মুক্তিযোদ্ধা
হলি ফ্যামিলিতে বিনামূল্যে কৃত্রিম হাটু ও কোমর প্রতিস্থাপন শুরু
রাজধানীর হলি ফ্যামিলি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বিনামূল্যে কৃত্রিম হাটু ও কোমরের জয়েন্ট প্রতিস্থাপন শুরু হয়েছে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে ১০০ জন দুস্থ ও অসহায় রোগীকে বিনামূল্যে এই কৃত্রিম হাঁটু ও কোমরের জয়েন্ট প্রতিস্থাপন করে দেয়া হবে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
হলি ফ্যামিলি মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের সহকারী অধ্যাপক ও অর্থোপেডিক সার্জন ক্যাপটেন (অব) ডা. সাইফুল ইসলামের (সাইফ) নেতৃত্বে একদল চিকিৎসক এই কার্যক্রম পরিচালনা করছেন।
আরও পড়ুন: হলি ফ্যামিলি হাসপাতালেও করোনা রোগীদের চিকিৎসা: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
ডা. সাইফুল ইসলাম বলেন, যে সব মানুষের হাটু বা কোমরের জয়েন্ট নষ্ট হয়ে গেছে ও চলাফেরা করতে পারছেন না অপারেশনের মাধ্যমে তাদের হাটু বা কোমরের জয়েন্ট কৃত্রিমভাবে প্রতিস্থাপন করে দেয়া হবে।
একজন চিকিৎসক ও একজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হিসেবে দেশ তাকে অনেক কিছু দিয়েছে জানিয়ে ডা. সাইফ বলেন, দুস্থ ও অসহায় মানুষের পাশে দাড়ানোর এটাই সঠিক সময়।
তিনি বলেন, আসলে যেসব দুস্থ, অসহায় ও গরীব মানুষের হাটু বা কোমরের জয়েন্ট নষ্ট হয়ে গেছে তারা পরিবার, সমাজ তথা দেশের জন্য বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ‘আমার লক্ষ্য হলো স্থবির এই সমস্ত মানুষকে এই দুঃসহ অবস্থা থেকে সারিয়ে তোলে তাদের গতিশীল করা।’
বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা মেজর জেনারেল (অব.) এটিএম আবদুল ওয়াহাবের উদ্যোগে আগে আসলে আগে অপারেশনের ভিত্তিতে বিনামূল্যে এই কৃত্রিম হাঁটু ও কোমরের হাড় প্রতিস্থাপন ইতোমধ্যেই শুরু হয়েছে।
এই উদ্যোগের সাথে সম্পৃক্ত ডা. সাবরিনা আহমেদ জানান, স্বাভাবিকভাবে সবকিছু মিলে এই প্রতিস্থাপন প্রক্রিয়ায় সাড়ে তিন লাখ টাকার উপরে দরকার হয় যার মধ্যে কৃত্রিম হাটু বা কোমর জয়েন্টের মূল্য দেড় লাখ টাকা ও সার্জনের অপারেশন ফি এক লাখ টাকা আর বাকিটা হাসপাতালের খরচ।
আরও পড়ুন: বিনামূল্যে করোনা পরীক্ষার সুযোগ দিচ্ছে সরকার
ডা. সাইফ জানান, যদি সহযোগিতা পান তাহলে তিনি শুধু ১০০ মানুষকে না ভবিষ্যতে এক হাজার মানুষকে বিনামূল্যে ও বিনা পারিশ্রমিকে এই সেবা দিয়ে সুস্থ ও স্বাভাবিক জীবন ফিরে পেতে সহায়তা করতে চান।
তিনি এই উদ্যোগে সমাজে বিত্তবান ও সামর্থবান যারা আছেন তাদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
মফিদুল হকের বোন দিলরুবা ইসলাম মারা গেছেন
মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি মফিদুল হক ও বিশিষ্ট লেখক মনজুরুল হকের বোন দিলরুবা ইসলাম বুধবার ভোরে মারা গেছেন। তার বয়স হয়েছিল ৭১ বছর।
মফিদুল হক ইউএনবিকে বলেন, মঙ্গলবার দিবাগত রাত আড়াইটায় তিনি মারা যান।
দিলরুবা ইসলাম শহীদ মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল ইসলামের স্ত্রী।
দিলরুবা ইসলামের জানাজা বৃহস্পতিবার বাদ জোহর পরীবাগ জামে মসজিদে অনুষ্ঠিত হবে।
তিনি তিন ছেলে, নাতি-নাতনি, আত্মীয়-স্বজন ও অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।
আরও পড়ুন: শান্তিতে নোবেলজয়ী ডেসমন্ড টুটু মারা গেছেন
প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক হাসান আজিজুল হক মারা গেছেন
খালেদা জিয়া কখনো মুক্তিযোদ্ধা হতে পারেন না:মোজাম্মেল হক
