তদন্ত
সাগর রুনি হত্যা: ৯৬ বার পেছাল তদন্ত প্রতিবেদন জমার তারিখ
সাংবাদিক দম্পতি সাগর সারোয়ার ও মেহেরুন রুনি হত্যা মামলার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়ার তারিখ ৯৬ বারের মতো পিছিয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য আগামী ৯ এপ্রিল দিন ঠিক করেছেন আদালত।
রবিবার মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য দিন ধার্য ছিল। তদন্ত সংস্থা র্যাব প্রতিবেদন দাখিল না করায় ঢাকা মহানগর হাকিম রাশেদুল আলম প্রতিবেদন দাখিলের জন্য নতুন এ দিন ঠিক করেন।
উল্লেখ্য, ২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি মাছরাঙা টেলিভিশনের বার্তা সম্পাদক সাগর সারোয়ার ও এটিএন বাংলার জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক মেহেরুন রুনিকে হত্যা করা হয়।
আরও পড়ুন: সাগর-রুনি হত্যা: ৯৩ বার পেছাল মামলার তদন্ত প্রতিবেদন
এরপর নিহত রুনির ভাই নওশের আলম রোমান শেরেবাংলা নগর থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।
প্রথমে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ছিলেন ওই থানার এক উপপরিদর্শক (এসআই)। চারদিন পর চাঞ্চল্যকর এই হত্যা মামলার তদন্তভার হস্তান্তর করা হয় ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) কাছে।
দুই মাসেরও বেশি সময় তদন্ত করে রহস্য উদঘাটনে ব্যর্থ হয় ডিবি। পরে হাইকোর্টের নির্দেশে একই বছরের ১৮ এপ্রিল হত্যা মামলাটির তদন্তভার র্যাবের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
আরও পড়ুন: দ্রুত সাগর-রুনি হত্যার রিপোর্ট দেয়ার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে র্যাবকে: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
মুন্সীগঞ্জে ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে হত্যা
মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগরে এক ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা।
বুধবার রাত পৌনে ১০টার দিকে উপজেলার জশুরগাঁও এলাকায় নিহতের বাড়ির পাশ তার ক্ষতবিক্ষত লাশ উদ্ধার করা হয়।
নিহত সত্যরঞ্জন দত্ত (৬৪) এম রহমান শপিং কমপ্লেক্সের পূর্ব পাশে কুড়া-ভুষির ব্যবসা করতেন।
নিহতের স্বজন ও স্থানীয়রা জানায়, সত্যরঞ্জন দত্ত এম রহমান শপিং কমপ্লেক্সের পূর্ব পাশে কুড়া-ভুষির ব্যবসা করেন। প্রতিদিন সন্ধ্যায় তিনি বাড়িতে চলে যান। কিন্তু বুধবার সন্ধ্যা পেরিয়ে গেলেও তিনি বাড়িতে না যাওয়ায় তার স্বজনরা খোঁজ করতে থাকেন। এক পর্যায়ে তাদের বাড়ি সংলগ্ন কবরস্থানের পাশে ক্ষত-বিক্ষত অবস্থায় পাওয়া যায়। এ সময় স্বজনদের চিৎকারে আশপাশের লোকজন তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসে।
শ্রীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, তার বুকে তিনটি এবং পিঠের ডান ও বাম পাশে দুটিসহ মোট পাঁচটি ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। সুরতহালের রিপোর্ট তৈরি করা হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান এবং হত্যার কারণ উদঘাটনে তদন্ত চলছে।
আরও পড়ুন: সিরাজগঞ্জে নানিকে হত্যার দায়ে নাতির যাবজ্জীবন
কক্সবাজারে হত্যা মামলায় একই পরিবারের ৩ জনের যাবজ্জীবন
নিয়োগে অনিয়ম: খুলনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসির বিরুদ্ধে দুদকের তদন্ত শুরু
খুলনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (খুকৃবি) ৪২৬ জন শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগে সাবেক উপাচার্য ড. শহীদুর রহমান খানের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
গত তিন বছরের নিয়োগ সংক্রান্ত কাগজপত্র সোমবার দুদকে জমা দিয়েছে খুকৃবি কর্তৃপক্ষ।
খুলনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অনিয়মের কথা উল্লেখ করে গত বছরের সেপ্টেম্বরে একটি জাতীয় দৈনিকে প্রতিবেদন প্রকাশের পর এ ঘটনা ঘটে।
এতে বলা হয়, ৩৫০ জন শিক্ষার্থীর বিপরীতে ৪২৬ জন শিক্ষক ও কর্মচারী খুকৃবিতে নিয়োগ দেয়া হয়েছিল এবং মাত্র তিন বছরে ৪৩টি বিভাগ খোলা হয়েছিল।
পরে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) তদন্ত করে নিয়োগে অসঙ্গতি খুঁজে পায়।
