বিএনপি
শনিবারের মধ্যে খালেদাকে বিদেশ যেতে না দিলে আন্দোলন: বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা
আগামী শনিবারের মধ্যে সরকার খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে যেতে না দিলে আন্দোলনে যাওয়ার হুমকি দিয়েছেন বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা।
খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসার দাবিতে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মঙ্গলবার বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের (বিজেএএফ) আয়োজিত এক সমাবেশে বিজেএএফ-এর সম্পাদক অ্যাডভোকেট ফজলুর রহমান বলেন, আমরা সরকারকে চার দিন সময় দিচ্ছি- বুধ, বৃহস্পতি, শুক্র ও শনিবার (আমাদের দাবি পূরণের জন্য)। অন্যথায় আমরা আইনজীবীরা রবিবার সারা দেশে অনশন করব।
তিনি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, দাবি মেনে নিতে সরকারকে বাধ্য করতে তারা ধীরে ধীরে আন্দোলন জোরদার করবে।
ফজলুর রহমান বলেন, এমন সময় আসবে যখন দেশের মানুষ মিছিল নিয়ে রাজপথে নামবে। সেই দিন বেশি দূরে নয়। আসুন খালেদা জিয়াকে বিদেশে নিয়ে যাওয়ার আন্দোলন শুরু করি।
খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে পাঠানোর আইনি বিকল্প খুঁজে বের করতে আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের প্রতি আহ্বান জানিয়ে ফজলুর রহমান বলেন, আইন মানুষের জীবনের চেয়ে বড় নয়।
আরও পড়ুন: এবার মুরাদের গ্রেপ্তার ও শাস্তি দাবি বিএনপির
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, সরকার ফৌজদারি কার্যবিধির (সিআরপিসি) ৪০১ ধারায় বিএনপি চেয়ারপার্সনকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার অনুমতি দিতে পারে।
ফখরুল বলেন, আইন নয়, দখলদার সরকার এখানে বাধা।
খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসার দাবিতে বিএনপির সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করায় আইনজীবীদের ধন্যবাদ জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, এই সমাবেশ আমাদের আশার সঞ্চার করেছে। আমরা এই দাবিতে রাস্তায় নেমেছি। সারাদেশের আইনজীবীরা আজ (মঙ্গলবার) আন্দোলন করার ঘোষণা দিয়ে আমাদের অনুপ্রাণিত করেছেন। আমরা নিশ্চয়ই সব গণতান্ত্রিক শক্তিকে নিয়ে এক প্রবল গণআন্দোলনের মাধ্যমে খালেদা জিয়াকে মুক্ত করে বিদেশে পাঠাতে পারব।
খালেদা জিয়ার শারিরীক অবস্থা সম্পর্কে ফখরুল বলেন, তিনি এত অসুস্থ যে আমি বলে বোঝাতে পারব না। তিনি এখন জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে। অবিলম্বে বিদেশের যেকোনো উন্নত চিকিৎসা কেন্দ্রে নিয়ে তার চিকিৎসা করা দরকার।
এবার মুরাদের গ্রেপ্তার ও শাস্তি দাবি বিএনপির
পদত্যাগপত্র জমা দেয়ার কয়েক ঘণ্টা পর নারী ও জিয়া পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে অশালীন মন্তব্যের জন্য তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসানকে গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছে বিএনপি।
মঙ্গলবার নয়াপল্টনে অবস্থিত বিএনপি কার্যালয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ‘পদত্যাগই যথেষ্ট নয়। গ্রেপ্তার করে তার (মুরাদ) বিচার করতে হবে।’
বিএনপির এই নেতা আরও বলেন, ডা.মুরাদের মতো একজন ব্যক্তি রাজনীতি করতে অক্ষম।
রিজভী বলেন, ‘সে (মুরাদ) অশালীন মন্তব্য করেছে। তাকে কেবল মন্ত্রিসভা থেকে নয়, (ক্ষমতাসীন) দলের সকল স্তরে তার পদ থেকে অপসারণ করতে হবে।’
তিনি বলেন,‘আপত্তিকর মন্তব্যের জন্য মুরাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়া যেতে পারে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘তার বিচার হওয়া উচিত এবং শাস্তি হওয়া উচিত।’
