স্বাস্থ্য
করোনা সংক্রমণ এড়াতে কোরবানির সময় যা যা মেনে চলবেন
আর কিছুদিন পরেই কোরবানির ঈদ। এ সময় কোভিড সংক্রমণের কথা মাথায় রেখে কোরবানির সময় সতর্কতা মেনে চলতে হবে। এ রকম একটা উৎসবে অনেক মানুষের সমাগম থাকাটা স্বাভাবিক। তাছাড়া পশু কোরবানির আগে ও পরে সৃষ্ট ময়লা-আবর্জনা থেকে জীবাণু ছড়াতে পারে। তাই চলুন, কোভিড সংক্রমণ এড়াতে কোরবানির সময় সতর্কতার জন্য জরুরি পদক্ষেপগুলোর ব্যাপারে জেনে নেই।
কোভিড সংক্রমণ এড়াতে কোরবানির সময় সতর্কতা-
কোরবানির জন্য সঠিক স্থান নির্বাচন করুন
পশু কোরবানির স্থানটি বসতবাড়ি থেকে একটু দূরে এবং খোলামেলা হওয়া দরকার। যে স্থানটি নির্বাচন করবেন, সেটি অবশ্যই আগে থেকে জীবাণুনাশক দিয়ে পরিষ্কার করে রাখবেন। এতে এলাকা জুড়ে জীবাণু ছড়ানোর সম্ভাবনা কম থাকে এবং পরিবেশ দূষণ রোধ হয়। তাছাড়া কোরবানি পরবর্তী প্রয়োজনীয় ময়লা নিষ্কাশনেও বেশ সুবিধা হয়। কোরবানির সকল কার্যক্রম শেষ হয়ে গেলে পুরো জায়গাটি স্যাভলন মেশানো পানি অথবা ব্লিচিং পাউডার দিয়ে স্যানিটাইজ্ড করে নিন।
আরও পড়ুন: কোরবানির পশু নিয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জ ছেড়েছে ‘ক্যাটল স্পেশাল’ ট্রেন
কসাই-কোরবানির সরঞ্জাম স্বাস্থ্যবিধির আওতায় আনুন
কসাইদের কাজ শুরুর আগে দেখে নিন তারা হ্যান্ড-গ্লাভস, মাস্ক এবং জীবাণুনাশক দিয়ে পরিষ্কার করা রাবারের জুতা পরছে কিনা। তাদের সাথে যারা কোরবানিতে অংশ নিবেন ও মাংস কাটবেন তাদের ক্ষেত্রেও এই সতর্কতা প্রযোজ্য। পশু ধরার আগে ও পুরো কাজ হওয়ার পর সাবান ও হালকা গরম পানি দিয়ে গোসল করে নিন। পশু কোরবানির প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম আগে থেকেই স্যানিটাইজ্ড করে রাখুন। যে পাত্রে মাংস রাখাবেন তা আগে থেকেই সাবান-পানি দিয়ে ভালো করে ধুয়ে রাখুন। মাংস কাটার সময় নিজেদের মধ্যে তিন ফুট দূরত্ব রেখে বসুন।
পশু কোরবানি ও চামড়া ছাড়ানোর সময় কোন অবস্থাতেই হাঁচি-কাশি দেয়া যাবে না। মাংস আলাদা করে যেখানে রাখা হবে তার আশপাশেও হাঁচি-কাশি দেয়া থেকে বিরত থাকুন। শুধু কোরবানির সাথে সম্পৃক্তরা ছাড়া অন্য কাউকে আশেপাশে ভীড়তে দেবেন না। আর কেউ এলেও তাকে অবশ্যই কমপক্ষে তিন ফুট দূরত্ব রেখে দাড়াতে হবে।
আরও পড়ুন: কোরবানির হাটে মহিষের আক্রমণে কিশোরের মৃত্যু
একটি নির্দিষ্ট স্থানে কোরবানির পশুর বর্জ্যগুলো ফেলুন
গ্রামাঞ্চলে কোরবানির আগে থেকেই খোলা মাঠে বা কোন পরিত্যক্ত স্থানে গর্ত করে রাখতে পারেন। আর শহরের ক্ষেত্রে কাছাকাছি একটি ডাস্টবিন ঠিক করে রাখুন। ডাস্টবিনটি রাস্তার কাছাকাছি হলে বর্জ্যের গাড়ি পৌঁছাতে সুবিধা হবে। আর গোলির ভেতরে হলে বর্জ্য একটি ব্যাগে ভরে নির্দিষ্ট স্থানে রাখুন। খেয়াল রাখবেন- কুরবানির পশুর গোবর ও অন্যান্য আবর্জনা যেন ড্রেনে ফেলা না হয়। এক্ষেত্রে ড্রেন বন্ধ হয়ে ময়লা উপচে পড়বে।
আগে থেকে ঠিক করা জায়গায় মাংস কাটার কাজ শেষ করুন। এ সময় উচ্ছিষ্টগুলো ছিটিয়ে না ফেলে একটি নির্দিষ্ট স্থানে রাখুন। অতঃপর সব উচ্ছিষ্ট একসাথে করে পূর্ব নির্ধারিত ডাস্টবিনে ফেলুন। গ্রামাঞ্চলে গর্তে রেখে মাটি চাপা দিয়ে রাখতে পারেন। দ্রুত বর্জ্য নিষ্কাশনের জন্য স্থানীয় বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কমিটির দৃষ্টি আকর্ষণ করুন।
আরও পড়ুন: কোরবানির পশুর চামড়ার দাম বাড়ালো সরকার
যত দ্রুত সম্ভব চামড়া ব্যবস্থাপনার কাজ শেষ করুন
চামড়া ছাড়ানো হয়ে গেলে সাথে সাথে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করার ব্যবস্থা করুন। এছাড়া মাদরাসার লিল্লাহ বোর্ডিং, মসজিদ বা এতিমখানায়ও দান করে দিতে পারেন।
আরও পড়ুন: ডিজিটাল কোরবানির পশুর হাটের উদ্বোধন
মাংস সংরক্ষণে করোনা স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলুন
মাংস বাড়িতে নেয়ার আগে থেকেই হাত, রান্নাঘর বিশেষ করে মাংস রাখার পাত্রগুলো সাবান ও হালকা গরম পানি দিয়ে ভালো করে ধুয়ে পরিষ্কার করে নিন। মাংস এমনভাবে রান্না করুন, যেন মাংসের প্রতিটি অংশ বেশ ভালোভাবে সেদ্ধ হয়। রান্নার কাজ শেষ হলে কাঁচা মাংসের সংস্পর্শে আসা সব কিছু আগের মত করে হালকা গরম পানি ও সাবান দিয়ে ধুয়ে শুকিয়ে নিন। রেফ্রিজারেটরে কাঁচা মাংস রাখার সময় ছোট ছোট প্যাকেটে মুখ বন্ধ করে মাংস রাখুন। রেফ্রিজারেটর থেকে মাংস বের করে রান্নার পূর্বে ভালো করে সাবান-পানি দিয়ে হাত ধুয়ে নিন।
আরও পড়ুন: দেশের বাইরে থেকে কোরবানির পশু আসতে দেওয়া হবে না: প্রাণিসম্পদমন্ত্রী
শেষাংশ
যেহেতু করোনা মহামারি চলাকালীন দ্বিতীয়বারের মত ঈদুল আজহা পালিত হতে যাচ্ছে, তাই কোরবানি পরবর্তী সতর্কতা মেনে চলার উপর আরো বেশি জোর দিতে হবে। এর ফলশ্রুতিতে আপনি নিজে সুস্থ থাকার পাশাপাশি আপনার পাশের জনকেও কোভিড সংক্রমণ থেকে মুক্ত রাখতে পারবেন।
করোনা মহামারি থেকে শিশুকে নিরাপদ রাখবেন কীভাবে?
