শিল্প-সংস্কৃতি
ঠাকুরগাঁওয়ে ৯ লাখ টাকা মোহরানায় ব্যাঙের বিয়ে!
বৃষ্টির দেখা নেই, তাই বৃষ্টির আশায় ব্যাঙের বিয়ে। বরের নাম মেঘ, আর কনের নাম বৃষ্টি। দুজনে মিলে মেঘবৃষ্টি। বিয়ে উপলক্ষে মেঘবৃষ্টির গায়ে জড়ানো হয় নানা রঙিন কাপড়।
বুধবার (১০ মে) রাতে ছিলো মেঘবৃষ্টির বিয়ে, আর আজ বৃহস্পতিবার ছিলো বৌভাত।
রঙিন কাপড়ে জড়ানো ক্ষুদ্রাকার এ বর কনেকে দেখতে ভিড় জমায় হাজারো উৎসুক মানুষ। তাদের যেন আগ্রহের শেষ নেই। আর হবেই বা না কেন। এ তো ব্যাঙের বিয়ে। তাও আবার বিশাল অংকের মোহরানা।
ঠাকুরগাঁও জেলার পীরগঞ্জে ৯ লাখ ৯ হাজার ৯৯৯ টাকা দেনমোহর ধার্য করে ইসলাম ধর্মের রীতিনীতি মেনেই বুধবার রাতে আনুষ্ঠানিকভাবে মেঘ-বৃষ্টি নামে দুই ব্যাঙের বিয়ে দেওয়া হয়েছে। নিমন্ত্রণ করে খাওয়ানো হয়েছে অতিথিদের।
দেশের উত্তরের জেলা এই ঠাকুরগাঁও। তবে এবার এ জেলায় দিন দিন বেড়েই চলেছে তাপমাত্রা, নেই বৃষ্টি। চলছে প্রচণ্ড দাবদাহ। পুড়ছে চারদিক। নাভিশ্বাস উঠেছে জন জীবনে । খরা ও দাবদাহে ব্যাঙের বিয়ে দিলে বৃষ্টি হবে-সেই বিশ্বাস থেকেই এ বিয়ের আয়োজন।
মেঘ নামের বর ব্যাঙের গায়ে হলুদ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয় পীরগঞ্জ উপজেলার ভাকুড়া খালপাড়ার আনিসুরের বাড়িতে, আর কনে হিসেবে বৃষ্টি ব্যাঙের গায়ে হলুদ অনুষ্ঠান হয় নারায়ণপুর গ্রামের আমজাদ আলীর বাড়িতে। শাড়ি, কাপড় দিয়ে সাজানো হয় বর-কনেকে। টিপ পরানো হয় ও আলতা দিয়েও সাজানো হয় কনে ব্যাঙ বৃষ্টিকে। বিকালে গায়ে হলুদের পর্ব শেষ করে সন্ধ্যায় ভাকুড়া খালপাড়া থেকে অনুষ্ঠানিক ভাবে বরযাত্রী নিয়ে নারায়ণপুরে কনে বৃষ্টির বাড়িতে আসে বর পক্ষ। খাওয়া-দাওয়া শেষে দেনমোহর ধার্য করে বর ও কনেকে ইজাব-কবুল করান কাজল আহাম্মেদ। সম্পন্ন করা হয় বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা। ব্যাঙের এ বিয়ে দেখতে ঢল নামে নারী পুরুষের।
কুয়াকাটায় বুদ্ধ পূর্ণিমা উপলক্ষে 'গুরুপূজা' অনুষ্ঠিত
বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব ' বুদ্ধ পূর্ণিমা' উপলক্ষে ‘উপকূলের অলংকার’ খ্যাত রাখাইন সম্প্রদায় পালন করেছে 'গুরুপূজা '। শুক্রবার (৫ মে) দিনব্যাপী কুয়াকাটা সংলগ্ন লতাচাপলী ইউনিয়নের নয়াপাড়া মন্দির প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হয় এ পূজা।
অনুষ্ঠানে পটুয়াখালী ও বরগুনা জেলার বিভিন্ন এলাকার দুই শতাধিক রাখাইন অংশগ্রহণ করেন।
অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়া রাখাইনরা জানান, তাদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব ' বুদ্ধ পূর্ণিমা' উপলক্ষে ধর্মীয় নিয়ম-নীতি অনুযায়ী নানা অনুষ্ঠান পালন করেছেন তারা।
এছাড়া গুরুপূজা উপলক্ষে শুক্রবার সকাল থেকে বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা রাখাইনদের মাঝে খাবার ও বিভিন্ন প্রকারের পিঠা বিতরণ করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: বুদ্ধ পূর্ণিমা উদযাপিত হচ্ছে আজ
