চট্টগ্রাম
চট্টগ্রামে কোভিড শয্যা বাড়ানোর দাবি ক্যাবের
চট্টগ্রামে সরকারি-বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকে কোভিডসহ সব ধরনের চিকিৎসায় শয্যা বাড়ানোর দাবি জানিয়েছে কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) চট্টগ্রামের নেতারা।
শনিবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, চট্টগ্রামের হাসপাতালগুলোতে রোগীরা চিকিৎসা সেবা বঞ্চিত হয়ে মৃত্যুর ঘটনা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এমন সংবাদে উদ্বেগ প্রকাশ করে ক্যাব কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট এস.এম. নাজের হোসাইন এই দাবি জানান।
আরও পড়ুন: কেনাকাটায় সতর্ক না হলে পরিবারের জন্য মৃত্যু কিনে আনার মতো হবে : ক্যাব
বিবৃতিতে ক্যাব নেতারা অভিযোগ করেন, সরকারি-বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকগুলি শয্যা ও আনুসাঙ্গিক সুবিধা না বাড়িয়ে মানুষকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিচ্ছে। আবার বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকগুলি সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকের ওপর নির্ভরশীল। আবার অনেক সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসক একদিকে সরকারি চিকিৎসক অন্যদিকে বেসরকারি ক্লিনিকের মালিক।
কিছু চিকিৎসকদের দ্বৈত ভূমিকার কারণে মানুষ সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা পায় না, আবার বেসরকারি ক্লিনিকে গিয়েও সেখানেও জিম্মি। ফলে পুরো চট্টগ্রাম নগর জুড়ে চিকিৎসা সেবার জন্য হাহাকার চলছে।
ক্যাব চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাধারণ সম্পাদক কাজী ইকবাল বাহার ছাবেরী, ক্যাব মহানগরের সভাপতি জেসমিন সুলতানা পারু, সাধারণ সম্পাদক অজয় মিত্র শংকু, যুগ্ম সম্পাদক ডা. মেজবাহ উদ্দীন তুহিন, তৌহিদুল ইসলাম, ক্যাব চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা সভাপতি আলহাজ্ব আবদুল মান্নান, ক্যাব যুব গ্রæপের সভাপতি চৌধুরী কে.এন.এম রিয়াদ ও সম্পাদক নিপা দাস স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে এই দাবি জানান তারা।
আরও পড়ুন: ঢাকা ও চট্টগ্রাম ওয়াসার এমডিকে পুনঃনিয়োগ না দেওয়ার আহ্বান ক্যাবের
নেতারা অবিলম্বে করোনা ও সাধারণ রোগীর চিকিৎসা নিশ্চিতে সরকারি-বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকগুলোতে শয্যা সংখ্যা বাড়ানোসহ দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ নানাবিধ দাবি জানান।
চট্টগ্রামে করোনায় প্রাণ গেল আরও ১০ জনের
চট্টগ্রামে করোনায় আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও দশ জনের মৃত্যু হয়েছে। এনিয়ে মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়াল ৯৯৪ জনে। নতুন মৃতদের মধ্যে চার জন নগরীর বাকি ছয় জন উপজেলার বাসিন্দা।
একই সময় নতুন করে আরও ১ হাজার ২৭৩ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে আক্রান্তের সংখ্যা ৮৫ হাজার ১৪৪ জনে এসে দাঁড়িয়েছে। এর মধ্যে ৬৩ হাজার ৬১৫ জন নগরীর ও ২১ হাজার ৫২৯ জন বিভিন্ন উপজেলাবাসী।
মঙ্গলবার জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের সূত্র জানায়, চট্টগ্রামের সরকারি-বেসরকারি ১০টি ল্যাব ও বিভিন্ন অ্যান্টিজেন বুথে সর্বমোট ৩ হাজার ৪৫০ জনের নমুনা পরীক্ষা হয়।
আরও পড়ুন: করোনায় খুলনা বিভাগে ৩১ মৃত্যু
