প্রতিবন্ধী
প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য চাকরি মেলা উদ্বোধন আইসিটি প্রতিমন্ত্রীর
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের উদ্যোগে এবং সেন্টার ফর সার্ভিসেস অ্যান্ড ইনফরমেশন অন ডিজঅ্যাবিলিটির সহযোগিতায় দিনব্যাপী আয়োজিত প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য চাকরি মেলা-২০২৩ উদ্বোধন করেছেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।
শনিবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে এনজিওবিষয়ক ব্যুরোর অফিস ভবনে অনুষ্ঠিত এই মেলায় সকাল থেকেই অংশ নেয় ৫৪টি আইসিটি ভিত্তিক প্রতিষ্ঠান।
প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের মর্যাদাপূর্ণ জীবিকা ও কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে বিগত ৮ বছর থেকে এ চাকরি মেলর আয়োজন করে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল।
প্রধান অতিথি বক্তৃতায় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ বলেছেন যে সক্ষম, শারীরিক প্রতিবন্ধকতা ও বিশেষভাবে সক্ষমদের মধ্যে বৈষম্য দূর করতে প্রযুক্তিকে কাজে লাগাতে হবে।
তিনি প্রযুক্তির সর্বোত্তম ব্যবহার করে শিক্ষিত প্রতিবন্ধী ভাই-বোনদের চাকরির সুব্যবস্থা করার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের চাকরি মেলা’- চাকরি দাতা ও চাকরিপ্রত্যাশীদের মধ্যে সেতুবন্ধন তৈরি করবে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, শারীরিক বা মানসিক প্রতিবন্ধী ব্যক্তিরা যেন অন্যের ওপর নির্ভরশীল না হয়ে প্রযুক্তির ব্যবহার করে আত্মনিশীল হতে পারে সেই লক্ষ্যে আমাদের কাজ করতে হবে।
আরও পড়ুন: ভবিষ্যত বিনোদন হবে ইন্টারনেট প্রযুক্তি নির্ভর: আইসিটি প্রতিমন্ত্রী পলক
তিনি আইসিটি বিভাগের এটুআই প্রকল্পে একজন উদ্ভাবক টকিং হোয়াইট স্টিক আবিষ্কার করেছেন উল্লেখ করে বলেন, এই সাদা ছড়ি দিয়ে একজন দৃষ্টি প্রতিবন্ধী, কোন ব্যক্তি বা বস্তুকে স্পর্শ বা ধাক্কা খাওয়ার আগেই টকিং হোয়াইট স্টিক কথা বলে সতর্ক করে দেয়।
তিনি এ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে এসেসটিব টেকনোলজি উদ্ভাবনের ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন।
প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের আইসিটি বিভাগ থেকে হুইল চেয়ার দেয়া হচ্ছে উল্লেখ করে বলেন, শারীরিক প্রতিবন্ধীদের স্বাচ্ছন্দে চলতে দেশে স্বল্প খরচে উচ্চ প্রযুক্তি সম্বলিত হুইলচেয়ার তৈরির পদক্ষেপ নিতে হবে।
প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, রাষ্ট্রকে বৈষম্যমুক্ত ও মানবিক করতে হলে সকল সুযোগ সুবিধা সকলের জন্য সমন্বিতভাবে ভাবে কাজে লাগাতে হবে। বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলায় কোন প্রতিবন্ধী ভাই বোন যেন কোন নাগরিক সুবিধা হতে বিন্দুমাত্র বঞ্চিত না হয় সেই লক্ষ্যে আমরা কাজ করব।
পলক বলেন, আইসিটি বিভাগের স্টাটআপ প্রকল্প, স্টাটআপ বাংলাদেশ লিমিটেড এর মাধ্যমে প্রতিবন্ধী ভাই-বোনদের পুঁজি দেয়ার সুযোগ রয়েছে। তিনি আগামী বছর থেকে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের চাকরি মেলার পাশাপাশি উদ্যোক্তা সম্মেলন করার ঘোষণা দেন।
প্রশিক্ষিত প্রতিবন্ধী বা বিশেষভাবে সক্ষম ভাই-বোনদের মধ্যে যারা উদ্যোক্তা হতে চান তাদের তরুণ উদ্যোক্তা হিসেবে নিজেদের তৈরি করতে ৫০ হাজার টাকা থেকে ১০ লক্ষ টাকা সিডমানি হিসেবে পুঁজি প্রদানের সুযোগ রয়েছে বলে তিনি জানান।
তিনি বলেন, এর মাধ্যমে প্রতিবন্ধী ভাইবোনেরা জব সিকার না হয়ে জব ক্রিয়েটর হিসেবে নিজেদের গড়ে তুলতে পারবেন। পরে তিনি মেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন।
আরও পড়ুন: ফুটবল বিশ্বকাপ উপলক্ষে ভাসানচর ও এতিমখানায় 'ফান জোন' স্থাপন
মেলায় সারাদেশ থেকে প্রায় ৪৫০ জন চাকরি প্রার্থী প্রতিবন্ধী ব্যক্তিরা অংশগ্রহণ করে।
বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের নির্বাহী পরিচালক রণজিৎ কুমারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সিনিয়র সচিব এন এম জিয়াউল আলম, এনজিও বিষয়ক ব্যুরো এর মহাপরিচালক সচিব শেখ মো. মনিরুজ্জামান এবং সিএসআইডি এর নির্বাহী পরিচালক খন্দকার জহুরুল আলম, আইসিটি বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ নাভিদ শফিউল্লাহ,প্রতিবন্ধীদের চাকরি দাতা প্রতিষ্ঠানে সমূহের পক্ষে বক্ত্যব রাখেন বাংলাদেশ ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল করিম ভূঁইয়া, মাই আউটসোর্সিং লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা তানজিবুল বাশার।
