মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধি: নয়াপল্টনে চলছে বিএনপির বিক্ষোভ সমাবেশ
জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি ও বিদ্যুৎ সংকটের প্রতিবাদে রাজধানীর নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বিএনপির বিশাল সমাবেশ চলছে। বৃহস্পতিবার বেলা ১টা ৫০ মিনিটে পবিত্র কোরআন তেলাওয়াতের মধ্য দিয়ে বিএনপির ঢাকা দক্ষিণ ও উত্তর মহানগর শাখার আয়োজনে সমাবেশ শুরু হয়।
সকাল থেকেই দল ও সহযোগী সংগঠনের হাজার হাজার নেতাকর্মী জড়ো হয়ে সড়কের একপাশ অবরোধ করে।
বিজয়নগর ক্রসিং থেকে ফকিরাপুল পর্যন্ত রাস্তার অপর পাশ দিয়ে যানবাহন চলাচল করে। এতে যাত্রীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ স্থায়ী কমিটির বিভিন্ন সিনিয়র নেতা সমাবেশে বক্তব্য রাখবেন।
এর আগে গত সোমবার জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির ফলে পরিবহন ভাড়া এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় সব পণ্যের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে সমাবেশসহ দুই দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
চলমান লোডশেডিং এবং ভোলায় পুলিশের হাতে দলটির সহযোগী সংগঠনের দুই নেতা মৃত্যুর প্রতিবাদ করাও এই কর্মসূচির উদ্দেশ্য।
এছাড়া আগামীকাল শুক্রবার সারাদেশে দলের সকল মহানগর ও জেলা ইউনিট প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করবে।
সরকার গত শুক্রবার রাতে ডিজেল, অকটেন এবং পেট্রোলের দাম যথাক্রমে ৪২.৫ শতাংশ, ৫১.৭ শতাংশ এবং ৫১ শতাংশ বাড়িয়েছে। বর্তমানে প্রতি লিটার ডিজেল ১১৪ টাকা, অকটেন ১৩৫ টাকা ও পেট্রোল ১৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
নজিরবিহীন বিদ্যুৎ বিভ্রাট ও নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির বিরুদ্ধে বিএনপি নেতাকর্মীরা দুই সপ্তাহ ধরে সারাদেশে বিক্ষোভ করছে এবং বিভিন্ন স্থানে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ হয়েছে।
গত ৩১ মে ভোলায় লোডশেডিংয়ের প্রতিবাদে করা বিএনপি ও এর সহযোগী সংগঠনসমূহের এক মিছিলে পুলিশ গুলি চালায়, এতে স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা আব্দুর রহিম ঘটনাস্থলেই মারা যান এবং আরও অনেকে গুরুতর আহত হন।
পরে আহতদের মধ্যে একজন ভোলা জেলা জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সভাপতি নূরে আলম রাজধানীর একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে ২ দিনের কর্মসূচি ঘোষণা বিএনপির
জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি, পরিবহন ভাড়া এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদে দুই দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বিএনপি।
সোমবার নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এক জনসভায় বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ ঘোষণা দেন।
নজিরবিহীন জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধি এবং পুলিশের গুলিতে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের ভোলা জেলা শাখার সভাপতি নূরে আলম ও স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা আবুর রহিম নিহত হওয়ার প্রতিবাদে এ সমাবেশের আয়োজন করে জাতীয়তাবাদী যুবদল।
সমাবেশে ফখরুল বলেন, চলমান লোডশেডিং এবং ভোলায় পুলিশের গুলিতে সহযোগী সংগঠনের দুই নেতাকে হত্যার বিরুদ্ধে দলের প্রতিবাদ করাও তাদের কর্মসূচির উদ্দেশ্য।
আরও পড়ুন: আর কান্না নয়, জেগে উঠুন: কর্মীদের উদ্দেশে ফখরুল
ফখরুল বলেন, কর্মসূচির অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার দুপুর ২টায় নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ করবে দলটি।
এছাড়া, শুক্রবার দলের সকল মহানগর ও জেলা ইউনিট সারাদেশে প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করবে বলেও জানান তিনি।
