সুন্দরবন
সুন্দরবন বাঘের আক্রমণে মৌয়াল নিহত
সুন্দরবনে মধু সংগ্রহের সময় বাঘের আক্রমণে এক মৌয়াল নিহত হয়েছেন। শুক্রবার সাতক্ষীরা রেঞ্জের কাচিকাটা এলাকায় সকাল ৬টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত মৌয়াল সালাইমান শেখ (৫০) শ্যামনগর উপজেলার কাশিমাড়ী ইউনিয়নের গোদাড়া গ্রামের আনছার আলী শেখের ছেলে।
বনবিভাগ বুড়িগোয়ালিনী স্টেশন অফিসার (এসও) নূরআলম জানান, সপ্তাহ খানেক আগে বুড়িগোয়ালিনী বন অফিস থেকে মধু সংগ্রহের অনুমতি নিয়ে বনের ভেতরে যায় সোলাইমান শেখসহ তার কয়েকজন সঙ্গী। শুক্রবার সকালে কাচিকাটা এলাকায় তিনি বাঘের আক্রমণে নিহত হয়েছেন বলে জানতে পেরেছি।
সুন্দরবন সাতক্ষীরা রেঞ্জের সহকারী বনসংরক্ষক (এসিএফ) এম.এ হাসান জানান, সোলাইমান শেখকে তার মৌয়াল সহকর্মীরা উদ্ধার করেছে। তার লাশ লোকালয়ে না আনা পর্যন্ত কোন কম্পার্টমেন্টে মারা গেছেন তা বলতে পারছিনা। তবে, যেহেতু তিনি বনবিভাগের অনুমতি নিয়ে বনে গিয়েছিলেন, বিধি অনুযায়ী তার পরিবার ক্ষতিপূরণ পাবেন।
আরও পড়ুন: সুন্দরবনে ২১ বছরে ৪০ বাঘের মৃত্যু
সুন্দরবনে মৃত বাঘ উদ্ধার
সুন্দরবনে মধু আহরণ শুরু
দেশে মধু উৎপাদনের অন্যতম প্রধান ক্ষেত্র সুন্দরবনে আজ মঙ্গলবার (১৫ মার্চ) থেকে মধু আহরণ শুরু হচ্ছে। এ বছর ১৫ দিন আগেই শুরু হচ্ছে মধু ও মোম সংগ্রহের কাজ।
এবার সুন্দরবনে মধু ও মোম সংগ্রহে বাড়তি রাজস্ব গুণতে হবে মৌয়ালদের। সুন্দরবন ভ্রমণ, মধু, মোমসহ প্রাকৃতিক সম্পদ আহরণে রাজস্ব আদায়ের হার বৃদ্ধি করা হয়েছে।
বন বিভাগের সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরের ২৬ ফেব্রুয়ারির গেজেট অনুযায়ী সুন্দরবনের প্রতি কুইন্টাল মধু সংগ্রহে রাজস্ব নির্ধারণ করা হয়েছে এক হাজার ৬০০ টাকা। যা পূর্বে ছিল এক হাজার টাকা। ফলে প্রতি কুইন্টাল মধুতে রাজস্ব বেড়েছে ৬০০ টাকা। আর প্রতি কেজি মধুতে বেড়েছে ৬ টাকা।
একই সাথে প্রতি কুইন্টাল মোম সংগ্রহে রাজস্ব বেড়েছে ২০০ টাকা। আর প্রতি কেজিতে ২ টাকা বেড়েছে। পূর্বে প্রতি কুইন্টাল মোমে রাজস্ব দিতে হতো ২ হাজার টাকা। বর্তমানে বাড়িয়ে তা নির্ধারণ করা হয়েছে ২ হাজার ২০০ টাকা।
বন বিভাগের সূত্রে আরও জানা যায়, ২০২০-২০২১ অর্থবছরে সুন্দরবন থেকে ৫ লাখ ৮০ হাজার ২৪০ কেজি মধু ও মোম সংগ্রহ করা হয়। মধু ও মোম থেকে থেকে রাজস্ব আদায় হয় ৪৬ লাখ ৮৬ হাজার ৪১৩ টাকা। এর মধ্যে ৪ লাখ ৪৬ হাজার ৩১৫ কেজি মধু থেকে ৩৩ লাখ ৪৭ হাজার ৩৬৩ টাকা এবং এক লাখ ৩৩ হাজার ৯০৫ কেজি মোম থেকে ১৩ লাখ ৩৯০ হাজার ৫০ টাকা রাজস্ব আয় হয়।
জানা গেছে, ১৮৬০ সাল থেকে সুন্দরবনে মধু সংগ্রহ করা হয়। বনসংলগ্ন একটি ক্ষুদ্র গোষ্ঠী বংশ পরম্পরায় মধু সংগ্রহ করে। এদের মৌয়াল বলা হয়। সুন্দরবনের সবচেয়ে ভালো মানের মধু খোলসী ফুলের ‘পদ্ম মধু’। মানের দিক থেকে এরপরেই গরান ও গর্জন ফুলের ‘বালিহার মধু’। মৌসুমের একেবারে শেষে আসা কেওড়া ও গেওয়া ফুলের মধু অপেক্ষাকৃত কম সুস্বাদু। মধু সংগ্রহের জন্য প্রতি বছরের ১ এপ্রিল থেকে তিন মাসের (এপ্রিল, মে ও জুন) জন্য বন বিভাগ মৌয়ালদের অনুমতিপত্র (পাস) দেয়। মধু সংগ্রহ করতে যাওয়ার আগে বিশেষ প্রার্থনা করে নেন মৌয়ালরা। এবার ১৫ দিন আগেই অর্থাৎ ১৫ মার্চ থেকে মধু সংগ্রহের পাস পারমিট দিচ্ছে বন বিভাগ।
