সুন্দরবন
বাগেরহাটে সুন্দরবনের ২ জলদস্যু গ্রেপ্তার
বাগেরহাটে সুন্দরবনের একটি জলদস্যু বাহিনীর দুই সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে জেলা ডিবি পুলিশ। মঙ্গলবার বিকালে বাগেরহাট পুলিশ অফিসে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে পুলিশ সুপার কেএম আরিফুল হক এই তথ্য জানান।
এর আগে সোমবার গভীর রাতে বাগেরহাট ও খুলনা থেকে ডিবি পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করে।
গ্রেপ্তারেরা হলেন- বাগেরহাটের শরণখোলা উপজেলার আশরাফ আলী মুন্সির ছেলে রেজাউল মুন্সি (৩২) এবং একই উপজেলার জয়নাল সরদারের ছেলে ইসমাইল হোসেন (৩৫)। তারা সুন্দরবনের কথিত জলদস্যু ‘নয়ন বাহিনী’র সদস্য বলে পুলিশ জানায়।
পুলিশ সুপার কে এম আরিফুল হক জানান, সুন্দরবনের জলদস্যু বাহিনীর সদস্যদের আটকের ধারাবাহিকতায় বাগেরহাট ডিবি পুলিশ সোমবার গভীর রাতে প্রথমে খুলনার জেলাখানা ঘাট এলাকা থেকে এসমাইল হোসেনকে গ্রেপ্তার করে। পরে তার স্বীকারোক্তি মতে শরণখোলা থেকে রেজাউল মুন্সিকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের জিজ্ঞাসাবাদে সুন্দরবনের মধ্যে অস্ত্র লুকানো রয়েছে বলে স্বীকার করে। এরপর তাদের দেখানো মতে সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের শরণখোলা রেঞ্জের পাথুরিয়া নদীর পূর্বপাড়ের গভীর নলবোনের মধ্যে থেকে তিনটি একনালা বন্দুক, ১০ রাউন্ড বন্দুকের কার্তুজ, দু’টি দা, একটি হাতুড়ি, একটি বাজিফুটানো যন্ত্র এবং জেলেদের কাছ থেকে মুক্তিপণ আদায় কাজে ব্যবহৃত একটি খাতা উদ্ধার করা হয়। এঘটনায় শরণখোলা থানায় অস্ত্র আইনে একটি মামলা করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে ১১ জলদস্যু গ্রেপ্তার, দেশীয় অস্ত্র জব্দ
প্রেসব্রিফিংয়ে পুলিশ সুপার কে এম আরিফুল হক আরও জানান, এর আগে গত বছর ২১ ডিসেম্বর সুন্দরবনে দস্যুদের আস্থানা থেকে মুক্তিপণের দাবিতে অপহৃত ১১ জেলেকে উদ্ধার করা হয়। এসময় জলদস্যু বাহিনীর তিন সদস্যকে আটক করা হয়।
গত ৬ মাসে সুন্দরবনের জলদস্যু নয়ন বাহিনীর পাঁচ সদস্যকে আটক করা হয়েছে। এখনো বাহিনী প্রধান নয়নসহ চারজন পলাতক রয়েছে। তাদের ধরতে বাগেরহাট পুলিশ চেষ্টা চালাচ্ছে বলে পুলিশ সুপার জানান।
প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালের ৩১ মে সুন্দরবনের কুখ্যাত জলদস্যু মাস্টার বাহিনীর প্রধানসহ ১০ দস্যুর আত্নসমর্পণের মধ্যে দিয়ে শুরু হয় দস্যুদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার প্রক্রিয়া।
এরপর কয়েক দফায় ৩২টি দস্যু বাহিনী প্রধানসহ ৩২৮ জলদস্যু আত্নসমর্পণ করে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসে। ২০১৮ সালের ১ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সুন্দরবনকে দস্যুমুক্ত ঘোষণা করেন। ওই সব দস্যুদের আত্নসমর্পণের মধ্যে দিয়ে সুন্দরবনে জলদস্যু অধ্যায়ের পরিসমাপ্তি ঘটে। স্বস্তি ফিরে আসে জনজীবনে।
তবে সুন্দরবনে আবারও দস্যুদের তৎপরতা শুরু হয়েছে।
আরও পড়ুন: ভোলায় দেশীয় অস্ত্রসহ ৬ জলদস্যু গ্রেপ্তার
চট্টগ্রামে অপহৃত ৪ জেলে উদ্ধার, ৫ জলদস্যু গ্রেপ্তার
সুন্দরবনে মাছ ধরা ও পর্যটনে ৩ মাসের নিষেধাজ্ঞা ১ জুন থেকে