উল্লেখ্য, এর আগে সারাদেশ থেকে প্রায় ৫ শতাধিক প্রতিবন্ধী ব্যক্তি সিভি জমা দেন অনলাইনে।
এছাড়া, মেলায় সরাসরি উপস্থিত হয়েও বিশেষভাবে সক্ষম ব্যক্তি বা প্রতিবন্ধী ব্যক্তি চাকরিপ্রার্থীরা সিভি বা জীবনবৃত্তান্ত জমা দেয়ার সুযোগ পান। যাদের তথ্য প্রযুক্তির দক্ষতা রয়েছে তাদের নিয়োগের লক্ষ্যে ইন্টারভিউ গ্রহণ করে মেলায় অংশগ্রহণ নেওয়া প্রতিষ্ঠানগুলো।
ডাটা এন্ট্রি, গ্রাফিক্স ডিজাইন, অ্যানিমেশন, ওয়েব ডিজাইন, ডিজিটাল মার্কেটিং, কল সেন্টার এজেন্ট, প্রোগ্রামিং-সহ নানা প্রকার পদের জন্য প্রতিবন্ধী ব্যক্তি চাকরিপ্রার্থীদের সংক্ষিপ্ত তালিকায় অন্তর্ভূক্ত করে নিয়োগের পরবর্তী প্রক্রিয়া শুরু করা হবে।
বিভিন্ন ট্রেডবডি বা অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যভুক্ত আইসিটিভিত্তিক প্রতিষ্ঠানসমূহ ওই মেলায় অংশগ্রহণ করে।
মেলায় অংশগ্রহণকারী চাকরিদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে রয়েছে- বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস (বেসিস), ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ই-ক্যাব), বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব কন্টাক্ট সেন্টার অ্যান্ড আউটসোর্সিং (বাক্কো), ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (আইএসপিএবি), বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতি (বিসিএস), সাইবার ক্যাফে ওনার্স এ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশসহ আইসিটি শিল্পের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এবং এনজিও ব্যুরোর তালিকাভুক্ত প্রতিবন্ধিতা কাজের সাথে সংশ্লিষ্ট এনজিও প্রতিষ্ঠান সমূহ।
আশা করা হচ্ছে এ মেলা থেকে ৪০-৫০ জন প্রতিবন্ধী ব্যক্তির কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে এবং এ মেলা থেকে ১৫০-২০০ জন চাকরিপ্রার্থীকে পরবর্তীতে নিয়োগের লক্ষ্যে সাক্ষাতকারের জন্য সংক্ষিপ্ত তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হবে।
আরও পড়ুন: গ্লোবাল ইন্ডাস্ট্রিতে সেবা দিতে প্রস্তুত বাংলাদেশ: পলক
‘তারা বুদ্ধিজীবী নয়, বুদ্ধি প্রতিবন্ধী’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ব্যাংকে টাকা নেই বলে গুজব ছড়ানো হচ্ছে। ‘আল্লাহর রহমতে আমরা কোনো সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছি না। প্রতিটি ব্যাংকে টাকা আছে।’
মঙ্গলবার রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের ৩০তম জাতীয় কাউন্সিলে তিনি এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এক চতুর্থাংশ স্বার্থান্বেষী মহল মানুষকে বিভ্রান্ত করতে চায়।
তিনি বলেন, আমরা ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ তৈরি করেছি, কিন্তু তারা আমাদের বিরুদ্ধে এটি ব্যবহার করছে।
আরও পড়ুন: সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ছাত্রলীগের ৩০তম জাতীয় সম্মেলনের উদ্বোধন প্রধানমন্ত্রীর
বুদ্ধিজীবী এবং গণ্যমান্য ব্যক্তিদের একটি অংশ, যারা ‘সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করতে বিএনপির সঙ্গে হাত মিলিয়েছেন তাদের কঠোর সমালোচনা করেছেন শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, ‘অনেক জ্ঞানী ব্যক্তি এবং গণ্যমান্য ব্যক্তিরা বিএনপির সঙ্গে হাত মিলিয়েছেন।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তারা আমাদেরকে গণতন্ত্র নিয়ে তত্ত্ব ও উপদেশ দিচ্ছেন… অনেকে বলছেন যে তারা বুদ্ধিজীবী নন, বরং বুদ্ধি প্রতিবন্ধী।’
তিনি বলেন, ওই বুদ্ধিজীবীরা ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা, মানি লন্ডারিং এবং অস্ত্র চোরাচালানের অভিযোগে সাজাপ্রাপ্ত আসামিকে তাদের নেতা হিসেবে গ্রহণ করেছেন।
তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, ‘আমার প্রশ্ন, কেন এই ধরনের অপরাধীদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে মানুষের অধিকার হরণ করার চেষ্টা?’
