রুহুল কবির রিজভী
আওয়ামী লীগের প্ররোচনায় বিএনপির সমাবেশে হামলা করা হচ্ছে: রিজভী
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী অভিযোগ করে বলেছেন, ক্ষমতাসীন দলের প্ররোচনায় বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর হামলা ও মামলায় জড়ানো হচ্ছে।
বুধবার নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি দাবি করেন, গত ছয় দিনে তাদের দলের ৬৫০ নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং দেশের বিভিন্ন স্থানে দলের কর্মসূচিতে হামলায় শতাধিক আহত হয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘গতকাল (মঙ্গলবার) আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এক সমাবেশে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ঠাণ্ডা মাথায় বিএনপিকে চিরতরে নির্মূল করার হুমকি দেন...তার হুমকির পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশ, র্যাব ও সোয়াট বাহিনী তাদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করেছে। বিএনপি নেতাকর্মীরা হামলা শুরু করে, নতুন মামলায় গ্রেপ্তার করে।’
মঙ্গলবার বিনা উসকানিতে রাজধানীর সায়েন্স ল্যাব এলাকায় বিরোধী দলের শান্তিপূর্ণ রোডমার্চে পুলিশ ও আওয়ামী লীগের ‘বিশেষ ক্যাডাররা’ হামলা চালিয়েছে বলেও অভিযোগ করেন বিএনপি নেতা।
তিনি বলেন, ‘ওবায়দুল কাদেরের হুমকি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীই বাস্তবায়ন করছে, যারা আওয়ামী চেতনাকে লালন করে।’
এমন আপত্তিকর মন্তব্য করায় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে কেন মামলা করা হলো না, এমন প্রশ্নও তোলেন রিজভী।
তিনি বলেন, ‘বিএনপিকে ঠাণ্ডা মাথায় নির্মূল করা মানেই হত্যাকাণ্ডে লিপ্ত হওয়ার উসকানি। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নীরব কেন?" তার বিরুদ্ধে মামলা নেই কেন?’
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ বিমানের এয়ারবাস কেনার সিদ্ধান্তের মূল কারণ কমিশন: ফখরুল
তিনি অভিযোগ করেন, গত ছয়দিনে দেশের বিভিন্ন এলাকায় তাদের দলের নির্ধারিত কর্মসূচিতে পুলিশ ও ক্ষমতাসীন দলের ‘ক্যাডাররা’ হামলা চালালেও, উল্টো এসব ঘটনায় প্রায় ৫ হাজার বিএনপি নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে ১৪৮টি মামলা হয়েছে।
এই বিএনপি নেতা আরও বলেন, সরকার অতীতের মতো বাসে আগুন দিয়ে আবারও বিএনপির ওপর দোষ চাপানোর পুরনো নাটক শুরু করেছে।
রিজভী পুলিশ বাহিনীকে দেশের জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান না নেওয়ার আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, মঙ্গলবার দলের ঢাকা দক্ষিণ মহানগরীর রোডমার্চ কর্মসূচির পর সায়েন্স ল্যাব এলাকা থেকে শেখ রবিউল ইসলাম রবি, শাহাদাত হোসেন সৈকত ও রাইসুল ইসলাম চন্দনসহ বিএনপির ৩০ জনের বেশি নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
বিএনপি নেতা আরও বলেন, সরকার আবারও সাজানো নির্বাচনের মাধ্যমে আবার ক্ষমতায় থাকার গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে জনগণের বিরুদ্ধে পুলিশ দিয়ে দেশে নৈরাজ্য ও সহিংসতা সৃষ্টি করছে।
তিনি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, সরকার বিরোধী দলগুলোর শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে ক্ষমতাসীন দলের ক্যাডার ও পুলিশের হামলা অব্যাহত রাখলে দেশের মানুষ বসে থাকবে না।
মোবাইলে ছবি দেখিয়ে রিজভী অভিযোগ করেন, মঙ্গলবার সায়েন্স ল্যাব এলাকায় বিএনপির নেতাকর্মীদের ওপর হামলার সময় পুলিশ নিজেরাই বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান, চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ছবি সম্বলিত প্ল্যাকার্ড পুড়িয়ে দিয়েছে।