ল্যাবভিত্তিক রিপোর্টে দেখা গেছে, ফৌজদারহাটের বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজেস ল্যাবে (বিআইটিআইডি) ৭৭৯ জনের নমুনা পরীক্ষায় চট্টগ্রাম নগরের ১৩৭ ও উপজেলার ৮৯ জন জীবাণুবাহক পাওয়া গেছে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ল্যাবে ৪৫৪ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হলে নগরের ১১৬ ও উপজেলার ১২২ জনের শরীরে জীবাণুর উপস্থিতি চিহ্নিত হয়। চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি অ্যান্ড অ্যানিম্যাল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয় ল্যাবে ২৩২ জনের নমুনা পরীক্ষায় চট্টগ্রাম নগরের ৪৮ ও উপজেলার ৫৭ জন জীবাণুবাহক পাওয়া গেছে। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ ল্যাবে ৫৬৭ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হলে নগরের ১৬২ ও উপজেলার ৩১ জনের শরীরে জীবাণুর উপস্থিতি চিহ্নিত হয়।
নমুনা সংগ্রহের পরপরই ফলাফল প্রদানকারী অ্যান্টিজেন টেস্টে ৮১৩ জনের মধ্যে ২৩০ জন জীবাণুবাহক বলে জানানো হয়। এর মধ্যে চট্টগ্রাম নগরের ১২০ জন ও উপজেলার ১১০ জন। চট্টগ্রাম নগরীতে করোনা পরীক্ষার নমুনা সংগ্রহকারী কয়েকটি কেন্দ্রে অ্যান্টিজেন টেস্ট করা হয়ে থাকে।
এদিকে, বেসরকারি ক্লিনিক্যাল ল্যাবরেটরির মধ্যে ইমপেরিয়াল হাসপাতালের ল্যাবে ১৮৬ নমুনা পরীক্ষায় নগরীতে ৬৫ জন ও উপজেলার ৪ জনের করোনা শনাক্ত হয়। আগ্রাবাদের মা ও শিশু হাসপাতালে ৭৫ জনের নমুনা পরীক্ষায় নগরীতে ৩৫ জন ও উপজেলার তিন জন করোনা পজিটিভ শনাক্ত হয়। আরটিআরএল ল্যাবে ৪৮ নমুনা পরীক্ষা নগরীতে ২২ জন আর উপজেলার তিন জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে।
আরও পড়ুন: বরিশাল বিভাগে করোনা ও উপসর্গে ১৮ মৃত্যু
এছাড়া মেডিকেল সেন্টার হাসপাতালে ৪৩ নমুনা পরীক্ষায় নগরীতে ২২ জন আর উপজেলার এক জনের শরীরে করোনা ভাইরাসের উপস্থিতি মিলেছে। ইপিক হেলথ কেয়ার ল্যাবে ২২৯ জনের নমুনা পরীক্ষায় নগরীতে ১০৮ জন ও উপজেলার ১২ জন করোনা পজিটিভ আসে। এছাড়া কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ ল্যাবে নমুনা পরীক্ষা হয়েছে কেবল ২৪ টি এর মধ্যে উপজেলার ছয় জনের করোনা পজিটিভ শনাক্ত হয়।
চট্টগ্রাম নগরীর ১৫ স্পটে এডিস মশার লার্ভা শনাক্ত: চবি
চট্টগ্রাম নগরীর ৯৯টি এলাকার ৫৭টি স্থানের নমুনা বিশ্লেষণ করে ১৫ স্পটে এডিস মশার লার্ভা শনাক্ত করেছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গবেষক দল।
গত ৫ জুলাই থেকে এ জরিপ পরিচালনা করে চবির গবেষক দলটি। তবে এখনো আনুষ্ঠানিক এই গবেষণার ফলাফল প্রকাশ না করলেও রবিবার রাতে গবেষক দলের আহবায়ক চবি প্রক্টর ড. রবিউল হাসান ভূঁইয়া বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের স্বাস্থ্যবিভাগ জানিয়েছে, সোমবার চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণাটি চসিককে হস্তান্তর করা হবে। এটি হাতে পেলে মশক নিধন কার্যক্রম আরও জোরালো হবে।
আরও পড়ুন: ডেঙ্গুর প্রকোপ: ২৪ ঘণ্টায় রেকর্ড ২৩৭ রোগী হাসপাতালে
গবেষক দল বলছে, চট্টগ্রাম নগরীর ৯৯টি এলাকা পরিদর্শন করে ৫৭টি স্পট থেকে গত জুলাই মাসে মশার লার্ভা সংগ্রহ করে। এতে পরীক্ষা করে ১৫টি স্পটে শতভাগ এডিসের লার্ভা পাওয়া গেছে।
তারা বলেন, নগরীতে মশার উপদ্রব বাড়ায় সিটি করপোরেশনকে কার্যকর ওষুধ নিশ্চিতকরণে সহযোগিতার উদ্দেশে একটি কমিটি গঠন করেন চবি উপাচার্য। গত ৫ জুলাই থেকে নগরীর বিভিন্ন এলাকায় জরিপ চালিয়ে গবেষক দল মশার লার্ভা সংগ্রহ করে। লার্ভাগুলো লালন-পালনের পর জন্ম নেওয়া মশাগুলোর ওপর ওষুধ প্রয়োগ করে ১৫টি স্পটের নমুনায় শতভাগ এডিসের লার্ভা পাওয়া গেছে।
এদিকে এ বছর চট্টগ্রামে ৬ জন ডেঙ্গু রোগী পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন অফিস। এরই মধ্যে এ রোগে চট্টগ্রামে দুজন মারা গেছে।
আরও পড়ুন: দেশে একদিনে আরও ২৩১ মৃত্যু, শনাক্ত ১৪, ৮৪৪
