মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
যুক্তরাষ্ট্র থেকে খালি হাতে দেশে ফিরেছেন প্রধানমন্ত্রী: ফখরুল
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যুক্তরাষ্ট্র থেকে খালি হাতে দেশে ফিরেছেন বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেন, 'শেখ হাসিনা আমেরিকা থেকে খালি হাতে ফিরেছেন। তিনি ভিসা নীতি বাতিল এবং নিষেধাজ্ঞা থেকে মুক্তি পেতে অনেক প্রচেষ্টা করেছিলেন। তারা (যুক্তরাষ্ট্র) তাতে মনোযোগ দেয়নি।’
কুমিল্লা থেকে চট্টগ্রাম অভিমুখে বিএনপির রোডমার্চের উদ্বোধন করে মির্জা ফখরুল আরও বলেন, বাংলাদেশের মানুষও প্রধানমন্ত্রীর কথা শোনে না।
এ অবস্থায় আগামী জাতীয় নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠানের পথ সুগম করতে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করে পদত্যাগের জন্য প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
বিএনপি নেতা অভিযোগ করেন, ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য জোর করে আরেকটি একতরফা নির্বাচন করার চেষ্টা করছে সরকার, কিন্তু জনগণ তা হতে দেবে না। ‘আমরা এবার আমাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে চাই। আপনাদের আর ভোট চুরি করতে দেওয়া হবে না।’
সরকারের পদত্যাগ এবং নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে আগামী নির্বাচনসহ এক দফা দাবিতে বিএনপি ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা এই রোডমার্চ শুরু করেন।
বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার কালাকচুয়া খন্দকার ফুড গ্যালারি মাঠে এ রোডমার্চের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন ফখরুল। রোড মার্চটি ফেনী ও মিরসরাই হয়ে চট্টগ্রামে গিয়ে শেষ হবে।
আরও পড়ুন: ‘তলে তলে অনেক কিছু হচ্ছে, আমিতো ভুল বলিনি’
অনুষ্ঠানে তিনি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, স্বেচ্ছায় ক্ষমতা না ছাড়লে চলমান সড়ক আন্দোলনের মাধ্যমে জনগণ বর্তমান সরকারের পতন নিশ্চিত করবে।
জনগণ জানে কীভাবে একটি স্বৈরাচারী ও দখলদার সরকারকে উৎখাত করতে হয়। এ কারণেই মানুষ এখন রাস্তায় নেমেছে।
তিনি বিরোধী দলীয় নেতা-কর্মীদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি নিয়ে রাজপথ দখলের জন্য প্রস্তুত হওয়ার আহ্বান জানান।
ফখরুল বলেন, ‘আমরা যদি ভবিষ্যতে বাঁচতে চাই এবং দেশকে রক্ষা করতে চাই, তাহলে বর্তমান সরকারকে উৎখাত করে গণমুখী সরকার প্রতিষ্ঠা করা ছাড়া আমাদের আর কোনো উপায় নেই। আমাদের আর সময় ব্যয় না করে জেগে উঠতে হবে। আমাদের অবশ্যই রাস্তা দখল করতে হবে। আসুন সরকার পতনের আন্দোলন আরও জোরদার করি।’
তিনি অভিযোগ করেন, সরকার এখন রাজনৈতিক প্রতিহিংসার বশবর্তী হয়ে গুরুতর অসুস্থ বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার অনুমতি দিচ্ছে না।
আরও পড়ুন: যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ‘গোপন’ সম্পর্ক নিয়ে কাদেরের দাবি উড়িয়ে দিল বিএনপি
অবিলম্বে খালেদাকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে যেতে দিতে সরকারের প্রতি আহ্বান বিএনপির
মার্কিন নিষেধাজ্ঞায় সরকারের মাথা খারাপ হয়ে গেছে: ফখরুল
মার্কিন নিষেধাজ্ঞায় সরকারের মাথা খারাপ হয়ে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
একটি আঞ্চলিক দৈনিকের একটি অংশের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞা নিয়ে সচিবালয়ে আলোচনা হচ্ছে, যারা সরকারের অবৈধ কাজে সহায়তা করেছে তারা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে। প্রসাশন উৎকণ্ঠা রয়েছে। বোঝা যাচ্ছে এ সরকারের পতন ঘণ্টা বেজে গেছে।’
খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে সোমবার (২৫ সেপ্টেম্বর) বিকালে রাজধানীর ধোলাইখালে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি আয়োজিত সমাবেশে মির্জা ফখরুল এসব কথা বলেন।
খালেদা জিয়া মৃত্যুর দ্বারপ্রান্তে উল্লেখ করে এই বিএনপি নেতা বলেন, চিকিৎসকরা তাকে জরুরি ভিত্তিতে বিদেশে নিয়ে যেতে বলেছেন।
তিনি বলেন, ‘তাই অবিলম্বে নেত্রীকে মুক্তি দিন, অন্যথায় সব দায়-দায়িত্ব সরকারকে নিতে হবে।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘শুধু মার্কিন নিষেধাজ্ঞা নয়, এদেশের মানুষ এখন নিষেধাজ্ঞা দিচ্ছে এই সরকারকে। এদেশের মানুষ পরিষ্কার ভাষায় একবাক্যে বলছে, এখন অনেক হয়েছে, অনেক অত্যাচার, নির্যাতন করেছে, নেতাদের কারাগারে আটক করেছে, আমরা আর সেটা হতে দেব না। এজন্য আমরা আন্দোলন করছি।’
