আমদানি
চাঁদপুরে মাছ ঘাটে ইলিশের আমদানি বেড়েছে, দাম কিছুটা নিম্নমুখী
বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরার ওপর ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা ২৩ জুলাই শেষ হওয়ার পরে চাঁদপুর জেলার সবচেয়ে বড় পাইকারি আড়ত বোরো স্টেশন মাছ ঘাটে শিল্পটির সঙ্গে সম্পর্কিত জেলে, ব্যবসায়ী ও শ্রমিকদের উপস্থিতি চোখে পড়ার মতো।
মঙ্গলবার (২ আগস্ট) তিন দিন যাবত চাঁদপুর জেলার সবচেয়ে বৃহৎ মাছবাজার বোরো স্টেশন মাছঘাটে ইলিশের আমদানি বেড়েছে। এছাড়া ইলিশ মাছের আড়তে বহুল কাঙ্ক্ষিত ইলিশ মাছের দামও কমছে।
সম্প্রতি বাজারে গিয়ে ইউএনবি’র চাঁদপুর প্রতিনিধি দেখতে পান যে- ভোলা, হাতিয়া, চর ফ্যাশন, লক্ষ্মীপুর ও আশপাশের উপকূলীয় এলাকা থেকে জাল নিয়ে মাছঘাটে প্রচুর মাছ ধরার ট্রলার ও ট্রাক আসছে।
এদিকে স্থানীয়রা মাছঘাটে মাছ লোড-আনলোড করতে ব্যস্ত ছিলেন।
আরও পড়ুন: বঙ্গোপসাগরে ধরা পড়েছে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ, কক্সবাজারের জেলেদের মুখে হাসি
ব্যবসায়ীরা জানান, বাজারে মোট ৫০০ মণ মাছ এসেছে, প্রচুর সরবরাহের কারণে ইলিশের দাম কমাতে বাধ্য হয়েছে। এদিকে এক কেজি ইলিশ মাছ বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৮০০ টাকায়, যা আগে ছিল ২ হাজার ২০০ টাকা, আর ৫০০-৭৫০ গ্রাম ওজনের মাছ বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ২০০ থেকে ১ হাজার ৩০০ টাকায় যা আগে ছিল ১ আহজার ৫০০ টাকা।
বিক্রেতা কেবলই বলছে, পদ্মা-মেঘনার ইলিশের দাম একটু বেশি। এক কেজি ওজনের ইলিশের দাম ১ হাজার ৯০০ থেকে ২ হাজার টাকা।
বাজার ঘুরে দেখা যায়, এদের ৯০ শতাংশ ইলিশ মাছই সাগর ও তার আশ পাশ অঞ্চলের। বাকি ১০ শতাংশ মাছ পদ্মা-মেঘনার।
শহরের খুচরা বাজার ঘুরে দেখা যাচ্ছে যে, প্রায় এ দামেই ইলিশ কেনা-বেচা হচ্ছে।
চাঁদপুরের মাছ ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি বারী মানিক জমাদার জানান, গত ৩ দিনে ইলিশের সরবরাহ বাড়লেও আগের বছরের মতো তেমন নেই। এছাড়া আষাঢ় মাসে তো মাছের আমদানি হওয়ার কথা দৈনিক কমপক্ষে ২ হাজার থেকে ২ হাজার ২০০ মণ।
প্রবীণ ব্যবসায়ীদের ধারণা করছেন যে জাটকা ধরায় নিষেধাজ্ঞার সময় ‘অসাধু’ জেলেরা রাতের আধাঁরে জাটকা ধরেছেন। তাই ইলিশের এ করুণ অবস্থা।
চাঁদপুর মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের সাবেক ইলিশ গবেষক ড. মো. আনিসুর রহমান ইউএনবিকে বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন, দূষণ এবং লাগামহীন বালু উত্তোলনের কারণে নদীর পানি কমে গেছে। আমাদের নদীগুলোকে বাঁচাতে হবে। নদীর তলদেশে অনেক স্থানে ডুবন্ত চর জেগে ওঠায় মাছের স্বাভাবিক চলাচলের গতিপথ বাধা প্রাপ্ত হওয়ায় মাছ এ পথে (চাঁদপুরের পথে) আসছে না।
তিনি বলেন, দূষিত পানিতে মাছ স্বাচ্ছন্দ বোধ করছে না। তাছাড়া নদীর তলদেশে অনেক স্থানে ডুবন্ত চর জেগে উঠায় মাছের স্বাভাবিক চলাচলের গতিপথ বাধা প্রাপ্ত হওয়ায় মাছ এ পথে (চাঁদপুরের পথে) আসছে না। নদীর তলদেশে হয়তোবা ইলিশ মাছ তাদের খাবারও পাচ্ছে না।
তাই তারা মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে। সেকারনেই চাঁদপুরের জালে ধরা পড়ছে না কাংখিত ইলিশ। হতাশ হয়ে ফিরছে জেলেরা। তবে এখন থেকে আশা করি, ইলিশ মাছ পাওয়া যাবে। ইলিশ চাঁদপুরে সবে মাত্র আসতে শুরু করেছে।
তিনি আরও বলেন, আগামীতে আরও আসবে ইনশাল্লাহ। হতাশ হওয়ার কিছু নেই।
এছাড়া আগামী দিনে পূর্ণিমায় ইলিশ মাছের সন্তোষজনক ধরা পড়বে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি।
অভিজ্ঞতা সম্পন্ন ইলিশ জেলেদের-সাকিব মাঝি, ওমর আলী, ও রহিম গাজী, সাজাহান সরদার, প্রবীণ ব্যবসায়ী নুরুল ইসলামসহ অনেকের ধারণা- এবার আষাঢ়ে বজ্র-বৃষ্টি কম হওয়ায় নদীতে মাছের দল বা জটলা ভাঙছে না।
কিন্তু ইলিশ গবেষক ড. আনিস বলছেন, ওনাদের এ ধারনাটা আংশিক সত্য।
আরও পড়ুন: ভোলায় ২ দিন নদীতে কাঙ্ক্ষিত ইলিশ না পেয়ে হতাশ জেলেরা
ইলিশ ধরার ওপর দুই মাসের নিষেধাজ্ঞা শেষ হচ্ছে রবিবার মধ্যরাতে
রুপিতে বাণিজ্য: প্রথম দিনে ৩০টি পিকআপ ভ্যান আমদানি
