বন্যা
ভারী বৃষ্টিতে বন্যায় ১৫ জনের মৃত্যু, নয়াদিল্লির স্কুল বন্ধ
ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে দেশটির উত্তরাঞ্চলে ভূমিধস ও আকস্মিক বন্যার কারণে সোমবার সেখানকার স্কুলগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়। দুর্যোগময় এই পরিবেশে গত তিন দিনে অন্তত ১৫ জন মারা গেছেন।
ভারতের সংবাদ সংস্থা প্রেস ট্রাস্ট অব ইন্ডিয়া জানিয়েছে, ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে নয়াদিল্লির কিছু এলাকা পানির নিচে তলিয়ে গেছে। এতে এলাকাবাসী ঘরবন্দী হয়ে পড়েছেন। হিমাচল প্রদেশ ও উত্তরাখণ্ড রাজ্যে আকস্মিক বন্যা ও ভূমিধসে ১০ জনের মৃত্যুসহ উত্তরের পার্বত্য রাজ্যগুলো সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।
নয়াদিল্লিতে একজন এবং কাশ্মীরের ভারত নিয়ন্ত্রিত অংশে চারজন নিহত হয়েছেন।
আরও পড়ুন: ভারতের পশ্চিমবঙ্গে পঞ্চায়েত নির্বাচনে ভোট চলাকালীন সহিংসতায় নিহত ৯
হিমালয়ের পর্যটন রাজ্য উত্তরাখণ্ডের গুরুত্বপূর্ণ মহাসড়কে বৃষ্টির কারণে সৃষ্ট ভূমিধসের ফলে যান চলাচল ব্যাহত হয়েছে। যার ফলে এলাকাবাসীদের প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে বের না হওয়ার জন্য সতর্ক করা হয়েছে। প্রতিবেশি হিমাচল প্রদেশে সেতু ও ঘরবাড়ি ভেসে যাওয়ার সময় কর্তৃপক্ষ লোকজনকে উদ্ধার করতে হেলিকপ্টার ব্যবহার করে।
ভারতের আবহাওয়া সংস্থা আগামী দিনগুলোতে উত্তরাঞ্চলে আরও ভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস দিয়েছে। এতে বলা হয়, সারাদেশে মৌসুমি বৃষ্টিপাতের কারণে স্বাভাবিকের চেয়ে প্রায় ২ শতাংশ বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছে।
ভারতে বর্ষা মৌসুমে নিয়মিত মারাত্মক বন্যা দেখা যায়, যা জুন থেকে সেপ্টেম্বরের মধ্যে হয়ে থাকে এবং দক্ষিণ এশিয়ার বার্ষিক বৃষ্টিপাতের বেশিরভাগ অংশ এই এলাকাতে হয়। মৌসুমে রোপণ করা বৃষ্টি-নির্ভর ফসলের জন্য বৃষ্টিপাত অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, তবে প্রায়শই এর কারণে বেশ ক্ষতি হয়।
আরও পড়ুন: ভারতে ট্রেন দুর্ঘটনায় ২৯০ জনের বেশি নিহতের ঘটনায় ৩ রেল কর্মকর্তা গ্রেপ্তার
বিজ্ঞানীরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তন ও বৈশ্বিক উষ্ণায়নের কারণে মৌসুমি বায়ু আরও অনিয়মিত হয়ে উঠছে, যার ফলে ভারতের হিমালয়ের উত্তরাঞ্চলে ঘন ঘন ভূমিধস ও আকস্মিক বন্যা হচ্ছে।
প্রতিবেশি পাকিস্তানও মৌসুমি বৃষ্টিপাতের কবলে পড়েছে। ভারত থেকে পাকিস্তানে প্রবাহিত রবি নদীতে ভারত বাঁধের পানি সরিয়ে নেওয়ার পরে কর্তৃপক্ষ মৌসুমের প্রথম বন্যার জন্য সতর্ক ছিল।
পাকিস্তানের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থা জানিয়েছে, পূর্ব পাঞ্জাব প্রদেশের নিম্নাঞ্চল থেকে লোকজনকে সরিয়ে নেওয়ার কাজ চলছে। নারওয়াল ও শিয়ালকোটের গ্রামগুলো থেকে রাতারাতি ১৫০ জনেরও বেশি মানুষকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
গত ২৫ জুন থেকে পাকিস্তানে ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে হাজার হাজার মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় আবহাওয়াজনিত বিভিন্ন ঘটনায় অন্তত ৭৬ জনের মৃত্যু হয়েছে।
আরও পড়ুন: ভারতে তীব্র তাপপ্রবাহের মধ্যে ঘন ঘন বিদ্যুৎ বিভ্রাট, হাসপাতালগুলোতে বেড়েই চলেছে মৃতের সংখ্যা