আরও পড়ুন: মুরাদের সাম্প্রতিক কিছু বক্তব্যে দল ও সরকার বিব্রতকর অবস্থায় পড়েছে: তথ্যমন্ত্রী
এদিকে নারীদের নিয়ে অশোভন ও অশালীন মন্তব্যের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করেন মুরাদ হাসান। চাকরি ছাড়ার ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রীর কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেন এই প্রতিমন্ত্রী।
সম্প্রতি নারীদের প্রতি বিভিন্ন অসম্মানজনক মন্তব্যের জন্য মুরাদ বিভিন্ন মহলে ক্রমবর্ধমান সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন। তার অশালীন মন্তব্য সম্বলিত বেশ কয়েকটি অডিও এবং ভিডিও গত কয়েকদিন ধরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
অভিনেতা মামনুন হাসান ইমন ও অভিনেত্রী মাহিয়া মাহির সঙ্গে তার দুই বছর আগের একটি ফোনালাপ সম্প্রতি সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। সেই অডিও ক্লিপে মুরাদ অভিনেত্রীকে বিভিন্ন ‘অপমানজনক মন্তব্য’ করেছিলেন, তাকে হুমকি দিয়েছিলেন এবং তাকে অশালীন প্রস্তাব দিয়েছিলেন।
সোমবার সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সাম্প্রতিক অবমাননাকর মন্তব্যের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তথ্য প্রতিমন্ত্রী মুরাদ হাসানকে মঙ্গলবারের মধ্যে মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করতে বলেছেন।
সোমবার বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর মুরাদকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাওয়ার এবং নারী ও জিয়া পরিবারের বিরুদ্ধে তার ‘রাজনৈতিকভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, জাতিগত ও অবমাননাকর’ মন্তব্য প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন।
আরও পড়ুন: নারীদের কাছে ‘ক্ষমা’ চাইলেন মুরাদ
প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশের পর প্রতিমন্ত্রী মুরাদের পদত্যাগ
তথ্য প্রতিমন্ত্রীর মন্তব্য নিয়ে সরকারের অবস্থান জানতে চায় বিএনপি
জিয়া পরিবারের বিরুদ্ধে তথ্য প্রতিমন্ত্রী ড. মুরাদ হাসানের আপত্তিকর মন্তব্যের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে তাঁর অবস্থান স্পষ্ট করার আহ্বান জানিয়েছে বিএনপি।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, একজন কুখ্যাত ব্যক্তি জিয়া পরিবারের বিরুদ্ধে সোশ্যাল মিডিয়ায় অত্যন্ত জঘন্য, অবমাননাকর ও অশালীন প্রচারণা চালাচ্ছে। আমি শুনেছি তিনি সম্ভবত জামালপুরের সরিষাবাড়ীর একজন ডাক্তার ছিলেন। তার জন্য নিন্দা জানাই।
তিনি বলেন, প্রতিমন্ত্রী একটি ‘বিপজ্জনক’ মন্তব্য করেছেন। প্রতিমন্ত্রী বলেছেন, তিনি প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে সবকিছু করেন এবং তিনি যা বলেন তা তিনি জানেন।
স্বৈরাচারী শাসক এইচ এম এরশাদের পতনের স্মরণে গণতন্ত্র দিবস উপলক্ষে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
আরও পড়ুন: প্রতিমন্ত্রী মুরাদের পদত্যাগ চায় বিএনপি
বিএনপি নেতা বলেন, এই বৈঠক থেকে আমি প্রধানমন্ত্রীর কাছে জানতে চাই এটা সত্য নাকি মিথ্যা। আপনাকে ব্যাখ্যা করতে হবে। কেননা প্রধানমন্ত্রী হিসেবে জনগণের নিরাপত্তা এবং তাদের মর্যাদা রক্ষা করা আপনার দায়িত্ব। একই সঙ্গে, আমরা আপনার সরকারের অবস্থানও জানতে চাই, যখন একজন মন্ত্রী আপনাকে (প্রধানমন্ত্রী) নিয়ে মিডিয়ায় এমন জঘন্য বক্তব্য দেন।
বর্তমান সরকার দেশের সংস্কৃতি, সৌজন্যবোধ ও দীর্ঘ ঐতিহ্যকে ধ্বংস করছে বলেও অভিযোগ করেন ফখরুল। তিনি বলেন, ‘আপনারা ইতোমধ্যে দেশের রাজনীতিকে ধ্বংস করে দিয়েছেন। আপনারা এখন কি আমাদের মা-বোনদের ন্যূনতম সম্মানও জানাবেন না?’