বিএনপি নেতা বলেন, বর্তমান শাসকগোষ্ঠীর পতন নিশ্চিত করতে তাদের দল আগামী দিনে আরও বৃহত্তর কর্মসূচি নিয়ে আসবে।
ফখরুল রাজধানীর শাহবাগে জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে রবিবার কয়েকটি বামপন্থী ছাত্র সংগঠনের ওপর পুলিশের হামলার জন্য সরকারের তীব্র নিন্দা করেন।
তিনি বলেন, জনগণের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ায় ক্ষমতায় টিকে থাকতে আওয়ামী লীগের কাছে এখন দমনমূলক কর্মকাণ্ড ও হত্যার বিকল্প নেই। ‘কিন্তু তাদের দিন গণনা শুরু হয়ে গেছে। তুমুল আন্দোলনের মাধ্যমে তাদের ক্ষমতাচ্যুত করা হবে।’
উল্লেখ্য, সরকার শুক্রবার রাতে ডিজেল, অকটেন ও পেট্রোলের দাম যথাক্রমে ৪২.৫ শতাংশ, ৫১.৭ শতাংশ এবং ৫১ শতাংশ বাড়িয়েছে। বর্তমানে প্রতি লিটার ডিজেল ১১৪ টাকা, অকটেন ১৩৫ টাকা ও পেট্রোল ১৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
আরও পড়ুন: আওয়ামী লীগকে আর ক্ষমতায় থাকতে দেয়া যাবে না: ফখরুল
সরকারের জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি কাটা ঘায়ে নুনের ছিটা: বিএনপি
আওয়ামী লীগকে আর ক্ষমতায় থাকতে দেয়া যাবে না: ফখরুল
জ্বালানি তেলের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি জনগণকে হতাশায় ফেলেছে উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর রবিবার বলেছেন, আওয়ামী লীগ সরকারকে আর ক্ষমতায় আঁকড়ে থাকতে দেয়া যাবে না।
তিনি বলেন, ‘এই সরকার আমাদের রাজনীতি, অর্থনীতি ও আমাদের সম্ভাবনাকে ধ্বংস করেছে। তাই তাদের আর ক্ষমতায় থাকতে দেয়া যাবে না।’
গত ৩১ জুলাই পুলিশের গুলিতে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের ভোলা জেলা শাখার সভাপতি নূরে আলম ও স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবকদল নেতা আবুর রহিম নিহত হওয়ার প্রতিবাদে রবিবার বিএনপির নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে জাতীয়তাবাদী কৃষকদল আয়োজিত সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
বক্তব্যে বিএনপির এই নেতা বলেন, সরকার শুক্রবার রাতে হঠাৎ করে জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধি করে দেশে বিপর্যয় ডেকে এনেছে। কারণ এতে সব পণ্যের দাম, সার ও অন্যান্য কৃষি উপকরণ ও পরিবহন খরচ বেড়ে যাবে।
তিনি বলেন, ‘এটি আমাদের অর্থনীতিতে খুব নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে এবং আমাদের অর্থনৈতিক অবস্থা আরও খারাপ হবে।’
ফখরুল বলেন, জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির পেছনে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) লোকসান হচ্ছে বলে সরকার যুক্তি দেখিয়েছে।
আরও পড়ুন: লোডশেডিংয়ের পেছনে সরকারের ‘মেগা’ দুর্নীতি, লুটপাট: বিএনপি
ফখরুল বলেন, ‘কেন লোকসানে যাবে? বিপিসি বিগত বছরগুলোতে প্রায় ৩৯ হাজার টাকা বিপুল মুনাফা করেছিল। সে সময় আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম কম ছিল, কিন্তু আপনি তা কমালেন না। এমনকি, এখন আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানির দাম কমতে শুরু করেছে।’
এই বিএনপি নেতা বলেন, অন্যান্য অনেক দেশের তুলনায় বাংলাদেশে জ্বালানির দাম তুলনামূলকভাবে কম বলে দেয়া তথ্যমন্ত্রীর দেয়া বক্তব্যের নিন্দা করে তিনি বলেন, ক্ষমতাসীন দলের নেতারা জনগণকে বিভ্রান্ত করতে ভুল তথ্য ও পরিসংখ্যান দেন। ‘তাদের প্রতিটি তথ্যই ভুল। তাই, আমরা জনগণকে মিথ্যা তথ্যে বিভ্রান্ত না হওয়ার আহ্বান জানাই।’
তিনি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রে তেলের দাম ছিল ১৪ ডলার, কিন্তু আন্তর্জাতিক বাজারে দাম কমে যাওয়ায় তা এখন তিন ডলারে নেমে এসেছে। এর মানে আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম কমলে, অন্যান্য দেশগুলো কমিয়ে দেয়। কিন্তু আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম কমলে আমাদের দেশে তা জনগণের টাকা লুটপাটের জন্য আরও বেড়ে যায়।’