করোনাকালীন শিশুর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে শিশুর পাশাপাশি আপনারও সুস্থ থাকা প্রয়োজন। প্রাথমিকভাবে শিশুরা করোনার ভয়ানক সংক্রমণের বাইরে থাকলেও এখন ধীরে ধীরে শিশুদের সংক্রমণের হার বাড়ছে। তাছাড়া রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকায় যে কোনও রোগের বেলাতেই শিশুদের ওপর ক্ষতিকর প্রভাব পড়তে পারে। একই সাথে অনেক দিন ধরে ঘরে থাকার কারণে মানসিক অবসাদেও ভুগতে পারে আপনার শিশু। তাই করোনা থেকে আপনার শিশুর স্বাস্থ্য সুরক্ষায় সচেতন থাকা জরুরি।
করোনাকালীন শিশুর নিরাপত্তা নিশ্চিতে আপনার করণীয়
শিশুর স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা নিশ্চিত করুন
অন্তত ২০ থেকে ৩০ সেকেন্ড ধরে হাত ধোয়া থেকে শুরু করে হাঁচি বা কাশি দেয়ার সময় কনুইয়ে মুখ গুজা এবং মাস্ক ব্যবহার করার মত প্রাথমিক বাধ্যতামুলক স্বাস্থ্যবিধিগুলো খুব সহজ ভাষায় শিশুদেরকে বুঝিয়ে দিতে পারেন। বাইরে থেকে আগত কোনও লোকদের সংস্পর্শ থেকে শিশুকে দূরে রাখুন।
পরিবারের কোনও সদস্যের সর্দি, কাশি, জ্বর হলে তাদের কাছে যাওয়া থেকে শিশুদের বিরত রাখুন। এমনকি নিজেরও এরকম কোনও উপসর্গ দেখা দিলে দূরত্ব বজার রাখুন।
সামাজিক দূরত্বের ব্যাপারে তাদেরকে শিক্ষা দিন। এ সময়ে শিশুদের হালকা সর্দি-কাশি, জ্বর, পেট ব্যথা ইত্যাদি হালকাভাবে নেবেন না। শিশুকে স্বাস্থ্যবিধি মানতে উৎসাহিত করুন।
আরও পড়ুন: কিভাবে আত্মবিশ্বাসের সাথে ইংরেজিতে বলা রপ্ত করবেন?
ঘরের সার্বিক পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার দিকে খেয়াল রাখুন
এ সময়ে যেহেতু ঘরের ভেতরেই বেশি থাকা হচ্ছে সেহেতু ঘরের যে জায়গাগুলোতে মানুষের সংস্পর্শ পাওয়ার সম্ভাবনা বেশি সে জায়গাগুলো স্যানিটাইজ করুন। বিশেষত দরজার নব, চেয়ার-টেবিল, বিভিন্ন ফার্নিচারের হাতল, বিছানা এবং অবশ্যই রান্নাঘর পরিষ্কার রাখুন।
শিশুর ব্যবহৃত বালিশের কাভার, বিছানার চাদর সপ্তাহে অন্তত দু’বার বদলে দিন। মাস্কের পাশাপাশি শিশুকে হাতে নিয়মিত একটি পরিষ্কার কাপড় ও একটি ছোট্ট পকেট হ্যান্ড স্যানিটাইজার রাখুন। নিয়মিত পরনের কাপড় ধুয়ে দিন। তাছাড়া হঠাৎ ময়লা হয়ে গেলে সাথে সাথে কাপড় বদলে দিন।
আরও পড়ুন: কঠোর ডায়েটের স্বাস্থ্য ঝুঁকিসমূহ জেনে নিন
শিশুকে ইন্টারনেটের সদ্ব্যবহারে উৎসাহ দিন
করোনাকালীন শিশুর নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে শিশুদের বিভিন্ন ভীড় থেকে বিরত রাখার কারণে তারা ঘরে বন্দি হয়ে পড়ে। এ অবস্থায় তাদের সময়গুলোর সদ্ব্যবহারের জন্য ইন্টারনেট একটা উপযুক্ত উপায়। স্কুল বন্ধের সাথে শিশুর পড়াশোনা যেন বন্ধ হয়ে না যায় সেজন্যে অনলাইন পড়াশোনায় আপনার শিশুকে নিয়ে সময় কাটান।
প্রযুক্তির প্রতিনিয় প্রসারের ফলে পাঠ্যক্রমের প্রতিটি বিষয় এখন ইন্টারনেটের মাধ্যমে অধ্যয়ন করা যায়। অনলাইন পাঠের বড় সুবিধা হলো- এখানে শিশু কোন চাপ অনুভব করবে না বরং নিজেই আনন্দ নিয়ে শিখবে। এছাড়া শুধু পড়াশোনাই নয়, ইন্টারনেট শিশুদের জন্য বিনোদনের এক বিশাল সংগ্রহশালা। এখন ঘরে বসেই অনলাইন মাল্টিপ্লেয়ার গেমগুলোতে একজন খেলোয়ার পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তের খেলোয়ারদের সাথে প্রতিযোগীতা করতে পারছে।
এতে করে এই করোনার সময়ে আপনার শিশুকে খেলাধুলার জন্য বাইরে না যেতে জোর করতে হবে না। তবে খেয়াল রাখবেন আপনার শিশু যেন খারাপ কোনও সাইট বা গেমের প্রতি আসক্ত না হয়ে পড়ে। এর জন্য ইন্টারনেটের আপত্তিজনক সাইটগুলো ব্লক করে রাখবেন।
এছাড়া ইন্টারনেট আপনার শিশুর মেধা ও মননকে উন্নত করার জন্য এক গতিশীল মাধ্যম যা তার স্বভাবিক বিকাশে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
আরও পড়ুন: সাইক্লিং, দৌড় কিংবা সাঁতার: ওজন কমাতে কোনটি বেশি কার্যকরী?
