স্বাস্থ্যমন্ত্রী
ওষুধের দোকান ২৪ ঘণ্টা খোলা থাকবে: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
ওষুধের দোকান ২৪ ঘণ্টা খোলা থাকবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
তিনি বলেন, ‘ইত্যোমধ্যে কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে, সিটি কর্পোরেশনের সাথে আলোচনা চলছে। রাত ১২টার ওষুধের দোকান বন্ধের কোন নির্দেশ আমরা দেইনি। এ বিষয়ে আলোচনা চলছে। তবে ওষুধের দোকান ২৪ ঘণ্টা খোলা থাকবে।’
বৃহস্পতিবার (২৫ আগস্ট) দুপুরে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সভাপতিত্বে দেশের হাসপাতালের সেবা কার্যক্রম সংক্রান্ত সভা শেষে তিনি এ কথা বলেন।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, 'স্বাস্থ্যসেবা হল জরুরি সেবা। আমরা কোন হাসপাতালের টাইমিং কমাইনি। আমরা ২৪ ঘণ্টা সেবা বজায় রেখেছি৷ শুধু অফিস কেন্দ্রিক বা সিভিল সার্জন অফিস, সেখানে ৮-৩টা করেছি। তাছাড়া সকল হাসপাতাল তার নিজস্ব গতিতে চলবে। সেখানে সময়টা অপরিবর্তিত থাকবে এবং ওষুধের দোকানের বিষয়ে আমরা বন্ধ করার জন্য কোন নির্দেশনা দেইনি।
তিনি বলেন, ‘ওষুধ একটি জরুরি প্রয়োজনীয় বিষয়। যে সমস্ত প্রতিষ্ঠান যারা জরুরি সেবা দিয়ে থাকে, সাধারণত বন্ধ রাখা হয় না। ফার্মেসিগুলো কিন্তু ২৪ ঘণ্টাই খোলা থাকে। এ বিষয়ে আমরা কোন নির্দেশনা দেইনি। সিটি কর্পোরেশন যদি এ বিষয়ে কিছু করে থাকে, আমরা তাদের সাথে আলোচনা করে একটা সুরাহা অবশ্যই করব। আমি মনে করি এটা ২৪ ঘন্টা খোলা থাকা প্রয়োজন।’
সাংবাদিকদের আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যখনই শুনেছি তখন থেকে এ বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। খোলা ইনশাআল্লাহ থাকবে আমরা মনে করি। উনারা হয়তো বলেছিল রাতের বিষয়। এ বিষয়টা অবশ্যই আলোচনার প্রয়োজন থাকে। উনারা একটা সিদ্ধান্ত দিয়েছে, যে সিদ্ধান্ত আমাদের সাথে আলোচনা করে দেয়া হয়নি৷ আমরা আলোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। ইতোমধ্যে এ বিষয়ে আমরা আমাদের কর্মকর্তাদেরকে বলেছি, আলোচনা করে এটাকে সরাহা করার জন্য।’
মন্ত্রী বলেন, ‘ওষুধের দোকানতো বন্ধ হয়নি। এটাতো গতকালকের বিষয়৷ এক সপ্তাহ পার হয়নি। গত পরশু ক্যাবিনেটে এটা আলোচনা হয়েছে। গতকালকে হয়তো এ বিষয়টি বলেছে৷ এ বিষয়ে আমরা গতকালই জেনেছি এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য আমরা বলেছি। ওষুধের দোকান বন্ধ থাকবে না, খোলা থাকবে। কারণ এটা একটা প্রয়োজনীয় জিনিস। যেভাবে হাসপাতাল খোলা থাকবে, সেভাবে ওষুধের ব্যবস্থাও থাকবে।
তিনি আরও বলেন, সরকারি হাসপাতালেতো ওষুধ সরাসরি যায়। সেখানেতো বন্ধ থাকার কোন সুযোগ নেই৷ ফার্মেসিগুলোর কথা হয়তো বলেছে, এ বিষয়ে আমরা, সেটাকেও খোলা রাখার আমরা ব্যবস্থা নেব।
এর আগে ২২ আগস্ট ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সাশ্রয়ের লক্ষ্যে সাধারণ ওষুধের দোকান রাত ১২টা পর্যন্ত এবং হাসপাতাল সংলগ্ন নিজস্ব ওষুধের দোকান রাত দুইটা পর্যন্ত খোলা রাখা যাবে।
এতে বলা হয়, শপিংমল, সব ধরনের দোকানপাট, ব্যবসায়িক বা বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান, কাঁচাবাজার, মার্কেট ও স্থাপনা রাত ৮টায় বন্ধ করতে হবে। খাবার দোকান ও রেস্টুরেন্ট রাত ১০টার মধ্যে বন্ধ করতে হবে। তবে রাত ১১টা পর্যন্ত খাবার সরবরাহ করা যাবে।
আগামী ১ সেপ্টেম্বর থেকে এসব নির্দেশনা কার্যকর হবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
পড়ুন: হোটেল ও রেস্টুরেন্ট রাত ১০টার পর বন্ধ থাকবে: ডিএসসিসি
সরকার জ্বালানি খাতকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করে জনগণের টাকা লুটপাট করছে: বিএনপি
দেশে প্রতিদিন যক্ষায় ১০০ জনের বেশি মানুষ মারা যায়: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