তিনি বলেন, ‘এর মাধ্যমে প্রমাণিত হয়েছে, এই পুলিশ জনগণের পুলিশ নয়, এরা আওয়ামী লীগের বাহিনীতে পরিণত হয়েছে। আমি এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই।’
আরও পড়ুন: আন্দোলন দমন করতে সরকার সহিংসতা ছড়ানোর চেষ্টা করছে: ফখরুল
আসন্ন সিটি নির্বাচনে জনগণের কোনো আগ্রহ নেই: ফখরুল
আগামী ২৩ ও ২৮ মে ঢাকা ছাড়া সব মহানগরে পদযাত্রা করবে বিএনপি
নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনসহ ১০ দফা দাবিতে আগামী ২৩ ও ২৮ মে আরও ১০টি মহানগরে পদযাত্রা করার ঘোষণা দিয়েছে বিএনপি।
বৃহস্পতিবার নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এ ঘোষণা দেন।
তিনি বলেন, বিরোধী দলীয় নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে 'ভুতুড়ে' মামলা দায়ের, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধি, ঘন ঘন বিদ্যুৎ বিভ্রাট এবং আওয়ামী লীগ সরকারের সর্বাত্মক দুর্নীতির বিরুদ্ধে দলের প্রতিবাদ জানানোর জন্যই এই কর্মসূচি পালন করা হবে।
এর আগে বুধবার ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপির পক্ষ থেকে রাজধানীর বাসাবো ও শাহজাদপুর এলাকা থেকে মালিবাগ অভিমুখে পদযাত্রা বের করা হয়।
বিএনপি ও এর সহযোগী সংগঠনের হাজার হাজার নেতাকর্মী ব্যানার, ফেস্টুন ও দলের শীর্ষ নেতাদের প্রতিকৃতি নিয়ে পদযাত্রায় অংশ নেন।
ঈদুল ফিতরের আগে ১০ দফা দাবিতে রাজধানীসহ সারাদেশে কয়েক দফা পদযাত্রা কর্মসূচি পালন করে বিএনপি।
আরও পড়ুন: সরকারবিরোধী আন্দোলন: রাজধানীতে আবারো পদযাত্রা করল বিএনপি
রাষ্ট্রদূতদের ‘অতিরিক্ত পুলিশ এসকর্ট’ প্রত্যাহার সরকারের ‘চরম দায়িত্বহীনতা’: ফখরুল
জিয়ার ৪২তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে বিএনপির ১৩ দিনের কর্মসূচি
কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন বিএনপি নেতা রুহুল কবির রিজভী
গ্রেপ্তারের সাড়ে চার মাসেরও বেশি সময় পর জামিনে মুক্তি পেয়েছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
মঙ্গলবার বিকাল ৪টার দিকে কেরানীগঞ্জের ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে তিনি বের হন বলে জানিয়েছেন বিএনপির সহযোগী প্রচার সম্পাদক আসাদুল করিম শাহীন।
জেলগেটে রিজভীকে স্বাগত জানান দলের শতাধিক নেতা-কর্মী ও কয়েকজন স্বজন।
শাহেদ বলেন, রিজভী বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হওয়ায় তার শারীরিক অবস্থা ভালো নয়।
গত বছরের ৭ ডিসেম্বর রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের বহুল আলোচিত সমাবেশের তিন দিন আগে বিএনপির নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে পুলিশের অভিযানে রিজভীসহ বিএনপির চার শতাধিক নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়।
রিজভীর আইনজীবীরা জানান, রিজভীর বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগে দায়ের করা ৫০টি মামলায় জামিন পাওয়ায় রিজভীকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: নাশকতার ৩ মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হলো রিজভীকে
নয়াপল্টনে সংঘর্ষ: রিজভী, এ্যানিসহ কারাগারে ৪৪৫ বিএনপি নেতাকর্মী
রিজভী ও ইশরাকের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা
সরকার উৎখাতের চূড়ান্ত আন্দোলনের জন্য জনগণ প্রস্তুত: বিএনপি
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, আওয়ামী লীগ সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করতে ‘চূড়ান্ত’ আন্দোলনের জন্য দেশের মানুষ প্রস্তুত রয়েছে।
তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী, আপনি আর আপনার রাগ, রাইফেল ও বন্দুক দিয়ে জনগণের শক্তিকে দমাতে পারবেন না। আপনি জানেন না যে এখন রাইফেল ও বন্দুক কোন দিকে ঘুরবে। এখনও সময় আছে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের।’
রবিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে এবং বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে বাংলাদেশ লেবার পার্টির আয়োজিত মানববন্ধন কর্মসূচিতে ফখরুল এসব কথা বলেন।
এই বিএনপি নেতা বলেন, জনগণ সরকারের ‘দুঃশাসন’ ও দমন-পীড়নে বিরক্ত হয়ে উঠেছে।
আরও পড়ুন: নিষেধাজ্ঞায় থেকে যুদ্ধের বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য মানানসই নয়: বিএনপি
তিনি জানান, সারা দেশের মানুষ উত্তাল হয়ে উঠেছে এবং আপনি কোনও ব্যারিকেড দিয়ে তাদের ঠেকাতে পারবেন না। জেগে ওঠা এসব লোকেরা কেবল চূড়ান্ত একটা ধাক্কার জন্য অপেক্ষা করছে এবং তারা এটি করতে প্রস্তুত।
সরকার যুবদলকর্মী শহিদুল ইসলাম শাওন বিএনপি নেতাকর্মীদের ছোঁড়া ইটের আঘাতে নিহত হয়েছেন বলে অপপ্রচার চালিয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত করছে বলে অভিযোগ করেন রিজভী।
তিনি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে জানান, যারা উল্টাপাল্টা কথা বলছে এবং মানুষ হত্যার পর বিভিন্নভাবে মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে, তারা জনগণের ক্ষোভ ও ঘৃণা থেকে রেহাই পাবে না।
এই বিএনপি নেতা জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতিসংঘে ভাষণ দিয়ে যুদ্ধের বিরুদ্ধে এবং শান্তির পক্ষে কথা বলছেন। অন্যদিকে বাংলাদেশে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মানুষ হত্যা করছে।
তিনি আরও জানান, রোহিঙ্গাদের কথা বলতে গিয়ে তিনি এমন সময় কাঁদছেন, যখন বাংলাদেশে রক্ত বইছে। এই দ্বিচারিতা শেখ হাসিনার সঙ্গে মানায়। তিনি তার দেশের গণতন্ত্র ও বাকস্বাধীনতাকে কবর দিয়েছেন এবং গণমাধ্যমকে নিয়ন্ত্রণ করতে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন প্রণয়ন করেছেন।
আরও পড়ুন: ক্ষমতা হারানোর ভয়ে সরকার মানুষকে গুলি করে হত্যা করছে: বিএনপি
বিএনপি ‘লাশ নিয়ে রাজনীতি’ করে ক্ষমতায় যেতে চায় বলে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় রিজভী বলেন, তাদের দল (বিএনপি) শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি পালন করলেও পুলিশ ও ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীরা উদ্দেশ্যমূলকভাবে তাদের ওপর হামলা চালাচ্ছে।
রিজভী আরও জানান, ৩১ জুলাই থেকে বিএনপির বিভিন্ন সহযোগী সংগঠনের চার নেতাকর্মী পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছেন। ‘এর পরও ওবায়দুল কাদের বলছেন বিএনপি লাশের রাজনীতি করে। তারা মিথ্যাচার করছে এবং শেখ হাসিনাকে খুশি করার জন্য অনিয়ন্ত্রিত ও অমানবিক মন্তব্য করছে।’
বর্তমান নির্বাচন কমিশনকে (ইসি) মূল্যহীন ও পরাধীন আখ্যা দিয়ে এই বিএনপি নেতা বলেন, এর দ্বারা (ইসি) সুষ্ঠু নির্বাচন করা সক্ষম নয়। ‘তারা (বর্তমান ইসি) শেখ হাসিনার সেবক। শেখ হাসিনা যদি তাদের একটি দিনকে রাত বলতে বলেন, তাহলে তারা সেটাকে রাত বলবে।’
আরও পড়ুন: আ.লীগ সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করে শাওন হত্যার জবাব দেয়া হবে: ফখরুল
দেশের অর্থনীতি নিয়ে জিএম কাদের ও রিজভীর বক্তব্যের তীব্র সমালোচনা তথ্যমন্ত্রীর
বাংলাদেশের অর্থনীতি শক্ত ভিতের ওপর দাঁড়িয়ে উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের ও বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী শিক্ষিত মানুষ বলে জানতাম। শিক্ষিত হয়েও অর্থনৈতিক ইনডেক্সগুলো না পড়ে যে সমস্ত রাজনীতিবিদরা বক্তব্য দেন, তাদের কি বলবো!’
