সুন্দরবন
সুন্দরবনে অর্ধগলিত বাঘের মৃতদেহ উদ্ধার
বন বিভাগ সুন্দরবন সাতক্ষীরা রেঞ্জের বুড়িগোয়ালিনী বনস্টেশন অফিসের সদস্যরা সুন্দরবন থেকে একটি অর্ধগলিত বাঘের মৃতদেহ উদ্ধার করেছে।
রবিবার সকাল ৯টার দিকে বুড়িগোয়ালিনী স্টেশন কর্মকর্তা (এসও) নূর আলমের নেতৃত্বে বনকর্মীরা সুন্দরবনে কলাগাছিয়া সংলগ্ন মুরালী খাল নামক বনের ভিতর থেকে অর্ধগলিত বাঘের মৃতদেহ উদ্ধার করে।
আরও পড়ুন: সুন্দরবনের ফরেস্ট অফিসের কাছে ৩ বাঘ, আতঙ্কিত বনরক্ষীরা
বনস্টেশন কর্মকর্তা (এসও) নূর আলম জানান, সকালের দিকে জেলেদের কাছে খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থল থেকে একটি অর্ধগলিত বাঘের লাশ উদ্ধার করা হয়।
বাঘটি আনুমানিক এক মাস আগে মারা গেছে বলেও তিনি জানান।
সাতক্ষীরা রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) একেএম ইকবাল হোসেন চৌধুরী সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ঘটনাস্থল থেকে মৃত বাঘের হাড়গোড় উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় শ্যামনগর থানায় সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে।
তবে বাঘটি মৃত্যুর কারণ জানা যায় নি। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
শ্যামনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নূরুল ইসলাম বাদল সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, মৃত বাঘ উদ্ধারের ঘটনায় শ্যামনগর থানায় জিডি হয়েছে।
আরও পড়ুন: সুন্দরবন থেকে গরু আনতে গিয়ে বাঘের মুখে কৃষক
বাঘের চামড়াসহ ২ চোরা শিকারী আটক
সুন্দরবন থেকে গরু আনতে গিয়ে বাঘের মুখে কৃষক
বাগেরহাটের সুন্দরবনের অভ্যন্তরে ঢুকে পড়া গৃহপালিত গরু আনতে গিয়ে বাঘের আক্রমণের শিকার হয়েছেন এক কৃষক। পরে আহতাবস্থায় ৬২ বছর বয়সী মো. ফজলু গাজীকে শুক্রবার সকালে বাগেরহাট জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
মঙ্গলবার দুপুরে বাঘের আক্রমণের শিকার হয়েছিলেন তিনি।
হাসাপতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার তার ডান পায়ের ক্ষতস্থানে অস্ত্রোপচার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
আরও পড়ুন: ব্রহ্মপুত্র নদে বর্শিতে ধরা পড়লো ৬২ কেজির বাঘাইর মাছ!
