নদী
কর্ণফুলী নদীর তীর ঘেষে হবে দৃষ্টিনন্দন বিনোদন পার্ক ও খেলার মাঠ
চট্টগ্রাম মহানগরীতে কর্ণফুলী নদীর তীর ঘেষে গড়ে তোলা হচ্ছে দৃষ্টিনন্দন বিনোদন পার্ক ও খেলার মাঠ। নগরীর ফিরিঙ্গিবাজারে বিশাল এলাকা জুড়ে এসব পার্ক ও খেলার মাঠ বাস্তবায়নে যৌথ উদ্যোগে কাজ করছে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) ও জেলা প্রশাসন।
কর্ণফুলী নদীর তীরবর্তী উন্মুক্ত সরকারি খাস জমিতে অপদখল ও নদী দূষণ প্রতিরোধে প্রায় ১২ দশমিক ৪৫ একর সরকারি খাস জমিতে নির্মিত হতে যাওয়া এই প্রকল্পের নাম দেওয়া হয়েছে ‘কর্ণফুলী লুকআউট’।
এখানে পার্ক ও খেলার মাঠ গড়ে উঠলে কর্ণফুলী নদীর তীর দখল ও দূষণের কবল থেকে রক্ষা পাবে এমনটাই মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
আরও পড়ুন: শাহবাগ শিশু পার্ক: আধুনিকায়নের নামে ৩ বছরের বেশি সময় বন্ধ
চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের কার্যালয় সূত্র জানায়, নগরবাসীর চিত্ত বিনোদনের চাহিদা পূরণ এবং কর্ণফুলী নদীর অপার সৌন্দর্য উপভোগের সুযোগ করে দিতে জেলা প্রশাসক চট্টগ্রাম আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামানের উদ্যোগে কর্ণফুলী নদী তীরবর্তী উন্মুক্ত সরকারি খাস জমির দখল প্রতিরোধে এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
এ পার্কে থাকবে ফেরিস হুইল (বিশালাকার নাগরদোলা)। থাকবে কিডস্ জোন থেকে শুরু করে বিনোদনের নানা উপকরণ। প্রকল্পটি ব্যয় ধরা হয়েছে পাঁচ কোটি টাকা। প্রকল্পটি হবে কর্ণফুলী নদীর পাশ ঘেঁষে বিআইডব্লিউ ঘাট থেকে সদরঘাট পর্যন্ত। পার্কের পাশাপাশি থাকবে খেলার মাঠও। এ ছাড়া চিত্তবিনোদনের জন্য টেনিস, বাস্কেটবল, ভলিবল কোর্ট, ক্লাব হাউস তৈরি করা হবে। থাকবে- মুক্তমঞ্চ, বোট মিউজিয়াম, কিডস্ জুন, ফুট কোর্ট, পার্কিং, পিকনিক স্পট ও ওয়াকওয়ে।
আরও পড়ুন: সাফারি পার্কে মারামারিতে আঘাত পেয়ে হাতির মৃত্যু
বুড়িগঙ্গা নদীতে পড়ে মাঝি নিখোঁজ
ঢাকার বুড়িগঙ্গা নদীতে পড়ে এক ব্যক্তি নিখোঁজ হয়েছেন। বৃহস্পতিবার বেলা ১১ টায় দক্ষিণ কেরাণীগঞ্জের আগানগর খেয়াঘাট থেকে নৌকা নিয়ে মিটফোর্ড ঘাটে যাওয়ার সময় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিখোঁজ আব্দুর রশিদ (৬৫) পিরোজপুরের নেছারাবাদ থানার সোহাগদল এলাকার আবুল বাশারের ছেলে।
কেরাণীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ শাহ জামান জানান, বৃহস্পতিবার বেলা ১১ টায় দুজন নারী ও একজন পুরুষকে পার করার সময় মাঝ নদীতে এ দুর্ঘটনা ঘটে। এলাকাবাসী নৌপুলিশকে খবর দেয়।
বরিশুর নৌপুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ আবুল কালাম জানান, দুর্ঘটনার পর থেকে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল উদ্ধার অভিযানে অংশ নেয়। সকাল ১১টা থেকে বিকাল পাঁচটা পর্যন্ত ৬ ঘন্টা উদ্ধার অভিযান চালিয়েও নিখোঁজ মাঝির কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি।
তিনি আরও বলেন, নৌপুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল শুক্রবার সকাল থেকে আবারও উদ্ধার অভিযান চালাবে।
আরও পড়ুন: বুড়িগঙ্গা নদী থেকে স্কুল শিক্ষার্থীর লাশ উদ্ধার