সম্প্রতি বিশ্বখ্যাত গবেষণা ও সংবাদ প্রতিষ্ঠান ব্লুমবার্গ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের ঝুঁকিপূর্ণ ইনডেক্স প্রকাশ করছে। সেখানে ২৫টি দেশের তালিকায় অনেক বড় বড় দেশ আছে, কিন্তু বাংলাদেশের নাম নেই উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘এই সংবাদগুলো কি এই সমস্ত রাজনীতিবিদরা পড়েন না? না পড়েই তারা যে সমস্ত বক্তব্য রাখছেন, এগুলো তো গুজব রটানোর শামিল। আমি আশা করবো, শিক্ষিত মানুষগুলো যেন অশিক্ষিতের মতো কথা না বলেন।’
শুক্রবার বিকালে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের এস রহমান হলে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদেরের বক্তব্য ‘বাংলাদেশ শ্রীলঙ্কা হতে পারে’ এবং বিএনপিনেতা রুহুল কবির রিজভীর বক্তব্য ‘বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ এখন সর্বকালের সর্বনিম্ন পর্যায়ে’- এ নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন তথ্যমন্ত্রী।
তিনি বলেন, দেশের জিডিপির ৪৫ শতাংশ পর্যন্ত বৈদেশিক ঋণ নিরাপদ। সে জায়গায় আমাদের বৈদেশিক ঋণ জিডিপির মাত্র ১৬ শতাংশ এবং এর বিপরীতে সুদের ব্যয় জিডিপি’র মাত্র দুই শতাংশ। আর জিডিপির ৫৫ শতাংশ পর্যন্ত সরকারি ঋণ নেয়া যায়। সেই জায়গায় আমাদের ঋণ মাত্র ৩৬ শতাংশ। সুতরাং দেশের অর্থনীতির ভিত শক্ত।’
আরও পড়ুন: কোনো ষড়যন্ত্রই দেশের উন্নয়ন ঠেকাতে পারবে না: কাদের
বাংলাদেশ আর শ্রীলঙ্কা এক নয় উল্লেখ করে ড. হাছান বলেন, বাংলাদেশ আজ পর্যন্ত বৈদেশিক ঋণের কোনো কিস্তি পরিশোধ করার ক্ষেত্রে কখনো দেরি করেনি, সময় মতো ঋণ পরিশোধের ক্ষেত্রে উন্নয়নশীল দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান সবার ওপরের দিকে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ অর্থনৈতিকভাবে দৃঢ় ভিত্তির ওপর দাঁড়িয়ে আছে। সেই কারণেই ব্লুমবার্গের মতো আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম যে ডাটা সংগ্রহ করেছে সেখানে অনেক বড় বড় দেশ পাকিস্তান, দক্ষিণ আফ্রিকা, ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা, তুরস্ক, মেক্সিকো, মরক্কোসহ বহু দেশের নাম থাকা সত্ত্বেও সেখানে বাংলাদেশের নাম নেই। আমাদের রাজনীতিবিদ যারা এ নিয়ে কথা বলছেন, তাদেরকে বলবো একটু পড়াশোনা করার জন্য।
আইনের শাসন নিয়ে বিএনপি মহাসচিবের নেতিবাচক মন্তব্যের জবাবে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, বিএনপিই আদালতের রায় মানে না। বিএনপির আহনজীবীরাই আদালতে প্রধান বিচারপতির দরজায় অর্থাৎ দেশের প্রধান বিচারালয়ে লাথি মেরেছিল। তারা আইন-আদালত কোনটাই মানে না, আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখায়। আর দেশে আইনের শাসন আছে বিধায়ই আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্যকে আদালতের রায়ে জেলে যেতে হয়, আওয়ামী লীগ নেতাদের বিচার হয়। আর আদালতে শাস্তি পাওয়া সত্ত্বেও বিএনপিনেত্রী বেগম জিয়াকে শেখ হাসিনা তার প্রশাসনিক ক্ষমতাবলে মুক্ত থাকার সুযোগ করে দিয়েছেন। সেজন্য মির্জা ফখরুলের উচিৎ বিবৃতি দিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানানো।
রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে নির্বাচন কমিশনের সংলাপে বিএনপি যাবে না-এ বিষয়ে প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি তো নির্বাচনকেই ভয় পায়। আশা করবো, তাদের শুভ বুদ্ধির উদয় হবে, তারা ইসির সংলাপে যাবে। সেখানে গিয়ে তাদের ওজর-আপত্তি থাকলে সেটা জানিয়ে আসবে।’
এর আগে এটিএন বাংলার ২৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে কেক কাটেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। এসময় এটিএন বাংলার চট্টগ্রাম ব্যুরোপ্রধান ও চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব সভাপতি আলী আব্বাস ও বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রতিনিধিরা এসময় উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: আ.লীগ জাতীয় নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারের পক্ষে: কাদের
