হাইকোর্ট
সুপ্রিম কোর্টে ভাঙচুর: খোকন-কাজলসহ ১৪ জনের আগাম জামিন
সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও সম্পাদকের কক্ষে ভাঙচুর ও আওয়ামী লীগপন্থী আইনজীবীদের ওপর হামলার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় ১৪ আইনজীবীকে ছয় সপ্তাহের আগাম জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট। তবে ৪ আইনজীবীকে জামিন না দিয়ে ছয় সপ্তাহের মধ্যে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
যাদেরকে জামিন দেওয়া হয়েছে তারা হলেন- বিএনপির আইন বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সম্পাদক ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, সাবেক সম্পাদক ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল, জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম সুপ্রিম কোর্ট শাখার সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট গাজী কামরুল ইসলাম সজল, মো. সাগর হোসেন, মো. রেজাউল করিম রেজা, মাহবুবুর রহমান খান, মো. রবিউল আলম সৈকত, নজরুল ইসলাম ছোটন, রেদোয়ান আহমেদ রানজিব, মো. মাহমুদ হাসান, মো. কামাল হোসেন, মো. আনিসুর রহমান (রায়হান) ও খালেদ মাহমুদুর রহমান আদনান।
একইসঙ্গে ভাঙচুরের ঘটনায় সরাসরি যুক্ত থাকায় আইনজীবী নূরে আলম সিদ্দিকী সোহাগ, মোস্তাফিজুর রহমান আহাদ, আ. কাইয়ুম ও উজ্জল হোসেনকে ছয় সপ্তাহের মধ্যে অধস্তন আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
তারা সশরীরে হাজির হয়ে আগাম জামিন চেয়ে আবেদন জানালে সোমবার (৮ আগস্ট) বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি মো. আমিনুল ইসলামের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আদালতে জামিন আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী ও অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন।
এর আগে গত ৩ আগস্ট সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও সম্পাদকের কক্ষে ভাঙচুর ও আওয়ামী লীগপন্থী আইনজীবীদের ওপর হামলার অভিযোগে বিএনপির ১৮ আইনজীবীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়।
আইনজীবী সমিতির সহকারী সুপাররিনটেনডেন্ট মো. রফিকুল্লাহ বাদী হয়ে রাজধানীর শাহবাগ থানায় এ মামলা করেন। তবে সেদিন বিএনপি সমর্থক এক নারী আইনজীবীর ওপর হামলার ঘটনায় মামলা করতে গেলেও তা গ্রহণ করেনি শাহবাগ থানা পুলিশ।
আরও পড়ুন: সাজা বহালের রায় প্রকাশ, আমান দম্পতিকে ১৫ দিনের মধ্যে আত্মসমর্পণের নির্দেশ
জানা যায়, অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুদকের করা মামলায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও তার স্ত্রী ডা. জোবাইদা রহমানকে সাজা দেওয়ার প্রতিবাদে গত ৩ আগস্ট সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম।
সংবাদ সম্মেলন শেষে সমিতির সভাপতি ও সম্পাদকের কক্ষের সামনে দু’পক্ষের আইনজীবীরা স্লোগান দিতে থাকেন। একপর্যায়ে শুরু হয় ধাক্কাধাক্কি, হাতা-হাতি। এ পরিস্থিতি চলতে থাকে অন্তত ১০ মিনিট। এরই মধ্যে আইনজীবীরা সমিতির সভাপতির কক্ষের সামনে থাকা নেমপ্লেট খুলে ফেলেন।
পরে সমিতির সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুন নূর দুলাল বলেন, বিএনপির ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, কায়সার কামাল, কাজল ও সজলের নেতৃত্বে আমাদের আইনজীবীদের ওপর হামলা হয়েছে। সমিতির সভাপতি-সম্পাদকের কক্ষ ভাঙচুর করেছে তারা।এদিকে বিএনপির ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেন, আমরা শান্তিপূর্ণ সংবাদ সম্মেলন করে বের হওয়ার সময় আওয়ামীপন্থী আইনজীবীরা আমাদের এক নারী আইনজীবীর ওপর হামলা করেন। তাকে উদ্ধার করতে গেলে তারা আরও মারমুখী আচরণ করেন। সম্পাদকের কক্ষ ভাঙচুরের অভিযোগ অস্বীকার করে ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেন, তারা নিজেরা ভাঙচুর করে উল্টো আমাদের ওপর দোষ চাপাচ্ছে।
আরও পড়ুন: ‘এস আলমের আলাদিনের চেরাগ’ নিয়ে ডেইলি স্টারের প্রতিবেদন: অভিযোগ তদন্তের নির্দেশ হাইকোর্টের
তারেক-জুবাইদার সাজার প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন, সুপ্রিমকোর্টে আইনজীবীদের দু’পক্ষের সংঘর্ষ
