আইন
আইসিটি আইনে মামলায় কণ্ঠশিল্পী আসিফের বিচার শুরু
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) আইনের মামলায় জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী আসিফ আকবরের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেছেন আদালত। এর মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে মামলাটির বিচার শুরু হলো।
বৃহস্পতিবার ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালে বিচারক মোহাম্মদ আসসামছ জগলুল হোসেন অব্যাহতির আবেদন নামঞ্জুর করে আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন। একইসঙ্গে মামলার সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য ২৩ জুন দিন ধার্য করেন আদালত।
সংশ্লিষ্ট ট্রাইব্যুনালের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী নজরুল ইসলাম শামীম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
২০১৮ সালের ৪ জুন গীতিকার ও কণ্ঠশিল্পী শফিক তুহিন তেজগাঁও থানায় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনে আসিফের বিরুদ্ধে মামলাটি দায়ের করেন। তদন্ত শেষে ২০১৯ সালের ২০ নভেম্বর আসিফের বিরুদ্ধে তথ্যপ্রযুক্তি ও দন্ডবিধিতে পৃথক দুটি অভিযোগপত্র জমা দেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা।
আরও পড়ুন: আবারও শুরু হলো শুদ্ধসঙ্গীত উৎসব
মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, ২০১৮ সালের ১ জুন রাত ৯টার দিকে বেসরকারি একটি টেলিভিশন চ্যানেলের ‘সার্চ লাইট’ নামের অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বাদী জানতে পারেন যে, আসিফ আকবর কারও অনুমতি ছাড়াই গীতিকার, সুরকার ও বিভিন্ন শিল্পীর ৬১৭টি গান বিক্রি করেছেন। পরে বাদী বিভিন্নভাবে আরও জানতে পারেন, আসিফ তার প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান আর্ব এন্টারটেইনমেন্টের চেয়ারম্যান হিসেবে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে গানগুলো ডিজিটাল রূপান্তর করে প্রতারণার মাধ্যমে বিপুল অর্থ উপার্জন করেছেন।
এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে শফিক তুহিন তার ফেসবুক অ্যাকাউন্টে অনুমোদন ছাড়া গান বিক্রির বিষয়টি উল্লেখ করে একটি পোস্ট দেন। তার সেই পোস্টের নিচে আসিফ আকবর অশালীন মন্তব্য করেন। পরের দিন (২ জুন) রাতে আসিফ আবারও তার ফেসবুক পেজে লাইভে আসেন। লাইভে শফিক তুহিনের বিরুদ্ধে অবমাননাকর, অশালীন ও মিথ্যা বক্তব্য দেন। ফেসবুক লাইভে এসে ভক্তদের উদ্দেশে আসিফ বলেন, ‘শফিক তুহিনকে যেখানেই পাবেন, সেখানেই প্রতিহত করবেন।’
আরও পড়ুন: জেমসের করা মামলায় বাংলালিংকের চার কর্মকর্তার জামিন
কপিরাইট লঙ্ঘনের অভিযোগে বাংলালিংকের বিরুদ্ধে জেমসের মামলা
হয়রানির উদ্দেশ্যে ডিজিটাল আইনে মিথ্যা মামলা করেছে জাপানি নারী!
জাপান থেকে আসা দুই শিশুর মা জাপানি নাগরিক এরিকো নাকানো তাদের বাবা ইমরান শরীফকে হয়রানির উদ্দেশ্যে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মিথ্যা মামলা করেছে বলে অভিযোগ তুলেছে তার আইনজীবীরা।
বৃহস্পতিবার সুপ্রিমকোর্টের এনেক্স ভবনের সামনে এক সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ তুলে ধরেন তার আইনজীবী মুসতাক আহমেদ। এসময় শিশু দুটির বাবা ইমরান শরীফসহ তার আইনজীবীরা উপস্থিত ছিলেন।
আইনজীবী মুসতাক আহমেদ বলেন, শিশু দুটিকে নিয়ে করা মামলা আপিল বিভাগে বিচারাধীন রয়েছে। এ অবস্থায় নিছক হয়রানির উদ্দেশ্যে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে এরিকো নাকানো বাদী হয়ে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে ইমরান শরীফের বিরুদ্ধে মামলা করেছে। মামলার অভিযোগে সে বলেছে, ইমরান শরীফ তার ফোনের চ্যাট অ্যাপ হ্যাক করেছেন। ঘটনাটি তিন মাস আগে ঘটেছে বলে এরিকো দাবি করেছে। এই আইনজীবী আরও বলেন, তার কোন অভিযোগ থাকলে সে আপিল বিভাগকে জানাতে পারতো। কিন্তু তা না করে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে হয়রানির উদ্দেশ্যে মামলা করেছে।
আরও পড়ুন: জাপানি দুই শিশু থাকবে বাবার হেফাজতে: হাইকোর্ট
