মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
আরেকটি সাজানো নির্বাচন করতে সরকার পুলিশ ও জনপ্রশাসনে রদবদল শুরু করেছে: ফখরুল
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অভিযোগ করে বলেছেন, সরকার রাষ্ট্রযন্ত্রকে নিয়ন্ত্রণ করে ভোট কারচুপির মাধ্যমে আরেকটি সাজানো নির্বাচন মঞ্চস্থ করতে পুলিশ ও জনপ্রশাসনে রদবদল শুরু করেছে।
তিনি বলেন, ‘তারা (আ.লীগ) ভোট কারচুপি এবং সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করে তাদের ইচ্ছানুযায়ী আরেকটি নির্বাচন করার প্রক্রিয়া শুরু করেছে। পুলিশে ব্যাপক রদবদল ও পদোন্নতি নিয়ে কয়েকটি পত্রিকায় প্রতিবেদন রয়েছে। তারা আগামী নির্বাচনের আগে তাদের ইচ্ছা অনুযায়ী সবকিছু সাজানোর উদ্দেশ্য নিয়ে জনপ্রশাসনেও রদবদল করেছে।’
বৃহস্পতিবার এক আলোচনা সভায় তিনি বলেন, দেশের জনগণ আগামী দিনে গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে সরকারের সব ‘নীলনকশা’ নস্যাৎ করে দেবে।
ফখরুল বলেন যে এইচএম এরশাদসহ অনেক ফ্যাসিবাদী শাসক অতীতে একই কাজ করেছিল, কিন্তু শেষ পর্যন্ত জনরোষের মুখে তাদের ক্ষমতা ছাড়তে হয়েছিল।
এই বিএনপি নেতা বলেন, ‘আপনারা (আ.লীগ)ও এত সব আয়োজন করে বাকশাল প্রতিষ্ঠা করেছিলেন, কিন্তু কত দিন ক্ষমতায় থাকতে পারবেন? ফেরাউন, নমরূদ, এরশাদও ক্ষমতায় বসার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। জনগণ যখন জেগে ওঠে তখন কোনো কিছুই তাদের প্রতিহত করতে পারে না।’
বিএনপিপন্থী প্ল্যাটফর্ম জাতীয়তাবাদী সাংস্কৃতিক ফোরাম ঢাকা রিপোর্টার্সে সংবাদপত্রের ‘কালো দিবস’ উপলক্ষে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
আরও পড়ুন: স্যাংশনে আ.লীগ সরকারের হাঁটু কাপতে শুরু করেছে: ফখরুল
১৯৭৪ সালের ১৬ জুন তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার সরকারের অনুগত চারটি পত্রিকা ছাড়া সব সংবাদপত্র বন্ধ করে দেয়। একদল সাংবাদিক দীর্ঘদিন ধরে সংবাদপত্র বন্ধের স্মরণে দিনগুলোকে ‘কালো দিবস’ হিসেবে পালন করে আসছেন।
ফখরুল বলেন, বর্তমান সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করতে চলমান আন্দোলন জোরদার করার কোনো বিকল্প নেই।
তিনি বলেন, বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার গণতন্ত্রের আড়ালে একদলীয় বাকশাল শাসন কায়েম করেছে। ‘তারা আমাদের সকল অধিকার কেড়ে নিয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে বাক, লেখার স্বাধীনতা এবং সভা-সমাবেশের স্বাধীনতা।’
এই বিএনপি নেতা বলেন, সরকার ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মাধ্যমে গণমাধ্যমকে নিয়ন্ত্রণ করছে।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের বৈশিষ্ট্য হলো ভিন্নমতকে সহ্য করতে পারে না। ‘আমাদের সংগ্রাম শুরু হয়েছে এবং এটি এক বা দুই দিনে শেষ হবে না। আমাদের সংগ্রাম চালিয়ে যেতে হবে, কারণ আমাদের প্রতিপক্ষ এতটাই স্বৈরতান্ত্রিক যে তারা রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যবহার করে মানুষকে হত্যা করতে এবং তাদের গুম করতে দ্বিধা করে না।’
এই বিএনপি নেতা বলেন, গণতন্ত্র, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা ও জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করে সব হারানো অধিকার ফিরিয়ে আনতে শক্তিশালী আন্দোলনের মাধ্যমে বর্তমান সরকারকে অপসারণ করতে হবে।
তিনি অভিযোগ করেন, রাজনৈতিক প্রতিহিংসা থেকে রাজনীতি থেকে সরানোর জন্য তাদের দলের প্রধান খালেদা জিয়াকে ‘মিথ্যা’ মামলায় বেআইনিভাবে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
খালেদা এখন রাজধানীর একটি হাসপাতালে জীবনযুদ্ধে লড়ছেন উল্লেখ করে ফখরুল বলেন, চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে বিদেশে পাঠানোর অনুমতি চেয়ে তার পরিবার বারবার আবেদন করেছে, কিন্তু সরকার এখনো তাতে কর্ণপাত করেনি।
খালেদা জিয়ার অসুস্থতা নিয়ে বিএনপি রাজনীতি করছে বলে ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের বক্তব্যের নিন্দা জানান তিনি।
তিনি বলেন, ‘এ ধরনের মন্তব্যের নিন্দা করার ভাষা আমাদের নেই। আমরা গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে এর জবাব দেবো।’
আরও পড়ুন: ফয়জুল করিমের ওপর হামলার বিষয়ে সিইসি’র মন্তব্যের তীব্র নিন্দা ফখরুলের
গুরুতর অসুস্থতা নিয়ে জীবন-মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছেন খালেদা জিয়া: ফখরুল
তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে কোনো আপস নয়: ফখরুল