ভারত থেকে রুপিতে কেনা ৩০টি পিকআপ ভ্যান মঙ্গলবার (২৫ জুলাই) বেনাপোল বন্দর দিয়ে দেশে প্রবেশ করেছে।
বেনাপোল বন্দরের পরিচালক আ. জলিল এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
আরও পড়ুন: মালয়েশিয়া থেকে এলএনজি আমদানি করবে বাংলাদেশ
তিনি জানান, বাংলাদেশের আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান ঢাকার নিতা কোম্পানি ভারতীয় প্রতিষ্ঠান টাটা মোটরসের কাছ থেকে ১ কোটি ২৪ লাখ রুপিতে এ পিকআপ ভ্যানগুলো কিনেছে।
তিনি বলেন, ভারতীয় রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান টাটা মোটরস লি. পিকআপ ভ্যানগুলো রপ্তানি করেন।
তিনি আরও বলেন, আমদানির পর পিকআপ ভ্যানগুলো বেনাপোল বন্দরের ট্রান্সশিপমেন্ট ইয়ার্ডে রাখা হয়েছে।
এর আগে গত ১১ জুলাই ঢাকায় এক অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ব্যাংক ও ভারতীয় হাইকমিশন ২ দেশের বাণিজ্যে রুপি ব্যবহারের ঘোষণা দেয়।
গত ১১ জুলাই মঙ্গলবার ঢাকার লা মেরিডিয়ান হোটেলে এক অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ব্যাংক ও ভারতীয় হাইকমিশন ২ দেশের বাণিজ্যে রুপি ব্যবহারের ঘোষণা দেয়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আবদুর রউফ তালুকদার, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব তপন কান্তি ঘোষ, ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় কুমার ভার্মা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ব্যাংকের গর্ভনর আবদুর রউফ তালুকদার ভারতে বাংলাদেশ ভ্রমণকারীদের সুবিধার্থে আগামী সেপ্টেম্বরে 'টাকা-রুপি কার্ড' চালুর সম্ভাবনার কথা জানান।
এই কার্ড দিয়ে দেশে ও প্রতিবেশি ভারতে বিল পরিশোধ করা যাবে।
দেশের আমদানিকারকদের কিছুটা স্বস্তি দেবে। তারা প্রতিবেশি দেশ থেকে পণ্য কিনতে রুপিতে এলসি খুলতে শুরু করেছেন। ফলে ডলারের ব্যবহার কিছুটা কমবে।
ডলারের ঘাটতির কারণে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ আরও কমে যাওয়া রোধ করতে সরকার আমদানিবিধি কঠোর করেছে। এক বছর আগের তুলনায় রিজার্ভ কমেছে প্রায় ২৩ শতাংশ।
২ দেশের মধ্যে প্রায় ১৬ বিলিয়ন ডলারের দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের একটি অংশের মূল্য পরিশোধের সুবিধার্থে ভারতের কেন্দ্রীয় ব্যাংক রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়া বাংলাদেশের ব্যাংকগুলোকে ভারতে অ্যাকাউন্ট খোলার অনুমতি দিয়েছে।
রপ্তানি ও রেমিট্যান্স থেকে আসা অর্থের তুলনায় আমদানি মূল্যের পরিমাণ বেশি হওয়ায় দেশের রিজার্ভ কমে যাচ্ছে।
বেনাপোল কাস্টমস হাউসের ডেপুটি কমিশনার তানভীর আহমেদ বলেন, মঙ্গলবার রুপির মাধ্যমে ভারত থেকে প্রথম চালান আমদানি হয়েছে বেনাপোল বন্দর দিয়ে।
তিনি আরও বলেন, রুপিতে পণ্য আমদানি হলে ডলারের ওপর চাপ কমে যাবে।
আরও পড়ুন: সিঙ্গেল পয়েন্ট মুরিংয়ের মাধ্যমে তেল আমদানির নতুন যুগে প্রবেশ করবে দেশ
ভারত থেকে ডেঙ্গু, ম্যালেরিয়া ও এইচআইভি টেস্টের কিট আমদানি
ঊর্ধ্বমুখী দামের মধ্যে দেশে ৯৪ টন কাঁচা মরিচ আমদানি
পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে বিভিন্ন স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে ৯৪ টন কাঁচা মরিচ দেশে এসেছে বলে জানিয়েছে কৃষি মন্ত্রণালয়।
ক্রমবর্ধমান মূল্যের পরিপ্রেক্ষিতে, কৃষি মন্ত্রণালয় এ পর্যন্ত মোট ৩৬ হাজার ৮৩০ মেট্রিক টন কাঁচা মরিচ আমদানির অনুমতি দিয়েছে।
রবিবার (২ জুলাই) মন্ত্রণালয়ের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
আরও পড়ুন: হিলি স্থলবন্দর দিয়ে কাঁচা মরিচ আমদানি শুরু
এদিকে ইউএনবি সাতক্ষীরা সংবাদদাতা জানান, পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে টানা পাঁচদিন বন্ধ থাকার পর রবিবার (২ জুলাই) থেকে সাতক্ষীরার ভোমরা স্থল বন্দরের আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
দেশের বাজারে কাঁচা মরিচের অস্বাভাবিক দামবৃদ্ধির মধ্যে সাতক্ষীরার ভোমরা স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে দেশে এসেছে ছয় ট্রাকভর্তি ৬০ টন কাঁচা মরিচ। রবিবার প্রথম পণ্যবোঝাই ট্রাক-লরিগুলো বাংলাদেশে প্রবেশ করে।