পড়ুন: সুন্দরবনের রাজস্ব বৃদ্ধিতে ক্ষতির মুখে পর্যটন ব্যবসায়ীরা
সুন্দরবন পশ্চিম বিভাগের বন কর্মকর্তা ড. আবু নাসের মোহসিন হোসেন জানান, আগে মৌয়ালদের পাস-পারমিট দেয়া হতো। কিন্তু কিছু মৌয়াল পাস-পারমিট না নিয়ে অবৈধভাবে আগেই বনে ঢুকে মধু আহরণ শুরু করেন। এর ফলে পাস-পারমিট নিয়ে বনে যাওয়া মৌয়ালরা তাদের কাঙ্ক্ষিত মধু আহরণ করতে পারেন না। বনের মৌচাকগুলোতে ১৫ মার্চ থেকেই মধু পাওয়া যায়। সে কারণে এ বছর ১৫ মার্চ থেকে মধু সংগ্রহের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
খুলনা সার্কেলের বন সংরক্ষক মিহির কুমার দো বলেন, এবার ১৫ মার্চ থেকে সুন্দরবনে মধু ও মোম আহরণের পাস দেয়া হচ্ছে।
তিনি জানান, এবার মধু ও মোম সংগ্রহে রাজস্ব বেড়েছে। প্রতি কেজি মধুতে ৬ টাকা এবং প্রতি কেজি মোম সংগ্রহে ২ টাকা বাড়ানো হয়েছে।
পড়ুন: সুন্দরবনে লবণাক্ততা বাড়ছে, হুমকির মুখে জীববৈচিত্র্য
রামপালে জেলেদের জালে কুমির, সুন্দরবনে অবমুক্ত
বাগেরহাটের রামপালে জেলেদের জালে একটি লবণ পানির কুমির ধরা পড়েছে। শুক্রবার বিকালে ৪ ফুট দৈর্ঘ্য ওই কুমিরটি রামপাল উপজেলায় বগুরা খালে জেলেদের জালে আটকা পড়ে।
পরে পরিবেশ বন ও জলবায়ু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী হাবিবুন নাহারের ফোন পেয়ে সুন্দরবন বিভাগ কুমিরটিকে উদ্ধার করে। রাত ৮টার দিকে সুন্দরবনের নদীতে ওই কুমিরটিকে অবমুক্ত করেছে বন বিভাগ।
সুন্দরবনের করমজল বন্যপ্রাণি প্রজনন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আজাদ কবির জানান, পরিবেশ বন ও জলবায়ু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী হাবিবুন নাহারের মাধ্যমে খবর পেয়ে তারা রামপালের ভাগা এলাকা থেকে ওই কুমিরটি উদ্ধার করে। স্থানীয় জেলে আজিজুর রহমান বগুরা খালে জাল দিয়ে মাছ ধরার সময় ওই কুমিরটি ধরা পড়ে। উদ্ধার করার পর কুমিরটিকে সুন্দরবনের নদীতে অবমুক্ত করা হয়েছে।
তিনি আরও জানান, কুমিরটির বয়স ৭ থেকে ৮ বছর। লবণ পানির ওই কুমিরটি সুন্দরবনের করমজল বন্যপ্রাণি প্রজনন কেন্দ্রে জন্ম নেয়। সুন্দরবনে যেসব কুমির অবমুক্ত করা হয়েছে এটি তার মধ্যে একটি।
পড়ুন: শরণখোলায় অজগর উদ্ধার, সুন্দরবনে অবমুক্ত
কাপ্তাইয়ে ১৫ ফুট দীর্ঘ অজগর উদ্ধারের পর অবমুক্ত
সুন্দরবনের রাজস্ব বৃদ্ধিতে ক্ষতির মুখে পর্যটন ব্যবসায়ীরা
সুন্দরবন ভ্রমণে পর্যটকদের খরচ দ্বিগুণ বেড়েছে। বনজীবীদের রাজস্বও বেড়েছে সমহারে। গোলপাতায়-কাঁকড়ার রাজস্ব বেড়েছে প্রায় আড়াই গুণ। ভ্রমণ মৌসুমের শেষ সময়ে এসে বনবিভাগের এই সিদ্ধান্তে ক্ষতির সম্মূখীন পর্যটন ব্যবসায়ীরা। তবে রাজস্ব বাড়ানোকে স্বাভাবিক হিসেবে দেখে পর্যটন আগমণে কোনো প্রভাব পড়বে না বলে মনে করছে সুন্দরবন পশ্চিম বনবিভাগের কর্মকর্তারা।
