চুক্তি
রাশিয়ার ওপর নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপ জাপানের, বেলারুশে পারমাণবিক অস্ত্র মোতায়েন চুক্তির সমালোচনা
ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধের জন্য রাশিয়ার বিরুদ্ধে অতিরিক্ত নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে জাপান। নিষেধাজ্ঞার মধ্যে রয়েছে কয়েক ডজন ব্যক্তি ও গোষ্ঠীর সম্পদ জব্দ করা এবং রাশিয়ান সামরিক-সম্পর্কিত সংস্থাগুলোতে রপ্তানি নিষিদ্ধ করা।
শুক্রবার এই নিষেধাজ্ঞার অনুমোদন করে জাপান।
দেশটির মুখ্য মন্ত্রিপরিষদ সচিব হিরোকাজু মাতসুনো সাংবাদিকদের বলেন, মন্ত্রিসভার অনুমোদন অনুযায়ী রাশিয়ার বিরুদ্ধে জাপানের নিষেধাজ্ঞা অব্যাহত ও জোরদার করার জন্য গত সপ্তাহে হিরোশিমায় তাদের শীর্ষ সম্মেলনের সময় সম্মত হওয়া গ্রুপ অব সেভেনের বাকি অংশের সঙ্গে এক ধাপ এগিয়েছে।
তিনি বলেন, ইউক্রেনের ‘পরিস্থিতির উন্নতি করতে’ অন্যান্য জি-৭ দেশ এবং বৃহত্তর আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে কাজ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ জাপান।
মাতসুনো বৃহস্পতিবার রাশিয়া এবং বেলারুশের মধ্যে একটি চুক্তি সইয়ের তীব্র সমালোচনা করেছেন যেটি ‘আরো উত্তেজনা বৃদ্ধি’ হিসাবে তার মিত্র অঞ্চলে মস্কোর কৌশলগত পারমাণবিক অস্ত্র মোতায়েনের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করেছে।
মাতসুনো বলেছেন, ‘বিশ্বের একমাত্র দেশ হিসেবে পারমাণবিক হামলার শিকার হয়েছে জাপান। এজন্য রাশিয়ার পারমাণবিক অস্ত্রের হুমকি এবং তাদের ব্যবহার একেবারেই অগ্রহণযোগ্য বলে মনে করে জাপান।’ ‘জাপানের সরকার রাশিয়া এবং বেলারুশের কাছে এমন পদক্ষেপ বন্ধ করার দাবি করে যা উত্তেজনাকে আরও বাড়িয়ে তোলে, কারণ আমরা দৃঢ় উদ্বেগের সঙ্গে উন্নয়ন পর্যবেক্ষণ চালিয়ে যাচ্ছি।’
আরও পড়ুন: রাশিয়ার ৩টি তেল শোধনাগারের নিয়ন্ত্রণ নিল জার্মানি
মাতসুনো বলেছেন, জাপানের অতিরিক্ত নিষেধাজ্ঞা এবং রপ্তানি নিষেধাজ্ঞাগুলো তৃতীয় দেশগুলোর নিষেধাজ্ঞাগুলো ফাঁকি দেওয়া রোধ করতে জি-৭ এর লক্ষ্যকে প্রতিফলিত করে এবং রাশিয়ার শিল্প ভিত্তিকে শক্তিশালী করতে সাহায্য করবে এমন সামগ্রী রপ্তানির ওপর নিষেধাজ্ঞা অন্তর্ভুক্ত করে।’
পররাষ্ট্র, বাণিজ্য ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের যৌথভাবে জারি করা একটি বিবৃতিতে, নিষেধাজ্ঞা এড়ানো এবং এড়ানোর অভিযোগে সহায়তা করেছিল সেই গুলোসহ ২৪ ব্যক্তি এবং ৭৮টি সংস্থাকে সম্পদ জব্দ করা বিষয়ক তালিকায় যুক্ত করা হয়েছে।
জাপান মেশিনারি প্রস্তুতকারকসহ রাশিয়ার সামরিক-সম্পর্কিত ৮০টি প্রতিষ্ঠানের উপর রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। রাশিয়ার জন্য নির্মাণ, প্রকৌশল এবং অন্যান্য পরিষেবার বিধানও নিষিদ্ধ করা হবে।
এশিয়ায় সংঘাতের প্রভাব নিয়ে ক্রমবর্ধমান উদ্বেগের মধ্যে ইউক্রেনের সঙ্গে রাশিয়ার যুদ্ধের কারণে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করার জন্য জাপান জি-৭ এর সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে সহযোগিতা করছে, যেখানে চীন তার সামরিক উপস্থিতি প্রসারিত করছে এবং স্ব-শাসিত তাইওয়ানের উপর নিয়ন্ত্রণ প্রয়োগের জন্য শক্তি প্রয়োগের হুমকি দিচ্ছে।
আরও পড়ুন: ইউক্রেনের ৪ অঞ্চল রাশিয়ার সঙ্গে যুক্ত, স্বাক্ষর করলেন পুতিন
বাংলাদেশ-ইন্দোনেশিয়া অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য চুক্তি শিগগিরই: বাণিজ্যমন্ত্রী
খুব শিগগিরই বাংলাদেশ ও ইন্দোনেশিয়া মধ্যকার অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য চুক্তি হওয়ার আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।
রবিবার (২ এপ্রিল) মন্ত্রণালয়ে নিজ দপ্তরে ইন্দোনেশিয়ার রাষ্ট্রদূত হেরু হারতান্তো সুবোলোর সৌজন্য সাক্ষাতকালে তিনি এ আশাবাদ ব্যক্ত করেন। ইন্দোনেশিয়ার রাষ্টদূতও চুক্তি সম্পাদনের লক্ষ্যে অগ্রগতি সাধনের বিষয়ে একমত পোষণ করেন।
আরও পড়ুন: রমজানে সামান্য মুনাফা করুন, ব্যবসায়ীদেরকে বললেন বাণিজ্যমন্ত্রী
এসময় বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ইন্দোনেশিয়ার সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য চুক্তির বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এই চুক্তিকে বাস্তবে রুপ দিতে দুই দেশ ‘ট্রেড নেগোশিয়েন্স কমিটি’ গঠন করেছে এবং এখন পর্যন্ত তিনটি সভা করেছে।আগামী মাসে ইন্দোনেশিয়ায় চতুর্থ সভা অনুষ্ঠিত হবে, এই রাউন্ডে আলোচনা চূড়ান্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।’