গবেষক দলের আহ্বায়ক চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর ও প্রাণ রসায়ন এবং অনুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. রবিউল হাসান ভূইয়া বলেন, সিটি করপোরেশন থেকে মশা মারার ওষুধের কার্যকারিতা পরীক্ষা করার জন্য চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসিকে অনুরোধ করা হয়। এরপর তা পরীক্ষা করে দেখার জন্য একটি কমিটি গঠন করেন উপাচার্য।
তিনি জানান, অনেকগুলো লার্ভা লালন-পালন করে এখন মশা হয়ে গেছে। মশাগুলোর ওপর ওষুধ প্রয়োগ করে কার্যকারিতা দেখা হচ্ছে। কোন ওষুধ মশা মারার জন্য কার্যকর তা প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হবে। এছাড়া, কোন ওষুধ কি পরিমাণে দিতে হবে, কীভাবে ওষুধ প্রয়োগ করলে মশা নিধন সহজ হবে তা উল্লেখ করা হবে প্রতিবেদনে।
এর আগে নগরীতে মশক নিধনে ব্যবহৃত ওষুধের কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠার পর গুণগত মান পরীক্ষার উদ্যোগ নেয় চসিক। এর অংশ হিসেবে গত ১৪ মার্চ ব্যবহৃত ওষুধ পরীক্ষা করতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীন আখতারকে অনুরোধ করে চসিক।
চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বী জানান, এখন পর্যন্ত চট্টগ্রামে ৬ জন ডেঙ্গু রোগী পাওয়া গেছে। এরমধ্যে দু’জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন।
আরও পড়ুন: রাঙামাটিতে ইউপিডিএফের ৪ সদস্য আটক: অস্ত্র, গুলি উদ্ধার
তিনি বলেন, ‘মশার ওপর আমাদের যে সার্ভে হয়েছে তাতেও এডিস মিলেছে। এটা আমরা সিটি করপোরেশনকে চিঠির মাধ্যমে জানিয়েছি। তাদের পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম ও ওষুধ ছিটানো জোরালো করতে বলেছি। এছাড়া নগরবাসীকে সচেতন করার জন্য মাইকিং করতে বলেছি, আমরাও মাইকিং করছি। তাছাড়া উপজেলা পর্যায়ে স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলোতে ডেঙ্গু পরীক্ষার কিট পাঠানো হয়েছে।’
চসিক সূত্রে জানাগেছে, প্রতিদিন চার থেকে ছয়টি ওয়ার্ডে বিশেষ টিম মশক নিধনে কাজ করবে। যে ওয়ার্ডে যেদিন অভিযান চালানো হবে সেই ওয়ার্ডের প্রত্যেকটা স্থানে মশক নিধনের অভিযান চলবে।
ফের বাড়ল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছুটি
সারা দেশে করোনা পরিস্থিতির আরও অবনতি হওয়ায় এবং কঠোর লকডাউন থাকায় দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছুটি আবারও বাড়ানো হয়েছে। বৃহস্পতিবার মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং এবতেদায়ি ও কওমি মাদ্রাসাগুলোর চলমান ছুটি আগামী ৩১ আগস্ট পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে বলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মচারী ও অভিভাবকদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা ও সার্বিক নিরাপত্তা বিবেচনায় এবং কোভিড ১৯ সংক্রান্ত জাতীয় পরামর্শক কমিটির সঙ্গে পরামর্শক্রমে দেশের মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং এবতেদায়ি ও কওমি মাদ্রাসাগুলোর চলমান ছুটি আগামী ৩১ শে আগস্ট পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হলো।
আরও পড়ুন: শিক্ষার্থীদের টিকা দেয়ার পরই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলবে: প্রধানমন্ত্রী
এর আগে সরকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছুটি ৩১ জুলাই পর্যন্ত বাড়িয়েছিল।
গত ৩ জুলাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, করোনা শিক্ষার্থীদেরও সংক্রামিত করতে পারে, এটা জেনেও সরকার তাদের জীবন ঝুঁকিতে ফেলতে পারে না। শিক্ষার্থীদের টিকা দেয়ার পরই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা হবে।