মাছ ও বন্যপ্রাণীর বংশবৃদ্ধি, বিচরণ এবং প্রজনন কার্যক্রমের সুরক্ষায় আগামী ১ জুন থেকে তিন মাসের জন্য বন্ধ হচ্ছে সুন্দরবন। এ সময় পর্যটক প্রবেশ ও সাধারণ মানুষের চলাচলসহ নদী-খালে মাছ শিকারও বন্ধ থাকবে।
এছাড়া এবারের মওসুমে সরকারি সাপ্তাহিক ছুটির শনিবার শেষ দিন, তাই দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে বনের সৌন্দর্য্য উপভোগ করতে করমজলে ভিড় করছে দেশ-বিদেশি দর্শনার্থীরা।
সুন্দরবন মৎস্য সম্পদের ভান্ডার নামে পরিচিত। তাই মাছের প্রজনন ও বন্যপ্রাণী বংশবৃদ্ধি নির্বিঘ্ন করতে ১ জুন থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত সব ধরনের নৌযান, পর্যটকবাহী লঞ্চ-জালীবোটসহ সকল প্রকারের জেলে বাওয়ালি বনে প্রবেশ নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
এই নিষেধাজ্ঞার ফলে গত ২০ মে থেকে সাগরে মাছ ধরা বন্ধ রাখা হয়েছে। এ নির্দেশনা থাকবে আগামী ২৩ জুলাই পর্যন্ত।
এছাড়া আগামী ১ জুন থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত সুন্দরবনে মাছ ধরতে পারবেনা জেলেরা। পাশাপাশি ঢুকতে পারবে না কোনো পর্যটকও।
এ সময়ের মধ্যে কোন নৌযানও চলাচল করতে পারবে না সুন্দরবনসহ কোনো পর্যটক স্পটে।
আরও পড়ুন: সুন্দরবনে ১০০ দিন ও বঙ্গোপসাগরে ৬৫ দিন মাছ ধরা নিষিদ্ধ
বন বিভাগ এ মৎস্য অফিসের তথ্যানুযায়ী, এখন সুন্দরবনে ২৫১ প্রজাতির মাছের প্রজনন মওসুম তাই বনবিভাগ থেকে জেলেদের জন্য সকল প্রকারের পাস পারমিট বন্ধ রাখা হবে।
বনের নদী ও খালে নৌযান চলাচল করলে মাছের ডিম ছাড়তে সমস্যা হবে তাই সকল ধরনের নৌযান চলাচলও বন্ধ থাকবে।
বনে ৩১৫ প্রজাতির পাখি, ৩৫ প্রকারের সরীসৃপ, ৪২ প্রকারের স্তন্যপায়ী প্রাণী রয়েছে। এখন তাদের প্রজনন মওসুম চলছে, এ জন্যই এমন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে সরকার।
এদের মধ্যে প্রধান বন্যপ্রাণী হলো- বাঘ, হরিণ, শুকর, বানর, কুমির, ডলফিন, ভোদড়, বন বিড়াল ও মেছ বাঘ।
এছাড়া অন্যান্য বন্যপ্রাণীর প্রজননের ওপর গুরুত্ব বেশি দেয়া হয়েছে বলে জানায় বন বিভাগ।
এই সময় নদী ও খালে নৌযান বা পর্যটকরা বনের অভ্যন্তরে চলাচলের সময় শব্দ করলে প্রজনন বিঘ্নিত হবে। তাই নৌকা বা ট্রলার নিয়ে মাছ ধরা নিষিদ্ধ।
আর পর্যটকদের জন্য দেশের একমাত্র বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্র করমজল, পর্যটক স্পট হারবাড়িয়া, কটকা, কচিখালী, জিরোন পযেন্ট, নিল কমল, দুবলা, আলোর কোল, টাইগার পয়েন্ট কলাগাছিয়াসহ ১১টি স্পটে বন্ধ হচ্ছে পর্যটক প্রবেশ।
সব মিলিয়ে পর্যটক ও জেলেদের মাছ আহরণ এই তিন মাস বন্ধ ঘোষণা করছে সরকারের পক্ষ থেকে।
সে জন্য মওসুমের শেষ সময় দেশের দূর দূরন্ত থেকে পর্যটকরা করমজলে ভিড় করছে, আসছে দেশ-বিদেশি দর্শনার্থীরা।
এ ব্যাপারে করমজল বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হাওলাদার আজাদ কবির বলেন, সরকার তার রাজস্বের দিকে না তাকিয়ে সুন্দরবনের সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য এবং বনের গহীন মাছের ও বন্য প্রাণীর বংশ বৃদ্ধির লক্ষ্যে এবং পশু পাখির প্রজনন নির্বিঘ্ন রাখতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বন বিভাগের পক্ষ থেকে।
