রায়
নড়াইলে হত্যা মামলায় ছেলের মৃত্যুদণ্ড, বাবাসহ ২ ভাইয়ের যাবজ্জীবন
নড়াইলের নড়াগাতী থানার কালিনগর গ্রামে ফিরোজ ভূঁইয়া হত্যা মামলায় একজনের ফাঁসি ও তিনজনের যাবজ্জীবন দিয়েছেন আদালত। একই সাথে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেয়া হয়।
রবিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে জেলা ও দায়রা জজ মুন্সী মো. মশিয়ার রহমান এই রায় ঘোষণা করেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আলমগীর ভূঁইয়া (৫০) জেলার কালিনগর গ্রামের ছায়েন উদ্দিনের ছেলে।
যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- বাবা ছায়েন উদ্দিন ভূঁইয়া ও তার দুই ছেলে হাবিবুর রহমান ভূঁইয়া (৫৫) ও জঙ্গু ভূঁইয়া।
আরও পড়ুন: খুলনায় শিশু হত্যা মামলায় সৎ মায়ের মৃত্যুদণ্ড
রায় ঘোষণার সময় চার আসামির মধ্যে জঙ্গু ভূঁইয়া ছাড়া অন্যরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
মামলার বিবরণে জানা যায়, জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জেরে নড়াইলের নড়াগাতী থানার কালিনগর গ্রামে বাদী রবিউল ইসলাম ভূঁইয়াদের সাথে আসামিপক্ষের বিরোধ চলে আসছিল। এর জের ধরে ২০১৪ সালের ১৮ জানুয়ারি কালিনগর বাজারে উভয়পক্ষের মধ্যে শালিস বৈঠক হয়। এরপর দিন সকাল সাড়ে ৯টার দিকে বাদীর ভাই ফিরোজ ভূঁইয়াকে কালিনগর বাজার এলাকায় দেশি অস্ত্র ধারালো গুপ্তি বুকে ঢুকিয়ে হত্যা করে। ১৬ জনের সাক্ষ্যপ্রমাণ শেষে আদালত এ রায় ঘোষণা করেন।
আরও পড়ুন: খুলনায় ব্যবসায়ী হত্যায় একজনের মৃত্যুদণ্ড
আবারও পেছাল তিন্নি হত্যা মামলার রায়
মডেল সৈয়দা তানিয়া মাহবুব তিন্নি হত্যা মামলায় রায় ঘোষণার তারিখ আবারও পিছিয়ে দিয়েছে ঢাকার একটি আদালত। তার বাবা ও চাচার করা আবেদনের ভিত্তিতে সোমবার ঢাকার সপ্তম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ কেশব রায় চৌধুরী এ আদেশ দেন।
মামলায় তিন্নির বাবা সৈয়দ মাহবুবুর করিম ও চাচা সৈয়দ রেজাউল করিমের দুই সাক্ষীর জবানবন্দি নেওয়ার জন্য আগামী ৫ জানুয়ারি দিন ধার্য করেছেন আদালত।
এর আগে গত ২৬ অক্টোবর একই আদালত মামলার রায় ঘোষণার জন্য ১৫ নভেম্বর দিন ধার্য করেন।
মামলার এজাহারে বলা হয়,২০০২ সালের ১০ নভেম্বর কেরানীগঞ্জে বুড়িগঙ্গা নদীর ওপর চীন-বাংলাদেশ মৈত্রী সেতুর ১১ নম্বর পিলারের কাছে মডেল তিন্নিকে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়।
আরও পড়ুন: মডেল তিন্নি হত্যা মামলার রায় ১৫ নভেম্বর
এ ঘটনায় পরদিন একটি মামলা দায়ের করা হয়। ২০০২ সালের ২৪ নভেম্বর মামলাটি অপরাধ তদন্ত বিভাগে (সিআইডি)স্থানান্তরিত হয়। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মোজাম্মেল হক এ মামলায় চার্জশিট দাখিল করেন।
তদন্তে পুলিশ এ মামলায় জাতীয় পার্টির সাবেক সংসদ সদস্য গোলাম ফারুক অভির জড়িত থাকার প্রমাণ পায়।
