হাইকোর্ট
কনডেম সেলে মায়ের সঙ্গে ১০ মাস বয়সী শিশু: প্রতিবেদন চেয়েছে হাইকোর্ট
হবিগঞ্জের কারাগারে কনডেম সেলে মায়ের সঙ্গে শিশুটির থাকা এবং শিশুটির অবস্থা সম্পর্কিত বিষয়ে তদন্ত করে প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
কারা মহাপরিদর্শক ও হবিগঞ্জের কারা কর্তৃপক্ষকে আগামী ১৮ জানুয়ারি প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। একই সঙ্গে কারাগারের কনডেম সেলে মায়ের সঙ্গে থাকা শিশুর শারীরিক ও মানসিক উন্নয়ন নিশ্চিতে বিধি বা নীতিমালা বা প্রবিধান তৈরি করতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না- তা জানতে চেয়ে রুল দিয়েছেন হাইকোর্ট।
আরও পড়ুন: সাংবাদিক কাজলের মামলা হাইকোর্টে স্থগিত
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের সচিব, আইন সচিব, মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব ও কারা মহাপরিদর্শকসহ বিবাদীদের রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে। এক রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি কাজী জিনাত হকের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ রোববার রুলসহ আদেশ দেন।
গত ৩০ নভেম্বর ‘ফাঁসির সেলে কেমন আছে ১০ মাসের মাহিদা’ শিরোনামে একটি দৈনিকে প্রতিবেদন ছাপা হয়।
এতে বলা হয়, হবিগঞ্জে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের এক মামলায় মায়ের মৃত্যুদণ্ডের রায় হওয়ায় তার সঙ্গেই ফাঁসির সেলে আছে ১০ মাসের শিশু মাহিদা। প্রতিবেদনটি যুক্ত করে শিশুটির জন্য পর্যাপ্ত খাবার, স্বাস্থ্যকর পরিবেশ ও অন্যান্য মৌলিক চাহিদা পূরণ নিশ্চিতে নির্দেশনা চেয়ে ১৪ ডিসেম্বর একটি রিট করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী তানভীর আহমেদ।
আরও পড়ুন: সাবেক ভিপি নুরকে হাইকোর্টে তলব
রবিবার আদালতে রিটের পক্ষে তানভীর আহমেদ নিজেই শুনানি করেন। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত দাশগুপ্ত।
পরে আইনজীবী তানভীর আহমেদ জানান, রুলের পাশাপাশি কনডেম সেলে মায়ের সঙ্গে শিশুটির থাকা এবং শিশুটির অবস্থা সম্পর্কিত বিষয়ে তদন্ত করে কারা মহাপরিদর্শক ও হবিগঞ্জের কারা কর্তৃপক্ষকে আগামী ১৮ জানুয়ারি প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
পরবর্তী আদেশের জন্য ২১ জানুয়ারি দিন রেখেছেন আদালত।
প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, মামলায় পাঁচ আসামির সবাইকে দোষী সাব্যস্ত করে ২৬ অক্টোবর মৃত্যুদণ্ডের রায় দেয় হবিগঞ্জের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ আদালতের বিচারক জাহিদুল হক।
রায় ঘোষণার দিন মা হুছনা আক্তারের সাথেই আদালতে এসেছিল ১০ মাসের শিশু মাহিদা। রায় ঘোষণার পর মায়ের সঙ্গে মাহিদার জায়গা হয় হবিগঞ্জ কারাগারের ফাঁসির সেলে। হবিগঞ্জ কারাগারের ওই সেলে সরাসরি পানির কোনো ব্যবস্থা নেই।
আরও পড়ুন: বনানীর হোটেল শেরাটনের বিষয়ে হাইকোর্টের পরবর্তী শুনানি ১৮ জানুয়ারি
ছোট বালতিতে করে পানি পাওয়া যায়, তাও সবসময় নয়, ওই পানিতেই চলতে হয় তাদের। একজন সশ্রম কারাবন্দি যে হারে খাবার পান ফাঁসির সেলে বন্দিদের একই নিয়মে খাবার দেওয়া হয়ে থাকে। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দিনে দেড় ঘণ্টার জন্য ১০ ফুট বাই ১০ ফুট আয়তনের কক্ষের তালা খুলে দেওয়া হয়।