এরপরই দুই দেশের বাণিজ্যমন্ত্রী এই চুক্তিতে সাক্ষর করার বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনার ওপর জোর দেন।
দুই দেশের ব্যবসায়ী সম্প্রদায়ের দ্বারা সম্ভাবনাময় খাতে বাণিজ্য ও বিনিয়োগের সুযোগ আরও সম্প্রসারণ এবং ত্বরান্বিত করার ওপর গুরুত্বারোপ করে টিপু মুনশি দুই দেশের ব্যবসায়ী সম্প্রদায়ের মধ্যে আরও ঘন ঘন যোগাযোগের পরামর্শ দেন। যাতে করে তারা সম্ভাবনাময় খাত চিহ্নিত করতে এবং বিনিয়োগের সুযোগ সৃষ্টি করতে পারে।
বিশেষ করে আরএমজি, ফার্মাসিউটিক্যালস, চামড়াজাত পণ্যসহ ছাড়াও অন্যান্য বাংলাদেশি পণ্যের প্রবেশের অনুমতি দিয়ে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যে ভারসাম্য বজায় রাখার আহ্বান জানান তিনি।
এ প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, ২০২১-২২ অর্থবছরে বাংলাদেশ ৭৮ দশমিক ৫৭ মিলিয়ন ইউএস ডলারের পণ্য ইন্দোনেশিয়ায় রপ্তানি করে। অন্যদিকে দেশটি থেকে আমদানি করেছে প্রায় তিন হাজার ৮২ ইউএস ডলার সমমূল্যের পণ্য।
এই বিশাল বাণিজ্য ঘাটতিকে ভারসাম্য পর্যায়ে আনতে আরও বেশি বাংলাদেশি পণ্য ইন্দোনেশিয়ার বাজারে প্রবেশের সুযোগ করার ব্যবস্থা গ্রহণে দেশটির প্রতি আহ্বান জানান।
ইন্দোনেশিয়ায় বাংলাদেশি নাগরিকদের জন্য ভিসা সহজীকরণ প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, উভয়ের দেশের সম্পর্ক অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ, বন্ধুপ্রতীম ও সৌহার্দ্যপূর্ণ। দুই দেশই পর্যটন খাতে ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে। ভিসা প্রক্রিয়া সহজীকরণের মাধ্যমে উভয় দেশের ভ্রমণপিপাসু মানুষ ভ্রমণ করার সুযোগ পাবে এবং অর্থনীতিতে অবদান রাখবে।
বাণিজ্যমন্ত্রী দুই দেশের ব্যবসায়ী গোষ্ঠীর মধ্য সম্পর্ক উন্নয়ন এবং বাণিজ্য প্রসারে এপেক্স চেম্বারের মধ্যে এমওইউ সাক্ষরের আহ্বান জানালে ইন্দোনিশিয়ার রাষ্ট্রদূত সম্মত হন এবং সহযোগিতার ব্যাপারে প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
এসময় রাষ্ট্রদূত হেরু হারতান্তো সুবোলোর বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশে অভূতপূর্ব সাফল্য অর্জিত হয়েছে। স্বল্পোন্নত দেশে থেকে উন্নয়নশীল দেশে রুপান্তরিত হয়েছ।
বাংলাদেশে বিনিয়োগের অপার সম্ভাবনার কথা উল্লেখ করে তিনি জানান, বাংলাদেশে পামওয়েল রিফাইনারি স্টেশন স্থাপনের বিষয়ে ইন্দোনেশিয়ার ব্যবসায়ীরা ইচ্ছুক।
এছাড়া, সাক্ষাৎকালে তারা ইন্দোনেশিয়া-বাংলাদেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক, অর্থনীতি-কূটনীতি, বাংলাদেশের চলমান উন্নয়ন কার্যক্রম, বাংলাদেশের ধর্মীয় সম্প্রীতি, কোভিড পরবর্তী এবং ইউক্রেন-রাশিয়া সঙ্কটের মধ্যে বাংলাদেশের স্থিতিশীল অর্থনৈতিক অবস্থা, ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার ইত্যাদি বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন।
আরও পড়ুন: ভুটান-বাংলাদেশ ট্রানজিট চুক্তি সই: বাণিজ্যমন্ত্রী
রোজার প্রথম সপ্তাহেই চিনির দাম কেজিতে ৫ টাকা কমবে: বাণিজ্যমন্ত্রী
চমেকে ১৫০ শয্যার বার্ন ইন্সটিটিউট প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশ-চীন চুক্তি সই
চীন সরকারের অনুদান সহায়তায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে ১৫০ শয্যা বিশিষ্ট একটি বার্ন ইউনিট স্থাপনের বিষয়ে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় এবং চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের মধ্যে একটি চুক্তি সই হয়েছে।
বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে বাংলাদশে সরকারের পক্ষে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব ড. মু.আনোয়ার হোসনে হাওলাদার এবং চীন সরকারের পক্ষে বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়নে চুক্তি সই করেন।
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সচিব মো. আজিজুর রহমান, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, স্বাস্থ্য সেবা বিভাগসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়/ বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ঊর্ধতন কর্মকর্তারা অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন।
