কুষ্টিয়া
কুষ্টিয়ায় দেড় মাসের শিশু করোনা আক্রান্ত
কুষ্টিয়া, ২৩ জুন (ইউএনবি)- কুষ্টিয়ায় এবার মাত্র দেড় মাস বয়সী একটি শিশুর শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে।ওই শিশুটিকে বর্তমানে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়েছে।চিকিৎসকরা বলছেন, কুষ্টিয়া জেলায় এখন পর্যন্ত এত কম বয়সী শিশুর করোনা শনাক্ত হওয়ার ঘটনা এটিই প্রথম।
আরও পড়ুন: করোনা: দেশে একদিনে আরও ৭৬ মৃত্যু, শনাক্ত ৪৮৪৬
হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. এম এ মোমেন জানান, কুষ্টিয়া শহরের বড় স্টেশন রোড এলাকার এক বাসিন্দার দেড় মাস বয়সী শিশুটিকে ঠান্ডা, জ্বর নিয়ে সোমবার পরিবারের লোকজন হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে ভর্তি করেন।কর্তব্যরত চিকিৎসকদের সন্দেহ হলে ওই দিনই শিশুটির শরীর থেকে নমুনা সংগ্রহ করা হয়। মঙ্গলবার হাসপাতালের পিসিআর ল্যাবের রিপোর্টে শিশুটির করোনা পজিটিভ শনাক্ত হয়।
আরও পড়ুন: করোনায় বিশ্বব্যাপী মৃত্যু ৩৮ লাখ ৭২ হাজার ছাড়াল
শিশুটির পিতা জানান, গত কয়েকদিন ধরে শিশুটি ঠান্ডা ও জ্বরে আক্রান্ত। যে কারণে সোমবার তাকে হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে নিয়ে এসে ভর্তি করা হয়।হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. ইফতেখার হাসান জানান, কুষ্টিয়া হাসপাতালে এর আগে তারা এত কম বয়সী শিশুর শরীরে করোনা শনাক্ত হতে দেখেননি। শিশুটিকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
আরও পড়ুন: কোভ্যাক্সের ওপর নির্ভর রোহিঙ্গাদের টিকাদান
মঙ্গল সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘন্টায় ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন আরো ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে।
কুষ্টিয়া জেলায় ৭ দিনের কঠোর লকডাউন ঘোষণা
করোনাভাইরাস সংক্রমণের সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় এবার কুষ্টিয়া জেলা জুড়ে ৭ দিনের কঠোর লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। ২০ জুন রাত ১২ টা এক মিনিট থেকে আগামী ২৭ জুন মধ্যরাত পর্যন্ত এ লকডাউন বলবৎ থাকবে।
রবিবার রাতে কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক গণবিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয় লকডাউন চলাকালে সকল ধরনের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, শিল্প-কারখানা,দোকানপাট,শপিংমল, রেস্টুরেন্ট ও চায়ের দোকান বন্ধ থাকবে। তবে কাঁচাবাজার ও নিত্য প্রয়োজনীয় (মুদি) পণ্যের দোকান সকাল ৭টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত স্বাস্থ্যবিধি মেনে খোলা রাখা যাবে।
আরও পড়ুন: কুষ্টিয়ায় ট্রিপল মার্ডার: পুলিশ কর্মকর্তা সৌমেনকে আসামি করে থানায় মামলা
সকল পর্যটন কেন্দ্র, রিসোর্ট, কমিউনিটি সেন্টার ও বিনোদন কেন্দ্র বন্ধ থাকবে। জেলার অভ্যন্তরে আন্ত:জেলা ও দূরপাল্লার সকল ধরনের গণপরিবহন বন্ধ থাকবে। এক্ষেত্রে সকল যান্ত্রিক যানবাহন বিধি নিষেধ আরোপকালীন সময়ে বন্ধ থাকবে। সকল ধরনের হাট বন্ধ থাকবে। অতি জরুরি প্রয়োজন ব্যতীত (ওষুধ ও নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি ক্রয়, চিকিৎসা সেবা মৃতদেহ দাফন/সৎকার ইত্যাদি) কোনোভাবেই বাড়ির বাইরে বের হওয়া যাবে না।
