স্বাস্থ্য
অতিরিক্ত আবেগ হতে পারে শরীরের ক্ষতির কারণ
রাগ, ভয় ও দুঃখ মানুষের খুব স্বাভাবিক আবেগের পরিস্ফুটন হলেও অনিয়ন্ত্রিত অবস্থায় এগুলো শরীরের জন্য মারাত্মক বিপদ ডেকে আনতে পারে। এগুলোকে চিন্তা করা যায় অনেকটা মানুষের ভেতরে বাস করা ভয়ঙ্কর কোন দানবের সাথে। ভুলবশত হঠাৎ ছাড়া পেয়ে গেলে ভেতরে লুকিয়ে থাকা এই দানবগুলোই মানুষের ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।
মানুষের মস্তিষ্ক প্রসূত এই আবেগগুলোর সুদূরপ্রসারী প্রভাব বিস্তার করে বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের ওপর। তাই এগুলোর অনিয়ন্ত্রিত প্রকাশভঙ্গি এন্টিবায়োটিকের মাত্রাতিরিক্ত ডোজের মতই মানবদেহের ওপর নেতিবাচক ভূমিকা রাখে। এই ফিচারের মাধ্যমে জানা যাবে সেই ক্ষতিকর প্রভাবগুলো।
অতিরিক্ত আবেগের শারীরিক প্রতিক্রিয়া
অতিরিক্ত রাগ
যখন কেউ অত্যাধিক রাগান্বিত হয় তখন অ্যাড্রিনাল গ্রন্থিগুলো শরীরে অ্যাড্রেনালিন এবং কর্টিসল হরমোন নিঃসরণ করে। শারীরিক পরিশ্রমের প্রস্তুতির জন্য মস্তিষ্ক অন্ত্রের দিকে সঞ্চালিত রক্ত সরিয়ে পেশীর দিকে সঞ্চালন করে। ফলশ্রুতিতে হৃদস্পন্দন, রক্তচাপ ও শ্বাস-প্রশ্বাস বৃদ্ধি পায়, শরীরের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায় এবং ত্বক ঘামতে থাকে।
আরও পড়ুন: অনলাইনে চাকরির ইন্টারভিউ দিতে প্রয়োজনীয় পাঁচ অনলাইন প্ল্যাটফর্ম
অতিরিক্ত ক্রোধ থেকে স্বল্প এবং দীর্ঘমেয়াদী স্বাস্থ্য সমস্যায় মধ্যে আছে মাথাব্যথা, পেটে ব্যথা, অনিদ্রা, উৎকন্ঠা বৃদ্ধি, বিষন্নতা, উচ্চ রক্তচাপ, একজিমা, হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোক।
প্রচন্ড দুঃখের অনুভূতি
দুঃখিত বোধ করাটা যদি দুই সপ্তাহের বেশি স্থায়ী হয় তবে তা বিষন্নতায় রূপ নিতে পারে। এর ফলে সারাক্ষণ ক্লান্ত বোধ বা রাতে অনিদ্রা হতে পারে। এ রকম বিষন্নতায় মাথাব্যথা, পেটব্যথা, কোষ্ঠকাঠিন্য হতে পারে। প্রবল মাত্রায় এটি কখনও কখনও স্নায়বিক রোগেরও কারণ হয়ে দাঁড়ায়। সাধারণত কোন কাজে মনোনিবেশ করতে অক্ষমতা, স্মৃতিশক্তির সমস্যা ও সিদ্ধান্ত নেয়ার অসুবিধার মতো লক্ষণগুলো পরিলক্ষিত হয়।
দীর্ঘস্থায়ী ভীতি
এর শুরুটা হয় বাইরের কোন উৎস থেকে পাওয়া যে কোন ধরনের হুমকির মস্তিষ্কের সংবেদনশীল সিস্টেমগুলোকে আলোড়িত করার মাধ্যমে। মস্তিষ্কের হুমকি সনাক্তকরণ অংশগুলো উদ্বেগ বা ভয়জনিত উত্তেজনার স্বাভাবিক বৃদ্ধিকে ত্বরান্বিত করে। এই পরিবর্তনগুলোই দীর্ঘ পরিসরে ব্যাধিতে পরিণত হয়। দীর্ঘস্থায়ী ভীতির ফলে মাথাব্যথা রূপ নেয় মাইগ্রেনে, শরীরের ব্যথা দীর্ঘস্থায়ী ব্যথায় পরিণত হয় এবং হালকা শ্বাসকষ্ট পরিণত হয় হাঁপানিতে।
আরও পড়ুন: বিশ্বের সবচেয়ে ব্যয়বহুল ১০ শহর
স্বাস্থ্যের ওপর ইতিবাচক আবেগের প্রভাব
সুখের অনুভূতি
আনন্দ ও সুখের দিগ্বিজয়ী অভিব্যক্তি হাসিতে ম্লান হয়ে যায় সকল বিবাদ ও কষ্ট। হৃদয়গ্রাহী হাসি শারীরিক উত্তেজনা এবং চাপ থেকে মুক্তির প্রতিষেধক যা দেহের পেশীগুলোকে ৪৫ মিনিট পর্যন্ত শিথিল রাখে। স্ট্রেস হরমোন হ্রাস এবং রোগ প্রতিরোধক কোষ বৃদ্ধির মাধ্যমে হাসি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা উন্নত রাখে। হাসি শরীরে এন্ডোরফিন হরমোন নিঃসরণ করে, যা সামগ্রিকভাবে সুস্থতার অনুভূতি বাড়ায়।
রক্তনালীগুলোর কার্যকারিতা উন্নত করে এবং রক্ত প্রবাহ বাড়িয়ে হাসি যা হার্ট অ্যাটাক এবং অন্যান্য হৃদপিণ্ড সংক্রান্ত সমস্যা থেকে রক্ষা করে। দিনে ১০ থেকে ১৫ মিনিট হাসি প্রায় ৪০ ক্যালোরি বার্ন করতে পারে, যা এক বছরে তিন থেকে চার পাউন্ড ওজন হারানোর জন্য যথেষ্ট। সুখী মানুষদের রক্তে ক্রমাগতভাবে কর্টিসল হরমোনের মাত্রা কম থাকে তাই তাদেরকে বিবাদে জড়াতে দেখা যায় না।
আশাবাদের দৃষ্টিভঙ্গি
বিষয়টি মনস্তাত্ত্বিক হলেও দীর্ঘস্থায়ী অসুস্থতার বিরুদ্ধে এর কার্যকারিতা ব্যাপক। কারণ এটি মূলত হতাশার বিপরীত তাই এক্ষেত্রে হতাশা থেকে উদ্ভূত স্বাস্থ্য ঝুঁকিগুলো এখানে থাকে না। পাশাপাশি আশাবাদীরা নিজেদের স্বাস্থ্যের ব্যাপারে ইতিবাচক থাকে বলে প্রতিদিনি নতুন উদ্যম নিয়ে নিজেদের যত্ন নেয়। নিজের মধ্যে ভালো কিছুর আশা জন্মানোর অনুশীলন করাটা দুশ্চিন্তা দূর করার সেরা উপায়। আর তাই এটি শ্বাস-প্রশ্বাসের মতো শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়াগুলোতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলে। ফলশ্রুতিতে স্নায়ুতন্ত্র বিপজ্জনক ব্যাধিতে আক্রান্ত হওয়া থেকে রক্ষা পায়।
আরও পড়ুন: হঠাৎ প্রেসার কমে গেলে করণীয়
সর্ব সাকূল্যে নেতিবাচক আবেগের গণ্ডি থেকে বেরিয়ে আবেগের ভারসাম্যতা বজায় রাখতে জীবন ধারণের পদ্ধতিতে পরিবর্তন আনা জরুরি। যে কোন পরিস্থিতিতে আবেগ প্রকাশের আগে ভালো ভাবে চিন্তা করা, কৃতজ্ঞতা বোধ ও ক্ষমার চর্চা করা এবং সর্বপরি, আত্মবিশ্বাস গড়ে তোলার মাধ্যমে জীবন ধারণকে স্বাস্থ্যকর করা যেতে পারে।
হঠাৎ প্রেসার কমে গেলে করণীয়
প্রেসার সিস্টোলিকে ৯০ মিলিমিটার পারদ চাপ এবং ডায়াস্টোলিকে ৬০ মিলিমিটার পারদ চাপ হলো নিচের দিকে রক্তচাপের স্বাভাবিক মাত্রা। এর কম হলেই তখন লো প্রেসার জনিত বিভিন্ন জটিলতা শুরু হয়। বসা বা শুয়ে থাকা থেকে দাঁড়ানোর সময় প্রেসার কমে যাওয়া লো প্রেসারের সবচেয়ে সাধারণ রূপ। বয়স্ক লোকদের সাধারণত খাওয়ার পরে হঠাৎ করে প্রেসার কমে যেতে দেখা যায়। এছাড়া অনিয়ন্ত্রিত রক্তপাত ও গুরুতর সংক্রমণের জন্য লো প্রেসার অনেক সময় জীবন-হুমকির কারণ হতে পারে। চলুন জেনে নেই হঠাৎ প্রেসার কমে গেলে কি করতে হবে।
হঠাৎ প্রেসার কমে গেলে তাৎক্ষণিকভাবে করণীয়
প্রয়োজনীয় খাবার গ্রহণ
সোডিয়াম দ্রুত প্রেসার বাড়াতে সাহায্য করে। তবে বেশি সোডিয়াম গ্রহণ হৃদরোগেরও কারণ হতে পারে। তাই শারীরিক অবস্থার কথা ভেবে আগে থেকেই ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে যে, হঠাৎ সোডিয়াম খাওয়া ঠিক হবে কি না।
লবণাক্ত খাবার প্রেসার বাড়াতে পারে। টিনজাত স্যুপ, পনির, আচারযুক্ত আইটেম এবং জলপাই ইত্যাদি লবণাক্ত খাবার হিসেবে প্রেসার নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করতে পারে।
আরও পড়ুন: মাইগ্রেনের ব্যথা কমানোর ঘরোয়া উপায়
অপ্রক্রিয়াজাত খাবারে টেবিল লবণ যোগ করা যায়। এতে কতটা লবণ খাওয়া হচ্ছে তার নিয়ন্ত্রণ করা যায়।