বুড়িগঙ্গা নদী থেকে অজ্ঞাত যুবকের মৃতদেহ উদ্ধার
বুড়িগঙ্গা থেকে বস্তাবন্দী অবস্থায় যুবকের লাশ উদ্ধার
সুনামগঞ্জে বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢল না থাকায় কমছে নদ-নদীর পানি
সুনামগঞ্জে বৃষ্টিপাত ও পাহাড়ি ঢল না থাকায় বিভিন্ন নদ-নদীর পানি কমছে।
আবহাওয়ার পূর্বাভাসেও বলা হয়েছে, আগামী ৪৮ ঘন্টা দেশের উত্তর পূর্বাঞ্চলের পানি কমা অব্যাহত থাকবে।
অন্যদিকে, পানি কমায় এবং জেলায় বন্যার আশঙ্কা না থাকায় জনমনে স্বস্তি বিরাজ করছে।
আরও পড়ুন: সুনামগঞ্জে হাওরে ডুবে ৩ ভাইবোনের মৃত্যু
বংশীকুন্ডা দক্ষিণ ইউনিয়নের নিশ্চন্তপুর গ্রামের বাসিন্দা মো. আবুল কালাম বলেন, গত কয়েকটা দিন গরু, বাছুর, ধান নিয়ে বিপদেই পড়েছিলাম। মঙ্গলবার থেকে পানি কমতে শুরু করেছে। বৃষ্টি না হলে পানি নেমে যাবে।
বংশীকুন্ডা বাজরের ব্যবসায়ী এবিএম জুয়েল তালুকদার বলেন, বাজারে বন্যার পানি না উঠলেও ব্যবসায়ীদের মনে আতঙ্ক ছিলো। যদিও বর্ষা মৌসুমে এরকম অবস্থা আমাদের নিত্যসঙ্গী। তবে বন্যা হাত থেকে রক্ষা পেতে আমাদের নদীগুলো খনন করতে হবে।
শুক্রবার দুপুরে সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, সুনামগঞ্জের ছাতকে পানি কমে বিপদ সীমার ৬৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে সুরমার পানি।
সুনামগঞ্জ পয়েন্টে শূন্য দশমিক বিপদ সীমার ৩২ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে সুরমা নদীর প্রবাহিত হচ্ছে।
মধ্যনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত) শীতেষ চন্দ্র সরকার জানান, পানি কমা আমাদের জন্য স্বস্তির বিষয়। তবে বন্যা পরিস্থিতি হলে তা মোকাবিলায় আমাদের সব ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে।
সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন হাওলাদার জানিয়েছেন, সুনামগঞ্জে বন্যার আশংকা নেই। গেল ২৪ ঘণ্টায় সুনামগঞ্জে ও মেঘালয় চেরাপুঞ্জিতে খুবই কম বৃষ্টি হয়েছে।
এতে নদীর পানি কমছে। বৃষ্টিপাত না হলে পরিস্থিতির আরও উন্নতি হবে।
আরও পড়ুন: সুনামগঞ্জে কমছে নদীর পানি, স্বস্তিতে হাওরবাসী
সুনামগঞ্জে বন্যায় ১০ গ্রাম প্লাবিত, বৃষ্টি অব্যাহত
সিরাজগঞ্জে যমুনায় ভেসে গেছে স্পার বাঁধের ৪০ মিটার
যমুনা নদীর পানি বাড়তে থাকায় ঘূর্ণাবর্ত সৃষ্টি হয়ে ধসে গেছে সিরাজগঞ্জের কাজীপুর ১নং সলিড স্পারের অন্তত ৪০ মিটার এলাকা।
শুক্রবার (৭ জুলাই) ভোরে কাজীপুর যমুনা নদীর মেঘাই-এর ১ নম্বর সলিড স্পার এলাকায় এ ধস দেখা দেয়।
এতে ওই এলাকার মানুষের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
আরও পড়ুন: সিরাজগঞ্জে যমুনা তীর ভাঙনে ৫০টি স্থাপনা ভেসে গেছে
এছাড়া এ বাঁধটি পুরোপুরি ধসে গেলে উপজেলার বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠান হুমকির মুখে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে বলে স্থানীয়রা জানান।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মাহবুবুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, গত কয়েকদিন ধরে যমুনায় পানি বৃদ্ধির ফলে প্রবল স্রোতে ও ঘূর্ণাবর্তের সৃষ্টি হয়ে শুক্রবার (৭ জুলাই) ভোরে মেঘাই ১ নম্বর সলিড স্পারের কিছু অংশ ধস দেখা দেয়।