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর রবিবার বলেছেন, নিরপেক্ষ সরকারের প্রশ্নে কোনো আপস হবে না, লড়াই সংগ্রামের মাধ্যমে রাজপথে ফয়সালা হবে। তত্ত্বাবধায়ক সরকার হলে আওয়ামী লীগ ১০টি আসনও পাবে না
তিনি বলেন, ‘সরকারের কাঁপাকাঁপি শুরু হয়ে গেছে। তারা সকালে বলে এক কথা। বিকেলে বলে আরেক কথা।’
আরও পড়ুন: নির্বাচন কমিশনের সুষ্ঠু নির্বাচন করার ক্ষমতা নেই: মির্জা ফখরুল
রবিবার দুপুরে গাজীপুর মহানগর বিএনপির দ্বি-বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
এ জন্যই এই দলের সাধারণ সম্পাদক বলছেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার একটি ডেড ইস্যু। কিন্তু না, তত্ত্বাবধায়ক সরকার একটি জীবন্ত ইস্যু। সারাবিশ্ব চায় বাংলাদেশে অবাধ ও নিরপেক্ষ একটি নির্বাচন হোক।
ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগ জনগণের দল নয়, প্রকৃত পক্ষে তারা একটি সন্ত্রাসী দল। তাই তারা নির্বাচন চায় না। তাদের বডি ল্যাঙ্গুয়েজই বলে দেয় তারা সন্ত্রাসী ছাড়া আর কিছুই না। তাদের সঙ্গে ফয়সালা হবে রাজপথেই।
তিনি আরও বলেন, মানুষ ন্যায়বিচার পাবে, সাম্য প্রতিষ্ঠা হবে, গরীব আরও গরীব হবে না, ধনী আরও ধনী হবে না, আমরা এমন একটি বাংলাদেশ চেয়েছিলাম। কিন্তু আওয়ামী লীগ আমাদের স্বপ্ন তছনছ করে দিয়েছে। ৭১’ সালে যে লক্ষ্যে বাংলাদেশ গড়েছিলাম সেই বাংলাদেশ ফিরিয়ে দিতে হবে।
আরও পড়ুন: ‘প্রধানমন্ত্রীকে হত্যার হুমকির’ অভিযোগে মির্জা ফখরুল ও রাজশাহী বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে মামলা
দাবি একটাই, শেখ হাসিনার পদত্যাগ: মির্জা ফখরুল
নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার ‘ডেড’ নয়, ‘লাইফ’ ইস্যু: ফখরুল
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার ‘ডেড’ নয়, এখন ‘লাইফ’ ইস্যু।
তিনি বলেন, বাংলাদেশকে এই সরকার চরম ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দিয়েছে। যে কারণে আমরা বার বার করে বলছি যে, এই সরকারের এখন থাকার আর কোনো কারণ নেই। তারপরও তার নেতা-মন্ত্রীরা বলেন যে, তত্ত্বাবধায়ক সরকার নাকি এখন ডেড ইস্যু।
তত্ত্বাবধায়ক সরকার ‘ডেড ইস্যু’-আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের এরকম বক্তব্যের জবাবে বিএনপি মহাসচিব এই মন্তব্য করেন।
আরও পড়ুন: বিএনপির কাছে সংলাপ নিয়ে আমুর বক্তব্যের কোনো গুরুত্ব নেই: ফখরুল
তিনি বলেন, ডেড ইস্যু হবে কেনো? এটাই তো এখন সবচেয়ে লাইফ ইস্যু। কারণ আমরা মনে করি যে, এই সরকারের এই মুহুর্তে পদত্যাগ করা উচিত।
শনিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা ও বিএনপির সাবেক এমপি এবং পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী গৌতম চক্রবর্তীর প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
এতো চুরি করেছে, এতো দুর্নীতি করেছে এবং একটা সমস্যারও সমাধান করতে পারেনি সেই সরকারের ক্ষমতায় থাকার কারণ নেই।
সেই কারণে আমরা বলেছি যে, একটা তত্ত্বাবধায়ক সরকার অথবা একটা নিরপেক্ষ সরকার এবং নির্দলীয় সরকারকে দায়িত্ব দিতে হবে।
মির্জা ফখরুল বলেন, ভোট দেওয়ার ব্যবস্থা এবং নির্বাচনী ব্যবস্থাকে তারা ধ্বংস করে দিয়েছে পরিকল্পিতভাবে।
কারণ তারা জানে যে, তারা এতো চুরি-চামারি করেছে যে, সাধারণভাবে যদি সুষ্ঠু অবাধ নির্বাচন হয় তাহলে কোনো দিনই তারা ক্ষমতায় ফিরে আসা দূরে থাকুক, পার্লামেন্টে ১০ ভাগেরও বেশি ভোট পাবে না। সেই সরকার আজকে ক্ষমতায় বসে আছে।
তিনি বলেন, আমরা খুব পরিষ্কার করে বলতে চাই, বাংলাদেশের মানুষ দুইটা ইলেকশন দেখেছে। ২০১৪ সালে ও ২০১৮ সালে। আবার ওই জায়গায় ফেরত যাওয়ার প্রশ্নই উঠতে পারে না।
এছাড়া গত ১৮ সালে শেখ হাসিনা আমাদেরকে ডেকেছিলেন সংলাপের জন্য। আমরা গিয়েছিলাম এ জন্য যে, আমরা মনে করেছিলাম আলোচনার মাধ্যমে যদি একটা অবস্থা তৈরি হয় সেই অবস্থায় আমরা যদি একটা নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে পারি তাহলে হয়তবা জনগণের সেই ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটাতে পারব।
আরও পড়ুন: নির্বাচনের নামে নতুন খেলা শুরু করেছে সরকার: ফখরুল
‘ওদেরকে বিশ্বাস করা যায় না’
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীল বলেন, আইনমন্ত্রী পার্লামেন্টে কালকে বলেছেন যে, যখন নির্বাচন চলবে, নির্বাচন কমিশনের সেই ক্ষমতা থাকবে যে, তখন আর কাউকে গ্রেপ্তার করা যাবে না বা কাউকে আটক করা যাবে না। এই কথা কে বিশ্বাস করবে?
