সংক্রমণ
করোনা: বিশ্বে আক্রান্তের সংখ্যা ২২ কোটি ছাড়াল
সারা বিশ্বজুড়ে মহামারি করোনাভাইরাসের বিভিন্ন নতুন ধরনের কারণে প্রতিদিনই বাড়ছে রোগী ও আক্রান্তদের মৃত্যু সংখ্যা। যুক্তরাষ্ট্রের জনস্ হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, রবিবার সকাল পর্যন্ত বিশ্বজুড়ে করোনায় মোট মৃতের সংখ্যা ৪৫ লাখ ৬০ হাজার ৭২৭ জন এবং মোট আক্রান্তের সংখ্যা ২২ কোটি ২ লাখ ২৩ হাজার ৮৭৪ জনে দাঁড়িয়েছে।
এ পর্যন্ত বিশ্বজুড়ে মোট ৫৪২ কোটি ৭৬ লাখ ৭৪ হাজার ৩৮৩ ডোজ করোনার টিকা প্রদান করা হয়েছে।
করোনায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দেশ আমেরিকায় এখন পর্যন্ত মোট শনাক্তের সংখ্যা ৩ কোটি ৯৯ লাখ ৫ হাজার ৮৫৫ জন এবং মৃত্যুবরণ করেছে ৬ লাখ ৪৮ হাজার ১০৬ জন।
আরও পড়ুন: করোনা: মৃত্যু ৬১, শনাক্ত ১৭৪৩
অপরদিকে দক্ষিণ আমেরিকার দেশ ব্রাজিলে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মোট মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫ লাখ ৮৩ হাজার ৩৬২ জনে। দেশটিতে এ পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছে ২ কোটি ৮ লাখ ৫৬ হাজার ৬০ জন। মৃত্যুর দিক দিয়ে দেশটির অবস্থান দ্বিতীয়।
বাংলাদেশের প্রতিবেশী দেশ ভারতে শনিবার পর্যন্ত মোট ৩ কোটি ২৯ লাখ ৪৫ হাজার ৯০৭ জনের সংক্রমণ নিয়ে বিশ্বে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সংক্রমণের স্থানে অবস্থান করছে। একই সময়ে মৃত্যু সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪ লাখ ৪০ হাজার ২২৫ জনে।
আরও পড়ুন: ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত আরও ২৬৫
বাংলাদেশ পরিস্থিতি
শনিবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পাঠানো তথ্য অনুযায়ী, দেশে করোনায় মৃত্যু ও শনাক্তের সংখ্যা কমছে। গেল ২৪ ঘণ্টায় করোনা আক্রান্ত হয়ে ৬১ জনের মৃত্যু হয়েছে। এসময় করোনা শনাক্ত হয়েছে এক হাজার ৭৪৩ জনের।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পাঠানো তথ্য অনুযায়ী, নতুন মৃত্যুসহ দেশে করোনায় মোট মৃতের সংখ্যা দাড়িয়েছে ২৬ হাজার ৪৯৩ জনে। আর এপর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৫ লাখ ১২ হাজার ২৬ জনে।
আরও পড়ুন: বজ্রপাতে মৃত্যুহার কমাতে সরকার কাজ করছে: ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী
সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় ১৭ হাজার ৪৫৪ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এসময় শনাক্তের হার ৯.৮২ শতাংশ। দেশে মৃত্যুর হার ১.৭৫ শতাংশ। এই পর্যন্ত সুস্থ হয়েছে ১৪ লাখ ৪৬ হাজার ৩ জন। দেশে সুস্থতার হার ৯৫.৬৩ শতাংশ।
গত ২৪ ঘণ্টায় ঢাকা বিভাগে ৩২ জন, চট্টগ্রামে ১৩ জন, রাজশাহীতে ৪ জন, খুলনা বিভাগে ৬ জন, বরিশালে ২ জন, সিলেটে ১ জন, রংপুরে ২ জন এবং ময়মনসিংহে ১ মারা গেছেন।
খুলনার হাসপাতালগুলোর অধিকাংশ করোনা বেড খালি
খুলনা অঞ্চলে করোনার সংক্রমণ কমে আসায় নগরীর পাঁচটি হাসপাতালে করোনা ইউনিটের প্রায় তিন চতুর্থাংশ বেড এখন খালি পড়ে আছে। করোনায় মৃত্যুর সংখ্যাও বেশ উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, বিভাগীয় নগরী খুলনায় করোনার সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় তিনটি সরকারি হাসপাতালের পাশাপাশি দু’টি বেসরকারি হাসপাতালে করোনা ইউনিট খোলা হয়েছিল। এই পাঁচটি হাসপাতালে মোট ৫৬৫ টি বেডের ব্যবস্থা থাকলেও এক পর্যায়ে করোনা রোগীর চাপ সামলাতে হিমশিম খেতে হয় কর্তৃপক্ষকে।
আরও পড়ুন: বিশ্বে করোনায় মৃত্যু সাড়ে ৪৪ লাখ ছাড়াল
