রোহিঙ্গা ক্যাম্প
‘মিয়ানমারে আমাদের নিজের ঘরে ফিরতে সাহায্য করুন’
কক্সবাজারের কুতুপালং ক্যাম্পে বিশাল জনসমাগমের উদ্দেশে বক্তব্য রাখতে গিয়ে সাঈদা নামে এক রোহিঙ্গা বলেন, ‘আমরা আমাদের ভাষায় দাবি জানিয়ে আসছি। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় কর্ণপাত করছে না। আমরা ইংরেজিতেও আমাদের বার্তা পৌঁছে দিচ্ছি। তবুও তারা মনোযোগ দিচ্ছে না। আমরা হতাশ। আমরা শুধু ভুক্তভোগী নই, আমরা বেঁচে আছি এবং তাদের জবাবদিহি নিশ্চিত করতে বলছি।’
তিনি বলেন, তিনি ২৫ আগস্টের দিনটি কখনোই ভুলতে পারবেন না এবং গত ৬ বছরে তারা তাদের মাতৃভূমি মিয়ানমারে যেতে পারেননি।
অশ্রুসিক্ত সাঈদা বলেন, ‘ন্যায়বিচার বিলম্বিত হয়েছে, ন্যায়বিচার অস্বীকার করা হয়েছে। আমরা মিয়ানমারে ফিরে যেতে চাই।’
তাদের সম্মিলিত দাবি- রোহিঙ্গাদের অবশ্যই মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে তাদের জন্মস্থানে ফিরে যাওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে শক্তিশালী সমর্থন চায় বাংলাদেশ
অন্যান্য দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে- আগামী গ্রীষ্মের মধ্যে নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও মর্যাদার নিশ্চয়তা, মিয়ানমারের অন্যান্য ১৩৫টি জাতিগোষ্ঠীর মতো পূর্ণ অধিকারসহ নাগরিকত্ব পুনরুদ্ধার।
বর্তমানে ১০ বছর বয়সী বনি আমিন ৬ বছর আগে মিয়ানমার থেকে দেশটির সামরিক জান্তার আক্রমণের সময় পরিবারের ৮ সদস্যের সঙ্গে বাংলাদেশে এসেছিল। কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ইউএনবিকে এই শিশু বলেছে, ‘আমার মনে আছে কীভাবে বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছিল এবং সামরিক বাহিনী আমাদের বাড়ি ছেড়ে যেতে বাধ্য করেছিল। আমরা আমাদের বাড়িতে ফিরে যেতে চাই।’
আজকের (শুক্রবার) সমাবেশে রোহিঙ্গা নেতারা বলেন, তারা মিয়ানমার সরকারের কাছে আবেদন করতে চান যেন তারা আগের মতোই মিয়ানমারে ফিরে যেতে ও সেখানে বসবাস করতে এবং নাগরিক হিসেবে অন্যান্য জনগোষ্ঠীর সঙ্গে শান্তিপূর্ণভাবে সহাবস্থান করতে পারেন।
তারা বলেন, মিয়ানমারের অর্থনীতি, সমৃদ্ধি ও স্থিতিশীলতায় রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর উল্লেখযোগ্য অবদান রয়েছে।
রোহিঙ্গারা তাদের প্রত্যাবাসনের বিষয়ে ইতিবাচক পদক্ষেপ নিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ও জাতিসংঘের সংস্থাগুলোর দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন প্রচেষ্টা পর্যালোচনা করছে ঢাকা ও বেইজিং
রোহিঙ্গা যুবক মুসা বলেন, ‘আমাদের মাতৃভূমি মিয়ানমারে ফিরে যেতে সাহায্য করুন, ওটাই আমাদের দেশ। আমরা আর বাংলাদেশে থাকতে চাই না।’
তিনি বলেন, ‘আসুন আমরা এই দিনটিকে কেবল আমাদের অভিন্ন ট্র্যাজেডি মনে করিয়ে দেওয়ার নয়, বরং পদক্ষেপ নেওয়ার দিন হিসেবেও পালন করি। আসুন আমরা বেদনার ঊর্ধ্বে গিয়ে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ন্যায়বিচারের দাবি জানাই।’