ফোলেট সমৃদ্ধ খাবার প্রেসার বৃদ্ধি করে। ফোলেট-সমৃদ্ধ খাবারগুলো হলো- মটরশুটি, মসুর ডাল, শাক, ডিম এবং সাইট্রাস ফল যেমন লেবু, কমলা।
ক্যাফেইনযুক্ত চা বা কফি কার্ডিওভাসকুলার সিস্টেমকে উদ্দীপিত করে এবং হৃদস্পন্দন বাড়িয়ে অস্থায়ীভাবে প্রেসার বাড়াতে সাহায্য করে।
আরও পড়ুন:
মাইগ্রেনের ব্যথা কমানোর ঘরোয়া উপায়
মাইগ্রেন হলো মাথাব্যথার সর্বোচ্চ পর্যায় যেখানে মাথার যে কোন এক পাশে প্রচণ্ড ব্যথা অনুভূত হয়। এই ব্যথার সময় অধিকাংশ ক্ষেত্রেই অনেকে অসুস্থ বোধ করেন। এমনকি আলো বা শব্দ সহ্য করতে পারেন না। মস্তিষ্কের রাসায়নিক গঠনে, স্নায়ু এবং রক্তনালীতে অস্থায়ী পরিবর্তনের ফলস্বরূপ এরকম ব্যথার আধিক্য হতে পারে। এছাড়া জিনগত বৈশিষ্ট্যের উপর ভিত্তি করেও মাইগ্রেন বিভিন্ন মানুষের মধ্যে বিভিন্নভাবে প্রভাব ফেলে। কখনো প্রচণ্ড শারীরিক চাপ, ক্লান্তি ও নির্দিষ্ট কোন খাবার বা পানীয় গ্রহণ মাইগ্রেন ব্যথার সূত্রপাত ঘটাতে পারে। আজ জানবো, কিভাবে এই মাইগ্রেনের ব্যথা কমানো যায়।
মাইগ্রেনের ব্যাথা কমানোর উপায়সমূহ
অনুকূল পরিবেশ তৈরি করা
আলো এবং শব্দ অধিকাংশ সময় মাইগ্রেন বৃদ্ধির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। এক্ষেত্রে সর্বপ্রথম একটি শান্ত ও অন্ধকার জায়গা খুঁজে বের করা জরুরি। সম্ভব হলে অন্ধকার ঘরে কিছু শুয়ে থাকা অথবা ঘুমের চেষ্টা করা যেতে পারে।
অনেক সময় সান্ধ্যকালীন পরিবেশে শান্ত প্রকৃতির গান মাইগ্রেনের ব্যথা উপশমে কাজ দেয়।
আরও পড়ুন: হার্ট অ্যাটাক: করণীয় এবং প্রতিরোধে যে সকল পদক্ষেপ নিতে হবে
অ্যারোমাথেরাপিতে ব্যবহৃত কিছু তেল আছে যেগুলো মাথার ব্যথা কমাতে সাহায্য করতে পারে। তবে যাদের সুগন্ধি সংবেদনশীলতা আছে তারা এই তেলগুলো ব্যবহার করার আগে নিশ্চিত হয়ে প্রয়োজন যে সেগুলোর গন্ধে মাথাব্যথা আরও বেড়ে যাচ্ছে কি না। এই তেলগুলো হলো- ল্যাভেন্ডার, পুদিনা, মৌরি, রসুন এবং গোলাপের তেল।
আলোক সংবেদনশীলদের জন্য সানগ্লাস পড়াটা আবশ্যক। যখনই আলো বিরক্তিকর হয় তখনই সানগ্লাস পড়ে ফেলা দরকার, এমনকি বাড়ির ভিতরে থাকলেও।
সানগ্লাসের উপরে ফাঁকা অংশ দিয়ে আলো প্রবেশ ঠেকানোর জন্য ক্যাপ ব্যবহার করা যেতে পারে। সব মিলিয়ে শ্রবণ, ঘ্রাণ এবং দৃষ্টি; এই তিন ইন্দ্রিয়ের জন্য অনুকূল পরিবেশের ব্যবস্থা মাইগ্রেনের ব্যথা হাল্কা করতে পারে।
আরও পড়ুন: উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে উপযুক্ত খাবার ও জীবন ধারণ পদ্ধতি
গরম বা ঠান্ডা পরশ
প্রচণ্ড গরমের সময় ঠান্ডার পরশ আর শীতকালে গরমের পরশ শরীর ও মন দুটোকেই আরাম দেয়। বাইরে থেকে ঘরে আসার পর বাইরের অতিরিক্ত শব্দ, অধিক পরিশ্রমের কারণে দেহ ও মন দুটোরই খুব খারাপ অবস্থা থাকে। এ অবস্থায় মাইগ্রেনের ব্যথা হওয়া অস্বাভাবিক কিছু নয়। এ সময় গরম স্নান বা ঝরনা পেশী শিথিল করে মুড ভালো করে দিতে পারে। সাথে মাথা ব্যথাটাও অনেকটা কমে যায়।
পেশী সংকোচনের কারণে মাইগ্রেনে আক্রান্ত ব্যক্তিদের ঘাড় বা মাথার পিছনের অংশে বা সর্বত্র তাপ প্রযোগটা অনেক কাজে দেয়।
আরও পড়ুন: করোনা মহামারি থেকে শিশুকে নিরাপদ রাখবেন কীভাবে?
উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে উপযুক্ত খাবার ও জীবন ধারণ পদ্ধতি
উচ্চ রক্তচাপ এমন একটি অবস্থা যেখানে মানবদেহের অভ্যন্তরে ধমনীর প্রাচীরে রক্তের দীর্ঘমেয়াদী অতিরিক্ত চাপের ফলে চূড়ান্তভাবে হৃদরোগের মতো স্বাস্থ্য সমস্যা সৃষ্টি করে। রক্তচাপ হৃদপিণ্ড রক্ত পাম্প করা এবং ধমনী সরু হওয়ার সাথে সাথে বৃদ্ধি পায়। পারদের মিলিমিটারে রক্তচাপ পরিমাপ করা হয়। অনিয়ন্ত্রিত উচ্চ রক্তচাপ হার্ট অ্যাটাক এবং স্ট্রোকসহ গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যার ঝুঁকি বাড়ায়। তাই উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে করণীয়গুলো নিয়ে এবারের স্বাস্থ্য সম্পর্কিত ফিচার।
যে খাবারগুলো উচ্চরক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে
১। সাইট্রাস ফল
জাম্বুরা, কমলা এবং লেবুর মত সাইট্রাস ফলগুলোতে রক্তচাপ-হ্রাসের শক্তিশালী প্রভাব আছে। এগুলোতে ভিটামিন, খনিজ এবং উদ্ভিদ যৌগ রয়েছে যা উচ্চ রক্তচাপের মতো হৃদরোগের ঝুঁকির কারণগুলি হ্রাস করে যা হৃদপিন্ডকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।
২। তরমুজ, কলা
তরমুজ ও কলা হলো পটাসিয়ামের আধার যা একটি গুরুত্বপূর্ণ খনিজ। এটি শরীরকে সোডিয়াম থেকে পরিত্রাণ পেতে সাহায্য করে এবং রক্তনালীতে চাপ কমায়।
আরও পড়ুন: পুষ্টিগুণ অটুট রেখে শীতকালীন সবজি খাওয়ার সঠিক উপায়
৩। শিম
শিম ম্যাগনেসিয়ামের একটি ভালো উৎস। খনিজ উপাদানে ভরপুর এই সবজি রক্তনালীগুলোকে শিথিলকরণে ভূমিকা রাখে।
৪। বাধাকপি
এটি সেই সুপারফুডগুলোর মধ্যে একটি যেগুলোতে পটাসিয়াম এবং ম্যাগনেসিয়াম এবং প্রচুর ভিটামিন সি এবং ফাইবার রয়েছে। এগুলো উচ্চ রক্তচাপ কমাতে প্রয়োজনীয় পুষ্টির যোগান দেয়।
৫। রসুন
রসুন প্রাকৃতিক ওষুধের নামান্তর। এই প্রাকৃতিক অ্যান্টিবায়োটিকে রক্তনালীগুলোর প্রসারণকে পরিবর্তন করে, ফলে রক্তচাপও পরিবর্তন হয়। কোলেস্টেরল এবং উচ্চ রক্তচাপ কমাতে রসুনের বেশ সহজলভ্যও বটে।
আরও পড়ুন: কঠোর ডায়েটের স্বাস্থ্য ঝুঁকিসমূহ জেনে নিন
৬। মটরশুটি এবং মসুর ডাল
মটরশুটি এবং মসুর ডালের ম্যাগনেসিয়াম, পটাসিয়াম ও ফাইবার রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
মোটর বাইক রাইডারদের নিরাপত্তার জন্য সেফটি গিয়ার
নিরাপত্তা কোনো অভিজ্ঞতা বা যানবাহনের ধরনের উপর নির্ভর করে না। বিশেষ করে মোটর বাইক ক্রয়ের পর নিরাপত্তার জন্য অবধারিত বিষয় রাইডিং সেফটি গিয়ারে বিনিয়োগ করাটা অতিরঞ্জিত কোন ব্যাপার বা বিলাসিতা নয়। ব্যয়বহুল হওয়ার জন্য অনেকেই এতে বিনিয়োগ করতে গড়িমসি করেন। কিন্তু খেয়াল রাখতে হবে যে, একজন মানুষের জীবনের চেয়ে সেফটি গিয়ারের মূল্য বেশি নয়। তাই মোটর বাইক রাইডারদের উদ্দেশ্য করে আজকের ফিচার সেফটি গিয়ার নিয়ে।
বাইক রাইডিং-এর সময় সেফটি গিয়ারের প্রয়োজনীয়তা
শরীরের বিভিন্ন অংশের সুরক্ষা
প্রতিটি সেফটি গিয়ার শরীরের নির্দিষ্ট অংশ রক্ষা করার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। শুধুমাত্র একটি হেলমেট শরীরের হাড়ভাঙা বা অন্যান্য আঘাত থেকে নিস্তারের নিশ্চয়তা দিতে পারে না।