ছুটি শেষে সকল আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম শুরুর প্রথম দিন কাঁচা মরিচবোঝাই ছয়টি ভারতীয় ট্রাক বাংলাদেশে প্রবেশ করে।
ট্রাকপ্রতি ১০ টন করে মোট ৬০টন কাঁচা মরিচ রয়েছে। আজ সন্ধ্যায় আরও কিছু কাঁচা মরিচের ট্রাক প্রবেশ করতে পারে বলে জানিয়েছেন সিএন্ডএফ এজেন্ট কর্তৃপক্ষ।
ভোমরা স্থলবন্দর সিএন্ডএফ এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক এ এস এম মাকসুদ খান বলেন, ঈদুল আজহার কারণে গত মঙ্গলবার থেকে শনিবার পর্যন্ত পাঁচদিন ছুটি ছিল ভোমরা স্থল বন্দরে। রবিবার থেকে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, রবিবার মোট কাঁচা মরিচবাহী ছয়টি ট্রাক প্রবেশ করেছে। সন্ধ্যায় আরও কিছু কাঁচা মরিচ বন্দরে প্রবেশ করতে পারে।
কাঁচা মরিচের আমদানির ফলে স্থানীয় বাজারসহ দেশের বাজারে কাঁচা মরিচের দাম কমবে বলে তার আশা।
ভোমরা স্থলবন্দরের রাজস্ব কর্মকর্তা ইফতেখার উদ্দীন বলেন, রবিবার সকাল থেকে কয়েকটি কাঁচা মরিচের ট্রাক প্রবেশ করেছে। ধীরে ধীরে আরও করবে। একটু সময় লাগবে।
সাতক্ষীরা কাঁচা বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহিম বাবু বলেন, সাতক্ষীরার বাজারে কাঁচা মরিচ ৪শ’ থেকে ৪৫০ টাকা পাইকারি দরে বিক্রি হচ্ছে।
আরও পড়ুন: হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে কাঁচা মরিচ আমদানি শুরু
তিনি বলেন, আর খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৬০০ টাকা কেজি। কাঁচা মরিচের দাম বৃদ্ধিতে সাধারণ মানুষ পড়েছে বিপাকে। তাদেও ক্রয় ক্ষমতার বাইওে চলে গেছে।
রবিবার দুপুরে ভোমরা দিয়ে কিছু কাঁচা মরিচের ট্রাক প্রবেশের পর ইতোমধ্যে দাম কমতে শুরু হয়েছে।
এর আগে গত ২৭ জুন (মঙ্গলবার) থেকে ১ জুলাই (শনিবার) পর্যন্ত টানা ৫ দিন ঈদের ছুটিতে বন্দরের সবধরনের আমাদানি-রপ্তানি বাণিজ্য বন্ধ ছিলো। তবে এ সময়ে পাসপোর্টধারী যাত্রীরা যথারীতি যাতায়াত করেছেন।
অন্যদিকে ইউএনবি’র বেনাপোল সংবাদদাতা জানান, বেনাপোল বন্দর দিয়ে রবিবার ভারত থেকে ৩৪ মেট্রিক টন কাঁচা মরিচ দেশে এসেছে। ৫টি ট্রাকে করে ভারতীয় এসব কাঁচা মরিচ বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রবেশ করে।
এদিকে বেনাপোলের মেসার্স উষা ট্রেডিং, এন এস এন্টারপ্রাইজ ও এস এম করপোরেশনসহ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান কাঁচা মরিচ আমদানির জন্য অনুমতিপত্র (আইপি) পেয়েছে।
শুধুমাত্র এসব অনুমতিপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানগুলো ভারত থেকে কাঁচা মরিচ আমদানি করবে।
বেনাপোল স্থলবন্দরের আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান মেসার্স উষা ট্রেডিংয়ের স্বত্বাধিকারী রফিকুল ইসলাম রয়েল বলেন, দেশে কাঁচা মরিচের দাম বেড়ে যাওয়ায় সরকার ভারত থেকে কাঁচা মরিচ আমদানির সিদ্ধান্ত নেয়। ২৫ জুন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরে (খামারবাড়ী) কাঁচা মরিচ আমদানির জন্য আইপি প্রদান করে।
বেনাপোল স্থলবন্দর উদ্ভিদ সঙ্গনিরোধ কেন্দ্রের উপ-সহকারী কর্মকর্তা হেমন্ত কুমার সরকার বলেন, দেশের বাজারে ঈদের আগে থেকে হঠাৎ করে কাঁচা মরিচের দাম বেড়ে যাওয়ায় সরকার ভারত থেকে আমদানির অনুমতি দেওয়ায় আজ থেকে আমদানি শুরু হয়েছে।
বেনাপোল কাস্টমসের ডেপুটি কমিশনার তানভীর আহমেদ বলেন, কাস্টমস কর্তৃপক্ষ প্রতিকেজি কাঁচা মরিচ শূন্য দশমিক ৫০ মার্কিন ডলারে শুল্কায়ন করে খালাশ করছে।
তিনি বলেন, যা বাংলাদেশি টাকায় প্রতিকেজির মূল্য ৩২ দশমিক ২০ টাকা পড়ে। মোট শুল্ক হার ৫৮ দশমিক ৬০ শতাংশ।
তিনি আরও বলেন, কাঁচা মরিচ বন্দর থেকে দ্রুত খালাস দেওয়ার জন্য মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, দেশে প্রতিকেজি মরিচ ১০০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হওয়ার পর, সরকার ভারত থেকে কাচামরিচ আমদানির অনুমতি প্রদান করে।
আরও পড়ুন: দাম বৃদ্ধির কারণে দেশে কাঁচা মরিচ আমদানির অনুমতি
বেনাপোল স্থল বন্দরে রেকর্ড পরিমাণ রাজস্ব আয়
