মানবাধিকার
বিএনপির শাসনামলে প্রতিটি ধাপে মানবাধিকার লঙ্ঘিত হয়েছে: প্রধানমন্ত্রী
বিএনপিকে কড়া সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, তারা (বিএনপি) নির্বাচন ও মানবাধিকার নিয়ে প্রশ্ন তোলেন, কিন্তু তাদের শাসনামলে প্রতিটি ধাপে মানবাধিকার লঙ্ঘিত হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী শনিবার যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে বাংলাদেশি সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে এক নাগরিক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বক্তব্যকালে এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘ভোট কারচুপিতে তারা (বিএনপি) চ্যাম্পিয়ন। এক কোটি ২৩ লাখ জাল ভোটারদের অন্তর্ভুক্ত করা থেকে শুরু করে এমন কোনো অপকর্ম নেই যা তারা করেনি।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ জনগণের অধিকারে বিশ্বাস করে এবং সেই অধিকার রক্ষা করে।
তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ এদেশে জনগণের ভোটাধিকার নিশ্চিত করেছে। আওয়ামী লীগ ক্যান্টনমেন্টে বন্দী অবস্থা থেকে জনগণের ভোটাধিকারের ক্ষমতা ফিরিয়ে দিয়েছে।’
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ বিরোধী অপপ্রচারের উপযুক্ত জবাব দিন: প্রবাসীদের প্রধানমন্ত্রী
শেখ হাসিনা বলেন, ২০০৯ সাল থেকে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার ধারাবাহিকতার কারণে বাংলাদেশে সামাজিক উন্নয়ন ঘটেছে।
তিনি বলেন, বিএনপি বারবার অগ্নিসংযোগ, হত্যা, অবরোধ আরোপের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে ব্যাহত করার চেষ্টা করেছে।
জিয়ার পরিবারের সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, খালেদা জিয়া এতিমদের তহবিল অপব্যবহারের জন্য দুর্নীতির মামলায় এবং তার ছেলে তারেক রহমান মানি লন্ডারিং ও ১০ ট্রাক অস্ত্র মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন।
তিনি জানান, জিয়ার অপর ছেলে প্রয়াত কোকোর অবৈধভাবে লুটপাট করা অর্থও বাংলাদেশ সরকার ফেরত এনেছে।
তিনি বলেন, তার সরকার প্রবাসী বাংলাদেশিদের কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছে।
প্রবাসীদের প্রশংসা করে শেখ হাসিনা বলেন, তারা সব সময় বাংলাদেশের দুঃসময়ে পাশে থাকে।
আরও পড়ুন: নির্বাচন সুষ্ঠু হবে, বিএনপির উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই: নিউইয়র্কে প্রধানমন্ত্রী
ওয়াশিংটন পৌঁছেছেন প্রধানমন্ত্রী
উন্নত বিশ্বের কারণে গ্রীনহাউস গ্যাসের প্রভাবে ভুগছে বাংলাদেশ: ইয়ান ফ্রাই
উন্নত বিশ্বের কারণে গ্রীনহাউস গ্যাসের প্রভাবে বাংলাদেশ ভুগছে বলে মন্তব্য করেছেন জলবায়ু পরিবর্তন প্রেক্ষাপটে মানবাধিকারের সুরক্ষা ও উৎসাহিতকরণ বিষয়ক জাতিসংঘের বিশেষ র্যাপোর্টিয়ার ইয়ান ফ্রাই।
বর্তমানে তিনি বাংলাদেশে সরকারি সফরে আছেন। এই সফর থেকে প্রাপ্ত ফলাফল ১৫ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিতব্য সংবাদ সম্মেলনে জানাবেন তিনি।
একজন সরকারি কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ২০২২ সালের ১ মে দায়িত্ব গ্রহণ করার পর জাতিসংঘের বিশেষ এই দূতের প্রথম সফর এটি। তিনি বাংলাদেশে ৪-১৫ সেপ্টেম্বর অবস্থান করবেন।
কীভাবে জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব দুর্বল সম্প্রদায়ের মানবাধিকারকে প্রভাবিত করে তা তিনি মূল্যায়ন করছেন। বিশেষ এই প্রতিবেদক জলবায়ু পরিবর্তন ও চরম আবহাওয়ার ক্ষয়ক্ষতির দিকে মনোনিবেশ করছেন।
ইয়ান বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব বাংলাদেশের জনগণের ওপর ব্যাপক অর্থনৈতিক ও সামাজিক ক্ষতি করে চলেছে। গবেষণাপ্রাপ্ত ফলাফল ইঙ্গিত দিচ্ছে যে বিশ্বব্যাপী জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবের কারণে ক্ষয়ক্ষতি সংক্রান্ত খরচ ২০৩০ সাল নাগাদ বছরে ২৯০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার থেকে ৫৮০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের মধ্যে বৃদ্ধি পাবে।’
