উন্নয়ন
ব্যবসায়ীদের উন্নয়ন ও গবেষণায় বিনিয়োগের আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
দেশে ও বিদেশে ব্যবসা সম্প্রসারণের জন্য পণ্য, এর চাহিদা ও গুণগতমান নির্ধারণে গবেষণা ও উন্নয়নে বিনিয়োগ করতে ব্যবসায়ীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, ‘আমি সবসময়ই গবেষণার ওপর গুরুত্ব দিই। এটা ব্যবসা-বাণিজ্যেও প্রয়োজন। গবেষণার মাধ্যমে আপনাকে পণ্য, এর চাহিদা ও গুণগতমান নির্ধারণ করতে হবে।’
শনিবার ২৬তম ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার উদ্বোধনকালে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
আরও পড়ুন: পূর্বাচলে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা শুরু
প্রথমবারের মতো রাজধানীর উপকণ্ঠে পূর্বাচলে বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টারে এ মেলা শুরু হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে শেখ হাসিনা বার্ষিক এ মেলার উদ্বোধন করেন।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) যৌথ আয়োজনে মেলার অনুষ্ঠানে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি সভাপতিত্ব করেন।
বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষ, ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফবিসিসিআই) মো. জসিম উদ্দিন ও রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) ভাইস চেয়ারম্যান এ এইচ এম আহসান অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন।
দেশের ভাবমূর্তি সমুন্নত রাখতে রপ্তানি পণ্যের মান বজায় রাখা ও বৃদ্ধি করতে ব্যবসায়ীদের প্রতি আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘আপনাকে নিজেই ব্র্যান্ড তৈরি করতে হবে এবং সামনে এগিয়ে যেতে হবে।’
আরও পড়ুন: স্বপ্নের পদ্মা সেতু পরিদর্শন করলেন প্রধানমন্ত্রী
সরকারের আর্থিক কূটনীতি নিয়ে তিনি বলেন, ২৩টি দেশের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক জোরদার করার লক্ষ্যে পিটিএ বা এফটিএ বা অন্য যে কোনো ধরনের চুক্তি স্বাক্ষরের জন্য সরকার জরিপ কাজ শেষ করেছে।
শেখ হাসিনা বলেন, করোনা মহামারির সময় বিভিন্ন দেশের মতো বাংলাদেশের অর্থনীতি সম্পূর্ণভাবে স্থবির হয়ে পড়েনি।
করোনার সময় দেশের অর্থনীতি সচল রাখতে সর্বাত্মক প্রচেষ্টার জন্য অংশীজনদের প্রধানমন্ত্রী ধন্যবাদ জানান।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। আমাদের জিডিপি আট শতাংশ অতিক্রম করেছে। তবে হালকা ধাক্কা খেয়েছিল। তবে আমি বিশ্বাস করি আমরা এ বাধা অতিক্রম করতে পারব।
আরও পড়ুন: প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদনের পর ড্যাপ গেজেট আকারে প্রকাশ হবে
অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে সরকারের নেয়া বিভিন্ন পদক্ষেপ ও প্রণোদনা প্যাকেজের কথা সংক্ষিপ্তভাবে তুলে ধরেন শেখ হাসিনা।
বাংলাদেশি পণ্য রপ্তানির জন্য নতুন নতুন বাজার খোঁজ করা এবং পণ্যের মধ্যে বৈচিত্র্য আনতে ব্যবসায়ীদের প্রতি আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, দেশের অর্থনৈতিক কার্যক্রম বৃদ্ধি পাওয়ায় স্থানীয় বাজারে চাহিদা দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে।
খাদ্য উৎপাদন ও প্রক্রিয়াজাতকরণের দিকে দৃষ্টি রেখে কৃষিভিত্তিক পণ্য উৎপাদনের জন্য ব্যবসায়ীদের প্রতি আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।
আরও পড়ুন: দেশের প্রতিটি নাগরিককে টিকা গ্রহণের আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
উন্নয়ন করলে শত্রু ও চাপ বাড়ে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
কোনো দেশ সব ক্ষেত্রে উন্নয়ন করলে সে দেশের শত্রু ও চাপ বাড়তে থাকে বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। তিনি বলেছেন, ‘কোনো দেশ উন্নয়ন করলে সে দেশের কিছু শত্রু হয়ে যায়। ওই দেশের ওপর চাপও বাড়তে থাকে। আপনার কিছু সহকর্মীর চেয়ে আপনি ভালো করলেও এ বিষয়টি ঘটে।’
