মুক্তিযোদ্ধা
স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন করলো ‘আপাসেন’
বাংলাদেশের মুক্তি সংগ্রাম, ইতিহাস ও ঐতিহ্যের অনবদ্য পরিবেশনার মধ্য দিয়ে স্বনামধন্য চ্যারিটি প্রতিষ্ঠান আপাসেন স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন করেছে। রবিবার পূর্ব লন্ডনের কুইন মেরি ইউনিভার্সিটির বিখ্যাত পিপলস প্যালেস গ্রেট হলে স্বাধীনতার ৫০ বছরের পাশাপাশি উদযাপিত হয় আপাসেনের গৌরবময় ৩৭ বছরের পথচলা।
নতুন প্রজন্মের শিশু কিশোরদের জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনার মধ্য দিয়ে শুরু হওয়া এই অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যোগ দেন বিবিসির কিংবদন্তি সাংবাদিক স্যার মার্ক টালি।
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সাথে মিশে থাকা নাম মার্ক টালি ছাড়াও অনুষ্ঠানে প্রিন্স চালর্স ও প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের শুভেচ্ছা বক্তব্য প্রচার করা হয়।
আরও পড়ুন: পাঠ্যপুস্তকে স্বাধীনতার ঘোষণা ও ঘোষণাপত্রের অন্তর্ভুক্তির দাবিতে রিট
আপাসেনের প্রধান নির্বাহী মাহমুদ হাসান এমবিই তাঁর স্বাগত বক্তব্যে আপাসেনের সূচনালগ্ন থেকে আজ পর্যন্ত বাংলাদেশ রাষ্ট্রের সাথে সংগঠটির নিবিড় সংযোগের কথা তুলে ধরেন।
যুক্তরাজ্যে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার সাঈদা মুনা তাসনিম বলেন, যুক্তরাজ্যে হাইকমিশনার থাকাকালীন বাংলাদেশকে ঘিরে তাঁর দেখা সবচেয়ে বড় ও জমকালো আয়োজন এটি।
তথ্য প্রতিমন্ত্রীর মন্তব্য নিয়ে সরকারের অবস্থান জানতে চায় বিএনপি
জিয়া পরিবারের বিরুদ্ধে তথ্য প্রতিমন্ত্রী ড. মুরাদ হাসানের আপত্তিকর মন্তব্যের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে তাঁর অবস্থান স্পষ্ট করার আহ্বান জানিয়েছে বিএনপি।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, একজন কুখ্যাত ব্যক্তি জিয়া পরিবারের বিরুদ্ধে সোশ্যাল মিডিয়ায় অত্যন্ত জঘন্য, অবমাননাকর ও অশালীন প্রচারণা চালাচ্ছে। আমি শুনেছি তিনি সম্ভবত জামালপুরের সরিষাবাড়ীর একজন ডাক্তার ছিলেন। তার জন্য নিন্দা জানাই।
তিনি বলেন, প্রতিমন্ত্রী একটি ‘বিপজ্জনক’ মন্তব্য করেছেন। প্রতিমন্ত্রী বলেছেন, তিনি প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে সবকিছু করেন এবং তিনি যা বলেন তা তিনি জানেন।
স্বৈরাচারী শাসক এইচ এম এরশাদের পতনের স্মরণে গণতন্ত্র দিবস উপলক্ষে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
আরও পড়ুন: প্রতিমন্ত্রী মুরাদের পদত্যাগ চায় বিএনপি
বিএনপি নেতা বলেন, এই বৈঠক থেকে আমি প্রধানমন্ত্রীর কাছে জানতে চাই এটা সত্য নাকি মিথ্যা। আপনাকে ব্যাখ্যা করতে হবে। কেননা প্রধানমন্ত্রী হিসেবে জনগণের নিরাপত্তা এবং তাদের মর্যাদা রক্ষা করা আপনার দায়িত্ব। একই সঙ্গে, আমরা আপনার সরকারের অবস্থানও জানতে চাই, যখন একজন মন্ত্রী আপনাকে (প্রধানমন্ত্রী) নিয়ে মিডিয়ায় এমন জঘন্য বক্তব্য দেন।
বর্তমান সরকার দেশের সংস্কৃতি, সৌজন্যবোধ ও দীর্ঘ ঐতিহ্যকে ধ্বংস করছে বলেও অভিযোগ করেন ফখরুল। তিনি বলেন, ‘আপনারা ইতোমধ্যে দেশের রাজনীতিকে ধ্বংস করে দিয়েছেন। আপনারা এখন কি আমাদের মা-বোনদের ন্যূনতম সম্মানও জানাবেন না?’
