উন্নয়ন
নেতাদের সমালোচনা নয়, সরকারের উন্নয়নের কথা বলুন: কাজী জাফর উল্লাহ
নেতাদের সমালোচনা না করে দলীয় নেতাকর্মীদের জনগণের কাছে সরকারের উন্নয়নের কথা তুলে ধরার আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফর উল্লাহ।
তিনি বলেন, ‘দলের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি না করে তৃণমূল নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ করে আগামী নির্বাচনের জন্য শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করুন। অযথা নিজেরে মধ্যে ভাঙন ধরাবেন না। দলের নেতাদের সমালোচনা না করে, সরকারের উন্নয়নের কথা বলুন।’
বুধবার ফরিদপুরের ভাঙ্গায় নিজ বাড়ী কাউলি বেড়া জেলা আওয়ামী লীগ ও উপজেলার আওয়ামী লীগসহ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি এ কথা বলেন।
জাফর উল্লাহ বলেন, ‘আমরা নেতারা যদি সকলেই মিলেমিশে চলতে পারি তাহলে তৃণমূলের নেতাকর্মীরা উৎসাহিত হবে, আর এতে আওয়ামী লীগ শক্তিশালী হবে।
পড়ুন: মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে শনিবার বিএনপির গণঅনশন কর্মসূচি
তিনি বলেন, নিজেরদের গীবত করে যদি কেউ বাহবাহ নিতে চান, তারা নিশ্চয় বোকার স্বর্গের বাস করছেন, নিজের যেমন ক্ষতি করছেন, তেমনি দলেরও।
আওয়ামী লীগের এই প্রবীন নেতা বলেন, নৌকায় ভোট দিলে দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন হয়। নিজেকে এবং দেশের মানুষকে ভালো রাখেতে হলে নৌকাকে বিজয়ী করার বিকল্প নেই।
এসময় ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাড. সুবল চন্দ্র সাহা, সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা সৈয়দ মাসুদ হোসেন, সাবেক সাধারণ সম্পাদক বিপুল ঘোষসহ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
পড়ুন: দ্রব্যমূল্য কমায় জনগণ স্বস্তিতে, বিএনপি অস্বস্তিতে: তথ্যমন্ত্রী
ভালো পরিকল্পনা ও গণতন্ত্র বাংলাদেশের উন্নয়নের প্রেরণা: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সরকার পরিকল্পিতভাবে ও গণতান্ত্রিক পরিবেশে সব কর্মসূচি বাস্তবায়ন করায় বাংলাদেশ কাঙ্ক্ষিত উন্নয়ন অর্জন করেছে।
সোমবার প্রধানমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন গণভবনে বিশ্বের বিখ্যাত ইনোভেশনস (প্রযুক্তি, গভর্ন্যান্স ও বিশ্বায়ন) সাময়িকীর সম্পাদক মার্কিন অর্থনীতিবিদ ফিলিপ অয়ারসওয়াল্ড ও ইকবাল জেড কাদিরের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এ কথা বলেন।
ইনোভেশনস সাময়িকীটি এমআইটি প্রেস থেকে প্রকাশিত এবং প্রতিষ্ঠানটি কেমব্রিজের ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির অধিভুক্ত।
এ সময় বঙ্গবন্ধুর দৌহিত্র রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমেদ কায়কাউস, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব তোফাজ্জল হোসেন মিয়া ও প্রধানমন্ত্রীর বাণী লেখক এম নজরুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দলকে প্রধানমন্ত্রীর অভিনন্দন
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, ইনোভেশনস সাময়িকীর সম্পাদকরা বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর কাছে ‘৫০ এ বাংলাদেশ’ শিরোনামের দ্বাদশ ভলিউম, সংখ্যা ১-২ হস্তান্তর করেন।
শেখ হাসিনা বলেন, বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের মানুষকে শান্তি, সমৃদ্ধি ও সুখে থাকতে দেখতে চেয়েছিলেন।
তিনি বলেন, তার সরকার জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্ন বাস্তবায়নে অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছে।
ইনোভেশনস সাময়িকীর বর্তমান ভলিউমে প্রধানমন্ত্রীর লেখা একটি প্রবন্ধ রয়েছে যার শিরোনাম ‘স্ট্রাইভিং টু রিয়ালাইজ দ্য আইডিয়ালস অব মাই ফাদার’।
আরও পড়ুন: আরব আমিরাত সফর শেষে দেশে ফিরেছেন প্রধানমন্ত্রী
এছাড়া নোবেল পুরস্কার বিজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন, কর্নেল ইউনিভার্সিটির অর্থনীতির অধ্যাপক কশিক বোস ও ইনভেশনস সাময়িকীর সম্পাদক ইকবাল জেড কাদিরসহ সাতজন বিখ্যাত লেখকও এই সংখ্যায় প্রবন্ধ লিখেছেন।
শেখ হাসিনা তার প্রবন্ধে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ইতিহাস, যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশ পুনর্গঠন, তার প্রবাসের দিন, স্বদেশ প্রত্যাবর্তন ও গণমানুষের নেতা হয়ে ওঠার ইতিহাস তুলে ধরেন।
