জেলা প্রশাসক
বাগেরহাটে ফাঁদ পেতে অবাধে চলছে পাখি নিধন
বাগেরহাটের কোদালিয়া-কালশিরা বিলে চলছে অবাধে পাখি নিধন। বিলের কয়েক বিঘা এলাকা জুড়ে ফাঁদ পেতে অবাধে পাখি শিকার করছে শিকারি চক্র। ফাঁদে প্রতিদিন ধরা পড়ছে দেশি-বিদেশি নানা প্রজাতির পাখি।
এই প্রতিবেদক সরজমিনে গিয়ে দেখতে পান, চিতলমারী থেকে উত্তর- পশ্চিম দিকে বিলের কালশিরা স্থানে কয়েক বিঘা এলাকা জুড়ে ফাঁদ পাতা রয়েছে। পাখি ধরতে কট আর লাইলনের সুতা দিয়ে ফাঁদ তৈরি করা হয়েছে। পানিতে কিংবা পানি থেকে এক থেকে দেড় হাত উচুতে ফাঁদ ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে বাঁশের খুটিতে। এছাড়া পাখি ধরার জন্য বিলে বসানো হয়েছে সোলার প্যানেল এবং সাউন্ডবক্স।
এ সময় বিলে পাখি শিকারি ওসমান নামে এক যুবককে ফাঁদ পাততে দেখা গেছে। সাংবাদিক পরিচয় জানতে পেরে নৌকা নিয়ে তিনি দ্রুত বিলের মধ্যে পালিয়ে যান তিনি। সারা বছর বিলে পাখি শিকার চললেও শীত মৌসুমে পাখি শিকারিদের তৎপরতা কয়েক গুণ বেড়ে যায় বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন। জীবিকার প্রয়োজনে ওই বিলে যাওয়া জেলে এবং শাপলা সংগ্রহকারীদের শিকারিরা নানাভাবে হুমকি দেয় বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে।
জানা গেছে, বাগেরহাটের চিতলমারী, ফকিরহাট ও মোল্লাহাট উপজেলা জুড়ে বিশাল বিল রয়েছে। এই বিল কোদালিয়া-কালশিরা বা জয়খা জলমহল হিসেবে পরিচিত। বিভিন্ন প্রজাতির অংসখ্য পাখির বিচারণ ক্ষেত্র বিশাল এই বিল। মোবাইলের সাহায্যে বিভিন্ন পাখির ডাক উচ্চ স্বরে সাউন্ডবক্সে বাজানো হয়। বিলের উপর দিয়ে উড়ে বেড়ানোর সময় পাখির ঝাঁক ওই ডাক শুনে নিচে নেমে এলে ফাঁদে ধরা পড়ে। এই বিলে ডাহক, কোরা,জলপিপি, বক, মাছরঙ্গা ও জলহাঁসসহ বিভিন্ন প্রজাতির পাখির আবাসস্থল। আর অকেন প্রজাতির পখির বিচারণ ক্ষেত্রও এই বিল।
আরও পড়ুন: টিয়াসহ ২৩ পাখি উদ্ধার, ঠাকুরগাঁওয়ে ১ জনের কারাদণ্ড
বাগেরহাটে দেড় বছরে ৩১৭৮ জন শিক্ষার্থীর বাল্যবিয়ে
বাগেরহাটে গত দেড় বছরে তিন সহস্রাধিক অপ্রাপ্ত বয়স্ক মেয়ে বাল্যবিয়ের শিকার হয়েছে। বাল্যবিয়ের শিকার এসব কিশোরী মেয়েরা বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী। তারা পড়ালেখা বন্ধ করে এখন স্বামীর সংসার করছে। এদিকে, বাল্যবিবাহ রোধ করতে সমাজের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষকে সচেতন হওয়া জরুরি বলে জেলা প্রশাসক মনে করছে।
