শিক্ষা
এ বছর এসএসসি পরীক্ষা ১১টায় শুরু হবে: শিক্ষামন্ত্রী
মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) ও সমমান পরীক্ষাকে সামনে রেখে ১২ সেপ্টেম্বর থেকে ২ অক্টোবর পর্যন্ত সারাদেশে সব কোচিং সেন্টার বন্ধ থাকবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।
তিনি বলেন, এবারের এসএসসি ও সমমান পরীক্ষা সকাল ১০টার পরিবর্তে বেলা ১১টায় শুরু হবে। যানজটের কারণে পরীক্ষার সময় পিছিয়ে দেয়া হয়েছে। পরীক্ষার সময় ৩ ঘণ্টা থেকে কমিয়ে ২ ঘণ্টা করা হয়েছে।
সোমবার সচিবালয়ে আসন্ন এসএসসি ও সমমান পরীক্ষা ২০২২ পরীক্ষা সুষ্ঠু, নকলমুক্ত ও ইতিবাচক পরিবেশ সম্পন্নের লক্ষ্যে জাতীয় মনিটরিং ও আইনশৃংখলা কমিটির সভা শেয়ে শিক্ষামন্ত্রী এসব তথ্য জানান।
পড়ুন: শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ২দিন ছুটির সিদ্ধান্ত এখনও চূড়ান্ত হয়নি: শিক্ষামন্ত্রী
তিনি জানান, এ বছর এসএসসি পরীক্ষা তিন ঘণ্টার পরিবর্তে দুই ঘণ্টায় হবে। পরীক্ষার এমসিকিউ অংশের সময়কাল ২০ মিনিট এবং লিখিত অংশ এক ঘন্টা ৪০ মিনিট।
সকল পরীক্ষার্থীকে পরীক্ষা শুরুর ৩০ মিনিট আগে পরীক্ষার হলে প্রবেশের জন্য অনুরোধ করা হয়েছে এবং পরীক্ষা সচিব ছাড়া অন্য কাউকে মোবাইল ফোন নিয়ে যেতে দেয়া হবে না।
সময়সূচি অনুযায়ী, এসএসসি ও সমমান পরীক্ষা ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হয়ে ১৮ অক্টোবর শেষ হবে।
পড়ুন: কোনো শিক্ষক আর নিজের ক্লাসের শিক্ষার্থীকে কোচিংয়ে পড়াতে পারবে না: শিক্ষামন্ত্রী
এ বছর প্রায় ২০ লাখ ২১ হাজার ৮৬৮ জন শিক্ষার্থী এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় অংশ নেবে বলে আশা করা হচ্ছে। গত বছর এই সংখ্যা ছিল ২২ লাখ ৪৩ হাজার ২৫৪ জন।। পরীক্ষার্থীর সংখ্যা কমেছে ২ লাখ ২১ হাজার ৩৮৬ জন।
মন্ত্রী বলেন, চলতি বছর নয়টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডের অধীনে এসএসসি পরীক্ষায় প্রায় ১৫ লাখ ৯৯ হাজার ৭১১ জন, মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডের অধীনে দাখিল পরীক্ষায় ২ লাখ ৬৮ হাজার ৪৯৫ জন এবং বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে এক লাখ ৫৩ হাজার ৬৬২ পরীক্ষায় অংশ নেবে।
সারাদেশে এসএসসি পরীক্ষার জন্য প্রায় ৩ হাজার ৭৯০টি কেন্দ্র নির্ধারণ করা হয়েছে।
এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা ১৯ জুন শুরু হওয়ার কথা থাকলেও দেশের বন্যা পরিস্থিতির কারণে ১৭ জুন তা স্থগিত করা হয়।
আরও পড়ুন: ধর্মীয় শিক্ষা ‘তুলে দেয়া হচ্ছে’সেটি সঠিক নয়: শিক্ষামন্ত্রী
শাবিপ্রবিতে নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতে সেমিনার
সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শাবিপ্রবি) নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতে আইন, বিধি ও প্রবিধিমালার প্রয়োগ শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার সকাল ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের মিনি অডিটরিয়ামে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ সিলেট জেলা কার্যালয়ের আয়োজনে সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন শাবিপ্রবি উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ।
বক্তব্যে তিনি বলেন, নিরাপদ খাদ্য গ্রহণের ক্ষেত্রে সব থেকে বেশি যেটা প্রয়োজন তা হচ্ছে সচেতনতা। দেশে খাদ্যের মান যাচাইয়ের জন্য বিএসটিআই আছে। তবে খাদ্যের প্যাকেটের ওপরে লেভেল লাগিয়ে দেয়ার মধ্যেই যেন তা সীমাবদ্ধ না থাকে। যথাযথ কর্তৃপক্ষের উচিৎ খাদ্যের মান যাচাই করে তা বাজারকরণ করা।
আরও পড়ুন: বিদ্যুৎ সাশ্রয়ে সরকারকে যেভাবে সহযোগিতা করবে শাবিপ্রবি
উপাচার্য বলেন, আমরা খুবই আনন্দিত যে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে ফুড ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে একটি বিভাগ আছে। তারা দেশ ও বিদেশে খাদ্য নিয়ে গবেষণা করে যাচ্ছে। আমাদের দেশে খাদ্য সামগ্রীতে যে বিষাক্ত কেমিকেল মিশানো হতো তা থেকে আমরা অনেকটা বেরিয়ে এসেছি। আশাকরি নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ ভেজালমুক্ত খাবারের ক্ষেত্রে আরও বেশি নজরদারি বাড়াবে।
আরও পড়ুন: চা শ্রমিকদের মজুরি ২০১৯ সালেই বৃদ্ধি করা উচিৎ ছিল: গবেষক আশ্রাফুল
বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের যুগ্মসচিব মো.রেজাউল করিম এনডিসির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শাবিপ্রবির কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. আনোয়ারুল ইসলাম, পরিচালক ছাত্র উপদেশ ও নির্দেশনা অধ্যাপক আমিনা পারভীন, বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের সচিব আব্দুন নাসের খান।
ধর্মীয় শিক্ষা ‘তুলে দেয়া হচ্ছে’সেটি সঠিক নয়: শিক্ষামন্ত্রী
শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, দেশের পাঠ্যক্রম থেকে ধর্মীয় শিক্ষা ‘তুলে দেয়া হচ্ছে’বলে যে খবর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়ানো হয়েছে সেটি সঠিক নয়।
শনিবার জাতীয প্রেসক্লাবে এক অনুস্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
আরও পড়ুন:ঘাতকরা আরেকটি ১৫ আগস্ট ঘটানোর চেষ্টা করছে: শিক্ষামন্ত্রী
তিনি বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের একটি বিশেষ মহল সরকার বিরোধী প্রচারণার অংশ হিসেবে অপপ্রচার চালাচ্ছে। আর তারা কোন কিছু খুঁজে পাচ্ছে না বলেই এখন নতুন শিক্ষাক্রম নিয়ে অপপ্রচারের চেষ্টা করছে।
তিনি আরও বলেন, ধর্মশিক্ষা বাদ দিয়ে দেয়া হয়েছে এটি একেবারে সত্য নয়। আমরা এরই মধ্যে নতুন শিক্ষাক্রমের মাধ্যমে শিক্ষার পরিধি আরও প্রসারিত করব এবং নতুন শিক্ষাক্রমের মাধ্যমে জ্ঞান-দক্ষতা ও মূল্যবোধ প্রসারিত করব।
এছাড়া সেখানে ধর্ম-নৈতিকতা ও মূল্যবোধ এগুলো অবিচ্ছেদ্য অংশ সেখানে ধর্মশিক্ষা বাদ দেয়ার প্রশ্নই আসে না।
আরও পড়ুন:শিক্ষার্থীরা আনন্দের মধ্যদিয়ে সক্রিয় শিখন পদ্ধতিতে লেখাপড়া শিখবে: শিক্ষামন্ত্রী
বিশ্ববিদ্যালয় হলো জ্ঞান সৃষ্টির জায়গা: শিক্ষামন্ত্রী
ঘাতকরা আরেকটি ১৫ আগস্ট ঘটানোর চেষ্টা করছে: শিক্ষামন্ত্রী
ঘাতকরা আরেকটি ১৫ আগস্ট ঘটানোর চেষ্টা করছে বলে মন্তব্য করেছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।
তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ২১ বার হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে, আজও তারা আরেকটি ১৫ আগস্ট ঘটানোর জন্য চেষ্টা করছে। একাত্তরের ঘাতক, পঁচাত্তরের ঘাতক, ২০০৪’র গ্রেনেড হামলাকারীরা এবং ২০১৩-২০১৪ এর অগ্নি সন্ত্রাসীরা এক ও অভিন্ন। এজন্য সবাইকে সজাগ থাকতে হবে। নিজেদের মধ্যে ঐক্য বজায় রাখতে হবে।’
