একনেক
অবকাঠামো নির্মাণের পাশাপাশি গ্রামীণ উন্নয়নে গুরুত্ব দিন: একনেক বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী
অবকাঠামো নির্মাণের পাশাপাশি গ্রামীণ উন্নয়নের ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
মঙ্গলবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) আগারগাঁওয়ের এনইসি সম্মেলন কক্ষে একনেক সভায় তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি অবকাঠামোগত উন্নয়নের পাশাপাশি গ্রামীণ এলাকার সার্বিক উন্নয়নও প্রয়োজন।’
তিনি স্বল্প অর্থ বরাদ্দের কারণে যেসব উন্নয়ন প্রকল্প বিলম্বিত হয়েছে সেগুলো দ্রুত শেষ করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন।
তিনি বলেন, ‘আমি মন্ত্রিপরিষদ সচিবকে বলব বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সব সচিবকে বিষয়টি জানাতে যাতে এ ধরনের প্রকল্প দ্রুত শেষ হয়।’
আরও পড়ুন: জননিরাপত্তা নিশ্চিতে অপচেষ্টা প্রতিহত করুন: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এসব প্রকল্পের কাজ শেষ হলে সরকারের জন্য নতুন উন্নয়ন কর্মসূচি গ্রহণ করা সহজ হবে।
তিনি আরও বলেন, কিছু উন্নয়ন প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানো হলেও সেগুলোও খুব তাড়াতাড়ি শেষ করতে হবে।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘কারণ, সেগুলো অসমাপ্ত থাকলে প্রকল্পগুলোর ব্যয় অহেতুক বাড়বে এবং সময়ও নষ্ট হবে। এগুলো সম্পন্ন হওয়া নিশ্চিত করুন।’
তিনি বলেন, দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের জন্য সরকারকে অবশ্যই উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ করতে হবে।
এ প্রসঙ্গে তিনি সরকারের লক্ষ্য অর্জনে যে কোনো ধরনের উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণের সময় সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান।
আরও পড়ুন: জিআই পণ্যের বিষয়ে সক্রিয় থাকার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর
গণতন্ত্রের স্বার্থেই জাতীয় নির্বাচন আ. লীগের সব সদস্যের জন্য উন্মুক্ত ছিল: প্রধানমন্ত্রী
একনেকে ৩৯০৯৪ কোটি টাকার ৪৪ প্রকল্প অনুমোদন
৩৯ হাজার ৯৪ কোটি টাকা ব্যয়ে ৪৪টি প্রকল্পের অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) ।
বৃহস্পতিবার(৯ নভেম্বর) রাজধানীর শেরেবাংলা নগরএনইসি সম্মেলন কক্ষে প্রধানমন্ত্রী ও একনেক চেয়ারপারসন শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত একনেক সভায় এ অনুমোদন দেওয়া হয়।
বৈঠকে মোট ৪৫টি প্রকল্প উপস্থাপন করা হয়। তবে ৪৪টি প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে এবং মাত্র একটি প্রকল্প ফেরত পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান।
৩৯ হাজার ৯৪ কোটি ৩৩ লাখ টাকার পাস করা প্রকল্পগুলোতে জাতীয় কোষাগার থেকে ২৯ হাজার ৯৫৩ কোটি ৪৪ লাখ টাকা, বৈদেশিক উৎস থেকে সাত হাজার ৫৭৯ কোটি ৭৩ লাখ টাকা এবং সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব তহবিল থেকে এক হাজার ৫৬১ কোটি ১৬ লাখ টাকা ব্যয় করা হবে।
ব্যয়ের দিক থেকে সবচেয়ে বড় তিনটি নতুন প্রকল্প হলো- ছয় হাজার ১৪০ কোটি ১৯ লাখ টাকা ব্যয়ে 'ভাঙ্গা-যশোর-বেনাপোল মহাসড়ক চার লেনে উন্নীতকরণের জন্য ভূমি অধিগ্রহণ ও ইউটিলিটি হস্তান্তর' প্রকল্প; ৪ হাজার ৪০ কোটি টাকা ব্যয়ে 'এক্সটেন্ডেড ঢাকা ওয়াটার সাপ্লাই রেজিলিয়েন্স' প্রকল্প; এবং ১ হাজার ৬৪২ কোটি ৭৩ লাখ টাকা ব্যয়ে 'যশোর রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল' প্রকল্প।
আরও পড়ুন: একনেকে ৮৮টি পৌরসভায় নগর শাসন ও অবকাঠামো উন্নয়নে ৬,৩৪৫ কোটি টাকার প্রকল্প অনুমোদন
অন্যান্য বৃহৎ প্রকল্পগুলোর মধ্যে রয়েছে ১ হাজার ৫৯৫ কোটি ৬২ লাখ টাকা ব্যয়ে 'সারাদেশে নগর ও ইউনিয়ন ভূমি অফিস নির্মাণ (পর্যায়-২)' প্রকল্প; ১ হাজার ৪৫৯ কোটি ৭৪ লাখ টাকা ব্যয়ে 'সম্প্রসারিত এলাকাসহ সিলেট সিটি করপোরেশনের সমন্বিত অবকাঠামো উন্নয়ন' প্রকল্প; ১ হাজার ৪০৪ কোটি ৪৬ লাখ টাকা ব্যয়ে 'বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্প নগরের সঙ্গে লক্ষ্মীপুর, নোয়াখালী ও ফেনী জেলার সংযোগ সড়ক যথাযথ মান ও প্রশস্তকরণ' প্রকল্প; ১ হাজার ১৯৫ কোটি ৩২ লাখ টাকা ব্যয়ে মহেশখালী অর্থনৈতিক অঞ্চল-৩ (ধোলঘাটা)- এর জন্য গ্যাস, বিদ্যুৎ ও যোগাযোগ অবকাঠামো নির্মাণ এবং ১ হাজার ১৮১ কোটি ৫০ লাখ টাকা ব্যয়ে 'ইমপ্রুভমেন্ট অব আরবান পাবলিক হেলথ প্রিভেন্টিভ সার্ভিসেস' প্রকল্প।
আরও পড়ুন: একনেকে ১৮ হাজার কোটি টাকার ১৯ প্রকল্প অনুমোদন
বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্রীয় কোষাগারের বোঝা কমাতে বিভিন্ন খাত বিশেষ করে বিদ্যুৎ ও পানি খাতে ভর্তুকি প্রদানের প্রবণতা থেকে ধীরে ধীরে বেরিয়ে আসার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানান।
প্রধানমন্ত্রীকে উদ্বৃত করে মান্নান বলেন, ‘পর্যায়ক্রমে ভর্তুকি প্রথা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। বিদ্যুৎ এবং পানির মতো পরিষেবাগুলো সর্বজনীন এবং সকলেই ব্যবহার করে। একজন মন্ত্রী থেকে শুরু করে পরিচ্ছন্নতাকর্মী পর্যন্ত সবাই সমানভাবে এই ধরনের ভর্তুকি সুবিধা ভোগ করেন।’