সরকার বাংলাদেশের বিহারীদের জীবনমান উন্নয়নে পরিকল্পনা করছে: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন মানবিক বিবেচনায় তার সরকার দেশে আটকে পড়া বিহারীদের উন্নত জীবন দেয়ার পরিকল্পনা করছে, যদিও তারা বাংলাদেশের স্বাধীনতার পরে পাকিস্তানের নাগরিকত্ব বেছে নিয়েছিল।
তিনি বলেন, ‘আমরা একজন মানুষকে মানুষ হিসেবে দেখতে চাই। হয়তো তারা এখানে থাকতে চায়নি, কিন্তু তারা এখন কোথায় যাবে? তাদের পরবর্তী প্রজন্ম এই দেশে জন্ম নিয়েছে। আমাদেরই তাদের জন্য কিছু করতে হবে।’
রবিবার ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ৪৪ নং ওয়ার্ডের কাঁচকুড়া হাইস্কুল মাঠে আয়োজিত ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের নবনির্মিত ১৮টি ওয়ার্ডের সড়ক অবকাঠামো ও ড্রেনেজ ব্যবস্থা নির্মাণ ও উন্নয়ন (ফেজ-১) উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে প্রধানমন্ত্রী ভার্চুয়ালি যুক্ত এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘তারা পাকিস্তানে যেতে চেয়েছিল এবং স্বাধীনতার পর পাকিস্তানি নাগরিকত্ব নিতে চেয়েছিল। কিন্তু পাকিস্তান কখনই তাদের গ্রহণ করেনি।’
আরও পড়ুন: সামুদ্রিক সম্পদ আহরণে মেরিন ক্যাডেটদের ভূমিকা চান প্রধানমন্ত্রী
এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘অনেক প্রতিষ্ঠান তাদের জন্য বিপুল পরিমাণ অর্থ সংগ্রহ করেছে। কিন্তু তাদের ভাগ্যের কোনো পরিবর্তন হয়নি।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তারা এখন তাদের সন্তান ও নাতি-নাতনি নিয়ে বাংলাদেশে বসবাস করছে। তারা জেনেভা ক্যাম্পের ছোট জায়গায় অমানবিক জীবনযাপন করছে।’
এ সময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিহারীরা অনেক পরিশ্রমী এবং তারা কারুশিল্পে অনেক দক্ষ।
তিনি বলেন, এজন্য আমি তাদের জন্য উন্নত বাসস্থানের ব্যবস্থা করতে চেয়েছিলাম এবং যে কাজে তাদের দক্ষতা আছে,তাদেরকে সে কাজেই লাগাতে চেয়েছিলাম; যাতে তারা জীবিকা নির্বাহ করতে পারে।
তিনি বলেন, ঢাকায় এটা করা যায় না, তার জন্য দরকার একটা সুবিধাজনক ভালো জায়গা। যেখানে শিল্প আছে বা তাদের চাকরির সুযোগ আছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাদের জন্য কর্মসংস্থানের জন্য আমাদের সুযোগ তৈরি করতে হবে। আমি চাই, তারা যেন একটি সুন্দর মানবিক জীবন পায়।
রাজধানী ঢাকায় কারও জমি বা ফ্ল্যাট না থাকলে জীবন অর্থহীন বলে দেশের মানুষের মানসিকতারও সমালোচনা করেন শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন,এই ধরনের চিন্তাভাবনা অবশ্যই মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলা উচিত।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কা সম্পর্ক আরও দৃঢ় হবে: প্রধানমন্ত্রী
দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থার অনেক উন্নতি হয়েছে মন্তব্য করে তিনি বলেন,‘আমরা রেল, সড়ক ও বিমান যোগাযোগের উন্নয়ন করছি। লোকজন তাদের কাজ শেষ করে সহজেই তাদের বাড়িতে ফিরে যেতে পারে। আমরা পরিকল্পিতভাবে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন করছি।
শেখ হাসিনা বলেন, তার ব্যক্তিগত উদ্যোগে গুলশান এলাকায় ১০ বিঘা জমির একটি অংশ বের করেছেন, যেখানে একটি খেলার মাঠ তৈরি করা হবে।
প্রধানমন্ত্রী আবারও দেশের জনগণকে বিদ্যুৎ ও পানি ব্যবহারে সচেতন হওয়ার অনুরোধ করেন, কারণ সরকার এই ইউটিলিটিগুলোতে ভর্তুকি হিসাবে বিপুল পরিমাণ অর্থ দিচ্ছে।
তিনি বলেন, আমরা বিশাল ভর্তুকি দিচ্ছি, এগুলো সব জনগণের ট্যাক্সের টাকা।
তিনি বলেন, জনগণের জীবনমান উন্নয়নে সরকার ভর্তুকি দিচ্ছে।
স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম, সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল এসএম শফিউদ্দিন আহমেদ, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম এবং স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সচিব হেলাল উদ্দিন আহমেদ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: গবেষণালব্ধ জ্ঞান মানুষের কল্যাণে ব্যবহার করতে হবে: প্রধানমন্ত্রী
কোন ষড়যন্ত্রই দেশের উন্নয়নের গতি থামাতে পারবে না: আইনমন্ত্রী
আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, উন্নয়ন একটি চলমান প্রক্রিয়া হলেও এই প্রক্রিয়া এমনিতেই চলে না, একে চালাতে হয়। এটিকে ভালভাবে চালাতে হলে অবশ্যই দক্ষ চালকের প্রয়োজন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দক্ষ চালকের আসনে থাকার কারণেই দেশের সকল ক্ষেত্রে অভূতপূর্ব উন্নয়ন হয়েছে। তিনি ক্ষমতায় থাকলে এই উন্নয়ন চলমান থাকবে। কোন ষড়যন্ত্রই এই উন্নয়নের গতি থামাতে পারবে না।
বৃহস্পতিবার বরিশালে ৪৯ কোটি টাকা ব্যয়ে নবনির্মিত দশ তলা বিশিষ্ট মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালত ভবন উদ্বোধন অনুষ্ঠানে ঢাকা থেকে ভিডিও কনফারেন্সিং যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন আইনমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুদূর প্রসারী পরিকল্পনা ও গতিশীল নেতৃত্বের কারণেই পদ্মা সেতু, কর্নফুলী টানেল, মেট্রোরেল, ফ্লাইওভার, এলিভেটেড এক্সপ্রেস ওয়ে, রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্পসহ বড় বড় প্রকল্প বাস্তবায়ন করা সম্ভব হচ্ছে। বিশ্বে বাংলাদেশ উন্নয়নের রোল মডেল হয়েছে। তাই দেশের সকল মানুষকে প্রধানমন্ত্রীর কাজে সহযোগিতা করে তার হাতকে শক্তিশালী করার আহ্বান জানান আনিসুল হক।
আইনমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু স্বপ্ন দেখেছিলেন এমন একটি স্বাধীন ও শক্তিশালী বিচার বিভাগের, যেখানে বিচারপ্রার্থী জনগণ ভোগান্তিহীনভাবে দ্রুত ন্যায়বিচার পাবেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার বঙ্গবন্ধুর এই স্বপ্ন পূরণে ব্যাপক পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে এবং উক্ত পরিকল্পনা বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে বিচার বিভাগের জন্য অত্যাধুনিক অবকাঠামো নির্মাণ করছে। এজন্য দুই হাজার ৪৬৫ কোটি ৭৭ লাখ টাকা ব্যয়ে দেশের জেলা শহরগুলোতে আট বা ১০ তলা বিশিষ্ট সিজেএম আদালত ভবন নির্মাণ প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। প্রকল্পটির আওতায় বরিশালে ৪৯ কোটি ১৭ লাখ টাকা ব্যয়ে ১০ তলা বিশিষ্ট সিজেএম আদালত ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। এ ভবনের নির্মাণ ব্যয়, নির্মাণ শৈলী, আয়তন এবং সুযোগ-সুবিধা বিবেচনা করলে নিশ্চয়ই বলা যায় এটি বরিশালের মাটিতে বিচার বিভাগের এক অনন্য স্থাপনা এবং মুজিববর্ষে বরিশালবাসীকে দেয়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের একটি বড় উপহার। এ উপহার দিতে পেরে সরকার অত্যন্ত আনন্দিত, গর্বিত ও তৃপ্ত। কারণ ২০০৭ সালের ১লা নভেম্বর নির্বাহী বিভাগ থেকে আলাদা হওয়ার পর জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেসিতে অবকাঠামোগত যে শূন্যতা তৈরি হয়েছিল বরিশালে আজ থেকে তার সম্পূর্ণ সমাধান হলো।
আরও পড়ুন: মানব পাচার প্রতিরোধে সমন্বিত প্রচেষ্টা প্রয়োজন: আইনমন্ত্রী
উক্ত প্রকল্পের কাজের ৮৫ শতাংশ অগ্রগতির তথ্য তুলে ধরে তিনি জানান, সরকার ১৬৩ কোটি টাকা ব্যয়ে ২৭টি জেলায় পুরাতন জেলা জজ আদালত ভবনগুলোর উর্ধ্বমুখী সম্প্রসারণ করাসহ বহুমুখী পদক্ষেপ বাস্তবায়ন করেছে। ফলে বিচার বিভাগের এজলাস সঙ্কট তথা অবকাঠামোগত সমস্যা এখন অনেকটাই দূর হয়েছে।
মন্ত্রী বলেন, একটি আধুনিক ও দক্ষ বিচার বিভাগ গড়ে তোলার জন্য প্রশিক্ষণ অত্যাবশ্যকীয় হলেও অন্যান্য সরকারের আমলে বিদেশি প্রশিক্ষণ গ্রহণ ছিলো বিচারকদের কাছে স্বপ্নের মতো। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের আমলে বিদেশি প্রশিক্ষণ গ্রহণ তাদের স্বপ্ন নয় বাস্তবে পরিণত হয়েছে। দেশে করোনার অতিমারির পূবর্বর্তী মাত্র সাড়ে তিন বছরে ৮৫৫ জন বিচারককে অস্ট্রেলিয়া, ভারত, চীন ও জাপানে উন্নতমানের প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। দেশীয় প্রশিক্ষণের ওপরও গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। দেশেই বিশ্বমানের প্রশিক্ষণ দেয়ার লক্ষ্যে মাদারীপুরের শিবচরে বাংলাদেশ জুডিসিয়াল একাডেমি গড়ে তোলার পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।
তিনি জানান, ২০০৯ থেকে এখন পর্যন্ত অধস্তন আদালতে এক হাজার ২২৪ জন বিচারক নিয়োগ দেয়া হয়েছে।
অধস্তন আদালতে অনেকগুলো নতুন পদ সৃষ্টি করা হয়েছে। বিভাগীয় শহরগুলোতে একটি করে সন্ত্রাস বিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনাল, একটি করে সাইবার ট্রাইবুনাল এবং একটি করে মানব পাচার অপরাধ ট্রাইব্যুনাল স্থাপন করা হয়েছে।