কিন্তু সম্প্রতি অনেকটা বদলে গেছে প্রেক্ষাপট। সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় সংক্রমণের হার কমে আসায় হাসপাতালগুলোতে রোগী ভর্তির হারও কমেছে উল্লেখযোগ্য হারে। বুধবার সকালে পাঁচটি হাসপাতালের ৫৬৫ টি বেডে মোট রোগী আছে ১৪৯ জন। ফলে অধিকাংশ বেড এখন খালি পড়ে থাকছে।
খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থাপিত ২০০ বেডের করোনা ডেডিকেটেড হাসাপাতালে এখন রোগী ভর্তি রয়েছে ৭৮ জন। একইভাবে শেখ আবু নাসের বিষেশায়িত হাসপাতালের করোনা ইউনিটে ৪৫ বেডের মধ্যে খালি আছে ২০ টি। খুলনা জেনারেল হাসপাতালের করোনা ইউনিটে ৮০ বেডের মধ্যে রোগী আছে মাত্র পাঁচ জন।
আরও পড়ুন: ঠাকুরগাঁওয়ে করোনা শনাক্ত ২৫, মৃত্যু ১
অন্যদিকে বেসরকারি খুলনা গাজী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ইউনিটে ১৫০ বেডের মধ্যে এখন রোগী আছে ১২ জন। আর সিটি মেডিকেলে ৯০ বেডে ভর্তি আছেন ২৯ জন।
করোনা রোগী কমার সাথে সাথে মৃত্যুর সংখ্যাও কমেছে উল্লেখযোগ্যভাবে। বিগত তিন মাসের মধ্যে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে খুলনা মহানগরীর পাঁচটি হাসপাতালের করোনা ইউনিটে কোনও রোগীর মৃত্যু হয়নি গত ২৩ আগস্ট। এর আগে চলতি বছরের ২৫ মে খুলনার করোনা হাসপাতালগুলোতে করোনায় মৃত্যু শূন্য ছিল।
আরও পড়ুন: ফাইজারের ১০ লাখ টিকা আসছে ৩০ আগস্ট
এদিকে খুলনা মেডিকেল কলেজের পিসিআর ল্যাবে শনাক্তের হারও কমছে। গত রবিবারের প্রতিবেদন অনুযায়ী মোট ৩৭৫ টি নমুনা পরীক্ষায় করোনা শনাক্ত হয়েছে ৬৭ জনের। যা পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্তের হার ১৭ দশমিক ৮৭ শতাংশ। এর আগে শনিবার এই হার ছিল ১৯ দশমিক ৪১ শতাংশ।
খুলনা বিভাগে করোনায় ১১ জনের মৃত্যু
খুলনা বিভাগে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে। একই সময়ে করোনা শনাক্ত হয়েছে ৩৯৬ জনের।
শুক্রবার (২০ আগস্ট) বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. জসিম উদ্দিন হাওলাদার স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য নিশ্চিত করা হয়।
স্বাস্থ্য পরিচালকের দপ্তর সূত্রে জানা যায়, গত ২৪ ঘণ্টায় বিভাগের মধ্যে সর্বোচ্চ চারজনের মৃত্যু হয়েছে কুষ্টিয়ায়। এ ছাড়া ঝিনাইদহে তিনজন, যশোরে দুইজন, খুলনা, চুয়াডাঙ্গা ও মেহেরপুরে একজন করে মারা গেছেন।
আরও পড়ুনঃ করোনায় শেখ মুজিব মেডিকেলে আরও ৫ মৃত্যু
করোনা সংক্রমণের শুরু থেকে আজ সকাল পর্যন্ত বিভাগের ১০ জেলায় মোট ১ লাখ ৬ হাজার ২২ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ২ হাজার ৮৯০ জন। সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৯১ হাজার ৩৭ জন।
বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের জেলাভিত্তিক করোনা-সংক্রান্ত তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, খুলনা জেলায় ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে করোনা শনাক্ত হয়েছে ১২৭ জনের। এ পর্যন্ত করোনা শনাক্ত হয়েছে ২৬ হাজার ৫১৩ জনের। মারা গেছেন ৭৩৩ জন। সুস্থ হয়েছেন ২২ হাজার ৪০৪ জন।
বাগেরহাটে নতুন করে করোনা শনাক্ত হয়েছে ৩৩ জনের। এ নিয়ে জেলায় মোট করোনা শনাক্ত হয়েছে ৬ হাজার ৮৫৩ জনের। আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ১৩৮ জন এবং সুস্থ হয়েছেন ৬ হাজার ৫০৮ জন।
আরও পড়ুনঃ বিশ্বে করোনায় ৪৪ লাখের বেশি মানুষের মৃত্যু
সাতক্ষীরায় ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ২৪ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে জেলায় মোট করোনা শনাক্ত হয়েছে ৬ হাজার ৪৮০ জনের এবং মারা গেছেন ৮৭ জন। সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৫ হাজার ৫৩২ জন।