ফজলু গাজীর বাড়ি সুন্দরবন সংলগ্ন বাগেরহাটের শরণখোলার উপজেলার উত্তর রাজাপুর গ্রামে।
তার পরিবারের সদস্যরা জানায়, বনে প্রবেশের অনুমতি ছিলো না। তাই ‘ভয়ে’ দুদিন কাউকে কিছু জানায়নি তারা।
ফজলুর স্ত্রী ফিরোজা বেগম বলেন, তাদের বাড়ি সুন্দরবনের একদম কাছেই। একটা বেড়িবাঁধ, তারপর ছোট নদীর অপর পাশে বন।
মঙ্গলবার সকালে তাদের একটি গরু ছাড়া পেয়ে শুকিয়ে যাওয়া ভোলা নদী পেরিয়ে সুন্দরবনে ঢুকে পড়ে।
বেলা ১১টার দিকে গরু আনতে নদীর ওপারে সুন্দরবনের ভেতরে গিয়ে বাঘের আক্রমণের শিকার হন তার স্বামী।
সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) শহিদুল ইসলাম হাওলাদার জানান, বিভিন্ন মাধ্যমে বাঘের আক্রমণে কৃষক আহত হওয়ার বিষয়টি শনিবার সে জানতে পারেন। ওই কৃষক অবৈধভাবে সুন্দরবনে প্রবেশ করেছে। একারণে বিষয়টি গোপন রাখার চেষ্টা করেছিল। অবৈধভাবে যেন কেউ সুন্দরবনে প্রবেশ না করে এজন্য বনসংলগ্ন এলাকায় প্রায়ই মাকিং করা হচ্ছে। এর পরেও মানুষ অবৈধভাবে সুন্দরবনে প্রবেশ করছে।
এসিএফ শহিদুল ইসলাম হাওলাদার আরও জানান, ওই কৃষক কি উদ্দেশ্যে সুন্দরবনে প্রবেশ করেছিল তা তদন্ত করে দেখা হবে। তদন্তের পর আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আরও পড়ুন: বাঘের চামড়াসহ ২ চোরা শিকারী আটক
সুন্দরবনের ফরেস্ট অফিসের কাছে ৩ বাঘ, আতঙ্কিত বনরক্ষীরা
সুন্দরবনের আগুনঝরা নদীর বুকে ‘ত্রিকোণ দ্বীপ’, পর্যটকদের আগ্রহ বাড়ছে
সুন্দরবনের দুবলার চর অভিমুখে আগুনঝরা নদীর মোহনায় জেগে উঠেছে একটি দ্বীপ। এই দ্বীপটি জেগেছে সুন্দরবনের বাংলাদেশ অংশে। বন বিভাগ দ্বীপটির নাম দিয়েছে ‘ত্রিকোণ দ্বীপ’।
সুন্দরবন ভ্রমণে যাওয়া পর্যটকদেরকে দ্বীপটি আকর্ষণ করবে। দ্বীপটি কেবলই কেওড়া গাছের বন। এটিতে পর্যটক নামার কোনও সুযোগ নেই। কারণ এখানে ঘন বন। জোয়ার ভাটায় পানি ওঠার কারণে চরের মাটি নরম ও কর্দমাক্ত।
জানা গেছে, ২২-২৫ বছর আগেও জাহাজ নিয়ে এ স্থান পার হওয়া ছিল ঝুঁকির। কারণ এ মোহনা ছিল প্রচণ্ড খরস্রোতা। দ্বীপের কারণে এখন স্থানটি ধীরে ধীরে অতিক্রম করতে হয়। বামের নদীটিই আগুনঝরা নদী। যা এখন ভরাট হয়ে কাঁদার স্তূপে পরিণত হয়েছে। তবে আগুনঝরা নদী পার হওয়ার সময় এই দ্বীপটির নয়নাভিরাম দৃশ্য নজর কাড়বে পর্যটকদের।
সুন্দরবনে পর্যটকবাহী লঞ্চের সুকানি শফিকুল ইসলাম বলেন, দীর্ঘদিন সুন্দরবনের বিভিন্ন রুটে লঞ্চ চালাচ্ছি। আগুনঝরা নদীর এই মোহনাটি ছিল বিশাল ও অত্যন্ত খরস্রোতা। ২০-২২ বছর হলো দ্বীপটি সৃষ্টি হয়েছে। ধীরে ধীরে এর এক পাশের নদী মরে যাচ্ছে। অপরপাশ এখনও সচল আছে। ক’দিন সচল থাকবে তা বলা যাচ্ছে না।
আরও পড়ুন: সুন্দরবনে পর্যটকের খরা, হতাশায় ট্যুর অপারেটররা