২৪ ঘণ্টায় নেত্রকোণার নিম্নাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হতে পারে: এফএফডব্লিউসি
বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের (এফএফডব্লিউসি) পূর্বাভাসে বলা হয়েছে যে আগামী ২৪ ঘণ্টায় নেত্রকোণা জেলার নিম্নাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হতে পারে।
এফএফডব্লিউসি এর নিয়মিত বুলেটিনে জানিয়েছে যে ব্রহ্মপুত্র নদ অপরিবর্তিত থাকলেও যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধির প্রবণতা অব্যাহত রয়েছে, যা বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা থেকে শুরু করে ২৪ ঘন্টা অব্যাহত থাকতে পারে।
এতে আরও বলা হয়, গঙ্গা-পদ্মা নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা ৭২ ঘণ্টা অব্যাহত থাকতে পারে।
এছাড়া খোয়াই, মনু ও ধলাই ছাড়া দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের প্রধান নদ-নদীগুলোর পানি কমছে, যা আগামী ৪৮ ঘণ্টা অব্যাহত থাকতে পারে।
আরও পড়ুন: তিস্তার পানি বাড়লে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে লালমনিরহাট ও নীলফামারীতে স্বল্পমেয়াদি বন্যা হতে পারে: এফএফডব্লিউসি
উন্নত বন্যা ব্যবস্থাপনা: বাংলাদেশের নদী ড্রেজিংয়ে সহায়তার প্রস্তাব চীনের
সুনামগঞ্জে বন্যায় ১০ গ্রাম প্লাবিত, বৃষ্টি অব্যাহত
পাঁচ দিনের টানা বর্ষণে মেঘালয় থেকে আসা পাহাড়ি ঢলে ও নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় সুনামগঞ্জ জেলার দোয়ারাবাজার উপজেলার অন্তত ১০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।
এ সময়ে দোয়ারাবাজারের সুরমা, চেলা, মরা চেলা, চিলাই, চলতি, কালিউরি, খাসিয়ামারাসহ বিভিন্ন নদীনালার উপচেপড়া পানিতে হাওর, খাল-বিল, মাঠঘাট ভরে গিয়ে সৃষ্ট বন্যায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছেন নিম্নাঞ্চলের মানুষজন।
এদিকে পাহাড়ি ঢলের কারণে রবিবার সন্ধ্যায় উপজেলার চিলাই নদীর রাবারড্যাম সংলগ্ন ক্যাম্পের ঘাট এলাকার আবুল কালামের বাড়ির পাশে বেড়িবাঁধ ভেঙে বগুলাবাজার ইউনিয়নের ক্যাম্পের ঘাট, আন্দাইরগাঁও, বগুলা, চান্দের ঘাট, সোনাচড়া, নোয়াগাঁও, রামনগর, তেরাকুড়ি ও কান্দাগাঁওসহ বিস্তৃর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়ে পড়েছে।
আরও পড়ুন: ভারি বর্ষণে সিলেট ও সুনামগঞ্জে স্বল্পমেয়াদি বন্যার আশঙ্কা
এদিকে, সুরমা নদীর উপচেপড়া ঢলের তোড়ে দোয়ারাবাজার-টেংরাটিলা-মহব্বতপুর সড়কের শরিফপুর সাইডিংঘাট এলাকায় রাস্তায় হাটু সমান পানির স্রোতে যান চলাচল ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে।
অপরদিকে রাস্তাঘাট তলিয়ে যাওয়ায় বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে উপজেলা সদরের সঙ্গে নরসিংপুর, বাংলাবাজার, বগুলাবাজার, লক্ষীপুর ও সুরমা ইউনিয়নসহ বিভিন্ন এলাকার সড়ক যোগাযোগ।
তলিয়ে গেছে রবিশস্যসহ শত শত হেক্টর আমনের বীজতলা।
দ্রুত পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় ইতোমধ্যে কয়েকটি মাছের পুকুর তলিয়ে যাওয়ায় শঙ্কিত রয়েছেন শতাধিক মৎস্যচাষী, খামার মালিক।