২০১০ সালের ১৪ জুলাই ঢাকার সপ্তম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ তিন্নিকে হত্যার অভিযোগে অভির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন।
আরও পড়ুন: মুনিয়া হত্যা মামলায় মডেল পিয়াসার ২ দিনের রিমান্ড
ফের রিমান্ডে মডেল পিয়াসা ও মৌ
খুলনায় শিশু হত্যা মামলায় সৎ মায়ের মৃত্যুদণ্ড
খুলনার তেরখাদা উপজেলার আড়কান্দি গ্রামের আলোচিত শিশু তানিশা হত্যা মামলায় সৎ মা তিথী আক্তার মুক্তাকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সাথে তাকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
সোমবার আসামির উপস্থিততে খুলনা জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মশিউর রহমান চৌধুরী এ রায় ঘোষণা করেন।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ছিলেন মো. এনামুল হক, তার সহযোগী হিসেবে এপিপি সেখ ইলিয়াস হোসেন ও মোসা. শাম্মি আক্তার। সাত কার্যদিবসে মামলাটির কার্যক্রম সম্পন্ন হয়েছে।
আরও পড়ুন: খুলনায় ব্যবসায়ী হত্যায় একজনের মৃত্যুদণ্ড
আদালত জানায়, তানিশা আড়কান্দি গ্রামের আনসার ব্যাটালিয়ন সদস্য মো. খাজা শেখের মেয়ে। খাজা শেখের পোস্টিং ছিল বান্দরবন। আগের স্ত্রীর সাথে ছাড়াছাড়ি হওয়ার পর খাজা ২০২০ সালের ২৯ জানুয়ারি ফকিরহাট উপজেলার আট্রাকি গ্রামের দক্ষিণপাড়া এলাকার মৃত হোসেন আলী শেখের মেয়ে মুক্তাকে বিয়ে করেন। বিয়ের পর মোবাইলে আসক্ত ছিলেন তিনি। বিভিন্ন ব্যক্তির সাথে ইমো ও ম্যাসেঞ্জারে কথা বলতো। এ নিয়ে খাজা স্ত্রীকে সন্দেহ করে। তানিশা মুক্তার সাথে একই বিছানায় ঘুমাতো। ওই বছর ২ এপ্রিল ম্যাসেঞ্জারে ফারাবি প্রসেনজিত নামে এক ব্যক্তির সাথে বন্ধুত্ব ও কথা বলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে উভয়ের মধ্যে তুমুল ঝগড়া বাধে। একপর্যায়ে খাজা স্ত্রীকে তালাক দেয়াসহ বিষয়টি সকলকে জানিয়ে দেয়ার হুমকি দেয়। খাজার ওপর প্রতিশোধ নিতে তানিশাকে হত্যার পরিকল্পনা করে মুক্তা।
৫ এপ্রিল রাত ৯টার দিকে হত্যার উদ্দেশে দরজা বন্ধ করে ঘুমন্ত তানিশার ওপর আক্রমণ করেন। দা দিয়ে ঘাড়ে ও মাথায় আঘাত করতে থাকেন। ধস্তাধস্তির শব্দ শুনে তানিশার দাদি দরজা খুলতে বলেন। কিন্তু মুক্তা দরজা খোলেননি। পরে তানিশার চাচা রাজু শেখ বাড়ি এসে দরজা খুলতে বললে মুক্তা বাইরে বের হন। ঘরে ঢুকে তানিশার নিথর দেহ খাটের ওপর পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয়রা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেন। সেখানকার চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
আরও পড়ুন: স্ত্রীকে পুড়িয়ে মারার দায়ে ফরিদপুরে স্বামীর মৃত্যুদণ্ড, দেবরের যাবজ্জীবন
ভুক্তভোগীর দাদা মো. আবুল বাশার শেখ এ ঘটনায় তেরখাদা থানায় মুক্তাকে আসামি করে মামলা করেন। ওই বছর ৩১ মে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই শফিকুল ইসলাম মুক্তাকে আসামি করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন।
স্ত্রীকে পুড়িয়ে মারার দায়ে ফরিদপুরে স্বামীর মৃত্যুদণ্ড, দেবরের যাবজ্জীবন