পর্যটক গোলাম হোসেন বলেন, দূর থেকে দেখলে দ্বীপটি ভালোই লাগে। যেন সুন্দরবনের মাঝে আরেক টুকরো সুন্দরবন। যত কাছাকাছি আসে ততই আকর্ষণ বাড়ে।
পর্যটক মোমিন মিয়া বলেন, দুবলার চর এলাকায় বিভিন্ন চরের সৌন্দর্যের পাশাপাশি এ দ্বীপটিও বেশ ভালো লাগে।
সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের বিভাগীয় কর্মকর্তা মোহাম্মদ বেলায়েত হোসেন বলেন, ‘দ্বীপটি বেশ পুরানো। আগুনঝরা নদীর মোহনায় এ দ্বীপের কারণে নদীর দুটি ধারা সৃষ্টি হয়েছে। একটিতে নৌযান চলাচল করছে। অপরটি পলি জমে জমে ভরাট হয়ে উঠছে।
তিনি আরও বলেন, এছাড়া খননের কোনও পরিকল্পনা নেই। ফলে ওই অংশটিও ভবিষ্যতে গাছপালায় ভরে জঙ্গলে পরিণত হতে পারে।
আরও পড়ুন: সুন্দরবনে আরও ৪ ইকো-ট্যুরিজম সেন্টার চালু হচ্ছে
পর্যটকদের জন্য সুন্দরবন খুলছে ১ সেপ্টেম্বর
সুন্দরবনের ফরেস্ট অফিসের কাছে ৩ বাঘ, আতঙ্কিত বনরক্ষীরা
সুন্দরবনের সুপতি স্টেশনাধীন চান্দেশ্বর ফরেস্ট অফিস এলাকায় তিনটি বাঘের উপস্থিতিতে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন বনরক্ষীরা। শুক্রবার (৩ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ২টার দিকে দুটি বাঘ ওই অফিস প্রাঙ্গণে ঢুকে পড়ে এবং শনিবার (৪ ফেব্রুয়ারি) বিকাল পর্যন্ত বাঘগুলো বনে ফিরে যায়নি।
গত ২৪ ঘণ্টা ধরে বাঘগুলো একই স্থানে ঘোরাঘুরি করছে বলে জানিয়েছে বন বিভাগ। এই অবস্থায় ওই ক্যাম্পের ৫ বনরক্ষী আতঙ্কিত হয়ে অফিসেই অবস্থান করছেন।
আরও পড়ুন: সাতক্ষীরায় লোকালয়ে বাঘ, আতঙ্কে গ্রামবাসী
চান্দেশ্বর ফরেস্ট টহল ফাঁড়ির ইনচার্জ ফারুক জানান, শুক্রবার দুপুরে আসা দু’টি বাঘের সঙ্গে রাতে আরও একটি যোগ দিয়েছে। রাতে বনরক্ষীরা পুকুর পাড়ে টর্চ লাইটের আলো জ্বেলে তিনটি বাঘের উপস্থিতি শনাক্ত করেছেন। সকালেও বাঘ তিনটি পুকুর পাড়ের অদূরে বনে ঘোরাঘুরি করছিল। এখনও বাঘগুলো অফিসের দক্ষিণ পাশে নদী তীরে অবস্থান করছে।
তিনি জানান, বনরক্ষীরাও সতর্ক অবস্থানে থেকে বাঘের গতিবিধি লক্ষ্য করছেন।
এ ব্যাপারে শরণখোলা রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. সামসুল আরেফীন জানান, এই সময়টা বাঘের প্রজননকাল। তাই সঙ্গীসহ বাঘগুলো নিজের মতো করে চলাচল করছে। তাদের কোনো ক্ষতি না করতে বনরক্ষীদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: সুন্দরবন বাঘের আক্রমণে মৌয়াল নিহত
মতলবে খাঁচায় বন্দি মেছো বাঘ, জনমনে আতঙ্ক
সুন্দরবনে হরিণের মাংস-গুলিসহ এক ‘শিকারি’ আটক
খুলনার সুন্দরবনের নীলকমল অভয়ারণ্য এলাকা থেকে হরিণের মাংস, বন্দুকের গুলিসহ এক ‘শিকারি’কে আটক করেছে বন বিভাগ।
বুধবার সন্ধ্যায় একটি ট্রলারসহ হিরু আকন (২৫) নামে ওই ব্যক্তিকে আটক করা হয় এবং বৃহস্পতিবার তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।