তিনি আরও বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে বন্ধের এই তিন মাস হরিণসহ সকল প্রকারের বন্যপ্রাণী শিকার ও সুন্দরবনের নদী-খালে বিষ দিয়ে মাছ আহরণ বন্ধে কঠোর অবস্থানে থাকবে বন বিভাগ।
আরও পড়ুন: সুন্দরবনে অবৈধ ৫টি ট্রলার ও ৪টি নৌকাসহ ১০ জেলে আটক
বঙ্গোপসাগরে দুই মাসের মাছ ধরার নিষেধাজ্ঞা শুরু আজ
বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরার ওপর সরকারের জারি করা ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা আজ শনিবার (২০ মে) থেকে শুরু হয়েছে।
মাছের নির্বিঘ্ন প্রজনন নিশ্চিত করতে বঙ্গোপসাগরে ২৩ জুলাই এবং সুন্দরবনে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত এ নিষেধাজ্ঞা বলবৎ থাকবে।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের জারি করা নোটিশে বলা হয়েছে, আগামী ২৩ জুলাই পর্যন্ত নৌযান ও নৌকার মাধ্যমে সব ধরনের মাছ ধরা নিষিদ্ধ থাকবে।
এই সময়ে বাগেরহাট জেলার ১২ হাজার জেলেকে দুই দফায় ৮৬ কেজি করে চাল দেওয়া হবে।
এছাড়া বনের নদী ও খালে মাছের নিরাপদ প্রজনন নিশ্চিত করতে ১ জুন থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত সুন্দরবনে সব ধরনের পর্যটকবাহী নৌযান চলাচল করতে পারবে না।
তিনমাস সুন্দরবনে পর্যটকদের আগমন ও ভ্রমণ বন্ধ থাকবে বলে জানিয়েছেন সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মোহাম্মদ বেলায়েত হোসেন।
আরও পড়ুন: সুন্দরবনে ১০০ দিন ও বঙ্গোপসাগরে ৬৫ দিন মাছ ধরা নিষিদ্ধ
তিনি বলেন, ২০ মে থেকে মৎস্য অধিদপ্তরের জারিকৃত সাগরে মাছ ধরা নিষেধাজ্ঞার সময়ে সুন্দরবনেও মাছ আহরণ বন্ধ থাকবে। এছাড়া মাছ ও বন্যপ্রাণীর প্রজনন মৌসুম হওয়ায় ১ জুন থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত সুন্দরবনের নদী-খালে কোনো প্রকার মাছ শিকার করতে পারবেন না জেলেরা। একইসঙ্গে, মাছ ও বন্যপ্রাণীর প্রজনন নির্বিঘ্ন করতে সুন্দরবনে পর্যটকবাহী নৌযান চলাচল বন্ধ থাকবে। এই সময়ে সুন্দরবনে প্রবেশের জন্য জেলে ও দর্শনার্থীদের কোনো প্রকার পাস-পারমিট দেওয়া হবে না।
নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে কেউ সুন্দরবনে প্রবেশ করলে আইনের আওতায় আনা হবে বলে জানান এই কর্মকর্তা।
বাগেরহাট জেলা মৎস্য কর্মকর্তা এ.এস.এম রাসেল বলেন, সামুদ্রিক মাছের প্রজনন বৃদ্ধিতে সামুদ্রিক মৎস্য আইন-২০২০ এর ৩ ধারার ২ উপধারা অনুযায়ী এই নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। এই নিষেধাজ্ঞা সঠিকভাবে প্রতিপালনের জন্য মৎস্য বিভাগ কঠোর অবস্থানে থাকবে। বাংলাদেশি সমুদ্রসীমায় অভিযান চালানো হবে। যারা এই নিষেদ্ধাজ্ঞা অমান্য করবে তাদেরকে আইনের আওতায় আনা হবে।
এই সময়ে প্রায় ১২ হাজার জেলেকে দুই দফায় ৮৬ কেজি করে চাল দেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।
আরও পড়ুন: বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরার ওপর ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা শুরু ২০ মে থেকে: মন্ত্রণালয়
সুন্দরবনে অবৈধ ৫টি ট্রলার ও ৪টি নৌকাসহ ১০ জেলে আটক
সুন্দরবনে অবৈধভাবে প্রবেশ করে মাছ ধরার সময় ১০ জন জেলেকে আটক করেছে বন বিভাগ।