শুক্রবার দুপুরে পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় আয়োজিত বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৭তম শাহাদাতবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।
পড়ুন: পাঠ্যপুস্তকে ধর্ম নিয়ে কোন কিছু পরিবর্তন হয়নি: শিক্ষামন্ত্রী
দীপু মনি বলেন, বঙ্গবন্ধু ছিলেন বাংলার মাটি আর মানুষের সন্তান। অনেক নেতা থাকলেও বঙ্গবন্ধু বাঙালির হাজার বছরের বঞ্চনা, বৈষম্য, নিগ্রহ, শোষিত হওয়া, দারিদ্র্য ও সাম্প্রদায়িকতা দেখেছিলেন। তিনি বৈষম্য, বঞ্চনা ও অর্থনৈতিক মুক্তি চেয়েছিলেন। তিনি বাঙালির মুক্তির প্রাণের তৃষ্ণাকে ধারণ করে আন্দোলন সংগ্রাম করে বাঙালি জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করে স্বাধীনতা এনে দেন। তিনি বাঙালির প্রাণের আকাঙ্ক্ষা ধরতে পেরেছিলেন। তাই ২৪ বছর আন্দোলন সংগ্রাম করে বাঙালির আর নিজের মুক্তির তৃষ্ণা এক কাতারে এনে ৭ মার্চের ভাষণ দান অতঃপর স্বাধীনতার আন্দোলন।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর মত আর কেউ বাংলা আর বাঙালিকে ধারণ করতে পারেননি। বঙ্গবন্ধুর প্রিয় শব্দ ছিল মুক্তি। বাঙালির হাজার বছরের কাঙ্খিত মুক্তি তিনি এনে দিয়েছিলেন। বাঙালি রাষ্ট্রের বিনির্মাণ, অর্থনৈতিক মুক্তি, সাংস্কৃতিক তথা মুক্তির দূত হয়ে তিনি বাঙালি ও বাংলাদেশকে গড়ে তুলেছিলেন। শেখ মুজিবের নামে বাংলাদেশ পরিচিতি লাভ করেছে। শেখ মুজিব মানেই বাংলাদেশ। এ জন্য বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ জাতি-রাষ্ট্রের মহানায়ক।
পড়ুন: বিশ্ববিদ্যালয় হলো জ্ঞান সৃষ্টির জায়গা: শিক্ষামন্ত্রী
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, দেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় ব্যাপক পরিবর্তন নিয়ে আসা হচ্ছে। আমরা শিক্ষা ব্যবস্থায় ব্যাপক পরিবর্তন আনছি। শিক্ষাকে আনন্দময় করতে চেষ্টা করছি। শিক্ষা যেন মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় হয় সেই চেষ্টা করছি। এছাড়া শিক্ষা যেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবান্ধব হয় সেই চেষ্টাও করছি।
পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. হাফিজা খাতুনের সভাপতিত্বে ‘বঙ্গবন্ধু: বাংলাদেশ জাতি-রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার মহানায়ক’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান আলোচক ছিলেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. মশিউর রহমান।
সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন পাবনা-৪ আসনের সংসদ সদস্য মুক্তিযোদ্ধা মো. নুরুজ্জামান বিশ্বাস, পাবনা-২ আসনের সংসদ সদস্য আহমেদ ফিরোজ কবির, স্কয়ার টয়লেট্রিজ লিমিটেড ও স্কয়ার ফুড অ্যান্ড বেভারেজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক অঞ্জন চৌধুরী। স্বাগত বক্তব্য দেন উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. এস.এম মোস্তফা কামাল খান।
আরও পড়ুন: রাজশাহীতে কলেজ অধ্যক্ষ লাঞ্ছিতের ঘটনায় শিক্ষামন্ত্রী বিব্রত
জার্মানিতে বিনামূল্যে স্নাতকোত্তর পড়ার জন্য কিভাবে আবেদন করবেন
গবেষণা নির্ভর বিদ্যাপীঠের জন্মস্থান জার্মানি জ্ঞানের এক সমৃদ্ধশালী বিশ্বকোষ। ইউরোপীয়ান দেশটির ১৩টি বিশ্ববিদ্যালয় নিজেদের জায়গা ধরে রেখেছে কিউএস (কোয়াককোয়ারেল সাইমন্ডস) র্যাঙ্কিং-এ। সবচেয়ে চমকপ্রদ ব্যাপার হলো- বিশ্বমানের শিক্ষাব্যবস্থার অংশ হতে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের কোন অর্থই খরচ করতে হয় না। দেশটির পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো সম্পূর্ণ বিনামূল্যে পনেরশটিরও বেশি বিষয়ে পড়াশোনার সুযোগ দিয়ে আসছে। এগুলোর মধ্যে প্রকৌশল, কম্পিউটার বিজ্ঞান, ব্যবসায় ব্যবস্থাপনা, এবং সাংস্কৃতিক অধ্যয়নের মতো অধিক চাহিদা সম্পন্ন কোর্সগুলোই প্রধান, যেখানে উদ্ভাবনকে উৎসাহিত করা হয়। আজকের আর্টিকেলটি আলোচনা হবে জার্মানিতে বিনামূল্যে স্নাতকোত্তরের জন্য আবেদন পদ্ধতি নিয়ে।
জার্মানিতে বিনামূল্যে স্নাতকোত্তরের জন্য পর্যায়ক্রমিক আবেদন পদ্ধতি
প্রথম ধাপ: জার্মানিতে স্নাতকোত্তর নিয়ে যথেষ্ট জ্ঞানার্জন ও পরিকল্পনা
আবেদন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার জন্য অনেক আগে থেকেই মাস্টার্স ও পিএইচডির ব্যাপারে যথেষ্ট তথ্য সংগ্রহ করতে হবে। আর এই তথ্যগুলোই তাৎক্ষণিক পরিকল্পনা তৈরিতে সহায়তা করবে। প্রথমেই নিশ্চিত হতে হবে, শিক্ষার্থীর স্নাতক করা বিষয়টির উপর স্নাতকোত্তর করার সুযোগ জার্মানির বিখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলো দিচ্ছে কিনা। খুব সহজে নিজের পছন্দের বিষয়টি খুঁজে নেয়ার জন্য কমুনিটি ওয়েবসাইট ডাড-এর সাহায্য নেয়া যেতে পারে। বিনাখরচে পড়ার জন্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় নির্বাচনের পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়টির শহরের প্রতিও নজর দেয়া উচিত। স্বাভাবিক ভাবেই উন্নত শহরে চাকরির ব্যবস্থা সহজসাধ্য হয়ে থাকে।
কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ে রেস্ট্রিক্টেড ক্যাটাগরির কিছু কোর্স থাকে, যেগুলোতে ভর্তির আসন সংখ্যা থাকে সীমিত। এখানে সবচেয়ে সেরা প্রার্থীদের ভেতর থেকেই বাছাই করা হয়ে থাকে। আর কিছু থাকে নন-রেস্ট্রিক্টেড প্রোগ্রাম। এখানে তাদের ওয়েবসাইটে উল্লেখিত আবেদনের নূন্যতম যোগ্যতা পূরন করলেই অফার-লেটার পাওয়া যায়। তাই বিশ্ববিদ্যালয় ও কোর্স নির্বাচনের সময় এই রেস্ট্রিক্টেড ও নন-রেস্ট্রিক্টেড বিষয়টি মাথায় রাখতে হবে।
পড়ুন: নরওয়েতে বিনামূল্যে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভের উপায়
তারপরেই আসছে খরচেই বিষয়টি। পড়াশোনার খরচ না থাকলেও একজন শিক্ষার্থী জার্মানিতে যেয়ে পড়াশোনার সময় প্রথম বছর তার থাকা-খাওয়ার খরচ চালাতে পারবে কিনা তার জন্য সিকিউরিটি মানির ব্যবস্থা করতে হয়। এই অঙ্কটি এখন পর্যন্ত ১০,৩৩২ ইউরো বা প্রায় ১০ লক্ষ টাকার কাছাকাছি হলেও, সামনের উইন্টার সেশন অর্থাৎ ২০২৩-এর শিক্ষার্থীদের জন্য ১১,১৭২ ইউরো বা ১০ লক্ষ ৬৭ হাজার ৬৬ টাকা হতে যাচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অফার লেটার পাবার পর ভিসা হওয়ার আগে জার্মানিতে নির্দিষ্ট ব্যাংকে এই টাকাটা পাঠিয়ে দিতে হয়। খুব কম সময়ের মধ্যে এতগুলো টাকা একসাথে ব্যবস্থা করা খুব কঠিন ব্যাপার। তাই মনস্থির করার পর পরই এই টাকা ব্যবস্থা করার চেষ্টা শুরু করতে হবে।
শিক্ষার্থীকে বাংলাদেশ থেকেই জার্মানির নির্দিষ্ট ব্যাংকে অ্যাকাউন্ট খুলে টাকাটা পাঠাতে হয়, যেটা শিক্ষার্থীর নামেই ব্লক্ড অ্যাকাউন্ট হিসেবে জমা থাকে। শিক্ষার্থীকে জার্মানিতে যাওয়ার পর প্রতি মাসে ৮৬১ ইউরো করে এক বছরে পুরো টাকাটা তুলতে পারবে। পূর্ব পরিকল্পনার সময় এভাবে বিশ্ববিদ্যালয় নির্বাচন ও খরচের বিষয়গুলো নিয়ে স্পষ্ট ধারণা নিতে হবে।