আরও পড়ুন: নির্বাচনের আগে শান্তিপূর্ণ সমাবেশ ও মত প্রকাশের স্বাধীনতা নিশ্চিতের আহ্বান জাতিসংঘ
জাতিসংঘের এই বিশেষজ্ঞ জানান, ‘উন্নত বিশ্বের কারণে নির্গত গ্রীনহাউস গ্যাস দূষণে ভুগছে বাংলাদেশের মানুষ। এখন সময় এসেছে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের পদক্ষেপ নেয়ার এবং এই প্রভাবগুলোর দায় নেয়ার।’
জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব কীভাবে মানুষকে তাদের জমি থেকে বাস্তুচ্যুত হতে বাধ্য করছে এবং এই প্রভাবগুলো মোকাবিলায় কী ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে সেদিকেও তিনি বিশেষ মনোযোগ দিচ্ছেন এবং অনুসন্ধান করছেন।
জাতিসংঘের এই বিশেষজ্ঞ বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক বাস্তবায়িত ভালো চর্চা, কৌশল ও নীতি চিহ্নিত করছেন। কারণ দেশটি জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেয় এবং এর প্রতিকূল প্রভাবের বিরুদ্ধে স্থিতিস্থাপকতা তৈরি করে।
ইয়ান ২০২৩ সালের জুনে জেনেভায় জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলে তার সফরের বিষয়ে একটি বিস্তৃত প্রতিবেদন উপস্থাপন করবেন।
আরও পড়ুন: শান্তির সংস্কৃতি প্রচারে বাংলাদেশের নেতৃত্বের প্রশংসা জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের
ইয়ান ফ্রাই হলেন জলবায়ু পরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে মানবাধিকারের প্রচার ও সুরক্ষার প্রথম বিশেষ র্যাপোর্টিয়ার।
তিনি ২০২২ সালের মার্চে মানবাধিকার কাউন্সিলের ৪৯ তম অধিবেশনে নিযুক্ত হন এবং ২০২২ সালের ১ মে থেকে কার্যক্রম শুরু হয়।
ফ্রাই একজন আন্তর্জাতিক পরিবেশবিষয়ক আইন ও নীতি বিশেষজ্ঞ।
তার প্রাথমিকভাবে দৃষ্টি থাকছে প্রশমন নীতি এবং প্যারিস চুক্তি, কিয়োটো প্রোটোকল এবং এ সম্পর্কিত উপকরণগুলোর সঙ্গে সম্পর্কিত ক্ষয়ক্ষতির ওপর।
তিনি ২১ বছরেরও বেশি সময় ধরে টুভালু সরকারের হয়ে কাজ করেছেন এবং ২০১৫ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত জলবায়ু পরিবর্তন ও পরিবেশের জন্য দেশটির রাষ্ট্রদূত হিসেবে নিযুক্ত ছিলেন।
আরও পড়ুন: জাতিসংঘ পুলিশ, সংস্থা ও জাতীয় কর্তৃপক্ষসহ সকলের সমন্বয় প্রয়োজন: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
আসকের সেপ্টেম্বরের প্রতিবেদনে বাংলাদেশে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ভয়াবহ চিত্র ফুটে উঠেছে
আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) সেপ্টেম্বর মাসে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে আগস্ট পর্যন্ত বাংলাদেশে ভয়াবহ মানবাধিকার লঙ্ঘনের চিত্র ফুটে উঠেছে। সোমবার প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনে নারী ও শিশুর বিরুদ্ধে যৌন সহিংসতা, ধর্ষণের পর হত্যা, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে মৃত্যু ও রাজনৈতিক সহিংসতায় মানবাধিকার লঙ্ঘনের চিত্র উঠে এসেছে।
এতে বাংলাদেশে মানবাধিকার লঙ্ঘনের পরিস্থিতি নথিভুক্ত পরিসংখ্যানের মাধ্যমে দেখানো হয়েছে। দেশের ৯টি শীর্ষস্থানীয় জাতীয় দৈনিকের প্রতিবেদন এবং আসকের নিজস্ব সূত্রের ভিত্তিতে এই প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: রাখাইনে মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে পদক্ষেপ নিন: মিয়ানমারকে অস্ট্রেলিয়াি
প্রতিবেদনে জানা যায়, চলতি বছরের ৩১ আগস্ট পর্যন্ত গত আট মাসে সারাদেশে ধর্ষণের পর ৩১টি হত্যার ঘটনা ঘটেছে। এসময়ে অন্তত ৬৪১ জন নারী যৌন নিপীড়ণের শিকার হয়েছেন। একই সময়ে ধর্ষণের পর সাতটি খুনের ঘটনাও ঘটেছে। শিশুদের বিরুদ্ধে ৭৭০টি সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে, এরমধ্যে ৩৯২টি শিশু যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। একই সময়ে ৩৪৭টি শিশুকে হত্যা ও ৯৫টি শিশুকে নির্যাতনের পর হত্যা করা হয়েছে।
আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর মাধ্যমে কমপক্ষে ১৩টি মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। এছাড়া ৩২৪টি হত্যার ঘটনা ঘটেছে পরিবারে। যার মধ্যে ১৩৪টি হত্যার ঘটনা নিজ স্বামী দ্বারা সংঘটিত হয়েছে বলে অভিযোগ আছে।
আসকের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, এই সময়ে ৩৪১ রাজনৈতিক সহিংসতার ঘটনায় কমপক্ষে চার হাজার ৩৭৯ জন আহত ৫৪ জন মানুষ নিহত হয়েছেন।
আরও পড়ুন: রাখাইনে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের তদন্ত হচ্ছে না: জাতিসংঘ
রাখাইনে মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য কেউ রেহাই পাবে না: যুক্তরাজ্য
মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন একমাত্র সমাধান: দ. কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত
রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তা ও মর্যাদার সঙ্গে মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনই এই সংকটের একমাত্র সমাধান বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত লি জ্যাং-কিউন। বুধবার জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন।
রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এই প্রত্যাবাসন হওয়া উচিত। এটি একটি আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক সমস্যা। দক্ষিণ কোরিয়া রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে সহায়তা করতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সাথে খুব ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছে।’
রাষ্ট্রদূত লি বলেন, ইস্যুটি শুধু মানবিক নয়, মানবাধিকারও বটে।
জাতীয় প্রেসক্লাবে ডিপ্লোম্যাটিক করেসপন্ডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ (ডিকাব) কর্তৃক আয়োজিত ‘ডিকাব টক’ অনুষ্ঠানে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। ডিকাব সভাপতি রেজাউল করিম লোটাস ও সাধারণ সম্পাদক একেএম মঈনুদ্দিন বক্তব্য দেন।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে দ. কোরিয়ার ‘আরও উদ্যোগ’ চায় বাংলাদেশ
রাষ্ট্রদূত লি বলেন, আগামী বছর বাংলাদেশ ও দক্ষিণ কোরিয়া কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি উদযাপন করবে। তিনি বলেন, ‘আগামী বছরকে আমাদের সম্পর্কের ভবিষ্যতের জন্য একটি অর্থবহ বছর করার লক্ষ্যে আমি বিভিন্ন পরিকল্পনা ও চেষ্টা করছি। ৫০ বছরের বন্ধুত্ব নিয়ে একটি তথ্যচিত্র তৈরি করা হচ্ছে তাঁর অন্যতম একটি প্রস্তুতি।’
তিনি বলেন, এই উদযাপন ও প্রচেষ্টায় গণমাধ্যমের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
দক্ষিণ কোরিয়া ও বাংলাদেশের মধ্যে বাণিজ্যের পরিমাণ ২০২১ সালে ২০০ কোটি মার্কিন ডলার অতিক্রম করে সর্বোচ্চে পৌঁছেছে। তাঁর পরিসংখ্যান অনুযায়ী, দক্ষিণ কোরিয়া বাংলাদেশে ২০২১ সালে রপ্তানি করেছে ১৬৩ কোটি মার্কিন ডলার, যা গত বছরের তুলনায় ৫৮ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ছে। অপরদিকে ২০২১ বাংলাদেশ দক্ষিণ কোরিয়ায় ৫৫ কোটি ২০ লাখ মার্কিন ডলার রপ্তানি করেছে, যা গতবছরের তুলনায় ৪০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ছে।
তিনি বলেন, ‘এটি একটি অত্যন্ত অর্থবহ উন্নয়ন। কারণ দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের পরিমাণ ১০ বছরেরও বেশি সময় ধরে স্থবির হয়েছিল। ২০১১ সালে এটি ১৮০ কোটি ডলারে পৌঁছেছিল।’ তিনি আরও যোগ করেন, দক্ষিণ কোরিয়া বাংলাদেশের পঞ্চম বড় বিদেশি বিনিয়োগকারী দেশ।
আরও পড়ুন: শান্তিপূর্ণ পারমাণবিক শক্তি ব্যবহারে সহযোগিতায় বাংলাদেশ ও দ. কোরিয়ার সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর
এ বছরের প্রথম প্রান্তিকে মোট বিদেশি বিনিয়োগের মধ্যে ১৫ কোটি ডলার নিয়ে দক্ষিণ কোরিয়া প্রথম অবস্থানে আছে। যা প্রমাণ করে দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক কীভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। ‘আমি নিশ্চিত যে আমাদের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক শক্তিশালী করতে মিডিয়া ও সাংবাদিকরাও ভূমিকা রেখেছে।’
রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘কোরিয়া ও বাংলাদেশের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক জোরদার ও গভীর করাই আমার দায়িত্ব। বাংলাদেশে আমার দায়িত্বের শুরুতে এ বিষয়ে বলেছি, এখানে আমি আমার মেয়াদে কাজের তিনটি প্রধান উদ্দেশ উপস্থাপন করেছি। যেগুলো হল-বৈচিত্র্যতা, উচ্চতা ও প্রজন্ম।’
আরও পড়ুন: ডিকাবের নতুন সভাপতি পান্থ, সাধারণ সম্পাদক মঈনুদ্দিন
গুমের ঘটনা জাতিসংঘের অধীনে তদন্ত করুন: সরকারকে ফখরুল
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার যদি জাতিসংঘের অধীনে জোরপূর্বক গুমের ঘটনার তদন্ত না করেন, তাহলে তাদেরকে সেসকল অভিযোগে বিচারের মুখোমুখি হতে হবে।
তিনি বলেন, ‘আজ আমরা গুমের শিকার পরিবারের সদস্য, সন্তানদের পাশে দাঁড়িয়ে জোরপূর্বক গুম করার ঘটনাগুলোর জাতিসংঘের অধীনে নিরপেক্ষ ও স্বাধীনভাবে দ্রুত একটি তদন্ত দাবি করছি।’
‘অন্যথায়, অতীতে বলপূর্বক গুম ও হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার জন্য বিভিন্ন দেশের সরকার প্রধানদের মতো বিচারের মুখোমুখি করা হবে।’
মঙ্গলবার রাজধানীর পল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণ বিএনপির উদ্যোগে আন্তর্জাতিক গুম দিবস উপলক্ষে এক মানববন্ধন করে। এতে ভুক্তভোগীদের পরিবারের
সদস্য, সন্তান এবং অনেক বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা যোগ দেন।
ফখরুল অভিযোগ করেন, আওয়ামী লীগ ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে। ‘তারা ভয়ের রাজত্ব প্রতিষ্ঠা করেছে। গুম ও হত্যার হুমকি দিয়ে দেশ চালাচ্ছে।’
জোরপূর্বক গুম করা মানুষদের উদ্ধার করে তাদের পরিবার ও সন্তানদের মুখে হাসি ফোটাতে দলীয় নেতাকর্মীদের আরও বেশি ত্যাগ করা ও জনগণকে সঙ্গে নিয়ে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলতে প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানান তিনি।
তিনি বলেন, ‘সরকার আমাদের চলমান আন্দোলনকে ভয় পেয়ে সীমাহীন বল প্রয়োগ শুরু করেছে। মানুষ জেগে উঠেছে, কোন প্রকার দমননীতি এই সময় কাজে আসবে না।’
তীব্র আন্দোলনের মাধ্যমে এই ফ্যাসিস্ট সরকারের দুঃশাসনের কবল থেকে দেশকে বাঁচাতে জনগণকে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান এই বিএনপি নেতা।
জোরপূর্বক গুমের শিকার পরিবারগুলোর প্রতি সংহতি প্রকাশ করে ফখরুল বলেন, ‘আপনারা একা নন, সমগ্র দেশের মানুষ আপনাদের সঙ্গে আছে, তারা আপনার জন্য লড়াই চালিয়ে যাবে।
আরও পড়ুন: ইউএনকপে আইজিপি’র নাম অন্তর্ভুক্তি: ফখরুলের সমালোচনা
অন্যের সহায়তায় যারা ক্ষমতায় আছে তারা বাংলাদেশকে শাসন করতে পারে না: ফখরুল
দেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে ব্যাচেলেট কোনো উদ্বেগ প্রকাশ করেননি: আনিসুল হক
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার মিশেল ব্যাচেলেট তার সর্বশেষ প্রতিবেদনে বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি এবং সংশ্লিষ্ট বিষয়ে বিশেষ কোনো উদ্বেগ প্রকাশ করেননি।
রাজধানীর ইস্কাটনে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজের (বিআইএসএস) এক অনুষ্ঠানে যোগদান শেষে সাংবাদিকদের মন্ত্রী এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, এ বছরের মার্চ মাসে জেনেভায় মিশেল ব্যাচেলেটের সঙ্গে তাঁর সাক্ষাৎ হয়েছিল। সাক্ষাৎকালে মিশেল ব্যাচেলেট বাংলাদেশ এবং এখানকার রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলো দেখার আগ্রহ প্রকাশ করেছিলেন।
এর পরিপ্রেক্ষিতে তিনি মিশেলকে বংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন বলে জানান আনিসুল হক।
