ব্রাহ্মণবাড়িয়া
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় টিসিবি ডিলারের ৬ মাসের কারাদণ্ড
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় টিসিবির পণ্য বিক্রয়ে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগে এক ডিলারকে ৬ মাসের কারাদণ্ড দিয়েছে জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালত। পাশাপাশি ৭হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ৩দিনের কারাদন্ড প্রদান করা হয়।
বৃহস্পতিবার জলা শহরের বঙ্গবন্ধু স্কয়ার চত্বরে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সাফফাত আরা সাঈদ।
সাজাপ্রাপ্ত আব্দুর রহমান (৩৮) জেলা শহরের উত্তর পৈরতলার কাঞ্চন মোল্লার ছেলে ও মাইশা এন্টারপ্রাইজ নামের টিসিবির ডিলার।
আরও পড়ুন: মাগুরায় ছেলের হাতে বাবা খুন
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সাফফাত আরা সাঈদ জানান, জেলা শহরের বঙ্গবন্ধু স্কয়ার এলাকায় টিসিবির ডিলার মাইশা এন্টারপ্রাইজের পণ্য বিক্রয়ের সময় ব্যাপক অনিয়ম পাওয়া গেছে। প্রতিদিন যে বরাদ্দ ডিলারদের দেওয়া হয় এর মধ্যে ৭০০ কেজি চিনি, ৩০০ কেজি ডাল, ৫০০ লিটার তেল ট্রাক সেলের মাধ্যমে বিক্রয় করার কথা। কিন্তু বৃহস্পতিবার পণ্য বিক্রয়ের ট্রাকে আমরা গিয়ে ৪৫৯কেজি চিনি, ১০৯কেজি ডাল ও ১১২ লিটার তেলে ঘাটতি পেয়েছি।
কম পণ্য কেন বিক্রয় করা হচ্ছে, তা আমরা ডিলার কে জিজ্ঞাস করার পর তিনি স্বীকার করেন বেআইনী ভাবে পণ্য গুলো অন্য জায়গায় সংরক্ষণ করেছেন। তাই ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন ৪৫ ধারা মতে প্রতিশ্রুত পণ্য যথাযথ ভাবে বিক্রয় না করায় ডিলার আব্দুর রহমানকে ৬মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড ও ৭হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ৩দিনের কারাদণ্ড প্রদান করা হয়। পাশাপাশি তার ডিলারশিপ বাতিলের জন্য সংশ্লিষ্ট বিভাগে সুপারিশ করা হবে।
আরও পড়ুন: বিয়ানীবাজারে আটক ২, হাজার ইয়াবা জব্দ
পরে ডিলারের নিজস্ব গোডাউনে লুকিয়ে রাখা বাকি পণ্যগুলোও টিসিবির ট্রাকে এনে বিক্রয় করা হয়।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় মিলছে না পর্যাপ্ত প্যারাসিটামল
করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে যখন পাল্লা দিয়ে রোগীর সংখ্যা বাড়ছে, তেমনি বাড়ছে করোনা রোগীদের জন্য প্রয়োজনীয় চিকিৎসার সামগ্রীসহ অক্সিজেনের সংকট। কিন্তু সকল সংকট ছাপিয়ে বর্তমানে জেলায় প্যারসিটামলের সংকট ব্যাপক আকার ধারণ করেছে।
বিভিন্ন ওষুধের দোকান ঘুরে দেখা গেছে, ক্রেতারা প্যারাসিটামল জাতীয় ওষুধ চাইলে বিক্রেতারা তা সরবরাহ করতে অপরগতা প্রকাশ করেছেন।
আরও পড়ুন: ভেজাল প্যারাসিটামল: ২৬ বছর পর রায়ে এক বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড
বিক্রেতারা জানান, বাজারে ওষুধের মধ্যে সর্বাধিক চাহিদা সম্পন্ন হচ্ছে প্যারাসিটামল। পর্যাপ্ত সরবারাহ না থাকার কারণে ক্রেতাদের চাহিদা মেটানো সম্ভব হচ্ছে না। বাজারে বিভিন্ন কোম্পানির প্যারাসিটামল জাতীয় ওষুধ থাকলেও, তেমন পরিচিতি না থাকায় সেগুলোর চাহিদাও কম। তবে সর্বোপরি সকল ধরনের প্যারাসিটামল জাতীয় ওষুধের সংকট চলছে জেলাতে।