আইনজীবী মুসতাক বলেন, আপিল বিভাগ বাচ্চাদের সঙ্গে তার বাবা ইমরান শরীকফে সকাল ৯টা থেকে রাত ৯টার মধ্যে যে কোন সময় দেখা করার সুযোগ দিতে বলেছেন। কিন্তু শিশুদের সঙ্গে তাদের বাবাকে দেখা করতে দেয়া হচ্ছে না। আবার আপিল বিভাগ বাচ্চাদের স্কুলে যাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করতে বলেছেন। কিন্তু বাচ্চাদেরকে স্কুলে যেতে দেয়া হচ্ছে না। এসব কর্মকান্ডের মাধ্যমে আপিল বিভাগের আদেশকে লংঘন করা হচ্ছে। বিষয়গুলো আমরা আগামী ২৩ জানুয়ারি আপিল বিভাগের কাছে তুলে ধরবো।
এর আগে গত ৩ জানুয়ারি আপিল বিভাগ জাপান থেকে আসা দুই শিশু ২৩ জানুয়ারি পর্যন্ত তাদের মা জাপানের নাগরিক এরিকো নাকানোর সঙ্গে থাকবে এবং শিশুদের বাবা বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ইমরান শরীফ শিশুদের সঙ্গে দেখা করতে পারবেন বলে আদেশ দেন। বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত বাবা ইমরান শরীফ এই সময়ে স্বাধীনভাবে সকাল ৯টা থেকে রাত ৯টার মধ্যে যেকোনো সময় শিশুদের সঙ্গে দেখা করতে পারবেন। আদালত ২৩ জানুয়ারি পর্যন্ত শুনানি মুলতবি করে এই সময়ের মধ্যে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল করতে বলেন আপিল বিভাগ।
আরও পড়ুন: জাপানি মায়ের রিট: ২ মেয়েসহ বাবা ও ফুপুকে ৩১ আগস্ট হাজিরের নির্দেশ
জানা যায়, ২০০৮ সালের ১১ জুলাই এরিকো ও ইমরানের বিয়ে হয়, তাঁদের তিন মেয়ে সন্তান রয়েছে। গত বছরের ১৮ জানুয়ারি এরিকোর সঙ্গে বিয়ে বিচ্ছেদের আবেদন করেন ইমরান। এরপর ২১ ফেব্রুয়ারি দুই মেয়েকে নিয়ে বাংলাদেশে চলে আসেন তিনি। পরে ছোট মেয়েকে তার নানির কাছে রেখে গত ১৮ জুলাই বাংলাদেশে আসেন এরিকো। ইমরানের কাছ থেকে ১০ ও ১১ বছর বয়সী দুই মেয়ে শিশুকে ফিরে পেতে ঢাকায় এসে ১৯ আগস্ট রিট করেন তিনি। পরে ছোট মেয়েকে ফিরে পেতে আরেকটি রিট করেন ইমরান।
এ রিটের ওপর গত ২১ নভেম্বর বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ রায় দেন। রায়ে আদালত বলেন, এ রিটটি চলমান থাকবে। দুই মেয়ে পাঁচ নম্বর বিবাদীর (ইমরান শরীফ) হেফাজতে থাকবে। মা দেখা সাক্ষাৎ এবং একান্তে সময় কাটানোর সুযোগ পাবেন। যেহেতু মা জাপানি নাগরিক এবং সেখানে বসবাস ও কর্মরত সে কারণে তিনি তার সুবিধা মতো সময়ে বাংলাদেশে এসে শিশু সন্তানদের সঙ্গে প্রতিবার কমপক্ষে ১০ দিন সময় কাটাতে পারবেন। এ ক্ষেত্রে বছরে তিনবার বাংলাদেশে যাওয়া আসাসহ ১০ দিন অবস্থানের যাবতীয় খরচ পাঁচ নম্বর বিবাদীকে বহন করতে হবে। এর বাইরে যাওয়া আসার খরচ দরখাস্তকারী (মা) বহন করবেন। ছুটির দিনে মাসে অন্তত দুইবার শিশুদের সঙ্গে ভিডিও কলে মাকে কথা বলিয়ে দেবেন। গত কয়েকমাসে বাংলাদেশে অবস্থান ও যাতাযাত খরচ বাবদ আগামী সাত দিনের পাঁচ নম্বর বিবাদী দরখাস্তকারীকে ১০ লাখ টাকা দেবেন। রিটটির চূড়ান্ত নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত আদেশ প্রতিপালিত না হলে বা অন্য কোনো আদেশের জন্য আদালতে পক্ষগুলো আসতে পারবে। সংশ্লিষ্ট সমাজসেবা কর্মকর্তা শিশুদের দেখভাল অব্যাহত রাখবেন। তাকে প্রতি তিন মাস পর পর শিশুদের বিষয়ে হাইকোর্টের রেজিস্ট্রারের কাছে প্রতিবেদন দিতে হবে। তবে জাপানে থাকা ছোট মেয়ে হেনাকে হাইকোর্টে হাজির করানোর নির্দেশনা চেয়ে বাবা ইমরান শরীফের করা রিট খারিজ করে দিয়েছেন হাইকোর্ট।
আরও পড়ুন: জাপানি ২ শিশুকে ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে রাখার নির্দেশ
পরে ডা. এরিকো নাকানোর দুই শিশু বাবার জিম্মায় থাকবেন বলে দেয়া হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করেন। এর ধারাবাহিকতায় আপিল বিভাগে শুনানি চলছে।
মানব পাচার প্রতিরোধে সমন্বিত প্রচেষ্টা প্রয়োজন: আইনমন্ত্রী
আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়কমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, মানব পাচার মানবাধিকার লঙ্ঘনের একটি জঘন্য রূপ। এটি বিশ্বের সর্বত্র ঘটে এবং বাংলাদেশও এর ব্যতিক্রম নয়। তিনি বলেন, শুধু আইন দিয়ে এ অপরাধ দমন বা প্রতিরোধ করা সম্ভব নয়। এজন্য সমন্বিত প্রচেষ্টা প্রয়োজন।
বুধবার রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে মানব পাচার, প্রাসঙ্গিক জাতীয় ও আন্তর্জাতিক আইন এবং বিচার নিশ্চিতকরণ বিষয়ক এক প্রশিক্ষণ কর্মশালার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। কর্মশালায় মানব পাচার এবং নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের ২৩ জন বিচারক অংশগ্রহণ করেন।
