%E0%A6%B8%E0%A7%8D%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A6%B8%E0%A7%8D%E0%A6%A5%E0%A7%8D%E0%A6%AF
শীতের মৌসুমে বাইক রাইড করার প্রয়োজনীয় টিপস
শারীরিক ব্যায়ামের কোন সময় নেই। শীত, গ্রীষ্ম, বর্ষা সব ক্ষেত্রেই ব্যায়ামের প্রয়োজন। তবে শীতের সময় ব্যায়ামটা বেশ উপভোগ্য। যদিও অনেকের ক্ষেত্রে এ সময়টাতে ঘর থেকে বের হওয়াটা বেশ শীতল হিমালয় জয় করার মতই হয়ে যায়। আর সেটা যদি হয় বাইক রাইডিং, সেখানে আরও অনেক কিছু রক্ষণাবেক্ষণের ব্যাপার চলে আসে। সেই প্রস্তুতির কথা জানিয়ে দিতেই এবারের ফিচার শীতে বাইক রাইডিং নিয়ে।
শীতের মৌসুমে বাইক রাইড-এর সমস্যাগুলো
ত্বক ঠান্ডা বাতাসের সংস্পর্শে আসা
প্রচণ্ড ঠান্ডা আবহাওয়া বাইক চালানোর সময় চামড়ায় রীতিমত সূঁচের মত ফোটে। বাইক দ্রুত গতিতে সামনে চলার সময় মুখসহ শরীরের অনাবৃত অংশগুলো বিপরীত দিক থেকে ধেয়ে আসা ঠান্ডা বাতাসের সংস্পর্শে আসে। বাতাসটা কতটুকু ঠান্ডা তার থেকে ত্বকের ক্ষতির দিকটা নির্ভর করে কতক্ষণ ধরে বাইক চলছে তার উপর। খুব স্বল্প সময়ের তীব্র শীতও শরীরের বিভিন্ন অংশের জন্য হুমকি হতে পারে।
অনেক সময় দীর্ঘক্ষণ বাইক চালানোয় শরীর গরম হয়ে বিন্দু বিন্দু ঘাম জমে যায়; এমনকি শীতেও। এই ঘামও ক্ষতির কারণ হতে পারে। তাছাড়া স্থান ভেদে বাতাসের গতিবেগের উপর নির্ভর করছে কতক্ষণ চোখ খোলা রেখে বাইক চালিয়ে যাওয়া যাবে।
আরও পড়ুন: বিভিন্ন পুষ্টিগুণে ভরা শীতের সবজি
পিচ্ছিল রাস্তাঘাট
শীতে শিশির জমে রাস্তা পিচ্ছিল হয়ে যাওয়া স্বাভাবিক ব্যাপার। মাঝে মাঝে কখনো হাল্কা বৃষ্টিপাত শীতের কোন রৌদ্রজ্জ্বল দিনে যে কোন বাইক রাইডারকে চমকে দেয়। তাই বাইকের চাকা যত ভালোই হোক না কেন; ভেজা চাকা নিয়ে কোন রকমে হয়ত সোজা অনেকটা পথ ছুটে যাওয়া যেতে পারে। কিন্তু বাঁক নেয়া বা ইউ টার্ন নিয়ে ঘুরে আসা? অবশ্যই কোন ভালো ধারণা হবে না। বাংলাদেশে তুষারপাত অমাবস্যার চাঁদের মত হলেও বাইক নিয়ে দীর্ঘ ভ্রমণে যাবার ক্ষেত্রে বিশেষত কোন মফস্বল শহরে বা গ্রামের বিস্তীর্ণ ঘাসে ভেজা মাঠ পেরবার সময় অত্যাধুনিক টায়ারের কাটাগুলোও অদ্ভূত আচরণ করতে পারে।
দৃষ্টিগোচরতা
অক্টোবরের মাঝামাঝি সময় থেকেই শুরু হতে থাকে ছোট দিন ও দীর্ঘ রাতের মৌসুম। তার মানে কম আলোতে বা কখনো সম্পূর্ণ অন্ধকারে বাইক চালানোটা হরহামেশাই ঘটবে। এমনকি বাইকের হেডলাইট এবং টেললাইটের উপরও এ সময় পুরোপুরি নির্ভর করা দুষ্কর। যেহেতু ইঞ্জিন চালিত বিভিন্ন ছোট-বড় গাড়ির সাথে রাস্তা শেয়ার করতে হচ্ছে, তাই কুয়াশার কারণে ক্ষণিকের অন্ধত্বও অনেক বড় বিপদ ডেকে আনতে পারে। এছাড়া খোলা ম্যানহল, রোড ব্রেকার, রাস্তার পাশের আইল্যান্ড, নুয়ে পড়া গাছের ডালপালা, ও ল্যাম্প পোস্টের পাশাপাশি হঠাৎ রাস্তা পারাপার হওয়া মানুষের ঝামেলা তো আছেই।
পড়ুন: নেপাল ভ্রমণ: শত বছরের তীর্থস্থান ঘুরতে হিমালয়ের দেশে
লবঙ্গের স্বাস্থ্যগত উপকারিতা ও ঝুঁকি
লবঙ্গ গাছের ফুলের শুকনো কুঁড়িই হলো লবঙ্গ। লবঙ্গ গাছের বৈজ্ঞানিক নাম সিজিজিয়াম অ্যারোমাটিকাম। এটি একটি চিরহরিৎ উদ্ভিদ যা গ্রীষ্মমণ্ডলীয় এবং উপক্রান্তীয় পরিবেশে বৃদ্ধি পায়। লবঙ্গ ইন্দোনেশিয়ার মালুকু দ্বীপপুঞ্জের (বা মোলুকাস) স্থানীয় এবং সাধারণত মশলা হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
এশিয়ান, আফ্রিকান, ভূমধ্যসাগরীয় এবং মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলির লবঙ্গ রান্নায় স্বাদ বাড়াতে ব্যবহার করা হয়। এর ভেষজ ও নানাবিধ পুষ্টিগুণের কারণে প্রক্রিয়াজাতকৃত খাবার, পানীয়, সাবান, টুথপেস্ট, ওষুধ, সুগন্ধী ইত্যাদিতে গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হিসেবেও ব্যবহার করা হয়। চলুন, লবঙ্গের উপকারিতার পাশাপাশি জেনে নিই কোন কোন ক্ষেত্রে তা ঝুঁকিপূর্ণ।
লবঙ্গের উপকারিতা
পেটের সমস্যা সমাধান
হজমশক্তি বাড়াতে এবং পাকস্থলি ও অন্ত্র সম্পর্কিত জটিলতা নিয়ন্ত্রণে লবঙ্গ অনেক কাজ দেয়। তদুপরি, ভাজা লবঙ্গ খাওয়া এমনকি তাদের চেতনানাশক বৈশিষ্ট্যের কারণে বমি হওয়া বন্ধ করতে পারে। এটি আলসারের বিরুদ্ধে একটি কার্যকর শোধনকারী হিসেবে কাজ করে।
আরও পড়ুন: লাল চাল: কেন খাবেন এবং কারা এড়িয়ে চলবেন?
যকৃতের সুরক্ষা
লবঙ্গে উচ্চ পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে, যা যকৃতকে রক্ষা করতে পারে। দীর্ঘমেয়াদে বিপাক যকৃতে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট কমিয়ে ফ্রি র্যাডিক্যাল উৎপাদন করে এবং লিপিড প্রোফাইল বাড়ায়। এক্ষেত্রে, লবঙ্গের নির্যাস তাদের ক্ষতিকর প্রভাবগুলি প্রতিরোধে সহায়ক ভূমিকা পালন করতে পারে।
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ
লবঙ্গ থেকে নির্যাস নির্দিষ্ট উপায়ে ইনসুলিন তৈরি করে, যা রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করতে পারে।
হাড় সংরক্ষণ
লবঙ্গের হাইড্রো-অ্যালকোহলিক নির্যাসগুলো হাড়ের ঘনত্ব এবং হাড়ের খনিজ উপাদান সংরক্ষণে সহায়ক হতে পারে। এমনকি অস্টিওপোরোসিসের ক্ষেত্রে হাড়ের প্রসারণ শক্তি বৃদ্ধি করতে পারে।
আরও পড়ুন: হার্ট অ্যাটাক: করণীয় এবং প্রতিরোধে যে সকল পদক্ষেপ নিতে হবে
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি
আয়ুর্বেদ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার বিকাশ ও সুরক্ষায় কার্যকরী একটি উদ্ভিদ হল লবঙ্গ। লবঙ্গের শুকনো ফুলের কুঁড়িতে এমন যৌগ রয়েছে যা শ্বেত রক্তকণিকার সংখ্যা বাড়িয়ে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করতে পারে।
দাঁতের স্বাস্থ্য সুরক্ষা
মাড়ির রোগ যেমন মাড়ির প্রদাহ এবং পেরিওডোনটাইটিস কমানোর জন্য লবঙ্গ খাওয়া যেতে পারে। লবঙ্গের নির্যাস মুখের রোগজীবাণুগুলোর বৃদ্ধিকে উল্লেখযোগ্যভাবে নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতা রাখে, যা মুখের বিভিন্ন রোগের জন্য দায়ী। দাঁতের ব্যথার জন্য, দাঁত তোলার সময় ব্যথা নিয়ন্ত্রণের জন্য লবঙ্গ সরাসরি মাড়িতে প্রয়োগ করা হয়। এছাড়া লবঙ্গ মুখ ও গলার প্রদাহের জন্য প্রতিরোধক হিসেবে ত্বকে ভালো কাজ দেয়।
মাথাব্যথা নিরাময়
লবঙ্গ ব্যবহারে মাথাব্যথা কমে যেতে পারে। কয়েকটি লবঙ্গের পেস্টের সাথে সামান্য লবণ মিশিয়ে তা এক গ্লাস দুধের সাথে যোগ করে তৈরি মিশ্রণ দ্রুত ও কার্যকরভাবে মাথাব্যথা কমায়।
আরও পড়ুন: কোলেস্টেরল কমানোর কার্যকরী ঘরোয়া উপায়
কোভিড-১৯: শিশু-কিশোর এবং বয়োজ্যেষ্ঠদের মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষায় আপনার করণীয়
কোভিড-১৯ মহামারির দরুণ দৈনন্দিন জীবনের পরিবর্তন আপনার পরিবারের শিশু, কিশোর এবং বয়োজ্যেষ্ঠদের মানসিক স্বাস্থ্যের উপর বিরূপ প্রভাব ফেলছে। যোগাযোগ মাধ্যমগুলোর প্রতিদিনকার করোনা আগ্রাসন এবং স্বাভাবিক জীবনযাত্রার স্থবিরতা অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দিচ্ছে। এ অবস্থায় আপনার নিজের মধ্যে ইতিবাচক মনোভাব পোষণ করার পাশাপাশি আপনার প্রিয় মানুষগুলোর মাঝে তা ছড়িয়ে দিতে পারেন। চলুন, কোভিড-১৯ এর চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় পরিবারের শিশু, কিশোর এবং বয়োজ্যেষ্ঠদের মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষায় করণীয় সম্পর্কে জেনে নেই।
করোনাকালে শিশুদের মানসিক বিকাশ
শিশুদের আবেগ প্রকাশের ধরন যে কোন বয়সের মানুষের থেকে আলাদা। কেউ অস্বাভাবিকভাবে নীরব হয়ে উঠে আবার কেউ অতিরিক্ত রাগ এবং চিৎকার করে। তাই পরিবারের বড়দের এক্ষেত্রে ধৈর্য্যের পরিচয় দিতে হবে।
কখনো কখনো খেলাধুলা ও চিত্রাঙ্কনের মত বিভিন্ন সৃজনশীল ক্রিয়াকলাপের মাধ্যমে তাদের মনের অবস্থা বোঝার চেষ্টা করুন।
শিশুদেরকে নিজেদের বিরক্তিকর অনুভূতি যেমন রাগ, ভয় এবং দুঃখ প্রকাশ করার জন্য ইতিবাচক উপায় খুঁজে পেতে সাহায্য করুন।
আরও পড়ুন: করোনা মহামারি থেকে শিশুকে নিরাপদ রাখবেন কীভাবে?