খালেদা জিয়া ৭১ এর মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় ক্যান্টনমেন্টে নিরাপদ আশ্রয়ে ছিলেন জানিয়ে তিনি কখনো মুক্তিযোদ্ধা হতে পারেন না বলে মন্তব্য করেছেন মুক্তিযোদ্ধা বিষয়কমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক।
তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় জিয়াউর রহমান খালেদা জিয়াকে পাকিস্তানে নিতে লোক পাঠিয়ে ছিলেন, কিন্তু খালেদা জিয়া নিজের নিরাপত্তার জন্য ক্যান্টনমেন্টে থেকে যান।
শুক্রবার (৩১ ডিসেম্বর) দুপুরে সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলায় মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সের উদ্বোধন ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে মুক্তিযোদ্ধা জনতা সমাবেশে এসব কথা বলেন মন্ত্রী।
আরও পড়ুন: খালেদা জিয়াকে বিদেশে নেয়ার বিষয়ে মতামত দিয়েছেন আইনমন্ত্রী
জেলা প্রশাসক মো. জাহাঙ্গীর হোসেনের সভাপতিত্বে সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দের সুনামগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য মুহিবুর রহমান মানিক, সিলেট ৩ আসনের এমপি হাবিবুর রহমান হাবিব, সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য শামীমা শাহরিয়ার, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ্ব মতিউর রহমান, সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার এম এনামুল কবীর ইমন, সুনামগঞ্জ জেলা মুক্তিযোদ্ধা ইউনিটের সাবেক কমান্ডার হাজী নুরুল মোমেন, দোয়ারাবাজার উপজেলা কমান্ডের সাবেক কমান্ডার ইদ্রিস আলী বীরপ্রতীক, ছাতক উপজেলা কমান্ডের সাবেক কমান্ডার তোতা মিয়া।
এসময় সমাবেশে আগত মুক্তিযোদ্ধারা তাদের রেশন, বিনামূল্যে ব্যবহারের জন্য ২০০ ইউনিট বিদ্যুৎ স্মার্ট কার্ড প্রদানের দাবি জানান।
আরও পড়ুন: খালেদা জিয়া লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত: চিকিৎসক
আ’ লীগ নেতা জয়নাল হাজারীর মৃত্যুতে প্রধানমন্ত্রীর শোক
বীর মুক্তিযোদ্ধা ও আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মণ্ডলীর সদস্য জয়নাল হাজারীর মৃত্যুতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গভীর শোক প্রকাশ করেছেন।
সোমবার এক শোক বার্তায় প্রধানমন্ত্রী ফেনীর সাবেক এই সংসদ সদস্যের বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করেছেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন।
৭৬ বছর বয়সী প্রবীণ এই নেতা সোমবার বিকাল ৫টা ২০ মিনিটে রাজধানীর ল্যাবএইড বিশেষায়িত হাসপাতালে প্রবীণ এই নেতা শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। হাসপাতালের এক কর্মকর্তা জানান, জয়নাল হাজারী হৃদযন্ত্র, কিডনি ও ফুসফুসে সংক্রমণ নিয়ে গত ১৫ ডিসেম্বর থেকে হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন।
আরও পড়ুন: শহীদজায়া মুশতারী শফীর মৃত্যুতে প্রধানমন্ত্রীর শোক
সাংবাদিক রিয়াজ উদ্দিন আহমেদের মৃত্যুতে প্রেসক্লাব ও ডিআরইউ’র শোক
আ’লীগ নেতা গোলাম হাসনাইনের মৃত্যুতে প্রধানমন্ত্রীর শোক
‘বীরাঙ্গনা’ মাজেদাকে কেন ভাতা দেয়া হবে না জানতে চেয়ে রুল
‘বীরাঙ্গনা’ মাজেদার মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি এবং বন্ধ হওয়া ভাতা পুনর্বহালের কেন নির্দেশ দেয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। একই সাথে বীরাঙ্গনা হিসেবে মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি নিয়ে চার বছরের বেশি সময় সরকারি ভাতা ও সুযোগ-সুবিধা পাওয়ার পর তা বাতিলের সিদ্ধান্ত (গেজেট) স্থগিত করেছেন হাইকোর্ট।
