জাতীয় সংসদ
কঠোর শাস্তির বিধান রেখে সংসদে ‘চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ বিল’
ঢাকা, ১৫ নভেম্বর (ইউএনবি)-চট্টগ্রাম বন্দর এলাকা দূষিত করলে কঠোর শাস্তির বিধান রেখে জাতীয় সংসদে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ বিল-২০২১ তোলা হয়েছে। সোমবার নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বিলটি উত্থাপন করেন এবং নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়েছে। এছাড়া ৬০ দিনের মধ্যে কমিটিকে এ সম্পর্কে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
সামরিক সরকার কর্তৃক জারি করা চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ অধ্যাদেশ-১৯৭৬ বিলুপ্ত করার লক্ষ্যেও এ বিল উত্থাপন করা হয়।
বিল অনুযায়ী, পানি, ভূমি ও সমুদ্র উপকূল দূষিত করে পরিবেশের ক্ষতি করা হলে পরিবেশ সংরক্ষণ আইন অনুযায়ী শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে।
খসড়া আইনে বলা হয়েছে, যদি এই আইনের কোনো বিধান লঙ্ঘন করা হয় যার শাস্তি পরিবেশ সংরক্ষণ আইনে উল্লেখ করা নেই তাহলে তার শাস্তি হবে ছয় মাসের কারাদণ্ড বা দুই লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ড।
বিলটিতে সংযোজিত নতুন বিধান অনুযায়ী, বন্দরের টোল, ফি ও অন্যান্য চার্জ ফাঁকি দিলে এক মাসের জেল বা এক লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ড।
বন্দরের ভাড়া ও টোলের জন্য কর্তৃপক্ষ একটি চার্ট তৈরি করবে এবং সরকার থেকে অনুমতি নেবে। তবে পাঁচ হাজার টাকার কম হলে অনুমতি নেয়া লাগবে না। প্রস্তাবিত আইনে বন্দরের উন্নয়নের জন্য আলাদা তহবিল রাখা হয়েছে।
বিল অনুযায়ী, একজন চেয়ারম্যান ও সাত জন সদস্য নিয়ে একটি বোর্ড গঠিত হবে। বিদ্যমান আইনে বোর্ডে চার জন সদস্য রাখা হয়েছে। প্রতি দুই মাসে বোর্ডকে কমপক্ষে একটি সভা করতে বলা হয়েছে।
আরও পড়ুন: সংসদে পেটেন্ট বিল পেশ
ডিজেল ও দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি নিয়ে সংসদে বিরোধী নেতাদের অসন্তোষ
একাদশ জাতীয় সংসদের পঞ্চদশ অধিবেশন শুরু
ভৌগোলিক কারণে বাংলাদেশে মাদক সমস্যা বিরাজমান: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন বলেছেন, ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে প্রতিবেশী দেশগুলো থেকে অবৈধ পথে মাদক প্রবেশ করে বলেই বাংলাদেশে মাদক সমস্যা বিরাজমান।
রবিবার জাতীয় সংসদে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য নুরুন্নবী চৌধুরীর এক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ মাদক উৎপাদনকারী দেশ না হলেও ভৌগোলিক কারণে এ দেশে মাদক সমস্যা রয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, প্রতিবেশী দেশ ভারত ও মিয়ানমার থেকে অবৈধ পথে বাংলাদেশে মাদক প্রবেশ করে। ইয়াবা আসে মিয়ানমার থেকে; আর গাঁজা, ফেনসিডিল, হেরোইন ও ইনজেকশন মাদক আসে ভারত থেকে।
মাদকের বিরুদ্ধে সরকারের জিরো টলারেন্স নীতির কথা পুনর্ব্যক্ত করে তিনি বলেন, চলতি অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) ২৩ হাজার ৮০০টি মামলা দায়ের করে ৩১ হাজার ৫৪৫ জন মাদক চোরাকারবারীকে আইনের আওতায় আনা হয়েছে।