হিরু আকন বরগুনা জেলার তালতলা গ্রামের মালেক আকনের ছেলে।
আরও পড়ুন: বাগেরহাটে হরিণের পা’সহ ২ শিকারি আটক
এ সময় ট্রলার থেকে প্রায় ২০ কেজি হরিণের মাংস, একটি হরিণের চামড়া, বন্দুকের ১৯ রাউন্ড গুলি, লাইসেন্সের ফটোকপি, একটি চাপাতি, হরিণ ধরার ফাঁদ উদ্ধার করা হয়।
সুন্দরবনের নীলকমল অভয়ারণ্য কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জহিরুল ইসলাম জানান, বুধবার বিকালে অভয়ারণ্য এলাকার পুটনীর দ্বীপে টহল দেয়ার সময় চরে হরিণ ধরার ফাঁদ দেখতে পাই। কিছু দূরে অবস্থান নিয়ে আমরা অপেক্ষা করি। কিছু সময় পর দেখা যায়, চার থেকে পাঁচ জন ব্যক্তি ফাঁদের দিকে এগিয়ে যাচ্ছেন। তাদের একজনের হাতে বন্দুক এবং একজনের হাতে রাম দা।
বনরক্ষীদের উপস্থিতি টের পেয়ে তাদের কয়েকজন বনের ভেতরে, একজন ট্রলার নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। এ সময় স্পিডবোড নিয়ে ট্রলারকে ধাওয়া করে হিরু আকনকে আটক করা হয়।
তিনি আরও জানান, জিজ্ঞাসাবাদে হিরু আকন জানিয়েছে, বন্দুকধারী ব্যক্তির নাম আবদুল মালেক। তার বাড়ি খুলনা নগরীর মুসলমানপাড়া এলাকায়, রামদা ধারী ব্যক্তির নাম মো. মামুন।
তাদের বিরুদ্ধে বন আইনে মামলার প্রস্তুতি চলছে বলেও জানান তিনি।
আরও পড়ুন: বাগেরহাটে হরিণের মাংস ও দু’টি চামড়াসহ ২ শিকারি আটক
বাঘ শিকারি ‘বাঘ হাবিব’ আটক
বাগেরহাটে হরিণের মাংস ও দু’টি চামড়াসহ ২ শিকারি আটক
সুন্দরবন এবং বনসংলগ্ন লোকালয়ে পৃথক অভিযান চালিয়ে ১৫ কেজি হরিণের মাংস এবং দু’টি হরিণের চামড়াসহ শিকারিচক্রের দুই সদস্যকে আটক করা হয়েছে। সোমবার বিকালে ও রবিবার সন্ধ্যায় বাগেরহাট জেলার শরণখোলা উপজেলাধীন সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের ডিমের চর এবং বনসংলগ্ন পানিরঘাট এলাকায় একটি বসত বাড়িতে অভিযান চালায় সুন্দরবন পূর্ব বিভাগ। এঘটনায় পৃথক দু’টি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
আটক দুই শিকারি হলেন- বরগুনা জেলার পাথরঘাটার পদ্মা গ্রামের মো. ইদ্রিস (৪০) এবং একই উপজেলার চরলাঠিমারা গ্রামের মো. নিজাম (৪৫)।
সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের শরণখোলা রেঞ্জের সহকারি বন সংরক্ষক (এসিএফ) মো. সামছুল আরেফিন জানান, গোপন সূত্রে খবর পেয়ে বন বিভাগের সদস্যরা সোমবার বিকালে শরণখোলা উপজেলার পানির ঘাট গ্রামের হরিণ শিকারি তানজের আলীর বাড়ির টিনের চাল থেকে হরিণে দু’টি চামড়া উদ্ধার করে। সুন্দরবন থেকে হরিণ শিকার করার পর ওই দু’টি চামড়া টিনের চালে রোদে শুকানো হচ্ছিল। বন বিভাগের সদস্যদের উপস্থিতি টের পেয়ে বাড়ির লোকজন এসময় পালিয়ে গেছে।