এসময় আইনমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে মানব পাচার সংগঠিত অপরাধের একটি প্রধান রূপ হয়ে উঠেছে এবং তা সমাজের ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলছে। এটি আধুনিক দাসপ্রথার একটি নতুন ধারা; যেখানে নারী, পুরুষ ও শিশুদের নির্যাতন ও শোষণের শিকার করে পাচারকারীরা লাভবান হয়।
আরও পড়ুন: সরকার আইনের বাইরে কোনো কাজ করতে পারে না: আইনমন্ত্রী
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার মানব পাচারের বিরুদ্ধে জিরো-টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেছে এবং এই জঘন্য অপরাধের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ নিচ্ছে। এর অংশ হিসেবে মানব পাচারের মামলাগুলো দ্রুত নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। বিশেষ আইন ও ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হয়েছে এবং সেগুলোতে বিচারক এবং প্রসিকিউটর নিয়োগ দেয়া হয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে একটি কমিটি কাজ করছে। মানব পাচার সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ ও বিশ্লেষণের জন্য পুলিশ সদর দপ্তরে একটি মনিটরিং সেল চালু করা হয়েছে।
বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আইন ও বিচার বিভাগের সচিব মো. গোলাম সারওয়ার, বাংলাদেশে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত আর্ল আর মিলার, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক সংস্থা- উইনরক ইন্টারন্যাশনালের ইউএসএআইডি-এর এফএসটিআইপি অ্যাক্টিভিটির চিফ অব পার্টি লিজবেথ জোনেভেল্ড ও বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের পরিচালক গোলাম কিবরিয়া বক্তব্য দেন।
আরও পড়ুন: সরকার আইনের বাইরে কোনো কাজ করতে পারে না: আইনমন্ত্রী
প্রধান বিচারপতি নিয়োগের সর্বময় ক্ষমতা রাষ্ট্রপতির: আইনমন্ত্রী
আলোকচিত্রী শহিদুল আলমকে নিয়মিত আপিল করার নির্দেশ
আলোকচিত্রী শহিদুল আলমের বিরুদ্ধে দায়ের করা তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনের মামলার তদন্ত কার্যক্রমের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে করা রিট খারিজের বিরুদ্ধে নিয়মিত আপিল করার নির্দেশ দিয়েছেন আপিল বিভাগ।
হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে শহিদুল আলমের আবেদনের শুনানি নিয়ে সোমবার প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ চার সপ্তাহের মধ্যে নিয়মিত আপিল দায়েরের এই আদেশ দেন।
আদালতে শহিদুল আলমের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার সারা হোসেন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন।
এর আগে গত ১৪ ডিসেম্বর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনের মামলার তদন্ত কার্যক্রমের বৈধতা নিয়ে জারি করা রিটের চূড়ান্ত শুনানি করে খারিজ করে দেন হাইকোর্ট। বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন। ফলে শহিদুল আলমের বিরুদ্ধে এই মামলার তদন্ত চলতে বাধা নেই বলে জানান রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা।
উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের ১২ আগস্ট তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনের মামলায় আলোকচিত্রী শহিদুল আলমকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত। ওই বছরের ৬ আগস্ট রমনা থানায় শহিদুল আলমের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়।
আরও পড়ুন: যৌন হয়রানি প্রতিরোধে সরকারের পদক্ষেপ জানতে চান হাইকোর্ট
মামলার অভিযোগে বলা হয়, আসামি শহিদুল আলম তার ফেসবুক টাইম লাইনের মাধ্যমে দেশি-বিদেশি আন্তর্জাতিক বিভিন্ন গণমাধ্যমে কল্পনাপ্রসূত অপপ্রচার চালাচ্ছেন। এর মাধ্যমে জনসাধারণের বিভিন্ন শ্রেণিকে শ্রুতিনির্ভর (যাচাই-বাছাই ছাড়া কেবল শোনা কথা) মিথ্যা তথ্য উপস্থাপন করে উসকানি দিয়েছেন, যা রাষ্ট্রের জন্য ক্ষতিকর। সরকারকে প্রশ্নবিদ্ধ ও অকার্যকর রূপে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে উপস্থাপন করেছেন। আসামি শহিদুল ইসলাম আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতিসহ জনমনে ভীতি ছড়িয়ে দেয়ার ষড়যন্ত্র এবং তা বাস্তবায়নের জন্য ইলেকট্রনিক মাধ্যমে প্রচার করেছেন।
