ইউপি সদস্য
চট্টগ্রামে ভোট শুরুর আগের রাতে ইউপি সদস্য প্রার্থীর মৃত্যু
চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) নির্বাচনে এক সদস্য প্রার্থী ভোট শুরুর কয়েক ঘণ্টা আগে মারা গেছেন। মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১টার দিকে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে তিনি মারা যান।
নিহত আজিজুল হক বাবুল বটতলী ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য প্রার্থী ছিলেন। তিনি নির্বাচনে তালা মার্কা পেয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছিলেন।
উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা সাইয়েদ মো. আনোয়ার খালেদ বলেন, আজিজুল হক বাবুল তালা মার্কার সদস্য প্রার্থী ছিলেন। ভোট শুরু আগের রাতে নিজ বাড়িতে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে তিনি মারা যান।
আরও পড়ুন: পঞ্চম ধাপে ৭০৮ ইউপিতে ভোটগ্রহণ চলছে
ইউপি নির্বাচনে সহিংসতা: শৈলকুপায় ছুরিকাঘাতে যুবক নিহত
কুড়িগ্রামে শ্বশুরবাড়িতে এসে স্ত্রীকে হত্যার অভিযোগ
কুড়িগ্রামের ভুরুঙ্গামারীতে দাম্পত্য কলহের জেরে শ্বশুরবাড়িতে এসে ধারালো অস্ত্র দিয়ে স্ত্রীকে হত্যা করার অভিযোগ উঠেছে স্বামীর বিরুদ্ধে। সোমবার রাতে উপজেলার পাইকেরছড়া ইউনিয়নের পাইকেরছড়া গ্রামে এই ঘটনা ঘটে।
নিহত গৃহবধূ শাহিদা বেগম (৪০) একই গ্রামের শাহজাহান আলীর মেয়ে।
স্থানীয় ও নিহতের পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, শাহিদার সঙ্গে প্রায় ২৪ বছর পূর্বে একই গ্রামের মৃত আব্বাছ আলীর ছেলে আবুবকর সিদ্দিকের (৪৪) সাথে বিয়ে হয়। দাম্পত্য কলহের জেরে কিছু দিন আগে শাহিদা বেগম ছোট সন্তানকে নিয়ে বাবার বাড়িতে চলে আসে। সোমবার (৩ ডিসেম্বর) রাতে শাহিদার স্বামী আবুবকর সিদ্দিক শ্বশুরবাড়িতে আসে। রাত ৩টার দিকে শাহিদাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে গলা কেটে হত্যা করে পালিয়ে যায় আবুবকর। এ ঘটনায় তার ছোট মেয়ে ও মা আহত হয়েছে।
আরও পড়ুন: কুড়িগ্রামে ভাঙন কবলিত পরিবারদের পাশে প্রশাসন
সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আবু মো. বজলুর রহমান বলেন, সংবাদ পাওয়ার পর ঘটনাস্থলে এসে আহতদেরকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠাই এবং ভুরুঙ্গামারী থানা পুলিশকে খবর দেই।
ভুরুঙ্গামারী থানার উপপরিদর্শন (এসআই) আতাউর রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, খবর পেয়ে ভোর ৪টার দিকে নিহতের লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। নিহতের গলায় ধারালো অস্ত্রের আঘাতর চিহ্ন রয়েছে।
আরও পড়ুন: কুড়িগ্রামে ১৩০ টাকায় পুলিশের চাকরি পেলেন ৪৩ জন
চুয়াডাঙ্গায় পানিতে ডুবে শিশুর মৃত্যু
চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার নবীনগর গ্রামে সোমবার সকালে পুকুরে ডুবে ১৪ মাস বয়সী এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে।
নিহত শিশুর নাম আয়েশা খাতুন। সে ওই গ্রামের সবুজ হোসেনের মেয়ে।
