সাংবাদিক
২১০ পত্রিকার ডিক্লারেশন বাতিল করা হবে: তথ্যমন্ত্রী
অনিয়মিত পত্রিকার ডিক্লারেশন বাতিল করা হবে বলে জানিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। তিনি বলেছেন, ‘ব্রিফকেস বন্দি পত্রিকা, যেগুলো আসলে ছাপায় না। মাঝে মধ্যে হঠাৎ ছাপায়। সেগুলো আমি বন্ধের উদ্যোগ নিয়েছি। ইতোমধ্যেই ২১০টি পত্রিকার ডিক্লারেশন বাতিল করার জন্য জেলা প্রশাসকদের কাছে লেখা হয়েছে, প্রক্রিয়াধীন আছে।’
বৃহস্পতিবার রাজধানীর তোপখানা রোডে জাতীয় প্রেসক্লাবে রাজশাহী বিভাগ সাংবাদিক সমিতি, ঢাকা’র দ্বি-বার্ষিক সাধারণ সভা এবং বরেন্দ্র উন্নয়ন ভাবনা আলোচনায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তথ্যমন্ত্রী।
আরও পড়ুন: শিগগিরই তৈরি হবে আইপি টিভি রেজিস্ট্রেশন নির্দেশিকা: তথ্যমন্ত্রী
গণমাধ্যমের সুষ্ঠু বিকাশ একটি রাষ্ট্রের বিকাশের সাথে সম্পর্কিত এবং বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা সেটি বিশ্বাস করেন বিধায় গত সাড়ে ১২ বছরে বাংলাদেশে গণমাধ্যমের ব্যাপক বিকাশ ঘটেছে উল্লেখ করে ড. হাছান বলেন, ‘গণমাধ্যমের দ্রুত বিকাশের সাথে সাথে কিছু ধান্দাবাজও যুক্ত হয়েছে, এটিই বাস্তবতা। গণমাধ্যমকে কেউ নিজের স্বার্থে, কেউ ব্যবসায়িক ‘প্রোটেকশন’ দেয়ার জন্য ব্যবহারের চেষ্টা করছে আবার কেউ একটি ব্রিফকেস নিয়ে গণমাধ্যমের মালিক হয়ে যাচ্ছে, উনিই মালিক, উনিই সাংবাদিক, উনিই রিপোর্টার। এই দপ্তর থেকে ওই দপ্তরে ঘুরে বেড়ান বিজ্ঞাপন ‘কালেকশন’ করেন এবং সেই বিজ্ঞাপন যেদিন পান সেদিন পত্রিকা ছাপেন। একশ’ পত্রিকা ছাপেন, একশ’ দপ্তরে দেন। এতে ভালো গণমাধ্যমগুলো চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ছে, অনেক সময় টিকে থাকা কঠিন হয়ে যাচ্ছে।’
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘যারা পত্রিকার ডিক্লারেশন নিয়ে চালায় না, বরং বিজ্ঞাপন নেয়ার জন্য আবার সেটার জন্য নিউজপ্রিন্টের যে কোটা আছে, সেই নিউজপ্রিন্ট এনে বাজারে বিক্রি করে দেয়ার জন্য, এটিকেই ব্যবসা হিসেবে নেয়। পত্রিকা চালানো উদ্দেশ্য নয়, মূলত মূলধারার গণমাধ্যমগুলোর ক্ষতি করছে। সেই ক্ষতির প্রাথমিক বোঝাটা সাংবাদিকদের ওপর পড়ছে। সুতরাং এখানে একটি শৃঙ্খলা আনা দরকার। সেই উদ্যোগ আমি গ্রহণ করেছি। আপনাদের ধন্যবাদ যে, আপনারা আমার পাশে দাঁড়িয়েছেন।’
আরও পড়ুন: কোনো সাংবাদিক অহেতুক হয়রানির শিকার হবেন না: তথ্যমন্ত্রী
সাংবাদিকদের দেশের উন্নয়ন অগ্রগতির সহায়ক শক্তি হিসেবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আজকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে যে উন্নয়ন, অগ্রগতি হয়েছে, সেই উন্নয়ন, অগ্রগতির সহায়ক শক্তি হিসেবে কাজ করছেন সাংবাদিকরা। আমি মনে করি, সাংবাদিকদের সাথে সরকারের ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের ফলে এবং আমরা একযোগে কাজ করতে পারছি বিধায় দেশকেও আমরা এগিয়ে নিয়ে যেতে পারছি।’
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘সাংবাদিকরা গণমাধ্যম পরিচালনা করেন আর গণমাধ্যম হচ্ছে সমাজের দর্পণ। সাংবাদিকদের কাছে আমার একটি অনুরোধ, কোথাও কোনো ব্যত্যয় হলে সেটি যেমন প্রচার করতে হবে, তেমনি যখন সাফল্য আসবে, সেটিও ফলাও করে প্রচার করতে হবে। কারণ শুধু ব্যত্যয় হলে সেটিই যদি প্রচার হয় আর সাফল্যের প্রচার না হয়, তাহলে সঠিকভাবে সমাজ ও রাষ্ট্রের চিত্র পরিস্ফুটন হবে না এবং দর্পণটিও সঠিকভাবে কাজ করছে সেটি বলা যাবে না।’
আরও পড়ুন: সাংবাদিক নেতাদের ব্যাংক হিসাব তলবে উদ্বেগের কারণ নেই: তথ্যমন্ত্রী