টানা ১১ বছর ঘাটতির পর বেনাপোল স্থলবন্দরে আমদানি বাণিজ্যে রেকর্ড পরিমাণ রাজস্ব আয় হয়েছে। পদ্মা সেতু চালুর কারণেই এমন সফলতা এসেছে বলে দাবি কাস্টমস কর্তৃপক্ষের।
দেশে সরকার অনুমোদিত ২৪টি স্থলবন্দরের মধ্যে সচল রয়েছে মাত্র ১২টি। এরমধ্যে সবচেয়ে বেশি রাজস্ব আসে বেনাপোল বন্দর থেকে।
কিন্তু নানা প্রতিবন্ধকতায় গত ১১ বছর ধরে আমদানি বাণিজ্য থেকে রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে পারছিল না কাস্টমস কর্তৃপক্ষ।
আরও পড়ুন: বছরের প্রথম প্রান্তিকে জিপির রাজস্ব আয় ৩ হাজার ৬২০ কোটি টাকা
বন্দর সূত্রে জানা যায়, ২০২১-২২ অর্থবছরে বন্দরে রাজস্ব ঘাটতির পরিমাণ ছিল ৫৫৮ কোটি টাকা। ২০২০-২১ অর্থবছরে রাজস্ব ঘাটতি ছিল ২ হাজার ৫৭ কোটি টাকা।
এছাড়া ২০১৯-২০, ২০১৮-১৯ ও ২০১৭-১৮ অর্থবছরে যথাক্রমে রাজস্ব ঘাটতি ছিল ৩ হাজার ৩৯২ কোটি টাকা, ১ হাজার ১৪৫ কোটি টাকা ও ১৭৯ কোটি ৬৪ লাখ টাকা।
আর ২০১৫-১৬, ২০১৪-১৫, ২০১৩-১৪, ২০১২-১৩ ও ২০১১-১২ অর্থবছরে বেনাপোল বন্দরে যথাক্রমে ২০৩ কোটি টাকা, ৮ কোটি ৭১ লাখ, ১৩৪ কোটি ৭৩ লাখ, ৪৫২ কোটি ৮৯ লাখ ও ১৯৪ কোটি টাকা রাজস্ব ঘাটতি ছিল।
তবে পেছনের সেই ব্যর্থতা ঘুচে ১১ বছরের রেকর্ড ভেঙে চলতি অর্থবছরের ১১ মাসে বন্দরটি থেকে সরকারের রাজস্ব এসেছে ৫ হাজার ৩৬০ কোটি ৭৮ লাখ টাকা। যা আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে ১ হাজার ২২৫ কোটি ২০ লাখ টাকা বেশি।
বন্দর সংশ্লিষ্টরা বলছেন, পদ্মা সেতু চালুর কারণেই এসেছে এমন সফলতা। বেনাপোল কাস্টমস হাউসের যুগ্ম কমিশনার সাফায়েত হোসেন বলেন, পদ্মা সেতু বেনাপোল বন্দরের সাফল্য বাড়িয়ে দিয়েছে। গত বছরের তুলনায় রাজস্ব আয়ের পরিমাণ কয়েকগুণ বেড়েছে।
এদিকে পদ্মা সেতুর কারণে যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ হওয়ায় ব্যবসায়ীরা যশোরের বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দরমুখী হচ্ছেন। পুরানো রেকর্ড ভেঙে আমদানি, রপ্তানিও বেড়েছে এ বন্দর দিয়ে।
বন্দর সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরের প্রথম ১১ মাসে ভারত থেকে আমদানি হয়েছে বিভিন্ন ধরনের ১৮ লাখ ৮১ হাজার ৪১৯ দশমিক ০৩ মেট্রিক টন পণ্য। যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৪৯ হাজার ৫৫২ মেট্রিক টন বেশি। আর ভারতে রপ্তানি হয়েছে ৯ হাজার ৫৭৭ কোটি টাকারও বেশি পণ্য। যার পরিমাণ ৪ লাখ ৫২ হাজার ৩১০ দশমিক শূন্য ৭ মেট্রিক টন।
যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৩২ হাজার মেট্রিক টন বেশি।
বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের আন্তর্জাতিক চেকপোস্ট বিষয়ক সম্পাদক সুলতান আহম্মেদ বিপুল বলেন, পদ্মা সেতু চালু হওয়ায় আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য অনেক সহজ হয়েছে। এখন বেনাপোল থেকে পণ্য নিয়ে ৪ থেকে ৫ ঘণ্টায় ঢাকায় পৌঁছানো যায়।
এদিকে বন্দরের আমদানি-রপ্তানি ও রাজস্ব বাড়ার ধারাবাহিক সফলতা আরও বাড়াতে প্রয়োজনীয় অবকাঠামো উন্নয়নের ওপর জোর দেয়ার কথা জানান বেনাপোল স্থলবন্দরের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক আব্দুল জলিল।
তিনি বলেন, বেনাপোল বন্দরের অবকাঠামোগত উন্নয়নের লক্ষ্যে কাজ চলছে। খুব শিগগিরই বন্দরটি আরও আধুনিক বন্দরে পরিণত হবে।
উল্লেখ্য, ২০২২-২৩ অর্থবছরে বেনাপোল বন্দর থেকে রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৫ হাজার ৯৬৬ কোটি টাকা।
আরও পড়ুন: করোনা: রাজস্ব আয় কমেছে নাকুগাঁও স্থলবন্দরে
আগামী অর্থবছরে বাড়ছে রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা
ঈদের ছুটিতে হিলি স্থলবন্দরে ৬ দিন আমদানি-রপ্তানি বন্ধ
মুসলিম সম্প্রদায়ের ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে ২৭ জুন থেকে ২ জুলাই পর্যন্ত দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দরে একটানা ছয় দিন বন্ধ থাকবে।
এসময় বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে সব ধরনের পণ্য আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম বন্ধ থাকবে। ছুটি শেষে আগামী ৩ জুলাই থেকে পুনরায় আমদানি-রপ্তানি শুরু হবে।
