সেতু
সন্ধ্যা-সকাল ৫দিন বন্ধ থাকবে সোনাহাট সেতু
ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় মেরামতের জন্য কুড়িগ্রামের ভুরুঙ্গামারীর সোনাহাট স্থলবন্দর সড়কের সোনাহাট সেতু পাঁচ দিন সন্ধ্যা-সকাল বন্ধ ঘোষণা করেছে সড়ক ও জনপথ বিভাগ।
বিভাগের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয় যে ২২ জুলাই (শুক্রবার) হতে আগামী ২৭ জুলাই (বুধবার) সন্ধ্যা ৬টা থেকে সকাল ৭টা পর্যন্ত সোনাহাট সেতু বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এই সময় স্থল বন্দর থেকে ঢাকাগামী ও ঢাকা থেকে স্থলবন্দরগামী ভারী পণ্যবাহী ট্রাক ও যান চলাচল বন্ধ থাকবে।
এই বিষয়ে উপজেলার সোনাহাট ইউনিয়নের উত্তর ভরতের ছড়া এলাকার অটো চালক জাহিদ মিয়া বলেন, পাঁচ দিন সেতু বন্ধ থাকলেও আমরা তো ভুরুঙ্গামারী শহরে সন্ধ্যার আগ পর্যন্ত যাত্রী নিয়ে যেতে পারবো। এ কয়েকদিন একটু কষ্ট করে চলি।
আরও পড়ুন: ভোলায় ট্রাক-অটোরিকসাসহ বেইলি ব্রিজ ভেঙে খালে, আহত ৩
সোনাহাট স্থল বন্দরের আমদানি-রপ্তানি কারক সমিতির সভাপতি আবু তাহের বলেন, স্থলবন্দর চালু হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত সাতবার এই সেতুর সংস্কার কাজ করা হয়েছে। তখন দিনে মালামাল পরিবহন করা গেলেও রাতের বেলা সংস্কার কাজ চলছিল তাতে স্থলবন্দরে পণ্য আমদানি রপ্তানিতে কোনো ধরনের বিঘ্ন সৃষ্টি হয়নি। এভাবে কাজ করলে আশা করি সমস্যা হবে না।
আরও পড়ুন: রাঙ্গামাটিতে বেইলি ব্রিজ ভেঙে ট্রাক নদীতে, নিহত ৩
কুড়িগ্রাম সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. নজরুল ইসলাম বলেন, ব্রিজের প্লেটগুলো আগের থেকে অনেক বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। তাই দুর্ঘটনা এড়াতেই মূলত আমরা পাঁচ দিন সেতু সংস্কারের জন্য ঘোষিত প্রতিদিনের নির্ধারিত সময়ের জন্য বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। পাঁচ দিন বন্ধের জন্য মাইকিং করেছি, হয়ত তিন দিনের মধ্যে কাজ শেষ হয়ে যাবে। অর্থাৎ নির্ধারিত দিনের আগেই সংস্কার কাজ শেষ হয়ে গেলে সঙ্গে সঙ্গে চলাচলের জন্য খুলে দেয়া হবে।
৪ পরিবারের যাতায়াতে আড়াই কোটি টাকার সেতু!
সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জের বেংনাই গ্রামে চার পরিবারের লোকজনের যাতায়াতে সুবিধার জন্য আড়াই কোটি টাকা ব্যয়ে একটি সেতু নির্মাণ করা হচ্ছে।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ (এলজিইডি) এ সেতুটি নির্মাণ করছে।
স্থানীয়রা জানায়, কবরস্থানসহ ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে যাতায়াতের জন্য সেতু নির্মাণের বরাদ্দ থাকলেও, বিশাল অংকের টাকা ব্যয়ে নির্মাণাধীন এ সেতুটি এলাকাবাসীর কোনো কাজেই আসবে না।
অবশ্য সংশ্লিষ্ট এলজিইডির দাবি, ওই এলাকার জনগণের যাতায়াতের স্বার্থেই দুই কোটি ৫১ লাখ ৪৯ হাজার ৫১২ টাকা ব্যয়ে ৩০ মিটার দৈর্ঘ্যের এ সেতুটি নির্মাণ করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: সিরাজগঞ্জে ট্রেনে কাটা পড়ে অজ্ঞাত ব্যক্তির মৃত্যু
সিরাজগঞ্জে বন্যার পানিতে ডুবে শিশুর মৃত্যু
ঢাকার চারপাশের সেতু ভেঙে নৌচলাচলের উপযোগী করা হবে: মন্ত্রী
ঢাকার চারপাশের নদ-নদীর ওপর নির্মিত সেতু ভেঙে সেগুলো নৌচলাচলের উপযোগী করে নির্মাণ করা হবে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম।
তিনি বলেন, ‘ঢাকার চারপাশের নদ-নদীর ওপর যে সেতুগুলো রয়েছে সেগুলো নৌযান চলাচল উপযোগী নয়। ইতোমধ্যে এসব সেতু চিহ্নিত করা হয়েছে এবং ভেঙে নৌযান চলাচল উপযোগী করে নির্মাণের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। নৌরুট চালু করতে পারলে ঢাকার রাস্তায় ট্রাফিক অনেকটাই কমে আসবে।’
রবিবার রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন মন্ত্রী।
তাজুল বলেন, ঢাকা ওয়াসার নিকট থেকে দুই সিটি করপোরেশনের কাছে খাল হস্তান্তরের পর সেগুলো পরিষ্কার, খনন, পুনঃখনন ও সংস্কার এবং অনেক অবৈধভাবে দখল হয়ে যাওয়া জায়গা ও খাল উদ্ধার হয়েছে। ফলে অন্যান্য বছরের তুলনায় এ বছর জলাবদ্ধতা অনেক কম হয়েছে।
আরও পড়ুন: বাজেট শুধু বাৎসরিক দলিল নয়, আশা আকাঙ্ক্ষার প্রতীক: স্থানীয় সরকারমন্ত্রী
তিনি বলেন, শুধু স্বপ্ন দেখলে হবে না, তা বাস্তবায়ন করতে হবে। আনুষ্ঠানিকতার মধ্যে সীমাবদ্ধ না থেকে কথার সঙ্গে কাজের মিল রাখতে হবে। কোনো কাজ করতে শুরু করতে যদি দুই বছর যায়। আবার বাস্তবায়ন করতে পাঁচ থেকে সাত বছর লাগে। তাহলে এর সুফল মানুষ পাবে কখন, প্রশ্ন তোলেন স্থানীয় সরকারমন্ত্রী।
ঢাকা শহরের অধিকাংশ বাসা বাড়িতে সেপটিক ট্যাংক নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাসা মালিকরা নিজেদের সুয়ারেজ লাইন সরাসরি খালে দিয়ে রেখেছেন। অনেক বার বিভিন্নভাবে সতর্ক করা হয়েছে। কিন্তু ফলাফল সন্তোষজনক নয়।
এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, শুধু সতর্ক করে হবে না। কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। যারা সুয়ারেজ লাইন খালে দিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে জরিমানা ও শাস্তির ব্যবস্থা নিলে হবে না। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সেপটিক ট্যাংক না করলে সুয়ারেজ লাইন বন্ধ করে দিতে হবে।
আরও পড়ুন: শ্রীলঙ্কার সঙ্গে বাংলাদেশের উদাহরণ বেমানান: স্থানীয় সরকারমন্ত্রী
স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব মোহাম্মদ মেজবাহ্ উদ্দিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য্য, পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস, উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম ও পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের জ্যৈষ্ঠ সচিব কবির বিন আনোয়ার।
দুর্ভোগ লাঘবে করা সেতুতেই ভোগান্তি বাড়ল!