জার্মানির বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সাধারণত প্রতি বছরে ২টি সেশনে ভর্তির জন্য আবেদন করা যায়। একটি সামার সেশন; যেখানে আবেদনের সময়সীমা থাকে ১ ডিসেম্বর থেকে ১৫ জানুয়ারী পর্যন্ত। দ্বিতীয়টি হলো উইন্টার, এবং এখানে আবেদন করতে ১ মে থেকে ১৫ জুলাইয়ের মধ্যে। পরিকল্পনা অনুযায়ী আবেদনের ক্রিয়াকলাপ শুরু করার সময় এই সময়সীমার দিকে সতর্ক দৃষ্টি রাখা আবশ্যক।
পড়ুন: উচ্চশিক্ষায় দেশের বাইরে যেতে প্রস্তুতির ধাপগুলো জেনে নিন
দ্বিতীয় ধাপ: আইইএলটিএস সহ প্রয়োজনীয় অন্যান্য টেস্ট
জার্মানিতে প্রায় সব স্নাতকোত্তর কোর্সই স্থানীয় ভাষার পাশাপাশি ইংরেজি ভাষায় পড়ানো হয়। জার্মানি ভাষা শেখাটাতে স্বাভাবিক ভাবেই পড়াশোনার পাশাপাশি পার্ট টাইম জবে সুবিধা পাওয়া যায়। তবে ইংরেজি বলতে পারা লোকদের জন্যও জার্মানি বেশ সাবলীল। তাই নূন্যতম ৬.৫ আইইএলটিএস স্কোর যথেষ্ট জার্মানির শিক্ষা ব্যবস্থা ও জীবন ধারণের সাথে সম্পৃক্ত হওয়ার জন্য। তবে কোন কোন বিশ্ববিদ্যালয় বিষয়ের উপর নির্ভর করে জিআরই বা জিম্যাটও চাইতে পারে। এর জন্য আগেই বিশ্ববিদ্যালয় নির্বাচনের পর বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব ওয়েবসাইট থেকে চাহিদাগুলো জেনে নিতে হবে।
তৃতীয় ধাপ: প্রয়োজনীয় কাগজপত্র যোগাড়
→ (অনার্স, বিএসসি, বিবিএ, বিএ) স্নাতক সহ বিগত সকল একাডেমিক ডিগ্রীর সনদ ও ট্রান্সক্রিপ্ট
(স্টাডি গ্যাপ সর্বোচ্চ ৪ বছরের বেশি গ্রহণযোগ্য নয়)
→ যারা এখনো গ্রেডিং সিস্টেমের আওতাভুক্ত হননি তাদের জন্য মিনিমাম পাসিং গ্রেড সংযুক্ত করতে হবে
→ পাসপোর্ট
→ আইইএলটিএস সনদ
→ স্টাডি প্ল্যান সহ মোটিভেশন লেটার
→ ২টি রিকমেন্ডেশন লেটার (যে বিষয়ে জার্মানিতে পড়তে যাওয়া হচ্ছে সে বিষয়ের উপর শিক্ষার্থীর নিজের স্নাতক করা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকের নিকট থেকে ১টি, আর আরেকটি ব্যাচেলর করা বিশ্ববিদ্যালয়ের সংশ্লিষ্ট ডিপার্টমেন্টের ডিনের কাছ থেকে)
→ জার্মানির ব্যাঙ্কে ব্লক্ড অ্যাকাউন্টের নথি
→ ইউরো পাস সিভি
এছাড়াও কোন কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে আরো কিছু কাগজপত্র দরকার হতে পারে। এর জন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর নিজস্ব ওয়েবসাইট ভালো করে অধ্যয়ন করে নিতে হবে। সকল কাগজপত্র যোগাড় করে পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়, শিক্ষা বোর্ড বা বিশ্ববিদ্যালয়, শিক্ষা মন্ত্রনালয়, এবং ঢাকার জার্মান এম্ব্যাসি থেকে সত্যায়ন করতে হবে। অথবা বিকল্প হিসেবে নোটারি করা যেতে পারে।
পড়ুন: দেশের বাইরে পড়তে যাওয়ার আগে যে অভ্যাসগুলো গড়ে তোলা জরুরি
চতুর্থ ধাপ: আবেদন পদ্ধতি
জার্মানিতে উচ্চশিক্ষার আবেদনের জন্য সবচেয়ে সহজ ও বিনাখরচের মাধ্যম হলো বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর স্ব স্ব ওয়েবসাইটে গিয়ে আবেদন করা। এর জন্য প্রয়োজনীয় সব কাগজপত্র আগে থেকেই স্ক্যান করে রাখতে হবে। তবে কোন কোন বিশ্ববিদ্যালয় হার্ড কপি চাইতে পারে। সেক্ষেত্রে ফেডেক্স বা ডিএইচএলের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের ঠিকানায় কুরিয়ার করতে হবে। এখানে কিছু খরচ করতে হবে। এছাড়াও ইউনি অ্যাসিস্টের মাধ্যমেও জার্মানির বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির আবেদন করা যায়। এক্ষেত্রে ইউনি অ্যাসিস্টের ওয়েবসাইটে গিয়ে আবেদন করতে হবে। এখানে আবেদনপত্রসহ সত্যায়িত বা নোটারী করা কাগজগুলোর এক সেট ইউনি অ্যাসিস্টের এর ঠিকানায় ডিএইচএল বা ফেডেক্স দিয়ে পাঠাতে হয়। এখানে বেশ ভালো পরিমাণ খরচ হয়ে যায়।
একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদনের ক্ষেত্রে যেটার ডেডলাইন খুব কাছাকাছি, স্বাভাবিক ভাবেই সেটাতে আগে আবেদন করতে হবে। সবগুলো বিশ্ববিদ্যালয়ের আবেদনের ইন্টারফেস এক রকম নয়। কিন্তু যে তথ্যগুলো প্রদান করতে হয় তা ঘুরে ফিরে প্রায়ই একই। তাই এক্ষেত্রে একটু সাবধানতার সাথে আবেদন ফর্ম পূরন করলে তেমন জটিলতার সম্মুখীন হতে হবে না। প্রয়োজনীয় কাগজপত্রের স্ক্যানকপি আপলোড সহ যাবতীয় তথ্য প্রদান করলেই আবেদন সম্পন্ন হয়ে যাবে। এখানে কোন রকম টাকাপয়সা খরচ হবে না, বরঞ্চ সাথে সাথেই বিশ্ববিদ্যালয় আবেদনপত্র পেয়ে যাবে। এমনকি কৃতকার্য হলে অফার-লেটারটিও খুব কম সময়েই শিক্ষার্থীর ইমেইলে চলে আসবে।
পঞ্চম ধাপ: ভিসার জন্য আবেদন
বাংলাদেশের জার্মান এম্বেসির বর্তমান অবস্থা বেশ নাজুক। আজকে এপায়নমেন্টের জন্য রেজিষ্ট্রেশন করলে ইন্টার্ভিউয়ের ডাক পেতে পেতে ১০ থেকে ১২ মাস লেগে যাচ্ছে। এই বিড়ম্বনাটি শিক্ষার্থীর স্বপ্ন পুরনের সকল প্রচেষ্টা এক নিমেষেই ভেঙে গুড়িয়ে দিতে পারে। তাই এই সময় হিসাব করে অন্যান্য আনুষঙ্গিক কাজগুলো করার মুহুর্তে আগে ভাগেই রেজিষ্টেশন করে রাখা ভালো। যারা ২০২৩-এর উইন্টার সেশনটা ধরতে চান তাদের জন্য সর্বোত্তম উপায় হচ্ছে বছরের শুরুতে তথা জানুয়ারিতেই এপায়নমেন্টের রেজিষ্টেশন করে রাখা। তাহলে অক্টোবর থেকে নভেম্বর নাগাদ ভিসা ইন্টার্ভিউয়ের ডেট পাওয়া যেতে পারে।
জার্মান এম্ব্যাসী থেকে ইন্টার্ভিউ ডেট দেয়ার পূর্বে যাবতীয় কাগজপত্রের সফট-কপি চেয়ে শিক্ষার্থীকে ইমেইল করা হবে। এর ৭ দিনের মধ্যে ঐ মেইলের রিপ্লাইয়ে সব কাগজপত্র পাঠিয়ে দিতে হবে। দরকারি কাগজপত্রগুলো হলো-
→ ইনরোলমেন্ট সনদ
→ আবেদনকারির সম্প্রতি তোলা বায়োমেট্রিক্যাল পাসপোর্ট সাইজ ছবির ৩ কপি (৩ টি ছবি এক পেজে নিয়ে পিডিএফ করে পাঠানো যেতে পারে)
→ শিক্ষার্থীর স্বাক্ষর সহ সম্পূর্ণ ভাবে পূরনকৃত ভিসা আবেদন ফর্ম
→ পাসপোর্ট
→ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ভর্তির অফার লেটার
→ স্নাতক সহ বিগত সকল একাডেমিক ডিগ্রীর সনদ ও ট্রান্সক্রিপ্ট
→ আইইএলটিএস সনদ
→ ব্লক্ড অ্যাকাউন্টের প্রমাণপত্র
→ ৬ মাসের ট্রাভেল ইন্স্যুরেন্স
→ মোটিভেশন লেটার
→ সম্মতির ঘোষণাপত্র
পড়ুন: অস্ট্রেলিয়াতে উচ্চশিক্ষার জন্য স্কলারশিপ পাওয়ার উপায়
সবগুলো স্ক্যান করা ফাইলকে একসাথে করে একটি ১০ মেগাবাইটের পিডিএফ ফাইল বানিয়ে মেইল করতে হবে। ভাগ্য ভালো থাকলে কাগজপত্র ইমেইলের সাথে সাথেই ঐ দিনই ইমেইল অথবা ফোন করে ইন্টারভিউয়ের ডেট জানিয়ে দিতে পারে।
অতঃপর ভিসা ইনটারভিউয়ের ডেট পাওয়ার পর ইমেইল করা প্রতিটি কাগজপত্রের মুল কপি সঙ্গে নিয়ে এম্ব্যাসিতে যেতে হবে। অনলাইন সফ্ট কপিগুলোর ২ সেট সাদাকালো ভাল মানের অফসেট কাগজে প্রিন্ট করে নিয়ে যেতে হবে।
সাধারণত ইন্টারভিউয়ের দিন থেকে ২৫ কর্মদিবসের মধ্যেই ভিসা দিয়ে দেয়। তবে কোন কোন ক্ষেত্রে কমবেশি হতে পারে। পাসপোর্ট সংগ্রহের ইমেইল পাওয়ার পর ভিসা ইন্টার্ভিউয়ের সময়ে যে কাগজ দিয়েছিলো, সেটা নিয়ে এম্ব্যাসিতে গেলেই ভিসা হাতে পাওয়া যাবে।
শেষাংশ