তিনি বলেন, আমন্ত্রণের পর তিনি চলতি মাসে বাংলাদেশ সফরে এসে রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করেন। ব্যাচেলেট তার সফরকালে বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা এবং সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে দেখা করেন। হাইকমিশনার যখন দেশে এসেছিলেন তখন বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা তাঁর সঙ্গে দেখা করেছেন, কথা বলেছেন এবং তিনি সব কিছু দেখে মন্তব্য করেছেন। এ থেকে বোঝা যায় তাঁর মন্তব্যটা (নেতিবাচক কোনো কিছু না আসা) অত্যন্ত ‘ডিপ রুটেড এবং ওয়েল আন্ডারস্ট্যুড’। এছাড়া বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার সরকার যে, গণতন্ত্র এবং ইক্যুইটির (ন্যায়পরায়ণতা) ওপর বিশ্বাস করে দেশ চালাচ্ছেন সেটাও বোঝা যায়।
আরও পড়ুন: আ.লীগ জনগণের দল, আমাদের শক্তি জনগণের শক্তি: আইনমন্ত্রী
আইনমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুর সঙ্কল্প, দূরদৃষ্টি, সাহসিকতার ফলেই পাকিস্তানি অত্যাচার-অবিচার থেকে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে, যা এখনও এদেশকে সঠিক পথে পরিচালিত করছে।
বঙ্গবন্ধুর পররাষ্ট্রনীতির প্রশংসা করে তিনি বলেন, জাতির পিতা সফলভাবে নিরপেক্ষতার নীতি সমুন্নত রেখেছিলেন। তাঁর স্মরণীয় নীতি, ‘সকলের প্রতি বন্ধত্ব, কারো প্রতি শত্রুতা নয়’ বাংলাদেশের পরারাষ্ট্র নীতির মূল ভিত্তি এবং শান্তি, সহযোগিতা, উন্নয়ন এবং ন্যায়বিচার নিশ্চিতকরণের মাধ্যমে একটি উত্তম বিশ্ব গড়বার জন্য সম্পূর্ণ উপযোগী। তাঁর দূরদৃষ্টি সম্পন্ন পররাষ্ট্রনীতিই বাংলাদেশকে ‘কোল্ড ওয়ার’ থেকে বাঁচিয়ে দিয়েছিল।
মন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু শুধু একজন নেতাই ছিলেন না, তিনি রাজনীতির দার্শনিক। তাঁর চিন্তা ও দর্শনে ছিল বাংলাদেশের উন্নয়ন। তিনি বাংলাদেশকে ক্ষুধা, দারিদ্র ও দুর্নীতিমুক্ত করতে চেয়েছিলেন।
তিনি বলেন বলেন, গণতন্ত্র ও সুশাসন প্রতিষ্ঠায় বঙ্গবন্ধু আজীবন সংগ্রাম করে গেছেন। বাঙালি জাতীয়তাবাদের জনকও তিনি। এর প্রমাণ হচ্ছে বঙ্গবন্ধু রবীন্দ্রনাথের ‘আমার সোনার বাংলা’কে জাতীয় সংগীত হিসেবে বেছে নিয়েছিলেন যা, বাঙালি জাতীয়তাবাদকে প্রতিনিধিত্ব করে। মন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু একটি ধর্মনিরপেক্ষ দেশ গড়ে তুলতে চেয়েছিলেন। গণতন্ত্র এবং সমাজতন্ত্রের মিশেলে তিনি একটি রাষ্ট্রব্যবস্থা কায়েম করতে চেয়েছিলেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক অধ্যাপক ড. দেলওয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বিআইআইএসএস- এর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ মাকসুদুর রহমান তাঁর স্বাগত বক্তব্যে বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান একজন বিশ্বনেতা ছিলেন, যাঁর আদর্শ, চিন্তাধারা, নীতি, কর্ম ও ধারাবাহিকতা শুধু বাংলাদেশেই নয়, বর্হিবিশ্বেও প্রশংসা এবং গ্রহণীয়তা লাভ করেছে। জীবদ্দশায় এবং বর্তমানেও তাঁর বিশ্বভাবনার প্রাসঙ্গিকতা একইভাবে বিদ্যমান রয়েছে।
সেমিনারে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়/সংস্থার উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, বৈদেশিক দূতাবাসের প্রতিনিধি, সাবেক কুটনিতিক, ঊর্ধ্বতন সামরিক কর্মকর্তা, একাডেমিয়া, বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, গবেষণা, সংস্থার প্রতিনিধি আন্তর্জাতিক সংস্থাসমূহের প্রতিনিধি, মিডিয়া ব্যক্তিত্ব অংশগ্রহণ করেন।
আরও পড়ুন: সুষ্ঠু ভূমি ব্যবস্থাপনার অভাবেই মামলাজট: আইনমন্ত্রী
জিয়া মারা না গেলে বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার আসামি হতেন: আইনমন্ত্রী
এখনই জলবায়ু নিয়ে ভাবুন, বাংলাদেশের মতো দেশগুলোর কথা শুনুন: ব্যাচেলেট
জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার মিশেল ব্যাচেলেট বলেছেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে অবশ্যই বাংলাদেশের মতো বিশেষভাবে ক্ষতিগ্রস্ত দেশের কথা ‘শুনতে’ হবে এবং সবার জন্য সুস্থ পরিবেশের মানবাধিকারকে বাস্তবায়নের জন্য সম্ভাব্য সব উপায় কাজে লাগাতে হবে।