আরও পড়ুন: শরণখোলায় ২ হরিণের চামড়া উদ্ধার
নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে সুন্দরবনে পারশে পোনা আহরণ, ১৬ জেলে গ্রেপ্তার
বন বিভাগের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে নদী ও খাল থেকে নভেম্বর-জানুয়ারি পর্যন্ত প্রজনন সময়কালে পারশে পোনা ধরার অভিযোগে সুন্দরবন থেকে ১৬ জেলেকে গ্রেপ্তার করেছে।
বৃহস্পতিবার ভোরে সুন্দরবন পশ্চিম বন বিভাগের অধীনস্থ নীলকমল বন টহল ফাঁড়ীর বঙ্গবন্ধুর চর এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এসময় দু’টি ইঞ্জিন চালিত ট্রলার জব্দ করা হয়।
সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার ভোর সাড়ে ৪টার দিকে নীলকমল টহল ফাঁড়ির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. জহিরুল ইসলামের নেতৃত্বে অভিযান চালিয়ে এই সকল ট্রলারসহ জেলেদের গ্রেপ্তার করে।
গ্রেপ্তার জেলেরা হলেন- পাইকগাছা উপজেলার মিঠু গাজী, আব্দুর রাজ্জাক টুটুল, ইসলাম গাজী, এনামুল গাজী, আলী হোসেন, আল-আমীন, নুরুজ্জামান, রুহুল আমিন মোল্যা, লিটু গাজী। দাকোপ উপজেলার রুবেল গাজী, আলী হাসান শেখ, জাহাঙ্গীর শেখ, ইউসুফ শেখ, ফজলুর রহমান ও বাচ্চু ফকির।
সুন্দরবন পশ্চিম বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) ড. আবু নাসের মোহসীন হোসেন বলেন, এ ব্যাপারে বন আইনে মামলা করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: কুষ্টিয়ায় স্কুলশিক্ষককে কুপিয়ে হত্যা, ৭ আসামির যাবজ্জীবন
তিনি বলেন, গ্রেপ্তার জেলেদেরকে কয়রা উপজেলা জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালতে পাঠানো হয়েছে।
জানা গেছে, সুন্দরবনের বিভিন্ন নদী ও খালে অবাধে চলছে পারশে মাছের পোনা নিধন। মৎস্য প্রজনন এলাকা বা নিষিদ্ধ বনাঞ্চল ও বনের বিভিন্ন নদ-নদীতেনেটজাল দিয়ে পোনা ধরতে গিয়ে শতাধিক প্রজাতির জলজ সম্পদ নষ্ট করারও অভিযোগ উঠেছে।
সুন্দরবনের আলোর কোল, দুবলার চর, বাটলুরচর, ছাচানাংলা, পশুর, আগুন জ্বালা, কালির চর, গেড়া চালকি, বজবজা, হংসরাজ, আন্দারমানিক, ঢাংমারী, ছিচখালী ও মজ্জত নদী থেকে বিপুল পরিমাণ পারশে মাছের নিষিদ্ধ পোনা আহরণ করে।
এক্ষেত্রে মনো ফিলামেন্ট নেট ব্যবহার করায় পারশে পোনাসহ নিধন হচ্ছে বাগদা, গলদা ও বিভিন্ন প্রজাতি মাছের পোনা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন জেলে জানান, দ্রুতগামী ট্রলারের মাধ্যমে প্রতিটি দলে ৮/১০জন জেলে দুইশ’-তিনশ’ মিটার দৈর্ঘ্য এবং ৪০-৫০ মিটার প্রস্থ নেট জালের মাধ্যমে প্রতি টানায় কয়েক মন বিভিন্ন প্রজাতির পোনা ধরে নষ্ট করছে। এভাবে ২০-২৫টি দল প্রতিদিন পোনা শিকার অব্যাহত রেখেছে।