মামলায় এক কোটি ৫৫ লাখ ৪৯ হাজার ৯৩৮ (এক দশমিক ৫৫ কোটি) পিস ইয়াবা, ১১৬ দশমিক ১৮৭ কেজি হেরোইন, ২০ হাজার ৭৪২ কেজি গাঁজা, ৮১ হাজার ৮৬৪ বোতল ফেনসিডিল, ১৯ হাজার ২৪৮ অ্যাম্পুল ইনজেকশনের মাদক এবং ৫৭ হাজার ৯১৯ বোতল বিদেশি মদ জব্দ করার কথা জানানো হয়েছে।
আরও পড়ুন: সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ ইউপি নির্বাচন করতে নিরাপত্তা বাহিনী কাজ করছে: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
কক্সবাজারে রক্তের হোলি খেলা দেখতে চাই না: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
নিয়ম অনুযায়ী হত্যা মামলার দুই আসামির ফাঁসি হয়েছে: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
একাদশ জাতীয় সংসদের পঞ্চদশ অধিবেশন শুরু
স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে একাদশ জাতীয় সংসদের পঞ্চদশ অধিবেশন রবিবার বিকেল চারটায় শুরু হয়েছে।
গত ১৬ সেপ্টেম্বরের চতুর্দশ অধিবেশনের ৫৯ দিন পর আজকের অধিবেশন বসেছে।ওই অধিবেশনটি করোনা মহামারির কারণে মাত্র সাতটি বৈঠকের পরেই স্থগিত করা হয়েছিল।
অধিবেশনের শুরুতে স্পিকার এবারের সংসদের পঞ্চদশ অধিবেশনের জন্য পাঁচ সদস্যের প্যানেল অব চেয়ারম্যান মনোনীত করেন।
প্যানেল সদস্যরা হলেন শামসুল হক টুকু (পাবনা-১), এবি তাজুল ইসলাম (ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৬), নজরুল ইসলাম বাবু (নারায়ণগঞ্জ-২), কাজী ফিরোজ রশিদ (ঢাকা-৬) ও বাসন্তী চাকমা (মহিলা আসন-৯)।
তারা স্পিকার এবং ডেপুটি স্পিকারের অনুপস্থিতিতে কালানুক্রমিকভাবে হাউজের কার্যক্রম পরিচালনা করবে।
গত ১৭ অক্টোবর রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ সংবিধানের ৭২ (১) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী তাঁর ওপর প্রদত্ত ক্ষমতাবলে বর্তমান সংসদের পঞ্চদশ অধিবেশন আহ্বান করেন।
সংবিধান অনুসারে, একটি অধিবেশন শেষ হওয়া এবং পরবর্তী অধিবেশনে সংসদের প্রথম অধিবেশনের মধ্যে ৬০ দিনের বেশি সময় নেয়া যাবে না।
আরও পড়ুন: একাদশ জাতীয় সংসদের ১৫তম অধিবেশন শুরু ১৪ নভেম্বর
১৯৭২ এর সংবিধানে ফিরতে শিগগিরই সংসদে বিল পেশ: মুরাদ
জাতীয় আর্কাইভে কোন রেকর্ড নষ্ট করা যাবে না, সংসদে বিল পাস
বিদ্বেষপূর্ণ বক্তব্য সমাজে বড় সমস্যা: স্পিকার
বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেছেন, ‘অসত্য তথ্য ও বিদ্বেষপূর্ণ বক্তব্য সমাজে বৃহত্তর সমস্যা ডেকে আনে। এই সমস্যা সমাধানে দারিদ্র, অসমতা, লিঙ্গ বৈষম্য ইত্যাদি নিরসন এবং প্রচলিত ধারণা, মানসিকতা ও চিন্তাধারার পরিবর্তন দরকার।’
অস্ট্রিয়ার ভিয়েনায় অনুষ্ঠিত ৫ম ওয়ার্ল্ড কনফারেন্স অব স্পিকার্স অব পার্লামেন্ট-এর ‘কাউন্টারিং মিস ইনফরমেশন এন্ড হেইট স্পিচ রিকয়ার্স স্ট্রঙ্গার রেগুলেশন্স’ শীর্ষক আলোচনায় স্পিকার এসব কথা বলেন। ইন্টার-পার্লামেন্টারি ইউনিয়নের (আইপিইউ) উদ্যোগে এবং জাতিসংঘ ও অস্ট্রিয়ান পার্লামেন্টের সহযোগিতায় অস্ট্রিয়ার ভিয়েনায় এ কনফারেন্স অনুষ্ঠিত হয়। কনফারেন্সে বাংলাদেশের সংসদীয় প্রতিনিধিদল বদরুদ্দোজা মো. ফরহাদ হোসেন এমপি, রুমানা আলী এমপি, গ্লোরিয়া ঝর্ণা সরকার এমপি অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন।
আরও পড়ুন: তিন সম্মেলনে যোগ দিতে ভিয়েনা গেলেন স্পিকার