গত ১০ বছরে যক্ষায় আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা অর্ধেকে নেমেছে। তবে এখনও যক্ষায় দিনে ১০০ জনের বেশি মানুষ মারা যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক। তিনি বলেছেন, ১০ বছর আগে দেশে বছরে ৮০ হাজার লোক মারা যেত। এখন বছরে প্রায় ৪০ হাজার মানুষ যক্ষায় মারা যাচ্ছে।
বুধবার রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে আয়োজিত কমিউনিটি, রাইটস অ্যান্ড জেন্ডার অ্যাকশন প্ল্যান ফর টিবি (২০২১-২৩) শীর্ষক এক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্বাস্থ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, যক্ষা হলে রক্ষা নেই, এটি এখন টোটালি ভুল প্রমাণিত হয়েছে। যক্ষায় সচেতন থাকলে ও নিয়ম করে ওষুধ সেবন করলে ৯৭ ভাগ যক্ষা রোগী এখন সুস্থ হয়ে যাচ্ছে। তবে, স্বাস্থ্যখাতের এই উন্নয়নের সময়েও বছরে ৪০ হাজার যক্ষা আক্রান্ত মানুষের মৃত্যু কোনো ভালো খবর নয়। এর মানে যক্ষায় দিনে ১০০ জনের বেশি মানুষ মারা যাচ্ছে। করোনায় দিনে ৫০ জন মানুষ মারা গেলে আমরা কত উদ্বিগ্ন থাকি। এখন করোনায় ১/২ জনও মারা যায় না, তবুও আমরা চিন্তায় থাকি। অথচ যক্ষায় দিনে ১০০ জন, ক্যান্সার ও হার্ট এটাকে দিনে প্রায় আড়াই'শ জন মানুষ মারা যাচ্ছে। এই সংখ্যা শূন্যের কাছাকাছি নামিয়ে আনতে স্বাস্থ্যখাতের পাশাপাশি আমাদের সকল মন্ত্রণালয় মিলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে।
আরও পড়ুন:শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেই টিকা পাবে শিশুরা: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
জাহিদ মালেক এ সময় বলেন, বিশ্বে ১৩তম মৃত্যুর কারণ টিবি। পৃথিবীতে এখন প্রায় এক কোটি লোক টিবিতে আক্রান্ত। প্রতিবছর প্রায় ১৫ লাখ লোক মারা যায়। আর দেশে প্রতিবছর ৪০ হাজারের মতো মানুষ মারা যায়, তিন লাখ আক্রান্ত হয়। এই সংখ্যা অনেক।
তিনি বলেন, আমরা অনেক রোগ বাংলাদেশে নিয়ন্ত্রণ করেছি। আমরা দেশকে পোলিওমুক্ত করেছি। কলেরা, ডায়রিয়া দূর করতে পেরেছি। দেশ টিটেনাসমুক্ত হয়েছে। টিবি নিয়ন্ত্রণেও যথেষ্ট কাজ করছি। আমাদেরকে এখন সংক্রামক রোগের পাশাপাশি অসংক্রামক রোগ নিয়েও কাজ করতে হচ্ছে। দেশে ক্যান্সার, কিডনিতে অসংখ্য লোক মারা যাচ্ছে। এগুলো নিয়েও আমরা কাজ করছি।
মন্ত্রী বলেন, টিবিকে আমরা নির্ণয় করতে পারছি এটি বড় পজিটিভ বিষয়। কারণ, আপনি যদি নির্ণয় করতে পারেন, তাহলে এর চিকিৎসাও আছে। এ কারণেই টিবিতে মৃত্যুর হার কমে আসছে। যক্ষ্মায় এখন ৯৫ থেকে ৯৭ শতাংশ লোক সুস্থ হয়ে যাচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, পৃথিবীতে যতগুলো দেশ আছে, এরমধ্যে যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণের তালিকায় বাংলাদেশ ৭ নম্বরে আছে। সেটি কিন্তু অনেক বেশি। আমরা নিয়ন্ত্রণে কাজ করছি। চিকিৎসা ব্যবস্থার উন্নয়ন করে যাচ্ছি।
আরও পড়ুন:পর্যায়ক্রমে সারাদেশের স্কুলগুলোতে শিশুদের টিকা দেয়া হবে: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
যক্ষা রোগ নিয়ে কিছুটা আশঙ্কা প্রকাশ করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, যারা টিবি আক্রান্ত হয়ে মাঝপথে চিকিৎসা ছেড়ে দিচ্ছেন, তারা আরও জটিল রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। এদিকে, অসংখ্য রোগী ডিটেকশনের বাইরে থেকে যাচ্ছেন, তারা চিকিৎসা নিচ্ছেন না। এমনকি তাদের কারণে সমাজে রোগটি ছড়িয়ে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, আমাদেরকে অবশ্যই ডিটেকশনে আরও গুরুত্ব দিতে হবে। শনাক্তের সংখ্যা বাড়াতে হবে। নয়তো আরও বিপদজনক অবস্থা তৈরি হবে।
সতর্কতায় গুরুত্বারোপ করে মন্ত্রী বলেন, টিবি আক্রান্ত রোগী যে পাত্রে খাওয়া দাওয়া করে, সেগুলো আলাদা করা এবং চিকিৎসাটা যেন নিয়মিত হয়, রোগী যেন ঠিকঠাক ওষুধ খায়, সেটা নিশ্চিত করতে হবে।