তালা খুলে দেওয়ার পর দেড় ঘণ্টার জন্য ওই কক্ষের শিশু মাহিদাসহ চার বাসিন্দার পরবর্তী গন্তব্য কক্ষের সামনের ৬ ফুট বাই ১০ ফুট আয়তনের বারান্দা। জেল কোডের ৭৩৫ বিধিতে সেলের কথা বলা হলেও এর আয়তন কী তার উল্লেখ নেই।
তবে জানা গেছে, বিভিন্ন কারাগারে ৬ ফুট বাই ৬ ফুট থেকে ১০ ফুট বাই ১০ ফুট আয়তনের সেল রয়েছে। হবিগঞ্জ কারাগারে নারী বন্দিদের জন্য দুটি সেল রয়েছে। হবিগঞ্জ কারাগারে ফাঁসির সেলের আয়তন প্রায় ১০ ফুট বাই ১০ ফুট।
আরও পড়ুন: কুষ্টিয়ায় যুবককে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ, স্ত্রী-শাশুড়ি কারাগারে
সাবেক ভিপি নুরকে হাইকোর্টে তলব
বিচারকদের বিরুদ্ধে আপত্তিকর বক্তব্য দেওয়ার অভিযোগে গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুরকে তলব করেছেন হাইকোর্ট।
বিষয়টি উপস্থাপনের পর রবিবার (১৭ ডিসেম্বর) বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি রাজিক–আল–জলিলের হাইকোর্ট বেঞ্চ স্বপ্রণোদিত রুলসহ এ আদেশ দেন।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে ভিপি নুরের বিরুদ্ধে মামলা
আদালত অবমাননার বিষয়ে ব্যাখ্যা জানাতে আগামী ১৭ জানুয়ারি তাকে আদালতে হাজির হতে বলা হয়েছে।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল কাজী মাঈনুল হাসান ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল কালীপদ মৃধা।
আইনজীবী কালীপদ মৃধা জানান, হাইকোর্ট নুরুল হক নুরের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার রুল দিয়ে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা জানাতে ১৭ জানুয়ারি তাকে তলব করেছেন।
গত ৭ ডিসেম্বর অবরোধের সমর্থনে বিক্ষোভ মিছিল ও সড়ক অবরোধ করে সমাবেশ করেছে গণ অধিকার পরিষদ।
ওই দিন দুপুর ১২টায় পুরানা পল্টন আল রাজী কমপ্লেক্সের সামনে থেকে মিছিল শুরু করে পল্টন মোড় ঘুরে বিজয়নগর পানির ট্যাংকির মোড়ে এসে এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়।
সমাবেশে আদালতের বিচারকদের বিরুদ্ধে আপত্তিকর বক্তব্য দিয়েছিলেন গণঅধিকার পরিষদের (একাংশ) সভাপতি ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর। নুরুল হকের দেওয়া বক্তব্য ৭ ডিসেম্বর একটি দৈনিকে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা
ভিপি নুরের বিরুদ্ধে কুমিল্লার দুই থানায় অভিযোগ
ফখরুলের জামিন শুনানি ৩ জানুয়ারি: হাইকোর্ট
২৮ অক্টোবর বিএনপির মহাসমাবেশ চলাকালে প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে কেন জামিন দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে করা রুলের শুনানির জন্য ৩ জানুয়ারি দিন ধার্য করেছেন হাইকোর্ট।
বিচারপতি মো. সেলিম ও বিচারপতি শাহেদ নূরউদ্দিনের হাইকোর্ট বেঞ্চ শুনানির দিন ধার্য করেন।
এর আগে ৭ ডিসেম্বর ফখরুলকে কেন জামিন দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট।
সরকারকে এক সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
২৮ অক্টোবর বিএনপির মহাসমাবেশ চলাকালে প্রধান বিচারপতির বাসভবনে ভাঙচুর ও হামলার অভিযোগে ২৯ অক্টোবর রমনা থানায় একটি মামলা দায়ের করে পুলিশ।
মামলায় মির্জা ফখরুল ছাড়াও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসসহ ৫৯ জন নেতা-কর্মীকে আসামি করা হয়।
এ মামলায় ২৯ অক্টোবর ফখরুলকে গ্রেপ্তার করা হয় এবং তখন থেকে তিনি কারাগারে রয়েছেন।