আ’লীগের হাত ধরে বাঙালি জাতির সব অর্জন এসেছে: তথ্যমন্ত্রী
ঈদ আসলেই আওয়ামী পরিবহন সিন্ডিকেট সক্রিয় হয়ে ওঠে: রিজভী
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী অভিযোগ করে বলেছেন, ক্ষমতাসীন দল-সমর্থিত সিন্ডিকেটের ইন্ধনে পরিবহন সেক্টরে নৈরাজ্যের কারণে ঈদের ছুটিতে গ্রামের বাড়িতে বেড়াতে গিয়ে সীমাহীন দুর্ভোগের সম্মুখীন হচ্ছেন সাধারণ মানুষ।
তিনি বলেন, ‘মেট্রোপলিটন শহর থেকে মানুষ তাদের প্রিয়জনের সাথে ঈদ উদযাপন করতে গ্রামে ফিরছে। কিন্তু সরকারের সিন্ডিকেটের ভাড়ার নৈরাজ্য, পথের সীমাহীন মহাদুর্ভোগ তাদের ঈদযাত্রার আনন্দকে ম্লান করে দিচ্ছে। ঈদ আসলেই আওয়ামী সরকারের পরিবহন ও টিকিট সিন্ডিকেট সক্রিয় হয়ে ওঠে।’
শুক্রবার বিএনপির নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে রিজভী এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ঈদকে সামনে রেখে পরিবহন সিন্ডিকেট ঘরমুখো মানুষের কাছ থেকে দুই-তিন গুণ অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করছে। ক্ষমতাসীন দলের প্রভাবশালী নেতারা এই টাকার একটা অংশ পান। নজরদারির অভাবে সড়ক-মহাসড়কে চাঁদাবাজি, যানজট ও হয়রানি অব্যাহত রয়েছে।’
ঘন ঘন বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কারণে জনদুর্ভোগের জন্য সরকারের সমালোচনাও করেন বিএনপি নেতা। উদ্বৃত্ত বিদ্যুৎ উৎপাদন করা এই সরকারের আমলে আমরা এখন কেন ভয়াবহ লোডশেডিং অনুভব করছি?
আরও পড়ুন: এক হাজার পদ্মা সেতু করেও জনগণের আস্থা অর্জন করতে পারবে না আ.লীগ: বিএনপি
পদ্মা সেতুতে এত বাতি জ্বালানোর বিষয়ে রিজভী বলেন, মন্ত্রীরা এখন বলছেন কোনো আলোকসজ্জা ছাড়াই সন্ধ্যা ৭টার মধ্যে বিয়ের অনুষ্ঠান শেষ করতে হবে।
বিদ্যুৎ সংকটের কারণে এখন অফিসের সময় কমানোর সুপারিশ করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
তিনি বলেন, সুতরাং, কোন সন্দেহ নেই যে দেশ শ্রীলঙ্কার মতো দেউলিয়া হওয়ার দিকে যাচ্ছে।’
বিএনপি নেতা আরও বলেন, মানুষ যখন নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের আকাশছোঁয়া দাম সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে, তখন সরকার পানির দাম পাঁচ শতাংশ বাড়িয়েছে। ‘বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী আগেই বলেছেন জ্বালানি তেলের দাম বাড়বে। এর আগে বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম বাড়ানো হয়েছিল।’
তিনি অভিযোগ করেন, ক্ষমতাসীন দলের নেতারা প্রতিটি খাতে দুর্নীতি করে মানুষকে দুর্ভোগে ফেলছেন। দেশ এখন ক্ষমতাসীন দলের কবলে।
বিএনপি নেতা দেশকে বাঁচাতে ঐক্যবদ্ধ হয়ে রাজপথে আন্দোলনের মাধ্যমে গণমুখী সরকার প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানান।
আরও পড়ুন: সরকারের অবহেলায় দেশে করোনা সংক্রমণ বাড়ছে: বিএনপি
ভোট চুরি করে আবারও ক্ষমতায় যেতে দেয়া হবে না: আবদুল আউয়াল
সরকারের নিষ্ক্রিয়তায় বন্যার্তরা ত্রাণের জন্য হাহাকার করছে: বিএনপি
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী অভিযোগ করে বলেছেন, দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের বন্যা কবলিত মানুষ তাদের দুর্দশা লাঘবে সরকারের নিষ্ক্রিয়তায় ত্রাণের জন্য হাহাকার করছে।
সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি ও বন্যা কবলিত মানুষের জন্য পর্যাপ্ত ত্রাণের দাবিতে গণতন্ত্র ফোরাম আয়োজিত প্রতীকী অবস্থান কর্মসূচিতে বক্তব্য দিতে গিয়ে তিনি এ কথা বলেন।
এসময় তিনি সিলেট, সুনামগঞ্জ ও নেত্রকোণায় ভয়াবহ বন্যার জন্য হাওর অঞ্চলে সরকারের অপরিকল্পিত বাঁধ ও সড়ক নির্মাণকে দায়ী করেন।
এই বিএনপি নেতা বলেন, ‘সিলেট, সুনামগঞ্জ ও নেত্রকোণার মানুষ ভাত ও খাবারের জন্য হাহাকার করছে। চারপাশের সবকিছু পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় তারা খাবার পাবে কোথায়? তাদের কাছে খাবার পৌঁছাবে কী করে?’