২৪ ঘণ্টায় যশোরে নতুন করে শনাক্ত হয়েছেন ৭০ জন। এ নিয়ে জেলায় মোট করোনা শনাক্ত হয়েছে ২০ হাজার ৭৩৮ জনের। মোট মারা গেছেন ৪৩৮ জন এবং সুস্থ হয়েছেন ১৯ হাজার ৩২৩ জন।
নড়াইলে নতুন করে শনাক্ত হয়েছেন ২২ জন। এ নিয়ে জেলায় মোট করোনা শনাক্ত হয়েছে ৪ হাজার ৬৬৯ জনের। মোট মারা গেছেন ১০৮ জন এবং সুস্থ হয়েছেন ৩ হাজার ৮৭১ জন।
মাগুরায় ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ৭ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এ জেলায় মোট করোনা শনাক্ত হয়েছে ৩ হাজার ৮৭৯ জনের। মোট মারা গেছেন ৮৪ জন এবং সুস্থ হয়েছেন ২ হাজার ৬৪৬ জন।
আরও পড়ুনঃ ঠাকুরগাঁওয়ে করোনা আক্রান্ত ২৮, মুত্যু ২
ঝিনাইদহে ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ১৫ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে জেলায় মোট করোনা শনাক্ত হয়েছে ৮ হাজার ৭২১ জনের। মোট মারা গেছেন ২৫১ জন এবং সুস্থ হয়েছেন ৬ হাজার ৮২৩ জন।
২৪ ঘণ্টায় কুষ্টিয়ায় নতুন করে শনাক্ত হয়েছেন ৬২ জন। এ নিয়ে জেলায় মোট করোনা শনাক্ত হয়েছে ১৭ হাজার ১১৪ জনের। মোট মারা গেছেন ৬৯৩ জন এবং সুস্থ হয়েছেন ১৪ হাজার ৪৬৬ জন।
চুয়াডাঙ্গায় ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ২০ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে জেলায় মোট করোনা শনাক্ত হয়েছে ৬ হাজার ৫৭২ জনের। মোট মারা গেছেন ১৮৩ জন এবং সুস্থ হয়েছেন ৫ হাজার ৪৪২ জন।
আরও পড়ুনঃ আক্রান্ত ও উপসর্গে বরিশাল বিভাগে ৭ মৃত্যু
মেহেরপুরে নতুন করে করোনা শনাক্ত হয়েছে ১৬ জনের। এ নিয়ে জেলায় মোট শনাক্ত হয়েছে ৪ হাজার ৪৮৩ জন। আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ১৭৫ জন এবং সুস্থ হয়েছেন ৪ হাজার ২২ জন।
জীবন-জীবিকার তাগিদে বিধিনিষেধ তুলে নেয়া হয়েছে: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে আরোপিত বিধিনিষেধ মানুষের জীবন ও জীবিকার তাগিদেই তুলে নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
তিনি বলেন, ‘করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে বিধিনিষেধ মানুষের জীবন ও জীবিকার তাগিদেই খুলে দেয়া হয়েছে। এখন আমাদের স্বাস্থ্যবিধি, টিকা আর মাস্কেই ভরসা করতে হবে।’
আরও পড়ুনঃ চীন থেকে আসবে সাড়ে ৭ কোটি ডোজ টিকা: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
শনিবার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) ডা. মিল্টন হলে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৬তম শাহাদাত বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস ২০২১ উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
আরও পড়ুনঃ রোগীর চাপ সামাল দিতে হোটেল খোঁজা হচ্ছে: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
জাহিদ মালেক বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় সারাদেশে টিকা কার্যক্রম বেগবান করা হচ্ছে। আপনারা মাস্ক পরবেন। সামাজিক দুরত্ব বজায় রাখবেন। জীবন-জীবিকার তাগিদে খুলে দেয়া হলেও মনে রাখতে হবে জীবনের মূল্য অনেক বেশি।
তিনি বলেন, ‘আমরা এখন করোনার দুর্যোগে আছি। পুরো পৃথিবী এই দুর্যোগে আক্রান্ত হয়েছে। ৪০ লক্ষাধিক মানুষ মারা গিয়েছে। আমাদের দেশে অন্য দেশের তুলনায় নিয়ন্ত্রণে আছে।’
আরও পড়ুনঃ গার্মেন্টস খোলায় সংক্রমণ আরও বাড়ার আশঙ্কা স্বাস্থ্যমন্ত্রীর
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
বিশ্বে করোনা আক্রান্ত সাড়ে ২০ কোটির বেশি মানুষ