চীন আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সহযোগিতা সংস্থার ভাইস চেয়ারম্যান দেং বোকিং, ঢাকাস্থ চীন দূতাবাসের অন্যান্য ঊর্ধতন কর্মকর্তারা এবং চীনের একটি এক্সপার্ট টিম চীন সরকাররে পক্ষে উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: ভুটান-বাংলাদেশ ট্রানজিট চুক্তি সই: বাণিজ্যমন্ত্রী
এ প্রসঙ্গে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, সাক্ষরিত বাস্তবায়ন চুক্তির আওতায় চীন সরকারের সম্পূর্ণ অনুদান সহায়তায় চমেক হাসপাতালে ১৫০ শয্যা বিশিষ্টি একটি বার্ন ইউনিট স্থাপিত হবে। ওই ইউনিটের জন্য প্রয়োজনীয় সকল ধরনের মেডিকেল যন্ত্রপাতি এবং আসবাবপত্র চীন সরকার অনুদান সহায়তা হিসেবে দেবে।তিনি বলেন, নির্মিতব্য বার্ন ইউনিটে একটি বহিঃবিভাগ, একটি অন্তঃবিভাগ, একটি জরুরি বিভাগ, ১০টি আইসিইউ বেড, পুরুষদের জন্য ১০টি এইচডিইউ বেড, মহিলাদের জন্য ১০টি এইচডিইউ বেড এবং শিশুদের জন্য ৫টি এইচডিইউ বেড থাকবে। নির্মাণকাজ সম্পন্ন করতে দুই বছরের মত সময় লাগবে।
মন্ত্রী আরও বলেন, ঢাকার মতই চট্রগ্রামেও আগুনজনিত বিভিন্ন দুর্ঘটনা নৈমিত্তিক ঘটে চলেছে। এজন্য চট্রগ্রামে ঢাকার মানের একটি বার্ন ইন্সটিটিউটের প্রয়োজন ছিল।
জাহিদ মালেক বলেন, ঢাকায় শেখ হাসিনা বার্ন ইন্সটিটিউটের ৫০০ বেডই প্রায় পূর্ণ থাকে। ঢাকায় এই একটি বার্ন ইন্সটিটিউট থাকায় এর ওপর চাপ পড়ছে। চট্রগ্রামে ১৫০ বেডের বার্ন ইন্সটিটিউট চালু হলে এ চাপ কিছুটা কমে যাবে।
তিনি আরও বলেন, এর পাশাপাশি শিগগিরই আমরা আরও নতুন করে ৫ বিভাগে ৫ টি বার্ন ইন্সটিটিউট নির্মাণকাজ হাতে নিয়েছি। এতে করে দেশে ৭টি উন্নত মানের বার্ন ইন্সটিটিউট হয়ে যাবে।
আরও পড়ুন: ট্রানজিট সুবিধায় যানবাহন চলাচলে বাংলাদেশ-ভুটানের চুক্তি স্বাক্ষর
সৌদি-ইরান চুক্তির পর বিশ্বে বৃহৎ ভূমিকা রাখতে চায় চীন
নোয়াখালীতে ৪ লাখ টাকা চুক্তিতে সিএনজি চালককে হত্যা: গ্রেপ্তার ৮
নোয়াখালী সদর উপজেলায় সিএনজিচালিত অটোরিকশা চালক আব্দুল হাকিমকে (৩৫) গলা কেটে হত্যার ঘটনায় আট জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
সোমবার (১৩ মার্চ) দুপুর সংবাদ সম্মেলনে এ
তথ্য নিশ্চিত করেছেন জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) মো. শহীদুল ইসলাম।
আরও পড়ুন: বরিশালে নৌ-পুলিশের ওপর হামলা: অর্ধশত জেলের বিরুদ্ধে মামলা, গ্রেপ্তার ৮
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন- সদর উপজলার পশ্চিম চরমটুয়া গ্রামের মো. মমিন উল্যার ছেলে মো. মহিন (২৭), পশ্চিম মাইজচরা গ্রামের রেজিয়াগো বাড়ির মৃত আব্দুল মালেকের ছেলে মো. কামাল ওরফে কামাল ডাকাত (৩৮), হারুন মোল্লা বাড়ির আনোয়ারুল হক নশুর ছেলে মো. আজাদ হোসেন (৩২), পশ্চিম চরমটুয়া গ্রামের অজি উল্যাহ পাটোয়ারী বাড়ির শাহজাহানের ছেলে রিপু মিয়া (২১), আক্কাস সওদাগর বাড়ির আক্কাস সওদাগরের ছেলে জাহিদ হাসান (২৮), পশ্চিম চরমটুয়া গ্রামের মাহফুজের বাপের বাড়ির মো. সেলিমের ছেলে সোহেল হোসেন ওরফে শাকিল (২৪), একই গ্রামের দোকান বাড়ির মকবুল আহমেদের ছেলে মমিন উল্যাহ (৩৭) এবং পাটোয়ারী বাড়ির অজি উল্যার ছেলে নূর আলম মিস্ত্রি (৫৫)।
পুলিশ সুপার বলেন, ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারীর সঙ্গে নিহত সিএনজি চালিত অটোরিকশা চালক আব্দুল হাকিমের শক্রতা ছিল। একে অপরের বিরুদ্ধে পাল্টাপাল্টি মামলা চলমান রয়েছে। পরিকল্পনাকারী শক্রতার প্রতিশোধ নেয়ার জন্য আব্দুল হাকিমকে হত্যার পরিকল্পনা করে। তার পরিকল্পনার অংশ হিসেবে অর্থের লোভ দেখিয়ে আব্দুল হাকিমের সিএনজি অটোরিকশার মালিক মহিনকে ব্যবহার করা হয়।
ঘটনার দিন রবিববার (২৬ ফেব্রুয়ারি) পরিকল্পনা হিসেবে মহিম তার বাড়িতে কামাল, রিপু, মোমেন, নূর আলমসহ আরও কয়েকজনকে নিয়ে অবস্থান করে। মহিন আব্দুল হাকিমকে অটোরিকশা রাখার কথা বলে কৌশলে বাড়িতে ডেকে নেয়।
তিনি আরও জানান, এরপর হাকিম অটোরিকশা জমা দেয়ার সময় হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী ও অজ্ঞাতনামা আরও চার থেকে পাঁচজন মিলে তার মুখ বেঁধে ফেলে।
পরবর্তীতে সব আসামিরা হাকিমকে উপজেলার পূর্ব চরমটুয়া ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের পশ্চিম চরমটুয়া গ্রামের সফিগঞ্জ বাজারের দক্ষিণ রাস্তার পূর্ব পাশে ইদ্রিস মিয়ার বাড়ির পেছনের ডগির ভেতরে নিয়ে গলা কেটে হত্যা করে। মৃত্যু নিশ্চিতের পর সব আসামিরা মিলে হাকিমের লাশ বস্তার ভেতর ঢুকিয়ে মাটি চাপা দেয়।