ফরিদপুরে স্ত্রীকে পুড়িয়ে মারার দায়ে স্বামীর ফাঁসি ও দেবরকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এর পাশাপাশি দু’জনকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এছাড়াও মামলা অপর দুই আসামিকে খালাস দেয়া হয়।
মঙ্গলবার দুপুরে আসামিদের উপস্থিতিতে ফরিদপুরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) প্রদীপ কুমার রায় এই আদেশ দেন।
সাজাপ্রাপ্তরা হলেন, আলফাডাঙ্গার ধলাইরচর গ্রামের ছেকেন্দার খানের ছেলে শাহাবুদ্দিন খান ও তার ছোট ভাই সুমন খান।
আরও পড়ুন: ২ বান্ধবীকে ধর্ষণের পর হত্যা: যশোরে ২ আসামির ফাঁসি আজ
নিহত মনিরা খানম একই গ্রামের কবির মোল্লার মেয়ে ও দণ্ডপ্রাপ্ত শাহাবুদ্দিন খানের স্ত্রী।
নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট স্বপন পাল জানান, ২০১১ সালে ২৭ জুন জেলার আলফাডাঙ্গা উপজেলার ধলাইরচর গ্রামে আসামি সাহাবুদ্দিন খান ও সুমন খানসহ পরিবারের অন্য সদস্য আছিয়া বেগম ও ঝুমুর বেগম মিলে মনিরাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যার উদ্দেশ্যে তার গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন দেয়।
আরও পড়ুন: শিশুপুত্র হত্যা : বাবার ফাঁসির সাজা কমিয়ে যাবজ্জীবন
পরে মনিরার চিৎকারের আশ-পাশের লোকজন এসে তাকে উদ্ধার করে প্রথমে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেলে পাঠানো হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
এই ঘটনায় নিহত মনিরার বাবা কবির মোল্লার বাদী হয়ে ২০১১ সালের ৩ জুলাই আলফাডাঙ্গা থানায় নারী নির্যাতন ও হত্যা মামলা দায়ের করে। উক্ত মামলায় পুলিশ ২০১১ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর আদালতে র্চাজশিট দাখিল করে। মামলায় দীর্ঘ সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে মঙ্গলবার (২৬ অক্টোবর) আদালত রায় ঘোষণা করেন।
হত্যা মামলা: যশোরে ছয়জনের যাবজ্জীবন
যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলার আস্তায়খোলা গ্রামের মো. শরীফুল ইসলাম হত্যা মামালায় ছয় জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
এদের মধ্যে এক আসামিকে এক লাখ ২৫ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে এক বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও বাকিদের পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে ছয় মাসের সশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেয়া হয়। এছাড়া অপর ছয় আসামিকে বেকসুর খালাস দেয়া হয়।
আরও পড়ুন: খুলনায় সার্ভেয়ার হত্যা মামলায় একজনের যাবজ্জীবন
বৃহস্পতিবার বিভাগীয় (জেলা ও দায়রা) জজ আদালতের বিচারক মো. নজরুল ইসলাম হাওলাদার এ রায় ঘোষণা করেন।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন, জিয়াউর রহমান জিয়া (পলাতক), আব্দুল্লাহ (পলাতক), ইকবাল (পলাতক), আলম, কামাল ও নাঈম।