২০১৮ সালের ১৫ নভেম্বর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনের মামলায় আলোকচিত্রী ড. শহিদুল আলম জামিন হাইকোর্ট থেকে জামিন পান।
পরে শহিদুল আলমের এক আবেদনের প্রেক্ষিতে ২০১৯ সালের ১৪ মার্চ তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনের এ মামলার তদন্ত কার্যক্রম তিন মাসের জন্য স্থগিত করেন হাইকোর্ট। পাশাপাশি মামলার তদন্তের বৈধতার প্রশ্নে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। যে রুলের ওপর চূড়ান্ত শুনানি করে গত ১৪ ডিসেম্বর রুল খারিজ করে দেন হাইকোর্ট।
আরও পড়ুন: বিসিএসে সুপারিশপ্রাপ্ত ৮৪ জনকে নিয়োগ দিতে হাইকোর্টের নির্দেশ
এসিড সমৃদ্ধ ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক বন্ধের নির্দেশ হাইকোর্টের
বিরোধী ও ভিন্নমত দমনে সরকার ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ব্যবহার করছে: বিএনপি
সরকার ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনকে বিরোধীদলের নেতাকর্মী ও ভিন্নমত দমনের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি। দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন একটি নিপীড়নমূলক আইন। কেউ সরকারের বিরোধীতা করলে বা ভিন্নমত পোষণ করলে, পরের দিন সকালেই তার বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে একটা মামলা করা হয়; সন্ধ্যায়ই আবার সে মামলা তুলে নেয়া হয়।
রবিবার বিএনপির নয়াপল্টন কার্যালয়ে সহযোদ্ধা সহমর্মী জাতীয়তাবাদী অনলাইন অ্যাকটিভিস্টবৃন্দ নামক সংগঠন আয়োজিত দোয়া মাহফিল ও আলোচনা সভায় বিএনপির এই নেতা এসব কথা বলেন। সভায় এমএম ওবায়দুর রহমান, কামরুল হাসান শাহীন, তানিমা সোমা ও শান্ত ইসলামসহ বিএনপির অন্যান্য প্রয়াত নেতাদের আত্মার শান্তি কামনা করা হয়।
এ সময় রিজভী বলেন, আওয়ামী লীগের কোনো নেতা বিএনপির কোনো নেতার বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অধীনে মামলা করলে, প্রথম থেকেই আইনি প্রক্রিয়া সুষ্ঠুভাবে চলতে থাকে। ওই বিএনপি নেতাকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠায়।
আরও পড়ুন: ইসি নিয়ে আলোচনা করতে কোথাও যাবে না বিএনপি
তিনি আরও বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় বিএনপি নেতাদের কারাগারে পাঠানো হলে দীর্ঘদিনের আগে জামিন পাওয়া যায় না। এভাবেই দেশে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন প্রয়োগ করা হচ্ছে।
দেশের বর্তমান পরিস্থিতিকে ‘ভয়াবহ শ্বাসরুদ্ধকর’ হিসেবে আখ্যা দিয়ে রিজভী বলেন, আমরা এমন একটি সমাজে বাস করি, যেখানে বাক স্বাধীনতা নেই। কেউ আমাদের অনুসরণ করছে কিনা তা দেখার জন্য, সবসময় ডানে-বামে সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হয়।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, সরকার বিভিন্ন 'ভয়ানক ও ঘৃণ্য' আইন ব্যবহার করে অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট এবং মুক্তচিন্তাকারীদের 'দমন' করছে।
বিএনপির এই জ্যেষ্ঠ নেতা বলেন, অনলাইন অ্যাক্টিভিস্টরা বর্তমান ‘ফ্যাসিস্ট’ শাসনের বিরুদ্ধে তাদের কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে জাতিকে উৎসাহিত করছে।
২০২২ সাল বাংলাদেশের অবকাঠামোগত উন্নয়নে একটি মাইলফলক হবে বলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাম্প্রতিক মন্তব্যের কথা উল্লেখ করে বিএনপির এই নেতা বলেন, উন্নয়নের নামে জনগণকে আরও প্রতারিত করা হবে।
তিনি বলেন, দেশে চাকরির সুযোগ না থাকায় মাস্টার্স ডিগ্রিধারীরা এখন পিয়ন পদে আবেদন করেন। এটাই শেখ হাসিনার উন্নয়ন।
আরও পড়ুন: বৃহত্তর ঐক্য গড়তে সরকারবিরোধী দলের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা বিএনপির
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বিএনপি-ছাত্রলীগের সমাবেশ, ১৪৪ ধারা জারি
শীতকালীন সংসদে গণমাধ্যমকর্মী আইন উত্থাপনের আশাবাদ তথ্যমন্ত্রীর