ঠাকুরগাঁওয়ের তসলিম উদ্দীনের স্ত্রী মাজেদার করা রিটের শুনানি নিয়ে বিচারপতি মামনুন রহমান ও বিচারপতি খোন্দকার দিলীরুজ্জামানের অবকাশকালীন হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ এই আদেশ দেন। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী ব্যারিস্টার সাবরিনা জেরিন।
মুক্তিযুদ্ধে ঠাকুরগাঁওয়ের রানীশংকৈল উপজেলার রাউতনগর গ্রামের মৃত তসলিম উদ্দীনের স্ত্রী ‘বীরাঙ্গনা’ মাজেদাকে মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি দিয়ে ২০১৬ সালের ২১ জুলাই গেজেট প্রকাশ করে মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়। সেই থেকে তিনি প্রতি মাসের ভাতাসহ অন্যান্য সরকারি সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছিলেন। তবে একই এলাকার মৃত দারাজ উদ্দিনের স্ত্রী আরেক মাজেদা’র আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে যাচাই-বাছাই ও শুনানির পর ২০২০ সালের ২০ অক্টোবর আরেকটি গেজেট জারি করা হয়। সে গেজেটে মৃত দারাজ উদ্দিনের স্ত্রী মাজেদাকে বীরাঙ্গনা মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি দেয়া হয়।
আরও পড়ুন: নাটক-শর্টফিল্ম-ওয়েব সিরিজ প্রচারে সেন্সর বোর্ড গঠনে রুল জারি
তবে ২০১৬ সালের গেজেটে মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি পাওয়া মৃত তসলিম উদ্দীনের স্ত্রী মাজেদার ভাতা ও সরকারি সুযোগ-সুবিধা বন্ধ হয়ে যায়।
মাজেদার আইনজীবী ব্যারিস্টার সাবরিনা জেরিন বলেন, ‘আমার মক্কেল যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে বার বার চিঠি দিয়েও তার স্বীকৃতি ও ভাতা বাতিলের কোন কারণ জানতে পারেনি। এক পর্যায়ে আমার মক্কেল মাজেদার মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি বাতিলের কারণ ও তার ভাতা এবং সরকারি সুযোগ-সুবিধা পুনর্বহাল চেয়ে মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয় ও জাতীয় মুক্তিযুদ্ধা কাউন্সিল বরাবর লিগ্যাল নোটিশ দেয়া হয়। তবে সে নোটিশের জবাব না পেয়ে হাইকোর্টে রিট করি। সে রিটে তসলিম উদ্দীনের স্ত্রী বীরাঙ্গনা মাজেদার মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি এবং তার ভাতা ও সরকারি সুযোগ-সুবিধা পুনর্বহাল চাওয়া হয়। শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট রুলসহ আদেশ দিয়েছেন।
আরও পড়ুন: স্বাধীন পুলিশ তদন্ত কমিশন গঠন নিয়ে রুল জারি
শহীদজায়া বেগম মুশতারী শফী আর নেই
৭১’র মহান মুক্তিযুদ্ধে স্বামী-ভাই হারানো বীর মুক্তিযোদ্ধা ও উদীচী চট্টগ্রামের সভাপতি শহীদ জায়া বেগম মুশতারী শফী আর নেই। ইন্না লিল্লাহি…..রাজিউন। সোমবার বিকেল ৪টার দিকে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে লাইফ সাপোর্টে থাকা অবস্থায় মারা যান তিনি।
উদীচী চট্টগ্রামের সাধারণ সম্পাদক শীলা দাশগুপ্তা বেগম মুশতারী শফীর মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, শহীদ জায়া বেগম মুশতারী শফী লাইফ সাপোর্টে ছিলেন। আজ বিকেল চারটার দিকে তাঁর লাইফ সাপোর্ট খুলে নেয়া হয়।
৮৩ বছর বয়সী বেগম মুশতারী শফী দীর্ঘদিন ধরে শ্বাসকষ্টজনিত রোগে ভুগছেন। রক্তে হিমগ্লোবিনের মাত্রা কমে যাওয়ায় শ্বাসকষ্ট আরও বেড়েছে। গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় গত ১ ডিসেম্বর ভোরে তাঁকে ঢাকায় নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল।
আরও পড়ুন: মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা
একাত্তরের ঘাতক-দালাল বিরোধী আন্দোলন, চট্টগ্রামের সাংস্কৃতিক-নাগরিক আন্দোলনে সামনের সারির সংগঠক এবং মুক্তিযুদ্ধে স্বামী-ভাই হারানো বেগম মুশতারী শফীর নগরীর এনায়েতবাজারের ডাক্তার শফীর ‘মুশতারী লজ’ নামের বাড়িটি ছিল ‘স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের সূতিকাগার।’ এই বেতার কেন্দ্র প্রতিষ্ঠার প্রধান উদ্যোক্তা বেলাল মোহাম্মদ তার কতিপয় সহকর্মীসহ এ বাড়িতে থেকে মুক্তিযুদ্ধের প্রথম রণাঙ্গন চট্টগ্রামের কালুরঘাট ট্রান্সমিটার ভবন থেকে প্রচার কাজ চালিয়েছিলেন ২৯ মার্চ পর্যন্ত।
মুশতারী শফীর জন্ম ১৯৩৮ সালের ১৫ জানুয়ারি। জন্মস্থান ভারতের মালদহ জেলার কালিয়াচকে। বাবার বাড়ি ফরিদপুরের গেরদায়। খন্দকার নাজমুল হক আনসারী অবিভক্ত ভারতবর্ষের পুলিশের ডিএসপি ছিলেন। মা আরেফা খাতুন।
বেগম মুশতারী শফীর মৃত্যুতে উদীচী চট্টগ্রাম ও বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির চট্টগ্রাম জেলা কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি কমরেড আব্দুল নবী ও সাধারণ সম্পাদক কমরেড অধ্যাপক অশোক সাহা গভীর শোক প্রকাশ করেছেন।
আরও পড়ুন: অসাম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক দেশ গড়তে মুক্তিযুদ্ধ করেছিলাম: শিক্ষামন্ত্রী
শোকবার্তায় নেতারা বলেছেন,বেগম মুশতারী শফীর পরিবার একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে অসম সাহসী ভূমিকা পালন করেছেন। তাঁর স্বামী ডা.শফী মুক্তিযোদ্ধাদের অস্ত্র-গোলাবারুদ নিজের হেফাজতে রেখেছিলেন। এ কারণে পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীর সদস্যরা তাঁকে এবং মুশতারী শফীর ভাইকে নৃশংসভাবে হত্যা করেছিল। স্বামী-ভাই হারিয়েও মুশতারী শফী মনোবল অক্ষুন্ন রেখে চট্টগ্রামে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শব্দসৈনিক হিসাবে কার্যক্রম চালিয়ে যান। স্বাধীন দেশে প্রগতিশীল সংস্কৃতির সংগ্রাম, যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের আন্দোলন, নারীমুক্তির আন্দোলন, নাগরিক আন্দোলন-সবক্ষেত্রে রাজপথে সোচ্চার থেকেছেন তিনি। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ ছিল তাঁর স্বপ্ন।
নেতারা আরও বলেন, বেগম মুশতারী শফীর মৃত্যুতে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের প্রগতিশীল রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক আন্দোলনের অপূরণীয় ক্ষতি হয়ে গেল। মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশ বেগম মুশতারী শফীর অবদান অবশ্যই স্মরণে রাখবে বলে আমরা বিশ্বাস করি। সিপিবির পক্ষ থেকে গভীর শোক জ্ঞাপন করছি। একইসঙ্গে শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা প্রকাশ করছি।
আরও পড়ুন: ‘মুক্তিযুদ্ধ পদক' প্রবর্তন
চ্যানেল আই প্রাঙ্গণে বিজয় মেলা: মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মাননা
প্রতিবছরের মতো চ্যানেল আই প্রাঙ্গণে এবারও অনুষ্ঠিত হয়ে গেল দিনব্যাপী বিজয় মেলা। ‘বিজয়ের ৫০’ শিরোনামে এই আয়োজন শুরু হয় বেলা ১১টা ৫ মিনিটে। অনুষ্ঠানে ৫০ জন বীর মুক্তিযোদ্ধাকে সম্মাননা প্রদান করা হয়েছে।
অনুষ্ঠান উদ্বোধন করেন চ্যানেল আই পরিচালনা পর্ষদ সদস্য জহিরউদ্দিন মাহমুদ বাবু এবং চ্যানেল আই—এর পরিচালক ও বার্তা প্রধান শাইখ সিরাজ প্রমুখ।দেশাত্মবোধক গান গেয়ে অনুষ্ঠানে প্রাণ সঞ্চার করেন স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রর শিল্পীরা। এসময় স্মৃতিচারণ করেছেন স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের সদস্য ও অনুষ্ঠানে আগত মুক্তিযোদ্ধা ও বিশিষ্টজনরা।