সুনামগঞ্জের পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মামুন হাওলাদার জানান, ভারতের চেরাপুঞ্জিতে ভারী বৃষ্টিপাত বন্ধ না হলে অচিরেই জেলার সকল উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করতে পারে।
দোয়ারাবাজারের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আরিফ মোর্শেদ মিশু বলেন, বন্যা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। তবে জরুরি ক্ষেত্রে দূর্যোগ মোকাবিলায় আশ্রয়কেন্দ্র খোলা, ত্রাণ বিতরণসহ সর্বক্ষেত্রে আমাদের মনিটরিং ব্যবস্থা অটল রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, জেলা প্রশাসনসহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে আমাদের সার্বক্ষণিক যোগাযোগ অব্যাহত রয়েছে।
আরও পড়ুন: সুনামগঞ্জে বাড়ছে নদ-নদীর পানি, প্লাবিত হচ্ছে নিম্নাঞ্চল
ভারি বর্ষণে সিলেট ও সুনামগঞ্জে স্বল্পমেয়াদি বন্যার আশঙ্কা
বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের এক বুলেটিনে বলা হয়েছে, রবিবার (২ জুলাই) সকাল থেকে ৪৮ ঘণ্টায় ভারি বৃষ্টিপাতের কারণে দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও পার্শ্ববর্তী উজানে স্বল্পমেয়াদী বন্যা হতে পারে।
সুরমা, পুরাতন সুরমা, সারি গোয়াইন, খোয়াই, যাদুকাটা, সোমেশ্বরী, ভোগাই ও কংসসহ এই অঞ্চলের কিছু নদীর পানি দ্রুত বৃদ্ধি পেতে পারে এবং সংলগ্ন নিম্নাঞ্চলে স্বল্পমেয়াদী বন্যা হতে পারে। কারণ এখানে ভারি থেকে অতি ভারি বর্ষণের সম্ভাবনা রয়েছে।
ব্রহ্মপুত্র-যমুনা ও পদ্মা নদী স্থিতিশীল অবস্থায় রয়েছে, অন্যদিকে গঙ্গা নদীর পানি বৃদ্ধির প্রবণতা রয়েছে, যা আগামী ৪৮ ঘণ্টায় অব্যাহত থাকতে পারে।
দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সব প্রধান নদ-নদীর পানি বৃদ্ধির প্রবণতা রয়েছে।
আরও পড়ুন: কুড়িগ্রামে বন্যায় ১২ হাজার পরিবার পানিবন্দী, খাবার ও বিশুদ্ধ পানির তীব্র সংকট
কুড়িগ্রামে বন্যায় ১২ হাজার পরিবার পানিবন্দী, খাবার ও বিশুদ্ধ পানির তীব্র সংকট
কুড়িগ্রামে ব্রহ্মপুত্র, ধরলা, তিস্তা, দুধকুমারসহ সবকটি নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। এতে জেলার ৯ উপজেলায় পানিবন্দী হয়ে পড়েছে নিম্নাঞ্চলের প্রায় ১২ হাজার পরিবার।
এতে করে ভোগান্তি বেড়েছে বন্যা কবলিত এলাকার মানুষজনের। সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে রয়েছে চরাঞ্চলের পরিবারগুলো।
বিশেষ করে ব্রহ্মপুত্রের অববাহিকায় নতুন জেগে ওঠা চরাঞ্চলের ঘরবাড়িতে ৫ দিনে ধরে পানিতে তলিয়ে থাকায় চরম দুর্ভোগে রয়েছেন তারা। অনেকেই ঘর-বাড়ি ছেড়ে নৌকা ও উঁচু স্থানে অবস্থান করলেও শুকনো খাবার ও বিশুদ্ধ পানির তীব্র সংকটে পড়েছেন তারা।
আরও পড়ুন: রেকর্ড বৃষ্টিতে তলিয়ে যাওয়া রংপুরে পানিবন্দী ৫০ হাজার মানুষ
জানা গেছে, উলিপুর উপজেলার ব্রহ্মপুত্র নদের অববাহিকার পূর্ব বালাডোবা, কালির আলগা, মুসারচর ও সদরের পোড়ার চরসহ ১০টি চরে বসবাসকারী দুই শতাধিক পরিবার ঘর বাড়ি ছেড়ে নৌকা ও উঁচু জায়গায় অবস্থান নিয়ে মানবেতর জীবন-যাপন করছে।
এই পরিবারগুলোর ঘর বাড়ি তলিয়ে থাকায় ঠিকমতো রান্না করতে পারছেন না তারা। পাশাপাশি পরিবারগুলোর হাতে কোনো কাজ না থাকায় শুকনো খাবার এবং নলকুপ তলিয়ে থাকায় বিশুদ্ধ পানির সংকটে পড়েছেন তারা।