শিক্ষা বিভাগের প্রতিবেদন অনুযায়ী, জেলায় করোনাকালীন সময়ে তিন হাজার ১৭৮ জন শিক্ষার্থী বাল্যবিয়ের শিকার হয়েছে। জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এই সময়ে প্রায় ৪০০ বাল্যবিয়ে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। চিকিৎসকরা বলছেন, অপরিণত বয়সে গর্ভধারণ ও সন্তান জন্মদানের সময় অনেক মা ও শিশু মৃত্যু ঝুঁকিতে পড়ে।
করোনাকালে বাল্যবিয়ের শিকার নীলাঞ্জনা (ছদ্মনাম) বাগেরহাট শহরের বাসাবাটি রহমানিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ছাত্রী। গত বছর নভেম্বর মাসে তার বিয়ে হয়। অর্থনৈতিক অস্বচ্ছলতা এবং লেখাপড়া নিয়ে অনিশ্চয়তার কারণে মা-বাবা সিদ্ধান্ত নিয়ে মেয়ের বিয়ে দিয়েছেন। বর্তমানে সে ওই বিদ্যালয়ে নবম শ্রেণির ছাত্রী। তার বাবা পেশায় একজন হকার।
বিয়ের তিন মাসের মধ্যে স্বামীকে ডিভোর্স দেয়া নবম শ্রেণির ছাত্রী নীলাঞ্জনা জানায়, বিদ্যালয় বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর তার মধ্যে অনিশ্চয়তা দেখা দেয়। পরিবারে অভাব অনটন মা-বাবাকে ভাবিয়ে তোলে। পরিবারের সিদ্ধান্তে সে বিয়েতে রাজি হয়। বিয়ের পর সে স্বামীর সংসারে চলে যায়। কিছুদিন পর স্বামী তার উপর নির্যাতন চালাতে থাকে। নির্যাতন সইতে না পেরে সে বাবার বাড়ি চলে আসে। বিয়ের তিন মাসের মধ্যে সে তার স্বামীকে ডিভোর্স দিয়েছে। এখন সে আবারও পড়ালেখা করতে চায়। পড়ালেখা করে নিজের পায়ে দাঁড়াতে চায় নীলাঞ্জনা।
পড়ুন: বাল্যবিয়ে প্রতিরোধে সাংসদদের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ: স্পিকার
চাঁদপুরের করোনা রোগীদের জন্য অক্সিজেন সিলিন্ডার সরবরাহ
ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশ (আইইবি) ও ম্যাক্স গ্রুপের যৌথ উদ্যোগে চাঁদপুরের করোনা রোগীদের জন্যে ৬০ টি অক্সিজেন সিলিন্ডার ও উন্নত মাস্ক প্রদান করা হয়েছে।
আইইবির সহ-সভাপতি এবং পাওয়ার সেলের ডিজি মোহাম্মদ হোসাইনের সার্বিক সহযোগিতায় এ অক্সিজেন সহায়তা প্রদান করা হয়।
রবিবার দুপুরে চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান হাতে চাঁদপুর সদর উপজেলার জন্যে ২৫ টি অক্সিজেন সিলিন্ডার হস্তান্তর করা হয়। বাকি ৩৫টি অক্সিজেন সিলিন্ডারের মধ্যে শাহরাস্তির উপজেলার জন্য ১০টি, হাজীগঞ্জ উপজেলায় ১০টি এবং কচুয়া উপজেলার জন্যে ১৫টি প্রদান করা হয়।
আরও পড়ুন: চাঁদপুরে নারী করোনা রোগীর ‘আত্মহত্যার’ চেষ্টা!
জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান বলেন, ‘বর্তমানে চাঁদপুরে করোনা পরিস্থিতি ভালো না। আমরা যদি সচেতন না হই,তবে এটি আরও ভয়াবহ রূপ ধারণ করবে। বর্তমানে করোনা রোগী বেড়ে যাওয়ায় অক্সিজেনের সংকট চলছে। এ থেকে উত্তরণের ইতিমধ্যে সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি বিভিন্ন সংগঠন এবং ব্যক্তি পর্যায়েও অনেকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে।’
তিনি বর্তমান এ দুর্যোগে থেকে উত্তরণে সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান এবং ব্যক্তি পর্যায়ে এগিয়ে আসার আহবান জানিয়ে জেলা প্রশাসক বলেন,‘চাঁদপুরের অনেক ধর্নাঢ্য ব্যক্তি রয়েছেন। আমি অনুরোধ করবো, এ দুর্যোগে আপনারা মানুষের পাশে দাঁড়ান। আমরা সকলে যদি মানবিক দিক বিবেচনা করে যার যার অবস্থান থেকে সম্মিলিতভাবে এগিয়ে আসি, তাহলে এ সংকট থেকে সহজে উত্তরণ করা সম্ভব।’
আরও পড়ুন: চাঁদপুরে লকডাউনে ফুটবল খেলাসহ আইন ভঙ্গে আটক অর্ধশতাধিক
অক্সিজেন সিলিন্ডার প্রদান অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সিভিল সার্জন ডাক্তার মো. সাখাওয়াত উল্লাহ, ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশ চাঁদপুর জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক ও চাঁদপুর এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী ইউনুছ হোসেন বিশ্বাসসহ জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেটগণ।
এ কার্যক্রমে আরও সহযোগিতা করেন ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশ এর সাধারণ সম্পাদক শাহাদাত হোসেন শিবলু।
বীরাঙ্গনা মায়ার 'দুয়ারে' জেলা প্রশাসক
ফরিদপুরে বীরাঙ্গনা মায়া রানীর নবনির্মিত ঘরে তার খোঁজ নিতে ছুটে গেছেন ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক অতুল সরকার।
ফরিদপুর সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকতা মো. মাসুম রেজা জানান, সকাল ১১ টায় ফরিদপুর পৌরসভার শোভারামপুর এলাকার বাসিন্দা নিঃসন্তান মায়া রানীর দুয়ারে পৌঁছান জেলা প্রশাসক। সেখানে তিনি বীরঙ্গনা মায়া রানীর সার্বিক খোঁজ-খবর নেন। এ সময় অন্যান্যের মধ্যে ফরিদপুর সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. আব্দুর রাজ্জাক মোল্লা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুনঃ ফরিদপুরে আশ্রয়ণের সুবিধা ভোগীদের অন্যরকম ঈদ
অতুল সরকার বলেন, ‘মুজিববর্ষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী দেশব্যাপী ভূমিহীন গৃহহীনদের জন্য ভূমি প্রদান ও গৃহ নির্মাণ কার্যক্রম গ্রহণ করেছেন, তারই অংশ হিসেবে উপজেলা পরিষদের রাজস্ব তহবিল থেকে একটি ঘর করে দিতে পেরেছি। তিনি জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান। তিনি আমাদের বীরাঙ্গনা। আমরা এই ঘর দিয়ে শুরু করলাম। ভবিষ্যতে তার জন্য আরও ভালো কিছু করার চেষ্টা করবো। তার যেন থাকা খাওয়া সমস্যা না হয় সেজন্য সব সময়ই আমাদের প্রশাসন যোগযোগ করবে।’