প্রধানমন্ত্রী বিদ্যুৎ ও পানি পরিষেবার জন্য এলাকাভিত্তিক ও আয়ভিত্তিক চার্জ নির্ধারণের পরামর্শ দেন বলে জানান মান্নান।
আরও পড়ুন: একনেকে অনুমোদন পেল ডিএসসিসির ৮ লেনের সড়ক নির্মাণ প্রকল্প
একনেকে অনুমোদন পেল ডিএসসিসির ৮ লেনের সড়ক নির্মাণ প্রকল্প
জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় অনুমোদন পেয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) উদ্যোগে গৃহীত ‘ইনার সার্কুলার রিং রোডের রায়েরবাজার স্লুইস গেট হতে লোহার ব্রিজ পর্যন্ত রাস্তার উন্নয়ন’ শীর্ষক ৮ সারির (লেন) সড়ক নির্মাণ প্রকল্প।
মঙ্গলবার (৩১ অক্টোবর) রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে একনেক চেয়ারপার্সন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত একনেক সভায় এ অনুমোদন দেওয়া হয়।
সভায় অন্যান্যদের মধ্যে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: একনেকে ১১ হাজার ৩৮৮ কোটি টাকা আনুমানিক ব্যয়সহ ১৮টি প্রকল্প অনুমোদন
ঢাকা মহানগরীর অভ্যন্তরে যানজট নিরসনে সরকারের সংশোধিত কৌশলগত পরিবহন পরিকল্পনায় (আরএসটিপি) ইনার সার্কুলার রিং রোডের উন্নয়নের প্রস্তাবনা রয়েছে।
সে প্রস্তাবনার আলোকেই সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে সমন্বয় করে রায়েরবাজার স্লুইস গেট হতে লোহার ব্রিজ পর্যন্ত বিদ্যমান সড়কটিকে ৮ সারিতে উন্নীত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
প্রকল্পের আওতায় ইনার সার্কুলার রিং রোডের রায়েরবাজার স্লুইসগেট থেকে লোহার ব্রিজ পর্যন্ত ৫ কিমি অংশে ৮ লেনের সড়ক নির্মাণ করা হবে।
যার মধ্যে মাঝের দুই-দুই সারি করে ৪ সারি এক্সপ্রেসওয়ে এবং দুই পাশে দুই-দুই সারি করে ৪ সারি সার্ভিস লেন নির্মাণ করা হবে।
এর ফলে বর্তমানে বিদ্যমান ২০ ফুট প্রশস্ততার সড়কটি ১৪০ ফুটে উন্নীত হবে। এছাড়াও সড়কের প্রতি পাশে ৫ ফুট করে উভয় পাশে মোট ১০ ফুট প্রশস্ততার ১০ কিমি ফুটপাত ও ১০ কিমি আরসিসি ড্রেন নির্মাণ করা হবে।
সেজন্য ফুটপাতসহ অতিরিক্ত ১৩০ ফুট সড়ক উন্নয়নে বিদ্যমান গড় ৮ ফুট গভীরতার রাবিশ (আবর্জনা) অপসারণ করতে হবে, যা পরবর্তীতে বালু ভরাটের মাধ্যমে ভূমি উন্নয়ন কার্যক্রম সম্পন্ন করার পর সড়ক নির্মাণ করা হবে।
এছাড়াও এই সড়ক উন্নয়ন কার্যক্রম বাস্তবায়নে সড়কের উভয় পাশে ৮ কি.মি. গার্ডওয়াল ও রিটেইনিং ওয়াল, ৩টি ভ্যাহিক্যুলার ওভারপাস, ৩টি ফুটওভারব্রিজ, ৬টি যাত্রী ছাউনি ও বাস-বে এবং ৩টি অন্তর্বর্তীকালীন বর্জ্য স্থানান্তর কেন্দ্র (এসটিএস) নির্মাণ করা হবে।
এ কার্যক্রম বাস্তবায়নে ৫৬৫টি বৈদ্যুতিক খুঁটি ও ৮টি টাওয়ার স্থানান্তর বাবদ ১২০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। এ সকল বৈদ্যুতিক খুঁটি ও টাওয়ার স্থানান্তরের জন্য ডিপিডিসিকে ১২০ কোটি টাকা পরিশোধ করা হবে।
এ প্রকল্প বাস্তবায়নে ৮ কিমি গার্ডওয়াল ও রিটেইনিং ওয়াল, ৩টি ভ্যাহিক্যুলার ওভারপাস, ৩টি ফুটওভারব্রিজ, ৬টি যাত্রী ছাউনি ও বাস-বে, ১০ কিমি. ফুটপাত, ১০ কিমি. আরসিসি ড্রেন নির্মাণের জন্য ৪০০ কোটি টাকা, ২২ জন পরামর্শকসহ ৩৩ জন জনবলের জন্য ৩০ মাসে ১৪ কোটি টাকা এবং ৯০০টি এলইডি বাতি স্থাপনে সাড়ে ৭ কোটি টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে।
আরও পড়ুন: একনেকে ১৮ হাজার কোটি টাকার ১৯ প্রকল্প অনুমোদন
প্রকল্পের উল্লিখিত অনুষঙ্গ বাদে ১৪০ ফুট প্রশস্ততার ৫ কিমি দৈর্ঘ্যের সড়কের নির্মাণে ব্যয় রাখা হয়েছে ৩৮৯ কোটি টাকা।
প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে যানবাহনগুলো সার্ভিস রোড হতে এক্সপ্রেসওয়েতে এবং এক্সপ্রেসওয়ে হতে সার্ভিস রোডে প্রবেশ করতে পারবে। এতে করে সড়কের পার্শ্ববর্তী এলাকার যানবাহনগুলোও এক্সপ্রেসওয়ে ব্যবহারের সুবিধা পাবে।
তাছাড়া সড়কের এলাইনমেন্টে ৩টি ওভারপাস রাখা হয়েছে। এতে করে পার্শ্ববর্তী এলাকার যানবাহনগুলো এক্সপ্রেসওয়ের নিচ দিয়ে পারাপার করতে পারবে।
ফলে এ প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে নগরীর অভ্যন্তরে যানজট কমানোর পাশাপাশি প্রতিনিয়ত নষ্ট হওয়া কর্মঘণ্টা হ্রাস করা এবং ফলশ্রুতিতে জ্বালানি অপচয় রোধ করা সম্ভব হবে।
কারণ পদ্মা সেতু হয়ে ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ে ব্যবহারকারী ২১ জেলার যানবাহনের পাশাপাশি চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের ১৬ জেলার যানবাহনও যাত্রাবাড়ী মোড় দিয়ে ঢাকা মহানগরীতে প্রবেশ করে।
ফলে যাত্রাবাড়ী এলাকায় প্রচন্ড যানজটের সৃষ্টি হয়। কিন্তু প্রকল্প বাস্তবায়ন সম্পন্ন হলে সাভার, উত্তরা, এয়ারপোর্ট, গাজীপুরসহ উত্তর বঙ্গগামী যানবাহনগুলোর আর ঢাকা মহানগরীর অভ্যন্তরে প্রবেশের প্রয়োজনীয়তা পড়বে না।
এছাড়াও বুড়িগঙ্গা আদি চ্যানেল সংলগ্ন হওয়ায় প্রস্তাবিত সড়কে প্রশস্ত হাঁটার পথ এবং বৃক্ষ রোপণের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। এতে পরিবেশের ভারসাম্য যেমনি রক্ষা হবে এবং তেমনি নগরবাসী নদীর নান্দনিক পরিবেশ ও সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারবে।