এসময় ড. মুরাদের অশালীন মন্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানান ফখরুল। তিনি বলেন, একাত্তরে মুক্তিযোদ্ধারা বাংলাদেশকে স্বাধীন করেছিল এবং গণতান্ত্রিক, স্বাধীন ও সভ্য দেশ গড়তে ছাত্রনেতারা নব্বই দশকে স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে গণঅভ্যুত্থান ঘটিয়েছিলেন।
আরও পড়ুন: সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করতে ফের আন্দোলনের হুঁশিয়ারি বিএনপির
ছাত্রদলে মুরাদের সম্পৃক্ততা
ফখরুল আক্ষেপ করে বলেন, ডক্টর মুরাদ একসময় বিএনপির ছাত্র সংগঠন ছাত্রদলের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তিনি ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজে ছাত্রদলের প্রচার সম্পাদক ছিলেন। পরে তিনি ছাত্রলীগে যোগ দেন।
তবে, দর্শক গ্যালারিতে উপস্থিত ঢাকা দক্ষিণ মহানগর যুবদলের আহ্বায়ক গোলাম মাওলা শাহীন তাৎক্ষণিকভাবে ফখরুলের মন্তব্যের প্রতিবাদ করেন এবং তাকে তা প্রত্যাহার করার আহ্বান জানান। কারণ তিনি দাবি করেন যে মুরাদ কখনো ছাত্রদলের সঙ্গে জড়িত ছিলেন না।
একশ টাকায় পুলিশের চাকরি পেয়ে বিস্মিত কেয়া
কামিনী মোহন সেন ও সুচিত্রা রানী সেন দম্পতির ১০ সন্তান। ১০ ভাই বোনের মধ্যে সবার ছোট কেয়া রানী সেন পঞ্চগড় জেলায় পুলিশ কনস্টেবল পদে চাকরি পেয়েছেন।
ঘুষ ছাড়া চাকরি পাওয়া যায় এটা কখনই তার মাথায় ছিল না। কিন্তু সত্যি সত্যি মাত্র একশ টাকায় পুলিশ কনস্টেবলের চাকরি পেয়ে রীতিমত অবাক হয়েছেন কেয়া।
মেধা ও যোগ্যতায় চাকরি পেয়ে পুলিশ প্রশাসন ও সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞ কেয়া। কেয়ার বাড়ি জেলার বোদা উপজেলার পাঁচপীর ইউনিয়নের বৈরাতি সেনপাড়া গ্রামে।
আরও পড়ুন: ১শ’ টাকায় পুলিশে চাকরি পেলেন ৫০ জন
কেয়া বলেন, টাকার অভাবে পরিবারের কোন ভাই-বোনের চাকরি হয়নি, কিন্তু আমি মাত্র একশ টাকা খরচ করে সরকারি চাকরি পেয়েছি। এতে আমি খুবই আনন্দিত। পরিবারের কেউই বিষয়টি বিশ্বাস করতে চায়নি। কিন্তু ঘুষ ছাড়া চাকরি এই সত্যকে প্রতিষ্ঠিত করেছে পঞ্চগড়ের পুলিশ প্রশাসন।
পঞ্চগড় পুলিশ লাইনে কনস্টেবল নিয়োগ পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করেন পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ইউসুফ আলী। মাঠ পর্যায়ে এবং লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষার মাধ্যমে জেলায় মোট ২১ জনকে উত্তীর্ণ করা হয়েছে। অবশ্য আরও পাঁচজনকে অপেক্ষমাণ হিসেবে রাখা হয়েছে। এরমধ্যে সাধারণ পুরুষ কোটায় ১০ জন, মহিলা কোটায় তিন জন, মুক্তিযোদ্ধা কোটায় পাচঁ জন, এতিম কোটায় দুই জন ও পুলিশ পোষ্য কোটায় এক জন।
ফলাফল ঘোষণা অনুষ্ঠানে রংপুর, ঠাকুরগাঁও ও পঞ্চগড়ের ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। এসময় পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ইউসুফ আলী চূড়ান্ত হওয়া প্রার্থীদের ফুলেল শুভেচ্ছা জানান এবং বিভিন্ন দিক নির্দেশনামূলক বক্তব্য প্রদান করেন।
আরও পড়ুন: নির্যাতিত নারীদের সহায়তায় পুলিশের কিউআরটি
প্রার্থী, অভিভাবক ও প্রতিবেশীরা বলেন, পুলিশে চাকরি মানেই টাকার খেলা’ এই অপবাদ ঘুচেছে। শুধুমাত্র একশ টাকার পে-অর্ডার দিয়েই চাকরি পেয়েছেন ২১ পুলিশ কনস্টেবল।
নিয়োগ প্রাপ্ত কেয়া রানী সেন, রহিমা আক্তার সুমি, উম্মে হাবিবা, জাহাঙ্গীর আলম মুসা, সৌরভ চন্দ্র বর্মন, হযরত আলী বলেন, মেধা ও যোগ্যতা দিয়ে যে পুলিশে চাকরি পাওয়া যায় তা প্রমাণ হয়েছে। টাকা ছাড়া চাকরি পেয়ে তারা সকলেই উচ্ছসিত ।
পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ইউসুফ আলী বলেন, সরকার ও পুলিশের ঊর্ধ্বতন মহলের নির্দেশনায় কোনো রকম তদবির, ঘুষ ছাড়া নিয়োগ কার্য সম্পাদন করা হয়েছে। তদবির আসলেও মানা হয়নি। পুলিশের চাকরিতে টাকা লাগে এ ধারণা আর কখনই সত্য হবে না। এ ব্যবস্থায় জনগণের কাছে পুলিশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হয়েছে বলেও মনে করেন তিনি।
জানা গেছে, ২১ শূন্য পদের বিপরীতে অনলাইনে আবেদন পড়ে কয়েক হাজার। সেখান থেকে বাছাই করে প্রাথমিকভাবে ৮৪৮ জনকে নির্বাচিত করা হয়। শারীরিক পরীক্ষায় শেষে ২৮৩ জনকে ডাকা হয় লিখিত পরীক্ষার জন্য।লিখিত পরীক্ষা শেষে ৬৩ জন মৌখিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে।
আরও পড়ুন: পুলিশের অপরাধ তদন্তে ‘স্বাধীন কমিশন’ চেয়ে করা রিটের আদেশ রবিবার
এবার পঞ্চগড়ে মেয়র জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে মামলা
গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের বিরুদ্ধে পঞ্চগড়ের একটি আদালতে মামলা করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার জেলা ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, মানবিক বাংলাদেশ সোসাইটি পঞ্চগড় জেলার সভাপতি ও মুক্তিযোদ্ধা সন্তান আশিকুজ্জামান সৌরভ বাদি হয়ে পঞ্চগড় চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এই মামলাটি করেন।
চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক হুমায়ুন কবির সরকার মামলাটি আমলে নিয়ে সিআইডিকে তদন্ত করে আগামী ৫ জানুয়ারির মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন।
আরও পড়ুন: মেয়র জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার রুল
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, মেয়র জাহাঙ্গীর আওয়ামীলীগ থেকে গাজীপুর সিটি করপোরেশনে মেয়র নির্বাচিত হয়েও দল ও দেশের ক্ষতি করে চলেছেন। তিনি মুক্তিযুদ্ধ ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করেছেন। এছাড়া তিনি মুক্তিযোদ্ধা ও মহান স্বাধীনতাকে তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করে জাতিকে ছোট করেছেন। তার উস্কানিমূলক বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে জনমনে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।
আশিকুজ্জামান সৌরভ বলেন, স্বাধীনতার স্থপতি ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুসহ মুক্তিযোদ্ধা ও আমাদের স্বাধীনতা নিয়ে মেয়র জাহাঙ্গীরের বক্তব্য আমরা মুক্তিযোদ্ধা সন্তানরা কোনভাবেই মেনে নিতে পারি না। তার এই বক্তব্য বঙ্গবন্ধু পরিবার ও মুক্তিযোদ্ধাদের আহত করেছে। এই বক্তব্যের মাধ্যমে মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস নিয়ে তিনি বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছেন। স্বাধীনতা বিরোধীদের উস্কানি দিচ্ছেন। তাই তার বিরুদ্ধে মামলা করাকে নৈতিক দায়িত্ব বলে মনে করেছি।
আরও পড়ুন: জাহাঙ্গীর আলম সাময়িক বরখাস্ত, গাজীপুরে তিন সদস্যের প্যানেল মেয়র গঠন
বাদী পক্ষের আইনজীবী আরাফাত হোসেন জনী বলেন, রাষ্ট্র বিরোধী অসঙ্গিপূর্ণ ও উস্কানিমূলক বক্তব্য প্রদানের অভিযোগ এনে মেয়র জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে বাদী আশিকুজ্জামান সৌরভ মামলা করেছে। মামলাটি আমলে নিয়ে আদালত সিআইডিকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
পঞ্চগড় জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর(পিপি) অ্যাডভোকেট আমিনুর রহমান মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
শাহরাস্তিতে ১০ মুক্তিযোদ্ধা পাচ্ছেন ‘বীর নিবাস’