জাহিদ মালেক বলেন, টিবি রোগটা মূলত ঘিঞ্জি পরিবেশে বেশি হয়। যেসব এলাকায় লোকজন বেশি বাস করে, বিশেষ করে গার্মেন্টস এলাকায় টিবির হার বেশি। একজনের হলে সেটি অন্যদের মধ্যেও ছড়িয়ে যায়। কারণ, একসঙ্গে তারা অসংখ্য লোক বসবাস করে।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব ড. আনোয়ার হোসেন হাওলাদার বলেন, বর্তমানে প্রতি বছরে ৫০ হাজারেরও বেশি রোগী মারা যায়। তিন লাখ বা তার বেশি রোগী প্রতিবছর যুক্ত হচ্ছে। নতুন করে যুক্ত হওয়াটা কমানো না গেলে টিবি নিয়ন্ত্রণে সরকারের যে লক্ষ্য, সেটি বাস্তবায়ন হবে না।
স্বাস্থ্য সচিব বলেন, টিবি রোগটি বিশেষ করে বর্ডার এলাকায় বেশি। কক্সবাজারে মিয়ানমার থেকে আসাদের মাধ্যমে ওই এলাকায় বেশি ছড়াচ্ছে। সরকার এ বিষয়টি নিয়ে কাজ করছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর কাজ করছে। এই রোগের চিকিৎসায় টাইমিং খুবই গুরুত্বপূর্ণ। নিয়মমাফিক ওষুধ খেতে হয়।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এবিএম খুরশিদ আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের (স্বাচিপ) সভাপতি অধ্যাপক ডা. ইকবাল আর্সলান, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আহমেদুল কবির, অধিদপ্তরের পরিচালক ও টিবি-ল্যাপ্রোসি অপারেশন প্ল্যানের লাইন ডিরেক্টর ডা. খুরশিদ আলমসহ আরও অনেকে। অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের হেলথ সার্ভিস ডিভিশনের অতিরিক্ত সচিব নিলোফার নাজনীন।
আরও পড়ুন: দেশে দুটি লিকুইড অক্সিজেন প্ল্যান্ট তৈরি হচ্ছে: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেই টিকা পাবে শিশুরা: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
পাঁচ থেকে ১১ বছরের শিশুদের (প্রাথমিকের শিক্ষার্থী) শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেই টিকা দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
তিনি বলেন, ‘শিশুদের এই টিকা কর্মসূচি পরিচালিত হবে সিটি করপোরেশন এলাকাগুলোতে। সেখানকার স্কুলগুলোতে আমরা টিকা প্রদান করবো। ইতোমধ্যেই কর্তৃপক্ষকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে শিশুরা যাতে সঠিক সময়ে কেন্দ্রে এসে টিকা নেয়। এবং টিকা কেন্দ্রে এসে যাতে বসতে পারে সেই ব্যবস্থা করে।
সোমবার (১৫ আগস্ট) রাজধানীর মহাখালীতে জাতীয় ক্যান্সার গবেষণা ইন্সটিটিউট ও হাসপাতালে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
আমাদের দেশে পাঁচ থেকে ১১ বছরের দুই কোটি ২০ লাখ শিশু আছে জানিয়ে জাহিদ মালেক বলেন, এই বয়সী শিশুরা দেশের যে প্রান্তেই থাকুক তাদেরকে হিসেবে নেয়া হয়েছে। এতে তারা ভাসমান হোক আর স্কুলে না পড়া শিশু হোক সকল শিশুই টিকা পাবে।
মন্ত্রী আরও বলেন, আমাদের টিকা কার্যক্রম চলমান রয়েছে। টিকার প্রথম ডোজ, দ্বিতীয় ডোজ ও বুস্টার ডোজ কার্যক্রম ও চলমান রয়েছে। শিশুদের টিকা কার্যক্রম ১১ আগস্ট উদ্বোধন করা হয়েছে এবং আগামী ২৫ তারিখ থেকে পুরোদমে টিকা কার্যক্রম পরিচালনা হবে। তার জন্য যা যা ব্যবস্থা করা প্রয়োজন সকল ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, টিকা তারাই নিতে পারবে যারা নিবন্ধন করেছে। নিবন্ধন কার্যক্রম চলমান রয়েছে তবে তা দ্রুত শেষ করতে বলা হয়েছে। এই বিষয়গুলো নিয়ে কাজ করছেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।
মন্ত্রী জানান, কতগুলো সেন্টারে এই টিকা দেয়ার প্রয়োজন হবে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় জানালে সে হিসেবে ব্যবস্থা নেয়া হবে ।
মন্ত্রী আরও জানান, আমরা অতীতেও টিকা দিয়েছি। আমাদের ডাক্তার, নার্সদের এখন পর্যাপ্ত অভিজ্ঞতা রয়েছে, তারা প্রশিক্ষিত৷ ৩০ কোটি টিকা প্রদানেও আমাদের কোনো রকম কোনো অঘটন ঘটে নি। আমরা শিশুদের ব্যাপারে বিশেষভাবে মনোযোগী আছি।