ওই প্রতিবেদনের ভিত্তিতে গত বছরের ৩ আগস্ট উপাচার্যের স্বজনসহ ৭৩ জন শিক্ষক-কর্মচারীর নিয়োগ বাতিলের নির্দেশ দেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
গত বছরের নভেম্বরে দুদক খুকৃবি'র নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অনিয়ম অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেয় এবং দুদকের উপ-পরিচালক এরশাদ মিয়াকে তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয়।
আরও পড়ুন: দুদকের চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয়া ৪৭৩ নথি আদালতে দাখিলের নির্দেশ
গত ২ জানুয়ারি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি, প্রার্থীদের আবেদন পত্র, লিখিত পরীক্ষার রেকর্ডসহ নিয়োগ সংক্রান্ত কাগজপত্র ১০ জানুয়ারির মধ্যে জমা দিতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে চিঠি দেন তদন্ত কর্মকর্তা।
এর আগে এ বিষয়ে কোনো তদন্ত করা হয়েছে কি না, তা তদন্ত করে প্রতিবেদন দিতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করা হয়েছে।
পরে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তদন্ত কর্মকর্তা ২৩ জানুয়ারি পর্যন্ত সময়সীমা বৃদ্ধি করেন।
সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ড. মাজহারুল আনোয়ার তদন্ত কর্মকর্তার কাছে নথিজমা দেন।
তদন্ত কর্মকর্তা এরশাদ মিয়া বলেন, তিনি কিছু কাগজপত্র পেয়েছেন এবং সেগুলো খতিয়ে দেখা হবে।
আরও পড়ুন: তাকসিমের বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়ে দুদককে পদক্ষেপ জানাতে বলেছেন হাইকোর্ট
বিএনপি দমন কমিশনে পরিণত হয়েছে দুদক: মোশাররফ
ইউক্রেনে ‘ডার্টি বোম্ব’ বিষয়ে তদন্ত করবে জাতিসংঘের পরমাণু সংস্থা
এবার ইউক্রেনে ‘ডার্টি বোম্ব’ বিষয়ে তদন্ত করবে জাতিসংঘের পরমাণু সংস্থা। শুক্রবার জাতিসংঘের পারমাণবিক প্রধান রাফায়েল গ্রোসি এ তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি বলেছেন, ইউক্রেনের দু’টি স্থানে ডার্টি বোম্ব তৈরির কার্যক্রম চলছে, রাশিয়ার এমন অভিযোগ তদন্তে পরিদর্শক পাঠাচ্ছেন। আশা করছেন যে তারা ‘খুব দ্রুতই একদিনের মধ্যে’ একটি সিদ্ধান্তে পৌঁছাবে।
গ্রোসি বলেন, ইউক্রেনের সরকারের লিখিত অনুরোধের প্রেক্ষিতে আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার পরিদর্শকরা এই সপ্তাহে আইএইএ এর সুরক্ষার অধীনে থাকা দুটি এলাকা পরিদর্শন করবেন।
জাতিসংঘে রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত এই সপ্তাহে নিরাপত্তা পরিষদের সদস্যদের কাছে একটি চিঠিতে অভিযোগ করেছেন যে ইউক্রেনের কিয়েভের ন্যাশনাল একাডেমি অব সায়েন্সেসের নিউক্লিয়ার রিসার্চ ইনস্টিটিউট এবং ভোস্টোচনি মাইনিং অ্যান্ড প্রসেসিং প্ল্যান্ট ‘(প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির) জেলেনস্কির কাছ থেকে এমন ডার্টি বোম্ব তৈরির জন্য সরাসরি আদেশ পেয়েছে।’
রাষ্ট্রদূত ভ্যাসিলি নেবেনজিয়া বলেছেন, এই তথ্য রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে জানিয়েছে।
আরও পড়ুন: পরমাণু আলোচনায় গ্যারান্টি বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ: ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী
সেসময় তিনি বলেন, মন্ত্রণালয় (রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়) জানিয়েছে একটি ডার্টি বোমার কাজ ‘সমাপ্তির পর্যায়ে রয়েছে’ যা সন্ত্রাসবাদিরা যা তেজস্ক্রিয় বর্জ্য ছড়িয়ে দেয়ার জন্য বিস্ফোরক হিসেবে ব্যবহার করে।
গ্রোসি বলেছেন: ‘এই সপ্তাহের সুরক্ষা পরিদর্শনের উদ্দেশ্য হল সম্ভাব্য অঘোষিত পারমাণবিক ক্রিয়াকলাপ এবং ডার্টি বোম্ব' তৈরির সঙ্গে সম্পর্কিত উপকরণ শনাক্ত করা।’
তিনি বলেন, আইএইএ এক মাস আগে কিয়েভের পারমাণবিক গবেষণা ইনস্টিটিউট পরিদর্শন করেছেন। ‘সেখানে কোনও অঘোষিত পারমাণবিক কার্যকলাপ বা উপকরণ পাওয়া যায়নি।’
কিন্তু গ্রোসি বলেছেন যে পরিদর্শকরা একটি ভিন্ন লক্ষ্য নিয়ে এটি পুনরায় পরিদর্শন করতে যাচ্ছেন।
সাধারণত পরিদর্শকরা পরমাণু উপাদান যেমন-সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম, প্লুটোনিয়াম ও থোরিয়ামের সন্ধান করেন।
তিনি বলেন, তবে এ ক্ষেত্রে ‘কিছু নির্দিষ্ট আইসোটোপ, সিজিয়াম ও স্ট্রন্টিয়ামের উল্লেখ রয়েছে। সুতরাং, এটি নিষ্পত্তির জন্য সেখানে জ্বালানি পুনঃপ্রক্রিয়া করা হয়েছে কিনা তা নির্ধারণ করতে আমরা একটি ভিন্ন ধরণের কাজ করতে যাচ্ছি।’