তিনি বলেন, জ্বালানির দাম; বিশেষ করে ডিজেলের দাম নতুন করে বৃদ্ধিতে কৃষক, সাধারণ মানুষ ও মোটরসাইকেল চালকদের মারাত্মক দুর্ভোগে ফেলেছে। ‘কিন্তু সরকার এটা নিয়ে কম চিন্তিত। কারণ দেশ চালাতে জনগণ নয়; পুলিশ, র্যাব, বিজিবি ও অন্যান্য বাহিনী দরকার। এটা আর চলবে না। দেশের মানুষ আর এই শাসনকে এভাবে দেশ চালাতে দেবে না।
ফখরুল অভিযোগ করে বলেন, পুলিশ, র্যাব ও বিজিবিসহ রাষ্ট্রযন্ত্রকে বলপ্রয়োগ করে আওয়ামী লীগ ১৫ বছর ধরে অবৈধভাবে ক্ষমতায় রয়েছে।
তিনি বলেন, ‘আপনি ক্ষমতায় থাকার জন্য ইতোমধ্যে অনেক মানুষকে হত্যা করেছেন এবং অনেককে গুম করেছেন। তারই ধারাবাহিকতায় আপনারা আমাদের নূরে আলম ও আবদুর রহিমকে হত্যা করেছেন।’
৩১ মার্চ বিএনপির সমাবেশে ভোলা সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি তদন্ত) আরমান হোসেন গুলি চালালে ঘটনাস্থলেই স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা আবদুর রহিম নিহত এবং ছাত্রদল নেতা নূরে আলম গুরুতর আহত হন বলে অভিযোগ করেন এই বিএনপি নেতা। পরে রাজধানীর একটি হাসপাতালে তিনি মারা যান।
ফখরুল বলেন,‘আমরা চাই সরকার অবিলম্বে এই পুলিশ কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার করুক এবং ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্তের মাধ্যমে তার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করুক।’
আরও পড়ুন: আর কান্না নয়, জেগে উঠুন: কর্মীদের উদ্দেশে ফখরুল
ষড়যন্ত্রকারীদের নাম প্রকাশ্যে আনুন: প্রধানমন্ত্রীর প্রতি ফখরুল
সরকারের জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি কাটা ঘায়ে নুনের ছিটা: বিএনপি
সরকারের জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির সিদ্ধান্তের সমালোচনা করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, সরকারের এই সিদ্ধান্তের কারণে সমস্ত নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য আরও বাড়লে সাধারণ মানুষের জীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠবে।
তিনি আরও বলেন, ‘গতরাতে (শুক্রবার রাত) জ্বালানি তেলের মূল্য একধাপে প্রায় ৫০ শতাংশ বৃদ্ধি করা হয়েছে। যা কাটা ঘায়ে নুনের ছিটা ছাড়া কিছুই নয়।’
শনিবার নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় অফিসের সামনে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের আয়োজিত সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। সেখানে গত ৩১ জুলাই পুলিশের গুলিতে ভোলা জেলা শাখার ছাত্রদল সভাপতি নূরে আলম ও স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা আব্দুর রহিম নিহত হওয়ার ঘটনায় প্রতিবাদ জানানো হয়।
শনিবার সড়কে গণপরিবহনের কমতির বিষয়টি উল্লেখ করে ফখরুল বলেন, জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধিতে দেশের অর্থনীতিতে ভয়াবহ প্রভাব পড়বে এবং সাধারণ মানুষ ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, ‘কারণ যাতায়াতের ভাড়া বাড়বে; এছাড়া চাল, ডাল, লবণ ও ভোজ্য তেলসহ সকল প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বাড়বে।’
তিনি আরও বলেন, ‘পুরো দেশে এর প্রভাব পড়বে।’
বিএনপির এই নেতা অভিযোগ করে বলেন, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ সম্পর্কে জনগণকে সরকার ভুল তথ্য দিয়েছে। কিন্তু রিজার্ভের পরিমাণ কমে যাওয়ায় তারা (সরকার) আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) কাছে ৪৫০ কোটি মার্কিন ডলার ঋণ চেয়েছে।
তিনি বলেন, ঋণ মঞ্জুর করার জন্য আইএমএফ কঠিন শর্ত জুড়ে দিয়েছে। যেখানে বিভিন্ন পণ্য ও খাতে সরকারের ভর্তুকি উঠিয়ে নেয়ার কথাও আছে। তাই সরকার এখন এসব করছে (লোন পাওয়ার জন্য)।