ঐতিহাসিক মে দিবস আজ
বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও যথাযোগ্য মর্যাদায় মে দিবস পালিত হচ্ছে। মে দিবস, আন্তর্জাতিক শ্রমিক সংহতি দিবস নামেও পরিচিত।
ঊনবিংশ শতাব্দীর শেষভাগে শ্রমঘণ্টা কমিয়ে দৈনিক আট ঘণ্টা করার দাবিতে যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগোতে রাস্তায় নেমে আসা শ্রমিকদের ঐতিহাসিক আন্দোলনের স্মরণে প্রতি বছর মে দিবস বা আন্তর্জাতিক শ্রমিক সংহতি দিবস পালন করা হয়।
মে দিবস বাংলাদেশে সরকারি ছুটির দিন।
এ বছর বাংলাদেশে দিবসটির প্রতিপাদ্য হচ্ছে ‘শ্রমিক-মালিক ঐক্য গড়ি, স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলি’।
রেডিও ও টেলিভিশন চ্যানেলগুলো দিবসটির তাৎপর্য তুলে ধরে বিশেষ অনুষ্ঠান সম্প্রচার করে এবং সংবাদপত্রগুলো বিশেষ নিবন্ধ প্রকাশ করে।
দিবসটি উপলক্ষে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সংগঠন নানা কর্মসূচি হাতে নিয়েছে।
১৮৮৬ সালের ১ মে দৈনিক ১২ ঘণ্টার পরিবর্তে আট ঘণ্টা কাজের দাবিতে যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগোতে শ্রমিকরা ফুঁসে ওঠেন। হে মার্কেটের কাছে তাদের বিক্ষোভে পুলিশ গুলিবর্ষণ করলে ১০ শ্রমিক নিহত হন। উত্তাল সেই আন্দোলনের মুখে কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের দাবি মেনে দিতে বাধ্য হয় এবং বিশ্বব্যাপী দৈনিক আট ঘণ্টা শ্রমঘণ্টা চালু করা হয়।
১৮৮৯ সালের ১৪ জুলাই প্যারিসে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক শ্রমিক সমাবেশে ১ মে’কে আন্তর্জাতিক শ্রমিক সংহতি দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হয়। পরের বছর থেকে বিশ্বব্যাপী এ দিনটি পালিত হচ্ছে।
ঐতিহাসিক মে দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন।
রাষ্ট্রপতি বলেন, দেশের শিল্প ও বাণিজ্যের অগ্রগতির জন্য প্রয়োজন বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ, শ্রমিকদের একাগ্রতা এবং শ্রমিক ও মালিকদের মধ্যে সুসম্পর্ক।
তিনি বলেন, শ্রমিক ও মালিকদের ইতিবাচক অংশগ্রহণের মাধ্যমে শ্রমখাতে স্থিতিশীলতা ও উৎপাদনশীলতা বাড়বে।
তিনি বলেন, ‘আমি আশা করি সংশ্লিষ্ট সকলেই তাদের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে এবং তাদের ন্যায্য অধিকার রক্ষায় নিজ নিজ ভূমিকা পালন করবেন।’
প্রধানমন্ত্রী তার বাণীতে বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি মহান মে দিবসের আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে শ্রমিক ও মালিকরা একে অপরের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখে জাতীয় উৎপাদন বৃদ্ধিতে নিবেদিতপ্রাণ হবেন। শ্রমজীবী মানুষের কল্যাণে এবং দেশের সার্বিক উন্নয়নে কাজ করে জাতির পিতার স্বপ্নের একটি উন্নত ও সমৃদ্ধশালী ‘সোনার বাংলাদেশ’ গড়ে তুলব।’
