বাণিজ্য
দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্প্রসারণ এবং অবকাঠামোতে বিনিয়োগের সম্ভাবনা অন্বেষণে আগ্রহ পুনর্ব্যক্ত বাংলাদেশ-ফ্রান্সের
বাংলাদেশ ও ফ্রান্স দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্প্রসারণ এবং রেলওয়ে সেক্টরসহ বাংলাদেশে মানসম্মত ও স্থিতিস্থাপক অবকাঠামো উন্নয়নে বিনিয়োগের সম্ভাবনা অন্বেষণে আগ্রহের কথা পুনর্ব্যক্ত করেছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ আশা প্রকাশ করেছেন, প্যারিস ও টুলুসে আগামী ২৩ ও ২৫ অক্টোবর অনুষ্ঠিতব্য বাংলাদেশ-ফ্রান্স বিনিয়োগ শীর্ষ সম্মেলন দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্পর্কের ক্ষেত্রে নতুন গতি আনবে।
প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁ বলেছেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং বাংলাদেশের জনগণকে এমন উষ্ণ অভ্যর্থনার জন্য ধন্যবাদ। আমাদের বন্ধুত্ব দীর্ঘস্থায়ী ও অটুট।’
যৌথ প্রবৃদ্ধি ও অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নের জন্য বাংলাদেশের দেওয়া অর্থনৈতিক সম্ভাবনার প্রতি ফ্রান্স আস্থা প্রকাশ করেছে।
সোমবার (১১ সেপ্টেম্বর) জারি করা একটি যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, উভয় পক্ষই শিল্প থেকে পরিষেবা পর্যন্ত প্রতিটি সেক্টরে বিস্তৃত তাদের অর্থনৈতিক অংশীদারিত্বের গভীরতার কথা স্মরণ করেছে এবং ব্যবসা-থেকে-ব্যবসায় সহযোগিতার মাধ্যমে এটিকে আরও গভীর ও প্রসারিত করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছে।
আরও পড়ুন: এয়ারবাসের কাছ থেকে ১০টি এ৩৫০ কেনার বাংলাদেশের প্রতিশ্রুতিতে খুশি ফ্রান্স
ফ্রান্স বাংলাদেশের শ্রম খাতে (২০২১-২০২৬) জাতীয় কর্মপরিকল্পনা গ্রহণের প্রশংসা করেছে এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের জেনারেলাইজড স্কিম অব প্রেফারেন্সের (জিএসপি) অধীনে একটি মসৃণ ও টেকসই পরিবর্তনের সুবিধার্থে এর বাস্তবায়ন এবং বাংলাদেশের অর্থনীতির বহুমুখীকরণের গুরুত্বের উপর জোর দিয়েছে।
২০২১ সালের নভেম্বরে তার আমন্ত্রণে ফ্রান্স সফর করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেসময়ে প্রধানমন্ত্রী ফরাসি প্রেসিডেন্টকে বাংলাদেশে আসার নিমন্ত্রণ করেন। অবশেষে, চলতি মাসের ১০-১১ সেপ্টেম্বর প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ বাংলাদেশে সফর করেন।
ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এবং বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী সোমবার ঢাকায় দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে শক্তিশালী করার জন্য সাক্ষাত করেছেন এবং বিশ্ব শান্তি, নিরাপত্তা, স্থিতিস্থাপকতা, সমৃদ্ধি এবং মানুষ-কেন্দ্রিক সংযোগের সমর্থনে কৌশলগত স্বায়ত্তশাসনের জন্য একটি বিশ্বস্ত ও অর্থপূর্ণ অংশীদারিত্ব গড়ে তোলার জন্য তাদের অভিন্ন প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন।
বাংলাদেশ ও ফ্রান্স তাদের অংশীদারিত্বের কৌশলগত মাত্রাকে আরও গভীর করতে নিয়মিত উচ্চ পর্যায়ের সংলাপ শুরু করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
আরও পড়ুন: প্রতিরক্ষা সহযোগিতা বাড়াতে সম্পর্ককে 'কৌশলগত' পর্যায়ে নিতে চায় ঢাকা-প্যারিস
নগর পরিচালনা ও অবকাঠামো উন্নয়নে বাংলাদেশ ও ফ্রান্সের মধ্যে ১৮৪ ইউরোর ঋণ সহায়তা চুক্তি সই
ঢাকা-মস্কো দ্বিপক্ষীয় যোগাযোগ, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্পর্ক জোরদার করতে আগ্রহী
রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ বৃহস্পতিবার (৭ সেপ্টেম্বর) রাতে বলেছেন, তারা বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্পর্ক জোরদার করতে একমত হয়েছেন।
বাংলাদেশকে দক্ষিণ এশিয়ায় একটি ভালো ও দীর্ঘস্থায়ী অংশীদার উল্লেখ করে তিনি বলেন, তারা বাংলাদেশের সঙ্গে তাদের দ্বিপক্ষীয় যোগাযোগ জোরদার করছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের পর এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে ল্যাভরভ বলেন, তারা রোহিঙ্গা সংকট নিয়েও আলোচনা করেছেন।
তিনি বলেন, তারা সমাধানের জন্য বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে অব্যাহত আলোচনাকে সমর্থন করে।
রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফ্ল্যাগশিপ প্রকল্প- রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের বিষয়েও কথা বলেন এবং এর ধারাবাহিকভাবে বাস্তবায়নের ওপর জোর দেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন বলেন, রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ সফরে আসায় আমরা খুবই আনন্দিত। রাশিয়ার সঙ্গে আমাদের গভীর সম্পর্ক রয়েছে।