আইনের শাসন ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা, গণতন্ত্র ও মানবাধিকার সুরক্ষা এবং বিচার ব্যবস্থাকে জনগণের নিকট গ্রহণযোগ্য করে তোলার ক্ষেত্রে আইনজীবীগণ অগ্রণী ভূমিকা পালন করে থাকেন বলে তিনি বিশ্বাস করেন। সেজন্যই সরকার দেশের আইনজীবীগণের পেশাগত মান উন্নয়নে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে। দেশের বিভিন্ন আইনজীবী সমিতি ভবন নির্মাণ ও বইপুস্তক ক্রয় বাবদ অর্থ বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। আইনজীবীদের প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। সরকারি আইন কর্মকর্তাদের মাসিক রিটেইনার ফি চার-পাঁচ গুণ বাড়িয়েছে সরকার। এছাড়া মামলার শুনানীর জন্য দৈনিক ফি এবং ভ্যালুয়েশন ফিও বাড়ানো হয়েছে।
আইন ও বিচার বিভাগের সচিব মো. গোলাম সারওয়ারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বরিশাল ৪ আসনের সংসদ সদস্য পঙ্কজ নাথ, বরিশাল জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট তালুকদার মো. ইউনুচ, বরিশালের জেলা ও দায়রা জজ মো. রফিকুল ইসলাম, বরিশাল জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মইদুল ইসলাম প্রমুখ বক্তৃতা করেন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন আইন ও বিচার বিভাগের যুগ্ম সচিব বিকাশ কুমার সাহা।
আরও পড়ুন: অপব্যবহার রোধে প্রয়োজনে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন সংশোধন করা হবে: আইনমন্ত্রী
সরকার বিশ্বাস করে গণতন্ত্রের মূল ভিত্তি নির্বাচন: আইনমন্ত্রী
দেশের উপকূলীয় এলাকার মৎস্য খাতের উন্নয়নে সহায়তা দেবে জাপান
বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় মৎস্য খাতের উন্নয়নে সহায়তা দেবে জাপান। এ লক্ষ্যে জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থা (জাইকা) প্রাথমিকভাবে বঙ্গোপসাগরের উপকূলীয় এলাকায় মৎস্যজীবীদের জীবনমান উন্নয়নে কারিগরি সহায়তা প্রদানের একটি পাইলট প্রকল্প প্রস্তাব করেছে।
বৃহস্পতিবার বিকেলে সচিবালয়ে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিমের সঙ্গে তার দপ্তর কক্ষে অনুষ্ঠিত এক সভায় জাইকার বাংলাদেশ অফিসের প্রধান প্রতিনিধি ইয়োহো হায়াকাওয়া এর নেতৃত্বাধীন প্রতিনিধিদল এসব কথা জানায়।
তারা জানায়, পাঁচ বছর মেয়াদী প্রস্তাবিত প্রকল্পটি কক্সবাজার জেলার পাঁচটি উপজেলা টেকনাফ, উখিয়া, সদর, মহেশখালী, কুতুবদিয়ায় বাস্তবায়নের পরিকল্পনা নিয়েছে জাইকা। এ প্রকল্পের মাধ্যমে জাইকা মৎস্য খাতের ভ্যালু চেইন উন্নয়ন, সামুদ্রিক মৎস্য প্রক্রিয়াকরণ, আর্থসামাজিক জরিপ সম্পাদন, প্রশিক্ষণ প্রদান, সীফুড প্রক্রিয়াকরণ, মৎস্যসম্পদ ব্যবস্থাপনা, পুষ্টিমান উন্নয়নসহ এবং মৎস্য খাত সংশ্লিষ্টদের জীবনযাত্রার মানোন্নয়নে কারিগরি সহায়তা দিতে আগ্রহী।
সভায় মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী বলেন, জাপান বাংলাদেশের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বন্ধু রাষ্ট্র। দুই দেশের জনগণ ও সরকারের সম্পর্ক অত্যন্ত চমৎকার। কারিগরি সহায়তা ছাড়াও বাংলাদেশের মৎস্য খাতে জাপানের সহযোগিতা বৃদ্ধির অনেক সুযোগ রয়েছে। আমাদের বিস্তীর্ণ উপকূলীয় অঞ্চল রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের প্রায় সমপরিমাণ সমুদ্র এলাকায় আমাদের সার্বভৌমত্ব প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। ফলে সুনীল অর্থনীতির নব দিগন্ত উন্মোচিত হয়েছে। অল্প সময়ের মধ্যে সুনীল অর্থনীতি বাংলাদেশের উন্নয়নের গুরুত্বপূর্ণ অংশ হতে যাচ্ছে। এ খাতে দুই দেশের অভিজ্ঞতা ও জ্ঞান বিনিময়ের সুযোগ আছে। সীউইড, খনিজ সম্পদ, সামুদ্রিক মৎস্যসম্পদসহ সুনীল অর্থনীতির নানা সম্ভাবনা উন্মোচনে বাংলাদেশ ও জাপান যৌথভাবে কাজ করার ব্যাপক সুযোগ রয়েছে।
আরও পড়ুন: মৎস্য খাতে বাংলাদেশ স্বর্ণালী অধ্যায় সৃষ্টি করছে: প্রাণিসম্পদমন্ত্রী
এসময় মন্ত্রী আরও বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশে বিদেশি বিনিয়োগের অত্যন্ত অনুকূল পরিবেশ রয়েছে। বাংলাদেশ সরকার সব সময় জাপানের মতো দেশের বিনিয়োগে উৎসাহ প্রদান করে থাকে। সুতরাং জাপান ও জাইকা বাংলাদেশের সামুদ্রিক এলাকায় মৎস্যসম্পদ অনুসন্ধানসহ নানা খাতে বিনিয়োগ করতে পারে।