এই বিএনপি নেতা আরও বলেন, জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী গত শুক্রবার জ্বালানি তেলের কিছুটা মূল্যবৃদ্ধির ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। কিন্তু শুক্রবার রাতে তা অসহনীয় মাত্রায় বাড়ানো হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, সরকার প্রতিনিয়ত জ্বালানি তেল, গ্যাস ও সয়াবিন তেলের দাম বাড়িয়ে দেশের মানুষকে মারাত্মক ভোগান্তিতে ফেলেছে। কাঁচামরিচের দাম এখন ৩০০ টাকা। এধরনের নিপীড়নে সাধারণ মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে।
সরকার ‘অতিকায় দানব’ এ পরিণত হচ্ছে বলে উল্লেখ করে ফখরুল বলেন, এই অত্যাচারের হাত থেকে দেশকে রক্ষা করা দেশপ্রেমিকদের এখন একমাত্র দায়িত্ব।
আরও পড়ুন: আর কান্না নয়, জেগে উঠুন: কর্মীদের উদ্দেশে ফখরুল
লোডশেডিংয়ের পেছনে সরকারের ‘মেগা’ দুর্নীতি, লুটপাট: বিএনপি
ষড়যন্ত্রকারীদের নাম প্রকাশ্যে আনুন: প্রধানমন্ত্রীর প্রতি ফখরুল
সরকারবিরোধী আন্দোলন কোনো চক্রান্ত হতে পারে না উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রকারীদের নাম প্রকাশের আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি বলেছেন, ‘প্রধানমন্ত্রী বুধবার বলেছেন যে তাকে ক্ষমতাচ্যুত করার জন্য একটি নতুন চক্রান্ত শুরু হয়েছে এবং তিনি ষড়যন্ত্রকারীদের চেনেন। আমি তাকে অনুরোধ করতে চাই... আপনি স্পষ্টভাবে তাদের নাম প্রকাশ করুন দয়া করে। জাতি জানতে চায় তারা কারা।’
বৃহস্পতিবার এক আলোচনা অনুষ্ঠানে মির্জা ফখরুল এসব কথা বলেন।
সরকার পতনের যে কোনো আন্দোলন কোনো ষড়যন্ত্র নয় বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘আমরা সুস্পষ্টভাবে এবং প্রকাশ্যে ঘোষণা করতে চাই যে আমরা গণআন্দোলনের মাধ্যমে এই ফ্যাসিবাদী ও স্বৈরাচারী শাসনকে সরিয়ে একটি গণমুখী সরকার প্রতিষ্ঠা করতে চাই। এখানে কোনো চক্রান্তের প্রশ্নই আসে না। আওয়ামী লীগই ২০০৮ সালে ষড়যন্ত্র করে ক্ষমতায় আসে।’
এই বিএনপি নেতা বলেন, একটি স্বার্থান্বেষী মহল পরিকল্পিতভাবে ২০০৮ সালে বিএনপিকে হারানোর ষড়যন্ত্র করেছিল এবং আওয়ামী লীগের বিজয় নিশ্চিত করতে ভোটের আগের রাতে ব্যালট বাক্স ভর্তি করেছিল।
তিনি বলেন, ‘২০১৮ সালের নির্বাচন একইভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছিল... এমনকি, জাতীয় পার্টির মহাসচিব বলেছিলেন যে রাতে ভোট হয়েছে এবং তারা নিজেরাই করেছে।’
ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) বিএনপিপন্থী অংশ জাতীয় প্রেসক্লাবে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে এ কর্মসূচির আয়োজন করে।
এর আগে বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, দেশ আরেকটি জাতীয় নির্বাচনের দিকে এগোচ্ছে বলে তাকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেয়ার নতুন চক্রান্ত শুরু হয়েছে।
‘২০১৪ ও ২০১৮ সালের জাতীয় নির্বাচনের আগে ষড়যন্ত্র করা হয়েছিল। তারা আবারও আমাকে ক্ষমতা থেকে সরানোর ষড়যন্ত্র করছে। আমি তাদের [ষড়যন্ত্রকারীদের] সবাইকে চিনি,’ তিনি বলেছিলেন।
ফখরুল অভিযোগ করেন, আওয়ামী লীগ অনেক গণমাধ্যম বন্ধ করে দিয়েছে, অনেক সাংবাদিককে দমন ও হত্যা করেছে, অনেককে বিভিন্ন মামলায় ফাঁসিয়েছে এবং মিডিয়াকে আটকানোর জন্য ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন প্রণয়ন করেছে। ‘আওয়ামী লীগের জন্য এটা স্বাভাবিক কারণ এটা তাদের মৌলিক চরিত্র। আওয়ামী লীগ গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না। মানুষকে ধোঁকা দেয়াও দলের চরিত্র। এই দল যা বলে তার ঠিক উল্টোটা করে।’
৬৪ জেলার মধ্যে ৪০টিতে পুলিশ সুপার (এসপি) বদল প্রসঙ্গে তিনি বলেন, পুলিশ প্রশাসনে নতুন করে রদবদলের মাধ্যমে যারা প্রকৃত আওয়ামী লীগের সদস্য তাদের এসপি করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: আর কান্না নয়, জেগে উঠুন: কর্মীদের উদ্দেশে ফখরুল