তিনি বলেন, তারা রোহিঙ্গা ইস্যু, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ এবং রাশিয়ায় বৃহত্তর বাজারে প্রবেশাধিকার নিয়ে আলোচনা করেছেন।
মোমেন বলেন, ‘আমরা যুদ্ধ চাই না। আমরা চাই আলোচনা হোক এবং আলোচনার মাধ্যমে সব সমস্যার সমাধান হোক।’
আরও পড়ুন: রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ল্যাভরভ ঢাকায়, আজই বৈঠকে বসবেন মোমেনের সঙ্গে
রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী দুদিনের সফরে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ঢাকায় এসেছেন। যা পরিবর্তিত বৈশ্বিক পরিস্থিতির মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
সন্ধ্যা ৬টা ১৭ মিনিটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন তার রুশ প্রতিপক্ষকে স্বাগত জানান।
স্বাধীনতার পর রাশিয়ার কোনো পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এটাই প্রথম বাংলাদেশ সফর।
শুক্রবার সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
শুক্রবার যাত্রার আগে তিনি ধানমন্ডির বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর পরিদর্শন করবেন।
ঢাকায় রাশিয়ার দূতাবাস জানিয়েছে, দুই দেশ দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের উন্নয়নের সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করবে এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক ইস্যুতে মতামত বিনিময় করবে।
রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলাদেশ সফর শেষ করে ৯-১০ সেপ্টেম্বর নয়াদিল্লিতে জি-২০ সম্মেলনে যোগ দেবেন।
গত বছরের ২৪ নভেম্বর ঢাকায় অনুষ্ঠিত ২২তম আইওআরএ মন্ত্রী পরিষদের বৈঠকে যোগদানের জন্য ২৩ নভেম্বর ল্যাভরভের বাংলাদেশ সফরের কথা ছিল।কিন্তু শেষ মুহূর্তে এই সফর বাতিল করা হয়।
পরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন ও তার রুশ সমকক্ষ সের্গেই ল্যাভরভ টেলিফোনে আলাপ করেন এবং বাংলাদেশ ও রাশিয়ার দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ওপর আলোকপাত করেন এবং এ সম্পর্ককে আরও উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেন।
টেলিফোনে আলাপকালে রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী শিডিউল জটিলতার কারণে ঢাকায় আসতে না পারায় দুঃখ প্রকাশ করেন এবং শিগগিরই সফরের ইচ্ছা প্রকাশ করেন।
মোমেন রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে বাংলাদেশের সঙ্গে সহযোগিতার জন্য রাশিয়াকে ধন্যবাদ জানান এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিনকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান বলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে।
আরও পড়ুন: খাদ্য, জ্বালানি ও রোহিঙ্গা ইস্যুর মতো বিষয়ে রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ল্যাভরভের সঙ্গে আলোচনা করবে ঢাকা
রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ল্যাভরভের সঙ্গে মোমেনের বৈঠক ৭ সেপ্টেম্বর
বাংলাদেশ-ইরাক বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্প্রসারণে আশাবাদী বিজিএমইএ সভাপতি
বাংলাদেশ গার্মেন্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিজিএমইএ) সভাপতি ফারুক হাসানের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল গত ২১ আগস্ট ইরাক সরকারের বাণিজ্যমন্ত্রী আথির দাউদ সালমান আল-গারিরির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।
বৈঠকে ইরাকে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ফজলুল বারীও উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকে তারা বাংলাদেশ ও ইরাকের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাড়ানোর সম্ভাব্য উপায় নিয়ে আলোচনা করেন।
উভয় দেশের ব্যবসায়ী ও বিনিয়োগকারীদের সম্ভাব্য খাত চিহ্নিত করতে এবং পারস্পরিক সুবিধার জন্য বিনিয়োগ করতে সক্ষম করার জন্য কীভাবে ব্যবসায়িক মিথস্ক্রিয়া বাড়ানো যায় তাও তারা আলোচনা করেছেন।
বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান বাণিজ্যমন্ত্রীকে অবকাঠামোগত উন্নয়নে, বিশেষ করে সড়ক ও রেল যোগাযোগ উন্নত করার জন্য বিমানবন্দরের সক্ষমতা বৃদ্ধির পাশাপাশি বাণিজ্য ও শিল্প খাতের ক্রমবর্ধমান চাহিদা মেটাতে মেগা প্রকল্প সম্পর্কে অবহিত করেন।