তিনি বলেন, ‘এখনও সময় আছে, এই শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের কথা ভেবে নিয়ে আপনারা পদত্যাগ করুন, সংসদ বিলুপ্ত করুন, নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের কাছে ক্ষমতা দিয়ে নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করে নির্বাচন দিয়ে এই রাজনৈতিক সংকট দূর করুন। অন্যথায় সব দায়-দায়িত্ব আপনাদেরই নিতে হবে।’
আরও পড়ুন: ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে খালেদাকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর ব্যবস্থা নিন: ফখরুল
তিনি নেতাদের উদ্দেশে বলেন, ‘এ সরকার সহজভাবে কথা শুনবে না, তরঙ্গের ওপর তরঙ্গ সৃষ্টি করে আন্দোলনের মাধ্যমে তাদের ধাক্কা দিয়ে সরাতে হবে। তাই আন্দোলনের তরঙ্গ সৃষ্টি করতে হবে, শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে কাজ না হলে কঠোর আন্দোলনে যেতে হবে। সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে রাজপথে লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এখন বাংলাদেশের মানুষ জেগে উঠেছে। আপনারা যতই চেষ্টা করেন এই দেশের মানুষকে আর ঘরে ফেরাতে পারবেন না। ’
এতে বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, চেয়ারপার্সনের বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, স্বাবলম্বীবিষয়ক সম্পাদক শিরিন সুলতানা, যুবদলের সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু প্রমুখ।
এর আগে, সোমবার বেলা ১১টা থেকে বিপুল সংখ্যক নেতা-কর্মী স্লোগানে সমাবেশস্থলে জড়ো হতে থাকেন।
ধোলাইখাল মোড়ে সমাবেশ হওয়ার কথা থাকলেও তা রায় সাহেব বাজার, টিপু সুলতান রোড, লক্ষ্মীবাজার পর্যন্ত বিস্তৃত হয়।
প্রকৌশলী ইশরাক হোসেনের সার্বিক তত্ত্বাবধানে সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক আবদুস সালাম।
আরও পড়ুন: ‘মেগা দুর্নীতির’ মাধ্যমে কিছু মানুষ ধনী হয়েছেন: বিএনপি নেতা নজরুল
চিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়াকে অবিলম্বে বিদেশে পাঠান: ফখরুল
৪৮ ঘণ্টার মধ্যে খালেদাকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর ব্যবস্থা নিন: ফখরুল
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে সরকারকে আল্টিমেটাম দিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। অন্যথায় কিছু হলে সরকার দায়ী থাকবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
ফখরুল বলেন, ‘আমি তাকে দেখতে হাসপাতালে গিয়েছিলাম। তাকে কখনো কাঁদতে দেখিনি। তিনি এতটাই পাতলা হয়ে গেছেন যে তিনি ঠিকমতো কথা বলতে পারে না। চিকিৎসক বলেছেন আপনার যদি কিছু করার থাকে তবে করুন, তিনি ভালো নেই।’
রবিবার রাজধানীর নয়াপল্টনে খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবি এবং চিকিৎসার জন্য পাঠানোর দাবিতে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে আয়োজিত সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
আরও পড়ুন: তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া নির্বাচনের চেষ্টা করবেন না: মির্জা ফখরুল
খালেদা জিয়ার উন্নত চিকিৎসা নিশ্চিত করতে সরকারকে পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান বিএনপি নেতা। তিনি বলেন, তার কিছু হলে তা শুধু বিএনপির নয়, জনগণ, গণতন্ত্র ও দেশের জন্যও বড় ক্ষতি হবে।
যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নীতি নিয়ে বিএনপি নেতা বলেন, এটা দেশের জন্য সম্মানের নয়।
তিনি বলেন, খালেদা জিয়া এমন একজন নেত্রী গণতন্ত্রের জন্য, দেশের প্রয়োজনে রাজপথে নেমেছিলেন এবং এরশাদকে হটিয়ে গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে গণতন্ত্র ফিরিয়ে এনেছিলেন, তাকে পর্যাপ্ত চিকিৎসা ছাড়াই বন্দি করে রাখা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে ১৭৬ দিনের হরতাল পালন করেছে এবং খালেদা জিয়া গণতন্ত্রের স্বার্থে সংবিধান পরিবর্তন করে তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা চালু করেছেন।
আরও পড়ুন: খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করেছেন মির্জা ফখরুল
ফখরুল বলেন, দেশের মানুষ এখন বলছে সরকারের অধীনে অবাধ ও সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠানের কোনো সম্ভাবনা নেই এবং গণতন্ত্রপন্থী কোনো দলই সরকারের অধীনে নির্বাচনে অংশ নেবে না। এই অবস্থা চলতে থাকলে দেশের ভবিষ্যৎ ধ্বংস হয়ে যাবে।
সমাবেশে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আবদুল মঈন খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান খান, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী।