পুলিশ সুপার আরও জানান, তদন্তকালে আসামি সোহেলের ভাষ্যমতে আসামি রিপুর বাড়ি থেকে হত্যঅয় ব্যবহৃত শাবল ও কোদাল উদ্ধার করা হয়। মূল পরিকল্পনাকারী হত্যাকাণ্ডের জন্য আসামি মহিমের সঙ্গে চার লাখ টাকা চুক্তি করেছিলেন।
এছাড়া তিনি জানান, আসামি রিপু ও সোহেল ওরফে শাকিল হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করেছেন। শনিবার ও রবিবার বিকালে তারা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
জবানবন্দি গ্রহণ শেষ হলে আদালত তাদের কারাগারে পাঠিয়েছেন বলেও জানান এ পুলিশ কর্মকর্তা।
আরও পড়ুন: সিলেটে মাদরাসা ছাত্রীকে তুলে নিয়ে ধর্ষণ, গ্রেপ্তার ১
কলাপাড়ায় ১০ বছরের শিশুকে যৌন হয়রানি, গ্রেপ্তার ১
সৌদি-ইরান চুক্তির পর বিশ্বে বৃহৎ ভূমিকা রাখতে চায় চীন
সৌদি আরব ও ইরানের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনরায় চালু করার একটি চুক্তিতে বেইজিং ভূমিকা রাখার পর প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং চীনকে বৈশ্বিক বিষয়গুলো পরিচালনায় আরও বড় ভূমিকা পালনের আহ্বান জানিয়েছেন।
সোমবার শি অনুগতদের নিয়ে সরকার গঠনের পর আইনসভা অধিবেশনে বক্তব্য দেন যাতে অর্থনীতি ও সমাজের উপর তার নিয়ন্ত্রণ শক্ত করেছিল।
চীনের আনুষ্ঠানিক আইনসভার বার্ষিক সভা শেষে এক বক্তব্যে কয়েক দশকের মধ্যে দেশটির সবচেয়ে শক্তিশালী নেতা শি বলেছেন, চীনের উচিত ‘বৈশ্বিক শাসন ব্যবস্থার সংস্কার ও নির্মাণে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করা’ এবং ‘বৈশ্বিক নিরাপত্তা উদ্যোগ’ প্রচার করা উচিত।’
শি বলেছেন, এটি ‘বিশ্ব শান্তি ও উন্নয়নে ইতিবাচক শক্তি যোগ করবে এবং আমাদের দেশের উন্নয়নের জন্য একটি অনুকূল আন্তর্জাতিক পরিবেশ তৈরি করবে।’
শি ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট পার্টির উচ্চাকাঙ্ক্ষার কোনো বিশদ বিবরণ না দিলেও তার সরকার ২০১২ সালে ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে বিদেশে ক্রমবর্ধমান দৃঢ় নীতি অনুসরণ করেছে। এটি আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল এবং অন্যান্য সংস্থাগুলোতে পরিবর্তনের জন্য চাপ দিয়েছে। বেইজিং বলছে যে উন্নয়নশীল দেশ তাদের চাহিদা এবং ইচ্ছা প্রতিফলিত করতে ব্যর্থ হয়েছে।
আরও পড়ুন: ইরান ও সৌদি আরবের সম্পর্ক পুনস্থাপনকে স্বাগত জানায় বাংলাদেশ: মোমেন
বেইজিং বাণিজ্য ও নির্মাণ উদ্যোগকে উন্নীত করার জন্য দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি হিসাবে চীনের ক্রমবর্ধমান উচ্চতার ওপর ভিত্তি করে তৈরি করেছে। যা ওয়াশিংটন, টোকিও, মস্কো এবং নয়া দিল্লি তাদের বিস্তৃতিতে এর কৌশলগত প্রভাবকে প্রসারিত করবে বলে উদ্বিগ্ন।
শি’র সরকার ২০২২ সালের শুরুর দিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং অস্ট্রেলিয়াকে বিচলিত করেছিল। যখন এটি সলোমন দ্বীপপুঞ্জের সঙ্গে একটি সুরক্ষা চুক্তি সই করেছিল যা দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপ দেশটিতে চীনা নৌবাহিনীর জাহাজ এবং নিরাপত্তা বাহিনীকে মোতায়েন করার অনুমতি দেবে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী, কিন গ্যাং গত সপ্তাহে ওয়াশিংটনকে সম্ভাব্য ‘সংঘাত ও সংঘর্ষ’ সম্পর্কে সতর্ক করে দিয়েছিলেন। যদি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তাইওয়ান, মানবাধিকার, হংকং, নিরাপত্তা এবং প্রযুক্তি নিয়ে দ্বন্দ্বের কারণে উত্তেজনাপূর্ণ সম্পর্কের গতিপথ পরিবর্তন না করে।
শির সোমবারের ভাষণে জাতীয়তাবাদী পদে ভরপুর একটি বক্তব্যে দ্রুত প্রযুক্তি উন্নয়ন এবং আরও আত্মনির্ভরতার আহ্বান জানান। তিনি আটবার ‘জাতীয় পুনরুজ্জীবন’ বা চীনকে অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক নেতা হিসেবে চীনের সঠিক ঐতিহাসিক ভূমিকা পুনরুদ্ধারের কথা উল্লেখ করেছেন।
শুক্রবার, অক্টোবরে ঐতিহ্য ভেঙ্গে এবং শাসক দলের সাধারণ সম্পাদক হিসাবে নিজেকে তৃতীয়-পাঁচ বছরের মেয়াদে পুরস্কৃত করার পরে আজীবন নেতা হওয়ার পথে নিজেকে রেখে দেয়ার পরে আনুষ্ঠানিক চীনা প্রেসিডেন্টের আরেকটি মেয়াদে শির নাম ঘোষণা করা হয়েছিল। ন্যাশনাল পিপলস কংগ্রেসের অধিবেশন এক দশকের পরিবর্তনে প্রধানমন্ত্রী এবং অন্যান্য সরকারি নেতা হিসাবে তার অনুগতদের নিয়োগকে সমর্থন করে শির আধিপত্যকে শক্তিশালী করেছে। শি সম্ভাব্য প্রতিদ্বন্দ্বিদের দূরে সরিয়ে দিয়েছেন এবং ক্ষমতাসীন দলের শীর্ষস্থানীয় ব্যক্তিরা তাকে সমর্থন করেছেন।