আরও পড়ুন: ডলারের ঊর্ধ্বগতিতে শেওলা স্থলবন্দরের আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যে মন্দাভাব
হিলি স্থলবন্দর আমদানি-রপ্তানি গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান জানিয়েছেন, ২৯ জুন পবিত্র ঈদুল আযহা। ঈদ পালনে আগামী ২৭ জুন থেকে ২ জুলাই পর্যন্ত ৬ দিন দিনাজপুরের হিলি বন্দর দিয়ে সব ধরনের পণ্য আমদানি-রপ্তানি বন্ধ রাখা হবে।
এরপর ৩ জুলাই থেকে পুনরায় আমদানি-রপ্তানি শুরু করা হবে।
হিলি ইমিগ্রেশন ওসি শেখ আশরাফুল আলম জানান, হিলি বন্দরের আমদানি-রপ্তানি বন্ধ থাকলেও চেকপোস্ট দিয়ে পাসপোর্টধারিদের ইমিগ্রেশন দিয়ে পারাপার স্বাভাবিক থাকবে।
আরও পড়ুন: ঈদুল আজহা উপলক্ষে সোনামসজিদ স্থলবন্দরে ৬ দিন আমদানি-রপ্তানি বন্ধ
হিলি স্থলবন্দরে ভারতীয় ট্রাক চালকদের মধ্যে সংঘর্ষ, আধাবেলা পর আমদানি-রপ্তানি শুরু
হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে কাঁচা মরিচ আমদানি শুরু
হঠাৎ করেই দেশের বাজারে কাঁচা মরিচের দামে অস্থিরতা দেখা দেওয়ায় অবশেষে দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ভারতীয় কাঁচা মরিচ আমদানি শুরু হয়েছে।
দীর্ঘ ১০ মাস পর সোমবার (২৬ জুন) দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে কয়েকটি কাঁচা মরিচবোঝাই ভারতীয় ট্রাক হিলি বন্দরে প্রবেশ করে।
আরও পড়ুন: হিলি ও সোনামসজিদ স্থলবন্দর দিয়ে ভারতীয় পেঁয়াজ আমদানি শুরু
এরপর বেলা সাড়ে তিনটার মধ্যে তিনটি ট্রাকে করে মোট ২১ মেট্রিক টন ৬২০ কেজি ভারতীয় কাঁচা মরিচ বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে।
আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান মেসার্স সততা বাণিজ্যালয়, বিকে ট্রেডা, প্রমি এন্টারপ্রাইজ এবং রয়েল ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল কাচামরিচ আমদানির জন্য অনুমতিপত্র (আইপি) পেয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠান ১৯’শ মেট্রিকটন কাঁচা মরিচ আমদানি করবেন।
হিলি স্থলবন্দরের আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান মেসার্স সততা বাণিজ্যালয়ের স্বত্বাধিকারী বাবলুর রহমান জানান, দেশে কাঁচা মরিচের দাম বেড়ে যাওয়ায় সরকার ভারত থেকে আমদানি করার সিদ্ধান্ত নেয়।
এর ফলে গতকাল রবিবার (২৫ জুন) আমরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরে (খামারবাড়ী) আমদানি করার জন্য অনুমতি চেয়ে আবেদন করলে কাঁচা মরিচ আমদানির জন্য অনুমতি দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন: ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি শুরু, কেজিতে কমল ২০ টাকা
সোমবার হিলি স্থলবন্দর দিয়ে কাঁচা মরিচ আমদানি করা হচ্ছে। এতে বাজারে দাম অনেক কমে আসবে।
বন্দরের হিলি বাজারে কাঁচামালের খুচরা ব্যবসায়ী সাকিল জানান, প্রতিদিনই কাঁচা মরিচের দাম বেড়ে সোমবার সকালে বিক্রি হয়েছে ১৬০-২০০ টাকা কেজিতে।
২০২৬ সাল থেকে আরও এলএনজি আমদানির জন্য ওমানের সঙ্গে আরেকটি চুক্তি সই
বাংলাদেশের তেল গ্যাস ও খনিজ কর্পোরেশন রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন পেট্রোবাংলা আরও তরল প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানির জন্য মধ্যপ্রাচ্যের দেশ ওমানের ওকিউটি-এর সঙ্গে আরেকটি চুক্তি সই করেছে।
নতুন চুক্তি অনুযায়ী, ওমানের রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন কোম্পানি ওকিউটি ২০২৬ সাল থেকে ১০ বছরে বাংলাদেশে বার্ষিক শূন্য দশমিক ২৫ থেকে দেড় মিলিয়ন মেট্রিক টন(এমটিপিএ) এলএনজি সরবরাহ করবে।
সোমবার সোনারগাঁও হোটেলে চুক্তিসই অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকা প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানি উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী বলেন, এটি বাংলাদেশের জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
তিনি আরও বলেন, ‘এটি দেশে জ্বালানি সরবরাহ নিশ্চিত করার একটি অগ্রগতি।’