এসময় ইয়োহো হায়াকাওয়া বলেন, জাইকা বাংলাদেশের কক্সবাজারের উপকূলীয় এলাকায় মৎস্যজীবীদের জীবনমান উন্নয়নে সহায়তা প্রদান করতে চায়। এর মাধ্যমে কক্সবাজারের ক্ষুদ্র মৎস্যজীবীদের আয়বর্ধক কাজে অংশগ্রহণের সুযোগ সৃষ্টি হবে। সীউইড প্রক্রিয়াকরণ, অ্যাকুয়াকালচার, মৎস্যজাত পণ্য বাজারজাতকরণ, মৎস্যসম্পদ ব্যবস্থাপনায় কারিগরি সহায়তা দিতে জাইকা প্রস্তুত আছে। অদূর ভবিষ্যতে বাংলাদেশের মৎস্য খাতে জাইকার বিনিয়োগের আরও ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. ইয়ামিন চৌধুরী, অতিরিক্ত সচিব শ্যামল চন্দ্র কর্মকার ও মো. তৌফিকুল আরিফ, মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক খ. মাহবুবুল হক, বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন করপোরেশনের চেয়ারম্যান মো. হেমায়েত হুসেন, জাইকা বাংলাদেশ অফিসের জ্যেষ্ঠ প্রতিনিধি তাকেশি সাহেকি জাইকা বাংলাদেশ অফিসের প্রোগ্রাম উপদেষ্টা রাইউইচি কাতসুকি এবং জাইকা বাংলাদেশ অফিসের প্রোগ্রাম অফিসার মো. মেহেদী হাসান সভায় উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: দেশের বাইরে থেকে কোরবানির পশু আসতে দেওয়া হবে না: প্রাণিসম্পদমন্ত্রী
জীবাণু সংক্রমণে সাফারি পার্কে প্রাণীর মৃত্যু ঘটছে : মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী
মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করলেন প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের মাধ্যমে জনগণের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে তার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছেন। তিনি বলেন, আমি একটি লক্ষ্য অর্জনের জন্য কাজ করছি... আমার বাবা যে আদর্শ নিয়ে দেশ স্বাধীন করেছিলেন সেই আদর্শ বাস্তবায়ন করতে হবে, করতেই হবে। এটাই আমার প্রতিশ্রুতি।
বুধবার এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের (এনইসি) সভায় সভাপতিত্বকালে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, তিনি চান বাংলাদেশের মানুষের জীবনকে সুন্দর ও মর্যাদাপূর্ণ করতে। যাতে তারা বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে চলতে পারে। আর এটাই জাতির পিতা সবসময় চাইতেন ও বলতেন।
গত ১৩ বছরে বাংলাদেশের উন্নয়নের কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ ইতোমধ্যে এলডিসি থেকে উন্নীত হয়ে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা অর্জন করেছে।
প্রধানমন্ত্রী জোর দিয়ে বলেন, আমরা একটি উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে এগিয়ে যাব এবং ভবিষ্যতে একটি উন্নত দেশে পরিণত হবে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশকে এখন কেউ সহানুভূতির চোখে দেখে না, বরং সম্মানের চোখে দেখে।
আরও পড়ুন: বীমার সুবিধা সম্পর্কে জনসচেতনতা বাড়ানোর আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ, ১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন এবং ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবসের কারণে মার্চ মাসের ঘটনাবহুল তাৎপর্যও তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি উল্লেখ করেন, এই মাসটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এই মাসেই সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জন্মগ্রহণ করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু একটি স্বাধীন জাতি হিসেবে জাতিকে স্বাধীনতা ও আত্মমর্যাদা দিয়েছেন।
যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশ পুনর্গঠনে বঙ্গবন্ধুর অবদানের কথা স্মরণ করে শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতার পদাঙ্ক অনুসরণ করে সরকার ব্যাপক উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে এবং তা বাস্তবায়ন করছে।
তিনি বলেন, আমরা জাতির পিতার আদর্শ অনুসরণ করে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি।
করোনা মহামারির সময়েও বাংলাদেশের অর্থনীতি এগিয়ে যাচ্ছে বলেও এসময় উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।
বাংলাদেশের জনগণের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে তিনি বলেন, যারা এই কঠিন সময়েও আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করে সাফল্য অর্জন করেছেন।
আরও পড়ুন: নতুন প্রজন্মকে ত্যাগ ও সংগ্রামের কথা জানতে হবে: প্রধানমন্ত্রী
তরুণরাই রূপকল্প ২০৪১ এর নেতৃত্ব দেবে: প্রধানমন্ত্রী
বাংলাদেশে অবকাঠামো উন্নয়নে আগ্রহী ইউরোপীয় কোম্পানি