এদিকে করোনার প্রাদুর্ভাব শুরু হওয়ার পর দেড় বছর পেরিয়ে গেছে, শিক্ষার্থীরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যেতে পারছে না। এতে তাদের পড়াশোনা ব্যাহত হওয়ায় উদ্বেগ জানিয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো পুনরায় চালু করার আহবান জানিয়েছে ইউনিসেফ-ইউনেস্কো।
আরও পড়ুন: শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চালু করতে আর অপেক্ষা নয়: ইউনিসেফ-ইউনেস্কো
প্রসঙ্গত, করোনা সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউয়ের মাঝে বৃহস্পতিবার আরও ২৩৯ জন মারা গেছে। এনিয়ে দেশে মোট মৃত্যু ২০ হাজার ২৫৫ জনে পৌঁছেছে। এছাড়া একই সময়ে আরও ১৫ হাজার ২৭১ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এনিয়ে আক্রান্তের সংখ্যা ১২ লাখ ২৬ হাজার ২৫৩ জনে দাঁড়িয়েছে।
আরও পড়ুন: ‘ব্লেন্ডেড এডুকেশন সিস্টেম’ চালু করার কথা ভাবছে সরকার: শিক্ষামন্ত্রী
চট্টগ্রামে টানা বৃষ্টিতে কয়েক স্থানে পাহাড় ধস
চট্টগ্রামে গত কয়েক দিন ধরে টানা বৃষ্টি হচ্ছে। এরই মধ্যে মহানগরীর কয়েকটি এলাকায় পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটেছে। বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে বিকেলের মধ্যে খুলশী থানার লালখান বাজার বায়তুল আমান হাউজিং সোসাইটিতে তিন দফা পাহাড় ধস হয়েছে। তবে এ ঘটনায় হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি।
পাহাড় ধসের কারণে চলাচলে তৈরি হয় প্রতিবন্ধকতা। ঝুঁকিপূর্ণ পাঁচ পরিবারকে সরিয়ে নিয়েছে জেলা প্রশাসন। এর আগে বুধবার রাতে বিভিন্ন পাহাড়ে ঝুঁকিপূর্ণ বসবাসকারী ৪ শতাধিক মানুষকে সরিয়ে আশ্রয় কেন্দ্রে নেয়া হয়।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে পাহাড় ধসের আশঙ্কা: ৪ শতাধিক মানুষ আশ্রয় কেন্দ্রে
পাহাড় ধসের সত্যতা নিশ্চিত করে চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক মোমিনুর রহমান জানান, একটি পাহাড়ের কিছু অংশ ধসে পড়ার খবর পেয়ে প্রশাসন এবং ফায়ার সার্ভিসের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে গেছেন। তারা সেখানেই অবস্থান করছেন। পাহাড় ধসে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। পাহাড় ধসে জানমালের ক্ষয়ক্ষতি রোধ করতে পাহাড়ের পাদদেশে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় বসবাসকারীদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেয়ার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
এদিকে দুপুরে নগরীর আমবাগান ফ্লোরাপাস এলাকার বালিকা সদন এতিমখানার একে খান এলাকায়ও পাহাড় ধসে পড়ে। পরে সেখান থেকেও দুপুরের পর থেকে মাটি সরানো কাজ শুরু করে জেলা প্রশাসন।
চট্টগ্রামের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক নাজমুল আহসান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
আরও পড়ুন: টেকনাফে পাহাড় ধসে একই পরিবারের ৫ জন নিহত
ঘটনাস্থলে থাকা ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা জানান, টানা বৃষ্টিপাতে মাটি ক্ষয়ে উঁচু পাহাড়ের বড় একটি অংশ ধসে পড়েছে। এতে কোনো হতাহতের ঘটনা না ঘটলেও চলাচলের রাস্তা বন্ধ হয়ে গেছে। এখানে আরও পাহাড় ধসের আশঙ্কা রয়েছে বলে ফায়ার সার্ভিস আশঙ্কা প্রকাশ করেছে।
প্রাণহানি বা ক্ষয়ক্ষতি রোধে পাহাড়ে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় বসবাসকারীদের অবিলম্বে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যাওয়ার জন্য মাইকিং করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: কক্সবাজারে পাহাড় ধসে ২ রোহিঙ্গা নিহত
চট্টগ্রামে ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে আক্রান্ত প্রথম রোগী শনাক্ত