শিল্পী মনিরুল ইসলামের নেতেৃত্বে মুক্তিযুদ্ধের চিত্রাংকন করেছেন একদল শিল্পী। ছোট পরিসরে বিভিন্ন পণ্যসামগ্রী ও মুক্তিযুদ্ধের দলিল সম্বলিত স্টলও ছিল মেলায়।
আরও পড়ুন: জাতির পিতার স্বপ্ন পূরণই আমাদের লক্ষ্য: প্রধানমন্ত্রীবীর শহীদদের স্মরণে এ সময় বীর মুক্তিযোদ্ধা মুকিত মজুমদার বাবু বলেন, ‘৫০ বছরের অর্জন ও আনন্দের বিজয় দেখে যেতে পারবো ভাবিনি। আমাদের কাছে অভাবনীয় সাফল্যের দিন আজ। এদিনে মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মাননা জানাতে পারবো চিন্তার বাইরে ছিল। জীবন বাজি রেখে যেসব মুক্তিযোদ্ধারা যুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন তাদের সালাম ও শ্রদ্ধা জানাই। এই শ্রদ্ধাঞ্জলি শুধু এখানকার ৫০ জন যোদ্ধাদের নয়, সারা দেশের মুক্তিযোদ্ধাদের। তারা এগিয়ে না এলে আমরা এদেশ পেতাম না।
তিনি আরও বলেন, আমাদের প্রত্যেকের কমবেশি ক্ষমতা রয়েছে। এর সঙ্গে একটু মমতা মিশিয়ে প্রত্যেকে হাতে হাত মিলিয়ে এগিয়ে এলেই বাংলাদেশ আরও এগিয়ে যেতে পারবে। তাহলেই আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম ও আমাদের বাংলাদেশ ভালো থাকবে।অনুষ্ঠানে আগত মুক্তিযোদ্ধাদের উত্তরীয় পরিয়ে তাদের হাতে সম্মাননাসূচক ক্রেস্ট তুলে দেন ইমপ্রেস টেলিফিল্ম, চ্যানেল আই পরিচালনা পর্ষদ সদস্যরা।
বীর শহীদদের স্মরণ করে শাইখ সিরাজ বলেন, ‘বাংলাদেশের উন্নয়ন কাছ থেকে দেখার সুযোগ হয়েছে। পরবর্তী ৫০ বছরে দেশ যেখানে যাবে সেই স্বপ্ন আমরা এখনই দেখা শুরু করেছি। আমাদের সবার প্রচেষ্টা ও কল্যাণে দেশ যেভাবে অগ্রগামী হচ্ছে আগামীতে আরও এগুবে। সেদিন আমরা হয়তো থাকবো না, থাকবে নতুন প্রজন্ম।অনুষ্ঠানে কবিতা আবৃত্তি করেন জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায়, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব হাসান ইমাম, লায়লা হাসানসহ আরও অনেকে।
পড়ুন: স্বাধীনতার লক্ষ্য এখনো বাস্তবায়িত হয়নি: ফখরুল
দেশব্যাপী পালিত হচ্ছে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস
১৯৭১ সালে দেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের শেষ পর্যায়ে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও তাদের স্থানীয় সহযোগীদের হাতে পরিকল্পিতভাবে প্রাণ হারানো বুদ্ধিজীবীদের স্মরণে জাতি আজ মঙ্গলবার শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালন করছে।
এ উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন।
আজ সকালে রাষ্ট্রপ্রতির পক্ষে তার সামরিক সচিব মেজর জেনারেল এস এম সালাহ উদ্দিন ইসলাম স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
সকাল ৭টা ৫ মিনিটে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে প্রধানমন্ত্রীর সামরিক সচিব মেজর জেনারেল নকিব আহমেদ চৌধুরী মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
আরও পড়ুন: শহীদ বুদ্ধিজীবীদের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা নিবেদন
পাকিস্তানিদের কাজ ছিল এ দেশের মুক্তিযোদ্ধাদের নিশ্চিহ্ন করা: শাবিপ্রবি উপাচার্য