এসময় গণমাধ্যম মালিকদের প্রতি সাংবাদিক কর্মচারীদের বীমা করার অনুরোধ জানান ড. হাছান। তিনি বলেন, ‘বীমা করলে সাংবাদিক ও কর্মচারীরা উপকৃত হবে এবং একইসাথে মালিকের দায়িত্বও পালন করা হবে। সেই সাথে করোনাকালে অনেক গণমাধ্যমের অসুবিধা হয়েছে। এখন করোনা কেটে গেছে সুতরাং যাদেরকে ছাঁটাই করা হয়েছিল, তাদের সবাইকে আবার কাজে ফিরিয়ে নেয়া হবে, এটিই আমার বিনীত অনুরোধ।’
রাজশাহী বিভাগ সাংবাদিক সমিতি, ঢাকা’র সভাপতি খায়রুজ্জামান কামালের সভাপতিত্বে সভায় বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা এমপি, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ আলম খান তপু বিশেষ অতিথি হিসেবে এবং বিএফইউজের কোষাধ্যক্ষ দীপ আজাদ, সাবেক মহাসচিব ওমর ফারুক, আয়োজক সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমান চৌধুরী বক্তব্য দেন।
কোনো সাংবাদিক অহেতুক হয়রানির শিকার হবেন না: তথ্যমন্ত্রী
কোনো সাংবাদিক অহেতুক হয়রানির শিকার হবেন না বলে জানিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।মঙ্গলবার বিকেলে সচিবালয়ে তথ্যমন্ত্রীর সঙ্গে তাঁর দপ্তরে বৈঠক করেন বাসসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবুল কালাম আজাদ, ডিবিসি২৪ চ্যানেলের চেয়ারম্যান ইকবাল সোবহান চৌধুরী, বিএফইউজের সাবেক সভাপতি মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল, সাবেক মহাসচিব আব্দুল জলিল ভূঁইয়া ও ওমর ফারুক, ডিইউজের সভাপতি কুদ্দুস আফ্রাদ এবং সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ আলম খান তপু।
আরও পড়ুন: সাংবাদিক নেতাদের ব্যাংক হিসাব তলবে উদ্বেগের কারণ নেই: তথ্যমন্ত্রীবৈঠক শেষে উপস্থিত সাংবাদিকদের ড. হাছান বলেন, ‘সাংবাদিক সংগঠনের নেতাদের ব্যাংক হিসাব চেয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে একটি চিঠি দেয়া হয়েছে। সেটি নিয়ে আলোচনা করতেই সাংবাদিক নেতারা এসেছিলেন। অত্যন্ত সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে আলোচনা হয়েছে। সরকার যে কারো হিসাব চাইতে পারে, কিন্তু কেন সংগঠনের নাম দিয়ে চাওয়া হলো, এটিই তাদের উদ্বেগের কারণ। আমি তাদেরকে বলেছি যে, অহেতুক যাতে কেউ হয়রানির শিকার না হয়, সে বিষয়টি তথ্যমন্ত্রী হিসেবে আমি দেখবো।’‘সেই সাথে এই হিসাব চাওয়ার প্রেক্ষিতে সরকারের সাথে সাংবাদিকদের যাতে কোনো ভুল বোঝাবুঝি না হয়, সেদিকে নজর রাখার জন্য তারাও বলেছেন, আমিও তাদেরকে অনুরোধ জানিয়েছি’, বলেন তথ্যমন্ত্রী।
আরও পড়ুন: তত্ত্বাবধায়ক সরকার আর কখনো হবে না: তথ্যমন্ত্রীড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা সাংবাদিকবান্ধব প্রধানমন্ত্রী। সাংবাদিকদের কল্যাণের জন্য, দেখভাল করার জন্য তিনি অনেক কিছু করেছেন। তিনি সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট প্রতিষ্ঠা করেছেন। জাতীয় প্রেসক্লাবের ভবন নির্মাণে অনুদান দিয়েছেন। করোনাকালে সাংবাদিকদেরকে এককালীন সহায়তা দিয়েছেন। তিনি সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টে ১০ কোটি টাকা অনুদান দিয়েছেন। সাংবাদিকদের যাতে কোনো কারণে কোনো অসুবিধা না হয় সেজন্য প্রধানমন্ত্রী সবসময় যত্নবান এবং নিয়মিত খোঁজখবর রাখেন। কেউ যাতে সরকারের সাথে সাংবাদিকদের দূরত্ব সৃষ্টি করতে না পারে, সে বিষয়ে সবাইকে সতর্ক থাকতে অনুরোধ জানাচ্ছি।’
১১ সাংবাদিক নেতার ব্যাংক হিসাব তলবে ডিআরইউ’র প্রতিবাদ