মঙ্গলবার রাজধানীর একটি হোটেলে এক অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
সরকার যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে কোনো চাপ অনুভব করছে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, তারা (মার্কিন প্রশাসন) তাদের নিয়ম অনুযায়ী কাজ করছেন। সরকার পর্যায়ে কোনো সমস্যা নেই। ‘তারা তাদের কাজ করছে, আমরা আমাদের।’
তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে ও বাংলাদেশে কিছু মানুষ রয়েছে যারা বাংলাদেশের উন্নয়ন পছন্দ করেন না—আওয়ামী লীগ কেন এত ভালো করছে এবং বাংলাদেশের মানুষ কেন সুখে আছে।
আরও পড়ুন: অভিজিৎ হত্যায় দণ্ডিত দু’জন বিদেশে পালিয়ে আছে: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
ড. মোমেন বলেন, কিছু মানুষ মার্কিন আইন প্রণেতাদের সঙ্গে অবিরত আলোচনা চালিয়ে গেছেন এবং মিথ্য তথ্য ও বানানো ভিডিও প্রদান করেছেন।
তিনি বলেন, এখানে যখন কাউকে হত্যা করা হয় সেটা ‘বিচারবহির্ভূত হত্যা’ হিসেবে অবহিত করা হয় কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রে হলে তাকে বলা হয় ‘দায়িত্ব পালনের সময়’ মারা গেছেন।
মিথ্য তথ্য প্রদানকারীদের সম্পর্কে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তাদের অধিকাংশকে হইতো পয়সা দেয়া হয়।
লেখক ও মুক্তমনা ব্লগের প্রতিষ্ঠাতা অভিজিৎ রায় ও তার স্ত্রী রাফিদা আহমেদের ওপর হামলাকারীদের তথ্য চেয়ে ৫০ লাখ মার্কিন ডলার পুরস্কার ঘোষণা করেছে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
একুশে বইমেলা থেকে ফেরার পথে ২০১৫ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি রাত সোয়া ৯টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি এলাকায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের পাশে জঙ্গিরা যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী অভিজিৎ রায় ও তার স্ত্রী রাফিদা আহমেদ বন্যার ওপর হামলা চালায়। অভিজিৎকে চাপাতি দিয়ে নির্মমভাবে কোপানো হয়। বন্যা তাকে বাঁচানোর চেষ্টা করলে তাকেও কুপিয়ে বাম হাতের বৃদ্ধা আঙুল কেটে ফেলে এবং মারাত্মক আহত করে। পরে তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নেয়া হলে রাত সাড়ে ১০টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় অভিজিৎ মারা যান।
এ ঘোষণার বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এ ধরনের পুরস্কার ঘোষণা করে যুক্তরাষ্ট্র সফল হয়েছে এবং ওসামা বিন লাদেনের ক্ষেত্রেও এ রকম হয়েছে বলে শুনেছেন বলেও জানান তিনি।
আরও পড়ুন: অভিজিৎ হত্যাকারীদের তথ্য চেয়ে ৫০ লাখ ডলার পুরস্কার ঘোষণা যুক্তরাষ্ট্রের
তিনি বলেন, এ ধরনের পদক্ষেপ প্রায়ই সফল হয়। বাংলাদেশও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবির রহমানের তিন পলাতক খুনির—তাদের অবস্থান অজানা—জন্য পুরস্কার ঘোষণা করেছে।
তিনি বলেন, ‘যদি কেউ সঠিক তথ্য দিতে পারে তাহলে সরকার অবশ্যই তাকে পুরস্কৃত করবে। তারাও (যুক্তরাষ্ট্র) একই কাজ করেছে।’
এর আগে রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত ‘রোহিঙ্গা সংকট ও প্রত্যাবাসন: কী করণীয়?’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
বাংলাদেশ ভারতের উন্নয়ন সহযোগী: রাষ্ট্রপতি কোবিন্দ
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে বহুত্ববাদ ও গণতন্ত্রের আদর্শ উল্লেখ করে সফরত ভারতের রাষ্ট্রপতি রাম নাথ কোবিন্দ বলেছেন, ‘বাংলাদেশ ভারতের উন্নয়ন সহযোগী। আমাদের অংশীদারিত্ব ব্যাপক ও প্রাণবন্ত।’
বুধবার রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে ভারতের রাষ্ট্রপতির সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাক্ষাৎ করতে গেলে তিনি এসব কথা বলেন। বৈঠকের পর প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।