এ ব্যাপারে সিভিল সার্জন ডা. একরামুল্লাহ জানান, বিষয়টি খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবেন।
স্কয়ার ফার্মাসিটিক্যালের জেলা সিনিয়র মার্কেটিং অফিসার জানান, ওষুধ যখন তাদের হাতে এসে পৌঁছাচ্ছে তারা ওষুধ সেগুলো সরবারাহ করছেন।
আরও পড়ুন: ভারতকে ৪ ট্রাক করোনা প্রতিষেধক ওষুধ ও ইনজেকশন উপহার দিল বাংলাদেশ
বেক্সিমকো ফার্মাসিটিক্যালের ব্রাহ্মণবাড়িয়া রিজিওনাল ম্যানেজার জানান, এমনিতেই বর্তমান সময়টাতে ‘ফ্লু’ বেশি হয়, তার ওপর করোনা পরিস্থিতির কারণে প্যারাসিটামল জাতীয় পণ্যের ব্যাপক চাহিদা। কিন্তু আমাদের উৎপাদন ব্যবস্থার ওপর নির্ভর করে সরবারাহ চলছে। এক্ষেত্রে আমাদের পণ্যের সরবরাহে ঘাটতি রয়েছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ১৭২ করোনা রোগী শনাক্ত, মৃত্যু ৩
দেশের সীমান্তবর্তী জেলা ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় দিন-দিন করোনা রোগীর সংখ্যা বাড়ছেই। গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আরও ১৭২ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে এবং মারা গেছে তিনজন। এ নিয়ে জেলায় করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়ালো ৭ হাজার ৩২৭ জনের।
করোনায় আক্রান্তদের মধ্যে সদর উপজেলায় ৬২ জন, কসবায় ৫১ জন, সরাইলে ১৭ জন, আখাউড়ায় ৩ জন, আশুগঞ্জে ২৯ জন, নাসিরনগরে ১ জন, বিজয়নগরে ১ জন ও নবীনগরে ৮ জন। ঢাকা থেকে আসা পিসসিআর রিপোর্টে তাদের করোনা পজেটিভ আসে।
আরও পড়ুন: করোনায় দেশে আরও ২৩৯ মৃত্যু, শনাক্ত ১৫,২৭১
এছাড়াও গত ২৪ ঘন্টায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে তিনজন। জেলা সদর হাসপাতালের আইসোলেশনে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় আশুগঞ্জের একজন পুরুষ ও নবীনগরে নিজ বাসস্থানে একজন পুরুষ এবং আখাউড়ায় নিজ বাড়িতে এক নারী মারা যান। এ নিয়ে মৃতের সংখ্যা দাঁড়ালো ৯৫ জনে।
এদিকে গত ২৪ ঘন্টায় নতুন করে সুস্থ হয়েছে ১৫৫ জন। এখন পর্যন্ত জেলায় মোট সুস্থ হয়েছে ৪ হাজার ৪৬১ জন।
আরও পড়ুন: ২৫ বছর হলেই করোনার টিকা
জেলার সিভিল সার্জন ডাক্তার মো. একরাম উল্লাহ জানান, করোনায় মৃত্যু ও আক্রান্তের পাশাপাশি সুস্থ হওয়ার সংখ্যা বাড়ছে। স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে নমুনা সংগ্রহের পরিমান বাড়িয়ে দেয়া হয়েছে। একই সাথে যারা কোয়ারেন্টাইন এবং আইসোলেশনে রয়েছেন তারা যেন যথাযথভাবে নিয়ম মেনে চলেন সে বিষয়ে মনিটরিং করা হচ্ছে।
করোনার নমুনা দিতে এসে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লেন বৃদ্ধা
ব্রাহ্মণবাড়িয়া, ২৯ জুলাই (ইউএনবি)- ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে করোনার নমুনা দিতে এসে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লেন বৃদ্ধা। বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এ ঘটনা ঘটে।
মৃত হোসনে হুর বেগম (৭১) উপজেলার নোয়াগাঁও ইউনিয়নের ইসলামাবাদ গ্রামের মৃত আরজুমান মিয়ার স্ত্রী।