সাংবাদিকদের শীর্ষ সংগঠনগুলোর ১১ নেতার ব্যাংক হিসাব তলবের ঘটনায় প্রতিবাদ জানিয়েছে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ)। শনিবার এক সংবাদ সম্মেলনে ডিআরইউ নেতারা এই প্রতিবাদ জানান। সংগঠনটি এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।
সাংবাদিক নেতারা বলেন, সারাদেশের সাংবাদিকদের প্রতিনিধিত্বকারী এই সংগঠনগুলোর নির্বাচিত শীর্ষ নেতাদের নাম ও প্রতিষ্ঠানকে একীভূত করে ঢালাওভাবে তাদের ব্যাংক হিসাব তলবের ঘটনায় সারাদেশের সাংবাদিকদের মনে গভীর উদ্বেগ-উৎকন্ঠার সৃষ্টি হয়েছে। দেশের পেশাদার সাংবাদিকদের প্রতিষ্ঠিত সংগঠনগুলোর নির্বাচিত শীর্ষ নেতাদের ব্যাংক হিসাব এভাবে তলব করা বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি নজিরবিহীন ঘটনা। কেননা এর আগে কোন দিন কোন সময়ে এরকম ঘটনা ঘটেনি। কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগের তদন্ত হতেই পারে। কিন্তু সাংবাদিকতা পেশায় প্রতিষ্ঠিত সংগঠনসমূহের নির্বাচিত শীর্ষ নেতাদের নামে ঢালাওভাবে এ ধরনের পদক্ষেপ উদ্দেশ্যমূলক বলে আমরা মনে করি। নির্বাচিত শীর্ষ নেতাদের ব্যাংক হিসাব তলবের মাধ্যমে সাংবাদিকদের সব সংগঠন, প্রতিষ্ঠান ও সাংবাদিকতা পেশাকে জনমনে প্রশ্নবিদ্ধ করা হয়েছে বলে অভিমত প্রকাশ করেন সাংবাদিক নেতারা।
আরও পড়ুন: ১১ সাংবাদিক নেতার ব্যাংক হিসাব তলবে ডিইউজের উদ্বেগ
ডিআরইউ নেতারা বলেন, বাংলাদেশ ফাইনান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) কেন, কী কারণে এ ধরনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে তা আমাদের বোধগম্য নয়। এতে সারাদেশের সাংবাদিকদের মনে নানা ধরনের আশঙ্কারও সৃষ্টি করেছে।
নেতারা প্রশ্ন রেখে বলেন, বিএফআইইউ সাংবাদিক নেতাদের ব্যাংক হিসাবের তথ্য চেয়ে যে চিঠি দিয়েছে তাতে তথ্য পাওয়ার আগেই তথ্য চাওয়ার খবর গণমাধ্যমে প্রকাশ করে দেয়ার উদ্দেশ্য কী ? সাংবাদিক নেতাদের ব্যাংক হিসাব চেয়ে বাংলাদেশ ব্যাংককে বিএফআইইউ’র দেয়া চিঠি গণমাধ্যমে প্রকাশ করায় সমাজের মানুষের কাছে সাংবাদিক নেতারা তথা সংগঠন ও প্রতিষ্ঠানের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হয়েছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। একই সাথে সরকারের দায়িত্বশীল কর্তৃপক্ষের কাছে এ ঘটনার সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা ও প্রতিকার দাবি করছি। কেননা এতে করে সরকার ও গণমাধ্যমকে মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দেয়ার প্রয়াস চালানো হয়েছে। যা কারো কাম্য নয়।
আরও পড়ুন: করোনা টিকা: ডিআরইউ সদস্যদের জাতীয় পরিচয়পত্র জমা দেয়ার আহ্বান
নেতারা জানান, যেসব সংগঠনের নেতারা ব্যাংক হিসাব তলব করা হয়েছে তাদের মধ্যে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন, সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস খান, বিএফইউজে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি মোল্লা জালাল ,ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব আবদুল মজিদ, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের-বিএফইজে সভাপতি এম.আবদুল্লাহ, মহাসচিব নুরুল আমিন রোকন, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন- ডিইউজে সভাপতি কাদের গনি চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন-ডিইউজে সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ আলম খান তপু এবং ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি মুরসালিন নোমানী ও সাধারণ সম্পাদক মসিউর রহমান খান এর নাম রয়েছে।
১১ সাংবাদিক নেতার ব্যাংক হিসাব তলবে ডিইউজের উদ্বেগ
ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে), বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে), জাতীয় প্রেসক্লাব ও ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) নির্বাচিত শীর্ষ ১১ নেতার ব্যাংক হিসাব তলবের ঘটনায় উদ্বেগ জানিয়েছে ডিইউজের নির্বাহী পরিষদ।
ডিইউজে মনে করে, একটি পেশার শীর্ষ নেতাদের এভাবে ব্যাংক হিসাব তলব করার ঘটনা নজিরবিহীন ও উদ্দেশ্যমূলক। এতে গোটা সাংবাদিক সমাজে তৈরি হয়েছে ভীতিকর পরিবেশ এবং স্বাধীন সাংবাদিকতার পথে এই ঘটনা হুমকিস্বরূপ।
শুক্রবার (১৭ সেপ্টেম্বর) বিকালে ডিইউজের নির্বাহী পরিষদের সভায় এই উদ্বেগ উৎকণ্ঠা প্রকাশ করা হয় বলে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সংগঠনটি জানিয়েছে।
আরও পড়ুন: বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাঙার হুমকি রাষ্ট্রের চেতনায় আঘাত: ডিইউজে
এই পরিস্থিতিতে আগামী রবিবার বিকালে সাবেক ও বর্তমান সাংবাদিক নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
ডিইউজের সভাপতি কুদ্দুস আফ্রাদের সভাপতিত্বে এই সভায় বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত সংগঠনের বার্ষিক সাধারণ সভায় (এজিএম) গৃহীত সিদ্ধান্তগুলো পর্যালোচনা ও সাধারণ সদস্যদের বিপুল উপস্থিতির জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা হয়।
বার্ষিক সাধারণ সভায় গঠনতন্ত্র সংশোধন প্রস্তাব অনুমোদনের জন্য সদস্যদের ধন্যবাদ জানানো হয়। একই সাথে 'দ্বৈত ভোটার হিসাবে পরিচিত' সমজাতীয় দুটি ট্রেড ইউনিয়নের সদস্য ১৪৭ জনের সদস্যপদ বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে ডিইউজের এজিএম। সাধারণ সম্পাদক ও কোষাধ্যক্ষের রিপোর্টও অনুমোদন করা হয়।
আরও পড়ুন: গণমাধ্যমের অস্থিরতা নিরসনে সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা ডিইউজের
আলোচনায় অংশ নেন ডিইউজের সহ-সভাপতি এম এ কুদ্দুস, সাংগঠনিক সম্পাদক এ জিহাদুর রহমান জিহাদ, প্রচার সম্পাদক আছাদুজ্জামান, ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক দুলাল খান, জনকল্যাণ সম্পাদক সোহেলী চৌধুরী, দপ্তর সম্পাদক জান্নাতুল ফেরদৌস চৌধুরী সোহেল, নির্বাহী পরিষদ সদস্য সাকিলা পারভীন, রাজু হামিদ, ইব্রাহিম খলিল খোকন, জুবায়ের রহমান চৌধুরী, বাংলাদেশ পোস্টের ডেপুটি ইউনিট চিফ নাজমুল হাসান প্রমুখ।
সাংবাদিক নেতাদের ব্যাংক হিসাব তলবে উদ্বেগের কারণ নেই: তথ্যমন্ত্রী
সাংবাদিক নেতাদের ব্যাংক হিসাব তলবে উদ্বেগের কারণ নেই বলে মন্তব্য করেছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। তিনি বলেছেন, ‘সরকার অবশ্যই যে কোনো কারণে হিসাব তলব করতে পারে, ব্যাংক হিসাবও তলব করতে পারে। তবে আমি মনে করি এতে উদ্বেগের কোনো কারণ নাই।’
বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) বার্ষিক সাধারণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তথ্যমন্ত্রী এই মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, ‘সাংবাদিক নেতাদের ব্যাংক হিসাব চেয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের ফিন্যান্সিয়াল ইন্টিলিজেন্ট ইউনিট থেকে চিঠি দেয়া হয়েছে। আমিও পত্রিকা দেখে খোঁজ খবর নেয়ার চেষ্টা করেছি। যাদের ব্যাংক হিসাব তলব করা হয়েছে, তাদের আমি চিনি ও জানি। তাদের অনেকের আর্থিক অবস্থা সম্পর্কে আমি জ্ঞাত।’
আরও পড়ুন: সাংবাদিক নেতাদের ব্যাংক হিসাব তলবের ঘটনায় নিন্দা ও প্রতিবাদ প্রেসক্লাবের