এ সময় তাদের কাছ থেকে ৫টি ট্রলার, ৪টি নৌকা, বেশকিছু জাল এবং মাছধরার সরঞ্জাম জব্দ করা হয়।
আরও পড়ুন: চাঁদপুরে মেঘনা নদীতে জাটকা ধরায় ২৫ জেলে আটক
মঙ্গলবার সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের শরণখোলা রেঞ্জের শেলার চর ও নারিকেল বাড়িয়াসহ বিভিন্ন এলাকায় অভিয়ান চালিয়ে ওই জেলেদের হাতেনাতে আটক করা হয়।
আটকদের বিরুদ্ধে বুধবার মামলা দায়ের করেছে বন বিভাগ।
আটক জেলেদের বাড়ি বাগেরহাট ও বরগুনা জেলার বিভিন্ন এলাকায় বলে জানায় বন বিভাগ।
বুধবার সন্ধ্যায় সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মুহাম্মদ বেলায়েত হোসেন জানান, ওই জেলেরা অবৈধভাবে সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জ এলাকায় প্রবেশ করে অনুমতি ছাড়া (পাশ) বিভিন্ন নদী-খালে মাছ ধরছিল।
খবর পেয়ে বন বিভাগের সদস্যরা অভিযান চালিয়ে তাদেরকে আটক করে।
আরও পড়ুন: চাঁদপুরে মেঘনায় জাটকা ধরায় ২৫ জেলে আটক, ১৯ জনকে কারাদণ্ড
মেঘনায় মাছ শিকারে দায়ে ১৩ জেলে আটক
সুন্দরবনে আজ থেকে মধু আহরণ শুরু
সুন্দরবনে আজ থেকে মধু আহরণ মৌসুম শুরু হচ্ছে। শনিবার (০১ এপ্রিল) দুপুর ১২টায় পশ্চিম সুন্দরবনের সাতক্ষীরা রেঞ্জ এলাকায় মধু আহরণের মধ্য দিয়ে মধু মৌসুমের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়।
পশ্চিম বন বিভাগের বুড়িগোয়ালিনী বন অফিস সংলগ্ন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় চত্বরে মৌয়ালদের প্রশিক্ষণের পর মধু আহরণের অনুমতিপত্র (পাস) দেওয়া হবে।
আরও পড়ুন: সুন্দরবনে বাঘ গণনার ক্যামেরা নষ্ট ও চুরি, আটক ১৪
এছাড়া এই পাস নিয়ে মৌয়ালরা গভীর বনে চলে যাবেন মধু সংগ্রহ করতে।
এ বিষয়ে সুন্দরবন পশ্চিম বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) আবু নাসের মোহসিন হোসেন বলেন, সুন্দরবনে নির্বিঘ্নে মধু আহরণের জন্য বন বিভাগের টহল জোরদার করা হয়েছে।
এছাড়া এবার বন্যপ্রাণীর আক্রমণ থেকে রক্ষার জন্য মৌয়ালদের সাবধানে চলাফেরার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
তিনি জানান, এ বছর সুন্দরবনে তিন হাজার কুইন্টাল বা তিন লাখ কেজি মধু ও ৮০০ কুইন্টাল মোম আহরণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। সুন্দরবনের সাতক্ষীরা রেঞ্জে সবচেয়ে বেশি মধু পাওয়া যায়।
বন বিভাগের তথ্যমতে, ২০২১ সালের মধু ও মোম আহরণের জন্য এক হাজার ১২টি অনুমতিপত্র (পাস) দেওয়া হয়। এসব অনুমতিপত্রের বিপরীতে ছয় হাজার ৭৯৭ জন মৌয়াল সুন্দরবনে যান।
তারা তিন হাজার ৩৭৬ দশমিক ৯০ টন মধু ও ১১৩ দশমিক ০৯ টন মোম আহরণ করেন। আর মধু থেকে ২৫ লাখ ৬৪ হাজার ৩৬৩ টাকা ও মোম থেকে ১০ লাখ ২৫ হাজার ৮৫০ টাকা রাজস্ব আয় হয়।
২০২২ সালে সুন্দরবনের মধু থেকে রাজস্ব আয় হয় ৩৬ লাখ ৯৩ হাজার ৬০০ টাকা এবং মোম থেকে ১৫ লাখ ৩১ হাজার ২০০ টাকা।
সে বছর সুন্দরবন থেকে দুই হাজার ৩২০ কুইন্টাল মধু ও ৬৯৬ কুইন্টাল মোম পাওয়া যায়।
আরও পড়ুন: সুন্দরবনের বাঘের মুখ থেকে বেঁচে ফিরলেন আব্দুল ওয়াজেদ
৫ ঘণ্টা পর সুন্দরবনে পথ ভুলে আটকে পড়া ১০ পর্যটক উদ্ধার
সুন্দরবনের বাঘের মুখ থেকে বেঁচে ফিরলেন আব্দুল ওয়াজেদ