আরও পড়ুন: ফখরুলকে কেন জামিন নয়, জানতে চেয়ে হাইকোর্টের রুল
মির্জা ফখরুলের জামিন প্রশ্নে হাইকোর্টের রুলের শুনানি রবিবার
মির্জা ফখরুলের জামিন প্রশ্নে হাইকোর্টের রুলের শুনানি রবিবার
প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলার অভিযোগে করা মামলায় বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের জামিন প্রশ্নে জারি করা রুল শুনানির জন্য আগামী রবিবার দিন ধার্য করা হয়েছে।
তার আইনজীবীর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার (১৪ ডিসেম্বর) বিচারপতি মো. সেলিম ও বিচারপতি শাহেদ নূরউদ্দিনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ সিদ্ধান্ত দেন।
ওই মামলায় গত ২২ নভেম্বর ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতে মির্জা ফখরুলের জামিন আবেদন নামঞ্জুর হয়। এরপর জামিন চেয়ে ৫ ডিসেম্বর হাইকোর্টে আবেদন করেন তিনি।
আবেদনের শুনানি নিয়ে ৭ ডিসেম্বর হাইকোর্ট রুল দেন। ওই মামলায় মির্জা ফখরুলকে কেন জামিন দেওয়া হবে না, তা জানতে চাওয়া হয় রুলে। রাষ্ট্রপক্ষকে এক সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়।
বিষয়টি আজ আদালতে তুলে ধরেন মির্জা ফখরুলের আইনজীবী জয়নুল আবেদীন, সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী সগীর হোসেন।
শুনানির দিন ধার্যের আবেদন জানিয়ে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন বলেন, ‘নোটিশ জারি হয়েছে। রুল প্রস্তুত হয়েছে।’
আরও পড়ুন: ফখরুলকে কেন জামিন নয়, জানতে চেয়ে হাইকোর্টের রুল
আদালত বলেন, উল্লিখিত হিসেবে বিষয়টি রবিবার কার্যতালিকায় আসবে। এ সময় রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বি এম আবদুর রাফেল।
পরে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বি এম আবদুর রাফেল বলেন, ‘মির্জা ফখরুলের জামিন প্রশ্নে জারি করা রুলের উপর কবে শুনানি হবে, রবিবার আদালত তা নির্ধারণ করবেন।’
গত ২৮ অক্টোবর রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির মহাসমাবেশ ঘিরে সংঘর্ষের মধ্যে প্রধান বিচারপতির বাসভবনে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করা হয়।
পরদিন গত ২৯ অক্টোবর এ ঘটনায় রমনা মডেল থানায় মামলাটি করা হয়। এই মামলায় ২৯ অক্টোবরই মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে গ্রেপ্তার করা হয়।
আরও পড়ুন: প্রধান বিচারপতির বাসভবন ভাঙচুর মামলা: ফখরুলের জামিন আবেদনের শুনানি ৭ ডিসেম্বর
হাইকোর্টে ফখরুলের জামিন আবেদন
কিশোর তৌহিদের ক্ষতবিক্ষত লাশ, সুষ্ঠু তদন্তের নির্দেশ হাইকোর্টের
রাজধানী ঢাকার বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা থেকে অপহৃত কিশোর তৌহিদুল ইসলামের ক্ষতবিক্ষত লাশ উদ্ধারের ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও দ্রুত বিচার নিশ্চিত করতে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।
একই সঙ্গে সংবিধানের অনুচ্ছেদের আলোকে এই মামলার সুষ্ঠু তদন্ত ও সুবিচার নিশ্চিতে এবং নিয়মিত তদারকি ও পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি), তদন্তকারী কর্মকর্তা ও তদারককারী সংশ্লিষ্ট সবাইকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: সাংবাদিক কাজলের মামলা হাইকোর্টে স্থগিত
বুধবার(১৩ ডিসেম্বর) জনস্বার্থে বিচারপতি মো. রেজাউল হাসান ও বিচারপতি ফাহমিদা কাদেরের হাইকোর্ট বেঞ্চ স্ব-প্রণোদিত হয়ে রুলসহ এ আদেশ দেন।