পশুর নদী ওয়াটার কিপারের (সুন্দরবনকেন্দ্রিক পেশাজীবী সংগঠক) সমন্বয়ক মো. নুর আলম শেখ জানান, একশ্রেণির মহাজন অতিরিক্ত মুনাফার লোভে গরীব জেলেদেরকে হাজার হাজার টাকা অগ্রিম দিয়ে পোনা নিধনের জন্য সুন্দরবনে পাঠায়।
আরও পড়ুন: কক্সবাজারে বিদেশি অস্ত্রসহ ৬ রোহিঙ্গা ডাকাত আটক
চট্টগ্রামে ২ ওসিকে মারধরের ঘটনায় ৩ আনসার ও এক ওসি প্রত্যাহার
সুন্দরবনে কুমিরসহ ১৮ বন্যপ্রাণী অবমুক্ত
সুন্দরবনে কুমির ও তক্ষকসহ বিভিন্ন প্রজাতির ১৮টি বন্যপ্রাণী অবমুক্ত করা হয়েছে।
সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের করমজল বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রে বুধবার বিকালে ওই সব বন্যপ্রাণী অবমুক্ত করা হয়। বন্দী থাকা এসব বন্যপ্রাণী ফিরে পেয়েছে আবাসস্থল। বিভিন্ন সময়ে অভিযান চালিয়ে এসব বন্যপ্রাণী উদ্ধার করা হয়।
সুন্দরবনে অবমুক্ত করা এসব বন্যপ্রাণীর মধ্যে রয়েছে- দুটি লোনা পানির কুমির, একটি তক্ষক, একটি বক, ১১টি কালিম পাখি, একটি ভুবন চিল ও দুটি মাছকুড়াল।
আরও পড়ুন: সুন্দরবনকে দস্যুমুক্ত করতে র্যাবের বিশেষ অভিযান
সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের করমজল বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আজাদ কবির জানান, খুলনা বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ এবং আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা নভেম্বর মাসে যশোর ও মাদারীপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে বিভিন্ন প্রজাতির ১৮টি বন্যপ্রাণী উদ্ধার করে। বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ এসব বন্যপ্রাণী সুন্দরবনের করমজলে আনার পর অবমুক্ত করা হয়। এর আগে বিভিন্ন সময় উদ্ধারকরা নানা প্রজাতির বেশকিছু বন্যপ্রাণী সুন্দরবনে অবমুক্ত করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: ছেলে-মেয়েকে নিয়ে সুন্দরবন ঘুরলেন প্রধানমন্ত্রী কন্যা
সুন্দরবনে পর্যটকের খরা, হতাশায় ট্যুর অপারেটররা
সুন্দরবনকে দস্যুমুক্ত করতে র্যাবের বিশেষ অভিযান
জেলেদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে বিশ্বের বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বন সুন্দরবনকে দস্যুমুক্ত করতে বিশেষ অভিযান শুরু করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) সদস্যরা।
শনিবার দপুর থেকে লং রেঞ্জ পেট্রোলের মাধ্যমে একটি বিশেষ অভিযানিক দল ‘এলিট টাইগার্স’ ট্রলারযোগে সুন্দরবনে প্রবেশ করে।
এ অভিযানের মাধ্যমে সাম্প্রতিক নব্য বনদস্যুদের চিহ্নিত করে তাদের আইনের আওতায় আনা, দস্যুমুক্ত সুন্দরবনের স্থায়িত্ব রক্ষার জন্য নৌ-পুলিশ, বন বিভাগ এবং কোস্ট গার্ডের সঙ্গে সমন্বয় সাধন, মাঠ পর্যায়ে সুন্দরবনে অভিযান পরিচালনার স্থান রেকি করা, আত্মসমর্পণ করা দস্যুদের সঙ্গে সমন্বয় করা হবে বলে র্যাব-৬ এর পক্ষে জানানো হয়েছে।