সাংবাদিকরাই গণমাধ্যমের নানা বিশৃঙ্খলা দূর করে শৃঙ্খলা আনার দাবি জানিয়েছেন উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেছেন, ‘আমি সাংবাদিকদের একজন হয়ে সেই চোখ দিয়ে বিষয়গুলো দেখার এবং সাংবাদিকদের সাথে আলাপ আলোচনা করে বিশৃঙ্খলা দূর করার চেষ্টা করি। অনেক ক্ষেত্রে শৃঙ্খলা এসেছে এবং এ প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।’ডিইউজে সভাপতি কুদ্দুস আফ্রাদের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে) মোল্লা জালাল ও জাতীয় প্রেসক্লাব সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন বক্তব্য দেন এবং ডিইউজে’র সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ আলম খান তপু বার্ষিক প্রতিবেদন পেশ করেন। বিএফইউজে’র সাবেক সভাপতি মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল সভাটি পরিচালনা করেন।
আরও পড়ুন: নিউজপোর্টালের শৃঙ্খলায় হাইকোর্টের নির্দেশনা সহায়ক: তথ্যমন্ত্রীড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বেসরকারি টিভি চ্যানেলগুলোর ক্রম নিয়ে একটা বিশৃঙ্খলা ছিল, ‘কেবল অপারেটরদের কাছে টেলিভিশন চ্যানেলগুলোকে ধর্ণা দিতে হতো। এখন সম্প্রচার শুরুর তারিখ অনুযায়ী চ্যানেলগুলো দেখানো হয়। পয়লা অক্টোবর থেকে বিদেশি চ্যানেলগুলো যাতে অনুমতি ছাড়া কোনো বিজ্ঞাপন দেখাতে না পারে সেজন্য আমরা দেশে প্রচলিত আইন কার্যকর করতে যাচ্ছি।’ আমি সেটি ভারতের তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রীকেও অবহিত করেছি। কারণ ভারতের প্রচুর চ্যানেল এখানে প্রদর্শিত হয়, যেগুলোর মাধ্যমে বিজ্ঞাপন দেখানো হয়, যেটি আইন বহির্ভূত। আইপি টিভি’র ক্ষেত্রেও শৃঙ্খলা আনার চেষ্টা করছি, রেজিস্ট্রেশন দেয়ার কাজ খুব সহসা শুরু হবে।’সংবাদপত্র প্রসঙ্গে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘সেখানেও নানা অনিয়ম বিশৃঙ্খলা আছে। ডিএফপিতে পত্রিকার যে প্রচার সংখ্যা, সেটি যুগ যুগ ধরে একটি অবাস্তব সংখ্যা। অনেক সেটিকে ভৌতিক প্রচার সংখ্যা বলেন। পত্রিকা বের হয় তিন হাজার কিন্তু প্রচার সংখ্যা এক লাখ, পত্রিকা বের হয় পাঁচ হাজার প্রচার সংখ্যা দুই লাখ। আমরা সেখানেও একটি শৃঙ্খলা আনবো। চারশ’ পত্রিকা গত দুইবছরে একটি সংখ্যাও ডিএফপিতে জমা দেয়নি।’
আরও পড়ুন: আওয়ামী ঘরানার হাজারো অ্যাক্টিভিস্ট সামাজিক মাধ্যমে সক্রিয়: তথ্যমন্ত্রীমন্ত্রী জানান, ‘ইতোমধ্যেই ১২০টির মতো পত্রিকার ডিক্লারেশন বাতিল করা হয়েছে। কারণ এই পত্রিকাগুলো বের হয় না। কিন্তু বিজ্ঞাপন পাওয়ার জন্য মন্ত্রণালয়ে দৌড়াদৌড়ি করে। যেদিন বিজ্ঞাপন পায়, সেদিন ছাপায়। আর এতে করে যে পত্রিকাগুলো সত্যিকারের অর্থে প্রকাশিত হয় তারা বিজ্ঞাপন বঞ্চিত হয়। বিজ্ঞাপন বঞ্চিত হওয়ার কারণে সেই পত্রিকার সাংবাদিকরা বেতন থেকে বঞ্চিত হয়। সাংবাদিকরা সেখানে শৃঙ্খলা আনার দাবি জানিয়েছেন, সেই দাবি আমাকে সাহস জুগিয়েছে, আমি সেখানে শৃঙ্খলা আনবো।’ড. হাছান বলেন, ‘করোনাকালে বাংলাদেশ ছাড়া এই উপমহাদেশে কোথাও সাংবাদিকদের এককালীন সাহায্য দেয়া হয়নি। ২০২০ সালে যখন করোনা দেখা দিলো তখন সাংবাদিকদের এককালীন সহায়তা দেয়ার জন্য আমি প্রাণপণ চেষ্টা করেছি। কিন্তু অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে কোনো বরাদ্দ না পেয়ে আমাদের মন্ত্রণালয়ের অব্যবহৃত অর্থ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টে বরাদ্দ দিয়ে এককালীন ১০ হাজার টাকা করে প্রায় সাড়ে তিন হাজার সাংবাদিককে করোনাকালীন সহায়তা দেয়া হয়েছে। এরপর ২০২১ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সব জেনে ১০ কোটি টাকা সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টে অনুদান দিয়েছেন। এই সাহায্য চলমান রয়েছে।’