এ সময় রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন (মানিক)।
রুলে ভাটারা থানায় দায়ের করা মামলাটির সুষ্ঠু তদন্ত এবং দ্রুত বিচার নিশ্চিতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণসহ ও নিয়মিত তদারকির জন্য কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়েছে।
আগামী আট সপ্তাহের মধ্যে ঢাকার জেলা প্রশাসককে এই রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
আদেশের অনুলিপি সংশ্লিষ্ট আদালত, স্বরাষ্ট্রসচিব, আইনসচিব, আইজিপি, ডিসি গুলশান, ডিসি (ডিবি) গুলশান, সংশ্লিষ্ট আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর এবং সংশ্লিষ্ট তদন্ত কর্মকর্তাকে পাঠাতে বলা হয়েছে।
নিহত তৌহিদুল ইসলাম পরিবারের সঙ্গে বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার চার নম্বর সড়কের ডি ব্লকে থাকতেন। তার বাবা মোহাম্মদ নবী হোসেন জমি কেনাবেচার ব্যবসায় যুক্ত। দুই ভাই এক বোনের মধ্যে তৌহিদুল ছিলেন দ্বিতীয়।
আগে মাদরাসায় পড়ে আসা তৌহিদুল বর্তমানে ভাটারার ডুমনি স্কুলে নবম শ্রেণিতে পড়ছিলেন। তৌহিদুল হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে জুয়েল রানা নামে বসুন্ধরা সিকিউরিটিজের একজন নিরাপত্তাকর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
জিজ্ঞাসাবাদে তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতেই ২৬ নভেম্বর সকালে বসুন্ধরার ‘পি’ ব্লকের একটি ক্ষেত থেকে তৌহিদুলের ক্ষতবিক্ষত লাশ উদ্ধার করা হয়। এ হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন জুয়েল রানা।
আরও পড়ুন: ফখরুলকে কেন জামিন নয়, জানতে চেয়ে হাইকোর্টের রুল
তফসিলের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট
নির্বাচনের তফসিল স্থগিত চেয়ে করা রিট খারিজ
আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল স্থগিত চেয়ে দায়ের করা রিট আবেদন সরাসরি খারিজ করে দিয়েছেন হাইকোর্ট। সোমবার (১১ ডিসেম্বর) শুনানি শেষে বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি মো. আতাবুল্লাহর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে রিটের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী ইউনূস আলী আকন্দ। রাষ্ট্রপক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন ও নির্বাচন কমিশনের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার খান মোহাম্মদ শামীম আজিজ।
আইনজীবী ইউনূস আলী আকন্দ জানান, রিট আবেদনটি সরাসরি খারিজ করে দিয়েছেন হাইকোর্ট।
আদালত বলেছেন, সংবিধানের ১২৩ (৩) অনুচ্ছেন অনুযায়ী নির্বাচন করতে বাধা নেই।
আরও পড়ুন: দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন: ৪৭ জন ইউএনও বদলির অনুমোদন ইসির
গত ১৫ নভেম্বর আগামী ৭ জানুয়ারি ভোটগ্রহণের দিন নির্ধারণ করে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল।
গত ২৯ নভেম্বর দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের এই তফসিল স্থগিত চেয়ে রিট দায়ের করেন আইনজীবী ইউনূস আলী আকন্দ। রিটে প্রধান নির্বাচন কমিশনার, নির্বাচন কমিশন সচিব, মন্ত্রিপরিষদ সচিব, আইন সচিবসহ ৭ জনকে বিবাদী করা হয়। জাতীয় সংসদ বহাল থাকা অবস্থায় ১৫ নভেম্বর প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা কেন অবৈধ হবে না, এই মর্মে রিটে রুল চাওয়া হয়। রুল হলে তা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল স্থগিতের আরজি জানানো হয় রিটে।