এদিকে নদ-নদীর অববাহিকার গ্রামীণ সড়ক তলিয়ে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে যোগাযোগ ব্যবস্থা। জেলার প্রায় ১০০ হেক্টর জমির বিভিন্ন ফসল পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে।
চারণভূমি তলিয়ে থাকায় চরাঞ্চলগুলো গবাদি পশুর খাদ্য নিয়েও বিপাকে পড়েছেন বন্যা কবলিতরা। এছাড়া কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্যমতে কুড়িগ্রামের সবকটি নদ-নদীতে পানি বিপদ সীমার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের দুপুর ১২টায় দেয়া তথ্যমতে জেলার পাটেশ্বরী পয়েন্টে দুধকুমার নদের পানি বিপদসীমার ৪ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
এছাড়াও কুড়িগ্রাম সদরের ধরলার সেতু পয়েন্টে ৩৯ সেন্টিমিটার, নুনখাওয়া পয়েন্টে ব্রহ্মপুত্র নদের পানি ৫৫ সেন্টিমিটার, ব্রহ্মপুত্র নদের পানি চিলমারী পয়েন্টে ৬১ সেন্টিমিটার ও কাউনিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি ৮৯ সেন্টিমিটার বিপদসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
উলিপুর উপজেলার বেগমগঞ্জ ইউনিয়নের পুর্ববালাডোবার চরের আব্দুর রহমান জানান, এই চরে ৪৯টি পরিবারের বসবাস। চরটি নতুন এবং নিচু হওয়ায় এখানকার বেশির ভাগ ঘর বাড়িতে কোমর সমান পানি উঠেছে।
আরও পড়ুন: সিলেটে বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত, বাড়ছে পানিবন্দী মানুষের দুর্ভোগ
ফের বন্যায় ভাসতে পারে সিলেট-সুনামগঞ্জ
মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বৃষ্টি হওয়ায় বাড়ছে নদ-নদীর পানি।
আগামী ৭২ ঘণ্টায় দেশের উজানে ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস রয়েছে।
এর ফলে আশপাশের নদ-নদীর পানি বাড়তে পারে এবং বিপদসীমা অতিক্রম করে সিলেট ও সুনামগঞ্জ জেলার কিছু নিম্নাঞ্চলে স্বল্পমেয়াদী আকস্মিক বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে।
আরও পড়ুন: সিলেটে নদ-নদীতে বাড়ছে পানি, আবারও বন্যার আশঙ্কা
সোমবার (১৯ জুন) বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র এ তথ্য জানিয়েছে।
বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র আরও জানায়, ব্রহ্মপুত্র-যমুনা এবং গঙ্গা-পদ্মা নদী বিভিন্ন স্থানে জলস্তর বৃদ্ধির প্রবণতা বজায় রয়েছে, যা আগামী ৭২ ঘণ্টায় অব্যাহত থাকতে পারে।
এছাড়া উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও তৎসংলগ্ন উজানে ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে এ অঞ্চলের সব প্রধান নদ-নদীর পানি দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে।
আবহাওয়া পূর্বাভাস সংস্থার মতে, আগামী ২৪ ঘণ্টায় দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল এবং তৎসংলগ্ন উজানে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।
এফএফডব্লিউসি-এর সকালের বুলেটিনে বলা হয়েছে- আগামী ২৪ ঘণ্টায় তিস্তা, ধরলা ও দুধকুমার অববাহিকা এবং তৎসংলগ্ন উজানে ভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাসের কারণে এই নদীগুলোর পানি দ্রুত বাড়তে পারে।
ফলে সুরমা, কুশিয়ারা, সারিগোয়াইন, ঝালুখালী, ভূগাই-কংশা, সোমেশ্বরী, ও জাদুকাটাসহ এ অঞ্চলের প্রধান নদ-নদীর পানি দ্রুত বৃদ্ধি পেতে পারে।
এদিকে আগামী ২৪ ঘণ্টায় ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তা নদীর পানি বিপদসীমা অতিক্রম করতে পারে।