বাংলাদেশে অবকাঠামো উন্নয়ন এবং অত্যাধুনিক ও টেকসই পতেঙ্গা কন্টেইনার টার্মিনাল নির্মাণে গভীর আগ্রহ দেখিয়েছে এপিএম টার্মিনাল নামে একটি বৈশ্বিক বন্দর ও টার্মিনাল অপারেটর।
ঢাকায় ডেনিশ দূতাবাসের মতে, কোম্পানিটি বিশেষ করে পতেঙ্গা কন্টেইনার টার্মিনালের প্রতি আগ্রহ দেখিয়েছে। কেননা এর অনেক সীমাবদ্ধতা দূর করার সম্ভাবনা রয়েছে যা চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরের ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলে এবং বাংলাদেশের ভবিষ্যত অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে বাধাগ্রস্ত করে।
প্রতিষ্ঠানটি বলছে, এটি সরবরাহ শৃঙ্খলে আরও বিনিয়োগের সূচনা করবে এবং বাংলাদেশি আমদানিকারক ও রপ্তানিকারকদের জন্য নতুন বাজার উন্মুক্ত করবে। এছাড়া ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ও বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ সম্পর্কের অনুঘটক হিসেবে কাজ করবে।
আরও পড়ুন: জর্ডানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে আসাদুজ্জামান খাঁনের সৌজন্য সাক্ষাত
দেশের সামুদ্রিক অবকাঠামো খাতে সহযোগিতা আরও গভীর করতে এপিএম টার্মিনালের প্রতিনিধিরা সম্প্রতি গুরুত্বপূর্ণ বাংলাদেশি অংশীজনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন।
বাংলাদেশে নিযুক্ত ডেনমার্কের রাষ্ট্রদূত উইনি ইস্ট্রুপ পিটারসেনের সঙ্গে কোম্পানির প্রতিনিধিরা নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, নৌপরিবহন সচিব মোহাম্মদ মেজবাহ উদ্দিন চৌধুরী, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এম শাহজাহান, পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ অথরিটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সুলতানা আফজাল হোসেন ও প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন।
বাংলাদেশে নিযুক্ত ডেনমার্কের রাষ্ট্রদূত পিটারসেন বলেন, ডেনমার্ক ও বাংলাদেশের মধ্যে বাণিজ্য জলবায়ু-বান্ধব জ্ঞান ও অত্যাধুনিক প্রযুক্তি হস্তান্তরকে কেন্দ্র করে। ‘এটি বাংলাদেশের সবুজ অর্থনৈতিক উত্তরণকে ত্বরান্বিত এবং পাবলিক-প্রাইভেট-পার্টনারশিপের সুবিধার মাধ্যমে বিশেষ করে ইউরোপীয় বাজারে প্রবেশের জন্য টেকসই অর্থনৈতিক প্রতিযোগিতা গড়ে তোলার একটি কার্যকর উপায়।’
আরও পড়ুন: চীন শুধু ‘অর্থের ঝুড়ি’ নয় ‘সাশ্রয়ী’ প্রস্তাবও দেয়: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
পতেঙ্গায় ভবিষ্যৎ অবকাঠামো প্রকল্পের বিষয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে এপিএম টার্মিনালের গ্লোবাল হেড অব কর্পোরেট ডেভেলপমেন্টের ভাইস প্রেসিডেন্ট মার্টিজন ভ্যান ডঙ্গেন বলেন, বর্তমানে চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরকে ধারণক্ষমতার শতভাগের বেশি ব্যবহার করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, ‘যদিও সত্যিই প্রশংসনীয়। তবে এটি দেশের প্রবৃদ্ধির যে উচ্চাকাঙ্ক্ষা তার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ হয় এমন টেকসই সমাধান নয়। আমরা বিশ্বাস করি আমাদের বাংলাদেশি সহযোগীদের সঙ্গে পতেঙ্গায় একটি নতুন টার্মিনাল তৈরি করার মাধ্যমে আমরা ইতিবাচক অর্থনৈতিক প্রভাবসহ একটি কার্যকর ও অত্যন্ত প্রয়োজনীয় অবকাঠামো সমাধান প্রদান করতে পারব।’
আরও পড়ুন: বাংলাদেশি কর্মীদের প্রশংসা লিবিয়ার চার্জ ডি অ্যাফেয়ার্সের
বাংলাদেশ বিশ্বের কাছে অনুপ্রেরণা: ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে বক্তারা
দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতির সঙ্গে বাংলাদেশের অসাধারণ যাত্রার ভূয়সী প্রশংসা করে কীভাবে বাংলাদেশ বিশ্বের অন্যান্য দেশের কাছে অনুপ্রেরণা হয়ে উঠেছে তা এক ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে বর্ণনা করেন বক্তারা।
বাংলাদেশকে ‘অনেক উন্নয়নের সফলতার গল্প’ হিসেবে উল্লেখ করে তারা মানুষের জীবন বদলে দেয়া প্রচেষ্টার ওপর আলোকপাত করেন। এছাড়া জলবায়ু পরিবর্তন ইস্যু ও বৈশ্বিক শান্তি ও স্থিতিশীলতার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের ভূমিকা ও অবদানের কথা তুলে ধরেন।
এ সময় বক্তারা বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যের সম্পর্কের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ বর্ণনা করেন এবং নিজস্ব আর্থ-সামাজিক চ্যালেঞ্জ থাকা সত্ত্বেও ১১ লাখের বেশি রোহিঙ্গা শরণার্থীকে আশ্রয় দেয়ায় বাংলাদেশের উদারতার প্রশংসা করেন।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের সঙ্গে অর্থনৈতিক সম্পর্ক গড়তে চায় অস্ট্রিয়া