আরও পড়ুন: নির্বাচন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র-যুক্তরাজ্য-ভারতের কথায় মাথা ঘামানোর দরকার নেই: মির্জা ফখরুল
সরকার পদত্যাগ না করলে দেশে সংঘাতের আশঙ্কা করছেন ফখরুল
সরকার পদত্যাগ না করলে দেশে সংঘাত সৃষ্টি হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বৃহস্পতিবার (২১ সেপ্টেম্বর) গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব এ আশঙ্কা প্রকাশ করেন। বুধবার অনুষ্ঠিত দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকের সিদ্ধান্ত জানাতে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
তিনি বলেন, ‘দয়া করে পদত্যাগ করুন। একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য পদক্ষেপ নিন, যাতে বাংলাদেশের জনগণ তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করে সরকার নির্বাচন করতে পারে।’
আরও পড়ুন: সরকার পতনে ছোট-বড় সব দলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান ফখরুলের
মানবাধিকার সংগঠন অধিকারের সম্পাদক আদিলুর রহমান খান ও পরিচালক এ এম এম নাসির উদ্দিনের রায় নিয়ে জুডিশিয়াল ক্যাডার সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের দেওয়া বক্তব্যকে ‘অযৌক্তিক’ আখ্যা দিয়ে নিন্দা জানান ফখরুল।
তিনি আরও বলেন, ‘এই ধরনের বক্তব্য অপ্রত্যাশিত ও নিরপেক্ষতার নীতির পরিপন্থী। বিএনপির স্থায়ী কমিটি মনে করে যে বিচার ব্যবস্থার সব স্তরের বিচারকদের বিতর্কিত রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িত হওয়া থেকে বিরত থাকা উচিত।’
ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়।
তিনি বলেন, ‘এটা প্রমাণিত হয়েছে। আমরা অতীতে পরপর দুটি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছি এবং তাদের নেতৃত্বে সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন নিশ্চিত করা যাবে না, এতে কোনো সন্দেহ থাকা উচিত নয়, জনগণকে ভোটকেন্দ্রে অবাধে তাদের ভোট দিতে বাধা দিচ্ছে।’
আরও পড়ুন: গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের মাধ্যমে রোহিঙ্গা সংকটের সমাধান সম্ভব: ফখরুল
আসন্ন সংসদ নির্বাচনে ইউরোপীয় ইউনিয়নের নির্বাচনী পর্যবেক্ষক দল না পাঠানোর সিদ্ধান্ত প্রসঙ্গে বিএনপি নেতা বলেন, ‘ইইউ কয়েক সপ্তাহ আগে দেশের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের জন্য একটি দল পাঠিয়েছিল। ইইউ পর্যবেক্ষণ দল সমস্ত রাজনৈতিক দলের স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে বিশদভাবে আলোচনা করেছে।’
ফখরুল বলেন, ‘তাদের বার্তা দ্ব্যর্থহীন, দেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য অনুকূল পরিবেশ নেই, তাই এখানে পর্যবেক্ষক দল মোতায়েন করা সম্ভব নয়।’
তিনি জোর দিয়ে বলেন, গ্রেপ্তার, আইনি পদক্ষেপ, শারীরিক নির্যাতনসহ অসংখ্য উসকানির সম্মুখীন হওয়া সত্ত্বেও বিএনপি তাদের শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ চালিয়ে যাচ্ছে।
আরও পড়ুন: আওয়ামী লীগ এবার আর পার পাবে না: ফখরুল
মির্জা ফখরুলকে ঢাকায় ঢুকতে না দেওয়ার বিষয়ে ডিএসসিসি মেয়রের বক্তব্যের জবাবে তিনি বলেন, শেখ ফজলে নূর তাপসের কথায় যে মানসিকতার প্রতিফলন ঘটেছে তা উদ্বেগজনক।
গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস বুধবার ঘোষণা দিয়েছেন, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে ঢাকায় প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না।
বিচারব্যবস্থা সম্পূর্ণ সরকারের নিয়ন্ত্রণে: ফখরুল
বর্তমান বিচার ব্যবস্থা পুরোপুরি সরকারের নিয়ন্ত্রণে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেন, ‘আমরা শুধু এটুকু বলতে চাই, বাংলাদেশে কোনো গণতন্ত্র নেই। যে বিচার ব্যবস্থা আছে, তা সম্পূর্ণভাবে তাদের (সরকার) নিয়ন্ত্রণে চলে গেছে।’
বৃহস্পতিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) ঢাকার গুলশানের হোটেল লেকশোরে ইউনাইটেড লয়ার্স ফ্রন্ট (ইউএলএফ) আয়োজিত ‘বিচার বিভাগের বর্তমান অবস্থা: বাংলাদেশে বিরোধীদের দমনের হাতিয়ার’- শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ফখরুল এ মন্তব্য করেন।
দেশে একদলীয় শাসন চলছে অভিযোগ করে ফখরুল বলেন, কেউ কথা বলতে পারে না, পুলিশ কর্মকর্তারা রাজনীতিবিদদের মতো কথা বলেন, জজ সাহেবেরা শপথবদ্ধ রাজনীতির কথা বলেন।
তিনি প্রশ্ন করেন, ‘আমরা সাধারণ মানুষ কোথায় যাব, কার কাছে যাব? বিচার ব্যবস্থা সম্পূর্ণ দলীয়করণ হয়ে গেলে মানুষ যাবে কোথায়?’