দুর্ভোগ লাঘবে করা সেতুতেই ভোগান্তি বাড়ল টাঙ্গাইল সদরের বেড়াডোমাবাসীর। নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার আগেই ওই এলাকার লৌহজং নদীর ওপর নির্মাণাধীন সেতুটি মাঝখান দিয়ে দেবে গেছে। বৃহস্পতিবার রাতে এ ঘটনা ঘটে।
গত সপ্তাহে সেতুটির ওপরের অংশে ঢালাই করা হয়। বৃহস্পতিবার রাতে সেতুটির সেন্টারিং সাটারিং সরে গিয়ে মাঝখানে সাড়ে তিন ফুট দেবে যায়।
স্থানীয়দের অভিযোগ, ঠিকাদার ও প্রকৌশলীর গাফিলতিতে সেতুটি নির্মাণ শেষ হওয়ার আগেই দেবে গেছে। এর ফলে তাদের দুর্ভোগ আরও বাড়ল বলে জানিয়েছেন তারা।
টাঙ্গাইল পৌরসভা সূত্রে জানা যায়, স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী অধিদপ্তরের (এলজিইডি) আওতায় টাঙ্গাইল পৌরসভা টাঙ্গাইল-বেড়াডোমা-ওমরপুর সড়কের বেড়াডোমা এলাকার লৌহজং নদীর ওপর সেতুটি নির্মাণ করছে। আট মিটার প্রশস্ত ও ৩০ মিটার দীর্ঘ সেতুটির নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে তিন কোটি ৬০ লাখ ১৮ হাজার টাকা।
আরও পড়ুন: ঈদের সকালে বজ্রপাতে টাঙ্গাইলে ৩ কিশোরের মৃত্যু
২০২০ সালের ১২ নভেম্বর থেকে ব্রিকস অ্যান্ড ব্রিজ লিমিটেড ও দ্য নির্মিত নামের দুটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান যৌথভাবে সেতুটির নির্মাণ কাজ শুরু করে। গত ১১ মে কাজটি শেষ হওয়ার কথা থাকলেও এখন পর্যন্ত মাত্র ৫৫ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে।
জেলা আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক সোলায়মান হাসান বলেন, এই সেতুটির নির্মাণ কাজ অন্যজন পেয়েছিলেন। স্থানীয় এমপি তার কাছ থেকে প্রভাব খাটিয়ে কাজটি হাতিয়ে নেয়। পরে তার কর্মী আমিরুলসহ তার অনুসারীদের কাজটি দিয়েছে।
তিনি বলেন, যারা কখনো সেতু নির্মাণ করা দেখেই নাই তারা সেতু নির্মাণ করতে এসেছে। এটা দুঃখজনক। নদীতে তেমন পানি ও স্রোত না থাকলেও সেতুটি দেবে গেছে। সঠিক পদ্ধতিতে মান সম্মত সেতু নির্মাণ করার দাবি জানালেও তারা সব সময় এমপির দোহাই ও ক্ষমতা দেখিয়েছে।
সরকারের অর্থের অপচয় করার জন্য ঠিকাদারদের বিচারের দাবিও জানান তিনি।
আরও পড়ুন: টাঙ্গাইলে পুলিশের গাড়িতে হামলা, বিএনপির ৪৯ নেতাকর্মী জেলহাজতে
৫ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আবুল কালাম আজাদ বলেন, দুর্ভোগ লাঘবে কাজটি শেষ করার জন্য বার বার তাগিদ দেয়া হয়েছে। কিন্তু পৌরসভার প্রকৌশলী ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের লোকজন কোনো কথাই শুনে না। সেতুটি দেবে যাওয়ায় লাখ লাখ মানুষের কয়েক বছরের জন্য দুর্ভোগ বেড়ে গেল।
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি আমিরুল ইসলাম বলেন, তারা দু’জনই ঢাকা থেকে কাজ করছেন। তিনি তাদের পক্ষে কথা বললেও তিনি আসলে ওই প্রতিষ্ঠানের কেউ নন; এটা প্রমাণ করতেও আগ্রহী তিনি।