আসন্ন শীতকালীন অধিবেশনেই গণমাধ্যমকর্মী আইনের খসড়া জাতীয় সংসদে উত্থাপনের আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ। তিনি বলেন, ‘গণমাধ্যমকর্মী আইনের খসড়া ইতোমধ্যেই আইনমন্ত্রী স্বাক্ষর করে দিয়েছেন। শীতকালীন অধিবেশনে আমরা সেটি সংসদে নিয়ে যেতে পারবো বলে আশা করছি। এ আইন পাস হলে, সম্প্রচার মাধ্যমের সাথে যুক্ত সাংবাদিকবৃন্দকে আইনি সুরক্ষা দেয়া সম্ভবপর হবে।’রবিবার দুপুরে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে চট্টগ্রাম বিভাগ সাংবাদিক ফোরাম ঢাকা (চবিসাফ) এর মিলনমেলা ও দ্বিবার্ষিক সাধারণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় মন্ত্রী এসব কথা বলেন। এসময় ড. হাছান মাহমুদ গণমাধ্যমে সরকারের সমালোচনার পাশাপাশি ভালো কাজের প্রশংসাও প্রয়োজন উল্লেখ করে বলেন, ‘সরকারের সমালোচনা হবে, কোনো জায়গায় দায়িত্বশীলরা যদি ভুল করে সেটিরও সমালোচনা হবে। কিন্তু সমালোচনাটা যেন এমন না হয় যে, দুষ্কৃতিকারী বা সাম্প্রদায়িক অপশক্তির হাতে কিংবা যারা সাম্প্রদায়িক অপশক্তিকে লালন-পোষণ ও ব্যবহার করে রাষ্ট্র ক্ষমতা দখল করতে চায়, তাদের হাতে ক্ষমতা যাওয়ার সম্ভবনা তৈরি হয়। সেজন্য আমাদের সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।’
মন্ত্রী বলেন, ‘সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে আমার কাছে দাবি উপস্থাপন করা হয়েছে যে, সাংবাদিক হিসেবে যুক্ত হওয়ার জন্য যোগ্যতার মাপকাঠি করে দিতে। সেক্ষেত্রে আমি ব্যক্তিগতভাবে কোনো ডিগ্রি নির্ধারণ করে দেয়া সমীচীন মনে করি না। কারণ অনেক সময় দেখা যায় মাস্টার্স ডিগ্রিধারী তিনি যেভাবে লেখেন, তার চেয়ে মেট্রিক পাস সাংবাদিক ভালো লেখেন। তবে এখন যে কেউ সাংবাদিক পরিচয় দেয়, আসল সাংবাদিকের চেয়ে নকল সাংবাদিকে উপজেলা সয়লাব। দেখা যায় সাংবাদিকের স্টিকার লাগিয়ে তারা গাড়িতে করে ঘোরে।এতে মানুষের মধ্যে একটি বিরূপ মনোভাব তৈরি হয়, এ বিষয়ে শৃঙ্খলা আনার জন্য আমি প্রেস কাউন্সিলকে একটি মানদণ্ড তৈরির জন্য নির্দেশনা দিয়েছি।’
আরও পড়ুন: বিরোধিতা করলেও বিএনপি রাষ্ট্রপতির সংলাপে অংশ নেবে, আশা তথ্যমন্ত্রীর
সত্যিকার অর্থে সাংবাদিকদের জন্য কাজ করতে পারাটাই সাংবাদিক সংগঠনগুলোর সার্থকতা উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘ওয়েজবোর্ডে আছে প্রত্যেক প্রতিষ্ঠানকে সাংবাদিক ও কর্মচারীদের জন্য গ্রুপ ইন্স্যুরেন্স করতে, কিন্তু তা হয়নি। এজন্য খুব বেশির টাকারও প্রয়োজন নয়, এ বিষয়ে সংগঠনগুলো কাজ করতে পারে। সরকারের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট গঠন করে দিয়েছেন। একজন সাংবাদিক মৃত্যুবরণ করলে সে সেখান থেকে তিন লাখ টাকা পায়। কিন্তু গ্রুপ ইন্স্যুরেন্স কভারেজ বাবদ তার পরিবার যে পাঁচ বা দশ লাখ টাকা পেতো, সেটি না পাওয়া শুধুমাত্র উদ্যোগের অভাব। এজন্য আমি সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ ও সংগঠনগুলোকে বলবো প্রতিষ্ঠানগুলোকে তাগাদা দিতে।’চবিসাফের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মো. মোস্তফা কামালের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ডিবিসি২৪ টিভির চেয়ারম্যান ইকবাল সোবহান চৌধুরী, বিএফইউজের সাবেক সভাপতি মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল, দৈনিক যুগান্তরের সম্পাদক সাইফুল আলম, ডিআরইউ’র সাবেক সভাপতি শাহজাহান সরদার, জাতীয় প্রেসক্লাবের কোষাধ্যক্ষ শাহেদ চৌধুরী, বিএফইউজের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য উম্মুল ওয়ারা সুইটি।
সাংবাদিক আইয়ুব ভূঁইয়ার সঞ্চালনায় স্বাগত বক্তব্য দেন চবিসাফের মহাসচিব শাহীন উল ইসলাম চৌধুরী। চবিসাফের ১১ জেলার প্রতিনিধিদের মধ্যে চট্টগ্রামের সমীর বড়ুয়া, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার গিয়াস উদ্দীন, ফেনীর মোতাহার হোসেন, কুমিল্লার সাজ্জাদ হোসেন, নোয়াখালীর তরুণ তপন চক্রবর্তী, লক্ষ্মীপুরের খুরশিদ আলম প্রমুখ সভায় বক্তব্য দেন
আরও পড়ুন: যাদের দেশে গণতন্ত্র হুমকির মুখে তারা অন্য দেশকে সবক দেয়ার অধিকার রাখে কি: প্রশ্ন তথ্যমন্ত্রীর
মানুষ রক্ষায় নেয়া পদক্ষেপ অপর্যাপ্ত: কপ২৬ বিষয়ক সেমিনারে তথ্যমন্ত্রী
পরীমণিসহ তিনজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের শুনানি ৫ জানুয়ারি
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলায় ঢাকাই চলচ্চিত্রের আলোচিত নায়িকা পরীমণিসহ তিনজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন শুনানির জন্য আগামী ৫ জানুয়ারি দিন ধার্য করেছেন আদালত।
মামলার অপর দুই আসামি হলেন- আশরাফুল ইসলাম দিপু ও কবির হোসেন।