রিটে রুল শুনানি বা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত আগের নিয়মে অর্থাৎ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে সংসদ নির্বাচনের আদেশও চাওয়া হয়।
রিটকারী আইনজীবী ইউনূস আলী আকন্দ জানান, একাদশ জাতীয় সংসদ এখনও বহাল। পাঁচ বছরের মেয়াদ এখনও শেষ হয়নি। এই সংসদের মেয়াদ আগামী বছরের ২৯ জানুয়ারি শেষ হবে। ৭ জানুয়ারি নির্বাচন হলে তখন দুটি সংসদ হবে। অর্থাৎ সংসদ সদস্যের সংখ্যা দাঁড়াবে ৬০০। অথচ সংবিধানের ৬৫ (২) অনুচ্ছেদে আছে যে প্রত্যক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে আইন অনুযায়ী নির্বাচিত ৩০০ সদস্য নিয়ে সংসদ গঠিত হবে—এসব যুক্তিতে রিটটি করা হয়।
বর্তমানে রাজনৈতিক সংকট চলছে উল্লেখ করে রিট আবেদনে বলা হয়, দেশে হরতাল-অবরোধ চলছে। এ অবস্থায় সুষ্ঠু ভোট করা সম্ভব নয়। তা ছাড়া মনোনয়নপত্রের সঙ্গে প্রার্থীর ট্যাক্স রিটার্ন দাখিলের
বাধ্যবাধকতা রয়েছে। অথচ ট্যাক্স রিটার্ন দাখিলের শেষ সময় ৩০ নভেম্বর, আবার নির্বাচন কমিশনের তফসিল অনুযায়ী মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ সময় ৩০ নভেম্বর। তাহলে ট্যাক্স রিটার্নপত্র মনোনয়নপত্রের সঙ্গে দাখিল করা কীভাবে সম্ভব হবে। এ ছাড়া হরতাল অবরোধের ফলে দেশে যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে তাতে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য প্রস্তুত নয়।
এ রিটের উপর গত ৪ ডিসেম্বর শুনানি হয়। আজ সোমবার রিট আবেদনটি সরাসরি খারিজ (সামারালি রিজেক্ট) করে আদেশ দেন হাইকোর্ট।
আরও পড়ুন: দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন: ওসিদের বদলির জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ ইসি’র
মৃত্যুদণ্ডের শাস্তির বিধান চ্যালেঞ্জ করে রিট
দেশে মৃত্যুদণ্ডের শাস্তির বিধান চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়েছে। রিটে মৃত্যুদণ্ডের বিধান কেন অবৈধ ও বেআইনি ঘোষণা করা হবে না- তা জানতে চেয়ে রুল জারির নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৭ ডিসেম্বর) হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ইশরাত হাসান বাদী হয়ে এ রিট করেন।
রিট আবেদনে আইন মন্ত্রণালয়ের আইন ও বিচার বিভাগের সচিব, লেজিসলেটিভ ও সংসদবিষয়ক বিভাগের সচিব এবং সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলকে বিবাদী করা হয়েছে।
আগামী রবিবার (৯ ডিসেম্বর) হাইকোর্টের বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি মো. আতাবুল্লাহর সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চে রিট আবেদনটি শুনানির জন্য উপস্থাপন করা হবে বলে জানিয়েছেন রিটকারী আইনজীবী।
রিট আবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড। কিন্তু এই মৃত্যুদণ্ডের বিধান সংবিধানের ৩২ ও ৩৫ অনুচ্ছেদের সঙ্গে সাংঘর্ষিক।
আরও পড়ুন: স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে ১ শতাংশ ভোটারের সই করা তালিকা দাখিলের বিধান চ্যালেঞ্জ করে রিট