ভারতের রাষ্ট্রপতি জানান, বাংলাদেশের তিনটি বড় উপলক্ষে- স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন এবং দু’দেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার ৫০ বছর পূর্তি উদযাপন- এখানে এসে তিনি খুশি।
মহামারি সম্পর্কে ভারতীয় রাষ্ট্রপতি বলেন, কোভিড-১৯ একটি ‘অদৃশ্য শক্তি’ যা সবকিছু ধ্বংস করছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশই প্রথম দেশ যারা ভারত থেকে কোভিড-১৯ টিকা পেয়েছে এবং করোনা মোকাবিলায় ভারতে ওষুধ পাঠানোর জন্য বাংলাদেশকে ধন্যবাদ জানান তিনি।
শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আরও সমৃদ্ধ ও উন্নত দেশ হিসেবে আবির্ভূত হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন কোবিন্দ।
আরও পড়ুন: বঙ্গবন্ধুর প্রতি ভারতের রাষ্ট্রপতির শ্রদ্ধা নিবেদন
সৃজনশীল অর্থনীতিতে বিনিয়োগ উন্নয়ন ত্বরান্বিত করবে: প্রধানমন্ত্রী
আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ও প্রযুক্তিগত অগ্রগতি ত্বরান্বিত করতে সৃজনশীল অর্থনীতিতে বিনিয়োগ সহযোগিতা করবে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি, সৃজনশীল অর্থনীতিতে বিনিয়োগের ফলে আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন এবং প্রযুক্তিগত অগ্রগতির সম্মিলিত লক্ষ্য বাস্তবায়ন হবে।’
বৃহস্পতিবার সৃজনশীল অর্থনীতির জন্য প্রথম ইউনেস্কো-বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আন্তর্জাতিক পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি।
ইউনেস্কোর সদরদপ্তরে অনুষ্ঠিত হওয়া এই অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সংস্থাটির মহাপরিচালক আদ্রে আজুলে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সৃজনশীল অর্থনীতির জন্য ইউনেস্কো-বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আন্তর্জাতিক পুরস্কার প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত বিশ্ব মানবতা ও শান্তির জন্য বঙ্গবন্ধুর অবদানের সবচেয়ে উপযুক্ত সম্মান।
আরও পড়ুন: প্রথম ইউনেস্কো-বঙ্গবন্ধু পুরস্কার প্রদান করলেন প্রধানমন্ত্রী
তিনি বলেন, স্বাধীনতার পরবর্তী সময়ের বাংলাদেশের অবস্থান ও বর্তমান অবস্থানের মধ্যে পার্থক্য শুধু তাঁর (বঙ্গবন্ধু) সৃজনশীল নেতৃত্ব ও উত্তরাধিকারের জন্য।
বাংলাদেশের উন্নয়নে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সহযোগিতার কথা স্বীকার করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের সীমাবদ্ধ সক্ষমতা সত্ত্বেও বিশ্ব সম্প্রদায়ের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ও প্রযুক্তিগত অগ্রগতিতে অবদান রাখতে চাই।’
ইউনেস্কো-বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আন্তর্জাতিক পুরস্কার সৃজনশীল অর্থনীতিতে ইউনেস্কোর প্রচেষ্টাকে জোরদার করবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, ‘এই ইউনেস্কো-বাংলাদেশ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আন্তর্জাতিক পুরস্কার অবশ্যই সৃজনশীল উদ্যোক্তা বিকাশের সর্বোত্তম অনুশীলনকে ধারণ, উদযাপন ও যোগাযোগের মাধ্যমে একটি জ্ঞান ভাগ করে নেয়ার প্রক্রিয়া তৈরি করবে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই বছর বাংলাদেশ স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী, ‘মুজিববর্ষ’, উদযাপন করছে। এ উদযাপনের সাথে ইউনেস্কো আনুষ্ঠানিকভাবে যুক্ত।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের সাথে সহযোগিতায় বৈচিত্র্য চান দ. কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত লি জ্যাং
উন্নয়ন প্রকল্পে বাংলাদেশকে ৩৩০ মিলিয়ন দেবে ফ্রান্স, ৩ চুক্তি স্বাক্ষর
বিভাজন রেখা তৈরি করতে চায় বিএনপি ও তাদের দোসররা: ওবায়দুল কাদের
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ধর্মকে যারা রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিলের জন্য ব্যবহার করে তারাই পরিকল্পিতভাবে বিভাজন তৈরি করতে চায়।