রবিবার ঢাকার ১০ নম্বর বিশেষ জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ নজরুল ইসলামের আদালতে মামলার অভিযোগ গঠন শুনানির দিন ধার্য ছিল। কিন্তু এদিন ঢাকা আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আইয়ুবুর রহমান মারা যাওয়ায় আদালত পূর্ণ দিবস মুলতবি করা হয়। এজন্য আদালত অভিযোগ গঠন শুনানির জন্য নতুন এই দিন ধার্য করেন।
এর আগে গত ১৪ ডিসেম্বর একই আদালতে পরীমণিসহ তিনজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন শুনানির জন্য দিন ধার্য ছিল। সেদিন পরীমণি অসুস্থ হওয়ায় আদালতে উপস্থিত হননি। এজন্য তার আইনজীবী নীলাঞ্জনা রিফাত সুরভী সময় চেয়ে আবেদন করেন। আদালত আবেদন মঞ্জুর করে ২ জানুয়ারি অভিযোগ গঠন শুনানির দিন ধার্য করেন।
গত বছরের ১৫ নভেম্বর পরীমণিসহ তিনজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র গ্রহণ করেন ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কে এম ইমরুল কায়েশ।
গত বছরের ৪ অক্টোবর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির পরিদর্শক কাজী মোস্তফা কামাল আদালতে পরীমণিসহ তিনজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
আরও পড়ুন: ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টা মামলা: পরীমণির আবেদন নাকচ, অভিযোগপত্র গ্রহণ
গত বছরের ৪ আগস্ট সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে পরীমণিকে তার বনানীর বাসা থেকে আটক করে র্যাব। পরদিন ৫ আগস্ট বিকেলে পরীমণি, চলচ্চিত্র প্রযোজক রাজ ও তাদের দুই সহযোগীকে বনানী থানায় নিয়ে যাওয়া হয়।
এরপর র্যাব বাদী হয়ে বনানী থানায় পরীমণি ও তার সহযোগী দীপুর বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা করে। সেই মামলায় পরীমণিকে আদালতে হাজির করা হলে প্রথমে চারদিনের রিমান্ড ও পরে আরও দুই দফায় তাকে রিমান্ডে নেয়া হয়।
মামলা সূত্রে জানা যায়, পরীমণি ২০১৬ সাল থেকে মাদকসেবন করতেন। এজন্য বাসায় একটি ‘মিনিবার’ তৈরি করেন। সেখানে নিয়মিত ‘মদের পার্টি’ করতেন। চলচ্চিত্র প্রযোজক নজরুল ইসলাম রাজসহ আরও অনেকে তার বাসায় অ্যালকোহলসহ বিভিন্ন ধরনের মাদকের সরবরাহ করতেন ও পার্টিতে অংশ নিতেন।
২০১৪ সালে সিনেমায় ক্যারিয়ার শুরু করা পরীমণি এ পর্যন্ত ৩০টি চলচ্চিত্র ও বেশ কয়েকটি টিভিসিতে অভিনয় করেছেন। পিরোজপুরের মেয়ে পরীমণিকে চলচ্চিত্র জগতে নিয়ে আসেন প্রযোজক রাজ।
আরও পড়ুন: পরীমণির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র আমলে নিয়েছেন আদালত
সরকার আইনের বাইরে কোনো কাজ করতে পারে না: আইনমন্ত্রী
আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়কমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, সরকার কোনো কাজই আইনের বাইরে করতে পারে না। সরকারের কিছু করার থাকলে সেটাকে আইনের ধারায় এনে কাজটি করতে হয়।
বিএনপির চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেয়ার অনুমতি প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে ওভারসিজ করেসপনডেন্টস এসোসিয়েশন বাংলাদেশ (ওকাব) আয়োজিত ‘মিট দ্য ওকাব’ অনুষ্ঠানে সাংবাদিকরা আইনমন্ত্রীর কাছে খালেদা জিয়ার চিকিৎসাসহ বিভিন্ন প্রসঙ্গে প্রশ্ন তুলে ধরেন। অনুষ্ঠানটির সঞ্চালনা করেন ওকাব’র আহ্বায়ক কাদির কল্লোল।খালেদা জিয়ার মুক্তির ব্যাপারে পরিবারের আবেদনের কথা উল্লেখ করে আইনমন্ত্রী বলেন, তার আত্মীয়-স্বজন একটা দরখাস্ত করেছিলেন। সেখানে কোনো আইনের ধারার কথা উল্লেখ ছিল না। তারপরও সেই দরখাস্তকে গণ্য করে ফৌজদারি আইনের ৪০১ ধারার বিধান অনুযায়ী সরকার নির্বাহী আদেশে খালেদা জিয়ার দণ্ডাদেশ স্থগিত রেখে শর্তযুক্ত মুক্তি দিয়েছে। শর্ত হলো তিনি বাসায় চিকিৎসা নেবেন। কিন্তু বিদেশ যেতে পারবেন না।আনিসুল হক বলেন, ১৫ আগস্ট খালেদা জিয়ার জন্মদিন না হলেও সেদিন আনন্দ করে তার জন্মদিন পালন করা হয়। বঙ্গবন্ধুর খুনি লেফটেন্যান্ট কর্নেল আবদুর রশিদকে ১৯৯৬ সালে ভোটার বিহীন নির্বাচনে বিরোধী দলীয় নেতা বানিয়ে ছিলেন খালেদা জিয়া। তার ছোট ছেলে মারা গেলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সমবেদনা জানাতে বাসায় গেলে তাঁর (প্রধানমন্ত্রীর) মুখের সামনে গেইট বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল। এতকিছুর পরও তাকে শর্তযুক্ত মুক্তি দেয়া হয়েছে। তারপরও কেন মানবিকতার প্রশ্ন ওঠে?