তাদেরকে যতটা সম্ভব একটি নির্দিষ্ট রুটিনের ভেতর রাখুন। প্রতিটি সময়ে তাদেরকে একটি করে কাজে নিযুক্ত রাখুন।
শিশুদেরকে সহিংসমূলক ঘটনা থেকে দূরে রাখুন। এরকম অভিজ্ঞতা তাদের স্বাভাবিক আচরণের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
তাদের বুঝিয়ে বলুন যে করোনা সংক্রমণের জন্য কাউকে দোষারোপ করা উচিত নয়। কোভিড -১৯ সম্পর্কে খবর দেখা, পড়াশোনা বা আলোচনা করার সময় সংক্রমণ ও মৃত্যুর কথা উপেক্ষা করে করোনা থেকে সুস্থ হয়ে উঠার ঘটনাগুলোর প্রতি গুরুত্বারোপ করুন। অন্যান্য সৃজনশীল ও মজাদার বিষয়গুলোর প্রতি তাদের আকৃষ্ট করুন।
যদি পরিবারে কেউ অসুস্থ হয় বা কাউকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়, অথবা যদি কোন মৃত্যু হয়, তাহলে শিশুরা অতিরিক্ত উদ্বেগ অনুভব করতে পারে। এমতাবস্থায় যতটুকু সম্ভব তাদেরকে সবকিছুর আড়ালে কোন অভিভাবকের সাথে রাখার চেষ্টা করুন। ভয় কাটানোর জন্য তাদের সাথে কথা বলে তাদেরকে সহজ রাখার চেষ্টা করুন।
আরও পড়ুন: সাইক্লিং, দৌড় কিংবা সাঁতার: ওজন কমাতে কোনটি বেশি কার্যকরী?
শিশু দুর্ব্যবহার করলে বা কোন ঝুঁকিপূর্ণ আচরণ করলে শান্তভাবে কথা বলুন। দুরন্ত শিশুদের মধ্যে অনেকেই স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি ক্রোধ প্রকাশ করে। এক্ষেত্রে যখন তারা শান্ত হয়ে যাবে তখন ধীরে ধীরে জিজ্ঞাসা করুন তারা কেমন অনুভব করছে। সামঞ্জস্যপূর্ণ এবং শান্ত্বনামূলক উপায়ে বুঝিয়ে বলুন যে তারা যে আচরণ করেছিলো তা ঠিক নয়। নেতিবাচক আচরণের পিছনে কারণ বোঝার চেষ্টা করুন।
পারস্পরিক বিশ্বাস ও শ্রদ্ধার ভিত্তিতে তাদের সাথে সম্পর্ক গড়ে তুলুন। তাদের খারাপ লাগা সময়গুলোতে তাদেরকেই জিজ্ঞেস করুন পরিবারের বাইরে তাদের পছন্দের কারো সাথে দেখা করবে কিনা।
শিশুদেরকে ব্যক্তিগত নিরাপত্তার নিয়ম সম্পর্কে শেখান। তাদের শরীরের ব্যাপারে যে কোনো অস্বস্তিকর স্পর্শ বা অনিরাপদ অঙ্গভঙ্গির ব্যাপারে তাদের সতর্ক করুন। তাদের অভিযোগগুলো মনযোগ দিয়ে শুনুন।
আপনার শিশু সম্পর্কিত যে কোন বিশেষ প্রয়োজনে কল করুন চাইল্ডলাইন ১০৯৮-তে।
আরও পড়ুন: বর্ষা মৌসুমে যেসব পুষ্টিকর সবজি খেতে পারেন
করোনাকালে কিশোর-কিশোরীদের মানসিক সমর্থন
করোনাভাইরাস সংক্রমণ কিশোর-কিশোরীদের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে প্রভাবিত করতে পারে। বয়সন্ধিঃকাল জীবনের খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি সময়। এ সময়ে করোনা প্রাদুর্ভাব মানসিক বিপর্যয় সৃষ্টি করতে পারে যার মানসিক আঘাত সারা জীবনভর থেকে যেতে পারে।
যে কোন হৃদয়বিদারক ঘটনা, মানসিক চাপ কিশোর-কিশোরীদের অতিরিক্ত উদ্বেগের কারণ হতে পারে, যার প্রতিফলন ঘটতে পারে তাদের খাওয়া-দাওয়ায় বা ঘুমের অভ্যাসে। এমনকি পারস্পরিক কথাবার্তার সময় মনোযোগ এবং একাগ্রতার অভাব হতে পারে। এ সময় তাদের অস্থিরতা কাটাতে তাদেরকে সঙ্গ দিন। তাদেরকে মন খুলে কথা বলার জায়গা তৈরি করে দিন।
আরও পড়ুন: লাল চাল: কেন খাবেন এবং কারা এড়িয়ে চলবেন?
এই মহামারির সময় মানুষের অসুস্থ হওয়া রোধকল্পে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপগুলোতে কিশোর-কিশোরীদের ভালো রোল মডেল হতে উৎসাহিত করুন। যদি তারা প্রায়ই হাত ধোয়, অন্যদের থেকে কমপক্ষে ৩ ফুট দূরে থাকে এবং নিজেদের এবং অন্যদের সুরক্ষার জন্য সর্বত্র মাস্ক পরে, তাহলে ছোট বাচ্চারা এমনকি তাদের সমবয়সীরাও তাদেরকে দেখে শিখবে।
কিশোর-কিশোরীদের স্বাস্থ্যকর খাবার খেতে, শারীরিকভাবে সক্রিয় থাকতে এবং প্রতিনিয়ত নতুন কিছু শিখতে অনুপ্রেরণা দিন। তাদেরকে এই নীতি অনুসরণ করতে সাহায্য করুন যে, এ সময়টি খারাপ নয় বরং ভবিষ্যতের জন্য নিজেকে তৈরির মোক্ষম সময়। এটি তাদের সুস্থ ও মনোযোগী থাকতে সাহায্য করবে। শুধু তাই নয়, অনলাইন মাধ্যমগুলোতে নতুন কিছু শেখার মাধ্যমে নিজেদের উপার্জন শুরু করতে পারবে। এই করোনা মহামারীর মধ্যে অনেক কিশোর-কিশোরী নিজেদের দক্ষতা কাজে লাগিয়ে ইউটিউব চ্যানেল পরিচালনা করছে।
স্মার্টফোন, ভিডিও চ্যাট, সোশ্যাল মিডিয়া, এমনকি ভিডিও গেমের মাধ্যমে কিশোর-কিশোরীদের বন্ধু-বান্ধব এবং আত্মীয়-স্বজনের সাথে সময় কাটানোর ব্যবস্থা করে দিন। স্কুল-কলেজগুলো অনলাইন ক্লাসের মাধ্যমে তাদের সামাজিক এবং মানসিক চাহিদাগুলোকে পরিপূর্ণ করার জন্য শিক্ষনীয় নির্দেশনা দিতে পারে।
আরও পড়ুন: মশার উপদ্রব থেকে সুরক্ষিত থাকার কিছু সহজ ঘরোয়া উপায়
করোনাকালে বয়োজ্যেষ্ঠদের মানসিক স্বাস্থ্যের সুরক্ষা
বিষণ্নতা এবং গুরুতর উদ্বেগ বার্ধক্যের ক্ষেত্রে কোন স্বাভাবিক ব্যাপার নয়। বয়স্করা করোনাভাইরাসের প্রতি বেশি সংবেদনশীল। এই ব্যাপারটি তাদের মধ্যে অনিশ্চয়তা, ভয় ও হতাশা উদ্রেকের মাধ্যমে তাদেরকে চূড়ান্তভাবে বেঁচে থাকার আশা হারিয়ে ফেলার দিকে ধাবিত করতে পারে। তাই এর জন্য তাৎক্ষণিক ক্লিনিকাল চিকিৎসা এবং সামাজিক সহায়তা আবশ্যক।
বর্তমান সংকট সামাজিক দূরত্বের মাধ্যমে বিচ্ছিন্নতা তৈরি করে প্রত্যেকের রুটিনকে বদলে দিচ্ছে। এতে স্বাভাবিক সামাজিক সহায়তা এবং বৃদ্ধ মানুষগুলোর অন্যদের সাথে যোগাযোগ হ্রাস পাচ্ছে। পরিবার এবং প্রতিবেশী এখন যে কোনও নিয়মিত যোগাযোগের গুরুত্বপূর্ণ উৎস হিসাবে কাজ করতে পারে। এমনকি সামাজিক পরিষেবাগুলোর (যেমন খাবার সরবরাহ কর্মী) সাথে সরাসরি যোগাযোগের ব্যবস্থা করে দিতে পারেন। আসলে সামাজিক দূরত্ব মানে তো পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন করে দেয়া নয়।
বার্ধক্যের সময়ে মানুষ বন্ধু বা পরিবারের কারো মৃত্যু, ব্যক্তি স্বাধীনতা ও আর্থিক বিপর্যয় এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রে কর্মক্ষমতা হারিয়ে ফেলা প্রভৃতি অভিজ্ঞতাগুলোর সম্মুখীন হয়। যদিও অনেকেরই দুঃখ এবং ক্ষতিগুলোকে মানিয়ে নেয়ার ক্ষমতা থাকে। তবুও কারো কারো জন্য শোক কাটানোটা জটিল হয়ে উঠতে পারে। এই অভিজ্ঞতাগুলোর সাথে কোভিড-১৯ মহামারির চাপ মানসিক স্বাস্থ্যের অবনতি ঘটাতে পারে। তাই এ সময় আপনি ছায়া হয়ে তাদের পাশে দাঁড়ান। তাদেরকে শুধু আশা দেয়া নয়, তাদের মধ্যে এই নিশ্চয়তার অনুভূতিটা জাগ্রত রাখুন যে, তাদের বিভিন্ন ধরনের শারীরিক বা মানসিক সমস্যায় আপনি তাদের সাথে আছেন।
আরও পড়ুন: হার্ট অ্যাটাক: করণীয় এবং প্রতিরোধে যে সকল পদক্ষেপ নিতে হবে
তাদের প্রতিদিন রুটিনে যেন ব্যাঘাত না ঘটে সেদিকে খেয়াল রাখুন। বিশেষ করে খাওয়া, ওষুধ নেয়া, ব্যায়াম করা ইত্যাদির প্রতি জোর দিন। এছাড়া প্রতিবেশীদের সাথে আড্ডাতেও তাদেরকে উদ্বুদ্ধ করুন। অবশ্যই করোনাভাইরাস নিয়ে ইতিবাচক আলোচনাতে উৎসাহ দিন।
এছাড়া আপনার বন্ধু, প্রতিবেশী এবং আত্মীয়দের মধ্যে যারা বৃদ্ধ তাদের নিয়মিত খোঁজ-খবর নিন।
যেহেতু অনেকে ম্যাসেজ বিনিময় এবং সোশ্যাল মিডিয়া সংযোগে সাবলীল নাও হতে পারে, তাই তাদের সাথে সরাসরি কল বা ভিডিও-চ্যাট করুন।
এই সময়টা তারা কীভাবে পার করছে, তাদের রুটিনে কেমন পরিবর্তন করতে হতে পারে এবং হতাশা মোকাবিলায় তারা কী ধরনের কাজ করছে তা জিজ্ঞাসা করুন।
আরও পড়ুন: কোলেস্টেরল কমানোর কার্যকরী ঘরোয়া উপায়
কোভিড চলাকালীন তাদেরকে কিছু মজার ক্রিয়াকলাপ চালিয়ে যেতে উৎসাহিত করতে পারেন। যেমন: দৈনন্দিন হাঁটা, গান শোনা বা বাজানো, প্রিয় গল্পের বই পড়া, হাস্যরস উপভোগ করা, ধাঁধা, খেলা, ছোট ছোট বিভিন্ন সামাজিক কার্যক্রম এবং ধ্যান বা প্রার্থনা।