পরিবারের সদস্যদের বরাত দিয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য ওহিদুল ইসলাম জানান, সকালে উঠানে খেলতে গিয়ে বাড়ির পাশের পুকুরে পড়ে আয়েশার মৃত্যু হয়।
পরে পরিবারের লোকজন তাকে উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
আরও পড়ুন: নগরকান্দায় পানিতে ডুবে ২ শিশুর মৃত্যু
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পানিতে ডুবে জমজ বোনের মৃত্যু
প্রবাসীর স্ত্রীকে জুতার মালা পরিয়ে নির্যাতনের ঘটনায় ইউপি সদস্য গ্রেপ্তার
বাগেরহাটের মোল্লাহাটে এক প্রবাসীর স্ত্রীকে জুতার মালা পরিয়ে মারধর ও নির্যাতনের ঘটনায় হওয়া মামলায় ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) সদস্য কাওসার চৌধুরীকে গ্রেপ্তার করা হয়। শুক্রবার বিকেলে উপজেলার সিংগাতি গ্রাম থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এর আগে নির্যাতনের শিকার ওই গৃহবধূ বাদি হয়ে মোল্লাহাট থানায় একটি মামলা করেন। মামলার অপর আসামিদের ধরতে অভিযান চলছে বলে পুলিশ জানায়।
গ্রেপ্তার কাওসার চৌধুরী বাগেরহাট জেলার মোল্লাহাট উপজেলার চুনখোলা ইউনিয়ন পরিষদের ১নং ওয়ার্ডের নির্বাচিত সদস্য।
বাগেরহাটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আসাদুজ্জামান জানান, নির্যাতনের শিকার ওই নারী বাদি হয়ে ইউপি সদস্য কাওসার চৌধুরীসহ ৯ জনের নাম উল্লেখ করে থানায় একটি মামলা করেছেন। ওই মামলার অজ্ঞাত পরিচয়ের আরও চার থেকে পাঁচজনক আসামি করা হয়েছে। গ্রেপ্তারের পর কাওসার চৌধুরীকে থানায় রেখে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করছে। পুলিশি তদন্তে অন্য কারো অপরাধ পেলে তাদের বিরুদ্ধেও আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে তিনি জানান।
আরও পড়ুন: জুতার মালা পরিয়ে প্রবাসীর স্ত্রীকে নির্যাতনের ভিডিও ভাইরাল!
জানা গেছে, গ্রেপ্তার হওয়ার আগে শুক্রবার দুপুরে ইউপি সদস্য কাওসার চৌধুরী বিষয়টি মিমাংসা করার জন্য এলাকায় এক বৈঠকের আয়োজন করেন। এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে কাওসার চৌধুরী ওই গৃহবধূর হাত ধরে ভুল স্বীকার করে ক্ষমা প্রার্থনা করেন। বৈঠকে ক্ষমা চাওয়ার ভিডিওচিত্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে।
প্রসঙ্গত, মোল্লাহাট উপজেলায় অনৈতিক সম্পর্কের অভিযোগ তুলে ওই প্রবাসীর স্ত্রীকে জুতার মালা পরিয়ে বাঁশের কঞ্চি দিয়ে পিটিয়ে নির্যাতন করা হয়। এরপর ওই নির্যাতনের ভিডিওচিত্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে দেয়া হয়। নির্যাতনের সময় তারা গলায় থাকা স্বর্ণের চেইন, কানের দুল এবং ৯৫ হাজার টাকা মূল্যের একটি মোবাইল ফোন নিয়ে গেছে বলে অভিযোগ করেন ওই গৃহবধূ ।
এ ঘটনা নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রচার হলে প্রশাসনের টনক নড়ে। উপজেলা এবং থানা পুলিশ তৎপর হয়। মামলার প্রধান আসামি ইউপি সদস্য কাওসার চৌধুরীকে গ্রেপ্তার করতে পুলিশ সক্ষম হয়।
আরও পড়ুন: বাগেরহাটে দম্পতির আত্নহত্যা!