চট্টগ্রামে প্রথমবারের মতো বিরল মিউকরমাইকোসিসে (ব্ল্যাক ফাঙ্গাস) এক নারী আক্রান্ত হয়েছেন বলে জানা গেছে। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে সুস্থ হবার পর ষাটোর্ধ্ব ওই নারীর শরীরে ব্ল্যাক ফাঙ্গাস শনাক্ত হয়। বিরল ছত্রাকজনিত রোগটিতে আক্রান্ত হয়ে চার দিন ধরে তিনি চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ১৬ নং ওয়ার্ডে চিকিৎসা নিচ্ছেন বলে জানা গেছে।
বুধবার রাতে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. সুযত পাল এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, বর্তমানে ওই নারী চমেক হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘উপসর্গ দেখে আমরা সন্দেহ করেছিলাম, ওই নারী মিউকরমাইকোসিস রোগে আক্রান্ত। আজ তার বায়োপসি রিপোর্টে এটি নিশ্চিত হয়েছি।’
আরও পড়ুন: দেশে ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের উপসর্গ নিয়ে একজনের মৃত্যু
আক্রান্ত ওই নারীর নাম ফেরদৌসি বেগম (৬০)। তার গ্রামের বাড়ির চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলায়।
জানা যায়, গত ২৫ জুন থেকে জ্বরে আক্রান্ত হন গৃহিনী ফেরদৌস বেগম। চলতি মাসের ৩ জুলাই তার করোনা শনাক্ত হয়। ১৫ জুলাই করোনা নেগেটিভ হলেও তার নানা শারীরিক অসুবিধা দেখা দেয়। পরে স্বজনরা তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে।
চমেকে নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে এই রোগী ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে আক্রান্ত হয়েছেন বলে জানান চিকিৎসকরা।
আরও পড়ুন: দেশে করোনায় মৃত্যু ২০ হাজার ছাড়াল, একদিনেই ১৬ হাজারের বেশি শনাক্ত
আক্রান্ত ওই নারীর ছেলে মো. বেলাল হোসাইন বলেন, ‘পাঁচদিন আগে করোনায় আমি আব্বাকে হারিয়েছি। এখন আমার মা জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে। তার জন্য এমপোটেরিসিন-বি ইনজেকশনটি খুঁজছি। কিন্তু তা পাওয়া যাচ্ছে না। প্লিজ আপনারা এই ওষুধের সন্ধান দিন। যত টাকা লাগে আমরা দেব। আমার মাকে বাঁচাতে চাই।’
এ বিষয়ে সিভিল সার্জন ডা. শেখ ফজলে রাব্বি বলেন, ‘আমরা বিষয়টি জেনেছি। তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ঢাকার বার্ডেম হাসপাতালে পাঠানো হবে।’
আরও পড়ুন: ‘ব্ল্যাক ফাঙ্গাস’ রোধে জরুরি পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
সিভিল সার্জন জানান, বিরল এই রোগে আক্রান্তের সংখ্যা খুবই কম। তাই সরকারিভাবে আপাতত ইনজেকশন যোগান দেওয়া সম্ভব নয়। তবে রোগী বাড়লে সরকারি নির্দেশনা আসতে পারে বলে জানিয়েছেন তিনি।
চিকিৎসকরা বলছেন, খুব কাছাকাছি দীর্ঘ সময় ধরে সংস্পর্শে না গেলে এই রোগ সংক্রমণের ঝুঁকি কম। মূলত কোভিড আক্রান্তদের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাওয়ায় এই রোগে আক্রান্ত হবার আশঙ্কা বেশি।
চট্টগ্রামে পাহাড় ধসের আশঙ্কা: ৪ শতাধিক মানুষ আশ্রয় কেন্দ্রে
গত তিন দিন ধরে চট্টগ্রামে প্রবল বৃষ্টিপাতের কারণে পাহাড় ধসের আশঙ্কা দেখা দেয়ায় ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড় থেকে চার শতাধিক মানুষকে সরিয়ে আশ্রয়কেন্দ্রে নেয়া হয়েছে। বুধবার বিকেল থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত ২৫টি ঝুঁকিপূর্ণ স্থাপনা উচ্ছেদ করে তাদের চারটি আশ্রয় কেন্দ্রে নেয়া হয়।
চট্টগ্রামের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) এর নেতৃত্বে মহানগরীর ছয়জন এসিল্যান্ড, জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা এবং বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের স্বেচ্ছাসেবকরা কাজ করে যাচ্ছেন বলে জানান জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা।
আরও পড়ুন: টেকনাফে পাহাড় ধসে একই পরিবারের ৫ জন নিহত