মামলার বিবরণ থেকে জানা যায়, ২০১৫ সালের ৯ জুন সকাল সাড়ে ৯টার দিকে এনামুল ও শরীফুল বাড়ির কাজ দেখাশুনা করার জন্য ধলগ্রামের দিকে যাচ্ছিল। তাদের কাছে নগদ এক লাখ ২৫ হাজার টাকা ছিল। পথে তকব্বর নামে এক আসামি তাদের গতিরোধ করে। পাশে অবস্থানরত অন্য সন্ত্রাসীরা তাদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোর করে ওই আসামির বাড়ি নিয়ে যায় দেশীয় অস্ত্র ও রড়সহ ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাদের কুপিয়ে জখম করে দুর্বৃত্তরা।
আরও পড়ুন: ফরিদপুরে এনজিওকর্মী ধর্ষণ ও হত্যার দায়ে একজনের যাবজ্জীবন
আস্তায়খোলা গ্রামের নাইম লোহার রড দিয়ে শরীফুল ইসলামকে হত্যার উদ্দেশে মাথার পিছনে পরপর কয়েকটি আঘাত করে। তাদের চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে গেলে তাদের ওপরও আক্রমণ করে দুর্বৃত্তরা। এরপর আসামিরা এনামুল ও শরীফুলের কাছ থেকে নগদ এক লাখ ২৫ হাজার টাকা নিয়ে চলে যায়। পরে গুরুতর আহত দুজনকে নিয়ে যশোরের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। শরীফুলের অবস্থার অবনতি হলে তাকে ঢাকায় পাঠানো হলে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। এ ব্যাপারে ঘটনার দিন নিহতের চাচাতো ভাই মো. শাহ আলম বাদী হয়ে ১২ জনের নামে একটি হত্যা মামলা করেন।
আরও পড়ুন: ‘মাদক’ মামলায় ঠাকুরগাঁওয়ে এক জনের যাবজ্জীবন
ফের পেছাল এস কে সিনহার মামলা রায়
ঢাকার একটি বিশেষ আদালত বৃহস্পতিবার সাবেক প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা এবং অন্য ১০ জনের বিরুদ্ধে দুর্নীতি মামলার রায় ঘোষণার তারিখ আবার পিছিয়ে দিয়েছে। আগামী ৯ নভেম্বর রায় ঘোষণার নতুন তারিখ নির্ধারণ করেছেন আদালত।
ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ এর বিচারক শেখ নাজমুল আলম খান নতুন এ তারিখ নির্ধারণ করেন।
এর আগে ৫ অক্টোবর এ মামলার রায় ঘোষণার তারিখ ছিল। ঢাকার বিশেষ জজ (কোর্ট-৪) শেখ নাজমুল আলম খান ছুটিতে যাওয়ায় ভারপ্রাপ্ত বিচারক আলী হোসেন নতুন তারিখ হিসেবে ২১ অক্টোবর দিন ধার্য করেছিলেন।
এর আগে গত ২৯ অগাস্ট আদালতে আত্মপক্ষ সমর্থনে ১১ জন আসামির মধ্যে সাতজন নিজেদের নির্দোষ দাবি করেন।
তারা হলেন ফারমার্স ব্যাংকের সাবেক অডিট কমিটির চেয়ারম্যান মাহবুবুল হক চিশতী, ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক একেএম শামীম, প্রথম ভাইস প্রেসিডেন্ট স্বপন কুমার রাত এবং মো. লুৎফুল হক,সাবেক এসইভিপি গাজী সালাহউদ্দিন, মো. শাহজাহান এবং নিরঞ্জন চন্দ্র সাহা।
পড়ুন: এস কে সিনহার দুর্নীতি মামলা: ২১ অক্টোবর পর্যন্ত রায় স্থগিত
২৪ আগস্ট প্রতিরক্ষা আইনজীবীর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পরিচালক বেনজীর আহমেদকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। মামলায় প্রায় ২১ জন সাক্ষী সাক্ষ্য দিয়েছেন।