সরকারবিরোধী আন্দোলনে ঐক্যমত্যে বিএনপি-গণফোরাম
আর কান্না নয়, জেগে উঠুন: কর্মীদের উদ্দেশে ফখরুল
ভোলায় পুলিশের গুলিতে নিহত নূরে আলম ও আবদুর রহিম হত্যার প্রতিশোধ নেয়ার শপথ নিয়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দলের সকলকে চোখের জল ফেলা বন্ধ করে আওয়ামী লীগের ফ্যাসিবাদী শাসন থেকে জাতিকে বাঁচাতে আন্দোলনে নামার আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি বলেন,‘আর কান্নাকাটি নয়, আমাদের এখনই কান্না ভুলে জেগে উঠতে হবে, কারণ এই ভয়ঙ্কর স্বৈরাচারী ফ্যাসিবাদী সরকারের নিপীড়ন থেকে জাতিকে বাঁচাতে হবে।’
বৃহস্পতিবার রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ভোলা জেলা শাখা জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সভাপতি নূরে আলমের নামাজে জানাজার আগে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে ফখরুল এ মন্তব্য করেন।
রবিবার ভোলায় পুলিশ ও বিএনপি কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষের সময় গুলিবিদ্ধ নূরে আলম বুধবার রাজধানীর একটি হাসপাতালে মারা যান, তার মৃত্যুতে এ ঘটনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে দুজন হয়েছে। এর আগে রবিবার ভোলায় বিএনপির সমাবেশে পুলিশের গুলিতে স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা আবদুর রহিম নিহত হন।
ফখরুল বলেন, তাদের দলের নেতাকর্মীদের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার, খালেদা জিয়াকে কারাগার থেকে মুক্ত করতে এবং তাদের (বিএনপির নেতাকর্মীদের) বিরুদ্ধে দায়ের করা ৩৫ লাখ মামলা থেকে মুক্তির জন্য শোককে শক্তিতে পরিণত করে সংগ্রাম চালিয়ে যেতে হবে।
আরও পড়ুন: সরকারবিরোধী আন্দোলনে ঐক্যমত্যে বিএনপি-গণফোরাম
তিনি বলেন, তাদের দল বর্তমান সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করতে সমগ্র জাতিকে সংগঠিত ও ঐক্যবদ্ধ করে শান্তিপূর্ণভাবে শক্তিশালী আন্দোলন করবে। ‘আমরা আমাদের ছেলেদের, আমাদের ভাই নূরে আলম ও আবদুর রহিমকে হত্যার প্রতিশোধ নেব গণআন্দোলনের মাধ্যমে।’
আবেগাপ্লুত কণ্ঠে বিএনপি নেতা বলেন, বাবার কাঁধে ছেলের লাশ বহন করার চেয়ে বড় কষ্ট আর কিছু নেই।
তিনি বলেন, আমরা আমাদের সামনে আমাদের ছেলে ভোলা ছাত্রদলের সভাপতি নূরে আলমের লাশ দেখছি। যিনি এই ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগ সরকারের পুলিশ বাহিনীর গুলিতে নিহত হয়েছেন। আমাদের ভোলা জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা আব্দুর রহিমকেও গুলি করে হত্যা করা হয়েছে এবং আরও ১৯ জন ঢাকা ও বরিশালের হাসপাতালে বাঁচার জন্য লড়াই করছে।’
ফখরুল বলেন, বর্তমান সরকারের হাতে বিএনপি নেতাকর্মীদের হত্যা নতুন কিছু নয়। ‘আওয়ামী লীগ সরকার গত ১৫ বছরে আমাদের এক হাজারেরও বেশি নেতা-কর্মীকে হত্যা করেছে এবং প্রায় ৬০০ জনকে গুম করেছে স্বৈরাচারী শাসনকে মজবুত করার জন্য।’
সকাল ১১টায় নিহত ছাত্রদলের সভাপতি জানাজা হওয়ার কথা থাকায় সকাল থেকে বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের শত শত নেতাকর্মীদের বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনের সড়কে অবস্থান নিতে থাকে। সেসময় ব্যস্ত সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
ময়নাতদন্ত শেষে দুপুর ১২টা ৪৫ মিনিটে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গ থেকে নূরে আলমের মরদেহ নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আনা হয়। সেখানে মরদেহ আসার পর অনেক ছাত্রদল নেতাকর্মীকে কাঁদতে দেখা যায়।
ফখরুল দলের সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে নিয়ে নূরে আলমের কফিনে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে এবং দলীয় পতাকা দিয়ে শ্রদ্ধা জানান।
পরে বিএনপি কার্যালয়ের সামনে তার নামাজের জানাজা শেষে লাশ দাফনের জন্য ভোলায় পাঠানো হয়।