ব্যবহারিক জ্ঞান ও গবেষণাধর্মী কাজে উৎসাহ প্রদানের লক্ষ্যেই জার্মানিতে বিনামূল্যে স্নাতকোত্তর পড়ার এই উদ্যোগ। অন্যান্য আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের ন্যায় বেশ উল্লেখযোগ্য সংখ্যক বাংলাদেশি গত কয়েক বছর ধরে সফলতার সঙ্গে পড়াশোনা করছেন জার্মানিতে। ফলশ্রুতিতে বাংলাদেশে গুরুত্ব পাচ্ছে জার্মান ভাষা শিক্ষার। এরই ধারাবাহিকতায় ইংরেজির মত জার্মান ভাষারও শিক্ষা ও চর্চার জন্য সৃষ্টি হয়েছে অনেক সুযোগ। তবে ভিন্ন সংস্কৃতির এই দেশটিতে পড়তে যাওয়ার জন্য যে বিষয়টি সবচেয়ে বেশি দরকার সেটি হচ্ছে ধৈর্য্য। জার্মানিতে উচ্চশিক্ষা সহজলভ্য হলেও পদে পদে কঠিন পরীক্ষা দিতে হবে। বিশেষ করে জার্মানির পরিবেশের সাথে মানিয়ে নেয়ার জন্য আবেদনের মুহুর্ত থেকেই পূর্ব প্রস্তুতি নিয়ে রাখতে হবে।
পড়ুন: সুইজারল্যান্ডে উচ্চশিক্ষায় স্কলারশিপ পাওয়ার উপায়
নরওয়েতে বিনামূল্যে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভের উপায়
প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য, পড়শোনার কাঙ্ক্ষিত পরিবেশ এবং ক্যারিয়ারের সুব্যবস্থা থাকার কারণে বিদেশে পড়তে চাওয়া শিক্ষার্থীদের প্রিয় পছন্দ নিশীথ সূর্যের দেশ নরওয়ে। স্কলারশিপের কোটা প্রকল্প বর্তমানে না থাকলেও, বিদেশি মেধাবী শিক্ষার্থীদের জন্য বিনামূল্যে স্নাতকোত্তরের সুবিধা রেখেছে নরওয়েজিয়ান সরকার। অন্যান্য বহিরাগতদের ন্যায় বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরাও নিজেদের যোগ্যতায় অধ্যয়ন করছে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের (ইইউ) এই সদস্য দেশটির পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে। শুধুমাত্র নামমাত্র রেজিস্ট্রেশন ফি দিয়ে নিজেদের পছন্দমত ইংরেজি ভাষার মাস্টার্স কোর্সগুলো করতে পারছে। এবার নরওয়েতে বিনামূল্যে স্নাতকোত্তর করার জন্য আবেদনের প্রতিটি পর্যায় জেনে নেয়া যাক।
নরওয়েতে বিনামূল্যে স্নাতকোত্তর করার জন্য পর্যায়ক্রমিক আবেদন পদ্ধতি
প্রথম ধাপ: সঠিক তথ্য সংগ্রহ ও পরিকল্পনা
যে কোনো কাজের জন্যই সবচেয়ে প্রয়োজনীয় বিষয়টি হচ্ছে পূর্বপ্রস্তুতি, যাকে সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে পারে সেই বিষয়ে যথাযথ জ্ঞানার্জন বা তথ্য সংগ্রহ। সেখানে সম্পূর্ণ অপরিচিত একটি দেশে যখন পড়তে যাওয়া হচ্ছে, তখন অভিবাসনের যাবতীয় খুঁটিনাটি ভালো করে জেনে নেয়া আবশ্যক।
সবার প্রথমে নিশ্চিত হতে হবে সেই দেশটিতে যাওয়ার পেছনে শিক্ষার্থীর আসল উদ্দেশ্য সম্পাদনের ব্যাপারে। তাই এই পর্যায়ে শিক্ষার্থী যে বিষয়ে মাস্টার্স করতে ইচ্ছুক সে বিষয়টি সেই দেশের নামকড়া বিশ্ববিদ্যালয়গুলো অফার করছে কিনা তা ভালোভাবে জানতে হবে। নরওয়ের বিশ্বমানের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিশ্বের সবচেয়ে চাহিদাপূর্ণ বিষয়গুলোতে দুই বছর মেয়াদী মাস্টার্স করার সুযোগ আছে। এর জন্য নরওয়ের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর নিজস্ব ওয়েবসাইট থেকে যাবতীয় তথ্য পাওয়া যাবে।
আরও পড়ুন: উচ্চশিক্ষায় দেশের বাইরে যেতে প্রস্তুতির ধাপগুলো জেনে নিন
আরও যে বিষয়টি এই পর্যায়ে গুরুত্বপূর্ণ সেটি হচ্ছে- এই পুরো পদ্ধতিটিতে কত টাকা খরচ হবে তা সুষ্পষ্টভাবে জেনে এখন থেকেই তা যোগাড়ের ব্যবস্থা শুরু করা। গুটি কয়েক প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় বাদে নরওয়ের সব বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনা একদম ফ্রি। প্রতি সেমিস্টারের শুরুতে যে রেজিস্ট্রেশন ফিটা দেয়া লাগে তা বাংলাদেশি টাকায় প্রায় সাড়ে তিন থেকে সাত হাজারের মত।
তবে সমস্যা হলো- অন্যান্য দেশগুলোর মত এখানে শুধু ব্যাংক সল্ভেন্সি দেখালেই হয় না। ভিসা হওয়ার আগে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অফার লেটার পাবার পর পরই বিশ্ববিদ্যালয়র একাউন্টে প্রায় ১২ লাখ টাকা পাঠাতে হয়। নরওয়েতে এক বছরের শিক্ষার্থীর থাকার খরচ বাবদ অগ্রিম এই টাকাটা নেয়া হয়। এটা আসলে কোনো ব্যাংক সলভেন্সি দেখানো না বা কোনো ব্লক্ড একাউন্ট না।
জার্মানির ক্ষেত্রে যেটা হয়- বিশ্ববিদ্যালয়র একাউন্টে টাকা পাঠানোর পর সেই টাকা ১২ মাসে ভেঙে ভেঙে ফেরত দেয়া হয়। আর নরওয়েজিয়ান ইউনির্ভাসিটিগুলো টাকাটা একবারেই দিয়ে দেয়। প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে নরওয়েতে যাওয়ার পর নিজের একটি ব্যাংক একাউন্ট খুলতে হয়। বিশ্ববিদ্যালয় সর্বোচ্চ এক মাসের মধ্যে সেই ১২ লাখ টাকা শিক্ষার্থীর ব্যাংক একাউন্টে ফেরত দিয়ে দেয়। এই বিষয়গুলো পরিকল্পনার সময় অবশ্যই মাথায় রাখতে হবে।
আরও পড়ুন: দেশের বাইরে পড়তে যাওয়ার আগে যে অভ্যাসগুলো গড়ে তোলা জরুরি
দ্বিতীয় ধাপ: আইইএলটিএস দেয়া
নরওয়েতে আন্ডারগ্রাজুয়েশন করার জন্য সাধারণত স্টুডেন্ট ভিসা দেয়া হয় না। এর পেছনে কারণ হলো ওদের অধিকাংশ আন্ডারগ্রাজুয়েশন কোর্স নরওয়েজিয়ান ভাষায় পড়ানো হয়। তবে স্নাতকোত্তর সব কোর্সই ইংরেজি ভাষায় করার সুযোগ রয়েছে। এই ক্ষেত্রে যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম ইংরেজি হওয়াতে আইইএলটিএস ছাড়া নরওয়েতে পড়তে যাওয়া সম্ভব নয়। নূন্যতম স্কোর ছয় পয়েন্ট পাঁচ হতে হয় তবে কিছু কিছু বিশ্ববিদ্যালয় ছয় স্কোরও গ্রহণ করে। সুতরাং পরিকল্পনার পর নরওয়েতে উচ্চশিক্ষার প্রস্তুতির জন্য করণীয় হিসেবে প্রথম কাজ হলো আইইএলটিএস দেয়া।
নরওয়েতে পরিবার নিয়েও আসা যায়। আবেদনকারী যদি স্বামী হন তাহলে তার স্ত্রী ও সন্তানের জন্য আইইএলটিএস প্রয়োজন নেই। আবার স্ত্রীর ক্ষেত্রে স্বামী ও সন্তানের আইইএলটিএস স্কোর লাগবে না। তারা শুধুমাত্র অতিথি হিসেবে আবেদনকারী শিক্ষার্থীর সঙ্গে নরওয়ে আসতে পারবেন।
আরও পড়ুন: অস্ট্রেলিয়াতে উচ্চশিক্ষার জন্য স্কলারশিপ পাওয়ার উপায়
তৃতীয় ধাপ: আবেদনের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র যোগাড়
→ এসএসসি, এইচএসসির ও নূন্যতম তিন বছরের স্নাতক ডিগ্রির সনদ ও ট্রান্সক্রিপ্ট
(জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাস করা শিক্ষার্থীরাও আবেদন করতে পারবেন। স্টাডি গ্যাপ সর্বোচ্চ চার বছর গ্রহণযোগ্য)
→ পাসপোর্ট
→ আইইএলটিএস সনদ
→ স্টাডি প্ল্যানসহ মোটিভেশন লেটার
→ দুটি রিকমেন্ডেশন লেটার (যে বিষয়ে নরওয়েতে পড়তে যাওয়া হচ্ছে সে বিষয়ের ওপর অধ্যাপকের কাছ থেকে একটি, আর আরেকটি ব্যাচেলর করা বিশ্ববিদ্যালয়ের সংশ্লিষ্ট ডিপার্টমেন্টের ডিনের কাছ থেকে)
→ ব্যাংক সলভেন্সি পেপার
এগুলো ছাড়াও কোনো কোনো বিশ্ববিদ্যালয় আরও কিছু নথি চাইতে পারে। এর জন্য সর্বোত্তম কাজ হলো- বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর নিজস্ব ওয়েবসাইট ভালোভাবে অধ্যয়ন করে নেয়া।
আরও পড়ুন: সুইজারল্যান্ডে উচ্চশিক্ষায় স্কলারশিপ পাওয়ার উপায়
চতুর্থ ধাপ: আবেদন