স্পিকার বলেন, ‘প্রবীণ প্রজন্মের মাঝে শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা ছড়িয়ে দেয়ার পাশাপাশি নব প্রজন্মকে যুগোপযোগী শিক্ষায় শিক্ষিত হতে হবে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি শক্তিশালী পারিবারিক কাঠামো যথাযথ শিক্ষার জন্য জরুরি। এক্ষেত্রে গণমাধ্যম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।’
তিনি আরও বলেন, ‘অসত্য তথ্য মানুষ ও সমাজকে ভুল পথে চালিত করে। অন্যদিকে, সঠিক ও বস্তুনিষ্ঠ তথ্য গঠনমূলক মত সৃষ্টিতে ভূমিকা রাখে। বাক ও মতপ্রকাশের মৌলিক স্বাধীনতা নিশ্চিত করার পাশাপাশি সত্য প্রচারে অধিকতর কার্যকর ও উদ্ভাবনী সমাধান অন্বেষণ করতে হবে। বিদ্যমান আইনের মাধ্যমে কাঙ্ক্ষিত ফলাফল পাওয়া না গেলে অধিকতর শক্তিশালী আইন প্রণয়ন প্রয়োজন।’
আলোচনা অনুষ্ঠানে আর্জেন্টিনা সিনেটের প্রভিশনাল প্রেসিডেন্ট ক্লডিয়া লেদেসমা আবদালা, ইউরোপিয়ান কাউন্সিলের পার্লামেন্টারি এসেম্বলির প্রেসিডেন্ট রিক ডিমস, নাইজেরিয়া হাউজ রিপ্রেজেনটেটিভ স্পিকার ও. হাকিম গাজাবিয়ামিলা, রোমানিয়া সিনেটের প্রেসিডেন্ট আনকা ডানা ড্রাগু প্রমুখ বিশিষ্ট ব্যক্তিরা বক্তব্য দেন। অনুষ্ঠানে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের স্পিকার এবং অন্যান্য স্বনামধন্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: শিশুদের অন্তরে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ জাগ্রত করার আহ্বান স্পিকারের
বঙ্গবন্ধুর আহ্বানে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন মুক্তিযোদ্ধারা: স্পিকার
মাসে এক কোটির বেশি টিকার ব্যবস্থা হয়েছে: প্রধানমন্ত্রী
প্রতিমাসে এক কোটির বেশি করোনা টিকার ডোজ পেতে সরকার ব্যবস্থা নিয়েছে বলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জানিয়েছেন।
বুধবার জাতীয় সংসদে তিনি বলেন, ‘প্রতিমাসে এক কোটিরও বেশি টিকা পেতে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।’
জাতীয় সংসদের প্রশ্নোত্তরে সরকার দলীয় সংসদ সদস্য শহীদুজ্জামান সরকারের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী এ কথা জানান।
শেখ হাসিনা বলেন, চুক্তি অনুযায়ী সিনোফার্মা থেকে বাংলাদেশ আগামী অক্টোবর থেকে প্রতিমাসে দুই কোটি টিকার ডোজ পাবে। ডিসেম্বর পর্যন্ত সিনোফার্ম থেকে প্রায় ছয় কোটি ডোজ আসবে।
তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত (৩০ আগস্ট) প্রায় ১ কোটি ৮২ লাখ ৮৯ হাজার ১৮ জন টিকার প্রথম ডোজ এবং ৭৮ লাখ ৪০ হাজার ১৬৯ জন দ্বিতীয় ডোজসহ মোট ২ কোটি ৬১ লাখ ২৯ হাজার ১৮৭ ডোজ টিকা দেয়া হয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘জনগণকে বিনামূল্যে টিকা দিতে টিকা সংগ্রহ করা হচ্ছে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার সকল টিকা উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের সাথে যোগাযোগ স্থাপন করেছে।
তিনি বলেন, ‘আমরা কেবল ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট থেকে সাড়া পাই এবং অগ্রিম টাকা দিয়ে তিন কোটি ডোজ টিকা সংগ্রহে চুক্তি করি।’
আরও পড়ুন: স্কুল শিক্ষার্থীদের টিকা দেয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত শিগগিরই