যারা নিজেরা এদেশের স্বাধীনতা মেনে নিতে পারেনি, মেনে নিতে পারে না উন্নয়ন ও সমৃদ্ধি, তারাই জাতিকে বিভাজন করে দুর্বল এবং দেশের ইমেজ নষ্ট করতে চায় উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, আর এ বিভাজন রেখা তৈরি করতে চায় বিএনপি ও তাদের দোসররা।
তিনি বুধবার সকালে তাঁর বাসভবনে ব্রিফিংকালে একথা বলেন।
আরও পড়ুন: সাম্প্রদায়িক শক্তির ব্যাপারে সতর্ক থাকার আহ্বান ওবায়দুল কাদেরের
মন্ত্রী বলেন, বিএনপির চরিত্র হচ্ছে, মুখে শেখ ফরিদ, বগলে ইট। তাদের কথায় পুষ্পবৃষ্টি হলেও অন্তর কদর্যে ভরা বলে মন্তব্য করেন ওবায়দুল কাদের।
বিএনপি নেতারা মিথ্যাচারকে শিল্পে রূপ দিয়েছেন দাবি করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন সাম্প্রদায়িক হামলায় নাকি সরকার জড়িত! আসলে ভিডিও ফুটেজে থলের বিড়াল বেরিয়ে আসছে দেখে তারা একচোখা দৈত্যের আচরণ শুরু করেছে।
তিনি বলেন, বিএনপি নিজেরাই রাজনৈতিকভাবে সাম্প্রদায়িক।
আরও পড়ুন: গণঅভ্যুত্থানের দিবাস্বপ্ন দেখছে বিএনপি : কাদের
বিএনপি সংখ্যালঘুদের শত্রু মনে করে উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, তারা ভেবেছে পূজামণ্ডপে হামলা করলে সরকারের উপর হিন্দু সম্প্রদায়ের অনাস্থা বাড়বে আর ভারতের সাথে বাংলাদেশের বিরাজমান বন্ধুত্ব নষ্ট হবে।
মসজিদগুলো মন্দির হয়ে যাবে, মসজিদে উলুধ্বনি বাজবে, এসব অপপ্রচার বিএনপি অতীতেও চালিয়েছে উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, এসব অপকর্ম ও নির্জলা মিথ্যার প্রচারণা একমাত্র বিএনপির।
২০০১ সালে ক্ষমতায় আসার পর সংখ্যালঘুদের উপর বিএনপির নির্মমতা ৭১ কেও হার মানিয়েছিল মনে করে ওবায়দুল কাদের বলেন, এখনও তারা সাম্প্রদায়িক রাজনীতি থেকে বেরিয়ে আসতে পারেনি।
আজ পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী। মুসলিম উম্মার জন্য দিনটি পবিত্র এবং মহিমান্বিত জানিয়ে সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি না করতে মহানবীর যে অমরবাণী সেটা অক্ষরে অক্ষরে পালনের জন্য দেশের ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের উদাত্ত আহ্বান জানান।
আরও পড়ুন: কুমিল্লার ঘটনায় জড়িতদের আইনের আওতায় আনা হবে: ওবায়দুল কাদের
তাছাড়া প্রবারণা পূর্ণিমা উপলক্ষ্যে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে ওবায়দুল কাদের বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের সকলকে শুভেচ্ছা জানান।
ইবিতে ১০ তলা বিশিষ্ট দুটি আবাসিক হলের ভিত্তি প্রস্তর উদ্বোধন
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) ৫৩৭ কোটি টাকা মেগা প্রকল্পের অধীনে দুটি আবাসিক হলের কাজের উদ্বোধন করা হয়েছে।
বুধবার (১৩ অক্টোবর) দুপুর দেড়টায় আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও কুষ্টিয়া সদর ৩ আসনের সংসদ সদস্য মাহবুবউল আলম হানিফ এ কাজের উদ্বোধন করেন। এ কাজের জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে ১০৬ কোটি টাকা।
প্রকৌশল অফিস সূত্রে, ৫৩৭ কোটি টাকা মেগা প্রকল্পের অধীনে ১০৬ কোটি টাকা বরাদ্দে ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য দুইটি ১০ তলা বিশিষ্ট আবাসিক হলের কাজের উদ্বোধন করা হয়েছে। একটি আবাসিক হল নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছে ৫৩ কোটি টাকা। কাজ সম্পূর্ণ হলে দুই হলে একইসাথে দুই হাজার শিক্ষার্থীর আবাসিক সুবিধা নিশ্চিত হবে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালাম, উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাহবুবুর রহমান, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড, আলমগীর হোসেন ভূঁইয়া, প্রক্টর অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর হোসেন ও সাবেক কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. সেলিম তোহা। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন কুষ্টিয়া ৪ আসনের সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার সেলিম আলতাফ জর্জ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।