তিনি আরও বলেন, খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায় সলিড স্পারের প্রায় ৪০ মিটার ধ্বসে গেছে। তাৎক্ষণিকভাবে জিও ব্যাগ ফেলে ধস ঠেকানোর চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
সেইসঙ্গে বিষয়টি পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানানো হয়েছে।
মাহবুবুর রহমান বলেন, যমুনার ভয়াবহ ভাঙন থেকে কাজীপুর উপজেলাকে রক্ষার জন্য তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী প্রয়াত মোহাম্মদ নাসিমের প্রচেষ্টায় ১৯৯৭ সালে মেঘাই খেয়াঘাট এলাকায় ৩০০ মিটার এই স্পার বাঁধটি নির্মাণ করা হয়।
পরবর্তীতে ২০১২ ও ২০১৩ সালে স্পারটির মূল অংশের ১৫০ মিটার ধসে যাওয়ার পর মাটির অংশটুকু রক্ষায় সিসি ব্লক ফেলে ঠেকানো সেই অংশের ৪০ মিটার ধসে শুক্রবার ভোরে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।
এদিকে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা বলছেন, স্পার বাঁধটি পুরোপুরি ধসে গেলে কাজীপুর থানা, উপজেলা খাদ্য গুদাম, সাব-রেজিস্ট্রি অফিস, কাজীপুর সদর ইউনিয়ন পরিষদ ভবনসহ উপজেলার বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠান হুমকির মুখে পড়বে।
তবে স্পার বাঁধটি সম্পূর্ণভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হলে কাজীপুর উপজেলার বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠান হুমকির মুখে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে বলে ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কাজী অনিক ইসলাম জানিয়েছেন।
আরও পড়ুন: আবারও ভাঙন ঝুঁকিতে চাঁদপুর শহর রক্ষা বাঁধ
তিস্তার পানি কমলেও দেখা দিয়েছে ভাঙন
সুনামগঞ্জে কমছে নদীর পানি, স্বস্তিতে হাওরবাসী
সুনামগঞ্জের আকাশে রোদের দেখা মিলেছে। তবে মাঝে মাঝে আকাশ মেঘলা হয়ে নামে বৃষ্টি। সপ্তাহখানেক টানা বর্ষণে নদ-নদীর পানি বাড়লেও রোদের দেখা মেলায় পানি কমতে শুরু করেছে। মানুষের মনে ফিরছে স্বস্তি।
সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্র জানায়, আজ বুধবার (৫ জুলাই) দুপুর ১২টায় সুনামগঞ্জ পৌর শহরের ষোলঘর পয়েন্টে সুরমা নদীর পানি বিপদসীমার ১৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।
আরও পড়ুন: সুনামগঞ্জে বন্যায় ১০ গ্রাম প্লাবিত, বৃষ্টি অব্যাহত
গতকাল একই সময়ে এখানে পানি ছিল বিপদসীমার ৭ সেন্টিমিটার ওপরে। গত ২৪ ঘণ্টায় সুনামগঞ্জে বৃষ্টি হয়েছে ১০৬ মিলিমিটার। নদ-নদীর পানি কমলেও জেলার কয়েকটি উপজেলার নিম্নাঞ্চলে পানি থাকায় মানুষের ভোগান্তি বেড়েছে।
টানা বর্ষণ ও উজানের ঢলে জেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে পড়ে। টানা ভারী বর্ষণে মানুষজন আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। অনেকের মধ্যে গত বছরের মতো ভয়াবহ বন্যা হবে কি না, এ নিয়ে উদ্বেগ দেখা দেয়। বন্যার আতঙ্কে অন্যত্র আশ্রয় নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন মানুষজন।
এদিকে ধীরে ধীরে পানি কমায় আতংক অনেকটাই কেটে গেছে।