শি বলেছেন যে ১৯৪৯ সালে ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট পার্টি ক্ষমতায় আসার আগে, বিদেশি দেশগুলোর নিপীড়নে চীন ‘আধা-ঔপনিবেশিক, আধা-সামন্ততান্ত্রিক দেশে পরিণত হয়েছিল।’
শি বলেছেন, ‘আমরা অবশেষে জাতীয় অপমান মুছে ফেলেছি এবং চীনা জনগণ তাদের নিজেদের ভাগ্যের মালিক।’ ‘চীনা জাতি ঘুড়ে দাঁড়িয়েছে, ধনী হয়েছে এবং শক্তিশালী হয়ে উঠছে।’
শি দেশটিকে ‘জাতীয় পুনঃএকত্রীকরণের’ লক্ষ্য ‘অটলভাবে অর্জন’ করার জন্যও আহ্বান জানিয়েছিন। বেইজিংয়ের দাবির উল্লেখ করে যে গণতান্ত্রিক স্ব-শাসিত দ্বীপ তাইওয়ান, তার ভূখণ্ডের অংশ চীনের সঙ্গে একত্রিত হতে বাধ্য, প্রয়োজনে বল প্রয়োগ করে হলেও।
আরও পড়ুন: সৌদিতে ২০২৪ সাল থেকে ওষুধ উৎপাদন করবে বেক্সিমকো
বিজনেস সামিট: প্রথম দিনেই সৌদি আরবের সঙ্গে চুক্তি ও এমওইউ সই
বাংলাদেশ বিজনেস সামিট-২০২৩ এর উদ্বোধনী দিনে শনিবার (১১ মার্চ) সৌদি আরব ও চীনের সঙ্গে বাংলাদেশ একটি চুক্তি এবং ৩টি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সই করেছে।
পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপের (পিপিপি) ভিত্তিতে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যদিয়ে গ্যাস পাইপলাইন স্থাপনের জন্য সৌদি কোম্পানির সঙ্গে একটি চুক্তি সই হয়েছে এবং রংপুর চিনিকল ও পতেঙ্গা কন্টেইনার টার্মিনালের উন্নয়নে সৌদি আরবের সঙ্গে দুটি এমওইউ সই হয়।
অন্যদিকে, অবকাঠামো উন্নয়নে চীনের সঙ্গে আরেকটি এমওইউ সই হয়।
ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফবিসিসিআই) চীন কাউন্সিল ফর দ্য প্রমোশন অব ইন্টারন্যাশনাল ট্রেডের (সিসিপিইটি) সঙ্গে একটি এমওইউ সই করেছে।
এফবিসিসিআই বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) সরকারের সঙ্গে অংশীদারিত্বে ৩ দিনব্যাপী বিজনেস সামিটের আয়োজন করছে, যা আগামী সোমবার শেষ হবে।
সামিটের কারিগরি উপদেষ্টা ড.এম মাসরুর রিয়াজ বলেন, এই সামিট; বাংলাদেশের ফ্ল্যাগশিপ বিজনেস প্রমোশন ইভেন্টে পরিণত হওয়ার পরিকল্পনা করে, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ও বাজারের সক্ষমতা এবং বাংলাদেশে সুনির্দিষ্ট বাণিজ্য ও বিনিয়োগের সুযোগ তুলে ধরতে চায়।
আরও পড়ুন: ব্যবসায়িক আস্থা সমীক্ষা: ব্যবসাগুলো সম্প্রতি ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি বজায় রাখছে
তিনি বলেন, শীর্ষ সম্মেলনটি জাতীয় ও বৈশ্বিক ব্যবসায়ী নেতা, বিনিয়োগকারী, নীতিনির্ধারক, অনুশীলনকারী, নীতি ও বাজার বিশ্লেষক, একাডেমিয়া এবং উদ্ভাবকদের সঙ্গে ব্যবসায়-টু-ব্যবসায় নেতাদের মিথস্ক্রিয়া করার একটি সুযোগ তৈরি করে।
সৌদি আরব, চীন ও ভুটানের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি পৃথকভাবে বৈঠক করেন।
বৈঠক শেষে মন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, সৌদি আরব, চীন ও ভুটান বাংলাদেশে বিনিয়োগে আগ্রহ প্রকাশ করেছে।
চীনা বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশে জ্বালানি, কৃষিভিত্তিক শিল্প, খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ এবং অবকাঠামো উন্নয়ন খাতে বিনিয়োগের আগ্রহ প্রকাশ করেছে।
মুন্সি আরও বলেন, চীন বাংলাদেশের সঙ্গে চলমান বাণিজ্য ও বিনিয়োগ আরও বাড়াতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে।
তিনি বলেন, সৌদি আরব একটি বন্ধুত্বপূর্ণ দেশ, যারা বাংলাদেশের জ্বালানি খাতে ব্যাপক বিনিয়োগ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
এ ছাড়া সৌদি আরব কৃষিভিত্তিক শিল্প ও খাদ্য খাতে বিনিয়োগ করতে আগ্রহী।
ভুটানও বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য বাড়াতে আগ্রহী। এ জন্য তারা সমুদ্র ও স্থলবন্দরের নানা সমস্যা দূর করে দ্রুত বাণিজ্য বাড়াতে চায় বলে জানান বাণিজ্যমন্ত্রী।
মুন্সী বলেন, ‘বাংলাদেশের উন্নয়ন এখন দৃশ্যমান এবং অর্থনীতি আগের চেয়ে শক্তিশালী। বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাড়াতে বিভিন্ন দেশ এগিয়ে আসছে।’