ভারতীয় গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, ভারতের সীমান্তবর্তী আসাম রাজ্যে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। কারণ অবিরাম বর্ষণে রাজ্যের নতুন এলাকা প্লাবিত হয়েছে।
আরও পড়ুন: সিলেটে অবিরাম বর্ষণে আবারও বন্যার শঙ্কা
ইউএনবি সুনামগঞ্জ প্রতিনিধির প্রতিবেদন:
সুরমা নদীর ছাতক পয়েন্টে বিপদসীমার ৫৪ সেন্টিমিটার ওপরে এবং সুনামগঞ্জ জেলার ষোলঘর পয়েন্টে বিপদসীমার ৭৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে।
সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্যমতে, ভারতের চেরাপুঞ্জিতে ভারী বর্ষণে জেলার সব বড় নদীর পানির উচ্চতা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
বন্যায় বিষম্ভরপুর উপজেলার শক্তিরখোলা প্রধান সড়ক পানিতে তলিয়ে গেছে।
সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মামুন হাওলাদার জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় সুরমা নদী সুনামগঞ্জে বিপদসীমার ৭৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে এবং ভারতীয় কর্তৃপক্ষ গত ২৪ ঘণ্টায় চেরাপুঞ্জিতে ২৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে।
জেলা প্রশাসক দিদার আলম মোহাম্মদ মাকসুদ চৌধুরী জানান, বন্যা মোকাবিলায় আশ্রয়কেন্দ্রগুলো প্রস্তুতি নিয়েছে।
আরও পড়ুন: বন্যা দুর্গত এলাকায় কি ধরনের খাদ্য ও ত্রাণ সামগ্রী পাঠাবেন
সিলেটে অবিরাম বর্ষণে আবারও বন্যার শঙ্কা
গত বছরের ভয়াবহ বন্যার ধকল যেতে না যেতেই সিলেটে আবারও বন্যার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। গত তিনদিন ধরে টানা বৃষ্টি হচ্ছে সিলেটে। এই বৃষ্টি আরও ১৫ দিন অবহ্যাত থাকবে বলে জানা গেছে।
এছাড়া, ব্যাপক বৃষ্টি হচ্ছে সিলেটের উজানে ভারতের মেঘালয় রাজ্যে। ফলে ঢল নামছে। ঢল আর বৃষ্টিতে সিলেটের নদনদীর পানি বেড়েই চলছে।
পানি বিপদসীমা ছুঁইছুঁই করছে। ঢল আর বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে চলতি সপ্তাহেই মাঝারি ধরনের বন্যা হতে পারে বলে আশংকা করা হচ্ছে।
তাই সম্ভাব্য বন্যা মোকাবিলায় প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছে জেলা প্রশাসন।
এদিকে ঢলে ইতোমধ্যে সিলেটের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত এবং বিভিন্ন হাওরে পানি ঢুকতে শুরু করেছে। এছাড়া বাড়ছে নদীর পানিও।
শুক্রবার (১৬ জুন) সন্ধ্যায় সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ড সুরমা ও কুশিয়ারা নদীতে পানি বেড়েছে বলে জানিয়েছে।
বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আশিফ আহমেদ জানান, নদীর পানি বিপদসীমার কাছাকাছি অবস্থান করছে। সামান্য বাড়লেই তা অতিক্রম করবে।
সিলেটে নদ-নদীতে বাড়ছে পানি, আবারও বন্যার আশঙ্কা
তিনি আরও জানান, একই সঙ্গে হাওর ও নিম্নাঞ্চলে পানি প্রবেশ করছে।
সুরমা নদীর কানাইঘাট পয়েন্টে বিপদসীমার ১২ দশমিক ৭৫ সেন্টিমিটারের মধ্যে ১২ দশমিক ৬৮ এবং সুরমা নদীর পয়েন্টে ১০ দশমিক ৮ সেন্টিমিটার বিপদসীমার মধ্যে ৯ দশমিক ৩৮ সেন্টিমিটার উচ্চতায় পানি প্রবাহিত হচ্ছে। একই অবস্থা এ দুই নদীর অন্যান্য পয়েন্টেও।
শুক্রবার সিলেটে ১৩৫ মিলিমিটার এবং এর আগের ২৪ ঘণ্টায় ২২১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। ভারী বর্ষণে নগরীতে জলাবদ্ধতাও দেখা দিচ্ছে।