এই কল্যাণ ট্রাস্ট প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যাই স্থাপন করেছেন এবং এখন শুধু সাংবাদিক নয়, তার পরিবারের সদস্যদেরও চিকিৎসা কিংবা লেখাপড়ার ক্ষেত্রে সহায়তার জন্য নীতিমালার খসড়া হয়েছে যা চূড়ান্ত হলে সাংবাদিকদের পরিবারও উপকৃত হবে, জানান মন্ত্রী।এসময় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন সম্পর্কে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘এটি দেশের সকল মানুষের ডিজিটাল নিরাপত্তা দেয়ার জন্য। আমাদের প্রতিবেশি দেশগুলোসহ বিশ্বব্যাপী এ ধরণের আইন আছে, আরো কঠিন আইন আছে। একজন সাংবাদিকের বা একজন গৃহিনীর বা যে কারোর চরিত্র ডিজিটাল মাধ্যমে হনন করা হলে তিনি এই আইনে প্রতিকার পাবেন। সেজন্যই ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন প্রয়োজন। একইসাথে এই আইন যেন সাংবাদিকদের দায়িত্ব পালনে প্রতিবন্ধক না হয়, সেটি দেখতে হবে।’
আরও পড়ুন: ভারত সফর অত্যন্ত ফলপ্রসূ: তথ্যমন্ত্রীতথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘গণমাধ্যমের স্বাধীনতার প্রয়োজন আছে, তবে লক্ষ্য রাখতে হবে আমার স্বাধীনতা যেন অপরের স্বাধীনতা ক্ষুন্ন না করে। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে গণমাধ্যমের যে স্বাধীনতা আছে, অনেক উন্নয়নশীল দেশেও এরকম স্বাধীনতা নেই। দুর্নীতি, অনাচার প্রতিরোধে, সমাজে শৃঙ্খলা আনতে, সমাজের তৃতীয় নয়ন খুলে দেয়ার জন্য, অবহেলিত ব্যক্তির প্রতি সমাজ, রাষ্ট্র, সরকারের দৃষ্টিপাতের জন্য অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার প্রয়োজন আছে। কিন্তু সংবাদপত্র, টেলিভিশন বা অনলাইনে প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ এখনও সমগুরুত্বে প্রকাশ হয় না।’
সাংবাদিক নেতাদের ব্যাংক হিসাব তলবের ঘটনায় নিন্দা ও প্রতিবাদ প্রেস ক্লাবের
সকল বাণিজ্যিক ব্যাংকের কাছে জাতীয় প্রেস ক্লাবসহ সাংবাদিকদের গুরুত্বপূর্ণ সংগঠনের নির্বাচিত নেতাদের ব্যাংক হিসাব বিবরণী চেয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের দেয়া চিঠিতে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে জাতীয় প্রেস ক্লাব ব্যবস্থাপনা কমিটি।
প্রেস ক্লাবের যুগ্ম সম্পাদক মাঈনুল আলম স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, ব্যবস্থাপনা কমিটির জরুরি সভায় এ বিষয়ে বিস্ময় প্রকাশ করে প্রতিবাদ জানানো হয়।
আরও পড়ুন: মিডিয়ার ওপর ইসরায়েলি বর্বরতার নিন্দা জানিয়েছে জাতীয় প্রেস ক্লাব
সভায় বলা হয়, প্রচলিত আইনে কোন ব্যক্তি বিশেষের বিরুদ্ধে অভিযোগের তদন্ত হতেই পারে। কিন্তু শুধুমাত্র একটি পেশার সকল সংগঠনের নির্বাচিত শীর্ষ নেতাদের নামে ঢালাও এই সিদ্ধান্ত বিশেষ উদ্দেশ্যমূলক বলে মনে করার যথেষ্ট কারণ রয়েছে। ঢালাও ব্যাংক হিসাব তলবে সাংবাদিক সমাজের ভাবমূর্তি ক্ষু্ন্ন হয়েছে। এমনকি নজীরবিহীনভাবে জাতীয় প্রেস ক্লাবের মত একটি জাতীয় প্রতিষ্ঠানকে প্রশ্নবিদ্ধ করা হয়েছে। যা কখনও কোন কালে ঘটেনি।
আরও পড়ুন: প্রেস ক্লাবকে সংঘর্ষের ঢাল বানানো অপরাধের শামিল: তথ্যমন্ত্রী
সভায় আরও বলা হয়, নির্বাচিত সাংবাদিক নেতাদের জনসমক্ষে হেয় ও সামাজিক মর্যাদা ক্ষুন্ন করা হয়েছে। জাতীয় প্রেস ক্লাব সাংবাদিক সমাজকে হেয় প্রতিপন্নকারী এই সিদ্ধান্তের নিন্দা জানিয়ে অবিলম্বে তা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে।
খুবি শিক্ষকের বিরুদ্ধে সহকর্মীকে যৌন হয়রানির অভিযোগ!