স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তি ও মুজিববর্ষ উপলক্ষে জেলার শাহরাস্তি উপজেলাতে ১০ মুক্তিযোদ্ধা পরিবার সরকারি ঘর পাচ্ছেন। ইতোমধ্যে ৭৩২ বর্গফুটের এ ঘরগুলো নির্মাণে দরপত্রের মাধ্যমে ঠিকাদার নিযুক্ত করা হয়েছে।
জানা গেছে, মুজিববর্ষে কেউ গৃহহীন থাকবে না সরকারের এমন প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে সারা দেশে অসচ্ছল বীর মুক্তিযোদ্ধা, শহীদ-প্রয়াত বীর মুক্তিযোদ্ধার বিধবা স্ত্রী ও সন্তানদের জন্য ৩০ হাজার পাকাঘর নির্মাণ করা হবে। এর ধারাবাহিকতায় শাহরাস্তি উপজেলায় ১ম পর্যায়ে ১০ মুক্তিযোদ্ধা পরিবার পাচ্ছেন এ ঘর।
আরও পড়ুন: শ্রেষ্ঠ সন্তানদের পরিবারের জন্য দিঘলিয়ায় তৈরি হচ্ছে ‘বীর নিবাস’
১৪ লাখ ১০ হাজার ৩৪২ টাকা ব্যয়ে নির্মিতব্য প্রতিটি বাড়ির রং হবে জাতীয় পতাকার রং লাল-সবুজের সমন্বয়ে। এসব বাড়ির নাম হবে ‘বীর নিবাস’। প্রতিটি বাড়ির আয়তন হবে একই সমান (৭৩২ বগর্ফুট)। দুই কক্ষ, বারান্দাসহ একতলা বিশিষ্ট প্রতিটি বাড়িতে থাকবে আলাদা বাথরুম ও টিউবওয়েল।
শাহরাস্তি উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. আবু ইসহাক জানান, শাহরাস্তি পৌরসভার নিজমেহার, কাজিরকাপ, সূয়াপাড়া, টামটা দক্ষিণ ইউনিয়নের সোনাচোঁ, টামটা, আলীপুর, মেহের উত্তর ইউনিয়নের তারাপুর ও চিতোষী পশ্চিম ইউনিয়নের আয়নাতলী গ্রামের ১০ জন মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের পরিবার বীর নিবাস পাচ্ছেন।
আরও পড়ুন: মুক্তিযোদ্ধা ভাতা প্রক্রিয়ায় যুক্ত হলো সোনালী ব্যাংক
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শিরীন (ইউএনও) জানান, বীর নিবাস প্রদানে লটারির মাধ্যমে ১০ জন মুক্তিযোদ্ধা পরিবার নির্ধারণ করা হয়েছে। পাকা ঘরগুলো নির্মাণের লক্ষ্যে ইতোমধ্যে দরপত্র আহ্বানের মাধ্যমে ঠিকাদার নিযুক্ত করা হয়েছে। শিগগিরই তাদের কার্যাদেশ দানের মাধ্যমে বীর নিবাস নির্মাণ কাজ শুরু করা হবে। দ্রুতই এসব কাজ শেষ হবে।
টাঙ্গাইলের সাংসদ একাব্বর হোসেন আর নেই
টাঙ্গাইল-৭ আসনের টানা চারবারের সংসদ সদস্য একাব্বর হোসেন মঙ্গলবার রাজধানীর একটি হাসপাতালে ইন্তেকাল করেছেন।(ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। মৃত্যুকালে তার বয়স ছিল ৭৬।
মির্জাপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি একাব্বর ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় দুপুর ২টার দিকে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন বলে তার ছেলে ব্যারিস্টার তাহরিম হোসেন সিমন্ত জানিয়েছেন।
মৃত্যুতে তিনি স্ত্রী, এক ছেলে, দুই মেয়ে ও অসংখ্য আত্মীয়-স্বজন রেখে গেছেন।
বীর মুক্তিযোদ্ধা একাব্বর ২০০১, ২০০৮, ২০১৪ ও ২০১৮ সালে টানা চারটি সাধারণ নির্বাচনে জয়ী হন।
একাব্বর হোসেনের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি মরহুমের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান।
আরও পড়ুন: চলে গেলেন আ'লীগের বর্ষিয়ান নেতা মুক্তিযোদ্ধা আফজল খান
চট্টগ্রামে কারাগারে মারা গেলেন বিএনপি নেতা
বীর উত্তম লেফটেন্যান্ট কর্নেল এ টি এম হায়দারের বিদায়
১৯৭৫ সালের অক্টোবরের শেষের দিকে কেনো জানি কুমিল্লা চলে এলাম। মাসিক হাত খরচের ১৫০ টাকা ফুরিয়ে যাওয়ার আগেই হল থেকে বাড়ি চলে আসি। কিছু সঞ্চয় আর নুতন মাসের টাকা নিতে মাঝে মাঝেই বাড়ি যাওয়াটা নৈমিত্তিক হয়ে দাঁড়িয়েছিল। ঢাকা কুমিল্লার বাস ভাড়া ছিল চার টাকা, চারটি ফেরি। সময় চার ঘণ্টা।
এবার ঢাকা ছেড়ে এসে ৭ নভেম্বর সংশ্লিষ্ট অনেক কিছু মিস করেছি। এ বছরের রাজনীতি ও সরকারের মাঝে অনেক পরিবর্তন, অনেক গুঞ্জন, গুজব, নানা কাহিনী সবার মুখে মুখে। বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ড ও পরবর্তী মুশতাক গংদের সামরিক শাসনের বিষয় ছিল উল্লেখযোগ্য।