প্রয়োজনীয় সব কাগজপত্র যোগাড় হয়ে গেলে এবার চূড়ান্ত আবেদনের পালা। বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা স্টাডি ইন নরওয়ে ওয়েবসাইটে যেয়ে খুব সহজেই আবেদন প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করতে পারবেন। এই সাইটের মাধ্যমে আলাদা আলাদা বিশ্ববিদ্যালয়তে নির্দিষ্ট বিষয়ের ওপর আবেদনের ব্যবস্থা রয়েছে। নিজের কাঙ্ক্ষিত বিষয়টির পাশে দেয়া বিশ্ববিদ্যালয়র নামের ওপর ক্লিক করে বিশ্ববিদ্যালয়তে আবেদনের পেইজে প্রবেশ করা যাবে।
অতঃপর এই অনলাইন আবেদনে যা যা নথি চাওয়া হবে সেগুলো সব আপলোড করে সংযুক্তি হিসেবে দিতে হবে। তাই আগে থেকেই কাগজপত্রগুলোর স্ক্যান কপি প্রস্তুত করে রাখতে হবে। আর এই সামগ্রিক প্রক্রিয়াতে কোথাও কোনো ধরনের ফি প্রয়োজন হবে না।
এখানে একটি কথা মনে রাখতে হবে যে আবেদনের জন্য দরকারি কাগজপত্র সংগ্রহ করা এবং চূড়ান্ত আবেদনের ক্ষেত্রে সময়কে গুরুত্ব দিতে হবে। নরওয়েতে স্নাতকোত্তরে ভর্তির জন্য মূলত একটাই সেশন। প্রতি বছরের আগস্টে সেশন শুরু হয়। আর এই সেশন ধরার জন্য আবেদন করতে হয় ঠিক তার এক বছর আগে সেপ্টেম্বর থেকে ডিসেম্বর মাসের মধ্যে। তার মানে ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরের সেশন ধরতে হলে আবেদনের সময় শুরু হবে ২০২২ এর আগস্ট থেকে।
আরও পড়ুন: জার্মানিতে স্কলারশিপ পাওয়ার উপায়
অর্থাৎ সেপ্টেম্বর থেকে ডিসেম্বরের মধ্যে নির্দিষ্ট প্রোগ্রামে আবেদন করে দরকারি সব কাগজপত্রের সফট কপি জমা দিয়ে ফেলতে হবে। আবেদনের পর সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আবেদনকারীকে একটা কনফারমেশন মেইল দেয়া হবে। এ সময় অতিরিক্ত কোনো কাগজ লাগলে সেটা মেইল করে জানানো হবে।
পঞ্চম ধাপ: ভিসার জন্য আবেদন
আবেদন প্রক্রিয়া চূড়ান্তভাবে সম্পন্ন হওয়ার পর ফলাফল আসবে পরের বছরের মার্চের শেষ নাগাদ কিংবা এপ্রিলের শুরুর দিকে। ঠিক এই সময়েই ভিসার জন্য আবেদন করতে হবে। অফার লেটার পাওয়ার পর আবেদনের সময় জমা দেয়া কাগজপত্রগুলো এবার অ্যাটাস্টেড করে গুলশানের ভিএফএস (ভিসা ফ্যাসিলিটেশন সার্ভিস) গ্লোবালে যেয়ে জমা দিয়ে আসতে হবে। তারপর বিশ্ববিদ্যালয়র দেয়া একাউন্টে ১২ লাখ টাকা পাঠিয়ে দিতে হবে। এই টাকা পাঠানোর কনফারমেশন পেপারও সেই ভিএফএস গ্লোবালে অন্যান্য কাগজপত্রের সঙ্গে জমা দিতে হয়।
এখানে দরকারি কাগজপত্রগুলোর সঙ্গে পূর্ণ পূরনকৃত ভিসা আবেদন ফর্ম, শেঞ্জেন ফরমেটের (৩৫ মিলিমিটার বাই ৪৫ মিলিমিটার) ছবি, স্টেটমেন্ট অব পার্পাস, কভার লেটার, অ্যাম্বেসির মনোনীত প্রতিষ্ঠান থেকে হেলথ ইনসুরেন্স সনদ এবং পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সনদ অন্তর্ভূক্ত করতে হবে। ভিসার যাবতীয় প্রক্রিয়ার জন্য সর্বোচ্চ ৬২ হাজার টাকার মত খরচ হবে। সবকিছু পাওয়ার পর ভিএফএসের পক্ষ থেকে ছোট্ট একটা ইন্টারভিউ নেয়া হবে। ইন্টারভিউয়ের ১২ থেকে ১৪ কার্যদিবস পর কাঙ্ক্ষিত সেই নরওয়ে যাবার ভিসা হাতে পাওয়া যাবে।
আরও পড়ুন: জাপানকে উচ্চশিক্ষার জেডিএস বৃত্তির পরিধি ও সংখ্যা বৃদ্ধির অনুরোধ
নরওয়ের নাগরিকত্ব নিয়ে কিছু কথা
নরওয়ের পিআর (পার্মানেন্ট রেসিডেন্স) ব্যবস্থা বেশ সহজ। দুবছর অধ্যয়নের পর যে বিষয়ে মাস্টার্স করা হয়েছে সে বিষয়ের ওপর কোনো চাকরি যোগাড় করতে পারলেই পিআর নিশ্চিত। তিন বছর মেয়াদী পিএইচডি করা অবস্থাতেও এই পিআর পাওয়া যায়। কারণ নরওয়েতে পিএইচডি কে চাকরি হিসেবেই বিবেচনা করা হয়। তার মানে পিআর-এ কোনো অনিশ্চয়তা নেই।
শেষাংশ
সবশেষে বলা যায় যে বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের জন্য নরওয়েতে বিনামূল্যে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অপার সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করে দিচ্ছে। শুধু একটি সম্মানজনক ক্যারিয়ারই নয়; উচ্চশিক্ষার এই সুযোগটি কাঙ্ক্ষিত ও উন্নত জীবন ধারণের একটি কারুকার্যমণ্ডিত সোপান। নিজেদের জীবনকে সুন্দর করার পাশাপাশি এই তরুণরা বাংলাদেশের জন্য বিপুল সুনাম বয়ে নিয়ে আসছে। সেই সঙ্গে সমৃদ্ধশালী জীবনের লক্ষ্যে ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্যও রেখে যাচ্ছে অনুসরণীয় পদচিহ্ন।
বাংলায় শিক্ষাদানকারী অনলাইন লার্নিং প্ল্যাটফর্ম: পেশাগত দক্ষতা বৃদ্ধির অনন্য মাধ্যম
প্রতিযোগিতাপূর্ণ বিশ্বে অনলাইন লার্নিং প্ল্যাটফর্মগুলো ক্রমাগত জনপ্রিয়তা লাভ করছে। বর্তমানে শুধুমাত্র শিক্ষাগত যোগ্যতা সনদ নিয়েই প্রগতির ধারার সঙ্গে তাল মেলানো বেশ কষ্টসাধ্য ব্যাপার। এখানে শুধু পাঠ্যক্রম বহির্ভূত দক্ষতাই নয়; প্রয়োজন হয় চাকরির বাজারে সর্বাধিক চাহিদা সম্পন্ন দক্ষতা অর্জনের। সাম্প্রতিক দিনগুলোতে বিশ্বের উন্নত দেশগুলোর সঙ্গে তাল মিলিয়ে বাংলা অনলাইন ট্রেনিং প্ল্যাটফর্মগুলো বেশ সুনাম কুড়াচ্ছে। ঘরে বসেই খুব কম খরচে এবং সহজভাবে শেখার সুবিধায় বিভিন্ন বয়সের ও পেশার মানুষেরা সংযুক্ত হচ্ছে নতুন দক্ষতা লাভের প্রশিক্ষণে। অনলাইন ট্রেনিং সেন্টারগুলোও সময়ের সঙ্গে প্রয়োজনীয় কোর্সগুলো শুরুর কারণে শিক্ষার্থীরা আরও বেশি লাভবান হচ্ছে। এমনি কয়েকটি জনপ্রিয় বাংলা অনলাইন লার্নিং সেন্টার প্লাটফর্মের বিস্তারিত নিয়ে আজকের ফিচার।
বাংলায় শিক্ষাদানকারী সেরা ১০টি অনলাইন লার্নিং প্ল্যাটফর্ম
টেন মিনিট স্কুল
গোটা বাংলাদেশের স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদেরকে এক মঞ্চে নিয়ে আসতে তরুণ উদ্যোক্তা আয়মান সাদিকের অসামান্য উদ্ভাবন টেন মিনিট স্কুল। ২০১৫ সালের শুরু হওয়া এই অনলাইন শিক্ষার প্ল্যাটফর্মটি এখন আর স্কুলের গণ্ডির মধ্যে নেই।
বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থার প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রে ছড়িয়ে পড়েছে এর পরিধি। সারা দেশ থেকে প্রায় ১ লাখ ৫০ হাজার শিক্ষার্থী নিয়মিত এই প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে ক্লাসে অংশ নেয়। সম্ভাবনাকে খুব কম সময়েই বাস্তবে রূপ দেয়া প্রতিষ্ঠানটির পৃষ্ঠপোষক এখন দেশের বড় বড় ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলো।
সাধারণ পাঠ্যক্রমের পাশাপাশি এখানে আইইএলটিএস এবং চাকরির জন্য প্রয়োজনীয় দক্ষতাগুলোর কোর্স আছে। জনপ্রিয় প্রযুক্তি বিষয়ক কোর্সগুলোর মধ্যে আছে গ্রাফিক্স ডিজাইন, প্রোগ্রামিং, ডিজিটাল মার্কেটিং, ওয়েব ডেভেলপমেন্ট এবং মাইক্রোসফ্ট অফিস।
আরও পড়ুন: গুগলে কীভাবে চাকরি পেতে পারেন
রেপটো এডুকেশন সেন্টার
রেপটোকে অনেকেই ইউডেমির বাংলাদেশ ভার্সন বলে থাকেন। বিভিন্ন বিষয়ে বিশেষজ্ঞরা ভিডিও তৈরি করে এই সাইটে আপলোড করেন। শিক্ষার্থীরা কোর্সে ভর্তি হয় এবং প্রশিক্ষণ শেষে তারা অনলাইনেই প্রশংসাপত্র পায়। তার মানে পুরোটাই ইউডেমির প্রক্রিয়াকে অনুসরণ করছে।
