মধ্যপ্রাচ্য
দুবাইয়ে ৫ বিলিয়ন ডলারের মানবসৃষ্ট চাঁদ!
কে বলে আপনি চাঁদে যেতে পারবেন না? সম্প্রতি দুবাই মানবসৃষ্ট চাঁদ তৈরির জন্য পাঁচ বিলিয়ন ডলারের একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছে। এর মধ্যদিয়ে মানুষ চন্দ্রপৃষ্ঠে ভ্রমণের স্বর্গীয় অনুভূতি পৃথিবীতে বসেই উপভোগ করতে পারবে।
কানাডিয়ান উদ্যোক্তা মাইকেল হেন্ডারসন দুবাইতে ৩০ মিটার (১০০ ফুট) উঁচু একটি বিল্ডিংয়ের উপরে চাঁদের একটি ২৭৪-মিটার (৯০০ ফুট) প্রতিরূপ নির্মাণের পরিকল্পনা করেছেন। আগে থেকেই বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু ভবন এবং বিস্ময়কর বিভিন্ন স্থাপত্যকর্ম সমৃদ্ধ দুবাইকে এটি আরও বেশি আকর্ষণীয় করে তুলবে।
মূলত চাঁদের মতো দেখতে একটি সুবিশাল রিসোর্ট তৈরি করা হচ্ছে দুবাইয়ের একটি অভিজাত এলাকায়। দূর থেকে চাঁদ দেখতে যেমন হেন্ডারসনের ‘দুবাই মুন’ ঠিক তেমনি দেখাবে।
হেন্ডারসন অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসকে (এপি) বলেছেন, ‘বিশ্বের সবচেয়ে বড় 'ব্র্যান্ড' আমাদের, স্বর্গীয় অবয়ব হিসেবে চাঁদ নিজেই নিজের ব্র্যান্ড। ‘আট বিলিয়ন মানুষ আমাদের ব্র্যান্ড চেনে। তবে আমরা এখনও রিসোর্টের কাজ শুরু করিনি।’
পৃথিবীর সব মানুষই এটি পছন্দ করবে। এখানে হাঁটলে হবে যেন চাঁদের বুকে হাঁটছেন।
হেন্ডারসনের পরিকল্পনা অনুযাযী গোলাকার কাঠামোর ভিতরে একটি রিসোর্ট থাকবে। যাতে একটি চার হাজার রুমের হোটেল, ১০ হাজার মানুষ বসার মতো হলরুম এবং 'লুনার কলোনি'র মতো বিস্তৃত এলাকা থাকবে। এখানে হাঁটলে হবে যেন চাঁদের বুকে হাঁটছেন। রাতে চাঁদের মতোই জ্বলজ্বল করবে এই রিসোর্ট।
হেন্ডারসন মে মাসের শুরুতে দুবাইয়ে অ্যারাবিয়ান ট্রাভেল মার্কেটে প্রকল্পটি নিয়ে আলোচনা করেছিলেন।
ইতোমধ্যেই শিল্পীদের পারিশ্রমিক নির্ধারণ করে মুন ওয়ার্ল্ড রিসোর্ট তৈরির পরিকল্পনা শুরু করা হয়েছে। বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু ভবন ৮২৮ মিটার (দুই হাজার ৭১০ ফুট) বুর্জ খলিফার মতো এটিও প্রচণ্ড ব্যয়বহুল একটি প্রকল্প।
অনেকে এটিকে মানবসৃষ্ট দুবাই পার্ল এর মতো ব্যর্থ প্রকল্প বলে অভিহিত করেছেন। দুবাই পার্ল বিশ্বের সবথেকে বড় মানুষ নির্মিত দ্বীপ, যেটিকে ছোট ছোট দ্বীপ বানিয়ে পাম গাছের মতো সাজানো হয়েছে। দুবাই পার্ল দ্বীপটি এখন ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে।
দ্য পার্ল ও পাম জেবেল আলি দুবাইয়ের সবচেয়ে ‘ব্যয়বহুল’ দুটি প্রকল্প। যেগুলো দেশটিতে ২০০৯ সাল থেকে আর্থিক সঙ্কট সৃষ্টি করেছে, যা শেখদের শাসন ক্ষমতায় প্রভাব ফেলে এবং দুবাই সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাজধানী আবুধাবিকে ২০ বিলিয়ন ডলার ক্ষতিপূরণ দিতে বাধ্য করে।
আরও পড়ুন: দুবাই এক্সপো ২০২০ শেষে জেফারসনের কোরআন যুক্তরাষ্ট্রের পথে
প্রায় ১৫ বছর পরে, দুবাই ঘুরে দাঁড়িয়েছে।
দুবাইয়ের বিশিষ্ট রিয়েল এস্টেট এজেন্সি অলসপ অ্যান্ড অলসপ এর সিইও লুইস অলসপ বলেছেন, ‘২০০৯ সালের তুলনায় দুবাই সম্পূর্ণ ভিন্ন পরিস্থিতিতে রয়েছে।’
চাঁদ প্রকল্পে একটি সম্ভাব্য ক্যাসিনোর জন্যও স্থান অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
অন্যান্য আরব উপদ্বীপের মতো সংযুক্ত আরব আমিরাতেও জুয়া নিষিদ্ধ। তবে সিজার প্যালেসের মতো বড় ব্র্যান্ডগুলো ইতোমধ্যেই দুবাইতে আছে বা ভবিষ্যতে দুবাইতে ঘাটি গাড়বে বলে শোনা যায়।
ওয়েন রিসোর্ট ২০২৭ সালে দুবাইয়ের উত্তরে রাস আল-খাইমাহতে তিন দশমকি ৯ ডলার ব্যয়ে রিসোর্ট তৈরির পরিকল্পনা করেছে, যাতে জুয়া খেলার ব্যবস্থা থাকবে। যার অর্থ দেশটির আইনে পরিবর্তন আসতে পারে।
মধ্যপ্রাচ্য বিশেষজ্ঞ ক্রিস্টোফার ডেভিডসন বলেছেন,অন্যান্য হাই-প্রোফাইল চোখ ধাঁধানো আশ্চর্যের মতো দুবাই মুন দুবাইয়ের অভিজাত শাসকদের চিত্তবিনোদনে ভূমিকা রাখবে।
ক্রিস্টোফার ডেভিডসন ‘শেখ থেকে সুলতানবাদ’ নামে সম্প্রতি একটি বই লিখেছেন।