আরও পড়ুন: ব্রিকস আনুষ্ঠানিকভাবে যোগদানের আমন্ত্রণ জানালে ঢাকা স্বাগত জানাবে
তবে চুক্তির কোনো মূল্য বা আর্থিক বিবরণ অনুষ্ঠানে প্রকাশ করা হয়নি। বাংলাদেশে ওমানি রাষ্ট্রদূত আবদুল গাফফার আলবুলুশি বলেন, ‘এটি দুই পক্ষের মধ্যে একটি গোপনীয় বিষয়’।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন ওকিউটি-এর প্রধান নির্বাহী সাইদ আল মাওয়ালি এবং পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান জনেন্দ্র নাথ সরকার এবং সভাপতিত্ব করেন জ্বালানি সচিব ড. খাইতুজ্জান মজুমদার।
২০১৮ সালের ৬ মে পেট্রোবাংলা এবং ওমান ট্রেডিং ইন্টারন্যাশনাল (বর্তমানে ওকিউ ট্রেডিং লিমিটেড-ওকিউটি নামে পরিচিত) সই করা এলএনজির বিদ্যমান বিক্রয় ও ক্রয় চুক্তির (এসপিএ) অধীনে, ওমান দু’দেশের সরকারি পর্যায়(জিটুজি) ১০ বছরের সময়কাল ভিত্তিতে ১ দশমিক শূন্য থেকে দেড় এমটিপিএ এলএনজি সরবরাহ করছে।
নতুন চুক্তির অধীনে, ওকিউ ট্রেডিং লিমিটেড (ওকিউটি) জি-টু-জি ভিত্তিতে ১০ বছরের মধ্যে আরও এলএনজি সরবরাহ করবে।
এটি ২০২৬ সালে ৪টি কার্গো এলএনজি, ২০২৭ থেকে ২০২৮ সাল পর্যন্ত বছরে ১৬টি কার্গো এলএনজি এবং ২০২৯ থেকে ২০৩৫ সাল পর্যন্ত প্রতি বছর ২৪টি কার্গো এলএনজি সরবরাহ করবে।
বর্তমানে বিদ্যমান দুটি চুক্তির অধীনে সাড়ে ৩ থেকে ৪ এমটিপিএ এলএনজি আমদানি করা হচ্ছে।
পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান বলেন, ‘এটি ১০ বছরের চুক্তির অধীনে আরও ১ মিলিয়ন মেট্রিক টন আমদানি বাড়ানোর জন্য ওমানের সঙ্গে বিদ্যমান চুক্তির অতিরিক্ত হবে’।
বৈশ্বিক জ্বালানি বাজারে ঘন ঘন দামের ওঠানামার কারণে অস্থিরতা ধরে রাখতে দীর্ঘমেয়াদী চুক্তির আওতায় বাংলাদেশ তার এলএনজি আমদানি বাড়ানোর জন্য মরিয়া হয়ে দেখছে।
এই পদক্ষেপের অংশ হিসেবে, সম্প্রতি বাংলাদেশ ২০২৬ সাল থেকে পরবর্তী ১৫ বছরের জন্য বার্ষিক অতিরিক্ত ১৫ লাখ টন তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) পাওয়ার জন্য কাতারের সঙ্গে একটি নতুন চুক্তি সই করেছে।
আরও পড়ুন: গ্রিন-ফিচার্ড বিল্ডিং বিনির্মাণে বিএইচবিএফসি ও এএফডি’র মধ্যে দ্বিপক্ষীয় সভা
পেট্রোবাংলা কাতারের রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন রাস লাফান লিকুইফাইড ন্যাচারাল গ্যাস কোম্পানি লিমিটেডের (কাতারগাস) সঙ্গে নতুন চুক্তি সই করেছে।
নতুন চুক্তির অধীনে, কাতার ২০২৬ থেকে ২০৪০ সাল পর্যন্ত প্রতি বছর অতিরিক্ত প্রায় দেড় এমটিপিএ এলএনজি সরবরাহ করবে। এর মধ্যে বাংলাদেশ ২০২৬ সালে ১২টি এলএনজি এবং ২০২৭ সালে ২৪টি কার্গো পাবে।
দেশের মোট প্রাকৃতিক গ্যাস উৎপাদন প্রতিদিন প্রায় ৩ হাজার মিলিয়ন ঘনফুট (এমএমসিএফডি) চাহিদা ৪০০০ এমএমসিএফডি’র বিপরীতে প্রায় ১০০০ এমএমসিএফডি’র ঘাটতি রয়েছে। মোট উৎপাদনের মধ্যে ৭০০ এমএমসিএফডি আমদানি করা হয় যখন চাহিদা ২৩০০ এমএমসিএফডি।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যের মধ্যে রপ্তানি বৃদ্ধি ও পণ্য বৈচিত্র্যকরণে এফবিসিসিআই ও এইচএসবিসি’র চুক্তি
৬০ টাকায় থমকে আছে দেশি পেঁয়াজ, ভারতীয় ৪০ টাকা
দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দরে গত পাঁচদিন ধরে থমকে আছে দেশি পেঁয়াজের বাজার। ভারত থেকে আমদানি হওয়ার পর খুচরা পর্যায়ে কেজিতে ২০-২৫ টাকা কমলেও এখনও ৬০ টাকায় স্থির হয়ে আছে এই নিত্যপণ্যটির দাম।
সরবরাহ বেড়ে যাওয়ায় ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৩৮-৪০ টাকা দরে। আজ শুক্রবার (৯ জুন) সকালে বন্দরের মোকাম ও খুচরা বাজার ঘুরে এই চিত্র দেখা গেছে।
এদিকে, হিলি স্থলবন্দরের কাস্টমস কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গত ৫ জুন থেকে গতকাল (বৃহস্পতিবার) পর্যন্ত হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ভারতীয় ৭২টি ট্রাকে মোট ১ হাজার ৬৩৩ মেট্রিক টন পেঁয়াজ আমদানি করা হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি না হওয়ার আগে দেশি পেঁয়াজ ৮০-৮৫ টাকায় বিক্রি হলেও আমদানি হওয়ার পর বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা। তবে গত পাঁচদিন ধরে আমদানি করা ভারতীয় পেঁয়াজ ৪০ টাকার কাছাকাছি বিক্রি হচ্ছে।