‘এস আলমের আলাদিনের চেরাগ’ নিয়ে ডেইলি স্টারের প্রতিবেদন: অভিযোগ তদন্তের নির্দেশ হাইকোর্টের
অনুমতি ছাড়া বিদেশে বিনিয়োগ বা অর্থ স্থানান্তর নিয়ে এস আলম গ্রুপের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অনুসন্ধান করে দুই মাসের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন দিতে দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
এছাড়া দেশের বাইরে অর্থ পাঠানোর মাধ্যমে মানি লন্ডারিং হয়েছে কি না, বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন নিয়ে অর্থ বাইরে পাঠানো হয়েছিল কি না, তা জানিয়ে হাইকোর্টে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক ও বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটকে এই প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
‘এস আলমের আলাদিনের চেরাগ’ শিরোনামে গত ৪ আগস্ট ইংরেজি দৈনিক ডেইলি স্টারে প্রকাশিত অনুসন্ধানী প্রতিবেদন রবিবার (৬ আগস্ট) হাইকোর্টের নজরে আনেন ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন। এরপর বিচারপতি নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি বিচারপতি খিজির হায়াতের হাইকোর্ট বেঞ্চ স্বপ্রণোদিত হয়ে রুলসহ আদেশ দেন।
পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন সূত্রে মানি লন্ডারিং রোধে বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা বা ব্যর্থতা কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত হবে না, তা রুলে জানতে চাওয়া হয়েছে।
প্রকাশিত প্রতিবেদনের অভিযোগ অনুসন্ধানে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, এই ঘটনায় জড়িত ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা–ও রুলে জানতে চাওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: তারেক-জুবাইদার সাজার প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন, সুপ্রিমকোর্টে আইনজীবীদের দু’পক্ষের সংঘর্ষ
আদালতে ডেইলি স্টারের প্রতিবেদনটি তুলে ধরে শুনানিতে অংশ নেন আইনজীবী সায়েদুল হক। দুদকের পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী খুরশীদ আলম খান ও রাষ্ট্রপক্ষে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সাইফুদ্দিন খালেদ শুনানিতে অংশ নেন।
এর আগে গত ৪ আগস্ট দ্য ডেইলি স্টার ‘এস আলমের আলাদিনের প্রদীপ’- শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এস আলম গ্রুপের মালিক মোহাম্মদ সাইফুল আলম সিঙ্গাপুরে কমপক্ষে ১ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের ব্যবসায়িক সাম্রাজ্য গড়ে তুলেছেন। যদিও বিদেশে বিনিয়োগ বা অর্থ স্থানান্তরে বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছ থেকে অনুমতি নেওয়ার কোনো রেকর্ড নেই।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কেন্দ্রীয় ব্যাংক এ পর্যন্ত ১৭টি প্রতিষ্ঠানকে দেশের বাইরে বিনিয়োগের অনুমতি দিয়েছে। তবে চট্টগ্রামভিত্তিক ব্যবসায়িক জায়ান্ট এস আলম গ্রুপ সেই তালিকায় নেই।
এতে আরও বলা হয়, তবে আলম সিঙ্গাপুরে গত এক দশকে কমপক্ষে দুটি হোটেল, দুটি বাড়ি, একটি বাণিজ্যিক স্পেস এবং অন্যান্য সম্পত্তি কিনেছেন। সেখানেও বিভিন্ন উপায়ে কাগজপত্র থেকে তার নাম মুছে ফেলা হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নথি অনুযায়ী, ‘ ২০২৩ সালের ১০ জানুয়ারি পর্যন্ত দেশ থেকে ৪০ দশমিক ১৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বিদেশে বিনিয়োগের জন্য নেওয়া হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তবে, এই পরিমাণ অর্থ ২০০৯ সালের পর সিঙ্গাপুরে এস আলমের কেবল দুটি হোটেল ও একটি বাণিজ্যিক স্পেস কেনা ৪১১ দশমিক ৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের দশ ভাগের এক ভাগ মাত্র।
ডেইলি স্টারের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘বাংলাদেশ ব্যাংকের নথিতে আরও দেখা যায় এখন পর্যন্ত কয়েকটি কোম্পানি বৈধভাবে সিঙ্গাপুরে মোট ১ লাখ ৭ হাজার মার্কিন ডলার পাঠিয়েছে এবং সেগুলোর একটিও আলমের মালিকানাধীন নয়।’