গ্রোসি নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সদর দপ্তরে এসেছিলেন ইউক্রেন সম্পর্কিত পারমাণবিক ইস্যুতে নিরাপত্তা পরিষদের সদস্যদের রুদ্ধদ্বার ব্রিফ করতে। আইএইএ এর আগে তার মাধ্যমে একটি বিবৃতি দেন এবং তিনি কাউন্সিলের বৈঠকের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন।
রাশিয়ার নেবেনজিয়া বলেছেন যে তিনি গ্রোসিকে বলেছিলেন যে ‘তাকে সতর্ক থাকতে হবে’। কারণ দু’টি স্থানই একমাত্র জায়গা নয় যেখানে ‘ডার্টি বোম্ব’ তৈরি করা যেতে পারে।
গ্রোসি বলেন, তিনি একটি পারমাণবিক দুর্ঘটনার সম্ভাবনা সম্পর্কে ‘অত্যন্ত উদ্বিগ্ন’ রয়েছেন।
আরও পড়ুন: বিক্ষোভে অন্তত ২৬ জনের মৃত্যু হয়েছে: ইরানের রাষ্ট্রীয় টিভি
তিনি আরও বলেন, আগামী সপ্তাহগুলোতে আইএইএ ইউক্রেনের অন্যান্য পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোতে আরও বিশেষজ্ঞ মোতায়েন করতে চলেছে। এগুলো হলো— রিভনি, খমেলনিটস্কি দক্ষিণ ইউক্রেন ও চেরনোবিল।
এর আগে ১৯৮৬ সালে বিশ্ব সবচেয়ে খারাপ পারমাণবিক বিপর্যয়ের মুখে পড়ে।
চলতি বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেন আক্রমণের পরপরই রাশিয়ান বাহিনী চেরনোবিল দখল করে নেয়, যদিও তারা এপ্রিলের শুরুতে চলে যায়।
অন্যদিকে, ইউক্রেন ‘ডার্টি বোম্ব’ বিস্ফোরণের মস্কোর দাবিকে প্রত্যাখ্যান করেছে।
দেশটির চারটি পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র পরিচালনাকারী ইউক্রেনের রাষ্ট্রীয় সংস্থা এনারগোঅটম বলেছে, রাশিয়ার সেনারা গত সপ্তাহে দখলকৃত জাপোরিঝিয়া পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে গোপন নির্মাণ কাজ চালিয়েছে।
এনারগোটম মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে বলেছে যে অঞ্চলটি নিয়ন্ত্রণকারী রাশিয়ান অফিসাররা প্লান্ট পরিচালনাকারী ইউক্রেনীয় কর্মীদের বা জাতিসংঘের পারমাণবিক শক্তি পর্যবেক্ষণকারী সংস্থার মনিটরদের ভেতরে ঢোকার অনুমতি দিচ্ছে না। যাতে রাশিয়ানরা কী করছে তারা তা দেখতে না পারে।
গ্রোসি এক বিবৃতিতে বলেছেন যে জাপোরিঝিয়াতে পারমাণবিক নিরাপত্তা ও সুরক্ষা ‘অনিশ্চিত রয়ে গেছে’ এবং প্রকৌশলীরা ‘এই মাসের শুরুতে বারবার বিভ্রাটের পরে প্ল্যান্টের ভঙ্গুর বাহ্যিক বিদ্যুৎ সরবরাহকে স্থিতিশীল করার জন্য কাজ করছেন।
আইএইএ প্রধান বলেছেন, তিনি পরিষ্কারভাবে বলছেন যে এটি ‘পারমাণবিক সুরক্ষা ও নিরাপত্তাকে নেতিবাচকভাবে প্রভাবিত করতে পারে।’
গ্রোসি পুনর্ব্যক্ত করেছেন যে জাপোরিঝিয়াকে ঘিরে একটি সুরক্ষা অঞ্চল প্রতিষ্ঠা করা ‘অতি গুরুত্বপূর্ণ’।
আরও পড়ুন: পরমাণু চুক্তি আলোচনায় ‘লিখিত প্রতিক্রিয়া’ পেশ ইরানের
করতোয়ায় নৌকাডুবি: তদন্ত প্রতিবেদন নিয়ে ধুম্রজাল
পঞ্চগড়ের বোদায় করতোয়া নদীতে নৌকা ডুবির ঘটনায় জেলা প্রশাসনের গঠিত তদন্ত দল তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেছেন। রবিবার রাতে তদন্ত দলের প্রধান অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট দীপঙ্কর কুমার রায় জেলা প্রশাসক মো. জহুরুল ইসলামের কাছে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। সোমবার জেলা প্রশাসক মো. জহুরুল ইসলাম প্রতিবেদন জমা দেয়ার বিষয়টি জানান।
এদিকে তদন্ত প্রতিবেদন নিয়ে সাধারণ মানুষের মাঝে ধুম্রজাল সৃষ্টি হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের বিষয়টি গণমাধ্যমকর্মীদের জানানো হয়নি।
গণমাধ্যমকর্মীরা তদন্ত প্রতিবেদনের কপি চাইলে জেলা প্রশাসক মো. জহুরুল ইসলাম জানান, আপনাদের (সাংবাদিকদের) দেয়া যাবে না, এটি সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে।
জেলা প্রশাসক আরও জানান, তদন্ত প্রতিবেদনে ভয়াবহ নৌদুর্ঘটনার জন্য খেয়াঘাটের ইজারাদারকে দায়ী করা, মাঝির অদক্ষতা, ধর্মীয় অনুভূতি, অসচেতনতার কারণ উল্লেখ করে বলেন ভৌগলিক পরিস্থিতি ও নদীকেন্দ্রিক জীবন জীবিকাকে উল্লেখ করে ১১৮ পৃষ্টার তদন্ত প্রতিবেদনে বিভিন্ন বিষয় উপস্থাপন করা হয়েছে এবং ভবিষ্যতে যেন এমন নৌদূর্ঘটনা না ঘটে এজন্য তদন্ত কমিটি পাঁচ দফা সুপারিশ পেশ করেছেন বলে জানিয়েছেন।
আরও পড়ুন: করতোয়ায় নৌকাডুবি: ৬ষ্ঠ দিনের মত চলছে উদ্ধার অভিযান