উল্লেখ্য, ইনার সার্কুলার রিং রোডের রায়েরবাজার স্লুইস গেট থেকে পোস্তগোলা পর্যন্ত ১২ কিমি. অংশের বিদ্যমান সড়কটিকে ৮ লেনে উন্নীত করার পরিকল্পনা দুই ধাপে বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
প্রথম ধাপে রায়েরবাজার স্লুইস গেট হতে লোহার ব্রিজ পর্যন্ত রাস্তা নির্মাণ প্রকল্প আজ একনেক সভায় অনুমোদন পেলো। দ্বিতীয় ধাপে লোহার ব্রিজ থেকে পোস্তগোলা পর্যন্ত বাকি ৭ কিমি. রাস্তা নির্মাণের লক্ষ্যে সম্ভাব্যতা যাচাই কার্যক্রম চলমান রয়েছে। মোট ৯৭৪ কোটি টাকা ব্যয়ে জুলাই ২০২৩ হতে জুন ২০২৬ সাল মেয়াদে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন। এর মধ্যে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন ৯৭ কোটি টাকা অর্থায়ন করবে। বাকি অর্থ সরকার যোগান দেবে।
আরও পড়ুন: একনেকে ৮৮টি পৌরসভায় নগর শাসন ও অবকাঠামো উন্নয়নে ৬,৩৪৫ কোটি টাকার প্রকল্প অনুমোদন
একনেকে ১৮ হাজার কোটি টাকার ১৯ প্রকল্প অনুমোদন
মোংলা বন্দরের উন্নয়ন ও সম্প্রসারণে একটি প্রকল্পসহ মোট ১৮ হাজার ৬৭ কোটি টাকা ব্যয়ে ১৯টি উন্নয়ন প্রকল্প অনুমোদন করেছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)।
মঙ্গলবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে এনইসি সম্মেলন কক্ষে একনেক চেয়ারপারসন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত একনেক সভায় এ অনুমোদন দেওয়া হয়।
বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন ‘আজ বৈঠকে ১৯টি প্রকল্প অনুমোদন করা হয়েছে। প্রকল্পগুলোর মোট আনুমানিক ব্যয় ১৮ হাজার ৬৬ কোটি ৫২ লাখ টাকা।’
পাস করা প্রকল্পগুলোর মোট ব্যয়ের মধ্যে ১২ হাজার ৬০ কোটি ১৯ লাখ টাকা সরকারের তহবিল থেকে দেওয়া হবে। আর পাঁচ হাজার ৫৫৫ কোটি ৬১ লাখ টাকা আসবে বৈদেশিক সহায়তা হিসাবে বহিরাগত উৎস থেকে এবং বাকি ৪৫০ কোটি ৭২ লাখ টাকা সংশ্লিষ্ট বিভাগের নিজস্ব তহবিল থেকে অর্থায়ন করা হবে।
অনুমোদিত প্রকল্পের মধ্যে ১২টি নতুন প্রকল্প এবং সাতটি সংশোধিত প্রকল্প।
তিনটি বৃহত্তম প্রকল্প হলো ৪ হাজার ২৮২ কোটি ৭৬ লাখ টাকার ‘মোংলা বন্দর সুবিধা সম্প্রসারণ ও উন্নয়ন’ প্রকল্প; দুই হাজার ৭৬২ কোটি ৪৩ লাখ টাকায়‘চট্টগ্রাম বিভাগের দক্ষিণাঞ্চলের ট্রান্সমিশন অবকাঠামো এবং কালিয়াকৈরে বঙ্গবন্ধু হাই-টেক সিটি’ প্রকল্প; এবং দুই হাজার ৬৮১ কোটি ২৪ লাখ টাকা ব্যয়ে ‘সুনামগঞ্জ ও হবিগঞ্জ সড়ক বিভাগের অধীনে ২০২২ সালের বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত বিভিন্ন সড়ক, সেতু ও কালভার্টের জরুরি সংস্কার ও উন্নয়ন প্রকল্প’ বাস্তবায়ন করা হবে।
আরও পড়ুন: একনেকে ১৩,৬৫৫ কোটি টাকার ১১ প্রকল্প অনুমোদন
এম এ মান্নান বলেন, বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের জন্য বরাদ্দকৃত এক বিলিয়ন জলবায়ু তহবিল থেকে তহবিল পেতে ডেল্টা প্ল্যান-২১০০ এর সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে উন্নয়ন প্রকল্পগুলোর নকশা করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বলেছেন।
তিনি বলেন, জলবায়ু তহবিল থেকে ১ বিলিয়ন ডলারের অর্থায়ন পাওয়ার বিষয়টি সম্প্রতি ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মধ্যে আলোচনা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী পানির প্রবাহ ও চ্যানেলের বন্যার পানি অপসারণ নির্বিঘ্ন করতে নিচু এলাকা ও হাওরে আরও সেতু ও কালভার্ট নির্মাণের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও প্রকৌশলীদের প্রতি নির্দেশ দেন।
বৈঠকের শুরুতে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, একনেক নয়াদিল্লিতে অনুষ্ঠিত জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর উজ্জ্বল ও প্রাণবন্ত অংশগ্রহণের জন্য উষ্ণ অভিনন্দন জানিয়েছে কারণ এটি বিশ্বমঞ্চে প্রধানমন্ত্রী ও দেশের ভাবমূর্তি আরও উজ্জ্বল করেছে।
তিনি বলেন, একনেক আরও উল্লেখ করেছে যে ফরাসি প্রেসিডেন্টের সাম্প্রতিক বাংলাদেশ সফর বৈশ্বিক অঙ্গনে দেশের ভাবমূর্তি আরও উজ্জ্বল করেছে।
বৈঠকে ইকোনমিক ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (ইআইইউ) প্রতিবেদন অনুযায়ী ২০৪০ সালের মধ্যে শীর্ষ ২০টি অর্থনীতির মধ্যে বাংলাদেশ স্থান করে নেবে বলে উল্লেখ করা হয়।
আগস্টে উচ্চ মূল্যস্ফীতির বিষয়ে মান্নান বলেন, মূল্যস্ফীতি বেড়েছে এবং সরকার এ বিষয়ে অনেক সচেতন। "আমরা অতীতের মতো এটিকে সম্বোধন করব," তিনি বলেছিলেন।
আরও পড়ুন: একনেকে ১২ প্রকল্পের অনুমোদন
অন্য ৯টি নতুন প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে- ৫৪৯ কোটি ৯৩ লাখ টাকা ব্যয়ে‘ফেনী (মোহাম্মদ আলী বাজার)-ছাগলনাইয়া-কারেরহাট সড়ক প্রশস্তকরণ (ঢাকা-চট্টগ্রাম পুরাতন মহাসড়ক) (জেড-১০৩১) এবং ফেনী নদীর উপর শুভপুর সেতু নির্মাণ প্রকল্প; এক হাজার ৭৪০ কোটি টাকা ব্যয়ে রায়েরবাজার এলাকায় স্যুয়ারেজ ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট নির্মাণের জন্য জমি অধিগ্রহণ; ১৪৮ কোটি ৪০ লাখ টাকা ব্যয়ে ‘উৎপাদনশীল এবং সম্ভাব্য কাজের সুযোগ (স্বপ্ন) - ২ অংশ’ প্রকল্পের সুবিধাভোগী নারীদের সক্ষমতা বৃদ্ধি; ১১০ কোটি ৫৮ লাখ টাকায় ‘বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গনে মাজার মসজিদ নির্মাণ’ প্রকল্প; ২৮২ কোটি ৬২ লাখ টাকা ব্যয়ে ‘কৃষক পর্যায়ে বিএডিসির বীজ সরবরাহ কর্মসূচি শক্তিশালীকরণ’ প্রকল্প; ৩০৩ কোটি ৬৭ লাখ টাকা ব্যয়ে ‘মানিকগঞ্জ, ঢাকা, মুন্সীগঞ্জ, রাজবাড়ী, ফরিদপুর, মাদারীপুর ও শরীয়তপুর জেলার নদীমাতৃক চারণ এলাকায় সমন্বিত প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন’ প্রকল্প বাস্তবায়ন; ৬২৮ কোটি ৮৬ লাখ টাকা ব্যয়ে মেঘনা শাখা নদীর ভাঙন থেকে হিজলা উপজেলার পুরাতন হিজলা, বাউশিয়া ও হরিনাথপুর এলাকা রক্ষা প্রকল্প; ৮৫৯ কোটি ৭৭ লাখ টাকা ব্যয়ে পদ্মা নদীর ডান তীরের ভাঙন থেকে শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার মাঝিরঘাট জিরো পয়েন্ট এলাকা রক্ষা প্রকল্প এবং ৮২৭ দশমিক ০২ কোটি টাকায় চাঁদপুর সিটি রক্ষা ও সংস্কার প্রকল্প বাস্তবায়ন করবে।
আরও পড়ুন: একনেকে ১১ হাজার ৩৮৮ কোটি টাকা আনুমানিক ব্যয়সহ ১৮টি প্রকল্প অনুমোদন
সাতটি সংশোধিত প্রকল্প হলো- ‘জেলা মহাসড়কে যথাযথ মান ও প্রস্থে উন্নীতকরণ (খুলনা জোন) (১ম সংশোধিত)’ প্রকল্পের অতিরিক্ত ব্যয় ১০৬ কোটি ১৭ লাখ টাকা (বর্তমানে ব্যয় বেড়েছে ৮৬২ কোটি ৯৭ লাখ টাকা); ‘নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের গুদারাঘাটের কাছে শীতলক্ষ্যা নদীর উপর কদমরসুল সেতু নির্মাণ (প্রথম সংশোধিত)’ প্রকল্পের অতিরিক্ত ব্যয় ১৪৪ কোটি ৪৩ লাখ টাকা (বর্তমানে ৭৩৫ কোটি ১৮ লাখ টাকা); ‘গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ভৌত অবকাঠামো উন্নয়ন (রাস্তা ও ড্রেন) (তৃতীয় সংশোধিত ‘ প্রকল্পের ব্যয় ৭০০ কোটি ৬০ লাখ টাকা থেকে বাড়ানো ছাড়া; ‘হাতিয়া দ্বীপ, নিঝুম দ্বীপ এবং কুতুবদিয়া দ্বীপের শতভাগ নির্ভরযোগ্য এবং টেকসই বিদ্যুতায়ন (প্রথম সংশোধিত)’ প্রকল্পের অতিরিক্ত ব্যয় ২২৬ কোটি ২৪ লাখ টাকা (বর্তমানে ৬৪৭ কোটি ১২ লাখ টাকা);‘সার সঞ্চয় ও বিতরণ সুবিধার জন্য দেশের বিভিন্ন জেলায় ১৩টি নতুন বাফার গোডাউন নির্মাণ (তৃতীয় সংশোধিত)’ প্রকল্পের ব্যয় ৫৩৫ কোটি ৩৩ লাখ টাকা থেকে এক কোটি ৩৬ লাখ টাকা হ্রাস; এক হাজার ৯৭৩ কোটি ৫৮ লাখ টাকা (বর্তমানে ৬ হাজার ৯৬ কোটি টাকা) অতিরিক্ত ব্যয় সহ ‘অস্বচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য ঘর নির্মাণ (প্রথম সংশোধিত)’ প্রকল্প; এবং ৩৬৩ কোটি ৭০ লাখ টাকা (বর্তমানে এক হাজার ২৩ কোটি ৫০ লাখ টাকা) অতিরিক্ত ব্যয় সহ‘বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাপক উন্নয়ন (প্রথম সংশোধিত)’ প্রকল্প।
আরও পড়ুন: একনেকে ৮৮টি পৌরসভায় নগর শাসন ও অবকাঠামো উন্নয়নে ৬,৩৪৫ কোটি টাকার প্রকল্প অনুমোদন
মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
সাধারণ মানুষ দুর্ভোগ লাঘবে মূল্যস্ফীতির লাগাম টেনে ধরার জন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান।
এসময় তিনি প্রধানমন্ত্রীর বরাতে বলেন, ‘এই মুহূর্তে আমাদের সবার প্রধান দায়িত্ব মূল্যস্ফীতির বিরুদ্ধে লড়াই করা।’
রাজধানীর শেরে বাংলানগর এলাকায় এনইসি সম্মেলন কক্ষে একনেক চেয়ারপার্সন প্রধানমন্ত্রীর সভাপতিত্বে একনেক বৈঠক শেষে মন্ত্রী সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
তিনি স্থানীয় মুদ্রার ওপর চাপ কমাতে এবং বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বাড়াতে প্রকল্প বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে বিদেশি উৎস থেকে বৃহত্তর অর্থায়নের ওপর জোর দিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বলেন।
বাংলাদেশ কম বৈদেশিক ঋণ ব্যবহার করায় বৈদেশিক ঋণের পাইপলাইন বড় হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বিদেশি ঋণ আরও বড় আকারে ব্যবহার করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানান।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ বাইরের কোনো চাপের কাছে নতি স্বীকার করবে না: প্রধানমন্ত্রী
শেখ হাসিনা বলেন, বৈদেশিক সাহায্যপ্রাপ্ত প্রকল্প সময়মতো বাস্তবায়নের প্রবণতা বাড়লে বৈদেশিক ঋণ বিতরণ বাড়বে।
তিনি অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি), জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এবং অর্থ বিভাগসহ কর্তৃপক্ষকে উন্নয়ন প্রকল্পে অর্থায়নের জন্য আরও বেশি বৈদেশিক তহবিল এবং বৈদেশিক ঋণ ব্যবহার করে তা নিশ্চিত করতে বলেছেন, যা বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বাড়াবে।
এসময় পর্যায়ক্রমে সৌরচালিত পাম্পের মাধ্যমে শতভাগ সেচ নিশ্চিত করার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।
১১৬ কোটি ৩২ লাখ টাকা ব্যয়ে ‘বিসিএস (ট্যাক্স) একাডেমির ভৌত অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প (ফেজ-১)’- শীর্ষক প্রকল্পের কথা উল্লেখ করে তিনি এ ধরনের প্রকল্প বাস্তবায়নের সময় কম জমি ব্যবহার করার জন্য কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন।
মঙ্গলবার একনেক ৪৮টি জেলার ৮৮টি পৌরসভায় নগর শাসন ও অবকাঠামো উন্নয়নে ৬ হাজার ৩৪৫ কোটি টাকার একটিসহ মোট ১৬টি প্রকল্প অনুমোদন করেছে।
আরও পড়ুন: আগামী জাতীয় নির্বাচন যথাসময়ে অনুষ্ঠিত হবে: জেনেভায় নাগরিক সংবর্ধনায় প্রধানমন্ত্রী
বাংলাদেশের অর্থনীতি এখন মর্যাদাপূর্ণ অবস্থানে রয়েছে: প্রধানমন্ত্রী