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ১০ জুলাই দুদক সাবেক প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা এবং অন্য ১০ জনের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ আহরণ এবং চার কোটি টাকা পাচারের অভিযোগে মামলাটি দায়ের করেন।
পড়ুন: দুর্নীতি মামলায় ওসি প্রদীপ ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে চার্জশিট
সরকার দুর্নীতি মামলা প্রত্যাহারে সুপারিশ করতে পারবে না: হাইকোর্ট
খুলনায় সার্ভেয়ার হত্যা মামলায় একজনের যাবজ্জীবন
খুলনা বটিয়াঘাটা উপজেলার গ্রাম্য সার্ভেয়ার অশ্বিনী রায় হত্যা মামলার একমাত্র আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সাথে তাকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
মঙ্গলবার খুলনা জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মশিউর রহমান চৌধুরী এ রায় ঘোষণা করেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত প্রশান্ত বিশ্বাস ঘেদো উপজেলার বায়ারডাঙ্গা গ্রামের শশিপাড়া এলাকার সূর্যকান্ত বিশ্বাসের ছেলে। রায় ঘোষণার সময় আসামি প্রশান্ত বিশ্বাস পলাতক ছিলেন।
আরও পড়ুন: সিরাজগঞ্জে হত্যা মামলায় ভাইসহ ২ ভাতিজার যাবজ্জীবন
আদালত সূত্র জানায়, নিহত অশ্বিনী রায় ওই এলাকার প্রশান্তকে প্রায়ই টাকা ধার দিতেন। ধারে দেয়া টাকা ফেরত চাওয়াকে কেন্দ্র করে উভয়ের মধ্যে বিরোধ শুরু হয়। একপর্যায়ে অশ্বিনীকে হত্যা করার পরিকল্পনা মাথায় আসে আসামি প্রশান্ত বিশ্বাসের।
২০১৩ সালের ২০ সেপ্টেম্বর বিকালে স্থানীয় মাইলমারী বাজারের উদ্দেশে বাড়ি থেকে বের হয় অশ্বিনী। বিকাল ৫টার দিকে তিনি বায়ারডাঙ্গা গ্রামের পশ্চিমপাড়া জনৈক কালিপদ মন্ডলের বাড়ির সামনে পৌঁছালে আগে থেকে ওৎ পেতে থাকা প্রশান্ত তার ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। হত্যার উদ্দেশে আসামি কাঠ বা রড দিয়ে অশ্বিনীর মাথা ও নাক বরাবর আঘাত করতে থাকে। আঘাতে একসময় অশ্বিনী রায় অচেতন হয়ে পড়েন। পরে এলাকাবাসী তাকে উদ্ধার করে বটিয়াঘাটা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। অবস্থার অবনতি হলে এবং উন্নত চিকিৎসার জন্য অশ্বিনীকে খুলনা মেডিকেল কলেজ (খুমেক) হাসপাতালে নেয়া হয়। পরদিন খুমেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
আরও পড়ুন: ‘মাদক’ মামলায় ঠাকুরগাঁওয়ে এক জনের যাবজ্জীবন
এ ব্যাপারে নিহতের ছেলে অজয় কুমার রায় বাদী হয়ে বটিয়াঘাটা থানায় প্রশান্ত বিশ্বাস ঘেদোকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন। ২০১৪ সালের ১৭ মে বাটিয়াঘাটা থানার এসআই নিমাই চন্দ্র কুন্ডু প্রশান্ত বিশ্বাস ঘেদোকে আসামি করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন।
সিরাজগঞ্জে হত্যা মামলায় ভাইসহ ২ ভাতিজার যাবজ্জীবন
সিরাজগঞ্জ তাড়াশ উপজেলার চাঞ্চল্যকর রহমত আলী হত্যা মামলায় ভাই ও দুই ভাতিজাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত।একই সাথে দণ্ডপ্রাপ্ত প্রত্যেকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে আরও এক বছর বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেয়া হয়।