এছাড়া শনিবার সকাল থেকে থেমে থেমে বৃষ্টিপাত হচ্ছে।
এর আগে গতবছর সিলেটে স্মরণকালের সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যা হয়। এতে তলিয়ে গিয়েছিলা সিলেটের ৭০ শতাংশ এলাকা। ক্ষতিগ্রস্ত হয় জেলার প্রায় সব মানুষ।
বন্যায় ভেঙে যায় প্রায় ১০ হাজার ঘরবাড়ি। গতবারের বন্যার ধকল এখনো কাটিয়ে উঠতে পারেনি ক্ষতিগ্রস্তরা।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের সিলেট কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার সকাল ৬ টা থেকে শুক্রবার সকাল ৬ টা পর্যন্ত ১৩৫ দশমিক ৪ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। আর সকাল ৬ টা থেকে দুপুর ১২ টা পর্যন্ত বৃষ্টি হয়েছে ৭৫ মিলিমিটার। এর আগে বুধবার সকাল ৬ টা থেকে বৃহস্পতিবার সকাল ৬ টা পর্যন্ত ২৭১ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়।
সিলেটের সহকারী আবহাওয়াবিদ শাহ মো. সজীব হোসাইন বলেন, আগামী ৪৮ ঘণ্টা সিলেটে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। এজন্য সবাইকে সতর্ক থাকা প্রয়োজন। বিশেষ করে সীমান্তবর্তী এলাকাগুলোতে পাহাড়ি ঢল নামতে পারে।
বর্ষণ ও পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে বন্যার আশঙ্কা থেকে বৃহস্পতিবার সিলেটের জেলা প্রশাসন জরুরি সভা করে আগাম বন্যার প্রাথমিক প্রস্তুতিও নিয়েছে।
আরও পড়ুন: বন্যা দুর্গত এলাকায় কি ধরনের খাদ্য ও ত্রাণ সামগ্রী পাঠাবেন
মালয়েশিয়ার বন্যায় নিহত ৫, বাস্তুচ্যুত ৪০ হাজার ছাড়িয়েছে
মালয়েশিয়ায় বন্যায এখন পর্যন্ত নিহত পাঁচজনের লাশ উদ্ধার করেছে দেশটির পুলিশ। সর্বশেষ এক তরুণীর মৃতদেহ একটি প্রাইভেটকারের ভিতর থেকে উদ্ধার করেছে,যেটি বন্যার পানিতে ভেসে যাচ্ছিল। এটি মৌসুমি বন্যার পঞ্চম মৃত্যু। বন্যায় এখন পর্যন্ত ৪৩ হাজার মানুষকে বাস্তুচ্যুত হতে হয়েছে।
সোমবার দেশটির পুলিশ এক বিবৃতিতে বলেছে যে ২৩ বছর বয়সী একজন মহিলা নিখোঁজ হয়েছে বলে ধারণা করা হয়েছিল। দিনের শুরুতে দক্ষিণ জোহর রাজ্যের একটি প্লাবিত রাস্তায় কাজ করার জন্য গাড়ি চালাচ্ছিল।তখন তার গাড়িটি ভেসে যায়।
এরপর উদ্ধারকারীরা কয়েক ঘন্টা পরে গাড়িটি উদ্ধার করে এবং তার লাশ খুঁজে পায়।
এর আগে বন্যার পানি থেকে উদ্ধারকারীরা একইভাবে জোহরের একটি পাম তেলের বাগানে কাজ করার জন্য গাড়ি চালানো একজন ব্যক্তির গাড়ি উদ্ধার করে তার লাশ পাওয়া যায়। এছাড়া তিন বৃদ্ধও বন্যার পানিতে ডুবে মারা গেছেন।
আরও পড়ুন: মালয়েশিয়ায় ভূমিধসে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ২৪, নিখোঁজ ৯
সিঙ্গাপুরের সীমান্তবর্তী রাজ্য জোহরে ৪০ লাখ মানুষ বাস করে যা মালয়েশিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম রাজ্য। স্কুল এবং কমিউনিটি সেন্টারে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত প্রায় ৪০ হাজার মানুষকে সরিয়ে নেয়া হয়েছে। কয়েকদিন আগে সরিয়ে নেয়া মানুষের সংখ্যা ৫০ হাজারের বেশি থেকে কমে এসেছে।
বোর্নিও দ্বীপের প্রত্যন্ত অঞ্চল সহ আরও বেশ কয়েকটি রাজ্যও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