মুসা আরও বলেন, ‘আমাদের সম্মিলিত প্রচেষ্টা এমন একটি পথ সৃষ্টি করবে যে বিশ্বে এই ধরনের নৃশংসতার পুনরাবৃত্তি হবে না। এর ফলে এখানে শান্তিপূর্ণ স্থিতিশীলতা ও উন্নয়ন নিশ্চিত করে সব সম্প্রদায় সম্প্রীতি ও নিরাপত্তার সঙ্গে বসবাস করতে পারবে।’
পরিবারের সদস্যদের হারানো নূর জাহান ইউএনবিকে বলেন, তারা ন্যায়বিচার চান এবং মিয়ানমারে তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত হলে তারা তাদের বাড়িতে ফিরে যেতে চান।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরুর তারিখ এখনো ঠিক হয়নি: সেহেলী সাবরীন
তিনি বলেন, তারা মিয়ানমারে পূর্ণ নাগরিকত্বের অধিকার চান, যাতে তারা নিরাপদ বোধ করেন।
‘রোহিঙ্গা গণহত্যা স্মরণ দিবস’ উপলক্ষে রোহিঙ্গারা একত্রিত হয়েছেন। তারা বলেন, এই ট্র্যাজেডিতে তাদের হৃদয় ভারাক্রান্ত, যা তাদের কষ্ট দিয়েই চলেছে।
প্রায় ২৫ হাজার রোহিঙ্গা কয়েক ডজন সমাবেশে যোগ দেন, যার মধ্যে সবচেয়ে বড় সমাবেশটি কুতুপালং ক্যাম্পে ভারী বৃষ্টিপাতের মধ্যেই প্রায় ১০ হাজার শরণার্থীর উপস্থিতিতে অনুষ্ঠিত হয়।
তারা এই দুঃসময়ে হাত বাড়ানোর জন্য বাংলাদেশ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
রোহিঙ্গারা মিয়ানমারের উপর আন্তর্জাতিক চাপ প্রয়োগের দাবি জানিয়েছেন, যাতে তারা তাদের নিজ দেশে ফিরে যেতে পারেন।
বাংলাদেশে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের ৬ বছর পরেও সরকার তাদের নিরাপদ প্রত্যাবাসনের দিকে মনোনিবেশ করার প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে, যদিও কিছু দেশ ও আন্তর্জাতিক সংস্থা তাদের বাংলাদেশে একীভূত করার জন্য চাপ দিচ্ছে।
রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফিরে যাওয়ার পর মিয়ানমারকে তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, ‘তারা (রোহিঙ্গারা) তাদের মাতৃভূমিতে ফিরে যাবে, এটাই আমাদের অগ্রাধিকার। মিয়ানমারও তাদের ফিরিয়ে নিতে ইচ্ছুক।’
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে সহযোগিতা করবে যুক্তরাজ্য ও বেলজিয়াম
২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী উত্তর রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে সহিংস অভিযান শুরু করে, যা আন্তর্জাতিক আইনের অধীনে গুরুতর অপরাধ। পুরো গ্রাম পুড়িয়ে দেওয়া হয় এবং লাখ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে আসতে বাধ্য হয়।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মিয়ানমারে তাদের প্রত্যাবাসনের বিষয়ে সরকার দৃঢ় অবস্থানে রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশে ইতোমধ্যেই বিশাল জনসংখ্যা রয়েছে এবং অন্যান্য দেশ থেকে আরও প্রচুর সংখ্যক জনসংখ্যার প্রয়োজন নেই।
মন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গারা ১৯৭০, ৮০’ ও ৯০’ এর দশকে বাংলাদেশে এসেছিল। কিন্তু প্রতিবারই তারা ফিরে গিয়েছিল, এমনকি অতীতে সামরিক শাসনের সময়ও।
পরীক্ষামূলক প্রত্যাবাসন বড় আকারের প্রত্যাবাসনের আগে সমস্যাগুলো বুঝতে সহায়তা করবে উল্লেখ করে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম বলেন, রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনে কারো বাধা সৃষ্টি করা উচিত হবে না।