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ গণতন্ত্র ও জনগণের শক্তিতে বিশ্বাস করে। ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি ‘ভোটারবিহীন’ নির্বাচন করার জন্য খালেদা জিয়ার সমালোচনা করে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ শান্তিপূর্ণ উপায়ে ক্ষমতা হস্তান্তর করেছিল।
ওই একতরফা নির্বাচনের পর জনগণের আন্দোলনের মুখে খালেদা জিয়া পদত্যাগ করতে বাধ্য হন উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিএনপি নেতাদের এটা ভুলে গেলে চলবে না।
আওয়ামী লীগ সভাপতি ছাত্রলীগের কর্মীসহ শিক্ষার্থীদের বাংলাদেশের যোগ্য নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলার আহ্বান জানান, যাতে তারা উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় অবদান রাখতে পারে।
রাজাকার, আলবদরসহ খুনি ও স্বাধীনতাবিরোধীরা যাতে কোনও দিন দেশে ক্ষমতায় আসতে না পারে সেজন্য তিনি ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের জনমত গড়ে তুলতে বলেন।
প্রধানমন্ত্রী ছাত্রলীগের মেধাবী শিক্ষার্থীদের কারিগরি শিক্ষাসহ তাদের পড়াশুনা যথাযথভাবে চালিয়ে যেতে এবং পিএসসি’র পরীক্ষায় বসতে বলেন, কারণ দেশ পরিচালনার জন্য একটি দক্ষ প্রশাসন প্রয়োজন।
তিনি বলেন, ‘আমাদের রাজনীতি দরকার আছে।একই সঙ্গে আমাদের দক্ষ প্রশাসন ও কারিগরি শিক্ষা দরকার।’ প্রতিটি জাতীয় সংকটের সময়, বিশেষ করে কোভিড-১৯ মহামারি এবং সিলেট অঞ্চলের সাম্প্রতিক বন্যায় জনগণের পাশে দাঁড়ানোর জন্য ছাত্রলীগকে ধন্যবাদ জানান শেখ হাসিনা।
আরও পড়ুন: সামাজিক মাধ্যমে বিএনপি-জামায়াতের অপকর্মের কথা তুলে ধরুন: প্রধানমন্ত্রী
জাপানিজ অর্থনৈতিক অঞ্চল উদ্বোধন প্রধানমন্ত্রীর: দেড় বিলিয়ন বিনিয়োগ ও লক্ষাধিক কর্মসংস্থানের প্রত্যাশা
চাঁদপুরে প্রতিবন্ধীদের মাঝে ৩০ হুইল চেয়ার বিতরণ
চাঁদপুরে ৩০ জন দুঃস্থ প্রতিবন্ধীদের মাঝে বিনামূল্যে হুইল চেয়ার বিতরণ করেছে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের জাতীয় প্রতিবন্ধী ফাউন্ডেশনের আওতাধীন প্রতিবন্ধী সেবা ও সাহায্য কেন্দ্রে।
বৃহস্পতিবার চাঁদপুর জেলা প্রশাসক কার্যালয় সামনে চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার মো.আশরাফ উদ্দিন এই হুইল চেয়ার বিতরণ করেন।
আরও পড়ুন: বিকল্প কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে বিজয়নগরে ছাগল বিতরণ
এ সময় উপস্থিত চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. কামরুল হাসান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বক) মো. ইমতিয়াজ হোসেন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোসা: রাশেদা আক্তার, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) এ এস এম মো সারওয়ার আলম ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) বশির আহমেদ।
আরও পড়ুন: দারিদ্র বিমোচনে ভূমিকা রাখছে ‘ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগল’ পালন
এছাড়াও চাঁদপুর জেলা প্রতিবন্ধী সেবা ও সাহায্য কেন্দ্রের কর্মকর্তা সুমন নন্দীসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
প্রতিবন্ধীদের বই পড়ার অধিকার নিশ্চিতে মারাকেশ চুক্তিতে স্বাক্ষর করল বাংলাদেশ
দেশের দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীসহ সবধরনের পঠনপ্রতিবন্ধীদের বই পড়ার সংকট দূর করতে আন্তর্জাতিক মেধাস্বত্ব সংস্থার মারাকেশ চুক্তিতে অনুস্বাক্ষর করেছে বাংলাদেশ।
আন্তর্জাতিক মেধাসত্ব সংস্থার (ডব্লিউআইপিও) সদর দপ্তরে জেনেভায় জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূত মো. মোস্তাফিজুর রহমান সংস্থাটির মহাপরিচালক ড্যারেন টাংয়ের হাতে মারাকেশ চুক্তিতে বাংলাদেশের অনুস্বাক্ষরের দলিল হস্তান্তর করেন।
দেশের প্রতিবন্ধী জনগোষ্ঠীর পড়ার সুযোগকে অবারিত করার লক্ষ্যে বাংলাদেশ বিশ্বের ১১৬তম দেশ হিসেবে এই চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছে।