তবে টিকা কার্ড প্রদর্শন সাপেক্ষে টিকা গ্রহণের জন্য যাতায়াত করা যাবে। জরুরি প্রয়োজনে চলাচলকারী সকলকে আবশ্যিকভাবে মাস্ক পরিধান করতে হবে। আইন শৃঙ্খলা এবং জরুরি পরিষেবা যেমন- কৃষি উপকরণ, খাদ্যশস্য ও খাদ্যদ্রব্য পরিবহন, ত্রাণ বিতরণ, স্বাস্থ্য সেবা, গণমাধ্যম, সরকারের রাজস্ব আদায়ের সাথে সম্পৃক্ত সকল দপ্তর/সংস্থাসমূহ জরুরি পরিষেবার আওতাভূক্ত হবে এবং তাদের কর্মচারী ও যানবাহন নিষেধাজ্ঞার আওতা বহির্ভূত থাকবে।
আরও পড়ুন: কুষ্টিয়ায় করোনায় সর্বোচ্চ মৃত্যু ৭
এর আগে বিকেলে জেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটির এক জরুরি সভায় সর্বসম্মতিক্রমে এ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল ইসলামের সভাপতিত্বে ভার্চুয়াল এ সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন করোনার কুষ্টিয়া জেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত সচিব সুলতানা আফরোজ।
আরও পড়ুন: মাছ চুরির অভিযোগে কুষ্টিয়ায় কৃষককে পিটিয়ে ‘হত্যা’
এছাড়াও পুলিশ সুপার মো: খাইরুল ইসলাম, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হাজী রবিউল ইসলাম, সিভিল সার্জন ডা. এইচ এম আনোয়ারুল ইসলাম, এনএসআই’র যুগ্ম পরিচালক ইদ্রিস আলী, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ সদর উদ্দিন খান, কুষ্টিয়া সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আতাউর রহমান আতা, কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. তাপস কুমার সরকার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
কুষ্টিয়ায় করোনায় সর্বোচ্চ মৃত্যু ৭
গত ২৪ ঘণ্টায় কুষ্টিয়া ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডে সাত জনের মৃত্যু হয়েছে।
শনিবার সকালে একজন ও শুক্রবার রাতে ছয় জনের মৃত্যু হয়েছেন। এটি জেলায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে সর্বোচ্চ মৃত্যুর ঘটনা।
কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. তাপস কুমার সরকার জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে সাত জনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া জেলায় নতুন করে ১১২ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। শনাক্তের হার প্রায় ৩২ শতাংশ।
আরও পড়ুন: করোনায় খুমেকে ২৪ ঘণ্টায় ১১ মৃত্যু
তিনি জানান, হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডে ১০০ শয্যার বিপরীতে বর্তমানে ১১০ জন রোগী ভর্তি রয়েছেন। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকেও উন্নত চিকিৎসার জন্য কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে করোনা রোগী আসছেন। যারা আসছেন তাদের প্রত্যেকেরই অক্সিজেন প্রয়োজন হচ্ছে। এ অবস্থায় হাসপাতালে অক্সিজেন সংকট দেখা দিয়েছে।
কুষ্টিয়ার সিভিল সার্জন ডা. এইচ এম আনোয়ারুল ইসলাম জানান, পরিস্থিতি চরম উদ্বেগজনক। আমরা আগে থেকেই বিষয়টি আঁচ করতে পেরে এ ব্যাপারে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য জেলা প্রশাসনকে বার বার অনুরোধ জানিয়েছিলাম। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি। এ অবস্থায় পরিস্থিতি মোকাবিলায় দুই-একদিনের মধ্যেই উপজেলা পর্যায় থেকে নার্সসহ কমিউনিটি মেডিকেল অফিসারদের কুষ্টিয়া হাসপাতালে নিয়ে আসা হচ্ছে।
তিনি জানান, পরিস্থিতি যে অবস্থার দিকে যাচ্ছে তাতে অচিরেই কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালকে শুধু মাত্র করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতালে রুপান্তর করা লাগতে পারে।