তিনি বলেন, ‘বড় পরিসরে প্রত্যাবাসনের আগে সমস্যাগুলো চিহ্নিত করতেই এই পরীক্ষামূলক প্রত্যাবাসন। নিয়মিত প্রত্যাবাসনের উদ্যোগকে চিহ্নিত সমস্যাগুলোর সমাধান আরও ভালোভাবে বাস্তবায়নে সহায়তা করবে।’
প্রতিমন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গারা বলেননি যে তারা ফিরে যেতে চান না। বরং যখনই কোনো বিদেশি গণ্যমান্য ব্যক্তি ক্যাম্পে তাদের সঙ্গে দেখা করেন তখনই তারা দেশে ফিরে যাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেন।
এক প্রশ্নের জবাবে শাহরিয়ার আলম বলেন, নিশ্চিতভাবেই চ্যালেঞ্জ রয়েছে। অস্ত্র ও মাদক পাচারের ঘটনা ক্যাম্পে বেড়েছে এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দক্ষ সদস্যও নিহত ও আহত হয়েছেন।
তিনি বাংলাদেশের প্রচেষ্টাকে ক্ষুণ্ন না করার জন্য সকলের প্রতি আহ্বান জানান এবং বাংলাদেশের প্রচেষ্টাকে ক্ষুণ্ন করার জন্য কীভাবে আন্তর্জাতিক মিডিয়া ভাসানচরকে ‘একটি ভাসমান দ্বীপ’ বলে বর্ণনা করেছিল তা স্মরণ করেন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মানবিক কারণে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছেন। যতদিন তারা বাংলাদেশে থাকবে ততদিন আমরা অঙ্গীকারবদ্ধ থাকব।
জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া ১১ লাখের বেশি রোহিঙ্গার সমাধান খুঁজতে মানবিক সাড়া ও রাজনৈতিক সহায়তা অব্যাহত রাখতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছ থেকে আর্থিক সহায়তার জন্য নতুন করে অঙ্গীকারের আহ্বান জানিয়েছে।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন তরান্বিত করতে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে ‘অবিচলভাবে মধ্যস্থতা করছে’ চীন: রাষ্ট্রদূত ইয়াও
ইউএনএইচসিআর বলেছে, মিয়ানমারে মর্যাদাপূর্ণ ও টেকসই প্রত্যাবর্তন এই সংকটের প্রাথমিক সমাধান। রোহিঙ্গা শরণার্থীরা আমাদের বারবার বলেছে, স্বেচ্ছায় প্রত্যাবর্তন নিরাপদ হলেই কেবল তারা মিয়ানমারে ফিরে যেতে চায়।
সংস্থাটি আরও বলেছে, সম্মিলিত লক্ষ্য হওয়া উচিৎ রোহিঙ্গাদের স্বেচ্ছায় মিয়ানমারে প্রত্যাবর্তন নিশ্চিত করা। যেন, তারা তাদের জন্মস্থান বা পছন্দের জায়গায় অবাধে চলাফেরা করতে পারে এবং তাদের জীবন পুনর্গঠনের জন্য প্রয়োজনীয় নথি, নাগরিকত্বের জন্য ব্যবস্থা, পরিষেবা এবং আয়ের সুযোগ পায়।
টেকনাফে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে স্ত্রীকে গলা কেটে হত্যার অভিযোগ
কক্সবাজারের টেকনাফ রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পারিবারিক কলহের জেরে স্ত্রী আদিয়া খাতুনকে (২৩) গলা কেটে হত্যার অভিযোগ উঠেছে তার স্বামীর বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় স্বামী নুর কামাল (২৪) পলাতক রয়েছেন।
শুক্রবার (২৫ আগস্ট) সকাল ৯টার দিকে টেকনাফ আলীখালি ২৫ নম্বর ক্যাম্পের ডি ব্লকে এই হত্যাকাণ্ড ঘটে।
আরও পড়ুন: রূপগঞ্জে ব্যবসায়ীকে গলা কেটে হত্যা
নিহত আদিয়া খাতুন টেকনাফ ২৫ নম্বর ক্যাম্পের ছামসু আলমের মেয়ে।