তিনি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল, বিনিয়োগবান্ধব নীতি, ব্যবসায়িক পরিবেশ উন্নত করার মতো বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণে বাংলাদেশের পদক্ষেপের কথাও তুলে ধরেন।
বিজিএমইএ সভাপতি ইরাকি ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আমন্ত্রণ জানান।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ জুলাইয়ে আরএমজি রপ্তানি করে ৩.৯৫ বিলিয়ন ডলার আয় করেছে: বিজিএমইএ
তিনি বাংলাদেশ থেকে ইরাকে সরাসরি চালানের সম্ভাবনার বিষয়ে ইঙ্গিত করে বলেন, এটি দুই দেশের মধ্যে রপ্তানি-আমদানি কার্গো পরিবহনে সময় এবং মালবাহী খরচ কমাবে।
তিনি বাণিজ্যের সুবিধার্থে ঢাকা-বাগদাদ সরাসরি ফ্লাইট চালু করার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন এবং ইরাকের বাণিজ্যমন্ত্রীকে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান।
তিনি আরও সহযোগিতার প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দিয়ে উভয় দেশের দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধির সম্ভাবনার কথা বলেছেন।
ফারুক হাসান ইরাককে সেই দেশগুলোর মধ্যে একটি হওয়ার জন্য ধন্যবাদ জানান, যারা স্বাধীনতার পর থেকেই বাংলাদেশকে একটি সার্বভৌম ও স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে।
ইরাকের বাণিজ্যমন্ত্রী বিজিএমইএ প্রতিনিধিদলকে ইরাকে ব্যবসা করতে ইচ্ছুক বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের সরকারি সহযোগিতার আশ্বাস দেন।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে বিনিয়োগ বাড়াতে অস্ট্রেলিয়ান ব্যবসায়ীদের প্রতি আহ্বান বিজিএমইএ সভাপতির
আরএমজি শিল্পের উচ্চ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সরকারের নীতিগত সহায়তা চান বিজিএমইএ সভাপতি
বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাড়াতে আগ্রহী যুক্তরাজ্য: প্রধানমন্ত্রীকে সারাহ কুক
নবনিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুক বলেছেন, তার দেশ বাংলাদেশের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্পর্ক বাড়াতে আগ্রহী।
সোমবার (১৪ আগস্ট) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে যুক্তরাজ্যের হাইকমিশনার এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের বলেন, বৈঠকে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক, নিরাপত্তা, জলবায়ু পরিবর্তন, রোহিঙ্গা ও আঞ্চলিক ইস্যু নিয়ে আলোচনা হয়।
ইহসানুল বলেন, তারা উভয়েই চলমান দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক ও সহযোগিতার বিষয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।
সারাহ কুক বলেন, যুক্তরাজ্য বাংলাদেশের উন্নয়ন প্রচেষ্টায় সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে।
রাষ্ট্রদূত প্রধানমন্ত্রীকে বলেছেন, ব্রিটেন বিশেষ করে বাংলাদেশের নারীদের শিক্ষায় সহায়তা অব্যাহত রাখবে।
নতুন হাইকমিশনার বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ দেওয়ার ওপরও গুরুত্বারোপ করেন। যাতে প্রত্যাবাসনের পর তাদের কাজে লাগানো যায়।
কুক বলেন, তারা চান বাংলাদেশে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হোক। আগামী বছরের জানুয়ারিতে বাংলাদেশের পরবর্তী সাধারণ নির্বাচন হওয়ার কথা রয়েছে।
এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য তাদের দীর্ঘ ২১ বছর (১৯৭৫ থেকে ১৯৯৬) সংগ্রাম করতে হয়েছে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের আসন্ন নির্বাচনে বিদেশি পর্যবেক্ষকদের স্বাগত: সুইস রাষ্ট্রদূতকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ২০০১ সালের সাধারণ নির্বাচনে বিএনপি-জামায়াত জোটের বিজয়ের পর, তারা সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে বিজয় উদযাপন করেছে, শত শত মানুষকে হত্যা করেছে, নারীদের ধর্ষণ করেছে এবং সারা দেশের বিভিন্ন গ্রাম লুট করেছে।
তাকে উদ্ধৃত করে বলা হয়েছে, ‘আমরাই বাকস্বাধীনতা প্রতিষ্ঠা করেছি এবং গণমাধ্যমকে বেসরকারি খাতের জন্য উন্মুক্ত করেছি।’
তিনি বলেন, এক সময় একটি মাত্র রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন চ্যানেল ছিল, কিন্তু এখন দেশে ৪০টির বেশি বেসরকারি চ্যানেল চলছে।
মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া ১০ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা শরণার্থীর কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গা ইস্যু আন্তর্জাতিক স্পটলাইটে থাকলে তাদের প্রত্যাবাসন ত্বরান্বিত হবে।
রোহিঙ্গাদের দীর্ঘস্থায়ী অবস্থানের ক্ষেত্রে কক্সবাজার অঞ্চলে সামাজিক সমস্যা আরও বাড়বে বলে হুঁশিয়ারি দেন প্রধানমন্ত্রী।