সরাইল উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা নোমান মিয়া জানান, করোনার উপসর্গ নিয়ে কয়েকদিন আগে হোসনে হুর বেগম জেলা শহরের এক চিকিৎসকের কাছে যান। চিকিৎসক তাকে করোনা পরীক্ষা করাতে বলেন। এরপরও তিনি করোনার নমুনা না দিয়ে বাড়িতে অবস্থান করেন। বৃহস্পতিবার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তিনি করোনার নমুনা দিতে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যান। ফরম পূরণের পর নমুনা দেয়ার প্রাক্কালে তিনি মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন।
নোমান মিয়া জানান, নমুনা সংগ্রহ করতে না পারায় তিনি আক্রান্ত ছিলেন কিনা তা বলা যাচ্ছে না। তবে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার লক্ষণ ছিল।
আরও পড়ুন: ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ২৪ ঘন্টায় সর্বোচ্চ শনাক্ত ৩০২, মৃত্যু ৩
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ২, আহত ৩
লকডাউনের মধ্যে মাইক্রোবাসে করে ঢাকায় আসছে মানুষ
করোনা সংক্রমণরোধে কঠোর বিধি নিষেধে গণপরিবহন বন্ধ থাকলেও এক শ্রেণির মানুষ মানছে না সরকারি আইন কানুন। আর তাদের সহায়তা করছে আরেক শ্রেণির সুবিধাবাদী মহল।
চলমান করোনা পরিস্থিতির মধ্যেও ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের সরাইল বিশ্বরোড থেকে মাইক্রোবাসে করে শত শত মানুষ ঢাকায় পাড়ি দিচ্ছে।
অভিযোগ রয়েছে, বিশ্বরোডের একটি প্রভাবশালী চক্রের সহযোগিতায় প্রতিদিন শত শত যাত্রী ঢাকায় যাচ্ছেন।
আরও পড়ুন: ঘরমুখো মানুষের চাপেও যানজটমুক্ত ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক
সরজমিনে দেখা গেছে, ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল বিশ্বরোড থেকে মাইক্রোস্ট্যান্ডে কতিপয় ব্যক্তি বিশেষ সুবিধা গ্রহণ করে মাইক্রোবাস, প্রাইভেটকার ও ট্রাকসহ বিভিন্ন যানবাহনে করে তিন/চার গুণ বেশি ভাড়া নিয়ে ঢাকায় যাত্রী পাঠাচ্ছে। কোন ধরনের সরকারি নিয়ম কানুনের ধার ধারছে না। এতে করে হুমকির মুখে পড়ছে জনস্বাস্থ্য
এ ক্ষেত্রে ওই প্রভাবশালী মহলটি ৫০ শতাংশ কমিশন পেয়ে থাকে। যাত্রীদের মাইক্রোবাস ও প্রাইভেট কারে উঠতে তাদের ৫০০/৬০০ টাকা দিতে হচ্ছে।
এ বিষয়ে খাঁটিহাতা হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহজালাল আলম জানান, এভাবে যাত্রীর চলাফেরা নিষেধ। বিশ্বরোড় মোড়ে পুলিশ দায়িত্ব পালন করছে
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ২৪ ঘন্টায় সর্বোচ্চ শনাক্ত ৩০২, মৃত্যু ৩
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় সর্বোচ্চ ৩০২ জন আক্রান্ত হয়েছে এবং তিন জনের মৃত্যু হয়েছে।
মৃতদের মধ্যে সদর হাসপাতালের আইসোলেশন সেন্টারে চিকিৎসাধীন অবস্থায় একজন পুরুষ (৬০) ও একজন নারী (৬৫) রয়েছেন। এছাড়া নবীনগর উপজেলায় নিজ বাড়িতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় এক নারীর (৬৫) মৃত্যু হয়েছে।
আরও পড়ুন: ফরিদপুরে করোনা ও উপসর্গে ১৭ মৃত্যু
সিভিল সার্জন ডা. মুহাম্মদ একরাম উল্লাহ জানান, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলায় নতুন ৯৫ জনসহ জেলায় সর্বোচ্চ নতুন আরও ৩০২ জন শনাক্ত হয়েছে। জেলায় সংক্রমণের হার ৩৩ শতাংশ ছাড়িয়েছে। এখন পর্যন্ত জেলায় অ্যান্টিজেন ও পিসিআর ল্যাবের রিপোর্টে সর্বশেষ ৬ হাজার ৯১১ জনের করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে।