সুন্দরবনের বাঘের মুখ থেকে প্রাণ নিয়ে বেঁচে ফিরেছেন সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার বৈশখালী গ্রামের মৃত জব্বার আলী গাজীর ছেলে আব্দুল ওয়াজেদ (৪৫)।
বুধবার (২৯ মার্চ) ভোর ৪টার দিকে তাকে নিয়ে লোকালয়ে ফিরেছেন তার ছোট ভাই লিয়াকত হোসেন।
এর আগে মঙ্গলবার (২৮ মার্চ) সকাল ৯টার দিকে সুন্দরবনের সাতক্ষীরা রেঞ্জের কাছিকাটার দাড়গাঙে কাঁকড়া আহরণের সময় বাঘের আক্রমণের শিকার হন আব্দুল ওয়াজেদ।
আরও পড়ুন: সুন্দরবনে অর্ধগলিত বাঘের মৃতদেহ উদ্ধার
আব্দুল ওয়াজেদের ছোট ভাই লিয়াকত হোসেন জানান, সুন্দরবন সাতক্ষীরা রেঞ্জের কাছিকাটার দাড়গাঙে কাঁকড়া শিকার করছিলেন। হঠাৎ করেই মঙ্গলবার সকাল ৯টার দিকে একটি বাঘ ভাইয়ের ওপর হামলে পড়ে। এসময় নৌকায় থাকা গরানের লাঠি নিয়ে তিনি উচ্চস্বরে শব্দ করেন এবং সেই সঙ্গে বাঘের চোখে চোখ রেখে মোকাবিলার চেষ্টা করেন। এক পর্যায়ে বাঘটি ভাইকে ছেড়ে দিয়ে চলে যায়। পরে তিনি ভাইকে উদ্ধার করে লোকালয়ের উদ্দেশ্যে রওনা হন।
তিনি আরও জানান, ভাইয়ের পিঠ, ঘাড় ও মাথার সামান্য অংশ আক্রান্ত হয়েছে। তাকে এখন বাড়িতে রেখেই চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
সুন্দরবন সাতক্ষীরা রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক এমকেএম ইকবাল হোসাইন চৌধুরী বলেন, সুন্দরবনের ভারতীয় সীমান্ত এলাকায় একজন জেলে বাঘের আক্রমণের শিকার হয়েছিল। তবে, তার নামে পাস পারমিট ছিল না।
আরও পড়ুন: সুন্দরবনে বাঘ গণনার ক্যামেরা নষ্ট ও চুরি, আটক ১৪
সুন্দরবন থেকে গরু আনতে গিয়ে বাঘের মুখে কৃষক
শৈবাল: সুন্দরবন উপকূলে স্বপ্ন দেখাচ্ছে কৃষকদের
সামুদ্রিক শৈবাল বাণিজ্যিক চাষের সম্ভাব্যতা যাছাই চলছে। সফলতাও পেয়েছে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট। এতে নতুন আয়ের পথ সৃষ্টি হয়েছে সুন্দরবন উপকূলে। সুন্দরবন পশ্চিম বন বিভাগ সংলগ্ন খুলনার কয়রায় ও সাতক্ষীরার শ্যামনগরে সামুদ্রিক শৈবাল চাষের সম্ভাব্যতা যাচাই করে সফলতা পায় সরকারের কৃষির উন্নয়ন নিয়ে কাজ করা সংস্থাটি।
বর্তমানে সামুদ্রিক শৈবালের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে আন্তর্জাতিক বাজারেও। ফলে সুন্দরবন উপকূলীয় এলাকায় চাষ সম্প্রসারণ করার পাশাপাশি বাজারজাতের ব্যবস্থা করতে পারলে নতুন আয়ের দুয়ার খুলবে।
শ্যামনগর উপজেলার দাতিনাখালীর মো. শাহাবুদ্দিন আহমেদ বলেন, প্রায় দু’বছর আগে প্রশিক্ষণ দেয়ার পরে বীজ দিয়েছিল। এখানে আমরা ৩০ জন চাষ করি। তেমন কোন কষ্ট নেই। মাঝেমধ্যে রশিতে আবর্জনা বাধলে ছাড়িয়ে দিতে হয়। দুই রকম বীজ দিয়েছিল। এর মধ্যে বারি ১ খুব ভালো হয়।
তিনি আরও বলেন, শৈবাল কাঁচা অবস্থায় আমাদের কাছ থেকে স্যারেরা প্রতি কেজি ১২০ টাকা দরে কিনে নেয়। আমি এ পর্যন্ত ১০ হাজার টাকার শৈবাল বিক্রি করেছি। বড় আকারে চাষ করতে পারলে তেমন কোনো পরিশ্রম ছাড়াই বেশ আয় যোগ করা যাবে।
আরও পড়ুন: শাবি অধ্যাপকের উদ্ভাবন: স্থলজ পরিবেশে হবে সামুদ্রিক শৈবাল
খুলনার কয়রা উপজেলার টেপাখালী গ্রামের বাসন্তী মুন্ডার বলেন, নোনা পানির মাছের ঘেরের মধ্যে রশি টানিয়ে শৈবালের বীজ বেঁধে রেখে দেই। এই শৈবাল পানি থেকে সরাসরি পুষ্টি নিয়ে বাড়ে। এদের কোনো মূল, কাণ্ড, পাতা, ফুল বা ফল হয় না। এটা দেখতে সেমাইয়ের মত।