তিনি বলেন, ‘আমার নেতৃত্বে কোনো কাজ বাস্তবায়ন হচ্ছে না।’
এ ব্যাপারে টাঙ্গাইল পৌরসভার প্রকৌশলী শিব্বির আহমেদ আজমী বলেন, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে প্রকল্প পরিচালকসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে অবগত করা হয়েছে। এ ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করে মূল রহস্য উদঘাটন করা হবে।
সুনামগঞ্জে বন্যায় ৫৫২ কিলোমিটার রাস্তা ও ৮টি সেতু ক্ষতিগ্রস্ত
স্থানীয় সরকার ও প্রকৌশল বিভাগের (এলজিইডি) কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সাম্প্রতিক বন্যায় সুনামগঞ্জ জেলায় মোট ৫৫২ কিলোমিটার রাস্তা এবং আটটি সেতু এবং কালভার্ট ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
এলজিইডি অফিস সুনামগঞ্জ কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তাগুলোর মধ্যে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের ৫০০ কিলোমিটার এবং সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের ৫২ কিলোমিটার।
বন্যায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে ছাতক, দোয়ারাবাজার, বিশ্বম্ভরপুর ও তাহিরপুর উপজেলায়। গ্রামীণ সড়কগুলোর ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এসব সড়ক দিয়ে চলাচলে ভোগান্তি পোহাচ্ছে মানুষ। ছাতকের নোয়ারাবাই-বাংলাবাজার সড়ক, ছাতক-জাউয়াবাজার সড়ক, ছাতক-গোবিন্দগঞ্জ সড়ক, কৈতক-হায়দরপুর সড়ক, লামা-রসুলগঞ্জ সড়কের বেশি ক্ষতি হয়েছে।
আরও পড়ুন: বন্যায় সুনামগঞ্জে শত কোটি টাকার ক্ষতি
৫ ঘণ্টা পর কালুরঘাট সেতুতে যানচলাচল স্বাভাবিক
চট্টগ্রামের কালুরঘাট সেতুতে পাঁচ ঘণ্টা পর যান চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে। শুক্রবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে উদ্ধারকারী ক্রেন সেতুতে লাইনচ্যুত ওয়াগন ট্রেনের গার্ড ব্রেকটি সরিয়ে নিলে যানচলাচল শুরু হয়।
এর আগে রাত সাড়ে ৮টার দিকে চট্টগ্রামগামী ওয়াগন ট্রেনের গার্ড ব্রেক সেতুতে লাইনচ্যুত হয়। এতে সেতুতে যানচলাচল বন্ধ হয়ে যায়। সেতুর দুই প্রান্তে শতশত যানবাহন আটকা পড়ে ভোগান্তিতে পড়েন সাধারণ যাত্রীরা।
আরও পড়ুন: কালুরঘাট বেতার কেন্দ্রে যেতে মির্জা ফখরুলকে বাধা
রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী (সেতু) আহসান জাবির জানান, চট্টগ্রাম-দোহাজারী এ রুটে দোহাজারী পিকিং পাওয়ার প্ল্যান্ট বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ফার্নেস তেলবাহী ওয়াগন ট্রেন চলাচল করে। শুক্রবার দোহাজারী পিকিং পাওয়ার প্ল্যান্টে ফার্নেস তেল খালাস করে ফেরার পথে একটি গার্ড ব্রেক লাইনচ্যুত হয়। ওয়াগন ট্রেনের গার্ড ব্রেকটি লাইনচ্যুত হয়ে সেতুতে আটকা পড়েছিল। নগরীর পাহাড়তলী থেকে আসা উদ্ধারকারী ক্রেন লাইনচ্যুত গার্ড ব্রেকটি সরিয়ে নিলে রাত দেড়টার পর থেকে যানচলাচল শুরু হয়েছে।