একনেকে ১১ হাজার ৩৮৮ কোটি টাকা আনুমানিক ব্যয়সহ ১৮টি প্রকল্প অনুমোদন
জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) মোট ১১ হাজার ৩৮৮ কোটি টাকা ব্যয়ে ১৮টি উন্নয়ন প্রকল্প অনুমোদন করেছে।
মঙ্গলবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে এনইসি সম্মেলন কক্ষে এনসেক চেয়ারপার্সন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে একনেক সভায় এ অনুমোদন দেওয়া হয়।
সভা শেষে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, ‘আজ ১৮টি প্রকল্প অনুমোদন করা হয়েছে। প্রকল্পগুলোর সামগ্রিক আনুমানিক ব্যয় ১১ হাজার ৩৮৭ কোটি ৯১ লাখ টাকা (শুধুমাত্র সংশোধিত প্রকল্পগুলো অতিরিক্ত ব্যয় এখানে গণনা করা হয়েছে)।’
তিনি জানান, ব্যয়ের মধ্যে বাংলাদেশ সরকার ৭ হাজার ৪৪৫ কোটি ৩৪ লাখ টাকা অর্থায়ন করবে, আর ৩ হাজার ৮৬১ কোটি ৭৯ লাখ টাকা আসবে বৈদেশিক উৎস থেকে এবং বাকি ৮০ কোটি ৭৮ লাখ টাকা সংশ্লিষ্ট সংস্থার তহবিল থেকে।
অনুমোদিত প্রকল্পগুলোর মধ্যে ৯টি নতুন এবং বাকিগুলো সংশোধিত প্রকল্প।
নতুন প্রকল্পগুলোর মধ্যে রয়েছে- ‘শহীদ বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সী আবদুর রউফ স্মৃতি জাদুঘরের লিংক রোড এবং ফরিদপুর জেলার অধীনে নদীতে ভাঙন ও ড্রেজিং থেকে মধুমতি নদীর বাম তীরের অন্যান্য এলাকা রক্ষা, যার আনুমানিক ব্যয় ৪৮১.১০ কোটি টাকা; ৮৭৭.৫৩ কোটি টাকার ‘বাগেরহাট জেলা পল্লী অবকাঠামো’ প্রকল্প: ১৪২৮ কোটি টাকায় ‘নেত্রকোনা জেলা পল্লী অবকাঠামো উন্নয়ন’ প্রকল্প; ২৫০ কোটি টাকায় ‘নড়াইল জেলা পল্লী অবকাঠামো উন্নয়ন’ প্রকল্প; এবং ৩৬৯.৩০ কোটি টাকায় কৃষি মন্ত্রণালয়ের ৬টি নতুন আঞ্চলিক কার্যালয় স্থাপনের মাধ্যমে অবস্থানভিত্তিক ধানের জাত ও প্রযুক্তি উদ্ভাবন এবং বিদ্যমান গবেষণাগারের উন্নয়ন।
আরও পড়ুন: একনেকে ১২ প্রকল্পের অনুমোদন
অন্য নতুন প্রকল্পগুলো হলো- ১ হাজার ৪১৮ কোটি ৭৫ লাখ টাকা ব্যয়ে ১০টি মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীদের জন্য আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সম্বলিত ১৯টি হোস্টেল ভবন নির্মাণ; ৯৬ কোটি ৯৬ লাখ টাকায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে চারুকলা অনুষদের ভবন নির্মাণ; ৪০১৬ কোটি ৫৭ লাখ টাকায় ‘হায়ার এডুকেশন এক্সিলারেশন অ্যান্ড ট্রান্সফরমেশন (হিট)’ এবং ৮৯ কোটি ০২ লাখ টাকায় ‘সাভার সেনানিবাস এলাকায় মাংস প্রক্রিয়াকরণ প্ল্যান্ট স্থাপন’।
সংশোধিত প্রকল্পগুলো হলো-‘পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল, পটুয়াখালী স্থাপন (১ম সংশোধিত)’ অতিরিক্ত ব্যয় ৬৬ কোটি ৫৫ লাখ টাকা (বর্তমানে ৬৫১ কোটি টাকা); ‘আশ্রয়ণ-২ (৫ম সংশোধিত) প্রকল্প’ যার খরচ কমানো হয়েছে ২ হাজার ৩৪৩ কোটি ২৩ লাখ টাকা (এখন খরচ নেমে এসেছে ৮ হাজার ৭৯৯ কোটি ৬৫ লাখ টাকা); ‘গুরুত্বপূর্ণ নগর পরিকাঠামোর উন্নয়ন (পর্যায়-২) (প্রথম সংশোধিত)’ অতিরিক্ত ব্যয়ে ৯৫৩ কোটি টাকা (এখন খরচ ৪ হাজার ৪১৮ কোটি ৫০ লাখ টাকা); ‘বাংলাদেশ আঞ্চলিক সংযোগ প্রকল্প-১ শেওলা, রামগড় ও ভোলাগঞ্জ স্থলবন্দর উন্নয়ন এবং বেনাপোল স্থলবন্দরের নিরাপত্তা ব্যবস্থার আধুনিকীকরণ (২য় সংশোধিত)’ অতিরিক্ত ব্যয়ে ২৩৪ কোটি ২৭ লাখ টাকা (বর্তমানে ৯৬৬ কোটি ১৩ লাখ টাকা); ‘সাতক্ষীরা রোড ও সিটি বাইপাস রোডের সংযোগকারী সংযোগ সড়কসহ তিনটি সংযোগ সড়ক নির্মাণ (১ম সংশোধিত)’ অতিরিক্ত ব্যয় ৩২৩ কোটি ১৩ লাখ টাকা (বর্তমানে ৭১৭ কোটি ৮০ লাখ টাকা); ‘চট্টগ্রাম সিটি আউটার রিং রোড (৪র্থ সংশোধিত)’ অতিরিক্ত ব্যয় ৬৪৮ কোটি ১৯ লাখ টাকা (বর্তমানে ৩ হাজার ৩২৪ কোটি ১৫ লাখ টাকা); ২৫৩ কোটি ৮১ লাখ টাকার অতিরিক্ত ব্যয়ে ‘ডিজিএফআই’স টেলিকমিউনিকেশন অ্যান্ড আইসিটি অবকাঠামো, মানবসম্পদ ও প্রযুক্তিগত সক্ষমতা বিল্ডিং (টিআইএইচডিটিসিবি) (দ্বিতীয় সংশোধিত)’ (এখন খরচ ১ হাজার ৫২১ কোটি ৭৬ লাখ টাকা); ‘বাংলাদেশ রেলওয়ের টঙ্গী-জয়দেবপুর সেকশনে ৩য় ও ৪র্থ ডুয়েলগেজ লাইন এবং টঙ্গী-জয়দেবপুর সেকশনে ডুয়েল-গেজ ডাবল লাইন নির্মাণ (২য় সংশোধিত)’ অতিরিক্ত ব্যয় ২ হাজার ২৩৫ কোটি ৭৫ লাখ টাকা (বর্তমানে ৩ হাজার ৩৪২ কোটি ৫৫ লাখ টাকা); এবং ২০ কোটি ৭৯ লাখ টাকা (এখন খরচ ২৩৭ কোটি ৩৮ লাখ টাকা) খরচ কমিয়ে জাতীয় উন্নয়ন প্রশাসন একাডেমি (তৃতীয় সংশোধিত) স্থাপন।
আরও পড়ুন: একনেকে ১৩,৬৫৫ কোটি টাকার ১১ প্রকল্প অনুমোদন
একনেকে ৪২৫২.৬৬ কোটি টাকার ১১ প্রকল্প অনুমোদন
একনেকে ১২ প্রকল্পের অনুমোদন
জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) মঙ্গলবার পদ্মা বহুমুখী সেতু নির্মাণব্যয় ২৪১২ দশমিক ১৩ কোটি টাকা বাড়ানো এবং ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত সময়সীমা বাড়ানোর জন্য সংশোধিত একটিসহ মোট ১২টি উন্নয়ন প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে।
১২টি প্রকল্পের মোট আনুমানিক ব্যয় ১৯ হাজার ৫৯৮ দশমিক ৮৪ কোটি টাকা। এখানে শুধুমাত্র চারটি সংশোধিত প্রকল্পের অতিরিক্ত ব্যয় হিসেব করা হয়েছে।
মঙ্গলবার রাজধানীর শেরেবাংলানগর এলাকায় এনইসি সম্মেলন কক্ষে একনেক চেয়ারপার্সন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় এ অনুমোদন দেওয়া হয়।
সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, ‘আজকের বৈঠকের আগে মোট ১৫টি প্রকল্প রাখা হয়েছিল। এর মধ্যে ১২টি প্রকল্প অনুমোদন পেয়েছে এবং দুটি স্থগিত করা হয়েছে। আর বাকি একটির সময় বাড়ানো হয়েছে।’
অনুমোদিত ১২টি প্রকল্পের মধ্যে ৮টি নতুন এবং বাকি চারটি সংশোধিত প্রকল্প।
এ বিষয়ে পরিকল্পনা সচিব সত্যজিৎ কর্মকার জানিয়েছেন, মোট আনুমানিক ব্যয়ের মধ্যে প্রকল্প সহায়তা হিসেবে বিদেশি উৎস থেকে ১৩ হাজার ২০৩ দশমিক ৬৬ কোটি টাকা আসবে, এবং ৬ হাজার ২৬০ দশমিক ৭২ কোটি টাকা জিওবি তহবিল থেকে এবং বাকি ১৩৪ দশমিক ৪৬ কোটি টাকা সংশ্লিষ্ট সংস্থার তহবিল থেকে।
আরও পড়ুন: একনেকে ১৩,৬৫৫ কোটি টাকার ১১ প্রকল্প অনুমোদন
পদ্মা বহুমুখী সেতু নির্মাণ প্রকল্পের ব্যয় বৃদ্ধির কারণ সম্পর্কে পরিকল্পনা কমিশনের ভৌত অবকাঠামো বিভাগের সদস্য ড. মোহাম্মদ এমদাদ উল্লাহ মিয়া বলেন, ভ্যাটের হার ১০ শতাংশ থেকে বেড়ে এখন ১৫ শতাংশ হয়েছে। পাশাপাশি নদী শাসনের জন্য নির্মাণ সামগ্রীর দাম এবং ডলারের দাম বেড়েছে।
তিনি আরও বলেন, প্রকল্পের তথ্যপত্রে বলা হয়েছে যে পদ্মা সেতু প্রকল্পের মূল কাজ ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে। কিন্তু এখন বাকি আনুষঙ্গিক কাজ শেষ করতে এবং ঠিকাদারদের বকেয়া পরিশোধের জন্য প্রকল্পের সংশোধন প্রয়োজন। তাই এ বিবেচনায় প্রকল্প অনুমোদন করা যেতে পারে।
ব্যয়ের পরিপ্রেক্ষিতে একনেক সভায় অনুমোদিত সবচেয়ে বড় তিনটি নতুন প্রকল্প হলো- ‘প্রোগ্রাম অন অ্যাগ্রিকালচারাল অ্যান্ড রুরাল ট্রান্সফরমেশন ফর নিউট্রিশন, এন্টারপ্রিনিউরশিপ অ্যান্ড রেজিল্যান্স ইন বাংলাদেশ’, যার আনুমানিক ব্যয় ৬ হাজার ৯১০ দশমিক ৯৪ কোটি টাকা; ৪ হাজার ৯৮৮ দশমিক ১৪ কোটি টাকায় ‘বাংলাদেশ রোড সেফটি প্রজেক্ট’; ২ হাজার ৬২০ দশমিক ৭৭ কোটি টাকায় জিটুজি প্রকল্পের ভিত্তিতে ২টি অপরিশোধিত তেল মাদার ট্যাঙ্কার এবং ২টি মাদার বাল্ক ক্যারিয়ার জাহাজ সংগ্রহ।
প্রধানত ঐতিহ্যবাহী কৃষি ব্যবস্থাকে বাণিজ্যিক কৃষিতে রূপান্তর এবং খাদ্যশস্য উৎপাদনে বহুমুখীকরণের লক্ষ্যে ২০২৮ সালের জুনের মধ্যে দেশের ৬৪টি জেলার ৪৯৫টি উপজেলার সকল ইউনিয়নে কৃষি (পার্টনার) প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে।
প্রকল্পের অন্যান্য প্রধান উদ্দেশ্যগুলো হলো কৃষি পণ্য রপ্তানির জন্য কৃষি উদ্যোক্তাদের উন্নয়ন এবং জলবায়ু সহনশীল কৃষি-খাদ্য মূল্য-শৃঙ্খল সম্প্রসারণ।
সড়ক দুর্ঘটনা ও ক্ষয়ক্ষতি কমানোর পাশাপাশি সড়ক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য সংশ্লিষ্ট সরকারি সংস্থাগুলোর সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে বাংলাদেশ সড়ক নিরাপত্তা প্রকল্পটি ২০২৮ সালের জুনের মধ্যে দেশের সব উপজেলায় বাস্তবায়ন করা হবে।
অন্যান্য নতুন প্রকল্পগুলো হলো ‘ইমপ্রুভিং কম্পিউটার অ্যান্ড সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং টারশিয়ারি এডুকেশন প্রজেক্ট (আইসিএসইটিইপি)’- যার ব্যয় ১ হাজার ২১৯ দশমিক ৮০ কোটি টাকা; বরিশাল জেলার সদর উপজেলার চরকাউয়া, চাঁদমারী, জাগুয়া, লামছড়ি ও চরমোনাই এলাকা রক্ষার জন্য কীর্তনখোলা নদী ভাঙন (পর্যায়-১) থেকে ৫১২ দশমিক ৯২ কোটি টাকায় প্রকল্প; ৩ হাজার ৮০৭ কোটি টাকায় ‘এস্টাব্লিশমেন্ট অব ইনস্টিটিউট অব ন্যানোটেকনোলজি (সাভার)’; ৭৬ দশমিক ০৬ কোটি টাকা ব্যয়ে ‘বিল্ডিং ক্লাইমেট রেজিলিয়েন্ট লাইভলিহুডস ইন দ্য ভালনারেবল ল্যান্ডস্কেপস ইন বাংলাদেশ (বিসিআরএল) প্রজেক্ট’ এবং ৫৯ দশমিক ০৮ কোটি টাকা ব্যয়ে ‘সেফার সাইবারস্পেস ফর ডিজিটাল বাংলাদেশ: এনহ্যান্সিং ন্যাশনাল অ্যান্ড রিজিওনাল ডিজিটাল ইনভেস্টিগেশন ক্যাপাবিলিটি অব বাংলাদেশ পুলিশ প্রোজেক্ট’।
অন্য তিনটি সংশোধিত প্রকল্প হলো- "কন্সট্রাকশন অব ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ ডুয়েলগেজ রেলওয়ে লাইন ইন প্যারালাল টু দ্য এক্সিসটিং মিটারগেজ রেলওয়ে লাইন (১ম সংশোধিত)’, যার অতিরিক্ত ব্যয় ২৭৯ দশমিক ৬৯ কোটি টাকা (বর্তমানে ব্যয় ৬৫৮ দমমিক ৩৫ কোটি টাকা); ‘রিকন্সট্রাকশন অব ময়মনসিংহ সেন্ট্রাল জেল (সংশোধিত) প্রজেক্ট’, অতিরিক্ত ব্যয় ১১২ দশমিক ৫৪ কোটি টাকা (এখন মোট ব্যয় বেড়ে ২৪০ দশমিক ১৫ কোটি টাকা হয়েছে) এবং ‘রিইন্সটলেশন এন্ড ইমপ্রুভমেন্ট অব লেভেল ক্রসিং গেটস অব দ্য ইস্টার্ন রিজিয়ন অব বাংলাদেশ রেলওয়ে (তৃতীয় সংশোধিত), এর অতিরিক্ত ব্যয় ২৫ দশমিক ৯৯ কোটি টাকা (বর্তমানে ১৩০ দশমিক ৫০ কোটি টাকা)।
একনেক সভায় প্রধানমন্ত্রী দেশের কারাগারগুলোতে ভার্চুয়াল কোর্ট পরিচালনার সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন।
ময়মনসিংহ কেন্দ্রীয় কারাগার পুনর্গঠন প্রকল্পের প্রথম সংশোধনী নিয়ে আলোচনাকালে তিনি এ নির্দেশ দেন।
আরও পড়ুন: একনেকে ৪২৫২.৬৬ কোটি টাকার ১১ প্রকল্প অনুমোদন
একনেকে ৭ হাজার ১৮ কোটি টাকার ৬ প্রকল্প অনুমোদন
একনেকে ৪২৫২.৬৬ কোটি টাকার ১১ প্রকল্প অনুমোদন
জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) মোট চার হাজার ২৫২ কোটি ৬৬ লাখ টাকা ব্যয়ে মোট ১১টি প্রকল্পের অনুমোদন দিয়েছে।
মোট প্রকল্প ব্যয়ের মধ্যে তিন হাজার ৬৪৫ কোটি ২১ লাখ টাকা আসবে সরকারি তহবিল থেকে এবং প্রকল্প সহায়তা হিসেবে আসবে বাকি ৬০৭ কোটি ৪৫ লাখ টাকা।