এছাড়া, জাতিসংঘ ঘোষিত ১৯৪৮ সালের মানবাধিকার সনদ, ১৯৬৬ সালের নাগরিক ও রাজনৈতিক অধিকারবিষয়ক আন্তর্জাতিক চুক্তি এবং ১৯৮৪ সালের নির্যাতন বিরোধী কনভেনশনে মৃত্যুদণ্ডকে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে। বাংলাদেশ এসব দলিলে সইকারী দেশ হিসেবে মৃত্যুদণ্ড নিষিদ্ধ করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। ইতোমধ্যে বিশ্বের ১১২টি দেশ মৃত্যুদণ্ড নিষিদ্ধ করেছে। রিট আবেদনে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ডকে অসাংবিধানিক ঘোষণার আবেদন জানানো হয়েছে।
আইনজীবী ইশরাত হাসান বলেন, আমাদের প্রতিবেশী দেশ ভুটান ও নেপালসহ বিশ্বের অনেক দেশে মৃত্যুদণ্ড নিষিদ্ধ করা হয়েছে। আন্তর্জাতিক দলিলে মৃত্যুদণ্ডের বিধান নিষিদ্ধ করার পক্ষে বাংলাদেশ সইকারী দেশ। সে হিসেবে সেসব দলিল অনুসরণ করাই আন্তর্জাতিক আইনের রীতি। বাংলাদেশের সংবিধানের ২৫ নম্বর অনুচ্ছেদেও আন্তর্জাতিক আইন অনুসরণের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এছাড়া মৃত্যুদণ্ডের বিধান আমাদের সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। এসব কারণে রিটটি দায়ের করেছি।
আরও পড়ুন: নির্বাচনের তফসিল স্থগিত চেয়ে রিটের আদেশ ১০ ডিসেম্বর
তফসিলের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট
ফখরুলকে কেন জামিন নয়, জানতে চেয়ে হাইকোর্টের রুল
প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে কেন জামিন দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।
বৃহস্পতিবার (৭ ডিসেম্বর) এ মামলায় ফখরুলের জামিন চেয়ে করা আবেদনের শুনানি শেষে বিচারপতি মো. সেলিম ও বিচারপতি শাহেদ নূরউদ্দিনের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রুল জারি করেন।
এক সপ্তাহের মধ্যে সরকারকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে। আদালতে জামিন আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন জ্যৈষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন।
আরও পড়ুন: প্রধান বিচারপতির বাসভবন ভাঙচুর মামলা: ফখরুলের জামিন আবেদনের শুনানি ৭ ডিসেম্বর
এ সময় আদালতে মির্জা ফখরুলের পক্ষে আরও উপস্থিত ছিলেন আইনজীবী নিতাই রায় চৌধুরী, আইনজীবী ফজলুর রহমান খান, ব্যারিস্টার এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন, ব্যারিস্টার বদরুদ্দোজা বাদল, ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল, ব্যারিস্টার কায়সার, আইনজীবী গাজী কামরুল ইসলাম সজল ও আইনজীবী সগীর হোসেন লিওন।
অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বি এম রাফেল।
এর আগে গত ২২ নভেম্বর ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের ভারপ্রাপ্ত বিচারক এ মামলায় বিএনপি মহাসচিবের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন। রবিবার হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এ আবেদন করেন আইনজীবী সগীর হোসেন লিওন। এ আবেদনের ওপর শুনানির জন্য পরদিন সোমবার দিন ধার্য করেন আদালত।
উল্লেখ্য, ২৮ অক্টোবর বিএনপির মহাসমাবেশ চলাকালে প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলা ও ভাঙচুরের অভিযোগে ২৯ অক্টোবর রমনা থানায় পুলিশ বাদী হয়ে মামলা করে। সেই মামলায় মির্জা ফখরুল ছাড়াও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসসহ ৫৯ নেতা-কর্মীকে আসামি করা হয়।
আরও পড়ুন: হাইকোর্টে ফখরুলের জামিন আবেদন
সাংবাদিক কাজলের মামলা হাইকোর্টে স্থগিত