জলবায়ু ইস্যুতে বাংলাদেশ-যুক্তরাজ্য সম্পর্কে সন্তোষ প্রকাশ করে তিনি বলেন, দ্বিপক্ষীয় ও বহুপক্ষীয়ভাবে জলবায়ু সংক্রান্ত কর্মকাণ্ডকে আরও এগিয়ে নিতে দুই দেশ চলতি বছরের মার্চ মাসে একটি জলবায়ু চুক্তি সই করেছে।
এ সময় প্রধানমন্ত্রীর অ্যাম্বাসেডর অ্যাট-লার্জ মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন এবং প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব মো. তোফাজ্জেল হোসেন মিয়া উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে ভয়াবহ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে রয়েছে যুক্তরাজ্য: সারাহ কুক
রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠানোর চেষ্টা করতে ওআইসির প্রতি আহ্বান বাংলাদেশের
দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য বাড়াতে সম্মত বাংলাদেশ-ব্রিটেন
দুই দেশের পারস্পরিক সুবিধার জন্য দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য, ব্যবসা ও বিনিয়োগ বাড়াতে সম্মত হয়েছে বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্য।
বুধবার বিকালে বাংলাদেশে নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুক এবং প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব এম তোফাজ্জেল হোসেন মিয়ার মধ্যে নগরীর কার্যালয়ে এক ঘণ্টাব্যাপী বৈঠকে এ চুক্তি সই হয়।
ফরেন-কমনওয়েলথ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অফিসের (এফসিডিও) প্রধান অর্থনীতিবিদ এ বিষয়ে আগামী মাসে বাংলাদেশ সফর করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
বৈঠকে রোহিঙ্গা, অবৈধ অভিবাসন, জলবায়ু পরিবর্তন এবং জ্বালানিসহ অন্যান্য বিষয়ও আলোচনায় আসে বলে জানান প্রধানমন্ত্রীর সহকারী প্রেস সচিব এম এম এমরুল কায়েস।
হাইকমিশনার উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে চূড়ান্তভাবে উন্নীত হওয়ার পর যুক্তরাজ্যের বাজারে বাংলাদেশি পণ্যের কোটামুক্ত প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করতে ঢাকাকে সহযোগিতার আশ্বাস দেন।
আরও পড়ুন: দুর্নীতি রোধের পদক্ষেপ হতে পারে নিষেধাজ্ঞা-সম্পদ জব্দ করা : মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্ট
বৈঠকে, উভয় পক্ষ পারস্পরিক সুবিধার জন্য দুই দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব বাড়ানোর জন্য নতুন দিগন্ত উন্মোচনে সম্মত হয়েছে।
রোহিঙ্গা ইস্যু সম্পর্কে কুক বলেন, এর সমাধান হচ্ছে তাদের মাতৃভূমি মিয়ানমারে প্রত্যাবাসন।
তিনি রোহিঙ্গা শরণার্থীদের নিরাপদ, টেকসই এবং মর্যাদাপূর্ণ উপায়ে তাদের মাতৃভূমিতে প্রত্যাবাসনে বাংলাদেশ সরকারের সক্রিয় ভূমিকা এবং অব্যাহত প্রচেষ্টার ভূয়সী প্রশংসা করেন।
তোফাজ্জেল বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শাসনামলে বাংলাদেশ-ব্রিটেন সম্পর্কের ভিত্তি রচিত হয়েছিল।
তিনি বলেন, ‘সম্পর্কটি এখন একটি কৌশলগত অংশীদারিত্বে উন্নীত হয়েছে এবং আগামী দিনে আরও জোরদার করা হবে।’
এছাড়াও, তারা অভিবাসীদের দ্বারা সংঘটিত অপরাধ নিয়ে আলোচনা করেন এবং তারা উভয়েই অবৈধ অভিবাসন রোধে একে অপরকে সহায়তার আশ্বাস দেন।
আরও পড়ুন: এসডিজি অর্জনে বেসরকারি খাতের আর্থিক সহায়তা অপরিহার্য: জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী
রুপিতে বাণিজ্য: প্রথম দিনে ৩০টি পিকআপ ভ্যান আমদানি
ভারত থেকে রুপিতে কেনা ৩০টি পিকআপ ভ্যান মঙ্গলবার (২৫ জুলাই) বেনাপোল বন্দর দিয়ে দেশে প্রবেশ করেছে।
বেনাপোল বন্দরের পরিচালক আ. জলিল এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
আরও পড়ুন: মালয়েশিয়া থেকে এলএনজি আমদানি করবে বাংলাদেশ
তিনি জানান, বাংলাদেশের আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান ঢাকার নিতা কোম্পানি ভারতীয় প্রতিষ্ঠান টাটা মোটরসের কাছ থেকে ১ কোটি ২৪ লাখ রুপিতে এ পিকআপ ভ্যানগুলো কিনেছে।
তিনি বলেন, ভারতীয় রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান টাটা মোটরস লি. পিকআপ ভ্যানগুলো রপ্তানি করেন।
তিনি আরও বলেন, আমদানির পর পিকআপ ভ্যানগুলো বেনাপোল বন্দরের ট্রান্সশিপমেন্ট ইয়ার্ডে রাখা হয়েছে।
এর আগে গত ১১ জুলাই ঢাকায় এক অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ব্যাংক ও ভারতীয় হাইকমিশন ২ দেশের বাণিজ্যে রুপি ব্যবহারের ঘোষণা দেয়।