পর্যটন ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, সরকার পর্যটনে বিকাশের কথা বললেও হঠাৎ করে এই রাজস্ব বাড়ানোয় নতুন করে ক্ষতির মুখে পড়বে সুন্দরবনের পর্যটন শিল্প। এর ফলে সুন্দরবনের প্যাকেজ ভ্রমণের খরচ অনেক বেড়ে যাবে। এছাড়া পূর্বের খরচ অনুযায়ী অগ্রিম বুকিং নেয়া পর্যটন ব্যবসায়ীদের পড়তে হবে চরম বিপাকে।
এদিকে,একই সাথে সুন্দরবনে পর্যটনের পাশাপাশি দুবলার চরে রাস মেলায় পুণ্যার্থী ও সুন্দরবনে সব ধরনের বনজীবীদের জন্যও নতুন রাজস্ব হার নির্ধারণ করে দিয়েছে বন বিভাগ।
আরও পড়ুন: বিশ্বকাপ ফুটবল: ৬ লাখ পিস টি-শার্ট তৈরি করেছে সনেট টেক্সটাইল
নতুন প্রজ্ঞাপনে ধার্য করা রাজস্বের তালিকা থেকে জানা যায়, গোলপাতা প্রতি কুইন্টাল ২৫ টাকা থেকে ৬০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। সুন্দরবনের ভেটকি মাছের রাজস্ব প্রতি কুইন্টালে ১২০০ টাকা থেকে ২৪০০ টাকা ও কাঁকড়া কুইন্টাল প্রতি ২৭৫ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৭৫০ টাকা করা হয়েছে।
সুন্দরবনের সাধারণ জায়গাগুলোতে মাথাপিছু দেশি পর্যটকের ভ্রমণ ফি ছিল প্রতিদিনের জন্য ৭০ টাকা, সেটা বেড়ে হয়েছে ১৫০ টাকা। বিদেশি পর্যটকের আগে খরচ হত প্রতিদিন ১০০০ টাকা, এখন তা বাড়িয়ে করা হয়েছে ২০০০ টাকা।
খুলনায় সুন্দরবন দিবস উদযাপন
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে সুন্দরবন দিবস উপলক্ষে সোমবার বেলা ১১টায় ফরেস্ট্রি এন্ড উড টেকনোলজি ক্লাবের উদ্যোগে শোভাযাত্রা বের হয়। শোভাযাত্রাটি আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু একাডেমিক ভবনের সামনে থেকে শুরু হয়ে শহিদ তাজউদ্দীন আহমদ ভবনের সামনে দিয়ে হাদী চত্বরে গিয়ে শেষ হয়।
শোভাযাত্রা শেষে সেখানে দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় বক্তব্য দেন ডিসিপ্লিনের শিক্ষক প্রফেসর এ কে ফজলুল হক। এসময় ডিসিপ্লিনের শিক্ষক ও ক্লাবের সদস্য শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
ক্লাবের সভাপতি আহসান রাজিব প্রমি ও সাধারণ সম্পাদক মো. সাইফুল ইসলাম জানান, নবগঠিত এই ক্লাবের কার্যক্রম শুরু হয়েছে। আগামী বছর বৃহৎ পরিসরে এ দিবসটি পালনে আমাদের পরিকল্পনা রয়েছে।
আরও পড়ুন: সুন্দরবনে লবণাক্ততা বাড়ছে, হুমকির মুখে জীববৈচিত্র্য
বরিশালে ৭ ফুট লম্বা অজগর সাপ উদ্ধার
বরিশালে পুকুরে মাছ ধরতে গিয়ে বিশাল একটি অজগর সাপ ধরেছে স্থানীয়রা। সাপটিকে বনবিভাগের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। রবিবার দুপুরে বরিশাল নগরীর ২৬ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দারা সাপটি হস্তান্তর করেন বন বিভাগে।