মঙ্গলবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সাপ্তাহিক একনেক সভায় এ অনুমোদন দেওয়া হয়।
একনেক সভা শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে বলেন, অনুমোদিত ১১টি প্রকল্পের মধ্যে ছয়টি নতুন এবং পাঁচটি সংশোধিত প্রকল্প।
অনুমোদিত প্রকল্পগুলো হলো- ২৪৬ কোটি টাকায় ঢাকা সিএমএইচ (২য় পর্যায়) ক্যান্সার সেন্টার স্থাপন, ঢাকা সংলগ্ন ১০টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় স্থাপন, ৭৬ কোটি ৯৪ লাখ টাকা অতিরিক্ত ব্যয়ে প্রথম সংশোধিত মাধ্যমিক শিক্ষা খাতে বিনিয়োগ কর্মসূচি, তৃতীয় সংশোধিত কোনো অতিরিক্ত খরচ ছাড়া।
আরও পড়ুন: একনেকে ৭ হাজার ১৮ কোটি টাকার ৬ প্রকল্প অনুমোদন
অন্যান্য প্রকল্পগুলো হলো- ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে স্বাধীনতা টাওয়ার নির্মাণ, ৩য় ধাপ, ১৩১ কোটি ৯১ লাখ টাকা অতিরিক্ত ব্যয়ে ১ম সংশোধিত, সারা বছর ফল উৎপাদনের মাধ্যমে পুষ্টি উন্নয়ন, ২য় পর্যায় ২১১ কোটি ৩২ লাখ টাকা অতিরিক্ত ব্যয়ে সংশোধিত এবং ৩০০ কোটি টাকা ব্যয়ে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্গঠনে জরুরি সহায়তা প্রকল্প।
বাকি প্রকল্পগুলো হলো- এক হাজার ১২৫ কোটি টাকায় জামালপুর জেলার অবকাঠামোগত উন্নয়ন, বাংলাদেশে ১৫৬ কোটি ২৫ লাখ টাকায় ওয়াশ সেক্টর স্ট্রেংথেনিং অ্যান্ড স্যানিটেশন মার্কেট সিস্টেম (সানমার্কস) উন্নয়ন প্রকল্প, বাংলাদেশে জলবায়ু সহনশীল টেকসই পানি সরবরাহ, স্যানিটেশন এবং স্বাস্থ্যবিধি প্রকল্প। ২৭৪ কোটি ৪৮ লাখ টাকা ব্যয়ে মোংলা বন্দর চ্যানেলের ভিতরের বারে ড্রেজিং, ১৯৮ কোটি ৫৪ লাখ টাকা অতিরিক্ত ব্যয়ে প্রথম সংশোধিত এবং এক হাজার ৫৩২ কোটি ২২ লাখ টাকা ব্যয়ে ভুলতা-আড়াইহাজার-বাঞ্ছারামপুর-নবীনগর-শিবপুর-রাধিকা আঞ্চলিক মহাসড়ক প্রশস্তকরণ ও উন্নয়ন।
আরও পড়ুন: দুর্যোগের ঝুঁকি কমাতে ৪ হাজার ৩২৩ কোটি টাকার প্রকল্প একনেকে অনুমোদন
দুর্যোগের ঝুঁকি কমাতে ৪ হাজার ৩২৩ কোটি টাকার প্রকল্প একনেকে অনুমোদন
জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) আকস্মিক বন্যাপ্রবণ জনগোষ্ঠী ও নদীর তীরবর্তী মানুষের বন্যা ঝুঁকি হ্রাস করার লক্ষ্যে ৪ হাজার ৩২৩ কোটি টাকার 'রেজিলিয়েন্ট ইনফ্রাস্ট্রাকচার ফর অ্যাডাপটেশন অ্যান্ড ভালনারেবিলিটি রিডাকশন প্রজেক্ট (রিভার)' অনুমোদন করেছে।
রবিবার রাজধানীর এনইসি সম্মেলন কক্ষে একনেক চেয়ারম্যান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে একনেক সভায় আরও সাতটি উন্নয়ন প্রকল্পের অনুমোদন দেয়া হয়েছে।
সভা শেষে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম বলেন, ‘আজ আটটি প্রকল্প অনুমোদন করা হয়েছে এবং প্রকল্পগুলোর মোট আনুমানিক ব্যয় ১২ হাজার ১৬৭ দশমিক ১৫ কোটি টাকা (এখানে শুধুমাত্র দুটি সংশোধিত প্রকল্পের অতিরিক্ত ব্যয় গণনা করা হয়েছে)।’
তিনি বলেন, মোট অর্থের মধ্যে ৩ হাজার ৯৭ দশমিক ৯১ কোটি টাকা জাতীয় কোষাগার থেকে, ৮ হাজার ৯১২ দশমিক ৭৭ কোটি টাকা বিদেশি উৎস থেকে এবং বাকি ১৫৬ দশমিক ৪৭ কোটি টাকা সংশ্লিষ্ট সংস্থার নিজস্ব তহবিল থেকে নেয়া হবে।
অনুমোদিত ৮টি প্রকল্পের মধ্যে ৬টি নতুন প্রকল্প এবং বাকি ২টি সংশোধিত প্রকল্প।
এছাড়া বৈঠকে ব্যয় না বাড়িয়ে আরও চারটি প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানোর অনুমোদন দেয়া হয়।
আরও পড়ুন: একনেকে ৭ হাজার ১৮ কোটি টাকার ৬ প্রকল্প অনুমোদন
প্ল্যান্টিং কমিশনের মতে, রেজিলিয়েন্ট ইনফ্রাস্ট্রাকচার ফর অ্যাডাপ্টেশন অ্যান্ড ভালনারেবিলিটি রিডাকশন প্রজেক্ট (রিভার) ৪ হাজার ৩২৩ দশমিক ৪৭ কোটি টাকা ব্যয়ে ২০২৮ সালের জুনের মধ্যে ১৪টি জেলার ৭৮টি উপজেলায় বাস্তবায়িত হবে।
প্রকল্প ব্যয়ের মধ্যে ৪ হাজার ২৭৫ কোটি টাকা আসবে বহিরাগত উৎস (আইডিএ) থেকে।
রিভার প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য হল আকস্মিক বন্যাপ্রবণ জনগোষ্ঠী ও নদীর তীরবর্তী মানুষের বন্যা ঝুঁকি হ্রাস করা এবং দুর্যোগ প্রস্তুতি ও প্রতিক্রিয়ার সক্ষমতা বৃদ্ধি করা।
মূল প্রকল্পের কার্যক্রমের মধ্যে রয়েছে- ৫০০টি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও বন্যা আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ, ১০০টি সৌরবিদ্যুৎ গ্রিড স্থাপন, প্রায় ২৫০টি মাঠের উচ্চতা হ্রাস করা ও ২৭৫ কিলোমিটার বন্যা আশ্রয়কেন্দ্র সংযোগ সড়কের উন্নয়ন, ৫০০ মিটার সেতু নির্মাণ, ১ হাজার ৩৩০ মিটার কালভার্ট নির্মাণ, ১১০ কিলোমিটার কমিউনিটি অবকাঠামো সংযোগ সড়ক উন্নয়ন, ১৫টি ল্যান্ডিং স্টেজ স্থাপন, প্রায় ৬ হাজার ৬০০টি সড়কে সোলার লাইট স্থাপন ও প্রায় ১ হাজার ৪০০টি বজ্রপাত-রোধী মেশিন স্থাপন।
আরও পড়ুন: কুমিল্লা-ব্রাহ্মণবাড়িয়া মহাসড়ক চার লেনসহ একনেকে ৬ প্রকল্প অনুমোদন