শিশুর মানসিক স্বাস্থ্যের ব্যাপারে সতর্ক থাকুন
করোনা সম্পর্কিত গুজবে কান না দিয়ে সঠিক খবর জানুন। আক্রান্ত এবং মৃত্যুর খবরগুলো নিয়ে নিজেদের ভেতর আলোচনা করার সময় সতর্ক থাকুন। সংক্রমণ থেকে বাঁচার উপায়গুলো নিয়ে বেশি কথা বলুন।
কোথায় কোথায় কত মানুষ সংক্রমণ থেকে কত দ্রুত সেড়ে উঠেছে তা নিয়ে আলাপ করুন। এতে শিশুদের মনে ভীতির সঞ্চার ঘটবে না। শিশুরা প্রায় সব সময়ই বড়দের অনুকরণ করার চেষ্টা করে।
তাই নিজেরা করোনার স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলে তাদের সামনে দৃষ্টান্ত উপস্থাপন করুন। আপনি যেভাবে আপনার শিশুকে সতর্ক করছেন খেয়াল ঠিক সেভাবেই ও আপনাকে অথবা অন্যদের সতর্ক করছে কিনা। এভাবে ব্যাপারটাকে খেলার ছলে শিক্ষা দিতে পারেন।
আরও পড়ুন: বর্ষায় পোকামাকড়ের উপদ্রব থেকে বাঁচতে করণীয় সম্পর্কে জেনে নিন
শেষ কথা
সর্বোপরি করোনাকালীন শিশুর নিরাপত্তা রক্ষার্থে দেহ ও মন, দুটোকেই গুরুত্বের সাথে দেখতে হবে। শিশুদের শরীরের জন্য প্রতিদিন পুষ্টিকর খাবার দেয়া আর মনকে ঠিক রাখতে করোনার সংক্রমণের তথ্যগুলো ইতিবাচক ভাবে সরবরাহ করুন।
বর্ষা মৌসুমে যেসব পুষ্টিকর সবজি খেতে পারেন
গরম আবহাওয়া থেকে স্বস্তির পাশাপাশি ব্যাকটিরিয়া সংক্রমণের সমূহ সম্ভাবনা থাকে, তাই সুস্বাস্থ্যের জন্য আপনার খাদ্য তালিকায় এই বর্ষা মৌসুমে পুষ্টিকর সবজি থাকা আবশ্যক। এ সময় শাক জাতীয় খাবার থেকে বিরত থাকুন, কেননা এই স্যাঁতস্যাঁতে আবহাওয়ায় এগুলোর মধ্যে থাকা অতিরিক্ত ব্যাকটিরিয়া আপনার স্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে। এই শাক ছাড়াও কিন্তু এই বর্ষায় আপনার জন্য বিভিন্ন ধরনের স্বাস্থ্যকর সবজি আছে। চলুন জেনে নেই এরকমি কয়েকটি সবজির ব্যাপারে এবং কেন সেগুলো আপনার সুস্বাস্থ্যের জন্য উপকারি।
বর্ষা মৌসুমে ৫টি পুষ্টিকর সবজি
করলা
বৃষ্টি মৌসুমে পাওয়া তেঁতো করলা অন্ত্রের ভেতরে থাকা পরজীবী কৃমি ধ্বংসে অনেক কার্যকর। পাকস্থলি ও অন্ত্রের পরজীবীগুলোর সাধারণত এই বর্ষাকালেই বেশি উপক্রম হয়।
তেঁতো করলা ফাইবার, ভিটামিন-সি, ফোলেট এবং ভিটামিন-এ জাতীয় পুষ্টির আঁধার। টেস্ট-টিউব সমীক্ষায় এই সবজির ক্যান্সার-বিরোধী বৈশিষ্ট্য ধরা পড়েছে। এছাড়া এটি পেট, কোলন, ফুসফুস, এবং স্তন ক্যান্সারের কোষের বিরুদ্ধে কার্যকর হতে পারে।
তেঁতো করলা কোলেস্টেরলের মাত্রা হ্রাস করে হৃদরোগের সম্ভাবনা কমিয়ে দেয়। এতে ক্যালোরি কম তবে ফাইবার বেশি। মানব এবং প্রাণী গবেষণায় দেখা গেছে যে, এটি পেটের চর্বি এবং শরীরের ওজন হ্রাস করতে সহায়তা করে।
আরও পড়ুন: বর্ষাকালে ভ্রমণের পূর্বে কিছু সতর্কতা
চিচিঙ্গা
চিচিঙ্গা এমন ফাইবার সরবরাহ করে যা পেটে বেশিক্ষণ থেকে ক্ষুধা কমিয়ে দেয়। ফলশ্রুতিতে দ্রুত গতিতে মেদ ঝরে পড়ে। এছাড়া ভারী খাবার গ্রহণের পরে কোষ্ঠকাঠিন্য, ফোলাভাব এবং পেট-ব্যথা প্রতিরোধেও বেশ কার্যকর এই ফাইবার।
নগন্য পরিমাণে কোলেস্টেরল থাকায় এই সবজি হৃদযন্ত্র ভালো রাখে। সেই সাথে রক্ত সঞ্চালনের উন্নতি এবং কার্ডিয়াক পেশীগুলোর সর্বোত্তম কার্যকারিতা নিশ্চিত করে। শরীরের বর্জ্য এবং কিডনিতে পাথর নির্মূলে সহায়তা করে।
চিচিঙ্গা অতিরিক্ত শ্লেষ্মা নিঃসরণ সহজেই শ্বাসনালী থেকে সরাতে পারে। ফলে কোনো প্রকার শ্বাসকষ্ট হয়না। অতিরিক্ত অ্যাসিডকে উপশম করে গ্যাস্ট্রাইটিস, পেপটিক আলসার এবং জ্বলন থেকে অল্প সময়ের মধ্যেই অব্যাহতি দেয়।
আরও পড়ুন: বজ্রপাত থেকে বাঁচার জন্য সতর্ক হোন
পটল
পটলে বিদ্যমান অ্যান্টিপাইরেটিক ক্রিয়াকলাপ জ্বর এবং সর্দি হ্রাস করতে সাহায্য করে যা বর্ষার সময় একটি সাধারণ রোগ।
রক্তের শুদ্ধির জন্য পটল বেশ উপকারী। এটি রক্ত ও টিস্যু পরিষ্কার করে ত্বকের যত্ন নেয়।
এই সবজিতে থাকা প্রচুর পরিমাণে ফাইবার সঠিক হজমে সহায়তা করে। পটলের বীচি কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দূর করে। তাই পটল খাওয়ার সময় এর বীচি ফেলে দেবেন না। এগুলো রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়তা করে, যার ফলস্বরূপ দেহের কোলেস্টেরল কমে যায়। এটি কম ক্যালোরি সম্পন্ন এবং দীর্ঘক্ষণ আপনার পেট ভরা রাখবে। সুতরাং ওজন কমাতে আপনি নিঃসন্দেহে এর তরকারি খেতে পারেন।
আরও পড়ুন: সাইক্লিং, দৌড় কিংবা সাঁতার: ওজন কমাতে কোনটি বেশি কার্যকরী?