টেকনাফ মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সৈয়দ জুবায়ের বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আমাদের একটি টিম যায়। সেখান থেকে রক্তাক্ত অবস্থায় ওই নারীকে উদ্ধার করে এনজিও এমএসএফ হাসপাতালে নিয়ে এলে চিকিৎসক জানান, তিনি আগেই মারা গেছেন।
তিনি আরও বলেন, এ ঘটনায় ঘাতক স্বামী পলাতক রয়েছেন। তাকে আটকের চেষ্টা চলছে।
আরও পড়ুন: কুমিল্লায় আওয়ামী লীগ নেতাকে গলা কেটে হত্যার অভিযোগ
সীতাকুণ্ডে গৃহবধূকে গলা কেটে হত্যা
উখিয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পাহাড় ধসে মা-মেয়ে নিহত
কক্সবাজারের উখিয়ার বালুখালী রোহিঙ্গা শিবিরে পাহাড় ধসে দুইজন নিহত হয়েছে। এঘটনায় আরও চার জন আহত হয়েছেন।
সোমবার (৭ আগস্ট) সন্ধ্যা ৬টার উখিয়ার বালুখালী ক্যাম্প-৯ এই ঘটনা ঘটে।
উদ্ধারকাজ চলায় তাদের পরিচয় এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে পরীর পাহাড়ে ধস ও ফাটল, পরিদর্শনে বিশেষজ্ঞ দল
উখিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মোহাম্মদ আলি বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, পাহাড় ধসের খবর পেয়ে ক্যাম্পে নিয়োজিত পুলিশ নিহতদের উদ্ধার কার্যক্রম করছে। তাদের পরিচয় এখনো মেলেনি। তারা সম্পর্কে মা-মেয়ে।
তিনি আরও বলেন, মূলত টানা বর্ষণের কারণে এ পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটে।
আরও পড়ুন: পাহাড়ি ঢলে মুহুরী নদীর বাঁধ ভেঙে ফুলগাজীর ৪ গ্রাম প্লাবিত
কক্সবাজারে পাহাড় ধসে শিশুর মৃত্যু
উখিয়ায় রোহিঙ্গা ক্যাম্পে গুলিতে নিহত ১
কক্সবাজারের উখিয়ায় রোহিঙ্গা ক্যাম্পে গুলিতে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন।
শনিবার (২৯জুলাই) রাত ১০টার দিকে ৭নং ক্যাম্পে এই ঘটনা ঘটে।
নিহত মো. সলিম (৪৫) ওই ক্যাম্পের মোহাম্মদ নজির হোছনের ছেলে।
রবিবার (৩০ জুলাই) সকাল ৮টার দিকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন উখিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মোহাম্মদ আলী।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গা ক্যাম্প এলাকা থেকে নারীর লাশ উদ্ধার
তিনি বলেন, রাত ১০টার দিকে ওই ক্যাম্পে ১০-১২ জন আরসা (আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি) সদস্য সলিমকে লক্ষ্য করে ৮-১০ রাউন্ড গুলি করে। গোলাগুলির খবর শুনে পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছালে উপস্থিতি টের পেয়ে তারা পালিয়ে যায়।
তিনি আরও বলেন যে এ সময় ঘটনাস্থল থেকে গুলিবিদ্ধ রোহিঙ্গাকে উদ্ধার করা হয়। পরে তাকে স্থানীয় এমএসএফ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
ময়নাতদন্তের জন্য লাশ কক্সবাজার সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়ে বলে জানান তিনি।
আরও পড়ুন: কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্পে গোলাগুলি, আরসা কমান্ডার নিহত
রোহিঙ্গা ক্যাম্পে দুই পক্ষের সংঘর্ষে যুবক নিহত
কক্সবাজারের উখিয়ায় রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি (আরসা) ও আরাকান সলিডারিটি অর্গানাইজেশনের (আরএসও) মধ্যে গোলাগুলিতে এক যুবক নিহত হয়েছেন। সোমবার (১৯ জুন) সকালে উখিয়া ৮ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্প এ ঘটনা ঘটে।