সংযুক্ত আরব আমিরাতের মহাকাশ কেন্দ্রও দুবাইতে অবস্থিত। যা মঙ্গল গ্রহে একটি মহাকাশযান পাঠিয়েছিল এবং চাঁদে রোভার স্থাপনের চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছে।
ডেভিডসন বলেন, ‘তাদেরকে যদিও একটি অগণতান্ত্রিক অভিজাত বলা যায়, তবে তারা বিজ্ঞানের অগ্রগতিতে দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে। তাদের হাতে নেওয়া মেগাপ্রকল্পগুলো দেখে তা বোঝা যায়।’
আরও পড়ুন: দুবাইয়ে চালকবিহীন বৈদ্যুতিক উড়ুক্কু গাড়ি চালাল চীনা প্রতিষ্ঠান
ইরানে সরকারবিরোধী বিক্ষোভে সহিংসতার দায়ে ৩ জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর
মানবাধিকার সংগঠনগুলোর আপত্তি সত্ত্বেও ইরান গত বছরের সরকারবিরোধী বিক্ষোভের সময় মারাত্মক সহিংসতার জন্য অভিযুক্ত তিন ব্যক্তির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করেছে। শুক্রবার অভিযুক্তদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করে দেশটি।
মিজান নামের বিচার বিভাগের ওয়েবসাইটে অভিযুক্ত মজিদ কাজেমি, সালেহ মিরহাশেমি ও সাঈদ ইয়াঝুবির মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের কথা ঘোষণা করেছে, তবে কীভাবে কার্যকর করেছে তা জানায়নি।
কর্তৃপক্ষ জানায়, দেশব্যাপী বিক্ষোভ চলাকালে গত নভেম্বরে তারা ইস্ফাহানে এক পুলিশ কর্মকর্তা এবং আধাসামরিক বাসিজ গ্রুপের দুই সদস্যকে হত্যা করেছিল।
মানবাধিকার সংগঠনগুলোর দাবি, ওই তিনজনকে নির্যাতন করা হয়েছিল এবং যথাযথ প্রক্রিয়া না মেনে তাদেরকে টেলিভিশনে স্বীকারোক্তি দিতে বাধ্য করা হয়েছিল।
গত সেপ্টেম্বরে ২২ বছর বয়সী নারী মাহসা আমিনির মৃত্যুর পরে দেশজুড়ে বিক্ষোভ শুরু হয়। ‘কঠোর ইসলামিক ড্রেস কোড’ লঙ্ঘনের অভিযোগে তাকে দেশটির নৈতিকতা পুলিশ আটক করেছিল।
আরও পড়ুন: বিক্ষোভের অভিযোগে আরেক ইরানী বন্দীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর
১৯৭৯ সালের ইসলামী বিপ্লবের পর থেকে ইরানে শাসনকারী ধর্মতন্ত্রকে উৎখাত করার দাবিতে দ্রুত বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে।
সাম্প্রতিক মাসগুলোতে বিক্ষোভ অনেকাংশে হ্রাস পেয়েছে,যদিও এখনও বিক্ষিপ্তভাবে সরকারবিরোধী কার্যক্রম চালু রয়েছে।
এরমধ্যে ক্রমবর্ধমান সংখ্যক নারীর বাধ্যতামূলক ইসলামিক হেডস্কার্ফ (হিজাব) পরতে অস্বীকার করার দাবি অন্যতম।
বিক্ষোভে জড়িত থাকার অভিযোগে ইরান মোট সাতজনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করেছে।
মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলো বলেছে যে তারা (মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা সাতজন) বাদেও আরও কয়েকজনকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। গোপন রাষ্ট্রীয় সুরক্ষা আদালতে তাদের দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে এবং আত্মপক্ষ সমর্থনের অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়েছে।
শুক্রবার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়া তিনজনের বিষয়ে ইরানের নিউইয়র্কভিত্তিক সেন্টার ফর হিউম্যান রাইটসের নির্বাহী পরিচালক হাদি ঘাইমি বলেন, ‘প্রসিকিউশন জোরপূর্বক 'স্বীকারোক্তি'র ওপর নির্ভর করে তাদের শাস্তির রায় ঘোষণা করে, যেগুলো ছিল অস্পষ্ট। যাতে বোঝা যায় এটি ছিল একটি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মামলা।’
সংস্থাটি বলেছে যে কাজেমি তার একজন আত্মীয়কে ফোন করে বলেছিল যে কর্তৃপক্ষ তার পায়ে চাবুক দিয়ে ও একটি স্টান বন্দুক ব্যবহার করে নির্যাতন করেছে এবং তাকে যৌন নিপীড়নের হুমকি দিয়েছে।
লন্ডনভিত্তিক অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালও মামলাগুলোর সমালোচনা করেছে।
ইরানের জন্য নিযুক্ত মার্কিন দূত রবার্ট ম্যালি তিনজনের মৃত্যুদণ্ডের বিরোধীতা করে এটিকে ‘সমস্ত ইরানিদের মানবাধিকার ও মৌলিক মর্যাদার প্রতি অবমাননা’ বলে অভিহিত করেছেন।
আরও পড়ুন: ইরানে অস্কারজয়ী সিনেমার অভিনেত্রীকে গ্রেপ্তার