তিনি বলেন, আমরা কোনো কথা শুনতে চাই না। আগে পদত্যাগ করুন, তারপরে সংসদ বিলুপ্ত করে নির্বাচনকালীন একটা নির্দলীয় সরকার গঠন করবার জন্য সেই ব্যবস্থা নিন।
‘দেশের অর্থনীতি আন্ডারগ্রাইন্ডে’
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, এতো বেশি উন্নয়নের কথা বলেছে কিছুদিন আগে পর্যন্ত যে, খৈ ফুটে মুখের মধ্যে, সব দিকে নাকি তারা উন্নয়নে একেবারে সমুদ্র বইয়ে দিয়েছে।
আমরা তখনও বলেছি, গণতন্ত্র বিহীন উন্নয়ন কখনো উন্নয়ন হতে পারে না। এটা টেকসই নয়। এটা ভেঙে যাবে।
আজকে দেখুন আমাদের কথার প্রতিধ্বনি করছে আন্তর্জাতিক পত্রিকাগুলোতে। সরকার বলছে, বাংলাদেশ উন্নয়নের রোল মডেল। আর আন্তর্জাতিক পত্রিকাগুলো বলছে যে, বাংলাদেশের অর্থনীতি এখন ঝুঁকিতে।
বাংলাদেশের সাফল্য গল্প টক হয়ে গেছে সাওয়ার। কথাটা আমার নয়, কথাটা ভারতের টেলিগ্রাফের অনলাইন ভাসর্নে পরাণ বালাকৃষ্ণা বলে একজন প্রতিবেদকের প্রতিবেদনে এসব এসেছে।
আরও এসেছে যে, বাংলাদেশের সরকার ইতোপূর্বে যে সমস্ত দাবি করেছে সেই দাবিগুলো যে কতটা ঠুনকো ছিল, ক্রাইসিসে যখন বাংলাদেশ পড়েছে তখন সেটা স্পষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, প্রতিবেদনে বলছে, বাংলাদেশের পুরো ব্যবস্থটাই এখন আন্ডারগ্রাউন্ডে চলে গেছে। এমনকি রপ্তানি থেকেও ডলার ফেরত আসছে না। রপ্তানির রশিদ সংখ্যা, রপ্তানি শিফমেন্টের সংখ্যা মেলানো খুব কঠিন।
বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক এখন জোর দিচ্ছে কমপক্ষে ৩০ লাখ ডলারের ওপর যেকোনো এলসিতে তারা ক্লিয়ারেন্স দেবে যা বাণিজ্যের জন্য আরও একটি বোঝা হবে।
অর্থাৎ ইকোনমি অলরেডি আন্ডারগ্রাউন্ডে। এই আন্ডারগ্রাউন্ডে কেনো? এই যে ভয়াবহ নজিরবিহীন দুর্নীতি, এই দুর্নীতি করে তো সব কাজগুলো করা হয়েছে।
শেষ মুহুর্তে আবার পরিচিত ব্যক্তি- আমি নাম বলতে চাই না যাকে আপনারা সবসময় দেখেন, যিনি সব ব্যবসাগুলো করায়াত্ত করছেন। তিনি আবার সেই এয়ারবাস নিয়ে এসেছেন যে, আবার যদি একটা বড় ফান্ড তৈরি করা যায়। আর সেই ফান্ডে একদিকে নির্বাচনেও কাজ হবে আবার তাদেরও পকেট ভর্তি হবে।
তিনি আরও বলেন, আজকে সমস্ত কিছুর লক্ষ্য একটাই নিজেদের পকেট ভর্তি করা এবং সেই টাকা বিদেশে পাচার করা।
আরও পড়ুন: আ.লীগ নেতারা মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছেন: ফখরুল
বিএনপির কাছে সংলাপ নিয়ে আমুর বক্তব্যের কোনো গুরুত্ব নেই: ফখরুল
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বুধবার বলেছেন, আগামী সাধারণ নির্বাচন নিয়ে রাজনৈতিক অচলাবস্থা নিরসনে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমুর সংলাপের বক্তব্যকে তারা গুরুত্ব দিচ্ছেন না।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরও বলেন, বিএনপির সঙ্গে সংলাপে ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের পরস্পরবিরোধী মন্তব্যও প্রকাশ করেছে যে সরকার এখন কেমন অস্থির হয়ে পড়েছে।
সংলাপে আমুর মন্তব্যের বিষয়ে সাংবাদিকরা তার মন্তব্য জানতে চাইলে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আমি এই বিষয়টিকে গুরুত্ব দিতে চাই না। আমি এটা নিয়ে কথা বলতেও চাই না।’