এখানে প্রিমিয়াম এবং ফ্রি উভয় কোর্সই আছে। এগুলোর মধ্যে প্রোগ্রামিং, ডিজিটাল মার্কেটিং, ফটোগ্রাফি, ইংরেজি ভাষা, ডেটাবেস, এমএস অফিস, গ্রাফিক ডিজাইন ইত্যাদি কোর্সগুলো বেশ জনপ্রিয়। এছাড়াও সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন সার্কুলার সম্পর্কে জনসাধারণকে অবহিত করার জন্য ওয়েবসাইটের চাকরি বিভাগ ক্রমাগত আপডেট করা হয়।
বহুব্রীহি
এত এত কোর্সের মধ্যে কোনটি করা উচিত তা নিয়ে বিড়ম্বনায় থাকলে আসতে হবে বহুব্রীহির কাছে। কেননা এর বিভিন্ন কোর্সে নাম নথিভুক্ত করার আগে এর পরামর্শদাতাদের কাছ থেকে নির্দেশনা নেয়া যায়। যেকোনো সেক্টরে পেশাদার হতে বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় অনলাইন লার্নিং প্ল্যাটফর্মের মধ্যে এটি শিক্ষার্থীদের আস্থা অর্জন করেছে।
গ্রাফিক্স ডিজাইন, ডিজিটাল মার্কেটিং সহ ফ্রি-ল্যান্সিং-এর বিভিন্ন বিষয়গুলো এখানকার প্রধান কোর্সগুলোর মধ্যে অন্তর্ভূক্ত। তবে শুধু কোর্স-ই নয়; এই ওয়েবসাইটে শিক্ষার্থীরা অধ্যয়নের জন্যও আসতে পারে। বহুব্রীহির প্রতিষ্ঠাতারা এই সাইটটি প্রতিষ্ঠা করেছেন তরুণ প্রজন্মের জ্ঞানের তৃষ্ণা মেটাতে এবং তাদের শিক্ষায় আরও নিযুক্ত করতে। তাই নানা বিষয়ে জ্ঞানার্জন করে স্ব-শিক্ষিত হতে হলেও এই সাইট ব্রাউজ করা যেতে পারে।
আরও পড়ুন: কর্মজীবনে সাফল্যের জন্য কিভাবে নিজেকে গ্রুমিং করবেন?
ইশিখন
তথাকথিত পাঠ্যক্রম সম্পর্কিত টিউটোরিয়াল ও মডেল টেস্ট সহ নানা ধরণের প্রফেশনার কোর্সের জন্য একটি নির্ভরযোগ্য অনলাইন প্ল্যাটফর্ম ইশিখন। প্রতিটি কোর্সেই ট্রেনিং-এর সময় বিভিন্ন স্তরে উন্নীত হওয়ার জন্য ব্যবস্থা রয়েছে নির্বাচিত বিষয়ে মডেল পরীক্ষা দেয়ার।
এর টেকনিক্যাল অডিও-ভিজ্যুয়াল কোর্সগুলোও উত্তোরোত্তর নাম করছে। এগুলোর মধ্যে সিপিএ ট্রেনিং, ওয়ার্ডপ্রেস, এসইও(সার্চ ইঞ্জিন অপ্টিমাইজেশন), অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং, গ্রাফিক ডিজাইন, অ্যান্ড্রয়েড ডেভেলপমেন্ট ইত্যাদি কোর্সগুলো যেকোন সময়ই নেয়া যায়।
এই ওয়েবসাইটের সবচেয়ে দরকারি দিকটি হল- এর ব্লগ বিভাগে অনেক তথ্যপূর্ণ লেখা পড়ে কোর্স পরবর্তী অনুশীলনের সময় কাজ করা যায়। তাছাড়া যে কেউই এই ব্লগের সাহায্যে শিক্ষার সর্বশেষ খবরের সাথে নিজেকে আপডেট রাখতে সক্ষম হবে।
শিখবে সবাই
২০১৭ সালের ১৭ মে কয়েকজন সমমনা, তরুণ প্রাণ ক্যারিয়ার হিসেবে ফ্রিল্যান্সিং এবং দূরবর্তী কর্মসংস্থান গ্রহণ করার উদ্দেশ্যে প্রতিষ্ঠা করেন শিখবে সবাই প্ল্যাটফর্ম। গত পাঁচ বছরে এদের প্রশিক্ষণার্থীর সংখ্যা ৭ হাজার ৬৩০-এর অধিক, যাদের একটি বিরাট অংশ এখন অব্দি কাজ করছে আন্তর্জাতিক মার্কেটপ্লেসগুলোতে।
আরও পড়ুন: চাকরির সিভি ও পোর্টফোলিও তৈরির প্রয়োজনীয় কিছু ওয়েবসাইট
শিখবে সবাই বাংলাদেশে সর্বপ্রথম সম্পূর্ণ বিনামূল্যের অনলাইন সহায়তা কেন্দ্র চালু করে। এদের গ্রাফিক্স ডিজাইন, ওয়েব ডিজাইন ও ডেভেলপমেন্ট, মোশন গ্রাফিক্স, ডিজিটাল মার্কেটিং-এর মত কোর্সগুলোতে বিশ্বের যে কোনো জায়গা থেকে নথিভুক্ত হতে পারবে। এমনকি এদের কোর্সের রিসোর্সের পরিমাণও বেশ সমৃদ্ধ। এরা ছাত্রদের পাশাপাশি বিভিন্ন কর্মক্ষেত্রে কর্মরত আইটি অনুশীলনকারিদেরও বিভিন্ন প্রোজেক্টের কাজে সহায়তা প্রদান করে থাকে।
ঘুড়ি লার্নিং
ঘুড়ি লার্নিং-এর শুরুটা ইংরেজি ভাষা শিক্ষা ও চর্চার মধ্য দিয়ে হলেও এখন এর ঝুলিতে যোগ হয়েছে আরও অনেক বৈচিত্র্যপূর্ণ কোর্স। ঘুড়ি লার্নিং প্রথমে বিবিসি জানালার ইংরেজি কোর্সগুলোকে দেশব্যাপি প্রোমোট করতো।
এখন এই সাইটে আইইএলটিএস এবং বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি, বিসিএস, এইচএসসি ও এসএসসি’র মত বিভিন্ন পরীক্ষার প্রস্তুতিমুলক কোর্স আছে। ইংরেজির পাশাপাশি যুক্ত করা হয়েছে আরবি, কোরিয়ান জাপানি, এবং চাইনিজ ভাষাশিক্ষা। আর অনলাইন ট্রেনিং-এর সবচেয়ে বড় অংশটা দখল করে আছে ডিজিটাল মার্কেটিং, ফটোগ্রাফি, গ্রাফিক্স ডিজাইন এবং ওয়েব ডিজাইনের মত টেকনিক্যাল কোর্সগুলো।
শিক্ষক
বার্মিংহামের অ্যালাবামা ইউনিভার্সিটির কম্পিউটার সায়েন্সের অধ্যাপক ডক্টর রাগিব হাসান ২০১২ সালে তৈরি করেছিলেন বাংলাদেশের সবচেয়ে পুরনো অনলাইন শিক্ষামূলক সাইট শিক্ষক। প্রকল্পটি বাংলাদেশ ও ভারতের গ্রামীণ ও সুবিধাবঞ্চিত শিক্ষার্থীদের বাংলা ভাষায় বিনামূল্যে অনলাইন শিক্ষা এবং উচ্চ মানের কোর্স প্রদানের স্বপ্ন দেখিয়েছিলো।
আরও পড়ুন: অনলাইনে চাকরির ইন্টারভিউ দিতে প্রয়োজনীয় পাঁচ অনলাইন প্ল্যাটফর্ম
এই প্ল্যাটফর্মটি বিজ্ঞান ও প্রকৌশলের ছাত্র ও গবেষকদের জন্য সেরা। এই সাইটের টিউটোরিয়ালগুলোর মধ্যে ফ্রিল্যান্স কর্নার, মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন ডেভেলপমেন্ট, কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, প্রকৌশল, এবং ভাষাশিক্ষা অন্যতম। আরো একটি গুরুত্বপূর্ণ ক্যাটাগরি হচ্ছে এসএসসি এবং এইচএসসি স্তরের কোর্সগুলো। এর মেন্টররা শুধু দেশেরই নন; দেশের বাইরে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের বাংলা ভাষাভাষি শিক্ষাবিদ এবং গবেষকরা তাদের দক্ষতা শিক্ষার্থীদের সাথে বিনিময় করেন।
এমএসবি একাডেমি
ইউডেমি ও স্কিলশেয়ারের মত আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্মে সফলতার পর ২০১৮ সালে এমএসবি(মোস্ট সিগনিফিকেন্ট বিট) একাডেমি প্রতিষ্ঠা করেন সফল ইউটিউবার মাসুক সরকার বাতিস্তা। এটি তার অনলাইন ট্রেনিং প্রদানের দক্ষতার এক অভাবনীয় ফলাফল। ইউটিউবে টিউটর হিসেবে জনপ্রিয়তার পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের প্রিয় অনলাইন ট্রেনিং প্ল্যাটফর্ম হতে তার এমএসবিরও তেমন সময় লাগেনি।
ডিজিটাল মার্কেটিং, প্রোগ্রামিং, গ্রাফিক্স ডিজাইন এবং অফিস টুল্সগুলো শেখানোর সঙ্গে সঙ্গে কোর্স পরবর্তী শিক্ষার্থীদেরকে অনলাইন সহায়তা প্রদান করে এমএসবি। যে কোন বয়সের লোকদের জন্য স্বনির্ভর এবং স্মার্ট নাগরিক হতে মাসুকের স্বচ্ছ ও সঠিক ট্রেনিং কোর্সগুলো বেশ যুগোপযোগী।
ইন্স্ট্রাক্টারি
অনলাইনে প্রসিদ্ধ আয়ের মাধ্যমগুলোতে দক্ষ জনশক্তি তৈরি কল্পে বাংলাদেশের ডিজিটাল লার্নিং প্ল্যাটফর্ম জগতে নতুন সংযোজন ইন্স্ট্রাক্টারি। ফাইভার, আপওয়ার্ক, থিমফরেস্টের মত আন্তর্জাতিক মার্কেটপ্লেসগুলোকে টার্গেট করে এখানে আছে বিভিন্ন কোর্সের ব্যবস্থা।
পড়ুন: কর্ম জীবনে উন্নতির জন্য কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকতেই কিভাবে প্রফেশনাল নেটওয়ার্ক তৈরি করবেন
এগুলোর মধ্যে গ্রাফিক্স ডিজাইন, এসইও, ভিডিও এডিটিং, ওয়েব ডেভেলপমেন্ট কোর্সগুলো ইতোমধ্যে শিক্ষার্থীদের মধ্যে ইন্স্ট্রাক্টারির একটি বিশেষ জায়গা তৈরি করেছে। অবশ্য এর পেছনে একটা বড় প্রভাব আছে ইন্স্ট্রাক্টারির দক্ষ প্রশিক্ষকদের। প্রত্যেকে স্ব স্ব দক্ষতার ক্ষেত্রগুলোতে কর্মরত থাকায় শিক্ষার্থীদেরকে বাস্তব অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষাদান করতে পারেন।
বাংলাডেমি