আপত্তিকর ভিডিও করে ব্ল্যাকমেইল, প্রবাসীর স্ত্রীর আত্মহত্যা
পঞ্চগড়ে প্রতিমা ভাঙচুর, ইউপি সদস্যসহ গ্রেপ্তার ২
পঞ্চগড়ে তিনটি কালিমন্দিরের ১০টি মূর্তি ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। বৃহস্পতিবার গভীর রাতে জেলার আটোয়ারী উপজেলার আলোয়াখোয়া ইউনিয়নে এই প্রতিমাগুলো ভাঙচুর করা হয়। শুক্রবার এ ঘটনায় এক ইউপি সদস্য প্রার্থীসহ দু’জনকে গ্রেপ্তার করেছে আটোয়ারী থানা পুলিশ। তারা দুজনই হিন্দুধর্মাবলম্বী।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন-শক্তি চন্দ্র পাল ও সনাতন চন্দ্র পাল। শক্তি চন্দ্র পাল বর্তমান ইউপি সদস্য ও আলোয়াখোয়া ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য প্রার্থী।
ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে ঘিরে হিন্দু ভোটারদের সমর্থন আদায়ের অপকৌশল ও অপর ইউপি সদস্য প্রার্থী শাহজাহান আলী টিএনওকে ফাঁসাতে প্রতিমা ভাঙচুর করা হতে পারে বলে পুলিশ প্রাথমিকভাবে ধারণা করছেন।
পুলিশ জানায়, আলোয়াখোয়া ইউনিয়নের বহুবাঁধ শ্মশান কালি মন্দির, দোমুরকী-ঝাকুয়াপাড়া কালী মন্দির এবং ঠাকুরপাড়া পুরানপাড়া কালি মন্দিরে গভীর রাতে প্রতিমা ভাঙচুর করা হয়। সকালে হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা পুজা অর্চনার জন্য মন্দিরে গেলে প্রতিমাগুলোর বিভিন্ন অংশ ভেঙ্গে মাটিতে পড়ে থাকতে দেখে। ভাঙচুর অবস্থা দেখে তারা পুলিশকে খবর দেয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ওই দুজনকে গ্রেপ্তার করে।
এ ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
আরও পড়ুন: পঞ্চগড়ে কুয়াশার চাদর ভেদ করে সূর্যোদয়
এই ঘটনার খবর পেয়ে পঞ্চগড়ের জেলা প্রশাসক মো. জহুরুল ইসলাম ও পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ইউসুফ আলী, সিআইডির ক্রাইম ইউনিটসহ প্রশাসনের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
এই ইউনিয়নের ৫নং ওয়াডের দয়াল চন্দ্র রায় জানান, শক্তি চন্দ্র পাল হিন্দু ভোটারদের সমর্থন আদায়ের জন্য মন্দিরে প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনা ঘটিয়েছেন। এটা কোন ভাবে মেনে নেয়া যায়না। এখানে আমরা হিন্দু-মুসলিম মিলেমিশে বসবাস করছি। এটা হিন্দু ধর্মের জন্য লজ্জার ব্যাপার।
ওই এলাকার বিপ্লব রায়, বিষ্ণু রায়, অনিমেষ জানান, ঘটনা যেই ঘটাক তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসন তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা নেবেন এমনটি আশা করছি। এ বিষয়ে ছাড় দেয়া ঠিক হবে না।
পঞ্চগড় জেলা পুজা উদযাপন পরিষদের সাধারন সম্পাদক বিপেন চন্দ্র রায় জানান, স্থানীয় নির্বাচনে প্রভাব খাটানোর জন্য প্রতিমা ভাঙচুর করা হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িতদের কঠোর শাস্তির দাবি জানান তিনি।
আলোয়াখোয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান প্রদিপ কুমার রায় জানান, সকালে আলোয়াখোয়া গ্রামের সনাতন ধর্মাবলম্বীরা আমাকে খবর দেয় প্রতিমা ভাঙচুর হয়েছে। আমি তাৎক্ষনিক ওই এলাকা পরিদর্শন করেছি,তবে কেন এই প্রতিমা ভাঙচুর হয়েছে এখনই বলা যাচ্ছে না।
আরও পড়ুন: পঞ্চগড়ে পুকুর থেকে নারীর লাশ উদ্ধার, স্বামী আটক
পঞ্চগড়ের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সার্কেল) মো. রাকিবুল ইসলাম এ ঘটনায় জড়িত দু’জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তদন্ত করা হচ্ছে। মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