উল্লেখ্য, মরক্কোর মারাকেশ শহরে ২০১৩ সালের জুন মাসে জাতিসংঘের বিশেষায়িত সংস্থা ডব্লিউআইপিওয়ের একটি কূটনৈতিক সম্মেলনে ‘মারাকেশ চুক্তি’ চূড়ান্ত করা হয়। এই চুক্তির আওতায় দৃষ্টি ও পঠন প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য অ্যাকসেসিবল বই (যেমন: ডেইজি মাল্টিমিডিয়া টকিং বই, ব্রেইল ইত্যাদি) মুদ্রণ ও এক দেশের বিভিন্ন অ্যাকসেসিবল কনটেন্ট অন্য দেশের দৃষ্টি প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের ব্যবহারের জন্য অনুমতি প্রদান করা হয়। চুক্তিটি ২০১৬ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর থেকে বাস্তবায়ন হচ্ছে। বাংলাদেশের আগে এই চুক্তিতে প্রতিবেশি দেশ ভারত, নেপাল ও শ্রীলঙ্কা অনুস্বাক্ষর করেছে।
আরও পড়ুন: সহযোগিতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে কলম্বোতে বিমসটেক সনদ স্বাক্ষরিত
আন্তর্জাতিক মেধাস্বত্ব সংস্থার মহাপরিচালক ড্যারেন টাং বলেন, মারাকেশ চুক্তিতে অনুস্বাক্ষরের মধ্যদিয়ে বাংলাদেশের দৃষ্টি প্রতিবন্ধী তরুণরাসহ সকলের জন্য অর্থনৈতিক, সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে অংশগ্রহণের সমান অধিকার নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। এছাড়া ভবিষ্যতে দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীসহ সকল প্রকার পঠনপ্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জীবনমান উন্নয়নে বাংলাদেশের সাথে সংস্থাটি একসাথে কাজ করার সুযোগ তৈরি হবে।
আরও পড়ুন: প্রতিবন্ধী নারী উদ্যোক্তা উন্নয়নে গণমাধ্যমের ভূমিকা নিয়ে ভার্চুয়াল সভা
এদিকে, মারাকেশ চুক্তিতে অনুস্বাক্ষরের ফলে বাংলাদেশের তিন লাখ ৪০ হাজারের অধিক দৃষ্টি প্রতিবন্ধী ব্যক্তি ডব্লিউআইপিও’র ‘অ্যাক্সেসিবল বুক কনসোর্টিইয়াম’ এর আট লাখের বেশি বই পড়ার সুযোগ তৈরি হবে। ইতোমধ্যে প্রতিবন্ধী জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়ন, দক্ষতা বৃদ্ধি এবং বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিতে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় ও এটুআইয়ের যৌথ উদ্যোগে দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের জন্য গুণগত শিক্ষা প্রদানে মাল্টিমিডিয়া টকিং বুক ও এক্সেসিবল ডিকশনারি তৈরি, বছরের শুরুতে ব্রেইল পদ্ধতির পাঠ্যপুস্তক বিতরণ ও আইসিটি ল্যাব প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। এছাড়া, এটুআই বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ, বাংলাদেশ কপিরাইট অফিস এবং বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সাথে সম্মিলিতভাবে কাজ করছে। মারকেশ চুক্তিতে অনুসমর্থন করে সকল ধরনের প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের শিক্ষায় সমান সুযোগ প্রদান এবং জাতিসংঘ ঘোষিত প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের অধিকার সনদ (ইউএনসিআরপিডি) ও ২০৩০ সালের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা-৪ অর্জনে বাংলাদেশ একধাপ এগিয়ে গিয়েছে।
আরও পড়ুন: প্রতিবন্ধীদের উন্নয়নে নিবেদিতদের ‘সুবর্ণ নাগরিক সম্মাননা’ দেয়া হলো
প্রতিবন্ধীদের উন্নয়নে নিবেদিতদের ‘সুবর্ণ নাগরিক সম্মাননা’ দেয়া হলো
প্রতিবন্ধীদের নিয়ে কাজ করে এমন ব্যক্তি, গোষ্ঠী ও প্রতিষ্ঠানকে সম্মাননা দিয়েছে সুবর্ণ নাগরিক ফাউন্ডেশন। আয়োজনের সহযোগী ছিলো ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক ও দ্য ডেইলি স্টার।
আরও পড়ুন: প্রতিবন্ধী নারী উদ্যোক্তা উন্নয়নে গণমাধ্যমের ভূমিকা নিয়ে ভার্চুয়াল সভা
রবিবার (৪ সেপ্টেম্বর) রাজধানির ধানমন্ডিতে ড্যাফোডিল এডুকেশন নেটওয়ার্ক কনফারেন্স হলে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে আগত শারীরিক প্রতিবন্ধী ব্যক্তি এবং সংগঠনকে সম্মাননা দেয়া হয় বলে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছেন আয়োজকরা।