আরও পড়ুন: দেশে ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের উপসর্গ নিয়ে একজনের মৃত্যু
এদিকে, সংক্রমণের হার বেড়ে যাওয়ায় গত ১১ জুন মধ্য রাত থেকে কুষ্টিয়া শহরের পৌর এলাকা সাত দিনের কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। তবে সেই কঠোর বিধি নিষেধ কার্যত ব্যথতায় রুপ নেয়। শুক্রবার ওই বিধি নিষেধের মেয়াদ শেষ হলে শনিবার থেকে আগামী ২৫ জুন পর্যন্ত নতুন করে আরও সাত দিনের বিধিনিষেধ জারি করেছে জেলা প্রশাসন।
হাসপাতালের চিকিৎসকরা বলছেন, ঈদের পর থেকেই কুষ্টিয়া জেলায় করোনা সংক্রমণের মাত্রা ক্রমেই বেড়েই চলেছে। জেলায় মোট করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৬১৭৫ জন। এদের মধ্যে সুস্থ হয়েছেন ৪৯৬৯ জন এবং মারা গেছেন ১৪৮ জন।
আরও পড়ুন: মাগুরায় করোনা নিয়ন্ত্রণে লকডাউন শুরু
মাছ চুরির অভিযোগে কুষ্টিয়ায় কৃষককে পিটিয়ে ‘হত্যা’
কুষ্টিয়ার খোকসার পল্লীতে মাছ চুরির অভিযোগ এনে এক কৃষককে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় চেয়ারম্যান ও তার লোকদের বিরুদ্ধে।
মঙ্গলবার ভোরে এই হত্যার ঘটনা ঘটে বলে জানা যায়।
নিহত জসিম শেখ (৩৫) উপজেলার খোকসা ইউনিয়নের রতনপুরে গ্রামের রওশন আলী শেখের ছেলে।
আরও পড়ুন: হত্যার ৯ দিন পর মাগুরায় নিহতের বিচ্ছিন্ন মাথা, পা উদ্ধার
নিহত জসিম শেখের স্ত্রী আছিয়া খাতুনের অভিযোগ, ভোর ৪টার দিকে চেয়ারম্যানের লোকজন মোবাইলে ফোন করে এবং চেয়ারম্যান তার স্বামীকে জরুরিভাবে ডেকেছে বলে জানায়। ফোন পেয়ে জসিম শেখ চেয়ারম্যানের বাড়িতে গেলে চেয়ারম্যান ও তার লোকজন চেয়ারম্যানের পুকুরের মাছ তার স্বামী চুরি করেছে বলে অভিযোগ করে। জসিম শেখ অভিযোগ অস্বীকার করলে চেয়ারম্যান ও তার লোকজন জসিমকে বেধড়ক মারধর করে।
আরও পড়ুন: বাঘাইছড়িতে জেএসএসের সামরিক কমান্ডারকে গুলি করে হত্যা
পরে আশঙ্কাজনক অবস্থায় এলাকাবাসী জসিম শেখকে উদ্ধার করে খোকসা উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ভর্তি করেন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৬ টার দিকে জসিম শেখের মৃত্যু হয়।
হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক মেডিকেল অফিসার আশরাফুল আলম জানান, জসিম শেখের মাথায় মারাত্মক জখমের কারণে তার মৃত্যু হয়েছে।
অভিযুক্ত চেয়ারম্যান আইয়ুব আলীর সাথে এ বিষয়ে কথা বলতে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তার ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।
আরও পড়ুন: রাঙামাটিতে অফিসে ঢুকে ইউপি সদস্যকে গুলি করে হত্যা
খোকসা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সৈয়দ আশিকুর রহমান জানান, খোকসার রতনপুরে এক যুবককে পিটিয়ে আহত করার পর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়েছে। তবে কি কারণে হত্যাকাণ্ড ঘটেছে তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
ওসি জানান, এ ব্যাপারে কেউ কোনও অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে পাঠিয়েছে।
কুষ্টিয়ায় ট্রিপল মার্ডার: পুলিশ কর্মকর্তা সৌমেনকে আসামি করে থানায় মামলা
কুষ্টিয়ায় পরকীয়া প্রেমের ঘটনায় নারী, শিশুসহ ৩ জন নিহতের ঘটনায় কুষ্টিয়া মডেল থানায় এএসআই সৌমেন রায়কে আসামি করে মামলা করা হয়েছে।
