সেতু
সেতুর অভাবে ৩০ হাজার মানুষের দুর্ভোগ
ফেনীর দাগনভূঁঞা উপজেলার রাজাপুর ইউনিয়নের পাশ দিয়ে বয়ে গেছে খরস্রোতা ‘ছোট ফেনী নদী’। নদীর দু’পাশে রয়েছে ১০ থেকে ১৫টি গ্রাম। নদী পাড়ি দিয়ে দুই পাশের প্রায় ৩০ হাজার মানুষকে চলাচল করতে হয়। নদীতে একটি সেতু নিমার্ণের জন্য এলাকাবাসী দীর্ঘদিন দাবি জানিয়ে আসলেও কোনো সুফল পায়নি। সেতুর অভাবে এলাকার কোমলমতি শিক্ষার্থীসহ জনগণের ভোগান্তির শেষ নেই। তবে সংশ্লিষ্ট বিভাগের সাথে কথা বলে দ্রুত একটি সেতু নির্মাণের আশ্বাস দিয়েছেন ফেনীর জেলা প্রশাসক।
জানা গেছে, যারা নিয়মিত ছোট ফেনী নদী পারাপার হয়ে জেলা সদরে যাতায়াত করেন, তাদের একমাত্র ভরসা একটি খেয়ানৌকা। বিশেষ করে ইউনিয়নের পূর্বঘোনা গ্রামের জনসাধারণদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। গ্রামটির তিনদিক থেকে ঘিরে রেখেছে ছোট ফেনী নদী। এই গ্রামের স্কুল-মাদরাসা ও কলেজগামী শিক্ষার্থীসহ হাজারও মানুষ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন দড়িটানা নৌকা দিয়ে পার হয়ে ফেনী সদর এলাকায় যাতায়াত করতে হয়। নদী পার হতে গিয়ে প্রতিনিয়ত মানুষকে দুর্ঘটনার শিকার হতে হয়। বর্ষা মৌসুমে এই নদী পার হওয়া অনেক ঝুঁকিপূর্ণ।
পড়ুন: পরিবহন ও যোগাযোগ খাতে বার্ষিক বরাদ্দ বাড়ানোর পরিকল্পনা সরকারের
স্থানীয় বিরলী আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় ও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি কাজী নজরুল ইসলাম বলেন, একটি সেতুর জন্য ভুক্তভোগী মানুষ দীর্ঘদিন ধরেই দাবি জানিয়ে আসছে। কিন্তু সেতু নির্মাণের কার্যকর কোনো উদ্যোগই চোখে পড়ছে না। এই অবস্থায় দুটি উপজেলার কোমলমতি শিক্ষার্থীসহ অন্তত ৩০ হাজার মানুষ সেতুর অভাবে অবর্ণনীয় দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। দাবি জানাতে জানাতে এখন সাধারন মানুষ হতাশ হয়ে গেছে।
রাজাপুর ও পাঁচগাছিয়ার নদী পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষের সাথে কথা বলে জানা গেছে, আশেপাশের ১০-১৫টি গ্রাম ফেনী সদর ও দাগনভূঁঞা উপজেলার অর্ন্তভুক্ত হলেও এসব গ্রাম তাদের উপজেলা সদর থেকে অন্তত ১৫-২০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। তাই এসব গ্রামের মানুষ বাজার-খরচ থেকে শুরু করে শিক্ষা-চিকিৎসা সেবাসহ নানা কাজে ও আত্মীয়তার সূত্রে জেলা ও উপজেলা শহরে যেতে হয়। এ অবস্থায় একটি সেতুর অভাবে তাদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। চলাচলকারী লোকজনের মধ্যে অন্তত পাঁচ শতাধিক স্কুল, কলেজ ও মাদরাসার শিক্ষার্থী রয়েছে।
বিরলী আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মিজানুর রহমান জানান, তাঁর বিদ্যালয়ের প্রায় এক হাজার শিক্ষার্থী রয়েছে। শিক্ষার্থীর অধিকাংশই রাজাপুর ঘোনার বাসিন্দা। ওই শিক্ষার্থীদের আশেপাশে কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান না থাকায় এই বিদ্যালয়ে ভর্তি হয়। ঝড়-বৃষ্টির মৌসুমে নৌকাডুবির আশংকা থাকায় স্কুলে আসে না।
বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্রী সুমাইয়া সুলতানা বলেন, ‘নৌকা পারাপারে আমাদের খুব ভয় হয়। কখনো কখনো নৌকায় উঠতে-নামতে আমাদের বই-খাতা, ড্রেস ভিজে যায়। তাই বাধ্য হয়ে ক্লাস না করে আমরা বাড়ি ফিরে যাই।’