বিশেষ শিশুদের ধৈর্যশীল, সাহসী ও সম্মানিত পিতা-মাতা, অবহেলিত প্রতিবন্ধীদের কর্মসংস্থান সৃষ্টিকারী প্রতিষ্ঠান, সমাজে সফল প্রতিবন্ধী নারী পুরুষ, প্রতিবন্ধী ক্রীড়াবিদ এবং ক্রীড়া বিষয়ে বিশেষ অবদান রাখা ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে সম্মাননা দেয়া হয় এবারের আয়োজনে।
আরও পড়ুন: গ্যালারি কসমসের প্রথম ভার্চুয়াল আর্ট ক্যাম্প অনুষ্ঠিত
অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দ্য ডেইলি স্টারের নির্বাহী সম্পাদক সৈয়দ আশফাকুল হক, ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান সবুর খান, জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু, ইউসিবি ব্যাংকের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক এটিএম তাহমিদুজ্জামান ও এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট আবুল কালাম আজাদ এবং বিল্ডিং টেকনোলজি অ্যান্ড আইডিয়াস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফাইজুর রহমান খান। সম্মাননা অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন সুবর্ণ নাগরিক ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা প্রধান নির্বাহী আসিফ ইকবাল চৌধুরী।
সুবর্ণ নাগরিক ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা প্রধান নির্বাহী আসিফ ইকবাল চৌধুরী বলেন, শারীরিক প্রতিকূলতা কোন বাধা হতে পারে না। সুযোগ পেলে তারাও সমাজ ও দেশ গঠনে অবদান রাখতে পারে এমন প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে এ নাগরিক সম্মাননার আয়োজন করা হয়েছে।
আয়োজকরা জানান, বাংলাদেশে বিভিন্ন রকম শারীরিক প্রতিবন্ধী ব্যক্তির সংখ্যা প্রায় এক কোটি বা তার বেশি। এর মধ্যে অর্ধেকের বেশি শিশু ও নারী প্রতিবন্ধী। দেশের নাগরিকদের বিশাল এ অংশ চরমভাবে অবহেলিত, অনগ্রসর ও কর্মহীন।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ বিশ্বের কাছে অনুপ্রেরণা: ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে বক্তারা
প্রতিবন্ধী নারী উদ্যোক্তা উন্নয়নে গণমাধ্যমের ভূমিকা নিয়ে ভার্চুয়াল সভা
রাজধানীতে অ্যাকসেস বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন এর আয়োজনে এবং ইমএমকে সেন্টার এর সহায়তায় বুধবার ‘প্রতিবন্ধী নারী উদ্যোক্তা উন্নয়ন: গণমাধ্যমের ভূমিকা’- শীর্ষক ভার্চুয়াল আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সভায় শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন আয়োজক সংস্থার চেয়ারপারসন মহুয়া পাল।
তিনি বলেন, প্রতিবন্ধী নারী উদ্যোক্তাগণ সুযোগ পেলে সাফল্য অর্জন করতে পারে।
অনুষ্ঠান সঞ্চালক ও প্রবন্ধ উপস্থাপক অ্যাকসেস বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন এর নির্বাহী পরিচালক আলবার্ট মোল্লা বলেন, প্রকল্পের মাধ্যমে বাংলাদেশের সাতটি বিভাগের ১৬টি জেলার ৫০ জন প্রতিবন্ধী নারী উদ্যোক্তাদের দক্ষতা উন্নয়ন ও ই-কমার্স প্লাটফর্মে যুক্ত করার মাধ্যমে তাদের ব্যবসা উন্নয়নে সহযোগিতা করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এ লক্ষ্যে ৫০ জন প্রতিবন্ধী নারী উদ্যোক্তাকে তিনদিন করে দুইটি ব্যাচে দক্ষতা বৃদ্ধিমূলক প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়। এছাড়াও তাদের উৎপাদিত পণ্য বাজারজাতকরণের জন্য বিভিন্ন ই-কমার্স প্লাটফর্মে তাদেরকে যুক্ত করার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। তিনি প্রতিবন্ধী নারী উদ্যোক্তাদের চ্যালেঞ্জ সম্পর্কে বলেন, ব্যবসা পরিচালনায় দক্ষতার অভাব, ই-কমার্স ব্যবসা সম্পর্কে সম্যক ধারণার অভাব, প্রযুক্তিগত ধারণার অভাব, ব্যবসা শুরু ও সম্প্রসারণে মূলধনের অভাব, পরিবারের সহযোগিতা না পাওয়া, ট্রেড লাইসেন্স, ভ্যাট রেজিস্ট্রেশন, টিআইএন ও অন্যান্য সনদ প্রাপ্তিতে বাধা, সরকারি এবং বেসরকারি ঋণ প্রদানকারী সংস্থা/ব্যাংক থেকে