তিনি আক্ষেপ করে বলেন, সরকার দেশের ৫০ লাখ বন্যা কবলিত মানুষের জন্য মাত্র এক দশমিক পাঁচ টাকা বরাদ্দ করেছে। অথচ ভারতীয় শিল্পী মিমি চক্রবর্তীকে তিন কোটি টাকায় বাংলাদেশে আনা হয়েছে।
বন্যার জন্য সরকার দায়ী উল্লেখ করে রিজভী বলেন, ‘আপনি (প্রধানমন্ত্রী) এখন রঙিন আলোয় পদ্মা সেতু দেখবেন এবং মানুষকে ক্ষুধার্ত, অনাহারে ও জলমগ্ন রেখে আনন্দে মনের আনন্দে ক্ষমতায় থাকবেন। দেশের জনগণ এটা আর মেনে নেবে না।’
আরও পড়ুন: পদ্মা সেতুর উদ্বোধন বাতিল করে বন্যার্তদের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান বিএনপির
রিজভী বলেন, প্রধানমন্ত্রী আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে হাওরাঞ্চলে অকাল বন্যার কারণ জানার চেষ্টা করেছেন কি? আমরা জানি, রাষ্ট্রের প্রভাবশালী এক কর্মকর্তার আত্মীয়-স্বজন হাওর এলাকায় অপরিকল্পিতভাবে বাঁধ ও একটি সড়ক নির্মাণ করেছেন; যা রাষ্ট্রপতির বাড়ি বলে পরিচিত।
তিনি বলেন, অপরিকল্পিতভাবে বাঁধ ও রাস্তা নির্মাণের জন্য ৫০-৬০ লাখ মানুষ এখন বন্যার পানিতে আটকা পড়েছে।
তিনি বলেন, ‘পুরো সিলেট ও সুনামগঞ্জ পানিতে তলিয়ে গেছে, কিন্তু আপনি (প্রধানমন্ত্রী) পদ্মা সেতু নিয়ে আনন্দে উদ্বেলিত। আপনি পদ্মা সেতু নিয়ে মানুষের সঙ্গে তামাশা করছেন।’
রিজভী রাত ৮টার পরে দোকান ও শপিং মল বন্ধ করার পদক্ষেপের জন্যও সরকারের সমালোচনা করেন।
তিনি বলেন, তারা (সরকার) দীর্ঘদিন ধরে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের ক্ষমতা রয়েছে বলে দাবি করে আসছে। ‘তবে আপনারা কেন রাত ৮টার পর দোকানপাট ও শপিং মল বন্ধ করার নির্দেশ দিচ্ছেন? কোথায় গেল আপনাদের নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ?’