উল্লেখ্য মহান মুক্তিযুদ্ধে নিজ বাড়িতে ১৬ বছর বয়সে হানাদার বাহিনী ও স্থানীয় দোসরদের দ্বারা নির্যাতিত হন মায়া রানী সাহা। ফরিদপুর বর্ধিত পৌরসভার শোভারামপুরের বাসিন্দা মায়া রানী সাহা দীর্ঘদিন ধরে অসহায়ভাবে জীবন যাপন করছিলেন। খবর পেয়ে গণশুনানির সময় ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক অতুল সরকার এর সাথে সাক্ষাত করে তার অসহায়ত্বের কথা জানান জেলা প্রশাসককে।
আরও পড়ুনঃ ফরিদপুরে কর্মহীনদের মাঝে আ’লীগের খাদ্য বিতরণ
পরে জেলা প্রশাসক ফরিদপুর সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মাসুম রেজাকে নির্দেশনা প্রদান করেন মায়া রাণী সাহার বিষয়ে সরেজমিনে তদন্ত করে সুস্পষ্ট মতামতসহ জামুকায় প্রতিবেদন প্রেরণের জন্য। সেই নির্দেশনার আলোকে গত বছরের ১৪ জানুয়ারি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নেতৃত্বে উপজেলা বীরাঙ্গনা যাচাই বাছাই সংক্রান্ত গঠিত বিশেষ কমিটি প্রতিবেদন প্রস্তুত করে জামুকা বরাবর প্রেরণ করে। তারই প্রেক্ষিতে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপনে মায়া রাণী সাহাকে ৩৮০ নং গেজেটে বীরাঙ্গনা হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান করা হয়।
আরও পড়ুনঃ ফরিদপুরে গৃহহীনের অভাব ঘুচবে ১৫৭২ পরিবারের
এদিকে বীরাঙ্গনা হিসেবে স্বীকৃতি পেলেও তার ছিলনা কোনো থাকার ঘর। মায়া রানী সাহার জরাজীর্ণ আবাসস্থল সেমি পাকা ভবনে রূপান্তরে ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নেন জেলা প্রশাসক অতুল সরকার। ফরিদপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার তত্ত্বাবধানে একটি সেমি পাকা ঘর নির্মাণের কাজ শুরু করে মায়া রানী সাহার জরাজীর্ণ বসত ভিটায়। বর্তমানে নির্মাণ কাজ সমাপ্ত হয়েছে। এখন মায়ারানী এই নতুন ঘরে বাস করছেন।
করোনা মোকাবিলায় পাড়া-মহল্লায় কমিটি গঠনের নির্দেশ
করোনা মোকাবিলায় পাড়া-মহল্লা, গ্রাম, ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন ভিত্তিক কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন ঝিনাইদহের জেলা প্রশাসক (ডিসি) মজিবর রহমান।
মঙ্গলবার এক ভার্চুয়াল মিটিং এই সিদ্ধান্ত নেয় জেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটি। জেলার বিভিন্ন জায়গায় গ্রামের পাড়া-মহল্লার দোকান-পাট খোলাসহ সার্বিক করোনা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ ও দ্রুত পদক্ষেপ নিতে এই প্রতিরোধ কমিটি গঠনের পরামর্শ দিয়েছেন বক্তারা।
আরও পড়ুন: ঝিনাইদহ সদরে করোনা রোগীর ভিড়, অক্সিজেন সংকটের আশঙ্কা
ভার্চুয়াল মিটিং-এ ডিসি মজিবর রহমানের সভাপতিত্বে অংশ নেন জেলা পুলিশ সুপার মুনতাসিরুল ইসলাম, ঝিনাইদহ সদর পৌরসভার মেয়র সাইদুল করিম মিন্টু, সকল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, সদর হাসপাতালের তত্ববধায়ক ডা. হারুন অর রশিদ, জেলা তথ্য অফিসার আবু বকর সিদ্দিক ও বিভিন্ন ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বৃন্দ।
মিটিংয়ে ডিসি মজিবর রহমান বলেন, ‘দেশে করোনাকালীন যে সংকট চলছে তা আমরা সম্মিলিতভাবে মোকাবিলা করতে পারবো। খাদ্যের কোনও সংকট নেই। প্রয়োজনে ত্রাণ বিতরণ করতে হবে। কিন্তু সংক্রমণ কমাতে কঠোরভাবে বিধিনিষেধ বাস্তবায়নের বিকল্প নেই। ’
আরও পড়ুন: প্রবল বর্ষণে ঝিনাইদহে জলাবদ্ধতা, তলিয়ে গেছে ২০ চাতাল