পঞ্চগড়ের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ইউসুফ আলী জানান, রাতের কোন অংশে দুষ্কৃতিকারীরা প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনা ঘটিয়েছে। পুরো বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে। দু’জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এই ঘটনাটি তদন্তের বিষয়। সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে কে কারা এবং কেন ভাঙচুর চালিয়েছে। আমরা আশা করছি খুব শিগগিরই এর রহস্য উদঘাটন করা হবে।
পঞ্চগড়ের জেলা প্রশাসক মো. জহুরুল ইসলাম জানান,নির্বাচনকে ঘিরেই এ ঘটনা ঘটেছে। আমরা তদন্ত করছি। জড়িতদের দু’জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আরও কেউ জড়িত থাকলে তাদেরকেও আইনের আওতায় আনা হবে। আমরা সজাগ রয়েছি।
উল্লেখ্য, আগামী ২৮ নভেম্বর আটোয়ারী উপজেলার আলোয়া খাওয়া ইউনিয়নে তৃতীয় ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এ নির্বাচনে আলোয়াখোয়া ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ডে শক্তি চন্দ্র পাল টিউবওয়েল প্রতিকে এবং মো. শাহজাহান আলী টিএনও তালা প্রতীকে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
আরও পড়ুন: পঞ্চগড়ে শিশু ও নারীসহ ১১ রোহিঙ্গা আটক
গাইবান্ধায় ইউপি সদস্য হত্যাকারীর দায় স্বীকার
গাইবান্ধায় নবনির্বাচিত ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য আবদুর রউফ হত্যার দায় স্বীকার করেছে প্রধান আসামি আরিফ মিয়া। সোমবার বিকেলে অতিরিক্ত প্রধান বিচারিক হাকিম নজরুল ইসলামের আদালতে তিনি স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
রবিবার তাকে পঞ্চগড় জেলার বোদা উপজেলার পাঁচপীর গ্রাম থেকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। এরপর সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে তাকে গাইবান্ধা থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
গাইবান্ধা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) আব্দুর রউফ জানান, সে হত্যার দায় স্বীকার করেছে। এই হত্যাকান্ডের পরে গত শনিবার রাতে গাইবান্ধা সদর থানায় নিহতের বড়বোন মমতাজ বেগম বাদী হয়ে হত্যা মামলা করেন। মামলায় আরিফ মিয়াকে প্রধান আসামি করা হয়। এ ছাড়া অজ্ঞাত আরও ছয়-সাতজনকে আসামি করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: ঘুম থেকে ডেকে তোলায় বাবাকে পিটিয়ে হত্যা!
নিহত আবদুর রউফ গত বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত গাইবান্ধা সদর উপজেলার লক্ষ্মীপুর ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডে সাধারণ সদস্য পদে নির্বাচিত হন। পরদিন শুক্রবার রাত ১১টার দিকে প্রতিবেশি ও বন্ধু রুহুল আমিনের মোটরসাইকেলে লক্ষ্মীপুর বাজার থেকে বাড়ি ফিরছিলেন। এসময় লক্ষ্মীপুর ইউনিয়নের মাগুড়াকুটি গ্রামের আরিফ মিয়া পিছন থেকে ইউপি সদস্যের উপর অতর্কিত হামলা চালায়। পরে স্থানীয় লোকজন গুরুতর আহত অবস্থায় আবদুর রউফ মাস্টারকে উদ্ধার করে। তাকে গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালে নেয়ার পথে তিনি মারা যান।
আরও পড়ুন: ছেলের বিরুদ্ধে মাকে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ
গাইবান্ধায় নবনির্বাচিত ইউপি সদস্যকে পিটিয়ে হত্যা !