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ছোটন দেবনাথের বিরুদ্ধে তার এক নারী সহকর্মীকে যৌন হয়রানি করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ইতোমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ওই শিক্ষককে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কার্যক্রম থেকে সাময়িক অব্যাহতি দিয়েছে।
অভিযোগ পাওয়ার পর খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌন নিপীড়ন প্রতিরোধ সেল ঘটনাটি তদন্ত শুরু করেছে বলে জানা গেছে। বুধবার বিকেলে এক পক্ষের শুনানিও অনুষ্ঠিত হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে, তদন্ত কমিটির প্রধান অধ্যাপক মোসা. তাসলিমা খাতুন বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মানুযায়ী সব কাজ করা হচ্ছে। বিষয়টি তদন্তাধীন থাকায় বিস্তারিত বলা যাচ্ছে না।
আরও পড়ুন: খুলনায় ‘নব্য জেএমবি সদস্য’ সন্দেহে খুবির ২ ছাত্র আটক
জানা গেছে, চলতি বছরের ২৬ জানুয়ারি রাতে সহকারী অধ্যাপক ছোটন দেবনাথের ভাড়া বাসায় ডেকে নিয়ে ওই নারী শিক্ষককে যৌন হয়রানি করেন। পরে ঘটনার জন্য ছোটন দেবনাথ ওই নারী শিক্ষকের কাছে ক্ষমাও চেয়েছেন।
সম্প্রতি ঘটনাটি নিয়ে ছোটন ‘ব্ল্যাকমেইল’ করার চেষ্টা করলে ওই নারী শিক্ষক বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌন নিপীড়ন প্রতিরোধ সেলের কাছে লিখিতভাবে অভিযোগ করেন।
গত বৃহস্পতিবার (২ সেপ্টেম্বর) ওই অভিযোগ পাওয়ার পর শনিবার যৌন নিপীড়ন প্রতিরোধ কমিটি বৈঠক করে ব্যাপারটি তদন্ত করার সিদ্ধান্ত নেয়। কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ছোটন দেবনাথকে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কার্যক্রম থেকে সাময়িক অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭ শিক্ষার্থীকে শাস্তি
এ ব্যাপারে কথা বলার জন্য ওই নারী শিক্ষকের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তার নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়।
তবে শিক্ষক ছোটন দেবনাথ দাবি করেন, ‘কী নিয়ে এবং কেন আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়েছে তা এখনও বিস্তারিত কিছু জানি না। আমাকে কমিটির পক্ষ থেকে কিছু জানানো হয়নি।’
সাংবাদিক মুজাক্কির হত্যা: হাইকোর্টে তিন আসামির জামিন
নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার চাপরাশিরহাটে আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত সাংবাদিক বুরহান উদ্দিন মুজাক্কির হত্যা মামলার তিন আসামিকে জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট।
তারা হলেন-ইউসুফ নবী ওরফে বাহাদুর, আব্দুল আমিন ও আজিজুল হক মানিক।
রবিবার (২৯ আগস্ট) বিচারপতি ফরিদ আহমেদ ও বিচারপতি মহি উদ্দিন শামীমের হাইকোর্ট বেঞ্চ তাদের পৃথক আবেদন শুনে তিন মাসের জন্য এই জামিনের আদেশ দেন। আদালতে আসামিদের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুর কাজল। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ড. মো. বশির উল্লাহ।
ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ড. মো. বশির উল্লাহ জানান, হাইকোর্টের জামিন আদেশের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করা হবে।
বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জার মিথ্যা বক্তব্যের প্রতিবাদে চলতি বছরের ১৯ ফেব্রুয়ারি উপজেলার চাপরাশিরহাট বাজারে বিক্ষোভ মিছিল বের করে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান (বাদল)। ওই সময় কাদের মির্জা ও বাদল গ্রুপের সংঘর্ষ ও গুলি বিনিময়ের সময় দৈনিক বাংলাদেশ সমাচার পত্রিকার কোম্পানীগঞ্জ প্রতিনিধি বুরহান উদ্দিন মুজাক্কির গুলিবিদ্ধ হন। ঘটনার একদিন পর ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান বুরহান উদ্দিন মুজাক্কির।
এ ঘটনায় নিহত সাংবাদিকের বাবা নুরুল হুদা মাস্টার বাদী হয়ে গত ২৩ ফেব্রুয়ারি অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরে মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পায় পিবিআই।
আসামি ইউসুফ নবী ওরফে বাহাদুর, আব্দুল আমিন ও আজিজুল হক মানিক গত ১১ মার্চ থেকে কারাগারে রয়েছেন।
আরও পড়ুন: কোম্পানীগঞ্জে আ’লীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ সাংবাদিকের ঢাকায় মৃত্যু
কোম্পানীগঞ্জে আ’ লীগের মিছিলে হামলা, গুলিবিদ্ধ ৬
সাংবাদিক আলতাফ মাহমুদের কবর রক্ষার দাবি ডিইউজের
ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) সাবেক সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক প্রয়াত আলতাফ মাহমুদের কবর নদী ভাঙনের কবল থেকে রক্ষার আহ্বান জানিয়েছে ডিইউজের নির্বাহী পরিষদ।