অবৈধ অনুপ্রবেশের অভিযোগে সাংবাদিক শফিকুল ইসলাম কাজলের বিরুদ্ধে যশোরের বেনাপোলের বিজিবি’র দায়ের করা মামলার কার্যক্রম ছয় মাসের জন্য স্থগিত করে আদেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
মামলাটি বাতিল চেয়ে করা আবেদনের শুনানি নিয়ে সোমবার (৪ ডিসেম্বর) বিচারপতি এস এম কুদ্দুস জামান ও বিচারপতি মো. আমিনুল ইসলামের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ রুলসহ এ আদেশ দেন।
আরও পড়ুন: কুষ্টিয়ায় যুবককে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ, স্ত্রী-শাশুড়ি কারাগারে
রুলে এ মামলার কার্যক্রম কেন বাতিল ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চাওয়া হয়েছে।
আদালতে সাংবাদিক কাজলের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী নাজমুস সাকিব। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সুজিত চ্যাটার্জি বাপ্পী।
পরে সুজিত চ্যাটার্জি বলেন, মামলা বাতিল চেয়ে আবেদন করেছিল। হাইকোর্ট ছয় মাসের জন্য মামলার কার্যক্রম স্থগিত করে রুল দিয়েছেন।
২০২০ সালের ১১ মার্চ রাজধানীর চকবাজারের বাসা থেকে বের হয়ে ‘নিখোঁজ’ হন সাংবাদিক কাজল। ঢাকা থেকে নিখোঁজের ৫৩ দিন পর ২ মে রাতে যশোরের বেনাপোলে সীমান্তের সাদিপুর মাঠ থেকে তাকে আটক করে বর্ডার গার্ড অব বাংলাদেশ (বিজিবি)।
পরে ২০২০ সালের ৩ মে সাংবাদিক শফিকুল ইসলাম কাজলের নামে অবৈধ অনুপ্রবেশ আইনে একটি মামলা করে বিজিবি।
এই মামলায় তাকে যশোরের আদালতে পাঠায় বেনাপোল বন্দর থানা পুলিশ। বেনাপোলের রঘুনাথপুর বিজিবি ক্যাম্প তার বিরুদ্ধে অবৈধভাবে বাংলাদেশে প্রবেশের আইনে মামলা দিয়ে বেনাপোল থানায় সোপর্দ করা হয়।
বেনাপোল বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মামুন খান সেসময় বলেছিলেন, সাংবাদিক কাজলকে রঘুনাথপুর বিজিবি ক্যাম্পের সদস্যরা অবৈধ অনুপ্রবেশের দায়ে আটক এবং অবৈধভাবে ভারত থেকে বাংলাদেশে প্রবেশের অভিযোগে মামলা দিয়ে থানায় হস্তান্তর করে।
আরও পড়ুন: দলীয় প্রার্থী বিজয়ী হওয়ার পর কারাগারের পরিবর্তে গৃহবন্দী হলেন সাবেক প্রেসিডেন্ট ইয়ামিন
কাশিমপুর কারাগারে হাজতির মৃত্যু
যুবদল নেতাকে হাতকড়া ও ডান্ডাবেড়ি পরিয়ে চিকিৎসা কেন অবৈধ নয়: হাইকোর্ট
কারাবন্দি যশোর জেলা যুবদলের সহসভাপতি অসুস্থ আমিনুর রহমানকে চিকিৎসা দেওয়া অবস্থায় হাতকড়া ও ডান্ডাবেড়ি পরানো কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না- তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।
একই সঙ্গে তাকে ১০ দিনের মধ্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) ভর্তি করে উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
সোমবার (৪ ডিসেম্বর) বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি মো. আতাবুল্লাহর হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ও সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল এ জে মোহাম্মদ আলী, ব্যারিস্টার কায়সার কামাল। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তুষার কান্তি রায়।
এর আগে রবিবার (৩ ডিসেম্বর) কারাবন্দি যশোর জেলা যুবদলের সহ সভাপতি অসুস্থ মো. আমিনুর রহমানকে হাতকড়া ও ডান্ডাবেড়ি পরা অবস্থায় চিকিৎসা দেওয়ার ঘটনার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রিটের আদেশের জন্য সোমবার দিন ধার্য করেন হাইকোর্ট।