৩ নভেম্বর ঘটে গেল চার নেতার জেল হত্যার হৃদয় বিদারক ঘটনা। অবিশ্বাস্য, যারা ত্যাগ ও বিশ্বস্ততার সাথে মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনা করে জাতিকে স্বাধীন দেশ উপহার দিয়েছিলেন তাদের এই হত্যাকাণ্ড জনগণ সমর্থন করেনি। এর সাথে ঘটেছিল খন্দকার মুশতাকের বঙ্গভবন ত্যাগ ও ১৫ আগস্টের হত্যাকারীদের বিদেশে পলায়ন।
এরপর মেজর জেনারেল জিয়াকে (তৎকালীন সেনাপ্রধান) অন্তরীণ করা হয়। ব্রিগেডিয়ার খালেদ মোশাররফ (সেনাবাহিনীর তৎকালীন চিফ অব জেনারেল স্টাফ) স্বঘোষিত মেজর জেনারেল পদবি ধারণ করে সেনাপ্রধানের পদ গ্রহণ করেন যা তার উদ্দেশ্যকে প্রশ্নবিদ্ধ করে। কোন আদেশের বলে তিনি পদ ও পদবি নিজেই গ্রহণ করেছিলেন তা আজও অজানা। এর পাশাপাশি রাজনৈতিক অঙ্গনে খালেদের মা ও ভাই রাশেদ মোশাররফ এমপি মিছিল বের করে যা ভারতীয়দের প্রতি সমর্থন বলে প্রচার পায়। জনগণের ধারণা আবার বুঝি বাকশাল ঘুরে এলো।
সামরিক বেসামরিক মহলে জিয়াউর রহমান একজন জনপ্রিয় ও গ্রহণযোগ্য ব্যক্তি ছিলেন। তার অপসারণ ও অন্তরীণ কেউ মেনে নিতে পারছিলনা। এর সুযোগ নিয়ে কর্নেল তাহের বীর উত্তম (অবসরপ্রাপ্ত) সেনা অফিসারদের ও সৈনিকদের মাঝে ভুল বোঝাবুঝির সূত্রপাত করেন। তিনি বিপ্লবী সৈনিক সংস্থা গঠন করে চাকরিরত সৈনিকদের মাঝে রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তারে সচেষ্ট হন। কর্নেল তাহের সেনা সদস্যদের উস্কিয়ে অফিসার হত্যার মত ঘৃণ্য কাজে লিপ্ত হন। বহু সেনা অফিসার সৈনিকের হাতে নিহত হন। এই ধারাবাহিকতায় ব্রিগেডিয়ার খালেদ মোশাররফ, কর্নেল নাজমুল হুদা ও লেফটেন্যান্ট কর্নেল এ টি এম হায়দার নিহত হন। কর্নেল তাহের তথাকথিত সিপাহী জনতার বিপ্লব নামে রাজনীতির জল ঘোলা করে নিজের স্বার্থ হাসিল করার চেষ্টায় জিয়াউর রহমানকে ব্যবহার করতে চেয়েছিলেন। তাকে মুক্ত করা হয়। জেনারেল জিয়ার কতিপয় শুভাকাঙ্ক্ষী জিয়াকে তাহেরের নীল নকশার ফাঁদে পা দিতে দেন নি। ফলে কর্নেল তাহেরের পরিকল্পনা ভেস্তে যায়। জেনারেল জিয়া পুনরায় ক্ষমতা গ্রহণ করে সেনাপ্রধানের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। পরবর্তীতে কর্নেল তাহেরকে গ্রেপ্তার করা হয় ও সামরিক আদালতে বিচার করে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়।
স্বাধীনতা যুদ্ধের দুই নম্বর সেক্টর ছিল সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। সেই সেক্টরের বীর যোদ্ধা খালেদ মোশাররফ, লেফটেন্যান্ট কর্নেল হায়দারের এই করুণ পরিণতি ঢাকা, কুমিল্লা ফরিদপুর, নোয়াখালী অঞ্চলের হাজার হাজার মুক্তিযোদ্ধাদের হৃদয়ে আঘাত দিয়েছে। হানাদারের গুলি যাদেরকে স্তব্ধ করতে পারেনি তারা নিজ অফিসার ও সৈনিকদের হাতে নিহত হলেন। দু: সময়ের দিনগুলিতে যারা প্রশিক্ষণ দিয়ে যুদ্ধ করা শিখিয়েছিলেন, যারা নিজের বর্ণিল ক্যারিয়ার ত্যাগ করে পাকিস্তান রক্ষার শপথ ভেঙেছেন তারা আজ নিহত।
মুক্তিযুদ্ধকালে ২ নম্বর সেক্টরের কমান্ডার ও কে ফোর্স অধিনায়ক ছিলেন মেজর খালেদ। সেক্টরের গেরিলা কার্যক্রম পরিচালনায় ছিলেন মেজর হায়দার। নিয়মিত ও গেরিলা অপারেশনের সমন্বয়ে এই সেক্টর অভিযান পরিচালনা করতো। ছাত্র, শ্রমিক, কৃষক, জনতা গেরিলা প্রশিক্ষণ নিতো মেজর হায়দারের তত্ত্বাবধানে। তাই সর্বস্তরের যোদ্ধারা মেজর হায়দারের খুব ঘনিষ্ঠ ছিলেন। অসম্ভব স্নেহ বৎসল, প্রয়োজনে কঠোর, অমায়িক, দুর্ধর্ষ কমান্ডো এই সেনা অফিসার খুবই জনপ্রিয় ছিলেন। রাজধানী ঢাকায় গেরিলা যুদ্ধ তারই পরিকল্পনায় পরিচালিত হতো। তাই আত্মসমর্পণের পরও ঢাকা অপারেশন ও আইনশৃঙ্খলার দায়িত্ব মেজর হায়দারের উপর ন্যস্ত ছিল। আত্মসমর্পণের দলিল স্বাক্ষররিত হলে ঢাকা শহরের বিশৃঙ্খলা ব্যাপক হয়ে ওঠে। তখন মেজর হায়দার টিভি ও বেতারে বার বার শৃঙ্খলাবদ্ধ হওয়ার জন্য নাগরিকদেরকে সতর্ক করেন। লুটপাট, খুন শক্ত হাতে দমনের জন্য গেরিলা ইউনিট সমূহকে নির্দেশ দেন।