আরও পড়ুন: সুন্দরবন থেকে অপহৃত ১১ জেলে উদ্ধার
র্যাবের আভিযানিক দলটি সুন্দরবনের শরণখোলা, জয়মনি, বড়ইতলা, আন্ধারমনিক, মৃগামারি এলাকাসহ বনের শ্যালা নদীর বিভিন্ন শাখায় অভিযান চালাবে। এছাড়া অভিযানের জন্য র্যাবের আরেকটি দলকে একটি স্পিডবোট ও বেঙ্গল টাইগার্স নামে অপর একটি ট্রলারসহ পূর্ণপ্রস্তুতি সহকারে স্ট্যান্ডবাই রাখা হয়েছে।
তিন দিনের এ বিশেষ অভিযান প্রয়োজনে বাড়ানো হবে বলে র্যাব ।
র্যাব-৬ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোসতাক আহমেদ বলেন, সুন্দরবনকে দস্যুমুক্ত করতে র্যাব অনেক ঘাম ঝরিয়েছে, কষ্ট করেছে। যে কোনো মূল্যে সুন্দরবন যেন দস্যুমুক্ত থাকে, দস্যুদের পুনরাবৃত্তি যেন ওই এলাকাতে না ঘটে সেজন্য আমরা দৃঢ়ভাবে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। প্রধানমন্ত্রী যেহেতু ঘোষণা দিয়েছেন সুন্দরবন দস্যুমুক্ত হবে, সেই মূলমন্ত্রকে নিয়ে আমরা অভিযানগুলো পরিচালনা করছি।
তিনি বলেন, বিগত দিনগুলোতে ১০ থেকে ১৫ জন অপহৃত হয়েছিল। আমাদের চার থেকে পাঁচটি টহল টিম এবং গোস্টগার্ডের সমন্বয়ে অভিযান পরিচালনা করেছিলাম। তখন তারা ভয় পেয়ে পালিয়ে যায়। অনেকে মুক্তিপণ দিয়ে আসছিল, আবার অনেকে পরবর্তীতে আমাদের আনাগোনা দেখে চলে আসে। বিষয়টি মিডিয়াতে আসে এবং যারা জেলে তারাও ভয় পায়।
তিনি আরও বলেন, আমাদের অভিযানের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে সুন্দরবন এলাকা দস্যু মুক্ত করা। আমরা যে তথ্য পেয়েছি তারই আলোকে কাউকে যদি আটক করতে পারি তাও করা হবে। আর জেলেদের অভয় দেয়া যে আমরা আছি আপনাদের পাশে। কোনো দুস্কৃতিকারী বা জলদস্যু যেন ক্ষতি করতে না পারে র্যাব সব সময় বলবৎ থাকবে। তারা এমন কোনো পরিস্থিতিতে না পড়ে সেই উদ্দেশ্যেই আমরা অভিযান শুরু করেছি।
সুন্দরবনে পূর্বের কোনো দস্যুবাহিনী নেই জানিয়ে তিনি বলেন, বিচ্ছিন্ন দুষ্টলোক বা জেলেদের মধ্য থেকে কেউ কেউ আধিপত্য বিস্তারের জন্য বা অপহরণ করে টাকা পয়সা আদায়ের জন্য দস্যু হওয়ার পরিকল্পনা করছে। নব্য জলদস্যু বলা যেতে পারে। আর পুরাতন যারা তাদের সাথে প্রতিনিয়ত যোগাযোগ রয়েছে আমাদের। তাদের মামলা, পুনর্বাসনসহ অন্যান্য বিষয়গুলো আমরাই দেখভাল করি। তাদের দুঃখ-কষ্টসহ অন্যান্য বিষয় বিশেষ করে র্যাব-৬ দেখে থাকে। আমাদের কাছে যে তথ্য রয়েছে সেই অনুযায়ী বিচ্ছিন্ন কিছু লোকজন র্যাবের চোখ ফাঁকি দিয়ে কিছু করা যায় কিনা। কিন্তু আমরা কোন অবস্থাতেই সেটি করতে দিব না।