নিহত ইমান হোসেন (১৮) উখিয়ার ১০ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের সিরাজ হোসেনের ছেলে।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গা ক্যাম্পে দুই গ্রুপের গোলাগুলি, যুবক নিহত
উখিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মোহাম্মদ আলী জানান, সকাল ৮টার দিকে উখিয়ার ৮ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী গোষ্ঠী আরসা ও আরএসও’র মধ্যে গোলাগুলি হয়।
তিনি বলেন, গোলাগুলিতে উভয় গ্রুপের মধ্যে ২০/২৫ রাউন্ড গুলি চালানো হয়। এ ঘটনায় আরএসও সদস্য ইমান হোসেন গুলিবিদ্ধ হয়। রোহিঙ্গারা তাকে উদ্ধার করে ক্যাম্পের আইএম ও হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
তিনি আরও বলেন, লাশ উদ্ধার করে সুরতহাল শেষে ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
আরও পড়ুন: উখিয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পে এআরএসএ ও আরএসও গ্রুপের বন্দুকযুদ্ধে একজন নিহত: পুলিশ
রোহিঙ্গা ক্যাম্পে মাদক ও সন্ত্রাস ঠেকাতে যৌথ অভিযান পরিচালনা করা হবে: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
উখিয়ায় রোহিঙ্গা মাঝিকে গুলি করে হত্যা
কক্সবাজারের উখিয়ায় রোহিঙ্গা ক্যাম্পে এক মাঝিকে (নেতা) গুলি করে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা।
শনিবার (১৭ জুন) রাত ৯টার দিকে উখিয়ায় ২ নম্বর ক্যাম্পে এই ঘটনা ঘটে।
নিহত নূর হোসেন ওরফে ভুট্টু ওই ক্যাম্পের মাঝি ছিলেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করে উখিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মোহাম্মদ আলী জানান, আরসার (আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি) ১০-২০ জন দুর্বৃত্তের একটি দল ঘরে ঢুকে ভুট্টুকে গুলি করে পালিয়ে যায়। তাকে উদ্ধার করে এনজিও এমএসএফ পরিচালিত হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
তিনি আরও জানান, হত্যাকাণ্ডের কারণ এখনও জানা যায়নি। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।
ওআইসি মহাসচিবের রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন
কক্সবাজারের উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করেছেন আন্তর্জাতিক ইসলামিক সংস্থা’র (ওআইসি) মহাসচিব হিসেন ব্রাহিম ত্বহা।
তিনি সোমবার (২৯ মে) সকালে বিমানযোগে কক্সবাজার পৌঁছে সেখান থেকে উখিয়ার কুতুপালং ফোর এক্সটেনশন ক্যাম্পে যান। এছাড়াও আরও কয়েকটি ক্যাম্প পরিদর্শন করেন।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গাদের মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসনে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দৃঢ় প্রতিশ্রুতি কামনা প্রধানমন্ত্রীর
সেখানে ক্যাম্পে ব্র্যাকের ইয়ুৎ সেন্টার, ট্রি প্ল্যান্টেশন প্রোগ্রামসহ বিভিন্ন সংন্থার কার্যক্রমগুলো পরিদর্শন করেন।
এছাড়াও শরণার্থী বিষয়ক কমিশন, রোহিঙ্গা প্রতিনিধি, এনজিও আইএনজিও প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেন।