বুধবার রাত ৯টায় জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমান জানান, নগরীর লালখান বাজার মতিঝর্ণা, বাটালিহিল, আকবরশাহ, হিল-১, হিল-২, লিংক রোডসহ বিভিন্ন পাহাড়ে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাসকারী ১০৫টি পরিবারের চার শতাধিক সদস্যকে আশ্রয়কেন্দ্রে আনা হয়েছে। তাদের আল হেরা মাদ্রাসা, রউফাবাদ রশিদিয়া মাদ্রাসা, ফিরোজ শাহ প্রাথমিক বিদ্যালয়, লালখান বাজার প্রাথমিক বিদ্যালয় আশ্রয় কেন্দ্রে রাখা হয়েছে।
জেলা প্রশাসক আরও বলেন, আশ্রয়কেন্দ্রে আনা পরিবারগুলোর মধ্যে খাদ্য সহায়তার পাশাপাশি প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে ভুনাখিচুড়ি ও ডিম সরবরাহ করা হবে। রাতের খাবারের ব্যাবস্থাও করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে পাহাড় ধসের শঙ্কা: ঝুঁকিপূর্ণ বাসিন্দাদের সরাতে মাইকিং
পাহাড়ি এলাকায় মাইকিং চলমান রয়েছে। পর্যাপ্ত খাদ্য মজুদ আছে। চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা ও স্বেচ্ছাসেবকরা ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় বসবাসরত মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্রে সরিয়ে আনার কাজ রাতেও অব্যাহত রেখেছে।
কাট্টলী এলাকার এসিল্যান্ড এনামুল হক জানান, নগরীর আকবর শাহ এলাকার ফিরোজ শাহ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় আশ্রয় কেন্দ্রে বৃহস্পতিবার দুপুরের খাবার বিতরণ করা হবে।
আরও পড়ুন: উখিয়ায় রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পাহাড় ধসে শিশুসহ নিহত ৫
চট্টগ্রামে করোনায় আরও ১৭ জনের প্রাণহানি
চট্টগ্রামে করোনায় আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ১৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। তাদের মধ্যে ৭ জন নগরী বাকি ১০ জন উপজেলার বাসিন্দা। গতকাল মৃতের সংখ্যা ছিল ১৮ জন। এ নিয়ে মোট মৃত্যুর সংখ্যা এসে দাঁড়িয়েছে ৯৩২ জনে।
বুধবার (২৮ জুলাই) জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। চট্টগ্রামের সরকারি-বেসরকারি ৯টি ল্যাব ও বিভিন্ন এন্টিজেন বুথে সর্বমোট ২ হাজার ৭৯২ জনের নমুনা পরীক্ষা হয়।
এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে করোনা আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছে আরও ৯১৫ জন। তার মধ্যে ৬৪১ জন নগরীর ও ২৭৪ জন বিভিন্ন উপজেলার বাসিন্দা। এনিয়ে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৭৮ হাজার ৪৩৬ জনে এসে দাঁড়িয়েছে। এর মধ্যে ৫৮ হাজার ৯৬৪ জন নগরের বাসিন্দা ও ১৯ হাজার ৪৭২ জন বিভিন্ন উপজেলার।
পড়ুন: বিশ্বব্যাপী করোনা আক্রান্ত সাড়ে ১৯ কোটি ছাড়াল
ল্যাবভিত্তিক প্রতিবেদনে দেখা যায়, ফৌজদারহাটের বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল এন্ড ইনফেকশাস ডিজিজেস ল্যাবে (বিআইটিআইডি) ৮৬৮ জনের নমুনা পরীক্ষায় চট্টগ্রাম নগরের ১২৫ ও উপজেলার ৫১ জন জীবাণুবাহক পাওয়া গেছে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ল্যাবে ২০১ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হলে নগরের ৭৪ ও উপজেলার ১০ জনের শরীরে জীবাণুর উপস্থিতি চিহ্নিত হয়। চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি এন্ড এনিম্যাল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয় ল্যাবে ১৯৯ জনের নমুনা পরীক্ষায় চট্টগ্রাম নগরের ৭৭ ও উপজেলার ১০ জন জীবাণুবাহক পাওয়া গেছে।
নমুনা সংগ্রহের পরপরই ফলাফল প্রদানকারী এন্টিজেন টেস্টে ৭৯৭ জনের মধ্যে ২৭২ জন জীবাণুবাহক বলে জানানো হয়। এর মধ্যে চট্টগ্রাম নগরের ১০১ জন ও উপজেলার ১৭১ জন। চট্টগ্রাম নগরীতে করোনা পরীক্ষার নমুনা সংগ্রহকারী কয়েকটি কেন্দ্রে এন্টিজেন টেস্ট করা হয়ে থাকে।