হল উদ্বোধনের আগে এক আলোচনা সভায় আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও কুষ্টিয়া সদর ৩ আসনের সংসদ সদস্য মাহবুবউল আলম হানিফ বলেন, ‘ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের দুটি আবাসিক হলের কাজের উদ্বোধন হওয়ায় আমি আজ আনন্দিত। একসময় আমরা বিশ্বের কাছে মিসকিনের দেশ হিসেবে পরিচিত ছিলাম। কিন্তু আজকে জননেত্রী শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ নেতৃত্বে দেশে অবকাঠামো উন্নয়ন চলমান আছে। দেশ উন্নয়নের জোয়ারে ভাসছে। তবে দেশে বিশাল জনগোষ্ঠী ও সীমিত সম্পদ নিয়ে এবং রাজনৈতিক বৈরি পরিবেশে দেশের উন্নয়নকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া, এটা কিন্তু কঠিন চ্যালেঞ্জের ব্যাপার।’
এ বিষয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালাম বলেন, ‘আগামী দুই বছরের মধ্যে এই দুই হলের কাজগুলো শেষ হবে। কাজ সম্পূর্ণ হলে বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের আবাসিক সমস্যা অনেকটাই লাঘব হবে। এছাড়াও ক্যাম্পাসে ৩২ টি উন্নয়ন কাজের প্রক্রিয়া চলমান।’
আরও পড়ুন: বিশ্বসেরা গবেষকদের তালিকায় ইবির ১৭ শিক্ষক
৯ অক্টোবর খুলছে ইবির হল
অস্ট্রেলিয়ায় সেরা গবেষণা পুরস্কার পেলেন ইবি শিক্ষক
গ্রামকে শহরে রূপান্তর করা হবে: পরিকল্পনামন্ত্রী
পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেছেন, সরকার যেখানে যা প্রয়োজন সব করছে। সকল প্রকার উন্নয়ন দিয়ে গ্রামকে শহরে রূপান্তর করা হবে।
রবিবার সকাল ১১ টায় শান্তিগঞ্জ উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গণে উপজেলা প্রশাসন ও জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের আয়োজনে নিরাপদ পানি সরবরাহ ও স্যানিটেশন ব্যবস্থা উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় উপজেলার দরিদ্র পরিবারের মাঝে গভীর নলকূপ ও টুইন-পিট ল্যাট্রিন বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন পরিকল্পনা মন্ত্রী।
আরও পড়ুন: চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের বড় চ্যালেঞ্জ দুর্নীতি: পরিকল্পনামন্ত্রী
মন্ত্রী বলেন, শেখ হাসিনার সরকার বাংলাদেশের ইতিহাসে শ্রেষ্ঠ সরকার। এই সরকারের আমলে দেশের যত উন্নয়ন হয়েছে তা ইতিহাসযোগ্য। এর আগে কোন সরকার এত উন্নয়ন করতে পারেনি। এখন প্রতিটি ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ, গ্রামে গঞ্জে রাস্তাঘাট, সেতু কালভার্টে ভরপুর যা একসময় মানুষ কল্পনাই করতে পারেনি।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনা সুনামগঞ্জের মানুষকে ভালোবাসেন। তিনি আমাকে সবসময়ই জিজ্ঞেস করেন সুনামগঞ্জের মানুষ সরকারের সুবিধা পাচ্ছে কিনা। তাদের উন্নয়ন হচ্ছে কিনা। হাওরবাসীর প্রতি তাঁর দরদ বেশী। হাওরবাসীর কথা চিন্তা করেই তিনি টিউবওয়েল, স্বাস্থ্য সম্মত ল্যাটিন দিয়েছেন। এখানে মেডিকেল কলেজ দিয়েছেন। একসময় এ অঞ্চলের মানুষ এসব চিন্তাই করত না।
আরও পড়ুন: সৃষ্টিশীল শিক্ষার্থী গড়ে না উঠার কারণ খুঁজতে হবে: পরিকল্পনামন্ত্রী
মন্ত্রী আরও বলেন, শেখ হাসিনার সরকার নারীবান্ধব, তিনি নারীদের খুব সম্মান করেন। তিনি হতদরিদ্র অসহায় নারীদের ভাগ্য উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছেন। আজ আপনাদের মাঝে যে টিউবওয়েল ও স্বাস্থ্য সম্মত ল্যাট্রিন বিতরণ করা হচ্ছে তাঁর যথাযথ ব্যবহার ও রক্ষণাবেক্ষণ করবেন। টিউবওয়েলের পানি শুধু পাঁচ জনের নয়। আশেপাশের মানুষদের দিবেন, বাধা দিবেন না। কারণ এটা আল্লাহর নিয়ামত। নিরাপদ পানির পাশাপাশি স্বাস্থ্য সম্মত ল্যাট্রিনও বিতরণ করছে সরকার। শুধু টিউবওয়েল নয়, কয়েকদিন পর পাইপ লাইনের মাধ্যমে ঘরে ঘরে পানি পৌঁছে দেয়া হবে। আর আরেকটা কথা, নিজেদের মধ্যে হানাহানি করবেন না। সবাই ঐক্যবদ্ধ থাকুন। পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকুন। আপনাদের কোন চিন্তা নেই, সরকার সবসময়ই আপনাদের পাশে আছে।