অন্যান্য টিকা উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছ থেকে তখন কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি বলে প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, পরবর্তীতে চীন থেকে সিনোফার্ম এবং রাশিয়ার স্পুটনিক-ভি থেকে সাড়া পাওয়ার পর আমরা সাথে সাথে উদ্যোগ গ্রহণ করি। এরপর সিনোফার্মের সাথে চুক্তি করি এবং স্থানীয়ভাবে উৎপাদনের জন্য সমঝোতা চুক্তি করেছি।
আমদানি করা টিকার মেয়াদ ছয় মাস নিশ্চিতের পরামর্শ
আমদানি করা টিকার মেয়াদ ছয় মাস নিশ্চিত করার পরামর্শ দিয়েছে পররাষ্ট্র বিষয়ক সংসদীয় কমিটি। বৃহস্পতিবার কমিটির ২২তম বৈঠকে এই পরামর্শ দেয়া হয়।
জাতীয় সংসদ ভবনে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি মুহাম্মদ ফারুক খানের সভাপতিত্বে কমিটির সদস্য পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ. কে. আব্দুল মোমেন, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম, সাবেক শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ, গোলাম ফারুক খন্দকার প্রিন্স, মো. আব্দুল মজিদ খান এবং মো. হাবিবে মিল্লাত উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুনঃ সিনোফার্মের প্রায় ১৮ লাখ টিকা ঢাকার পথে
বিভিন্ন দেশ থেকে করোনার টিকা প্রাপ্তির সর্বশেষ অবস্থা এবং দেশে টিকা তৈরির পদক্ষেপ গ্রহণের সর্বশেষ অবস্থা, রোহিঙ্গা সমস্যা সম্পর্কিত সর্বশেষ পরিস্থিতি ও রোহিঙ্গাদের জন্য বিভিন্ন সংস্থার অর্থ বরাদ্দ সংক্রান্ত আলোচনা এবং আসন্ন জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে বাংলাদেশের প্রতিনিধি দলের অংশগ্রহণ প্রসঙ্গে কমিটিতে বিশদ আলোচনা হয়।
বিভিন্ন দেশ বা প্রতিষ্ঠান থেকে আমদানির ক্ষেত্রে টিকার মেয়াদ যাতে ছয় মাস থাকে তা নিশ্চিতকরণের পাশাপাশি পাইপলাইনে থাকা টিকাগুলো দ্রুততম সময়ে আনার জন্য তৎপরতা অব্যাহত রাখতে কমিটি থেকে মন্ত্রণালয়কে পরামর্শ দেয়া হয়।
আরও পড়ুনঃ টিকা নিয়ে সমালোচনা শাস্তিযোগ্য অপরাধ: তথ্যমন্ত্রী
এসময় দশ বছর বয়স পর্যন্ত বিদেশে অধ্যয়নরত বাংলাদেশি ছাত্রছাত্রীদের টিকার আওতায় আনার জন্য পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ জানানোর পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
এছাড়া পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের গুরুত্বপূর্ণ কার্যক্রমগুলো ই-মেইলের মাধ্যমে কমিটির সদস্যদের নিয়মিত অবহিত করার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
বিশ্বব্যাংকসহ যে সব দাতা সংস্থা ও দেশ রোহিঙ্গা ইস্যুতে অর্থ ও মানবিক সহায়তা দেয়ার পাশাপাশি প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে রাখার ব্যাপারে কথা বলছে তাদের প্রত্যেককে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের ব্যাপারে মায়ানমারের উপর চাপ সৃষ্টির জন্য অনুরোধ জানানোর পরামর্শ দেয়া হয় এই সভায়।
বৈঠকে যাত্রীদের টিকেটিং ও গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং এর ক্ষেত্রে বাংলাদেশ বিমানের দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ জানানোর পরামর্শ দেয়া হয়।
এছাড়া জাতিসংঘের আসন্ন সাধারণ অধিবেশনে সংসদীয় কমিটির সদস্যদের অংশগ্রহণের বিষয়টি বিবেচনার সুপারিশ করা হয়।
বৈঠকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এবং জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
জুলাই মাসে ব্যাপকভাবে টিকাদান শুরু হবে: প্রধানমন্ত্রী
জুলাই মাসে দেশে ব্যাপকভাবে টিকাদান অভিযান শুরু হবে এই আশ্বাস দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সবার জন্য বিনামূল্যে টিকা নিশ্চিত করবে সরকার। করোনা টিকা সংগ্রহের জন্য যত টাকা লাগুক সরকার তা ব্যয় করবে।
মঙ্গলবার জাতীয় সংসদে ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রস্তাবিত জাতীয় বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, আমি ইতিমধ্যে ঘোষণা দিয়েছি, সরকার সবার জন্য বিনামূল্যে টিকা নিশ্চিত করবে। এ লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় টিকা সংগ্রহের জন্য আমরা তহবিল সরবরাহ করব, যতই প্রয়োজন হোক।
আরও পড়ুন: দেশে করোনা আক্রান্ত ৯ লাখ ছাড়াল, ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু ১১২
টিকা সংগ্রহের জন্য সরকার জাতীয় বাজেটে ১৪ হাজার ২০০ কোটি টাকা ব্যয় করেছে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, আমরা ৮০ শতাংশ মানুষকে পর্যায়ক্রমে টিকা দেওয়ার আওতায় আনার পরিকল্পনা নিয়েছি। এ সময় তিনি বলেন, সরকার যখন গবেষণা পর্যায়ে ছিল তখন টিকা উন্নয়নকারী দেশগুলির সাথে যোগাযোগ শুরু করে এবং টিকার আগাম অর্থ সরবরাহ করে। কিন্তু করোনা সংক্রমণ ব্যাপক বৃদ্ধি পাওয়ায় ভারত সমস্যায় পড়ে যায়। তাই দেশটি টিকা রপ্তানি বন্ধ করে দেয়।
আরও পড়ুন: টিকাদান বন্ধ হবে না: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা এখন টিকার ব্যবস্থা করেছি। আমাদের আর কোনও সমস্যা হবে না (টিকা সংগ্রহের ক্ষেত্রে)। সরকার চীন, রাশিয়া, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং অন্যান্য টিকা উৎপাদনকারী দেশ এবং সংস্থাগুলির সংস্পর্শে রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, তার সরকার ইতিমধ্যে বিভিন্ন উৎস থেকে ১.১৪ কোটি টিকা সংগ্রহ করেছে।
প্রধানমন্ত্রী আরও যোগ করেন, আমরা আশা করছি এই জুলাই থেকে আরও অনেক টিকা আসবে এবং আমরা টিকাদান ব্যাপকভাবে শুরু করতে পারবো।
আরও পড়ুন: জীবিকার উন্নয়নে বাংলাদেশকে ৩০০ মিলিয়ন ডলার ঋণ দিচ্ছে বিশ্বব্যাংক
শেখ হাসিনা বলেন, প্রবাসী কর্মীদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে টিকা দেওয়ার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। বিদেশের কর্মস্থলে পৌঁছে তাদের যেন কোয়ারান্টাইনে থাকতে হয়। করোনা মহামারি অব্যাহত থাকায় স্বাস্থ্য খাতকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, গত বছর সরকার সফলভাবে প্রথম ঢেউকে মোকাবেলা করেছে। সেই অভিজ্ঞতা ব্যবহার করে চলমান দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলা করতে আমরা দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নিয়েছি। ইনশাআল্লাহ, আমরা মহামারি মোকাবিলার মাধ্যমে জনস্বাস্থ্য এবং জনজীবনকে রক্ষা করতে সক্ষম হবো।
করোনা মোকাবিলায় বাজেটে ১০ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব
বৈশ্বিম মহামারি করোনাভাইরাস মোকাবিলায় আগামী ২০২১-২২ অর্থবছরের জন্য ১০ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ রাখার প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। দেশের করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় জরুরি প্রয়োজন ও টিকাদান কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে এই বরাদ্দ চেয়েছেন অর্থমন্ত্রী।
বৃহস্পতিবার সংসদে একাদশ জাতীয় সংসদের ত্রয়োদশ অধিবেশনে ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেট উপস্থাপনের সময় দেশের সার্বিক করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলা ও স্বাস্থ্যখাতের প্রয়োজনীয়তার দিকগুলো বিবেচনায় রেখেই এই প্রস্তাব করেন অর্থমন্ত্রী।
অর্থমন্ত্রী বলেন, করোনার কারণে পুরো বিশ্বের অর্থনৈতিক অবস্থাই বেশ ঝুঁকির মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। তাই দেশের অর্থনীতিকে চাঙ্গা রাখতে এবং করোনার প্রভাব মোকাবিলায় প্রত্যেক মন্ত্রণালয়ের জন্য বাজেট বিশেষ বরাদ্দ রাখা হয়েছে।
আরও পড়ুন: এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বাজেট: বিজিএমইএ
আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, কোভ্যাক্সের আওতায় বাংলাদেশের ২০ ভাগ মানুষের জন্য ৩ কোটি ৪০ লাখ ডোজ করোনার টিকা পাওয়া যাবে। এর মধ্যে এখন পর্যন্ত ১ লাখ ৬ হাজার ডোজ টিকা পাওয়া গেছে। এছাড়া ভারতের কাছ থেকে টিকা ক্রয় ও রাশিয়া এবং চীনের থেকেও টিকা ক্রয়ের ব্যাপারে আলোচনার কথাও তুলে ধরেন মন্ত্রী।
অর্থমন্ত্রী জানান, করোনাভাইরাসের টিকা ক্রয়ের জন্য ইতোমধ্যেই বিশ্ব ব্যাংক ৫০ কোটি ডলার এবং অন্যান্য প্রয়োজন মেটানোর জন্য আরও প্রায় দেড় কোটি ডলার সহায়তা দিয়েছে। এছাড়া করোনার টিকা ক্রয়ের জন্য এশীয়া উন্নয়ন ব্যাংকের কাছ থেকে আরও ৯৪ কোটি ডলার ঋণ চুক্তির ব্যাপারে চূড়ান্তে পর্যায়ে রয়েছে বাংলাদেশ।
টিকা কার্যক্রম
অর্থমন্ত্রী জানান, ধাপে ধাপে বাংলাদেশের ৮০ শতাংশ মানুষকে করোনা টিকা কার্যক্রমের আওতায় আনান পরিকল্পনা করেছে সরকার। প্রথম ধাপে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ ব্যক্তিদেরকেই করোনা টিকা প্রদানের ব্যাপারে প্রাধান্য দেয়া হবে বলে জানান তিনি।
এছাড়া প্রতি মাসে ২৫ লাক ডোজ টিকা প্রদানের পরিকল্পনার কথাও জানান অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
আরও পড়ুন: বাজেট: স্বাস্থ্য খাতের জন্য ৩২ হাজার ৭৩১ কোটি টাকা বরাদ্দ
বর্তমানে বাংলাদেশ 'বিস্ময়ের বিস্ময়’: অর্থমন্ত্রী
গত ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হয়ে ৩১ মে পর্যন্ত ৫৮ লাখ ২২ হাজার ১৫৭ জন মানুষ করোনার টিকা পেয়েছেন। এর মধ্যে ৩৬ লাখ পুরুষ এবং ২২ লাখ নারী রয়েছেন। এছাড়া মোট টিকা প্রাপ্তদের মধ্যে দ্বিতীয় ডোজের টিকা প্রাপ্ত হয়েছেন ৪১ লাখ ৭৩ হাজার ৯৩০ জন।
ইতোমধ্যেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের জনগণের জন্য বিনামূল্যে টিকা প্রদান করার ঘোষণা দিয়েছেন। তাই করোনার টিকা ক্রয়ের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ দেয়া হবে বলে জানান অর্থমন্ত্রী।
২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেট পেশ হবে আজ
ঢাকা, ০৩ মে (ইউএনবি)- একাদশ জাতীয় সংসদের ত্রয়োদশ (বাজেট) অধিবেশন শুরু হবে আজ।
করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি এড়াতে প্রয়োজনীয় সতর্কতা এবং সামাজিক দুরত্ব মেনে বৃহস্পতিবার বিকাল ৫টা থেকে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মোস্তফা কামাল ৬ লাখ ৩ হাজার ৬৮১ কোটি টাকার বাজেট প্রস্তাব উপস্থাপন করবেন।
ছয় শতাংশেরও বেশি ঘাটতি থাকা এই বাজেট মোট জিডিপির পরিমাণ ১৭ দশমিক ৪৭ শতাংশ।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে সংসদের মন্ত্রিসভা কক্ষে বিশেষ মন্ত্রিসভার বৈঠকে অনুমোদনের পর এটি উপস্থাপন করা হবে।
সংসদীয় সচিবালয়ের সূত্র জানায়, স্বাভাবিক সময়ের বাজেটের মতো এই অধিবেশন দু সপ্তাহের বেশি হবে না এবং খুব সংক্ষিপ্ত পরিসরে পুরো অধিবেশনটি সম্পন্ন হবে।
গত বছর করোনা মহামারির কারণে বাজেট অধিবেশন ৯ কর্মদিবসের পর স্থগিত করা হয় যা বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে সংক্ষিপ্ত বাজেট অধিবেশন।
প্রধানমন্ত্রী এবং মন্ত্রীদের সাথে প্রশ্নোত্তর পর্বে শুধুমাত্র বাজেট এবং গুরুত্বপূর্ণ কাজের বিষয়ে আলোচনা হবে।
আরও পড়ুন: সংসদের জন্য ৩৩৬ কোটি ১৪ লাখ টাকার প্রাক্কলিত বাজেট অনুমোদন
করোনা পরিস্থিতির কারণে সংসদ সদস্য, মন্ত্রী, সংসদ সচিবালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের এবারও কোভিড টেস্টের নেগেটিভ সনদ নিয়ে সংসদ সচিবালয়ে প্রবেশ করবেন। এছাড়া বয়োজ্যেষ্ঠ ও অসুস্থ এমপিদের সংসদ অধিবেশেনে আসতে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে।
দূরত্ব বজায় রাখতে প্রতিদিন ১০০ এরও কম সংসদ সদস্যদের নিয়ে এই অধিবেশন পরিচালনা করা হবে।
সংবিধান অনুসারে ৩০ জুনের আগে বাজেট পেশ করার ব্যাপারে বিধিনিষেধ রয়েছে এবং বাজেট চলাকালীন অধিবেশনে সাংসদদের অংশগ্রহণের বিধান রয়েছে।
ভাঙচুরের সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে: প্রধানমন্ত্রী
ইসলামের নামে ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ডে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে রবিবার জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, ‘ধর্মের নামে জনগণ ইসলামবিরোধী কোন কার্যক্রম গ্রহণ করবে না। কয়েক জনের জন্য ইসলামের অপমান সহ্য করা হবে না। আমি দেশের মানুষকে ধৈর্য ধরতে বলব, সবাইকে ধৈর্য নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে।’
আরও পড়ুন: করোনা মোকাবিলায় সরকারি নির্দেশনা বাস্তবায়নে যথাযথভাবে দায়িত্ব পালন করুন: প্রধানমন্ত্রী
একাদশ সংসদের দ্বাদশ অধিবেশনের সমাপনী বক্তব্য দেয়ার সময় প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।
হেফাজতে ইসলামের সাম্প্রতিক কর্মকাণ্ড, ভাঙচুর সম্পর্কে তিনি বলেন, তারা তাদের ধ্বংসাত্মক ও অসামাজিক কার্যকলাপের মাধ্যমে পবিত্র ধর্মকে পুরোপুরি ধ্বংস করছে।
তিনি বলেন, ‘তাদের কর্মকাণ্ডের কারণে অনেক লোক প্রাণ হারায়, এমনকি ২৬ মার্চও বহু লোক প্রাণ হারিয়েছে, এর জন্য তারাই (হেফাজত) পুরোপুরি দায়ী।’
আরও পড়ুন: হেফাজতের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার দাবি শেখ সেলিমের
হেফাজতের পেছনে বিএনপি ও জামায়াত রয়েছে বলে শেখ হাসিনা অভিযোগ করেন।
তিনি বলেন, ‘হেফাজত একা নয়, বিএনপি ও জামায়াত তাদের সাথে রয়েছে।’