দেশ স্বাধীনের পর সবাই যার যার কর্মে ফেরত যায়। তেমনি মিলিটারি ও তাদের কর্তব্যে নিয়োজিত হয়। অনেক দিন হায়দার ভাইয়ের সাথে দেখা হয়নি। জানতাম না কে কোথায় আছে।
১৬ ডিসেম্বর ৭১ এর বিজয়ের পর সবাই ভারত ছেড়ে স্বাধীন দেশে ফেরা শুরু করে। আমি আমার দায়িত্বপূর্ণ এলাকায় ছিলাম। একদিন কুমিল্লায় মা বাবার সাথে দেখা করতে বাড়ি এলাম। বাসার প্রবেশ পথে দেখলাম একজন মুরুব্বী বসে আছেন। এ সময় সাধারণত আমার বাবা এখানে বসতেন। উনাকে চিনলাম না। সালাম দিয়ে বাসার ভেতরে দেখলাম একজন অতিথি ভদ্র মহিলাও বাসায় আছেন। জানতে পারলাম উনারা মেজর হায়দারের পিতা মাতা। ভারত থেকে এসেছেন। কিশোরগঞ্জ যাওয়ার যাত্রাপথ ঠিক হলেই কুমিল্লা থেকে রওনা দেবেন। আমার বাবা মা ও উনারা ভালোই সময় কাটাচ্ছেন।
৩ নভেম্বর জেল হত্যা ও অন্যান্য ঘটনা অলিতে গলিতে আলোচনার বিষয়। নানান জনের নানা মত। নিশ্চিত কিছু বলা যাচ্ছে না।
বাহার উদ্দিন রেজা বীর প্রতীক ও জামাল উদ্দিন বীর প্রতীক থেকে জানা গেল যে লেফটেন্যান্ট কর্নেল হায়দারের সাথে তাদের দেখা হয়েছে কুমিল্লার চৌয়ারাতে। বাহার ও জামাল কুমিল্লা থেকে একটা বাইকে চৌদ্দগ্রাম যাচ্ছিলেন। পথে আরেকটি বাইক চট্টগ্রামের দিকে থেকে কুমিল্লা যাচ্ছে। দুটি বাইক একে অপরকে অতিক্রম করতেই জামাল ও বাহার অপরদিক থেকে আসা আরোহীকে চিনে ফেললো। তিনি হায়দার ভাই। জামাল ও বাহার ছিল কুমিল্লা গেরিলা ব্যাচের বিশ্বস্ত যোদ্ধা। তাই তারা ছিল কর্নেল হায়দারের একান্ত আপনজন।
মোটর বাইক আরোহীরা বাইক ঘুরিয়ে একে অপরের সাথে কথা বললেন।
লেফটেন্যান্ট কর্নেল হায়দার বান্দরবান জেলার রুমা গ্যারিসন এ ৮ বেঙ্গলের কমান্ডিং অফিসার ছিলেন। মায়ের অসুস্থতার খবর পেয়ে ছুটিতে ঢাকা যাচ্ছেন। ট্রেনের অপেক্ষা না করে মোটর বাইকে ঢাকা রওয়ানা হয়েছেন। তিনি খালেদ মোশারফ ও জেনারেল জিয়ার মাঝের ভুল বোঝাবুঝি নিরসনে কাজ করে যাবেন বলে হায়দার ভাই জানালেন।
কথা শেষে কর্নেল হায়দার ঢাকা অভিমুখে রওনা দিলেন।
সারাদেশ নভেম্বরের শুরু থেকেই হতাশ। কেউ জানেনা কি হবে, কি হচ্ছে। জেল হত্যা, খন্দকার মুশতাক এর প্রস্থান, সেনাপ্রধান জিয়াউর রহমানের অন্তরীণ, খালেদ মোশাররফের জেনারেল পদে পদোন্নতি ও সেনাপ্রধানের দায়িত্ব গ্রহণ, রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা, কর্নেল তাহেরের বিপ্লবী সৈনিক সংগঠন এর সেনাবাহিনী ধ্বংসের চেষ্টা ও ব্রিগেডিয়ার খালেদ মোশাররফ, কর্নেল নাজমুল হুদা এবং কর্নেল হায়দারের হত্যাকাণ্ড আরও অনিশ্চয়তা বাড়িয়ে দিয়েছে।
ঢাকার বাইরে আমরা নানাবিধ সংবাদ পাচ্ছিলাম। ৭ নভেম্বর রেডিও টিভি থেকে সংবাদ পরিবেশিত হলো যে সিপাহী জনতা বিপ্লবের মাধ্যমে জেনারেল জিয়াকে বন্দী দশা থেকে মুক্ত করেছে। প্রতিবিপ্লবী গোষ্ঠীকে ধ্বংস করা হয়েছে। খালেদ মোশাররফ, কর্নেল হুদা ও কর্নেল হায়দার শের ই বাংলা নগরে ১০ ই বেঙ্গলের সেনা সদস্যরা হত্যা করেছে। গুলির পর বেয়নেট চার্জ করতেও ছাড়েনি।
রাস্তায় রাস্তায় বিজয় উৎসব চলছে। ট্যাঙ্ক এর লম্বা ব্যারেল এ ফুলের মালা ঝুলছে। সেনাদেরকে জনতা অভিনন্দন জানাচ্ছে। এক উৎসব মুখর ঢাকা নগরী।
কর্নেল হায়দারের মৃত্যু সংবাদ আমাদেরকে খুব বিচলিত করে। কে রাজা হলো, কে ক্ষমতায় গেল তা নিয়ে আমরা চিন্তিত নই। আমাদের প্রিয় গেরিলা কমান্ডার হায়দার ভাইকে হত্যা করা হয়েছে আমরা মেনে নিতে পারছি না। ব্রিগেডিয়ার খালেদ ও আমাদের কমান্ডার ছিলেন। তবে জনযোদ্ধারা কর্নেল হায়দারের সাথেই সরাসরি সম্পৃক্ত ছিল বলেই তিনি অধিক পরিচিত।