রবিবার, বিআিইসিসি-এর সামিট সেন্টারে মূল সেক্টর, কনজিউমার গুডস, ইনফ্রাস্ট্রাকচার, লং টার্ম ফাইন্যান্স, অ্যাপারেল ও টেক্সটাইল, ডিজিটাল ইকোনমি, এনার্জি সিকিউরিটি, জাপান বাংলাদেশ বিজনেস এবং এগ্রো বিজনেস-এ বিনিয়োগের সুযোগের ওপর ৯টি সেশন অনুষ্ঠিত হবে।
আরও পড়ুন: বিকাশমান সমুদ্র অর্থনীতির সফলতা নির্ভর করছে সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণের ওপর
বিজিএমইএ’র আরও দুটি সবুজ কারখানার স্বীকৃতি ইউএসজিবিসি’র
বতসোয়ানার সঙ্গে চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক সই
বাংলাদেশ আফ্রিকার দেশ বতসোয়ানার সঙ্গে একটি চুক্তি এবং একটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সই করেছে।
এরমধ্যে একটি হলো, কূটনৈতিক ও অফিসিয়াল পাসপোর্টধারীদের জন্য ভিসা ছাড় সংক্রান্ত একটি চুক্তি এবং অপরটি হলো দ্বিপক্ষীয় রাজনৈতিক পরামর্শ সভা সংক্রান্ত একটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ)।
বৃহস্পতিবার পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম বতসোয়ানার রাজধানী গ্যাবোরোনে দেশটির প্রতিমন্ত্রী লেমোগাং কোয়াপে-এর সঙ্গে একটি দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেন। বৈঠক শেষে তারা এ চুক্তি ও সমঝোতা স্মারকে সই করেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রথম আনুষ্ঠানিক দ্বিপক্ষীয় সফরে প্রতিমন্ত্রী দুই দিনের সফরে বতসোয়ানায় রয়েছেন। এসময় বতসোয়ানায় স্বীকৃত বাংলাদেশের হাইকমিশনার এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারাও বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
বতসোয়ানার পররাষ্ট্রমন্ত্রী লেমোগাং শাহরিয়ারের এই সফরকে সম্পর্ক জোরদার করার পারস্পরিক ইচ্ছার প্রতীক হিসেবে অভিহিত করেছেন।
তিনি বলেছেন, বতসোয়ানা ও বাংলাদেশ অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে অভিজ্ঞতা বিনিময় করতে পারে এবং সহযোগিতার সুনির্দিষ্ট ক্ষেত্র চিহ্নিত করতে পারে।
তিনি আরও বলেন, দুই পক্ষই জাতিসংঘ ও কমনওয়েলথের মতো আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্মে সহযোগিতা করছে এবং সংস্থাগুলোতে একে অপরকে সমর্থন করছে।
লেমোগাং শিগগিরই বাংলাদেশ সফরের ইচ্ছাও প্রকাশ করেছেন।
আরও পড়ুন: কানাডা পটাশিয়াম সার বিক্রি অব্যাহত রাখবে: কৃষিমন্ত্রী
রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রে কয়লা সরবরাহ চুক্তি জিতল বসুন্ধরা গ্রুপ
রামপাল কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে আট মিলিয়ন টন কয়লা সরবরাহের চুক্তি জিতেছে বসুন্ধরা গ্রুপ। সরকারি সূত্রে জানা গেছে, তিনটি কোম্পানি কয়লা সরবরাহের জন্য দরপত্র জমা দিয়েছে।
বাংলাদেশ-ইন্ডিয়া ফ্রেন্ডশিপ পাওয়ার কোম্পানির(প্রা.) (বিআইএফপিসিএল) এক শীর্ষ কর্মকর্তা ইউএনবিকে জানিয়েছে, ‘আইসিআই-২-এর সূচকের অধীনে বিদ্যুত কেন্দ্রের জেটি পর্যন্ত পণ্য পৌঁছানোর জন্য বসুন্ধরা লিমিটেড সর্বনিম্ন দরদাতা হিসেবে প্রতি মেট্রিক টন কয়লা ২৩২ দশমিক ৩৩ ডলার প্রস্তাব করে।
বিআইএফপিসিএল কয়েক মাস আগে দরপত্র আহ্বান করেছিল এবং তিনটি কোম্পানি-স্থানীয় বসুন্ধরা, আকিজ এবং দুবাই-ভিত্তিক কমোডিটি ফার্স্ট-- কয়লা সরবরাহ চুক্তি জেতার জন্য তাদের নিজ নিজ দরপত্র জমা দেয়।
সোমবার দরপত্রগুলো খোলা হয় এবং বসুন্ধরা প্রথম সর্বনিম্ন মেট্রিক টন কয়লার মূল্য ২৩২ দশমিক ৩৩ প্রস্তাব করে এবং কমোডিটি ফার্স্ট প্রতি মেট্রিক টন ২৩৪ ডলার প্রস্তাব করে দ্বিতীয় সর্বনিম্ন হয় এবং আকিজ গ্রুপ প্রতি মেট্রিক টন ২৮২ ডলার মূল্যে কয়লা সরবরাহের প্রস্তাব দেয়।
এর আগে, বসুন্ধরা গ্রুপ দক্ষিণ বাগেরহাট জেলার রামপালে ১৩২০ মেগাওয়াট মৈত্রী সুপার থার্মাল পাওয়ার প্ল্যান্টের (২*৬৬০ মেগাওয়াট) জন্য সীমিত তিন লাখ মেট্রিক টন কয়লা সরবরাহের জন্য প্রথম দরপত্র জিতেছিল।
সে সময় যৌথ উদ্যোগে দুটি সহযোগী সংস্থা বসুন্ধরা ফুড অ্যান্ড বেভারেজ ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড(বিএফবিআইএল) এবং বসুন্ধরা মাল্টি ট্রেডিং লিমিটেড (বিএমটিএল)-বিআইএফপিসিএল-এর আন্তর্জাতিক টেন্ডারে অংশগ্রহণ করে টেন্ডার জিতেছিল।
মৈত্রী সুপার থার্মাল পাওয়ার প্রজেক্ট, রামপাল পাওয়ার প্ল্যান্ট নামে পরিচিত, বাংলাদেশ-ইন্ডিয়া ফ্রেন্ডশিপ পাওয়ার কোম্পানি (বিআএফপিসিএল) বাংলাদেশ পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট বোর্ড (বিপিডিবি) এবং ন্যাশনাল থার্মাল পাওয়ার কর্পোরেশন (এনটিপিসি) এর মধ্যে ৫০:৫০ যৌথ উদ্যোগে নির্মিত হয়েছিল। গত বছরের ২৩ ডিসেম্বর পরীক্ষামূলক কার্যক্রম শুরু করে।