বিশেষ অনুরোধে ১ দিনের জন্য হজ রেজিস্ট্রেশন সার্ভার খুলেছে সরকার
হজযাত্রী ও হজ এজেন্সিস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (হাব) বিশেষ অনুরোধে মঙ্গলবার (২৫ এপ্রিল) ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় হজ নিবন্ধনের জন্য একদিনের জন্য সার্ভার খুলেছে।
যারা এই বছর হজে যাওয়ার জন্য তাদের নিবন্ধন সম্পূর্ণ করতে ব্যর্থ হয়েছেন তারা এই সুযোগ নিতে পারবেন।
গত ২০ এপ্রিল ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের জারি করা এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তি অনুসারে, সরকারি ও বেসরকারি উভয় ব্যবস্থাপনায় নিবন্ধনের ক্রমিক নম্বর আজকের জন্য খোলা হয়েছে এবং উভয় ব্যবস্থাপনাই হজযাত্রীদের জন্য একটি নতুন প্রাক-নিবন্ধন সুবিধা তৈরি করার সুযোগ পেয়েছে।
রেজিস্ট্রেশন কোটা পূরণ হলে সার্ভারটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে বন্ধ হয়ে যাবে।
এটি শেষ সময় হবে এবং নিবন্ধনের জন্য কোন এক্সটেনশন হবে না।
গত ৩০ মার্চ, সরকার নিবন্ধন কোটা পূরণের লক্ষ্যে হজের নিবন্ধনের সময়সীমা ৫ এপ্রিল পর্যন্ত বাড়িয়েছে।
৯ জানুয়ারি সৌদি আরবের সঙ্গে হজ নিয়ে একটি চুক্তি সই করে সরকার।
আরও পড়ুন: হজ নিবন্ধনের সময়সীমা বাড়ানো হয়েছে ৫ এপ্রিল পর্যন্ত
চুক্তি অনুযায়ী সরকারি ব্যবস্থাপনায় ১৫ হাজার এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ১১২ হাজার ১৯৮ জন হজে যেতে পারবেন।
এর মধ্যে ৯ হাজার ৯৩৫ এবং ১০ লাখ ৮ হাজার ৩৫১ জন হজযাত্রী ইতোমধ্যেই যথাক্রমে সরকারি ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় নিবন্ধন করেছেন।
এ বছর ৭০ শতাংশ বাংলাদেশি হজযাত্রী জেদ্দা বিমানবন্দর দিয়ে যাবেন এবং বাকি ৩০ শতাংশ মদিনা বিমানবন্দর দিয়ে যাবেন।
এদিকে, সৌদি আরব বিশ্বব্যাপী ইচ্ছুক হজযাত্রীদের জন্য একটি সার্ভিস চার্জ কমানোয় সরকার সরকারি ও বেসরকারি উভয় ব্যবস্থাপনায় হজ প্যাকেজের খরচ ১১ হাজার ৭২৫ টাকা কমিয়েছে।
১১ হাজার ৭২৫ টাকা বাদ দিয়ে এ বছর হজ করতে সরকারি ব্যবস্থাপনায় হজ পালনকারীদের প্রত্যেককে ৬ লাখ ৭১ হাজার ২৯০ টাকা দিতে হবে।
এছাড়া যারা প্রাইভেট ব্যবস্থাপনায় যাবেন তাদের প্রত্যেককে ১১ হাজার ৭২৫ টাকা বাদ দিয়ে ৬ লাখ ৬০ হাজার ৮৯৩ টাকা দিতে হবে।
আরও পড়ুন: হজ নিবন্ধনের সময়সীমা ৩০ মার্চ পর্যন্ত বাড়ল
হজ প্যাকেজের খরচ কমল ১১,৭২৫ টাকা
জব্বারের বলি খেলায় চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লার শাহজালাল
চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী জব্বারের বলী খেলায় কক্সবাজারের চকরিয়ার তরিকুল ইসলাম জীবন বলীকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়ে শিরোপা জিতেছেন কুমিল্লার শাহজালাল বলী। মাত্র ১ মিনিটের লড়াইয়ে শাহ জালালের কাছে হার মানেন জীবন বলী।