বিকালে কয়েকজন সাংবাদিক ফখরুলের কাছে এ বিষয়ে মন্তব্য জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমুকে আওয়ামী লীগের আনুষ্ঠানিক মুখপাত্র করা হয়েছে কিনা তা তিনি জানেন না। ‘আমরা কেন তার বক্তব্যকে গুরুত্ব দেব? আমি এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে চাই না।’
আরও পড়ুন: এটি জনবিরোধী, জাতীয় সম্পদ লুণ্ঠনের জন্য তৈরি করা হয়েছে: ২০২৪ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটে নিয়ে বিএনপি
এর আগে মঙ্গলবার বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আওয়ামী নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোট আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে আমু বলেন, বিএনপির সঙ্গে সংলাপের দরজা খোলা রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ‘জাতিসংঘের একজন প্রতিনিধি আসুক। আমরা বিএনপির সঙ্গে মুখোমুখি বসতে চাই এবং দেখতে চাই পার্থক্য কোথায়।’
এদিকে বিএনপির সিনিয়র নেতা খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, আলোচনা নিয়ে ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের বক্তব্য বেপরোয়া।
বুধবার জাতীয় প্রেসক্লাবে এক অনুষ্ঠানে তিনি স্মৃতিচারণ করে বলেন, কয়েকদিন আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বিএনপি সন্ত্রাসী দল হওয়ায় নির্বাচন নিয়ে আলোচনার প্রশ্নই আসে না।
এই বিএনপি নেতা বলেন, ‘আমির হোসেন আমু গতকাল (মঙ্গলবার) বলেছেন, তারা জাতিসংঘের মধ্যস্থতায় বিএনপির সঙ্গে আলোচনায় বসতে প্রস্তুত। কিন্তু ওবায়দুল কাদের (আ.লীগ সাধারণ সম্পাদক) আজ (বুধবার) তা প্রত্যাখান করেছেন। সুতরাং, কে সঠিক? আসলে, তারা (আ.লীগ নেতা) বেপরোয়া হয়ে উঠেছে এবং বেপরোয়া মন্তব্য করছে।’
মোশাররফ বলেন, দলের সময় শেষ হওয়ায় আগামী দিনেও আওয়ামী লীগ অসংগঠিত থাকবে। ‘সময় শেষ হলে মানুষ অপ্রত্যাশিত মন্তব্য করে।’
তিনি আরও বলেন, একটি সুষ্ঠু ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানের পথ প্রশস্ত করে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করে ক্ষমতাসীন দলকে ক্ষমতা ছাড়তে হবে।
আরও পড়ুন: লোডশেডিংয়ের প্রতিবাদে ৮ জুন দেশব্যাপী বিএনপি’র অবস্থান কর্মসূচি
বাংলাদেশের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নীতি আওয়ামী লীগের দুঃশাসনের পরিণতি: ফখরুল
বাংলাদেশের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নীতি আওয়ামী লীগের দুঃশাসনের পরিণতি: ফখরুল
সরকারের দুঃশাসনের কারণেই বাংলাদেশের ওপরে ‘গণতান্ত্রিক বিশ্বের নানা চাপ’ দিচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেন, ‘শুধুমাত্র ক্ষমতার জন্যে তারা (সরকার) বাংলাদেশের রাষ্ট্রের মানুষে যে আকাঙ্খা ছিলো গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র, গণতান্ত্রিক সমাজ; তার সব কিছু তারা চুরমার করে দিয়েছে। যার ফলে কি হয়েছে আমরা সব জানি। আজকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভিসানীতি দেয়, নিষেধাজ্ঞা দেয়-এটা আমাদের জন্য খুব আনন্দের কথা নয়, লজ্জার কথা… যে আমরা একটা স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্রের আজকে আমাদের ওপরে আরেকটা দেশ থেকে চাপিয়ে দেয়া হচ্ছে। কেনো?’