তিনি বলেন, সরকার প্রতিটি পদক্ষেপ নেয় এবং আইন ও নীতিমালা তৈরি করে। তারা এটা করে শুধুমাত্র ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের সুবিধা নিশ্চিত করতে এবং তাদের অর্থ উপার্জনের সুযোগ তৈরি করতে।
আরও পড়ুন: বন্যা কবলিত এলাকাগুলোকে ‘বন্যাদুর্গত এলাকা’ ঘোষণার দাবি বিএনপির
অর্থমন্ত্রীর কর্মকাণ্ডের সঙ্গে সংবিধান ও নৈতিকতার সংযোগ নেই: ফখরুল
পদ্মা সেতুর উদ্বোধন বাতিল করে বন্যার্তদের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান বিএনপির
বন্যার্তদের জন্য অর্থ ও ত্রাণসামগ্রীর অপর্যাপ্ত বরাদ্দের জন্য সরকারের নিন্দা জানিয়ে বিএনপি পদ্মা সেতুর উদ্বোধন বন্ধ করে দুর্যোগ কবলিত মানুষের দুর্ভোগ লাঘবে মনোনিবেশ করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।
দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, পদ্মা সেতু উদ্বোধন উপলক্ষে শত শত কোটি টাকা বরাদ্দ করা হচ্ছে। কিন্তু দেশের সিলেট, সুনামগঞ্জ, নেত্রকোণা ও উত্তরাঞ্চলের প্রায় এক কোটি বন্যা কবলিত মানুষের জন্য বরাদ্দ একেবারেই অপ্রতুল।
তিনি বলেন, সরকার বন্যার্তদের জন্য এ পর্যন্ত ১০০ টন চাল, ৩০ লাখ টাকা ও পাঁচ হাজার টাকার শুকনো খাবার দিয়েছে। ‘তারা ৬০ লাখ টাকা বরাদ্দেরও আশ্বাস দিয়েছেন। মানে জনপ্রতি মাত্র এক দশমিক পাঁচ টাকা।’
রবিবার নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে রিজভী দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, পদ্মা সেতু উদ্বোধনের জনসভাস্থলে ৫০০ অস্থায়ী টয়লেট বসানোর খরচের এক দশমাংশও বন্যার্তরা পাননি।
আরও পড়ুন: বন্যা কবলিত এলাকাগুলোকে ‘বন্যাদুর্গত এলাকা’ ঘোষণার দাবি বিএনপির
সরকারের দিকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, ‘আমরা পদ্মা সেতু উদ্বোধনের উৎসব বন্ধ করার দাবি জানাচ্ছি। আপনারা দয়া করে জনগণের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য লোক দেখানো প্রদর্শন বন্ধ করুন।’
বিএনপি নেতা বন্যা কবলিত এলাকাগুলোকে ‘দুর্গত অঞ্চল’ হিসেবে ঘোষণা এবং ক্ষতিগ্রস্ত লাখ লাখ মানুষের জন্য পর্যাপ্ত ত্রাণ সামগ্রী পাঠানোর জন্য তাদের দলের দাবি পুনরায় ব্যক্ত করেন।
তিনি দাবি করেন, তাদের দলের নেতাকর্মীরা ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করছেন এবং বন্যা কবলিত এলাকায় মানুষকে নিরাপদ স্থানে নিয়ে যেতে সহায়তা করছেন।
দেশের ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতির মধ্যে পদ্মা সেতু উদ্বোধনের ব্যাপক পরিকল্পনার জন্য সরকারকে কড়া সমালোচনা করে রিজভী বলেন, একমাত্র স্বৈরাচারী সরকারই এমন কাজ করতে পারে।
তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনা নিজেই তার দলের নেতাকর্মীদের পদ্মা সেতুর দুই পাশে লাখো মানুষের সমাগম উদযাপনের প্রস্তুতি নিতে নির্দেশ দিয়েছেন। কয়েক হাজার বাস ও ৩০০টি লঞ্চ রিক্যুজিশন করা হয়েছে এবং জনসভাস্থলে পাঁচ শতাধিক টয়লেট স্থাপন করা হয়েছে। মাওয়া ও জাজিরা প্রান্তে ৪০ ফুট লম্বা দুটি ম্যুরাল স্থাপন করা হয়েছে।’
এছাড়া সেতু উদ্বোধনকে কেন্দ্র করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিরাপত্তায় কয়েক হাজার আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে বলেও জানান এই বিএনপি নেতা।
তিনি বলেন, এসব দেখে দেশের মানুষ মনে করে শেখ হাসিনার শাসন প্রাচীন মিশরের ফারাওদের শাসনকে ছাড়িয়ে গেছে।
আরও পড়ুন: আমরা জানতাম কুমিল্লা সিটি নির্বাচনে এমন হবে: ফখরুল
অর্থমন্ত্রীর কর্মকাণ্ডের সঙ্গে সংবিধান ও নৈতিকতার সংযোগ নেই: ফখরুল