বাংলাদেশ-যুক্তরাজ্যের কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে ‘৫০ এ বাংলাদেশ-যুক্তরাজ্য: সমৃদ্ধিতে বন্ধুত্ব’ নামে শুক্রবার ভার্চুয়াল এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে লন্ডনের বাংলাদেশ হাইকমিশন। এ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনীম।
যুক্তরাষ্ট্রের উন্নয়ন সহায়তা বন্ধ করতে বিএনপি-জামায়াত লবিস্ট নিয়োগ করেছে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, বাংলাদেশকে উন্নয়ন সহায়তা প্রদানের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে তদবির করার জন্য বিএনপি ও জামায়াত আটটি সংস্থাকে নিয়োগ করেছে।
বুধবার জাতীয় সংসদের কার্যপ্রণালী বিধির ৩০০ ধারায় বক্তব্য দেয়ার সময় পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, সরকারের কাছে প্রমাণ রয়েছে যে বিএনপি লবিস্ট নিয়োগের মাধ্যমে র্যাবের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা আরোপের সঙ্গে জড়িত ছিল এবং র্যাবকে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে নিষেধাজ্ঞার জন্য জাতিসংঘের শান্তি অপারেশন বিভাগের কাছে আবেদন করেছে।
মন্ত্রী বলেন, দুঃখজনক যে বিএনপির নিয়োগকৃত লবিস্টরা বাংলাদেশের বিরুদ্ধে এমন বিবৃতি দিয়েছে যা দেশের মানুষকে ক্ষুব্ধ করবে। বিএনপি তাদের (যুক্তরাষ্ট্রকে) বলেছে, বাংলাদেশের কারণে যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হবে।
আব্দুল মোমেন বলেন, মার্কিন আইন অনুযায়ী যুক্তরাষ্ট্রে লবিস্ট নিয়োগ বৈধ। ভারত, পাকিস্তান, কাতার, সৌদি আরব এবং অন্যান্য দেশ এবং বিশ্বের অনেক সংস্থা রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক উন্নয়নের জন্য লবিস্ট নিয়োগ করে।
আরও পড়ুন: লবিস্ট নয় ভুল ধারণা পরিবর্তনে পিআর ফার্ম নিয়োগ: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
তিনি বলেন, তবে এখানে মূল বিষয় হচ্ছে লবিস্ট (বিএনপির) নিয়োগের উদ্দেশ্য।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে বিএনপি-জামায়াত মোট আটটি লবিস্ট ফার্ম নিয়োগ করেছে।
২০১৪ সালে, জামায়াত যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বন্ধ করার জন্য একটি ফার্ম নিয়োগ করেছিল। এ জন্য তারা দেড় লাখ মার্কিন ডলার পরিশোধ করেছে। তারা তাদের বিচার প্রক্রিয়া বন্ধ করার জন্য আরেকটি লবিস্ট ফার্ম নিয়োগ করেছে।
তিনি বলেন, ২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে ২০১৭ সালের এপ্রিল পর্যন্ত প্রতি মাসে রিটেইনার ফি হিসেবে এক লাখ ২০ হাজার ডলার এবং প্রতি বছর ২৭ লাখ ডলার ব্যয় করেছে বিএনপি।
মোমেন বলেন, বিএনপি ২০১৭ সাল পর্যন্ত চারটি এবং ২০১৯ সালে একটি লবিস্ট ফার্ম নিয়োগ করেছে। এছাড়া যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ঠেকাতে জামায়াত-বিএনপি যৌথভাবে তিনটি লবিস্ট ফার্ম নিয়োগ করেছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বিএনপির তৃণমূলের কেউই চাইবে না দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য বন্ধ হয়ে যাক। শুধুমাত্র তাদের শীর্ষ পর্যায়ের কয়েকজন নেতা তাদের না জানিয়ে এমন কাজ করেছেন।
আরও পড়ুন: জাতিসংঘে চিঠি শান্তিরক্ষা মিশনে কোন প্রভাব ফেলবে না: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
মন্ত্রী তার বিবৃতিতে বলেছেন, সরকার লবিস্ট নিয়োগ করেনি বরং একটি পিআর ফার্ম নিয়োগ করেছে।
এ বিষয়ে তিনি বলেন, সরকার এমন কোনো সংস্থাকে নিয়োগ দেয়নি যারা সিনেট এবং স্টেট ডিপার্টমেন্টে লবিং করবে।
তিনি আরও বলেন, সরকার দেশের বিরুদ্ধে অপপ্রচার বন্ধ করতেই এটা করেছে। দেশের বিরুদ্ধে যে মিথ্যা তথ্য ছড়ানো হচ্ছে তা মোকাবিলা করতেই সত্য প্রচার করা হয়েছে।
তিনি উল্লেখ করেন, ২০১৪-১৫ সালে বিজিআর নামে একটি সংস্থা নিয়োগ করা হয়েছিল। বাংলাদেশ বিরোধী অভিযান রুখতে বিজিআর নিয়োগ করা হয়।
তিনি আরও বলেন, দেশের স্বার্থে, দেশের মানুষের জন্য, দেশের মঙ্গলের জন্য এবং বিদেশে দেশের বিরুদ্ধে অপপ্রচার বন্ধে বাংলাদেশ সরকার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।