সোমবার বিকালে এক সেমিনারে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ভিসা নীতির প্রসঙ্গ টেনে বিএনপি মহাসচিব এই মন্তব্য করেন।
গুলশানে হোটেল লেকশোরে প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ৪২তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষ্যে বিএনপির উদ্যোগে ‘বাংলাদেশে বহুদলীয় প্রবর্তক শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান’ শীর্ষক এই সেমিনার হয়। এতে মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের অধ্যাপক কামরুল আহসান।
ফখরুল বলেন, ‘কারণ এই আওয়ামী লীগ, এই আওয়ামী লীগের অবৈধ সরকার আজকে দেশকে এমন জায়গা নিয়ে গেছে তাদের দুঃশাসনের কারণে, তাদের দুর্ব্যৃত্তায়নের কারণে, তাদের লুটের কারণে যে আজকে একটা এই ধরনের ব্যবস্থা ছাড়া গণতন্ত্রে ফিরে আসার আর কোনো পথ আন্তজাতিক ভাবে গণতান্ত্রিক বিশ্ব দেখতে পারছে না।’
আরও পড়ুন: প্রধানমন্ত্রী নয়, জনগণ সিদ্ধান্ত নেবে তারা যুক্তরাষ্ট্রে যাবে কি না: বিএনপি
‘জনগণকে জাগিয়ে তুলতে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এখন একমাত্র একটাই পথ আবার জনগণকে জাগিয়ে তুলতে হবে, যেভাবে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান সাহেব জাগিয়ে তুলেছিলেন মানুষকে যুদ্ধের জন্যে, যেভাবে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়তে অনুপ্রাণিত করেছিলেন, যেভাবে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া গ্রামেগঞ্জে চারণ কবির মতো গান গেয়ে মানুষকে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনে নামিয়েছিলেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘আজকে সেই একইভাবে আমাদের নেতা তারেক রহমান সাহেব বিদেশ থেকে যিনি ১০ দফা দিয়েছেন, ২৭ দফা দিয়েছেন রাষ্ট্র সংস্কারের জন্য সেই দাবিগুলোকে সঙ্গে নিয়ে, জনগণকে সঙ্গে নিয়ে সমস্ত রাজনৈতিক শক্তিগুলোকে সংগঠিত করে, রাজনৈতিক দলগুলোকে সংগঠিত করে গণতন্ত্রকে এখানে আবার প্রতিষ্ঠা করার জন্য, তাকে এখানে প্রাতিষ্ঠানিক রুপ দেওয়ার জন্য গণতন্ত্রমুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠা করার জন্য আজকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে লড়াই করতে হবে, সংগ্রাম করতে হবে এবং ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের মধ্য দিয়ে আমাদেরকে একটা সত্যিকার অর্থে গণতান্ত্রিক সমাজ ও রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে… এই শাহাদাত বার্ষিকীকে এই হোক শপথ।’
দলের চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা ও সেমিনার কমিটির আহ্বায়ক ইসমাইল জবিউল্লাহর সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরীর সঞ্চালনায় এই সেমিনারে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সেলিমা রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান শাহজাহান ওমর, এনপিপির ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক আনোয়ার উল্লাহ চৌধুরী, অধ্যাপক তাজমেরী এস এ ইসলাম, অধ্যাপক নুরুল আমিন ব্যাপারী, অধ্যাপক লুতফর রহমান বক্তব্য রাখেন।
আরও পড়ুন: যুক্তরাষ্ট্রের অসম্মানজনক ভিসা নীতির জন্য সরকার দায়ী: ফখরুল
মার্কিন ভিসা নীতি: বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন নিশ্চিত করতে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে বলে আশা বিএনপির
আমাদের আন্দোলন দ্রুত চূড়ান্ত পর্যায়ে যাচ্ছে: ফখরুল
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, সরকার উৎখাত করতে বিএনপির চলমান আন্দোলন দ্রুত গতিতে চূড়ান্ত পর্যায়ে যাচ্ছে।
শনিবার এক আলোচনা সভায় তিনি বলেন, বিশ্ব সম্প্রদায় এখন একটি বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার এবং জনগণের ভোটাধিকার পুনরুদ্ধারের পক্ষে কাজ করায় তাদের আন্দোলন ইতোমধ্যে সাফল্য অর্জন করেছে।
তিনি আরও বলেন, গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে গত কয়েক বছর ধরে বাংলাদেশের মানুষ যে আন্দোলন শুরু করেছে তা দ্রুত গতিতে চূড়ান্ত পর্যায়ে যাচ্ছে।
আরও পড়ুন: নির্বাচনের আগে বিএনপি নেতাদের দোষী সাব্যস্ত করতে সরকারের ‘ভয়ংকর মাস্টার প্ল্যান’: ফখরুল
তিনি বলেন, ইতোমধ্যে ১৭ জন রাস্তায় তাদের জীবন দিয়েছেন, লাখ লাখ মানুষকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়েছে এবং অনেককে গুম ও হত্যার শিকার করা হয়েছে, কিন্তু মানুষ গণতন্ত্রের জন্য তাদের সংগ্রাম অব্যাহত রেখেছে।
জিয়াউর রহমানের ৪২তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) আলোচনা সভা ও আলোকচিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করে বিএনপি।