বিরলী দারুল উলুম ইসলামীয়া মাদরাসা পরিচালনা কমিটির সদস্য মনোয়ার হোসেন শিমুল বলেন, এখানে ছোট ফেনী নদীর ওপর কোনো সেতু না থাকায় দিনের বেলায় নৌকা পাওয়া গেলেও রাতে মাঝি থাকে না। এতে রোগীসহ জরুরি প্রয়োজনে যোগাযোগে দুর্ভোগের অন্ত থাকে না স্থানীয় বাসিন্দাদের।
পড়ুন: প্রতিকূলতার মাঝেও শিক্ষা গ্রহণে সাফল্যের পথে উপকূলের নারীরা
পাঁচগাছিয়া ইউনিয়ন পরিষদের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান মাহবুবুল হক লিটন বলেন, ‘এখানে একটি সেতু নির্মাণ হলে জনদুর্ভোগ অনেক কমবে। এ ব্যাপারে ফেনী-২ আসনের সংসদ সদস্য নিজাম উদ্দিন হাজারীসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে দ্রুতযোগযোগ করে সেতু নির্মাণের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
ফেনী জেলা প্রশাসক আবু সেলিম মাহমুদ-উল হাসান বলেন, ‘উন্নয়নের বড় নিয়ামকই হচ্ছে যোগাযোগ। যোগাযোগের ফলে উন্নয়ন ত্বরান্বিত হয়। ওই এলাকার জনগণ যেটি চাচ্ছেন সেটি অবশ্যই একটি বিবেচনার বিষয়। এ বিষয়ে আমি স্থানীয় সরকার বিভাগসহ সংশ্লিষ্ট সবার সাথে কথা বলবো এবং যাচাই-বাছাই করে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করবো।’
পড়ুন: স্বাবলম্বী জমির প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর ও জমি দিলেন অন্য গৃহহীনকে
জুনের মধ্যে যান চলাচলের জন্য পদ্মা সেতু উন্মুক্ত হবে: সেতুমন্ত্রী
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বহুল প্রত্যাশিত পদ্মা সেতু আগামী জুনের মধ্যে যান চলাচলের জন্য খুলে দেয়া হবে। এতে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১টি জেলায় পরিবহন ও যোগাযোগ বাড়াতে ব্যাপক সহায়তা করবে।
সেতুটির মূল কাজ ৯৮ শতাংশ শেষ হয়েছে এবং প্রকল্পের সার্বিক অগ্রগতি ৯০ দশমিক ৫ শতাংশ বলে জানান ওবায়দুল কাদের।
মঙ্গলবার রাজধানীতে সেতু বিভাগের বিভিন্ন কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা শেষে সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রী এ কথা বলেন।
এ সময় সেতু বিভাগের সচিব মো. মঞ্জুর হোসেনসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীর তলদেশে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেলের ৮০ শতাংশ কাজও শেষ হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে এটি শেষ করার লক্ষ্য নিয়ে প্রকল্পের কাজ চলছে।
ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের তিনটি ধাপের মধ্যে বিমানবন্দর থেকে বনানী পর্যন্ত প্রথম ধাপের ৭৮ দশমিক ৫ শতাংশ এবং বনানী মগবাজার অংশের অগ্রগতি ৩১ শতাংশ।
সিনহা হত্যা মামলার রায় নিয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এতে প্রমাণিত হয়েছে শেখ হাসিনা সরকার আইনের শাসনে বিশ্বাসী।
আরও পড়ুন: জুনে পদ্মা সেতু উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী
পদ্মা সেতু
পদ্মা সেতু প্রকল্পটি দেশের বৃহত্তম নির্মাণ প্রকল্পগুলোর মধ্যে একটি। যা ২০০৭ সালে ১০ হাজার ১৬১ কোটি টাকা আনুমানিক ব্যয়সহ জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটিতে (একনেক) প্রথম অনুমোদিত হয়েছিল।
২০১৮ সালের মধ্যে প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য ২৮ হাজার ৭৯৪ কোটি টাকা আনুমানিক ব্যয় সহ ৫ জানুয়ারি, ২০১৬-এ প্রকল্পটির দ্বিতীয় সংশোধন একনেকে অনুমোদিত হয়। প্রকল্প প্রস্তাবনা পরিবর্তন না করেই, ২০১৮ সালের জুন মাসে খরচ আবার বাড়িয়ে ৩০ হাজার ১৯৩ কোটি টাকা করা হয়।
রেল সংযোগ