আরও পড়ুন: ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন প্রশ্নে রুল ২ সপ্তাহে নিষ্পত্তির নির্দেশ
দুর্নীতি মামলায় তারেকের ৯ বছর, জোবাইদার ৩ বছরের কারাদণ্ড
৩০ দিনের মধ্যে রেলের জায়গা দখলকারীদের তালিকা দাখিলের নির্দেশ
দেশের বিভিন্ন জেলায় যারা রেলওয়ের জায়গা অবৈধভাবে দখল করেছে, তাদের তালিকা তৈরি করে তা ৩০ দিনের মধ্যে দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
এক সম্পূরক আবেদনের শুনানি নিয়ে মঙ্গলবার (২৫ জুলাই) বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ এ আদেশ দেন।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ। তাকে সহায়তা করেন অ্যাডভোকেট রিপন বাড়ৈ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. সাইফুদ্দিন খালেদ।
মানবাধিকার ও পরিবেশবাদী সংগঠনের পক্ষে সোমবার এ আবেদন করা হয়।
আইনজীবী মনজিল মোরসেদ জানান, রুলে সারাদেশে রেলওয়ের সম্পত্তি অবৈধ দখলমুক্ত করতে বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না এবং বাংলাদেশ রেলওয়ের বিভিন্ন জেলায় থাকা সম্পত্তি অবৈধ দখলকারীদের উচ্ছেদ করার নির্দেশ কেন দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট।
আরও পড়ুন: আপনি ভুল করেননি, ক্রাইম করেছেন: জেলা জজকে হাইকোর্ট
দুই সপ্তাহের মধ্যে রেলওয়ে সচিব ও মহাপরিচালক, পরিচালক, সহকারী ভূ-সম্পত্তি কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্টদের রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
তিনি জানান, বিভিন্ন জেলায় রেলওয়ের কী পরিমাণ জমি অবৈধ দখলে আছে, তা রেলওয়ের সচিব ও মহাপরিচালককে আগামী ৩০ দিনের মধ্যে জানাতে বলেছেন আদালত, পাশাপাশি দখলকারীদের তালিকা তৈরি করে আদালতে দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন।
শুনানিতে আইনজীবী মনজিল মোরসেদ বলেন, ২০১৬ সালে নারায়ণগঞ্জে রেলওয়ের জায়গা অবৈধ দখলকারীদের উচ্ছেদের নির্দেশনা চেয়ে একটি রিট পিটিশন দায়ের করার পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সিরাজগঞ্জ, বগুড়া, পাবনাসহ বিভিন্ন জেলায় শত শত একর জমি অবৈধভাবে দখল করা আছে মর্মে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।
তিনি আদালতে বলেন, রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের কতিপয় অসাধু কর্মচারীর যোগসাজশে হাজার হাজার একর সম্পত্তি বেদখল হয়ে আছে, যা মূলত জনগণের সম্পত্তি এবং এগুলো উদ্ধারের জন্য নির্দেশনা প্রয়োজন। আদালত হস্তক্ষেপ না করলে এসব জনগণের সম্পত্তি উদ্ধার করা সম্ভব হবে না।
আরও পড়ুন: সেন্ট্রাল হাসপাতালের ডা. মিলিকে আত্মসমর্পণে হাইকোর্টের নির্দেশ
ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে অভিযোগ বাতিল চেয়ে হাইকোর্টে রিট
ড. ইউনূসসহ চারজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের আদেশ কেন বাতিল নয়: হাইকোর্ট
নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ও গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ চারজনের বিরুদ্ধে শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে করা মামলায় অভিযোগ গঠনের আদেশ কেন বাতিল করা হবে না- তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।
মামলা বাতিল চেয়ে করা এক আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারপতি মো. রুহুল কুদ্দুস ও বিচারপতি আশীষ রঞ্জন দাসের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ রবিবার (২৩ জুলাই) এই রুল জারি করেন। দুই সপ্তাহের মধ্যে রাষ্ট্রপক্ষসহ সংশ্লিষ্ট বিবাদীদের এই রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে ২০২১ সালের ৯ সেপ্টেম্বর ড. ইউনূসসহ চারজনের বিরুদ্ধে ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালতে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান অধিদপ্তরের শ্রম পরিদর্শক আরিফুজ্জামান বাদী হয়ে এ মামলা করেন।
মামলায় শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশনে নির্দিষ্ট লভ্যাংশ জমা না দেওয়া, শ্রমিকদের চাকরি স্থায়ী না করা, গণছুটি নগদায়ন না করায় শ্রম আইনের ৪-এর ৭, ৮, ১১৭ ও ২৩৪ ধারায় অভিযোগ আনা হয়।