জেলার শান্তিগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ফারুক আহমদ জানান, বন্যা পরিস্থিতির আশংকা থাকায় আমরা দুর্যোগ মোকাবিলায় ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছি।
বিভিন্ন গ্রামে রাস্তাঘাট প্লাবিত হয়েছে। এখন আকাশে রোদের দেখা মেলায় পানি কমতে শুরু করেছে। এলাকার মানুষজনের মধ্যে ভীতি আর নেই।
বলা যায় এক রকম স্বস্তিতেই আছেন। তারপরেও বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হলে উপজেলা প্রশাসন দুর্যোগ মোকাবিলায় প্রস্তুত রয়েছে।
সুনামগঞ্জ পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মামুন হাওলাদার জানিয়েছেন, বৃষ্টি না হলে পানি আরও কমবে। তবে হালকা ও মাঝারি বৃষ্টির পূর্বাভাস আছে।
তিনি আরও বলেন, হাওর-নদী এখন পানিতে পরিপূর্ণ। তাই ভারী বৃষ্টি ও উজানের ঢল নামলে পানি আবারও বাড়তে পারে। তবে বড় বন্যার কোনো আশঙ্কা নেই।
সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক দিদারে আলম মোহাম্মদ মাকসুদ চৌধুরী বলেন, টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে পানি বাড়লেও সুনামগঞ্জের কোথাও বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়নি।
যদি এ রকম পরিস্থিতি হয়, সেটি মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নেওয়া আছে।
আরও পড়ুন: ভারি বর্ষণে সিলেট ও সুনামগঞ্জে স্বল্পমেয়াদি বন্যার আশঙ্কা
সুনামগঞ্জে হাওরে ডুবে ৩ ভাইবোনের মৃত্যু
সুনামগঞ্জে বাড়ছে নদ-নদীর পানি, প্লাবিত হচ্ছে নিম্নাঞ্চল
টানা বর্ষণ ও ভারতের মেঘালয়ে ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে সুনামগঞ্জের বিভিন্ন সীমান্ত এলাকায় পাহাড়ি ঢল নেমেছে। বৃষ্টি ও উজানের ঢলে হাওড় এলাকার নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে ডুবেছে নিম্নাঞ্চল।
সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, ষোলঘর পয়েন্টে সুরমা নদীর পানি ২৮ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। শনিবার সকাল ৯ টা পর্যন্ত ১৪৫ মিলিমিটার রেকর্ড করা হয়েছে।
তবে সুনামগঞ্জের ছাতকে সুরমা নদীর পানি এখনও বিপদ সীমার ৬৯ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বাকি সব নদীর পানি বিপদ সীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। মূলত গত দুই দিনের বৃষ্টিপাত ও পাহাড়ি ঢলে নদ-নদীর পানি বেড়েছে।
দুই দিনের টানা বর্ষণ ও সীমান্তের ওপাড়ে মেঘালয়ের চেরাপুঞ্জিতে ভারী বৃষ্টিপাত হওয়ায় সুনামগঞ্জের বিভিন্ন সীমান্ত এলাকায় পাহাড়ি ঢল নেমেছে। চলাচলের সড়ক ডুবিয়ে বিকট শব্দে হু-হু করে ঢলের পানি ঢুকছে হাওর ও লোকালয়ে। ঘোলাটে পানিতে সয়লাব হয়ে গেছে হাওর এলাকা।
আরও পড়ুন: নদীবন্দরগুলোকে ১ নম্বর সংকেত দেখাতে বলেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর
কুড়িগ্রামের নদীর পানিতে ডুবে বর্গাচাষির মৃত্যু
কুড়িগ্রামের চিলমারীতে সাঁতরিয়ে শাখা নদীর নালা পার হওয়ার সময় পানিতে ডুবে নুর ইসলাম (৫৫) নামে এক বর্গাচাষির মৃত্যু হয়েছে।
বুধবার (২৮ জুন) ঈদের বাজার করতে গিয়ে ব্রহ্মপুত্র নদের শাখা নালা পার হয়ে খেয়াঘাটে যেতে তিনি পানিতে ডুবে নিখোঁজ হন।
আরও পড়ুন: চাঁপাইনবাবগঞ্জে বাবার ইটের আঘাতে ছেলের মৃত্যু!