আরও পড়ুন: ভোমরা বন্দর দিয়ে ২৮৭ মেট্রিক টন পেঁয়াজ আমদানি
বন্দরের বাংলাহিলি বাজারের খুচরা ব্যবসায়ী সাকিল ও মঈনুল জানান, যখন পেঁয়াজের দাম বাড়ে তখন ক্রেতার সংখ্যাও বাড়ে। এখন পেঁয়াজের দাম কমে গেছে কিন্তু ক্রেতার অভাবে পেঁয়াজ ভালো বিক্রি করতে পারছি না।
তারা আরও বলেন, বর্তমানে ভারতীয় আমদানি করা পেঁয়াজ ৩৮-৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দেশি পেঁয়াজ ২০-২৫ টাকা কমে ৬০ টাকায় বিক্রি করছি। গত পাঁচদিন ধরে এভাবেই দেশি ও আমদানিকৃত পেঁয়াজের দাম থমকে আছে। ভারতীয় পেঁয়াজের আমদানি আরও বেড়ে গেলে ৩০ টাকার নিচে চলে আসবে। তবে আগে বেশি দামে কেনার জন্য দেশি পেঁয়াজের দাম কোরবানির ঈদের আগে সহসাই কমছে না।
পেঁয়াজের ক্রেতা আসাদ হোসেন জানান, কোনো কিছুর দাম বাড়লে আমরা বাঙ্গালিরা কেনার জন্য হুমড়ি খেয়ে পড়ি। পেঁয়াজের ক্ষেত্রে সেটাই দেখা গেছে। ভারতীয় পেঁয়াজ বাজারে এসেছে। দাম অনেক কমে গেছে। এখন চাহিদা মতো পেঁয়াজ কিনতে পারছি। ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি না হলে এটা সম্ভব তো না।
আরও পড়ুন: ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি শুরু, কেজিতে কমল ২০ টাকা
হিলি স্থলবন্দরের পেঁয়াজ আমদানিকারক সেলিম উদ্দীন জানান, হিলি স্থলবন্দর দিয়ে গত ৫ জুন হতে ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি অব্যাহত রয়েছে। এ কারণে বাজারে পর্যাপ্ত সরবরাহ বেড়ে যাওয়ায় দাম কমে মানভেদে পাইকারি বিক্রি হচ্ছে ৩০-৩৬ টাকার মধ্যে। আরও দাম কমে যাবে। আশা করছি কোরবানির ঈদে ৩০ টাকার মধ্যে চলে আসবে।
বন্দরের আরেক পেঁয়াজ আমদানিকারক শহীদুল ইসলাম জানান, সিন্ডিকেট করে দাম বাড়ানোর কারণেই দেশি পেঁয়াজের বাজার অস্থিতিশীল হয়ে উঠেছিল। ফলে ভোক্তাদের বেশি দামে পেঁয়াজ কিনতে হয়েছে। দাম এতো হওয়ার কথা না। ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ থাকায় তারা এই সুযোগ নিয়েছিল। আমদানিকৃত পেঁয়াজ দেশে আসায় বাজার স্বাভাবিক হয়ে আসছে।
এদিকে হিলি স্থলবন্দরের উদ্ভিদ সংগনিরোধ কেন্দ্র কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, সরকার চলতি বছরের ১৫ মার্চ পর্যন্ত ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানিতে (আইপি) অনুমতি দিয়েছিল। এরপর ১৬ মার্চ থেকে আমদানি বন্ধ হয়ে যায়। গত ৫ জুন অনুমতি দিলে ভারত থেকে আবারও পেঁয়াজের আমদানি শুরু হয়।
আরও পড়ুন: হিলি ও সোনামসজিদ স্থলবন্দর দিয়ে ভারতীয় পেঁয়াজ আমদানি শুরু
ভোমরা বন্দর দিয়ে ২৮৭ মেট্রিক টন পেঁয়াজ আমদানি
ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দিয়েছে সরকার, এই খবরে সাতক্ষীরায় পেঁয়াজের দাম কেজিপ্রতি প্রায় ২৫ টাকা কমেছে।
কয়েক দিন আগেও যে পেঁয়াজ ৯০ থেকে ১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে, মঙ্গলবার থেকে সেই পেঁয়াজের দাম কমে কেজিপ্রতি বিক্রি হচ্ছে ৭৫ থেকে ৮০ টাকায়। অর্থাৎ কেজিপ্রতি ২০ থেকে ২৫ টাকা কমেছে।
এদিকে , সাতক্ষীরার ভোমরা স্থলবন্দর দিয়ে সোমবার থেকে পেঁয়াজ আমদানি শুরু হয়েছে।
সোমবার বিকালে ১১টি পেঁয়াজ ভর্তি ট্রাক ভোমরা বন্দর দিয়ে আমদানি হয়েছে। যার পরিমাণ ২৮৭ মেট্রিক টন বলে জানা গেছে।
মঙ্গলবার সকালে আরও ১০টির মতো পেয়াঁজভর্তি ট্রাক বন্দরে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে।
আরও পড়ুন: ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি শুরু, কেজিতে কমল ২০ টাকা
মঙ্গলবার সকালে ভোমরা স্থলবন্দরের সুপার ইফতেখারুদ্দিন এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, সোমবার বিকালে ভোমরা বন্দর দিয়ে ১১টি ট্রাকে ২৮৭ মেট্রিক টন পেয়াঁজ ঢুকেছে। আজ (মঙ্গলবার) সকালে আরও ১০ ট্রাক পেয়াঁজ আমদানি হতে পারে। অর্থাৎ ২১ ট্রাক পেঁয়াজ ইতোমধ্যে ভারতের ঘোজডাঙ্গা বন্দর দিয়ে ভোমরা স্থল বন্দরে প্রবেশ করেছে।
তিনি বলেন, যেহেতু সরকার পেয়াঁজ আমদানির অনুমতি দিয়েছে বিধায় পুরাতন এলসি যাদের করা ছিল তারা এলসি পরিবর্তন করে পেয়াঁজ আমদানির চেষ্টা করছে। এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া।