মির্জা ফখরুল বলেন, গণতন্ত্র ও জনগণের ভোটাধিকার পুনরুদ্ধারের জন্য বিএনপির ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের আহ্বানে সাড়া দিয়ে দেশের জনগণ রুখে দাঁড়িয়েছে।
সকল রাজনৈতিক দল, সকল সংগঠন, সকল গণতান্ত্রকামী জনগণকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে এবং আন্দোলনকে চূড়ান্ত পর্যায়ে নিয়ে যেতে হবে। আসুন আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ হই এবং গণতন্ত্র ও গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থা পুনরুদ্ধার এবং ভোটাধিকার রক্ষার চূড়ান্ত লক্ষ্যের দিকে অগ্রসর হই।
ফখরুল বলেন, অবাধ, সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচনের পথ সুগম করে নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের মাধ্যমে সরকারকে অবিলম্বে পদত্যাগ করতে হবে এবং সংসদ ভেঙে দিতে হবে। এই সংকট কাটিয়ে উঠতে এবং জাতিকে বাঁচানোর এটাই একমাত্র উপায়।
আরও পড়ুন: আ.লীগ সরকারের অধীনে নির্বাচন সুষ্ঠু ও বিশ্বাসযোগ্য হতে পারে না: ফখরুল
আগামী নির্বাচন নিয়ে সংকট নিরসনে সরকারের সুর নেমে এসেছে: ফখরুল
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বাংলাদেশের জন্য ঘোষিত মার্কিন ভিসা নীতির কারণে আগামী নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আলোচনার মাধ্যমে রাজনৈতিক সংকট নিরসনে সরকারের সুর নেমে এসেছে।
সোমবার এক আলোচনা সভায় তিনি আরও বলেন, তাদের দল নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে একটি বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচনের মাধ্যমে শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর চায়।
মার্কিন ভিসা নীতির কথা উল্লেখ করে বিএনপি নেতা বলেন, ‘তারা (আ.লীগ) ভিন্ন মোড়কে আবারও একদলীয় বাকশাল শাসন প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছিল। কিন্তু মানুষ ভাবে এক, আর হয় আরেক।’
তিনি আরও বলেন, বর্তমান সরকারের অধীনে আগামী নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য মাত্র কয়েকদিন আগে ক্ষমতাসীন দলের নেতারা খুব উত্তেজনায় কাঁপছিলেন। কিন্তু এখন তাদের উত্তেজনা কমতে শুরু করেছে। তাদের সুর নেমে এসেছে। তারা এখন বলছে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করতে হবে, কারণ তারা অশান্তি চায় না।’
বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ৪২তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে ইন্সটিটিউশন অব ইঞ্জিনিয়ার্স, বাংলাদেশ-এ এ আলোচনা সভার আয়োজন করে বিএনপি।
এর আগে রবিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তার সরকার আর কোনো অস্থিরতা ও সংঘাত চায় না; বরং জনগণের জীবনমান উন্নত করতে চায়।
ফখরুল বলেন, সরকার বিরোধী দলের বিভিন্ন শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে হামলা চালিয়ে সহিংসতার উস্কানি দিচ্ছে। তবে আমরা (বিএনপি) তাদের কর্মসূচিতে বাধা দিচ্ছি না।
তিনি বলেন, তাদের দল দীর্ঘদিন ধরে যে আন্দোলন করে আসছে তা চূড়ান্ত পর্যায়ে এসেছে।
আগামী নির্বাচন নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে হতে হবে বলে তাদের দলের দাবি পুনর্ব্যক্ত করেন এই বিএনপি নেতা।
বিএনপি নেতা বলেন, বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে এবং নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করে সংসদ ভেঙে দিতে হবে।
আরও পড়ুন: মার্কিন ভিসা নীতি ভোটাধিকার পুনরুদ্ধারে জনগণের দীর্ঘদিনের দাবিকে প্রতিফলিত করে: ফখরুল
তিনি বলেন, ‘আপনাকে (প্রধানমন্ত্রী) অবশ্যই পদত্যাগ করতে হবে, কারণ দেশের জনগণ আপনাকে ক্ষমতায় রেখে নির্বাচন সুষ্ঠু হবে বলে মনে করে না। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন হতে হবে।’
ফখরুল আরও বলেন, ‘আমাদের রাজনৈতিক সংস্কৃতি এবং পূর্বের অভিজ্ঞতা থেকে বোঝা যায় যে দলীয় সরকারের অধীনে; বিশেষ করে আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে কখনই অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে না।’
বিএনপির জ্যেষ্ঠ এই নেতা বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে নির্বাচন দেখার নতুন কিছু নেই, কারণ ২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচনে যা ঘটেছে তা জাতি প্রত্যক্ষ করেছে।
ফখরুল বলেন, ‘আমরা স্পষ্টভাবে বলতে চাই যে আমরা শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর চাই। আমরা শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে চাই। আমরা সেই ব্যবস্থা পুনরুদ্ধার করতে চাই যেখানে জনগণ তাদের ভোট দিতে পারবে।’