গত বছরের ১৪ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ‘পদ্মা সেতু রেল সংযোগ নির্মাণ প্রকল্প’-এর আওতায় ঢাকা ও যশোরের মধ্যে রেল সংযোগের নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করেন।
পদ্মা সেতু রেল সংযোগ নির্মাণ প্রকল্পের প্রথম ধাপে পদ্মা বহুমুখী সেতুর মাধ্যমে মাওয়া ও ভাঙ্গা হয়ে জাঞ্জিরা ও শিবচরের মধ্যে রেল যোগাযোগ স্থাপন করা হবে।
এটি ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ, শরীয়তপুর, মাদারীপুর, ফরিদপুর, গোপালগঞ্জ, নড়াইল ও যশোরকে সংযুক্ত করবে।
প্রত্যাশা
পদ্মা সেতু বাংলাদেশের জিডিপি এক শতাংশের বেশি বাড়াবে এবং ২১টি দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের প্রায় তিন কোটি মানুষ উপকৃত হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
এই জেলাগুলোকে উন্নত কানেক্টিভিটির মাধ্যমে গ্রোথ সেন্টারের সঙ্গে যুক্ত করা হবে। এগুলোকে অর্থনৈতিক করিডোর হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে।
আরও পড়ুন: স্বপ্নের পদ্মা সেতু পরিদর্শন করলেন প্রধানমন্ত্রী
পদ্মা সেতু উদ্বোধন হবে জুনে: ওবায়দুল কাদের
সংযোগ সড়ক না থাকায় কাজে আসছে না ৩১ লাখ টাকার সেতু
কুড়িগ্রাম সদরের মোগলবাসা ইউনিয়নের ৩১ লাখ ৫০ হাজার টাকা ব্যয়ে সিতাইঝাড় সেতুটি নির্মিত হয়। কিন্তু দুই পাড়ের সংযোগ সড়ক না থাকায় গত চার বছর ধরে সেতুটি অকেজো হয়ে পড়ে আছে। সংযোগ সড়কের অভাবে তিন ইউনিয়নের শত শত মানুষ সেতু দিয়ে চলাচল করতে না পারায় আক্ষেপ প্রকাশ করেছেন অনেকে।
আরও পড়ুন: ইঁদুরের গর্তে দু-মুঠো খেয়ে বাঁচার স্বপ্ন!
প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস সূত্র জানায়, কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার মোগলবাসা ইউনিয়নের সিতাইঝাড় গ্রামের হাদের গোয়ালের বাড়ির পেছনে ত্রাণ ও পুর্নবাসন কেন্দ্রের অর্থায়নে ৩১ লাখ ৫০ হাজার টাকা ব্যায়ে নির্মিত এই সেতুটি। সেতুর কাজ শেষ হওয়ার আগেই বন্যার পানিতে দুই পাড়ের সংযোগ সড়ক বিছিন্ন হয়ে যায়।
পদ্মা সেতু উদ্বোধন হবে জুনে: ওবায়দুল কাদের
টার্গেটের মধ্যেই ২০২২ সালের জুনে পদ্মা সেতু উদ্বোধন করা হবে বলে জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। রবিবার সচিবালয় থেকে ‘ঢাকা নগর পরিবহন’ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এ মন্তব্য করেন তিনি।
পদ্মা সেতুর বিষয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, পদ্মা সেতুর কাজ এগিয়ে চলছে। এখন পিচ ঢালাইয়ের কাজ চলছে, এটা শেষ হলেই শেষ। আমাদের টার্গেটের মধ্যেই ২০২২ সালের জুনে পদ্মা সেতু উদ্বোধন হবে, সেটি তো আগেও বলেছি।
নতুন বছরে মেট্রোরেল ও কর্ণফুলী টানেল উদ্বোধন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এগুলো নতুন বছর মানে যে বছর শুরু হতে যাচ্ছে, ২০২২ সালে উদ্বোধন করা হবে। আমরা এ লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছি। নির্দিষ্ট দিন-তারিখ সময়মতো শুনতে পাবেন। আমাদের টার্গেট ২০২২ সাল।
আরও পড়ুন: ওবায়দুল কাদের শঙ্কামুক্ত: বিএসএমএমইউ উপাচার্য
মন্ত্রী বলেন, সুশৃঙ্খল ও আধুনিক গণপরিবহন ব্যবস্থা গড়ে তুলতে সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে। আমি এর সাফল্য কামনা করি। পর্যায়ক্রমে এ সেবার বিস্তার হবে, আরও নতুন রুট যুক্ত হবে। গোটা ঢাকা শহরকে একটা সুশৃঙ্খল পরিকল্পনার মধ্যে আনতে হবে। আরও ৪২টি রুট করার পরিকল্পনা আছে, মাত্র তো শুরু হলো। ঢাকা সিটি ও তার আশেপাশে এই রুট চালু হবে। এর মধ্যে নরসিংদী, মানিকগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুরও আছে।
খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসার বিষয়ে তিনি বলেন, একটা সরকারের নীতিগত কোনো বিষয়ে সবার কথা বলা উচিত না। এ বিষয়ের দায়িত্ব আইনমন্ত্রীর। তিনি এ বিষয়ে যতটুকু বলেছেন, আমি তার চেয়ে বেশি বলব না। সেটাই সরকারের বক্তব্য।
আরও পড়ুন: মার্কিন নিষেধাজ্ঞা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে, জঙ্গীবাদ উদ্বুদ্ধ করতে: ওবায়দুল কাদের
শিক্ষার্থীদের হাফ ভাড়া কার্যকরের সিদ্ধান্ত: ওবায়দুল কাদের
সেতু আছে, নেই সংযোগ সড়ক
সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার উত্তর বড়দল ইউনিয়নের শান্তিপুর নদীর উপর পাকা সেতু থাকলেও নেই সেতুতে ওঠার জন্য কোনও সংযোগ সড়ক। ফলে বছরের পর বছর ভোগান্তি পোহাচ্ছে আশপাশের স্থানীয় বাসিন্দারা।
স্থানীয় সচেতন নাগরিকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, বর্ষাকালে নদীতে পানি থাকলেও হেমন্তকালে নদীর পানি প্রায় শুকিয়ে যায়। হেমন্তকালে নদী শুকিয়ে গেলে চলাচল করা যায় তবে বর্ষাকালে চলাচল করা প্রায় অসম্ভব। যার ফলে চলাচলে দুর্ভোগ দেখা দেয়।
জানা গেছে, উপজেলার উত্তর বাদল ইউনিয়ন অন্তর্গত বাদাঘাট-চানপুর সড়কে শান্তিপুর নদীর উপর ৩২ লাখ টাকা ব্যয়ে ২০১৭ সালে সেতুটি নির্মাণ করা হয়। নির্মাণের পর সেতুর দুই পাশে মাটি ভরাট করা হয়নি। আবার নির্মিত হয়নি সেতুতে উঠা নামার সংযোগ সড়কও। তাই নদীর উপর ঠায় দাঁড়িয়ে রয়েছে সেতুটি। আসছে না কোনো কাজেও।
আরও পড়ুন: বাড়ছে খুলনার চুইঝালের কদর, যাচ্ছে থাইল্যান্ডে
তাহিরপুর উপজেলা এলজিইডি সূত্রে জানা যায়, ২০১৬-১৭ অর্থবছরে এলজিইডি (সুনামগঞ্জ) হিলি প্রকল্প ৩২ লক্ষাধিক টাকা নির্মাণ ব্যয়ে সেতুর দরপত্র আহ্বান করে। নির্মাণকাজের ঠিকাদারি পায় জামালগঞ্জ উপজেলার পারভেজ এন্টারপ্রাইজ।
জানা যায়, উপজেলার উত্তর বড়দল ইউনিয়নের বাদাঘাট-চানপুর সড়কটি দিয়ে উপজেলার উত্তর শ্রীপুর, দক্ষিণ বড়দল ইউনিয়নের ৩০ গ্রামের শিক্ষার্থী, ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ চলাচল করে। কিন্তু এই সড়কের শান্তিপুর নদীতে সেতুতে উঠার জন্য দু’দিকে অ্যাপ্রোচে মাটি নেই। সংযোগ সড়ক নির্মাণের জন্য ২০১৭ সালে কর্মসংস্থান কর্মসূচি প্রকল্প থেকে উত্তর বড়দল ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ৩ লাখ ২০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেন। শান্তিপুর বাজারের উত্তর পাশ থেকে সেতু পর্যন্ত সংযোগ সড়ক প্রকল্পে ইউপি সদস্য আবু তাহের মিয়াকে প্রকল্প প্রধান করা হয়। প্রকল্প চেয়ারম্যান আবু তাহের প্রকল্পে শান্তিপুর বাজার থেকে কাজ শুরু করে সেতুর উত্তর পাশে দুই শতাধিক ফিট দূর পর্যন্ত মাটির কাজ করান। অবশিষ্ট সংযোগ সড়কটি অসম্পূর্ণ রেখে দেয়া হয়। ফলে ২০১৮ সালে বর্ষায় সেই মাটিও সরে যায়।
আরও পড়ুন: কয়লার দাম বৃদ্ধি: খুলনায় ১৫ দিনে ২ শতাধিক ইটভাটা বন্ধ
এই ব্যাপারে স্থানীয় মাসুক মিয়া জানান, নির্মাণের পর সেতুটি ব্যবহার উপযোগী করতে প্রয়োজনীয় কোন পদক্ষেপ নেয়নি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। সর্ব সাধারণের জন্য সেতুটি চলাচলের উপযোগী করতে হলে প্রটেকশন ওয়াল দিয়ে সংযোগ সড়ক নির্মাণ করতে হবে।
চানপুর গ্রামের বাসিন্দা মজিদ বলেন, সংযোগ সড়কটি স্থাপন করে সেতুটি চলাচলের উপযোগী করা হলে আমরা সহজেই চানপুর-বাদাঘাট সড়ক ব্যবহার করে তাহিরপুর সদরে যাতায়াত করতে পারতাম। জনদুর্ভোগ কমে আসত।