হেলমেট ছাড়াও সেফটি গিয়ারের মধ্যে আছে হাঁটু এবং কনুই গার্ড, চেস্ট আর্মার, রিফ্লেক্টর, জ্যাকেট, বুট এবং গ্লাভ্স।
আরও পড়ুন: সীতাকুণ্ড ডে ট্যুর: একদিনে ঘুরে আসুন চন্দ্রনাথ পাহাড় ও মহামায়া লেক
দীর্ঘমেয়াদে অনাকাঙ্ক্ষিত খরচ বাঁচাতে
মোটর বাইকের দুর্ঘটনা অন্য যে কোন যানবাহনের দুর্ঘটনা থেকে অত্যধিক গুরুতর হয়ে থাকে। তাছাড়া কখনো ছোট্ট একটি আঘাতও বড় কোন বিপদের কারণ হয়ে দাড়ায়। আর সেই বিপদ সামাল দিতে পাহাড়সম খরচের সম্মুখীন হতে হয়। অনেকেই মোটর বাইক দুর্ঘটনায় আক্রান্ত রোগীর হাসপাতালের খরচ চালাতে গিয়ে ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়েন। সঠিক সেফটি গিয়ারে বিনিয়োগ এই অনাকাঙ্ক্ষিত অবস্থা ও খরচ থেকে বাঁচাতে পারে।
কিভাবে সেফটি গিয়ার মোটর বাইক রাইডারের দেহকে রক্ষা করে
মাথা বাঁচাতে হেলমেট
হেলমেট পরা কখনই একজন রাইডারের জন্য ঐচ্ছিক বিষয় নয়। হেলমেট ছাড়া মাথা সমূহ বিপদের সামনে উন্মুক্ত হয়ে যায় বিধায় গুরুতর আঘাত পাওয়ার সম্ভাবনা বৃদ্ধি পায়। মানবদেহে মাথা সবচেয়ে সংবেদনশীল আর এ কারণেই বিচারব্যবস্থায় হেলমেট ছাড়া বাইক চালানো বে-আইনি।
আরও পড়ুন: সাজেক ভ্রমণ: ঘুরে আসুন মেঘে ঢাকা স্বর্গে
দুই পায়ের নিরাপত্তায় বুট
যে কোন দুর্ঘটনায় পা সবচেয়ে বিপজ্জনক অবস্থানে থাকে। মোটর বাইক ভালোভাবে চালানোর সময় ভারসাম্যের জন্য দুই পায়ের ভূমিকা অপরিসীম। পাশাপাশি আসন্ন বিপদ থেকে রক্ষার নিমিত্তে পূর্ব সতর্কতায়ও পায়ের ব্যবহার করেন মোটর বাইক রাইডাররা। তাই পা থাকতে হবে যথাসম্ভব সুরক্ষিত বন্ধনীতে। আর এর জন্য আছে বিশেষভাবে ডিজাইন করা বুট। এগুলো পড়ে যাওয়া বা অন্য রাইডারের সাথে সংঘর্ষের সময় পা-এর নিরাপত্তা নিশ্চিত করে।
হাড়ভাঙা ও ক্ষত-বিক্ষত হওয়া থেকে বাঁচাতে পোষাক
মোটরসাইকেল-এর দুর্ঘটনাগুলো অধিকাংশ ক্ষেত্রে আরোহীর হাড় ভাঙ্গা ও শরীর ক্ষত-বিক্ষত হওয়ার দিকে ধাবিত করে। মোটর বাইক রাইডারদের জন্য বিশেষ ভাবে বানানো জ্যাকেট, চেস্ট গার্ড, প্যান্ট এই দুর্ঘটনার গুরুতর প্রভাব থেকে রক্ষায় সহায়ক ভূমিকা পালন করে।
আরও পড়ুন: শীতের মৌসুমে বাইক রাইড করার প্রয়োজনীয় টিপস
শীতের মৌসুমে বাইক রাইড করার প্রয়োজনীয় টিপস
শারীরিক ব্যায়ামের কোন সময় নেই। শীত, গ্রীষ্ম, বর্ষা সব ক্ষেত্রেই ব্যায়ামের প্রয়োজন। তবে শীতের সময় ব্যায়ামটা বেশ উপভোগ্য। যদিও অনেকের ক্ষেত্রে এ সময়টাতে ঘর থেকে বের হওয়াটা বেশ শীতল হিমালয় জয় করার মতই হয়ে যায়। আর সেটা যদি হয় বাইক রাইডিং, সেখানে আরও অনেক কিছু রক্ষণাবেক্ষণের ব্যাপার চলে আসে। সেই প্রস্তুতির কথা জানিয়ে দিতেই এবারের ফিচার শীতে বাইক রাইডিং নিয়ে।
শীতের মৌসুমে বাইক রাইড-এর সমস্যাগুলো
ত্বক ঠান্ডা বাতাসের সংস্পর্শে আসা
প্রচণ্ড ঠান্ডা আবহাওয়া বাইক চালানোর সময় চামড়ায় রীতিমত সূঁচের মত ফোটে। বাইক দ্রুত গতিতে সামনে চলার সময় মুখসহ শরীরের অনাবৃত অংশগুলো বিপরীত দিক থেকে ধেয়ে আসা ঠান্ডা বাতাসের সংস্পর্শে আসে। বাতাসটা কতটুকু ঠান্ডা তার থেকে ত্বকের ক্ষতির দিকটা নির্ভর করে কতক্ষণ ধরে বাইক চলছে তার উপর। খুব স্বল্প সময়ের তীব্র শীতও শরীরের বিভিন্ন অংশের জন্য হুমকি হতে পারে।
অনেক সময় দীর্ঘক্ষণ বাইক চালানোয় শরীর গরম হয়ে বিন্দু বিন্দু ঘাম জমে যায়; এমনকি শীতেও। এই ঘামও ক্ষতির কারণ হতে পারে। তাছাড়া স্থান ভেদে বাতাসের গতিবেগের উপর নির্ভর করছে কতক্ষণ চোখ খোলা রেখে বাইক চালিয়ে যাওয়া যাবে।
আরও পড়ুন: বিভিন্ন পুষ্টিগুণে ভরা শীতের সবজি
পিচ্ছিল রাস্তাঘাট
শীতে শিশির জমে রাস্তা পিচ্ছিল হয়ে যাওয়া স্বাভাবিক ব্যাপার। মাঝে মাঝে কখনো হাল্কা বৃষ্টিপাত শীতের কোন রৌদ্রজ্জ্বল দিনে যে কোন বাইক রাইডারকে চমকে দেয়। তাই বাইকের চাকা যত ভালোই হোক না কেন; ভেজা চাকা নিয়ে কোন রকমে হয়ত সোজা অনেকটা পথ ছুটে যাওয়া যেতে পারে। কিন্তু বাঁক নেয়া বা ইউ টার্ন নিয়ে ঘুরে আসা? অবশ্যই কোন ভালো ধারণা হবে না। বাংলাদেশে তুষারপাত অমাবস্যার চাঁদের মত হলেও বাইক নিয়ে দীর্ঘ ভ্রমণে যাবার ক্ষেত্রে বিশেষত কোন মফস্বল শহরে বা গ্রামের বিস্তীর্ণ ঘাসে ভেজা মাঠ পেরবার সময় অত্যাধুনিক টায়ারের কাটাগুলোও অদ্ভূত আচরণ করতে পারে।
দৃষ্টিগোচরতা
অক্টোবরের মাঝামাঝি সময় থেকেই শুরু হতে থাকে ছোট দিন ও দীর্ঘ রাতের মৌসুম। তার মানে কম আলোতে বা কখনো সম্পূর্ণ অন্ধকারে বাইক চালানোটা হরহামেশাই ঘটবে। এমনকি বাইকের হেডলাইট এবং টেললাইটের উপরও এ সময় পুরোপুরি নির্ভর করা দুষ্কর। যেহেতু ইঞ্জিন চালিত বিভিন্ন ছোট-বড় গাড়ির সাথে রাস্তা শেয়ার করতে হচ্ছে, তাই কুয়াশার কারণে ক্ষণিকের অন্ধত্বও অনেক বড় বিপদ ডেকে আনতে পারে। এছাড়া খোলা ম্যানহল, রোড ব্রেকার, রাস্তার পাশের আইল্যান্ড, নুয়ে পড়া গাছের ডালপালা, ও ল্যাম্প পোস্টের পাশাপাশি হঠাৎ রাস্তা পারাপার হওয়া মানুষের ঝামেলা তো আছেই।
পড়ুন: নেপাল ভ্রমণ: শত বছরের তীর্থস্থান ঘুরতে হিমালয়ের দেশে
লবঙ্গের স্বাস্থ্যগত উপকারিতা ও ঝুঁকি
লবঙ্গ গাছের ফুলের শুকনো কুঁড়িই হলো লবঙ্গ। লবঙ্গ গাছের বৈজ্ঞানিক নাম সিজিজিয়াম অ্যারোমাটিকাম। এটি একটি চিরহরিৎ উদ্ভিদ যা গ্রীষ্মমণ্ডলীয় এবং উপক্রান্তীয় পরিবেশে বৃদ্ধি পায়। লবঙ্গ ইন্দোনেশিয়ার মালুকু দ্বীপপুঞ্জের (বা মোলুকাস) স্থানীয় এবং সাধারণত মশলা হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
এশিয়ান, আফ্রিকান, ভূমধ্যসাগরীয় এবং মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলির লবঙ্গ রান্নায় স্বাদ বাড়াতে ব্যবহার করা হয়। এর ভেষজ ও নানাবিধ পুষ্টিগুণের কারণে প্রক্রিয়াজাতকৃত খাবার, পানীয়, সাবান, টুথপেস্ট, ওষুধ, সুগন্ধী ইত্যাদিতে গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হিসেবেও ব্যবহার করা হয়। চলুন, লবঙ্গের উপকারিতার পাশাপাশি জেনে নিই কোন কোন ক্ষেত্রে তা ঝুঁকিপূর্ণ।
লবঙ্গের উপকারিতা
পেটের সমস্যা সমাধান
হজমশক্তি বাড়াতে এবং পাকস্থলি ও অন্ত্র সম্পর্কিত জটিলতা নিয়ন্ত্রণে লবঙ্গ অনেক কাজ দেয়। তদুপরি, ভাজা লবঙ্গ খাওয়া এমনকি তাদের চেতনানাশক বৈশিষ্ট্যের কারণে বমি হওয়া বন্ধ করতে পারে। এটি আলসারের বিরুদ্ধে একটি কার্যকর শোধনকারী হিসেবে কাজ করে।
আরও পড়ুন: লাল চাল: কেন খাবেন এবং কারা এড়িয়ে চলবেন?