আরও পড়ুন: হিলি ও সোনামসজিদ স্থলবন্দর দিয়ে ভারতীয় পেঁয়াজ আমদানি শুরু
পেয়াঁজের দাম কিছুটা কমে আসায় ক্রেতাদের মধ্যে স্বস্তি ফিরেছে।
ব্যবসায়ীরা বলছে, পেঁয়াজের আমদানি বাড়লে দাম আরও কমে আসবে। সাধারণ ক্রেতাদের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে চলে আসবে।
সাতক্ষীরার সুলতানপুর বড় বাজারের পেঁয়াজ ব্যবসায়ী আব্দুল বারী জানান, গত রবিবার পর্যন্ত পেঁয়াজের দাম ৯০ থেকে ১০০ টাকা কেজি ছিল। সরকার পেঁয়াজ আমদানির সিদ্ধান্ত ঘোষণার পর সোমবার থেকে দাম কমে এসেছে। আমদানির সঙ্গে সঙ্গে দাম আরও কমবে বলে মনে করছেন এই ব্যবসায়ীরা।
আরও পড়ুন: পেঁয়াজের সংকট দূর হবে, পেঁয়াজ নিয়ে রাজনীতি বন্ধ হবে: কৃষিমন্ত্রী
হিলি ও সোনামসজিদ স্থলবন্দর দিয়ে ভারতীয় পেঁয়াজ আমদানি শুরু
দীর্ঘ ২ মাস ২০ দিন বন্ধ থাকার পর আজ সোমবার থেকে আবারও দিনাজপুরের হাকিমপুরে হিলি ও চাঁপাইনবাবগঞ্জের সোনামসজিদ স্থলবন্দর দিয়ে ভারতীয় পেঁয়াজ আমদানি শুরু হয়েছে।
সোমবার (৫ জুন) হিলি স্থলবন্দরের আমদানি-রপ্তানিকারক গ্রুপের সভাপতি হারুন উর রশীদ এবং সোনামসজিদ স্থলবন্দর কাস্টমসের সহকারী কমিশনার প্রভাত কুমার সিংহ এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
আরও পড়ুন: ১৫ মার্চের পর হিলি স্থলবন্দর দিয়ে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ
হিলি স্থলবন্দরের আমদানি-রপ্তানিকারক গ্রুপের সভাপতি হারুন উর রশীদ জানান, সরকারের অনুমতির সঙ্গে সঙ্গে দিনাজপুরের হাকিমপুরে স্থলবন্দর দিয়ে পেঁয়াজ আমদানি শুরু হয়েছে।
তিনি জানান, দীর্ঘ আড়াই মাস পর আজ সোমবার বিকাল পৌনে ৬ টার দিকে ৪০ মেট্রিক টন ভারতীয় পেঁয়াজবাহি ২টি ট্রাক হিলি স্থলবন্দরের বেসরকারি অপারেটর পানামা ল্যান্ডেপার্টে প্রবেশ করেছে।
তিনি আরও জানান, সোমবার দুপুরে ১৮ হাজার মেট্রিক টন পেঁয়াজ আমদানির অনুমতিপত্র হাতে পার হিলির সততা বাণিজ্যালয়, রায়হান ট্রেডার্স, এন আলম ট্রেডার্স, সালাম ট্রেডার্স, সালেহা ট্রেডার্স, বিকে ট্রেডার্স ও বিএস ট্রেডিং নামের আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানের ৭ জন আমদানিকারক।
এছাড়া দেশীয় কৃষকের উৎপাদিত পেঁয়াজের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতে চলতি বছরের ১৫ মার্চ থেকে ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ করেছিল সরকার।
তিনি আরও জানান, দেশের বাজারে পেঁয়াজের দাম স্বাভাবিক রাখতে কৃষি মন্ত্রণালয়ের খামারবাড়ি থেকে ভারতীয় পেঁয়াজ আমদানির জন্য অনুমতিপত্র পেয়েছেন কয়েকজন আমদানিকারন প্রতিষ্ঠান। পাশাপাশি ব্যবসায়ীরা এলসি খুলেছেন৷ এলসির পেঁয়াজ বাজারে পৌঁছালে দাম অর্ধেকে নেমে আসবে।
এছাড়া দুই-একদিনের মধ্যে কয়েকশ’ পেঁয়াজবাহী ট্রাক বন্দরে প্রবেশ করবেন বলে আশা করছেন তারা।
অপরদিকে, সোনামসজিদ স্থলবন্দর কাস্টমসের সহকারী কমিশনার প্রভাত কুমার সিংহ জানান, দীর্ঘ দুই মাস ২০ দিন পর চাঁপাইনবাবগঞ্জের সোনামসজিদ স্থলবন্দর দিয়ে পেঁয়াজ আমদানি শুরু হয়েছে।
সোমবার বিকাল থেকে পেঁয়াজবোঝাই ভারতীয় ট্রাক বন্দর দিয়ে আসতে শুরু করে। সন্ধ্যা পর্যন্ত পেঁয়াজ ভর্তি ৫৭ টি ভারতীয় ট্রাক সোনামসজিদ স্থলবন্দরে প্রবেশ করেছে।
তিনি জানান, পেঁয়াজবাহী ৫৭ টি ভারতীয় ট্রাক প্রবেশ শুরু করেছে। এতে মোট ১ হাজার ৯৭ মেট্রিক টন পেঁয়াজ এসেছে। আইপি অনুমোদন পাওয়া নথিপত্র পেলেই বন্দরে ট্রাক প্রেবেশের অনুমোদন দেয়া হচ্ছে।
সোনামসজিদ স্থলবন্দর পানামা পোর্ট লিংক লিমিটেডের ম্যানেজার মাইনুল ইসলাম জানান, ২ মাস ২০ দিন বন্ধ ছিল পেঁয়াজ আমদানি। তবে আজ সোমবার বিকালের পর থেকে স্থল বন্দরে পেঁয়াজ আমদানি শুরু হয়েছে।
উল্লেখ্য, এর আগে সর্বশেষ গত ১৫ মার্চ পেঁয়াজ এসেছিল সোনামসজিদ স্থলবন্দর দিয়ে। এরপরই বাংলাদেশে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ হয়ে যায়।
আরও পড়ুন: আমদানির অনুমতি না দেওয়ায় ফের পেঁয়াজের দাম বাড়াচ্ছে ব্যবসায়ীরা
হিলিতে বেড়েছে দেশি পেঁয়াজের দাম