যৌথ উদ্যোগে বাংলাদেশ সরকারের বিপিডিবি এবং ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতিনিধিত্ব করে এনটিপিসি।
আরও পড়ুন: কয়লার অভাবে ৮ দিন ধরে রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ
২০১০ সালে ঢাকা ও দিল্লি যৌথ উদ্যোগে প্ল্যান্টটি নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেয় এবং প্ল্যান্টটি নির্মাণে প্রায় ১৩ বছর সময় লেগেছিল।
বিপিডিবি প্ল্যান্টের পুরো আউটপুট ২৫ বছরের জ্বালানি ক্রয় চুক্তির (পিপিএ) অধীনে ক্রয় করবে। কিন্তু বিপিডিবি এখনও তার বাণিজ্যিক কার্যক্রমের তারিখ (সিওডি) নিশ্চিত করেনি।
চুক্তি অনুযায়ী বিপিডিবি তার বিরতিহীন কর্মক্ষমতা নিয়ে সন্তুষ্ট হলেই সিওডি শুরু হবে।
বিআইএফপিসিএলের প্রধান ক্রয় কর্মকর্তা (সিপিও) জিয়াউর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান যে আট মিলিয়ন মেট্রিক টন কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্রের চালু থাকা দুটি ইউনিটের তিন বছরের চাহিদা পূরণ করবে।
তিনি বলেন, চট্টগ্রাম বন্দরে বা মোংলা বন্দরে সম্ভাব্য সুবিধার ওপর নির্ভর করে কয়লা আনলোড করা হবে এবং তারপর পাঁচ হাজার মেট্রিক টন থেকে তিন হাজার মেট্রিক টন ক্ষমতা সম্পন্ন ছোট জাহাজের মাধ্যমে প্ল্যান্টের জেটিতে নিয়ে যাওয়া হবে।
ইন্দোনেশিয়া থেকে কয়লা আমদানি করা হবে বলে জানান ওই কর্মকর্তা।
বসুন্ধরা গ্রুপের মতে, স্থানীয় সংস্থা, বসুন্ধরা মাল্টি ট্রেডিং সরকারি-বেসরকারি প্রকল্পের জন্য উচ্চমানের কয়লা এবং পাথর সরবরাহের জন্য ২০১৮ সালে যাত্রা শুরু করে।
বসুন্ধরা ওয়েবসাইটে বলেছে, কোম্পানিটি তার পরিষেবা এবং পরিবহন ব্যবস্থার সঙ্গে একটি শক্তিশালী সাপ্লাই চেইন নেটওয়ার্ক স্থাপনের মাধ্যমে এই খাতে একটি নেতৃস্থানীয় উদ্যোগতায় পরিণত হয়েছে।
আরও পড়ুন: রামপালে মৈত্রী সুপার থার্মাল পাওয়ার প্ল্যান্ট ভারত-বাংলাদেশ বন্ধুত্বের দৃঢ় বহিঃপ্রকাশ: প্রণয় ভার্মা
নাগরিক ব্যবস্থাপনায় ধারণা বিনিময়ে ডেট্রয়েটের সঙ্গে ডিএনসিসি’র এমওইউ সই
উন্নত শহর গড়ে তোলার লক্ষ্যে জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা বিনিময়ের লক্ষ্যে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) এবং যুক্তরাষ্ট্রের মিশিগান অঙ্গরাজ্যের ডেট্রয়েট শহরের মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সই হয়েছে।
এখন থেকে ডিএনসিসিকে যে কোন ধরনের সহযোগিতা করতে পারবে ডেট্রয়েট সিটি। অন্য দিকে বাংলাদেশেরও উত্তম কার্যক্রমগুলো শেয়ার করতে পারবে ডিএনসিসি।
বৃহস্পতিবার (২৬ জানুয়ারি ২০২৩) স্থানীয় সময় দুপুর ১২টায় ডেট্রয়েট সিটি ভবনে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম ও ডেট্রয়েট সিটির মেয়র মাইকেল ই দুগান ডিএনসিসি’র সঙ্গে ডেট্রয়েট নগরীর সিস্টার সিটির সমঝোতা স্মারক সই করেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন ডেট্রয়েট সিটির ডেপুটি মেয়র টোডা এ ব্যাটিসন, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের সচিব মোহাম্মদ মাসুদ আলম ছিদ্দিক, বাংলাদেশ আমেরিকান পাবলিক অ্যাফেয়ার্স কমিটির চেয়ারম্যান এহসান তাকবীম, স্যোসাল অ্যাফেয়ার্স কাউসার খান প্রমুখ।চুক্তির আওতায় নগরের পরিচ্ছন্নতা, ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা, ড্রেনেজসহ নগর উন্নয়নের সবগুলো সেক্টরে সহায়তা করবে ডেট্রয়েট। এর মাধ্যমে ঢাকা যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় হবে বলে মনে করেন ডিএনসিসি মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম।
এই চুক্তি আধুনিক ঢাকা গড়তে যেমন সহায়তা করবে পাশাপাশি শুধু ডেট্রয়েটই নয় যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রেও নতুন মাত্রা যোগ করবে বলে মনে করেন তিনি। শিগগিরই ডেট্রয়েটের মেয়র বাংলাদেশ সফরে আসবেন বলেও নিশ্চিত করেছেন ডিএনসিসি মেয়র।
আরও পড়ুন: মশার জাত বুঝে কীটনাশক প্রয়োগ বাড়াতে চায় ডিএনসিসি: মেয়র আতিক
মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম বলেন, 'বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে একটি ইতিহাস সৃষ্টি হলো। যুক্তরাষ্ট্রের ডেট্রয়েট সিটি এবং বাংলাদেশের ডিএনসিসির সঙ্গে সমঝোতা সিস্টার সিটির স্মারক স্বাক্ষরিত হলো। এটি একটি যুগান্তকারী দিন। এতে প্রমাণিত হয় যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের অত্যন্ত ভালো সম্পর্ক রয়েছে।'