তিনি বলেন, বোঝা যাচ্ছে যে সরকার ‘বিক্ষোভ থেকে কিছুই শিখেনি।’
ম্যালি বৃহস্পতিবার টুইট করে বলেছেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র ইরানের জনগণের প্রতি সমর্থন অব্যাহত রাখবে। আমরা ইরানি শাসকদের বার বার মানবাধিকার লঙ্ঘনের তথ্য তুলে ধরতে এবং মোকাবিলা করতে আমাদের মিত্র ও অংশীদারদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে সমন্বয় করছি।’
কয়েক মাস ধরে চলা বিক্ষোভে নিরাপত্তা বাহিনীর কয়েক ডজন সদস্যসহ ৫০০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন এবং প্রায় ১৯ হাজার লোককে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল; যদিও অনেককে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
ইরান বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় ফাঁসি কার্যকরকারী দেশগুলোর মধ্যে একটি। ২০২২ সালে কমপক্ষে ৫৮২ জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছিল, আগের বছরে সেই সংখ্যাটি ছিল ৩৩৩ জন।
দেশটিতে মাদকদ্রব্য আইন লঙ্ঘন,‘আল্লাহর সঙ্গে বিরোধীতা’ এবং ‘পৃথিবীতে দুর্নীতি ছড়িয়ে দেওয়ার’ অস্পষ্ট কিছু অভিযোগসহ নানা অভিযোগে মৃত্যুদণ্ড বৃদ্ধির সমালোচনা করেছে জাতিসংঘের কর্মকর্তা ও মানবাধিকার কর্মীরা।
আরও পড়ুন: ইরান ইস্যুতে জাতিসংঘের স্বাধীন ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং মিশনের প্রধান বাংলাদেশের সারা হোসেন
গাজায় বিমান হামলায় আরেক সশস্ত্র কমান্ডার নিহত হয়েছে: ইসরায়েল
গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় বৃহস্পতিবার সশস্ত্র সংগঠনের চতুর্থ কমান্ডার নিহত হয়েছে। যুদ্ধের সর্বশেষ বিস্ফোরণ থেকে নিহতের সংখ্যা ২৫ জনে দাঁড়িয়েছে। যুদ্ধবিরতির মধ্যস্থতা করার জন্য মিশরীয় প্রচেষ্টা ব্যর্থ হওয়ার খবরের মধ্যে ইসরায়েল আরও রকেট হামলার জন্য প্রস্তুত হয়েছে।
এটি কয়েক মাস ধরে গাজায় ইসরায়েল এবং ফিলিস্তিনি সশস্ত্র সংগঠনের মধ্যে লড়াইয়ের সবচেয়ে খারাপ লড়াই হয়েছে এবং নিহতদের মধ্যে মহিলা ও শিশুও রয়েছে। অধিকৃত পশ্চিম তীরে গত বছর ধরে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনা এবং সহিংসতা বৃদ্ধির ঘটনা ঘটে।
বৃহস্পতিবারের প্রথম দিকে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী ইসলামিক জিহাদ নামে সশস্ত্র গোষ্ঠীর ওপর হামলা চালায়। এবং বলেছিল যে গোষ্ঠীর রকেট উৎক্ষেপণ বাহিনীর দায়িত্বে থাকা আলী গালি নামে একজন সিনিয়র কমান্ডার তার অ্যাপার্টমেন্টে হামলায় নিহত হয়েছেন।
সামরিক মুখপাত্র রিয়ার অ্যাডমিরাল ড্যানিয়েল হাগারি ইসরায়েলি আর্মি রেডিওকে বলেছেন যে হামলায় সশস্ত্র গোষ্ঠীর আরও দুই সদস্য নিহত হয়েছে। যদিও কোনো গোষ্ঠী তাৎক্ষণিকভাবে তাদের সদস্য বলে দাবি করেনি এবং ভবনের বাকি অংশ অক্ষত রয়েছে।
হাগারি বলেন, ‘অ্যাপার্টমেন্টটি খুব সুনির্দিষ্টভাবে লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছিল।’ ‘আমি আশা করি হামলাটি ইসলামিক জিহাদের রকেটের ক্ষমতা হ্রাস, এবং ব্যাঘাত ঘটাবে।
ফিলিস্তিনি গণমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, দক্ষিণ গাজা উপত্যকায় কাতাররের নির্মিত একটি আবাসিক কমপ্লেক্সের একটি ভবনের উপরের তলাকে লক্ষ্য করে হামলা চালানো হয়। এতে কমান্ডারসহ অন্তত দুইজন নিহত হয়।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে ২৫ জন নিহত হয়েছে।
ইসলামিক জিহাদ বলেছে যে গালি তার রকেট স্কোয়াডের একজন কমান্ডার এবং তার সশস্ত্র গোষ্ঠীর সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী সংস্থার সদস্য ছিলেন।গোষ্ঠীটি বলেছে যে ইসরায়েল তার যোদ্ধাদের লক্ষ্যবস্তু করে হত্যা বন্ধ করতে সম্মত হলেই কেবল যুদ্ধবিরতি করবে।
বুধবার তীব্র লড়াইয়ের সময়, যখন দক্ষিণ ও মধ্য ইসরায়েলে রকেট বৃষ্টিপাত হয় এবং গাজায় বিমান হামলা চলানো হয়।