পরে স্থানীয়রা খোঁজাখুঁজি করে চার ঘণ্টা পর তার লাশ উদ্ধার করে।
নিহত ব্যক্তি চিলমারী ইউনিয়নের চর শাখাহাতী গ্রামের মৃত. মোহর মিস্ত্রীর ছেলে।
নিহতের স্বজনরা বলছেন, নিজ বাড়ি থেকে রমনা ইউনিয়নের জোড়গাছ বাজারে ঈদের বাজার করতে রওয়ানা দেন। পথিমধ্যে ব্রহ্মপুত্র নদের শাখা নালা পার হয়ে চর শাখাহাতী খেয়া ঘাটে যেতে গভীর নালার পানিতে ডুবে নিখোঁজ হন তিনি।
নিখোঁজ ব্যক্তির সঙ্গে বাবলু মিয়া নামে অপর এক ব্যক্তিও নালার প্রান্তে দাঁড়িয়ে তার ডুবে যাওয়া দেখে চিৎকার করলে স্থানীয়রা এগিয়ে এলেও দীর্ঘ চার ঘণ্টা ধরে খোঁজাখুঁজির পর নুর ইসলামের লাশ উদ্ধার করতে সমর্থ হন।
চিলমারী ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য রফিকুল ইসলাম জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে পুরো ঘটনাটি জানতে পারি।
এ ব্যাপারে চিলমারী ফারার সার্ভিস এন্ড সিভিল ডিফেন্সের স্টেশন ইনচার্জ (ভারপ্রাপ্ত) খবিরুল ইসলাম জানান, ঘটনাটি আমাদেরকে কেউ জানাননি। এইমাত্র সাংবাদিকদের মাধ্যমে জানতে পারলাম।
আরও পড়ুন: ঠাকুরগাঁওয়ে আম পাড়তে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে যুবকের মৃত্যু
কুড়িগ্রামে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে বৈদ্যুতিক মিস্ত্রির মৃত্যু
কুড়িগ্রামে নদীর পানি বৃদ্ধি, প্লাবিত নিম্নাঞ্চল
কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী উপজেলার পাটেশ্বরীর সোনাহাট রেলসেতু পয়েন্টে দুধকুমার নদের পানি বিপদসীমা ছুঁই ছুঁই করছে। এছাড়াও জেলার ধরলা, ব্রহ্মপুত্র, তিস্তাসহ অন্যান্য নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে।
পাহাড়ি ঢল আর টানা ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে নদ-নদী গুলোতে পানি বাড়ায় নদী অববাহিকার চরাঞ্চল এবং নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। পানি বাড়ায় গ্রামীণ সড়ক এবং নিম্নাঞ্চলের প্রায় ১০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। এসব এলাকার মানুষ নৌকা-ভেলা করে চলাচল করছে। এছাড়াও পানিতে তলিয়ে গেছে সবজি, আমনের চারাসহ পাট।
বুধবার দুপুরে নাগেশ্বরী উপজেলা বামনডাঙ্গা ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের তেলিয়ানী পাড়ায় দুধকুমার নদের বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙে তীব্র স্রোতে পানি লোকালয়ে ঢুকে প্লাবিত হচ্ছে নিম্নাঞ্চল।
আরও পড়ুন: কুড়িগ্রামে বেড়েই চলেছে নদ-নদীর পানি, বন্যার আশঙ্কা
উত্তর-পূর্বাঞ্চলের প্রধান নদীগুলোর পানিবৃদ্ধি অব্যাহত: বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র