স্থানীয় জয়ন্ত শীল জানান, শনিবার দুপুরে নতুনহাট এলাকায় একটি পুকুরে মাছ শিকার করছিল তিন যুবক। এ সময় আবুল কালাম নামে এক যুবক মনে করেন বড় একটি মাছ শিকার করেছেন। কিন্তু সেটি পানির উপরে উঠিয়ে দেখেন বিশাল আকারের একটা অজগর সাপ। সাপটি এক নজর দেখার জন্য ভিড় জমান স্থানীয়রা।
বরিশাল সদর উপজেলা বন কর্মকর্তা গাজী মোহাম্মদ আবুল বাশার জানান, দেশীয় প্রজাতির এই অজগর সাধারণত সুন্দরবন এলাকায় থাকে। হয়তো পানিতে ভেসে এখানে এসেছে। খুলনা বন্যপ্রাণী বিভাগকে খবর দেয়া হয়েছে, তারা এসে সাপটি সুন্দরবনে অবমুক্ত করবে । সাপটির দৈর্ঘ্য সাত ফুট। বয়স ৭/৮বছর হবে।
আরও পড়ুন: ভোলায় বিরল প্রজাতির বিষাক্ত রাসেল ভাইপার সাপ
লালমনিরহাটে বিশাল আকৃতির অজগর সাপ উদ্ধার
সুন্দরবনে লবণাক্ততা বাড়ছে, হুমকির মুখে জীববৈচিত্র্য
জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে সুন্দরবনে লবণাক্ততা বাড়ছে। বনের নদী-খালে মিঠা পানির প্রবাহ ক্রমশ কমে যাচ্ছে।এদিকে পলিমাটি জমে বনের বেশকিছু খাল ভরাট হয়ে গেছে। এতে করে সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্য হুমকির মধ্যে পড়েছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
জানা গেছে, সুন্দরবনে অতিমাত্রায় লবণাক্ততায় সুন্দরী গাছ মরে যাচ্ছে, বন্যপ্রাণীরাও নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। এর ওপর অবাধে বন্যপ্রাণী শিকার ও নদী-খালে কীটনাশক ছিটিয়ে মাছ ধরার তৎপরতা তো রয়েছেই। এসব নানা কারণে সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্য হুমকির মুখে পড়েছে।
এ অবস্থায় সুন্দরবনকে রক্ষায় বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন দাবি তোলা হয়েছে। জাতীয়ভাবে ‘সুন্দরবন দিবস’ পালনের দাবি ২১ বছরেও সাড়া পায়নি। অনেক দাবির মধ্যে সুন্দরবনের জন্য পৃথক মন্ত্রণালয় গঠনের দাবিও রয়েছে।
এদিকে ১৪ ফেব্রুয়ারি সোমবার ‘সুন্দরবন দিবস’। সুন্দরবন সংলগ্ন উপকূলীয় জেলায় গত ২০০২ সাল থেকে ‘সুন্দরবন দিবস’ পালন করা হচ্ছে। করোনার কারণে বিগত বছরের মতো এবারও বাগেরহাট, খুলনা, পিরোজপুর, সাতক্ষীরা ও বরগুনায় ভার্চুয়ালি আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে।
তবে ২১ বছরেও জাতীয়ভাবে ‘সুন্দরবন দিবস’ পালনের সাড়া মেলেনি। সুন্দরবন দিবস পালনের আয়োজকরা প্রথম থেকেই জাতীয়ভাবে ‘সুন্দরবন দিবস’ পালনের দাবি জানিয়ে আসছে।
দেশের সর্ব দক্ষিণ-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরের অববাহিকায় গড়ে উঠেছে বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবন। সুন্দরবনকে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভুমি বলা হয়। সুন্দরবন জীববৈচিত্র্যে ভরপুর। ‘রয়েল বেঙ্গল টাইগারের’ আবাসস্থলও। তাছাড়া দেশের প্রাকৃতিক দুর্যোগের বিরুদ্ধে প্রাকৃতিক দেয়াল হিসেবে দাঁড়িয়ে আছে সুন্দরবন। বিভিন্ন সময়ে সুপার সাইক্লোনে নিজে ক্ষতবিক্ষত হয়ে উপকূলবাসীকে রক্ষা করে চলেছে সুন্দরবন। সুন্দরবন বিশ্বের একক বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বনও বলা চলে।