কাকরোল
তিক্ত স্বাদযুক্ত কাকরোল যকৃতের ক্ষতি, প্রদাহজনিত অসুস্থতা রোধ এবং জ্বর কমাতে সহায়তা করে।
এর ফল নিউরোপ্রোটেক্টিভ বৈশিষ্ট্যযুক্ত হওয়ায় মস্তিষ্কের কার্যকারিতা বহাল রাখতে পারে।
এর হাইপোগ্লাইসেমিক বৈশিষ্ট্য অতিরিক্তভাবে ইনসুলিনের নিঃসরণ এবং সংবেদনশীলতা উভয় ক্ষেত্রে কার্যকর ভুমিকা রাখার মাধ্যমে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারে।
কাকরোলের বীচিতে থাকা ফাইবার গ্যাস্ট্রিক আলসার, পাইলস এবং কোষ্ঠকাঠিন্য প্রভৃতি প্রশমন করে।
কম ক্যালোরির হওয়ায় আপনার অতিরিক্ত মেদ ঝরাতে কাকরোল খেতে পারেন।
কাকরোলের শাঁসে থাকে ভিটামিন বি-৯, যা কোষের বৃদ্ধি এবং প্রজননের জন্য প্রয়োজনীয়। এভাবে এটি গর্ভাবস্থায় নিউরাল টিউব ত্রুটির সম্ভাবনা হ্রাস করে।
আরও পড়ুন: জন্মদিনে পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি মিঠুন
ঢেঁড়শ
ঢেঁড়শ ভিটামিন-সি, ভিটামিন-কে এবং প্রোটিনে ভরপুর। এর অ্যান্টিঅক্সিডেন্টগুলো বিশেষত শক্তিশালী পলিফেনল প্রদাহ রোধ, হৃদযন্ত্র এবং মস্তিষ্কের ক্ষেত্রে অবদান রাখতে পারে।
প্রাণী গবেষণা মতে, ঢেঁড়শ রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমিয়ে দেয়। এতে লেকটিন নামে একটি প্রোটিন রয়েছে, যার উপর ক্যান্সার প্রতিরোধী গবেষণা চলছে।
ঢেঁড়শ খাওয়ার ফলে আপনার রক্তে শর্করার নিয়ন্ত্রণ থাকবে। কিছু গবেষণায় দেখা গেছে যে, এটি ডায়াবেটিসের সাধারণ ক্রিয়াকলাপেও হস্তক্ষেপ করতে পারে।
ঢেঁড়শ গর্ভবতী মহিলাদের প্রতিদিনের ফোলেটের চাহিদা মেটাতে সক্ষম।
আরও পড়ুন: বর্ষায় পোকামাকড়ের উপদ্রব থেকে বাঁচতে করণীয় সম্পর্কে জেনে নিন
শেষাংশ
এগুলোর মাধ্যমে আপনার বর্ষা মৌসুমে পুষ্টিকর সবজি তালিকা পরিপূর্ণ করতে পারেন। আপনার ও আপনার পরিবারের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় সুষম খাদ্যের তালিকা প্রস্তুতিতে অন্য কোনো কঠোর ডায়েটের প্রয়োজন নেই। সর্বপরি, সবজি ঘরে আনার পর অবশ্যই ভালোভাবে ধুয়ে পরিষ্কার করার দিকে নজর রাখবেন।
মশার উপদ্রব থেকে সুরক্ষিত থাকার কিছু সহজ ঘরোয়া উপায়
মশার উপদ্রব থেকে নিজেকে সুরক্ষিত রাখতে মশা মারার সঙ্গে সঙ্গে যেসব স্থানে মশা জন্মানোর সম্ভাবনা আছে সেসব সেগুলো পরিষ্কার করে নেওয়া প্রয়োজন। মশা জন্মানোর জন্য উপযুক্ত স্থান, যেমন ঘরের কোনা, আঙিনায় জমে থাকা ময়লা ধুলা, পাত্রে জমে থাকা পানি এসব কিছু পরিষ্কার রাখতে হবে।
ম্যালেরিয়া, ডেঙ্গু এবং হলুদ জ্বরের মতো মশা বাহিত বিপজ্জনক রোগগুলি ছাড়াও মশা কামড়ানোর পরে দীর্ঘক্ষণ বিরক্তিকর চুলকানি হতে পারে এবং তাদের শব্দ আপনার ঘুমের ব্যাঘাত ঘটাতে পারে।
এমতাবস্থায় চলুন জেনে নিই, মশা তাড়ানোর কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ ঘরোয়া টিপ্স।
মশা থেকে বাঁচার কিছু সহজ ঘরোয়া টিপ্স
পুদিনা পাতার কার্যকারিতা
উপকারী এই পাতা মশা তাড়াতে বেশ কার্যকরী। একটি গ্লাসে অল্প পানি নিয়ে তাতে পুদিনার কয়েকটি পাতা রেখে দিন। অবশ্যই তিনদিন পরপর পানি বদলে দেবেন। এছাড়া পুদিনা পাতা সেদ্ধ করে সেই পানির গন্ধ পুরো ঘরে ছড়িয়ে দিন। এতেও মশা দ্রুত পালাবে।
আরও পড়ুন: সাইক্লিং, দৌড় কিংবা সাঁতার: ওজন কমাতে কোনটি বেশি কার্যকরী?
সন্ধ্যায় হলুদ বাতি
পতঙ্গ সাধারণত আলোর প্রতি আকৃষ্ট হয়। ঘরে হলুদ আলো জেলে দিলে মশার উপদ্রব কমে যায়। বৈদ্যুতিক বাতির চারপাশে হলুদ সেলোফন জড়িয়ে দিতে পারেন, যেখানে আলোর রং অবশ্যই হলুদ হতে হবে। আর প্রতি সন্ধ্যায় জ্বালানো এই হলুদ আলোই মশা তাড়াবে।
শুকনো চা পাতা পোড়ানো
চা তৈরি ছাড়াও চা পাতা মশার উপদ্রব কমাতে পারে। সেজন্য চা পাতা ব্যবহারের পর ফেলে না দিয়ে রোদে শুকিয়ে নিতে হবে। খেয়াল রাখবেন যেন তাতে পানি না থাকে। এরপর এই চা পাতা ব্যবহার করতে পারেন ধুয়া হিসেবে। শুকনো চা পাতা পোড়ালে ঘরের সব মশা-মাছি দ্রুত দূর হবে।
আরও পড়ুন: জেনে নিন ডেঙ্গু জ্বর থেকে সুরক্ষার উপায় ও করণীয়
লেবু ও লবঙ্গ ব্যবহার
প্রথমে একটি বড় লেবু নিয়ে দুই ভাগ করে কেটে এর ভেতরের অংশে অনেকগুলো লবঙ্গ গেঁথে নিন। লবঙ্গের শুধুমাত্র ফুলের অংশটুকু বের হয়ে থাকবে। বাকি অংশের পুরোটাই লেবুর ভেতরে গেঁথে দিন। পরবর্তীতে লেবুর টুকরোগুলো একটি পরিষ্কার থালায় নিয়ে কক্ষের এককোণে রেখে দিন। এতে খুব সহজেই মশা তাড়াতে পারবেন। লেবু ও লবঙ্গ এভাবে রেখে দিতে পারেন জানালার গ্রিলেও। ফলে মশা ভেতরে ঢুকবে না।
ফুল স্পিডে ফ্যান ছেড়ে দেয়া