এদিকে পুরো তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ না করাসহ গণমাধ্যমকর্মীদের প্রতিবেদন দাখিলের বিষয়টি না জানানোয় ভুক্তভোগীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের মাঝে এ নিয়ে নানা জল্পনা কল্পনা ও প্রকৃত দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে কি না তা নিয়ে আশংকাও সৃষ্টি হয়েছে।
স্থানীয়দের দাবি প্রকৃত তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করা হোক। কি আছে এই তদন্ত প্রতিবেদনে তা জানতে না পারায় সর্বমহলে এ নিয়ে ধুম্রজালের সৃষ্টি হয়েছে।
অবশ্য তদন্ত কমিটির প্রধান অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) দীপঙ্কর কুমার রায় জানান, এলাকার ভৌগলিক পরিস্থিতি এবং নদী কেন্দ্রীক জীবন জীবিকাকে উল্লেখ করে ১১৮ পৃষ্ঠার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হয়েছে। তদন্তে সংশ্লিষ্ট সকলের সম্পৃক্ততা উল্লেখ করা হয়েছে।
জেলা প্রশাসক মো. জহুরুল ইসলাম তদন্ত প্রতিবেদন প্রাপ্তির বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, প্রতিবেদনটি মন্ত্রী পরিষদ বিভাগের কাছে পাঠানো হয়েছে। একই সঙ্গে পুলিশ প্রশাসন ও ফায়ার সার্ভিসেরও তদন্ত টিম করা হয়েছে। তিনটি তদন্ত প্রতিবেদন জমা হওয়ার পর মন্ত্রী পরিষদ বিভাগ যে নির্দেশনা দেবে সে অনুযায়ী পরবর্তিতে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মাঝি (নৌকা চালক) জানান, নৌকাটি ছোট ছিল এবং পুরনো ছিল। ওই নৌকায় সবোর্চ্চ ৫০ জনের বেশি যাত্রী তোলা উচিত হয়নি। অতিরিক্ত যাত্রী উত্তোলন করায় চোখের সামনে নৌকাডুবে যাত্রীরা মারা গেছেন।
আরও পড়ুন: করতোয়ায় নৌকাডুবি: দু’দিনে অর্ধশত লাশ উদ্ধার
বধেশ্বরী মন্দির কমিটির সভাপতি নীতিশ কুমার বকশী ওরফে মুকুল বকশী জানান, অনুষ্ঠানের আগে ইজারাদারসহ সংশ্লিষ্ট কমিটির সকলকে ৬টি নৌকা ঘাটে রাখার কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু ইজারাদার তা করেননি। অনেকক্ষণ অপেক্ষার পরও বাকি নৌকাগুলো না আসায় একটিতেই উঠে পার হওয়ার চেষ্টা করেন পুণ্যার্থীরা। দায়িত্বপ্রাপ্ত অন্যান্য কর্মকর্তারা ঘাটে সজাগ থাকলে এমন দুর্ঘটনা এড়ানো যেত।
ঘাটে উপস্থিত পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস ও গ্রাম পুলিশের সদস্যদের আরও কঠোর হয়ে অতিরিক্ত যাত্রী উঠতে বাধা না দেয়ারও সমালোচনা করেন নিতিশ কুমার।
মাড়েয়া বামনহাট ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবু আনছার মো. রেজাউল করিম (শামীম) জানান, নৌকাডুবির ব্যাপারে জেলা পরিষদ এবং ইজারাদার দায় এড়াতে পারেন না। ঘাটের কোনো উন্নয়ন হয়নি। এখানে আমাদের ইউনিয়ন পরিষদ বা আমার কোন সংশ্লিষ্টতা নেই।
সমাজকর্মী আব্দুল্লাহ আল জুবেরী জানান, মহালয়ার মত বড় অনুষ্ঠানের জন্য যেমন সমন্বয় দরকার হয়, আয়োজনকারি কর্তৃপক্ষ এবং প্রশাসনসহ সকল সংশ্লিষ্ট পক্ষের মধ্যে তেমন কোন সমন্বয় ছিলো না। একারণে কয়েক মিনিটের ব্যাবধানে শুধু মাত্র দায়িত্বশীল পদাধিকারীক ব্যক্তিদের উদাসীনতা অবহেলা ও অব্যবস্থাপনার কারণে পরিবারগুলো ভগ্নাংশে পরিণত হয়েছে।
তিনি আরও জানান, এদেশে মানুষ যখন কোথাও বিচার পায় না তখন সে আদালতে যায় এই আশায়, যে সেখানে সে বিচার পাবে। আদালত স্বপ্রণোদিত হয়ে কত বিষয়েই ব্যাখ্যা দাবী করেন। এই ৬৯ জন লাশ ৩ জন অতল জলে হারিয়ে যাওয়া মানুষ কি আদালতের কাছে ব্যাখ্যা চাওয়ার মতো পর্যাপ্ত মনে হবে না?
সমাজকর্মী আব্দুল্লাহ আল জুবেরী জানান, মহালয়ার মত বড় অনুষ্ঠানের জন্য যেমন সমন্বয় দরকার হয়, আয়োজনকারী কর্তৃপক্ষ ও প্রশাসনসহ সকল সংশ্লিষ্ট পক্ষের মধ্যে তেমন কোন সমন্বয় ছিলো না। একারণে কয়েক মিনিটের ব্যবধানে শুধুমাত্র দায়িত্বশীল পদাধিকারীক ব্যক্তিদের উদাসীনতা অবহেলা ও অব্যবস্থাপনার কারণে পরিবারগুলো ভগ্নাংশে পরিণত হয়েছে।
আরও পড়ুন: করতোয়ায় ট্রলারডুবি: নিহত বেড়ে ২৫
তিনি আরও জানান, এদেশে মানুষ যখন কোথাও বিচার পায় না তখন সে আদালতে যায় এই আশায়, যে সেখানে সে বিচার পাবে। আদালত স্বপ্রনোদিত হয়ে কত বিষয়েই ব্যাখ্যা দাবী করেন। এই ৬৯ জন লাশ ৩ জন অতল জলে হারিয়ে যাওয়া মানুষ কি আদালতের কাছে ব্যাখ্যা চাওয়ার মতো পর্যাপ্ত মনে হবে না?
জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ সানিউল কাদের জানান, স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের হস্তান্তরিত ফেরীঘাটের ইজারা ও ব্যবস্থাপনা এবং উদ্ভুত আয় বন্টন সম্পর্কে নীতিমালা ২০০৩ অনুযায়ী জানা এসব ঘাট পরিচালনা করা হচ্ছে। নদী বন্দরগুলোর জন্য বন্দর পরিদর্শক বা ফিটনেস দেখভালের জনবল রয়েছে। কিন্তু বর্তমান যে আইন রয়েছে তাতে এখানে এমন কোন নীতিমালা নেই। এজন্য প্রয়োজন আইনী কাঠামো। এটা হলে ঘাটগুলো কিভাবে চলবে। নৌযানগুলো কেমন হবে, কোন যন্ত্রের সাহায্যে চলবে, সবোর্চ্চ যাত্রী কত হবে, জনবল কাঠামো কেমন হবে এমন নানা বিষয় নির্দেশনা থাকতো। থাকতো ঘাট পরিদর্শক বা ফিটনেস পরীক্ষক। তাহলে নৌকার ফিটনেস যাচাই করা সম্ভব হতো।
জেলা পরিষদের প্রশাসক আনোয়ার সাদাত সম্রাট জানান, বধেশ্বরী মন্দিরে মহালয়ার পূজা উপলক্ষে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে একটি কমিটি করে দেয়া হয়। তারা অনেকেই সেখানে উপস্থিত ছিলেন। সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের চেয়ারম্যানও উপস্থিত ছিলেন। তারা মাঝিকে নির্দেশ দিলে এত যাত্রী উঠত না। এত মৃত্যুর ঘটনাও ঘটত না। ওই নৌদুর্ঘটনার কারণ উদঘাটনে পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি করা হয়েছে। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক দীপঙ্কর কুমার রায় এই কমিটির আহ্বায়ক।
তিনি জানান, তদন্তের পর দায় কার তা বোঝা যাবে।
এদিকে পঞ্চগড়ের নৌকাডুবির ঘটনায় দশম দিনেও সীমিত আকারে উদ্ধার অভিযান চলেছে। কিন্তু এখনো নিখোঁজ কাউকে খুঁজে পাওয়া যায়নি।
বোদা উপজেলা ফায়ার সার্ভিস এন্ড সিভিল ডিফেন্সের ভারপ্রাপ্ত স্টেশন অফিসার শাহজাহান আলী জানান, অভিযানে এখন পর্যন্ত কোন অগ্রগতি নাই। মাটি এবং বালির নিচে লাশগুলো চাপা পড়ে যেতে পারে।
এ জন্য খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। প্রতিদিন সকাল এবং বিকালে উদ্ধার অভিযান অব্যাহত থাকবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
জিএমপি'র অনুষ্ঠানে ৫ জন দগ্ধ হওয়ার ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন
গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের (জিএমপি) চার বছর পূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বেলুন বিস্ফোরণে পাঁচজন দগ্ধ হওয়ার ঘটনা তদন্তে পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
বেলুন বিস্ফোরণে দগ্ধরা হলেন- কৌতুক অভিনেতা আবু হেনা রনি, মোশাররফ হোসেন, জিল্লুর রহমান, ইমরান হোসেন ও রুবেল হোসেন।
বেলুন বিস্ফোরণের ঘটনায় জিএমপি'র গঠিত তদন্ত কমিটির সদস্যরা হলেন-গাজীপুর মহানগর পুলিশের ডিসি (উপ-কমিশনার,উত্তর) আবু তোরাব মো. শামসুর রহমান, এডিসি (উত্তর) রেদোয়ান আহমেদ, এসি প্রসিকিউশন মো. ফাহিম আশজাদ ও গাজীপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রফিকুল ইসলাম।
তিন কার্য দিবসের মধ্যে তাদের প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
আরও পড়ুন: গাজীপুরে মাটির দেয়াল ধসে নিহত ১
গাজীপুর মহানগর পুলিশের সহকারি কমিশনার (মিডিয়া) মো. আবু সায়েম নয়ন জানান, শুক্রবার সন্ধ্যা ছয়টার দিকে গাজীপুর জেলা পুলিশ লাইনস মাঠের অনুষ্ঠানে ওই আবু হেনা রনি ছাড়া আরও চার জন দগ্ধ হয়েছেন। তাদের মধ্যে রনিসহ তিনজনকে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে পাঠানো হয়েছে।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অনুষ্ঠানস্থলে পৌঁছালে তাকে উদ্বোধনী মঞ্চে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তাঁর হাতে বেশ কিছু বেলুন দেয়া হয় উড়িয়ে দেয়ার জন্য। কিন্তু বার বার চেষ্টা করেও সেই বেলুন উড়াতে ব্যর্থ হন। পরে কয়েকজন সেই বেলুনগুলি মঞ্চের পাশে নিয়ে যায় এবং অন্যরা বেলুনে আগুন লাগিয়ে উড়ানোর চেষ্টা করার সময় বিস্ফোরণ ঘটে।
এতে পাশে বসে থাকা কৌতুক অভিনেতা আবু হেনা রনিসহ পাঁচজন দগ্ধ হয়ে নিচে লুটিয়ে পড়েন। পরে আশপাশের পুলিশ সদস্যরা তাদের গায়ে পানি ঢেলে আগুন নেভায় এবং গাড়িতে করে দ্রুত শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেন।