তিনি সকল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের পাড়া, গ্রাম, ওয়ার্ড, ইউনিয়ন ভিত্তিক জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, শিক্ষক, ইমাম, যুবক সমাজকে নিয়ে করোনা প্রতিরোধ কমিটি গঠনের নির্দেশ দেন।
এছাড়া মসজিদের মাইকে প্রতিবার আজানের পর করোনা সচেতনতা মূলক বক্তব্য প্রচারের ব্যবস্থা করতে চেয়ারম্যান-মেম্বারদের নির্দেশ দেন। গ্রামের দোকান খুলে যাতে জনসমাগম না ঘটাতে পারে সেই তথ্য দিয়ে জেলা প্রশাসনকে কাজ করতে বলেন।
মুজিববর্ষ উপলক্ষে খুলনায় ২য় দফায় ১৩৫১ ভূমিহীন ঘর পাচ্ছেন
মুজিববর্ষ উপলক্ষে দ্বিতীয় দফায় খুলনার ৯ উপজেলার ১ হাজার ৩৫১ পরিবার ঘর পাচ্ছে। এবারে ঘরের সাথে সাথে দলিলও পাচ্ছে ভূমিহীনরা।
রবিবার সকাল সাড়ে ১০ টায় ১ টি উপজেলায় উপস্থিত থেকে ঘর হস্তান্তর প্রক্রিয়ায় অংশ নেবেন বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসক।
উদ্বোধন উপলক্ষে ৯ উপজেলার বিভিন্ন মৌজায় সাজসজ্জা করা হচ্ছে। প্রথম দফায় জেলার ৯২২ গৃহহীন ঘর পায়।
আরও পড়ুন: মুজিববর্ষে প্রধানমন্ত্রীর উপহার গৃহহীনদের জন্য ঘর
জেলা প্রশাসনের সূত্র জানায়, দ্বিতীয় দফায় ফুলতলা উপজেলার ৬ পরিবার, কয়রা, বটিয়াঘাটা ও দিঘলীয়া উপজেলার ৩০ পরিবার করে, তেরখাদা উপজেলায় ৪০ পরিবার, দাকোপ উপজেলায় ২০০ পরিবার, রূপসা উপজেলায় ২১৫ পরিবার, পাইকগাছা উপজেলায় ৩০০ পরিবার এবং ডুমুরিয়া উপজেলায় ৫০০ পরিবার ঘর পাচ্ছে।
আরও পড়ুন: মুজিববর্ষে খুলনায় ঘর পাচ্ছেন আরও ১৩৫১ গৃহহীন
প্রথম দফায় প্রতিটি ঘরের জন্য ১ লাখ ৭১ হাজার টাকা, দ্বিতীয় দফায় প্রতিটি ঘরের জন্য ১ লাখ ৯০ হাজার টাকা ব্যয় হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে নির্দেশনামূলক ফোল্ডার পাঠানো হয়েছে। প্রতিটি পরিবার ২ শতক করে জমি পাবেন।
ডুমুরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জানান, উপজেলার বাহাদুরপুর, বরাতিয়া, মালতিয়া, থুকড়া, সাজিয়াড়া, বাদুরগাছা ও ভান্ডারপাড়ায় গৃহহীনদের জন্য ঘর নির্মাণ করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট রেজিস্ট্রি অফিসে দলিল রেজিস্ট্রেশনের কাজ চলছে।
আরও পড়ুন: গৃহহীনদের সহায়তায় প্রধানমন্ত্রীর বিরল দৃষ্টান্ত
রূপসা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জানান, টিএস বাহিরদিয়া, নৈহাটি, ঘাটভোগ, শ্রীফলতলা ও আইচগাতী ইউনিয়নের ১০ টি মৌজায় ২১৫ টি ঘর স্থাপন করা হয়েছে। ইতোমধ্যেই তালিকা অনুযায়ী গৃহহীনদের ঘর বরাদ্ধ দেয়া হয়েছে। প্রথম দফায় দেয়া গৃহহীনদের আশ্রয়স্থলে পানি ও বিদ্যুৎ সরবরাহের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, মুজিববর্ষ উপলক্ষে খুলনা জেলায় ৫ হাজার গৃহহীন পরিবারকে ঘর উপহার দেয়া হবে। প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে ঘর দেয়া হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট উপজেলা অফিসাররা এ ব্যাপারে তদারকি করছেন।
নাটোর ও সিংড়া পৌরসভায় ৭ দিনের লকডাউন শুরু
নাটোরের নাটোর ও সিংড়া পৌরসভায় ৭ দিনের লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে।