আরও পড়ুন: পর্যায়ক্রমে সারাদেশের স্কুলগুলোতে শিশুদের টিকা দেয়া হবে: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
দেশে পৌঁছেছে শিশুদের করোনার টিকা
পর্যায়ক্রমে সারাদেশের স্কুলগুলোতে শিশুদের টিকা দেয়া হবে: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে পর্যায়ক্রমে সারাদেশের স্কুলগুলোতে শিশুদের টিকা দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
তিনি বলেন, ‘পাঁচ থেকে ১১ বছর বয়সী শিশুদের করোনার টিকাদান পরীক্ষামূলকভাবে শুরু হয়েছে। আগামী ২৫ আগস্ট থেকে সিটি কর্পোরেশনগুলোতে টিকাদান আগে শুরু হবে। পর্যায়ক্রমে সারাদেশের স্কুলগুলোতে শিশুদের টিকা দেয়া হবে। নিবন্ধন ছাড়া কোনো শিশু টিকা নিতে পারবে না।’
শনিবার (১৩ আগস্ট) দুপুরে মানিকগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে নবজাতকের সেবাকেন্দ্রের উদ্বোধনকালে তিনি এসব কথা বলেন।
এর আগে দেশে (১১ আগস্ট) পরীক্ষামূলকভাবে পাঁচ থেকে ১১ বছর বয়সী শিশুদের করোনার টিকা দেয়া শুরু হয়েছে। বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) এই টিকা প্রদান কর্মসূচির উদ্বোধন করেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, এই টিকা শিশুদের জন্য বিশেষভাবে তৈরি করা হয়েছে। খুবই নিরাপদ। ইউএসএ তে এই টিকা দেয়া হচ্ছে। ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর অনুমোদন দিয়েছে। যেই টিকাগুলো এসেছে, সেগুলো দুই মাসের ব্যবধানে দিতে হবে।২৫ আগস্ট থেকে পুরোদমে শুরু হবে।
করোনায় শিশুদের ঝুঁকি কম উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, শিশুরা এমনিতেই করোনা থেকে নিরাপদ ছিল। এখন পর্যন্ত দেশে ২৯ হাজার লোক মারা গেছে, যার মধ্যে ৫০ বছরের ঊর্ধ্বেই ৮০ থেকে ৮৫ শতাংশ। এই তালিকায় যুবকদের সংখ্যা খুবই কম। আর পাঁচ থেকে ১১ বছরের কাউকে মারা যেতে এখনও শোনা যায়নি।
নবজাতকের সেবাকেন্দ্রের উদ্বোধনকালে জাহিদ মালেক বলেন, এই সেবাকেন্দ্রে অপরিপক্ক ও নানা রোগে আক্রান্ত নবজাতকরা বিশেষায়িত সেবা পাবে। আমাদের দেশে প্রতি ঘণ্টায় প্রতি হাজারে প্রায় ৩০ থেকে ৩২ জন শিশু মৃত্যু বরণ করে। এসডিজি লক্ষ্য অর্জনের জন্য আমাদেরকে শিশু মৃত্যুর হার কমিয়ে আনতে হবে।
তিনি বলেন, সেই ধারাবাহিকতায় সারাদেশে প্রায় ৫০টি হাসপাতালে এই বিশেষায়িত সেবা কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে। এই সেবা চালুর মাধ্যামে আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে নবজাতক মৃত্যুর হার কমে হাজারে ১০ থেকে ১২ আসবে।
এ সময় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ জেলা পর্যায়ের বিভিন্ন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
পড়ুন: ৫ -১১ বছরের শিশুদের পরীক্ষামূলকভাবে করোনা টিকা দেয়া শুরু
শিগগিরই ৫-১২ বছরের শিশুরা করোনা টিকা পাবে: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
করোনার বিশেষ টিকাদান কর্মসূচি শুরু হবে মঙ্গলবার
স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক জানিয়েছেন, ৭৫ লাখ মানুষকে করোনাভাইরাসের টিকার দ্বিতীয় ডোজ ও বুস্টার ডোজ দেয়ার লক্ষ্যে মঙ্গলবার থেকে সরকার আরেকবার ‘কোভিড-১৯ টিকাদান কর্মসূচি’ শুরু করবে।
সোমবার মহাখালীর ডিরেক্টরেট জেনারেল অব হেলথ সার্ভিসেসে (ডিজিএইচএস) আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি একথা জানান।
তিনি বলেন, ‘একযোগে সকল সরকারি মেডিকেল হাসপাতাল, বিশেষায়িত হাসপাতাল, জেলা ও সদর হাসপাতাল এবং উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এই কর্মসূচি চালানো হবে।’
তিনি বলেন, সফলভাবে কর্মসূচি সম্পন্ন করার জন্য স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ সারা দেশে ১৬ হাজার ১৮১টি টিকাদান কেন্দ্র প্রস্তুত করেছে।