বিদ্যুৎ খাতে চলমান লোডশেডিং ও অব্যবস্থাপনার প্রতিবাদে বিএনপি’র দেশব্যাপী বিক্ষোভ কর্মসূচির অংশ হিসেবে গত রবিবার ভোলায় তাদের জেলা দলীয় কার্যালয়ের সামনে জড়ো হন দলটির নেতাকর্মীরা।
একপর্যায়ে সকাল সাড়ে ১১টার দিকে কালীনাথ রায়ের বাজারে বিক্ষোভ করতে গেলে পুলিশ তাদের বাধা দিলে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়।
পরে পুলিশ গুলি ছুড়ে এবং টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা আব্দুর রহিম নিহত এবং নূরে আলমসহ দল ও এর সহযোগী সংগঠনের আরও কয়েকজন নেতা-কর্মী আহত হয়।
তিন দিনের শোক
নূরে আলম ও আবদুর রহিমের স্মরণে শুক্রবার থেকে তিন দিনের শোক ঘোষণা করেছেন মির্জা ফখরুল।
তিনি বলেন, শোক পালনকালে সারাদেশে বিএনপির সকল কার্যালয়ে কালো পতাকা উত্তোলন ও দলীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হবে। নিহত দুই নেতার বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করে দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হবে।
এছাড়া তাদের হত্যার প্রতিবাদে আগামী ৬, ৭ ও ৮ আগস্ট যথাক্রমে ছাত্রদল,কৃষকদল ও যুবদল সমাবেশ করবে বলেও জানান তিনি।
আরও পড়ুন: লোডশেডিংয়ের পেছনে সরকারের ‘মেগা’ দুর্নীতি, লুটপাট: বিএনপি
সড়কে নৈরাজ্যের জন্য সরকারের সমালোচনা বিএনপির
আ.লীগ নেতারা পেছনের দরজা দিয়ে পালিয়ে যাওয়ার সুযোগ পাবে না: ফখরুল
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ নেতারা পেছনের দরজা দিয়ে পালিয়ে যাওয়ারও সুযোগ পাবে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেন, ‘তারা (সরকার) বিএনপি নেতাদের হাতে হারিকেন ধরিয়ে দেয়ার কথা বলছে। কিন্তু সময় এসেছে তাদের হাতে হারিকেন ধরিয়ে দেয়ার। এমনকি আপনারা হারিকেন ধরার এবং পেছনের দরজা দিয়ে পালিয়ে যাওয়ারও সময় পাবেন না।’
সমাবেশে বক্তব্য দেয়ার সময় বিএনপির এই নেতা মনে করিয়ে দেন, শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট মাহিন্দা রাজাপাকসে পালিয়ে যাওয়ার সুযোগ পাননি, অন্যদিকে প্রধানমন্ত্রী গোতাবায়া পালাতে যেয়ে মালদ্বীপে আছেন।
তিনি বলেন, ‘স্বৈরশাসকরা পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলেও সাধারণ মানুষ পালাতে দেয় না। আপনাদের সেটা মাথায় রাখা উচিত।’
ভোলায় পুলিশের গুলিতে নিহত স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা আব্দুর রহিম হত্যার প্রতিবাদে মঙ্গলবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বিএনপির ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ শাখা এই বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করেন।
ফাখরুল অভিযোগ করেন, আওয়ামী লীগ সরকার গত ১৫ বছরে দমন ও অপশাসনে দেশটিকে শ্মশান বানিয়েছে। তিনি এর সাথে যুক্ত করেন যে, আপনি (প্রধানমন্ত্রী) বাংলাদেশকে ফ্যাসিস্ট এবং ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করেছেন।
আব্দুর রহিম হত্যার প্রতিবাদে দলটির সকল নেতা-কর্মী বৃহস্পতিবার থেকে পর্যায়ক্রমে বিক্ষোভ সমাবেশ করবেন বলে ফখরুল জানিয়েছেন। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপার্সন তারেক রহমানের নেতৃত্বে পরবর্তী কর্মসূচি দেয়া হবে।
পড়ুন: জিয়াউর রহমান ১৫ আগস্ট হত্যাকাণ্ডের অন্যতম প্রধান কুশীলব: তথ্যমন্ত্রী
বিএনপির নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলনে সরকারের কোনো বাধা থাকবে না: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
সড়কে নৈরাজ্যের জন্য সরকারের সমালোচনা বিএনপির
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অভিযোগ করে বলেছেন, সরকার দেশের পুরো সড়ক ব্যবস্থাপনাকে নৈরাজ্যের দিকে ঠেলে দিয়েছে।