খুলনায় রুটি বিক্রেতা রিক্তা এখন ইউপি সদস্য
খুলনার ফুলতলা সদর ইউনিয়নে ফুটপাতের দোকানি থেকে সংরক্ষিত মহিলা আসনের ইউপি সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন রিক্তা ইসলাম (২৭) নামের এক নারী। বৃহস্পতিবার দ্বিতীয় দফা ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে (ইউপি)ফুলতলা সদর ইউনিয়নের চার, পাঁচ ও ছয় নম্বর ওয়ার্ড থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে সংরক্ষিত মহিলা আসন থেকে তিনি ইউপি সদস্য নির্বাচিত হন।
রিক্তা ওই ইউনিয়নের মো. লিয়াকত খাঁ’র মেয়ে। তারা বাবা পেশায় একজন চায়ের দোকানদার। আর স্বামী পয়গ্রামের বাসিন্দা ইমরান শেখ (৩০) টাইলস শ্রমিক। অষ্টম শ্রেণি পাস রিক্তা গত ছয়-সাত বছর ধরে রাস্তার পাশে রুটি বিক্রি করেন। একমাত্র মেয়ে তাবাচ্ছুম বুশরা স্থানীয় একটি মাদরাসার প্রথম শ্রেণিতে পড়ে।
এলাকাবাসী জানায়, রিক্তা খুবই গরীব, তিনি ফুলতলা বাজারের গরুহাট এলাকায় রাস্তার পাশে খুপড়ি ঘরে রুটির দোকান চালান। এলাকাবাসীরা তাকে নির্বাচনে দাঁড়াতে উৎসাহিত করেন।
আরও পড়ুন: দ্বিতীয় ধাপের ইউপি নির্বাচনে সহিংসতায় নিহত ৬
কোনও কাজই ছোট নয় বলে মনে করেন রিক্তা। তাইতো জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হওয়ার পরও যথারীতি দোকানে রুটি বানিয়ে বিক্রি করছেন তিনি। তবে আগের চেয়ে তার দোকানের ক্রেতা সংখ্যা বেড়েছে।
রিক্তার স্বামী ইমরান শেখ বলেন, এলাকার সবার দোয়া ও সহযোগিতায় তার স্ত্রী নির্বাচনে জিতেছে। বাকি ছয় প্রার্থীর সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে এক হাজার ৯৬৩ ভোট পেয়েছে জয়ী হয়েছে রিক্তা। এলাকার মানুষ ভালোবেসে যে দায়িত্ব দিয়েছেন, স্ত্রী যেন তার প্রতিদান দিতে পারে সেজন্য সবার সহযোগিতা চেয়েছেন তিনি।
এলাকাবাসীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে রিক্তা বলেন, আমার মতো গরীব মানুষকে যারা ভোট দিয়েছেন, তাদের কাছে আমি চীর ঋণী। নির্বাচনে আমার জয়ী হওয়াটা মেনে নিতে পারছিলেন না প্রতিদ্বন্দ্বী এক প্রার্থী। তিনি ফলাফল পাল্টানোর চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু পারেননি। এলাকার মানুষের জন্য কিছু করতে চাই। মানুষ যে ভালোবাসা দিয়েছে তার প্রতিদান দিতে চাই। এজন্য সবার সহযোগিতা কামনা করছি।
আরও পড়ুন: সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ ইউপি নির্বাচন করতে নিরাপত্তা বাহিনী কাজ করছে: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
ইউপি নির্বাচন: নরসিংদীতে সহিংসতায় নিহত বেড়ে ৩
ডুমুরিয়ায় ইউপি সদস্য হলেন তৃতীয় লিঙ্গের শাহিদা
খুলনা জেলার ডুমুরিয়ার ছয় নম্বর মাগুরাঘোনা ইউনিয়নের নারী সংরক্ষিত সদস্য পদে তৃতীয় লিঙ্গের শাহিদা বিবি (৪৩) ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি ইউনিয়নের চার,পাঁচ ও ছয় নম্বর ওয়ার্ডের সংরক্ষিত নারী সদস্য হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে জয়ী হন।