বুধবার বাংলাদেশে চার দিনের সফর শেষ করার কয়েক ঘন্টা আগে ব্যাচেলেট এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘এখন কাজের সময়, আমরা অনেক কথাই বলেছি এবং এখন আমাদের কথা অনুযায়ী কাজ করতে হবে।’
এসময় তিনি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে বাংলাদেশের মতো দেশগুলোর কথা শোনার এবং ‘ঐক্য, সংকল্প ও সংহতি’ নিয়ে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন।
ব্যাচেলেট বলেন, তারা জানেন যে তাদের কী করতে হবে।
তিনি আশা করেন, কেবল বন্ধ ঘরে আলোচনা না করে চলতি বছরের শেষের দিকে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ২০২০-পরবর্তী জীববৈচিত্র্য কাঠামোর আলোচনায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় পরবর্তী পদক্ষেপ নেবে।
তিনি আরও বলেন, ‘সুতরাং আমি যেমন বলেছি, আমরা জানি আমাদের কী করতে হবে। এ বিষয়ে এগিয়ে যাওয়ার জন্য আমাদের রাজনৈতিক সদিচ্ছা দরকার।’
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে নির্বাচনকালে সুশীল সমাজের আরও স্পেস প্রয়োজন: ব্যাচেলেট
বিআইআইএসএস মিলনায়তনে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ (বিআইআইএসএস) আয়োজিত ‘নিউ ফ্রন্টিয়ার্স অব হিউম্যান রাইটস: ক্লাইমেট জাস্টিস ইন পারস্পেক্টিভ’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে বক্তৃতাকালে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক প্রধান বলেন, ‘সুতরাং আমাদের একটি নতুন পথ আঁকতে হবে। ’
তিনি বলেন, বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ক্রীড়ানক হিসেবে ক্ষতিগ্রস্ত দেশেগুলোর সারিতে প্রথম দিকে রয়েছে।
বিশ্বব্যাংক অনুমান করে যে, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা ৫০ সেন্টিমিটার বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে ২০৫০ সালের মধ্যে বাংলাদেশে প্রায় ২০ মিলিয়ন মানুষ অভ্যন্তরীণ জলবায়ু অভিবাসীতে পরিণত হতে পারে। যা বাংলাদেশের সমগ্র জনসংখ্যার প্রায় ১২ শতাংশ বা চিলির সমগ্র জনসংখ্যার সমান।
আরও বলা হয়েছে, বাংলাদেশ ততদিনে তার প্রায় ১১ শতাংশ স্থলভাগ হারাতে পারে এবং এর অর্থ কেবল সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির কারণে ১৮ মিলিয়ন মানুষ বাস্তুচ্যুত হতে পারে।
ব্যাচেলেট বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তন খাদ্যের ওপর আরও বেশি প্রভাব ফেলে। ক্রমবর্ধমান তাপমাত্রা ও তাপের প্রভাবে ইতোমধ্যেই বাংলাদেশের কিছু অংশে ধান উৎপাদন প্রভাবিত হচ্ছে।’
তিনি বলেন, বাংলাদেশ দারিদ্র্য ও শিক্ষা বিষয়ে এসডিজি পূরণে গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি করেছে। ‘অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য বাংলাদেশের উচ্চাভিলাষী দৃষ্টিভঙ্গির জন্য এবং ২০২৬ সালে ‘স্বল্পোন্নত দেশের’ মর্যাদা থেকে উত্তীর্ণ হওয়ার জন্য আমি বাংলাদেশের প্রশংসা করি।’
ব্যাচেলেট একই সময়ে বলেন, লিঙ্গ সমতার এসডিজি ৫ এবং বৈষম্য হ্রাসে এসডিজি ১০ পূরণের জন্য শক্তিশালী প্রচেষ্টা প্রয়োজন।
তিনি বলেন, অন্যান্য পদক্ষেপের মধ্যে রয়েছে- বাল্যবিয়ে দূর করার জন্য কাজ করা, লিঙ্গ-ভিত্তিক সহিংসতা মোকাবিলা করা, প্রতিটি শিশুর শিক্ষার অধিকার নিশ্চিত করা এবং আয় বৈষম্য কমাতে স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদী উভয় ধরনের বিশেষ ব্যবস্থা প্রণয়ন করা।
এছাড়াও ব্যাচেলেট বলেন, বাংলাদেশের টেকসই উন্নয়ন প্রচেষ্টা এসডিজি ১৬-এর সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হওয়া উচিত শান্তিপূর্ণ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজের প্রচার, সবার জন্য ন্যায়বিচারের সুবিধা প্রদান এবং কার্যকর ও জবাবদিহিমূলক এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা।