আরও পড়ুন: রাজশাহী হাসপাতালে করোনা ইউনিটে ১৭ জনের মৃত্যু
এ পর্যন্ত জেলায় ৪ হাজার ২৭০ জন সুস্থ হয়েছেন। জেলায় ৯০ জন করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন।
আখাউড়ায় ইউএনও’র হস্তক্ষেপে বাল্যবিয়ে বন্ধ
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় প্রশাসনের হস্তক্ষেপে বাল্যবিয়ে থেকে রক্ষা পেল ৮ম শ্রেণির এক শিক্ষার্থী। সোমবার আখাউড়া উপজেলার ধরখার ইউনিয়নের রুটি গ্রামে দুবাই প্রবাসী সুহেল মিয়ার মেয়ের বিয়ের বাড়িতে গিয়ে আয়োজন চলাকালে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) রোমানা আক্তার বিয়ে বন্ধ করে দেন।
এসময় বাল্য বিয়ের আয়োজন করায় বর ও কনে উভয় পক্ষকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
জানা গেছে, সোমবার দুপুরে রুটি গ্রামের প্রবাসী সুহেল মিয়ার মেয়ের সঙ্গে একই গ্রামের আব্দুর রউফ মিয়ার ছেলে জুনায়েদ বাবুর বিয়ের আয়োজন করা হয়। দুপুরে বর নিয়ে কনের বাড়িতে হাজির হন বরপক্ষের অর্ধশত বরযাত্রী। বরযাত্রীদের খাবার টেবিলে বসানো হয় ভুরিভোজের জন্য। বিয়ে বাড়িতে তখন এক আনন্দঘন মুহূর্ত। এমন সময় কনের বাড়িতে উপস্থিত হন উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রুমানা আক্তার।
পড়ুন: একরাতে ৪ বাল্যবিয়ে বন্ধ করলেন সিরাজগঞ্জের সেই ইউএনও
পরে তিনি স্থানীয় ইউপি সদস্য আমিনুল ইসলাম এবং ওই বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মো. আশরাফুল আলমের উপস্থিতিতে বর-কনের জন্মনিবন্ধন যাচাই করে বয়স না হওয়ায় বিয়ে বন্ধ করে দেন। উভয়পক্ষের অভিভাবক মুচলেকা দেন সঠিক বয়স না হওয়া পর্যন্ত ছেলে-মেয়ের দিবেন না।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার রুমানা আক্তার বলেন, লকডাউনের মধ্যে বিয়ের আয়োজন করায় এবং বর ও কনের বিয়ের বয়স না হওয়ায় উভয় পক্ষকে বুঝিয়ে বিয়ে বন্ধ করে দিয়েছি। উভয় পক্ষকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
পড়ুন: ৩৫০টি বাল্যবিয়ে বন্ধ করে রেকর্ড গড়লেন বেলকুচির ইউএনও
এসময় আখাউড়া উপজেলা প্রকল্প কর্মকর্তা তাপস চক্রবর্তী, উপজেলা সহকারী প্রকৌশলী জহুরুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
আখাউড়ায় পুকুর থেকে বালু উত্তোলন, জমি বিলীনের আশঙ্কা
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় শ্রেণি পরির্বতনের অনুমতি না নিয়ে একটি কৃষি জমিকে পুকুর বানানো হয়েছে। এখন ওই পুকুর থেকে অবৈধভাবে ড্রেজার দিয়ে বালু তোলার অভিযোগ উঠেছে।
এতে করে আশপাশের অনেক জমি ওই পুকুরে বিলীন হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এ ঘটনার প্রতিকার চেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ দিয়েছে স্থানীয়রা।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, উপজেলার উত্তর ইউনিয়নের টেংরাপাড়া এলাকার প্রভাবশালী আফছু মিয়া ও তার ছেলে রাজীব মিয়া পরিবেশ অধিদপ্তর ও স্থানীয় প্রশাসনের অনুমতি ছাড়াই তাদের নিজেদের একটি পুকুরে ড্রেজার বসিয়ে বালু উত্তোলন করছেন। ইতোমধ্যেই পুকুরটি ৩০-৪০ ফুট গভীর করে ফেলা হয়েছে। এখান থেকে উঠানো বালু বাণিজ্যিকভাবে বিক্রি করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: অবৈধভাবে বালু উত্তোলন : সিরাজগঞ্জে ৮ জনের জরিমানা