তাদের অভিজ্ঞতা এবং মেধার ভিত্তিতে তাদের কাছ থেকে আপনার জীবনের জন্য বিভিন্ন দিক-নির্দেশনা নিন। তাদের কাজ থেকে পাওয়া যে কোন সহায়তার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করুন। সর্বোপরি, তাদের জীবন -যাপনের পদ্ধতিতে কোন জিনিসটি আপনার ভালো লাগে তা ব্যক্ত করুন।
পরিশেষে, কোভিড-১৯ এর চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় শিশু, কিশোর এবং বয়োজ্যেষ্ঠদের মানসিক স্বাস্থ্য রক্ষার্থে তাদেরকে স্বাবলম্বী করে তুলতে হবে। এর ফলে গুরুত্বপূর্ণ কাজের ব্যস্ততায় আপনি ঘরের বাইরে থাকলেও তারা নিজেদের ব্যাপারে খেয়াল রাখতে পারবে। এমনকি, এই করোনাকালীন অনিশ্চিত অবস্থায় যখন আপনি অসুস্থ হয়ে পড়বেন, তখন তারা আপনার যত্ন নিতে পারবে।
আরও পড়ুন: বর্ষায় পোকামাকড়ের উপদ্রব থেকে বাঁচতে করণীয় সম্পর্কে জেনে নিন
হার্ট অ্যাটাক: করণীয় এবং প্রতিরোধে যে সকল পদক্ষেপ নিতে হবে
যখন হার্টের পেশীর একটি অংশ পর্যাপ্ত রক্ত পায় না, ঠিক তখনি হার্ট অ্যাটাক হয়। রক্ত প্রবাহ স্বাভাবিক হতে যত বেশি সময় যায়, হার্টের পেশীর তত বেশি ক্ষতি হয়। সাধারণত করোনারি ধমনীর মারাত্মক খিঁচুনি বা আকস্মিক সংকোচনের ফলে হৃদপিণ্ডের পেশীতে রক্ত প্রবাহ বন্ধ হতে পারে। চলুন, ভয়াবহ এই হৃদরোগটির লক্ষণ ও প্রতিরোধের পাশাপাশি জেনে নিই- হঠাৎ হার্ট অ্যাটাক হলে তাৎক্ষণিকভাবে কি করবেন।
হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণসমূহ
দেহের বিভিন্ন অংশে ব্যথা বা অস্বস্তি
বেশিরভাগ হার্ট অ্যাটাক-এর সময় বুকের মাঝখানে বা বাম দিকে ব্যথা বা অস্বস্তি শুরু হয়, যা কয়েক মিনিটের বেশি স্থায়ী হয় অথবা কখনো হঠাৎ চলে যেয়ে আবার ফিরে আসে। কখনও কখনও এই অস্বস্তি ঘন্টাখানেক পর বা এমনকি এক দিন পরে ফিরে আসে। এমনটা হলে বুঝতে হবে যে, আপনার হার্টের পেশী পর্যাপ্ত অক্সিজেন পাচ্ছে না।
বুক ব্যথা হার্ট অ্যাটাকের একটি সাধারণ লক্ষণ। অনেকে এই ব্যথাকে ব্যথা বলে না বলে বুকে চাপ অনুভব করছে বলে। কিন্তু এটা বোঝা গুরুত্বপূর্ণ যে, বুক ব্যথা প্রতিটি হার্ট অ্যাটাকের সময় নাও হতে পারে।
অনেকেই হার্ট অ্যাটাকের সময় তলপেটের উপরের দিক, কাঁধ, পিঠ, ঘাড়/গলা, দাঁত বা চোয়াল ইত্যাদি স্থানে ব্যথা অনুভব করে। মহিলাদের ক্ষেত্রে বিশেষ করে তলপেটে এবং বুকের নিচের অংশে ব্যথা করে। পিঠের উপরের দিকে ব্যথা সাধারণত পুরুষদের তুলনায় মহিলাদের ক্ষেত্রেই বেশি দেখা যায়।
পড়ুন কোলেস্টেরল কমানোর কার্যকরী ঘরোয়া উপায়
সারাদিন ধরে প্রচণ্ড ঘাম
আপনি যদি ব্যায়াম না করেন, তাহলে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি ঘাম হওয়া আপনার হার্ট অ্যাটাকের প্রাথমিক কারণ হতে পারে। জমে থাকা ধমনীর মধ্য দিয়ে রক্ত পাম্প করতে যেয়ে আপনার হৃদযন্ত্র বেশি পরিশ্রম করে, কাজেই শরীরের তাপমাত্রার ভারসাম্য ঠিক রাখতে আপনার শরীর বেশি ঘাম ছেড়ে দিতে থাকে।
অনেক সময় রাতের বেলা অতিরিক্ত ঘামের জন্য চাদর ভিজে যায় বা ঘুম হয় না। এটিও হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণ হতে পারে, বিশেষ করে মহিলাদের মধ্যে।
পড়ুন করোনা মহামারি থেকে শিশুকে নিরাপদ রাখবেন কীভাবে?
প্রচণ্ড ক্লান্তি ও নিঃশ্বাসের দূর্বলতা
হার্ট অ্যাটাকের সময় বুকে অস্বস্তির সাথে অথবা আগে নিঃশ্বাসের দুর্বলতাও অনুভূত হতে পারে। মুলত রক্ত প্রবাহের একটি এলাকা বন্ধ থাকার কারণে আপনার হৃদযন্ত্র অতিরিক্ত চাপের ফলে পাম্প করার চেষ্টা করে। ফলে আপনার প্রচন্ড অবসন্ন অনুভূত হয়। যদি আপনি প্রায়শই বিনা কারণে ক্লান্ত হন, তাহলে ব্যাপারটিকে কোনভাবেই উপেক্ষা করা চলবে না।
ক্লান্তি এবং শ্বাসকষ্ট পুরুষদের তুলনায় মহিলাদের মধ্যে বেশি দেখা যায় এবং এমনকি হার্ট অ্যাটাকের কয়েক মাস আগে থেকেও শুরু হতে পারে।
আপনার শ্বাস -প্রশ্বাস এবং হৃদযন্ত্রের কার্যকরীভাবে রক্ত পাম্পিং; পরস্পর খুব ঘনিষ্ঠভাবে সম্পর্কিত। আপনার হৃদযন্ত্র রক্ত পাম্প করে যাতে এটি আপনার টিস্যুতে রক্ত সঞ্চালন করতে এবং ফুসফুস থেকে অক্সিজেন পেতে পারে। হার্ট অ্যাটাকের ক্ষেত্রে যখন আপনার হার্ট ভালভাবে রক্ত পাম্প করতে পারে না, তখনি শ্বাসকষ্ট শুরু হয়।
পড়ুন কঠোর ডায়েটের স্বাস্থ্য ঝুঁকিসমূহ জেনে নিন
দ্রুত হৃদস্পন্দন
দ্রুত হৃদস্পন্দনের সময় মনে হয় হৃদযন্ত্রটা বুকের ভেতর জোরে জোরে ধাক্কা মারছে বা বুক ধড়ফড় করছে। আপনার হৃদযন্ত্র এবং শরীর আপনার শরীরের সর্বত্রে রক্ত সঞ্চালনের জন্য একটি সামঞ্জস্যপূর্ণ ও নিরবচ্ছিন্ন বিটের উপর নির্ভর করে। যে কোন একটি ছন্দপতন আপনার হার্ট অ্যাটাকের কারণ হতে পারে।
মাথা ঘোরা ও বমি বমি ভাব বা বমি
হার্ট অ্যাটাকের আগে মাথা ঘোরা অনুভূত হতে পারে। অতিরিক্ত পরিশ্রম করার সময় আপনি মাথা ঘুরে পড়ে যেতে পারেন। হার্ট অ্যাটাকের অন্যান্য উপসর্গগুলোর মধ্যে বমি বমি ভাব বা বমিও অন্তর্ভুক্ত। বিশেষত মহিলাদের এই উপসর্গ দেখা দেয়ার সম্ভাবনা বেশি।
পড়ুন বর্ষা মৌসুমে যেসব পুষ্টিকর সবজি খেতে পারেন
হার্ট অ্যাটাকের সময় তাৎক্ষণিকভাবে করণীয়
তাৎক্ষণিকভাবে হার্ট অ্যাটাক বন্ধ কোন মতেই সম্ভব নয়। কিন্তু এসময় জরুরি চিকিৎসার সরণাপন্ন হওয়ার পাশাপাশি নিচের পদক্ষেপগুলো নেওয়া যেতে পারে।
১৬২৬৩-তে কল করা
এটি হার্ট অ্যাটাকের সময় সেবা পাওয়ার দ্রুততম ও নিরাপদ উপায়। ১৬২৬৩ তে কল করে ২ প্রেস করে সরাসরি অ্যাম্বুলেন্সের পরিষেবা নিতে পারেন।
দরজা-জানালা খুলে আরামদায়ক বিশ্রামের ব্যবস্থা
হার্ট অ্যাটাকে আক্রান্ত ব্যক্তি বাড়ির ভেতর থাকলে তার আশেপাশের লোকজন ঘরের দরজা-জানালা খুলে বাতাস প্রবেশের ব্যবস্থা করে দিতে হবে। এছাড়া এতে অ্যাম্বুলেন্স দল যতদ্রুত সম্ভব বাড়ির ভেতর প্রবেশ করে আক্রান্ত ব্যক্তিকে অ্যাম্বুলেন্সে নিয়ে যেতে পারবে।
অ্যাম্বুলেন্স আসা পর্যন্ত আক্রান্ত ব্যক্তিটিকে একটি আরামদায়ক অবস্থানে বিশ্রাম নেয়ার ব্যবস্থা করুন। বিশ্রাম হার্টের চাপ কমায় কারণ এটি শরীরের সর্বত্র রক্ত পাম্প করার চেষ্টা করে।
পড়ুন মশার উপদ্রব থেকে সুরক্ষিত থাকার কিছু সহজ ঘরোয়া উপায়
আঁটসাঁট পোশাক আলগা করা
আঁটসাঁট পোশাক, যেমন নেকটি বা বেল্টগুলি আলগা করে দিন। এতে আক্রান্ত ব্যক্তির শ্বাস নেওয়া সহজ হবে। এছাড়া অ্যাম্বুলেন্স দলের জন্যও ঢিলেঢালা জামাকাপড় পরিহিত ব্যক্তিকে দ্রুত অ্যাম্বুলেন্সে নেয়া সহজ হবে।
প্রাথমিক সিপিআর
আক্রান্ত ব্যক্তিতে ঘুমিয়ে পড়া থেকে বিরত রাখুন। তার সাথে অবিরত কথা বলতে থাকুন। মাথাটি দেহের সাথে ৩০-৪৫ ডিগ্রি কোণ করে উচু অবস্থায় রাখুন। এতে তার শ্বাস-প্রশ্বাস নেয়া সহজ হবে। আক্রান্ত ব্যক্তিকে চিৎ করে শুইয়ে দিন। তারপর আপনার এক হাতের আঙ্গুলগুলোর ফাঁকে হাতের উল্টো পিঠ দিয়ে অন্য হাতের আঙ্গুলগুলো ঢুকিয়ে (এই পদ্ধতি কার্ডিয়াক পালমোনারি রিসাসিটেশন (সিপিআর) হিসেবে বহুল পরিচিত) আপনার পুরো শরীরের ভর আলিঙ্গনবদ্ধ দুই হাতের উপর চাপিয়ে আক্রান্ত ব্যক্তির বুকের মাঝখানে পাম্প করতে থাকুন। ১৬-১৮ সেকেন্ড ধরে ৩০ বার এভাবে পাম্প করুন। রোগীর নাক দু’আঙ্গুলে চেপে চিবুক উচু করে দিন। তারপর আবার বুকে পাম্প শুরু করুন। কমপক্ষে পাঁচবার প্রক্রিয়াটি পুনরাবৃত্তি করুন।
পড়ুন সাইক্লিং, দৌড় কিংবা সাঁতার: ওজন কমাতে কোনটি বেশি কার্যকরী?