আরও পাঁচটি নতুন প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে- অতিরিক্ত ১ হাজার ৪৮ দশমিক ৪৭ কোটি টাকা ব্যয়ে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের ‘দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় ট্রান্সমিশন-গ্রিড সম্প্রসারণ (১ম সংশোধিত)’ প্রকল্প, ১২৮ দশমিক ১৬ কোটি টাকা ব্যয়ে জেন্ডার রেসপনসিভ এন্টারপ্রাইজ ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড টিভিইটি সিস্টেম (প্রগ্রেস), ১ হাজার ৬৮৬ দশমিক ৪৭ কোটি টাকা ব্যয়ে শুল্ক আধুনিকায়ন ও অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প, ১২ দশমিক ৪৪ কোটি টাকা কর্তন করে ৩য় সংশোধিত নগর টেকসই প্রকল্প (ইউআরপি): প্রজেক্ট কোঅর্ডিনেশন অ্যান্ড মনিটরিং ইউনিট (পিসিএমইউ), ৩ হাজার ৬৪৪ দশমিক ৯২ কোটি টাকা ব্যয়ে দক্ষিণ চট্টগ্রাম আঞ্চলিক উন্নয়ন (এসসিআরডি) প্রকল্প, ১হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে ময়মনসিংহ জেলার গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন, ৩৪৭ দশমিক ৬৫ কোটি টাকা ব্যয়ে মেঘনা-ধোনাগোদা সেচ প্রকল্পের পুনর্বাসন ও নদীর তীর রক্ষা।
দুটি সংশোধিত প্রকল্প হল সাউথ-ওয়েস্টার্ন পাওয়ার ট্রান্সমিশন-গ্রিডের সম্প্রসারণ (প্রথম সংশোধিত) প্রকল্প যার অতিরিক্ত ব্যয় ১ হাজার ৪৮ দশমিক ৪৭ কোটি টাকা (বর্তমানে মোট ব্যয় ৪ হাজার ৩২২ দশমিক ৩৫ কোটি টাকা বেড়েছে); এবং আরবান রেজিলিয়েন্স প্রজেক্ট (ইউআরপি): প্রজেক্ট কোঅর্ডিনেশন অ্যান্ড মনিটরিং ইউনিট (পিসিএমইউ) (তৃতীয় সংশোধিত) যার খরচ কমানো হয়েছে ১২ দশমিক ৪৪ কোটি টাকা (এখন এর খরচ কমে হয়েছে ৩২ দশমিক ৮৬ কোটি টাকা)।
আরও পড়ুন: একনেকে ২ হাজার ২১৭ কোটি টাকার ১০টি প্রকল্প অনুমোদন
৩১৩ কোটি টাকা ব্যয়ে তামাবিলসহ তিন শুল্কস্টেশন নির্মাণের উদ্যোগ
রাজস্ব আদায় বাড়াতে দেশের গুরুত্বপূর্ণ তিনটি শুল্ক স্টেশনের আধুনিকায়নে উদ্যোগ নিচ্ছে সরকার। এ জন্য একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। যা গত মাসে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় অনুমোদন দেয়া হয়।
শুল্কস্টেশন তিনটি হচ্ছে-সিলেটের তামাবিল, চাঁপাইনবাবগঞ্জের সোনামসজিদ ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া।
৩১৩ কোটি টাকা ব্যয়ে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) অর্থায়নে প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হচ্ছে। এ প্রকল্পের আওতায় কাস্টমসের অবকাঠামো তৈরি ও শুল্কায়ন প্রক্রিয়া আধুনিকায়ন করা হবে।
আরও পড়ুন: সিলেট-তামাবিল সড়ক সংস্কারে অনিয়ম, ঢালাইয়ের পরদিনই ফাটল
এনবিআরের নীতিনির্ধারক পর্যায়ের এক কর্মকর্তা গণমাধ্যমকে বলেন, ‘শুল্কস্টেশনগুলো রাজস্ব আদায়ের দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ হলেও, এগুলোর অবকাঠামো খুবই দুর্বল। এ ছাড়া জনবলের ঘাটতি রয়েছে। পূর্ণাঙ্গ শুল্ক স্টেশনের জন্য যা দরকার এসব শুল্ক স্টেশনে তা নেই। অথচ বাণিজ্যিক কর্মকাণ্ড দিন দিন বাড়ছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে এসব শুল্কস্টেশন দিয়ে পণ্য আনা-নেয়া সহজ হবে। এতে করে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যের গতি বাড়বে। সেই সঙ্গে বাড়বে রাজস্ব আদায়।’
বর্তমানে এনবিআরের অধীনে সারা দেশে ৫০টি শুল্ক স্টেশন সক্রিয় রয়েছে। এর মধ্যে অর্ধেকেরই দুর্বল অবকাঠামো।
এনবিআর সূত্র বলেছে, তিনটি শুল্ক স্টেশনের আধুনিকায়নের পর অন্যগুলো পর্যায়ক্রমে বাস্তবায়ন করা হবে।
প্রকল্পের আওতায় যে সব কাজ হবে তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে কাস্টমস অফিসের ভবন নির্মাণ, কর্মকর্তাদের জন্য আবাসিক ভবন স্থাপন, আধুনিক ল্যাব তৈরি ও কম্পিউটার ক্রয় ইত্যাদি।
বর্তমানে এসব শুল্ক স্টেশনে ম্যানুয়াল বা প্রচলিত প্রথায় পণ্যের শুল্কায়ন নিরূপণ করা হয়। প্রকল্পের কাজ শেষ হলে শুল্কায়ন প্রক্রিয়া আধুনিকায়ন হবে। এতে করে পণ্য দ্রুত খালাস হবে। সহজ হবে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য।
বর্তমানে সারা দেশে কাস্টমসের শুল্ক স্টেশনের মাধ্যমে যে পরিমাণ পণ্য আমদানি-রপ্তানি হয়, এর ৩০ ভাগ এই তিনটি স্টেশনের মাধ্যমে সম্পন্ন হয়।
এনবিআরের কর্মকর্তারা বলেন, আধুনিকায়নের কাজ শেষ হলে বাণিজ্যক কর্মকাণ্ড কমপক্ষে ২০ ভাগ বাড়বে।
ভারতের ত্রিপুরা, আসাম, মেঘালয়সহ ৭টি রাজ্যে প্রবেশের অন্যতম দ্বার ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া শুল্কস্টেশন। ১৯৯৪ সালে চালু হয় এটি। এই স্থলবন্দর দিয়ে মাছ, পাথর, সিমেন্ট, ইট, বালি, শুঁটকি, প্লাস্টিকসামগ্রী, তুলাসহ প্রায় ৪২টি বাংলাদেশি পণ্য ভারতে রপ্তানি হয়।
ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলোর সঙ্গে বাংলাদেশের যোগাযোগের ক্ষেত্রে তামাবিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ শুল্কস্টেশন হলেও দুর্বল অবকাঠামো ও স্বল্প লোকবল দিয়ে এটি চলছে। এটিকে পূর্ণাঙ্গ শুল্কস্টেশনে উন্নীত করা হলে রাজস্ব আদায় বর্তমানের চেয়ে দ্বিগুণ হবে। গত অর্থবছরে তামাবিল শুল্ক স্টেশন থেকে এক হাজার ২০০ কোটি টাকার রাজস্ব আহরণ হয়। এই শুল্ক স্টেশন দিয়ে ভারত থেকে পাথর ও কয়লা বেশি আসে।
এ ছাড়া সোনামসজিদ দিয়ে পাথর, চাল, পেঁয়াজ, শুঁটকি, ভুট্টাসহ অন্যান্য পণ্য আমদানি করা হয়। এর মধ্যে বেশি আসে পাথর। এই শুল্কস্টেশন থেকে মাসে গড়ে ৭০ থেকে ৮০ কোটি টাকার রাজস্ব আহরণ হয়।
আরও পড়ুন: তামাবিল দিয়ে দেশে ফিরলেন ন্যাপ সভাপতিসহ ১০ বাংলাদেশি
তামাবিল স্থলবন্দর দিয়ে পাথর আমদানি বন্ধ