এসময় ড. মুরাদের অশালীন মন্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানান ফখরুল। তিনি বলেন, একাত্তরে মুক্তিযোদ্ধারা বাংলাদেশকে স্বাধীন করেছিল এবং গণতান্ত্রিক, স্বাধীন ও সভ্য দেশ গড়তে ছাত্রনেতারা নব্বই দশকে স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে গণঅভ্যুত্থান ঘটিয়েছিলেন।
আরও পড়ুন: সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করতে ফের আন্দোলনের হুঁশিয়ারি বিএনপির
ছাত্রদলে মুরাদের সম্পৃক্ততা
ফখরুল আক্ষেপ করে বলেন, ডক্টর মুরাদ একসময় বিএনপির ছাত্র সংগঠন ছাত্রদলের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তিনি ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজে ছাত্রদলের প্রচার সম্পাদক ছিলেন। পরে তিনি ছাত্রলীগে যোগ দেন।
তবে, দর্শক গ্যালারিতে উপস্থিত ঢাকা দক্ষিণ মহানগর যুবদলের আহ্বায়ক গোলাম মাওলা শাহীন তাৎক্ষণিকভাবে ফখরুলের মন্তব্যের প্রতিবাদ করেন এবং তাকে তা প্রত্যাহার করার আহ্বান জানান। কারণ তিনি দাবি করেন যে মুরাদ কখনো ছাত্রদলের সঙ্গে জড়িত ছিলেন না।
প্রতিমন্ত্রী মুরাদের পদত্যাগ চায় বিএনপি
তথ্য প্রতিমন্ত্রী ড. মুরাদ হাসানকে জনসমক্ষে ক্ষমা চেয়ে পদত্যাগের দাবি জানিয়েছে বিএনপি। নারী ও জিয়া পরিবারের বিরুদ্ধে করা তার ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও অবমাননাকর’ মন্তব্য প্রত্যাহারেরও দাবি জানিয়েছে দলটি।
সোমবার এক বিবৃতিতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ দাবি জানান।
এসময় তিনি বলেন, ড. মুরাদ হাসানকে জনসমক্ষে ক্ষমা চেয়ে পদত্যাগ করতে হবে। অন্যথায় উপযুক্ত সময়ে তাকে যোগ্য জবাব দেয়া হবে।
আরও পড়ুন: নেতিবাচক রাজনীতি থেকে বিএনপিকে বেরিয়ে আসার আহ্বান পরিকল্পনামন্ত্রীর
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া প্রতিমন্ত্রীর ‘বিকৃত, অশালীন ও নারীবিদ্বেষী মন্তব্যে’র বিরুদ্ধে তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন মির্জা ফখরুল।
তিনি রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালনকারী ব্যক্তির এ ধরনের জঘন্য ও অশোভন আচরণ আমলে নিয়ে অবিলম্বে বিচারের দাবি জানিয়েছেন।
বিএনপির জ্যেষ্ঠ এই নেতা বলেন, জাতীয় পতাকা বহনকারী একজন ‘পাগল’ ব্যক্তির এ ধরনের অবমাননাকর মন্তব্যে সমগ্র জাতি হতবাক।
ফখরুল আরও বলেন, বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া যখন জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে,তখন জিয়া পরিবারের একজন নারী সদস্যসহ অন্যান্য সদস্যদের বিরুদ্ধে এমন অশালীন ও জঘন্য অপপ্রচার ইতোমধ্যেই নারী নেত্রীসহ দেশের সব মহলের বিদ্বেষের জন্ম দিয়েছে।
আরও পড়ুন: খালেদা জিয়ার খারাপ কিছু হলে সব দায় সরকারকে নিতে হবে: বিএনপি
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশিত এক সাক্ষাৎকারে প্রতিমন্ত্রী বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে ‘জারজ’ আখ্যা দেন এবং তারেকের মেয়ে জাইমা রহমান প্রতি রাতে একজন কালো মানুষের সঙ্গে ছাড়া ঘুমাতে পারেন না বলে অভিযোগ করেন।
খালেদা জিয়াকে বিদেশে যেতে না দিলে কোটি মানুষ রাজপথে নামবে: ফখরুল
খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে যেতে না দিলে কোটি কোটি মানুষ রাজপথে নামবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে বিএনপি।
দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘আমাদের নেত্রী খালেদা জিয়াকে মুক্ত করে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার না করলে কোটি কোটি মানুষ রাজপথে নামবে। তাই, নিজেদের স্বার্থেই দেরি না করে তাকে (খালেদাকে) বিদেশে পাঠানোর ব্যবস্থা নিন।’
রবিবার বিএনপির চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসার দাবিতে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দল আয়োজিত এক কর্মসূচিতে এসব কথা বলেন মির্জা ফখরুল।
সমাবেশে তিনি অভিযোগ করেন, সরকার বিনা চিকিৎসায় খালেদা জিয়াকে হত্যার চেষ্টা চালিয়ে বাংলাদেশের অস্তিত্বকে ঝুঁকিতে ফেলার ‘ষড়যন্ত্র’ করছে।
এসময় ফখরুল বলেন,‘আমাদের নেত্রীকে মুক্ত করুন, যাতে তিনি চিকিৎসার জন্য বিদেশে যেতে পারেন এবং সুস্থ হয়ে দেশে ফিরতে পারেন। অন্যথায়, আপনারা পালানোর পথও খুঁজে পাবেন না এবং আপনাদের অবশ্যই জনগণের আদালতে দাঁড়াতে হবে।’
ফখরুল আরও বলেন, ‘খালেদা জিয়াকে পুরাতন ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের একটি স্যাঁতসেঁতে, পরিত্যক্ত ও জরাজীর্ণ ভবনে দুই বছরের বেশি সময় ধরে রাখা হয়েছিল, যার কারণে তিনি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েছেন।’
তিনি বলেন,‘এই অসুস্থতা এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে এভারকেয়ার হাসপাতালের ডাক্তার এবং অন্যান্য চিকিৎসকরা বলছেন তাকে বিদেশে উন্নত চিকিৎসা কেন্দ্রে না নিয়ে গেলে তার জীবন বাঁচানো কঠিন হবে।’
আরও পড়ুন: খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে সিলেটে কাফনের কাপড় পড়ে ছাত্রদলের মিছিল
ছাত্রদের লাল কার্ড দেখানো
সড়ক বিশৃঙ্খলা রোধে সরকারের ব্যর্থতার বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীরা রাস্তায় নেমেছে মন্তব্য করে ফখরুল বলেন,‘আমি পত্রিকায় দেখেছি, তারা (ছাত্ররা) সরকারকে লাল কার্ড দেখিয়েছে। শিক্ষার্থীরা কেন রাস্তায় নামছে? তার কারণ আপনারা কথা রাখেন নি!’