যকৃতের সুরক্ষা
লবঙ্গে উচ্চ পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে, যা যকৃতকে রক্ষা করতে পারে। দীর্ঘমেয়াদে বিপাক যকৃতে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট কমিয়ে ফ্রি র্যাডিক্যাল উৎপাদন করে এবং লিপিড প্রোফাইল বাড়ায়। এক্ষেত্রে, লবঙ্গের নির্যাস তাদের ক্ষতিকর প্রভাবগুলি প্রতিরোধে সহায়ক ভূমিকা পালন করতে পারে।
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ
লবঙ্গ থেকে নির্যাস নির্দিষ্ট উপায়ে ইনসুলিন তৈরি করে, যা রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করতে পারে।
হাড় সংরক্ষণ
লবঙ্গের হাইড্রো-অ্যালকোহলিক নির্যাসগুলো হাড়ের ঘনত্ব এবং হাড়ের খনিজ উপাদান সংরক্ষণে সহায়ক হতে পারে। এমনকি অস্টিওপোরোসিসের ক্ষেত্রে হাড়ের প্রসারণ শক্তি বৃদ্ধি করতে পারে।
আরও পড়ুন: হার্ট অ্যাটাক: করণীয় এবং প্রতিরোধে যে সকল পদক্ষেপ নিতে হবে
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি
আয়ুর্বেদ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার বিকাশ ও সুরক্ষায় কার্যকরী একটি উদ্ভিদ হল লবঙ্গ। লবঙ্গের শুকনো ফুলের কুঁড়িতে এমন যৌগ রয়েছে যা শ্বেত রক্তকণিকার সংখ্যা বাড়িয়ে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করতে পারে।
দাঁতের স্বাস্থ্য সুরক্ষা
মাড়ির রোগ যেমন মাড়ির প্রদাহ এবং পেরিওডোনটাইটিস কমানোর জন্য লবঙ্গ খাওয়া যেতে পারে। লবঙ্গের নির্যাস মুখের রোগজীবাণুগুলোর বৃদ্ধিকে উল্লেখযোগ্যভাবে নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতা রাখে, যা মুখের বিভিন্ন রোগের জন্য দায়ী। দাঁতের ব্যথার জন্য, দাঁত তোলার সময় ব্যথা নিয়ন্ত্রণের জন্য লবঙ্গ সরাসরি মাড়িতে প্রয়োগ করা হয়। এছাড়া লবঙ্গ মুখ ও গলার প্রদাহের জন্য প্রতিরোধক হিসেবে ত্বকে ভালো কাজ দেয়।
মাথাব্যথা নিরাময়
লবঙ্গ ব্যবহারে মাথাব্যথা কমে যেতে পারে। কয়েকটি লবঙ্গের পেস্টের সাথে সামান্য লবণ মিশিয়ে তা এক গ্লাস দুধের সাথে যোগ করে তৈরি মিশ্রণ দ্রুত ও কার্যকরভাবে মাথাব্যথা কমায়।
আরও পড়ুন: কোলেস্টেরল কমানোর কার্যকরী ঘরোয়া উপায়
কোভিড-১৯: শিশু-কিশোর এবং বয়োজ্যেষ্ঠদের মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষায় আপনার করণীয়
কোভিড-১৯ মহামারির দরুণ দৈনন্দিন জীবনের পরিবর্তন আপনার পরিবারের শিশু, কিশোর এবং বয়োজ্যেষ্ঠদের মানসিক স্বাস্থ্যের উপর বিরূপ প্রভাব ফেলছে। যোগাযোগ মাধ্যমগুলোর প্রতিদিনকার করোনা আগ্রাসন এবং স্বাভাবিক জীবনযাত্রার স্থবিরতা অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দিচ্ছে। এ অবস্থায় আপনার নিজের মধ্যে ইতিবাচক মনোভাব পোষণ করার পাশাপাশি আপনার প্রিয় মানুষগুলোর মাঝে তা ছড়িয়ে দিতে পারেন। চলুন, কোভিড-১৯ এর চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় পরিবারের শিশু, কিশোর এবং বয়োজ্যেষ্ঠদের মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষায় করণীয় সম্পর্কে জেনে নেই।
করোনাকালে শিশুদের মানসিক বিকাশ
শিশুদের আবেগ প্রকাশের ধরন যে কোন বয়সের মানুষের থেকে আলাদা। কেউ অস্বাভাবিকভাবে নীরব হয়ে উঠে আবার কেউ অতিরিক্ত রাগ এবং চিৎকার করে। তাই পরিবারের বড়দের এক্ষেত্রে ধৈর্য্যের পরিচয় দিতে হবে।
কখনো কখনো খেলাধুলা ও চিত্রাঙ্কনের মত বিভিন্ন সৃজনশীল ক্রিয়াকলাপের মাধ্যমে তাদের মনের অবস্থা বোঝার চেষ্টা করুন।
শিশুদেরকে নিজেদের বিরক্তিকর অনুভূতি যেমন রাগ, ভয় এবং দুঃখ প্রকাশ করার জন্য ইতিবাচক উপায় খুঁজে পেতে সাহায্য করুন।
আরও পড়ুন: করোনা মহামারি থেকে শিশুকে নিরাপদ রাখবেন কীভাবে?
তাদেরকে যতটা সম্ভব একটি নির্দিষ্ট রুটিনের ভেতর রাখুন। প্রতিটি সময়ে তাদেরকে একটি করে কাজে নিযুক্ত রাখুন।
শিশুদেরকে সহিংসমূলক ঘটনা থেকে দূরে রাখুন। এরকম অভিজ্ঞতা তাদের স্বাভাবিক আচরণের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
তাদের বুঝিয়ে বলুন যে করোনা সংক্রমণের জন্য কাউকে দোষারোপ করা উচিত নয়। কোভিড -১৯ সম্পর্কে খবর দেখা, পড়াশোনা বা আলোচনা করার সময় সংক্রমণ ও মৃত্যুর কথা উপেক্ষা করে করোনা থেকে সুস্থ হয়ে উঠার ঘটনাগুলোর প্রতি গুরুত্বারোপ করুন। অন্যান্য সৃজনশীল ও মজাদার বিষয়গুলোর প্রতি তাদের আকৃষ্ট করুন।
যদি পরিবারে কেউ অসুস্থ হয় বা কাউকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়, অথবা যদি কোন মৃত্যু হয়, তাহলে শিশুরা অতিরিক্ত উদ্বেগ অনুভব করতে পারে। এমতাবস্থায় যতটুকু সম্ভব তাদেরকে সবকিছুর আড়ালে কোন অভিভাবকের সাথে রাখার চেষ্টা করুন। ভয় কাটানোর জন্য তাদের সাথে কথা বলে তাদেরকে সহজ রাখার চেষ্টা করুন।
আরও পড়ুন: সাইক্লিং, দৌড় কিংবা সাঁতার: ওজন কমাতে কোনটি বেশি কার্যকরী?
শিশু দুর্ব্যবহার করলে বা কোন ঝুঁকিপূর্ণ আচরণ করলে শান্তভাবে কথা বলুন। দুরন্ত শিশুদের মধ্যে অনেকেই স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি ক্রোধ প্রকাশ করে। এক্ষেত্রে যখন তারা শান্ত হয়ে যাবে তখন ধীরে ধীরে জিজ্ঞাসা করুন তারা কেমন অনুভব করছে। সামঞ্জস্যপূর্ণ এবং শান্ত্বনামূলক উপায়ে বুঝিয়ে বলুন যে তারা যে আচরণ করেছিলো তা ঠিক নয়। নেতিবাচক আচরণের পিছনে কারণ বোঝার চেষ্টা করুন।
পারস্পরিক বিশ্বাস ও শ্রদ্ধার ভিত্তিতে তাদের সাথে সম্পর্ক গড়ে তুলুন। তাদের খারাপ লাগা সময়গুলোতে তাদেরকেই জিজ্ঞেস করুন পরিবারের বাইরে তাদের পছন্দের কারো সাথে দেখা করবে কিনা।
শিশুদেরকে ব্যক্তিগত নিরাপত্তার নিয়ম সম্পর্কে শেখান। তাদের শরীরের ব্যাপারে যে কোনো অস্বস্তিকর স্পর্শ বা অনিরাপদ অঙ্গভঙ্গির ব্যাপারে তাদের সতর্ক করুন। তাদের অভিযোগগুলো মনযোগ দিয়ে শুনুন।
আপনার শিশু সম্পর্কিত যে কোন বিশেষ প্রয়োজনে কল করুন চাইল্ডলাইন ১০৯৮-তে।
আরও পড়ুন: বর্ষা মৌসুমে যেসব পুষ্টিকর সবজি খেতে পারেন
করোনাকালে কিশোর-কিশোরীদের মানসিক সমর্থন
করোনাভাইরাস সংক্রমণ কিশোর-কিশোরীদের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে প্রভাবিত করতে পারে। বয়সন্ধিঃকাল জীবনের খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি সময়। এ সময়ে করোনা প্রাদুর্ভাব মানসিক বিপর্যয় সৃষ্টি করতে পারে যার মানসিক আঘাত সারা জীবনভর থেকে যেতে পারে।
যে কোন হৃদয়বিদারক ঘটনা, মানসিক চাপ কিশোর-কিশোরীদের অতিরিক্ত উদ্বেগের কারণ হতে পারে, যার প্রতিফলন ঘটতে পারে তাদের খাওয়া-দাওয়ায় বা ঘুমের অভ্যাসে। এমনকি পারস্পরিক কথাবার্তার সময় মনোযোগ এবং একাগ্রতার অভাব হতে পারে। এ সময় তাদের অস্থিরতা কাটাতে তাদেরকে সঙ্গ দিন। তাদেরকে মন খুলে কথা বলার জায়গা তৈরি করে দিন।
আরও পড়ুন: লাল চাল: কেন খাবেন এবং কারা এড়িয়ে চলবেন?