আরও পড়ুন: সাত মাসেও আলোর মুখ দেখেনি ‘সুন্দরবন সুরক্ষা প্রকল্প’
সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মুহাম্মদ বেলায়েত হোসেন জানান, সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের আওতাধীন এলাকায় ২০টির ওপর খাল পলিমাটি জমে ভরাট হয়ে গেছে। এছাড়া জয়মনি থেকে দাসের ভারানী পর্যন্ত ভোলা নদী, খড়মা খাল ও আড়ুয়ারবেড় খালের ৩০ কিলোমিটার এলাকা ভরাট হয়ে গেছে। সুন্দরবনের মধ্যে লবণাক্ততাও বৃদ্ধি পেয়েছে।
খুলনার বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা রূপান্তরের নির্বাহী পরিচালক মো. রফিকুল ইসলাম খোকন জানান, ২০০১ সালে ১৪ ফেব্রুয়ারি খুলনায় প্রথম জাতীয় সুন্দরবন সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। রূপান্তর, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় ও বাপাসহ ৭০টি সংগঠন যৌথভাবে ওই সম্মেলনের আয়োজন করে। উক্ত সম্মেলনে ১৪ ফেব্রুয়ারি বিশ্ব ভালবাসা দিবসে ‘সুন্দরবন দিবস’ পালনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয় এবং জাতীয়ভাবে ‘সুন্দরবন দিবস’ পালনের দাবি জানানো হয় সরকারের কাছে।
তিনি জানান, আজ পর্যন্তও জাতীয়ভাবে সুন্দরবন দিবস পালনের সাড়া মেলেনি। ২০০২ সাল থেকে সুন্দরবনসংলগ্ন জেলাগুলোতে সুন্দরবন একাডেমি, সুন্দরবন বিভাগ, বিভিন্ন প্রেসক্লাব ও বিভিন্ন সংগঠন ১৪ ফেব্রুয়ারি ‘সুন্দরবন দিবস’ পালন করে আসছে।
নির্বাহী পরিচালক জানান, বিশ্ব ভালোবাসা দিবসে সুন্দরবনকে ভালোবাসুন এই শ্লোগানকে সামনে রেখে এ বছরও ১৪ ফেব্রুয়ারি ভার্চুয়ালি ‘সুন্দরবন দিবস’ পালন করা হবে। এবারের প্রতিপাদ্য বিষয় হচ্ছে, ‘সুন্দরবনের ওপর নির্ভরশীল জনগোষ্ঠীর বিকল্প কর্মসংস্থান।’
সুন্দরবন একাডেমির নির্বাহী পরিচালক আনোয়ারুল কাদির বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সুন্দরবনে লবণাক্ততা বেড়ে চলেছে। মিঠা পানির উৎস কমে গেছে। বনের বেশকিছু খাল পলিমাটি জমে ভরাট হয়ে আছে এবং বিভিন্ন এলাকায় চড় জেগেছে। বনে লবণ পানির আধিক্য বেশি। অতিরিক্ত লবণাক্ততার কারণে সুন্দরীসহ বিভিন্ন গাছ নানা রোগে মারা যাচ্ছে। লবণ পানি খেয়ে বন্যপ্রাণী নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। তাই সুন্দরবনের জীববৈচিত্র হুমকির মুখে।
তিনি বলেন, তারা সুন্দরবন সংরক্ষণ ও বনসংলগ্ন মানুষের জীবন জীবিকার মানউন্নয়নের জন্য সুন্দরবন পরিচালনার ক্ষেত্রে পৃথক মন্ত্রণালয় গঠনের দাবি জানিয়ে আসছে। তাদের দাবি পূরণ হলে বন এবং বনসংলগ্ন মানুষের ভাগ্যের উন্নয়ন ঘটবে বলে তিনি আশাবাদী।
প্রধান বন সংরক্ষক মো. আমীর হোসাইন চৌধুরী জানান, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে নানা ভাবে সুন্দরবন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। জীবিকার জন্য বনের ওপর মানুষের চাপ রয়েছে। বন রক্ষায় বনসংলগ্ন স্থানীয় জনগণকে সম্পৃক্ত করতে হবে। সুন্দরবন রক্ষায় সরকার নানা উদ্যোগ নিয়ে বাস্তবায়ন করছে বলে তিনি জানান।