তিনি বলেন, সরেজমিন কৃষি গবেষণা বিভাগ থেকে প্রশিক্ষণ দেয়ার পাশাপাশি বীজসহ যাবতীয় উপকরণের ব্যবস্থা করেছে।
একই উপজেলার ছয় নং কয়রা গ্রামের গোলাম মোস্তফাও মৎস্য ঘেরের মধ্যেও একইভাবে শৈবাল চাষ করছেন।
তিনি বলেন, পানির এক ফুট নিচ দিয়ে শক্ত রশি টানটান করে টানানো হয়েছে, বাঁশের সঙ্গে রশি বাঁধা রয়েছে। সেই রশিতে ১৫ সেন্টিমিটার পরপর শৈবালের বীজ বেঁধে দেয়া হয়। কোনো পরিচর্যা ছাড়াই বড় হয়। পরে আমাদের কাছ থেকে স্যারেরা নিয়ে যাচ্ছে। শুনেছি এগুলো অনেক কাজে লাগে, মানুষেও খায়।
পরীক্ষামূলক সামুদ্রিক শৈবাল চাষ চলছে সুন্দরবন উপকূলীয় শ্যামনগরের মুন্সিগঞ্জের পালবাড়িওতে। সুন্দরবন উপকূলের প্রায় শতাধিক চাষির ঘেরের নোনাপানির নিচে রশিতে দুলছে নতুন স্বপ্ন।
সরেজমিন গবেষণা বিভাগ, কয়রার (এমএলটি সাইট) সহকারী বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা জাহিদ হাসান বলেন, কৃষকদের উৎপাদন ভালো হচ্ছে। যা উৎপাদন হচ্ছে সেটা শুকিয়ে রেখে দেয়া হচ্ছে। বাজারজাতের ব্যবস্থা করতে পারলে কৃষকরা আরও আগ্রহী হবে এবং লাভবান হবে।
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের এগ্রিটেকনোলজি ডিসিপ্লিনের সহযোগী অধ্যাপক ড. দেবেষ দাস (উবনবংয উধং) বলেন, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের এগ্রোটেকনোলজি ডিসিপ্লিনের ল্যাবরেটরির আওতায় স্বল্প পরিসরে একটি গবেষণা প্রকল্প চলমান রয়েছে। এখনও ফলাফল পাওয়া যায়নি।
তিনি আরও বলেন, সামুদ্রিক শৈবাল মানুষের ওষুধ তৈরিতে ব্যবহৃত হয়। এটি গুড়া করে হারবাল পণ্য হিসেবে মানুষ ব্যবহার করতে পারে। প্রসাধনী তৈরিতেও এটির গুরুত্ব রয়েছে। এছাড়া কৃষিক্ষেত্রে এটির ব্যাপক গুরুত্ব রয়েছে। শুকিয়ে পাউডার হিসেবে মাটিতে ব্যবহার করলে মাটির পুষ্টি ধারণ ও পানি শোষণ ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে, লবণাক্ততার প্রভাব কমাবে।
এছাড়া ক্ষতিকর ব্যাকটোরিয়া যেগুলো ফসলে রোগ সৃষ্টি করে সেটা নিয়ন্ত্রণেও কাজ করে।
আরও পড়ুন: রঙে রঙিন হয়ে উঠেছে দেশের সবচেয়ে বড় শিমুল বাগান
খুলনায় দুই ভোল মাছ সাড়ে ১৮ লাখ টাকায় বিক্রি!
সুন্দরবনের দুবলার চরে বৃহস্পতিবার রাতে ফারুক নামের এক জেলের জালে ধরা পড়েছে সাড়ে ৬৩ কেজির দুটি ভোল মাছ। সাড়ে ১৮ লাখ টাকায় মাছ দুটি কিনেছেন মোংলার ব্যবসায়ী আল-আমিন।
এর মধ্যে একটির ওজন ৩৬ কেজি ৫০০ গ্রাম, আরেকটির ওজন ২৭ কেজি।
ভালো দামে বিক্রির জন্য প্রক্রিয়াজাতের পর ভোল মাছ দুটি চট্টগ্রামে পাঠিয়েছেন ওই ব্যবসায়ী। এ সময় মাছ দু’টি দেখতে ভিড় জমান উৎসুক লোকজন।
এ মাছের বিভিন্ন অংশ ঔষধি কাজে ব্যবহৃত হয়ে বলেও দাম অনেক বেশি বলে জানান স্থানীয় মৎস্য ব্যবসায়ীরা।
তারা জানান, বিগত ১০ বছরেও এত বড় মাছ ওঠেনি মোংলার বাজারে। প্রায় বিলুপ্তির পথে এ ভোল প্রজাতির মাছ। তবে মাঝে মধ্যে দুবলার চরের দু-এক জেলের জালে ধরা পড়ে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে সাকার মাছ নিষিদ্ধ করেছে সরকার
মোংলার মাছ বাজারের আড়তদার মেসার্স জয়মনি ফিশের মালিক আল-আমিন বলেন, বঙ্গোপসাগর সংলগ্ন পূর্ব সুন্দরবনের দুবলার চরে জেলে ফারুক হোসেনের জালে বৃহস্পতিবার রাতে বড় দুটি ভোল মাছ ধরা পড়ে। এর মধ্যে বড়টির ওজন সাড়ে ৩৬ কেজি আর ছোটটির ওজন ২৭ কেজি। মাছ দুটি শুক্রবার সকালে দুবলার চরের আড়তে নিলামে বিক্রির জন্য ওঠানো হয়। এ সময় ২৫ ব্যবসায়ী অংশ নেন।