সব নিপীড়নের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়ে এই বিএনপি নেতা বলেন, জনগণকে নিপীড়নের জন্য যে রাষ্ট্রীয় কাঠামো তৈরি করা হয়েছিল, তা ভেঙে দিতে হবে এবং সত্যিকারের গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র কাঠামো গড়ে তুলতে হবে।
তিনি বিচার ব্যবস্থায় সমস্যা সমাধানে বিচার বিভাগীয় কমিশন গঠনসহ ৩১ দফা প্রস্তাব পেশ করেন। জনগণের সরকার গঠনে সব আইনজীবীকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
ফখরুল বলেন, জনগণ সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা আর সরকারকে দেখতে চায় না এবং সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করতে দেশের সব আইনজীবীকে জনগণের পাশে দাঁড়াতে হবে।
আরও পড়ুন: সরকার কমিশন পাওয়ার জন্য ১০টি এয়ারবাস উড়োজাহাজ কিনছে: ফখরুলের অভিযোগ
বিএনপি মহাসচিব অভিযোগ করেন, সুশীল সমাজ, সাংবাদিক ও রাজনীতিবিদদের আপত্তি সত্ত্বেও সরকার বুধবার সংসদে তার আগের নাম পরিবর্তন করে ‘ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট’ পাস করেছে।
তিনি বলেন, এছাড়াও জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশন সরকারকে সদ্য পাস হওয়া সাইবার নিরাপত্তা আইনের কিছু ধারা পরিবর্তন করতে বলেছিল, কিন্তু তারা তাদের কথায় কর্ণপাত করেনি।
সেমিনারে উপস্থিত হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি (অব.) নজরুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি (অব.) মিফতাহ উদ্দিন চৌধুরী হাইকোর্টের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ইউএলএফ-এর সহ-আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী।
ইউনাইটেড ল’ইয়ার্স ফ্রন্টের (ইউএলএফ) আহ্বায়ক ও সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট জয়নাল আবেদীনের সভাপতিত্বে ব্যারিস্টার কায়সার কামালের সঞ্চালনায় সেমিনারে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক বোরহান উদ্দীন খান, সুপ্রিম কোর্টের ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, অ্যাডভোকেট মহসিন রশিদ, ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল বক্তব্য রাখেন।
এ ছাড়া সেমিনারে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান, আবদুল আউয়াল মিন্টু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য মনিরুল হক চৌধুরী, নূর মোহাম্মদ খান, জয়নুল আবদিন ফারুক, হাবিবুর রহমান হাবিব, ইসমাইল জবিউল্লাহ, এসএকে কামরুজ্জামান, জহিরুল হক শাহাজাদা মিয়া, আবদুর রশিদ, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, বদুরুজ্জামান বাদল, গাজী কামরুল ইসলাম সজল, মীর হেলাল উদ্দিন, পিপলস লীগের গরীবে নেওয়াজ, এনপিপির ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, গণফোরামের জগলুল হায়দার আফ্রিকসহ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবীরা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: সরকারের দুঃশাসনে বিরক্ত জনগণ পরিবর্তন চায়: ফখরুল
‘সেলফি’ সরকারকে ক্ষমতা ধরে রাখতে সাহায্য করবে না: ফখরুল
সরকার কমিশন পাওয়ার জন্য ১০টি এয়ারবাস উড়োজাহাজ কিনছে: ফখরুলের অভিযোগ
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অভিযোগ করেছেন, কমিশন পাওয়ার উদ্দেশ্যে সরকার ফ্রান্স থেকে ১০টি এয়ারবাস বিমান কিনছে।
তিনি বলেন, ‘এটা খুবই ভালো ব্যাপার যে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এখানে এসেছেন...তিনি আমাদের বড় মেহমান। আপনারা (সরকার) সেই অতিথিকে নাচ ও গানের মাধ্যমে খুব ভালভাবে স্বাগত জানিয়েছেন।’
মঙ্গলবার (১২ সেপ্টেম্বর) নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এক কর্মসূচিতে ফখরুল এসব কথা বলেন।
এসময় ফখরুল বলেন, দেশের ভয়াবহ পরিস্থিতিতে খাদ্য ব্যবস্থাপনায় হিমশিম খাওয়া সাধারণ মানুষেরা মনে করছেন, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্টের সফরে ভালো কিছু হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘কি হয়েছে? বলা হয়েছে ১০টি এয়ারবাস বিমান কেনা হবে। তাদের (সরকারের) আসল লক্ষ্য এই এয়ারবাসে কিকব্যাক পাওয়া। আপনারা কি কিকব্যাক বোঝেন? এর মানে কমিশন।’
এই বিএনপি নেতা বলেন, বোয়িং কিনে কমিশন পাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। ‘তাই ১০টি এয়ারবাস প্লেন কেনা হচ্ছে।’