রবিবার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম জোহরে বন্যা দুর্গতদের সঙ্গে দেখা করেছেন এবং রাজ্যে বন্যা প্রশমন প্রকল্পগুলোকে গতিশীল করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
আরও পড়ুন: মালয়েশিয়ায় পাঠানো কনটেইনার থেকে লাশ উদ্ধার: চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ
তিনি এক টুইট পোস্টে বলেছেন, ‘এই বিষয়টিকে বিলম্বিত করা যাবে না এবং আরও গুরুত্ব সহকারে মোকাবিলা করা উচিত যাতে (বন্যা) আবার না ঘটে।’
আবহাওয়া অধিদপ্তর বলেছে যে নভেম্বরে শুরু হওয়া বার্ষিক বর্ষা মৌসুমে দেশটি অবিরাম ভারী বৃষ্টির ষষ্ঠ পর্বের মুখোমুখি হয়েছে। এরআগে ডিসেম্বরে, বন্যার কারণে কয়েক হাজার মানুষকে সরিয়ে নেয়া হয়েছিল।
জোহরে পুলিশের পোস্ট করা ছবিতে দেখা যাচ্ছে রাস্তা ও বাড়িঘর কর্দমাক্ত পানির নিচে অদৃশ্য হয়ে গেছে, যেখানে কেবল ছাদ দেখা যাচ্ছে।
জোহরের কিছু অংশ এবং বোর্নিওতে মালয়েশিয়ার পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোতে মঙ্গলবার আরও বৃষ্টি ও ঝড়ের পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে, যা আরও আকস্মিক বন্যার কারণ হতে
পারে। দেশব্যাপী এক ডজনেরও বেশি নদীর পানি বিপজ্জনক পর্যায়ে পৌঁছেছে বলেও সতর্ক করেছে কর্তৃপক্ষ।
আরও পড়ুন: মালয়েশিয়ায় ক্যাম্প এলাকায় ভূমিধসে নিহত ২১
ফিলিপাইনে বন্যায় ৫১ জনের মৃত্যু, নিখোঁজ ১৯
ফিলিপাইনে প্রবল বর্ষণ ও বন্যায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৫১জনে পৌঁছেছে। এখনও ১৯ জন নিখোঁজ রয়েছেন। সোমবার দেশটির জাতীয় দুর্যোগ প্রতিক্রিয়া সংস্থা এসব তথ্য জানিয়েছে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত ছবিগুলোতে উত্তর মিন্দানাওয়ের মিসামিস অক্সিডেন্টাল প্রদেশের বাসিন্দাদের তাদের বাড়ির মেঝে থেকে ঘন কাদার স্তর পরিস্কার করতে দেখা গেছে।
অন্যদিকে, ক্যাবোল-অনোনানের সমুদ্রতীরবর্তী গ্রামে নারকেল গাছ উপড়ে পড়ে থাকতে দেখা যায়।
দেশটির ন্যাশনাল ডিজাস্টার রিস্ক রিডাকশন অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট কাউন্সিলের মতে, দক্ষিণাঞ্চলের উত্তর মিন্দানাওতে এই বিপর্যয়ে ২৫ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। বেশিরভাগ মৃত্যুই পানিতে ডুবে এবং ভূমিধসের কারণে হয়েছে।
আরও পড়ুন: অস্ট্রেলিয়ায় সমুদ্র সৈকতে দুই হেলিকপ্টারের সংঘর্ষে নিহত ৪
খারাপ আবহাওয়ার কারণে ফিলিপাইনের পূর্ব, মধ্য ও দক্ষিণাঞ্চলে ক্রিসমাস উদযাপন ব্যাহত হয়েছে। ক্রিসমাসের ছুটির মধ্যে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত প্রায় ছয় লাখ মানুষকে নিজেদের বাড়ি থেকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নিতে হয়েছে। এখনও আট হাজার ৬০০ জনের বেশি মানুষ জরুরি আশ্রয়কেন্দ্রে রয়ে গেছেন।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থা জানিয়েছে, বন্যায় রাস্তা ও সেতুসহ চার হাজার ৫০০ টিরও বেশি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং কিছু এলাকায় এখনও বিদ্যুৎ ও পানি সরবরাহ পুনরুদ্ধার হয়নি।
কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সরকার বন্যাকবলিত এলাকার বাসিন্দাদের জন্য খাদ্য ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র, ধ্বংসস্তূপ অপসারণের ভারী যন্ত্রপাতি এবং বাড়িঘর মেরামতের জন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি পাঠিয়েছে।