মশা ভীষণ হালকা একটি পতঙ্গ। তাই ঘরের সিলিং ফ্যানটি যদি ফুল স্পিডে ছেড়ে রাখেন তবে মশা আর কাছে ঘেঁষতে পারবে না। মশার ওড়ার গতিবেগের চেয়ে স্বাভাবিকভাবেই ফ্যানের ঘোরার গতি বেশি। তাই মশা সহজেই ফ্যানের ব্লেডের কাছে চলে যায়। মশার উপদ্রব বেড়ে গেলে ফুল স্পিডে ফ্যান ছেড়ে দিন।
আরও পড়ুন: বজ্রপাত থেকে বাঁচার জন্য সতর্ক হোন
নিম পাতার তেল প্রাকৃতিক মশা নিরধোক
মশা বা কীট-পতঙ্গ থেকে বাঁচতে নিম পাতার তেল ব্যবহার অপরিহার্য। কারণ, নিম পাতার তেল প্রাকৃতিক মশা নিরধোক সমৃদ্ধ।
রসুন দিয়ে বানানো স্প্রে
রসুন পোকা-মাকড় দমনে বেশ কার্যকরী। মধ্যযুগে ইউরোপীয়রা প্লেগ মহামারি প্রতিরোধে রসুনের ব্যবহার করেছিলো।
রসুনের স্প্রে খুব সহজেই বাড়িতে বানিয়ে নিতে পারেন। রসুনের কয়েকটি কোয়া ছেঁচে নিয়ে ১ কাপ বা আধা কাপ পানিতে ফুটান। অতঃপর তৈরি স্প্রে মিশ্রণটি একটি স্প্রে বোতলে নিয়ে দরজা, জানালা, ঘরের চারিদিকে স্প্রে করুন।
আরও পড়ুন: বর্ষায় পোকামাকড়ের উপদ্রব থেকে বাঁচতে করণীয় সম্পর্কে জেনে নিন
ঘরের কোণায় কোণায় কর্পূর ব্যবহার
কর্পূরের গন্ধ মশার জন্য বিদ্ধংসী। ৫০ গ্রাম কর্পূরের একটি ট্যাবলেট একটি ছোট বাটিতে রেখে বাটিটি পানি দিয়ে ভরে ঘরের কোণে রেখে দিন। সাথে সাথেই দেখবেন, মশা গায়েব হয়ে গেছে। প্রতি দুই দিন অন্তর পানি পরিবর্তন করে দিতে ভুলবেন না।
শেষাংশ
উপরোক্ত পদক্ষেপগুলো নেয়ার পাশাপাশি মশার উপদ্রব থেকে বাঁচতে প্রয়োজন যথাযথ সচেতনতা। বিশেষত, এডিস মশার বংশবিস্তার রোধে বাড়ির আশেপাশে জমে থাকা পানি পরিষ্কার করা জরুরি। বাড়ির আঙ্গিনায় আগাছা, ঝোপ-ঝাড় জমতে দেবেন না। ময়লা ফেলার পাত্র ঢাকনাযুক্ত রাখুন এবং নিয়মিত পরিষ্কার করুন। বাড়ির দরজা ও জানালায় নেট লাগিয়ে আপনি মশার উপদ্রব থেকে দূরে থাকতে পারেন। উপায়টি সবচেয়ে ফলপ্রসূ হয় বর্ষাকালে।
আরও পড়ুন: কালো ছত্রাক সংক্রমণ: কোভিড রোগীদের নতুন আতঙ্ক
বর্ষায় পোকামাকড়ের উপদ্রব থেকে বাঁচতে করণীয় সম্পর্কে জেনে নিন
বর্ষাকালে ভেজা ও স্যাঁতস্যাঁতে অবস্থায় পোকামাকড়ের উপদ্রব সবচেয়ে বেশি বিরক্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। এই কীটপতঙ্গগুলি কেবল আপনার খাদ্য এবং আসবাবপত্র নষ্ট করবে না, তারা আপনার স্বাস্থ্যের ওপর কিছুটা প্রভাব ফেলবে। তাই আপনার সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ আসবাবপত্র এই ক্ষতিকর কীটপতঙ্গ থেকে নিরাপদ রাখতে, এই টিপ্সগুলো আপনাকে সহায়তা করতে পারে।
বর্ষায় পোকামাকড়ের উপদ্রব থেকে বাঁচার ১০টি সহজ টিপ্সঃ
নিমপাতা ও কালোজিরা
প্রাকৃতিক কীটনাশক হিসেবে পরিচিত এ দুটি খুব ভালো ফল দেয়। রান্নাঘরের কেবিনেট, আলমারি, বুক শেলফ, ঘরের বিভিন্ন তাক ও কেবিনেটে শুকনো নিমপাতা বা কালোজিরা কাপড়ে বেঁধে রেখে দিন। পোকামাকড় চলে যাবে।
আরও পড়ুন: বজ্রপাত থেকে বাঁচার জন্য সতর্ক হোন
ল্যাভেন্ডার তেল
ল্যাভেন্ডারের সুগন্ধ পোকামাকড় রোধে বেশ কাজে দেয়। বিশেষত, মশা-মাছির ক্ষেত্রে এই তেলে আশানুরুপ ফল পাবেন। খালি শ্যাম্পুর বোতলে এককাপ পানি নিয়ে তার মধ্যে তিন চামচ ল্যাভেন্ডার তেল মিশিয়ে নিন। অতঃপর ভালো করে ঝাঁকিয়ে নিয়ে তা ছড়িয়ে দিন ঘরের কোণায় কোণায়।
পুদিনা পাতা
একমুঠো পুদিনা পাতা প্রথমে জলে ফুটিয়ে নিন। তারপর ঠাণ্ডা করে ঘরের যে সব জায়গায় মাকড়সার জাল আছে সেখানে স্প্রে করুন। পুদিনার তেল ও জলের মিশ্রণও স্প্রে করতে পারেন।
টি ট্রি তেল
পানির সঙ্গে টি ট্রি অয়েল মিশিয়ে, সেই মিশ্রণ ঘরের আনাচে-কানাচে ছড়িয়ে দিলে পোকামাকড়ের উপদ্রব কমে যাবে। এমনকি বর্ষায় ছারপোকার জন্যও এটি খুবই কার্যকর।
আরও পড়ুন: জেনে নিন ডেঙ্গু জ্বর থেকে সুরক্ষার উপায় ও করণীয়
ইউক্যালিপটাস তেল
ইউক্যালিপটাস গাছের গা থেকে বের হওয়া ঝাঁজালো গন্ধ কোনো কীটপতঙ্গ, এমনকি ইঁদুরও সহ্য করতে পারে না। তাই খালি শ্যাম্পুর বোতলে এক কাপ পানি ভরে, তাতে এক চামচ লেবু তেল ও দু’চামচ ইউক্যালিপটাস তেল মিশিয়ে ঝাঁকিয়ে একটি মিশ্রণ তৈরি করুন। বাড়ির চারপাশে, বেসিনে এই মিশ্রণ স্প্রে করলেই বর্ষায় পোকামাকড়ের হাত থেকে বাঁচতে পারবেন।
ব্লিচিং পাউডার
এক দিন পর পর বাড়ির চার পাশে ব্লিচিং পাউডার ও কার্বলিক অ্যাসিড ছড়ান। এছাড়া করোনা সংক্রমণ এড়িয়ে চলতে বাড়ির মেঝে, যেসব জায়গা বেশি হাতের সংস্পর্শে আসে সেগুলোকে পানিতে ব্লিচিং পাউডার মিশিয়ে পরিষ্কার রাখুন।
আরও পড়ুন: সাইক্লিং, দৌড় কিংবা সাঁতার: ওজন কমাতে কোনটি বেশি কার্যকরী?