পরে তাদের মধ্যে আবু হেনা রনিসহ তিনজনকে ঢাকার স্থানান্তর করা হয়।
চিকিৎসক জানান, দগ্ধ কৌতুক অভিনেতা আবু হেনা রনির শ্বাসনালী ও এক কান পুড়ে গেছে, তিনি শঙ্কামুক্ত নন আবু হেনা রনির সঙ্গে দগ্ধ যুবক জিল্লুর রহমান (৩২)কেও আইসিইউতে রাখা হয়েছে। তার শরীরের ১৯ শতাংশ দগ্ধ হয়েছে, তারও শ্বাসনালী পুড়ে গেছে বলেও জানান চিকিৎসক।
জিএমপি'র কমিশনার মোল্লা নজরুল ইসলামের সভাপতিত্বে নাগরিক সম্মেলন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ হাসান রাসেল, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সহকারী সচিব আখতার হোসেন। প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য দেন আইজিপি বেনজীর আহমেদ। অনুষ্ঠানের শেষ পর্যায়ে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে দেশের খ্যাতিমান শিল্পীরা গান পরিবেশন করেন।
উল্লেখ্য, দগ্ধ আবু হেনা রনি একাধারে কমেডিয়ান, অভিনেতা, উপস্থাপক ও মডেল। তিনি ২০১১ সালে ভারতীয় টিভি চ্যানেল জি বাংলার ‘মীরাক্কেল আক্কেল চ্যালেঞ্জার্স’ এ বিজয়ী হন।
আরও পড়ুন: গাজীপুরে কৌতুক অভিনেতা আবু হেনা রনিসহ ২ জন দগ্ধ
গাজীপুরে মাদরাসাছাত্রকে যৌন নিযার্তনের অভিযোগে ৪ শিক্ষক গ্রেপ্তার
খুলনায় রহিমা খাতুন নিখোঁজ মামলার তদন্তভার পিবিআইয়ের হাতে
খুলনায় ৫৫ বছর বয়সী নারী নিখোঁজ ঘটনায় মামলার তদন্তভার নিতে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) নির্দেশ দিয়েছেন খুলনার আদালত। নিখোঁজ নারীর পরিবারের আবেদনের প্রেক্ষিতে আদালত এই নির্দেশ দিয়েছেন।
মহানগরীর দৌলতপুর মহেশ্বরপাশা বণিকপাড়ায় গত ২৭ আগস্ট রাত সাড়ে ১০টার দিকে পানি আনতে বাড়ি থেকে বের হন রহিমা খাতুন (৫৫)। দীর্ঘ সময় পার হলেও তিনি আর বাসায় ফেরেননি। পরে মায়ের খোঁজে বের হয়ে সন্তানরা মায়ের ব্যবহৃত স্যান্ডেল, গায়ের ওড়না ও কলস রাস্তার ওপর পড়ে থাকতে দেখেন। রাতে সম্ভাব্য সব জায়গায় খোঁজ নেয়ার পর তাকে না পাওয়া গেলে সাধারণ ডায়েরি এবং পরবর্তীতে কয়েকজনের নাম উল্লেখ করে দৌলতপুর থানায় মামলা দায়ের করেন তারা।
গত ২০ দিনেও রহিমার খোঁজ মেলেনি। এ অবস্থায় পরিবারের সদস্যদের আবেদনে মামলাটি পিবিআইয়ের যাচ্ছে। এ পর্যন্ত পুলিশ ও র্যাব যৌথ অভিযান চালিয়ে সন্দেহভাজন ছয় জনকে গ্রেপ্তার করলেও কোনো তথ্য উদঘাটন করা যায়নি।
আরও পড়ুন: খুলনায় রহিমা ১৮ দিন ধরে নিখোঁজ, স্বামীসহ গ্রেপ্তার ৬
দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নজরুল ইসলাম বলেন, মামলাটি তদন্তের জন্য পিবিআইয়ের কাছে হস্তান্তরের আদেশ হয়েছে। কিন্তু ১৫ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত নথি হস্তান্তর হয়নি। পিবিআই যেদিন চাইবে সেদিনই নথি হস্তান্তর করা হবে। এ জটিলতার কারণে এ মামলায় গৃহবধূর স্বামীর রিমান্ড আবেদনের শুনানি হয়নি। পিবিআই মামলাটি বুঝে নিয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ নেবে। এ পর্যন্ত ছয় জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তারা হলেন খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) প্রধান প্রকৌশল কার্যালয়ের সহকারী প্রকৌশলী মো. গোলাম কিবরিয়া, নিখোঁজ গৃহবধূর স্বামী হেলাল হাওলাদার, দৌলতপুর মহেশ্বরপশা বণিকপাড়া এলাকার মহিউদ্দিন, পলাশ, জুয়েল এবং হেলাল শরীফ।
নিখোঁজ রহিমা খাতুনের মেয়ে মরিয়ম মান্নান বলেন, ১২ সেপ্টেম্বর ১৭ দিন অতিবাহিত হলেও পুলিশ আমার মায়ের সন্ধান দিতে পারেনি। ফলে ১৩ সেপ্টেম্বর ১৮তম দিনে আমার ছোট বোন আদুরি আক্তার আদালতে মামলাটি পিবিআইতে হস্তান্তরের আবেদন করে। শুনানি শেষে ওই দিনই আদালত মামলা পিবিআইতে হস্তান্তরের আদেশ দেন।
আরও পড়ুন: খুলনার রহিমা খাতুনের খোঁজ ১৫ দিনেও মেলেনি
১৫ সেপ্টেম্বর দেয়া এক ফেসবুক পোস্টে তিনি বলেন, ‘আমার ভাই আজকেও পোস্টার লাগিয়েছেন। প্রতিদিন পোস্টার লাগানো হয়। খুলনার এমন কোনো জায়গা নেই যেখানে পোস্টার লাগানো হয়নি! শুধু খুলনা শহর না, সারা বাংলাদেশে পোস্টার দিয়ে মুড়িয়ে দেবো, তারপরও আমরা আমাদের মাকে চাই। মাগো, কোথায় গেলে তোমাকে পাবো মা!’