তিনি আরও বলেন, ‘নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের সময় শিক্ষার্থীদের সড়কে শৃঙ্খলা বজায় রাখার আশ্বাস দিয়েছিল সরকার বলে ফখরুল বলেন, আপনারা সঠিকভাবে সড়ক নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন না, এটা আপনাদের ব্যর্থতা।’
বিএনপির এই নেতা বলেন,‘জনগণ সরকারের ওপর চরম ক্ষুব্ধ, কারণ কোনো কিছুর ওপর সরকারের নিয়ন্ত্রণ নেই। মানুষের জীবনের কোনো মূল্য নেই।’
আওয়ামী লীগ এখন বিএনপির ভূতে ভীত
ফখরুল বলেন, ‘ওবায়দুল কাদের বিএনপির ভূত ছাড়া আর কিছু দেখেন না। তিনি সব সময় বিএনপির কথা বলেন। তিনি বিএনপিকে নিয়ে খারাপ স্বপ্ন দেখেন।’
বিএনপির এই নেতা বলেন,‘ওবায়দুল কাদের বিএনপির অস্তিত্ব দেখতে না পেলেও দলের ভয়ে সব সময় বিএনপিকে নিয়ে নানা ধরনের মন্তব্য করেন।’
তিনি শ্রমিকদলের নেতাকর্মীদের আরও সক্রিয় হয়ে তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় সোচ্চার হতে সহকর্মীদের উদ্বুদ্ধ করার আহ্বান জানান।
আরও পড়ুন: খালেদা জিয়াকে ‘হত্যার’ ষড়যন্ত্র করছে সরকার: ফখরুল
নির্বাচন ব্যবস্থার পরিবর্তন
ফখরুল বলেন, ‘সরকার নির্বাচন ব্যবস্থা ধ্বংস করায় সাম্প্রতিক ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সহিংসতায় বহু মানুষ মারা গেছে।
তিনি বলেন, ‘সুষ্ঠু ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন না হওয়ায় মানুষ ভোট দিতে ভোট কেন্দ্রে যাচ্ছে না।’
বিএনপির এই জ্যেষ্ঠ নেতা আরও বলেন, ‘বর্তমান নির্বাচন ব্যবস্থার পরিবর্তন করতে হবে। বর্তমান নির্বাচন কমিশনারকে অপসারণ করাই যথেষ্ট নয় কারণ সরকারকেও সরাতে হবে। জনগণের ভোটে সরকার প্রতিষ্ঠার জন্য একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনের অধীনে আগামী নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার গঠন করতে হবে।
সরকার উন্নয়নের কথা বললেও সাধারণ মানুষের অবস্থার কোনো উন্নতি হয়নি বলে মন্তব্য করে ফখরুল বলেন,‘বরং দারিদ্রের সংখ্যা দুই কোটি থেকে ছয় কোটি হয়েছে। এ কারণেই আমরা, দেশের মানুষ, ক্ষমতার পরিবর্তন চাই। আর তাই এই সরকারকে ক্ষমতা থেকে সরাতে হবে।’
প্রসঙ্গত, ৭৬ বছর বয়সী সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া ১৩ নভেম্বর থেকে বিভিন্ন স্বাস্থ্য জটিলতার জন্য এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
গত ২৮ নভেম্বর বিএনপি চেয়ারপারসনের মেডিকেল বোর্ডের সদস্যরা জানান, লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে অবিলম্বে বিদেশে নিয়ে যেতে হবে।
আরও পড়ুন: খালেদা জিয়ার খারাপ কিছু হলে সব দায় সরকারকে নিতে হবে: বিএনপি
খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য আর তারেক রহমানের শাস্তি নিয়েই বিএনপি’র রাজনীতি: তথ্যমন্ত্রী
তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘বেগম খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য আর তারেক রহমানের শাস্তি -এ দুটি নিয়েই বিএনপি’র রাজনীতি আবর্তিত। এর বাইরে তারা যেতে পারছে না। এটি তাদের জন্য দুঃখজনক।’রবিবার সচিবালয়ে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় সভাকক্ষে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।