তিনি বলেন, ‘আমাদের সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের দামী স্যুট পরে সুন্দরভাবে বলেছেন, আওয়ামী লীগ যা করছে, তা অতীতে কখনো হয়নি। কিন্তু আপনি তো পুরো সড়ক ব্যবস্থাপনাকে নৈরাজ্যের দিকে ঠেলে দিয়েছেন।’
শনিবার চলমান লোডশেডিং, জ্বালানি খাতে অব্যবস্থাপনা এবং জ্বালানি ও গ্যাসের দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ঢাকা দক্ষিণ মহানগর বিএনপি আয়োজিত এক সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
এই বিএনপি নেতা বলেন, সড়কে বিশৃঙ্খলার কারণে সড়ক দুর্ঘটনায় শত শত মানুষ প্রাণ হারাচ্ছে। ‘আমরা দেখেছি যে গতকাল মাইক্রোবাসে করে ১১ জন শিক্ষার্থী যাচ্ছিল, ট্রেন সবাইকে হত্যা করেছে। এমন অসংখ্য নজির আমরা প্রতিদিন দেখতে পাচ্ছি।’
সরকার দেশের জনগণ ও মুক্তিযোদ্ধাদের গণতান্ত্রিক ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশের স্বপ্নকে নস্যাৎ করছে বলে এসময় অভিযোগ করেন ফখরুল।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, বর্তমান স্বৈরাচারী সরকার চুরি, ডাকাতি ও লোভের কারণে গণতন্ত্র, বিচার বিভাগ ও ব্যাংকিং খাতকে ধ্বংস করেছে।
বিএনপির এই জ্যেষ্ঠ নেতা বলেন,‘বাংলা সাহিত্যে একটি কথা আছে যে রাজার দোষে রাজ্য নষ্ট হয়, কিন্তু জনগণ কষ্ট পায়।আমরা যে দুর্ভোগের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি তার জন্য শেখ হাসিনার সরকার দায়ী।’
তিনি বিএনপির নেতা-কর্মীদের এক দফা দাবিতে ‘দানব’ ‘ফ্যাসিবাদী’ সরকারকে উৎখাতের শপথ গ্রহণের আহ্বান জানান।
ফখরুল বলেন, একটি গণতান্ত্রিক দল হিসেবে বর্তমান স্বৈরাচারী সরকারের দুঃশাসনের হাত থেকে দেশ ও দেশের জনগণকে রক্ষা করার দায়িত্ব বিএনপির। জনগণের আন্দোলনে জয়ী হয়ে সরকার গঠন করতে পারলে অবশ্যই সকল সমস্যার সমাধান করে এদেশকে সত্যিকারের জনগণের রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা করব।
আরও পড়ুন: মাথাপিছু আয় বেশি দেখানোর জন্য সরকার কম জনসংখ্যা দেখাচ্ছে: ফখরুল
আ.লীগের ‘মেগা দুর্নীতি’ দেশকে অন্ধকার খাদের প্রান্তে পৌঁছে দিয়েছে: ফখরুল
মাথাপিছু আয় বেশি দেখানোর জন্য সরকার কম জনসংখ্যা দেখাচ্ছে: ফখরুল
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বৃহস্পতিবার অভিযোগ করেছেন, শুধু মাথাপিছু আয় বেশি দেখানোর জন্য সরকার সদ্য প্রকাশিত '৬ষ্ঠ জনশুমারি ও গৃহগণনা ২০২২'-এ দেশে জনসংখ্যা কম দেখিয়েছে।
তিনি বলেছেন, ‘দেশের মানুষের মাথাপিছু আয় বেশি দেখানোর জন্য (প্রকৃত চিত্রের চেয়ে) জনসংখ্যা কম দেখানো হয়েছে। আমরা সাধারণত আমাদের দেশে ১৮ কোটি লোক গণনা করি। কিন্তু জনসংখ্যা ১৬ কোটি গণনা করা হলে মাথাপিছু আয় আরও অনেক বেশি দেখানো সহজ হবে।’
দলের চেয়ারপার্সনের গুলশান কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে শুমারির প্রাথমিক ফলাফলের প্রতিক্রিয়ায় বিএনপি মহাসচিব এ মন্তব্য করেন।
তিনি আরও বলেন, পরিকল্পনামন্ত্রী নিজেই স্বীকার করেছেন আদমশুমারির হিসাব সঠিক না। বাড়ি বাড়ি গিয়ে তথ্য সঠিকভাবে সংগ্রহ করা হয়নি।
এর আগে বুধবার ষষ্ঠ আদমশুমারির অস্থায়ী তথ্য প্রকাশ করে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস)।
জনশুমারি ও গৃহগণনার প্রাথমিক প্রতিবেদন অনুসারে, দেশের মোট জনসংখ্যা হল ১৬ কোটি ৫১ লাখ ৫৮ হাজার ৬১৬, আগের ১.৩৭ শতাংশের জায়গায় ১.২২ শতাংশ বৃদ্ধির হার।
ফখরুল বলেন, ‘প্রতিটি বাড়ি থেকে সঠিক তথ্য সংগ্রহ করে জাতীয় জনগণনা সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করতে হবে।
কিন্তু সরকার ভুল তথ্য দিয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত ও প্রতারণা করছে। পুরো সরকারই প্রতারণার ওপর প্রতিষ্ঠিত। এটা সম্পূর্ণ ভুয়া সরকার।’
এক প্রশ্নের জবাবে বিএনপি নেতা বলেন, সরকার গণতন্ত্র ও নির্বাচন ব্যবস্থাকে ধ্বংস করায় দেশ দীর্ঘদিন ধরে রাজনৈতিক সংকটের সম্মুখীন। ‘নির্বাচন গণতন্ত্রের প্রধান পথ বা প্রবেশদ্বার। সারা দেশের মানুষ এখন জোর গলায় বলছে, আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকলে এদেশে সুষ্ঠু নির্বাচন হবে না।