গত ৬ জুন এই মামলায় ড. ইউনূসসহ চারজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালতের বিচারক।
আরও পড়ুন: আপনি ভুল করেননি, ক্রাইম করেছেন: জেলা জজকে হাইকোর্ট
অন্য যে তিনজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয় তারা হলেন- গ্রামীণ টেলিকমের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আশরাফুল হাসান, পরিচালক নুর জাহান বেগম ও মো. শাহজাহান।
অভিযোগ গঠনের আদেশের বৈধতা নিয়ে ও মামলার পরবর্তী কার্যক্রম স্থগিত চেয়ে গত মাসে হাইকোর্টে আবেদন করেন ড. ইউনূসসহ চারজন। এই আবেদনের ওপর ১৭ জুলাই হাইকোর্টে শুনানি শুরু হয়।
রাষ্ট্রপক্ষ বক্তব্য উপস্থাপনের জন্য সময়ের আরজি জানালে আদালত রবিবার শুনানির দিন ঠিক করেন। শুনানি নিয়ে আজ রুল জারি করেন হাইকোর্ট।
আজ আদালতে ড. ইউনূসসহ আবেদনকারীদের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী আবদুল্লাহ-আল-মামুন। সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী খাজা তানভীর আহমেদ।
রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন।
কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান অধিদপ্তরের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী খুরশীদ আলম খান।
খুরশীদ আলম খান বলেন, হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করা হবে।
আরও পড়ুন: রবীন্দ্র কাছারিবাড়ির সৌন্দর্য রক্ষায় হাইকোর্টের ৩ নির্দেশনা
অভিযোগ গঠন বাতিল চেয়ে হাইকোর্টে ড. ইউনূসের আবেদন
আপনি ভুল করেননি, ক্রাইম করেছেন: জেলা জজকে হাইকোর্ট
আদালতের আদেশ টেম্পারিং করে কক্সবাজার জেলা জজ মোহাম্মদ ইসমাঈল ভুল নয়, অপরাধ করেছেন বলে জানিয়েছেন উচ্চ আদালত।
বৃহস্পতিবার (২০ জুলাই)বিচারপতি মো. হাবিবুল গনি ও বিচারপতি আহমেদ সোহেলের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ মন্তব্য করেন।
আদালত বলেন, ‘আপনি আদালতের আদেশ টেম্পারিং করেছেন। এতে আপনার বুক কাঁপল না? আপনি ভুল করেননি, ক্রাইম (অপরাধ) করেছেন।’
শুনানিতে জেলা জজের আইনজীবী সাঈদ আহমেদ রাজা আদালতকে বলেন, ‘আমরা কনটেস্ট করতে চাই না। আমরা আদালতের কাছে নিঃশর্ত ক্ষমা চাইছি। আমরা খুবই অনুতপ্ত।’
এ সময় হাইকোর্ট জেলা জজকে ডায়াসের সামনে ডেকে আদেশ টেম্পারিংয়ের বিষয়ে জানতে চান। তখন জেলা জজ বিভিন্নভাবে ব্যাখ্যা দিতে থাকেন। এক পর্যায়ে বলেন, ভুলে এটা হয়েছে। তখন আদালত বলেন, আপনি ভুল করেননি। আপনি জেনে বুঝে ক্রাইম করেছেন।
আরও পড়ুন: রবীন্দ্র কাছারিবাড়ির সৌন্দর্য রক্ষায় হাইকোর্টের ৩ নির্দেশনা
এ সময় তার আইনজীবীরা আবারও ক্ষমা চাইলে হাইকোর্ট বলেন, আপনারা ক্ষমা চাইছেন। অনুতপ্ত হচ্ছেন। কিন্তু জেলা জজের মধ্যে তো কোনো অনুশোচনা নেই। তিনি অনুতপ্তও নন। মন থেকে অনুশোচনা আসতে হয়।
পরে আদালত এ বিষয়ে আদেশের জন্য আগামী ২৭ জুলাই দিন নির্ধারণের আদেশ দেন।
এর আগে গত ২১ জুন চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে জামিন নামঞ্জুর হওয়া আসামিদের আইন ভঙ্গ করে আদেশে মিথ্যা তথ্য লিখে একই দিনে জামিন দেওয়ার ঘটনার ব্যাখ্যা দিতে কক্সবাজারের জেলা ও দায়রা জজকে তলব করেন হাইকোর্ট।
উল্লেখ্য, ১৭ জুলাই সশরীরে হাইকোর্টে হাজির হয়ে ব্যাখ্যা দেওয়ার জন্য বলা হলে বুধবার জেলা জজ হাজির হন।
এ সময় প্রথম দিনের শুনানিতেও হাইকোর্ট ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, সম্মানজনক বিদায় চাইলে এমন কাজ করতে পারতেন না। পরে আদালত আজ বৃহস্পতিবার আদেশের জন্য দিন ধার্য করেন।
আইনজীবী সূত্রে জানা যায়, জমির দখল নিয়ে গত ২৮ ফেব্রুয়ারি ভয়ভীতি প্রদর্শন ও আইনশৃঙ্খলা বিঘ্ন ঘটানোর অভিযোগে মিঠাছড়ি ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ইউনুছ ভুট্টোসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন খোদেস্তা বেগম নামে এক নারী। সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত–১ ও আইনশৃঙ্খলা বিঘ্নকারী দ্রুত বিচার আদালতে নালিশি মামলা করেন তিনি। এই মামলায় আসামিরা হাইকোর্টে আগাম জামিন চেয়ে আবেদন করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ১১ এপ্রিল হাইকোর্ট তাদের ছয় সপ্তাহের মধ্যে কক্সবাজারের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আত্মসমর্পণ করতে নির্দেশ দেন।