‘খালেদা জিয়া না থাকলে আওয়ামী লীগ থাকবে না’- বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের এমন মন্তব্যের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘মির্জা ফখরুল সাহেব কথা বলতে গিয়ে কখন কোনটা বেফাঁস বলে ফেলছেন, এই বক্তব্যই তার প্রমাণ। বেগম জিয়া রাজনীতিতে আসার বহু বছর, প্রায় চল্লিশ দশক আগে আওয়ামী লীগের জন্ম, আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে দেশ স্বাধীন হয়েছে। তার এ ধরনের কথা অবান্তর। কোনো ইস্যু না পেয়ে বিএনপি মাঠ গরম করার জন্য নানা ধরনের কথা বলছে। তারা তো জনগণের জন্য রাজনীতি করে না, তাদের রাজনীতি পুরোটাই বেগম খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য নিয়ে আর তারেক রহমানের শাস্তি নিয়ে আবর্তিত। আমরা চাই এবং স্রষ্টার কাছে প্রার্থনা করি, বেগম খালেদা জিয়া সুস্থ হোন, খুব সহসাই সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে যান।’
আরও পড়ুন: ছাত্রদের ওপর ভর করে দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা হচ্ছে: তথ্যমন্ত্রীরাজপথে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন বিষয়ে প্রশ্নে মন্ত্রী হাছান মাহমুদ শিক্ষার্থীদেরকে যাতে কেউ রাজনীতির ক্রীড়ানক হিসেবে ব্যবহার করতে না পারে সেজন্য সতর্ক থাকার অনুরোধ জানান। তিনি বলেন, ‘ছাত্র-ছাত্রীরা যে নিরাপদ সড়কের জন্য আন্দোলন করছে তার প্রতি আমরা সহানুভূতিশীল। প্রধানমন্ত্রী তাদের প্রতি সহানুভূতিশীল হয়ে সারাদেশে বিআরটিসি বাসে হাফভাড়া কার্যকর করেছেন। বেসরকারি বাস মালিক সমিতিও ঢাকায় এটি কার্যকর করেছে, চট্টগ্রামেও কার্যকর হচ্ছে বলে জেনেছি। কিন্তু রাস্তাঘাট আটকিয়ে মানুষের ভোগান্তি ঘটিয়ে আন্দোলন কতটুকু যৌক্তিক, সেই প্রশ্নও থেকে যায়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেখা যায়, শিক্ষার্থীদের মায়েরাও এখানে ঢুকে পড়েছেন, ৩৫ বছর বয়সী একজন রাজনৈতিক নেত্রী স্কুল পোশাকে আন্দোলন করছেন। অর্থাৎ সেখানে রাজনীতি ঢুকে গেছে। এ থেকে শিক্ষার্থীদের সতর্ক থাকতে হবে।’
আরও পড়ুন: বিএনপির মশাল মিছিল দেখে জনগণ আতঙ্কিত হয়: তথ্যমন্ত্রী
বিএনপিপন্থী চিকিৎসকেরাও খালেদা জিয়ার চিকিৎসা নিয়ে রাজনীতি করছেন: তথ্যমন্ত্রী
খালেদা জিয়ার জন্য ‘আইনি উপায়’ খোঁজা হচ্ছে: আইনমন্ত্রী
বিএনপির চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার অনুমতি দেয়ার আইনি উপায় খোঁজা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।
তিনি বলেছেন, ‘এখানে যখন অনেক আবেদন এসেছে, আইনজীবীদের কাছ থেকেও আবেদন এসেছে। সেজন্য কিছু করা যায় কি না, সেটার কোনো উপায় আছে কি না, সব দিক দেখেই এটার (খালেদা জিয়ার আবেদন) একটা সুচিন্তিত সিদ্ধান্তে আসাটা আমার মনে হয় সমীচীন। এ ক্ষেত্রে আইনের যেন কোনো ব্যত্যয় না হয় সে বিষয়েও সতর্ক রয়েছি।’
রাজধানীর বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে এক অনুষ্ঠানে যোগদান শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে আইনমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
৭৬ বছর বয়সী সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া স্বাস্থ্যগত বিভিন্ন জটিলতা নিয়ে ১৩ নভেম্বর থেকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত হওয়ায় খালেদা জিয়ার মেডিকেল বোর্ডের সদস্যরা রবিবার বলেছেন, উন্নত চিকিৎসার জন্য তার দ্রুত বিদেশ যাওয়া প্রয়োজন।
আরও পড়ুন: খালেদা জিয়া এখন মুক্ত, তিনি সরকারি হেফাজতে নেই: আইনমন্ত্রী
খালেদা জিয়ার পরিবারের পক্ষ থেকে তার ছোট ভাই শামীম ইস্কান্দার উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে বিদেশে যাওয়ার অনুমতি দেয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে ১১ নভেম্বর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে একটি আবেদন জমা দেন।
তবে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, খালেদা জিয়া কারাগারে ফিরে নতুন করে আবেদন করলে সরকার তার আবেদন বিবেচনা করবেন।