বাংলাদেশের প্রথম সারির অনলাইন লানিং প্ল্যাটফর্মগুলোর মধ্যে বাংলাডেমি অন্যতম। এই স্কিল ডেভেলপমেন্ট প্ল্যাটফর্মটি ইন্ডাস্ট্রির শীর্ষস্থানীয় মেন্টরদের কাছ থেকে দক্ষ-ভিত্তিক কোর্স অফার করে। এদের অনলাইন রেকর্ডকৃত গ্রাফিক্স ডিজাইন, ডিজিটাল মার্কেটিং, ওয়েব ডিজাইন ও ডেভেলপমেন্ট, ভিডিও এবং এনিমেশন কোসগুলো শিক্ষার্থীদের অনলাইন ক্যারিয়ার গড়তে যথেষ্ট।
শুধু নির্দিষ্ট বিষয়ে প্রশিক্ষণের পরই সেবা শেষ হয়ে যায় না। বিশ্বের স্বনামধন্য মার্কেটপ্লেসগুলোর উপর সহজ টিউটোরিয়ালগুলো প্রশিক্ষণ পরবর্তী অবস্থাতেও শিক্ষার্থীদের সুবিধা দেয়। এদের বিশেষত্ব হল প্রতিটি কোর্সে কোনো চার্জ ছাড়াই লাইভ সাপোর্টসহ অন্যান্য সুবিধা পাওয়া যায়।
শেষাংশ
চাকরীর পাশাপাশি ব্যবসা ক্ষেত্রেও তথ্য-প্রযুক্তির গুরুত্ব বাড়ার কারণে অনলাইন লার্নিং প্ল্যাটফর্মগুলোর প্রধান কোর্সগুলো থাকে তথ্য-প্রযুক্তি কেন্দ্রিক। ক্যারিয়ারের ধারায় যুগান্তকারি পরিবর্তন আসায় দক্ষতা অর্জনের ক্ষেত্রে অবশ্যাম্ভাবি হয়ে পড়েছে তরুণ ফ্রিল্যান্সার এবং উদ্যোক্তাদের সান্নিধ্য অর্জন। শুধু অনলাইনে ঘরে বসে শেখাটাই নয়, এখন আরো বেশি তাৎপর্যপূর্ণ হয়ে পড়েছে অনলাইনে আয়ের স্ট্র্যাটেজিগুলো জানা এবং ভালোভাবে সেগুলো কাজে লাগানো।
আরও পড়ুন: চাকরি প্রার্থীদের সফল সিভি তৈরির কিছু গুরুত্বপূর্ণ টিপস
মাতৃভাষায় শিক্ষা গ্রহণ সবর্দাই আনন্দদায়ক এবং ফলপ্রস। ইংরেজি মাধ্যমে অনেক অনলাইন লার্নিং প্লাটফর্ম থাকলেও সেগুলো সবার জন্য বোধগম্য নাও হতে পারে। উপরোল্লিখিত বাংলায় শিক্ষাদানকারী অনলাইন লার্নিং প্ল্যাটফর্মগুলো সেই অভাব পূরণে এগিয়ে এসেছে। এই প্রশিক্ষণগুলো সম্ভব করতেই স্বনামধন্য ও স্ব স্ব ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞদের একত্রিত করছে এই প্ল্যাটফর্মগুলো। ফলশ্রুতিতে বাংলায় অনলাইন ভিত্তিক প্রযুক্তি শিক্ষা ছড়িয়ে পড়ছে বাংলাদেশের আনাচে কানাচে।
বঙ্গমাতার আত্মত্যাগ থেকে শিক্ষা নিন: শেখ হাসিনা
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নারীদের বঙ্গমাতা ফজিলাতুন নেছার জীবন থেকে শিক্ষা গ্রহণ করতে বলেছেন। কেননা তিনি তার দৃঢ়তা, বুদ্ধিমত্তা ও দুরদর্শীতা দিয়ে অবিস্মরণীয় উদাহরণ সৃষ্টি করে গেছেন।
রবিবার ‘বঙ্গমাতা এ প্যারাগন অব ওমেন্স লিডারশিপ এন্ড ন্যাশন বিল্ডিং ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবন মিলনায়তনে ‘বঙ্গমাতা ফজিলাতুন নেছা সেন্টার ফর জেন্ডার অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ’- এই আন্তর্জাতিক সম্মেলনের আয়োজন করে।
প্রধানমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি এ সেমিনারে যোগ দেন।
আরও পড়ুন: আ.লীগের প্রতি জনগণের আস্থা সরকারের সাফল্যের চাবিকাঠি: প্রধানমন্ত্রী
কুয়েটের ভর্তি পরীক্ষা শনিবার
চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট), খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট) এবং রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (রুয়েট) স্নাতক প্রথমবর্ষ সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষার আগামী শনিবার অনুষ্ঠিত হবে।
বৃহস্পতিবার রাতে কুয়েটের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, কুয়েট ক্যাম্পাসে ‘ক’গ্রুপের (বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং, বিইউআরপি) রোল ২৫০০০১ থেকে ২৫৮৫৫৩ পর্যন্ত সকাল ১০টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত এবং ‘খ’ গ্রুপের (বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং, বিইউআরপি ও বিআর্ক) রোল ২৭০০০১ থেকে ২৭০৮৭০ পর্যন্ত সকাল ১০টা থেকে দুপুর পোনে ২টা পর্যন্ত মোট ৯ হাজার ৪২৩ জন পরীক্ষার্থী অংশ গ্রহণ করবেন।
আরও পড়ুন: কুয়েট শিক্ষার্থী অন্তুর আত্মহত্যা: প্রকৃত কারণ এখনও অজানা
২০২১-২০২২ শিক্ষাবর্ষে সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষার মাধ্যমে কুয়েটে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং (সিই) বিভাগে ১২০ জন, ইলেকট্রিক্যাল অ্যন্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইই) বিভাগে ১২০, মেকানিকেল ইঞ্জিনিয়ারিং (এমই) বিভাগে ১২০, কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (সিএসই) বিভাগে ১২০, ইলেকট্রনিক্স অ্যান্ড কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং (ইসিই) বিভাগে ৬০, ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যান্ড প্রোডাকশন ইঞ্জিনিয়ারিং (আইপিই) বিভাগে ৬০, লেদার ইঞ্জিনিয়ারিং (এলই) বিভাগে ৬০, টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং (টিই) বিভাগে ৬০, আরবান অ্যান্ড রিজিওনাল প্ল্যানিং (ইউআরপি) বিভাগে ৬০, বিল্ডিং ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড কনস্ট্রাকশন ম্যানেজমেন্ট (বিইসিএম) বিভাগে ৬০, বায়োমেডিকেল ইঞ্জিনিয়ারিং (বিএমই) বিভাগে ৩০, আর্কিটেকচার (আর্ক) বিভাগে ৪০, ম্যাটেরিয়ালস্ সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (এমএসই) বিভাগে ৬০, এনার্জি সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (ইএসই) বিভাগে ৩০, কেমিকেল ইঞ্জিনিয়ারিং (সিএইচই) বিভাগে ৩০, মেকাট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং (এমটিই) বিভাগে ৩০ এবং সংরক্ষিত (ক্ষুদ্র-নৃ-গোষ্ঠীদের এবং চট্টগ্রাম বিভাগের পার্বত্য জেলার অধিবাসীদের জন্য) পাঁচ আসনসহ তিন অনুষদের অন্তর্গত ১৬ বিভাগে সর্বমোট এক হাজার ৬৫ জন শিক্ষার্থী ভর্তি করা হবে।
আরও পড়ুন: একমাস পর কুয়েটে ক্লাস শুরু
এছাড়া চুয়েট ও রুয়েট তাদের নির্ধারিত আসন অনুযায়ী শিক্ষার্থী ভর্তি করবে। ভর্তি সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য চুয়েট, কুয়েট, রুয়েট এর সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষার ওয়েবসাইটে (https://admissionckruet.ac.bd)পাওয়া যাবে।
সিলেটে বন্যায় ঘরবন্দী সাড়ে ৪ লাখ শিক্ষার্থী
সিলেট বিভাগে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের এক হাজার ৫২২টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের (স্কুল-কলেজ) ৪ লাখ ৫৫ হাজার ৪৭৫ জন শিক্ষার্থী বন্যার কবলে পড়েছে। এছাড়া বন্যার পানিতে বই-খাতা নষ্ট হওয়ায় বিপাকে রয়েছে অনেক শিক্ষার্থী।
মঙ্গলবার মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক (কলেজ ও প্রশাসন) অধ্যাপক শাহেদুল খবির চৌধুরী এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান, বন্যাকবলিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান (স্কুল-কলেজ) ও শিক্ষার্থী সংক্রান্ত প্রতিবেদন পাওয়া গেছে। তবে বন্যায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ক্ষয়-ক্ষতি সংক্রান্ত প্রতিবেদন এখনও পাওয়া যায়নি। খুব শিগগিরই পাওয়া যাবে।