সাবেক বেসামরিক বিমান পরিবহন প্রতিমন্ত্রী ফখরুল বলেন, দেশের মানুষের খাবার, তাদের চিকিৎসা, হাসপাতাল নির্মাণ ও স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে না পারলেও সরকার এয়ারবাস বিমান কিনতে যাচ্ছে। ‘তারা (সরকার) জনগণের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে পারে না।’
আরও পড়ুন: সরকারের দুঃশাসনে বিরক্ত জনগণ পরিবর্তন চায়: ফখরুল
রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাটি যখন ভেঙে পড়েছে তখন বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের জন্য ১০টি এয়ারবাস প্লেন কেনার যৌক্তিকতা নিয়েও তিনি প্রশ্ন তোলেন ফখরুল।
তিনি বলেন, বিমানও ঠিকমতো কোনো সেবা দিতে পারে না। ‘তারা এয়ারবাস বিমান কিনছে চুরির সুযোগ তৈরি করার জন্য (জনগণের অর্থ)।’
পরে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব নিয়ন্ত্রণে জনসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে ঢাকা দক্ষিণ মহানগর বিএনপির উদ্যোগে গৃহীত তিন দিনব্যাপী লিফলেট বিতরণ কর্মসূচির উদ্বোধন করেন এই বিএনপি মহাসচিব।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আমন্ত্রণে একটি সংক্ষিপ্ত সফরে রবিবার সন্ধ্যায় ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ ঢাকা আসেন।
গত তিন দশকের মধ্যে এটিই কোনো ফরাসি প্রেসিডেন্টের প্রথম বাংলাদেশ সফর।
সোমবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠক করেন প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁ। রবিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সম্মানে আয়োজিত ভোজসভায় যোগ দেন তিনি।
দুই নেতা অবকাঠামো ও স্যাটেলাইটসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতা বাড়ানোর জন্য কয়েকটি দ্বিপক্ষীয় চুক্তি সই করেন।
গণমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, বাংলাদেশ এয়ারবাস থেকে ১০টি এ৩৫০ বিমান কেনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
আরও পড়ুন: ‘সেলফি’ সরকারকে ক্ষমতা ধরে রাখতে সাহায্য করবে না: ফখরুল
স্বাস্থ্য খাতে ব্যাপক দুর্নীতির কারণে মহামারিতে রূপ নিয়েছে ডেঙ্গু: বিএনপি
সরকার অমানবিকভাবে খালেদা জিয়াকে বিদেশে চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত করছে: ফখরুল
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অভিযোগ করেছেন, সরকার তাদের দলের চেয়ারপার্সন অসুস্থ সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে যথাযথ চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত করছে।
তিনি বলেন, ‘আমাদের নেত্রী বেগম খালেদা শারীরিকভাবে অসুস্থ থাকায় এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। আমরা বারবার তার মুক্তি এবং বিদেশে উন্নত চিকিৎসার কথা বলেছি। কিন্তু তারা (সরকার) কতটা অমানবিক এবং মধ্যযুগীয় বর্বর হতে পারে যে তারা তাকে যথাযথ চিকিৎসা নিতে দিচ্ছে না।’
বৃহস্পতিবার (৭ সেপ্টেম্বর) এক মিলাদ ও দোয়া মাহফিলে বক্তৃতাকালে দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় অপরিসীম অবদান রাখা শারীরিকভাবে অসুস্থ বিএনপি নেত্রীর প্রতি নিষ্ঠুর আচরণের জন্য সরকারের নিন্দা করেন ফখরুল।
খালেদা জিয়ার দ্রুত সুস্থতা কামনা করে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিচতলায় এই দোয়া মাহফিলের আয়োজন করে বিএনপির ঢাকা দক্ষিণ মহানগর শাখা।
আরও পড়ুন: খালেদা জিয়ার শারিরীক অবস্থা হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাওয়ার মতো হয়নি: ব্যক্তিগত চিকিৎসক
পরে খালেদা জিয়ার দ্রুত আরোগ্য কামনা করে দোয়া মাহফিলের আয়োজন করে জাতীয়তাবাদী যুবদল।
অসুস্থ হয়ে পড়ায় ৯ আগস্ট খালেদাকে স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও চিকিৎসার জন্য এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয় এবং এরপর থেকে তিনি হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে একটি মেডিকেল বোর্ডের অধীনে হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
৭৯ বছর বয়সী সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরে লিভার সিরোসিস, আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, কিডনি, ফুসফুস, হার্ট ও চোখের সমস্যাসহ বিভিন্ন রোগে ভুগছিলেন।
মেডিকেল বোর্ডের মতে, বিএনপি প্রধানকে যত দ্রুত সম্ভব বিদেশে একটি উন্নত চিকিৎসাকেন্দ্রে পাঠানো প্রয়োজন। কারণ বাংলাদেশের কোনো হাসপাতালেই তাকে সঠিক চিকিৎসা দেওয়ার সামর্থ্য নেই।