এমতাবস্থায় রাষ্ট্র-চালিত একটি মিশরীয় টিভি স্টেশন ঘোষণা করে যে মিশর,উভয় পক্ষের মধ্যে ঘন ঘন মধ্যস্থতাকারী হিসাবে একটি যুদ্ধবিরতির মধ্যস্থতা করেছে। কিন্তু বৃহস্পতিবার ভোররাত পর্যন্ত সহিংসতা অব্যাহত থাকায় দেখা যাচ্ছে কোনো পক্ষই পিছু হটছে না।ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী বলেছে যে প্রায় ১৫০টি লক্ষ্যবস্তুতে তাদের হামলায় তারা সশস্ত্র গোষ্ঠীকে নিশ্চিহ্ন করে ফেলেছে এবং এটি বলেছে যে এটি নির্ভুল হামলা। তবে তাদের মধ্যে একটি ৪ বছর বয়সী শিশুও নিহত হয়েছে।
আরও পড়ুন: গাজায় হামাসের ওপর ইসরায়েলি বিমান হামলা
সামরিক মুখপাত্র হাগারি, আর্মি রেডিওকে বলেছেন যে এবারের লড়াইয়ের সময় নিক্ষেপ করা রকেটগুলোর এক চতুর্থাংশ গাজায় পড়ে, যার মধ্যে একটি ১০ বছর বয়সী মেয়ে, দুটি ১৬ বছর বয়সী এবং একজন ৫১ বছর বয়সী বৃদ্ধলোক সহ কমপক্ষে চারজন নিহত হয়। তবে তাদের সেই দাবি তাৎক্ষণিকভাবে স্বাধীনভাবে নিশ্চিত করা যায়নি।
বুধবার একটি টেলিভিশন প্রাইম-টাইম ভাষণে, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু দাবি করেছেন যে ইসরায়েল সশস্ত্র গোষ্ঠীদের ওপর কঠোর আঘাত করেছে। তবে তিনি সতর্ক করেছিলেন: ‘এই পর্বই শেষ নয়।’
ইসরায়েল সিদ্ধান্ত নেবে কখন শান্ত হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমরা সন্ত্রাসীদের এবং যারা তাদের পাঠায় তাদের বলছি: আমরা আপনাদেরকে সর্বত্র চোখ রাখছি। আপনি লুকাতে পারবেন না, এবং আমরা আপনাকে আক্রমণ করার জন্য স্থান এবং সময় বেছে নিয়েছি।’
আরও পড়ুন: গাজায় ইসরাইলি হামলা অব্যাহত, ওআইসির জরুরি বৈঠকে বাংলাদেশের তীব্র নিন্দামঙ্গলবার প্রাথমিক ইসরায়েলি বিমান হামলা যা গুলি বিনিময় শুরু করে তাতে ইসলামিক জিহাদের তিনজন সিনিয়র সদস্য তাদের বাড়িতে এবং কমপক্ষে ১০ জন বেসামরিক লোক নিহত হয়। নিহতদের বেশিরভাগই মহিলা ও শিশু। ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী বলেছে যে তাদের আক্রমণগুলো উপকূলীয় ছিটমহলে সশস্ত্র গোষ্ঠী ইসলামিক জিহাদের অবকাঠামোর উপর কেন্দ্রীভূত ছিল এবং এটি যে কোনও বেসামরিক মৃত্যুর তদন্ত করবে।
এই হামলাগুলো বুধবার রকেটের আগুনের বিস্ফোরণ ঘটায় যা দক্ষিণ এবং মধ্য ইসরায়েল জুড়ে বিমান হামলার সাইরেন শুরু করে। বিল্ডিংগুলোতে রকেটের আঘাতে ক্ষয়ক্ষতি হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। তবে যেগুলোতে আঘাত হেনেছিল সেগুলো খালি ছিল, কারণ বাসিন্দারা এলাকা ছেড়ে পালিয়ে গিয়েছিল।
সেনাবাহিনী জানিয়েছে, ইসরায়েলের দিকে ৫০০টিরও বেশি রকেট ছোড়া হয়েছে। এতে বলা হয়, বেশিরভাগই ইসরায়েলের ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা প্রতিরোধ করেছিল বা খোলা জায়গায় পড়েছিল।
আরও পড়ুন: গাজায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় ৯ জন নিহত
গাজায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় ৯ জন নিহত
গাজা উপত্যকায় ফিলিস্তিনি ইসলামিক জিহাদ (পিআইজে) সদস্যদের ওপর ইসরায়েলি বিমান হামলায় মঙ্গলবার ভোরে কমপক্ষে নয়জন নিহত এবং ১০ জনেরও বেশি আহত হয়েছে।
ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সাতটি লাশ গাজা শহরের শিফা হাসপাতালে এবং বাকি দুটি লাশ দক্ষিণ গাজা উপত্যকার রাফাহ শহরের একটি হাসপাতালে আনা হয়েছে।
এক প্রেস বিবৃতিতে মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, দক্ষিণ গাজা উপত্যকার গাজা সিটি এবং রাফাহ শহরের বেশ কয়েকটি ভবনে ইসরায়েলি বিমান হামলায় নারী ও শিশুসহ ১০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি আহত হয়েছে।
পিআইজে সূত্র সিনহুয়াকে জানিয়েছে, নিহতদের মধ্যে ফিলিস্তিনি অঞ্চলে সংস্থার মুখপাত্র তারেক ইজেল দেন, তার স্ত্রী এবং দুই সন্তান এবং আরও দুই সিনিয়র সামরিক নেতা রয়েছেন।
ফিলিস্তিনি সূত্র এবং প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছে, ইসরায়েলি ড্রোনগুলো মঙ্গলবার ভোরে গাজা শহর এবং দক্ষিণ গাজা উপত্যকার রাফাহ শহরের বেশ কয়েকটি ভবনে বোমাবর্ষণ করেছে।