বিশ্বে মহামারি করোনাভাইরাসের নতুন ডেল্টা ধরনের কারণে প্রতিদিনই বাড়ছে রোগী ও আক্রান্তদের মৃত্যু সংখ্যা। যুক্তরাষ্ট্রের জনস্ হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, শুক্রবার সকাল পর্যন্ত বিশ্বজুড়ে করোনায় মোট মৃতের সংখ্যা ৪৩ লাখ ৩৪ হাজার ৮৮ জন এবং মোট আক্রান্তের সংখ্যা ২০ কোটি ৫৩ লাখ ৬৮ হাজার ৮৫০ জনে দাঁড়িয়েছে।
এ পর্যন্ত বিশ্বজুড়ে মোট ৪৫৭ কোটি ৪ লাখ ৫৯ হাজার ৩১৬ ডোজ করোনার টিকা প্রদান করা হয়েছে।
করোনায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দেশ আমেরিকায় এখন পর্যন্ত মোট শনাক্তের সংখ্যা ৩ কোটি ৬৩ লাখ ৫ হাজার ৫ জন এবং মৃত্যুবরণ করেছে ৬ লাখ ১৯ হাজার ৯৮ জন।
আরও পড়ুন:
অপরদিকে দক্ষিণ আমেরিকার দেশ ব্রাজিলে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মোট মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫ লাখ ৬৬ হাজার ৯৮৮ জনে। দেশটিতে এ পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছে ২ কোটি ২ লাখ ৮৫ হাজার ৬৭ জন। মৃত্যুর দিক দিয়ে দেশটির অবস্থান দ্বিতীয়।
বাংলাদেশের প্রতিবেশী দেশ ভারতে মোট ৩ কোটি ২১ লাখ ১৭ হাজার ৫২ জনের সংক্রমণ নিয়ে বিশ্বে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সংক্রমণের স্থানে অবস্থান করছে। একই সময়ে মৃত্যু সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪ লাখ ৩০ হাজার ২৮৫ জনে।
তবে, ইন্দোনেশিয়ায় শুক্রবার সকাল পর্যন্ত গত ২৮ দিনে বিশ্বে সবচেয়ে বেশি ৪২ হাজার ৯৮৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। দেশটিতে এ পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছে ৩৭ লাখ ৭৪ হাজার ১৫৫ জন এবং মৃত্যুবরণ করেছে ১ লাখ ১৩ হাজার ৬৬৪ জন।
আরও পড়ুন:
বাংলাদেশ পরিস্থিতি
বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পাঠানো তথ্য অনুযায়ী, করোনা সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউয়ের মাঝে গেলো ২৪ ঘণ্টায় দেশে আরও ২১৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এসময় করোনা শনাক্ত হয়েছে আরও ১০ হাজার ১২৬ জনের।
বিজ্ঞপ্তি অনুসারে, নতুন মৃত্যুসহ দেশে মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৩ হাজার ৬১৩ জনে। এ পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা ১৩ লাখ ৯৬ হাজার ৮৬৮ জন।
আরও পড়ুন:
গত ২৪ ঘণ্টায় ৪৫ হাজার ৭৮ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে।এই সময় শনাক্তের হার শতকরা ২২.৪৬ শতাংশ। মৃত্যুর হার ১.৬৯ শতাংশ। গত ২৪ ঘন্টায় সুস্থ হয়েছে ১৩ হাজার ৯৯০ জন।এখন পর্যন্ত সুস্থ্য হয়েছে ১২ লাখ ৬২ হাজার ৬৫ জন।দেশে সুস্থতার হার ৯০.৩৫ শতাংশ।
গত ২৪ ঘণ্টায় ঢাকা বিভাগে ৬৫ জন, খুলনা বিভাগে ২৮ জন, চট্টগ্রামে ৫৪ জন, রংপুরে ১৬ জন, বরিশালে ১২ জন, সিলেটে ২২ জন, রাজশাহীতে আট জন এবং ময়মনসিংহে ১০ জন মারা গেছেন।
চট্টগ্রামে টিকা নিতে ভিড়, সংক্রমণ ঝুঁকি বাড়ছে
চট্টগ্রাম মহানগরীতে টিকা কেন্দ্রগুলোতে প্রচন্ড ভিড়ের কারণে চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। উপচে পড়া ভিড় আর অব্যবস্থাপনার কারণে উপেক্ষিত হচ্ছে স্বাস্থ্যবিধি। এতে সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ছে।
এক সময় করোনা টিকা গ্রহণে মানুষের মধ্যে অনীহা থাকলেও বর্তমানে টিকা গ্রহণে মানুষের মধ্যে প্রবণতা বাড়লেও বাড়েনি তাদের মধ্যে স্বাস্থ্য সচেতনতা। আবার মোবাইল ফোনে কোন মেসেজ না পেয়েও কেন্দ্রেগুলোতে অবাঞ্ছিত ভিড় অনেকটা নিত্য ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। এতে একদিকে টিকা কেন্দ্রগুলোতে উপেক্ষিত হচ্ছে স্বাস্থ্যবিধি, অন্যদিকে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করেও অনেকে টিকা নিতে পারছেন না।
চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন সূত্রে জানা যায়, চট্টগ্রামে নগরীতে প্রতিদিন গড়ে ১০ জন করে করোনা রোগী মারা যাচ্ছে। আক্রান্ত হচ্ছে প্রতিদিন ৮ থেকে ৯শ’ জন।
বুধবার সকাল থেকে নগরীর কয়েকটি টিকাদান কেন্দ্র ঘুরে উপচেপড়া ভিড় লক্ষ্য করা গছে। সকালে চট্টগ্রাম নগরীর সদরঘাট এলাকায় চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন জেনারেল হাসপাতাল টিকাদান কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, টিকা দিতে হাসপাতালের সামনে শত শত মানুষ সমবেত হয়েছেন। হাসপাতালের ভিতরে এক সঙ্গে এতো মানুষের প্রবেশ করানোর সুযোগ না থাকায় ধাপে ধাপে মানুষকে ভেতরে ঢুকানো হয়। কিন্তু প্রতিবার ভেতরে ঢুকানোর জন্য গেট খুলতেই হুমড়ি খেয়ে পড়ে সাধারণ মানুষ। গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি আবার কখনো রোদের তাপ সহ্য করে করোনার টিকা নিতে আসা মানুষ নির্দিষ্ট দূরত্ব বজায় না রেখেই লাইনে দাঁড়িয়ে ছিলেন। এমনকি লাইনের কেউ কেউ চাইছেন সামনের জনকে ঠেলে টিকা কেন্দ্রের ভেতরে প্রবেশ করতে। এতে চরম বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়।
আরও পড়ুন: টিকা পেতে ভোগান্তি, বিশৃঙ্খলা
সকাল ৮টায় টিকা নিতে আসা ৫৭ বছর বয়সী রহিম সোবাহান জানান, সকাল থেকে অপেক্ষা করছেন কেন্দ্রের বাইরে। ১১টা পর্যন্ত ভেতরে যাওয়ার সুযোগ পাননি তিনি।
এই একই চিত্র দেখা গেছে বন্দর, ইপিজেড ও পতেঙ্গা-হালিশহর এলাকার টিকা কেন্দ্রগুলোতে। তার মধ্যে বন্দরের ধোপপুলস্থ ৩৮নং ওয়ার্ড অফিসের টিকা কেন্দ্রেটি উল্লেখযোগ্য। এখানে অনেকেই টিকা নিবন্ধন করেই টিকার কোন মেসেজ না পেয়েও নিবন্ধন কার্ড নিয়ে ঘন্টার পর ঘন্টা লাইনে দাঁড়িয়েছিলেন।
পতেঙ্গার কাটগড় -স্টিল মিল এলাকায় টিকা দিতে আসা একাধিক নারী-পুরুষের লাইন এড়িয়ে তীব্র জটলার দৃশ্য দেখা যায়। তেমনি ইপিজেডের হক সাহেব রোডস্থ মোহাম্মদীয়া স্কুল এবং নিউ মুরিংস্থ আহম্মদীয় সরকারি প্রাঃ বিদ্যালয় টিকা কেন্দ্রে এবং নিয়মিত টিকা কেন্দ্রে বন্দরটিলা মাতৃসদনের নিচে-উপরে ও মূল কেন্দ্রে ভিড়ে স্বাস্থ্যবিধি মানা হয়নি।
এখানে লাইনে অপেক্ষমান হাজেরা বেগম নামে এক নারী বলেন, কেন্দ্রের বাইরে যে ভিড় তাতে করোনা মুক্তির জন্য টিকা নিতে আসলাম নাকি করোনা সঙ্গে করে নিতে আসলাম ঠিক বুঝতে পারছি না।
এ ব্যাপারে বন্দর ইপিআই জোনের জোনাল মেডিকেল অফিসার ডা. হাসান মুরাদ চৌধুরী বলেন, আমরা বারবার সরকার ঘোষিত টিকার এসএমএস ছাড়া কাউকে কেন্দ্রে না আসতে অনুরোধ জানাচ্ছি। সকল কেন্দ্রের সামনে ব্যানার-সাইনবোর্ড লাগিয়ে টিকা কেন্দ্রে ভিড় এড়াতে নিরুৎসাহী করছি। তারপরও জনসাধারণ টিকার এসএমএস না পেয়ে অনলাইনে নিবন্ধন করেই টিকা নিতে চলে আসছে। যার ফলে করোনাভাইরাস সংক্রমক ও করোনা উপসর্গ দ্বিগুণ বেড়ে যেতে পারে বলে ধারণা করছেন। আর এই অবস্থার রোধ করা না গেলে চট্টগ্রামে ভয়াবহ রূপ নিবে করোনা। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও এ ব্যাপারে বারবার ঘোষণা দিচ্ছে ভিড়-জনসমাগম রোধ করা না গেলে করোনাভাইরাস অতিমাত্রাই সংক্রমিত হবে।
আরও পড়ুন: টিকাদান কর্মসূচি সফল করতে কাজ করছে রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি জানান, একসঙ্গে অনেক মানুষ সমবেত হয়ে যাওয়ায় এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। সারাদিন টিকা দেয়ার সুযোগ থাকা সত্ত্বেও এক সঙ্গে অনেকে ভিড় করছে। এরপরও সুশৃঙ্খলভাবে সবাইকে টিকা দেয়ার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