মঙ্গলবার দুপুরে আসামিদের উপস্থিতিতে জেলা ও দায়রা জজ ফজলে খোদা মো. নাজির এই রায় ঘোষণা করেন।
আরও পড়ুন: ফরিদপুরে এনজিওকর্মী ধর্ষণ ও হত্যার দায়ে একজনের যাবজ্জীবন
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন, উপজেলার মহিষলুটি উত্তরপাড়া গ্রামের নূরুল ইসলাম (৪৭), তার দুই ছেলে মো. হাসমতুল্লাহ (৩০) ও মো. হাসান আলী।
সিরাজগঞ্জ জেলা দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট গাজী আব্দুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
আরও পড়ুন: ‘মাদক’ মামলায় ঠাকুরগাঁওয়ে এক জনের যাবজ্জীবন
মামলার বিবরণে জানা গেছে, উপজেলার মহিষলুটি উত্তরপাড়া গ্রামে রহমত আলীর সাথে আপন ভাই নুরুল ইসলামের জমি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল। এরই জের ধরে ২০১৬ সালে ৪ মার্চ দুপুরে রহমত আলীর সাথে তার ভাই নূরুল ইসলামের বসত বাড়ির ভিটা নিয়ে ঝগড়া শুরু হয়। এক পর্যায়ে নুরুল ইসলাম, তার ছেলে হাসমতুল্লাহ ও হাসান আলী ধারালো চাকু ও শাবল দিয়ে আঘাত করলে রহমত আলী ঘটনাস্থলেই নিহত হন।
এ ঘটনায় রহমত আলীর স্ত্রী মোছা. মনোয়ারা খাতুন বাদী হয়ে তাড়াশ থানায় মামলা দায়ের করেন। পুলিশ তদন্ত শেষে সংশ্লিষ্ট আদালতে চার্জশিট দাখিল করে। এ মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় বিজ্ঞ আদালত রায় ঘোষণা করেন।
আরও পড়ুন: প্রধান শিক্ষক হত্যা: ইউপি চেয়ারম্যানের যাবজ্জীবনসহ ৪ জনের মৃত্যুদণ্ড
ফরিদপুরে এনজিওকর্মী ধর্ষণ ও হত্যার দায়ে একজনের যাবজ্জীবন
ফরিদপুরের বোয়ালমারীর উপজেলার এনজিওকর্মী শিউলি আক্তারকে ধর্ষণ ও হত্যা মামলায় রিপন মোল্লা নামের এক যুবককে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড ও এক লাখ টাকা অর্থদণ্ড দিয়েছে আদালন। একই সময়ে এ মামলায় নয় আসামির মধ্যে আট জনকে খালাস দেয়া হয়।
মঙ্গলবার দুপুরে আসামির উপস্থিতিতে ফরিদপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্র্যাইব্যুনালের বিচার (জেলা ও দায়রা জজ) প্রদীপ কুমার রায় এই রায় ঘোষণা করেন।
আরও পড়ুন: ‘মাদক’ মামলায় ঠাকুরগাঁওয়ে এক জনের যাবজ্জীবন
খালাসপ্রাপ্তরা হলেন, সাইদ মাতুব্বর, ফজর খাঁ, বক্কার মোল্লা, রাফিক মোল্লা, মিকু মাতুব্বর, রঞ্জু সরদার, বিপুল সরদার ও ওবায়দুর মোল্লা।
ফরিদপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্র্যাইব্যুনালের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি ) অ্যাডভোকেট স্বপন পাল জানান, ২০০৯ সালের ১২ জুলাই বোয়ালমারীর দাদপুর গ্রামে আব্দুর বারিক মোল্লা মেয়ে শিউলি আক্তার স্থানীয় একটি এনজিও অফিসে কাজ শেষে সন্ধ্যায় বাড়ি ফিরছিলেন। এসময় রিপন মোল্লাসহ অন্যারা তাকে ধর্ষণ করে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে হত্যা করে।
আরও পড়ুন: প্রধান শিক্ষক হত্যা: ইউপি চেয়ারম্যানের যাবজ্জীবনসহ ৪ জনের মৃত্যুদণ্ড