আরও পড়ুন: ফিলিস্তিন: পশ্চিম তীরে কিশোরকে গুলি করে হত্যা করেছে ইসরাইল
তারা বলেছিল যে প্রথম বিল্ডিংটি ছিল গাজা শহরের আল-রিমাল পাড়ার ‘দাউদ’ টাওয়ারের একটি আবাসিক অ্যাপার্টমেন্ট এবং অন্য টার্গেট ছিল রাফাহ শহরের একটি ভবন।
সূত্র জানায়, পিআইজে জঙ্গিরা ইসরায়েলি ড্রোনের ক্ষেপণাস্ত্র দ্বারা বোমা বিস্ফোরণ করা দুটি ভবনে ছিল।
এদিকে, ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর একজন মুখপাত্র একটি সংক্ষিপ্ত বিবৃতিতে বলেছেন, ইসরায়েলি সেনাবাহিনী আরও বিস্তারিত প্রকাশ না করে গাজা উপত্যকায় ইসলামিক জিহাদের লক্ষ্যবস্তুতে বোমাবর্ষণ করছে।
অন্যদিকে, গাজা উপত্যকার কাছাকাছি বসবাসকারী ইসরায়েলি বাসিন্দাদের গাজা থেকে রকেট হামলার ভয়ে ৪০ কিলোমিটার দূরে বোমা আশ্রয়কেন্দ্রের কাছে থাকার নির্দেশ দিয়েছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী।
আরও পড়ুন: ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠীর কমান্ডার সিরিয়ায় নিহত
গাজায় হামাসের ওপর ইসরায়েলি বিমান হামলা
ফিলিস্তিন: পশ্চিম তীরে কিশোরকে গুলি করে হত্যা করেছে ইসরাইল
ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, অধিকৃত পশ্চিম তীরে শুক্রবার ইসরাইলি বাহিনী এক কিশোরকে গুলি করে হত্যা করেছে।
ফিলিস্তিনি গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বেথলেহেম শহরের কাছে একটি গ্রামে ইসরাইলি বাহিনী এবং পাথর নিক্ষেপকারী ফিলিস্তিনিদের মধ্যে সংঘর্ষের সময় গুলি চালানো হয়।
মন্ত্রণালয় নিহত কিশোরটিকে মোস্তফা সাবাহ (১৬) হিসেবে শনাক্ত করেছে এবং তার বুকে গুলি করা হয়েছে।
ইসরাইলি সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিক কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট করা ফুটেজে দেখা যাচ্ছে যে জনতা গুলি চালানোর পর কিশোরটির লাশ বহন করছে এবং আরবীতে ‘আল্লাহু আকবার’ বা ‘আল্লাহ মহান’ বলে চিৎকার করছে।
ইসরাইল-ফিলিস্তিনি লড়াই বছরের পর বছর অদৃশ্য উচ্চতায় পৌঁছেছে।
আরও পড়ুন: ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠীর কমান্ডার সিরিয়ায় নিহত
সামরিক বাহিনী জানিয়েছে,এর আগে শুক্রবার সেনাবাহিনী পশ্চিম তীরের জেনিন শরণার্থী শিবিরে অভিযান চালিয়ে ইসরাইলিদের বিরুদ্ধে হামলায় জড়িত থাকার সন্দেহে বেশ কয়েকজন ফিলিস্তিনিকে গ্রেপ্তার করেছে।
ফিলিস্তিনি গণমাধ্যম জানিয়েছে, সেখানে সেনাবাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে দুই যুবক আহত হয়েছে।
অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের একটি তথ্য অনুসারে ২০২৩ সালে এখনও পর্যন্ত পশ্চিম তীরে ইসরাইলি বাহিনীর গুলিতে ৯৭ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। তাদের অন্তত অর্ধেক সশস্ত্র গোষ্ঠীর সঙ্গে যুক্ত। সে সময় ইসরাইলিদের ওপর ফিলিস্তিনি হামলায় ১৯ জন নিহত হয়।
১৯৬৭ সালের মধ্যপ্রাচ্য যুদ্ধে ইসরাইল গাজা উপত্যাকা এবং পূর্ব জেরুজালেমসহ পশ্চিম তীর দখল করে। ফিলিস্তিনিরা ভবিষ্যৎ স্বাধীন রাষ্ট্রের জন্য ওই জমিগুলো চায়।
আরও পড়ুন: পাসওভারেও থেমে নেই ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘর্ষ
সৌদি আরবে ঈদুল ফিতর উদযাপিত হবে শুক্রবার
সৌদি আরব শুক্রবার পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপন করবে। বৃহস্পতিবার শাওয়ালের চাঁদ দেখা যাওয়ার পর দেশটি এই ঘোষণা দেয়।
কিংডম শুক্রবার ঈদ-উল-ফিতর উদযাপন করবে বলে একটি প্রতিবেদন করেছে সৌদি গেজেট।
দেশটির চাঁদ দেখা কমিটি তুমাইর এর মতে, বৃহস্পতিবার শাওয়ালের অর্ধচন্দ্রাকার চাঁদ দেখা গেছে, যার অর্থ এই বছর রমজান মাত্র ২৯ দিন চলবে।
চাঁদ দেখার ওপর ভিত্তি করে এ বছর ঈদ উদযাপিত হবে।
বাংলাদেশে ঈদুল ফিতরের তারিখ নির্ধারণের জন্য শুক্রবার সন্ধ্যায় জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে।
ইয়েমেনের রাজধানীতে পদদলিত হয়ে নিহত ৭৮