শাহিদা ডুমুরিয়ার ছয় নম্বর বেতাগ্রাম সদর ওয়ার্ডের দক্ষিণ চুকনগর গ্রামের আব্দুর রাজ্জাক মোড়লের মেয়ে। দীর্ঘদিন ধরে তারা এখানে বসবাস করছেন।
দ্বিতীয় দফা ইউপি নির্বাচনে ১১ নভেম্বর শাহিদা বিবি সংরক্ষিত ইউপি সদস্য হিসেবে বিজয়ী হয়েছেন। চারজন নারী প্রার্থীর সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে, মাইক প্রতীক নিয়ে বিশাল ব্যবধানে বিজয়ী হন তিনি। শাহিদা মাইক প্রতীকে পান দুই হাজার ৭৪০ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী লাইলা বেগম পেয়েছেন এক হাজার ৭১৪ ভোট।
বিজয়ী হওয়ায় আনন্দ প্রকাশ করে শাহিদা বলেন, জনগণের ভালোবাসায় আমি নির্বাচিত হয়েছি। আমি আমাদের অধিকার নিশ্চিত করার জন্য নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছিলাম। হিজড়া সম্প্রদায়ের লোকদের অধিকার আদায়ে সর্বোচ্চ চেষ্টা করব। আর সবসময়ই গরিব, দুঃখী ও বঞ্চিত লোকদের পাশে থাকব। আমি কোনওদিন কোন মানুষকে কটু কথা বলিনি। কাউকে বিরক্ত করিনি। যে কারণে মানুষ আমাকে মূল্যায়ন করেছে।
তিনি আরও বলেন, হিজড়া জনগোষ্ঠী নিয়ে মানুষের চিন্তা পাল্টে দিতে চাই। সমাজে আমরা অবহেলিত হওয়া সত্ত্বেও জনগণ আমাকে নির্বাচিত করে সমাজে একটি স্থান দিয়েছে। তাই এলাকার সব ভোটারদের কাছে আমি ঋণী। সংরক্ষিত তিনটি ওয়ার্ডে তৃতীয় লিঙ্গের আর একজন ভোটার ছিল মুক্তা মনি। সে সব সময় আমার নির্বাচনী কাজে সহযোগিতা করেছে। তার প্রতি আমি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। ভোটের দিন বিভিন্ন এলাকা থেকে ৭-৮ জন হিজড়া এসে আমার জন্য অনেক কষ্ট করেছে। তাদেরকেও অসংখ্য ধন্যবাদ।
আরও পড়ুন: গাইবান্ধায় ইউপি সদস্য হত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভ,সড়ক অবরোধ
শাহিদা বলেন, খুলনায় ইউপি নির্বাচনে আমি প্রথম বিজয়ী হয়েছি। আমার বিজয়ে জনগণের সাথে সাথে পিতা-মাতাও ভীষণ খুশি।
আগামীর পরিকল্পনা সম্পর্কে শাহিদা বলেন, এলাকার মানুষের জন্য কিছু করতে চাই। মানুষ যে ভালোবাসা দিয়েছে তার প্রতিদান দিতে চাই। এজন্য সবার সহযোগিতা চাই।
তৃতীয় লিঙ্গের একমাত্র ভোটার মুক্তা মনি বলেন, অনেক স্বপ্ন নিয়ে ভোটারদের দ্বারে দ্বারে গিয়ে শাহিদা বিবির পক্ষে ভোট চেয়েছি। তারা আমাদের মূল্যায়ন করেছে। এর চেয়ে আর বড় কিছুই চাওয়া পাওয়া নেই।
২০০৯ সালের ডিসেম্বরে হিজড়াদের ভোটাধিকার দেয়া হয়। ২০১৩ সালে হিজড়াদের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দেয়া সংক্রান্ত নীতিমালা মন্ত্রিসভার বৈঠকে অনুমোদন পায়। ২০১৪ সালের ২৬ জানুয়ারি হিজড়াদের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দিয়ে গেজেট প্রকাশ করে সরকার। ভোটার তালিকায় নারী ও পুরুষের পাশাপাশি তৃতীয় লিঙ্গ হিসেবে আরেকটি পরিচয় অন্তর্ভুক্তির সিদ্ধান্ত নেয় নির্বাচন কমিশন।
আরও পড়ুন: গাইবান্ধায় নবনির্বাচিত ইউপি সদস্যকে পিটিয়ে হত্যা !