গত ১১ জুলাই মঙ্গলবার ঢাকার লা মেরিডিয়ান হোটেলে এক অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ব্যাংক ও ভারতীয় হাইকমিশন ২ দেশের বাণিজ্যে রুপি ব্যবহারের ঘোষণা দেয়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আবদুর রউফ তালুকদার, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব তপন কান্তি ঘোষ, ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় কুমার ভার্মা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ব্যাংকের গর্ভনর আবদুর রউফ তালুকদার ভারতে বাংলাদেশ ভ্রমণকারীদের সুবিধার্থে আগামী সেপ্টেম্বরে 'টাকা-রুপি কার্ড' চালুর সম্ভাবনার কথা জানান।
এই কার্ড দিয়ে দেশে ও প্রতিবেশি ভারতে বিল পরিশোধ করা যাবে।
দেশের আমদানিকারকদের কিছুটা স্বস্তি দেবে। তারা প্রতিবেশি দেশ থেকে পণ্য কিনতে রুপিতে এলসি খুলতে শুরু করেছেন। ফলে ডলারের ব্যবহার কিছুটা কমবে।
ডলারের ঘাটতির কারণে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ আরও কমে যাওয়া রোধ করতে সরকার আমদানিবিধি কঠোর করেছে। এক বছর আগের তুলনায় রিজার্ভ কমেছে প্রায় ২৩ শতাংশ।
২ দেশের মধ্যে প্রায় ১৬ বিলিয়ন ডলারের দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের একটি অংশের মূল্য পরিশোধের সুবিধার্থে ভারতের কেন্দ্রীয় ব্যাংক রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়া বাংলাদেশের ব্যাংকগুলোকে ভারতে অ্যাকাউন্ট খোলার অনুমতি দিয়েছে।
রপ্তানি ও রেমিট্যান্স থেকে আসা অর্থের তুলনায় আমদানি মূল্যের পরিমাণ বেশি হওয়ায় দেশের রিজার্ভ কমে যাচ্ছে।
বেনাপোল কাস্টমস হাউসের ডেপুটি কমিশনার তানভীর আহমেদ বলেন, মঙ্গলবার রুপির মাধ্যমে ভারত থেকে প্রথম চালান আমদানি হয়েছে বেনাপোল বন্দর দিয়ে।
তিনি আরও বলেন, রুপিতে পণ্য আমদানি হলে ডলারের ওপর চাপ কমে যাবে।
আরও পড়ুন: সিঙ্গেল পয়েন্ট মুরিংয়ের মাধ্যমে তেল আমদানির নতুন যুগে প্রবেশ করবে দেশ
ভারত থেকে ডেঙ্গু, ম্যালেরিয়া ও এইচআইভি টেস্টের কিট আমদানি
বাণিজ্য সম্পর্কিত গবেষণা ও প্রযুক্তিগত সহযোগিতার আহ্বান বাণিজ্যমন্ত্রীর
দেশীয় পণ্যের বৈচিত্র্যকরণে প্রযুক্তিগত সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং বাণিজ্য সম্পর্কিত গবেষণায় সহযোগিতার জন্য যুক্তরাজ্যের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বাণিজ্য মন্ত্রী টিপু মুনশি।
বুধবার রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে বাংলাদেশে সফররত যুক্তরাজ্যের বিজনেস এন্ড ট্রেড স্টেট মিনিস্টার নাইজেল হাডলস্টোনের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠকে তিনি আহ্বান জানান।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ দ্বিতীয় বৃহত্তম আরএমজি রপ্তানিকারক, তৃতীয় বৃহত্তম সবজি উৎপাদনকারী, বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম ধান উৎপাদক এবং অভ্যন্তরীণ স্বাদু পানির মৎস্য উৎপাদনে পঞ্চম বৃহত্তম দেশ। এছাড়া উচ্চ মানের ওষুধ, জেনেরিক ওষুধ, অনন্য পাটজাত পণ্য, চামড়াজাত পণ্য, হোম টেক্সটাইল, হিমায়িত খাদ্য, সিরামিক, আসবাবপত্র, খেলনা এবং ইলেকট্রনিক পণ্যসহ অনেক বৈচিত্র্যময় পণ্য উৎপাদন হচ্ছে দেশে। এসব পণ্য আমদানির জন্য অনুরোধ জানান তিনি।
আরও পড়ুন: নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য নিয়ে সংসদে সমালোচনার মুখে বাণিজ্যমন্ত্রী
যুক্তরাজ্য বর্তমানে বাংলাদেশের তৃতীয় বৃহত্তম রপ্তানি গন্তব্য উল্লেখ করে টিপু মুনশি জানান ২০২২-২০২৩ অর্থবছরে বাংলাদেশ ৫ দশমিক ৩১ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে পণ্য রপ্তানি করেছে এবং যুক্তরাজ্য থেকে ৪৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের পণ্য আমদানি করেছে।
তিনি বলেন, উভয় দেশের বাণিজ্য, বিনিয়োগ এবং অর্থনৈতিক সম্পর্ক উন্নত করার বিশাল সুযোগ রয়েছে। দুই দেশের পারস্পরিক স্বার্থ অক্ষুণ্ন রেখে অর্থ ও বাণিজ্য সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় উন্নীত করতে একযোগে কাজ করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
বাংলাদেশ বর্তমানে বিনিয়োগের উত্তম জায়গা জানিয়ে টিপু মুনশি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে পদ্মা সেতু নির্মাণ, ঢাকা মেট্রোরেলের উদ্বোধন, ঢাকা বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল, কক্সবাজারে নতুন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এবং ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতি অঞ্চল নতুন মাত্রা যোগ করেছে। বিদেশি বিনিয়োগ বাড়াতে দেশভিত্তিক আলাদা অর্থনৈতিক জোন বরাদ্দ দেয়া হচ্ছে। এসব অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিনিয়োগের জন্য যুক্তরাজ্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান মন্ত্রী।