তিনি বলেন, তারাও চান একটি নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন দ্বারা পরিচালিত হোক, যাতে জনগণ স্বাধীনভাবে তাদের প্রতিনিধি নির্বাচন করতে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারে।
বিভিন্ন অপপ্রচার ও সহিংসতা চালিয়ে সরকারের ফাঁদে পা না দেওয়ার জন্যও বিএনপি নেতা তার দলের সহকর্মীদের সতর্ক করেছেন।
তিনি বলেন, ‘তারা (সরকার) তাদের করা অগ্নিসংযোগের সহিংসতার পরে আমাদের ওপর দোষ চাপানোর চেষ্টা করবে। অতীতেও তারা একই কাজ করেছে। তাই সবাইকে খুব সাবধানে থাকতে হবে। আমরা শান্তিপূর্ণ ও গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে আমাদের আন্দোলন চালিয়ে যাব।’
যুক্তরাষ্ট্র থেকে হঠাৎ করে রেমিট্যান্স প্রবাহ বৃদ্ধির বিষয়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন সম্পর্কে ফখরুল বলেন, এটা আশ্চর্যজনক। ‘আমেরিকা থেকে রেমিট্যান্স বৃদ্ধির পিছনে কী জাদু আছে? লোকে বলছে চোরেরা সেই টাকা ফেরত আনছে, যেগুলো তারা চুরি করে আমেরিকা পাচার করেছিল।’
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ বিমানের এয়ারবাস কেনার সিদ্ধান্তের মূল কারণ কমিশন: ফখরুল
আন্দোলন দমন করতে সরকার সহিংসতা ছড়ানোর চেষ্টা করছে: ফখরুল
দাবি একটাই, শেখ হাসিনার পদত্যাগ: মির্জা ফখরুল
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, দাবি একটাই, হাসিনার পদত্যাগ। ফয়সালা হবে রাজপথে। সেই বাংলাদেশকে ফিরিয়ে দিতে হবে। যেই বাংলাদেশ আমরা মুক্তিযুদ্ধ করে পেয়েছি, গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ। শনিবার (২০ মে) বিকালে লালমনিরহাট কালেক্টরেট মাঠে জেলা বিএনপি আয়োজিত জনসভায় তিনি এসব কথা বলেন।
এসময় মির্জা ফখরুল বলেন, ভোট ডাকাত সরকার ১০ টাকা কেজি চাল খাওয়াতে চেয়ে পারেনি, সারের দাম কয়েক দফায় কয়েকগুণ বাড়িয়েছে, আজ মানুষ পেঁয়াজ কিনতে পারছে না, ডিম কিনতে পারছে না। দ্রব্যের দাম বাড়িয়ে আওয়ামী লীগ দেশের সম্পদ লুটপাট করে বিদেশে পাচার করে দেশের অর্থনীতি ধ্বংস করেছে।
তিনি বলেন, আমাদের দলের প্রায় ৪০ লাখ নেতাকর্মীর নামে মিথ্যা মামলা করা হয়েছে। সাবেক এমপিসহ হাজার হাজার নেতাকর্মীকে গুম করেছে। ক্রসফায়ারের নামে নেতাকর্মীদের হত্যা করেছে আওয়ামী লীগ সরকার। অসংখ্য শিশু বাবার জন্য, অসংখ্য স্ত্রী তার স্বামীর জন্য, অনেক মা তার সন্তানের আগমনের প্রতিক্ষা করছে। শেখ হাসিনা সরকার আমাদের এমন দেশ উপহার দিয়েছে।
আরও পড়ুন: 'আপনার সময় শেষ': সরকারের প্রতি ফখরুল
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ উন্নয়নের কথা বলে। সে উন্নয়ন কোথায়? উন্নয়ন তাদের ঘরে। যাদের সাইকেল ছিল না সেই নেতা এখন গাড়ি চালায়। ভূমিহীন নেতারা এখন অসংখ্য আলিসান বাড়ি-গাড়ির মালিক। এই সব তাদের উন্নয়ন। দেশকে ধ্বংস করে নিজেদের উন্নয়ন করেছে আওয়ামী লীগ সরকার। আমরা বলেছি যে নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া এ দেশে কোনো নির্বাচন হবে না। এজন্য শেখ হাসিনা সরকারকে আগে পদত্যাগ করতে হবে। নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায় সরকার গঠন করে নির্বাচন কমিশন গঠন করতে হবে। নতুন আইন করেছে, নির্বাচন কমিশন কোনো নির্বাচন বাতিল করতে পারবে না। এমন বানানো নির্বাচন কমিশন আমরা চাই না।
ফখরুল বলেন, যারা আমাদের ভোটাধিকার ও গণতন্ত্র কেড়ে নিয়েছে। তাদের আর ক্ষমতায় থাকার সময় নেই। তাদেরকে বিতাড়িত করার সময় এসেছে। ‘কোনঠে বাহে জাগো সবাই’। দাবি একটাই, শেখ হাসিনার পদত্যাগ।
সরকার পতনের আন্দোলনে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান বিএনপি মহাসচিব।
বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির রংপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক জেলা বিএনপির সভাপতি সাবেক উপমন্ত্রী অধ্যক্ষ আসাদুল হাবিব দুলুর সভাপতিত্বে জনসভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বিএনপির সহ আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা।
বেগম কালেদা জিয়ার শর্তহীন মুক্তি, দ্রব্যমুল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদে ও ১০ দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে অনুষ্ঠিত জনসভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- বিএনপির কেন্দ্রীয় সদস্য ব্যারিস্টার হাসান রাজিব প্রধান, জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি রোকন উদ্দিন বাবুল, যুগ্ন সম্পাদক একেএম মমিনুল হক, সাংগঠনিক সম্পাদক আফজাল হোসেনসহ বিভিন্ন সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা।
আরও পড়ুন: রাষ্ট্রদূতদের ‘অতিরিক্ত পুলিশ এসকর্ট’ প্রত্যাহার সরকারের ‘চরম দায়িত্বহীনতা’: ফখরুল