আনিসুল হক বলেন, ১৯৯৬ সালের ভোট আমি ও আপনারা দেখেছেন। হ্যাঁ-না ভোট থেকে শুরু করে অনেক ধরনের ভোট দেখার সুযোগ হয়েছে আমার। ২০১৪ সালে আমি নির্বাচিত হয়েছি। ২০১৮ সালের নির্বাচনে আমার নিজের তোলা ছবি আছে, মানুষ ভোট দিতে গেছেন। আমি দেখাতে পারবো। যখন আমি নির্বাচন করেছিলাম জনগণের কাছে আমার বার্তা ছিল, ভোট কেন্দ্রে যান। সেখানে গিয়ে নিজেদের মতামত প্রকাশ করুন। ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনেও আমরা চেষ্টা করেছি যাতে মানুষ ভোট কেন্দ্রে আসে।
আরও পড়ুন: খালেদা জিয়াকে বিদেশে নেয়ার বিষয়ে মতামত দিয়েছেন আইনমন্ত্রী
মন্ত্রী বলেন, নির্বাচনের কেন্দ্রে মানুষ না আসার কালচার কবে থেকে চালু হয়েছে, এটা আমার মনে করিয়ে দেয়ার দরকার নেই। ১৯৭৫ এর পরে যেসব নির্বাচন হয়েছে তার যে প্রভাব তা এখনও বাংলাদেশের মানুষের মন থেকে দূর হয়নি। এ কালচার থেকে বেরিয়ে আসার জন্য যা যা করা দরকার, সরকার তা করার চেষ্টা করছে।
তিনি বলেন, সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপে কানেক্টিভিটি নেটওয়ার্ক বৃদ্ধি পাওয়ায় জনগণ ভোটের বিষয়ে এখন অনেক বেশি সচেতন হয়েছে।আইনমন্ত্রী বলেন, কোন দল যদি নির্বাচনে এসে প্রতিদ্বন্দ্বিতা না করে, মানুষ কি তাদেরকে ভোট দেয়ার জন্য বসে থাকবে। ২০১৮ সালের নির্বাচনে বিএনপি'র কার্যকলাপ আপনারা দেখেছেন। একটি আসন থেকে চারজনকে নমিনেশন দিয়েছিল বিএনপি।ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের বিষয়ে তিনি আবারও বলেন, বাংলাদেশে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের প্রয়োজন আছে। কিন্তু এও জানি এর কিছু অপব্যবহার ও দুর্ব্যবহার হয়েছে। এটা যাতে বন্ধ হয় সেজন্য পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। এখন কোনো সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মামলা হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে গ্রেপ্তার করা হয় না, আগে যাচাই-বাছাই হয়। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাক-স্বাধীনতা ও সংবাদ মাধ্যমের স্বাধীনতা খর্ব করার জন্য করা হয়নি।
ওকাব টক অনুষ্ঠানে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) সভাপতি নজরুল ইসলাম মিঠুসহ আরও অনেকে উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসা নিয়ে কিছুদিনের মধ্যেই সিদ্ধান্ত: আইনমন্ত্রী
খালেদা জিয়ার জন্য ‘আইনি উপায়’ খোঁজা হচ্ছে: আইনমন্ত্রী
ইসি গঠনে দ্রুত আইন প্রণয়নের প্রস্তাব নাকচ আইনমন্ত্রীর
নতুন নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠনের জন্য জরুরি ভিত্তিতে আইন প্রণয়নের প্রস্তাব নাকচ করে দিয়েছেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়কমন্ত্রী আনিসুল হক। তিনি বলেছেন, দেশের জন্য এত গুরুত্বপূর্ণ একটি আইন ‘রাতারাতি’ করা যাবে না।
বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে ওভারসিজ করেসপন্ডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ওকাব) সদস্যদের সঙ্গে এক ব্রিফিংয়ে মন্ত্রী এ কথা বলেন।
এসময় মন্ত্রী বলেন, হ্যাঁ, সংবিধানে প্রয়োজনে আইন করার বিধান আছে এবং আমরা তা করতেও চাই। তবে এটি একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ আইন হওয়ায় রাতারাতি করা যাবে না।
আইন প্রণয়নের প্রক্রিয়ার বিশদ বিবরণ দিয়ে আনিসুল হক বলেন, সংসদে উত্থাপনের আগে এটির খসড়া প্রণয়ন, মন্ত্রিসভার অনুমোদন এবং তারপর জনমত সংগ্রহের জন্য আইন মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে এটি স্থাপন করতে হবে। আইনের গুরুত্ব বিবেচনা করে আমাদের এই প্রক্রিয়াগুলো মানতে হবে।