আরও পড়ুন: কালুরঘাট নতুন সেতু: ক্ষোভ আর হতাশা নিয়ে চলে গেলেন এমপি বাদল
এর আগে বৃহস্পতিবার রাত ১০টা থেকে শুক্রবার ভোর ৬টা পর্যন্ত সেতু বন্ধ রেখে সেতুটি সংস্কার করে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ।
পদ্মা সেতুর টোল হার চূড়ান্ত করেছে সরকার
পদ্মা বহুমুখী সেতু পারাপারের জন্য বিভিন্ন ধরনের যানবাহনের টোলের হার চূড়ান্ত করেছে সরকার। মঙ্গলবার সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের অধীন সেতু বিভাগ এ সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে গেজেট আকারে প্রকাশ করেছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, মোটরসাইকেলের জন্য ১০০ টাকা, প্রাইভেট কার ও জিপের জন্য ৭৫০ টাকা, পিক-আপের জন্য ১২০০ টাকা, মাইক্রোবাসের জন্য ১৩০০ টাকা, ছোট বাসের জন্য (৩১টি আসন বিশিষ্ট) এক হাজার ৪০০ টাকা, মাঝারি বাসের জন্য ২০০০ টাকা (৩২টি আসন বিশিষ্ট), বড় সাইজের বাসের জন্য ২৪০০ টাকা, ছোট ট্রাক (৫ টন) এর জন্য এক হাজার ৬০০ টাকা, মাঝারি আকারের ট্রাকের জন্য (৫ টন থেকে ৮ টনের বেশি), মাঝারি আকারের ট্রাক (৮ টন থেকে ১১ টনের বেশি) ২১০০ টাকা, বড় ট্রাকের জন্য ৫৫০০ টাকা (৩ এক্সেল পর্যন্ত) ট্রেলার ট্রাকের জন্য ছয় হাজার টাকা (৪ এক্সেল) এবং ট্রেলারের জন্য (৪ এক্সেলের বেশি) ছয় হাজারের বেশি টাকা টোল নির্ধারণ করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: পদ্মা সেতু হয়ে ঢাকা-ভাঙ্গা ট্রেন চালু আগামী বছরের জুনে: রেলমন্ত্রী
গত ১১ মে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বহুল আলোচিত পদ্মা সেতু জুনে উদ্বোধন করা হবে; বর্তমানে উদ্বোধনের প্রস্তুতি চলছে।
রাজধানীর সেতু বিভাগের সম্মেলন কক্ষে বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের ১১১তম বোর্ড সভা শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে কাদের এসব কথা বলেন।
সেতুমন্ত্রী বলেন, মূল সেতুর কাজের অগ্রগতি ৯৮ শতাংশ, নদী প্রশিক্ষণ ৯২ শতাংশ এবং কার্পেটিং কাজের অগ্রগতি ৯১ শতাংশ।
আরও পড়ুন: জুনে পদ্মা সেতু উদ্বোধন: ওবায়দুল কাদের
জুনে পদ্মা সেতু যান চলাচলের জন্য খুলে দেয়া হবে: কাদের
বঙ্গোপসাগরকে সংযোগ সেতুতে রূপান্তরের আহ্বান মোদির
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বিমসটেকের সদস্য দেশগুলোর মধ্যে বঙ্গোপসাগরকে সংযোগ, সমৃদ্ধি ও নিরাপত্তার সেতুতে রূপান্তরিত করতে সচেষ্ট হওয়ার জন্য সংগঠনটির নেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
মোদি তার দেয়া বক্তব্যে বিমসটেক অঞ্চলের মধ্যে বর্ধিত যোগাযোগ সহযোগিতা ও আঞ্চলিক নিরাপত্তার গুরুত্বের ওপর জোর দেন এবং এ বিষয়ে বেশ কিছু পরামর্শ দেন।
বুধবার প্রধানমন্ত্রী মোদি শ্রীলঙ্কায় আয়োজিত পঞ্চম বিমসটেক শীর্ষ সম্মেলনে ভার্চুয়ালি অংশ নিয়ে দেয়া বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