প্রত্যক্ষদর্শী ও হুথি বিদ্রোহী কর্মকর্তাদের অনুসারে, ইয়েমেনের রাজধানী সানায় বুধবার রাতে মুসলমানদের পবিত্র রমজান মাসে আর্থিক সহায়তা বিতরণের একটি অনুষ্ঠানে দৃশ্যত গোলাগুলি ও বৈদ্যুতিক বিস্ফোরণে জনতা আতঙ্কিত হয়ে পড়ে, এতে কমপক্ষে ৭৮ জন নিহত ও ৭৩ জন আহত হয়েছে।
ইয়েমেনের দীর্ঘদিনের যুদ্ধের সঙ্গে সম্পর্কিত নয় এমন বিগত বছরগুলোর মধ্যে এই ট্র্যাজেডিটি সবচেয়ে মারাত্মক ছিল এবং এই সপ্তাহের শেষের দিকে রমজানের সমাপ্তি উপলক্ষে মুসলমানদের ঈদ-উল-ফিতরের ছুটির আগে এটি ঘটল।
আবদেল-রহমান আহমেদ ও ইয়াহিয়া মোহসেন নামের দুই প্রত্যক্ষদর্শী জানিয়েছেন, সশস্ত্র হুথিরা ভিড় নিয়ন্ত্রণের চেষ্টায় বাতাসে গুলি চালায়, দৃশ্যত একটি বৈদ্যুতিক তারে আঘাত করে এবং এটি বিস্ফোরিত হয়। তারা আরও জানায় যে এতে আতঙ্কের জন্ম দেয় এবং অনেক নারী ও শিশুসহ অন্যান্য মানুষ পদদলিত হতে শুরু হয়।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করা ভিডিওতে কয়েক ডজন মৃতদেহ, কিছু স্থির এবং অন্যরা চিৎকার করতে দেখায় যখন মানুষেরা সাহায্য করার চেষ্টা করেছিল। হুথি সদস্যদের প্রকাশ করা পৃথক ফুটেজে দেখা গেছে, রক্তের দাগ, জুতা ও নিহতদের পোশাক মাটিতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। তদন্তকারীদের এলাকাটি পরীক্ষা করতে দেখা গেছে।
আরও পড়ুন: রাজধানীর কারওয়ান বাজারে ট্রেনের ধাক্কায় শ্রমিক নিহত
হুথি নিয়ন্ত্রিত স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সানার কেন্দ্রস্থলে পুরাতন শহরে কয়েকশ’ দরিদ্র মানুষ ব্যবসায়ীদের আয়োজিত একটি দাতব্য অনুষ্ঠানে যোগ দিতে জড়ো হয়েছিল। আর্থিক সহায়তা বিতরণ রমজানের সময় একটি রীতি, যখন মুমিনরা ভোর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত রোজা রাখে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, স্থানীয় ব্যবসায়ীদের অর্থায়নে পরিচালিত একটি দাতব্য প্রতিষ্ঠান থেকে প্রায় ১০ ডলার করে নেওয়ার জন্য লোকজন জড়ো হয়েছিল। ধনী ব্যক্তি ও ব্যবসায়ীরা প্রায়শই নগদ অর্থ ও খাবার বিতরণ করেন, বিশেষত রমজান মাসে দরিদ্রদের মধ্যে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ব্রিগেডিয়ার আব্দেল খালেক আল-আঘরি স্থানীয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সমন্বয় ছাড়াই 'এলোমেলোভাবে তহবিল বিতরণের' জন্য পদদলিতের ঘটনাকে দায়ী করেছেন।
বিদ্রোহীদের আল-মাসিরাহ স্যাটেলাইট টিভি চ্যানেলের বরাত দিয়ে জ্যেষ্ঠ স্বাস্থ্য কর্মকর্তা মোতাহের আল-মারুনি জানিয়েছেন, ৭৮ জন নিহত হয়েছেন। হাসপাতালের উপ-পরিচালক হামদান বাঘেরি জানিয়েছেন, অন্তত ৭৩ জন আহত হয়েছেন এবং তাদের সানার আল-থোরা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: টাঙ্গাইলে ট্রেনে কাটা পড়ে মা-মেয়েসহ নিহত ৪
অবরোধের পর সম্পর্ক পুনরুদ্ধারে উপসাগরীয় দেশ বাহরাইন ও কাতার
গভীর রাতে কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনঃস্থাপনে সম্মত হয়েছে উপসাগরীয় দেশ বাহরাইন ও কাতার।
২০১৭ সালে কাতারের উপর বয়কট এবং অবরোধ আরোপকারী চারটি আরব দেশের মধ্যে বাহরাইন সর্বশেষ স্থায়ী ছিল। তারা ২০১১ সালের আরব বসন্তের প্রতিবাদের পর কিছু দেশে ক্ষমতায় আসা ইসলামপন্থী গোষ্ঠীগুলোর প্রতি কাতারের সমর্থনের কারণে ক্ষুব্ধ হয়েছিল, তাদেরকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে অন্যান্য স্বৈরাচারী দেশগুলো দেখেছিল।
অবরোধটি ২০২১ সালের শুরুতে প্রত্যাহার করা হয়েছিল এবং সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং মিশর তখন থেকে কাতারের সঙ্গে সম্পর্ক পুনস্থাপন করেছে, শীর্ষ নেতারা সাম্প্রতিক মাসগুলোতে সরকারি সফর করেছেন।
বাহরাইন এবং কাতার প্রত্যেকেই সৌদি রাজধানী রিয়াদে উপসাগরীয় সহযোগিতা পরিষদের প্রধান কার্যালয়ে তাদের প্রতিনিধিদের মধ্যে একটি বৈঠকের পর সম্পর্ক পুনরুদ্ধারের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করে আনুষ্ঠানিক বিবৃতি জারি করেছে। দেশ দুটি একটি ছয় জাতিগোষ্ঠীর সদস্য।