এরপর ২৮ নভেম্বর সংসদে আইনমন্ত্রী বলেন, সরকারি হেফাজতে না থাকায় খালেদা এখন মুক্ত।
তিনি আরও বলেন, দেশ ত্যাগ না করাসহ কয়েকটি শর্তের ভিত্তিতে ফৌজদারি কার্যবিধির ৪০১ ধারায় খালেদাকে সাময়িকভাবে মুক্তি দেয়া হয়েছে, তাই দেশে ফেরার পর নতুন করে পিটিশন দাখিল না করা পর্যন্ত তাকে বিদেশে যাওয়ার অনুমতি দেয়ার কোনো বিধান আইনে নেই।
বিএনপি নেতারা এবং বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা অবশ্য দীর্ঘদিন ধরে যুক্তি দিয়ে আসছেন যে ফৌজদারি কার্যবিধির ৪০১ ধারায় এ বিষয়ে যেকোনো সিদ্ধান্ত নেয়ার সীমাহীন ক্ষমতা সরকারের রয়েছে।
বিএনপির চেয়ারপার্সনের লিভার সিরোসিস সমস্যার চিকিৎসার জন্য বাংলাদেশে কোনো উন্নত চিকিৎসা কেন্দ্র না থাকায় তাকে বিদেশ যাওয়ার অনুমতি দেয়ার দাবিতে ২৫ নভেম্বর থেকে বিভিন্ন কর্মসূচিও পালন করছে দলটি।
আরও পড়ুন: খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসার বিষয়ে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে: আইনমন্ত্রী
খালেদা জিয়াকে আইন অনুযায়ী সুবিধা দেয়া হচ্ছে: আইনমন্ত্রী
সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করতে ফের আন্দোলনের হুঁশিয়ারি বিএনপির
উন্নত চিকিৎসার জন্য অবিলম্বে খালেদা জিয়াকে বিদেশে নেয়ার অনুমতি না দিলে সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করার আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছে বিএনপি।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এক সমাবেশে বলেন, আমাদের নেত্রী খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে এবং সময়ক্ষেপণ না করে তাকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর ব্যবস্থা নেয়ার ব্যাপারে আমরা স্পষ্টভাবে সরকারের কাছে জানতে চাই।
লিভার সিরোসিস ধরা পড়ায় বিএনপির চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসার দাবিতে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সমাবেশে এই মন্তব্য করেন তিনি।
আরও পড়ুন: খালেদা জিয়ার খারাপ কিছু হলে সব দায় সরকারকে নিতে হবে: বিএনপি
অন্যথায় সরকারকে জনগণ ক্ষমা করবে না বলেও মন্তব্য করেন বিএনপির এই নেতা। তিনি বলেন, আপনাদের (সরকারের) পতন নিশ্চিত করার জন্য একটি আন্দোলন শুরু হবে এবং এই সরকারকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে একটি গণমুখী সরকার প্রতিষ্ঠা করা হবে।
ফখরুল বলেন, সরকার খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশের কোনো উন্নত হাসপাতালে যাওয়ার অনুমতি দিতে রাজি নয়। কারণ তারা মনে করেন, তার মৃত্যু হলে ক্ষমতায় থাকার বাধা দূর হবে।
বিএনপি নেতা বলেন, আপনারা নিশ্চিন্ত থাকুন এটা ঘটবে না। তারা ভেবেছিল জিয়াউর রহমানকে হত্যার ফলে বিএনপি বিলুপ্ত হয়ে যাবে। তা হয়নি। খালেদা জিয়া ঠিকই তার উত্তরসূরি আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে বেছে নিয়েছেন এবং তার নেতৃত্বে দল এগিয়ে যাচ্ছে।
আরও পড়ুন: খালেদা জিয়াকে ‘হত্যার’ ষড়যন্ত্র করছে সরকার: ফখরুল
খালেদা জিয়া বেচেঁ আছেন বলেই আওয়ামী লীগের অস্তিত্ব এখনও অটুট রয়েছে উল্লেখ করে ফখরুল বলেন, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার, জনগণের হারানো অধিকার এবং দেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠার জন্য খালেদাকে রাজনীতিতে ফিরিয়ে আনতে হবে।
দেশে খালেদা জিয়ার অবদান ও গণতন্ত্রের জন্য দীর্ঘ সংগ্রামের কথা স্মরণ করে তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার মতো এত বড় ত্যাগ স্বীকার বাংলাদেশে আর কোনো জীবিত নেতা করেননি।