তিনি আরও বলেন, মোট ৩৩ হাজার ২৪৬ জন স্বাস্থ্যকর্মী এবং ৪৯ হাজার ৮৬৯ জন স্বেচ্ছাসেবক এই কর্মসূচিতে কাজ করবেন।
চার মাস আগে যারা দ্বিতীয় ডোজ পেয়েছেন তারা বুস্টার ডোজ পাবেন বলেও জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
মন্ত্রী বলেন, ‘এখন পর্যন্ত মোট ৭৬ দশমিক ০৫ শতাংশ মানুষ প্রথম ডোজ পেয়েছেন, ৭০ দশমিক ৩ শতাংশ দ্বিতীয় ডোজ এবং ১৭ দশমিক ৯ শতাংশ লোক সারা দেশে তৃতীয় ডোজ পেয়েছেন।’
জাহিদ মালেক জানান, দুই দশমিক ৭৮ কোটি করোনা টিকা এখনও স্টকে রয়েছে।
৫-১১ বছর বয়সী শিশুদের টিকাদান কর্মসূচির আওতায় আনার বিষয়ে মালেক বলেন, শিগগিরই টিকা কার্যক্রম শুরু হবে।
তিনি বলেন, সরকার এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ নিয়েছে এবং ‘সুরক্ষা অ্যাপ’-এর মাধ্যমে শিশুদের নিবন্ধন করা উচিত।
তিনি বলেন,‘শিশুদের ফাইজার ভ্যাকসিন দেয়া হবে। এর জন্য একটি ডিজিটাল জন্ম নিবন্ধন প্রশংসাপত্রের প্রয়োজন হবে।’
এসময় অনলাইনে জন্ম নিবন্ধন সম্পন্ন করার জন্য অভিভাবকদের প্রতি আহ্বান জানান মন্ত্রী।
আরও পড়ুন: শিগগিরই ৫-১২ বছরের শিশুরা করোনা টিকা পাবে: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
করোনায় আতঙ্কিত নই, তবে চিন্তিত: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
শিগগিরই ৫-১২ বছরের শিশুরা করোনা টিকা পাবে: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, শিগগিরই ৫-১২ বছরের শিশুদের করোনা টিকা দেয়া শুরু হবে।
তিনি বলেন, আমরা শিশুদের টিকা প্রয়োগে অনুমোদন পেয়েছি। এমনকি সে অনুযায়ী আমরা প্রস্তুতি নিচ্ছি। ৫-১২ বছরের শিশুদের জন্মনিবন্ধন দিয়ে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে।
মঙ্গলবার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) ইনস্টিটিউট অব পেডিয়াট্রিক নিউরোডিজঅর্ডার অ্যান্ড অটিজম (ইপনা) আয়োজিত ‘সার্টিফিকেট কোর্স অন নিউরোডেভেলপমেন্ট ডিসঅর্ডার’- শীর্ষক কোর্সের উদ্বোধনী ও সনদ বিতরণ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, বিশ্বের বেশ কয়েকটি দেশে শিশুদের টিকা কার্যক্রম শুরু হলেও আমরা এখনো শিশুদের টিকা দিতে পারিনি। প্রথম কারণ হলো শিশুদের টিকায় এতদিন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অনুমোদন ছিলো না। এখন অনুমোদন পেয়েছি, তাই অতি দ্রুতই আমরা এই কার্যক্রম শুরু করব।
আরও পড়ুন: জুনে ৫-১২ বছরের শিশুদের টিকা: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
জাহিদ মালেক বলেন, শিশুদের টিকা বড়দের টিকার চেয়ে একটু আলাদা। আমাদের কাছে এতদিন শিশুদের জন্য আলাদা এই টিকা টিকা ছিল না। এখন আমাদের হাতে শিশুদের জন্য উপযোগী টিকা চলে এসেছে। যেসব শিশুরা এখনো নিবন্ধন করেনি, তারা যেন নিজ নিজ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে দ্রুত নিবন্ধন করে নেয়।অভিভাবকদের উদ্দেশ্যে তিনি আরও বলেন, আমাদের প্রায় দেড় কোটির মত শিশু রয়েছে। সেই হিসেবে শিশুর সংখ্যা কিন্তু অনেক। তাদের টিকা দিতে আমাদের সময় লাগবে। তাই আপনারা দ্রুত শিশুদের টিকার নিবন্ধন করিয়ে নিন।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন শিশু অনুষদের ডিন ও ইপনার প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক অধ্যাপক শাহীন আখতার।
অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (গবেষণা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. মো. জাহিদ হোসেন, উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ডা. একেএম মোশাররফ হোসেন, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. ছয়েফ উদ্দিন আহমেদ, কোষাধ্যাক্ষ অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আতিকুর রহমান, প্রক্টর অধ্যাপক ডা. মো. হাবিবুর রহমান দুলাল ও শিশু নিউরোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. গোপেন কুমার কুণ্ডু।