পড়ুন: এক সপ্তাহে ৯০ শতাংশ প্রাপ্তবয়স্ককে টিকা দিয়েছে ভুটান
রোহিঙ্গাদের টিকা দেবে সরকার: পররাষ্ট্র সচিব
এদিকে বেসরকারি ক্লিনিক্যাল ল্যাবরেটরির মধ্যে শেভরন ল্যাবে ২৫৭টি নমুনায় চট্টগ্রাম নগরের ৮৯ ও উপজেলার ১১ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়। ইমপেরিয়াল হাসপাতালের ল্যাবে ২৪৭ নমুনা পরীক্ষা নগরের ৯৩ জন ও উপজেলার ৪ জনের করোনা শনাক্ত হয়। আগ্রাবাদের মা ও শিশু হাসপাতালে ৫৭ জনের নমুনা পরীক্ষায় নগরে ২৪ জন ও উপজেলার ৫ জন করোনা পজিটিভ শনাক্ত হন। আরটিআরএল ল্যাবে ৪৮ নমুনা পরীক্ষা নগরের ২৭ জন আর উপজেলার ৩ জনের শরীরে করোনা ভাইরাসের উপস্থিতি মিলেছে। মেডিকেল সেন্টার হাসপাতালে ৬০ নমুনা পরীক্ষায় নগরে ৩১ জন ও উপজেলার এক জন করোনা পজিটিভ শনাক্ত হন। এছাড়া কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ ল্যাবে নমুনা পরীক্ষা হয়েছে কেবল ৫৮ টি এবং এর মধ্যে উপজেলার ৮টি করোনা পজিটিভ।
চট্টগ্রামে পুকুরে ডুবে দুই বোনের মৃত্যু
চট্টগ্রামের রাউজানে পুকুরে ডুবে দুই বোনের মৃত্যু হয়েছে। বৃহস্পতিবার বেলা ১২টার দিকে সদর ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ডের শমসের নগর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ নিয়ে চট্টগ্রামে গত দুই দিনে পুকুরে ডুবে ৫ শিশুর মৃত্যু হলো।
মারা যাওয়া দুই শিশু হলো, পূর্ব রাউজানের রাণী পাড়ার মোহাম্মদ জানে আলম মনুর মেয়ে আনিসা আকতার (৭) ও তাঁর ছোট ভাই মাহবুব আলমের মেয়ে সাকিবা আকতার (৬)।
আরও পড়ুন: পঞ্চগড়ে পুকুরে পড়ে শিশুর মৃত্যু
স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য সাইফুউদ্দিন জানান, শিশু দুটি সকালে বাড়ীর পাশে গুন্না মিয়া চৌধুরীর পুকুরে গোসল করতে যায়। মাহবুবের কন্যা আগে পুকুরে নেমে পানিতে ডুবে যেতে থাকলে জানে আলমের কন্যা তা দেখে তাকে বাঁচাতে পানিতে নেমে পড়ে। এতে দুই বোনই পুকুরের পানিতে তলিয়ে যায়। দীর্ঘক্ষণ পরও ফিরে না আসায় পরিবারের সদস্যরা খোঁজাখুঁজি শুরু করে।এক পর্যায়ে যে পুকুরে দুই বোন গোসল করছিল সেই পুকুরে জাল ফেললে জালে দুজনের নিথর দেহ উঠে আসে। এ সময় তাদের দুজনকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে সেখানকার চিকিৎসক দুজনকেই মৃত ঘোষণা করেন।
আরও পড়ুন: বন্যার পানিতে পড়ে দেড় বছরের শিশুর মৃত্যু
এদিকে ঈদের দিন সকালে জেলার ফটিকছড়ি উপজেলার নাজিরহাট পৌরসভার পূর্ব সুয়াবিল ভাঙ্গাদিঘীরপাড় রফিক সিকদার বাড়িতে (নানার বাড়ি) বেড়াতে গিয়ে পুকুরে ডুবে মারা যায় দুই ভাই। মৃত দুই ভাই মুহাম্মদ ও আহম্মদ স্থানীয় পূর্ব সুয়াবিল কার্পাসপাড়ার মোহাম্মদ তাহেরের ছেলে। তাদের দুজনের বয়স আড়াই বছর তারা জমজ ভাই ছিল।
এছাড়া একই দিন সকালে জেলার কর্ণফুলি উপজেলার চরলক্ষ্যা ইউনিয়নে দুই বছরের শিশু মোহাম্মদ ফরহাদ বাড়ির পাশে পুকুরে ডুবে মারা যায়।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে পুত্রবধূর ‘ছুরিকাঘাতে’ আহত শাশুড়ির মৃত্যু
ক্ষমতাহীনদের ক্ষমতাবান করতে পারে সাংবাদিকরা : তথ্যমন্ত্রী
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, সাংবাদিকরা ক্ষমতাহীনদের ক্ষমতাবান করতে পারে, যে অব্যক্তদের পক্ষে আমাদের কথা বলা দরকার, সাংবাদিকরাই পারে তাদের কথা ব্যক্ত করতে, সমাজ যেদিকে তাকায়না সেদিকে দৃষ্টি নিবন্ধ করতে।
বৃহস্পতিবার বিকেলে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের বঙ্গবন্ধু হলে সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের চেক বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের (সিইউজে) সভাপতি মোহাম্মদ আলীর সভাপতিত্বে ও যুগ্ম সম্পাদক সবুর শুভ’র সঞ্চালনায় চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সভাপতি আলী আব্বাস, সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী ফরিদ, সিইউজের সহসভাপতি অনিন্দ্য টিটু এবং সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ শামসুল ইসলাম অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন।