সিভিল সার্জন আরও জানান, চট্টগ্রাম মহনগরী ও উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের মোট ৩২৬টি কেন্দ্রে করোনার গণটিকা কার্যক্রম চলছে। গতকাল শনিবার প্রথম দিন প্রায় ৫০ হাজার মানুষকে টিকা দেয়া হয়েছে। বয়স্ক এবং প্রতিবন্ধীদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে টিকা দেয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন এলাকায় ৪১ ওয়ার্ডের ১২৩টি বুথে টিকাদান কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। প্রতিটি ওয়ার্ডে তিনটি করে টিকাদান কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে।
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ও চসিক করোনা ভ্যাকসিন প্রদান কমিটির সদস্য সচিব ডা. সেলিম আখতার চৌধুরী জানান, সিটি করপোরেশন এলাকার প্রতি কেন্দ্রে ৩০০ জন করে টিকা নিতে পারছেন। তিনটি বুথে একদিনে ৯০০ জন টিকা পাবেন। এর বাইরে স্থায়ী ১১টি কেন্দ্রে টিকাদান কার্যক্রম চলমান আছে। কোন কেন্দ্রে অনিয়ম অব্যবস্থাপনার অভিযোগ পেলে আমরা তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করছি।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রাম পৌঁছেছে চীনের টিকা
দেশে করোনায় মৃত্যু ২৩ হাজার ছাড়াল
করোনার ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের সংক্রমণের মাঝে গেলো ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনা আক্রান্ত হয়ে সর্বোচ্চ ২৬৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। এটি দেশে এক দিনে করোনায় সর্বোচ্চ সংখ্যক মৃত্যুর ঘটনা। এর আগে গত ৫ আগস্টও আগের ২৪ ঘণ্টায় ২৬৪ জনের মৃত্যু হয়েছিল। নতুন মৃত্যুসহ দেশে মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৩ হাজার ১৬১ জনে।
মঙ্গলবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তি জানানো হয়, ২৪ ঘণ্টায় শনাক্ত হয়েছে আরও ১১ হাজার ১৬৪ জন। এনিয়ে মোট মোট আক্রান্তের সংখ্যা ১৩ লাখ ৭৬ হাজার ৩২২ জনে দাঁড়িয়েছে।
আরও পড়ুনঃ রামেকের করোনা ইউনিটে ২১ মৃত্যু
গত ২৪ ঘণ্টায় ৪৭ হাজার ৪২৪ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এই সময় শনাক্তের হার শতকরা ২৩.৫৪ শতাংশ।
এই পর্যন্ত করোনায় দেশে মৃত্যুর হার ১.৬৮ শতাংশ। এখন পর্যন্ত মোট সুস্থ হয়েছে ১২ লাখ ৩৪ হাজার ৭৬২ জন। দেশে সুস্থতার হার ৮৯.৭১ শতাংশ।
গত ২৪ ঘণ্টায় ঢাকা বিভাগে ৯২ জন, খুলনা বিভাগে ২৭ জন, চট্টগ্রামে ৬০ জন, রংপুরে ১৪ জন, বরিশালে ১১ জন, সিলেটে ১৭ জন, রাজশাহীতে ২৫ জন এবং ময়মনসিংহে ১৮ জন মারা গেছেন।
আরও পড়ুনঃ আক্রান্ত ও উপসর্গে বরিশাল বিভাগে ১৭ মৃত্যু
বিশ্ব পরিস্থিতি:
বিশ্বে মহামারি করোনাভাইরাসের নতুন ডেল্টা ধরনের কারণে প্রতিদিনই বাড়ছে রোগী ও আক্রান্তদের মৃত্যু সংখ্যা। যুক্তরাষ্ট্রের জনস্ হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত বিশ্বজুড়ে করোনায় মোট মৃতের সংখ্যা ৪৩ লাখ ২ হাজার ৪৯৩ জন এবং মোট আক্রান্তের সংখ্যা ২০ কোটি ৩৩ লাখ ৫১ হাজার ৮৪৭ জনে দাঁড়িয়েছে।
এ পর্যন্ত বিশ্বজুড়ে মোট ৪৪৪ কোটি ৭১ লাখ ৮৪ হাজার ৫২০ ডোজ করোনার টিকা প্রদান করা হয়েছে।
আরও পড়ুনঃ বিশ্বজুড়ে করোনায় মৃত্যু ৪৩ লাখ ছাড়াল
করোনায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দেশ আমেরিকায় এখন পর্যন্ত মোট শনাক্তের সংখ্যা ৩ কোটি ৫৯ লাখ ৪৭ হাজার ৯১৩ জন এবং মৃত্যুবরণ করেছে ৬ লাখ ১৭ হাজার ৩১৮ জন।
বাংলাদেশের প্রতিবেশী দেশ ভারতে মোট ৩ কোটি ১৯ লাখ ৬৯ হাজার ৯৫৪ জনের সংক্রমণ নিয়ে বিশ্বে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সংক্রমণের স্থানে অবস্থান করছে। একই সময়ে মৃত্যু সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪ লাখ ২৮ হাজার ৩০৯ জনে।