গত এই খেলায় শাহজালাল বলীকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন তরিকুল ইসলাম জীবন বলী। এবার প্রতিশোধ নিলেন শাহজালাল। তিনি পেশায় একজন ফল বিক্রেতা।
মঙ্গলবার (২৫ এপ্রিল) বিকালে অনুষ্ঠিত বলীখেলার ১১৪তম আসরের ফাইনালে মুখোমুখি হয় গতবারের শাহজালাল ২০২২ সালে রানারআপ হলেও ২০১৮ ও ১৯ সালে দুইবার চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলেন।
এর আগে আজকের খেলায় প্রথম সেমিফাইনালে মুখোমুখি হয় গতবারের চ্যাম্পিয়ন চকরিয়ার তরিকুর ইসলাম জীবন ও খাগড়াছড়ির সৃজন চাকমা। প্রায় ১১ মিনিট ৩৬ লড়াইয়ে জীবন বলীর কাছে পরাজিত হয় সৃজন বলীকে।
অন্যদিকে, দ্বিতীয় সেমিফাইনালে আনোয়ারার আব্দুন নুরের মুখোমুখি হয় গতবারের রানার্সআপ কুমিল্লার শাহ জালাল বলী। দুই জনের এ লাড়াই চলে মাত্র ১ মিনিট ২৬ সেকেন্ড। এতে শাহজালাল বলীর কাছে পরাজিত হয় আব্দুন নুর বলী।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে ঐতিহ্যবাহী জব্বারের বলীখেলা শুরু
চট্টগ্রামে ঐতিহ্যবাহী জব্বারের বলীখেলা শুরু
বন্দর নগরী চট্টগ্রামের লালদীঘির মাঠে ঐতিহ্যবাহী আবদুল জব্বারের বলীখেলার (কুস্তি প্রতিযোগিতা) ১১৪ তম আসর বসেছে আজ (মঙ্গলবার)।
এ উপলক্ষে তিন দিনব্যাপী বৈশাখী মেলা গতকাল থেকে শুরু হয়েছে। মেলায় দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে নানা রকম পণ্যের পসরা নিয়ে এসেছেন ক্ষুদে ব্যবসায়ীরা।
মেলায় মাটির তৈরি তৈজসপত্র, বাঁশের ও বেতের আসবাবপত্র, গাছের চারা, ফুলের ঝাড়, হাতপাখা, মুড়ি-মুড়কি, পাটি, দা, বটি, ছুরিসহ নানা ধরনের গৃহস্থালী ও লোকজ বিভিন্ন পণ্য সাজিয়ে বিক্রি শুরু করেছেন ব্যবসায়ীরা।
বলীখেলা তথা কুস্তি প্রতিযোগিতায় আংশ নিবে সারা দেশের শতাধিক কুস্তিগীর। লালদীঘি ময়দানে ইতোমধ্যে বলীখেলার জন্য বালু দিয়ে অস্থায়ী মঞ্চ তৈরি করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: 'এসো হে বৈশাখ': বাংলা নববর্ষ-১৪৩০ স্বাগত জানাচ্ছে বাংলাদেশ
মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়ার প্রত্যয়ে ফরেন সার্ভিস দিবস ২০২৩ উদযাপিত
মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায়, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার অঙ্গীকারের মাধ্যমে মঙ্গলবার (১৮ এপ্রিল) ফরেন সার্ভিস দিবস উদযাপিত হয়েছে।
ফরেন সার্ভিস দিবস উপলক্ষে মঙ্গলবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আয়োজিত অনুষ্ঠানে বক্তারা সারাবিশ্বে বাংলাদেশের স্বার্থ সম্মুন্নত রেখে ২০৪১ সালের মধ্যে একটি উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো.শাহরিয়ার আলম।