কর্পূর
কর্পূর ব্যবহার মশা, মাছি তাড়ানোর সবচেয়ে সহজ ও সাধারণ উপায়। কয়েক টুকরা কর্পূর আধা কাপ পানিতে ভিজিয়ে ঘরের এক কোণে রেখে দিলে দেখবেন, মশা-মাছি উপদ্রব অনেক কমে গেছে। পিঁপড়ার নিধনে দরজা ও জানালায় বোরিক পাউডার ঢালুন। এছাড়া এক কাপ নারিকেল তেল নিয়ে তার সাথে কর্পূরের গুঁড়ো মিশিয়ে ঘরের বিভিন্ন জায়গায় ছিটিয়ে দিন।
কেরোসিন তেল ও ঢাকনা দেয়া ডাস্টবিন
গরম পানিতে সাবান ও কেরোসিন তেল মিশিয়ে খাটের তলায় ও ঘরের প্রতিটি কোণে স্প্রে করুন। পোকার উপদ্রব কমবে। রান্নাঘরে ঢাকনা দেওয়া ডাস্টবিন ব্যবহারে দূর হবে মাছির সমস্যা। ব্যবহারের পর নিয়মিত ডাস্টবিন পরিষ্কার করুন।
ফিনাইল
প্রতিদিন ঘরের মেঝে পরিষ্কার করা জরুরি। ঘর মুছতে ফিনাইল বা অ্যান্টিসেপটিক লিকুইড ব্যবহারে পোকামাকড়ের আনগোনা অনেকটাই কমে যাবে।
আরও পড়ুন: ইকিগাই: জাপানিদের সুস্থ জীবনের রহস্য!
স্যাভলন ও ভিনেগার
স্যাভলন ও ভিনেগার দিয়ে রান্নাঘর মুছুন। পিঁপড়ার উপদ্রব কমাতে জানালায় ও দরজায় বরিক পাউডার দিন। ভিনিগার অ্যাসিটিক অ্যাসিড সমৃদ্ধ, যার গন্ধ পেলেই মাকড়সা পালায়।প্রথমে ১ কাপ সাদা ভিনেগার এবং ১ কাপ জল মিশিয়ে একটি স্প্রে বোতলে ভরে ঘরের আনাচে-কানাচে স্প্রে করুন। যেখানে মাকড়শার উপদ্রব বেশি সেখানে বেশি করে স্প্রে করলে হাতে-নাতে ফল পাবেন।বর্ষায় বেসিন ও কমোড দিয়ে উঠে আসা বিভিন্ন কীটপতঙ্গ থেকে রক্ষার জন্য গরম পানিতে স্যাভলন মিশিয়ে কয়েক দিন পরপর সেটি কমোড, বেসিন ও রান্নাঘরের সিংকে ঢালুন। খেয়াল রাখবেন, স্যাভলনের পানি যেন অবশ্যই সরাসরি পাইপে পড়ে। তা না হলে কমোড কিংবা বেসিনে চিড় ধরতে পারে।
পরিশেষে
পরিশেষে পোকামাকড় নিধনে রাসায়নিক পদার্থ ব্যবহারের ক্ষেত্রে অবশ্যই সাবধানে থাকবেন। কিছু কিছু রাসায়নিক বস্তু শুধু আপনাকে অস্বস্তিতেই ফেলবে না বরং আপনার স্বাস্থ্যের জন্যও ক্ষতিকর হয়ে উঠতে পারে। তাই প্রাকৃতিক উপায়েই চেষ্টা করুন বর্ষাকালে পোকামাকড় নিধন করতে।
আরও পড়ুন: জেনে নিন আমের ডেজার্ট তৈরির দারুণ সব রেসিপি
লিভার রোগ নিয়ন্ত্রণে শরীর চর্চার বিকল্প নেই: বিশেষজ্ঞ
কুমিল্লা লিভার ক্লাবের উদ্যোগে ভার্চুয়াল মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক ন্যাশ(নন-এ্যালকোহলিক স্টিয়াটো হেপাটাইটিস) দিবস পালন করা হয়। এই বছরের প্রতিপাদ্য ছিল "ফ্যাটি লিভারের ভয়াবহতা, প্রতিকার ও করণীয়"। অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারী বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা জানিয়েছেন লিভার রোগ নিয়ন্ত্রণে শরীর চর্চার বিকল্প নেই।
শুক্রবার অনুষ্ঠানটি ভার্চুয়াল মাধ্যমে সম্পন্ন হয়েছে।
আরও পড়ুন: বিশ্বে করোনায় আক্রান্ত ১৭ কোটি ৩৫ লাখ ছাড়ালো
অনুষ্ঠানটির সভাপতিত্ব করেন কুমিল্লা মেডিকেল কলেজের ভাইস প্রিন্সিপাল ও কুমিল্লা লিভার ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ডা. মোহাম্মদ ইজাজুল হক। মূল বৈজ্ঞানিক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সহকারী অধ্যাপক ও কুমিল্লা লিভার ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ডা. মো. ফরহাদ আবেদীন।
অংশগ্রহণকারী বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা এই রোগের ভয়াবহতাও এই লিভার রোগটির সংক্রমণ থেকে রক্ষার জন্য নিয়মিত খাদ্যাভাস ও জীবন ধারা পরিবর্তনের উপর জোর দেন। বিশেষ করে কাচা লবণ, চিনি, ভাত, গরু, খাসির মাংস বেশী পরিমাণে না খেতে কিংবা নিয়ন্ত্রণের প্রয়োজন হলে না খেতে উপদেশ দেন। তাছাড়া নিয়মিত শরীর চর্চার মাধ্যমে ক্যালরি বার্ন করে শরীরকে সুস্থ রাখারও পরামর্শ দেন।
আরও পড়ুন: ফাইজারের ১ লাখ টিকা দেশে পৌঁছেছে
অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন কুমিল্লা বিএমএ ও স্বাচিপের সভাপতি ডা. আব্দুল বাকী আনিস, কুমিল্লা মেডিকেল কলেজের প্রিন্সিপাল প্রফেসর ডা. মোস্তফা কামাল আজাদ, লাইন ডিরেক্টের(নন কমিউনিকেবল ডিজিজ কন্ট্রোল) স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, ঢাকার অধ্যাপক ডা. রোবেদ আমীন, বিএমএ কুমিল্লার সাধারণ সম্পাদক ডা. মো. আতাউর রহমান জসিম, সমাজসেবা অধিদপ্তর, কুমিল্লার উপ-পরিচালক জেড এম মিজানুর রহমান খান, লিভার বিভাগ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মামুন আল মাহতাব স্বপ্নীল, কুমিল্লা মেডিকেল কলেজের সহকারী অধ্যাপক ডা. আব্দুল্লা আল ফারুক, কুমিল্লা লিভার ক্লাবের সহ-সভাপতি লুতফুল বারী চৌধুরী।
আরও পড়ুন: কোভ্যাক্সের সাথে করা চুক্তিকে অগ্রাধিকার দেয়ার আহ্বান বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার
অনুষ্ঠানটি উপস্থাপনা করেন ডেপুটি প্রোগ্রাম ম্যানেজার, জাতীয় পুষ্টিসেবা, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, মহাখালী, ঢাকা ও কুমিল্লা লিভার ক্লাবের প্রচার সম্পাদক ডা. গাজী আহমদ হাসান তুহিন।
অনুষ্ঠানটির স্পন্সরিং পার্টনার বেক্সিমকোর পক্ষে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন মো. নূরে আলম ও আবুল খায়ের মো. মাহবুব।
উল্লেখ্য, কুমিল্লা লিভার ক্লাব প্রতিষ্ঠার পর গত ৩ বছরে ৪ হাজার মানুষের ফ্রি হেপাটাইটিস বি স্ক্রিনিং করাসহ ২০০ হেপাটাইটিস রোগীরকে ফ্রি ফ্রাইডে ক্লিনিকের মাধ্যমে সেবা দিয়ে যাচ্ছে। স্বল্পমূল্যে প্রায় ২ হাজার ৫০০ জন মানুষকে হেপাটাইটিস বি ভাইরাসের টিকা প্রদান সহ ফ্রি কন্সাল্টেন্সি দিয়ে যাচ্ছে।
জেনে নিন ডেঙ্গু জ্বর থেকে সুরক্ষার উপায় ও করণীয়
প্রচন্ড গরম ও বৃষ্টি মৌসুমের কারণে করোনা মহামারির সাথে পাল্লা দিয়ে ছড়িয়ে পড়ছে ডেঙ্গু জ্বর। এ সপ্তাহের প্রথম দিকেই ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ছয় জন ডেঙ্গু রোগী। সরকারি প্রতিবেদন মতে, নতুন বছরে এখন পর্যন্ত সর্বমোট ৯৭ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন। এমন চরম সংকটাপন্ন অবস্থায় আপনার নিজের ও পরিবারের সুস্থতার জন্য সতর্ক থাকা জরুরী।
কীভাবে বুঝবেন ডেঙ্গু জ্বর হয়েছে
প্রথম দিন থেকেই প্রচণ্ড জ্বরের সাথে প্রচণ্ড মাথাব্যথা হয়, চোখের পেছনে ব্যথা হয়, শরীর ব্যথা করে, এবং চামড়া লাল হয়ে যায়। কারো কারো ক্ষেত্রে বমিও হয়।
ডেঙ্গু জ্বরে রক্তের অনুচক্রিকার মাত্রা বিপজ্জনক হারে কমে যায়। এতে দাঁত, ত্বকের নিচে, নাক প্রভৃতি স্থানে রক্তক্ষরণের ঝুঁকি বেড়ে যায়। জ্বর সাধারণত টানা ৫–৬ দিন থাকে। আবার কখনো অপেক্ষাকৃত কম সময় ধরে জ্বরের পরই হঠাৎ জটিল আকার ধারণ করে।
আরও পড়ুন: সাইক্লিং, দৌড় কিংবা সাঁতার: ওজন কমাতে কোনটি বেশি কার্যকরী?
কখনো আবার চামড়ায় দানা বা গায়ে ব্যথার পরিবর্তে কাশি, বমি হওয়া, পাতলা পায়খানার সঙ্গে তাজা রক্ত বের হয়। বিভিন্ন অঙ্গ নষ্ট যেমন কিডনি, যকৃত, মায়োকার্ডাইটিস হয়। বুক ও পেটে পানি জমার মতো জটিলতা দেখা দেয়। মেয়েদের ক্ষেত্রে অসময়ে ঋতুস্রাব বা রক্তক্ষরণ, বুকে ও পেটে পানি আসা প্রভৃতি উপসর্গ দেখা দেয়।
ডেঙ্গু জ্বরের সবচেয়ে ভয়ঙ্কর অবস্থা হলো ডেঙ্গু শক সিনড্রোম। এ অবস্থায় শ্বাস-প্রশ্বাসে অসুবিধা দেখা দেয়। ডেঙ্গু জ্বরের স্বাভাবিক জটিলতার পাশাপাশি এ ক্ষেত্রে মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণও হয়।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয়
যেহেতু ডেঙ্গু ভাইরাসের সংক্রমণ এডিস মশার কারণে হয়, তাই এই সংক্রমণ রোধে এডিস মশার বংশ নির্বংশ করা দরকার। জমে থাকা স্বচ্ছ পানিতে এডিস মশা ডিম পাড়ে। তাই ঘরে সাজানো ফুলদানি, ছাদ-বাগানের টবে, অব্যবহৃত কৌটা, রান্নাঘরের হাউজ, বাথরুম, অ্যাকুয়ারিয়াম, ফ্রিজ বা এয়ার কন্ডিশনারের নিচে এবং মুখ খোলা পানির ট্যাংকিসহ যেকোনো জায়গায় জমে থাকা পানি তিন থেকে পাঁচ দিন পরপর ফেলে দিন। এতে করে এডিস মশার লার্ভা ধ্বংস হবে। পাত্রের গায়ে মশার ডিম লেগে থাকতে পারে বিধায় পাত্রটি ভালোভাবে ঘষে পরিষ্কার করুন।
এডিস মশা দিনের বেলা কামড়ালেও রাতের উজ্জ্বল আলোতেও এরা কামড়াতে পারে। তাই মশার কামড় থেকে বাঁচতে মশারি টাঙানোর পাশাপাশি সম্ভব হলে ঘরের দরজা ও জানালায় নেট লাগিয়ে নিন।
আরও পড়ুন: কিভাবে বাড়িতেই ভেজাল দুধ শনাক্ত করবেন
দরজা-জানালা বন্ধ করে ঘরের ভেতর কর্পূর জ্বালিয়ে রাখুন। ২০ মিনিট পর দেখবেন মশা একদম নেই। প্রয়োজনে মশা নিরোধক স্প্রে, লোশন, ক্রিম, কয়েল ম্যাট ব্যবহার করুন। হাফ-হাতা বা হাফ-প্যান্টের বদলে ফুল-হাতা বা ফুল-প্যান্ট পরুন। এতে করে শরীর মশার কামড়ের জন্য কম উন্মুক্ত থাকবে।
তুলসীগাছ মশা তাড়াতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এছাড়া গাপ্পি মাছ মশার লার্ভা খেয়ে ফেলে বলে বিভিন্ন দেশে মশা নিধনে গাপ্পি ব্যবহার করা হয়।
শুধু ভেতরেই নয়, বাড়ির আশপাশের ঝোপঝাড়, জলাশয়, রাস্তার আইল্যান্ডে সৌন্দর্যবর্ধনের জন্য লাগানো ফুলের টব, গাছপালা ইত্যাদি পরিষ্কার–পরিচ্ছন্ন রাখা দরকার। বৃষ্টির ফলে এগুলোতে যেন পানি না জমে সেদিকে খেয়াল রাখুন। সপ্তাহে অন্তত তিন দিন বাড়ির আশেপাশে মশা নিধনের ওষুধ ছিটান।
ডেঙ্গু জ্বরের চিকিৎসা
ডেঙ্গু জ্বরে বিচলিত না হয়ে পর্যাপ্ত পানি পান করুন, শরীর মুছে নিন, বিশ্রাম নিন এবং মাথায় পানি দিন। জ্বর কমাতে প্যারাসিটামল ছাড়া আর কোনো ওষুধের প্রয়োজন নেই। জ্বরে পানিশূন্যতা দেখা দেয় বিধায় প্রচুর পরিমাণে পানি ও তরলজাতীয় খাবার, যেমন- ফলের জুস, শরবত ইত্যাদি পান করুন। জ্বর প্রথম দিন থেকেই জটিল আকার ধারণ করলে সাথে সাথে ডাক্তারের সরণাপন্ন হন।
আরও পড়ুন: ইকিগাই: জাপানিদের সুস্থ জীবনের রহস্য!