ঋণ প্রাপ্তিতে বৈষম্য, সরকারি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, প্রশিক্ষণ ও মূল্যায়ন পদ্ধতি সব ধরণের প্রতিবন্ধী নারীদের জন্য প্রবেশগম্য নয়, প্রতিবন্ধী নারীদের উৎপাদিত পণ্যের উপর ক্রেতাদের আস্থার অভাব, নারী উদ্যোক্তাদের জন্য বিভিন্ন সুবিধা ও প্রকল্প থাকলেও এসকল সুবিধায় প্রতিবন্ধী নারীরা যুক্ত হতে পারে না, উদ্যোক্তা উন্নয়ন বিষয়ক নীতিমালায় প্রতিবন্ধী উদ্যোক্তাদের বিষয়ে কোন উল্লেখ নেই যেমন-এসএমই নীতিমালা-২০১৯ এ প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের বিষয়টি অনুপস্থিত।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক নিয়ে কসমসের ভার্চুয়াল সভা বৃহস্পতিবার
তিনি বাধাসমূহ দূরীকরণে গণমাধ্যমের ভূমিকা নিয়ে তার বক্তব্যে বলেন, প্রতিবন্ধী নারী উদ্যোক্তাদের বিষয়ে নেতিবাচক ধারণা দূর করতে গণমাধ্যম বিভিন্ন প্রচারমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারে, সফল প্রতিবন্ধী নারী উদ্যোক্তাদের কার্যক্রম গণমাধ্যমে তুলে ধরতে পারে, প্রতিবন্ধী নারী উদ্যোক্তাদের চ্যালেঞ্জ নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করতে পারে এবং নীতিনির্ধারকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে বিশ্লেষণধর্মী এবং তথ্যবহুল প্রতিবেদন প্রকাশ করতে পারে।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে জাতীয় প্রেসক্লাব এর সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন বলেন, প্রতিবন্ধী নারী উদ্যোক্তাদের সাফল্যের কথা আমাকে বিষ্মিত করেছে। প্রতিবন্ধী নারী উদ্যোক্তাদের স্বপ্ন সফল হওয়া কঠিন নয়, শুধু প্রয়োজন সহযোগিতা। আমাদের দায়িত্ব তাদের বিষয়গুলো সমাজের সামনে তুলে ধরা। আমি মনে করি রাষ্ট্রের উচিত তাদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করা। আমি আয়োজক সংস্থাকে ধন্যবাদ জানাই এ ধরনের কাজ করার জন্য। প্রতিবন্ধী নারী উদ্যোক্তার সাফল্যের কথা আমরা প্রচার করতে চাই। আমি উদ্যোগ গ্রহণ করবো যাতে সাংবাদিক বন্ধুগণ প্রতিবন্ধী নারী উদ্যোক্তাদের সাফল্যের কথা আরো বেশি করে প্রচার করেন।
ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির জয়েন্ট সেক্রেটারি শাহনাজ শারমীন বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বলেন, প্রতিবন্ধী নারীদের ৩টি বিষয় উল্লেখযোগ্য - তিনি পারেন, নারী হিসেবে পারেন এবং প্রতিবন্ধী নারী হিসেবে পারেন। একজন সাংবাদিক পারেন একজন প্রতিবন্ধী নারী উদ্যোক্তার উৎপাদিত পণ্যের বিক্রি বাড়াতে। কারণ, প্রচারেই প্রসার। তাই তাদের বিষয়গুলো নীতি নির্ধারণী পর্যায়ে আলোচনা করা প্রয়োজন।
ইএমকে সেন্টারে এর সমন্বয়কারী (উদ্যোক্তা উন্নয়ন) আয়শা সিদ্দিকা বলেন, উদ্যোক্তা হওয়া সহজ নয়। কিন্তু প্রতিবন্ধী নারী উদ্যোক্তারা তা প্রমাণ করেছেন। প্রতিবন্ধী নারী উদ্যোক্তাদের ধন্যবাদ এই কঠিণ কাজটি করে যাবার জন্য।
প্রতিন্ধী নারী উদ্যোক্তাদের মধ্যে নাটোর থেকে আরেফা পারভীন, সাতক্ষীরা থেকে অষ্টমী মালো, ময়মনসিংহ থেকে চুমকি বিশ্বাস এবং শেফালী আক্তার এবং ঢাকা থেকে কামরুন নাহার তাদের ব্যবসা চালাতে যে বাধার সম্মুখীন হচ্ছেন তা তুলে ধরেন এবং বাধা উত্তরণে গণমাধ্যম কর্মীদের সহায়তা কামনা করেন। সভায় সাংবাদিক, দাতা সংস্থার প্রতিনিধি, সংস্থার কর্মী ও প্রতিবন্ধী নারী উদ্যোক্তাসহ মোট ৫২ জন অংশগ্রহণ করেন।
আরও পড়ুন: গ্যালারি কসমসের প্রথম ভার্চুয়াল আর্ট ক্যাম্প অনুষ্ঠিত
বাংলাদেশ বিশ্বের কাছে অনুপ্রেরণা: ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে বক্তারা
কেন্দুয়ায় প্রতিবন্ধী কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগে যুবক গ্রেপ্তার
নেত্রকোণার কেন্দুয়ায় বাকপ্রতিবন্ধী এক কিশোরীকে (১৩) ধর্ষণের অভিযোগে সোহেল রানা (২৬) নামের এক যুবককে আটক করা হয়েছে। গত শুক্রবার (২০ মে) রাতে বলাইশিমুল ইউনিয়নের আশুজিয়া গ্রামে নিজ বাড়ি থেকে পুলিশ তাকে আটক করে। পরে শনিবার (২১ মে) দায়ের করা মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।