এই ঘটনার পরদিন নিহতের বাবা আব্দুর বারিক মোল্লা বাদী হয়ে বোয়ালমারী থানায় ধর্ষণ ও হত্যা মামলা দায়ের করে। মামলায় দীর্ঘ তদন্ত ও সাক্ষীগ্রহণ শেষে মঙ্গলবার বিজ্ঞ বিচারক দোষী রিপন মোল্লাকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড ও এক লাখ টাকা অর্থদণ্ড প্রদান করে। মামলায় অন্য আট আসামিকে ঘটনার সাথে সম্পৃক্ততা না পেয়ে খালাস প্রদান করেন।
আরও পড়ুন: কুড়িগ্রামে ‘মাদক’ মামলায় একজনের যাবজ্জীবন
কুষ্টিয়ায় সাব রেজিস্ট্রার নূর মোহাম্মদ হত্যা মামলায় ৪ জনের মৃত্যুদণ্ড
কুষ্টিয়ায় সদর সাব রেজিস্ট্রার চাঞ্চল্যকর নূর মোহাম্মদ শাহ হত্যা মামলায় চার আসামিরকে মৃত্যুদণ্ড ও অপর এক আসামির যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
মঙ্গলবার সকাল ১১টার দিকে আসামিদের উপস্থিতিতে কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতের বিচারক তাজুল ইসলাম এই রায় ঘোষণা করেন।
আরও পড়ুন: প্রধান শিক্ষক হত্যা: ইউপি চেয়ারম্যানের যাবজ্জীবনসহ ৪ জনের মৃত্যুদণ্ড
মৃত্যু দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন, সাইদুল ইসলাম (৩৭), ফারুক হোসেন (৩৮), কামাল শেখ (৪০) এবং মশিউল আলম (৪০)। যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত অপর আসামি হচ্ছেন মনোয়ার হোসেন ডাবলু (৩৮)। এদের মধ্যে যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত মনোয়ার হোসেন ডাবলু এবং ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত সাইদুল ইসলাম কুষ্টিয়া সদর সাব রেজস্ট্রি অফিসের স্টাফ ছিলেন।
নিহত কুষ্টিয়া সদর সাব রেজিস্ট্রার নূর মোহাম্মদ শাহ (৫০), তার বাড়ি কুঁড়িগ্রাম জেলার রাজারহাট থানার মৌলা গ্রামে। কুষ্টিয়া শহরের আড়ুয়াপাড়া এলাকার ভাড়া বাসায় তিনি একাই থাকতেন।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে মা-মেয়ে হত্যা: আসামি শহীদের মৃত্যুদণ্ড বহাল
কুষ্টিয়া জজ কোর্টের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট অনুপ কুমার নন্দী রায় জানান, ২০১৮ সালের ৮ অক্টোবর রাত ১১টার দিকে দুর্বৃত্তরা কুষ্টিয়া সদর সাব রেজিস্ট্রার নূর মোহাম্মদ শাহকে (৫০) শহরের আড়ুয়াপাড়া এলাকার বিসি স্ট্রিট সড়কের হানিফ আলীর বাড়ির তিনতলা ভাড়া বাসায় হাত-পা ও মুখ বেঁধে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে ও জবাই করে হত্যা করে। হত্যাকাণ্ডের পরের দিন নিহতের ছোট ভাই কামরুজ্জামান বাদী হয়ে কুষ্টিয়া মডেল থানায় অজ্ঞাতনামা আসামিদের নামে হত্যা মামলা দায়ের করেন।
আরও পড়ুন: সাতক্ষীরায় আলোচিত ফোর মার্ডার মামলার একমাত্র আসামির মৃত্যুদণ্ড
ঘটনার চারদিন পর পুলিশ হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত চার জনকে গ্রেপ্তার করে এবং তাদের কাছ থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ছুড়ি, রশিসহ বিভিন্ন আলামত জব্দ করে। পরে আসামিরা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।