হার্ট অ্যাটাক প্রতিরোধের উপায়
সুষম খাদ্য গ্রহণ
সুষম খাদ্য খাওয়া আপনার হার্ট অ্যাটাক হওয়ার সম্ভাবনা কমাতে সাহায্য করে। সুষম খাবারের তালিকায় ফল, সবজি, শাকসবজি, বাদাম, চর্বিহীন প্রোটিন এবং মাছ অন্তর্ভুক্ত থাকে। পাশাপাশি প্রতিদিনের খাবারে প্রক্রিয়াজাত মাংস, পরিশোধিত কার্বোহাইড্রেট এবং মিষ্টি পানীয়ের পরিমাণও সীমিত করা উচিত।
শারীরিক ব্যায়াম
শারীরিকভাবে সক্রিয় থাকা হার্ট অ্যাটাক প্রতিরোধে সাহায্য করে। প্রাপ্তবয়স্কদের সম্ভব হলে প্রতি সপ্তাহে কমপক্ষে ১৫০ মিনিট মাঝারি বা ৭৫ মিনিট জোরালো ব্যায়াম করার চেষ্টা করা উচিত।
আর যারা ইতিমধ্যে সক্রিয়, তাদের কার্যকলাপের মাত্রা ধীরে ধীরে বৃদ্ধি করতে পারেন।
পড়ুন জেনে নিন ত্বক ফর্সাকারী ক্রিমের ক্ষতিকর দিকগুলো!
পরিমিত ওজন বজায় রাখা
পরিমিত ওজন বজায় রাখা হার্ট অ্যাটাক প্রতিরোধে একটি বড় ভূমিকা পালন করে। আপনার উচ্চতা এবং বয়স অনুসারে আপনার ওজন কতটা হওয়া উচিত তা পরীক্ষা করে নিতে পারেন। এটি আপনার ক্যালোরি গ্রহণ এবং প্রয়োজনে ব্যায়ামের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করবে।
ধূমপান পরিত্যাগ
যে কোন মূল্যেই ধূমপান বন্ধ করা উচিত। সিগারেট বা বাষ্পের মতো তামাকজাত দ্রব্যের ধোঁয়া হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকিতে ফেলে দিতে পারে।
অন্যান্য শারীরিক সমস্যার চিকিৎসা
হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বাড়াতে পারে এমন স্বাস্থ্যের অবস্থার চিকিৎসা করা হার্ট অ্যাটাক প্রতিরোধের আরেকটি উপায়। এই অবস্থার মধ্যে উচ্চ রক্তচাপ, উচ্চ কোলেস্টেরল, এবং ডায়াবেটিস বা উচ্চ রক্ত শর্করা অন্তর্ভুক্ত।
পড়ুন যদি স্লিম থাকতে চান রোজ ৫ রকমের বাদাম খান
পর্যাপ্ত ঘুম
সুস্বাস্থ্যের জন্য সঠিক পরিমাণে ঘুমের কোন বিকল্প নেই। এমনকি এর ফলে উচ্চ রক্তচাপ ও টাইপ-২ ডায়াবেটিস হওয়ার ঝুঁকি কমে যায়, যা হার্ট অ্যাটাকের কারণগুলোর মধ্যে একটি। ১৮-৬০ বছর বয়সী বেশিরভাগ প্রাপ্তবয়স্কদের প্রতি রাতে ৭ বা তার বেশি ঘন্টা ঘুম প্রয়োজন।
পর্যাপ্ত পানি পান করা
প্রচুর পানি পান ডিহাইড্রেশন এড়াতে সাহায্য করে। রক্তরসে পানির পরিমাণ ৯০-৯২ শতাংশ তাই পানিশূন্যতাতে হৃদযন্ত্র ও সারা দেহে রক্ত সঞ্চালনে ব্যাঘাত ঘটে যা হার্ট অ্যাটাকের দিকে নিয়ে যেতে পারে।
হার্ট অ্যাটাক নারী -পুরুষ উভয়েরই যেকোন বয়সে হতে পারে। কিন্তু বয়স বাড়ার সাথে সাথে এর ঝুঁকি বাড়তে থাকে। কিন্তু জীবন ধারণ নিয়ে একটু সতর্ক হলেই আপনি এই ঝুঁকি এড়াতে পারবেন। স্বাস্থ্য প্রত্যেকের কাছেই মহামূল্যবান সম্পদ। তাই শত কষ্ট হলেও এই সম্পদটি রক্ষার জন্য রুটিন মাফিক চলা উচিত।
পড়ুন জেনে নিন ডেঙ্গু জ্বর থেকে সুরক্ষার উপায় ও করণীয়
কোলেস্টেরল কমানোর কার্যকরী ঘরোয়া উপায়
কোলেস্টেরল একটি মোমের মতো পদার্থ যা যকৃতে উৎপন্ন হয়। এটি কোষের দেয়াল নমনীয় রাখতে সাহায্য করে এবং বেশ কয়েকটি হরমোন তৈরির জন্য প্রয়োজন। মানবদেহ তার প্রয়োজনীয় সমস্ত কোলেস্টেরল নিজেই তৈরি করে, তাই খাবারের মাধ্যমে কোলেস্টেরল যোগানের দরকার হয় না। বরং স্যাচুরেটেড ফ্যাট এবং ট্রান্স ফ্যাট সমৃদ্ধ প্রচুর খাবার খাওয়া উচ্চ কলেস্টেরল এবং হৃদরোগের কারণ হতে পারে। চলুন জেনে নিই- কীভাবে আপনি ঘরে থেকেই শরীরে কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন।
কোলেস্টেরল কমানোর কার্যকরী ঘরোয়া উপায়
সাদা আটার পরিবর্তে লালা আটার রুটি বেছে নিন
লালা আটার রুটি বিভিন্ন ধরণের রোগবালাই যেমন টাইপ-২ ডায়াবেটিস, হৃদরোগ এবং ক্যান্সারের ঝুঁকি হ্রাস করে। এ রুটি থেকে ফাইবার, ভিটামিন বি, খনিজ যেমন দস্তা, আয়রন, ম্যাগনেসিয়াম এবং ম্যাঙ্গানিজ পাওয়া যায়।
আপনার ডায়েটে গ্রীক দই যোগ করুন
গ্রীক দই নিয়মিত দইয়ের চেয়ে ঘন এবং অধিক সরের আস্তরণ সম্পন্ন। এতে নিয়মিত দইয়ের চেয়ে চর্বি এবং প্রোটিন বেশি থাকে। প্রকৃতপক্ষে, এটি একই পরিমাণে নিয়মিত দই থেকে দ্বিগুণ পর্যন্ত প্রোটিন ধারণ করে। প্রতি ১০০ গ্রাম গ্রীক দইয়ে ১০ গ্রাম পর্যন্ত প্রোটিন থাকে।
এটি খাওয়ার পর দীর্ঘক্ষণ আপনার পাকস্থলী পরিপূর্ণ মনে হবে। এতে সেই সময়টুকু ধরে আপনার ক্ষুধা নিবারণ হবে। ডায়েট করার জন্য গ্রীক দই কার্যকরী একটি খাবার।
পাশাপাশি এতে নিয়মিত দইয়ের তুলনায় কম কার্বোহাইড্রেট এবং কম ল্যাকটোজ থাকে। এটি এমন লোকদের জন্য উপযুক্ত যারা কম কার্ব ডায়েট অনুসরণ করে বা যাদের ল্যাকটোজ নিতে সমস্যা হয়।
আরও পড়ুন: কঠোর ডায়েটের স্বাস্থ্য ঝুঁকিসমূহ জেনে নিন
সকালের নাস্তায় ডিম খান
ডিম যথেষ্ট স্বাস্থ্যকর, বিশেষ করে সকালের নাস্তায়। ডিমের মধ্যে থাকে উচ্চমানের প্রোটিন ও প্রয়োজনীয় পুষ্টি সমৃদ্ধ কোলিন যা অন্য খাবারে পর্যাপ্ত পরিমাণে পাওয়া যায় না। বিভিন্ন ধরনের ক্যালোরি সম্পন্ন নাস্তার সাথে তুলনা করলেও ডিমের অবস্থান সব দিক থেকে উপরে থাকে।
সকালে ডিম খাওয়া পাকস্থলি ভরার অনুভূতি বাড়ায়। তাই এটি ওজন কমানোর জন্য বেশ সহায়ক।
প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবারের পরিমাণ বাড়ান
প্রোটিনকে প্রায়ই পুষ্টির রাজা বলা হয়ে থাকে। যে হরমোনগুলো মানুষের ক্ষুধা এবং তৃপ্তি অনুভূতি নিয়ন্ত্রণ করে, এই খাদ্য উপাদানটি সেগুলোকে প্রভাবিত করার ক্ষমতা রাখে। কাজেই এটি ম্যাক্রোনিউট্রিয়েন্টে ভরা থাকে।
প্রোটিন পেশীর ভর ধরে রাখতে সাহায্য করে এবং প্রতিদিন পোড়ানো ক্যালোরির সংখ্যাও সামান্য বৃদ্ধি করে। পেশী ভর হ্রাস রোধ করার জন্যও এটি গুরুত্বপূর্ণ, যা সাধারণত ওজন হ্রাস এবং বয়স বৃদ্ধির সাথে সাথে হতে পারে।
প্রোটিনের ভালো উৎসগুলোর মধ্যে দুগ্ধজাত পণ্য, বাদাম, বাদামের মাখন, ডিম, মটরশুটি, চর্বিহীন মাংস অন্যতম।
আরও পড়ুন: বর্ষা মৌসুমে যেসব পুষ্টিকর সবজি খেতে পারেন
পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করুন
খাবার পানি ওজন হ্রাস করতে পারে এবং প্রতিদিন পোড়ানো ক্যালোরিগুলোর সংখ্যা সামান্য বাড়িয়ে তুলতে পারে। খাবারের আগে পানি পান করা ক্ষুধা এবং খাবারের পরিমাণ কমিয়ে আনার ক্ষেত্রে সহায়ক।
এমনকি অন্যান্য পানীয়র পরিবর্তে সাধারণ খাবার পানি পান চিনি যুক্ত এবং অন্যান্য ক্যালোরি যুক্ত খাবার গ্রহণের পরিমাণ হ্রাস করতে সাহায্য করে।
ভাজার পরিবর্তে রোস্ট করুন
গ্রিলিং, ফ্রাইং এবং ডিপ ফ্রাইং সবই মাংস এবং মাছ তৈরির জনপ্রিয় পদ্ধতি। এই ধরনের রান্নার সময়, বেশ কিছু বিষাক্ত যৌগ গঠিত হয়। যেমন, পলিসাইক্লিক সুগন্ধযুক্ত হাইড্রোকার্বন, উন্নত গ্লাইকেশন জাত বস্তু, হেটারোসাইক্লিক অ্যামাইনস। এই সমস্ত যৌগগুলো ক্যান্সার এবং হৃদরোগের কারণ হতে পারে।
স্বাস্থ্যকর রান্নার পদ্ধতিগুলোর মধ্যে বেকিং, ব্রোয়লিং, পোচিং, প্রেশার কুকিং, ফুটানো, গরম ভাপে সিদ্ধ করা প্রভৃতি অবলম্বন করতে পারেন। এগুলো ক্ষতিকারক যৌগ গঠন করে না, বরং খাবারকে আরো স্বাস্থ্যকর করে তুলে।
ভাজা আলুর উপর সিদ্ধ আলুকে অগ্রাধিকার দিন
১০০ গ্রাম সিদ্ধ আলুতে ৯৩ ক্যালোরি থাকে, যা একই পরিমাণ ভাজা আলুতে থাকে ৩ গুণেরও বেশি (৩৩৩ ক্যালোরি) তদুপরি, বেশি ভাজা আলুতে সাধারণত ক্ষতিকারক যৌগ থাকে যেমন অ্যালডিহাইড এবং ট্রান্স ফ্যাট।
আরও পড়ুন: সাইক্লিং, দৌড় কিংবা সাঁতার: ওজন কমাতে কোনটি বেশি কার্যকরী?