ফখরুল বলেন, ‘এমনকি নির্বাচন কমিশন বলতে বাধ্য হচ্ছে যে, বড় দলগুলোর অংশগ্রহণ ছাড়া নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হবে না। এমন পরিস্থিতিতে, সরকার জনগণের চাহিদাকে বাইপাস করে বিষয়টিকে অন্য দিকে মোড় নেয়ার কৌশল গ্রহণ শুরু করেছে।’
আরও পড়ুন: ২০২১ সালে আয়ের চেয়ে এক কোটি ১০ লাখ টাকা বেশি খরচ করেছে বিএনপি
বিদ্যুৎ বিভ্রাট: ৩ দিনের প্রতিবাদ কর্মসূচি ঘোষণা বিএনপির
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের জন্য পদত্যাগ করলে আপনাদের সঙ্গে চা খাব: প্রধানমন্ত্রীকে ফখরুল
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আগামী নির্বাচন তদারকিতে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি মেনে নিলে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তার কার্যালয়ে চা খেতে তাদের কোনো সমস্যা নেই।
শনিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রস্তাবের প্রতিক্রিয়া জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আপনি প্রথমে বলেন যে আপনি তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা মেনে নিয়েছেন। আপনি এই ঘোষণা দিন, তারপর প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে গিয়ে তার সঙ্গে চা খেতে আমাদের কোনও সমস্যা হবে না।’
রবিবার রাজধানীর প্রেসক্লাবে ইঞ্জিনিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ আয়োজিত এক আলোচনা সভায় ফখরুল এসব কথা বলেন।
বিএনপির এই নেতা বলেন, প্রতিনিধিত্বশীল সংসদ ও জনগণের কাছে দায়বদ্ধ সরকার গঠনই দেশের বর্তমান রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকটের একমাত্র সমাধান।
তিনি আরও বলেন, সরকার জনগণের কাছে দায়বদ্ধ না হওয়ায় দেশ এখন ব্যাপক দুর্নীতির কারণে সৃষ্ট অর্থনৈতিক সংকটের মুখোমুখি।
আরও পড়ুন: আ.লীগের ‘মেগা দুর্নীতি’ দেশকে অন্ধকার খাদের প্রান্তে পৌঁছে দিয়েছে: ফখরুল
এই বিএনপি নেতা প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে বলেন, ‘সুতরাং, আমরা বলতে চাই, চা খেতে দেয়ার মতো হাস্যকর মন্তব্য করার কোনো মানে হয় না। আমরা একটি কথা বলতে চাই যে আপনি একটি নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করে পদত্যাগ করুন এবং একটি নতুন নির্বাচন কমিশনের অধীনে একটি গ্রহণযোগ্য ও অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচনের পথ প্রশস্ত করুন এবং এভাবে বাংলাদেশকে ফিরিয়ে আনুন।’
এর আগে শনিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছিলেন, বিএনপি নেতারা তার কার্যালয় (প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়) ঘেরাও করতে এলে তিনি চা খাওয়াবেন।
আওয়ামী লীগের ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ শাখার এক সভায় প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তারা যা বলতে চায় আমি তাদের কথা শুনব। আমি গণতন্ত্রে বিশ্বাস করি।’
ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের পতন নিশ্চিত করতে ঐক্য গড়তে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা চলছে।
তিনি বলেন, ‘ভয়ঙ্কর শাসন থেকে মুক্তি পেতে আমাদের অবশ্যই ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। আমি দেশবাসীকে রাজপথে আন্দোলনের মাধ্যমে বর্তমান সরকারকে পরাজিত করার জন্য ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি এবং এভাবেই দেশের মুক্তিযুদ্ধের স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করতে চাই।’
আরও পড়ুন: সিইসির প্রশংসা করলেও বর্তমান ইসির সঙ্গে সংলাপে যোগ দেবে না বিএনপি
আওয়ামী লীগের অধীনে কোনো ইসিই বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন করতে পারবে না: বিএনপি