পটুয়াখালীর রামনাবাদ নদীর ভাঙনের কবলে পড়েছে আলতাফ মাহমুদের কবর ও সংশ্লিষ্ট জনপদ। এই জনপদকে রক্ষা করতে বেড়িবাঁধ নির্মাণ করা জরুরি হয়ে পড়েছে।
বুধবার (২৫ আগস্ট) ডিইউজের নির্বাহী পরিষদের সভায় এই আহ্বান জানানো হয়।
সংগঠনের সভাপতি কুদ্দুস আফরাদের সভাপতিত্বে সভায় আগামী ৮ সেপ্টেম্বর ডিইউজের বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠানের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
২০১০ সালে ঢাকায় মৃত্যুর পর পটুয়াখালীর গলাচিপায় আলতাফ মাহমুদকে তার গ্রামের বাড়িতে দাফন করা হয়।
ডিইউজের সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ আলম খান তপুর সঞ্চালনায় এসময়ডিইউজের সহ সভাপতি এম এ কুদ্দুস, যুগ্ম সম্পাদক খায়রুল আলম, প্রচার সম্পাদক আছাদুজ্জামান, ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক দুলাল খান, জনকল্যাণ সম্পাদক সোহেলী চৌধুরী, দপ্তর সম্পাদক জান্নাতুল ফেরদৌস চৌধুরী সোহেল, নির্বাহী পরিষদের সদস্য সাকিলা পারভীন, রাজু হামিদ, এ এম শাহজাহান মিয়া, জুবায়ের রহমান চৌধুরী ও আবু জাফর সূর্য উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: সাংবাদিক জাহিদুজ্জামানের মৃত্যুতে প্রধানমন্ত্রীর শোক
বস্তনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশনে সাংবাদিকদের আরও বেশি ভূমিকা চান খাদ্যমন্ত্রী
গণমাধ্যমের জন্য ‘নৈতিক আচরণবিধি’ প্রণয়নে হাইকোর্টের রুল
সংবাদপত্র, সংবাদ সংস্থা ও সাংবাদিকদের উচ্চ মানসম্পন্ন পেশাদারিত্ব নিশ্চিতে একটি ‘নৈতিক আচরণবিধি’ প্রণয়ন নিয়ে হাই কোর্ট রুল জারি করেছেন।
প্রেস কাউন্সিল আইন ১৯৭৪ এর ১১(২)(খ) অনুযায়ী গণমাধ্যমের জন্য কার্যকর ও উপযুক্ত একটি নৈতিক আচরণবিধি প্রণয়নে নিষ্ক্রিয়তাকে কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না জানতে চাওয়া হয়েছে এই রুলে।
এর পাশাপাশি পত্রিকা ও অন্যান্য সংবাদ সংস্থা, সাংবাদিকদের উচ্চ মানসম্পন্ন পেশাদারিত্বের জন্য একটি নৈতিক আচরণবিধি প্রণয়ন করার নির্দেশ কেন দেয়া হবে না, তাও জানতে চাওয়া হয়েছে ।
সোমবার এ সংক্রান্ত এক রিটের শুনানি নিয়ে বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি মো. কামরুল হোসেন মোল্লার হাইকোর্টের ভার্চুয়াল বেঞ্চ এই রুল জারি করেন।
এছাড়াও রুলে অনুমোদনহীন ও অনিবন্ধিত অনলাইন নিউজ পোর্টালের প্রচার-প্রকাশ বন্ধে আইনি পদক্ষেপ নিতে এবং নিবন্ধনের জন্য বিবেচনাধীন অনলাইন নিউজ পোর্টালগুলোকে নিবন্ধন দিতে কেন নির্দেশ দেয়া হবে না, ন্যাশনাল ব্রডকাস্ট পলিসি-২০১৪ অনুযায়ী একটি ‘ব্রডকাস্টিং কমিশন’ গঠনে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে কেন নির্দেশ দেয়া হবে না তাও জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট।
আরও পড়ুন: কিছু সংস্থা বিবৃতি বিক্রি করে: তথ্যমন্ত্রী
তথ্য সচিব, বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিলের চেয়ারম্যানকে সাত দিনের মধ্যে এ রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী রাশিদা চৌধুরী নীলু ও জারিন রহমান। আর রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল নওরোজ মো. রাসেল চৌধুরী।
এর আগে গত ৫ মে যেকোনো সংবাদ প্রকাশের ক্ষেত্রে গণমাধ্যমের জন্য ‘নৈতিক নীতিমালা’ প্রণয়ন করতে লিগ্যাল নোটিশ পাঠান সুপ্রিম কোর্টের দুই জন নারী আইনজীবী ব্যারিস্টার জারিন রহমান ও অ্যাডভোকেট রাশিদা চৌধুরী নীলু। নোটিশে বলা হয়, সম্প্রতি রাজধানীতে ২১ বছরের এক নারীর লাশ উদ্ধারের ঘটনায় আত্মহত্যায় প্ররোচণার অভিযোগে মামলা করা হয়। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে দেশের সংবাদ মাধ্যমগুলোর মধ্যে বিশেষ করে অনলাইন নিউজ পোর্টালগুলোতে অগ্রহণযোগ্য সংবাদ পরিবেশন করা হয়েছে। অথচ এসব সংবাদ পরিবেশনা বন্ধে বিটিআরসি কিংবা প্রেস কাউন্সিল কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করেনি।
আরও পড়ুন: চলতি মাসেই আইপি টিভির অনুমোদন দেয়া শুরু: তথ্যমন্ত্রী
নোটিশে বলা হয়, এমতাবস্থায় বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিল কর্তৃক সংবাদ পরিবেশনের ক্ষেত্রে নৈতিক নীতিমালা প্রণয়ন জরুরি হয়ে উঠেছে। একইসঙ্গে দেশে অনিবন্ধিত নিউজ পোর্টালগুলো চালু থাকার পরও বিটিআরসি কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। তাই এসব পোর্টালগুলোর রেজিস্ট্রেশনও জরুরি। নোটিশের জবাব না পাওয়ায় হাইকোর্টে রিট করেন ওই দুই আইনজীবী।
আরও পড়ুন: এমবিবিএস-বিডিএস ছাড়া নামের আগে ডাক্তার ব্যবহার করা যাবে না: হাইকোর্ট