তাহিরপুর উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি) ইকবাল করিব জানান, আমি একবারেই নতুন, তাই এই সেতুটির বিষয়ে আমি অবগত নই। খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
আরও পড়ুন: শীতের প্রথম বাজার ধরতে ব্যস্ত যশোরের সবজি চাষিরা
তাহিরপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান করুণা সিন্ধু চৌধুরী বাবুল জানান, জনদুর্ভোগ লাঘবে এই বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে বলব।
মাটি সরে দেবে গেছে সেতু, ঝুঁকি নিয়ে চলাচল
রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার দেবগ্রাম ইউনিয়নের তেনাপচা এলাকায় খালের ওপর নির্মিত সেতুর নিচ থেকে মাটি ধসে একাধিক স্থানে দেবে বড় ধরনের ফাটল দেখা দিয়েছে। মাঝের অংশ সম্পূর্ণভাবে দেবে গেছে। দুই সপ্তাহ ধরে এমন পরিস্থিতি হওয়ায় ভারী যানবাহন চলাচল বন্ধ করা হলেও হালকা যান চলাচল অব্যাহত থাকায় দুর্ঘটনার ঝুঁকি রয়েছে।
জানা যায়, দেবগ্রামের তেনাপচা আশ্রয়ন ইউজেড-আরএইচডি (পিয়ার আলী মোড়) সড়কটি স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) অধীন। সড়কের ৫২৩ মিটার চেইনেজে অবস্থিত দুর্যোগ ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে ২০১১-২০১২ অর্থ বছরে খালের ওপর প্রায় ১৫ লাখ টাকা ব্যায়ে ১২ মিটার দৈঘ্যের ২ ভেন্ট বক্স কালভার্ট নির্মাণ হয়। কালভার্টের তলদেশের মাটি ধসে যাওয়ায় কয়েক স্থানে দেবে গেছে। ফেলে ভারী যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। দ্রুত সেতুটি মেরামত বা পুনঃনির্মাণের ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য এলজিইডির গোয়ালন্দ উপজেলা প্রকৌশলী গত ১৬ নভেম্বর নির্বাহী প্রকৌশলীর কাছে পাঠানো প্রতিবেদনে জেলা প্রশাসকের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে।
সূত্র জানায়, পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) রাজবাড়ীর তত্ত্বাবধানে গোয়ালন্দের দেবগ্রাম ইউনিয়নের তেনাপচা এলাকায় পদ্মা নদী থেকে উপজেলার ছোটভাকলা ইউনিয়নের কেউটিল হয়ে বয়ে যাওয়া খালটি ফরিদপুর পর্যন্ত প্রায় ১৭ কিলোমিটার দৈর্ঘের খনন কাজ করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। এর মধ্যে গোয়ালন্দ উপজেলা এলাকায় ছিল প্রায় ১১ কিলোমিটার।
আরও পড়ুন: খুলনায় ৮০০ কোটি টাকার তরমুজ বাণিজ্যের সম্ভাবনা
এলাকাবাসীর অভিযোগ, পর্যাপ্ত জায়গা ও ঢালু না রেখে খাল খনন করা হয়। এমনকি সেতুসহ বিভিন্ন ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে গার্ডার, সিসি ব্লক, জিওব্যাগ সহ প্রয়োজনীয় সুরক্ষার ব্যবস্থার প্রয়োজন থাকলেও করা হয়নি। ফলে গত দুই বছরে বর্ষাকালে খাল দিয়ে পানি প্রচণ্ড বেগে প্রবাহিত হওয়ায় সেতুর নিচে এবং পাশ থেকে মাটি ধসে যায়। তেনাপচা এলাকার প্রায় এক কিলোমিটার জুড়ে খালের দুই পাশ বেশি ধসে পড়ে। এতে ৬-৭টি পরিবার অন্যত্র সরে যেতে বাধ্য হয়। আরও বেশ কিছু পরিবার ভাঙন ঝুঁকিতে পড়ে।
শুক্রবার (১৯ নভেম্বর) সরেজমিনে দেখা যায়, তেনাপচা খালের ওপর নির্মিত সেতুটির মাঝখানে এবং একপাশ ভেঙে দেবে গেছে। সেতুর নিচে একাধিক স্থান ভেঙে গেছে। সেতুতে ওঠতে বাম পাশের বেশ জায়গা নিয়ে মাঠি সরে গেছে। ওই অবস্থায় ঝুঁকি নিয়ে মাহেন্দ্র, রিকশা, অটোরিকশা ও মোটরসাইকেলের মতো হালকা যান এবং পথচারীরা আসা যাওয়া করছে।