বাণিজ্যমন্ত্রী দুই দেশের অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক সম্প্রসারণে জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপ ইতোমধ্যে দুই দফা বৈঠক করেছে এবং খুব শিগগিরই তৃতীয় বৈঠকে বসবে। ঢাকায় প্রথম ও দ্বিতীয় বাংলাদেশ-ইউনাইটেড কিংডম ট্রেড অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট ডায়ালগের অনুষ্ঠিত হবে। এই নিয়মিত সংলাপ আমাদের যৌথ মূল্যবোধ এবং মানদণ্ডের ভিত্তিতে বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য, অর্থনৈতিক ও বিনিয়োগকে আরও শক্তিশালী করতে অবদান রাখবে।
তিনি বলেন, ডেভেলপিং কান্ট্রি ট্রেডিং স্কিম-ডিসিটিএস এর অধীনে ২০২৯ সাল পর্যন্ত ডিউটি ফ্রি-কোটা ফ্রি সুবিধা অব্যাহত রাখার জন্য আমরা যুক্তরাজ্যকে ধন্যবাদ জানিয়ে আমরা দীর্ঘতম সম্ভাব্য সময় পর্যন্ত আমাদের ডিউটি ফ্রি-কোটা ফ্রি সুবিধার স্থিতি অব্যাহত রাখতে চাই। ২০২৬ সালে এলডিসি থেকে বাংলাদেশ উত্তরণের পর পরবর্তী আরও ছয় বছর শুল্কমুক্ত কোটামুক্ত সুবিধা অব্যাহত রাখতে পাশে থাকারও আহ্বান জানান।
এসময় সফররত যুক্তরাজ্যের বিজনেস এন্ড ট্রেড স্টেট মিনিস্টার নাইজেল হাডলস্টোন তার দেশ বাংলাদেশে ব্যবসা-বাণিজ্যের পাশিাপশি এভিয়েশন, শিক্ষা এবং প্রতিরক্ষার বিষয়ে সহযোগিতার আগ্রহ প্রকাশ করেন।
বাংলাদেশ-যুক্তরাজ্যের মধ্যকার চমৎকার বন্ধত্বপূর্ণ সম্পর্কের কথা উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, দুই দেশের বাণিজ্য সম্পর্ক ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। যুক্তরাজ্যে রেডিমেড গার্মেন্টস ছাড়াও বাংলাদেশী পণ্যের বিশাল বাজার রয়েছে। ভবিষ্যতে এ বাজার বহুগুণ বৃদ্ধি পাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
এসময় তিনি বাংলাদেশে তার দেশের ব্যবসায়ীরা নানা ধরণের সমস্যা ও চ্যালেঞ্জে মোকাবেলা করছেন বলে বাণিজ্যমন্ত্রীকে অবহিত করেন এবং সেগুলো সমাধানের জন্য অনুরোধ জানান। নির্দিষ্ট করে সমস্যার কথা জানালে সেগুলো দ্রুত সমাধানের উদ্যোগ নেয়া হবে বলে আশ্বস্ত করেন বাণিজ্যমন্ত্রী।
বৈঠককালে বাংলাদেশে নিযুক্ত যুক্তরাজ্যের হাইকমিশনার সারাহ ক্যাথেরিন কুক এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. আব্দুর রহিম খানসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্যবৃদ্ধির পেছনে সিন্ডিকেট ভাঙার চেষ্টা চলছে: বাণিজ্যমন্ত্রী
অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য ও ট্রানজিট চুক্তির সুবিধা কাজে লাগাতে হবে: বাণিজ্যমন্ত্রী
অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য ও ট্রানজিট চুক্তির সুবিধা কাজে লাগাতে হবে: বাণিজ্যমন্ত্রী
বাংলাদেশ এবং ভুটানের মধ্যকার স্বাক্ষরিত অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য ও ট্রানজিট চুক্তির সুবিধা কাজে লাগিয়ে দুই দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারণে অগ্রণী পালনের জন্য ব্যবসায়ীদের আহ্বান জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।
শুক্রবার রাজধানীর গুলশানে শুটিং কমপ্লেক্সে ভুটান অ্যাম্বাসি আয়োজিত তিন দিনব্যাপী ‘বাণিজ্য ও বিনিয়োগ মেলা’- এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ ও ভুটান ২০২০ সালে অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য চুক্তি-পিটিএ এবং চলতি বছরের ২২ মার্চ 'ট্রাফিক-ইন-ট্রানজিট চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। এসব চুক্তি উভয় দেশের মধ্য বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বাড়াতে সহায়তা করবে। ব্যবসায়ীরা পিটিএ এবং ট্রানজিট চুক্তির সুযোগ-সুবিধা কাজে লাগিয়ে ব্যবসায়ীদের মধ্যে আন্তঃসম্পর্ক গড়ে তোলার পাশাপাশি ব্যবসা-বাণিজ্যের বিকাশ ঘতাতে পারে।
তিনি জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে বাংলাদেশ শিক্ষা-স্বাস্থ্য, যোগাযোগ ও অবকাঠামোসহ আর্থ-সামাজিক খাতে অভূতপূর্ব অগ্রগতি অর্জন করেছে। বাংলাদেশ এখন বিশ্বের ৩৫ তম বৃহত্তম অর্থনীতি দেশ হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে।
আমরা এখন ট্রিলিয়ন ডলারের অর্থনৈতিক যাত্রা শুরু করেছি উল্লেখ করে মন্ত্রী আরও বলেন, অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড; বিশেষ করে ব্যবসা-বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধির জন্য আঞ্চলিক একীকরণের ওপর জোর দিতে হবে। এজন্য নিকটতম প্রতিবেশিসমূহের মধ্যে আঞ্চলিক একীকরণ, আঞ্চলিক সংযোগ এবং আন্তঃআঞ্চলিক বাণিজ্য বৃদ্ধির পাশাপাশি পারস্পারিক আস্থা ও বিশ্বাস গড়ে তুলতে হবে।