সংশ্লিষ্ট আদালতে গত ২১ মে আসামিরা আত্মসমর্পণ করে জামিন চান। সেদিন চিফ চুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ৯ আসামির জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। এর বিরুদ্ধে একই দিন আসামিরা কক্সবাজারের জেলা ও দায়রা জজ আদালতে জামিন চেয়ে আবেদন করেন।
আদালত ৯ আসামির জামিন মঞ্জুর করেন। জেলা ও দায়রা জজ আদালতের এ আদেশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আবেদন (ফৌজদারি রিভিশন) করেন খোদেস্তা বেগম।
আইনজীবী এ বি এম আলতাফ হোসেন বলেন, ২১ মে দুপুর ১২টার দিকে ৯ আসামি চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। আদালত তাদের জামিন নামঞ্জুর করেন। এর আগেই চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত আদেশের কপি পাননি উল্লেখ করে সকাল ১০টার দিকে আদেশের বিরুদ্ধে আসামিরা জামিনের জন্য জেলা ও দায়রা জজ আদালতে হলফনামাসহ আবেদন করেন।
এক্ষেত্রে ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের জামিন নামঞ্জুরের আদেশসহ অন্য কাগজপত্রের প্রত্যায়িত অনুলিপি বা প্রত্যায়িত অনুলিপির ফটোকপি দাখিল করা হয়নি। আসামির কারাগারের মেয়াদসহ সার্বিক বিবেচনায় তাদের জামিন মঞ্জুর করা হয়— আদেশে উল্লেখ করেছেন জেলা জজ।
অথচ ৯ আসামি এক মুহূর্তও কারাগারে ছিলেন না। শুনানিতে বিষয়গুলো তুলে ধরা হলে জেলা ও দায়রা জজ আসামিদের কীভাবে জামিন দিলেন—এ বিষয়ে ব্যাখ্যা জানাতে আদালতে হাজির হতে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। মামলার যাবতীয় নথি নিয়ে আসতে বলেন আদালত। মামলার কোনো সার্টিফাইড কপি ছাড়াই একই দিনে জেলা ও দায়রা জজ কোন আইনে, কীভাবে জামিন দিয়েছেন, সেই বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে নির্দেশ দেন।
আরও পড়ুন: সেন্ট্রাল হাসপাতালের ডা. মিলিকে আত্মসমর্পণে হাইকোর্টের নির্দেশ
রবীন্দ্র কাছারিবাড়ির সৌন্দর্য রক্ষায় হাইকোর্টের ৩ নির্দেশনা
সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরের রবীন্দ্র কাছারিবাড়ির সৌন্দর্য বিকৃত করার অভিযোগ আইন অনুসারে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়ে রায় প্রকাশ করেছেন হাইকোর্ট।
প্রকাশিত রায়ে আদালত ৩টি নির্দেশনা দিয়েছেন।
আরও পড়ুন: শীর্ষ মাদক চোরাকারবারিদের তালিকা দাখিলের নির্দেশ হাইকোর্টের
নির্দেশনাগুলো হলো-
১. ডিজি প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরকে (বিবাদী নম্বর -২) শাহজাদপুর রবীন্দ্র কাছারিবাড়ি, সিরাজগঞ্জের ঐতিহাসিক গুরুত্ব ও সৌন্দর্য বিকৃত করে এমন কোনো ভবন/স্থাপনা আছে কিনা তা তদন্ত করার জন্য নির্দেশ প্রদান করা হয়।
২. তদন্তে শাহজাদপুরের রবীন্দ্র কাছারিবাড়ির ঐতিহাসিক গুরুত্ব ও সৌন্দর্য বিকৃত করে এমন কোনো ভবন/স্থাপনা পাওয়া যায় তবে সেসব ভবন/স্থাপনার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে।
৩. শাহজাদপুর রবীন্দ্র কাছারিবাড়ির ঐতিহাসিক গুরুত্ব ও পবিত্রতা রক্ষার্থে ডিজি প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর নিকটস্থ জমি ও ভবনের ব্যাপারে যথাযথ ও উপযুক্ত ব্যবস্থা স্বাধীনভাবে গ্রহণ করতে পারবে।
বুধবার (১৯ জুলাই) বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি মো. খায়রুল আলমের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় প্রকাশ করেছেন।
এর আগে, গত বছরের ১৬ আগস্ট সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরের রবীন্দ্র কাছারিবাড়ি এলাকার সৌন্দর্য বিকৃত করার অভিযোগ আইন অনুসারে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন হাইকোর্ট।
এ বিষয়ে জারি করা রুল নিষ্পত্তি করে বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি মো. খায়রুল আলমের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন।
আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে ছিলেন সিনিয়র অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি জেনারেল অমিত দাশ গুপ্ত।
সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে রবীন্দ্র কাছারিবাড়ির প্রত্নতত্ত্বের পার্শ্ববর্তী এলাকায় পুরা কীর্তি সংরক্ষণ বিধি অমান্য করে ভবন নির্মাণ করার সংবাদ প্রকাশিত হওয়ার পর ২০১৪ সালে হাইকোর্টের রিট করে হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ।
ওই রিটের শুনানি নিয়ে একই বছরের ৫ আগস্ট হাইকোর্ট রুলজারি করে স্থিতাবস্থার আদেশ দেন। ওই রুলের শুনানি শেষে এ রায় দেন হাইকোর্ট।
মনজিল মোরসেদ আরও জানান, আদালত রায়ে উল্লেখ করেছেন- রবীন্দ্র কাছারিবাড়ির ঐতিহাসিক গুরুত্ব আছে এবং অভিযোগ আছে এর সৌন্দর্য বিকৃত করা হচ্ছে। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য এ ধরনের প্রত্নতাত্ত্বিক স্থাপনা সংরক্ষণ করা প্রয়োজন।
আদালত নির্দেশনায় বলেন- ১৯৬৮ সালের পুরাকীর্তি আইন এবং সংবিধানের ২৪ অনুচ্ছেদ অনুসারে রবীন্দ্র কাছারিবাড়ির সৌন্দর্য বিকৃত করার জন্য দায়ী ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা। প্রয়োজনে কোনো ব্যক্তি সম্পত্তি অধিগ্রহণ করতে হলে বিধি অনুসারে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
আরও পড়ুন: সেন্ট্রাল হাসপাতালের ডা. মিলিকে আত্মসমর্পণে হাইকোর্টের নির্দেশ
অভিযোগ গঠন বাতিল চেয়ে হাইকোর্টে ড. ইউনূসের আবেদন
গ্রামীণ কল্যাণ নিয়ে ড. ইউনূসের রিট নিষ্পত্তির নির্দেশ আপিল বিভাগের
নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের মালিকানাধীন গ্রামীণ কল্যাণের চাকরিচ্যুত ১০৬ জন কর্মচারীকে লভ্যাংশ দিতে শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনালের আদেশের বিরুদ্ধে করা রিট দুই মাসের মধ্যে নিষ্পত্তি করতে হাইকোর্টকে নির্দেশ দিয়েছেন আপিল বিভাগ।
সোমবার প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন তিন বিচারপতির বেঞ্চ এই আদেশ দিয়েছেন।
আরও পড়ুন: ড. ইউনূসকে দানকর দিতে হবে: হাইকোর্ট
একই সঙ্গে গ্রামীণ কল্যাণ থেকে চাকরিচ্যুত ১০৬ শ্রমিককে শ্রম আইন অনুযায়ী কোম্পানির লভ্যাংশ দিতে আপিল ট্রাইব্যুনালের রায়ের ওপর স্থিতিবস্থা বজায় রাখতে হাইকোর্টের আদেশের কার্যকারিতা স্থগিত রাখা হয়েছে।
আদালতে শ্রমিকদের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট খুরশীদ আলম খান। সঙ্গে ছিলেন অ্যাডভোকেট গোলাম রব্বানী শরীফ।
ড. ইউনূসের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার আবদুল্লাহ আল মামুন। পরে তিনি জানান, রিট মামলাটি দুই মাসের মধ্যে হাইকোর্টকে নিষ্পত্তির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি চাকরিচ্যুত ১০৬ শ্রমিককে শ্রম আইন অনুযায়ী কোম্পানির লভ্যাংশ দিতে আপিল ট্রাইব্যুনালের রায়ের ওপর স্থিতিবস্থা বজায় রাখতে হাইকোর্টের আদেশের কার্যকারিতা আদালত স্থগিত রেখেছেন।
জানা যায়, ১০৬ কর্মকর্তা ও কর্মচারী ২০০৬ সাল থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত গ্রামীণ কল্যাণে কর্মরত ছিলেন। ২০০৬-২০১৩ অর্থ বছরে কোম্পানির লভ্যাংশ থেকে তাদের বঞ্চিত করা হয়।
শ্রম আইনে বলা আছে, শ্রম আইন কার্যকর হওয়ার দিন থেকে কোম্পানির লভ্যাংশের ৫ শতাংশ শ্রমিকদের কল্যাণ ও অংশগ্রহণ তহবিল দিতে হবে। এই লভ্যাংশ না পাওয়ার কারণে প্রথমে তারা গ্রামীণ কল্যাণকে লিগ্যাল নোটিশ পাঠান।
কিন্তু লিগ্যাল নোটিশ দেওয়ার পরও ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় তারা শ্রম আদালতে মামলা করেন। গত ৩ এপ্রিল চাকরিচ্যুত ১০৬ শ্রমিককে শ্রম আইন অনুযায়ী কোম্পানির লভ্যাংশ পরিশোধ করতে রায় দেন শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনাল। এই রায় চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করেন ড. ইউনূস।
এ রিটের প্রাথমিক শুনানি করে গত ৩০ মে গ্রামীণ কল্যাণ থেকে চাকরিচ্যুত ১০৬ শ্রমিককে শ্রম আইন অনুযায়ী কোম্পানির লভ্যাংশ দিতে শ্রম অ্যাপিলেট ট্রাইব্যুনালের রায় কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট।
একইসঙ্গে শ্রম অ্যাপিলেট ট্রাইব্যুনালের ওই রায়ের ওপর স্থিতাবস্থা জারি করেন। এই রায়ের বিরুদ্ধে শ্রমিকদের পক্ষ থেকে আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতির আদালতে আবেদন করা হয়।