এটা সরকারের সুদূরপ্রসারী রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র: খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মামলা প্রসঙ্গে ফখরুল
ঘূর্ণিঝড় মোখা: উপকূলবাসীদের পাশে দাঁড়াতে নেতাকর্মীদের আহ্বান বিএনপির
অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় মোখা উপকূলীয় জেলা কক্সবাজার অতিক্রম করতে শুরু করায় উপকূলবাসীদের পাশে দাঁড়াতে সব পর্যায়ের দলীয় নেতাকর্মীদের আহ্বান জানিয়েছে বিএনপি।
দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘চরম প্রাকৃতিক দুর্যোগের এই সময়ে জনগণের পাশে দাঁড়াতে এবং উপকূলবাসীকে সম্ভাব্য সব ধরনের সহায়তা দেওয়ার জন্য আমরা ইতিমধ্যেই আমাদের সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিয়েছি।’
আরও পড়ুন: অবিলম্বে ডিএসএ বাতিল ও এই আইনের সব মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে বিএনপি
বিএনপি চেয়ারপার্সনের গুলশান কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে রবিবার এ কথা বলেন তিনি।
তিনি বলেন, দেশের মানুষ অতীতের মতো সাহসিকতার সঙ্গে প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলা করবে।
ফখরুল বলেন, ‘একই সঙ্গে আমরা সরকারকে রাজনীতিকরণের ঊর্ধ্বে উঠে সব মানুষের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানাই।’
তিনি বলেন, টেকনাফ, কক্সবাজার ও চট্টগ্রামের মানুষ ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব অনুভব করতে শুরু করেছে। যা বিকালে বাংলাদেশের উপকূল অতিক্রম করতে পারে।
বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের (বিএমডি) সর্বশেষ বুলেটিন অনুযায়ী, ঘূর্ণিঝড় মোখা ঘণ্টায় ২১৫ কিলোমিটার পর্যন্ত বেগে উপকূলীয় জেলা কক্সবাজার ও প্রতিবেশি দেশ মিয়ানমারের উত্তর উপকূল অতিক্রম করতে শুরু করেছে।
আরও পড়ুন: দেশব্যাপী ১৯, ২০, ২৬ ও ২৭ মে সমাবেশের ঘোষণা দিয়েছে বিএনপি
শনিবার ঢাকায় ‘বড় শোডাউন’ করবে বিএনপি
জলবায়ু পরিবর্তন ও নদী রক্ষায় নিষ্ক্রিয়তার জন্য সরকারের সমালোচনা ফখরুলের
বৈশ্বির্ক জলবায়ু পরিবর্তনে বিরুপ প্রভাব থেকে বাংলাদেশের পরিবেশ রক্ষায় সরকারের কোনো পরিকল্পনা নেই বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
শুক্রবার বিএনপি আয়োজিত 'জলবায়ু পরিবর্তন: বাংলাদেশ ও নদী'- শীর্ষক সেমিনারে তিনি বলেন, পরিবেশ দূষণ ইস্যুতে সরকারের অবহেলার কারণে ঢাকা দেশের অন্যতম দূষিত শহরে পরিণত হয়েছে।
এসব সমস্যা সমাধানে এবং মানুষের ভবিষ্যৎ বা জীবন-জীবিকার উন্নয়নে সরকারের কোনো পরিকল্পনা নেই বলে অভিযোগ করেন এই বিএনপি নেতা।
তিনি বলেন, ‘সাভার-ধামরাইতে ছোট ছোট যে নদীগুলো ছিলো সেগু্লো প্রায় মরে গেছে। আপনারা দেখেছেন যে, তুরাগ নদীর পাশে সরকারের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সযোগিতায় ও তাদের সমর্থনের ফলোশ্রুতিতে বিভিন্ন ক্লাব গড়ে উঠেছে। সেই ক্লাবগুলো একেবারেই নদীর ওপরে নদী ভরাট করে গড়ে উঠেছে।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘পানি কমে যাচ্ছে, নদী দখল করা হচ্ছে-এটার বিষয়ে যা কিছু খবর নেবেন-এই সরকারের সঙ্গে যারা জড়িত তারাই এই কাজগুলো করছে। অথচ তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থাই নেয়া হচ্ছে না।’
তিনি পরিবেশ রক্ষায় জনমুখী সরকারের আহ্বান জানান।
আরও পড়ুন: স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রবিরোধী বলে আওয়ামী লীগকে আর ক্ষমতায় আসতে দেওয়া যাবে না: ফখরুল
পরিবেশ রক্ষায় বিএনপির শাসনামলে প্লাস্টিকের ব্যাগ নিষিদ্ধ, খাল খনন কর্মসূচি এবং বেবি ট্যাক্সি নিষিদ্ধসহ বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরেন ফখরুল।
তিনি জোর দিয়ে বলেন, পরিবেশ রক্ষার জন্য একটি জনমুখী সরকার প্রয়োজন এবং জবাবদিহিতার জন্য গণতন্ত্র প্রয়োজন।
ভারতের উজানে বাঁধ নির্মাণের ক্ষতিকর দিক এবং প্রকৃতি ও জীববৈচিত্র্যের জন্য হুমকি নিয়েও এসময় আলোচনা করা হয়।
অন্যান্য বক্তাদের মধ্যে ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, যিনি সরকারের ফারাক্কা চুক্তি চুক্তি এবং গ্যারান্টি ক্লজ না রাখার সমালোচনা করেন।
সেমিনারে বক্তব্য রাখেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক জহির উদ্দিন স্বপন ও সেভ দ্য সুন্দর ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান শেখ ফরিদুল ইসলাম।
আরও পড়ুন: সরকার মিথ্যা কথা বলে জনগণকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে: মির্জা ফখরুল
খালেদা জিয়ার অসুস্থতা নিয়ে মন্তব্য তাকে কারাগারে ফিরিয়ে নেওয়ার ষড়যন্ত্র: ফখরুল