বুধবার সকাল থেকে ১৫ জুন পর্যন্ত ৭ দিনের জন্য ২ পৌরসভার সর্বাত্মক লকডাউনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
সোমবার মধ্যরাতে নাটোরের জেলা প্রশাসক মোহম্মদ শাহরিয়াজের সভাপতিত্বে জরুরী ভার্চুয়াল সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয় হয়।
আরও পড়ুন: চুয়াডাঙ্গার সীমান্তবর্তী ১০ গ্রামে লকডাউন শুরু
জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ জানায়, সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় নাটোর জেলায় সংক্রমনের হার ছিল ৬২ ভাগ। এর মধ্যে পৌর এলাকায় আক্রান্তের হার সর্বাধিক। সভায় সকলের মতামতের ভিত্তিতে নাটোর ও সিংড়া পৌরসভায় ১৫ জুন পর্যন্ত ৭ দিনের লকডাউনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
আরও পড়ুন: সাতক্ষীরায় ঢিলেঢালা লকডাউন, করোনায় আরও একজনের মৃত্যু
সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, এসময় ওষুধ সহ জরুরী সেবা ব্যাতিত সকল কিছু বন্ধ থাকবে। লকডাউন চলাকালীন সময়ে জরুরী প্রয়োজন ছাড়া কেউ ঘরের বাইরে বের হতে পারবেনা।
আরও পড়ুন: চাঁপাইনবাবগঞ্জে লকডাউনের ১২তম দিনে মৃত্যু ৯, শনাক্ত ১০৭
সভায় আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, ৩ জন সংসদ সদস্য, পুলিশ সুপার, সিভিল সার্জনসহ সংশ্লিষ্টরা অংশ নেন।
নদীর তীরে থাকা আছিয়ার পাশে চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক
মেঘনা নদীর পাড়ের বাসিন্দা অসহায় বৃদ্বা আছিয়া বেগমের পাশে দাঁড়িয়েছেন চাঁদপুরের জেলা প্রশাসন।
সোমবার বিকালে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে আছিয়া বেগমকে(৬০) ৬ হাজার টাকা নগদ অর্থ সহায়তা এবং একইসাথে তার ঘর মেরামতের জন্য ২ বান্ডেল টিন প্রদান করেন মানবিক জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ।
আরও পড়ুন: খুলনায় বন্ধ রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলের নারী শ্রমিকদের মানবেতর জীবন
চাঁদপুরের হাইমচর উপজেলার পূর্বচরকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা আছিয়া বেগম। স্বামী মারা গেছেন ১৫ বছর আগে। থাকা খাওয়ার কোন ব্যবস্থা নেই বললেই চলে। নদীর পাড়ে ছোট জরাজীর্ণ ঘরে খুব কষ্টে বাস করেন তিনি। একমাত্র নাতিনকে নিয়ে কোনমতে দিনযাপন করেন। তার দু:খ কষ্ট জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশের নজরে এলে তিনি এ সহায়তা প্রদান করেন।
আরও পড়ুন: কুড়িগ্রামে তৃতীয় লিঙ্গ সম্প্রদায়ের মাঝে খাদ্য সহায়তা প্রদান
অসহায় বৃদ্ধা আছিয়া বেগম বলেন, আল্লাহ ছাড়া সাহায্য করার কেউ ছিল না। অনেক কষ্টে দিন পার করছি।ডিসি আপা আমাকে যে সাহায্য করেছে, আমি অনেক খুশি হইছি।
আরও পড়ুন: শিক্ষকের মানবেতর জীবন: বিচারের জন্য নিরলস লড়াই
জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ ইউএনবি কে বলেন, ঘটনাটি জানতে পারার সাথে সাথে আছিয়া বেগমকে সহায়তা করেছি। আমরা চেষ্টা করছি, যাতে একটি মানুষও ভূমিহীন ও গৃহহীন না থাকে। আমাদের সরকারি নিয়মানুসারে আমরা কাজ করার চেষ্টা করছি। এটা মুজিব বর্ষের উপহার।
চাঁপাইনবাবগঞ্জে ১৬ জুন পর্যন্ত কঠোর বিধিনিষেধ, লকডাউন বাড়ছে না