এ সময় উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান চৌধুরী ও উপজেলা ছাত্রলীগের একাংশের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবু বক্কার সিদ্দিক নসিমনে বিভিন্ন মেহগনি গাছের গুড়ি ফেলছেন।
আসাদ চৌধুরী বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ড জরুরি সংস্কার কাজের অংশ হিসেবে তাদের খালের দুই পাশে প্যালাসাইডিং করতে বলেছে। কাজ শেষে তাদের বিল পরিশোধ করা হবে।
আসাদ চৌধুরী জানান, অপরিকল্পিত খননে দুই বছর ধরে খালের দুই পাড় ধসে পড়ছে। ছোটভাকলার আব্দুল আজিজ মাস্টারের বাড়ির কাছ থেকে দেবগ্রামের প্রয়াত চেয়ারম্যান পিয়ার আলীর বাড়ি হয়ে তেনাপচা পর্যন্ত তিন কিলোমিটার এলাকায় ভাঙন হয়েছে। এর মধ্যে তেনাপচা এক কিলোমিটার এলাকায় বেশি ভাঙন দেখা দিয়েছে। খাল পাড়ে তার বাড়ি থাকায় তিনিও ঝুঁকিতে বাস করছেন।
অপরিকল্পিত খননের কারণে সেতুটি ধসে পড়ছে বলে জানান।
আরও পড়ুন: যমুনার চরে ভেড়া পালনে শত শত নারীর স্বাবলম্বী হওয়ার স্বপ্ন
৫০ বছরেও সেতু নির্মাণ হয়নি, ভেঙে যাওয়া সাঁকোই শেষ ভরসা
কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে ভেঙে যাওয়া বাঁশের সাঁকোয় হামাগুড়ি দিয়ে ঝুঁকির মধ্যে পারাপার করছে মানুষ। প্রতিবছর স্থানীয় উদ্যোগে সাঁকোটি মেরামত করা হলেও সরকারিভাবে সেতু নির্মাণের উদ্যোগ না নেয়ায় বিপাকে রয়েছে ওই এলাকার হাজার হাজার মানুষ।
ঝুঁকিপূর্ণ সাঁকো দিয়ে পারাপার করতে প্রায়শই ঘটছে ছোটখাটো দুর্ঘটনা। স্থায়ীভাবে সাঁকো নির্মাণের দাবি জানিয়েছে এলাকাবাসী।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, জেলার ফুলবাড়ী উপজেলার নাওডাঙ্গা ইউনিয়নের শিমুলবাড়ী গ্রামে নবিউলের ঘাটে বারোমাসিয়া নদীর ওপর নির্মিত বাঁশের সাঁকোটি জরাজীর্ণ অবস্থার মধ্যে রয়েছে। চলতি বছরে বন্যার তীব্র স্রোতে সাঁকোর মাঝামাঝি জায়গায় কয়েকটি খুটি ভেঙে সাঁকোটি বেঁকে হেলে পরেছে। এরই উপর দিয়ে ঝুঁকির মধ্যে চলাচল করছে মানুষ। ভারি বস্তা বা সামগ্রী পারাপার করতে হিমশিম অবস্থা তাদের।
আরও পড়ুন: ধানক্ষেতের মাঝে ৪০ লাখ টাকার সেতু, ব্যবহার হয় ‘সেলফি’ তোলায়!
স্কুল-কলেজে যাওয়া শিক্ষার্থীরা সাইকেলকে লাঠি হিসেবে ব্যবহার করে সতর্কভাবে পারাপার করছে। ধান কাটার মৌসুমে বিপাকে পরে চাষিরা। এসময় নৌকা সংগ্রহ করে ধান,পাট,ভুট্টাসহ শাক-সবজি অতিরিক্ত পয়সা গুণে পার করতে হয়।
ঘটনাস্থল ঘুরে দেখা যায়, কুড়িগ্রাম জেলায় সরকারিভাবে ১৬টি নদ-নদীর কথা উল্লেখ থাকলেও বারোমাসিয়া নামে কোন নদীর কথা উল্লেখ নেই। স্থানীয় সংবাদকর্মী অনীল চন্দ্র সরকার জানান, বারোমাসিয়া বা বাণিদহ নদীটি ধরলা নদীর একটি উপশাখা নদী। যা সরাসরি ভারত থেকে প্রবেশ করে কুড়িগ্রামে মূল ধরলা নদীতে মিশে গেছে। ধরলা নদী এবং বারোমাসিয়া নদীর পানির রঙ সম্পূর্ণ আলাদা। ফলে বারোমাসিয়া নদীটি আলাদা বৈশিষ্ট্য বহন করছে। নদীটি ভারতের কুচবিহার জেলার দিনহাটা থানার সীমান্তবর্তী মরাকুটি গ্রাম দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে নাওডাঙ্গা ইউনিয়নের গোড়কমন্ডপ গ্রাম দিয়ে। স্থানীয়ভাবে এটিকে বাণিদহ বা বারোমাসিয়া নদী বলা হয়ে থাকে। এর দৈর্ঘ্য প্রায় ৫ কিলোমিটার। এই উপশাখা নদীর উপর দুটি বাঁশের সাঁকো রয়েছে। একটি গতমাসে নির্মাণ করা হলেও নবীউলের ঘাটের সাঁকোটি বন্যায় ভেঙ্গে পরায় শোচনীয় অবস্থা হয়েছে।
আরও পড়ুন: কুড়িগ্রামে সাঁকো ছাড়া অচল সেতু!