শাক জাতীয় খাবারকে অধিক গুরুত্ব দিন
শাক খাওয়ার অভ্যাস গড়ার একটি ভাল উপায় হল ক্ষুধার মুহুর্তে সর্বপ্রথম সেগুলো খাওয়া। ফলে প্রচন্ড ক্ষুধার্ত অবস্থায় আপনি সব শাক শেষ করে ফেলবেন। এতে করে পরবর্তীতে অস্বাস্থ্যকর খাবারগুলো এড়ানো হবে।
এই কাজটি আপনাকে সামগ্রিকভাবে কম এবং স্বাস্থ্যকর ক্যালোরি সম্পন্ন খাবারে অভ্যস্ত করে তুলবে। পাশাপাশি ওজন হ্রাস করতে সাহায্য করবে।
কার্ব-সমৃদ্ধ খাবারের আগে সবজি খাওয়া রক্তে শর্করার মাত্রায় ইতিবাচক প্রভাব ফেলে। এটি রক্তের প্রবাহে কার্বস শোষিত হওয়ার গতি হ্রাস করে। এছাড়াও ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের স্বল্প এবং দীর্ঘমেয়াদী পরিসরে রক্তে শর্করার নিয়ন্ত্রণ করে।
ফলের জুসের বদলে আস্ত ফলটি খান
ফল পানি, ফাইবার, ভিটামিন এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর। বারবার ফল খাওয়ার সাথে হৃদরোগ, টাইপ-২ ডায়াবেটিস এবং ক্যান্সারের মতো বেশ কিছু স্বাস্থ্য ঝুঁকি কমে যায়।
যেহেতু ফলে ফাইবার এবং বিভিন্ন উদ্ভিদ যৌগ থাকে, তাই সেগুলোর প্রাকৃতিক শর্করা সাধারণত খুব ধীরে ধীরে হজম হয় এবং রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়ায় না। কিন্তু ফলের রসের এমনটা হয় না। অনেক ফলের রস প্রকৃত ফল থেকে তৈরি না করে চিনিযুক্ত কোমল পানীয় দিয়ে বানানো হয়।
এমনকি আসল ফলের রসে ফাইবারের অভাব রয়েছে যা রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়ানোর সম্ভাবনা বাড়িয়ে দেয়।
পড়ুন: করোনা মহামারি থেকে শিশুকে নিরাপদ রাখবেন কীভাবে?
চিনিযুক্ত পানীয়গুলোর বদলে সোডা পানি পান করুন
চিনিযুক্ত পানীয়গুলো হৃদরোগ, স্থূলতা ও টাইপ-২ ডায়াবেটিসের মত মারাত্মক সব রোগের কারণ হতে পারে। এছাড়া, এই পানীয়গুলো সাধারণ খাবারের মতো দেহের উপর প্রভাব ফেলে না। চিনিযুক্ত পানিয় কম খাওয়ার মাধ্যমে আপনি ক্যালোরি কমাতে পারবেন না একটি ৪৯২-মিলিগ্রাম চিনিযুক্ত সোডায় প্রায় ২০৭ ক্যালোরি থাকে।
এর বদলে শুধু সোডা বা স্পার্কলিং পানি বেছে নিন। এর ফলে আপনার শরীরে অপকারী ক্যালোরিগুলোর প্রবেশ বন্ধ হবে এবং অতিরিক্ত চিনির পরিমাণ হ্রাস পাবে।
চিপসের পরিবর্তে পপকর্ন খান
পপকর্ন বা খৈ-ভাজা যথেষ্ট পরিমাণে পুষ্টি এবং ফাইবার সম্পন্ন। ১০০ গ্রাম পপকর্নে ৩৮৭ ক্যালরি এবং ১৫ গ্রাম ফাইবার থাকে। একই পরিমাণ আলুর চিপসে ক্যালোরি থাকে ৫৩২ এবং ফাইবার থাকে মাত্র ৩ গ্রাম। এই খাবারটির সুবিধা হলো- প্রদাহ এবং হৃদরোগের ঝুঁকি কমানো।
একটি স্বাস্থ্যকর নাস্তার হিসেবে বাড়িতেই পপকর্ন তৈরি করার চেষ্টা করুন। বাইরে থেকে কিনলে এয়ার-পপড পপকর্ন কিনতে পারেন। তবে খেয়াল রাখবেন, অনেক বাণিজ্যিক জাত চর্বি, চিনি এবং লবণ দিয়ে তাদের পপকর্ন প্রস্তুত করে, এটি আলুর চিপের চেয়ে স্বাস্থ্যকর নয়।
রান্নায় স্বাস্থ্যকর তেল ব্যবহার করুন
দুর্ভাগ্যবশত, সয়াবিনের মত অত্যন্ত প্রক্রিয়াজাত বীজ এবং উদ্ভিজ্জ তেল গৃহস্থালিতে বহুল ব্যবহৃত হচ্ছে।
এই তেলগুলিতে ওমেগা-৬ ফ্যাটি অ্যাসিড বেশি কিন্তু হার্টের জন্য উপকারী ওমেগা-৩ এস কম থাকে। উচ্চ ওমেগা -৬ ও ওমেগা -৩ অনুপাত প্রদাহ সৃষ্টি করার পাশাপাশি আরো জটিল রোগ সৃষ্টি করতে পারে যেমন হৃদরোগ, ক্যান্সার, অস্টিওপোরোসিস এবং অটোইমিউন ডিসঅর্ডার। তাই বিকল্প হিসেবে অতিরিক্ত কুমারি জলপাই তেল, সরিষার তেল, অ্যাভোকাডো তেল ও নারকেল তেল ইত্যাদি তেলগুলো ব্যবহার করতে পারেন।
আরও পড়ুন: যদি স্লিম থাকতে চান রোজ ৫ রকমের বাদাম খান
নিয়মিত ব্যায়াম করুন
শারীরিক ক্রিয়াকলাপ আপনার ওজন নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি আপনার কোলেস্টেরল এবং রক্তচাপের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য প্রতি সপ্তাহে আড়াই ঘন্টার মাঝারি তীব্রতার ব্যায়াম, যেমন দ্রুত হাঁটা বা সাইকেল চালানো উত্তম। শিশু-কিশোরদের প্রতিদিন ১ ঘণ্টা ব্যায়াম করা উচিত।
ব্যায়ামকে প্রতিদিনের একটি অংশ করে ফেলুন। লিফটের পরিবর্তে সিঁড়ি ব্যবহার করুন, অপেক্ষাকৃত একটু দূরে গাড়ি পার্ক করুন যেন বাকি পথ পেরিয়ে বাড়ি পৌছতে হেটে যেতে হয়, নিত্য সদাই কিনতে হেটে যান।
শেষাংশ
এই প্রাকৃতির উপায় ছাড়াও কোলেস্টেরল কমানোর অনেক ওষুধও আছে যেগুলো ব্যবহার করে অনেকেই উপকৃত হয়েছে। কিন্তু ক্ষতিকর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থাকার কারণে সেগুলো ব্যবহারের আগে সতর্ক থাকা উচিত। বিশেষত অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নেবেন। সর্বসাকুল্যে, নিরবচ্ছিন্ন সুস্থ জীবনের জন্য একটি সুষম খাবার গ্রহণ করে নির্দিষ্ট জীবন ব্যবস্থা মেনে চলুন, আপনাকে কোন ওষুধের শরণাপন্ন হতে হবে না।
আরও পড়ুন: করোনা মহামারি থেকে বাড়ির বয়োজ্যেষ্ঠদের নিরাপদ রাখবেন কিভাবে?
করোনা সংক্রমণ এড়াতে কোরবানির সময় যা যা মেনে চলবেন
আর কিছুদিন পরেই কোরবানির ঈদ। এ সময় কোভিড সংক্রমণের কথা মাথায় রেখে কোরবানির সময় সতর্কতা মেনে চলতে হবে। এ রকম একটা উৎসবে অনেক মানুষের সমাগম থাকাটা স্বাভাবিক। তাছাড়া পশু কোরবানির আগে ও পরে সৃষ্ট ময়লা-আবর্জনা থেকে জীবাণু ছড়াতে পারে। তাই চলুন, কোভিড সংক্রমণ এড়াতে কোরবানির সময় সতর্কতার জন্য জরুরি পদক্ষেপগুলোর ব্যাপারে জেনে নেই।
কোভিড সংক্রমণ এড়াতে কোরবানির সময় সতর্কতা-
কোরবানির জন্য সঠিক স্থান নির্বাচন করুন
পশু কোরবানির স্থানটি বসতবাড়ি থেকে একটু দূরে এবং খোলামেলা হওয়া দরকার। যে স্থানটি নির্বাচন করবেন, সেটি অবশ্যই আগে থেকে জীবাণুনাশক দিয়ে পরিষ্কার করে রাখবেন। এতে এলাকা জুড়ে জীবাণু ছড়ানোর সম্ভাবনা কম থাকে এবং পরিবেশ দূষণ রোধ হয়। তাছাড়া কোরবানি পরবর্তী প্রয়োজনীয় ময়লা নিষ্কাশনেও বেশ সুবিধা হয়। কোরবানির সকল কার্যক্রম শেষ হয়ে গেলে পুরো জায়গাটি স্যাভলন মেশানো পানি অথবা ব্লিচিং পাউডার দিয়ে স্যানিটাইজ্ড করে নিন।
আরও পড়ুন: কোরবানির পশু নিয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জ ছেড়েছে ‘ক্যাটল স্পেশাল’ ট্রেন
কসাই-কোরবানির সরঞ্জাম স্বাস্থ্যবিধির আওতায় আনুন
কসাইদের কাজ শুরুর আগে দেখে নিন তারা হ্যান্ড-গ্লাভস, মাস্ক এবং জীবাণুনাশক দিয়ে পরিষ্কার করা রাবারের জুতা পরছে কিনা। তাদের সাথে যারা কোরবানিতে অংশ নিবেন ও মাংস কাটবেন তাদের ক্ষেত্রেও এই সতর্কতা প্রযোজ্য। পশু ধরার আগে ও পুরো কাজ হওয়ার পর সাবান ও হালকা গরম পানি দিয়ে গোসল করে নিন। পশু কোরবানির প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম আগে থেকেই স্যানিটাইজ্ড করে রাখুন। যে পাত্রে মাংস রাখাবেন তা আগে থেকেই সাবান-পানি দিয়ে ভালো করে ধুয়ে রাখুন। মাংস কাটার সময় নিজেদের মধ্যে তিন ফুট দূরত্ব রেখে বসুন।