এলাকার কয়েকজন বাসিন্দা ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গত শুক্রবার সকালে ওই কিশোরী তার মায়ের সঙ্গে পাশের একটি গ্রামে নানার বাড়িতে বেড়াতে যায়। পরে বিকেলে সে পায়ে হেঁটে একা নিজ বাড়ি ফিরছিল। পথে পথে আশুজিয়া গ্রামে সোহেল রানা তাকে একা পেয়ে জোর করে পাশের জঙ্গলে নিয়ে ধর্ষণ করে। এ সময় ওই কিশোরীর গোঙ্গানীর শব্দ শুনে স্থানীয় লোকজন ছুটে আসে। এ সময় ওই যুবক দৌড়ে সটকে পড়ার চেষ্টা করলে স্থানীয়রা তাকে আটক করে পুলিশে খবর দেয়। পরে রাতে পুলিশ তাকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। গতকাল শনিবার সকালে ওই কিশোরীর বাবা বাদী হয়ে থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন। ওই মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে দুপুরে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠায়।
এ ব্যাপারে কেন্দুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আলী হোসেন গণমাধ্যমকে ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘প্রতিবন্ধী কিশোরীকে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য নেত্রকোণা আধুনিক সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। অভিযুক্ত সোহেল রানাকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
আরও পড়ুন: ঠাকুরগাঁওয়ে স্কুলছাত্রীকে তুলে নিয়ে ধর্ষণ ও ভিডিও, গ্রেপ্তার ২
কক্সবাজারে কোটি টাকার ইয়াবা জব্দ, গ্রেপ্তার ১
রাঙামাটিতে বন্য হাতির আক্রমণে মানসিক প্রতিবন্ধীর মৃত্যু
রাঙামাটি জেলার কাপ্তাইয়ে বুধবার বন্য হাতির আক্রমণে এক মানসিক প্রতিবন্ধী নারী নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ। তাৎক্ষণিকভাবে নিহতের নাম পরিচয় জানা যায়নি।
আরও পড়ুন: কাপ্তাইয়ে বন্য হাতির আক্রমণে ১ জনের মৃত্যু
কাপ্তাই পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক শাহিনুর রহমান জানান, ওই নারী মানসিক প্রতিবন্ধী ছিলেন এবং বুধবার রাত ৯টার দিকে কাপ্তাই নৌ সড়ক এলাকায় ঘোরাঘুরি করার সময় বন্য হাতি তাকে পদদলিত করে হত্যা করে।
খবর পেয়ে পুলিশ ও স্থানীয় ফায়ার সার্ভিসের একটি দল ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে।
প্রধানমন্ত্রীর সহায়তা পেল প্রতিবন্ধী লিতুন জিরা
হাত পা ছাড়া জন্ম নেয়া যশোরের প্রতিবন্ধী লিতুন জিরার পড়াশোনা ও চিকিৎসার জন্য পাঁচ লাখ টাকা সহায়তা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
রবিবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে থেকে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক (প্রশাসন) মকবুল হোসেন লিতুন পরিবারের কাছে চেক হস্তান্তর করেন।
চিকিৎসা আর পড়াশুনার জন্য অর্থ পেয়ে প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানায় লিতুন জিরার পরিবার।
এর আগে গত ৩ মার্চ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করার ইচ্ছা পোষণ করে চিঠি লিখেন লিতুন জিরা। সেই চিঠি পেয়েই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা লিতুনের খোঁজ খবর নেয়। সোমবার (২১ মার্চ) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কার্যালয়ে প্রবেশের অনুমিত ও পাঁচ লাখ টাকার অর্থসহায়তা পাওয়ার বিষয়ে একটি চিঠি পায় লিতুন।
আরও পড়ুন: শ্রবণ ও বাক প্রতিবন্ধীদের জন্য ইশারা ভাষা ইনস্টিটিউট স্থাপন করা হবে
চেক গ্রহণকালে সেখানে উপস্থিত ছিলেন মণিরামপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নাজমা খানম।
এব্যাপারে তিনি বলেন, আমরা সবসময় উপজেলা প্রশাসন লিতুন জিরার খোঁজ খবর রেখেছি। আমাদের প্রতিবন্ধী বান্ধব প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সবসময় প্রতিবন্ধীদের জীবনমান উন্নয়নে ভূমিকা রেখে চলেছেন। রবিবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে লিতুনের পরিবারের হাতে অনুদানের চেক হস্তান্তর করা হয়েছে। এর মাধ্যমে লিতুনের মতো অদম্য মেধাবীরা হাজারও মানুষকে অনুপ্রেরণা জোগাবে।