গত ২২ জুন শ্রমিকদের আবেদনের শুনানি করে শ্রমিকদের লভ্যাংশ দিতে আপিল ট্রাইব্যুনালের রায়ের ওপর স্থিতিবস্থা বজায় রাখতে হাইকোর্টের আদেশের কার্যকারিতা স্থগিত করা হয়।
আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি আবু জাফর সিদ্দিকীর আদালত এই স্থগিতাদেশ দিয়ে শ্রমিকদের আবেদন আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য পাঠান। সে অনুযায়ী আজ প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন বেঞ্চে এ বিষয়ে শুনানি হয়।
আরও পড়ুন: অভিযোগ গঠন বাতিল চেয়ে হাইকোর্টে ড. ইউনূসের আবেদন
ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে অভিযোগ বাতিল চেয়ে হাইকোর্টে রিট
সেন্ট্রাল হাসপাতালের ডা. মিলিকে আত্মসমর্পণে হাইকোর্টের নির্দেশ
রাজধানীর গ্রিন রোডে অবস্থিত সেন্ট্রাল হাসপাতালে ভুল চিকিৎসায় নবজাতক ও মায়ের মৃত্যুর ঘটনায় দায়ের করা মামলায় চিকিৎসক বেগম মাকসুদা ফরিদা আক্তার মিলিকে চার সপ্তাহের মধ্যে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
বুধবার বিচারপতি মো. জাকির হোসেন ও বিচারপতি বিশ্বজিত দেবনাথের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সুজিত চ্যাটার্জি বাপ্পী বিষয়টি সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেছেন।
আরও পড়ুন: সেন্ট্রাল হাসপাতালে চিকিৎসকের ‘অবহেলায়’ মারা যাওয়া নবজাতকের মায়ের মৃত্যু
এর আগে মঙ্গলবার (৪ জুলাই) সেন্ট্রাল হাসপাতালে ভুল চিকিৎসায় নবজাতক ও মায়ের মৃত্যুর ঘটনায় দায়ের করা মামলায় হাইকোর্টে আগাম জামিন চেয়ে আবেদন করেন ডা. বেগম মাকসুদা ফরিদা আক্তার মিলি।
জানা যায়, সেন্ট্রাল হাসপাতালের অধ্যাপক ডা. সংযুক্তা সাহার (গাইনি) অধীনে গত ৯ জুন ভর্তি হয়েছিলেন মাহাবুবা রহমান আঁখি। কিন্তু সেদিন ডা. সংযুক্তা হাসপাতালে ছিলেন না। পরে তার দুই সহযোগী চিকিৎসক আঁখির সন্তান প্রসব করানোর চেষ্টা করেন। জটিলতা দেখা দেওয়ায় নবজাতককে এনআইসিইউতে রাখা হয়। একইসঙ্গে আঁখির অবস্থার অবনতি হলে তাকে ল্যাবএইড হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।
পরে গত ১০ জুন বিকালে আঁখির নবজাতক সন্তান মারা যায়। এ ঘটনায় আঁখির স্বামী ইয়াকুব আলী ধানমন্ডি থানায় অবহেলা জনিত মৃত্যুর একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় ডা. শাহজাদী মুস্তার্শিদা সুলতানা, ডা. মুনা সাহা, ডা. মিলি, সহকারী জমির, এহসান ও হাসপাতালের ম্যানেজার পারভেজকে আসামি করা হয়।
এছাড়াও অজ্ঞাতপরিচয় আরও কয়েকজনকেও আসামি করা হয়েছে। মামলা দায়েরের পর ১৫ জুন রাতে ডা. শাহজাদী ও ডা. মুনা সাহাকে হাসপাতাল থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
১৮ জুন দুপুর ১টা ৪৩ মিনিটে ল্যাবএইড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান মাহবুবা রহমান আঁখিও।
ওই মামলায় জামিন চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করেন ডা. বেগম মাকসুদা ফরিদা আক্তার মিলি।
আরও পড়ুন: সেন্ট্রাল হাসপাতালে নবজাতকের মৃত্যু: অপারেশন থিয়েটার বন্ধের নির্দেশ স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের
আঁখি ও তার নবজাতকের মৃত্যুর জন্য সেন্ট্রাল হাসপাতাল দায়ী: ডা. সংযুক্তা সাহা
ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে অভিযোগ বাতিল চেয়ে হাইকোর্টে রিট
শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগের মামলায় শান্তিতে নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন বাতিল চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করা হয়েছে।
ড. ইউনূসের আইনজীবী ব্যারিস্টার আবদুল্লাহ আল মামুন রিটটি দায়ের করেন।
বিচারপতি হাবিবুল গনি ও বিচারপতি আহমেদ সোহেলের হাইকোর্ট বেঞ্চে বুধবারের কার্যতালিকায় বিষয়টি শুনানির জন্য ৫৬ নম্বর ক্রমিকে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
গত ৬ জুন ঢাকার শ্রম আদালত-৩ এর বিচারক শেখ মেরিনা সুলতানা ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ চারজনের বিরুদ্ধে এ মামলায় অভিযোগ গঠন করেন।