পশু কোরবানি ও চামড়া ছাড়ানোর সময় কোন অবস্থাতেই হাঁচি-কাশি দেয়া যাবে না। মাংস আলাদা করে যেখানে রাখা হবে তার আশপাশেও হাঁচি-কাশি দেয়া থেকে বিরত থাকুন। শুধু কোরবানির সাথে সম্পৃক্তরা ছাড়া অন্য কাউকে আশেপাশে ভীড়তে দেবেন না। আর কেউ এলেও তাকে অবশ্যই কমপক্ষে তিন ফুট দূরত্ব রেখে দাড়াতে হবে।
আরও পড়ুন: কোরবানির হাটে মহিষের আক্রমণে কিশোরের মৃত্যু
একটি নির্দিষ্ট স্থানে কোরবানির পশুর বর্জ্যগুলো ফেলুন
গ্রামাঞ্চলে কোরবানির আগে থেকেই খোলা মাঠে বা কোন পরিত্যক্ত স্থানে গর্ত করে রাখতে পারেন। আর শহরের ক্ষেত্রে কাছাকাছি একটি ডাস্টবিন ঠিক করে রাখুন। ডাস্টবিনটি রাস্তার কাছাকাছি হলে বর্জ্যের গাড়ি পৌঁছাতে সুবিধা হবে। আর গোলির ভেতরে হলে বর্জ্য একটি ব্যাগে ভরে নির্দিষ্ট স্থানে রাখুন। খেয়াল রাখবেন- কুরবানির পশুর গোবর ও অন্যান্য আবর্জনা যেন ড্রেনে ফেলা না হয়। এক্ষেত্রে ড্রেন বন্ধ হয়ে ময়লা উপচে পড়বে।
আগে থেকে ঠিক করা জায়গায় মাংস কাটার কাজ শেষ করুন। এ সময় উচ্ছিষ্টগুলো ছিটিয়ে না ফেলে একটি নির্দিষ্ট স্থানে রাখুন। অতঃপর সব উচ্ছিষ্ট একসাথে করে পূর্ব নির্ধারিত ডাস্টবিনে ফেলুন। গ্রামাঞ্চলে গর্তে রেখে মাটি চাপা দিয়ে রাখতে পারেন। দ্রুত বর্জ্য নিষ্কাশনের জন্য স্থানীয় বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কমিটির দৃষ্টি আকর্ষণ করুন।
আরও পড়ুন: কোরবানির পশুর চামড়ার দাম বাড়ালো সরকার
যত দ্রুত সম্ভব চামড়া ব্যবস্থাপনার কাজ শেষ করুন
চামড়া ছাড়ানো হয়ে গেলে সাথে সাথে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করার ব্যবস্থা করুন। এছাড়া মাদরাসার লিল্লাহ বোর্ডিং, মসজিদ বা এতিমখানায়ও দান করে দিতে পারেন।
আরও পড়ুন: ডিজিটাল কোরবানির পশুর হাটের উদ্বোধন
মাংস সংরক্ষণে করোনা স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলুন
মাংস বাড়িতে নেয়ার আগে থেকেই হাত, রান্নাঘর বিশেষ করে মাংস রাখার পাত্রগুলো সাবান ও হালকা গরম পানি দিয়ে ভালো করে ধুয়ে পরিষ্কার করে নিন। মাংস এমনভাবে রান্না করুন, যেন মাংসের প্রতিটি অংশ বেশ ভালোভাবে সেদ্ধ হয়। রান্নার কাজ শেষ হলে কাঁচা মাংসের সংস্পর্শে আসা সব কিছু আগের মত করে হালকা গরম পানি ও সাবান দিয়ে ধুয়ে শুকিয়ে নিন। রেফ্রিজারেটরে কাঁচা মাংস রাখার সময় ছোট ছোট প্যাকেটে মুখ বন্ধ করে মাংস রাখুন। রেফ্রিজারেটর থেকে মাংস বের করে রান্নার পূর্বে ভালো করে সাবান-পানি দিয়ে হাত ধুয়ে নিন।
আরও পড়ুন: দেশের বাইরে থেকে কোরবানির পশু আসতে দেওয়া হবে না: প্রাণিসম্পদমন্ত্রী
শেষাংশ
যেহেতু করোনা মহামারি চলাকালীন দ্বিতীয়বারের মত ঈদুল আজহা পালিত হতে যাচ্ছে, তাই কোরবানি পরবর্তী সতর্কতা মেনে চলার উপর আরো বেশি জোর দিতে হবে। এর ফলশ্রুতিতে আপনি নিজে সুস্থ থাকার পাশাপাশি আপনার পাশের জনকেও কোভিড সংক্রমণ থেকে মুক্ত রাখতে পারবেন।
করোনা মহামারি থেকে শিশুকে নিরাপদ রাখবেন কীভাবে?
করোনাকালীন শিশুর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে শিশুর পাশাপাশি আপনারও সুস্থ থাকা প্রয়োজন। প্রাথমিকভাবে শিশুরা করোনার ভয়ানক সংক্রমণের বাইরে থাকলেও এখন ধীরে ধীরে শিশুদের সংক্রমণের হার বাড়ছে। তাছাড়া রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকায় যে কোনও রোগের বেলাতেই শিশুদের ওপর ক্ষতিকর প্রভাব পড়তে পারে। একই সাথে অনেক দিন ধরে ঘরে থাকার কারণে মানসিক অবসাদেও ভুগতে পারে আপনার শিশু। তাই করোনা থেকে আপনার শিশুর স্বাস্থ্য সুরক্ষায় সচেতন থাকা জরুরি।
করোনাকালীন শিশুর নিরাপত্তা নিশ্চিতে আপনার করণীয়
শিশুর স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা নিশ্চিত করুন
অন্তত ২০ থেকে ৩০ সেকেন্ড ধরে হাত ধোয়া থেকে শুরু করে হাঁচি বা কাশি দেয়ার সময় কনুইয়ে মুখ গুজা এবং মাস্ক ব্যবহার করার মত প্রাথমিক বাধ্যতামুলক স্বাস্থ্যবিধিগুলো খুব সহজ ভাষায় শিশুদেরকে বুঝিয়ে দিতে পারেন। বাইরে থেকে আগত কোনও লোকদের সংস্পর্শ থেকে শিশুকে দূরে রাখুন।
পরিবারের কোনও সদস্যের সর্দি, কাশি, জ্বর হলে তাদের কাছে যাওয়া থেকে শিশুদের বিরত রাখুন। এমনকি নিজেরও এরকম কোনও উপসর্গ দেখা দিলে দূরত্ব বজার রাখুন।
সামাজিক দূরত্বের ব্যাপারে তাদেরকে শিক্ষা দিন। এ সময়ে শিশুদের হালকা সর্দি-কাশি, জ্বর, পেট ব্যথা ইত্যাদি হালকাভাবে নেবেন না। শিশুকে স্বাস্থ্যবিধি মানতে উৎসাহিত করুন।
আরও পড়ুন: কিভাবে আত্মবিশ্বাসের সাথে ইংরেজিতে বলা রপ্ত করবেন?
ঘরের সার্বিক পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার দিকে খেয়াল রাখুন
এ সময়ে যেহেতু ঘরের ভেতরেই বেশি থাকা হচ্ছে সেহেতু ঘরের যে জায়গাগুলোতে মানুষের সংস্পর্শ পাওয়ার সম্ভাবনা বেশি সে জায়গাগুলো স্যানিটাইজ করুন। বিশেষত দরজার নব, চেয়ার-টেবিল, বিভিন্ন ফার্নিচারের হাতল, বিছানা এবং অবশ্যই রান্নাঘর পরিষ্কার রাখুন।
শিশুর ব্যবহৃত বালিশের কাভার, বিছানার চাদর সপ্তাহে অন্তত দু’বার বদলে দিন। মাস্কের পাশাপাশি শিশুকে হাতে নিয়মিত একটি পরিষ্কার কাপড় ও একটি ছোট্ট পকেট হ্যান্ড স্যানিটাইজার রাখুন। নিয়মিত পরনের কাপড় ধুয়ে দিন। তাছাড়া হঠাৎ ময়লা হয়ে গেলে সাথে সাথে কাপড় বদলে দিন।
আরও পড়ুন: কঠোর ডায়েটের স্বাস্থ্য ঝুঁকিসমূহ জেনে নিন
শিশুকে ইন্টারনেটের সদ্ব্যবহারে উৎসাহ দিন
করোনাকালীন শিশুর নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে শিশুদের বিভিন্ন ভীড় থেকে বিরত রাখার কারণে তারা ঘরে বন্দি হয়ে পড়ে। এ অবস্থায় তাদের সময়গুলোর সদ্ব্যবহারের জন্য ইন্টারনেট একটা উপযুক্ত উপায়। স্কুল বন্ধের সাথে শিশুর পড়াশোনা যেন বন্ধ হয়ে না যায় সেজন্যে অনলাইন পড়াশোনায় আপনার শিশুকে নিয়ে সময় কাটান।
প্রযুক্তির প্রতিনিয় প্রসারের ফলে পাঠ্যক্রমের প্রতিটি বিষয় এখন ইন্টারনেটের মাধ্যমে অধ্যয়ন করা যায়। অনলাইন পাঠের বড় সুবিধা হলো- এখানে শিশু কোন চাপ অনুভব করবে না বরং নিজেই আনন্দ নিয়ে শিখবে। এছাড়া শুধু পড়াশোনাই নয়, ইন্টারনেট শিশুদের জন্য বিনোদনের এক বিশাল সংগ্রহশালা। এখন ঘরে বসেই অনলাইন মাল্টিপ্লেয়ার গেমগুলোতে একজন খেলোয়ার পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তের খেলোয়ারদের সাথে প্রতিযোগীতা করতে পারছে।
এতে করে এই করোনার সময়ে আপনার শিশুকে খেলাধুলার জন্য বাইরে না যেতে জোর করতে হবে না। তবে খেয়াল রাখবেন আপনার শিশু যেন খারাপ কোনও সাইট বা গেমের প্রতি আসক্ত না হয়ে পড়ে। এর জন্য ইন্টারনেটের আপত্তিজনক সাইটগুলো ব্লক করে রাখবেন।
এছাড়া ইন্টারনেট আপনার শিশুর মেধা ও মননকে উন্নত করার জন্য এক গতিশীল মাধ্যম যা তার স্বভাবিক বিকাশে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
আরও পড়ুন: সাইক্লিং, দৌড় কিংবা সাঁতার: ওজন কমাতে কোনটি বেশি কার্যকরী?