এই মহামারির সময় মানুষের অসুস্থ হওয়া রোধকল্পে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপগুলোতে কিশোর-কিশোরীদের ভালো রোল মডেল হতে উৎসাহিত করুন। যদি তারা প্রায়ই হাত ধোয়, অন্যদের থেকে কমপক্ষে ৩ ফুট দূরে থাকে এবং নিজেদের এবং অন্যদের সুরক্ষার জন্য সর্বত্র মাস্ক পরে, তাহলে ছোট বাচ্চারা এমনকি তাদের সমবয়সীরাও তাদেরকে দেখে শিখবে।
কিশোর-কিশোরীদের স্বাস্থ্যকর খাবার খেতে, শারীরিকভাবে সক্রিয় থাকতে এবং প্রতিনিয়ত নতুন কিছু শিখতে অনুপ্রেরণা দিন। তাদেরকে এই নীতি অনুসরণ করতে সাহায্য করুন যে, এ সময়টি খারাপ নয় বরং ভবিষ্যতের জন্য নিজেকে তৈরির মোক্ষম সময়। এটি তাদের সুস্থ ও মনোযোগী থাকতে সাহায্য করবে। শুধু তাই নয়, অনলাইন মাধ্যমগুলোতে নতুন কিছু শেখার মাধ্যমে নিজেদের উপার্জন শুরু করতে পারবে। এই করোনা মহামারীর মধ্যে অনেক কিশোর-কিশোরী নিজেদের দক্ষতা কাজে লাগিয়ে ইউটিউব চ্যানেল পরিচালনা করছে।
স্মার্টফোন, ভিডিও চ্যাট, সোশ্যাল মিডিয়া, এমনকি ভিডিও গেমের মাধ্যমে কিশোর-কিশোরীদের বন্ধু-বান্ধব এবং আত্মীয়-স্বজনের সাথে সময় কাটানোর ব্যবস্থা করে দিন। স্কুল-কলেজগুলো অনলাইন ক্লাসের মাধ্যমে তাদের সামাজিক এবং মানসিক চাহিদাগুলোকে পরিপূর্ণ করার জন্য শিক্ষনীয় নির্দেশনা দিতে পারে।
আরও পড়ুন: মশার উপদ্রব থেকে সুরক্ষিত থাকার কিছু সহজ ঘরোয়া উপায়
করোনাকালে বয়োজ্যেষ্ঠদের মানসিক স্বাস্থ্যের সুরক্ষা
বিষণ্নতা এবং গুরুতর উদ্বেগ বার্ধক্যের ক্ষেত্রে কোন স্বাভাবিক ব্যাপার নয়। বয়স্করা করোনাভাইরাসের প্রতি বেশি সংবেদনশীল। এই ব্যাপারটি তাদের মধ্যে অনিশ্চয়তা, ভয় ও হতাশা উদ্রেকের মাধ্যমে তাদেরকে চূড়ান্তভাবে বেঁচে থাকার আশা হারিয়ে ফেলার দিকে ধাবিত করতে পারে। তাই এর জন্য তাৎক্ষণিক ক্লিনিকাল চিকিৎসা এবং সামাজিক সহায়তা আবশ্যক।
বর্তমান সংকট সামাজিক দূরত্বের মাধ্যমে বিচ্ছিন্নতা তৈরি করে প্রত্যেকের রুটিনকে বদলে দিচ্ছে। এতে স্বাভাবিক সামাজিক সহায়তা এবং বৃদ্ধ মানুষগুলোর অন্যদের সাথে যোগাযোগ হ্রাস পাচ্ছে। পরিবার এবং প্রতিবেশী এখন যে কোনও নিয়মিত যোগাযোগের গুরুত্বপূর্ণ উৎস হিসাবে কাজ করতে পারে। এমনকি সামাজিক পরিষেবাগুলোর (যেমন খাবার সরবরাহ কর্মী) সাথে সরাসরি যোগাযোগের ব্যবস্থা করে দিতে পারেন। আসলে সামাজিক দূরত্ব মানে তো পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন করে দেয়া নয়।
বার্ধক্যের সময়ে মানুষ বন্ধু বা পরিবারের কারো মৃত্যু, ব্যক্তি স্বাধীনতা ও আর্থিক বিপর্যয় এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রে কর্মক্ষমতা হারিয়ে ফেলা প্রভৃতি অভিজ্ঞতাগুলোর সম্মুখীন হয়। যদিও অনেকেরই দুঃখ এবং ক্ষতিগুলোকে মানিয়ে নেয়ার ক্ষমতা থাকে। তবুও কারো কারো জন্য শোক কাটানোটা জটিল হয়ে উঠতে পারে। এই অভিজ্ঞতাগুলোর সাথে কোভিড-১৯ মহামারির চাপ মানসিক স্বাস্থ্যের অবনতি ঘটাতে পারে। তাই এ সময় আপনি ছায়া হয়ে তাদের পাশে দাঁড়ান। তাদেরকে শুধু আশা দেয়া নয়, তাদের মধ্যে এই নিশ্চয়তার অনুভূতিটা জাগ্রত রাখুন যে, তাদের বিভিন্ন ধরনের শারীরিক বা মানসিক সমস্যায় আপনি তাদের সাথে আছেন।
আরও পড়ুন: হার্ট অ্যাটাক: করণীয় এবং প্রতিরোধে যে সকল পদক্ষেপ নিতে হবে
তাদের প্রতিদিন রুটিনে যেন ব্যাঘাত না ঘটে সেদিকে খেয়াল রাখুন। বিশেষ করে খাওয়া, ওষুধ নেয়া, ব্যায়াম করা ইত্যাদির প্রতি জোর দিন। এছাড়া প্রতিবেশীদের সাথে আড্ডাতেও তাদেরকে উদ্বুদ্ধ করুন। অবশ্যই করোনাভাইরাস নিয়ে ইতিবাচক আলোচনাতে উৎসাহ দিন।
এছাড়া আপনার বন্ধু, প্রতিবেশী এবং আত্মীয়দের মধ্যে যারা বৃদ্ধ তাদের নিয়মিত খোঁজ-খবর নিন।
যেহেতু অনেকে ম্যাসেজ বিনিময় এবং সোশ্যাল মিডিয়া সংযোগে সাবলীল নাও হতে পারে, তাই তাদের সাথে সরাসরি কল বা ভিডিও-চ্যাট করুন।
এই সময়টা তারা কীভাবে পার করছে, তাদের রুটিনে কেমন পরিবর্তন করতে হতে পারে এবং হতাশা মোকাবিলায় তারা কী ধরনের কাজ করছে তা জিজ্ঞাসা করুন।
আরও পড়ুন: কোলেস্টেরল কমানোর কার্যকরী ঘরোয়া উপায়
কোভিড চলাকালীন তাদেরকে কিছু মজার ক্রিয়াকলাপ চালিয়ে যেতে উৎসাহিত করতে পারেন। যেমন: দৈনন্দিন হাঁটা, গান শোনা বা বাজানো, প্রিয় গল্পের বই পড়া, হাস্যরস উপভোগ করা, ধাঁধা, খেলা, ছোট ছোট বিভিন্ন সামাজিক কার্যক্রম এবং ধ্যান বা প্রার্থনা।
তাদের অভিজ্ঞতা এবং মেধার ভিত্তিতে তাদের কাছ থেকে আপনার জীবনের জন্য বিভিন্ন দিক-নির্দেশনা নিন। তাদের কাজ থেকে পাওয়া যে কোন সহায়তার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করুন। সর্বোপরি, তাদের জীবন -যাপনের পদ্ধতিতে কোন জিনিসটি আপনার ভালো লাগে তা ব্যক্ত করুন।
পরিশেষে, কোভিড-১৯ এর চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় শিশু, কিশোর এবং বয়োজ্যেষ্ঠদের মানসিক স্বাস্থ্য রক্ষার্থে তাদেরকে স্বাবলম্বী করে তুলতে হবে। এর ফলে গুরুত্বপূর্ণ কাজের ব্যস্ততায় আপনি ঘরের বাইরে থাকলেও তারা নিজেদের ব্যাপারে খেয়াল রাখতে পারবে। এমনকি, এই করোনাকালীন অনিশ্চিত অবস্থায় যখন আপনি অসুস্থ হয়ে পড়বেন, তখন তারা আপনার যত্ন নিতে পারবে।
আরও পড়ুন: বর্ষায় পোকামাকড়ের উপদ্রব থেকে বাঁচতে করণীয় সম্পর্কে জেনে নিন
হার্ট অ্যাটাক: করণীয় এবং প্রতিরোধে যে সকল পদক্ষেপ নিতে হবে
যখন হার্টের পেশীর একটি অংশ পর্যাপ্ত রক্ত পায় না, ঠিক তখনি হার্ট অ্যাটাক হয়। রক্ত প্রবাহ স্বাভাবিক হতে যত বেশি সময় যায়, হার্টের পেশীর তত বেশি ক্ষতি হয়। সাধারণত করোনারি ধমনীর মারাত্মক খিঁচুনি বা আকস্মিক সংকোচনের ফলে হৃদপিণ্ডের পেশীতে রক্ত প্রবাহ বন্ধ হতে পারে। চলুন, ভয়াবহ এই হৃদরোগটির লক্ষণ ও প্রতিরোধের পাশাপাশি জেনে নিই- হঠাৎ হার্ট অ্যাটাক হলে তাৎক্ষণিকভাবে কি করবেন।
হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণসমূহ
দেহের বিভিন্ন অংশে ব্যথা বা অস্বস্তি
বেশিরভাগ হার্ট অ্যাটাক-এর সময় বুকের মাঝখানে বা বাম দিকে ব্যথা বা অস্বস্তি শুরু হয়, যা কয়েক মিনিটের বেশি স্থায়ী হয় অথবা কখনো হঠাৎ চলে যেয়ে আবার ফিরে আসে। কখনও কখনও এই অস্বস্তি ঘন্টাখানেক পর বা এমনকি এক দিন পরে ফিরে আসে। এমনটা হলে বুঝতে হবে যে, আপনার হার্টের পেশী পর্যাপ্ত অক্সিজেন পাচ্ছে না।
বুক ব্যথা হার্ট অ্যাটাকের একটি সাধারণ লক্ষণ। অনেকে এই ব্যথাকে ব্যথা বলে না বলে বুকে চাপ অনুভব করছে বলে। কিন্তু এটা বোঝা গুরুত্বপূর্ণ যে, বুক ব্যথা প্রতিটি হার্ট অ্যাটাকের সময় নাও হতে পারে।
অনেকেই হার্ট অ্যাটাকের সময় তলপেটের উপরের দিক, কাঁধ, পিঠ, ঘাড়/গলা, দাঁত বা চোয়াল ইত্যাদি স্থানে ব্যথা অনুভব করে। মহিলাদের ক্ষেত্রে বিশেষ করে তলপেটে এবং বুকের নিচের অংশে ব্যথা করে। পিঠের উপরের দিকে ব্যথা সাধারণত পুরুষদের তুলনায় মহিলাদের ক্ষেত্রেই বেশি দেখা যায়।
পড়ুন কোলেস্টেরল কমানোর কার্যকরী ঘরোয়া উপায়
সারাদিন ধরে প্রচণ্ড ঘাম
আপনি যদি ব্যায়াম না করেন, তাহলে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি ঘাম হওয়া আপনার হার্ট অ্যাটাকের প্রাথমিক কারণ হতে পারে। জমে থাকা ধমনীর মধ্য দিয়ে রক্ত পাম্প করতে যেয়ে আপনার হৃদযন্ত্র বেশি পরিশ্রম করে, কাজেই শরীরের তাপমাত্রার ভারসাম্য ঠিক রাখতে আপনার শরীর বেশি ঘাম ছেড়ে দিতে থাকে।
অনেক সময় রাতের বেলা অতিরিক্ত ঘামের জন্য চাদর ভিজে যায় বা ঘুম হয় না। এটিও হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণ হতে পারে, বিশেষ করে মহিলাদের মধ্যে।
পড়ুন করোনা মহামারি থেকে শিশুকে নিরাপদ রাখবেন কীভাবে?
প্রচণ্ড ক্লান্তি ও নিঃশ্বাসের দূর্বলতা
হার্ট অ্যাটাকের সময় বুকে অস্বস্তির সাথে অথবা আগে নিঃশ্বাসের দুর্বলতাও অনুভূত হতে পারে। মুলত রক্ত প্রবাহের একটি এলাকা বন্ধ থাকার কারণে আপনার হৃদযন্ত্র অতিরিক্ত চাপের ফলে পাম্প করার চেষ্টা করে। ফলে আপনার প্রচন্ড অবসন্ন অনুভূত হয়। যদি আপনি প্রায়শই বিনা কারণে ক্লান্ত হন, তাহলে ব্যাপারটিকে কোনভাবেই উপেক্ষা করা চলবে না।
ক্লান্তি এবং শ্বাসকষ্ট পুরুষদের তুলনায় মহিলাদের মধ্যে বেশি দেখা যায় এবং এমনকি হার্ট অ্যাটাকের কয়েক মাস আগে থেকেও শুরু হতে পারে।
আপনার শ্বাস -প্রশ্বাস এবং হৃদযন্ত্রের কার্যকরীভাবে রক্ত পাম্পিং; পরস্পর খুব ঘনিষ্ঠভাবে সম্পর্কিত। আপনার হৃদযন্ত্র রক্ত পাম্প করে যাতে এটি আপনার টিস্যুতে রক্ত সঞ্চালন করতে এবং ফুসফুস থেকে অক্সিজেন পেতে পারে। হার্ট অ্যাটাকের ক্ষেত্রে যখন আপনার হার্ট ভালভাবে রক্ত পাম্প করতে পারে না, তখনি শ্বাসকষ্ট শুরু হয়।
পড়ুন কঠোর ডায়েটের স্বাস্থ্য ঝুঁকিসমূহ জেনে নিন
দ্রুত হৃদস্পন্দন
দ্রুত হৃদস্পন্দনের সময় মনে হয় হৃদযন্ত্রটা বুকের ভেতর জোরে জোরে ধাক্কা মারছে বা বুক ধড়ফড় করছে। আপনার হৃদযন্ত্র এবং শরীর আপনার শরীরের সর্বত্রে রক্ত সঞ্চালনের জন্য একটি সামঞ্জস্যপূর্ণ ও নিরবচ্ছিন্ন বিটের উপর নির্ভর করে। যে কোন একটি ছন্দপতন আপনার হার্ট অ্যাটাকের কারণ হতে পারে।
মাথা ঘোরা ও বমি বমি ভাব বা বমি
হার্ট অ্যাটাকের আগে মাথা ঘোরা অনুভূত হতে পারে। অতিরিক্ত পরিশ্রম করার সময় আপনি মাথা ঘুরে পড়ে যেতে পারেন। হার্ট অ্যাটাকের অন্যান্য উপসর্গগুলোর মধ্যে বমি বমি ভাব বা বমিও অন্তর্ভুক্ত। বিশেষত মহিলাদের এই উপসর্গ দেখা দেয়ার সম্ভাবনা বেশি।
পড়ুন বর্ষা মৌসুমে যেসব পুষ্টিকর সবজি খেতে পারেন
হার্ট অ্যাটাকের সময় তাৎক্ষণিকভাবে করণীয়
তাৎক্ষণিকভাবে হার্ট অ্যাটাক বন্ধ কোন মতেই সম্ভব নয়। কিন্তু এসময় জরুরি চিকিৎসার সরণাপন্ন হওয়ার পাশাপাশি নিচের পদক্ষেপগুলো নেওয়া যেতে পারে।
১৬২৬৩-তে কল করা
এটি হার্ট অ্যাটাকের সময় সেবা পাওয়ার দ্রুততম ও নিরাপদ উপায়। ১৬২৬৩ তে কল করে ২ প্রেস করে সরাসরি অ্যাম্বুলেন্সের পরিষেবা নিতে পারেন।
দরজা-জানালা খুলে আরামদায়ক বিশ্রামের ব্যবস্থা
হার্ট অ্যাটাকে আক্রান্ত ব্যক্তি বাড়ির ভেতর থাকলে তার আশেপাশের লোকজন ঘরের দরজা-জানালা খুলে বাতাস প্রবেশের ব্যবস্থা করে দিতে হবে। এছাড়া এতে অ্যাম্বুলেন্স দল যতদ্রুত সম্ভব বাড়ির ভেতর প্রবেশ করে আক্রান্ত ব্যক্তিকে অ্যাম্বুলেন্সে নিয়ে যেতে পারবে।
অ্যাম্বুলেন্স আসা পর্যন্ত আক্রান্ত ব্যক্তিটিকে একটি আরামদায়ক অবস্থানে বিশ্রাম নেয়ার ব্যবস্থা করুন। বিশ্রাম হার্টের চাপ কমায় কারণ এটি শরীরের সর্বত্র রক্ত পাম্প করার চেষ্টা করে।
পড়ুন মশার উপদ্রব থেকে সুরক্ষিত থাকার কিছু সহজ ঘরোয়া উপায়
আঁটসাঁট পোশাক আলগা করা
আঁটসাঁট পোশাক, যেমন নেকটি বা বেল্টগুলি আলগা করে দিন। এতে আক্রান্ত ব্যক্তির শ্বাস নেওয়া সহজ হবে। এছাড়া অ্যাম্বুলেন্স দলের জন্যও ঢিলেঢালা জামাকাপড় পরিহিত ব্যক্তিকে দ্রুত অ্যাম্বুলেন্সে নেয়া সহজ হবে।
প্রাথমিক সিপিআর
আক্রান্ত ব্যক্তিতে ঘুমিয়ে পড়া থেকে বিরত রাখুন। তার সাথে অবিরত কথা বলতে থাকুন। মাথাটি দেহের সাথে ৩০-৪৫ ডিগ্রি কোণ করে উচু অবস্থায় রাখুন। এতে তার শ্বাস-প্রশ্বাস নেয়া সহজ হবে। আক্রান্ত ব্যক্তিকে চিৎ করে শুইয়ে দিন। তারপর আপনার এক হাতের আঙ্গুলগুলোর ফাঁকে হাতের উল্টো পিঠ দিয়ে অন্য হাতের আঙ্গুলগুলো ঢুকিয়ে (এই পদ্ধতি কার্ডিয়াক পালমোনারি রিসাসিটেশন (সিপিআর) হিসেবে বহুল পরিচিত) আপনার পুরো শরীরের ভর আলিঙ্গনবদ্ধ দুই হাতের উপর চাপিয়ে আক্রান্ত ব্যক্তির বুকের মাঝখানে পাম্প করতে থাকুন। ১৬-১৮ সেকেন্ড ধরে ৩০ বার এভাবে পাম্প করুন। রোগীর নাক দু’আঙ্গুলে চেপে চিবুক উচু করে দিন। তারপর আবার বুকে পাম্প শুরু করুন। কমপক্ষে পাঁচবার প্রক্রিয়াটি পুনরাবৃত্তি করুন।
পড়ুন সাইক্লিং, দৌড় কিংবা সাঁতার: ওজন কমাতে কোনটি বেশি কার্যকরী?