আরও পড়ুন: সহযোগিতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে কলম্বোতে বিমসটেক সনদ স্বাক্ষরিত
এবারের শীর্ষ সম্মেলনের থিম ‘টুয়ার্ডস এ রেজিলিয়েন্ট রিজিওন, প্রসপারাস ইকোনোমিস, হেলদি পিপল’-এর মাধ্যমে সদস্য রাষ্ট্রগুলোর বর্তমান প্রধান অগ্রাধিকারগুলো বাস্তবায়ন এবং কোভিড-১৯ এর অর্থনৈতিক ও অন্যান্য প্রতিবন্ধকতাগুলো মোকাবিলা করার প্রত্যয় ব্যক্ত করা হয়।
এ সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং অন্যান্য নেতার উপস্থিতিতে তিনটি বিমসটেক চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।
এগুলো হল অপরাধ সংক্রান্ত বিষয়ে পারস্পরিক আইনি সহায়তা সংক্রান্ত বিমসটেক কনভেনশন; কূটনৈতিক প্রশিক্ষণের ক্ষেত্রে পারস্পরিক সহযোগিতার বিষয়ে বিমসটেক সমঝোতা স্মারক এবং বিমসটেক প্রযুক্তি স্থানান্তর সুবিধা প্রতিষ্ঠার বিষয়ে অ্যাসোসিয়েশনের স্মারক।
আরও পড়ুন: বিমসটেক নেতাদের একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
কলম্বোতে ৫ম বিমসটেক শীর্ষ সম্মেলন শুরু
সেতু এখন মরণ ফাঁদ!
সংস্কারের অভাবে খুলনার পাইকগাছা উপজেলার সোলাদানার কুচিয়া নদীর ওপর নির্মিত সেতুটি এখন মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে।
প্রায় ৩৫ বছর আগে নির্মিত সেতুটি দীর্ঘ দিনে সংস্কার না করায় অতিরিক্ত লবণাক্ততার কারণে এরই মধ্যে খুঁটিতে ফাঁটল ধরেছে। রেলিং (গার্ডার) ভেঙে পড়েছে আরও আগে। এই অবস্থাতে বেশ কয়েকটি গ্রামের হাজারো মানুষ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সেতুটি পারাপার করছে। যেকোন মুহূর্তে সেতুটি ভেঙে বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা। তবে অগ্রাধিকারভিত্তিতে শিগগিরই সেতুটি বাস্তবায়নের আশ্বাস দিয়েছে উপজেলা প্রশাসন।
জানা গেছে, উপজেলার সোলাদানা ইউনিয়নের কুচিয়া নদীর দু’তীরের টেংরামারী, উত্তর কাইনমুখী, দক্ষিণ কাইনমুখী ও দিঘাসহ প্রত্যন্ত এলাকার বাসিন্দাদের চলাচলের সুবিধার্থে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল মাজেদ সানা সেতুটি নির্মাণ করেন।
আরও পড়ুন: অপরিকল্পিত সেতুর কারণে প্রাণ ফিরে পাচ্ছে না পুনঃখনন করা ভারানি খাল
দ্বীপ বেষ্টিত সোলাদানার উত্তর কাইনমুখী গ্রামের কিশোর মন্ডল জানান, ইউনিয়নব্যাপী জালের মত ছড়িয়ে রয়েছে অসংখ্য ছোট-বড় নদী বা খাল। চারদিকে যতদূর চোখ যায় যেন পানি আর পানি। সুষ্ঠু যাতায়াত ব্যবস্থায় সেতুটিই তাদের একমাত্র ভরসা। তবে মূল অবকাঠামো হারিয়ে সেতুটি এখন রীতিমত ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় দাঁড়িয়ে এখনো এলাকাবাসীর অবিরাম সেবা দিয়ে যাচ্ছে। তবে যেকোন সময় দুর্ঘটনারও আশঙ্কা করছেন তিনি।