অতিরিক্ত শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার শামসুদৌজ্জা জানান, পরিদর্শনকালে ওআইসির মহাসচিব রোহিঙ্গাদের সঙ্গে কথা বলেছেন, রোহিঙ্গাদের সমস্যার কথা শুনেছেন।
এদিন বিকালে বিমানযোগে ঢাকায় ফিরে যান তিনি।
ওআইসি প্রধানের সফরকে ঘিরে রোহিঙ্গা ক্যাম্প জুড়ে জোরদার ছিলো এপিবিএনের কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছিল।
আরও পড়ুন: মিয়ানমারে ফিরলেই রোহিঙ্গারা সুন্দর ভবিষ্যৎ পাবে: মোমেন
রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন প্রচেষ্টা পর্যালোচনা করছে ঢাকা ও বেইজিং
রোহিঙ্গা ক্যাম্পে মাদক ও সন্ত্রাস ঠেকাতে যৌথ অভিযান পরিচালনা করা হবে: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেছেন, রোহিঙ্গা ক্যাম্পে সন্ত্রাসী কার্যক্রম ও মাদকরোধে যৌথ অভিযান পরিচালনা করা হবে। এ অভিযানে প্রয়োজনে সেনাবাহিনীও থাকতে পারে।
মঙ্গলবার সচিবালয়ে রোহিঙ্গা সমন্বয়, ব্যবস্থাপনা ও আইনশৃঙ্খলা সম্পর্কিত জাতীয় কমিটির সভায় অংশগ্রহণ শেষে মন্ত্রী সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
বলপ্রয়োগে বাস্তুচ্যুত মিয়ানমারের নাগরিকদের (রোহিঙ্গা) সমন্বয়, ব্যবস্থাপনা ও আইনশৃঙ্খলা সম্পর্কিত জাতীয় কমিটির সভার সিদ্ধান্ত তুলে ধরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে রক্তপাত হচ্ছে। তাদের অপতৎপরতা বাড়ছে।
আরও পড়ুন: আন্দোলনের নামে ঢাকার রাজপথ দখলের চেষ্টা করলে ব্যবস্থা নেয়া হবে: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
তিনি বলেন, সেজন্য সভায় এভাবে সিদ্ধান্ত হয়েছে যে রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীরা যেন ক্যাম্পের অভ্যন্তরে কোনো ধরনের অপতৎপরতা চালাতে না পারে; সেই লক্ষ্যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর টহল, চেকপোস্ট ও গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হবে।
মন্ত্রী বলেন, সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান পরিচালনা হবে। আরসা ও আরাকান আর্মির কেউ যেন রোহিঙ্গা ক্যাম্পে না ঢুকতে পারে, সেজন্য আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। সেজন্য প্রয়োজন মোতাবেক সেনাবাহিনীসহ যৌথ অভিযান হতে পারে।
আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেন, রোহিঙ্গা ক্যাম্পের মধ্যে মাদক ও অস্ত্র উদ্ধারে ব্যাপক অভিযান চলবে। প্রয়োজনে যৌথ অভিযান চলবে। ক্যাম্প থেকে যেন কোনো রোহিঙ্গা বের হয়ে না আসতে পারেন, সেজন্য কাঁটাতারের বেড়া দিয়েছি, ওয়াচ টাওয়ার হয়েছে, সেখানে নিয়মিত টহলের ব্যবস্থাও আছে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সেগুলো আরও জোরদার করা হবে। যাতে তারা বাইরে না আসতে পারেন। যৌথ টহলসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সবসময় তৎপর থাকবে।
আরও পড়ুন: বিদেশি রাষ্ট্রদূতরা চাইলে বাড়তি নিরাপত্তা ফেরত দিতে পারেন, তার জন্য অর্থ দিতে হবে: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
পাহাড়ে কোনো অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী ও জঙ্গিগোষ্ঠীকে ছাড় দেওয়া হবে না: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