স্থানীয়রা জানান, আফছু মিয়া ও তার ছেলে রাজীব ২০২০ সালে ফসলী জমি নষ্ট করে প্রথমে একটি পুকুর খনন করে। পুকুর করতে গিয়ে সেখানে এমনভাবে মাটি কাটা হয়েছে যে আশেপাশের জমি ভাঙতে শুরু করে। এ অবস্থায় তাদের কাছে একাধিক ব্যক্তি তাদের জমি বিক্রি করতে বাধ্য হন। এছাড়া গত ২ জুন থেকে ওই পুকুরে তারা ড্রেজার বসিয়ে বাণিজ্যিকভাবে বালু উত্তোলন শুরু করে। এ অবস্থায় স্থানীয় অনেকে আপত্তি করলেও তারা কর্ণপাত করেননি
এ বিষয়ে উপজেলার টানপাড়া গ্রামের মো. আসারুল ইসলামসহ অনেকেই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ দায়ের করেছেন।
একই গ্রামের মোহাম্মদ হোসেন মিয়া বলেন, ‘ওই জায়গায় আমার একটি ফসলি কৃষি জমি ছিল। তারা পুকুরটি খনন করায় আমার জমিটি ভেঙে বিলীন হতে থাকে। পরে এক প্রকার বাধ্য হয়েই জমিটি কম দামে তাদের কাছে বিক্রি করতে হয়।’
অভিযুক্ত পুকুরের মালিক রাজীব মিয়া বলেন, ‘পুকুরের গভীরতা বাড়াতে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। পাশের জমির কোনও ক্ষতি হবে না। তাছাড়া পুকুরের পাশে আমারও জমি রয়েছে।’
এ ব্যাপারে ব্রাহ্মণবাড়িয়া পরিবেশ অধিদপ্তরের মো. নূরুল আমীন বলেন, ‘বাণিজ্যিকভাবে বালু উত্তোলন করার বিষয়টি ভূমি মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন। তারপরও পরিবেশের কোনো ক্ষতি হচ্ছে কিনা তা আমরা খতিয়ে দেখবো।’
আরও পড়ুন: সুনামগঞ্জ জব্দকৃত বালু নিলামে বিক্রি, ১৮ নৌযানের জরিমানা
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রুমানা আক্তার জানান, লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার জন্য এসিল্যান্ডকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।
৫০ মণ ওজনের মানিক ও বাবু’র দাম উঠেছে ১৪ লাখ
কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে সবার নজর কাড়ছে ৫০ মন ওজনের মানিক ও বাবু যুগল। ক্রেতারা শান্তপ্রকৃতির এ দুটি ষাঁড়ের এখন পর্যন্ত দাম হাকিয়েছে ১৪ লাখ টাকা। তবে মালিক অলি মিয়া ষাঁড় দুটির বিক্রয় মূল্য নিধারণ করেছেন ২২ লাখ টাকা।
প্রবাসফেরত অলি মিয়া ও তার স্ত্রী হাবিবা বেগম বাড়ির আঙ্গিনায় একটি গরুর খামার গড়ে তুলেছেন। যেখানে কোরবানি ঈদ উপলক্ষে বেশ কিছু পশু হৃষ্টপুষ্ট করা হয়েছে। সে সকল পশুর মধ্যে রয়েছে মানিক ও বাবু নামে দুটি ফ্রিজিয়ান জাতের ষাঁড়।
অত্যন্ত যত্নের সাথে ষাঁড় দুটির লালন পালন করছেন তারা। প্রতিদিন তাদের খাবারের তালিকায় দিচ্ছেন খৈল, ভূষি, বন, খড়, ঘাসসহ বিভিন্ন প্রাকৃতিক খাবার। তাদের পরিচর্যায় একজন লোকও রাখা হয়েছে। কালো দেহী মানিকের ওজন প্রায় ২৫ মণ। আগাগোড়া একেবারে থুলথুলে মাংসল। সাদা রংয়ের বাবুরও ওজন প্রায় ২৫ মণ। দেখতে অনেকটা গোলগাল।
আরও পড়ুন: অনলাইনে জমে উঠেছে কোরবানির পশু বেচাকেনা
অলি মিয়া জানান, গত চার বছর ধরে মানিক ও বাবুর লালন পালন করছেন। কোরবানির ঈদে বিক্রি করার লক্ষে তাদের প্রাকৃতিক খাবারের মাধ্যমে হৃষ্টপুষ্ট করেছেন। এতে তাদের পিছনে প্রতিদিন এক হাজার টাকা খরচ করছেন। শুধু তাই নয়, তাদের খাবারের জন্য বাড়ির পাশে তিন কানি জমিতে ধান চাষ বাদ দিয়ে ঘাসের আবাদ করেছেন।