আমীর হোসাইন আরও জানান, বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে জাতীয়ভাবে সুন্দরবন দিবস পালনের দাবি তোলা হয়েছিল। কিন্তু এখনও এ বিষয়ে কোন সিদ্ধান্ত হয়নি।
আরও পড়ুন: দুর্যোগে অরক্ষিত সুন্দরবনের বন্যপ্রাণী
সুন্দরবনের ইতিহাস:
সুন্দরবনের মোট আয়াতন ছয় হাজার ১৭ বর্গ কিলোমিটার। এর মধ্যে স্থল ভাগের পরিমাণ চার হাজার ১৪৩ ও জল ভাগ এক হাজার ৮৭৩ বর্গ কিলোমিটার। অষ্টাদশ শতব্দীতে সুন্দরবনের আয়তন ছিল বর্তমানের চেয়ে প্রায় দ্বিগুন। ১৮৭৮ সালে সুন্দরবনকে সংরক্ষিত বন হিসেবে ঘোষণা করা হয়। জাতিসংঘের ইউনেস্কো কমিশন ১৯৯৭ সালে সুন্দরবনের তিনটি অভয়ারণ্যকে বিশ্বঐতিহ্য এলাকা হিসেবে ঘোষণা করেন। ২০১৭ সালে সরকার সুন্দরবনে অভায়ারণ্য এলাকা সম্প্রসারণ করে। মোট ছয় লাখ এক হাজার ৭০০ হেক্টর বনের মধ্যে এখন তিন লাখ ১৭ হাজার ৯০০ হেক্টর অভয়ারণ্য এলাকা। আগে ছিল মাত্র এক লাখ ৩৯ হাজার ৭০০ হেক্টর।
সুন্দরবন জীববৈচিত্র্যে সমৃদ্ধ একটি ইকোসিস্টেম। এই বনে অসংখ্য উদ্ভিদ ও প্রাণীর উত্তম আবাসস্থল। ২০০১ সালে সুন্দরবনের প্রশাসনিক এলাকা দুটি ভাগে ভাগ করা হয়। পূর্ব বন বিভাগের কার্যালয় বাগেরহাটে ও পশ্চিম বিভাগের কার্যালয় খুলনায় অবস্থিত।
নামকরণ
সুন্দরবনের প্রধান উদ্ভিদ প্রজাতি ‘সুন্দরী গাছ’। কারো কারো মতে সুন্দরী গাছের নাম অনুসারে প্রাকৃতিক ভাবে গড়ে ওঠা বনের নাম হয়েছে সুন্দরবন। আবার সমুদ্রের কাছে অবস্থান হওয়ায় ‘সমুন্দর’ শব্দ হয়ে প্রথমে ‘সমুন্দবন’ ও পরে ‘সুন্দরবন’ নামকরণ হয়েছে বলে অনেকে মনে করেন।
লবণাক্ততা
সুন্দরবনের পূর্ব থেকে পশ্চিমে ও উত্তর থেকে দক্ষিণে লবণাক্ততার পরিমাণ পর্যাক্রমে বেশি। সুন্দরবনের সর্বত্র মাটির লবণাক্ততার পরিমাণ ২-৪ দশমিক ৫ ডিএস/এম। তবে শুষ্ক মৌসুমে মাটিতে লবণাক্ততার পরিমাণ ছয় ডিএস/এম মধ্যে থাকে। পানির লবণাক্ততার ওপর নির্ভর করে সুন্দরবনকে তিনভাবে ভাগ করা হয়েছে, স্বাদু পানির অঞ্চল, মধ্যম লবণাক্ত পানির অঞ্চল এবং লবণাক্ত পানির অঞ্চল।
জীববৈচিত্র্য
সুন্দরবনে জীববৈচিত্র্যে ভরপুর। সুন্দরবনে ৩৩৪ প্রজাতির গাছপালা, ১৬৫ প্রজাতির শৈবাল ও ১৩ প্রজাতির অর্কিড রয়েছে বলে জানিয়েছে বন বিভাগ।
বনজদ্রব্য
সুন্দরবনের প্রধান বনজদ্রব্য হচ্ছে সুন্দরী, পশুর, গেওয়া, ধুন্দুল ও কাকড়া গাছ। এছাড়া গোলপাতা, হেতাল, ছন, মাছ, মধু ইত্যাদি সুন্দরবনে রয়েছে।
প্রাণী
সুন্দরবনে ৩৭৫ প্রজাতির অধিক বন্যপ্রাণী রয়েছে। এর মধ্যে ৩৫ প্রজাতির সরিসৃপ, ৩১৫ প্রজাতির পাখি ও ৪২ প্রজাতির স্তন্যপায়ী প্রাণী অর্ন্তভুক্ত। ২১০ প্রজাতির সাদা মাছ, ২৪ প্রজাতির চিংড়ি, ১৪ প্রজাতির কাঁকড়া এবং ৪৩ প্রজাতির মলাঙ্কা রয়েছে সুন্দরবনে।
বন্যপ্রাণী
সুন্দরবনের প্রধান প্রধান বন্যপ্রাণী হচ্ছে রয়েল বেঙ্গল টাইগার, চিত্রল হরিণ, বন্যশকুর, বানর, কুমির, ডলফিন, কচ্ছপ, উদবিড়াল, মেছো বিড়াল ও বন বিড়াল ইত্যাদি।