আরও পড়ুন: নিখোঁজ মাকে ফিরে পেতে ৬ সন্তানের আকুতি
চট্টগ্রামে মিতু হত্যা: বাবুলসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন জমা
চট্টগ্রামে পুলিশ কর্মকর্তা বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু হত্যা মামলার তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে জমা দিয়েছে তদন্তকারী সংস্থা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। দীর্ঘ তদন্ত প্রতিবেদনে মিতু হত্যার জন্য তার স্বামী ও পুলিশের সাবেক এসপি বাবুল আক্তারসহ সাতজনকে দায়ী করা হয়েছে।মঙ্গলবার বিকালে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পিবিআই পরিদর্শক (মেট্রো) আবু জাফর মোহাম্মদ ওমর ফারুক চট্টগ্রাম আদালতের প্রসিকিউশন শাখায় প্রতিবেদন জমা দেন।প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালের ৫ জুন নগরীর জিইসি মোড়ে প্রকাশ্যে কুপিয়ে ও গুলি করে মিতুকে হত্যা করা হয়। ওই বছরের ৬ জুন এ ঘটনায় জঙ্গীরা জড়িত দাবি করে মিতুর স্বামী বাবুল আক্তার পাঁচলাইশ থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।
আরও পড়ুন:চট্টগ্রামে ৫ শিল্পপতির দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞামামলাটি প্রথমে থানা পুলিশ তদন্ত করলেও পরে নগর গোয়েন্দা পুলিশের কাছে মামলার তদন্তভার ন্যস্ত করা হয়।এ মামলায় সন্দেহভাজন হিসেবে-আবু নসুর গুন্নু, শাহ জামান ওরফে রবিন, সাইদুল আলম শিকদার ওরফে সাক্কু ও শাহজাহান, মো. আনোয়ার ও মোতালেব মিয়া প্রকাশ ওয়াসিম নামে কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।এই হত্যায় অস্ত্র সরবরাহকারী হিসেবে গ্রেপ্তার হন এহেতাশামুল হক ভোলা ও তার সহযোগী মো. মনির। তাদের কাছ থেকে পয়েন্ট ৩২ বোরের একটি পিস্তল উদ্ধার করা হয়, যেটি মিতু হত্যায় ব্যবহৃত হয়েছে বলে পুলিশ দাবি করেছিল।গ্রেপ্তার আনোয়ার ও মোতালেব মিতু হত্যায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দেন। তাদের স্বীকারোক্তিতে মিতু হত্যার পরিকল্পনাকারী হিসেবে নাম আসে বাবুল আক্তারের সোর্স হিসেবে পরিচিত মো. মুছার।
আরও পড়ুন:চট্টগ্রামে দেশীয় অস্ত্র জব্দ, গ্রেপ্তার ৫
চট্টগ্রাম বন্দরে কন্টেইনারে পাওয়া গেছে ৩টি এয়ারগান
বিআরটি গার্ডার ট্র্যাজেডি: দুর্ঘটনার ১২ কারণ খুঁজে পেয়েছে তদন্ত সংস্থা
গত মাসে উত্তরায় বাস র্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) প্রকল্পের গার্ডার প্রাইভেটকারের ওপর পড়ে একই পরিবারের পাঁচজনের মৃত্যুর জন্য চীনা ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে দায়ী করা হয়েছে। এই ভয়াবহ দুর্ঘটনার তদন্তের জন্য গঠিত তদন্ত সংস্থার প্রতিবেদনে প্রতিষ্ঠানটিকে দায়ী করা হয় ।
রবিবার সচিবালয়ে তদন্ত প্রতিবেদন নিয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এবিএম আমিন উল্লাহ নূরী এ তথ্য জানান।
তদন্ত সংস্থা দুর্ঘটনার জন্য ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান চায়না গেঝুবা গ্রুপ করপোরেশন বা সিজিজিসিকে দায়ী করেছে বলে তিনি জানান।
আরও পড়ুন: উত্তরায় গার্ডার ট্র্যাজেডি: প্রাথমিক তদন্ত প্রতিবেদন জমা
পৃথকভাবে, তদন্ত সংস্থা দুর্ঘটনার পিছনে বারোটি পরিস্থিতিগত কারণ নির্দেশ করেছে। এগুলি নিম্নরূপ:
১. সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ প্রথমবারের মতো দিনের বেলা গার্ডারটি স্থানান্তর করছিল, যা দুর্ঘটনার পিছনে প্রধান কারণগুলির মধ্যে একটি।
২. ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কোনো পূর্বানুমতি না নিয়েই সরকারি ছুটি উপেক্ষা করেছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
৩. ক্রেনটি একজন সহকারী অপারেটর বা ক্রেনের প্রধান অপারেটরের সাহায্যকারী দ্বারা চালিত হয়েছিল।
৪. এমনকি অপারেটরের কোন লাইসেন্স ছিল না।
৫. একটি ভাঙা রাস্তায় ক্রেনটিকে চালাতে দেখা গেছে। ৬. ক্রেনে কোন ডিজিটাল মনিটর ছিল না।
৭. শ্রমিকরা কাজের জন্য কোনো পূর্বানুমোদন নেয়নি।
৮. কোন নির্দিষ্ট ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা ছিল না।