অনুষ্ঠানে উপজেলা নির্বাহী অফিসার আনোয়ার উজ জামানের সভাপতিত্বে ও উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান প্রভাষক নূর হোসেনের সঞ্চালনায় স্বাগত বক্তব্য দেন- উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী আব্দুর রব সরকার। বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন, জেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী আবুল হোসেন, ইউনিয়ন চেয়ারম্যানদের পক্ষে বক্তব্য দেন- জয়কলস ইউপি চেয়ারম্যান মাসুদ মিয়া। এসময় উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান দুলন রানী তালুকদার, উপজেলা আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান, পরিকল্পনামন্ত্রীর একান্ত রাজনৈতিক সচিব হাসনাত হোসেন, দরগাপাশা ইউপি চেয়ারম্যান মনির উদ্দিন, পশ্চিম বীরগাঁও ইউপি চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম, পাথারিয়া ইউপি চেয়ারম্যান আমিনুর রশীদ আমিনসহ উপকারভোগী ও উপজেলা আ.লীগের অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: কিছু লোক মনেপ্রাণে বাংলাদেশের ভালো চায় না: পরিকল্পনামন্ত্রী
দুর্নীতিবাজদের শাস্তি নিশ্চিত করার আহ্বান রাষ্ট্রপতির
দুর্নীতিবাজদের শাস্তির প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।
দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহ এবং কমিশনার মো. জহুরুল হক রবিবার সন্ধ্যায় বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে গেলে রাষ্ট্রপতি এ আহ্বান জানান।
আরও পড়ুন: দলমত নির্বিশেষে মানুষের পাশে দাঁড়ান: রাষ্ট্রপতি
সাক্ষাতকালে দুদকের চেয়ারম্যান কমিশনের সার্বিক কর্মকাণ্ড সম্পর্কে রাষ্ট্রপতিকে অবহিত করেন। এসময় তিনি দুদক অফিসের অবকাঠামো ও জনবল সংকটের বিষয়টি তুলে ধরেন।
বাংলাদেশ উন্নয়ন ও অগ্রগতির পথে এগিয়ে যাচ্ছে উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বলেন, ‘উন্নয়নের এ ধারাকে টেকসই করতে দুর্নীতি প্রতিরোধ খুবই প্রয়োজন।’
আরও পড়ুন: রাজনীতি যেন উল্টো পথে হাঁটছে: রাষ্ট্রপতি হামিদ
তিনি বলেন, ‘তরুণ প্রজন্ম যাতে দুর্নীতি বিরোধী মনোভাব নিয়ে বেড়ে উঠতে পারে সে লক্ষ্যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, সমাজ ও পরিবার থেকে উদ্যোগ নিতে হবে।’
দুদক প্রাতিষ্ঠানিক দুর্নীতি প্রতিরোধের পাশাপাশি অপ্রাতিষ্ঠানিক দুর্নীতি প্রতিরোধেও কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করবে বলে রাষ্ট্রপতি আশা করেন।
এ সময় রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের সচিব সম্পদ বড়ুয়া, সামরিক সচিব মেজর জেনারেল এস এম সালাহ উদ্দিন ইসলাম এবং সচিব (সংযুক্ত) মো. ওয়াহিদুল ইসলাম খান উপস্থিত ছিলেন।
রাজনৈতিক ও প্রাতিষ্ঠানিক শুদ্ধাচার নিশ্চিতের আহ্বান টিআইবির
স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছরে এসে গণতান্ত্রিক যাত্রায় বাংলাদেশের অবস্থান মূল্যায়নে একেবারেই স্বস্তিকর কোনো পর্যায়ে যাওয়া যায়নি, যা সত্যিই হতাশার বলে মন্তব্য করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।
টিআইবির মতে, এই ঘাটতি রাজনৈতিক সংস্কৃতি থেকে শুরু করে স্বচ্ছ নির্বাচনী ব্যবস্থার মাধ্যমে পছন্দের প্রতিনিধি বেছে নেয়ার সুযোগ, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা এবং আন্তর্জাতিক মানদণ্ড বজায় রেখে নাগরিকের আইনি ও সামাজিক অধিকারসমূহ সুরক্ষার ক্ষেত্রে সর্বজনগ্রাহ্য জাতীয় প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা এবং শুদ্ধাচার চর্চা সবকিছুর জন্যই প্রযোজ্য। তাই বাস্তবতাকে অস্বীকার না করে, অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নকে টেকসই করতে এবং দেশের শাসনব্যবস্থাসহ সকল রাজনৈতিক ও প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়ে সুস্থ গণতান্ত্রিক চর্চার পূর্ণ বিকাশে, এখনই সর্বোচ্চ শুদ্ধাচার নিশ্চিতের তাগিদ দিয়েছে টিআইবি।