সোমবার বাদ জোহর নিহত আসমা খাতুন, তার শিশু পুত্র রবিন এবং প্রেমিক শাকিল খানের দাফন সম্পন্ন হবে বলে পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে। লাশ ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
রবিবার রাতে কুষ্টিয়া মডেল থানায় এএসআই সৌমেন রায়কে আসামি করে নিহত আসমা খাতুনের মা হাসিনা বেগম হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলা নং-৩৯।
কুষ্টিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সাব্বিরুল আলম মামলা দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
আরও পড়ুন: কুষ্টিয়ায় স্ত্রীসহ ৩ জনকে গুলি করে হত্যা, এএসআই আটক
কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের আরএমও তাপস কুমার সরকার জানান, রবিবার নিহত তিন জনের লাশের ময়নাতদন্ত শেষে রাত ১২ টার পর স্ব-স্ব পরিবারের কাছে লাশ হস্তান্তর করা হয়েছে।
রাতে নিহত শাকিলের লাশ তার পিতা মেজবার রহমানের কাছে হস্তান্তর করা হয়। অন্যদিকে নিহত আসমা খাতুন এবং তার ৬ বছর বয়সী শিশু পুত্র রবিনের লাশ আসমা খাতুনের মা হাসিনা বেগমের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় চাকরি থেকে সাময়িক বহিষ্কৃত এএসআই সৌমেনকে কুষ্টিয়া পুলিশ লাইনের ডিবি কার্যালয়ে রেখে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
এদিকে সোমবার বিকালের দিকে পুলিশের এএসআই ঘাতক সৌমেনকে আদালতে হাজির করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দী গ্রহণসহ রিমান্ডের আবেদন করা হতে পারে বলে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কুষ্টিয়া মডেল থানার ওসি (তদন্ত) নিশি কান্তা সাহা সাংবাদিকদের জানিয়েছেন।
পুলিশ হেফাজতে থাকা সৌমেন প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে বলেছেন, তার স্ত্রী আসমার সঙ্গে শাকিলের পরকীয়া প্রেমের সম্পর্কের ঘটনায় তিনি তার স্ত্রীর ওপর চরম ক্ষিপ্ত ছিলেন। রবিবার ভোরে তিনি খুলনা থেকে বাসযোগে কুষ্টিয়ায় আসেন। এ সময় তিনি তার পিস্তল ও দুটি ম্যাগাজিনে ১২টি গুলি সঙ্গে নিয়ে আসেন।
আরও পড়ুন: রাঙামাটিতে অফিসে ঢুকে ইউপি সদস্যকে গুলি করে হত্যা
সৌমেনের ভাষ্য অনুযায়ী, সেখানে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে প্রথমে শাকিলকে গুলি করেন তিনি। এরপর আসমাকে গুলি করেন। এ সময় শিশু রবিন দৌড়ে পালাতে গেলে তাকেও গুলি করেন। একটি ম্যাগাজিনের গুলি শেষ হয়ে গেলে আরেকটি ম্যাগাজিন ব্যবহার করেন।
জিজ্ঞাসাবাদে এএসআই সৌমেন এমন তথ্য দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন কুষ্টিয়া অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বিশেষ শাখা) ফরহাদ হোসেন খান।
আরও পড়ুন: বাঘাইছড়িতে জেএসএসের সামরিক কমান্ডারকে গুলি করে হত্যা
কুষ্টিয়ার হালসা পুলিশ ক্যাম্প থেকে কিছু দিন আগে সৌমেন রায়কে খুলনার ফুলতলা থানায় বদলী করা হয়। তার বাড়ি মাগুরা সদর উপজেলার আসপা গ্রামে।
সৌমেনের প্রথম পক্ষের স্ত্রী এবং দুটি সন্তান রয়েছে। তাদের কাছে গোপন রেখেই গত বছর দেড়েক আগে আসমাকে বিয়ে করেন এএসআই সৌমেন রায়।
কুষ্টিয়ায় স্ত্রীসহ ৩ জনকে গুলি করে হত্যা, এএসআই আটক
কুষ্টিয়ায় গুলি করে স্ত্রী ও সৎ ছেলেসহ তিনজনকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে পুলিশের এক উপসহকারী পুলিশ পরিদর্শকের (এএসআই) বিরুদ্ধে।
রবিবার সকাল ১১টার দিকে কাস্টমস মোড় এলাকার একটি মার্কেটের সামনে এ ঘটনা ঘটে। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে এএসআই সৌমেন রায়কে আটক করেছে।