বিএনপি নেতা বলেন, বর্তমান সরকারের আমলে ছাত্রদলের অনেক নেতা জোর করে গুম, হত্যা ও দমন-পীড়নের শিকার হয়েছেন। জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার পুনরুদ্ধারে, দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় আবারও জেগে উঠেছে ছাত্র ও ছাত্রদল। আন্দোলনের মাধ্যমেই আমাদের নেত্রী খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসা নিশ্চিত করতে হবে।
আরও পড়ুন: বিদেশি চিকিৎসক এনে খালেদা জিয়ার চিকিৎসা সম্ভব না: ড্যাব
এসময় তিনি ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের বর্তমান আন্দোলনকে সফল করতে যেকোনো ধরনের ত্যাগ স্বীকারের জন্য প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানান।
৭৬ বছর বয়সী সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া স্বাস্থ্যগত বিভিন্ন জটিলতা নিয়ে ১৩ নভেম্বর থেকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত হওয়ায় খালেদা জিয়ার মেডিকেল বোর্ড এর সদস্যরা রবিবার বলেছেন, উন্নত চিকিৎসার জন্য তার দ্রুত বিদেশ যাওয়া প্রয়োজন।
খালেদা জিয়ার পরিবারের পক্ষ থেকে তার ছোট ভাই শামীম ইস্কান্দার উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে বিদেশে যাওয়ার অনুমতি দেয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে ১১ নভেম্বর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে একটি আবেদন জমা দেন।
তবে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, খালেদা জিয়া কারাগারে ফিরে নতুন করে আবেদন করলে সরকার তার আবেদন বিবেচনা করবেন।
বিএনপির মশাল মিছিল দেখে জনগণ আতঙ্কিত হয়: তথ্যমন্ত্রী
বিএনপির মশাল মিছিল দেখে জনগণ আতঙ্কিত হয় বলে মন্তব্য করেছেন তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ। তিনি বলেন, ‘বিএনপি যখন মশাল মিছিল বের করে তখন জনগণ আতঙ্কিত হয় এই ভেবে যে, তারা আবার কিসে আগুন দেয়, কারণ তারা বাসে, গাড়িতে, মানুষের সম্পত্তিতে আগুন দেয়ার, অগ্নিসন্ত্রাসের রাজনীতি করে।’
শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডে সরকারি বাসভবনে সাংবাদিকদের করা বিএনপির সাম্প্রতিক মশাল মিছিল বিষয়ক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী একথা বলেন।
বিএনপি আন্দোলনের নানা ইস্যু খুঁজছে উল্লেখ করে ড. হাছান বলেন, তারা ভেবেছিল খালেদা জিয়ার ইস্যুতে তাদের কর্মীদের মাঠে নামাতে পারবে, কিন্তু বাস্তবে কর্মীরা নামেনি। তারা খালেদা জিয়ার অসুস্থতাকে বাড়িয়ে বর্ণনা করেও যে ইস্যু তৈরির চেষ্টা করেছিল, সেটিও ঘটেনি কারণ বেগম জিয়া এখানে ভালো চিকিৎসা পাচ্ছেন এবং আরও উন্নত চিকিৎসার জন্য যা প্রয়োজন, তার চিকিৎসকরা যেভাবে চায়, সরকার তা করতে বদ্ধপরিকর।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘কিন্তু বিএনপি খালেদা জিয়ার সুস্থতা চায় না, তারা চায় তিনি হাসপাতালে থাকুন, তাহলে তাদের রাজনীতি করতে সুবিধা হবে।’
আরও পড়ুন: ছাত্রদের ওপর ভর করে দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা হচ্ছে: তথ্যমন্ত্রী
বিএনপি পরগাছার মতো আচরণ করছে মন্তব্য করে হাছান মাহমুদ বলেন, তারা কখনো ছাত্র আন্দোলন, কখনো গার্মেন্টস শ্রমিকদের ওপর ভর করে দেশে বিশৃঙ্খলার অপচেষ্টা করছে।
'সরকার স্বাস্থ্যব্যবস্থা ধ্বংস করছে' বিএনপির এই মন্তব্যের বিষয়ে জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ‘খালেদা জিয়ার হাঁটুর ব্যথা আর পেটের অসুখ দেশের স্বাস্থ্যব্যবস্থার সূচক নয়। করোনা মহামারি নিয়ন্ত্রণে বহু উন্নত দেশের তুলনায় আমাদের সক্ষমতা এর অন্যতম সূচক।’