সম্মানিত অতিথিদের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা তৌফিক ইলাহী চৌধুরী, সাবেক রাষ্ট্রদূত আনোয়ারুল করিম চৌধুরী এবং সাবেক রাষ্ট্রদূত ওয়ালিউর রহমান প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন বলেন, বঙ্গবন্ধুর আহ্বানে সাড়া দিয়ে বিদেশের মাটিতে অসীম সাহসিকতায় বাংলাদেশি কূটনীতিকগণ দেশকে স্বাধীন করার প্রত্যয়ে যে কূটনৈতিক যুদ্ধ শুরু করেছিলেন, তা বর্তমান ও ভবিষ্যৎ বাংলাদেশি কূটনীতিকগণের জন্য দেশপ্রেমের অনন্য দৃষ্টান্ত এবং নতুন প্রজন্মের কূটনীতিকদের জন্য দেশ সেবার বিশেষ অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম কূটনীতিকগণের গৌরবময় অবদানের কথা স্মরণ করে বলেন, বিদেশের মাটিতে কূটনৈতিক সার্ভিসের লোভনীয় চাকরি ও অন্যান্য সুযোগ সুবিধা বাদ দিয়ে, জীবন, জীবিকা ও পরিবারের কথা চিন্তা না করে বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আনুগত্য প্রদর্শন এ দেশের কূটনীতিকদের দেশ, দেশের মাটি ও মানুষের প্রতি ভালোবাসারই বহিঃপ্রকাশ।
আরও পড়ুন: ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে বঙ্গবন্ধুর ১০৩তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস-২০২৩ উদযাপন
'এসো হে বৈশাখ': বাংলা নববর্ষ-১৪৩০ স্বাগত জানাচ্ছে বাংলাদেশ
উৎসব ও উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্যে শুক্রবার জাতি বাংলা ক্যালেন্ডারের প্রথম দিন পহেলা বৈশাখ উদযাপন করছে দেশ।
পহেলা বৈশাখ উদযাপন ছয় শতাব্দীরও বেশি আগে শুরু হওয়ার পর থেকে বাঙালির একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে উঠেছে। সকাল সোয়া ৬টায় রাজধানীর রমনা পার্কে ছায়ানটের শিল্পীদের গান ও কবিতা আবৃত্তির মধ্য দিয়ে দিনটিকে স্বাগত জানানোর মধ্য দিয়ে এ বছরের উৎসব শুরু হয়।
তাদের শতাব্দী-প্রাচীন ঐতিহ্য অনুসারে, সর্বস্তরের মানুষ বাংলা নববর্ষ ১৪৩০ স্বাগত জানাতে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জনপ্রিয় ও ঐতিহাসিক স্থানগুলোতে একটি সুন্দর, শান্তিপূর্ণ বছরের জন্য নতুন আশা ও আকাঙ্খা নিয়ে ভিড় করবে।
এটি টানা দ্বিতীয় বছর হিসাবে চিহ্নিত করেছে যে পহেলা বৈশাখ পবিত্র রমজান মাসে পালিত হবে এবং পবিত্র মাসের একতা ও সারমর্মকে সম্মান করে এই বছর উৎসবের পরিকল্পনা করা হয়েছে।
প্রাণবন্ত ও উৎসবমুখর পরিবেশে বাংলা নববর্ষকে স্বাগত জানাতে প্রস্তুত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। চারুকলা নামে পরিচিত বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ এবারের পহেলা বৈশাখ পালনের প্রস্তুতি নিয়েছে।
ঐতিহ্যগতভাবে, প্রতি বছর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এই জাতীয় দিবসটিকে ‘মঙ্গল শোভাযাত্রা’ (সুসংবাদের মার্চ) নামক বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা সহ বিভিন্ন ধরণের অনুষ্ঠানের আয়োজন করে উৎসব উদযাপন করে।
এবারের মঙ্গল শোভাযাত্রা বিশ্ব ও বাঙালি উভয় ধরনের সাংস্কৃতিক পরিপ্রেক্ষিতকে মাথায় রেখে প্রস্তুত করা হয়েছে।