সাঁকো পারাপার করার সময় সাঁকোর ওপারের ঝাউকুটি গ্রামের স্কুল শিক্ষার্থী মমিনুল (১৪) ও আজমেরী (১৩) জানায়, তারা প্রতিদিন ভয়ে ভয়ে সাঁকোটি পার হয়। ভাঙা জায়গাটি পার হতে গিয়ে মনে হয় এই বুঝি সাঁকোটি ভেঙ্গে পরে যাবে।
মাথায় ধানের বস্তা নিয়ে পার হতে গিয়ে শাহাদত (৪৫) নামে এক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী বলেন, ‘ভারি জিনিস নিয়া বাঁশের হাঙ্গরাত যাওয়া আমার খুব কষ্ট হয়। একনা সাইকেল পার করা, ভার ধরি যাওয়া খুব কষ্ট হয়।’
এই গ্রামের কৃষক হামিদ মিয়া জানান, ‘ছয় বছর আগে এখানে একটা ঘাট ছিল। তখন আমরা নৌকা দিয়ে পারাপার করছি। তারপরে জনগণের কাছে বাঁশ কালেকশন করি আমরা একটা বাঁশের সাঁকো দিছি। এবার সাঁকোটি ভেঙে গেছে। এখন পারাপারে খুবই সমস্যা।’
আরও পড়ুন: আগামী জুনের মধ্যে পদ্মা সেতু উন্মুক্ত করে দেয়া হবে: সেতুমন্ত্রী
বালাহাট স্কুল এন্ড কলেজের সহকারি শিক্ষক ও মৎস ব্যবসায়ী আতাউর রহমান রতন জানান, স্কুল কলেজের ছাত্র-ছাত্রীসহ এই এলাকার উৎপাদিত পণ্য এই ব্রীজের ওপর খুব ঝুঁকি নিয়ে পার করতে হয়। সাঁকোটির দৈর্ঘ্য প্রায় ১২০ ফুট। প্রতিদিন প্রায় ১০ থেকে ১২ হাজার মানুষ পারাপার করে। প্রতিবছর আমরা নিজেদের উদ্যোগ সাঁকোটি পারাপারের উপযোগী করি। স্বাধীনতার ৫০ বছর পেরিয়ে গেলেও সরকারিভাবে কোন উদ্যোগ নেয়া হয়নি। আমরা এখানে একটি স্থায়ী সেতু চাই।
ফুলবাড়ী উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) সুমন দাস বলেন, ইতোমধ্যে জনদুর্ভোগ কমাতে দুটি জরাজীর্ণ সেতু আমরা ঠিক করার উদ্যোগ নিয়েছি। এছাড়াও এরকম কোন বিষয় আমাদের নজরে আসলে আমরা সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে ব্যবস্থা নেয়ার চেষ্টা করি। যাতে জনদুর্ভোগ কমিয়ে জনগণের কল্যাণ নিশ্চিত করা যায়।
ধানক্ষেতের মাঝে ৪০ লাখ টাকার সেতু, ব্যবহার হয় ‘সেলফি’ তোলায়!
ঠাকুরগাঁও জেলার বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার বড় পলাশবাড়ী গড়িয়ালি গ্রামের ধানক্ষেতের মাঝখানে খালের ওপর নির্মিত একটি সেতু চার বছর আগে নির্মিত হলেও সংযোগ সড়কের অভাবে অব্যবহৃত পড়ে আছে।
তবে সবুজের মাঝে গড়ে উঠা সেতুর সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে এখানে অনেকেই সেলফি ও ছবি তুলতে আসে। তাই কেউ কেউ এই সেতুকে এখন সেলফি সেতু নামেও চেনে।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের সেতু ও কালভার্ট নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় ২০১৬-১৭ সালে সেতুটি নির্মাণ করা হয়। এতে প্রায় ৪০ লাখ টাকা ব্যয় হয়েছে।
সরেজমিনে গড়িয়ালি গ্রামের ওই সেতু এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, ওই গ্রামের হিন্দুপাড়া সংলগ্ন খালের ওপর সেতুটি দৃশ্যমান থাকলেও দুই পাশে নেই কোন সংযোগ সড়ক। সেতুর ওপর দিয়ে যানবাহন তো দূরের কথা পায়ে হেঁটেও যাতায়াত করে না কেউ। ফলে সেতুটি কোনো কাজেই আসছে না স্থানীয়দের।
আরও পড়ুন: টোকেন-স্টিকার দিয়ে সড়কে চলছে অবৈধ সিএনজি অটোরিকশা
কুড়িগ্রামে সাঁকো ছাড়া অচল সেতু!