ইউএনবি’র সঙ্গে আলাপকালে তার চিকিৎসা করা মেডিকেল বোর্ডের একজন সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘খুব ধীরগতিতে খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার উন্নতি হচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘তিনি বেশ কিছু জটিল রোগে ভুগছেন। আমরা তাকে নিবিড় পর্যবেক্ষণে চিকিৎসা দিচ্ছি, কিন্তু তার স্বাস্থ্যের বিভিন্ন প্যারামিটার ওঠানামা করছে। আমরা এটা নিয়ে চিন্তিত।’
আরও পড়ুন: বিদেশে খালেদার চিকিৎসার দাবিতে বিএনপির পদযাত্রা
খালেদার অবস্থা আশঙ্কাজনক, বিদেশে নেওয়ার অনুমতি দিতে সরকারের প্রতি আহ্বান ড্যাবের
সরকারের বিরোধী নির্মূল কর্মকাণ্ড আশঙ্কাজনক: ফখরুল
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন, সরকার বিরোধীদলকে নির্মূল করতে এবং একতরফা নির্বাচন আয়োজন করতে দেশে যে কোনো ভয়াবহ ঘটনা ঘটাতে পারে।
তিনি বলেন, ‘আমি আপনাদের (সাংবাদিকদের) আমার আশঙ্কার কথা বলতে চাই। এটা বলা দরকার... জাতির এটা জানা উচিত। বিরোধী দলগুলোকে পুরোপুরি নির্মূল করতে এই সরকার এখন দেশে ভয়ানক কিছু করার পরিকল্পনা করছে। তারা অতীতে যেমন করেছে, এখন আবারও সেই ধরনের নির্বাচন কীভাবে করা যায় সেই লক্ষ্য নিয়েই এগোচ্ছে।’
সোমবার (২১ আগস্ট) নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে ফখরুল এসব কথা বলেন।
আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে বিএনপি ও বিরোধী দলকে মাঠ থেকে সরাতে সরকার বিএনপি নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তার শুরু করেছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
এই বিএনপি নেতা বলেন, ইতোমধ্যে সারাদেশে বিএনপি ও এর সহযোগী সংগঠনের অনেক নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
ফখরুল বলেন, ক্ষমতাসীন দলের ক্যাডাররা রবিবার (২০ আগস্ট) হবিগঞ্জে বিএনপির কার্যালয় এবং স্থানীয় নেতা ও সাবেক হবিগঞ্জ পৌরসভার মেয়র জি কে গউছের বাড়িতে হামলা চালিয়ে বিরোধী দলের দুই শতাধিক নেতা-কর্মীকে আহত করেছে।
আরও পড়ুন: ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার বিচার সাজানো নাটক: ফখরুল
তিনি বলেন, এর আগে শনিবার একই জেলায় দলের চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসার দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করতে গেলে পুলিশ বিএনপি নেতা-কর্মীদের উপর হামলা করে এবং প্রায় ৩০০ রাউন্ড গুলি ছোড়ে। এতে বিপুল সংখ্যক বিরোধী নেতা-কর্মী আহত হয়।
তিনি বলেন, শনিবার নারায়ণগঞ্জসহ আরও কয়েকটি জেলায় বিএনপির মিছিল কর্মসূচিতেও পুলিশ হামলা করেছে।
বিএনপির জ্যেষ্ঠ এই নেতা বলেন, শুক্রবার রাতে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনেও পুলিশ ভীতিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি করে।
ফখরুল বলেন, অতীতে নয়াপল্টনে বিএনপির বড় সমাবেশ চলাকালীন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী বোমা বিস্ফোরণ ঘটিয়েছিল। এরপর বিএনপি নেতা-কর্মীদের উপর গুলি ছুঁড়ে, টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে এবং সাউন্ড গ্রেনেড ছুঁড়ে সমাবেশ বন্ধ করে।
ছাত্রদলের ছয় নেতাকে অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার দাবি করে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী আবারও বিএনপির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র শুরু করেছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘এগুলো তাদের (পুলিশ) অনেক পুরনো অস্ত্র ছিল এবং তারা ছাত্রদল নেতাদের হাতে তুলে দিয়ে ছবি তুলেছিল।’
তিনি বলেন, বিএনপিকে হেয় প্রতিপন্ন করার লক্ষ্যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এ ধরনের কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করছে।
আরও পড়ুন: বিরোধী দলকে নির্মূলে রাষ্ট্রীয় মদদপুষ্ট সন্ত্রাস চালাচ্ছে সরকার: ফখরুল
পুলিশ কর্মকর্তাদের বক্তব্যেই বোঝা যায় আরেকটি একতরফা নির্বাচন হতে যাচ্ছে: রিজভী
২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার বিচার সাজানো নাটক: ফখরুল
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অভিযোগ করেছেন, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার বিচার প্রক্রিয়া ‘সাজানো নাটক’ ছাড়া আর কিছুই নয়।
সোমবার (২১ আগস্ট) নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সম্মেলনে তিনি আরও দাবি করেন, গ্রেনেড হামলায় তাদের দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ অন্য নেতারা কোনোভাবেই জড়িত নন।