তিনি বলেন, 'ডেট্রয়েট ম্যানুফ্যাকচারিং সিটি। ঢাকাও ম্যানুফ্যাকচারিং সিটি। কাজেই এই চুক্তি আমাদের জন্য মাইলফলক হয়ে থাকবে। সিস্টার সিটি চুক্তির অর্থ হলো তাদের ভালো দিকগুলো আমাদের দিতে চায়। আবার আমরা আমাদের ভালো দিকগুলো তাদের দিতে চাই। তারা আমাদের ভালো দিক হিসেবে উল্লেখ করেছে কিভাবে আমরা অধিক জনঘনত্বের শহরকে পরিচালিত করি। কারণ ডেট্রয়েট সিটির জনঘনত্বও বাড়ছে যা তাদের চিন্তার কারণ।'ডিএনসিসি মেয়র আরও বলেন, 'ডেট্রয়েট সিটির মেয়র জানিয়েছেন এক সময় তাদেরও ক্যানেলগুলোর খারাপ অবস্থা ছিল। তাদের ট্রাফিক ব্যবস্থাপনায় অনেক পরিবর্তন আনতে সক্ষম হয়েছে। আমরা কিভাবে তাদের ট্রাফিক ব্যবস্থাপনাকে কাজে লাগাতে পারি সে বিষয়ে কথা হয়েছে। ডেট্রয়েট সিটির মেয়র কথা দিয়েছেন তিনি ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে বাংলাদেশ আসবেন। তার আগে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সময় সময় কথা হবে। প্রয়োজনে তাদের বিশেষজ্ঞ দিয়ে আমাদের সহায়তা করবেন।'
আরও পড়ুন: বায়ুদূষণ কমাতে অত্যাধুনিক মেশিনে পানি ছিটাচ্ছে ডিএনসিসি
২০২৩ সালে হজের জন্য সৌদির সঙ্গে বাংলাদেশের চুক্তি
চলতি বছর বাংলাদেশ থেকে আগের কোটা অনুযায়ী এক লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন হজ পালন করতে পারবেন। সোমবার (৯ জানুয়ারি) সকালে সৌদি আরবে এ চুক্তি হয়।
একই সঙ্গে উঠে গেছে ৬৫ বছরের বেশি বয়সীদের হজ পালনের নিষেধাজ্ঞা। এছাড়া এমন শর্ত থেকে সৌদি আরবের সঙ্গে হজ চুক্তি করেছে বাংলাদেশ।
আরও পড়ুন: অন্য দেশের কেউ এবার হজ পালন করতে সৌদি যেতে পারবে না
ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপসচিব আবুল কাশেম মুহাম্মদ শাহীন ইউএনবিকে এ তথ্য জানান।
তিনি জানান, ‘আজ সকাল ১০টার দিকে সৌদি আরবের সঙ্গে হজ চুক্তি হয়। হজ চুক্তিতে বাংলাদেশের পক্ষে ধর্ম বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান এবং সৌদি আরবের হজ ও ওমরাহ বিষয়ক মন্ত্রী ড. তৌফিক আল-রাবিয়াহ সই করেন।’
উপসচিব বলেন, চুক্তি অনুযায়ী এবার সরকারিভাবে ১৫ হাজার জন এবং বাকি এক লাখ ১২ হাজার ১৯৮ জন বেসরকারিভাবে এজেন্সির মাধ্যমে হজে যেতে পারবেন।
এছাড়া হজ টিমের (প্রশাসনিক ও মেডিকেল) সদস্য হিসাবে সৌদি আরবে যেতে পারবেন এক হাজার ২৭০ জন।
তিনি আরও জানান, ‘এবার রুট টু মক্কা ইনিশিয়েটিভের আওতায় শতভাগ হজযাত্রীদের ইমিগ্রেশন বাংলাদেশেই হবে। হজযাত্রীদের অবশ্যই কোভিড টিকা নিতে হবে। জেদ্দা দিয়ে ৭০ শতাংশ এবং মদীনা দিয়ে ৩০ শতাংশ হজযাত্রী আসা-যাওয়া করবেন।’
বাড়ি ভাড়াসহ অন্যান্য কার্যক্রম ই-হজ ব্যবস্থাপনার আওতায় অনলাইনে বলেও জানান আবুল কাশেম মুহাম্মদ শাহীন।
হজ চুক্তি ছাড়াও সৌদি আরবের হজ ও ওমরা কনফারেন্স এবং এক্সিবিশনেও অংশ নিতে গত ৭ জানুয়ারি সৌদি আরবে যান ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক খানের নেতৃত্বে তিন সদস্যের প্রতিনিধি দল।
প্রতিনিধি দলে রয়েছেন ধর্ম মন্ত্রণালয়ের হজ অনুবিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. মতিউল ইসলাম এবং হজ এজেন্সিস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব) এর সভাপতি এম শাহাদাত হোসাইন তসলিম।
করোনা মহামারির আগে ২০১৯ সালে স্বাভাবিক হজ হয়েছে। তখন বাংলাদেশ থেকে এক লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন মানুষ হজ পালন করেন।
২০২০ সালের জন্য বাংলাদেশ এবং সৌদি আরবের মধ্যে হজ সংক্রান্ত যে চুক্তি হয়, সেখানে বাংলাদেশিদের হজযাত্রীর কোটা ১০ হাজার বৃদ্ধি করা হয়।
২০২০ সালে এক লাখ ৩৭ হাজার বাংলাদেশি হজে যেতে পারতেন। কিন্তু করোনাভাইরাস মহামারীর কারণে সৌদি আরবের নিষেধাজ্ঞায় বাংলাদেশ থেকে কেউ হজ পালন করতে পারেনি।
২০২১ সালেও বিদেশিদের জন্য হজ পালনে নিষেধাজ্ঞা ছিল।
করোনা মহামারী কমে এলে গত বছর (২০২২) বিভিন্ন দেশ থেকে কোটা অর্ধেক করে হজ পালনের অনুমতি দেয় সৌদি আরব।
বাংলাদেশ থেকে ৬০ হাজার মুসলমান হজ পালন করেন।
এছাড়া করোনা মহামারীর কারণে গত বছর ৬৫ বছরের বেশি বয়সীদের হজ পালনের ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা ছিলো।
আরও পড়ুন: হজ পালনে মিনায় ১০০০ হাজি
সীমিত পরিসরে হজ পালন সঠিক সিদ্ধান্ত: ঢাকা