রাজধানী ম্যানিলা থেকে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার মানুষদের জন্য সীমিত পরিমাণ বিশুদ্ধ পানি পাঠানো হয়েছে।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা পরিষদ জানিয়েছে, দেশটির অন্তত ২২টি শহর ও পৌরসভা দুর্যোগের জন্য জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে।
আরও পড়ুন: মেক্সিকান সীমান্ত কারাগারে হামলায় নিহত ১৪
সিরিয়ায় হামলায় নিহত ১০, কুর্দি বাহিনীর হাতে ৫২ জঙ্গি গ্রেপ্তার
ফিলিপাইনে বন্যায় ২৫ জনের মৃত্যু
ফিলিপাইনে ক্রিসমাসের ছুটির সময়ে ভারী বর্ষণ ও বন্যায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৫ জনে। এখনো নিখোঁজ রয়েছেন আরও ২৬ জন।
বুধবার দেশটির দুর্যোগকালীন উদ্ধারকারী সংস্থা এই তথ্য জানিয়েছে।
দেশটির ন্যাশনাল ডিজাস্টার রিস্ক রিডাকশন অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট কাউন্সিল জানিয়েছে, প্রায় চার লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যাদের মধ্যে ৮১ হাজার জনের বেশি এখনও আশ্রয়কেন্দ্রে রয়েছে এবং আহত হয়েছেন আরও ৯ জন।
সংস্থাটি আরও জানায়, নিহত ২৫ জনের মধ্যে ১৬ জন মারা গেছেন দেশটির দক্ষিণের উত্তর মিন্দানাও অঞ্চলে।আর নিখোঁজ ২৬ জনের মধ্যে পূর্ব বাইকল অঞ্চলে মারা গেছেন ১২ জন।
আরও পড়ুন:ফিলিপাইনে টাইফুনের আঘাতে ৫ উদ্ধারকর্মী নিহত
রাজ্য আবহাওয়া ব্যুরো প্যাগাসা জানিয়েছে, এটি একটি বিভক্ত রেখা- যেখানে উষ্ণ এবং ঠান্ডা বাতাস মিলিত হয়। যা পূর্ব, মধ্য এবং দক্ষিণ ফিলিপাইনের কিছু অংশে বৃষ্টির সূত্রপাত করেছে।
বৈরি আবহাওয়ায় প্রদেশে বড়দিন উদযাপনকে ক্ষতিগ্রস্ত ও ব্যাহত করেছে। দক্ষিণাঞ্চলের প্রদেশ মিসামিস অক্সিডেন্টালের ফটোতে দেখা যাচ্ছে বন্যার পানিতে তলিয়ে যাওয়া রাস্তায় উদ্ধারকারীরা প্লাস্টিকের চেয়ারে বয়স্ক মহিলাকে নিয়ে হেঁটে যাচ্ছেন। প্রদেশের কিছু বাসিন্দাকে ফ্লোটারে ঝুলতে দেখা গেছে। উপকূলরক্ষী উদ্ধারকর্মীরা একটি দড়ি ব্যবহার করে আক্রান্তদের উদ্ধার করছে।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা পরিষদ জানিয়েছে, বন্যায় এক হাজার ১৯৬টি বাড়ি, ১২৩টি রাস্তা ও ১২টি সেতু ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কিছু এলাকা বিদ্যুৎ বা পানি সরবরাহ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।
আরও পড়ুন: ফিলিপাইনে বন্যা ও ভূমিধসে ৩১ জনের মৃত্যু
বিভক্ত রেখায় প্রভাব দুর্বল হয়ে পড়লেও নতুন একটি নিম্নচাপ আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ক্রিসমাস সপ্তাহান্তে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত একই এলাকায় মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টিপাত ঘটাতে পারে।
বুধবার আবহাওয়া ব্যুরো বলেছে যে পূর্বে বৃষ্টিপাতের এলাকায় বন্যা এবং ভূমিধসের সম্ভাবনা রয়েছে।
প্রতি বছর প্রায় ২০টি টাইফুন ও ঝড় ফিলিপাইনে আঘাত হানে। এটি বিশ্বের অন্যতম দুর্যোগ-প্রবণ দেশ। দ্বীপপুঞ্জটি প্রশান্ত মহাসাগরের রিম বরাবর ‘রিং অফ ফায়ার’ এ অবস্থিত, ফলে অনেক আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত এবং ভূমিকম্প হয়।
আরও পড়ুন: ফিলিপাইনে বন্যা-ভূমিধসে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৪৭