আরও পড়ুন: ঢাকার কেন্দ্রগুলোতে স্কুলগামী শিশুদের টিকা কার্যক্রম শুরু
৫ বছরের কম বয়সী শিশুদের টিকা ব্যবহারের অনুমতি চেয়েছে ফাইজার
সিলেটে ১৪০ টিরও বেশি মেডিকেল টিম কাজ করছে: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, বর্তমানে সিলেটে ১৪০টিরও বেশি মেডিকেল টিম কাজ করছে; প্রস্তুত রয়েছে আরও দু’হাজারের বেশি কর্মী।
সোমবার দুপুরে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজের সম্মেলন কক্ষে সিলেট বিভাগের বন্যা পরিস্থিতি, ত্রাণ ও স্বাস্থ্য ব্যবস্থা নিয়ে স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এ কথা জানান তিনি।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, এবারের বন্যায় না খেয়ে কিংবা বিনা চিকিৎসায় একজন মানুষও মারা যায়নি, এটাই বড় প্রাপ্তি।
জাহিদ মালেক আরও বলেন, বন্যা পরবর্তী অসুখ মোকাবিলায় স্বাস্থ্য বিভাগ প্রস্তুত আছে।
আরও পড়ুন: সিলেটে পানি কমছে ধীরগতিতে, বাড়ছে দুর্ভোগ
বন্যা কবলিত এলাকায় কমিউনিটি ক্লিনিক, স্বাস্থ্য কেন্দ্র ও হাসপাতালে সৃষ্ট সমস্যা নিরসনে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
চলমান বন্যায় ১৮ জুন পানি ঢুকে পরে ওসমানী হাসপাতালে। এতে তলিয়ে যায় হাসপাতালের নিচতলা। পানি ঢুকে পড়া ও বিদ্যুতহীনতার কারণে ব্যাহত হয় চিকিৎসা সেবা। নতুন রোগী ভর্তিও বন্ধ হয়ে যায় সেদিন।
পানি ঢুকে নষ্ট হয়ে পড়েছে হাসপাতালটির রেডিওথেরাপি, সিটিস্ক্যান ও এম আর আই যন্ত্র। নষ্ট হয়ে গেছে হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্সও। হাসপাতালের জেনারেটর রুমে পানি ঢুকে পড়ায় বিদ্যুৎ ব্যবস্থা কিছুটা ব্যাহত হয়।
তিনি বলেন, আমরা তাৎক্ষণিকভাবে ঢাকা থেকে বিকল্প জেনারেটরের ব্যবস্থা করে বিদ্যুৎ ব্যবস্থা স্বাভাবিক করি। যার ফলে ওসমানী হাসপাতালে রোগীদেরকে স্বাস্থ্যসেবা দেয়ার ক্ষেত্রে কোনো ব্যাঘাত সৃষ্টি হয়নি।
ওসমানী হাসপাতালে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা না থাকা ও চিকিৎসা সেবা বিঘ্নিত হওয়া প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, ভবিষ্যতে এমন জলাবদ্ধতা ঠেকাতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
আরও পড়ুন: সিলেটে বন্যা: এবার ঘুরে দাঁড়ানোর লড়াই শুরু
এ সময় স্বাস্থ্যমন্ত্রী আরও বলেন, স্থানীয় প্রশাসন ও বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ ছিল এবং যে সময় যা দরকার, সে চাহিদা পূরণ করেছি। আমাদের সেনাবাহিনী, পুলিশ, স্থানীয় প্রশাসন, সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়রসহ সবাই অক্লান্ত পরিশ্রম করেছে এবং বন্যার্তদের সহযোগিতায় এগিয়ে এসেছে।
জাহিদ মালেক বলেন, আমরা যেভাবে বিগত সময়ে করোনা মোকাবিলা করেছি, যেভাবে বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলা করেছি, ঠিক সেভাবে বন্যাপরবর্তী রোগবালাই ছড়ালে সেগুলোও মোকাবিলা করার সকল প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছি। বন্যাকবলিত প্রত্যেক জেলা-উপজেলায় মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে এবং টিমগুলো কাজ করছে। প্রয়োজনীয় ওষুধ স্থানীয় প্রশাসনের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ বিষয়ে দুশ্চিন্তার কিছু নেই।
এসময় সিলেট সিটি মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, বিভাগীয় পরিচালক (স্বাস্থ্য) হিমাংশু লাল রায়, ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মাহবুবুর রহমান ভূঁইয়া, মহানগর আওয়ামী লীগ সভাপতি মাসুক উদ্দিন আহমদসহ স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
মন্ত্রী হেলিকপ্টারে করে সুনামগঞ্জের বন্যা কবলিত এলাকা পরিদর্শন করেন।