চাঁপাইনবাবগঞ্জে করোনা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি, স্থানীয় আম ব্যবসায়ী ও উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের কথা বিবেচনা করে বিশেষ লকডাউন বাড়ছে না। তবে আগামী ১৬ জুন পর্যন্ত ১১ দফার কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে।
মঙ্গলবার সকাল থেকে ১১ দফা কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ শুরু হয়েছে।
আরও পড়ুন: চুয়াডাঙ্গার সীমান্তবর্তী ১০ গ্রামে লকডাউন শুরু
সোমবার সন্ধ্যায় জেলা প্রশাসক সম্মেলন কক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা ঘোষণা করেন জেলা প্রশাসক মঞ্জুরুল হাফিজ।
আরও পড়ুন: চাঁপাইনবাবগঞ্জে লকডাউনের ১২তম দিনে মৃত্যু ৯, শনাক্ত ১০৭
জেলা প্রশাসক মঞ্জুরুল হাফিজ ১১ দফা কঠোর বিধিনিধেষ আরোপ করে বলেন, মঙ্গলবার সকাল ৯ টা থেকে বিকাল ৫ টা পর্যন্ত বাধ্যতামূলক স্বাস্থ্যবিধি মেনে সব ধরণের দোকানপাট ও শপিংমল খোলা থাকবে। তবে হাট বন্ধ থাকবে। আম পরিবহন ব্যতীত সকল আন্তজেলা পরিবহন বন্ধ থাকবে। তবে জেলার মধ্যে গনপরিবহন গুলো আসন সংখ্যার অর্ধেক যাত্রী নিয়ে স্বাস্থবিধি মেনে চলাচল করতে পারবে। জনসমাবেশ, রাজনৈতিক ও ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান বন্ধ থাকবে। জুমার নামাজসহ প্রতি ওয়াক্তের নামাজে ২০ জন মুসল্লি নিয়ে স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করেন নামাজ আদায় করবেন।
আরও পড়ুন: সাতক্ষীরায় ঢিলেঢালা লকডাউন, করোনায় আরও একজনের মৃত্যু
এসময় সিভিল সার্জন ডা. জাহিদ নজরুল চৌধুরী, পুলিশ সুপার এএইচএম আবদুর রকিব, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) জাকিউল ইসলামসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
জেলায় করোনা সংক্রমণ উর্ধ্বগতি হওয়ায় গত ২৫ মে বিষেশ লকডাউন ঘোষণা করা হয় যা সোমবার রাত ১২ টা পর্যন্ত ছিলো।
অসুস্থ ইউএনবির সাংবাদিক বিষ্ণু প্রসাদের খোঁজ নিতে গেলেন বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক
বিভিন্ন উপসর্গ নিয়ে অসুস্থ ইউনাটেড নিউজ অব বাংলাদেশ (ইউএনবি) বাগেরহাটের প্রতিনিধি সাংবাদিক বিষ্ণু প্রসাদ চক্রবর্ত্তীকে দেখতে গেলেন নবাগত জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আজিজুর রহমান।
রবিবার দুপুরে তিনি বাগেরহাট শহরের শালতলার বাসায় যান এবং ফুল দিয়ে তাকে শুভেচ্ছা জানান। এসময় তিনি সাংবাদিক বিষ্ণু প্রসাদের চিকিৎসার সার্বিক খোঁজখর নেন।
জেলা প্রশাসক বিষ্ণু প্রসাদ চক্রবর্ত্তীকে দেখে উন্নত চিকিৎসার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দেন। এসময় বাগেরহাট এবং খুলনায় বিভিন্ন গণমাধ্যমে কর্মরত সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।
জানা গেছে, ঢাকায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যায় (বিএসএমএমইউ), খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং বাগেরহাট সদর হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা দীর্ঘদিন ধরে চিকিৎসা সেবা দিয়েও তাকে এখনও সুস্থ করতে পারেনি। ৪ মাস ধরে বিষ্ণু প্রসাদ চক্রবর্ত্তী অসুস্থ রয়েছেন।