আল-আমিন আরও বলেন, নিলাম ডাকে সর্বোচ্চ দামে মাছ দুটি আমি কিনে নিই। বড়টি ১১ লাখ ও ছোটটি সাড়ে সাত লাখ টাকা দাম পড়েছে। এরপর মাছ দুটি চর থেকে আমার মোংলার আড়তে নিয়ে আসি। বরফ ও পলিথিনে মুড়িয়ে শনিবার বিকালে চট্টগ্রামে পাঠানো হয়েছে।
মোংলা মৎস্য সমবায় সমিতির সভাপতি মো. আফজাল ফারাজী বলেন, ভোল মাছ এই অঞ্চলে খুব কম পাওয়া যায়। পশুর নদী বা সুন্দরবন সংলগ্ন নদীতে আগে পাওয়া গেলেও এখন দুর্বৃত্তরা বিষ দিয়ে মাছ ধরায় পাওয়া যায় না। এ জন্য আমাদের আড়তেও আসে না। দুবলার চরে পাওয়া মাছ দুটি আড়তে এসেছে। সেগুলো চট্টগ্রামে পাঠানো হয়েছে। সেখানে আরও বেশি দাম পাওয়া যাবে।
তিনি বলেন, ভোল মাছের ফুলকি ও পটকার দাম প্রচুর। এই মাছের পটকা ও বালিশ রফতানি হয়। শুনেছি এসব দিয়ে মেডিসিন তৈরি করা হয়।
সামুদ্রিক ভোল মাছ খুবই দামি উল্লেখ করে মোংলা উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম বলেন, এই মাছের বায়ুথলি দিয়ে এক ধরনের সুতা তৈরি করা হয়। এই সুতা বিদেশে ওপেন হার্ট সার্জারির কাজে লাগে। এছাড়া বিয়ার তৈরির কাজেও ব্যবহৃত হয়।
আরও পড়ুন: ২৮ কেজির ভোল মাছ বিক্রি হলো সাড়ে ৮ লাখ টাকায়!
ব্রহ্মপুত্র নদে বর্শিতে ধরা পড়লো ৬২ কেজির বাঘাইর মাছ!
৫ ঘণ্টা পর সুন্দরবনে পথ ভুলে আটকে পড়া ১০ পর্যটক উদ্ধার
পথ হারিয়ে সুন্দরবনে আটকে পড়া ১০ পর্যটককে উদ্ধার করেছে সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলা প্রশাসন। তাদের ট্রলারের তেল ফুরিয়ে যাওয়ার প্রায় পাঁচ ঘণ্টা পর শুক্রবার রাত ১০টায় সবাইকে সুস্থ অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আক্তার হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
আরও পড়ুন: ৯৯৯ এ কল: কাপ্তাই লেক থেকে ৭ পর্যটক উদ্ধার
তিনি বলেন, শুক্রবার যশোর থেকে আসা ১০ জন পর্যটক ট্রলার নিয়ে সুন্দরবনে যান। তারা কলাগাছিয়া ইকো-ট্যুরিজম সেন্টার ভ্রমণ শেষে ফেরার সময় পথ ভুলে সুন্দরবন গহীনে খালের মধ্যে চলে যান। ঘুরতে ঘুরতে এক পর্যায়ে বিকালের দিকে তাদের ট্রলারের তেল ফুরিয়ে যায়।
ইউএনও বলেন, এ সময় ওই নৌকায় থাকা পর্যটকরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। তারা অন্য নৌকায় অবস্থানকারী পর্যটকদের বিষয়টি জানান এবং প্রশাসনের কাছে সাহায্য কামনা করেন।
তিনি বলেন, তাদের কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে পরবর্তীতে বনবিভাগের দুইটি টিম, সাংবাদিক আব্দুল হালিমসহ ট্যুরিস্ট পুলিশের দুইটি টিম, গাবুরা ডুমুরিয়া ওয়ার্ডের মেম্বরের একটি টিম, বোট মালিকের অন্য একটি টিমসহ মোট ছয়টি উদ্ধারকারী টিম সুন্দরবনের ভিতরে পাঠানো হয়।
ইউএনও আক্তার হোসেন জানান, উদ্ধারকারী দল অনেক খোঁজাখুজির পর রাত ১০টার দিকে তাদের সবাইকে সুস্থ অবস্থায় উদ্ধার করা হয়।
তিনি আরও জানান, উদ্ধার করা পর্যটকরা উপজেলা প্রশাসনের এ উদ্যোগকে স্বাগত জানান এবং উদ্ধার কাজে জড়িত সাংবাদিক, ট্যুরিস্ট পুলিশ, বনবিভাগসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন।