৯. ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা কর্মীদের অযোগ্যতা।
১০. নিরাপত্তা প্রকৌশলীর অভাব।
১১. কোন জরুরি পরিকল্পনা ব্যবস্থাপনা ছিল না।
১২. ওই দিন যারা কাজ করতে দেখা গেছে তাদের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান অনুমোদন দেয়নি।
দুর্ঘটনার কয়েকদিন পর বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত লি জিমিং বলেছেন, সরকারি তদন্তে ট্র্যাজেডির জন্য দায়ীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হলে তাদের পক্ষ থেকে কোনো আপত্তি থাকবে না।
আরও পড়ুন: উত্তরায় ক্রেন দুর্ঘটনা: বিআরটির ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মামলা
তদন্ত সংস্থা চুক্তি অনুযায়ী নিরাপত্তা নিশ্চিত করার পর প্রকল্পের কাজ চালিয়ে যাওয়াসহ কিছু সুপারিশও প্রদান করেছে। এগুলি হলো-নিরাপত্তা সংক্রান্ত সমস্যার জন্য পূর্বানুমতি নিন; প্রকৌশলী, পরামর্শক, পুলিশ, সিটি করপোরেশন এবং সড়ক সংক্রান্ত কাজের জন্য সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে সমন্বয় করতে হবে; গার্ডারের মতো ভারী জিনিসগুলি স্থানান্তর করা উচিত সঠিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করার পর রাত ৮টা থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত; জরুরি ঘটনায় ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা নিশ্চিত করতে হবে এবং প্রকল্প এলাকায় স্ট্যান্ডবাই ক্ষমতার ক্রেন বা রেকার, অ্যাম্বুলেন্স, প্রাথমিক চিকিৎসা ও জরুরি ডাক্তার রাখতে হবে।
কমিটি পূর্ব সম্মতি অনুযায়ী দুর্ঘটনায় আহতদের খরচ বহন করার পরামর্শ দিয়েছে।
গত ১৫ আগস্ট বিকাল ৪টা ১৫ মিনিটে উত্তরায় প্যারাডাইস টাওয়ারের সামনে বিআরটি প্রকল্পের একটি গার্ডার ক্রেন থেকে প্রাইভেটকারের ওপর পড়ে গেলে দুই শিশুসহ একই পরিবারের পাঁচজন নিহত হন।
ঘটনার পরদিন সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় ছয় সদস্যের এই তদন্ত কমিটি গঠন করে।
পুলিশ জানিয়েছে, এ মর্মান্তিক ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। অবহেলার কারণে মৃত্যুর এফআইআরে কারও নাম নেই। তবে ক্রেন অপারেটর এবং প্রকল্পের ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান চায়না গেঝুবা গ্রুপ কো. লিমিটেডের নাম উল্লেখ করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: গার্ডার তুলতেই বেরিয়ে এলো ৫ নিথর দেহ!
গ্রামীণ টেলিকম নিয়ে দুদকের তদন্ত শুরু
টাকা আত্মসাতের অভিযোগের তদন্ত শুরু করে সোমবার গ্রামীণ টেলিকমকে চিঠি দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
মুহাম্মদ ইউনূসসহ গ্রামীণ টেলিকমের পরিচালনা পর্ষদের চার সদস্যের তথ্য চেয়ে রবিবার চিঠি পাঠিয়েছে দুদক।
এর আগে দুদক সচিব মাহাবুব হোসেন জানান, গ্রামীণ টেলিকমের পরিচালনা পর্ষদের বিরুদ্ধে দুদক তদন্ত শুরু করেছে।
তিনি জানান, অভিযোগ তদন্তের জন্য একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
দুদক সূত্র জানায়, তদন্ত কমিটিতে তত্ত্বাবধায়ক কর্মকর্তা হিসেবে দুদকের পরিচালক সৈয়দ ইকবাল হোসেন এবং উপ-পরিচালক গুলশান আনোয়ারকে টিম প্রধান করা হয়। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন সহকারী পরিচালক জেসমিন আক্তার ও নূরে আলম সিদ্দিকী।
আরও পড়ুন: খুলনার খাদ্য পরিদর্শক ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
পাশাপাশি পরিচালনা পর্ষদের চার সদস্যের বিভিন্ন তথ্য জানতে চাওয়া হয়েছে।
তাদের বিরুদ্ধে শ্রমিকদের মধ্যে বণ্টনের জন্য সংরক্ষিত লভ্যাংশের পাঁচ শতাংশ অপব্যবহার, শ্রমিকদের বকেয়া পরিশোধের সময় অ্যাডভোকেট ফি ও অন্যান্য ফি হিসেবে অবৈধভাবে ছয় শতাংশ কর্তন, শ্রমিক কল্যাণ তহবিলে বরাদ্দের সুদ, অর্থ আত্মসাতসহ অভিযোগের তদন্ত করছে দুদক। অর্থ পাচারের উদ্দেশ্যে কোম্পানি থেকে দুই হাজার ৯৭৭ কোটি টাকা বিতরণ ও আত্মসাৎ ছাড়াই ৪৫ কোটি ৫২ লাখ ১৩ হাজার টাকা বিভিন্ন সহযোগী প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে স্থানান্তর করা হয়েছে।