এই বিএনপি নেতা বলেন, ‘বিচার প্রক্রিয়া শেষ হয়েছে। আমি বলতে চাই পুরো বিষয়টি (বিচার প্রক্রিয়া) একেবারে একটি সাজানো নাটক।’
রাজনৈতিক প্রতিহিংসার বশবর্তী হয়ে ইচ্ছাকৃতভাবে তারেক রহমানসহ বিএনপি নেতাদের নাম এ মামলায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
ফখরুল বলেন, ‘আমাদের কাছে রেকর্ড আছে কোনো সঠিক তদন্ত ছাড়াই এটি (বিচার) করা হয়েছিল।’
তিনি বলেন, মামলার প্রথম তিনটি ফার্স্ট ইনফরমেশন রিপোর্টে (এফআইআর) তারেকের নাম ছিল না।
তিনি আরও বলেন, পরে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তা আব্দুল কাহার আখন্দকে পুনরায় নিয়োগ দিয়ে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা (আইও) করা হয়েছে। ‘ওই ভদ্রলোক এফআইআরে তারেক রহমানের নাম দিয়েছেন।’
বিএনপির জ্যেষ্ঠ এই নেতা বলেন, পুরো তদন্তে কোথাও তারেকের নাম উল্লেখ করা হয়নি।
তিনি বলেন, প্রায় ১৪৫ দিন রিমান্ডে রাখার পর মুফতি হান্নানকে শুধুমাত্র তারেকের নাম বলতে বাধ্য করা হয়েছিল। কিন্তু পরে তিনি তা অস্বীকার করেন এবং এ বিষয়ে হলফনামা দেন।
আরও পড়ুন: বিরোধী দলকে নির্মূলে রাষ্ট্রীয় মদদপুষ্ট সন্ত্রাস চালাচ্ছে সরকার: ফখরুল
ফখরুল বলেন, তৎকালীন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশকে (ডিএমপি) কর্তৃপক্ষকে না জানিয়ে আওয়ামী লীগ তাদের ২১ আগস্টের সমাবেশের নির্ধারিত স্থান অন্য জায়গায় স্থানান্তর করে।
তিনি বলেন, ‘আমরা বারবার বলেছি গ্রেনেড হামলার ঘটনার নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু তদন্ত হওয়া উচিত। সেই নিরপেক্ষ তদন্ত হয়নি। আমরা ২১ আগস্টের ঘটনার নিন্দা জানাই। বাংলাদেশের রাজনীতিতে এটি অবশ্যই একটি জঘন্য ঘটনা এবং এটা নিন্দনীয়।’
এই বিএনপি নেতা বলেন, সরকার বিএনপি নেতাদের ‘বিনাকারণে’ মামলায় জড়িয়ে রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের চেষ্টা করছে।
তিনি বলেন, ‘আমরা আবারও বলছি তারেক রহমান, বিএনপির আব্দুস সালাম পিন্টু বা লুৎফুজ্জামান বাবর এই হামলার সঙ্গে জড়িত ছিলেন না। রাজনৈতিক কারণে তাদের এর সঙ্গে জড়ানো হয়েছে।’
২০০৪ সালে বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে তৎকালীন বিরোধী দল আওয়ামী লীগ আয়োজিত সন্ত্রাসবিরোধী সমাবেশে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা চালানো হয়। এতে ২৪ জন নিহত এবং প্রায় ১ হাজার মানুষ আহত হয়।
২০১৮ সালের ১০ অক্টোবর ঢাকার একটি আদালত ৪৯ জনকে দোষী সাব্যস্ত করেন। এরমধ্যে ১৯ জনকে মৃত্যুদণ্ড, ১৯ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং বাকি ১১ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেন।
তারেক রহমানসহ ১৮ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং ফৌজদারি ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে হত্যার অভিযোগে সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর ও সাবেক উপমন্ত্রী আব্দুস সালাম পিন্টুসহ ১৭ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন: পুলিশ কর্মকর্তাদের বক্তব্যেই বোঝা যায় আরেকটি একতরফা নির্বাচন হতে যাচ্ছে: রিজভী
আওয়ামী লীগকে বাঁচাতে বিদেশের কোনো দেশ এগিয়ে আসবে না: ফখরুল
সর্বজনীন পেনশন প্রকল্প জনগণের টাকা চুরির আরেকটি কৌশল: ফখরুল
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, সরকার জনগণের টাকা চুরি করে আগামী নির্বাচনে ব্যবহার করার কৌশলের অংশ হিসেবে সর্বজনীন পেনশন প্রকল্প চালু করেছে।
তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ বাংলাদেশের সম্পদ লুট করে ধ্বংস করেছে। পেনশন স্কিমের নামে জনগণের টাকা চুরির আরেকটি কৌশল নিয়েছে তারা। তারা সেই টাকা চুরি করে আগামী নির্বাচন করতে চায়।’
এই বিএনপি নেতা বলেন, দেশের মানুষ আর সরকারকে তাদের টাকা লুট করতে দেবে না।
শুক্রবার (১৮ আগস্ট) বিএনপির ঢাকা দক্ষিণ মহানগর শাখার আয়োজনে রাজধানীর দয়াগঞ্জ এলাকা থেকে গণমিছিল বের করার আগে সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করে সরকারকে মর্যাদার সঙ্গে পদত্যাগ করার আহ্বান জানান ফখরুল।
তিনি বলেন, ‘দেশের জনগণ ভালো করেই জানে কীভাবে ফ্যাসিবাদী ও স্বৈরাচারী সরকারকে নামাতে হয়। তারা ১৯৫২, ১৯৬৯, ১৯৭১ ও ১৯৯০ সালে এই কাজ করেছিল। তাই জনগণের দাবি মেনে নিয়ে অবিলম্বে পদত্যাগ করুন।’
বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের উপর নিপীড়ন ও মিথ্যা মামলায় গ্রেপ্তারের জন্য সরকারের নিন্দা জানান এই বিএনপি নেতা।