নির্বাচনে জয়ী হওয়ার একদিন পরে চাঁদপুরে ইউপি সদস্যের মৃত্যু
গাইবান্ধায় ইউপি সদস্য হত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভ, সড়ক অবরোধ
গাইবান্ধার সদর উপজেলায় সদ্য বিজয়ী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য আব্দুর রউফ মাস্টারকে হত্যার ঘটনায় এলাকাজুড়ে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। প্রতিবাদে শনিবার সকালে গাইবান্ধা-সুন্দরগঞ্জ আঞ্চলিক সড়কের লক্ষ্মীপুর বাজার এলাকায় বিক্ষোভ করেছে বিক্ষুব্ধ জনতা। এ সময় তারা গাছের গুড়ি ফেলে ও টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে সড়ক অবরোধ করে। এতে সড়কের উভয় পাশে যানজটের সৃষ্টি হয়।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে কলেজছাত্রের লাশ উদ্ধার, এলাকাবাসীর বিক্ষোভ
এর আগে শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে আব্দুর রউফকে লক্ষ্মীপুর বাজার থেকে বাড়ি যাওয়ার পথে ভাঙা ব্রিজ নামক এলাকায় লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে আঘাত করে। গুরুতর আহত অবস্থায় গাইবান্ধা জেলা হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়।
এ বিষয়ে গাইবান্ধা পুলিশ সুপার মো. তৌহিদুল ইসলাম জানান, পূর্ব শত্রুতার জের ধরে আব্দুর রউফের ওপর হামলা হতে পারে। এছাড়া হত্যার ঘটনায় নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে সদর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: ট্রেন চালুর দাবিতে কুড়িগ্রামে বিক্ষোভ
পুলিশ সুপার আরও জানান, হত্যাকারী আরিফ মিয়াকে গ্রেপ্তার ও ফাঁসির দাবিতে বিক্ষোভ ও সড়ক অবরোধ করেছে বিক্ষুব্ধ জনতা।
গাইবান্ধায় নবনির্বাচিত ইউপি সদস্যকে পিটিয়ে হত্যা !
গাইবান্ধার সদর উপজেলায় নবনির্বাচিত এক ইউপি সদস্যকে পিটিয়ে হত্যার খবর পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় একজনকে আটক করেছে পুলিশ।
শুক্রবার রাত ১১টার দিকে উপজেলার লক্ষীপুর ইউনিয়নের গোবিন্দপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত আব্দুর রউফ ওই গ্রামের ফজলুল হকের ছেলে ও লক্ষীপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক।
আরও পড়ুন: সাবেক নারী ইউপি সদস্যের বাড়ির সামনে ইউপি সদস্যের লাশ
নিহতের পরিবারের বরাতে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি, তদন্ত) আবদুর রউফ জানান, শুক্রবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে আব্দুর রউফ তার প্রতিবেশি রুহুল আমিনের সাথে মোটরসাইকেলযোগে লক্ষ্মীপুর বাজার থেকে বাড়ি ফিরছিলেন। পথে বাড়ির কাছাকাছি একটি ভাঙা ব্রিজ পায়ে হেঁটে পার হওয়ার সময় একই গ্রামের হায়দার আলীর ছেলে আরিফ মিয়া তার ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। কিছু বুঝে ওঠার আগেই রউফের মাথায় রড দিয়ে কয়েকটি আঘাত করে পালিয়ে যান তিনি।
ঘটনার পর স্থানীয় লোকজন রউফকে উদ্ধার করে জেলা হাসপাতালে নিয়ে গেলে রাত সাড়ে ১১টার দিকে চিকিৎসক তাকে মৃত্যু ঘোষণা করেন।
ওসি জানান, ঘটনার পর পুলিশ অভিযান চালিয়ে রেজাউল নামে এক ব্যক্তিকে আটক করেছে।
আরও পড়ুন: ইউপি নির্বাচন: কুমিল্লায় সহিংসতায় যুবক নিহত
গত বৃহস্পতিবারের ইউনিয়ন নির্বাচনে লক্ষ্মীপুর ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের নবনির্বাচিত ইউপি সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হয়ে ছিলেন নিহত আব্দুর রউফ।