অপরদিকে দক্ষিণ আমেরিকার দেশ ব্রাজিলে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মোট মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫ লাখ ৬৩ হাজার ৫৬২ জনে। দেশটিতে এ পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছে ২ কোটি ১ লাখ ৭৭ হাজার ৭৫৭ জন। মৃত্যুর দিক দিয়ে দেশটির অবস্থান দ্বিতীয়।
করোনায় প্রাণ গেলো আরও ২৬১ জনের, শনাক্ত ৮১৩৬
করোনা সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউয়ের মাঝে গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে আরও ২৬১ জনের মৃত্যু হয়েছে। এসময় করোনা শনাক্ত হয়েছে আরও ৮ হাজার ১৩৬ জনের।
শনিবার প্রকাশিত স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বিজ্ঞপ্তি অনুসারে, নতুন মৃত্যুসহ দেশে মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২২ হাজার ৪১১ জনে। এ পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা ১৩ লাখ ৪৩ হাজার ৩৯৬ জন।
আরও পড়ুনঃ খুলনা বিভাগে একদিনে আরও ৩৯ মৃত্যু
গত ২৪ ঘণ্টায় ৩১ হাজার ৭১৪ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এই সময় শনাক্তের হার শতকরা ২৫.৬৫ শতাংশ। মৃত্যুর হার ১.৬৭ শতাংশ। গত ২৪ ঘন্টায় সুস্থ হয়েছে ১৬ লাখ ৩৮৩ জন। এখন পর্যন্ত সুস্থ হয়েছে ১১ লাখ ৮৮ হাজার ৮২০ জন। দেশে সুস্থতার হার ৮৮. ৪৯ শতাংশ।
আরও পড়ুনঃ করোনায় রামেক হাসপাতালে আরও ১২ মৃত্যু
গত ২৪ ঘণ্টায় ঢাকা বিভাগে ১০১ জন, খুলনা বিভাগে ৪৫ জন, চট্টগ্রামে ৬২ জন, রংপুরে ১০ জন, বরিশালে ১২ জন, সিলেটে ৭ জন, রাজশাহীতে আট জন এবং ময়মনসিংহে ১৬ জন মারা গেছেন।
সিলেটে করোনায় ৪ জনের মৃত্যু, শনাক্ত ৩৫২
সিলেটে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু ও শনাক্তের সংখ্যা কমেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় মারা গেছেন ৪ জন। আর এ সময়ে রোগী শনাক্ত হয়েছেন ৩৫২ জন।
শনিবার দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সিলেট বিভাগীয় কার্যালয় জানায়, শুক্রবার সকাল ৮টা থেকে শনিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত সিলেট বিভাগে করোনায় আক্রান্ত হয়ে ৪ জন মারা গেছেন। ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৩ জনসহ সবাই মারা গেছেন সিলেট জেলায়।
আরও পড়ুনঃ করোনায় রামেক হাসপাতালে আরও ১২ মৃত্যু
এনিয়ে বিভাগে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৭৮১ জনে। এর মধ্যে সিলেট জেলায় ৬২৬ জন মারা গেছেন। মৃতদের মধ্যে সুনামগঞ্জের৫৫ জন, মৌলভীবাজারের ৬২ জন ও হবিগঞ্জের ৩৮ জন রয়েছেন।
সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় সিলেটে ১০৫৫ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৩৫২ জনের শরীরে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়েছে। এদের মধ্যে সিলেট জেলায় ১৮২ জন, সুনামগঞ্জে ৩৭ জন, মৌলভীবাজারে ৩৪ জন ও হবিগঞ্জে ৯৯ জন রয়েছেন। এই সময় শনাক্তের হার ৩৩ দশমিক ৩৬।
আরও পড়ুনঃ করোনা ও উপসর্গে কুষ্টিয়ায় আরও ৯ মৃত্যু
সব মিলিয়ে বিভাগে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪৪ হাজার ৫৭১ জন। এর মধ্যে সিলেট জেলায় ২৭ হাজার ৭৬৭ জন শনাক্ত হয়েছেন। আক্রান্তদের মধ্যে সুনামগঞ্জের ৫ হাজার ১৫০ জন, মৌলভীবাজারের ৬ হাজার ২৫৫ জন ও হবিগঞ্জের ৫ হাজার ৩৯৯ জন রয়েছেন।
আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে সুস্থ হয়ে ওঠেছেন ৩২ হাজার ৫৮৭ জন। এর মধ্যে সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন ৮৬ জন।