আরও পড়ুন: একদিনে সমুদ্রে ভেসে যাওয়া ৩ শতাধিক পর্যটক উদ্ধার
বঙ্গোপসাগরে নৌযান বিকল, ৯৯৯-এ ফোনে ১০০ পর্যটক উদ্ধার
সুন্দরবনে বাঘ গণনার ক্যামেরা নষ্ট ও চুরি, আটক ১৪
সুন্দরবনে বাঘ গণনার ক্যামেরা নষ্ট ও চুরির ঘটনায় ১৪ জেলে ও মাঝিকে আটক করেছে বন বিভাগ। সুন্দরবনের বিভিন্ন স্থান থেকে তাদের আটক করা হয়। পরে বৃহস্পতিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) চুরির ঘটনায় সাতক্ষীরা আদালতে দায়ের করা দুটি মামলায় তাদের গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়।
গ্রেপ্তাররা হলেন– জাহাঙ্গীর হোসেন, আব্দুল ওহাব, আবুল হোসেন, মো. মহিবুল্লাহ, নুরুল আলম, আব্দুর রহিম, আমজাদ হোসেন, আছাদুল ইসলাম, রিপন হোসেন, বাবর আলী, আমজাদ হোসেন (২), ইউনুস আলী, মুন্নাফ গাজী ও আকবর হোসেন। তারা সবাই সাতক্ষীরার শ্যামনগর এবং খুলনার কয়রা উপজেলার বাসিন্দা।
আরও পড়ুন: অবৈধ পথে ভারত যাওয়ার সময় বেনাপোলে আটক ১৪
জানা যায়, প্রতি বছরের মতো গত ১ জানুয়ারি থেকে সুন্দরবনে বাঘ গণনার কাজ শুরু করে বন বিভাগ। বাঘ গণনার জন্য পশ্চিম সুন্দরবনের বিভিন্ন অংশে ৩৭৬টি ক্যামেরা বসানো হয়। প্রথম দিকে পশ্চিম সুন্দরবনের সাতক্ষীরা রেঞ্জের নোটাবেঁকী এলাকা থেকে দুষ্কৃতিকারীরা বাঘ গণনার কাজে ব্যবহৃত ৮টি ক্যামেরা নামিয়ে নিয়ে ভাঙচুর করে এবং মেমোরি কার্ড নিয়ে চলে যায়।
সুন্দরবনের বন বিভাগের কর্মকর্তারা চুরির বিষয়টি ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে বুঝতে পারেন। অনুসন্ধান করে সুন্দরবনের নোটাবেঁকী এলাকা থেকে আটটি ক্যামেরা চুরি হওয়ার বিষয়ে তারা নিশ্চিত হন। সে অনুযায়ী ১০ ফেব্রুয়ারি থেকে সুন্দরবনের দুইটি স্টেশন দিয়ে যাতায়াত বন্ধ করে দেয় বন বিভাগ।
অন্যদিকে, ক্যামেরা চুরির অভিযোগে গ্রেপ্তার রিপনের বাবা আমির হোসেন দাবি করেছেন, তার ছেলে অন্যদের সঙ্গে অভয়ারণ্যে মাছ ধরতে গিয়ে আটক হন। পরে তাকে ভিন্ন মামলায় জড়ানো হয়েছে।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, যারা সুন্দরবনে বাঘ–হরিণ শিকারের সঙ্গে জড়িত ক্যামেরা তারাই অপসারণ করতে পারে। অথচ প্রকৃত অপরাধীদের আটকে ব্যর্থ হয়ে বন বিভাগ নিরীহ জেলেদের মিথ্যা অভিযোগে ফাঁসিয়ে দিয়েছে।
সাতক্ষীরা রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক এসিএফ ইকবাল হোসাইন চৌধুরী বলেন, ক্যামেরা চুরির ঘটনায় গত ১৪ ও ১৫ ফেব্রুয়ারি মোট ১৪ জনকে আটক করা হয়। সাতক্ষীরার আদালতে পৃথক দুটি মামলা দায়েরের পর তাদের গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
এসিএফ আরও বলেন, সুন্দরবনের মধ্যে ঢুকে যারা নানা ধরনের অপকর্ম করে থাকে কিংবা অপতৎপরতায় জড়িত তারা এসব ক্যামেরা সরিয়েছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত যারা হোক সবাইকে দ্রুত চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা হবে বলেও তিনি দাবি করেন।
ক্যামেরা চুরির সঙ্গে জড়িতদের চিহ্নিত করার জন্য বন বিভাগের একাধিক দল কাজ করছে বলেও জানান তিনি।
আরও পড়ুন: দিল্লিতে সাম্প্রদায়িক সহিংসতার ঘটনায় আটক ১৪
ভুয়া করোনা নেগেটিভ সার্টিফিকেট: র্যাবের হাতে আটক ১৪