শিশুর মানসিক স্বাস্থ্যের ব্যাপারে সতর্ক থাকুন
করোনা সম্পর্কিত গুজবে কান না দিয়ে সঠিক খবর জানুন। আক্রান্ত এবং মৃত্যুর খবরগুলো নিয়ে নিজেদের ভেতর আলোচনা করার সময় সতর্ক থাকুন। সংক্রমণ থেকে বাঁচার উপায়গুলো নিয়ে বেশি কথা বলুন।
কোথায় কোথায় কত মানুষ সংক্রমণ থেকে কত দ্রুত সেড়ে উঠেছে তা নিয়ে আলাপ করুন। এতে শিশুদের মনে ভীতির সঞ্চার ঘটবে না। শিশুরা প্রায় সব সময়ই বড়দের অনুকরণ করার চেষ্টা করে।
তাই নিজেরা করোনার স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলে তাদের সামনে দৃষ্টান্ত উপস্থাপন করুন। আপনি যেভাবে আপনার শিশুকে সতর্ক করছেন খেয়াল ঠিক সেভাবেই ও আপনাকে অথবা অন্যদের সতর্ক করছে কিনা। এভাবে ব্যাপারটাকে খেলার ছলে শিক্ষা দিতে পারেন।
আরও পড়ুন: বর্ষায় পোকামাকড়ের উপদ্রব থেকে বাঁচতে করণীয় সম্পর্কে জেনে নিন
শেষ কথা
সর্বোপরি করোনাকালীন শিশুর নিরাপত্তা রক্ষার্থে দেহ ও মন, দুটোকেই গুরুত্বের সাথে দেখতে হবে। শিশুদের শরীরের জন্য প্রতিদিন পুষ্টিকর খাবার দেয়া আর মনকে ঠিক রাখতে করোনার সংক্রমণের তথ্যগুলো ইতিবাচক ভাবে সরবরাহ করুন।
বর্ষা মৌসুমে যেসব পুষ্টিকর সবজি খেতে পারেন
গরম আবহাওয়া থেকে স্বস্তির পাশাপাশি ব্যাকটিরিয়া সংক্রমণের সমূহ সম্ভাবনা থাকে, তাই সুস্বাস্থ্যের জন্য আপনার খাদ্য তালিকায় এই বর্ষা মৌসুমে পুষ্টিকর সবজি থাকা আবশ্যক। এ সময় শাক জাতীয় খাবার থেকে বিরত থাকুন, কেননা এই স্যাঁতস্যাঁতে আবহাওয়ায় এগুলোর মধ্যে থাকা অতিরিক্ত ব্যাকটিরিয়া আপনার স্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে। এই শাক ছাড়াও কিন্তু এই বর্ষায় আপনার জন্য বিভিন্ন ধরনের স্বাস্থ্যকর সবজি আছে। চলুন জেনে নেই এরকমি কয়েকটি সবজির ব্যাপারে এবং কেন সেগুলো আপনার সুস্বাস্থ্যের জন্য উপকারি।
বর্ষা মৌসুমে ৫টি পুষ্টিকর সবজি
করলা
বৃষ্টি মৌসুমে পাওয়া তেঁতো করলা অন্ত্রের ভেতরে থাকা পরজীবী কৃমি ধ্বংসে অনেক কার্যকর। পাকস্থলি ও অন্ত্রের পরজীবীগুলোর সাধারণত এই বর্ষাকালেই বেশি উপক্রম হয়।
তেঁতো করলা ফাইবার, ভিটামিন-সি, ফোলেট এবং ভিটামিন-এ জাতীয় পুষ্টির আঁধার। টেস্ট-টিউব সমীক্ষায় এই সবজির ক্যান্সার-বিরোধী বৈশিষ্ট্য ধরা পড়েছে। এছাড়া এটি পেট, কোলন, ফুসফুস, এবং স্তন ক্যান্সারের কোষের বিরুদ্ধে কার্যকর হতে পারে।
তেঁতো করলা কোলেস্টেরলের মাত্রা হ্রাস করে হৃদরোগের সম্ভাবনা কমিয়ে দেয়। এতে ক্যালোরি কম তবে ফাইবার বেশি। মানব এবং প্রাণী গবেষণায় দেখা গেছে যে, এটি পেটের চর্বি এবং শরীরের ওজন হ্রাস করতে সহায়তা করে।
আরও পড়ুন: বর্ষাকালে ভ্রমণের পূর্বে কিছু সতর্কতা
চিচিঙ্গা
চিচিঙ্গা এমন ফাইবার সরবরাহ করে যা পেটে বেশিক্ষণ থেকে ক্ষুধা কমিয়ে দেয়। ফলশ্রুতিতে দ্রুত গতিতে মেদ ঝরে পড়ে। এছাড়া ভারী খাবার গ্রহণের পরে কোষ্ঠকাঠিন্য, ফোলাভাব এবং পেট-ব্যথা প্রতিরোধেও বেশ কার্যকর এই ফাইবার।
নগন্য পরিমাণে কোলেস্টেরল থাকায় এই সবজি হৃদযন্ত্র ভালো রাখে। সেই সাথে রক্ত সঞ্চালনের উন্নতি এবং কার্ডিয়াক পেশীগুলোর সর্বোত্তম কার্যকারিতা নিশ্চিত করে। শরীরের বর্জ্য এবং কিডনিতে পাথর নির্মূলে সহায়তা করে।
চিচিঙ্গা অতিরিক্ত শ্লেষ্মা নিঃসরণ সহজেই শ্বাসনালী থেকে সরাতে পারে। ফলে কোনো প্রকার শ্বাসকষ্ট হয়না। অতিরিক্ত অ্যাসিডকে উপশম করে গ্যাস্ট্রাইটিস, পেপটিক আলসার এবং জ্বলন থেকে অল্প সময়ের মধ্যেই অব্যাহতি দেয়।
আরও পড়ুন: বজ্রপাত থেকে বাঁচার জন্য সতর্ক হোন
পটল
পটলে বিদ্যমান অ্যান্টিপাইরেটিক ক্রিয়াকলাপ জ্বর এবং সর্দি হ্রাস করতে সাহায্য করে যা বর্ষার সময় একটি সাধারণ রোগ।
রক্তের শুদ্ধির জন্য পটল বেশ উপকারী। এটি রক্ত ও টিস্যু পরিষ্কার করে ত্বকের যত্ন নেয়।
এই সবজিতে থাকা প্রচুর পরিমাণে ফাইবার সঠিক হজমে সহায়তা করে। পটলের বীচি কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দূর করে। তাই পটল খাওয়ার সময় এর বীচি ফেলে দেবেন না। এগুলো রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়তা করে, যার ফলস্বরূপ দেহের কোলেস্টেরল কমে যায়। এটি কম ক্যালোরি সম্পন্ন এবং দীর্ঘক্ষণ আপনার পেট ভরা রাখবে। সুতরাং ওজন কমাতে আপনি নিঃসন্দেহে এর তরকারি খেতে পারেন।
আরও পড়ুন: সাইক্লিং, দৌড় কিংবা সাঁতার: ওজন কমাতে কোনটি বেশি কার্যকরী?
কাকরোল
তিক্ত স্বাদযুক্ত কাকরোল যকৃতের ক্ষতি, প্রদাহজনিত অসুস্থতা রোধ এবং জ্বর কমাতে সহায়তা করে।
এর ফল নিউরোপ্রোটেক্টিভ বৈশিষ্ট্যযুক্ত হওয়ায় মস্তিষ্কের কার্যকারিতা বহাল রাখতে পারে।
এর হাইপোগ্লাইসেমিক বৈশিষ্ট্য অতিরিক্তভাবে ইনসুলিনের নিঃসরণ এবং সংবেদনশীলতা উভয় ক্ষেত্রে কার্যকর ভুমিকা রাখার মাধ্যমে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারে।
কাকরোলের বীচিতে থাকা ফাইবার গ্যাস্ট্রিক আলসার, পাইলস এবং কোষ্ঠকাঠিন্য প্রভৃতি প্রশমন করে।
কম ক্যালোরির হওয়ায় আপনার অতিরিক্ত মেদ ঝরাতে কাকরোল খেতে পারেন।
কাকরোলের শাঁসে থাকে ভিটামিন বি-৯, যা কোষের বৃদ্ধি এবং প্রজননের জন্য প্রয়োজনীয়। এভাবে এটি গর্ভাবস্থায় নিউরাল টিউব ত্রুটির সম্ভাবনা হ্রাস করে।
আরও পড়ুন: জন্মদিনে পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি মিঠুন
ঢেঁড়শ
ঢেঁড়শ ভিটামিন-সি, ভিটামিন-কে এবং প্রোটিনে ভরপুর। এর অ্যান্টিঅক্সিডেন্টগুলো বিশেষত শক্তিশালী পলিফেনল প্রদাহ রোধ, হৃদযন্ত্র এবং মস্তিষ্কের ক্ষেত্রে অবদান রাখতে পারে।
প্রাণী গবেষণা মতে, ঢেঁড়শ রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমিয়ে দেয়। এতে লেকটিন নামে একটি প্রোটিন রয়েছে, যার উপর ক্যান্সার প্রতিরোধী গবেষণা চলছে।
ঢেঁড়শ খাওয়ার ফলে আপনার রক্তে শর্করার নিয়ন্ত্রণ থাকবে। কিছু গবেষণায় দেখা গেছে যে, এটি ডায়াবেটিসের সাধারণ ক্রিয়াকলাপেও হস্তক্ষেপ করতে পারে।
ঢেঁড়শ গর্ভবতী মহিলাদের প্রতিদিনের ফোলেটের চাহিদা মেটাতে সক্ষম।
আরও পড়ুন: বর্ষায় পোকামাকড়ের উপদ্রব থেকে বাঁচতে করণীয় সম্পর্কে জেনে নিন
শেষাংশ
এগুলোর মাধ্যমে আপনার বর্ষা মৌসুমে পুষ্টিকর সবজি তালিকা পরিপূর্ণ করতে পারেন। আপনার ও আপনার পরিবারের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় সুষম খাদ্যের তালিকা প্রস্তুতিতে অন্য কোনো কঠোর ডায়েটের প্রয়োজন নেই। সর্বপরি, সবজি ঘরে আনার পর অবশ্যই ভালোভাবে ধুয়ে পরিষ্কার করার দিকে নজর রাখবেন।
মশার উপদ্রব থেকে সুরক্ষিত থাকার কিছু সহজ ঘরোয়া উপায়
মশার উপদ্রব থেকে নিজেকে সুরক্ষিত রাখতে মশা মারার সঙ্গে সঙ্গে যেসব স্থানে মশা জন্মানোর সম্ভাবনা আছে সেসব সেগুলো পরিষ্কার করে নেওয়া প্রয়োজন। মশা জন্মানোর জন্য উপযুক্ত স্থান, যেমন ঘরের কোনা, আঙিনায় জমে থাকা ময়লা ধুলা, পাত্রে জমে থাকা পানি এসব কিছু পরিষ্কার রাখতে হবে।
ম্যালেরিয়া, ডেঙ্গু এবং হলুদ জ্বরের মতো মশা বাহিত বিপজ্জনক রোগগুলি ছাড়াও মশা কামড়ানোর পরে দীর্ঘক্ষণ বিরক্তিকর চুলকানি হতে পারে এবং তাদের শব্দ আপনার ঘুমের ব্যাঘাত ঘটাতে পারে।
এমতাবস্থায় চলুন জেনে নিই, মশা তাড়ানোর কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ ঘরোয়া টিপ্স।
মশা থেকে বাঁচার কিছু সহজ ঘরোয়া টিপ্স
পুদিনা পাতার কার্যকারিতা
উপকারী এই পাতা মশা তাড়াতে বেশ কার্যকরী। একটি গ্লাসে অল্প পানি নিয়ে তাতে পুদিনার কয়েকটি পাতা রেখে দিন। অবশ্যই তিনদিন পরপর পানি বদলে দেবেন। এছাড়া পুদিনা পাতা সেদ্ধ করে সেই পানির গন্ধ পুরো ঘরে ছড়িয়ে দিন। এতেও মশা দ্রুত পালাবে।
আরও পড়ুন: সাইক্লিং, দৌড় কিংবা সাঁতার: ওজন কমাতে কোনটি বেশি কার্যকরী?