তীব্র সংকটে পড়তে যাচ্ছে দেশ: বিএনপি
খাদ্য ঘাটতি ও নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের ঊর্ধ্বগতির কারণে দেশ ভয়াবহ সংকটের মুখে পড়তে যাচ্ছে বলে সতর্ক করেছে বিএনপি।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন,পুরো জাতি গুরুতর উদ্বেগ নিয়ে তাদের দিন পার করছে। এক ভয়াবহ সংকটে পড়তে যাচ্ছে বাংলাদেশ।
সোমবার বিএনপির নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বাংলাদেশ ‘দেউলিয়াত্বের’ দিকে এগিয়ে যাচ্ছে বলেও উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
বিএনপি নেতা বলেন, শ্রীলঙ্কার চেয়ে বাংলাদেশের পরিস্থিতি আরও নাজুক হতে পারে। এক ভয়াবহ অর্থনৈতিক পরিস্থিতির মধ্যেও বাংলাদেশের মানুষ নীরবে কান্নাকাটি করে শান্তি পাবে না।
আরও পড়ুন: এরকম কতজন পি কে হালদার আছে, জানতে চাই: ফখরুল
তিনি আরও বলেন, নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম দ্রুত বেড়ে যাওয়ায় দেশের মানুষের অবস্থা খুবই দুর্দশাগ্রস্ত ও করুণ।
রিজভী বলেন,বড় দেশগুলো রপ্তানি বন্ধ করে দেয়ায় গম আমদানি করা যাচ্ছে না। চালের দাম অস্বাভাবিক বৃদ্ধি এবং সয়াবিন তেলের অদৃশ্য হওয়ার কারণে সাধারণ মানুষের পক্ষে আটা কেনা অসম্ভব হয়ে পড়বে।
এসময় তিনি ব্যবসায়িক সিন্ডিকেটের জঘন্য খেলার কারণে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের ক্রমবর্ধমান মূল্যবৃদ্ধি ঠেকাতে ব্যর্থতার দায়ে সরকারের সমালোচনা করেন।
বিএনপি নেতা আরও বলেন, বাংলাদেশ সব ধরনের খাদ্যপণ্যের ব্যাপক সংকটে রয়েছে। উজান থেকে আসা পানির কারণে বিভিন্ন বাঁধের ক্ষতির কারণে বাংলাদেশের একটি বিশাল এলাকার ধান খেত পানির নিচে তলিয়ে গেছে যা কৃষকদের দুর্বিষহ অবস্থার মধ্যে ফেলেছে।
আরও পড়ুন: দেশ এখন দুর্নীতির আখড়া: আবদুল আউয়াল
শ্রীলঙ্কার মতো বিএনপি নেতারা আগেই পালিয়ে গেছেন: তথ্যমন্ত্রী
সয়াবিন তেলের সংকটের জন্য সরকারের নিষ্ক্রিয়তাকে দুষছে বিএনপি
বাজারে হস্তক্ষেপ এবং সরকারের জবাবদিহিতার অভাবের জন্য দেশ সয়াবিন তেলের ‘কৃত্রিম’ সংকটের সম্মুখীন হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, জনগণের কাছে দায়বদ্ধ সরকার থাকলে বাজারে হস্তক্ষেপ করত এবং বাজার কারসাজির সঙ্গে জড়িত সিন্ডিকেটদের গ্রেপ্তার করত। কিন্তু তা হচ্ছে না, ফলে সয়াবিন তেলের সংকট দেখা দিয়েছে।
রবিবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের কবরস্থানে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।
আরও পড়ুন: হারানো অধিকার ফিরে পেতে সোচ্চার হউন: মির্জা ফখরুল
বিএনপির এই নেতা বলেন, সয়াবিন তেল, চাল, ডাল, আটাসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের লাগামহীন মূল্যবৃদ্ধির কারণে সাধারণ ও নিম্ন আয়ের মানুষ হিমশিম খাচ্ছে।
তিনি বলেন, উন্নয়নের নামে বিদেশে অর্থ পাচারের কারণে তীব্র মুদ্রাস্ফীতি এর অন্যতম কারণ। এই ভয়াবহ মূল্যস্ফীতির কারণে নিম্ন আয়ের মানুষ ও শ্রমিকদের আয় একেবারেই বাড়েনি।
রিজভী বলেন, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে ইতোমধ্যেই ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় অনেকেই অনেক কষ্টে ঈদ-উল-ফিতর উদযাপন করতে যাচ্ছেন।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, ঈদ উপলক্ষে রাজধানী থেকে বিভিন্ন জেলায় বাড়ি যাওয়ার পথে অনেক গৃহমুখী যাত্রী, প্রধানত শ্রমিকরা দুর্ভোগের মধ্যে পড়েছেন।
আরও পড়ুন: ইলিয়াস আলীর পরিবার অনেক বিপদে আছে: ফখরুল