বন বিভাগের তথ্য মতে, ২০১৮ সালের সর্বশেষ জরিপ অনুসারে সুন্দরবনের বাংলাদেশ অংশে বাঘের সংখ্যা ১১৪টি, এক থেকে দেড় লাখ হরিণ, ৫০ হাজার বানর, ২৫ হাজার বন্যশকুর ও ২৫ হাজার উদবিড়াল রয়েছে।
নদী-খাল
সুন্দরবনে নদী-খাল জালের মতো জড়িয়ে আছে। সুন্দরবনে ৪৫০টি ছোট বড় নদী-খাল রয়েছে। বনের প্রধান নদীগুলো হচ্ছে পশুর, শিবসা, আড়পাঙ্গাসিয়া, শেলা, মরজাত, ভদ্রা, যমুনা, রায়মঙ্গল ও ভোলা ইত্যাদি।
পর্যটন স্থান
গোটা সুন্দরবন জুড়ে রয়েছে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য। এর মধ্যে করমজল, কটকা, কচিখালী, দুবলারচর, হিরণপয়েন্ট, কলাগাছিয়া, মানিকখালী, আন্দারমানিক ও দোবেকী এলাকায় পর্যটকরা বেশি ভ্রমণ করে থাকেন।
আরও পড়ুন: বেপরোয়া হয়ে উঠেছে সুন্দরবনের শিকারি চক্র
বঙ্গোপসাগরে ১৮ ট্রলারডুবি: আরও দুই জেলের লাশ উদ্ধার
বঙ্গোপসাগর ও সুন্দরবনের দুবলার চরের বিভিন্ন এলাকায় ১৮টি মাছ ধরা ট্রলার ডুবিতে নিখোঁজ থাকা আরও দুই জেলের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। মঙ্গলবার সকালে তল্লাশি টিমের সদস্যরা বঙ্গোপসাগর থেকে ভাসমান অবস্থায় ওই দুই জেলের লাশ উদ্ধার করে।
এ নিয়ে চারদিনে নিখোঁজ জেলেদের মধ্যে এ পর্যন্ত ছয়জনের লাশ উদ্ধার করা হলো। এখনও আটজন জেলে নিখোঁজ রয়েছে। নিখোঁজ জেলেদের উদ্ধারে চতুর্থ দিনের মতো তল্লাশি চলছে।
মঙ্গলবার সকালে উদ্ধার করা ওই দুই জেলের নাম পরিচয় নিশ্চিত করতে পারেনি বন বিভাগ।
আরও পড়ুন: বঙ্গোপসাগরে ১৮ ট্রলারডুবি: আরও এক জেলের লাশ উদ্ধার, এখনও নিখোঁজ ১১ জেলে
দুবলা ফিশারম্যান গ্রুপের সভাপতি কামাল উদ্দিন জানান, কোস্টগার্ড ও বন বিভাগের পাশাপাশি জেলেরা প্রায় ৫০টি ট্রলার নিয়ে নিখোঁজ জেলেদের উদ্ধার অভিযানে অংশ নিয়েছে। শনিবার থেকে তারা ট্রলার নিয়ে বঙ্গোপসাগরসহ দুবলারচরের বিভিন্ন এলাকায় তল্লাশি করছে।
প্রসঙ্গত, গত শুক্রবার রাত ১০টার দিকে বঙ্গোপসাগর ও সুন্দরবনের দুবলারচরের বিভিন্ন এলাকায় ঝড়ের তাণ্ডবে দেড় শতাধিক জেলেকে নিয়ে ১৮টি মাছ ধরার ট্রলার ডুবে যায়। প্রায় দেড়শত জেলে সাঁতরিয়ে এবং অন্য ট্রলারের সাহায্যে তীরে উঠতে সক্ষম হলেও কমপক্ষে ১৪ জেলে নিখোঁজ থাকে। শনিবার থেকে মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত চারদিনে ছয় জেলের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: বঙ্গোপসাগরে ১৮ ট্রলারডুবি, নিখোঁজ ৩ জেলে জীবিত উদ্ধার
বঙ্গোপসাগরে ১৮ ট্রলারডুবি: আরও এক জেলের লাশ উদ্ধার, এখনও নিখোঁজ ১১ জেলে
বঙ্গোপসাগর এবং সুন্দরবনের দুবলার চরের বিভিন্ন এলাকায় ১৮টি মাছ ধরার ট্রলার ডুবিতে নিখোঁজ থাকা আরও এক জেলের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। তবে এখনও ১১ জেলে নিখোঁজ রয়েছেন।
সোমবার দুপুরে বঙ্গোপসাগর থেকে ওই জেলের ভাসমান লাশ উদ্ধার করা হয়।