বিশ্ব শান্তির আকাঙ্ক্ষা ব্যক্ত করে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের গাওয়া গান ‘বরিশ ধারা মাঝে শান্তির বাড়ি’ স্লোগান নিয়ে এবারের শোভাযাত্রায় ভেড়া, হাতি, নীলগাই, টেপা পুতুল, বাঘ ও ময়ূরের ছয়টি বড় কাঠামো উপস্থাপন করা হবে। বাংলা নববর্ষের মোটিফের প্রতিনিধিত্ব করে।
এদিকে পহেলা বৈশাখ নির্বিঘ্নে উদযাপনের জন্য নেয়া হয়েছে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক বলেন, উদযাপনে পুলিশ ও বিভিন্ন ইউনিটের পাশাপাশি তিন স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে।
এদিকে, বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের ঐতিহ্যবাহী নতুন খাতা বই 'হালখাতা' খুলে ক্রেতাদের মিষ্টি উপহার দেবে।
দিনটি সরকারি ছুটির দিন।
পার্বত্য চট্টগ্রামে বৈসাবি উৎসবের ২য় দিন, বাড়িতে বাড়িতে পাঁজনের সুঘ্রাণ
চৈত্র সংক্রান্তিতে পুরাতন বছরকে বিদায় ও নতুন বছরকে বরণ করতে পাহাড়ে এখন বৈসাবি উৎসবের আমেজ বইছে।
পাহাড়িদের এই উৎসব তিনটি আলাদা নামে হলেও সমতলের মানুষের কাছে তা বৈসাবি নামে পরিচিত। এবার পাহাড়ের মানুষের প্রধান সামাজিক উৎসব বৈসাবি তথা বিজু, সাংগ্রাই ও বৈসুক পালন করা হচ্ছে সাড়ম্বরে। বৈসাবিকে ঘিরে পার্বত্য জনপদের পাড়া-মহল্লায় ঘরে ঘরে ঐহিত্যবাহী খাবার পাঁজন খাওয়ার ও বেড়ানোর ধুম চলছে। এছাড়াও পাহাড়ে সপ্তাহব্যাপী নানা আয়োজন চলছে।
পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়ি অধিবাসীদের বিজু, সাংগ্রাই ও বৈসুক তথা বৈসাবি উৎসবের আজ দ্বিতীয় দিন। চৈত্র সংক্রান্তির এ দিনকে চাকমারা মূলবিজু আর ত্রিপুরারা বিসিমা দিন হিসাবে পালন করে থাকেন। আলাদা নামে হলেও চাকমা, ত্রিপুরা, তঞ্চঙ্গ্যা ও মারমা জাতিগোষ্ঠির মানুষও একযোগে পালন করেন এ উৎসব।
আরও পড়ুন: ফরিদপুরে পূণ্যস্নানে হাজারো মানুষের ঢল
পাহাড়ি প্রত্যেক পল্লীতে সকালে ঘরে ঘরে রান্না করা হয়েছে ঐতিহ্যবাহী খাবার পাজন। প্রায় অর্ধ শত প্রকারের সবজি দিয়ে রান্না হয় এই পাঁজন। তার সঙ্গে নানান উপাদেয় খাবার দিয়ে দিনভর চলে অতিথি আপ্যায়ন। সবাই মনে করে, পাঁচটি ঘরে পাঁজন খেলে শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে এবং সারা বছর অসুখ-বিসুখ হয় না।
আগামীকাল ১৪ এপ্রিল অর্থাৎ পহেলা বৈশাখ নানাবিধ পূজা-পার্বণ আর প্রার্থনার মধ্যদিয়ে পালিত হবে গোজ্যাপোজ্যে দিন ও বর্ষবরণ উৎসব।
আগামী ১৬ এপ্রিল রাঙ্গামাটির রাজস্থলী উপজেলার বাঙ্গালহালিয়াতে মারমাদের বৃহত্তম পানি খেলা উৎসবের মধ্যদিয়েই সমাপ্তি হবে পাহাড়ের বৈসাবির উৎসব।
এই বৈসাবি উৎসবকে ঘিরে সকল ক্ষুদ্র জাতিকে এক কাতারে নিয়ে নিয়ে আসবে এমনটাই প্রত্যাশা সকলের।
আরও পড়ুন: বড়দিন উদযাপনে পাহাড়ে খ্রিস্টান পল্লীতে উৎসবের আমেজ
কাল থেকে শুরু হচ্ছে ৩ দিনব্যাপী লালন সাঁই’র তিরোধান উৎসব
‘বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণের মধ্য দিয়েই বাংলাদেশের ডি-ফ্যাক্টো স্বাধীনতা হয়ে গিয়েছিলো’