আরও পড়ুন: ড. ইউনূসকে দানকর দিতে হবে: হাইকোর্ট
অন্যরা হলেন- গ্রামীণ টেলিকমের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আশরাফুল হাসান এবং পরিচালক নূর জাহান বেগম ও মোহাম্মদ শাহজাহান।
এই মামলার নথি থেকে জানা যায়, ২০২১ সালের ১৬ আগস্ট কলকারাখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের কর্মকর্তা রাজধানীর মিরপুরে গ্রামীণ টেলিকমের কার্যালয় পরিদর্শন করে শ্রম আইনের লঙ্ঘন দেখতে পান। একই বছরের ১৯ আগস্ট অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে গ্রামীণ টেলিকমকে চিঠি দেওয়া হয়।
ওই চিঠিতে উল্লেখ করা হয় যে ৬৭ জন কর্মচারীর চাকরি স্থায়ী করার কথা থাকলেও গ্রামীণ টেলিকম কর্তৃপক্ষ তা করেনি। এছাড়া কর্মচারী অংশীদারিত্ব ও কল্যাণ তহবিল গঠন এবং কোম্পানির পাঁচ শতাংশ লভ্যাংশ কর্মচারীদের পরিশোধ করা হয়নি।
পরবর্তীতে ২০২১ সালের ৯ সেপ্টেম্বর কলকারাখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের শ্রম পরিদর্শক (সাধারণ) এসএম আরিফুজ্জামান বিচারিক আদালতে মামলাটি দায়ের করেন।
আরও পড়ুন: ড. ইউনূসসহ ১২ জনের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
মুনাফা-লোভভিত্তিক আমাদের এই সভ্যতা নিশ্চিত আত্মহননের পথে এগিয়ে চলেছে: ড. ইউনূস
জাহাঙ্গীরকে মেয়র পদ থেকে বরখাস্ত আইনানুগ ছিল না: হাইকোর্ট
গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র পদ থেকে জাহাঙ্গীর আলমকে সাময়িক বরখাস্তের প্রক্রিয়া আইনানুগ ছিল না বলে পর্যবেক্ষণ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
এ বিষয়ে জারি করা রুল নিষ্পত্তি করে রবিবার (১৮ জুন) বিচারপতি জাফর আহমেদ ও বিচারপতি মো. বশির উল্লাহর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন।
জাহাঙ্গীরের আইনজীবী এতথ্য নিশ্চিত করেন। আদালতে জাহাঙ্গীরের পক্ষে সময় আবেদন করেন ব্যারিস্টার বেলায়েত হোসেন।
অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল নওরোজ মো. রাসেল চৌধুরী ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল এম এম জি সারোয়ার পায়েল।
আরও পড়ুন: থ্যালাসেমিয়া রোগের বিস্তার বন্ধে হাইকোর্টে রিট
গত বছরের ১৪ আগস্ট গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র পদ থেকে সাময়িক বরখাস্ত হওয়া জাহাঙ্গীর আলম পদ ফিরে পেতে হাইকোর্টে রিট করেছিলেন। রিটে তাকে সাময়িক বরখাস্তের আইনগত বৈধতা চ্যালেঞ্জ করা হয়। ব্যারিস্টার মশিউর রহমান সবুজ জাহাঙ্গীর আলমের পক্ষে এ রিট করেন।
পরে একই বছরের ২৩ আগস্ট গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র পদ থেকে জাহাঙ্গীর আলমকে সাময়িক বরখাস্তের সিদ্ধান্ত কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট।
এরপর গত ১৫ মার্চ এ রুলের ওপর শুনানি শুরু হয়। আজ রবিবার হাইকোর্ট রুল নিষ্পত্তি করে রায় দেন।
মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্যের জন্য মেয়র জাহাঙ্গীরকে ২০২১ সালের ১৯ নভেম্বর দল থেকে বহিষ্কার করে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ।
মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্যের অভিযোগে তার বিরুদ্ধে মামলা হয়।
এরপর গত বছর জাহাঙ্গীর আলমকে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র পদ থেকেও সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। পরে তিনি রিট করেন।
রিট বিচারাধীন অবস্থায় গত বছর ১৭ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের সিদ্ধান্ত অনুসারে ভবিষ্যতে সংগঠনের স্বার্থপরিপন্থী ও শৃঙ্খলা ভঙ্গ না করার শর্তে জাহাঙ্গীর আলমের ক্ষমা ঘোষণা করে দলটি।
গত ২১ জানুয়ারি সে ক্ষমা ঘোষণার চিঠি পান জাহাঙ্গীর আলম।
এরপর গত ৩ এপ্রিল নির্বাচন কমিশন (ইসি) মো. জাহাঙ্গীর আলম গাজীপুর সিটির ভোটের তফসিল ঘোষণা করেন।
ভোটগ্রহণ ২৫ মে।
তবে ঋণ খেলাপীর অভিযোগে জাহাঙ্গীরের মনোনয়নপত্র বাতিল করে রিটার্নিং কর্মকর্তা। তবে তার মায়ের মনোনয়ন বৈধ ঘোষণা করা হয় এবং নির্বাচনেতার মা মেয়র পদে বিজয়ী হন।
আরও পড়ুন: শীর্ষ মাদক চোরাকারবারিদের তালিকা দাখিলের নির্দেশ হাইকোর্টের
দুর্নীতিবাজদের সহ্য করা হবে না: হাইকোর্ট