হার্ট অ্যাটাক প্রতিরোধের উপায়
সুষম খাদ্য গ্রহণ
সুষম খাদ্য খাওয়া আপনার হার্ট অ্যাটাক হওয়ার সম্ভাবনা কমাতে সাহায্য করে। সুষম খাবারের তালিকায় ফল, সবজি, শাকসবজি, বাদাম, চর্বিহীন প্রোটিন এবং মাছ অন্তর্ভুক্ত থাকে। পাশাপাশি প্রতিদিনের খাবারে প্রক্রিয়াজাত মাংস, পরিশোধিত কার্বোহাইড্রেট এবং মিষ্টি পানীয়ের পরিমাণও সীমিত করা উচিত।
শারীরিক ব্যায়াম
শারীরিকভাবে সক্রিয় থাকা হার্ট অ্যাটাক প্রতিরোধে সাহায্য করে। প্রাপ্তবয়স্কদের সম্ভব হলে প্রতি সপ্তাহে কমপক্ষে ১৫০ মিনিট মাঝারি বা ৭৫ মিনিট জোরালো ব্যায়াম করার চেষ্টা করা উচিত।
আর যারা ইতিমধ্যে সক্রিয়, তাদের কার্যকলাপের মাত্রা ধীরে ধীরে বৃদ্ধি করতে পারেন।
পড়ুন জেনে নিন ত্বক ফর্সাকারী ক্রিমের ক্ষতিকর দিকগুলো!
পরিমিত ওজন বজায় রাখা
পরিমিত ওজন বজায় রাখা হার্ট অ্যাটাক প্রতিরোধে একটি বড় ভূমিকা পালন করে। আপনার উচ্চতা এবং বয়স অনুসারে আপনার ওজন কতটা হওয়া উচিত তা পরীক্ষা করে নিতে পারেন। এটি আপনার ক্যালোরি গ্রহণ এবং প্রয়োজনে ব্যায়ামের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করবে।
ধূমপান পরিত্যাগ
যে কোন মূল্যেই ধূমপান বন্ধ করা উচিত। সিগারেট বা বাষ্পের মতো তামাকজাত দ্রব্যের ধোঁয়া হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকিতে ফেলে দিতে পারে।
অন্যান্য শারীরিক সমস্যার চিকিৎসা
হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বাড়াতে পারে এমন স্বাস্থ্যের অবস্থার চিকিৎসা করা হার্ট অ্যাটাক প্রতিরোধের আরেকটি উপায়। এই অবস্থার মধ্যে উচ্চ রক্তচাপ, উচ্চ কোলেস্টেরল, এবং ডায়াবেটিস বা উচ্চ রক্ত শর্করা অন্তর্ভুক্ত।
পড়ুন যদি স্লিম থাকতে চান রোজ ৫ রকমের বাদাম খান
পর্যাপ্ত ঘুম
সুস্বাস্থ্যের জন্য সঠিক পরিমাণে ঘুমের কোন বিকল্প নেই। এমনকি এর ফলে উচ্চ রক্তচাপ ও টাইপ-২ ডায়াবেটিস হওয়ার ঝুঁকি কমে যায়, যা হার্ট অ্যাটাকের কারণগুলোর মধ্যে একটি। ১৮-৬০ বছর বয়সী বেশিরভাগ প্রাপ্তবয়স্কদের প্রতি রাতে ৭ বা তার বেশি ঘন্টা ঘুম প্রয়োজন।
পর্যাপ্ত পানি পান করা
প্রচুর পানি পান ডিহাইড্রেশন এড়াতে সাহায্য করে। রক্তরসে পানির পরিমাণ ৯০-৯২ শতাংশ তাই পানিশূন্যতাতে হৃদযন্ত্র ও সারা দেহে রক্ত সঞ্চালনে ব্যাঘাত ঘটে যা হার্ট অ্যাটাকের দিকে নিয়ে যেতে পারে।
হার্ট অ্যাটাক নারী -পুরুষ উভয়েরই যেকোন বয়সে হতে পারে। কিন্তু বয়স বাড়ার সাথে সাথে এর ঝুঁকি বাড়তে থাকে। কিন্তু জীবন ধারণ নিয়ে একটু সতর্ক হলেই আপনি এই ঝুঁকি এড়াতে পারবেন। স্বাস্থ্য প্রত্যেকের কাছেই মহামূল্যবান সম্পদ। তাই শত কষ্ট হলেও এই সম্পদটি রক্ষার জন্য রুটিন মাফিক চলা উচিত।
পড়ুন জেনে নিন ডেঙ্গু জ্বর থেকে সুরক্ষার উপায় ও করণীয়
কোলেস্টেরল কমানোর কার্যকরী ঘরোয়া উপায়
কোলেস্টেরল একটি মোমের মতো পদার্থ যা যকৃতে উৎপন্ন হয়। এটি কোষের দেয়াল নমনীয় রাখতে সাহায্য করে এবং বেশ কয়েকটি হরমোন তৈরির জন্য প্রয়োজন। মানবদেহ তার প্রয়োজনীয় সমস্ত কোলেস্টেরল নিজেই তৈরি করে, তাই খাবারের মাধ্যমে কোলেস্টেরল যোগানের দরকার হয় না। বরং স্যাচুরেটেড ফ্যাট এবং ট্রান্স ফ্যাট সমৃদ্ধ প্রচুর খাবার খাওয়া উচ্চ কলেস্টেরল এবং হৃদরোগের কারণ হতে পারে। চলুন জেনে নিই- কীভাবে আপনি ঘরে থেকেই শরীরে কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন।
কোলেস্টেরল কমানোর কার্যকরী ঘরোয়া উপায়
সাদা আটার পরিবর্তে লালা আটার রুটি বেছে নিন
লালা আটার রুটি বিভিন্ন ধরণের রোগবালাই যেমন টাইপ-২ ডায়াবেটিস, হৃদরোগ এবং ক্যান্সারের ঝুঁকি হ্রাস করে। এ রুটি থেকে ফাইবার, ভিটামিন বি, খনিজ যেমন দস্তা, আয়রন, ম্যাগনেসিয়াম এবং ম্যাঙ্গানিজ পাওয়া যায়।
আপনার ডায়েটে গ্রীক দই যোগ করুন
গ্রীক দই নিয়মিত দইয়ের চেয়ে ঘন এবং অধিক সরের আস্তরণ সম্পন্ন। এতে নিয়মিত দইয়ের চেয়ে চর্বি এবং প্রোটিন বেশি থাকে। প্রকৃতপক্ষে, এটি একই পরিমাণে নিয়মিত দই থেকে দ্বিগুণ পর্যন্ত প্রোটিন ধারণ করে। প্রতি ১০০ গ্রাম গ্রীক দইয়ে ১০ গ্রাম পর্যন্ত প্রোটিন থাকে।
এটি খাওয়ার পর দীর্ঘক্ষণ আপনার পাকস্থলী পরিপূর্ণ মনে হবে। এতে সেই সময়টুকু ধরে আপনার ক্ষুধা নিবারণ হবে। ডায়েট করার জন্য গ্রীক দই কার্যকরী একটি খাবার।
পাশাপাশি এতে নিয়মিত দইয়ের তুলনায় কম কার্বোহাইড্রেট এবং কম ল্যাকটোজ থাকে। এটি এমন লোকদের জন্য উপযুক্ত যারা কম কার্ব ডায়েট অনুসরণ করে বা যাদের ল্যাকটোজ নিতে সমস্যা হয়।
আরও পড়ুন: কঠোর ডায়েটের স্বাস্থ্য ঝুঁকিসমূহ জেনে নিন
সকালের নাস্তায় ডিম খান
ডিম যথেষ্ট স্বাস্থ্যকর, বিশেষ করে সকালের নাস্তায়। ডিমের মধ্যে থাকে উচ্চমানের প্রোটিন ও প্রয়োজনীয় পুষ্টি সমৃদ্ধ কোলিন যা অন্য খাবারে পর্যাপ্ত পরিমাণে পাওয়া যায় না। বিভিন্ন ধরনের ক্যালোরি সম্পন্ন নাস্তার সাথে তুলনা করলেও ডিমের অবস্থান সব দিক থেকে উপরে থাকে।
সকালে ডিম খাওয়া পাকস্থলি ভরার অনুভূতি বাড়ায়। তাই এটি ওজন কমানোর জন্য বেশ সহায়ক।
প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবারের পরিমাণ বাড়ান
প্রোটিনকে প্রায়ই পুষ্টির রাজা বলা হয়ে থাকে। যে হরমোনগুলো মানুষের ক্ষুধা এবং তৃপ্তি অনুভূতি নিয়ন্ত্রণ করে, এই খাদ্য উপাদানটি সেগুলোকে প্রভাবিত করার ক্ষমতা রাখে। কাজেই এটি ম্যাক্রোনিউট্রিয়েন্টে ভরা থাকে।
প্রোটিন পেশীর ভর ধরে রাখতে সাহায্য করে এবং প্রতিদিন পোড়ানো ক্যালোরির সংখ্যাও সামান্য বৃদ্ধি করে। পেশী ভর হ্রাস রোধ করার জন্যও এটি গুরুত্বপূর্ণ, যা সাধারণত ওজন হ্রাস এবং বয়স বৃদ্ধির সাথে সাথে হতে পারে।
প্রোটিনের ভালো উৎসগুলোর মধ্যে দুগ্ধজাত পণ্য, বাদাম, বাদামের মাখন, ডিম, মটরশুটি, চর্বিহীন মাংস অন্যতম।
আরও পড়ুন: বর্ষা মৌসুমে যেসব পুষ্টিকর সবজি খেতে পারেন
পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করুন
খাবার পানি ওজন হ্রাস করতে পারে এবং প্রতিদিন পোড়ানো ক্যালোরিগুলোর সংখ্যা সামান্য বাড়িয়ে তুলতে পারে। খাবারের আগে পানি পান করা ক্ষুধা এবং খাবারের পরিমাণ কমিয়ে আনার ক্ষেত্রে সহায়ক।
এমনকি অন্যান্য পানীয়র পরিবর্তে সাধারণ খাবার পানি পান চিনি যুক্ত এবং অন্যান্য ক্যালোরি যুক্ত খাবার গ্রহণের পরিমাণ হ্রাস করতে সাহায্য করে।
ভাজার পরিবর্তে রোস্ট করুন
গ্রিলিং, ফ্রাইং এবং ডিপ ফ্রাইং সবই মাংস এবং মাছ তৈরির জনপ্রিয় পদ্ধতি। এই ধরনের রান্নার সময়, বেশ কিছু বিষাক্ত যৌগ গঠিত হয়। যেমন, পলিসাইক্লিক সুগন্ধযুক্ত হাইড্রোকার্বন, উন্নত গ্লাইকেশন জাত বস্তু, হেটারোসাইক্লিক অ্যামাইনস। এই সমস্ত যৌগগুলো ক্যান্সার এবং হৃদরোগের কারণ হতে পারে।
স্বাস্থ্যকর রান্নার পদ্ধতিগুলোর মধ্যে বেকিং, ব্রোয়লিং, পোচিং, প্রেশার কুকিং, ফুটানো, গরম ভাপে সিদ্ধ করা প্রভৃতি অবলম্বন করতে পারেন। এগুলো ক্ষতিকারক যৌগ গঠন করে না, বরং খাবারকে আরো স্বাস্থ্যকর করে তুলে।
ভাজা আলুর উপর সিদ্ধ আলুকে অগ্রাধিকার দিন
১০০ গ্রাম সিদ্ধ আলুতে ৯৩ ক্যালোরি থাকে, যা একই পরিমাণ ভাজা আলুতে থাকে ৩ গুণেরও বেশি (৩৩৩ ক্যালোরি) তদুপরি, বেশি ভাজা আলুতে সাধারণত ক্ষতিকারক যৌগ থাকে যেমন অ্যালডিহাইড এবং ট্রান্স ফ্যাট।
আরও পড়ুন: সাইক্লিং, দৌড় কিংবা সাঁতার: ওজন কমাতে কোনটি বেশি কার্যকরী?