তিনি আরও বলেন, এর মধ্যে রয়েছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন, নির্বাচন কমিশন, বিচার বিভাগকে শক্তিশালী করা, জনসাধারণের মতপ্রকাশের জন্য নাগরিক স্থান সম্প্রসারণ (অনলাইন এবং অফলাইন উভয় ক্ষেত্রেই) এবং অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়ন পরিকল্পনার পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে নাগরিক সমাজের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গাদের ত্যাগ করবেন না, সহযোগিতা বাড়ান: আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি ব্যাচেলেট
বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে জাতিসংঘ মানবাধিকার প্রধানের শ্রদ্ধা
কংগ্রেসনাল বাংলাদেশ ককাস ঢাকা-ওয়াশিংটন সম্পর্ক জোরদার করবে
সদ্য উদ্বোধন হওয়া কংগ্রেসনাল বাংলাদেশ ককাস বাংলাদেশ ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে ‘নিরবিচ্ছিন্ন সুসম্পর্ক’ তৈরি করবে।
দক্ষিণ ক্যারোলিনার কংগ্রেসম্যান জো উইলসন প্রতিনিধি পরিষদে দেয়া তার বক্তব্যে বলেন, ‘আমরা জলবায়ু পরিবর্তন, মানবাধিকার ও মানবিক চ্যালেঞ্জ সহ প্রধান সমস্যাগুলো মোকাবিলায় আমাদের যৌথ গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের ভিত্তিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ সম্পর্ক জোরদার করার অপেক্ষায় রয়েছি।’
কংগ্রেসের বাংলাদেশ ককাসের সহ-সভাপতি হিসেবে কংগ্রেসম্যান গেরি কনোলি, ডোয়াইট ইভান্স এবং স্টিভ চ্যাবোটের এসময় উপস্থিত ছিলেন।
ককাস সদস্যরা পর্যায়ক্রমে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের হালনাগাদ তথ্য পাবেন এবং সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াই ও মানবাধিকারের প্রচারে যৌথ প্রচেষ্টার পাশাপাশি রাষ্ট্রদূত এম শহীদুল ইসলামের সঙ্গে দু'দেশের মধ্যে উচ্চ পর্যায়ের সফরের সুযোগ পাবেন। কারণ এগুলো তাদের পারস্পারিক সম্পর্ককে ‘দৃঢ়’ করতে সহায়তা করবে।
উইলসন ১৬ আগস্ট তার সহকর্মীদের সঙ্গে যোগ দিয়ে বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এম শহীদুল ইসলাম বাংলাদেশের জনগণের প্রতিনিধিত্ব করছেন।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে নির্বাচনকালে সুশীল সমাজের আরও স্পেস প্রয়োজন: ব্যাচেলেট
বাংলাদেশ এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ তম বার্ষিকী উদযাপনের জন্য এই ককাস প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। বাংলাদেশ পাকিস্তান থেকে তার স্বাধীনতা অর্জনের পরপরই এই সম্পর্ক ১৯৭২ সালে শুরু হয়েছিল।
উইলসন বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র সেই সময় থেকে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান নির্মাণের যাত্রায় দীর্ঘস্থায়ী অংশীদার।’
তিনি উল্লেখ করেন, গত ৫০ বছরে বাংলাদেশ খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধি, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার সক্ষমতা বৃদ্ধি, দারিদ্র্য বিমোচন, উন্নত স্বাস্থ্য ও শিক্ষা এবং নারীর ক্ষমতায়ন সহ উল্লেখযোগ্য আর্থ-সামাজিক অগ্রগতি করেছে।
উইলসন বলেন, এক দশকেরও বেশি সময় ধরে বাংলাদেশ বিশ্বের অন্যতম দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতির মধ্যে রয়েছে এবং এর অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি শুধুমাত্র তার নিজের জনগণকে উপকৃত করছে না, প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের শান্তি, অগ্রগতি ও সমৃদ্ধিতেও অবদান রাখছে।
তিনি বলেন, বিশ্বের অন্য কোনো দেশ জাতিসংঘ শান্তিরক্ষায় বেশি বাহিনী দেয় নি।
উইলসন বলেন, দক্ষিণ এশিয়ার প্রতিবেশিদের তুলনায় বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় বেশি এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ব্যবসায়িক অংশীদার। বালাদেশের রপ্তানির প্রায় ১৯-২০ শতাংশ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জন্য নির্ধারিত।
এছাড়াও, ২০২১ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ছিল ১০ বিলিয়ন ডলারের (ইউএস) বেশি।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আদমশুমারি ব্যুরো অনুসারে, আমেরিকায় বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত দুই লাখেরও বেশি মানুষ বসবাস করে।