আরও পড়ুন: ব্যবসা-বাণিজ্যে এশিয়া অঞ্চলে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জনের আহ্বান বাণিজ্যমন্ত্রীর
টিপু মুনশি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশে ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক আঞ্চল প্রতিষ্ঠা করেছেন। যার মধ্যে অনেকগুলো চালু হয়েছে। ইতোমধ্যে ভারত, জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়াকে অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রদান করা হয়েছে। ভুটান সীমান্তের খুব কাছে কুড়িগ্রামে একটি অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলার সুযোগ দেয়া হয়েছে। এসময় ব্যবসাবান্ধব এসব অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিনিয়োগ করার জন্য ভুটান সরকারি-বেসরকারি বিনিয়োগকারীদের প্রতি আহ্বান জানান।
তিনি জানান, বাংলাদেশ এই অঞ্চলে কানেক্টিভিটি হাব হিসেবে বিবেচিত। সৈয়দপুর আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সঙ্গে দুটি বন্দরসহ রেল যোগাযোগ এবং ট্রানজিট সুবিধা ভুটানের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও উন্নয়নে উল্লেখযোগ্যভাবে অবদান রাখতে পারে।
বাণিজ্য ও বিনিয়োগ মেলা দুই দেশের ব্যবসা, উদ্যোক্তা এবং পরিষেবা প্রদানকারীদের নেটওয়ার্ক তৈরি এবং ব্যবসা ও বিনিয়গের সুযোগ অন্বেষণের জন্য একটি চমৎকার প্ল্যাটফর্ম প্রদান করা ছাড়াও বাণিজ্য ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক জোরদার করবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন বাণিজ্যমন্ত্রী।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশে নিযুক্ত ভুটানের রাষ্ট্রদূত রিনচেন কুয়েনসিলসহ আবাসিক মিশন/দূতাবাসের প্রধান, ব্যবসায়িক চেয়ারপারসন এবং অন্যান্য ব্যবাসায়ী গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলে।
উল্লেখ্য, ভুটানের প্রায় ২৫টি কোম্পানি মেলায় অংশগ্রহণ করেছে যেখানে দেশটির তৈরি ও উৎপাদিত প্রিমিয়াম মানের পণ্য প্রদর্শন করা হচ্ছে। মেলা ২৩-২৫ জুন পর্যন্ত চলবে।
মেলার পাশাপাশি ভুটানে বিনিয়োগের সুযোগ, বিশেষ করে কৃষি-খাদ্য ব্যবস্থার ওপর একই ভেন্যুতে সেমিনারও অনুষ্ঠিত হবে।
ভুটান অ্যাম্বাসি আয়োজিত অনুষ্ঠানটির ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট সহযোগিতায় ছিলো টিকে ইভেন্ট বাই ট্রাভেলার কি।
আরও পড়ুন: ইরান-বাংলাদেশ বাণিজ্য প্রসারে একত্রে কাজ করার আহ্বান বাণিজ্যমন্ত্রীর
বাংলাদেশ-ইন্দোনেশিয়া অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য চুক্তি শিগগিরই: বাণিজ্যমন্ত্রী
শুরু হচ্ছে ৩ দিনব্যাপী প্রথম ভুটান বাণিজ্য ও বিনিয়োগ মেলা
বাংলাদেশের ভুটানি দূতাবাস প্রথমবারের মতো ঢাকায় ভুটান বাণিজ্য ও বিনিয়োগ মেলা ২০২৩ এর আয়োজন করছে। আগামী ২৩ থেকে ২৫ জুন তিনদিনব্যাপী রাজধানীর গুলশানের শুটিং ক্লাবে এ মেলার আয়োজন করা হয়েছে।
বাণিজ্য, শিল্প ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় এবং ভুটান সরকারের কৃষি ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় এবং ভুটান কান্ট্রি অফিস অব ফুড অ্যান্ড এগ্রিকালচার অর্গানাইজেশনের সহায়তায় এ মেলা আয়োজিত হচ্ছে।
ভুটান ও বাংলাদেশ ২০২০ সালের ৬ ডিসেম্বর অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য চুক্তি (পিটিএ) স্বাক্ষর করেছে।
তবে, মহামারির ফলে সৃষ্ট চ্যালেঞ্জের কারণে দুই দেশ চুক্তির মাধ্যমে ব্যবসা-বাণিজ্য বাড়ানোর সুযোগের সদ্ব্যবহার করতে পারেনি। এই লক্ষ্যে, দুই বন্ধুপ্রতিম দেশের জনগণের পারস্পরিক সুবিধার জন্য এই ঐতিহাসিক চুক্তির বিধানগুলোকে আরও সহজতর করার প্রাথমিক উদ্দেশ্য নিয়ে ভুটান বাণিজ্য ও বিনিয়োগ মেলা ২০২৩-এর আয়োজন করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: প্রান্তিক তরুণদের ক্ষমতায়নে ‘তরুণ উদ্যোক্তা মেলা’
‘ভুটানে বেড়ে ওঠার জন্য বিনিয়োগকারী, প্রযোজক, ব্যবসায়ী ও ভোক্তাদের মধ্যে মেলবন্ধন’- থিম নিয়ে ট্রেড অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট ফেয়ার দুই দেশের ব্যবসা, উদ্যোক্তা ও পরিষেবা প্রদানকারীদের নেটওয়ার্ক তৈরি করার সুযোগগুলো অন্বেষণ করার জন্য একটি চমৎকার প্ল্যাটফর্ম তৈরি করবে এবং বাণিজ্য ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক জোরদার করবে।
এ আয়োজনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন। অন্যান্য অতিথিদের মধ্যে বিভিন্ন মিশন/দূতাবাসের প্রধান, ব্যবসায়ী, শীর্ষ ব্যবসায়িক সংস্থার নির্বাহী এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা উপস্থিত থাকবেন।