তিনি বলেন, ‘দেশ কার্যত জেলখানায় পরিণত হয়েছে। ক্ষমতা হারানোর ভয়ে তারা আমাদের অনেক নেতাকে গ্রেপ্তার করেছে।’
আরও পড়ুন: এক দফা আন্দোলন: বিএনপির ঢাকা দক্ষিণ ও উত্তর ইউনিটের গণমিছিল
বিএনপি নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তার করা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সতর্ক করে তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে সম্পদ অর্জনকারী ৯ জন পুলিশ কর্মকর্তা এখন সেখানে যেতে পারবেন না। ‘তারা এখন রাতে ঘুমাতে পারে না এই ভেবে যে তারা বিদেশে যে সম্পদ জমা করেছে তার কী হবে।’
ফখরুল বলেন, বাংলাদেশে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করতে বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা ও প্রতিষ্ঠান মার্কিন সরকারকে আরও নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছে বলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে চলেছে।
তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মন্তব্যেরও সমালোচনা করেন।
শেখ হাসিনা বলেন, কিছু দেশ অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠান ও মানবাধিকার রক্ষার নামে ভারত মহাসাগর ও বঙ্গোপসাগর নিয়ন্ত্রণের উদ্দেশ্য নিয়ে এই অঞ্চলের বিভিন্ন দেশে আক্রমণ করে তাদের ধ্বংস করার উদ্দেশ্যে বাংলাদেশকে চাপ দিচ্ছে।
বিএনপির জ্যেষ্ঠ এই নেতা বলেন, ‘ভারত মহাসাগর ও বঙ্গোপসাগর নিয়ে কথা বলে কোনো লাভ নেই… (সরকারের) পালানোর কোনো উপায় নেই। কোনো দিকে পালানোর পথ নেই।’
পরে ফখরুল দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক রুহুল কবির রিজভী, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক আবদুস সালাম, ভারপ্রাপ্ত সদস্য সচিব তানভীর আহমেদ রবিনসহ দলের সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে নিয়ে মিছিল বের করেন। হাজার হাজার দলীয় নেতা-কর্মী এতে অংশ নেন। মিছিলটি বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে খিলগাঁও মোড়ে গিয়ে শেষ হয়।
এদিকে রাজধানীর গুলশান-১ এলাকায় ডিএনসিসি মার্কেটের কাছে ঢাকা উত্তর মহানগর বিএনপির গণমিছিলের উদ্বোধন করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস।
মিছিল বের করার আগে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে দেওয়া বক্তব্যে তিনি বলেন, জনগণ আর আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় দেখতে চায় না। কারণ তারা ১৫ বছরের দুঃশাসনে বিরক্ত হয়ে পড়েছে।
তিনি অভিযোগ করেন, ক্ষমতাসীন দলের নেতারা ভোট চুরি করে ক্ষমতায় থাকায় জনগণকে বিভ্রান্ত করতে মিথ্যার আশ্রয় নিচ্ছেন।
আরও পড়ুন: সব মহানগরে গণমিছিল করবে বিএনপিসহ সমমনা দলগুলো
আব্বাস বলেন, সরকার ক্ষমতা আঁকড়ে থাকার জন্য বিরোধীদের দমন করতে রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যবহার করছে।
বিরোধী দলীয় নেতা-কর্মীদের হয়রানি ও নিপীড়ন বন্ধ করতে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিরপেক্ষ ভূমিকা পালনের আহ্বান জানান এই বিএনপি নেতা।
খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার অনুমতি দিতেও তিনি সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।
অন্যথায় কারাগার থেকে তার নিঃশর্ত মুক্তি ও বিদেশে তার চিকিৎসা নিশ্চিত করতে তুমুল আন্দোলন করা হবে বলে হুঁশিয়ারি দেন বিএনপি নেতা।
পরে বিএনপির নেতা-কর্মীরা মিছিলটি বের করে মহাখালী বাসস্টেশনে গিয়ে শেষ হয়।
দলটির শীর্ষস্থানীয় নেতাদের ব্যানার, ফেস্টুন ও প্রতিকৃতি নিয়ে বিএনপি ও এর সহযোগী সংগঠনের হাজার হাজার নেতা-কর্মী দুই মিছিলে যোগ দেন।
বিএনপি ছাড়াও গণতন্ত্র মঞ্চ, জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট, এলডিপি, গণফোরাম ও পিপলস পার্টি, পেশাজীবী গণতান্ত্রিক জোট, গণতান্ত্রিক বাম ঐক্য, ১২ দলীয় জোট, লেবার পার্টি, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি (মঞ্জু), এনডিএম, বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র সংসদ ও গণঅধিকার পরিষদের দুই অংশের নেতা-কর্মীরা রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় পৃথকভাবে মিছিল করেছে।
বিএনপিসহ অন্যান্য বিরোধী দলগুলোর আয়োজনে সব মহানগরেও একই ধরনের কর্মসূচি পালন করা হয়।
আওয়ামী লীগকে ক্ষমতা থেকে সরানোর লক্ষ্য নিয়ে বিরোধী দলের এক দফা আন্দোলনের এটি ছিল চতুর্থ কর্মসূচি।
গত ১২ জুলাই বিএনপিসহ সমমনা দলগুলো দাবি আদায়ে এক দফা আন্দোলনের ঘোষণা দেয়।
আরও পড়ুন: স্বৈরাচারী এ সরকারের আমলে কেউই নিরাপদ নয়: রিজভী