আরও পড়ুন: ইউএনবি এবং ঢাকা কুরিয়ারে এডিটর এট লার্জ হিসেবে যোগ দিলেন আফসান চৌধুরী
চিকিৎসকদের পরামর্শে তিনি বর্তমানে বাগেরহাটে নিজ বাসায় থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন। তবে এখনও চিকিৎসকরা নিদির্ষ্টভাবে তার রোগ নির্ণয় করতে পারেনি। পুনরায় চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকায় বিএসএমএমইউতে ভর্তি হতে হবে।
সাংবাদিক বিষ্ণু প্রসাদ চক্রবর্ত্তী গত ৭ ফেব্রুয়ারি বাগেরহাট সদর হাসপাতালে করোনাভাইরাসের প্রথম ডোজ ভ্যাকসিন গ্রহণ করেন। এরপর থেকে তার জ্বর, শ্বাসকষ্ট, মাথা ও বুকে ব্যাথাসহ একের পর এক উপসর্গ দেখা দেয়। এ অবস্থায় প্রথমে তাকে বাগেরহাট সদর হাসপাতালে মেডিকেল বোর্ড বসিয়ে চিকিৎসা দেয়া হয়। অবস্থার অবনতি হলে প্রথম দফায় ১৬ ফেব্রুয়ারি তাকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বিষ্ণু প্রসাদ চক্রবর্ত্তী সেখানে দুই দফায় সিসিইউতে ভর্তি ছিলেন। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা মেডিকেল বোর্ড গঠন করে চিকিৎসা দেন তাকে। তবে চিকিৎসকরা তাকে সুস্থ করতে পারেনি।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে দুই নারীসহ ৪ ভুয়া সাংবাদিক আটক
অবস্থার আরও অবনতি হলে ১৬ মার্চ উন্নত চিকিৎসার জন্য বিষ্ণু প্রসাদকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স যোগে বিএসএমএমইউতে নিয়ে ভর্তি করা হয়। সেখানে দুই দফায় বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়। একের পর এক বিভিন্ন টেস্ট করানো হয়। সিটিস্ক্যান, এমআরই, আলট্রসোনোগ্রাফি, বোনমেরু, বোনমেরু স্ক্যান, মেরুদন্ডের লালা,ইসিসি,এক্সেরে, ইউরিনকালচার এবং ইকোস ব্লাডের বিভিন্ন রকম পরীক্ষা-নিরীক্ষা করানো হয়। এখন পর্যন্ত সেখানকার বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা তার রোগ নির্ণয় করতে পারেনি।
বিএসএমএমইউর মেডিসিন বিভাগের চেয়ারম্যান প্রফেসর ডা. সোহেল মাহমুদ আরাফাতের অধীনে তিনি চিকিৎসাধীন। আবারও ভর্তি হতে হবে এই শর্তে গত ৫ এপ্রিল তিনি ছুটে নিয়ে বাসায় আসেন। চিকিৎসকরা আবারও তাকে বিএসএমএমইউতে ভর্তি হতে বলেছেন। বর্তমানে তিনি বাসায় থেকে চিকিৎসা সেবা নিচ্ছেন।
বাগেরহাটের সিভিল সার্জন ডা. কেএম হুমায়ুন কবির জানান, বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা যথেষ্ট গুরুত্বের সাথে সাংবাদিক বিষ্ণু প্রসাদ চক্রবর্ত্তীর চিকিৎসা দিচ্ছে। বিএসএমএমইউতে এখনও তার চিকিৎসা শেষ হয়নি। এখনও সঠিকভাবে তার রোগ নির্ণয় করা সম্ভব হয়নি। সেখানের চিকিৎসকদের নির্দেশনা মোতাবেক আবারও তাকে বিএসএমএমইউতে ভর্তি হতে হবে। সেখানের চিকিৎসকরা বিষ্ণু প্রসাদ চক্রবর্ত্তীর চিকিৎসার বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেবেন। স্বাস্থ্য বিভাগ সার্বক্ষণিক তার চিকিৎসার খোঁজখবর নিচ্ছেন।
এদিকে বাগেরহাট প্রেসক্লাব নির্বাহী কমিটির সভা করে সিদ্ধান্ত নিয়ে বিষ্ণু প্রসাদ চক্রবর্ত্তীর উন্নত চিকিৎসার জন্য জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর কাছে স্বারকলিপি দিয়েছেন। তবে ওই স্বারকলিপির বিষয়ে কোন সাড়া এখনো পাওয়া যায়নি বলে সাংবাদিকরা জানান।