আরও পড়ুন: কিছু সংস্থা বিবৃতি বিক্রি করে: তথ্যমন্ত্রী
বর্তমানে সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট সাংবাদিকদের জন্য ভরসার জায়গা হয়ে দাঁড়িয়েছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, কোনো সাংবাদিক মারা গেলে তাঁর পরিবার তিন লাখ টাকা পাচ্ছে, কেউ অসুস্থ হলেও টাকা পাচ্ছে। সাংবাদিক পরিবারের সদস্যদের পড়ালেখার ক্ষেত্রেও অনুদানের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী ১০ কোটি টাকা দিয়েছেন করোনাকালীন সহায়তার জন্য। ঈদুল আজহার আগেই সেগুলোর বিতরণ শুরু হয়েছে।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, দেশটা যে এগিয়ে যাচ্ছে সেটাও মানুষকে আমাদের জানাতে হবে। তাহলে মানুষ আরো স্বপ্ন দেখবে। দেশও স্বপ্নের ঠিকানায় পৌঁছে যাবে। মানবিক প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা, যাকে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম 'মাদার অব হিউম্যানিটি' আখ্যা দিয়েছে, তিনি ২০১৪ সালে বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট গঠন করেছেন। অথচ এটার জন্য প্রাতিষ্ঠানিক কোন জোরালো দাবি ছিল না।
অনুসন্ধানী সাংবাদিকতাকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে অভিহিত করে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, এমন অনেক বিষয় আছে সমাজ সেদিকে তাকায়না। রাস্তাঘাটে ঘুরে বেড়ানো পাগলেরও একটা গল্প আছে, ফ্যালফ্যাল করে তাকানো মানুষটার কিছু বেদনা আছে, সেই বেদনা শোনার সময় সমাজের নেই, সমাজ তাকে জিজ্ঞেস করেনা। কিন্তু একজন অনুসন্ধানী সাংবাদিক সেটি অনুসন্ধান করে সমাজের সামনে তুলে ধরতে পারে।
তিনি বলেন, লেখনীর মাধ্যমে সমাজকে উজ্জীবিত করতে পারেন একজন সাংবাদিক। সাংবাদিকরা সমাজের বিবেক হিসেবে কাজ করে, সমাজের তৃতীয় নয়ন খুলে দেয় এবং সমাজকে সঠিক পথে প্রবাহিত করতে পারে।
আরও পড়ুন: ব্রাসেলসে তথ্যমন্ত্রী: ইউরোপীয় পার্লামেন্টে বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ গ্রুপ গঠনের আলোচনা
তথ্যমন্ত্রী বলেন, একটি বহুমাত্রিক সমাজে বিতর্ক থাকবে, সমালোচনা থাকবে, কিন্তু এটির পাশাপাশি ভালো কাজের প্রশংসাও হতে হয়, নইলে যারা ভালো কাজ করে তারা কখনো উৎসাহ পাবে না' উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, 'বিএনপিসহ কেউ কেউ মনে করে, তারা সরকারে থাকলে সব ভাল, আমরা সরকারে থাকলে সব খারাপ, এটা ঠিক নয়। দেশটা কি এমনি এমনিতে এগিয়ে গেল ? গত সাড়ে বারো বছরে মানুষের যে উন্নয়ন হয়েছে তা কল্পনাতীত, আমাদের মাথাপিছু আয় ভারতকেও ছাড়িয়ে গেছে। জননেত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বের কারণেই তা সম্ভব হয়েছে।
চট্টগ্রামের অন্যতম নান্দনিক ও ঐতিহাসিক স্থান সেন্ট্রাল রেলওয়ে বিল্ডিং-সিআরবি'র পরিবেশ সংরক্ষণ বিষয়ে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, সিআরবি পরিস্থিতি নিয়ে চট্টগ্রামের মানুষের মাঝে ব্যাপক অসন্তোষ সৃষ্টি হয়েছে। ‘চ্যাম্পিয়ন অভ দ্যা আর্থ’ পদকে ভূষিত বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রীর হাত দিয়ে পরিবেশ নষ্ট হয় এমন কোন কাজ হবেনা। সিআরবিতে পরিবেশ নষ্ট হোক, গাছপালা কাটা হোক সেটি আমিও ব্যক্তিগতভাবে চাইনা। সরকার জনগণের বিপক্ষে কোন কাজ করবেনা। আমি বিষয়টি যথাযথ জায়গায় উপস্থাপন করবো।
আরও পড়ুন: চামড়া পাচার রোধে বেনাপোল সীমান্তে বিজিবির সতর্কতা