নিহত আসমা খাতুন (৩০) অভিযুক্ত সৌমেনের দ্বিতীয় স্ত্রী এবং শিশু রবিন (৬) আসমার আগের পক্ষের ছেলে। মারা যাওয়া আরেকজন আসমার প্রেমিকা বিকাশ কর্মী শাকিল খান (২৫)। তিনি কুমারখালী উপজেলার সাঁওতা গ্রামের কারিগর পাড়ার মিজবারের ছেলে এবং অনার্স তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সকাল ১১টার পর তারা গুলির শব্দ শুনতে পান। এ সময় এক শিশুকে পেছন থেকে গুলি করলে শিশুটি পড়ে যায়। এরপর নারী ও এক পুরুষকে খুব কাছ থেকে গুলি করা হয়। এ সময় মার্কেটের ব্যবসায়ীরা ধাওয়া দিয়ে ওই ঘাতককে তিন তলা একটি বাড়ির মধ্যে আটকে রাখে। আহতদের উদ্ধার করে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তিনজনকেই মৃত বলে ঘোষণা করেন।
কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার তাপস কুমার সরকার গুলিতে তিনজন নিহত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
আরও পড়ুন: বাঘাইছড়িতে জেএসএসের সামরিক কমান্ডারকে গুলি করে হত্যা
পুলিশের একটি সূত্র জানায়, বছর দেড়েক আগে সৌমেনের সাথে আসমার বিয়ে হয়। কিছুদিন আগে তাদের বিচ্ছেদ হয়। সম্প্রতি সৌমেন কুষ্টিয়ার হালসা পুলিশ ক্যাম্প থেকে বদলি হয়ে খুলনার ফুলতলা থানায় যোগদান করেন। এর আগেও আসমার আরেকটি বিয়ে হয়েছিল বলে জানা গেছে। শিশু রবিন আসমার প্রথম পক্ষের সন্তান ছিল।
নিহত শাকিলের পারিবারিক সূত্র জানায়, সৌমেন এর আগে একাধিকবার আসমার সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করার জন্য শাকিলকে হুমকি দেয়।
পরিবারের দাবি, শাকিলের সাথে আসমার প্রেমের সম্পর্ক থাকলেও তাদের বিয়ে হয়নি।
এদিকে, পুলিশের নির্ভরযোগ্য একটি সূত্র দাবি করেছে, সম্পর্ক ছিন্ন করা এবং শাকিলের সাথে সম্পর্কে জড়িয়ে পরার কারণে প্রতিশোধ নিতে সৌমেন এই নৃশংস হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে।
আরও পড়ুন: রাঙামাটিতে অফিসে ঢুকে ইউপি সদস্যকে গুলি করে হত্যা
কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোস্তাফিজুর রহমান জানান, হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় স্থানীয়রা সৌমেন রায় নামে একজনকে আটক করে অস্ত্রসহ পুলিশে সোপর্দ করেছে।
স্থানীয়দের বরাত দিয়ে মোস্তাফিজুর রহমান জানান, সৌমেন একাই খুব কাছ থেকে পরপর তিন জনকে গুলি করে হত্যা করে।
কুষ্টিয়ায় বাজার লকডাউন করলো প্রশাসন
কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলায় সদরপুর ইউনিয়নের পুরাতন আজমপুর গ্রামের একটি বাজার সাত দিনের জন্য লকডাউন ঘোষণা করেছে উপজেলা প্রশাসন।
বুধবার বিকেলে বাজারে উপস্থিত হয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) লিংকন বিশ্বাস এ লকডাউনের ঘোষণা দেন। এ সময় সেখানে মিরপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কামারুল আরেফিনসহ স্থানীয় চেয়ারম্যানরা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: চাঁপাইনবাবগঞ্জে করোনায় আরও ২ মৃত্যু, নতুন শনাক্ত ৬৫
ইউএনও লিংকন বিশ্বাস জানান, কয়েক দিন আগে পুরাতন আজমপুর এলাকার এক বাসিন্দা কাজের সূত্রে চাঁপাইনবাবগঞ্জ গিয়েছিলেন। সেখান থেকে ফিরে আসার পর তিনি করোনায় আক্রান্ত হন। এ সময় তিনি স্থানীয় আজমপুর বাজারে অনেকের সাথে চায়ের দোকানে বসে চা পান করেছিলেন। পরে তার করোনা শনাক্ত হয়।