উইলসন বলেন, বাংলাদেশ ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে শিক্ষা বিনিময়ের প্রচার উভয় দেশের জন্য সুফল আনে। প্রায় ১০ হাজার বাংলাদেশি শিক্ষার্থী যুক্তরাষ্ট্রে পড়াশুনা করছে।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গাদের ত্যাগ করবেন না, সহযোগিতা বাড়ান: আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি ব্যাচেলেট
আইজিপি’র যুক্তরাষ্ট্র সফর: সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের মধ্যে আলোচনা চলছে
জুলাই মাসে দেশে ২৬১ জন খুন হয়েছেন: বিএইচআরসি
বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন (বিএইচআরসি) এক রিপোর্টে জানিয়েছে, চলতি বছরের জুলাই মাসে প্রতিদিন গড়ে আটজনকে খুন করা হয়েছে। এসময়ে দেশে মোট ২৬১ জনকে খুন করা হয়েছে, যেখানে কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হয়ে মাত্র ১৩৯ জন মারা গেছে।
সোমবার বিএইচআরসির রিপোর্টে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।
রিপোর্টে বলা হয়েছে- নিহতদের মধ্যে পারিবারিক সহিংসতায় সবচেয়ে বেশি প্রাণহানী হয়েছে (১৫), তারপরে সামাজিক সহিংসতায় মৃত্যু (২), যৌতুকের জন্য হত্যা (২) ও অপহরণের পর হত্যার (২) কথা বলা হয়েছে।
এছাড়া ৩১ জনের মৃত্যু রহস্যজনক বলে জানা গেছে।
রাজনৈতিক পাঁচটি হত্যা এবং ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) কর্তৃক দুটি হত্যার কথা বলা হয়েছে এই রিপোর্টে।
এছাড়া চলতি মাসে ধর্ষণের পর খুন হয়েছেন দুজন ভুক্তভোগী। বিএইচআরসি এই সময়ের মধ্যে সাতটি ধর্ষণের ঘটনাও রেকর্ড করেছে।
এদিকে বিএইচআরসি জানিয়েছে, সারাদেশে সড়ক দুর্ঘটনায় ১৯৫ জন নিহত হয়েছেন এবং চারজন আত্মহত্যা করেছেন।
সংগঠনটি তার জেলা, উপজেলা ও পৌরসভা শাখার তথ্য এবং জাতীয় সংবাদপত্রে প্রকাশিত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে প্রতিবেদনটি তৈরি করেছে।
সংস্থাটি বলেছে, ‘আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার মাধ্যমেই কেবলমাত্র এ ধরনের ক্রমবর্ধমান হত্যাকাণ্ড হ্রাস করা সম্ভব।।’
আরও পড়ুন: মার্চে দেশে সড়ক দুর্ঘটনায় ১৬৬ জন, আর করোনায় ৮৫ জনের মৃত্যু হয়েছে: বিএইচআরসি
জানুয়ারিতে দেশে খুন হয়েছেন ১৮৫ জন: বিএইচআরসি
জলবায়ু পরিবর্তন: ৪-১৫ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ সফর করবেন ইয়ান ফ্রাই
জলবায়ু পরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে মানবাধিকারের প্রচার ও সুরক্ষা বিষয়ক বিশেষ প্রতিবেদক ৪-১৫ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশে সরকারি সফরে আসবেন।
আন্তর্জাতিক পরিবেশ আইন ও নীতি বিশেষজ্ঞ ইয়ান ফ্রাই বাংলাদেশ সরকারের আমন্ত্রণে এ সফর করবেন।
পরিদর্শনকালে তিনি কীভাবে জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব জলবায়ু পরিবর্তনজনিত স্থানচ্যুতি সহ ঝুঁকিপূর্ণ পরিস্থিতিতে সম্প্রদায়ের মানবাধিকারকে প্রভাবিত করে তা চিহ্নিত করবেন।
আরও পড়ুন: জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় বৈশ্বিক প্রচেষ্টার আহ্বান রাষ্ট্রপতির
উপরন্তু, তিনি মানবাধিকারের পূর্ণ ও কার্যকর বাস্তবায়নের ওপর জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবের প্রতি স্থিতিস্থাপকতা তৈরিতে সরকার কর্তৃক বাস্তবায়িত ভাল অনুশীলন, কৌশল ও নীতিগুলি চিহ্নিত করার পরিকল্পনা করেছেন।
সফরের প্রস্তুতির জন্য ইয়ান ফ্রাই জুলাইয়ের মধ্যে সুশীল সমাজ, মানবাধিকার সংস্থা এবং অন্যান্য আগ্রহী স্টেকহোল্ডারদের কাছ থেকে মতামত চেয়েছেন।
তিনি প্রাথমিকভাবে প্যারিস চুক্তি, কিয়োটো প্রোটোকল সম্পর্কিত উপকরণগুলির সঙ্গে সম্পর্কিত প্রশমন নীতি এবং ক্ষয়ক্ষতির বিষয়টি বেশি গুরত্ব দিবেন।
আরও পড়ুন: ‘জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবিলায় কার্যকর পরিকল্পনা প্রণয়ন করছে সরকার’