দিঘার এলাকার কল্লোল মন্ডল জানান, আরও ১০ বছর আগের সেতুটির চলাচলে অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এরপরও তারা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বাধ্য হয়েই যাতায়াত করছেন। উপজেলা সদরসহ স্কুল-কলেজে পৌঁছাতে সেতুটিই তাদের একমাত্র ভরসা।
দক্ষিণ কাইনমুখীর বিজন মন্ডল জানান, সেতুটি দিয়ে পণ্যবাহী যানবাহন চলাচল অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় অতিরিক্ত খরচ করে মালামাল বাড়িতে নিতে হয় তাদের।
আরও পড়ুন: নিষিদ্ধ ‘শাপলা পাতা’ মাছ প্রকাশ্যে বিক্রি, বিলুপ্তির আশঙ্কা
সাবেক ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান এস এম এনামুল হক জানান, তিনি চেয়ারম্যান থাকাকালীন নতুন সেতুর প্রস্তাবনাসহ কাগজপত্র তৈরি করে উপজেলা নির্বাহী প্রকৌশলীর দপ্তরে পাঠিয়েছিলেন, সেটি এখনো পাশ হয়নি।
বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল মান্নান গাজী জানান, জনগুরুত্বপূর্ণ সেতুটি দিয়ে প্রতিদিন স্থানীয় চারটি গ্রামসহ উপজেলার হাজারো মানুষ যাতায়াত করে। ঝুঁকিপূর্ণ সেতুটি পরিত্যক্ত ঘোষণার পাশাপাশি নতুন করে আরও একটি সেতু নির্মাণের দাবি তার। এ নিয়ে আগামী উপজেলা মাসিক উন্নয়ন সভায় উত্থাপনের কথাও জানান তিনি।
আরও পড়ুন: চুয়াডাঙ্গায় গাছে গাছে আমের মুকুল, ছড়াচ্ছে সৌরভ
এ ব্যাপারে পাইকগাছা উপজেলা প্রকৌশলী হাফিজুর রহমান জানান, সাবেক চেয়ারম্যান এস এম এনামুল হক উপজেলা সমন্বয় সভায় একাধিকবার সেতুটির বিষয় উত্থাপন করলেও সেসময় পর্যাপ্ত অর্থাভাবে সেতুটির বাস্তবায়ন সম্ভব হয়নি। বর্তমানে সেতুটির অবস্থা বিবেচনায় অগ্রাধিকারভিত্তিতে শিগগিরই বাস্তবায়ন করা হবে।
অপরিকল্পিত সেতুর কারণে প্রাণ ফিরে পাচ্ছে না পুনঃখনন করা ভারানি খাল
দীর্ঘ আন্দোলন-সংগ্রামের পর দখলমুক্ত করে অবশেষে পুনঃখনন করা হলেও বেশ কয়েকটি অপরিকল্পিত সেতুর কারণে ঐতিহ্যবাহী বরগুনার ভারানি খাল প্রাণ ফিরে পাচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছেন সচেতন মহল।
জানা গেছে, বরগুনার প্রমত্তা পায়রা ও খাকদোন এই দুই নদের সংযোগ রক্ষাকারী ভারানী খাল দুই পাড়ে বহুবছর ধরে অবৈধ দখলদারদের কবলে পড়ে মরা খালে পরিণত হয়েছিল। খাকদোন নদের এ শাখা খালটি বরগুনা শহরের মাছবাজার এলাকার মাদরাসা সড়ক হয়ে বরগুনা সদর ও বুড়িরচর ইউনিয়নের মধ্য দিয়ে দক্ষিণে ৯ কিলোমিটার গিয়ে পায়রা নদে গিয়ে যুক্ত হয়েছে। আর এই ৯ কিলোমিটারের মধ্যে মোট ১১টি সেতু গড়ে উঠেছে। প্রতিটা সেতুই এমন অপরিকল্পিতভাবে তৈরি করা হয়েছে যে বর্ষা মৌসুমে যেকোনো ছোট-বড় নৌযানের এই সেতুগুলোর নিচ দিয়ে যাতায়াত করা অসম্ভব হয়ে পড়ে।
বরগুনা সদর উপজেলার সঙ্গে নৌপথ কেন্দ্রিক ব্যবসা বাণিজ্যের নির্ভরযোগ্য চলাচলের মাধ্যম ছিল খালটি। কিন্তু দখলদারদের দৌরাত্ম্য ও দূষণে সময়ের ব্যবধানে এটি মরা খালে পরিণত হয়। একই সঙ্গে ভারানি খালের সঙ্গে সংযুক্ত আরও সাতটি শাখা খালেরও একই অবস্থা।