আমিনুর রহমানের স্ত্রী রাহাত আরা খানের করা রিটের শুনানি করে আদেশের দিন ধার্য করেন।
রবিবার রাহাত আরা খানের পক্ষে রিটটি দায়ের করেন ব্যারিস্টার কায়সার কামাল। রিটে ওই যুবদল নেতার সুচিকিৎসা নিশ্চিত করার নির্দেশনা চাওয়া হয়।
আরও পড়ুন: প্রধান বিচারপতির বাসভবন ভাঙচুর মামলা: ফখরুলের জামিন আবেদনের শুনানি ৭ ডিসেম্বর
গত ২৯ নভেম্বর ‘ডান্ডাবেড়ি পরিয়ে হাসপাতালের মেঝেতে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে যুবদল নেতাকে’- শীর্ষক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।
প্রতিবেদনটি হাইকোর্টের নজরে এনে উপস্থাপন করেন বিএনপিপন্থী আইনজীবী। এসময় স্বপ্রণোদিত আদেশ চাইলে আদেশ দেননি হাইকোর্ট। আদালত বিষয়টি রিট আবেদন হিসেবে দায়ের করতে বলেন। তারই ধারাবাহিকতায় আজ রিটটি করা হয়েছে।
সম্প্রতি একটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, হাসপাতালের মেঝেতে যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন এক ব্যক্তি। গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় দুই পা ভাঁজ করে শুয়ে আছেন। ডান্ডাবেড়ি থাকায় দুই পা সোজা করতে পারছেন না। এক হাতে ঝুলছে হাতকড়া। অন্য হাতে ইনজেকশনের ক্যানোলা। দুই পায়ের মাঝখানে ঝুলছে ক্যাথেটার। রক্তমিশ্রিত প্রস্রাব সেখানে জমা হচ্ছে। ঢাকার কেরাণীগঞ্জ কারাগার থেকে নিয়ে এসে জাতীয় হৃদ্রোগ ইনস্টিটিউটে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে ওই ব্যক্তিকে।
তার একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে (ফেসবুক) ছড়িয়ে পড়ে, যা রীতিমতো ভাইরাল হয়েছে। ছবির ওই ব্যক্তির নাম আমিনুর রহমান মধু। তিনি যশোর জেলা যুবদলের সহসভাপতি। এ ছাড়া তিনি সদর উপজেলার আমদাবাদ ডিগ্রি কলেজের ব্যবস্থাপনা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক এবং বাংলাদেশ কলেজশিক্ষক সমিতির কেন্দ্রীয় কমিটির সাহিত্য ও প্রকাশনাবিষয়ক সম্পাদক।
আরও পড়ুন: আমানসহ ৪৫ জনের বিচার শুরু, রিজভীর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা
অসুস্থ আমিনুরের পরিপূর্ণ চিকিৎসায় বাধা দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ পরিবারের। আর কারা পুলিশের এমন অমানবিক কাণ্ডে মর্মাহত তার পরিবার ও স্বজনরা। এরূপ আচরণ সমীচীন নয় বলে অভিমত জানান আইনজীবীরা।
দলীয় ও পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, গত ২৯ অক্টোবর রাতে যশোর-নড়াইল মহাসড়কে দুটি বাস থেকে ককটেল, লাঠি ও পেট্রোল জব্দের ঘটনায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিতসহ ৮৭ জনকে আসামি করে মামলা করে পুলিশ। ওই মামলায় আসামি যুবদল নেতা আমিনুর রহমান মধু। এরপর হরতাল–অবরোধে নাশকতার আরও দুই মামলার আসামি হন তিনি। গ্রেপ্তার আতঙ্কে আত্মগোপনে যান। কিন্তু ২ নভেম্বর সদর উপজেলার আমদাবাদ গ্রাম থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
গত ১২ নভেম্বর যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারে থাকা অবস্থায় আমিনুর রহমান মধু হৃদরোগে আক্রান্ত হন। কারাগার থেকে তার দুই পায়ে ডান্ডাবেড়ি ও হাতকড়া লাগিয়ে প্রথমে যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। সেখান থেকে অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় ওই রাতেই তাকে ঢাকার কেরাণীগঞ্জ কারাগারে স্থানান্তর করা হয়।