মুক্তিযুদ্ধের প্রত্যাক্ষদর্শী হিসেবে বলব যে, পাকিস্তানিদের কাজ ছিল এই দেশের মুক্তিযোদ্ধাদের নিশ্চিহ্ন করা। মুক্তিযুদ্ধকালীন এই দেশের সাধারণ মানুষের ওপর যে বর্বরতা-নিষ্ঠুরতা পাকিস্তানি আর্মিরা চালিয়েছিল তা ইতিহাসে বিরল বলে মন্তব্য করেছেন সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ।বুধবার বিকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের মিনি অডিটোরিয়ামে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষ্যে শাবিপ্রবির বাংলা বিভাগ কর্তৃক আয়োজিত ‘বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ: প্রসঙ্গ জেনোসাইড’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।তিনি বলেন, জেনোসাইডের কথা বললে, আমাদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকবাহিনী নির্মমভাবে গণহত্যার ছাপ রেখেছে। অপারেশন সার্চ লাইটের মাধ্যমে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে মাটির সঙ্গে মেশানোর চেষ্টা করেছে। এই গণহত্যায় শিক্ষার্থী, শিক্ষক কাউকে বাদ রাখেনি। সবচাইতে বেশি নির্মম হত্যাকাণ্ড ঘটেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হলে। সারাদেশে অনেক হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। তবে সঠিক গবেষণার অভাবে এই হত্যাকাণ্ডের চিত্রগুলো পুরোপুরি প্রকাশ পায়নি।
আরও পড়ুন: শিক্ষার্থীদের সুবিধার্থে শাবিপ্রবি প্রশাসনের পদক্ষেপ
তিনি আরও বলেন, বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ও সত্য ইতিহাস সংরক্ষণ ও প্রকাশ করা হচ্ছে। আমাদের তরুণ প্রজন্ম একটি সত্য ইতিহাস জেনে বড় হচ্ছে।উপাচার্য বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতায় যারা বিরোধী ছিল, তাদের পরিবারের লোকেরাই আজকে দেশের উন্নয়নের বিরোধীতা করছে।বাংলা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. ফারজানা সিদ্দিকার সভাপতিত্বে সেমিনারে প্রধান আলোচক হিসেবে জেনোসাইড গবেষক হাসান মোরশেদ এবং বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক অনুষদের ডিন অধ্যাপক দিলারা রহমান। এছাড়াও সেমিনারের আহ্বায়ক ও সঞ্চালনার দায়িত্ব পালন করেন শাবিপ্রবির বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. শিরিন আক্তার সরকার।
আরও পড়ুন: শাবিপ্রবি প্রেসক্লাবের ‘মুজিব শতবর্ষ ক্রীড়া সপ্তাহ’র উদ্বোধন
শাবিপ্রবিতে প্লাস্টিক পণ্য ব্যবহারে সচেতনতার আওয়াজ
স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন করলো ‘আপাসেন’
বাংলাদেশের মুক্তি সংগ্রাম, ইতিহাস ও ঐতিহ্যের অনবদ্য পরিবেশনার মধ্য দিয়ে স্বনামধন্য চ্যারিটি প্রতিষ্ঠান আপাসেন স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন করেছে। রবিবার পূর্ব লন্ডনের কুইন মেরি ইউনিভার্সিটির বিখ্যাত পিপলস প্যালেস গ্রেট হলে স্বাধীনতার ৫০ বছরের পাশাপাশি উদযাপিত হয় আপাসেনের গৌরবময় ৩৭ বছরের পথচলা।
নতুন প্রজন্মের শিশু কিশোরদের জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনার মধ্য দিয়ে শুরু হওয়া এই অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যোগ দেন বিবিসির কিংবদন্তি সাংবাদিক স্যার মার্ক টালি।
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সাথে মিশে থাকা নাম মার্ক টালি ছাড়াও অনুষ্ঠানে প্রিন্স চালর্স ও প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের শুভেচ্ছা বক্তব্য প্রচার করা হয়।
আরও পড়ুন: পাঠ্যপুস্তকে স্বাধীনতার ঘোষণা ও ঘোষণাপত্রের অন্তর্ভুক্তির দাবিতে রিট
আপাসেনের প্রধান নির্বাহী মাহমুদ হাসান এমবিই তাঁর স্বাগত বক্তব্যে আপাসেনের সূচনালগ্ন থেকে আজ পর্যন্ত বাংলাদেশ রাষ্ট্রের সাথে সংগঠটির নিবিড় সংযোগের কথা তুলে ধরেন।
যুক্তরাজ্যে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার সাঈদা মুনা তাসনিম বলেন, যুক্তরাজ্যে হাইকমিশনার থাকাকালীন বাংলাদেশকে ঘিরে তাঁর দেখা সবচেয়ে বড় ও জমকালো আয়োজন এটি।