সন্ধ্যায় হলুদ বাতি
পতঙ্গ সাধারণত আলোর প্রতি আকৃষ্ট হয়। ঘরে হলুদ আলো জেলে দিলে মশার উপদ্রব কমে যায়। বৈদ্যুতিক বাতির চারপাশে হলুদ সেলোফন জড়িয়ে দিতে পারেন, যেখানে আলোর রং অবশ্যই হলুদ হতে হবে। আর প্রতি সন্ধ্যায় জ্বালানো এই হলুদ আলোই মশা তাড়াবে।
শুকনো চা পাতা পোড়ানো
চা তৈরি ছাড়াও চা পাতা মশার উপদ্রব কমাতে পারে। সেজন্য চা পাতা ব্যবহারের পর ফেলে না দিয়ে রোদে শুকিয়ে নিতে হবে। খেয়াল রাখবেন যেন তাতে পানি না থাকে। এরপর এই চা পাতা ব্যবহার করতে পারেন ধুয়া হিসেবে। শুকনো চা পাতা পোড়ালে ঘরের সব মশা-মাছি দ্রুত দূর হবে।
আরও পড়ুন: জেনে নিন ডেঙ্গু জ্বর থেকে সুরক্ষার উপায় ও করণীয়
লেবু ও লবঙ্গ ব্যবহার
প্রথমে একটি বড় লেবু নিয়ে দুই ভাগ করে কেটে এর ভেতরের অংশে অনেকগুলো লবঙ্গ গেঁথে নিন। লবঙ্গের শুধুমাত্র ফুলের অংশটুকু বের হয়ে থাকবে। বাকি অংশের পুরোটাই লেবুর ভেতরে গেঁথে দিন। পরবর্তীতে লেবুর টুকরোগুলো একটি পরিষ্কার থালায় নিয়ে কক্ষের এককোণে রেখে দিন। এতে খুব সহজেই মশা তাড়াতে পারবেন। লেবু ও লবঙ্গ এভাবে রেখে দিতে পারেন জানালার গ্রিলেও। ফলে মশা ভেতরে ঢুকবে না।
ফুল স্পিডে ফ্যান ছেড়ে দেয়া
মশা ভীষণ হালকা একটি পতঙ্গ। তাই ঘরের সিলিং ফ্যানটি যদি ফুল স্পিডে ছেড়ে রাখেন তবে মশা আর কাছে ঘেঁষতে পারবে না। মশার ওড়ার গতিবেগের চেয়ে স্বাভাবিকভাবেই ফ্যানের ঘোরার গতি বেশি। তাই মশা সহজেই ফ্যানের ব্লেডের কাছে চলে যায়। মশার উপদ্রব বেড়ে গেলে ফুল স্পিডে ফ্যান ছেড়ে দিন।
আরও পড়ুন: বজ্রপাত থেকে বাঁচার জন্য সতর্ক হোন
নিম পাতার তেল প্রাকৃতিক মশা নিরধোক
মশা বা কীট-পতঙ্গ থেকে বাঁচতে নিম পাতার তেল ব্যবহার অপরিহার্য। কারণ, নিম পাতার তেল প্রাকৃতিক মশা নিরধোক সমৃদ্ধ।
রসুন দিয়ে বানানো স্প্রে
রসুন পোকা-মাকড় দমনে বেশ কার্যকরী। মধ্যযুগে ইউরোপীয়রা প্লেগ মহামারি প্রতিরোধে রসুনের ব্যবহার করেছিলো।
রসুনের স্প্রে খুব সহজেই বাড়িতে বানিয়ে নিতে পারেন। রসুনের কয়েকটি কোয়া ছেঁচে নিয়ে ১ কাপ বা আধা কাপ পানিতে ফুটান। অতঃপর তৈরি স্প্রে মিশ্রণটি একটি স্প্রে বোতলে নিয়ে দরজা, জানালা, ঘরের চারিদিকে স্প্রে করুন।
আরও পড়ুন: বর্ষায় পোকামাকড়ের উপদ্রব থেকে বাঁচতে করণীয় সম্পর্কে জেনে নিন
ঘরের কোণায় কোণায় কর্পূর ব্যবহার
কর্পূরের গন্ধ মশার জন্য বিদ্ধংসী। ৫০ গ্রাম কর্পূরের একটি ট্যাবলেট একটি ছোট বাটিতে রেখে বাটিটি পানি দিয়ে ভরে ঘরের কোণে রেখে দিন। সাথে সাথেই দেখবেন, মশা গায়েব হয়ে গেছে। প্রতি দুই দিন অন্তর পানি পরিবর্তন করে দিতে ভুলবেন না।
শেষাংশ
উপরোক্ত পদক্ষেপগুলো নেয়ার পাশাপাশি মশার উপদ্রব থেকে বাঁচতে প্রয়োজন যথাযথ সচেতনতা। বিশেষত, এডিস মশার বংশবিস্তার রোধে বাড়ির আশেপাশে জমে থাকা পানি পরিষ্কার করা জরুরি। বাড়ির আঙ্গিনায় আগাছা, ঝোপ-ঝাড় জমতে দেবেন না। ময়লা ফেলার পাত্র ঢাকনাযুক্ত রাখুন এবং নিয়মিত পরিষ্কার করুন। বাড়ির দরজা ও জানালায় নেট লাগিয়ে আপনি মশার উপদ্রব থেকে দূরে থাকতে পারেন। উপায়টি সবচেয়ে ফলপ্রসূ হয় বর্ষাকালে।
আরও পড়ুন: কালো ছত্রাক সংক্রমণ: কোভিড রোগীদের নতুন আতঙ্ক
বর্ষায় পোকামাকড়ের উপদ্রব থেকে বাঁচতে করণীয় সম্পর্কে জেনে নিন
বর্ষাকালে ভেজা ও স্যাঁতস্যাঁতে অবস্থায় পোকামাকড়ের উপদ্রব সবচেয়ে বেশি বিরক্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। এই কীটপতঙ্গগুলি কেবল আপনার খাদ্য এবং আসবাবপত্র নষ্ট করবে না, তারা আপনার স্বাস্থ্যের ওপর কিছুটা প্রভাব ফেলবে। তাই আপনার সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ আসবাবপত্র এই ক্ষতিকর কীটপতঙ্গ থেকে নিরাপদ রাখতে, এই টিপ্সগুলো আপনাকে সহায়তা করতে পারে।
বর্ষায় পোকামাকড়ের উপদ্রব থেকে বাঁচার ১০টি সহজ টিপ্সঃ
নিমপাতা ও কালোজিরা
প্রাকৃতিক কীটনাশক হিসেবে পরিচিত এ দুটি খুব ভালো ফল দেয়। রান্নাঘরের কেবিনেট, আলমারি, বুক শেলফ, ঘরের বিভিন্ন তাক ও কেবিনেটে শুকনো নিমপাতা বা কালোজিরা কাপড়ে বেঁধে রেখে দিন। পোকামাকড় চলে যাবে।
আরও পড়ুন: বজ্রপাত থেকে বাঁচার জন্য সতর্ক হোন
ল্যাভেন্ডার তেল
ল্যাভেন্ডারের সুগন্ধ পোকামাকড় রোধে বেশ কাজে দেয়। বিশেষত, মশা-মাছির ক্ষেত্রে এই তেলে আশানুরুপ ফল পাবেন। খালি শ্যাম্পুর বোতলে এককাপ পানি নিয়ে তার মধ্যে তিন চামচ ল্যাভেন্ডার তেল মিশিয়ে নিন। অতঃপর ভালো করে ঝাঁকিয়ে নিয়ে তা ছড়িয়ে দিন ঘরের কোণায় কোণায়।
পুদিনা পাতা
একমুঠো পুদিনা পাতা প্রথমে জলে ফুটিয়ে নিন। তারপর ঠাণ্ডা করে ঘরের যে সব জায়গায় মাকড়সার জাল আছে সেখানে স্প্রে করুন। পুদিনার তেল ও জলের মিশ্রণও স্প্রে করতে পারেন।
টি ট্রি তেল
পানির সঙ্গে টি ট্রি অয়েল মিশিয়ে, সেই মিশ্রণ ঘরের আনাচে-কানাচে ছড়িয়ে দিলে পোকামাকড়ের উপদ্রব কমে যাবে। এমনকি বর্ষায় ছারপোকার জন্যও এটি খুবই কার্যকর।
আরও পড়ুন: জেনে নিন ডেঙ্গু জ্বর থেকে সুরক্ষার উপায় ও করণীয়
ইউক্যালিপটাস তেল
ইউক্যালিপটাস গাছের গা থেকে বের হওয়া ঝাঁজালো গন্ধ কোনো কীটপতঙ্গ, এমনকি ইঁদুরও সহ্য করতে পারে না। তাই খালি শ্যাম্পুর বোতলে এক কাপ পানি ভরে, তাতে এক চামচ লেবু তেল ও দু’চামচ ইউক্যালিপটাস তেল মিশিয়ে ঝাঁকিয়ে একটি মিশ্রণ তৈরি করুন। বাড়ির চারপাশে, বেসিনে এই মিশ্রণ স্প্রে করলেই বর্ষায় পোকামাকড়ের হাত থেকে বাঁচতে পারবেন।
ব্লিচিং পাউডার
এক দিন পর পর বাড়ির চার পাশে ব্লিচিং পাউডার ও কার্বলিক অ্যাসিড ছড়ান। এছাড়া করোনা সংক্রমণ এড়িয়ে চলতে বাড়ির মেঝে, যেসব জায়গা বেশি হাতের সংস্পর্শে আসে সেগুলোকে পানিতে ব্লিচিং পাউডার মিশিয়ে পরিষ্কার রাখুন।
আরও পড়ুন: সাইক্লিং, দৌড় কিংবা সাঁতার: ওজন কমাতে কোনটি বেশি কার্যকরী?
কর্পূর
কর্পূর ব্যবহার মশা, মাছি তাড়ানোর সবচেয়ে সহজ ও সাধারণ উপায়। কয়েক টুকরা কর্পূর আধা কাপ পানিতে ভিজিয়ে ঘরের এক কোণে রেখে দিলে দেখবেন, মশা-মাছি উপদ্রব অনেক কমে গেছে। পিঁপড়ার নিধনে দরজা ও জানালায় বোরিক পাউডার ঢালুন। এছাড়া এক কাপ নারিকেল তেল নিয়ে তার সাথে কর্পূরের গুঁড়ো মিশিয়ে ঘরের বিভিন্ন জায়গায় ছিটিয়ে দিন।
কেরোসিন তেল ও ঢাকনা দেয়া ডাস্টবিন
গরম পানিতে সাবান ও কেরোসিন তেল মিশিয়ে খাটের তলায় ও ঘরের প্রতিটি কোণে স্প্রে করুন। পোকার উপদ্রব কমবে। রান্নাঘরে ঢাকনা দেওয়া ডাস্টবিন ব্যবহারে দূর হবে মাছির সমস্যা। ব্যবহারের পর নিয়মিত ডাস্টবিন পরিষ্কার করুন।
ফিনাইল
প্রতিদিন ঘরের মেঝে পরিষ্কার করা জরুরি। ঘর মুছতে ফিনাইল বা অ্যান্টিসেপটিক লিকুইড ব্যবহারে পোকামাকড়ের আনগোনা অনেকটাই কমে যাবে।
আরও পড়ুন: ইকিগাই: জাপানিদের সুস্থ জীবনের রহস্য!
স্যাভলন ও ভিনেগার
স্যাভলন ও ভিনেগার দিয়ে রান্নাঘর মুছুন। পিঁপড়ার উপদ্রব কমাতে জানালায় ও দরজায় বরিক পাউডার দিন। ভিনিগার অ্যাসিটিক অ্যাসিড সমৃদ্ধ, যার গন্ধ পেলেই মাকড়সা পালায়।প্রথমে ১ কাপ সাদা ভিনেগার এবং ১ কাপ জল মিশিয়ে একটি স্প্রে বোতলে ভরে ঘরের আনাচে-কানাচে স্প্রে করুন। যেখানে মাকড়শার উপদ্রব বেশি সেখানে বেশি করে স্প্রে করলে হাতে-নাতে ফল পাবেন।বর্ষায় বেসিন ও কমোড দিয়ে উঠে আসা বিভিন্ন কীটপতঙ্গ থেকে রক্ষার জন্য গরম পানিতে স্যাভলন মিশিয়ে কয়েক দিন পরপর সেটি কমোড, বেসিন ও রান্নাঘরের সিংকে ঢালুন। খেয়াল রাখবেন, স্যাভলনের পানি যেন অবশ্যই সরাসরি পাইপে পড়ে। তা না হলে কমোড কিংবা বেসিনে চিড় ধরতে পারে।
পরিশেষে
পরিশেষে পোকামাকড় নিধনে রাসায়নিক পদার্থ ব্যবহারের ক্ষেত্রে অবশ্যই সাবধানে থাকবেন। কিছু কিছু রাসায়নিক বস্তু শুধু আপনাকে অস্বস্তিতেই ফেলবে না বরং আপনার স্বাস্থ্যের জন্যও ক্ষতিকর হয়ে উঠতে পারে। তাই প্রাকৃতিক উপায়েই চেষ্টা করুন বর্ষাকালে পোকামাকড় নিধন করতে।
আরও পড়ুন: জেনে নিন আমের ডেজার্ট তৈরির দারুণ সব রেসিপি