আরও পড়ুনঃ বিশ্বজুড়ে করোনায় মৃত্যু পৌনে ৪৩ লাখ ছাড়াল
সিলেট বিভাগীয় পরিচালক (স্বাস্থ্য) ডা. হিমাংশু লাল রায় জানান, বর্তমানে সিলেটের বিভিন্ন হাসপাতালে ৪৯৮ জন করোনা রোগী চিকিৎসাধীন।
চট্টগ্রামে ৯৩ শতাংশ রোগীর দেহে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত: গবেষণা
চটগ্রামে বর্তমানে ৯৩ শতাংশ করোনা রোগীই উচ্চ সংক্রমণশীল ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত। নগরী ও গ্রামে ডেল্টার সংক্রমণ সমানভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। সংক্রমিত রোগীর মধ্যে আছেন তরুণ, যুবক, মধ্যবয়সী ও বৃদ্ধ।
করোনা রোগীর জিনোম সিকোয়েন্স উন্মোচনের পর শুক্রবার গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানান গবেষণা প্রতিষ্ঠান চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও অ্যানিমেল সায়েন্স বিশ্ববিদ্যালয় (সিভাসু)।
আরও পড়ুনঃ দেশে করোনা আক্রান্তদের ৯৮ শতাংশ ডেল্টায় সংক্রমিত: বিএসএমএমইউসম্প্রতি সিভাসু এবং ঢাকা বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদ যৌথভাবে এ গবেষণাটি সম্পন্ন করেছে। গবেষণায় দেখা যায়, ডেলটা ভ্যারিয়েন্ট শহর ও গ্রামে সমানভাবে ছড়িয়েছে। ৩০ জনের মধ্যে ২৮ জনই করোনার ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত হয়েছেন। অবশিষ্ট দুজন রোগীর একজন যুক্তরাজ্য ভ্যারিয়েন্ট এবং অপরজন চীনের উহানের একটি ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত হয়েছেন।চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন এলাকা থেকে ১৫ জন ও উপজেলা থেকে ১৫ জন করোনা রোগীর নমুনা পরীক্ষা করে এমন তথ্য দেন তারা। দ্রুত ছড়াতে পারে একজন থেকে অন্যজনে।আক্রান্ত ৩০ জনের মধ্যে নগরীর ১৪ জন ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট ও নগরীর বাইরে ১৪ জন ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত হয়েছেন বলে উল্লেখ করা হয়।
আরও পড়ুনঃ চট্টগ্রামে করোনা আক্রান্ত শতভাগ শিশুর দেহে ডেল্টা ধরন
সিভাসুর উপাচার্য অধ্যাপক ড. গৌতম বুদ্ধ দাশের তত্ত্বাবধানে ‘কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের স্বাস্থ্যঝুঁকি মূল্যায়ন’ শীর্ষক এই গবেষণায় পোলট্রি রিসার্চ ও ট্রেনিং সেন্টার (পিআরটিসি) সহযোগিতা করে।
ড. গৌতম বুদ্ধ বলেন, ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট অত্যন্ত সংক্রামক। এটি এখন দেশজুড়ে করোনাভাইরাসের প্রভাবশালী স্ট্রেইন। ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট যখন কাউকে আক্রান্ত করে তখন তার শরীরে সেই ভাইরাসটি সংখ্যায় অনেক বেশি থাকে। অর্থাৎ, ভাইরাসটি খুব দ্রুত তাদের সংখ্যা বৃদ্ধি করতে পারে। যার ফলে আক্রান্ত ব্যক্তির হাঁচি-কাশি থেকে অধিক সংখ্যক ভাইরাস বেরিয়ে আসে, যা সহজেই অন্যকে আক্রান্ত করতে পারে।
আরও পড়ুনঃ চট্টগ্রামে করোনায় প্রাণ গেল আরও ১৭ জনেরতিনি আরও বলেন, ১ জুলাই থেকে ১৯ জুলাই পর্যন্ত হাসপাতালে ভর্তি হওয়া ১৫ জন রোগী ও আক্রান্ত ১৫ জন যারা হাসপাতালে আসেননি এমন রোগীর নমুনা সংগ্রহ করেছি। এদের মধ্যে ১৮ জন পুরুষ, ১২ জন নারী আছেন। ডেলটা ভ্যারিয়েন্টের আক্রমণ প্রথমে সীমান্তবর্তী জেলায় ও পরে ঢাকায় শুরু হয়েছিল। চট্টগ্রামে দু-একজন রোগী পাওয়া গেলেও বর্তমান ঢেউয়ের জন্য কোন ভ্যারিয়েন্ট দায়ী তা জানা যাচ্ছিল না। আমরা মূলত গবেষণা করে সেটিই বের করেছি। এটি চিকিৎসক ও করোনা চিকিৎসার ক্ষেত্রে অনেক সহায়ক হবে বলে আমার বিশ্বাস।‘
গবেষণায় ড. গৌতম বুদ্ধ দাশের নেতৃত্বে সাত জন শিক্ষক অংশ নেন।