আমরা কয়েকজন ঢাকা গিয়ে কর্নেল হায়দারকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে সিদ্ধান্ত নিলাম। বাহার, জামাল ও আমি ঢাকা চলে এলাম। সূর্যসেন হলের আমার ৪২৬ নম্বর কক্ষে আরও কয়েকজন এলো, সবার নাম এখন মনে পড়ছে না। কর্নেল হায়দারের লাশ খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। তার দাফনের কি ব্যবস্থা হচ্ছে কেউ জানে না। চলাচলও সীমিত। সন্ধ্যার পর কারফিউ। সেনানিবাসে প্রবেশে কড়াকড়ি।
সন্ধ্যার আগেই মতিঝিল কলোনিতে পৌঁছে গেলাম। খুঁজে বের করলাম কর্নেল হায়দারের বড় বোনের বাসা। শোকাহত পরিবেশ। হায়দার ভাইয়ের লাশের সন্ধান পাওয়া যায়নি এখনো। চেষ্টা চলছে।
বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, এই তিন জন বীর মুক্তিযোদ্ধার লাশ সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালের মর্গে আছে। ৭ থেকে ১১ তারিখ পর্যন্ত লাশের কোনো সন্ধান কেউ পায়নি। তবে এর মাঝে কর্নেল হায়দার হায়দারের লাশ ব্যতীত বাকিদের লাশ আত্মীয় স্বজনরা আগেই নিয়ে গেছে।
লাশ সংগ্রহ করে গোসল করিয়ে মতিঝিলের বাসায় আনা হলো। এরপর লাশের ট্রাকে করে আমরা কিশোরগঞ্জ রওনা হলাম। তাকে তার নিজ বাড়িতে দাফন করা হবে।
কর্নেল হায়দার ছুটি কাটাতে এসে তার মুক্তিযুদ্ধ কালীন কমান্ডার খালেদ মোশাররফের সাথে দেখা করতে গিয়ে নির্দোষ প্রাণটি হারালেন।
১২ নভেম্বর ১৯৭৫ সালে কর্নেল এটিএম হায়দার নিজ বাড়ির আঙিনায় সমাহিত হলেন। আত্মীয়স্বজন, বন্ধু বান্ধব, মুক্তিযোদ্ধা ও গুণগ্রাহীদের ভালোবাসা নিয়ে চিরবিদায় নিলেন।
লেখক: কলামিস্ট কর্নেল (অব.) মো. শাহ জাহান মোল্লা
(প্রকাশিত মতামতের দায় লেখকের, ইউএনবির নয়)
আরও পড়ুন: সমীরুদ্দী ও মুনিয়ারা-একই সমতলে
বীরের খেতাব হরণ
আমাদের প্রাথমিক, মাধ্যমিক শিক্ষা ও প্রসঙ্গ কথা
ভারতে চিকিৎসার সুযোগ পাচ্ছেন ১০০ বীর মুক্তিযোদ্ধা, দরখাস্ত আহ্বান
১০০ জন বীর মুক্তিযোদ্ধাকে ভারতে চিকিৎসাসেবা দেয়ার লক্ষ্যে দরখাস্ত আহ্বান করেছে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়।
'বীর মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসা সেবাদান' স্কিমের আওতায় ভারত সরকারের আর্থিক সহায়তায় ঢাকাস্থ ভারতীয় হাইকমিশন এবং মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় যৌথভাবে এ কার্যক্রম বাস্তবায়ন করবে।আবেদন ৩০ নভেম্বর ২০২১ পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট জেলার সিভিল সার্জনের কার্যালয়ে জমা নেয়া হবে। এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য ও ফরম মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে (www.molwa.gov.bd) পাওয়া যাবে।
আরও পড়ুন:বীর মুক্তিযোদ্ধা বিজয় কুমারের মৃত্যুতে প্রধানমন্ত্রীর শোক
বীর মুক্তিযোদ্ধারা ‘ডিজিটাল সনদ’ পাবেন: মন্ত্রী
শ্রেষ্ঠ সন্তানদের পরিবারের জন্য দিঘলিয়ায় তৈরি হচ্ছে ‘বীর নিবাস’
খুলনার দিঘলিয়া উপজেলায় ১২ জন মৃত বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের জন্য এক কোটি ৬১ লাখ ২৩ হাজার ৪১৬ টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হচ্ছে ‘বীর নিবাস’। এর মধ্যে কাজের টেন্ডার সম্পন্ন হয়েছে।
এদিকে, পর্যায়ক্রমে সরকার সকল মুক্তিযোদ্ধাদের আবাসন সমস্যা দূরীকরণের জন্য বীর নিবাস তৈরি করে দিবে। এমন সংবাদে দিঘলিয়া উপজেলায় মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনার সৃষ্টি হয়েছে।
দিঘলিয়ায় ‘বীর নিবাস’ নির্মাণে মেসার্স জামাল ট্রেডার্স নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান লটারির মাধ্যমে কাজটি পেয়েছেন। এর মধ্যে প্রতিষ্ঠানটি কার্যাদেশ হাতেও পেয়েছে।