র্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, আপাতত তিন-চার দিন অভিযান পরিচালনা করবো। প্রয়োজনে আরও সময় বাড়িয়ে নেবো। সুন্দরবন সার্বক্ষণিক আমাদের নজরদারীর মধ্যে থাকবে। যাতে করে জেলেরা যারা জীবিকা নির্বাহের জন্য যায় তারা যেন নির্বিঘ্নে তাদের কার্যকলাপ করতে পারে।
প্রসঙ্গত, গত ১৫ ডিসেম্বর রাতে নয়ন বাহিনী নামের একটি নব্য বনদস্যু দল সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জের বেড়ির খাল ও হরমাল খাল এলাকা থেকে ১৫ জেলেকে মুক্তিপণের দাবিতে অপহরণ করে।
অপহরণের ছয় দিন পর মুক্তিপণ দিয়ে দস্যুদের কবল থেকে অপহৃত জেলেরা ছাড়া পায়।
আরও পড়ুন: ছেলে-মেয়েকে নিয়ে সুন্দরবন ঘুরলেন প্রধানমন্ত্রী কন্যা
সুন্দরবনে পর্যটকের খরা, হতাশায় ট্যুর অপারেটররা
ছেলে-মেয়েকে নিয়ে সুন্দরবন ঘুরলেন প্রধানমন্ত্রী কন্যা
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মেয়ে অটিজম বিশেষজ্ঞ সায়মা ওয়াজেদ পুতুল সুন্দরবনের করমজল বন্যপ্রাণী প্রজননকেন্দ্র ও পর্যটন স্পট ঘুরে দেখেছেন।
পুতুল তার ছেলে ও মেয়েকে সঙ্গে নিয়ে শুক্রবার দুপুর ১২টার দিকে সুন্দরবন পূর্ব বনভিাগের চাঁদপাই রেঞ্জের করমজল পর্যটন ও বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রে প্রবেশ করেন। সেখানে ঘণ্টাখানেক থেকে দুপুর ১টার দিকে করমজল ত্যাগ করেন তিনি। লঞ্চযোগে তিনি সুন্দরবনে প্রবেশ করেন। তিনদিন ধরে তিনি বনের বিভিন্ন পর্যটন এলাকা ঘুরে দেখেন।
আরও পড়ুন: জৈন্তাপুরে আলোচিত পুতুল হত্যা মামলায় স্বামীর যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
করমজল বন্যপ্রাণী প্রজননকেন্দ্র ও পর্যটন স্পটের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাওলাদার আজাদ কবির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, সায়মা ওয়াজেদ পুতুল আসার আগাম কোনো খবর আমাদের কাছে ছিল না। এখানে আসার পর তার নিরাপত্তা কর্মকর্তা বিষয়টি আমাকে জানান। এছাড়া প্রধানমন্ত্রীকন্যা করমজলে একঘণ্টা অবস্থান করে দুপুর ১টায় চলে যান।
সুন্দরবনে অবস্থানকালে সায়মা ওয়াজেদ করমজলের বিভিন্ন স্পট এবং সেখানকার বন্যপ্রাণী ঘুরে দেখেন বলে ওসি।
বাগেরহাট জেলা পুলিশের মিডিয়া সেলের পরিদর্শক এসএম আশরাফুল আলম জানান, বুধবার বেলা পোনে ১২টার দিকে প্রধানমন্ত্রীর মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল বিলাসবহুল পাগমার্কের লঞ্চ এমএল বাওয়ালি যোগে মোংলা থেকে সুন্দরবনে প্রবেশ করেন। বনের কটকা, করমজল ও কচিখালীসহ বিভিন্ন পর্যটন এলাকা তিনি ঘুরে দেখেন। এ সময় তার সঙ্গে সফরসঙ্গী হিসেবে মেয়েসহ ছয় জন ছিলেন।
আরও পড়ুন: পদ্মা সেতুতে জয়-পুতুলের সঙ্গে উচ্ছ্বসিত প্রধানমন্ত্রীর ছবি ভাইরাল