সিলেট বিভাগের সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি অবনতির পর গত ২২ জুন মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের ই-ভ্যালুয়েশন উইং থেকে সব আঞ্চলিক পরিচালক ও উপপরিচালকদের কাছে তথ্য চাওয়া হয়। সম্প্রতি আঞ্চলিক অফিসগুলো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে তথ্য সংগ্রহ করে অধিদপ্তরে প্রতিবেদন পাঠায়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, সিলেট বিভাগের বন্যাকবলিত উপজেলাগুলোর শতাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বর্তমানে পাঠদান সম্ভব। আংশিকভাবে পাঠদান কার্যক্রম পরিচালনা করা সম্ভব প্রায় একশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে। আর ৫ শতাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এখনও পাঠদান সম্ভব নয়। বন্যাকবলিত এলাকার প্রায় সাড়ে ৪০০ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে।
আরও পড়ুন: সিলেটে পানি কমছে ধীরগতিতে, বাড়ছে দুর্ভোগ
জেলাভিত্তিক তথ্যে জানানো হয়, সিলেট জেলার ১৩ উপজেলার ৩৪২ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্যাকবলিত। এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় দুই লাখ আট হাজার ১৯৩। বন্যাকবলিত এলাকার ৫৯ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বর্তমানে পাঠদান কার্যক্রম সম্ভব। আংশিকভাবে ৫০ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পাঠদান সম্ভব। আর ২৮৮টি প্রতিষ্ঠানে পাঠদান এখনও কার্যক্রম পরিচালনা সম্ভব নয়। ১৯১টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আশ্রয়কেন্দ্র করা হয়েছে।
সুনামগঞ্জের ১১ উপজেলার ২৬৫ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্যাকবলিত। এসব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১ লাখ ৭৪ হাজার ২৬২ জন। বন্যাকবলিত ২৬৫ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কোনওটিতেই এখনও পাঠদান সম্ভব নয়। ১৫০ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে।
মৌলভীবাজারে পাঁচ উপজেলার ৪০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্যাকবলিত। প্রতিষ্ঠানগুলোর শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৩৮ হাজার ৩৫৯। এখানকার ৪০ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কোনওটিতেই এখনও পাঠদান সম্ভব নয়। এছাড়া ২৯ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আশ্রয়কেন্দ্র করা হয়েছে।
হবিগঞ্জ জেলার ছয় উপজেলার ৩৫ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্যাকবলিত। এসব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী সংখ্যা ৩৪ হাজার ৬৬১ জন। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোয় পাঠদান বন্ধ রয়েছে। জেলার ৭৩ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আশ্রয়কেন্দ্র করা হয়েছে।
এদিকে সিলেট অঞ্চলে বন্যার কারণে বহু শিক্ষার্থীর পড়ালেখা চালিয়ে যাওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। বই-খাতা পানিতে নষ্ট হয়ে গেছে। তাদের বিকল্প বই দেবে প্রশাসনের সে সুযোগও নেই। কারণ তাদের গুদামেও পর্যাপ্ত বই নেই। এই পরিস্থিতিতে সবচেয়ে বেশি উদ্বিগ্ন স্বল্প আয়ের পরিবারের এসএসসি পরীক্ষার্থীরা। পরীক্ষা আপাতত স্থগিত হলেও তারিখ দিলে পড়ার মতো বই কোথায় পাবে, তা নিয়ে সবাই চিন্তিত।
রায়েরগাঁও এলাকার বাসিন্দা শিহাব আহমদ রাজারগাঁও উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ছাত্র। গত ১৭ জুন পানি ঢুকে পড়ে শিহাবদের ঘরে। তারও সব বই-খাতা বন্যার পানিতে ভিজে নষ্ট হয়ে গেছে।
আরও পড়ুন: সিলেটে বন্যা: এবার ঘুরে দাঁড়ানোর লড়াই শুরু
বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হিসেবে সাহায্য-সহযোগিতা পেয়ে কোনো রকমে দিন কাটছে শিহাবদের। তার কৃষক বাবা আব্দুল করিমের আয়ের উপায় এখন বন্ধ। পানি নেমে গেলে ঘর ঠিকঠাক করার পাশাপাশি চাষের জন্য টাকা জোগাড় করাই এখন ভীষণ চ্যালেঞ্জ তার জন্য। বাড়তি চাপ হয়ে দেখা দিয়েছে ছেলের বই-খাতা।
সিলেটে গত ১৫ জুন থেকে বন্যা শুরু হয়। স্মরণকালের ভয়াবহ এ বন্যায় প্লাবিত হয় জেলার ৮০ শতাংশ এলাকা। ২১ লাখেরও অধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েন। আর ক্ষতিগ্রস্ত হয় প্রায় ২৯ হাজার ঘরবাড়ি। পানি কমতে শুরু করলেও এখনও প্লাবিত রয়েছে জেলার বেশির ভাগ এলাকা।
মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বিভাগের সিলেট বিভাগীয় পরিচালক আব্দুল মান্নান খান বলেন, ‘ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা করার জন্য আমরা জেলা শিক্ষা কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছি। এ ছাড়া যে যে এলাকা উদ্বৃত্ত বই রয়েছে তা সংগ্রহ করে ক্ষতিগ্রস্তদের দেয়ার ব্যবস্থা নিতে বলেছি।’
তিনি বলেন, ‘এবার ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। সুনামগঞ্জ তো পুরাটাই ক্ষতিগ্রস্ত। সিলেটেও ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এ কারণে উদ্বৃত্ত বইয়ে হবে না। আবার নতুন করে এখন বই ছাপানোও কঠিন। তাই ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষার্থীদের আমরা অনুরোধ করব, সম্ভব হলে তারা যেন সহপাঠীদের কাছ থেকে বই ম্যানেজ করে নেয়ার চেষ্টা করে।’
শিক্ষা অফিসের গুদামে থাকা বইও পানিতে নষ্ট হয়ে গেছে জানিয়ে সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা প্রতুল চন্দ্র সরকার বলেন, ‘মজুত থাকা বইয়েরও ৫০ শতাংশ নষ্ট হয়ে গেছে। এখন ক্ষতি পোষাতে ঢাকা থেকে বই পাঠাতে হবে।’
স্কুল খোলার আগে ক্ষয়ক্ষতির সঠিক পরিমাণ জানা যাবে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘ঈদের পর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলবে। তখন ক্ষতির পরিমাণ জেনে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে চাহিদা পাঠানো হবে।’
আরও পড়ুন: সিলেটে আড়াই কোটি টাকার ত্রাণ বিতরণ, হটলাইন চালু
শিক্ষার্থীদের ক্ষয়ক্ষতির তালিকা এখনও পাওয়া যায়নি জানিয়ে গোলাপগঞ্জ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা অভিজিৎ কুমার পাল বলেন, ‘স্কুল খোলার আগে এ ধরনের তথ্য পাওয়া যাবে না।’
জেলা প্রথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শাখাওয়াত এরশাদ বলেন, ‘আমরা উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাদের মাধ্যমে তালিকা করছি। স্কুল ভবনের কেমন ক্ষতি হয়েছে, শিক্ষার্থীদের বই-খাতা কী পরিমাণ নষ্ট হয়েছে, সেগুলোর তালিকা করছি। কিন্তু অনেক জায়গা থেকে এখনও পানি নামেনি। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানও বন্ধ। ফলে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ এখনও জানা যায়নি।’