যশোরের মণিরামপুর উপজেলার শেখপাড়া খানপুর গ্রামের হাবিবুর রহমান ও জাহানারা বেগম দম্পতির মেয়ে লিতুন জিরা। দুই ভাইবোনের মধ্যে ছোট লিতুন। বাবা হাবিবুর রহমান ওই উপজেলার এ আর মহিলা কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক হিসেবে ১৮ বছর ধরে শিক্ষকতা করছেন। মা জাহানারা বেগম গৃহিণী। জন্ম থেকেই লিতুনের দুটি পা ও দুই হাত নেই। তবু লেখাপড়ার চালিয়ে নিচ্ছে সে। এবার উপজেলার গোপালপর স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে জেএসসি পরীক্ষার্থী। এর আগে ২০২০ সালের খানপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে পিএসসিতে জিপিএ-৫ পাওয়ায় বৃত্তি পায় লিতুন জিরা। পড়াশুনার পাশাপাশি লিতুন টানা দ্বিতীয়বারের মতো রচনা প্রতিযোগিতায় জেলা পর্যায় পুরস্কার লাভ করে। এছাড়াও আবৃত্তি, চিত্রাংকন প্রতিযোগিতায় নিজের পারদর্শিতা দেখানোর পাশাপাশি খুলনা বেতারেও নিয়মিত গান ও কবিতা আবৃত্তিতে অংশ নিচ্ছে।
আরও পড়ুন: পাঁচ প্রতিবন্ধী সদস্য নিয়ে এক হতদরিদ্র পরিবারের করুণ কাহিনী
আর্থিক সহায়তা পেয়ে খুশি লিতুন জিরা বলে, আমার স্বপ্ন চিকিৎসক হওয়ার। সেই স্বপ্ন পূরণে আমি ও আমার পরিবার সংগ্রাম করে যাচ্ছি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে কৃতজ্ঞতা জানিয়ে লিতুন জিরার বাবা হাবিবুর রহমান বলেন, প্রতিবন্ধী বান্ধব প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শুধু লিতুন জিরার পাশে রয়েছে তা কিন্তু না। দেশের সকল প্রতিবন্ধীদের প্রতি তিনি সবসময় সদয়।
চাকরিতে যোগ দিলেন শারীরিক প্রতিবন্ধী শাহিদা
আকিজ গ্রুপে এক্সিকিউটিভ অফিসার হিসেবে চাকরিতে যোগ দিয়েছেন দুই পা আর এক হাত বিহীন শারীরিক প্রতিবন্ধী শাহিদা।
রবিবার সকাল ১০টায় নওয়াপাড়ায় আকিজ জুট মিলে চাকরিতে যোগ দেয়ার সময় তার সঙ্গে ছিলেন অভয়নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) একেএম শামীম হাসান।
গত ২৩ মার্চ পুনাক সভাপতি জীশান মীর্জা শিমুলিয়ায় শাহিদার পরিচালিত সৃষ্টিশীল প্রতিবন্ধী কল্যাণ সংস্থায় পুনাকের খুলনা বিভাগীয় অন্যান্য নেতাদের সঙ্গে নিয়ে যান এবং তার হাতে আনুষ্ঠানিকতার মাধ্যমে আকিজ গ্রুপের নিয়োগপত্র তুলে দেন।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশ পুলিশ নারী কল্যাণ সমিতি (পুনাক) এর সভাপতি জীশান মীর্জা গত বছর নভেম্বর মাসে একটি অনলাইন পোর্টালের মাধ্যমে জানতে পারেন জীবন যুদ্ধে হার না মানা অদম্য সাহসী যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার শিমুলিয়া গ্রামের জন্ম থেকে দুই পা আর এক হাত বিহীন শারীরিক প্রতিবন্ধী মেয়ে শাহিদার কথা।
আরও পড়ুন: শ্রবণ ও বাক প্রতিবন্ধীদের জন্য ইশারা ভাষা ইনস্টিটিউট স্থাপন করা হবে
সেই থেকেই মানবিক দৃষ্টিতে বিষয়টি দেখেন পুনাক সভানেত্রী। তিনি এই অদম্য সাহসী শাহিদার জন্য কিছু করবেন বলে ঠিক করেন এবং তার সম্পর্কে খোঁজ নিতে যশোরের পুলিশ সুপার প্রলয় কুমার জোয়ারদার, বিপিএম(বার), পিপিএম মহোদয় কে অবহিত করেন। পরবর্তীতে জানুয়ারি মাসে পুনাক সভানেত্রী শাহিদার সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করেন এবং তার ইচ্ছের কথা অত্যন্ত মনোযোগ দিয়ে শোনেন।
তিনি জানতে পারেন শাহিদার ইচ্ছের কথা। শাহিদা জানাই সকল প্রতিবন্ধকতাকে মোকাবিলা করে স্নাতকোত্তর শেষ করেও কোন চাকরি না পেয়ে অনেক টাই হতাশ। পুনাক সভানেত্রী শাহিদার অদম্য সাহসিকতা ও চিন্তাধারার কথা শুনে অনুপ্রাণিত হন এবং তার জন্য কিছু একটা করার আশ্বাস দেন।
আরও পড়ুন: পাঁচ প্রতিবন্ধী সদস্য নিয়ে এক হতদরিদ্র পরিবারের করুণ কাহিনী
মানিকগঞ্জে প্রতিবন্ধীদের মাঝে হুইল চেয়ার ও চিকিৎসা অনুদানের চেক বিতরণ