সম্প্রতি বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) ভারানি খাল দখলমুক্ত ও পুনঃখননের উদ্যোগ নেয়। খালের দুই তীরের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের পর পুনঃখননের কাজ এখন শেষ পর্যায়ে। তবে অপরিকল্পিতভাবে নির্মিত ১১টি সেতু বহাল তবিয়তে রয়েছে। এই সেতুগুলো ভেঙে পরিকল্পিতভাবে পুননির্মাণ না করা হলে এ খাল কখনোই প্রাণ খুঁজে পাবে না বলে অভিমত প্রকাশ করছেন অনেকেই।
২০১৭ সালে স্থানীয় পরিবেশবাদী ও সচেতন নাগরিকরা খালটি দখলমুক্ত করতে আন্দোলন শুরু করেন। দল-মত নির্বিশেষে সর্বস্তরের জনগণ দফায় দফায় বরগুনায় অবস্থিত খাল দুটি অবৈধ দখলদারদের হাত থেকে মুক্ত করে পানি প্রবাহ নিশ্চিতের দাবিতে মানববন্ধন-সমাবেশও করেছেন সংগঠন থেকে শুরু করে সকল শ্রেণিপেশার মানুষ। এতে জেলা প্রশাসন তৎপর হয়। বরগুনা জেলা প্রশাসন সংশ্লিষ্ট ভূমি অফিসের সহায়তায় উভয় পাড়ে ১৩৫ জন অবৈধ দখলদারের তালিকাও তৈরি করে।
আরও পড়ুন: সেতুর অভাবে ৩০ হাজার মানুষের দুর্ভোগ
বাংলাদেশ পরিবেশ আইনজীবী সমিতি (বেলা) ২০১৮ সালে খালটির অবৈধ দখল উচ্ছেদ ও সুষ্ঠু রক্ষণাবেক্ষণের লক্ষ্যে উচ্চ আদালতে জনস্বার্থে মামলা দায়ের করে। প্রাথমিক শুনানি শেষে ২০১৯ সালের ৭ জানুয়ারি বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি রাজিব আল জলিল সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ বরগুনা জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার ও বরগুনা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবং সহকারী কমিশনারকে (ভূমি) খালটি থেকে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে আদালতে অগ্রগতি প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন।
এরই পরিপ্রেক্ষিতে বরগুনা জেলা প্রশাসন ভূমি অফিস ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহযোগিতায় ২০১৯ সালের ৮ এপ্রিল উচ্ছেদ অভিযান শুরু করে ডিসেম্বরে শেষ হয়। এরপর বরগুনা পানি উন্নয়ন বোর্ড খালটি পুনঃখননের প্রকল্প হাতে নেয়।
পাউবো কার্যালয়ের তথ্যমতে, ২০২০-২০২১ অর্থবছরে দুই কোটি ৮০ লাখ টাকা ব্যয়ে ভারানী খালের পুনঃখনন কাজ শুরু হয়। চট্টগ্রাম জেলার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স গরীবে নেওয়াজ ও পটুয়াখালী জেলার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আল মামুন এন্টারপ্রাইজ যৌথভাবে এ খাল খননের প্রকল্পটির কার্যাদেশ পায়। বরাদ্দ এই কাজের দৈর্ঘ্য ৪ কিলোমিটার ও প্রস্থ স্থানভেদে ২৬ থেকে ৩০ মিটার বা ৮৫ থেকে ১০০ ফুট ও নিম্নস্তরের প্রস্থ ১২ মিটার বা ৩৯ দশমিক ৩৬ ফুট গভীরতা ১ দশমিক ৫ মিটার থেকে ২ মিটার পর্যন্ত বা ৫ ফুট থেকে ৬ দশমিক ৫০ ফুট।
আরও পড়ুন: ‘ভোজ্য তেলের আমদানির পয়সায় পদ্মা সেতু নির্মাণ করা যাবে’