শাক জাতীয় খাবারকে অধিক গুরুত্ব দিন
শাক খাওয়ার অভ্যাস গড়ার একটি ভাল উপায় হল ক্ষুধার মুহুর্তে সর্বপ্রথম সেগুলো খাওয়া। ফলে প্রচন্ড ক্ষুধার্ত অবস্থায় আপনি সব শাক শেষ করে ফেলবেন। এতে করে পরবর্তীতে অস্বাস্থ্যকর খাবারগুলো এড়ানো হবে।
এই কাজটি আপনাকে সামগ্রিকভাবে কম এবং স্বাস্থ্যকর ক্যালোরি সম্পন্ন খাবারে অভ্যস্ত করে তুলবে। পাশাপাশি ওজন হ্রাস করতে সাহায্য করবে।
কার্ব-সমৃদ্ধ খাবারের আগে সবজি খাওয়া রক্তে শর্করার মাত্রায় ইতিবাচক প্রভাব ফেলে। এটি রক্তের প্রবাহে কার্বস শোষিত হওয়ার গতি হ্রাস করে। এছাড়াও ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের স্বল্প এবং দীর্ঘমেয়াদী পরিসরে রক্তে শর্করার নিয়ন্ত্রণ করে।
ফলের জুসের বদলে আস্ত ফলটি খান
ফল পানি, ফাইবার, ভিটামিন এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর। বারবার ফল খাওয়ার সাথে হৃদরোগ, টাইপ-২ ডায়াবেটিস এবং ক্যান্সারের মতো বেশ কিছু স্বাস্থ্য ঝুঁকি কমে যায়।
যেহেতু ফলে ফাইবার এবং বিভিন্ন উদ্ভিদ যৌগ থাকে, তাই সেগুলোর প্রাকৃতিক শর্করা সাধারণত খুব ধীরে ধীরে হজম হয় এবং রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়ায় না। কিন্তু ফলের রসের এমনটা হয় না। অনেক ফলের রস প্রকৃত ফল থেকে তৈরি না করে চিনিযুক্ত কোমল পানীয় দিয়ে বানানো হয়।
এমনকি আসল ফলের রসে ফাইবারের অভাব রয়েছে যা রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়ানোর সম্ভাবনা বাড়িয়ে দেয়।
পড়ুন: করোনা মহামারি থেকে শিশুকে নিরাপদ রাখবেন কীভাবে?
চিনিযুক্ত পানীয়গুলোর বদলে সোডা পানি পান করুন
চিনিযুক্ত পানীয়গুলো হৃদরোগ, স্থূলতা ও টাইপ-২ ডায়াবেটিসের মত মারাত্মক সব রোগের কারণ হতে পারে। এছাড়া, এই পানীয়গুলো সাধারণ খাবারের মতো দেহের উপর প্রভাব ফেলে না। চিনিযুক্ত পানিয় কম খাওয়ার মাধ্যমে আপনি ক্যালোরি কমাতে পারবেন না একটি ৪৯২-মিলিগ্রাম চিনিযুক্ত সোডায় প্রায় ২০৭ ক্যালোরি থাকে।
এর বদলে শুধু সোডা বা স্পার্কলিং পানি বেছে নিন। এর ফলে আপনার শরীরে অপকারী ক্যালোরিগুলোর প্রবেশ বন্ধ হবে এবং অতিরিক্ত চিনির পরিমাণ হ্রাস পাবে।
চিপসের পরিবর্তে পপকর্ন খান
পপকর্ন বা খৈ-ভাজা যথেষ্ট পরিমাণে পুষ্টি এবং ফাইবার সম্পন্ন। ১০০ গ্রাম পপকর্নে ৩৮৭ ক্যালরি এবং ১৫ গ্রাম ফাইবার থাকে। একই পরিমাণ আলুর চিপসে ক্যালোরি থাকে ৫৩২ এবং ফাইবার থাকে মাত্র ৩ গ্রাম। এই খাবারটির সুবিধা হলো- প্রদাহ এবং হৃদরোগের ঝুঁকি কমানো।
একটি স্বাস্থ্যকর নাস্তার হিসেবে বাড়িতেই পপকর্ন তৈরি করার চেষ্টা করুন। বাইরে থেকে কিনলে এয়ার-পপড পপকর্ন কিনতে পারেন। তবে খেয়াল রাখবেন, অনেক বাণিজ্যিক জাত চর্বি, চিনি এবং লবণ দিয়ে তাদের পপকর্ন প্রস্তুত করে, এটি আলুর চিপের চেয়ে স্বাস্থ্যকর নয়।
রান্নায় স্বাস্থ্যকর তেল ব্যবহার করুন
দুর্ভাগ্যবশত, সয়াবিনের মত অত্যন্ত প্রক্রিয়াজাত বীজ এবং উদ্ভিজ্জ তেল গৃহস্থালিতে বহুল ব্যবহৃত হচ্ছে।
এই তেলগুলিতে ওমেগা-৬ ফ্যাটি অ্যাসিড বেশি কিন্তু হার্টের জন্য উপকারী ওমেগা-৩ এস কম থাকে। উচ্চ ওমেগা -৬ ও ওমেগা -৩ অনুপাত প্রদাহ সৃষ্টি করার পাশাপাশি আরো জটিল রোগ সৃষ্টি করতে পারে যেমন হৃদরোগ, ক্যান্সার, অস্টিওপোরোসিস এবং অটোইমিউন ডিসঅর্ডার। তাই বিকল্প হিসেবে অতিরিক্ত কুমারি জলপাই তেল, সরিষার তেল, অ্যাভোকাডো তেল ও নারকেল তেল ইত্যাদি তেলগুলো ব্যবহার করতে পারেন।
আরও পড়ুন: যদি স্লিম থাকতে চান রোজ ৫ রকমের বাদাম খান
নিয়মিত ব্যায়াম করুন
শারীরিক ক্রিয়াকলাপ আপনার ওজন নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি আপনার কোলেস্টেরল এবং রক্তচাপের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য প্রতি সপ্তাহে আড়াই ঘন্টার মাঝারি তীব্রতার ব্যায়াম, যেমন দ্রুত হাঁটা বা সাইকেল চালানো উত্তম। শিশু-কিশোরদের প্রতিদিন ১ ঘণ্টা ব্যায়াম করা উচিত।
ব্যায়ামকে প্রতিদিনের একটি অংশ করে ফেলুন। লিফটের পরিবর্তে সিঁড়ি ব্যবহার করুন, অপেক্ষাকৃত একটু দূরে গাড়ি পার্ক করুন যেন বাকি পথ পেরিয়ে বাড়ি পৌছতে হেটে যেতে হয়, নিত্য সদাই কিনতে হেটে যান।
শেষাংশ
এই প্রাকৃতির উপায় ছাড়াও কোলেস্টেরল কমানোর অনেক ওষুধও আছে যেগুলো ব্যবহার করে অনেকেই উপকৃত হয়েছে। কিন্তু ক্ষতিকর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থাকার কারণে সেগুলো ব্যবহারের আগে সতর্ক থাকা উচিত। বিশেষত অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নেবেন। সর্বসাকুল্যে, নিরবচ্ছিন্ন সুস্থ জীবনের জন্য একটি সুষম খাবার গ্রহণ করে নির্দিষ্ট জীবন ব্যবস্থা মেনে চলুন, আপনাকে কোন ওষুধের শরণাপন্ন হতে হবে না।
আরও পড়ুন: করোনা মহামারি থেকে বাড়ির বয়োজ্যেষ্ঠদের নিরাপদ রাখবেন কিভাবে?