এছাড়া ভুটান সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও বিশেষজ্ঞরা এবং খাদ্য ও কৃষি সংস্থার ভুটান কান্ট্রি অফিসের বিশেষজ্ঞরাও এই মেলায় অংশ নেবেন
বাণিজ্য ও বিনিয়োগ মেলার পাশাপাশি ভুটানের বিশেষজ্ঞরা দেশটিতে বিনিয়োগের সুযোগ এবং বিশেষ করে কৃষি-খাদ্য ব্যবস্থা নিয়ে সেমিনারও আয়োজন করবেন। সেমিনারগুলো ২৩-২৫ জুন পর্যন্ত মেলার স্থানে অনুষ্ঠিত হবে।
ভুটানের প্রায় ২৫টি কোম্পানি মেলায় অংশগ্রহণ করবে এবং ভুটানে তৈরি ও উৎপাদিত প্রিমিয়াম মানের পণ্যের বিস্তৃত পরিসর প্রদর্শন করবে।
বিস্তারিত জানতে এই ওয়েবসাইটে ভিজিট করুন- www.bhutantradeshow.com।
প্রেস ব্রিফিংয়ে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ভুটানের রাষ্ট্রদূত মি. রিনচেন কুয়েনসিল, কাউন্সেলর (বাণিজ্য) মি. কেনচো থিনলে, কাউন্সেলর (রাজনৈতিক) মি. জিগড্রেল ওয়াই শেরিং, ভুটান কাউন্সেলর (অর্থ) মিসেস শেরিং চোকি (অর্থ) এবং ভুটান দূতাবাসের দ্বিতীয় সচিব মিসেস পেমা সেলডন।
আরও পড়ুন: কুড়িগ্রামে গঙ্গাপূজা ও দশহরা মেলা অনুষ্ঠিত
বঙ্গবন্ধুর জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষ্যে জাতিসংঘে শিশু-কিশোর আনন্দমেলা
এফবিসিসিআই সভাপতির সঙ্গে লিবিয়ায় সদ্য নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতের সাক্ষাৎ
পরিবর্তিত বৈশ্বিক পরিস্থিতিতে অপ্রচলিত বাজারগুলোকে ধরতে বাণিজ্যিক কার্যক্রম জোরদার সময়োচিত ও গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন দি ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফবিসিসিআই)।
এক্ষেত্রে মধ্যপ্রাচ্য, আফ্রিকা এবং এশিয়ার দেশগুলোকে টার্গেট করে বাণিজ্য জোরদারের বিকল্প নেই বলে মনে করেন এফবিসিসিআই সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন।
বুধবার লিবিয়ায় নবনিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মেজর জেনারেল আবুল হাসনাত মোহাম্মদ খায়রুল বাশারের সঙ্গে এক সৌজন্য সাক্ষাতে এ কথা বলেন এফবিসিসিআই সভাপতি।
আরও পড়ুন: ইলেকট্রনিক পণ্যের মান বজায় রাখার আহ্বান এফবিসিসিআই সভাপতির
মো. জসিম উদ্দিন বলেন, ইউরোপ, আমেরিকার প্রচলিত বাজারের বাইরে বিশ্বের অন্যান্য অঞ্চলগুলোতে বাণিজ্য প্রসারের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ এখনও পিছিয়ে রয়েছে। মধ্যপ্রাচ্য, আফ্রিকা, এশিয়াসহ বিশ্বের অপ্রচলিত এসব বাজারকে ধরতে এখন থেকেই উদ্যোগ নিতে হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
বৈশ্বিক ভূ-রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে ক্রেতারা একক বাজার নির্ভরশীলতা থেকে সরে আসায় তা বাংলাদেশের জন্য সম্ভাবনার দুয়ার খুলে দিয়েছে। এই সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে বাজারজাতকরণ কৌশলেও বাংলাদেশকে দক্ষতা বাড়াতে হবে বলে মন্তব্য করেন এফবিসিসিআই সভাপতি।
দেশের সম্ভাবনাময় খাতগুলোর তথ্য তুলে ধরে মো. জসিম উদ্দিন বলেন, বিশ্বব্যাপী প্রক্রিয়াজাত খাদ্য শিল্পের বাজার দিন দিন সম্প্রসারিত হচ্ছে। এখানে ভালো করার সুযোগ রয়েছে। পাশাপাশি ঔষধ, ইলেক্ট্রনিক পণ্য, হালকা প্রকৌশল, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, সিরামিক এবং প্লাস্টিক পণ্যের সম্ভাবনাও অপরিসীম।’ লিবিয়ায় এসব পণ্যের বাজার সম্প্রসারণে দেশটিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতকে উদ্যোগী হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
দায়িত্ব গ্রহণের পর লিবিয়ার সঙ্গে বাংলাদেশের দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য বৃদ্ধিতে প্রয়োজনীয় কর্মসূচি হাতে নেওয়ার কথা জানিয়ে রাষ্ট্রদূত খায়রুল বাশার বলেন, ‘লিবিয়াতে নিরাপত্তা পরিস্থিতি ক্রমেই উন্নতির দিকে যাচ্ছে। উল্লেখিত খাতসমূহ সহ দেশটিতে জনশক্তি রপ্তানির বিষয়েও গুরুত্বের সঙ্গে কাজ করবো আমরা। এক্ষেত্রে এফবিসিসিআই এর মূল্যবান পরামর্শ এবং মতামত পেলে দু’দেশের মধ্যকার ব্যবসা-বাণিজ্যকে আরও তরাণ্বিত করতে পারবো বলে আমি আশাবাদী।’
সরকার ও বেসরকারি খাত সমন্বিতভাবে কাজ করলে বাংলাদেশের ট্রিলিয়ন ডলারের অর্থনীতির দেশ হওয়ার অগ্রযাত্রা সহজ হবে বলে মন্তব্য করেন বক্তারা। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন এফবিসিসিআই এর সহ-সভাপতি মো. হাবিব উল্লাহ ডন, মহাসচিব মোহাম্মদ মাহফুজুল হক, অ্যাম্বাসেডর মাসুদ মান্নান প্রমুখ।
আরও পড়ুন: মুহিতের মৃত্যুতে এফবিসিসিআই প্রধানের শোক