপি-জামায়াত জোট ১ কোটি ২৩ লাখ ভুয়া ভোটার নিয়ে ভোটার তালিকা তৈরি করেছিল এবং সেই তালিকা দিয়ে নির্বাচন করার চেষ্টা করেছিল।
তিনি বলেন, উল্টো জনগণের ভোটাধিকার ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা দীর্ঘদিন সংগ্রাম করে গেছেন। তাদের মধ্যে অনেকেই তাদের জীবন উৎসর্গ করেছেন।
আরও পড়ুন: ধর্মনিরপেক্ষ ও গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় প্রধানমন্ত্রীর প্রশংসা যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত হিন্দুদের
গণতান্ত্রিক আন্দোলনের লক্ষ্য হওয়া উচিত নদী রক্ষা: আনু মুহাম্মদ
নদী রক্ষা গণতান্ত্রিক আন্দোলনের লক্ষ্য হওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেছেন প্রাণ-প্রকৃতি-প্রতিবেশ-পরিবেশ রক্ষা আন্দোলনের সংগঠক অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ।
তিনি বলেছেন, ‘গণতান্ত্রিক আন্দোলনের লক্ষ্য হওয়া উচিত নদী রক্ষা। কিন্তু যারা নদী দখল করে, তারা বড় ব্যবসায়ী ও রাজনীতিক। তাই এটি রাজনৈতিক দলগুলোর এজেন্ডায় আসেনা। এজন্য রাজনৈতিক দলগুলোর উপর চাপ দিতে হবে।’
শনিবার (৩০ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে ‘দখলের গ্রাসে সুটকি নদী’র ২৬ কিলোমিটার: ৫০ বছরে নদী লুট ঠেকাতে নাগরিক আহ্বান’- শীর্ষক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আনু মুহাম্মদ এসব কথা বলেন।
এসময় তিনি আরও বলেন, সুটকি নদী দখলদারিত্বের একটি প্রতিনিধিত্ব মাত্র। সারা দেশে এমন আরও বহু ঘটনা ঘটছে।
আনু মুহাম্মদ বলেন, নদীকে দেখার জন্য আমাদের আদালতের দৃষ্টিভঙ্গি এখনও সেরকমভাবে তৈরি হয়নি। শীতলক্ষ্যার পাড়ে আমরা এখনও দেখছি শুধু সিমেন্ট কারখানা।
তিনি বলেন, জিডিপি বৃদ্ধির সঙ্গেও নদী দখল জড়িত। কিছুদিন আগে এক মন্ত্রী বললেন যে এত চওড়া নদীর দরকার নেই। নদী ভরাট করে জমি বানাতে হবে।
তিনি আরও বলেন, অতীতে নদী নিয়ে আন্দোলনকারীকে ক্রসফায়ারেরও হুমকি দেওয়া হয়েছে এদেশে।
বাংলাদেশ পরিবেশ আইনজীবী সমিতির (বেলা) প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, দেশের সামগ্রিক নদী প্রশাসনের অবস্থা বেশ ঘোলাটে। ভরাট, দখল, উচ্ছেদ প্রক্রিয়া সবই যেন টাকার খেলা। নদী রক্ষা করতে হলে সাহসিকতা ও সততার সঙ্গে কাজ করতে হবে।
আরও পড়ুন: জলাভূমি, গাছ এবং নদী রক্ষা করুন: এসসিআরএফ
জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান হাওলাদার বলেন, আইনের অনেক অপব্যাখ্যা হচ্ছে। কিন্তু সংসদে নদীর স্বার্থের পরিপন্থী কোনো আইন এখনও পাশ হয়নি।
তিনি আরও বলেন, নদী রক্ষা কমিশনের তেমন ক্ষমতা নেই, ফান্ডও নেই। প্রয়াত সংসদ সদস্য আসলামুল হকের দখল থেকে উদ্ধারকাজও ঠিকমতো হয়নি।
আইন ও সালিশ কেন্দ্রের সাবেক প্রধান নির্বাহী শীপা হাফিজা বলেন, সুটকি দখলদারিত্বে লোকটির দূরদর্শিতা আছে। এটা আমাদের দুর্ভাগ্য। আমাদেরকে এসব দখলদারিত্ব উচ্ছেদে নেটওয়ার্ক বাড়াতে হবে এবং তরুণদের সম্পৃক্ততার মাধ্যমে একাজ এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে।
হিউম্যানিটি ফাউন্ডেশন, নোঙর, নিরাপদ ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন ও ইনিশিয়েটিভ ফর পিস যৌথভাবে এই অনুষ্ঠান আয়োজন করে।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন হিউম্যানিটি ফাউন্ডেশন ও ইনিশিয়েটিভ ফর পিস এর চেয়ারম্যান মুহাম্মদ শফিকুর রহমান।
তিনি ২৩মে কে ‘জাতীয় নদী দিবস’ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার আহ্বান জানান।
এছাড়াও, নদীভিত্তিক বিতর্ক প্রতিযোগিতা ও শিশুদের মধ্যে নদী সচেতনতা সৃষ্টিতে গবেষণা প্রচলনের ঘোষণা করেন।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন প্রখ্যাত দার্শনিক ও গ্লোবাল ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামান, আরডিআরসি’র চেয়ারম্যান মোহাম্মদ এজাজ, নিরাপদ ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ইবনুল সাঈদ রানা, নোঙর বাংলাদেশ ট্রাস্ট এর চেয়ারম্যান সুমন শামস্ প্রমুখ।
আরও পড়ুন: বর্তমান সরকার নদী রক্ষায় সচেতন: প্রতিমন্ত্রী
নদী রক্ষায় ডিসিদের জোরালো ভূমিকা প্রয়োজন: নৌ প্রতিমন্ত্রী