এ নিয়ে নিখোঁজ জেলেদের মধ্যে তিনজনের লাশ উদ্ধার করা হলো। নিখোঁজ জেলেদের উদ্ধারে তৃতীয় দিনের মতো তল্লাশি চলছে।
আরও পড়ুন: বঙ্গোপসাগরে ১৮ ট্রলারডুবি, নিখোঁজ ৩ জেলে জীবিত উদ্ধার
এর আগে রবিবার বাগেরহাট জেলার চিতলমারী উপজেলার কালীগঞ্জ গ্রামের আনোয়ার শেখের ছেলে মামুন শেখ (৪০) ও পিরোজপুর জেলার মঠবাড়িয়া উপজেলার জানারপাড় গ্রামের আজিজুল খানের ছেলে ইসমাইল খানের (৩৬) লাশ উদ্ধার করে কোস্টগার্ড সদস্যরা।
এর আগে হঠাৎ ঝড়ে বেশ কয়েকটি ট্রলার ডুবে যাওয়ার কয়েক ঘণ্টা পর তিন জেলেকে জীবিত উদ্ধার করে কোস্টগার্ড।
সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের দুবলারচর ফরেস্ট ক্যাম্পের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা প্রলাদ চন্দ্র রায় আরও জানান, নিখোঁজ জেলেদের উদ্ধারে কোস্টগার্ড, বন বিভাগ এবং স্থানীয় জেলেরা সোমবার সকাল ১০টা থেকে তৃতীয় দিনের মতো বঙ্গোপাসাগর এবং দুবলারচরের বিভিন্ন এলাকায় তল্লাশি শুরু করেছে। প্রায় তিন হাজার বর্গ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে তল্লাশি চলছে। এখনও ১১ জেলে নিখোঁজ রয়েছে।
আরও পড়ুন: বঙ্গোপসাগরে আটকা পড়া ৭ জেলে উদ্ধার
বঙ্গোপসাগরে ১৮ ট্রলারডুবি, নিখোঁজ ৩ জেলে জীবিত উদ্ধার
ঝড়ের কবলে পড়ে সুন্দরবনের দুবলারচর ও বঙ্গোপসাগরের বিভিন্ন এলাকায় ডুবে যাওয়া ট্রলার থেকে নিখোঁজ তিন জেলেকে জীবিত উদ্ধার করেছে কোস্টগার্ড।
উদ্ধার হওয়া জেলেরা হলেন- রামপাল উপজেলার আব্দুল্লাহ ও ইয়াকুব আলী এবং বাগেরহাটের মংলা উপজেলার রাজু শেখ।
বাংলাদেশ কোস্টগার্ড সদর দপ্তরের লেফটেন্যান্ট কমান্ডার আবদুর রহমান (মিডিয়া অফিসার) জানান, কোস্টগার্ডের দুবলার চর ফাঁড়ির তল্লাশি অভিযানের সময় তাদের উদ্ধার করা হয় এবং প্রাথমিক ওষুধ দেয়া হয়।
আরও পড়ুন: বঙ্গোপসাগরে ১৮ ট্রলারডুবি, ৩ জেলে নিখোঁজ
সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের দুবলারচর ফরেস্ট ক্যাম্পের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা প্রলাদ চন্দ্র রায় জানান, জেলেরা বঙ্গোপসাগর ও দুবলারচরের বিভিন্ন এলাকায় মাছ আহরণ করছিলেন। শুক্রবার রাত ১০টার দিকে হঠাৎ প্রচণ্ড ঝড়-বৃষ্টি শুরু হয়। ঝড়ের কবলে পড়ে দুবলার চরের আট কিলোমিটারের মধ্যে ১০টি ও দুবলারচর থেকে ৪৫ কিলোমিটার দূরে বঙ্গোপসাগরের বিভিন্ন এলাকায় আটটি মাছ ধরার ট্রলার ডুবে যায়। এ সময় ট্রলারে থাকা শতাধিক জেলে সাঁতরিয়ে এবং অন্য ট্রলারের সাহায্যে তীরে উঠতে সক্ষম হয়েছে।
তিনি আরও জানান, ঝড়ের সময় মুষলধারে বৃষ্টিতে ভিজে দুবলারচরে জেলেদের বিপুল পরিমাণ শুটকি মাছ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। শুটকি মাছ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় জেলেরা আর্থিকভাবে দুই কোটি টাকার ওপরে ক্ষতির মুখে পড়েছে। প্রায় ১০ হাজার জেলে শুটকি মৌসুমে দুবলারচরে মাছ শুকানোর কাজে অবস্থান করছেন।
আরও পড়ুন: ধলেশ্বরীতে ট্রলারডুবি: আরও ৩ জনের মরদেহ উদ্ধার