মন্ত্রী ওইসব লবিস্ট ফার্মকে টাকা দিতে বিএনপি যে বিপুল অর্থ ব্যয় করেছে তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন এবং কীভাবে ওই টাকা বিদেশে পাঠানো হয়েছে তা তদন্তের দাবি জানান।
তিনি বলেন, সরকার ও বিএনপির মধ্যে মতপার্থক্য থাকতে পারে, কিন্তু তাতে দেশের কোনো ক্ষতি হতে পারে না।
র্যাবের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা
মোমেন বলেন, র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করতে সময় লাগবে এবং সঠিক তথ্য দেয়া হলে যুক্তরাষ্ট্র তা তুলে নেবে।
তিনি আরও বলেন, সরকার দেশের নির্ভরযোগ্য অপরাধ দমনকারী বাহিনীর বিরুদ্ধে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা নিয়ে কাজ করছে এবং আগামী মাসে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে সংলাপের কাজ শুরু হবে।
তিনি আরও বলেন, এপ্রিল মাসে নিরাপত্তা সংলাপ হবে। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একাধিক বৈঠক করার প্রক্রিয়া চলছে।
আরও পড়ুন: যুক্তরাষ্ট্র র্যাবকে প্রশিক্ষণ দিয়েছে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমরা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বেশ কয়েকটি বৈঠক করেছি। ইনশাআল্লাহ, যখনই আমরা তাদের কাছে সঠিকভাবে তথ্য সরবরাহ করতে সক্ষম হব, আমি বিশ্বাস করি র্যাবের মতো একটি ভাল সংস্থার ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হবে। তবে প্রক্রিয়াটি আগামীকাল (শিগগিরই) শুরু হবে না। সময় লাগবে। আমাদের ধৈর্য্য ধরতে হবে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, কোনো ধরনের পূর্ব আলোচনা ছাড়াই নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। বিভিন্ন লবিস্ট ফার্মের প্রচারণার কারণে এই নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছিল। তারা শুধু মার্কিন সরকারের কাছে মিথ্যা তথ্যই প্রকাশ করেনি, বিশ্বের বিভিন্ন বৃহৎ মানবাধিকার সংস্থাকেও তারা মতামত দিয়ে আসছে যে র্যাব খুবই খারাপ একটি সংগঠন।
তিনি বলেন, র্যাব জনগণের মধ্যে গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে। তারা দেশের সন্ত্রাস, মাদক, মানব পাচার বন্ধ করেছে। এই বড় প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কিছু লোক মিথ্যা তথ্য দেয়ায় এই নিষেধাজ্ঞা আসে।
তিনি বলেন, র্যাব এমন কোনো খারাপ কাজ করেনি যে, বিশ্বে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে বিবেচিত হবে। বরং এটি সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে কাজ করছে।
মোমেন বলেন, রাজনৈতিক প্রতিপক্ষরা বিভিন্ন দেশ ও সংস্থার প্রধানদের কাছে চিঠি দিয়েছে।
তিনি আরও বলেন, তারা ওই চিঠিতে দেশকে সব ধরনের সাহায্য বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছে। এছাড়াও তারা বাংলাদেশের কারণে আমেরিকার নিরাপত্তা বিঘ্নিত হবে এবং রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেয়ার বিষয়েও অপপ্রচার চালিয়েছে বলে জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
চসিকের উন্নয়নে একনেকে ২৪৯০ কোটি টাকার প্রকল্প অনুমোদন
জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) যানজট নিরসন ও সৌন্দর্য বৃদ্ধির লক্ষ্যে বিভিন্ন সড়ক ও অবকাঠামো উন্নয়নে দুই হাজার ৪৯০ কোটি টাকার প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে। এ ছাড়া এ সভায় আরও ৯টি উন্নয়ন প্রকল্পের অনুমোদন দেয়া হয়।
মঙ্গলবার একনেক চেয়ারপার্সন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় এসব অনুমোদন দেয়া হয়। সভায় প্রধানমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী ও কর্মকর্তারা রাজধানীর এনইসি সম্মেলন কক্ষ থেকে যোগ দেন।
সভা শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, ‘আজকের সভায় সাতটি সংশোধিতসহ ১০টি প্রকল্পের অনুমোদন দেয়া হয়েছে এবং প্রকল্পগুলোর মোট আনুমানিক ব্যয় ১১ হাজার ২১১ দশমিক ৪৪ কোটি টাকা।’
আরও পড়ুন: সিলেটের চার লেন প্রকল্প একনেকে অনুমোদন
এত প্রকল্প সংশোধনের বিষয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশে কিছু বাস্তবিক সমস্যা রয়েছে যা প্রজেক্ট বাস্তবায়নে বিলম্ব করছে।
সমস্যার বর্ণনা দিয়ে মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে প্রকল্প সংশোধনের পেছনের কোভিড-১৯ মহামারি, প্রকল্প সামগ্রীর মূল্যবৃদ্ধি, জমি অধিগ্রহণ জটিলতা ও বিদেশি তহবিল ছাড়ে বিলম্ব, এসব কারণ রয়েছে।