প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী বলেছেন, বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণের মধ্য দিয়েই বাংলাদেশের ডি-ফ্যাক্টো স্বাধীনতা হয়ে গিয়েছিলো। কেননা, তখন থেকেই সারাদেশ বঙ্গবন্ধুর নির্দেশ অনুযায়ী পরিচালিত হচ্ছিলো।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের অসহযোগ আন্দোলন গোটা বিশ্বের জন্য একটা দৃষ্টান্ত যে শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকে উপেক্ষা বা দমনের চেষ্টা করলে সেটা ভয়াবহ যুদ্ধের দিকে ধাবিত হয়।
সোমবার ঢাকার বেইলি রোডে অবস্থিত ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে ‘স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র: ১০ই এপ্রিল ১৯৭১ এবং একটি সার্বভৌম রাষ্ট্রের জন্ম’- শীর্ষক কনফারেন্সে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, ইতিহাসের ঘটনাবলী পরস্পর সম্পর্কযুক্ত বিধায় সকল বিষয় ও সময়ের সমন্বয়ে ধারাবাহিক বিশ্লেষণ একান্ত প্রয়োজন।
ইতিহাস বিকৃতি রোধের প্রতি সবিশেষ গুরুত্ব দেন ড. তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী।
বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অব ল’ অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্স (বিলিয়া) আয়োজিত এই কনফারেন্সে ‘বাংলাদেশ রাষ্ট্রের জন্মকথা’- শীর্ষক মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রের রচয়িতা, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী ও বিলিয়ার চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার এম. আমীর-উল ইসলাম।
মূল প্রবন্ধের ওপর সুদীর্ঘ আলোচনার এক পর্যায়ে ব্যারিস্টার আমীর-উল ইসলাম দাবি জানান, স্বাধীনতার এই ঘোষণাপত্রকে বাংলাদেশের ‘জন্ম সনদ’ হিসেবে স্বীকৃতি দিতে হবে এবং ১০ই এপ্রিলকে ‘রিপাবলিক ডে’ ঘোষণা করে রাষ্ট্রীয়ভাবে পালন করতে হবে।
প্রধান অতিথির বক্তৃতায় ড. তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী আয়োজক প্রতিষ্ঠান বিলিয়াকে বিশেষভাবে ধন্যবাদ দেন।
তিনি বলেন, ব্যারিস্টার আমীর-উল ইসলাম কর্তৃক রচিত ও উপস্থাপিত প্রবন্ধের মধ্য দিয়ে অনেক অজানা তথ্য বেরিয়ে এসেছে, যা সকলের জ্ঞানকে সমৃদ্ধ করবে।
বিমসটেক এর প্রাক্তন উপদেষ্টা, বিশিষ্ট কবি ও কথাসাহিত্যিক মুজতবা আহমেদ মুরশেদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত এই কনফারেন্সের স্বাগত বক্তা, বিলিয়ার অনারারি সেক্রেটারি ও বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী ব্যারিস্টার তানিয়া আমীর বলেন, গত শতাব্দীতে বাংলাদেশই একমাত্র রাষ্ট্র, যেটা সফলভাবে ইউনিলেটারাল ডেকলারেশন অব ইন্ডিপরন্ডেন্স (ইউডিআই) এর চর্চা করতে পেরেছে।
তিনি বলেন, আইনগতভাবে জনগণই হচ্ছে বাংলাদেশের মালিক পক্ষ। অতএব, আর দেরি না করে দৈনন্দিন জীবনে নিজেদের মালিকানা প্রয়োগ করার ওপর বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করেন স্বাগত বক্তা।