চারটি দেশ কাতারের সঙ্গে সমস্ত সম্পর্ক ছিন্ন করেছিল এবং সংকটের শীর্ষে কাতার ও সৌদি আরবের মধ্যে ৮৭ কিলোমিটার (৫৪ মাইল) সীমান্ত বরাবর একটি পরিখা খনন এবং এটি পারমাণবিক বর্জ্য দিয়ে ভরাট করার বিষয়ে স্থানীয় মিডিয়াতেও আলোচনা হয়েছিল।
আরও পড়ুন: পাসওভারেও থেমে নেই ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘর্ষ
বয়কট কাতারের অর্থনীতিতে সামান্য প্রভাব ফেলেছে। ক্ষুদ্র উপসাগরীয় দেশ কাতার গত বছর ফুটবল বিশ্বকাপ আয়োজন করেছিল। বিশাল প্রাকৃতিক গ্যাসের মজুদের কারণে পৃথিবীর অন্যতম ধনী দেশ এটি। তুরস্কের ইসলামপন্থী গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক থাকায় সংকটের সময় কাতারকে সাহায্য করার জন্য পদক্ষেপ নিয়েছে তারা।
২০১১ সালের বিক্ষোভের কারণে কয়েক বছর ধরে চলা যুদ্ধ এবং অস্থিরতার পরে সম্পর্ক মেরামত করার জন্য দীর্ঘদিনের শত্রুদের আঞ্চলিক প্রচেষ্টার মধ্যে বুধবারের চুক্তিটি আসে।
বুধবার সিরিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে স্বাগত জানিয়েছে সৌদি আরব। সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ গণতন্ত্রপন্থী বিক্ষোভের উপর নৃশংস দমন-পীড়ন শুরু করার কারণে আরব লীগ এক দশকেরও বেশি আগে সদস্যপদ স্থগিত করার পর দামেস্ককে পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে প্রস্তুত হতে পারে এমন সর্বশেষ লক্ষণ ছিল।
গত মাসে, সৌদি আরব এবং তার প্রধান আঞ্চলিক প্রতিদ্বন্দ্বী ইরান, চীনের মধ্যস্থতায় একটি চুক্তিতে ২০১৬ সালে ছিন্ন হওয়া কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনরুদ্ধার করতে সম্মত হয়েছিল।
আরও পড়ুন: সিরিয়ায় আইএসের ল্যান্ড মাইন বিস্ফোরণে ৬ বেসামরিক নাগরিক নিহত
সিরিয়ায় আইএসের ল্যান্ড মাইন বিস্ফোরণে ৬ বেসামরিক নাগরিক নিহত
সিরিয়ায় একটি মারাত্মক স্থল মাইন বিস্ফোরণে রবিবার অন্তত ছয়জন নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম।
বার্তা সংস্থা সানা বলেছে যে বিস্ফোরণটি বেসামরিক লোকদের আঘাত করেছে, যারা গ্রামাঞ্চলে ট্রাফল খুঁজতে যাচ্ছিল এবং দক্ষিণ দেইর ইজ-জোর প্রদেশে ইসলামিক স্টেট গোষ্ঠীর পুতে রাখা একটি স্থল মাইনকে এই ঘটনার জন্য দায়ী করেছে। এলাকাটি জঙ্গিদের সাবেক ঘাঁটি।
একদিন আগে সানা জানিয়েছে যে ছয়জন লোক - যারা ট্রাফলের সন্ধানে যাচ্ছিল - হোমসের পূর্বাঞ্চলীয় গ্রামাঞ্চলের মরুভূমিতে আইএসের রেখে যাওয়া একটি ট্যাঙ্ক বিধ্বংসী মাইন বিস্ফোরণে তারা নিহত হয়েছে।
ব্রিটেন-ভিত্তিক যুদ্ধ পর্যবেক্ষক সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস রবিবার নিহতের সংখ্যা ৯ জন বলে উল্লেখ করেছে। সংস্থাটি বলেছে যে এই ঘটনাটি ৩০ শিশু সহ যুদ্ধ থেকে অবশিষ্ট মাইন এবং অন্যান্য বিস্ফোরক বস্তুর বিস্ফোরণের ফলে এ বছর নিহত বেসামরিক লোকের সংখ্যা ১৩৯ -এ দাঁড়িয়েছে।
আরও পড়ুন: ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠীর কমান্ডার সিরিয়ায় নিহত
ট্রাফলগুলো একটি মৌসুমী খাবার যা উচ্চ মূল্যে বিক্রি করা যেতে পারে। যেহেতু ট্রাফল শিকারীরা প্রত্যন্ত অঞ্চলে বড় দলে কাজ করে, তাই আইএস জঙ্গিরা বারবার তাদের ওপর হামলা করেছে। মরুভূমি থেকে তাদের অপহরণ করতে, কাউকে হত্যা করতে এবং অর্থের জন্য অন্যদের মুক্তিপণ দেওয়ার জন্য তাদের শিকার করেছে।
ফেব্রুয়ারিতে, আইএস স্লিপার সেলগুলো কেন্দ্রীয় শহর সুখনার কাছে ট্রাফল সংগ্রহকারী কর্মীদের আক্রমণ করে, এতে কমপক্ষে ৫৩ জন নিহত হয়, যাদের বেশিরভাগই শ্রমিক এবং কিছু সিরিয়ার সরকারি নিরাপত্তা বাহিনীও ছিল।
আরও পড়ুন: সিরিয়ায় আইএসের হামলায় নিহত বেড়ে ৫৩
পাসওভারেও থেমে নেই ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘর্ষ
টানা দ্বিতীয় দিনেও পাসওভারের পবিত্র সময়ে বৃহস্পতিবার ভোরে ফিলিস্তিনি সশস্ত্র যোদ্ধারা দক্ষিণ ইসরায়েলের উদ্দেশে রকেট ছুঁড়েছে।
ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, ভোরে গাজা উপত্যকা থেকে উৎক্ষেপণ করা সাতটি রকেট মধ্য আকাশে বিস্ফোরিত হয়েছে। গাজা থেকে ছোঁড়া রকেটের আগুনে দাবানলের আশঙ্কা তৈরি করেছিল।
তবে এ হামলার দায় এখনও কেউ স্বীকার করেনি।
মুসলমানরা জেরুজালেমের পবিত্র আল-আকসা মসজিদে রাতে অবস্থান করতে চাইলে ইসরায়েলি পুলিশ তাদেরকে বাধা দেয় এবং সংঘর্ষে জড়ায়।
এর জেরে বৃহস্পতিবার সকালে এই হামলা চালানো হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
২২ মার্চ রমজান শুরু হওয়ার পর থেকে অনেক মুসলমান বারবার আল-আকসা মসজিদে রাতে অবস্থান করার (ইবাদত) চেষ্টা করেছে।
মুসলমান তাদের মাসব্যাপী রোজার মধ্যে মসজিদে অবস্থান করে (ইতেকাফ) ইবাদত করেন। যদিও সাধারণত রমজানের শেষ ১০ দিন মসজিদে মুসল্লিদের রাতে অবস্থানের অনুমতি দেওয়া হয়।
ইসরায়েলি পুলিশ রাতে মসজিদের ভেতরে ঢুকে মুসল্লিদের টেনে বের করে এবং এথেকেই সহিংসতা শুরু হয়।
মঙ্গলবার থেকে বুধবার রাত পর্যন্ত মুসল্লিরা মসজিদে ব্যারিকেড দিয়েছিল। পুলিশ এতে হামলা চালিয়ে জোর করে উপস্থিত লোকজনকে সরিয়ে দেয়। এতে কয়েক ডজন ফিলিস্তিনি আহত হন এবং শতাধিককে আটক করে ইসরায়েলি পুলিশ বাহিনী।
বুধবার একজন মুখপাত্র বলেছেন, ইসরায়েলি পুলিশ কাউকে গ্রেপ্তার করেনি, তবে বেশ কয়েকজন ফিলিস্তিনিকে আটক করেছে এবং জিজ্ঞাসাবাদ করেছে।
ফিলিস্তিনি রেড ক্রিসেন্ট বলেছে যে বুধবার কর্তৃপক্ষ তাদেরকে কম্পাউন্ডে প্রবেশের অনুমতি দেয়নি।
ইসরায়েলি পত্রিকা হারেৎজ বলেছে, বুধবার রাতে ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলের কয়েক হাজার মানুষের মধ্যেও বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে।
অনেক ফিলিস্তিনি নাগরিকের বাড়ি ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলে, যাদের সংখ্যা ওই এলাকার ৯ দশমিক ৬০ মিলিয়ন জনসংখ্যার এক-পঞ্চমাংশ।
পুলিশ জানিয়েছে,তারা উম আল-ফাহম শহরে পাঁচ বিক্ষোভকারীকে গ্রেপ্তার করেছে।
অন্যদিকে, ওল্ড সিটির শত শত খ্রিস্টান পবিত্র বৃহস্পতিবার উপলক্ষে পবিত্র সেপুলচারে লাস্ট সাপারে অংশ নেওযার প্রস্তূতি নিচ্ছেন। অন্যদিকে মুসলমানরাও তাদের পবিত্র মাস রমজান উদযাপন করছেন।
আল-আকসা হলো ইসলামের তৃতীয় পবিত্র স্থান এবং ইহুদিদের কাছে এটি টেম্পল মাউন্ট নামে পরিচিত। এটি একটি পাহাড়ের চূড়ায় অবস্থিত,যা ইহুদি ধর্মের সবচেয়ে পবিত্র স্থান।
এর আগেও এই মসজিদের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে ইসরায়েল ও গাজা শাসনকারী ইসলামিক সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের মধ্যে দুই বছর আগে রক্তক্ষয়ী ১১ দিনের যুদ্ধ ও সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে।
আরও পড়ুন: পশ্চিম তীরে অভিযানের সময় ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর গুলিতে ৩ ফিলিস্তিনির মৃত্যু
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান; যার দেশ সম্প্রতি ইসরায়েলের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনঃস্থাপন করেছে, বুধবার গভীর রাতে এক টেলিভিশন সাক্ষাৎকারে এই সহিংসতার নিন্দা জানিয়েছেন।
এরদোয়ান তুর্কি ২৪টিভিকে বলেছেন, ‘আল-আকসা মসজিদের ঐতিহাসিক মর্যাদা এবং আধ্যাত্মিকতার সঙ্গে সঙ্গে ফিলিস্তিনিদের জীবন ও ধর্মীয় বিশ্বাসের অধিকারের বিরুদ্ধে হস্তক্ষেপ এবং হুমকির অবসান হওয়া উচিত।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা সব পরিস্থিতিতে আমাদের ফিলিস্তিনি ভাই ও বোনদের পাশে দাঁড়াবো এবং আমাদের কাছে যা পবিত্র তা রক্ষা করব। ইসরায়েলের এটা জানা উচিত।’
লেবাননের সশস্ত্র হিজবুল্লাহ গোষ্ঠী মসজিদে হামলার নিন্দা জানিয়ে এটিকে মুসলমানদের ধর্মীয়,নৈতিক ও মানবিক মূল্যবোধের স্পষ্ট লঙ্ঘন বলে অভিহিত করেছে।
আরও পড়ুন: সম্মিলিতভাবে ফিলিস্তিনিদের পাশে দাঁড়াতে মুসলিম উম্মাহের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর আহ্বান