কুড়িগ্রামের চিলমারীতে নির্মাণের পরের বছরেই বন্যায় সেতু ভেঙে গিয়ে কয়েকটি গ্রামের যোগাযোগ ব্যবস্থার অবনতি হয়েছে। সেতুটি ভেঙে পড়ায় এলাকাবাসী নিজেদের উদ্যোগে একটি সাঁকো তৈরি করে চলাচল করছেন। তবে এই নড়বড়ে সাঁকো দিয়ে পারাপার হতে প্রায়ই দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন সাধারণ মানুষ।
ভাঙা সেতুটি দিয়ে পাত্রখাতা, ব্যাপারীপাড়া, মাদারীপাড়া, ডাংগারচরসহ সুন্দরগঞ্জ উপজেলার বেশ কয়েকটি গ্রামের মানুষের চলাচলে দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
আরও পড়ুন: নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতুর চেয়েও বড় প্রকল্প বাস্তবায়ন সম্ভব: স্থানীয় সরকারমন্ত্রী
ওই এলাকার হাবিবুর রহমান (২৪) বলেন, সেতু পার হতে সাঁকো ভেঙে পরে মাথা ফাটছে, মাথায় ছয়টা সেলাই পড়ছে। আল্লাহর রহমতে বেঁচে গেছি।
স্থানীয় শরিফুল ইসলাম (৫০) ও আবুল কাশেম (৪০) জানান, বন্যা হলে গরু, ছাগল নিয়ে চলাচল করতে কষ্ট হয়। শুকনো মৌসুমেও সাঁকো ছাড়া সেতুতে উঠা যায় না। তাই এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে সাঁকো দেয়া হয়েছে।
৪৫ বছরের এক নারী বলেন, আপনারা শুধু ছবি তুলে নিয়ে যান। কিন্তু সেতুর তো কোন কাজ হয় না। এইভাবে আর কত দিন চলাচল করা যায়!
আরও পড়ুন: আগামী জুনের মধ্যে পদ্মা সেতু উন্মুক্ত করে দেয়া হবে: সেতুমন্ত্রী
জানা গেছে, উপজেলার রমনা ইউনিয়নের পাত্রখাতা ব্যাপারীপাড়া এলাকায় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের কালভার্ট নির্মাণ প্রকল্পের অধীনে ২০১৬-১৭ অর্থ বছরে ৩০ লাখ ৯০ হাজার টাকা ব্যয়ে সেতুটি নির্মাণ করা হয়।
এ প্রসঙ্গে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. কোহিনুর রহমান বলেন, জাইকাতে একটি প্রস্থাবনা পাঠানো হবে ব্রিজ পূনঃনির্মাণ ও রাস্তার জন্য।
আরও পড়ুন: আখাউড়ায় ২২ বছরের অপেক্ষা শেষে ভেঙে পড়ল সেতু
অক্টোবরে চালু হবে পায়রা সেতু: ওবায়দুল কাদের
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, পায়রা সেতু খুব শিগগিরই উদ্বোধন করা হবে। আগামী মাসে এ সেতু দিয়ে যানবাহন চলাচল করতে পারবে বলে আশা করি।
বুধবার (১৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে বরিশাল সড়ক ও জনপথ বিভাগের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলীর কার্যালয়ে তিন জেলার ১১ সেতু উদ্বোধনকালে ভার্চুয়ালি যোগ দিয়ে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
আরও পড়ুন: ফখরুলের টিকা দুর্নীতির অভিযোগ কাল্পনিক: কাদের
তিনি বলেন, পিরোজপুরের বেকুটিয়া সেতুর ৭৫ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। এছাড়া নলুয়া-বাহেরচর সেতু একনেকে পাশ হয়েছে। তাছাড়া নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করার সংস্কৃতি শুরু করতে হবে। কাজের মান ঠিক রেখে কাজগুলো গতিসম্পন্ন করতে হবে।
বক্তব্য শেষে তিনি বরিশাল বিভাগে ৮৩ কোটি ২৩ লাখ ৯৮ হাজার টাকা ব্যায়ে নির্মিত ১১টি সেতুর উদ্বোধন করেন। সেতুগুলো হলো- বরিশালের রহমতপুর-বাবুগঞ্জ-মুলাদী-হিজলা সড়কের ২৮ দশমিক ৭৮ মিটার দৈর্ঘ্যের বাবুগঞ্জ সেতু, ৩১ দশমিক ৮২৮ দৈর্ঘ্যের খাশেরহাট সেতু, ৩১ দশমিক ৮২৮ মিটার দৈর্ঘ্যের নবাবের হাট সেতু, ৩১ দশমিক ৮২৮ মিটার দৈর্ঘ্যের কাউরিয়া সেতু, ২৫ দশমিক ৭৪ মিটার দৈর্ঘ্যের খাশেরহাট সেতু।
আরও পড়ুন: রাজনীতিবিদ ও সরকারি কর্মকর্তাদের মধ্যে সুসম্পর্ক চান কাদের