তিনি ছাড়াও ওই ব্যক্তির পরিবারের আরো দু’জন সদস্য করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে ফেরা করোনায় আক্রান্ত ওই ব্যক্তি বর্তমানে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের আইসোলেশনে চিকিৎসাধীন। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক। আক্রান্ত পরিবারের দুই সদস্য বর্তমানে বাড়িতেই চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
আরও পড়ুন: মোংলা পোর্ট পৌরসভায় ৭ দিনের কঠোর বিধিনিষেধ
ইউএনও আরও বলেন, যেহেতু চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে ফিরে আসার পর করোনা শনাক্ত হয়েছে, সেহেতু তিনি ভারতীয় ধরনে আক্রান্ত হয়ে থাকতে পারেন। এ জন্য আজমপুর গ্রামের বাজারটি সাত দিনের জন্য লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। যাতে সেখানে লোকসমাগম না হয়। আক্রান্ত ওই ব্যক্তির বাড়ি বাজারের পাশেই। ওই বাজারে কাঁচা বাজার বসে এবং সেখানে ১০ থেকে ১২টি দোকান রয়েছে। তবে জরুরি প্রয়োজনে ওই এলাকার মানুষজন মাস্ক পরে বাড়ির বাইরে বের হতে পারবেন বলেও জানান তিনি।
এদিকে প্রতিদিনই কুষ্টিয়া জেলায় সার্বিক করোনা পরিস্থিতির অবনতি ঘটছে। প্রতিদিনই আক্রান্ত এবং মৃতের সংখ্যা বাড়ছে। মঙ্গলবার থেকে বুধবার পর্যন্ত ২৪ ঘন্টায় করোনা আক্রান্ত হয়ে চার জনের মৃত্যু হয়েছে। মৃত চারজনের মধ্যে দু’জন নারী এবং দু’জন পুরুষ রয়েছেন।
কুষ্টিয়ায় মোবাইল চুরির অভিযোগে দরবার শরীফে যুবককে পিটিয়ে হত্যা
কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে কল্যানপুর দরবার শরীফের তাছের ফকিরের ভক্তরা রাশেদ (২৮) নামে এক যুবককে পিটিয়ে হত্যা করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।রবিবার দুপুরে মোবাইল চুরির অভিযোগে কল্যানপুর দরবার শরীফের ভেতরে তাকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। নিহত যুবক দৌলতপুর উপজেলার রিফাইতপুর ইউনিয়নের হরিনগাছী গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে। পুলিশ নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করেছে।
আরও পড়ুন: শার্শায় ভাতিজার হাতে চাচা খুননিহত যুবকের পিতা সাবেক ইউপি সদস্য আব্দুর রাজ্জাক জানান, তার ছেলে রাশেদ ৫-৬ মাস ধরে কল্যানপুর দরবার শরীফের মুরিদ হিসেবে ওই দরবার শরীফেই থাকতো। রবিবার সকালে দরবার শরীফের লোকজন তাকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে দরবার শরীফের ভেতরে ফেলে রাখে। পরে রাশেদের অবস্থা আশঙ্কাজনক হলে রাশেদকে ভেড়ামারা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ফেলে রেখে তারা পালিয়ে যায়।হত্যার ঘটনায় নিহতের পিতা বাদী হয়ে দৌলতপুর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।রিফাইতপুর ইউপি চেয়ারম্যান জামিরুল ইসলাম বাবু জানান, মোবাইল ফোন চুরির অভিযোগে কল্যানপুর দরবার শরীফের লোকজন তার ইউনিয়নের রাশেদ নামে এক যুবককে পিটিয়ে হত্যা করেছে। পরে পুলিশ নিহত যুবকের লাশ ভেড়ামারা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে থেকে উদ্ধার করে।
আরও পড়ুন: সিলেটে ছুরিকাঘাতে চীনা নাগরিক খুনের ঘটনায় মামলাদৌলতপুর থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) শফিরুল ইসলাম জানান, প্রাথমিক তদন্তে নিশ্চিত হওয়া গেছে তাকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। নিহতের শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। এ ঘটনায় প্রাথমিকভাবে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৪ জনকে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে।