আরও পড়ুন: করোনা মোকাবিলায় তথ্য নয় বরং দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণ করুন: টিআইবি
১৫ সেপ্টেম্বর আন্তর্জাতিক গণতন্ত্র দিবস উপলক্ষে গণমাধ্যমে প্রেরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘অতিসম্প্রতি প্রকাশিত বৈশ্বিক গণতন্ত্র সূচকে চারধাপ এগিয়ে বাংলাদেশের ৭৬তম অবস্থান সাময়িক স্বস্তিদায়ক হলেও দীর্ঘমেয়াদে তা আশাব্যঞ্জক নয়। কারণ ৫.৯৯ স্কোর নিয়ে আমরা এখনও ‘হাইব্রিড রিজিমে’ অবস্থান করছি, যাকে পূর্ণাঙ্গ গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা বলা যাবে না। দেশের রাজনৈতিক কাঠামোয় গণতান্ত্রিক চর্চার পরিপূর্ণ বিকাশ ঘটেনি বলেই শুধু বাংলাদেশের এই স্কোর নয়; বরং আমাদের শক্তিশালী বেশ কিছু আইনী কাঠামো থাকলেও সেগুলো পূর্ণ বাস্তবায়ন না হওয়া এবং ‘আপাত ভোটের মাধ্যমে ক্ষমতা পরিবর্তন’ হয় বলে প্রচার থাকলেও বাস্তবে নির্বাচন কমিশনসহ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানসমূহের কাঠামোগত ও আদর্শিক দূর্বলতায় সূচকে আমাদের এই অবস্থান। ‘দেশে নির্বাচন কেন্দ্রিক এক দিনের গণতন্ত্রও বিলীন হতে চলেছে’ বলে সংসদে সম্প্রতি যে আলোচনা হয়েছে সেটিও দেশের নির্বাচনী ব্যবস্থার দূর্বলতাকে যথার্থভাবেই ফুটিয়ে তুলে, যা কোনোভাবেই কাম্য ছিল না।’
আরও পড়ুন: কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্প বাতিল: টিআইবির সতর্ক সাধুবাদ
জাতীয় শুদ্ধাচার কৌশল বাস্তবায়নের গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার হিসেবে নির্বাচন কমিশন শক্তিশালী ভূমিকা পালনে ব্যর্থ হয়েছে মন্তব্য করে ড. জামান বলেন, ‘একটি দেশের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা কতটা শক্তিশালী তা নির্ভর করে দেশটির নির্বাচন ব্যবস্থা এবং সংসদীয় কার্যাবলীর মধ্য দিয়ে। কিন্তু বিগত অনেকগুলো বছর ধরেই আমাদের নির্বাচন কমিশন কেমন যেন রুটিন দায়িত্বের অংশ হিসেবে শুধুমাত্র ভোটের আয়োজনেই সন্তুষ্ট; অংশগ্রহণমূলক, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ ভোট হলো কিনা, তা নিয়ে তাদের ‘মাথাব্যাথা’ নেই।’ গণতান্ত্রিক উৎকর্ষ অর্জনে শক্তিশালী নির্বাচন কমিশন এবং নির্বাচন কাঠামোর আমূল সংস্কার আশু কর্তব্য।’
আরও পড়ুন: স্বাস্থ্য খাত নিয়ে টিআইবি মিথ্যাচার করেছে: মন্ত্রী
টেকসই উন্নয়ন লক্ষমাত্রা (এসডিজি) অর্জনেও গণতান্ত্রিক উৎকর্ষ সাধনের বিকল্প নেই উল্লেখ করে নির্বাহী পরিচালক বলেন, ‘আমরা চলতি দশকেই এসডিজি অর্জনে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ; অথচ এসডিজির অন্যতম অভীষ্ট (১৬) শান্তি, ন্যয়বিচার ও শক্তিশালী প্রতিষ্ঠান নিশ্চিতে কিছু আইনি সংস্কার ব্যতীত জনগণের অংশগ্রহণমূলক ও কার্যকর কোন দৃশ্যমান পদক্ষেপ নেই। এখনও দেশের রাজনৈতিক ও প্রাতিষ্ঠানিক শুদ্ধাচারই নিশ্চিত করা যায় নি! সকলের জন্য সমান আইনি সুযোগ অর্জিত হয়নি। অংশগ্রহণমূলক সামাজিক ও আইনি কাঠামো গঠনে এখনো বহু পথ বাকি। গণতান্ত্রিক উৎকর্ষ সাধনে প্রতিবন্ধক নানা আইন ও নীতিকাঠামোর মাধ্যমে এখনও ভয়হীন, মুক্ত ও স্বাধীন মতপ্রকাশের অধিকার সংকুচিত করা হচ্ছে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনসহ বিভিন্ন নিবর্তনমূলক আইনের মাধ্যমে গণমাধ্যম ও জনগণের সমালোচনা এবং রাষ্ট্রীয় স্বেচ্ছাচারিতার বিরুদ্ধে অবাধে কথা বলার অধিকার বাধাগ্রস্ত করা হচ্ছে, যা সকল ক্ষেত্রে শুদ্ধাচার নিশ্চিত করতে নেতিবাচক ভূমিকা রাখছে। অবিলম্বে এসব বাধা অপসারণ করে, জনগণের পূর্ণাঙ্গ গণতান্ত্রিক অধিকার প্রদানে সকল ক্ষেত্রে রাজনৈতিক ও প্রাতিষ্ঠানিক শুদ্ধাচার নিশ্চিত করতে হবে- যা জাতীয় শুদ্ধাচার কৌশলের রুপকল্প ‘সুখী-সমৃদ্ধ সোনার বাংলা গঠন’ এবং অভিলক্ষ ‘রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান ও সমাজে সুশাসন প্রতিষ্ঠা’র সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ; পাশাপাশি ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের নির্বাচনী অঙ্গীকারও বটে!