দেশের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র (এফএফডব্লিইসি) মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘন্টায় দেশের ১০৯টি নদীর জলস্তর পর্যবেক্ষণের পর ৯১টি স্টেশনে জলস্তর বৃদ্ধি এবং ১৫টি অন্যান্য স্টেশনে জলস্তর হ্রাস পাওয়ার তথ্য রেকর্ড করেছে।
মঙ্গলবার এফএফডব্লিউসি’র পক্ষ থেকে দেওয়া একটি বুলেটিনে বলা হয়েছে, তিনটি নদী স্টেশনে জলস্তর স্থিতিশীল রয়েছে এবং সমস্ত নদীর পানি বিপদসীমার নীচে প্রবাহিত হচ্ছে।
তবে, ব্রহ্মপুত্র-যমুনা এবং গঙ্গা-পদ্মা নদীর পানি বৃদ্ধির প্রবণতা রয়েছে, যা আগামী ৭২ ঘণ্টায় অব্যাহত থাকতে পারে।
এছাড়া এই অঞ্চলের সব প্রধান নদীর পানি দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে।
আবহাওয়ার পূর্বাভাস সংস্থার বুলেটিনে বলা হয়েছে, ‘আগামী ২৪ ঘণ্টায় দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও তৎসংলগ্ন অঞ্চলে ভারি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। ফলে এ অঞ্চলের প্রধান নদ-নদীর (সুরমা, কুশিয়ারা, সারি গোয়াইন, ঝালুখালী, ভোগাই-কংস, সোমেশ্বরী, জাদুকাটা) পানি দ্রুত বৃদ্ধি পেয়ে সিলেট ও সুনামগঞ্জ জেলার নিম্নাঞ্চলে স্বল্পমেয়াদী বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি করতে পারে।’
তারা আরও জানায়, আগামী ২৪ ঘণ্টায় তিস্তা, ধরলা ও দুধকুমার অববাহিকা এবং তৎসংলগ্ন উজানে ভারি বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাসের কারণে এই সময়ে নদীগুলোর পানি দ্রুত বৃদ্ধি পেতে পারে।
আরও পড়ুন: ফের বন্যায় ভাসতে পারে সিলেট-সুনামগঞ্জ
বুলেটিনে আরও বলা হয়েছে, ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তা নদীর পানি আগামী ২৪ ঘণ্টায় বিপদসীমার কাছাকাছি প্রবাহিত হতে পারে।
ইউএনবি কুড়িগ্রাম সংবাদদাতা জানান: প্রবল বর্ষণ ও উজান থেকে আসা পানির ঢলে কুড়িগ্রামে উত্তরাঞ্চলের ব্রহ্মপুত্র, ধরলা, তিস্তা, দুধকুমারসহ ১৬টি নদীর পানির উচ্চতা অব্যাহত রয়েছে।
তবে সব পয়েন্টে পানি বিপদসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। নদী তীরবর্তী নিচু চর এলাকাগুলো প্রতিদিনই প্লাবিত হচ্ছে।
ফলে নদী অববাহিকায় মৌসুমি সবজিসহ বিভিন্ন ফসলের খেত তলিয়ে যাচ্ছে।
জেলার নাগেশ্বরী, উলিপুর, চিলমারী, রৌমারী, রাজীবপুর ও কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার শতাধিক পরিবার বন্যার পানিতে আটকা পড়েছে।
এসব এলাকার অধিকাংশ সড়ক পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় এসব এলাকার মানুষ বর্তমানে যোগাযোগের প্রধান মাধ্যম হিসেবে নৌকা ব্যবহার করছে।
চর ও নিচু এলাকায় নলকূপ ডুবে যাওয়ায় বিশুদ্ধ খাবার পানির সংকটে পড়েছেন মানুষ।