এ সময় স্বাস্থ্যমন্ত্রীর পক্ষ থেকে সিলেট-সুনামগঞ্জের প্রায় সাত হাজার বন্যার্ত মানুষের মধ্যে ত্রাণসহায়তা দেয়া হয়।
আরও পড়ুন: সিলেটে পানি নামায় বন্যার ক্ষয়ক্ষতি দৃশ্যমান
করোনায় আতঙ্কিত নই, তবে চিন্তিত: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ফের বাড়তে শুরু করেছে। এ পরিস্থিতিতে সংক্রমণ নিয়ে আতঙ্কিত না হলেও স্বাস্থ্য বিভাগ চিন্তিত বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
তিনি বলেন, ‘করোনা নিয়ন্ত্রণে আমরা সফল হয়েছিলাম। কিন্তু আবারও সংক্রমণ বাড়তে শুরু করেছে। আমরা আতঙ্কিত না হলেও চিন্তিত।’
রবিবার (২৬ জুন) বিকালে রাজধানীর মহাখালীতে আইসিডিডিআর,বিতে কলেরা টিকা কর্মসূচির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, আমরা দেশের টার্গেটকৃত প্রায় সবাইকেই টিকার আওতায় এনেছি। এতে সংক্রমণ এক শতাংশের নিচে চলে এসেছিল। আমাদের মৃত্যু প্রায় শূন্যের কোটায়। কিন্তু এখন আবার সংক্রমণের হার ১৫ শতাংশে উঠে এসেছে। সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আমরা সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নিয়েছি।
তিনি বলেন, করোনায় মন্ত্রণালয়ের অনেকেই আক্রান্ত হয়েছেন। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর অফিসেও বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা করোনায় আক্রান্ত হয়েছে। এ অবস্থায় আমাদের সচেতন হতে হবে। সবাইকেই মাস্ক পরতে হবে, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে।
কলেরা টিকা প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, কলেরা ও ডায়রিয়া প্রতিরোধে ঢাকার সংক্রমণপ্রবণ পাঁচটি এলাকার ২৩ লাখ মানুষকে ওরাল ভ্যাকসিন খাওয়ানো হবে। আমরা এক থেকে সকল বয়সী মানুষকে এই টিকা দেব। আমরা প্রথমবারের মতো দেশে এই ভ্যাকসিন দেব। এর আগে ট্রায়ালে যে সব এলাকায় টিকা দিয়েছি সেখানে কলেরার প্রাদুর্ভাব একদম কমে গেছে। মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো আমাদের শ্রমিকদের কলেরার টিকা দেয়ার দাবি জানিয়েছেন। তারা বলেছেন, আমাদের অনেক শ্রমিকের দেহে কলেরার জীবাণু পাওয়া গেছে। তাই করোনা টিকার মতো ভবিষ্যতে আমরা তাদেরকেও কলেরার টিকা দিয়ে বিদেশে পাঠাবো।
পড়ুন: দেশে করোনায় শনাক্ত ১৬৮০, মৃত্যু ২
জাহিদ মালেক বলেন, সংক্রামক রোগের বিরুদ্ধে আমরা বহুদিন যুদ্ধ করছি। এক পর্যায়ে আমরা সংক্রামক রোগগুলো প্রতিরোধে অনেকাংশেই সফল হয়েছি। একসময় মহামারিত রূপ নেয়া রোগগুলো এখন শুধুমাত্র সিজনাল রোগ হিসেবে নির্দিষ্ট সময়ে দেখা যায়। এক সময় ডায়রিয়া-কলেরায় হাজার হাজার মানুষ মারা যেতো। এখন তা হয় না। এর পেছনে সরকার ও আইসিডিডিআরবির গুরুত্বপূর্ণ অবদান আছে। সরকার সারাদেশে নিরাপদ পানি ও স্যানিটেশন ব্যবস্থা করেছে। সরকার এসব রোগের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ব্যবস্থা গ্রহণের পাশাপাশি পর্যাপ্ত চিকিৎসার ব্যবস্থাও করেছে। সাম্প্রতিক অভিজ্ঞতার থেকে আমরা প্রতিটি জেলা-উপজেলা হাসপাতালে কলেরা-ডায়রিয়া ইউনিট চালুর নির্দেশ দিয়েছি।
অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব ড. মু. আনোয়ার হোসেন হাওলাদার, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, আইসিডিডিআরবির নির্বাহী পরিচালক ড. তাহামিদ আহমেদ, ড. মু. শফিকুল ইসলাম, সিনিয়র সায়েন্টিস্ট ও ইনফেকশন ডিজিজ ডিভিশনের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক ড. ফেরদৌসী কাদরী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
পড়ুন: মির্জা ফখরুল ফের করোনায় আক্রান্ত
ওষুধের দাম ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে রাখার আহ্বান স্বাস্থ্যমন্ত্রীর