আরও পড়ুন: প্রধান বিচারপতি নিয়োগের সর্বময় ক্ষমতা রাষ্ট্রপতির: আইনমন্ত্রী
আইনমন্ত্রী বলেন, ২০১২ সালে রাষ্ট্রপতির অনুমোদিত একটি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বর্তমানে নির্বাচন কমিশন গঠিত হয়। রাষ্ট্রপতির সঙ্গে আলোচনা করে রাজনৈতিক দলগুলো প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও চার সদস্যের জন্য তাদের পছন্দের ব্যাপারে মতামত জানান। সুপারিশের ভিত্তিতে রাষ্ট্রপতি সার্চ কমিটি গঠনের মাধ্যমে একটি নিরপেক্ষ ও স্বাধীন নির্বাচন কমিশন গঠন করেন।
মন্ত্রী বলেন,যদিও এই প্রক্রিয়াটি কোনো আইন নয়, তবে এটিতে আইনের মতোই ক্ষমতা রয়েছে। কারণ দেশের সব রাজনৈতিক দল এর আগে এ বিষয়ে একমত ছিল এবং দুবার এটি কার্যকর হয়েছে। এর আগে সার্চ কমিটির মাধ্যমে গঠিত নির্বাচন কমিশনের অধীনে দুটি জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে রাষ্ট্রপতির সংলাপের ফলাফল দেখার জন্য সরকারও অপেক্ষা করছে।
বাংলাদেশে ৩৯টি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল রয়েছে এবং তাদের মধ্যে নয়টি বর্তমান সংসদে প্রতিনিধিত্ব করছে।
আরও পড়ুন: ইসি গঠন নিয়ে বিতর্ক করার অবকাশ নেই: আইনমন্ত্রী
মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় কমিশনকে অবিচল থাকতে হবে: আইনমন্ত্রী
রাষ্ট্রপতির সংলাপ: ইসি গঠনে আইন চায় ওয়ার্কার্স পার্টি
নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠনের জন্য আগামী বছরের শুরুতে জরুরি ভিত্তিতে আইন প্রণয়নের প্রস্তাব করেছে বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টি। মঙ্গলবার বিকালে বঙ্গভবনে ইসি গঠনের বিষয়ে চলমান সংলাপে অংশ নিয়ে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের কাছে এ প্রস্তাবসহ ছয়টি প্রস্তাব করে দলটি।
বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেননের নেতৃত্বে সাত সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল সংলাপে অংশ নেয়।
প্রতিনিধি দল নির্বাচন কমিশন গঠনে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার উদ্যোগ নেয়ার জন্য রাষ্ট্রপতিকে ধন্যবাদ জানান।
তারা নির্বাচন কমিশন গঠনে সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের মতামত গ্রহণের প্রস্তাব দেন। এছাড়া নির্বাচন কমিশনকে নির্বাচনী আইনগুলোর যথাযথ প্রয়োগ নিশ্চিত করার ব্যাপারে তারা মতামত দেন।
আরও পড়ুন: ইসি নিয়ে রাষ্ট্রপতির সংলাপ: সুশীল সমাজকেও চায় তরিকত
প্রতিনিধি দলকে বঙ্গভবনে স্বাগত জানিয়ে রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘রাজনীতি হচ্ছে জনগণের কল্যাণের জন্য। রাজনীতিতে গুণগত মান নিশ্চিত করা না গেলে ভবিষ্যতে রাজনীতিবিদদের জন্য রাজনীতি করা কঠিন হয়ে যাবে। এ ব্যাপারে রাজনৈতিক দলগুলোকে তৃণমূল পর্যায়ে সঠিক জনমত গড়ে তুলতে হবে।’
প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদার নেতৃত্বে বর্তমান নির্বাচন কমিশনের পাঁচ বছর মেয়াদ আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি শেষ হবে।
নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইট অনুযায়ী, দেশে বর্তমানে নিবন্ধিত ৩৯টি রাজনৈতিক দল রয়েছে এবং এদের মধ্যে ৯টির জাতীয় সংসদে প্রতিনিধিত্ব করছে।
এই দলগুলো হলো-বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি), বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টি, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ), বিকল্পধারা বাংলাদেশ, গণফোরাম, বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশন ও জাতীয় পার্টি (জেপি)।
আরও পড়ুন: রাষ্ট্রপতির সংলাপ: ইসি গঠনে আইন চায় ন্যাপ