রোহিঙ্গা ক্যাম্পে দুই গ্রুপের গোলাগুলি, যুবক নিহত
কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে দুই সন্ত্রাসী গ্রুপের গোলাগুলিতে এক যুবক নিহত হয়েছে। শুক্রবার (১২ মে) বিকাল ৪টার দিকে উখিয়ার পালংখালীর জামতলি ক্যাম্প-১৫ এর ব্লক জি/৪ এ ঘটনা ঘটে।
নিহত শুক্কুর রহমান (২২) ওই এলাকার ফয়জুল করিমের ছেলে।
আরও পড়ুন: উখিয়ায় গোলাগুলিতে রোহিঙ্গা নিহতের ঘটনায় ৭৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা
স্থানীয় রোহিঙ্গারা জানান, বিকাল ৪টার দিকে উখিয়ার ১৫ নম্বর ক্যাম্প জামতলি ব্লক ই/৩-তে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে আরসা (আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি) ও আরএসও (রোহিঙ্গা সলিডারিটি অরগানাইজেশন) সন্ত্রাসীদের মধ্যে গোলাগুলি শুরু হয়।
এক পর্যায়ে শুক্কুর রহমান গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলে নিহত হন।
৮ আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) সহকারী পুলিশ সুপার ফারুক আহমদ বলেন, জামতলি রোহিঙ্গা ক্যাম্পে গোলাগুলিতে একজন নিহত হয়েছেন বলে শুনেছি। এছাড়া পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
উখিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মোহাম্মদ আলী জানান, লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কক্সসবাজার জেলা সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পুলিশের সঙ্গে আরসার গোলাগুলি, নিহত ২
বান্দরবানে ইউপিডিএফ-কেএনএফ এর গোলাগুলিতে নিহত ৮
গ্যাসের গন্ধের খবরে ঢাকাবাসীকে আতঙ্কিত না হওয়ার আহ্বান জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের
বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় রাজধানীর বেশ কয়েকটি এলাকায় 'গ্যাসের গন্ধের' খবরে আতঙ্কিত না হওয়ার জন্য জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।
রাজধানীর মগবাজার, বাড্ডা, বাসাবো, ধানমন্ডি, হাজারীবাগসহ বেশ কয়েকটি এলাকার বাসিন্দারা রাস্তায় গ্যাসের গন্ধের কথা জানিয়েছেন।
এর আগে জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজের এক পোস্টে বলা হয়, ঈদের সময় কারখানায় গ্যাস সরবরাহ না হওয়ায় সঞ্চালন ও বিতরণ লাইনে গ্যাসের চাপ বেড়ে যাওয়ায় 'ওভার-ফ্লো' ও গন্ধের সৃষ্টি হয়েছে।
এতে আরও বলা হয় যে তিতাস গ্যাসের জরুরি ও কারিগরি টিম যত দ্রুত সম্ভব সমস্যা সমাধানে কাজ করছে।
তিতাস গ্যাসের হটলাইন- ১৬৪৯৬ উল্লেখ করে মন্ত্রণালয়ের ফেসবুক পোস্টে বলা হয়, নগরবাসীকে আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
এদিকে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ তার ফেসবুক পোস্টে বলেছেন, বিভিন্ন এলাকায় গ্যাসের গন্ধের খবর মানুষের মধ্যে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে।
তিতাস গ্যাস ইতোমধ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমি নগরবাসীকে আতঙ্কিত না হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে।’