তিনি জানান, পরিবারের সদস্যর মতই তাদের প্রতিপালন করা হচ্ছে। তবে খামারের পরিধি বাড়ানোর জন্য এবং আর্থিক স্বচ্ছলতা ফেরাতে শত কষ্টে সত্বেও পশু দুটি বিক্রি করে দিতে হচ্ছে।
তার স্ত্রী হাবিবা বেগম বলেন, গত চার বছর আগে খামারে থাকা একটি গাভী গরু থেকে এ দুটি ষাঁড়ের জন্ম। অনেক শখ করে তাদের নাম রাখা হয়েছে মানিক ও বাবু। তারপর থেকেই কোরবানির ঈদে বিক্রি করার লক্ষ নিয়ে এ গুলোকে লালন পালন করা হচ্ছে। এবারের ঈদে মানিক ও বাবুকে বিক্রি করে দেয়া হবে। মনে শত কষ্ট থাকলেও তাদের বিক্রি করতে হচ্ছে।
আরও পড়ুন: হাজার কেজির ‘বাংলার টাইগার’: দাম হাঁকছেন ৫ লাখ
গরু কিনে ‘ডিজিটাল পশুর হাট’ উদ্বোধন করলেন স্থানীয় সরকারমন্ত্রী
জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. এ.বি.এম সাইফুজ্জামান বলেন, চলমান করোনা পরিস্থিতির কারণে অনেকেই প্রবাস থেকে দেশে ফিরে আসছেন। তাদের কাছে যে পুঁজি আছে তা বিনিয়োগের নিরাপদ স্থান হচ্ছে পশু পালন। এতে স্বল্প পুঁজি দিয়ে গ্রামীণ পরিবেশে গরু, ছাগল, হাঁস, মুরগিসহ পশুপ্রাণী পালন করে তারা লাভবান হতে পারবেন। তবে যারা এ ধরনের উদ্যাগে নিবেন তারা যেন বিষয়টি আমাদের অবহিত করেন। প্রাণী সম্পদ বিভাগের পক্ষ থেকে সব্বোর্চ্চ সহযোগিতা করা হবে।
তিনি বলেন, খামারি অলি মিয়া যে উদ্যোগ নিয়েছে আমি তাকে সাধুবাদ জানাই এবং যে কোন প্রয়োজনে আমরা তার পাশে থাকব।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় করোনায় মৃত্যু ৩, নতুন শনাক্ত ১০৩
গত ২৪ ঘণ্টায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নতুন করে ১০৩ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। সেই সাথে মৃত্যু হয়েছে তিন জনের। এ নিয়ে জেলায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৬৯ জন।
আরও পড়ুন: করোনা: কুমিল্লায় ২৪ ঘণ্টায় ৪ মৃত্যু, শনাক্ত ২৮২
সিভিল সার্জন কার্যালয় জানায়, গত ২৪ ঘন্টায় জেলা সদরে ২৬ জন, কসবায় ৩১, সরাইল ও আখাউড়ায় আট জন করে, আশুগঞ্জে ১৭, বিজয়নগরে এক, নবীনগর ও বাঞ্ছারামপুরে ছয় জন করে রয়েছেন। ঢাকা থেকে আসা পিসিআর রিপোর্টে তাদের করোনা পজেটিভ আসে। এছাড়া মৃতদের মধ্যে সদর উপজেলা, নবীনগর ও সরাইলে এক জন করে রয়েছেন। জেলায় এখন পর্যন্ত মোট করোনায় আক্রান্ত হয়েছে ৪ হাজার ৫৫১ জন। এর মধ্যে সুস্থ হয়েছে ৩ হাজার ৮২৭ জন।
আরও পড়ুন: করোনা স্বাভাবিক না হলে গুচ্ছে ভর্তি পরীক্ষা নয়, শিগগিরই নতুন সিদ্ধান্ত
সিভিল সার্জন ডা. মো. একরাম উল্লাহ জানান, করোনার সংক্রমণ রোধে সর্বোচ্চ সতর্কতা হিসেবে বিধিনিষেধ চলমান রয়েছে। এছাড়াও স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে নমুনা সংগ্রহের পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়া হয়েছে। সে সাথে যারা কোয়ারেন্টাইন ও আইসোলেশনে রয়েছেন তারা যাতে সে বিষয়গুলো যথাযথভাবে পালন করেন সে বিষয়ে মনিটরিং করা হচ্ছে। করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া স্বাস্থ্য বিভাগ নিয়মিত কাজ করছে। এ পর্যন্ত এই জেলায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে ৬৯ জন মারা গেছেন।