ওষুধের দাম ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে রাখার আহ্বান জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। তিনি বলেছেন,ওষুধের দাম যেন বৃদ্ধি না পায়, এ বিষয়ে বাংলাদেশ ওষুধ শিল্প সমিতিকে বলা হয়েছে। মানুষের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে যেন রাখা হয়।
বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে বাংলাদেশ ওষুধ শিল্প সমিতির সঙ্গে মিটিং শেষে মন্ত্রী সাংবাদিকদের এসব কথা জানান।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ ওষুধ শিল্প সমিতির সঙ্গে আমরা বৈঠক করলাম। বাজেট ঘোষণা হয়েছে। এর মধ্যে যেন ঔষধের দাম বৃদ্ধি না পায় সে বিষয়ে বলা হয়েছে।
আরও পড়ুন: সীতাকুণ্ডে অগ্নিকাণ্ডে আহতদের শতভাগ চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করা হয়েছে: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন,ওষুধ উৎপাদনে আমরা সহযোগিতা করবো। সেই সঙ্গে ওষুধ সাপ্লাই দাম যাতে ঠিক থাকে রাখতে বলা হয়েছে।
তিনি বলেন, ওষুধের মান আরও ভালো করা হবে। দামও সবার নাগালে থাকবে।
মন্ত্রী বলেন, খাদ্য দ্রব্যের দাম বাড়ছে তবে ওষুধের দাম বাড়ছে বলে জানা নেই। তার মানেএখনোও দাম বাড়েনি। তাছাড়া সামনে যেন দাম না বাড়ে সে জন্যই আজকে এই মিটিং।
আরও পড়ুন: বিশ্বে সবচেয়ে কম দামে টিকা দিয়েছে বাংলাদেশ: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
করোনা টিকার বুস্টার ডোজ নিতে অনিহার বিষয়ে তিনি বলেন, স্বাস্থ্য বিষয়ে চাপিয়ে দেয়ার কিছু নেই। টিকা নিলে কী সুবিধা, আমরা বলে দিয়েছি। আমি আবারও বলবো বুস্টার ডোজ যারা নেন নাই, তারা নিয়ে নেন। কেননা বুস্টার ডোজ নিলে মৃত্য ঝুঁকি অনেক কম থাকে।
মন্ত্রী বলেন, এখন দেশে করোনা কিছুটা হলেও বাড়তি। আশপাশ দেশে বাড়ছে। এ বিষয়ে সবাইকে সকর্ক থাকতে হবে।
সংক্রমণ এভাবে বাড়লে হাসপাতালে জায়গা হবে না: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
দেশে করোনা সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, সংক্রমণ যদি এভাবে বাড়তে থাকে, আবারও হাসপাতালগুলো রোগীতে পূর্ণ হয়ে আসবে।
তিনি বলেন, ‘দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণ আবারও বাড়তে শুরু করেছে। গত মাসেও যেখানে করোনা সংক্রমণের হার এক শতাংশের নিচে ছিল, সেটি বর্তমানে দুই শতাংশে উঠে এসেছে।’
মঙ্গলবার বিকালে রাজধানীর মহাখালীস্ত আইসিডিডিআরবি অডিটোরিয়ামে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, করোনাভাইরাস সংক্রমণ আমরা নিয়ন্ত্রণে নিয়ে এসেছিলাম, কিন্তু দেশে এখন আবার করোনা বাড়ছে। গত একমাস দেশে সংক্রমণের হার ছিল দশমিক ৬ শতাংশ, এখন সেটি ২ শতাংশে উঠে গেছে। প্রতিদিন যেখানে দৈনিক ৩০ থেকে ৩৫ জন রোগীর করোনা শনাক্ত হতো, এখন সেটি বেড়ে গিয়ে হচ্ছে ১৫০ থেকে ১৬০ জন।
তিনি বলেন, 'আমরা আশঙ্কা করছি, আমাদের যদি এই মুহূর্তে পরীক্ষা বাড়ে, তাহলে সংক্রমণের সংখ্যাও আরও বেড়ে যাবে।'
জাহিদ মালেক বলেন, আমাদের জন্য একটি ভালো বিষয় হলো আমাদের সমস্ত হাসপাতালেও এখন ২০ জনের বেশি রোগী নেই। কিন্তু আমরা যেভাবে অসতর্ক হয়ে চলাচল করছি, হাসপাতালে রোগী বাড়তেও সময় লাগবে না। তাই আমাদেরকে স্বাস্থ্যবিধি নিয়ে আরও সতর্ক হতে হবে। আপনারা সকলে স্বাস্থ্যবিধি মেনেই সকল কাজ কর্ম করবেন, এটি আমরা আশা করবো।
মন্ত্রী বলেন, করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে আমরা বুস্টার ডোজের ক্যাম্পেইন করেছি। আমরা এখন পর্যন্ত আড়াই কোটি মানুষকে বুস্টার ডোজ দিয়েছি। যারা বাকি আছেন, তারা দ্রুতই বুস্টার ডোজ নিয়ে নিবেন, সুরক্ষিত থাকবেন।
অনুষ্ঠানে মুজিব শতবর্ষে গবেষণার জন্য ১০ জন নারীকে গবেষণা অ্যাওয়ার্ড দেয়া হয়েছে। তাদের প্রত্যেককেই সরকার ৩৫ লাখ টাকা করে দেবে।
পড়ুন: দেশে করোনায় শনাক্ত ১৬২
বিশ্বে করোনায় আক্রান্ত ৫৪ কোটি ১০ লাখ ছাড়িয়েছে