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আবদুল্লাহ আল মামুন জানান, জেলার সব নদ-নদীর পানির উচ্চতা বাড়লেও বিপদসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
তবে ২২ ও ২৩ জুন এসব নদীর পানি বিপদসীমা অতিক্রম করতে পারে বলেও জানান তিনি।
আরও পড়ুন: সিলেটে অবিরাম বর্ষণে আবারও বন্যার শঙ্কা
বন্যা দুর্গত এলাকায় কি ধরনের খাদ্য ও ত্রাণ সামগ্রী পাঠাবেন
পুলিশ নদীতে খোয়ালেন রাইফেল, উদ্ধারে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরিদল
মানিকগঞ্জে দৌলতপুর উপজেলার কাশি দয়ারামপুর এলাকার যমুনা নদীতে ভ্রাম্যমাণ আদালতে গিয়ে নদীতে রাইফেল খোয়ালেন দৌলতপুর থানার এক পুলিশ কনস্টেবল।
সোমবার দুপুরে দৌলতপুর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) যমুনা নদীতে বসানো অবৈধ ড্রেজারের বিরুদ্ধে অভিযান চালাতে গিয়ে এক পুলিশ সদস্যের রাইফেল হাত থেকে নদীতে পড়ে যায়।
এদিকে ওই রাইফেল উদ্ধারে আরিচা স্থল কাম নদী ফায়ার স্টেশনের একটি ডুবুরি দল উদ্ধার অভিযান চালিয়েছেন।
আরও পড়ুন: রাইফেল নিয়ে দাঁড়ানোর কথা ‘কৌতুক’ ছিল: সিইসি
সোমবার (১৯ জুন) বিকালে বাঘুটিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এসএম আমজাদ হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, দুপুরের দিকে দৌলতপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) যমুনা নদীতে মোবাইল কোর্টে অবৈধ ড্রেজার জব্দ করেন।
এ সময় এক পুলিশ সদস্যের (কনস্টেবল) রাইফেল নদীতে পড়ে গিয়েছিল, এখন খোঁজাখুঁজি চলছে।
এ বিষয়ে আরিচা স্থল কাম নদী ফায়ার স্টেশনের ওয়ার হাউজ ইন্সপেক্টর মো. মুজিবর রহমান বলেন, দুপুরের দিকে পুলিশের রাইফেল উদ্ধারে ফায়ার সার্ভিসের একটি ডুবুরি দল কাজ শুরু করেছে। এ দলে তিনজন ডুবুরি, দুইজন ফায়ার ফাইটার ও একজন টিম লিডার রয়েছেন।
এ বিষয়ে জানতে সহকারী কমিশনার (ভূমি) অর্ণব মালাকার ও দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম মোল্যা বলেন, নদীতে অভিযানকালে অসাবধানতা বশত আল-আমিন (কনস্টেবল নং ৬৮০) এর হাত থেকে শটগানটি ২৫ থেকে ৩০ ফুট পানির নিচে নদীতে পড়ে যায়।
তিনি আরও বলেন, শটগানটিতে কোন গুলি ছিলনা। নদীতে তীব্র স্রোতের কারণে ডুবুরী দল এখনো রাইফেলটি উদ্ধার করতে পারেনি।
পুলিশ সুপার গোলাম আজাদ খান বলেন, তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্তের মাধ্যমে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আরও পড়ুন: হিলি সীমান্তে এয়ার রাইফেলের ৪০ হাজার গুলি উদ্ধার
কেউ যদি তলোয়ার নিয়ে দাঁড়ায়, আপনাকেও রাইফেল বা তলোয়ার নিয়ে দাঁড়াতে হবে: সিইসি