সরকার খাদ্য নিরাপত্তা এবং পুষ্টিমান উন্নয়নে কাজ করছে: খাদ্যমন্ত্রী
খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেছেন, বাংলাদেশ সরকার খাদ্য নিরাপত্তা এবং পুষ্টিমান উন্নয়নে কাজ করছে। তাছাড়া টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের পাশাপাশি খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় ভবিষ্যৎ কৌশল প্রনয়নের ওপর অধিক গুরুত্ব দিচ্ছে।
বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ সচিবালয়ে তাঁর অফিস কক্ষ থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে কাজাখস্তানের নূ র সুলতানে অনুষ্ঠিত দুই দিনব্যাপী ইসলামিক অর্গানাইজেশন অব ফুড সিকিউরিটি (আইওএফএস) এর চতুর্থ সাধারণ সম্মেলনের শেষ দিনে “কান্ট্রি ডিবেটে” অংশ নিয়ে প্যানেল আলোচনায় এসব কথা বলেন তিনি।
আরও পড়ুন: খাদ্যমন্ত্রীর সাথে রাশিয়ার রাষ্ট্রদূতের সৌজন্য সাক্ষাৎ
সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেন, পৃথিবী এখন ইতিহাসের এক চরম সংকটকাল অতিক্রম করছে। কোভিড ১৯ মহামারির কারণে মানবজাতির সংকট বাড়ছে। এ সময়ে সকলের সুরক্ষা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত কেউ সুরক্ষিত নয়। বাংলাদেশ সরকার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশের মানুষের জীবন ও জীবিকার উপর সমান জোর দিয়ে করোনাকালীন বিশেষ উদ্যোগ নেয়। সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতা বাড়িয়ে করোনাকালে এক কোটির বেশি আয় রোজগারহীন মানুষকে অন্তর্ভূক্ত করে খাদ্য সহায়তা দেয়। মহামারির কারণে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক, শ্রমিকসহ পাঁচ মিলিয়ন মানুষকে নগদ প্রণোদনা দিয়েছে। মহামারিকালে খাদ্য সংকট মোকাবেলায় বাংলাদেশের অর্জন প্রসংশনীয়।
আইওএফএস এর সদস্য দেশগুলির মধ্যে সহযোগিতা এবং অংশীদারিত্ব বৃদ্ধির মাধ্যমে টেকসই খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, কোভিড ১৯ পরবর্তী পরিস্থিতি মোকাবেলায় পারস্পরিক সহযোগিতা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এক্ষেত্রে আইওএফএস মডেল হিসেবে নিজেদেরকে উপস্থাপন করতে পারে। এসময় তিনি কৃষি ও খাদ্য খাতের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সদস্য দেশগুলোর মধ্যে আরও বেশি বিনিয়োগ, গবেষণা ও উদ্ভাবন বাড়ানোর আহ্বান জানান তিনি।
আরও পড়ুন: বঙ্গবন্ধু বাঙালির অনুপ্রেরণার বাতিঘর: খাদ্যমন্ত্রী
অনুষ্ঠানে আইওএফএস এর নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান ইয়ারবল কারাসকেয়েভ বক্তব্য দেন। এছাড়াও কান্ট্রি ডিবেটে সংযুক্ত আরব আমিরাত, পাকিস্তান, তাজিকিস্তান এবং কাজাখস্তানের পক্ষ থেকে দেশগুলোর সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীরা বক্তব্য উপস্থাপন করেন।
অনুষ্ঠানে ওআইসি, আইওএফএসভূক্ত সদস্য দেশ ও পর্যবেক্ষক দেশের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীরা, সহযোগী সংস্থার প্রতিনিধি, গবেষক, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি ও গণমাধ্যম প্রতিনিধি ভার্চুয়ালি অংশ নেন।