আরও পড়ুন: বীর মুক্তিযোদ্ধারা ‘ডিজিটাল সনদ’ পাবেন: মন্ত্রী
এব্যাপারে সংশ্লিষ্টরা জানান, সরকার সারাদেশে অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাদের আবাসন সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে অস্বচ্ছল বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য আবাসন নির্মাণ প্রকল্প হাতে নেয়। এরই ধারাবাহিকতায় মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে সরকার সারাদেশে প্রতিটি উপজেলায় অস্বচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাদের নামের তালিকা পাঠানোর জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের কাছে চিঠি দেন।
দিঘলিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাদের আবাসন প্রকল্প নির্মাণের সিলেকশন কমিটির সভাপতি মো. মাহবুবুল আলম গত অক্টোবর মাসে ১৮ জনের নামের প্রস্তাবনা মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়ে পাঠান। ১৮ জনের মধ্যে মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয় ১২ জনের নামে অনুমোদন দেয়।
তারা হলেন, মৃত বীর মুক্তিযোদ্ধা গাজী আব্দুল লতিফ, মো. মন্টু বিশ্বাস, মো. হায়দার আলী, শেখ নজির আহমেদ, মো. নুর ইসলাম সরদার, মো. মঞ্জুরুল আলম, মো. আজাহার আলী, মো. কায়সেদ শেখ, মো. আব্দুল জব্বার, শেখ জালাল উদ্দিন, শেখ সাহেব আলী।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস সূত্র জানায়, অস্বচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাদের আবাসন নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় অত্র উপজেলায় মৃত ১২ জন বীর মুক্তিযোদ্ধার পরিবারের জন্য আবাসনের জন্য বরাদ্দ দেয়া হয়েছে এক কোটি ৬১ লাখ ২৩ হাজার ৪১৬ টাকা। প্রতিটি আবাসন নির্মাণের জন্য ব্যয় ধরা হয়েছে ১৩ লাখ ৪৩ টাকা। আবাসন নির্মাণের পর এসব ঘরের নাম দেয়া হবে ‘বীর নিবাস’।
আরও পড়ুন: মুক্তিযোদ্ধা ভাতা প্রক্রিয়ায় যুক্ত হলো সোনালী ব্যাংক
সূত্র জানায়, ঘরগুলো নির্মাণের জন্য গত ৩০ সেপ্টেম্বর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস হয়। গত ১১ অক্টোবর দরপত্র গ্রহণের শেষ দিনে মোট ৭৭ জন ড্রপিং করে। পরবর্তীতে লটারির মাধ্যমে মেসার্স জামাল ট্রেডার্স নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজটি পায়। বৃহস্পতিবার (৪ নভেম্বর) উপজেলা পিআইও অফিস থেকে ঐ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে কার্যাদেশ দেয়া হয়েছে।
ভোটাধিকার ফিরিয়ে দেয়ার প্রতিশ্রুতি সাংসদ প্রাণ গোপাল দত্তের
সদ্য নির্বাচিত সংসদ সদস্য, বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক ডা. প্রাণ গোপাল দত্ত বলেছেন, ‘আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন থেকে সকল নির্বাচনে চান্দিনার প্রতিটি জনগণের ভোটাধিকার ফিরিয়ে দিব।’
শুক্রবার বিকেলে কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলায় মাইজখার ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ আয়োজিত এক জনসভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত হয়ে সাংসদ ডা.প্রাণ গোপাল দত্ত এই কথা বলেন।
এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের সাবেক পরিচালক বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মমিন সরকার, জেলা আওয়ামী লীগ নেতা মুজিবুর রহমান, উপজেলা কৃষকলীগ সহ সভাপতি আবুল কালাম আজাদ, আইন বিষয়ক সম্পাদক এড. শাহজালাল মিঞা শিপনসহ অন্যান্যরা।
আরও পড়ুন: কুমিল্লা-৭ আসনে ডা. প্রাণ গোপালকে বিজয়ী ঘোষণা