‘দেশের স্বাস্থ্যব্যবস্থা যে কত ভালো, করোনার মধ্যে তা প্রমাণিত হয়েছে’ উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, অনেক উন্নত দেশ যেভাবে সামাল দিতে পারেনি, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ অনেক ভালোভাবে সামাল দিতে সক্ষম হয়েছে। আমাদের সীমাবদ্ধতা থাকা সত্ত্বেও আমাদের চিকিৎসকরা ও স্বাস্থ্যব্যবস্থা কত ভালো কাজ করছে এ থেকেই তা প্রমাণিত।
আরও পড়ুন: তথ্যমন্ত্রী সম্পর্কে অপপ্রচারের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা
বিএনপিপন্থী চিকিৎসকেরাও খালেদা জিয়ার চিকিৎসা নিয়ে রাজনীতি করছেন: তথ্যমন্ত্রী
খালেদা জিয়াকে ‘হত্যার’ ষড়যন্ত্র করছে সরকার: ফখরুল
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অভিযোগ করে বলেছেন, সরকার তাদের দলীয় চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে যেতে না দিয়ে তিলে তিলে ‘হত্যার’ ষড়যন্ত্র করছেন।
তিনি বলেন, ‘আমরা চাই উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে বিদেশে যাওয়ার সুযোগ দিন। এটা ন্যূনতম দাবি। এটা দয়া, মহানুভবতা ও মানবিকতার বিষয় না, এটা তার নাগরিক অধিকার। আপনারা বলছেন তিনি সাজাপ্রাপ্ত ব্যক্তি। একজন সাজাপ্রাপ্ত ব্যক্তিও এ দেশের নাগরিক এবং তারও নাগরিক অধিকার রয়েছে।’
শুক্রবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসার দাবিতে জাতীয়তাবাদী কৃষক দল আয়োজিত মানবন্ধনে মির্জা ফখরুল এসব কথা বলেন।
বিএনপির এই নেতা বলেন, দেশের অধিকাংশ রাজনৈতিক দল, বিভিন্ন সংগঠন ও বুদ্ধিজীবীরা তাকে দেশের বাইরে চিকিৎসা নেয়ার সুযোগ দেয়ার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছে।
আরও পড়ুন: বিদেশি চিকিৎসক এনে খালেদা জিয়ার চিকিৎসা সম্ভব না: ড্যাব
তিনি বলেন, ‘কিন্তু আমাদের নেত্রীকে (খালেদা) মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়ে সুপরিকল্পিতভাবে তিলে তিলে হত্যা করা হচ্ছে।’
ফখরুল সরকারকে সতর্ক করে দিয়ে বলেন, জনগণ জেগে উঠতে শুরু করেছেন। চিকিৎসার অভাবে খালেদা জিয়ার খারাপ কিছু হলে গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে তারা এ সরকারকে সরাবে।
খালেদা জিয়ার বর্তমান স্বাস্থ্যগত অবস্থা নিয়ে বিএনপির মহাসচিব বলেন, তার রক্তক্ষরণ হচ্ছে। এটা যদি দীর্ঘদিন ধরে চলে তাহলে তিনি আর বাঁচবেন না।
তিনি বলেন, ‘আপনারা সবাই জানেন তার লিভার সিরোসিস হয়েছে। এটা খুবই মারাত্মক রোগ। আমাদের দেশে এ ধরনের রোগের কোনো চিকিৎসা নেই। এই রোগের চিকিৎসা শুধু যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও জার্মানিতে ভালো হয়।’
৭৬ বছর বয়সী সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া স্বাস্থ্যগত বিভিন্ন জটিলতা নিয়ে ১৩ নভেম্বর থেকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
তার মেডিকেল বোর্ডের সদস্যরা জানিয়েছেন, খালেদা জিয়ার লিভার সিরোসিস ধরা পড়ায় তাকে অবিলম্বে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে যেতে হবে।
খালেদা জিয়ার পরিবারের পক্ষ থেকে তার ছোট ভাই শামীম ইস্কান্দার উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে বিদেশে যাওয়ার অনুমতি দেয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে ১১ নভেম্বর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে একটি আবেদন জমা দেন।
তবে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, খালেদা জিয়া কারাগারে ফিরে নতুন করে আবেদন করলে সরকার তার আবেদন বিবেচনা করবেন।
আরও পড়ুন: খালেদার বিদেশে চিকিৎসায় আইন নয়, সরকার বাধা: ফখরুল
খালেদা জিয়ার খারাপ কিছু হলে সব দায় সরকারকে নিতে হবে: বিএনপি