জাতীয় ফিজিক্স অলিম্পিয়াডে ১ম স্থান অধিকার কুষ্টিয়ার ইশতিয়াকের
১১তম ডাচ-বাংলা প্রথম আলো বাংলাদেশ ফিজিক্স অলিম্পিয়াডে জাতীয় পর্বের সমাপনী ও পুরস্কার বিতরণী ভার্চুয়াল অনুষ্ঠান শুক্রবার ঢাকায় অনুষ্ঠিত হয়েছে।
এতে প্রতিযোগীদের মধ্যে ‘সি’ ক্যাটাগরিতে কুষ্টিয়া সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী গোলাম ইশতিয়াক সাদাত প্রথম স্থান অধিকার করেন। ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী ডাক্তার দীপু মনি।
সংশ্লিষ্টরা জানায়, দেশের ৬৪ জেলা থেকে জাতীয় ফিজিক্স অলিম্পিয়াডে ৯,৮০০ জন প্রতিযোগী রেজিস্ট্রেশন করেন। পর্যায়ক্রমে জেলা ও আঞ্চলিক পর্যায়ে তুমুল প্রতিযোগীতার মাধ্যমে ২৯০০ জন উত্তীর্ণ হন। পরবর্তীতে জাতীয় পর্যায়ে ১১শ’ জনের মধ্যে তিনটি ক্যাটাগরিতে প্রথম স্থান লাভকারীসহ ৯৫ জনকে পুরস্কৃত করা হয়। প্রতিযোগীদের মধ্যে কুষ্টিয়া সরকারি কলেজের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী গোলাম ইশতিয়াক সাদাত ‘সি’ ক্যাটাগরিতে প্রথম স্থান লাভ করেন। পরবর্তীতে তিন ক্যাটাগরিতে প্রথম স্থান লাভকারীরা আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় অংশ গ্রহণের সুযোগ পাবেন।
আরও পড়ুন: বইমেলা বন্ধের সুপারিশ জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির
কৃতিত্ব অর্জনকারী গোলাম ইশতিয়াক সাদাত কুষ্টিয়া পুলিশ লাইনস স্কুল অ্যান্ড কলেজের সহকারী অধ্যাপক গোলাম ফারুক ও পোড়াদহ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক কামরুন নাহারের ছেলে। গোলাম ইশতিয়াক সাদাত এর আগে ২০১৯ সালে অস্ট্রেলিয়ায় এশিয়ান ফিজিক্স আন্তজার্তিক অলিম্পিয়াডের প্রতিযোগীতায় অংশ গ্রহণ করে।
কুষ্টিয়ায় এক নারীর লাশ উদ্ধার
কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলায় শ্যামলী খাতুন (৩২) নামের এক নারীর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
শুক্রবার সকালে বাড়ির পাশে ধঞ্চে খেত থেকে পুলিশ তার লাশ উদ্ধার করে।
নিহত শ্যামলী খাতুন উপজেলার আড়িয়া ইউনিয়নের ঘোড়ামারা গ্রামের তাজমল হোসেনের মেয়ে।
আরও পড়ুন: ফেনীতে বদ্ধ ঘর থেকে ট্রাফিক ইন্সপেক্টরের অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার
পুলিশ ও নিহতের পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, শ্যামলী খাতুনের একাধিক বিয়ে হয়েছিল। তবে কোনও বিয়েই টেকেনি। ঘোড়ামারা গ্রামে বৃদ্ধ মা ও ১২ বছরের এক মেয়েকে নিয়ে তিনি বসবাস করতেন। শুক্রবার সকালে বাড়ির পাশে ধঞ্চে খেতের মধ্যে লাশ পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয় লোকজন পুলিশকে খবর দেন।
পুলিশ খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।
আরও পড়ুন: অবশেষে বরিশালে কলেজছাত্রী গৃহবধূর লাশ উদ্ধার
দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাসির উদ্দিন জানান, প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা যায় যে, বৃহস্পতিবার রাত ৯ টার দিকে ঘর থেকে বেরিয়ে বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে একজনের সঙ্গে কথা বলেছিলেন শ্যামলী। এরপর তাকে আর দেখা যায়নি।
নাসির উদ্দিন আরও বলেন, কি কারণে কে বা কারা শ্যামলীকে হত্যা করেছে, এ বিষয়ে পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে।
এ ঘটনায় থানায় হত্যা মামলা দায়ের হচ্ছে বলেও জানান তিনি।