কিছু ব্যাপারে অনেকেরই ভুল ধারণা আছে।
* ডেঙ্গু জ্বর হলেই রোগীকে রক্ত দেওয়ার প্রয়োজন হয়।
* ডেঙ্গু হওয়ার সাথে সাথে হাসপাতালে নিয়ে শিরায় স্যালাইন দিতে হবে।
আসলে রক্তে প্লাটিলেট কমে গেলে তখন জরুরি ভিত্তিতে প্লাটিলেট দিতে হয়। আর বারবার বমির কারণে যদি কোনো রোগীর পানি পানের অবস্থা না থাকে, তখন শিরাপথে স্যালাইন দেয়া লাগে।
শেষাংশ
ডেঙ্গু জ্বর সহ বিভিন্ন ধরনের সংক্রমণে প্রথমেই প্রয়োজন সঠিক জ্ঞান ও সচেতনতা। তাড়াহুড়ো করে কোনো সিদ্ধান্ত না নিয়ে মাথা ঠান্ডা রেখে ডাক্তারের পরামর্শ অনুসরণ করুন। তাছাড়া বৃহৎ পরিসরে প্রতিরোধ গড়ে তুললে যে কোনো জরুরী অবস্থা থেকে আপনি নিজেকে ও নিজের পরিবারকে মুক্ত রাখতে পারবেন।
সাইক্লিং, দৌড় কিংবা সাঁতার: ওজন কমাতে কোনটি বেশি কার্যকরী?
সাইক্লিং, দৌড় কিংবা সাঁতার ফিটনেস ধরে রাখার অন্যতম ৩ টি উপায়। তবে শক্তি বৃদ্ধি কিংবা ওজন কমাতে কোনটি বেশি কার্যকরী সে ব্যাপারে ভিন্ন ভিন্ন মত লক্ষ্য করা যায়। আজকে আমরা জানবো মেদ ঝড়াতে এবং দৈনন্দিন জীবনযাত্রার উন্নয়নে কোনটি বেশি কার্যকর।
দৌড়ের মাধ্যমে কীভাবে মেদ কমাবেনঃ
অনেকের কাছে সহজ ব্যায়ামের একটি হলো দৌড়। আপনি একা কিংবা বন্ধুদের সাথে দৌড়াতে পারেন কোনও নির্দিষ্ট সেট আপ ছাড়া। এটি আউটডোর কিংবা ইনডোর উভয় জায়গাতেই করা যায়। এটা মেদ কমাতে এবং পেশির ঝুঁকে পড়া রোধ করে। দৌড়ের গতির ওপর নির্ভর করবে এটা কতটুকু ওজন কমাবে। তবে ওজন কমানোর জন্য এই অভ্যাসটি নিয়মিত হওয়া জরুরি। আধা ঘন্টা দৌড় আপনার শরীরে অনেক পরিবর্তন আনতে পারে।
আরও পড়ুন: সুস্থ থাকতে কলা নয়, খোসা খান
সাইক্লিং করে কীভাবে ওজন কমাবেনঃ
অনেকেই শখের বসে এই কাজগুলো করে থাকেন। বিভিন্ন অবস্থানে কীভাবে এগুলো চালাতে হবে, কিভাবে হ্যান্ডেল করতে হবে তা জানার মাধ্যমে সহজেই ওয়ার্কাউট প্ল্যান করা যায়। জয়েন্ট ব্যাথার ক্ষেত্রে এটি খুবই কার্যকরী। তবে দৌড়ের চেয়ে এটি কম ক্যালরি ঝড়াতে সাহায্য করে।
সাঁতারঃ
শুধু ওজন কমানোই নয় পুরো শরীরের ব্যায়ামে সাহায্য করে সাঁতার। এর ফলে পুরো শরীর এবং পেশিগুলোর মধ্যে একধরনের পরিবর্তন হয়। তবে এক্ষেত্রে সব ধরনের সাঁতার একইভাবে প্রভাব রাখে না। ফাস্ট ফ্রি স্ট্রোকস এবং বুঁক সাঁতার ক্যালরি কমাতে বেশ ভূমিকা রাখে।
তিনটির বিচারে সাইক্লিং এর চেয়ে সাঁতার এবং দৌড় ওজন কমাতে বেশ কার্যকর।
আরও পড়ুন: কোরিয়ান মেয়েদের রূপ রহস্য: দৈনন্দিন ত্বক পরিচর্যার ১০টি ধাপ
তবে সাইক্লিং ওজন কমানোর একটি নিরাপদ উপায় বলা চলে। প্রকৃতপক্ষে ভালো ফলাফলের জন্য প্রচুর পরিশ্রম প্রয়োজন। সুস্থ ও স্বাস্থ্যবান থাকতে নিয়মিত ব্যায়ামের কোনও বিকল্প নেই।
কালো ছত্রাক সংক্রমণ: কোভিড রোগীদের নতুন আতঙ্ক
কোভিড-১৯ মহামারির জের ধরে কালো ছত্রাক সংক্রমণ নতুন আতঙ্কের জন্ম দিয়েছে করোনা আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে। সংক্রমণের সূচনালগ্নেই এটি ভয়াবহ মহামারি আকার ধারণ করেছে সাড়া ভারত জুড়ে। উদ্বেগ-উৎকন্ঠা সাথে নিয়েই করোনাত্তোর এই দীর্ঘ মেয়াদী সংকট নিরসনে চলছে পরীক্ষা-নীরিক্ষা। ভয়ের ব্যাপার হচ্ছে- যারা করোনা থেকে ইতোমধ্যে সুস্থ হয়ে উঠেছেন বা ক্রমশ সুস্থ হওয়ার দিকে এগিয়ে যাচ্ছেন, তারাও এতে আক্রান্ত হচ্ছেন। যাদের কোভিড নেই তারাও কিন্তু ঝুঁকির বাইরে নন। প্রতি ১০০ জন আক্রান্তদের ৫০ জনই মারা যাচ্ছেন বিধায় ভবিষ্যতে এর ভয়াবহতা বিজ্ঞানীদের আশঙ্কার কারণ হয়ে দাড়িয়েছে। চূড়ান্ত অবস্থায় এ রোগ প্রতিকারের সম্ভাবনা কম তাই আগে থেকেই এ বিষয়ে সঠিক জ্ঞান নিয়ে সতর্ক থাকা জরুরি।
জেনে নিন ত্বক ফর্সাকারী ক্রিমের ক্ষতিকর দিকগুলো!
সৌন্দর্যের প্রতি জন্মগত আকর্ষণের জন্য হরহামেশাই আপনি ফর্সা হওয়ার ক্রিম ব্যবহারের দিকে ঝুঁকে পড়েন। যেকোনও পার্টিতে যাওয়ার পূর্বে সবার নিকট নিজেকে দর্শনীয় করার জন্য নির্ভর করেন বাজারের ফেয়ারনেস ক্রিমগুলোর ওপর।
কিন্তু এ ধরনের ত্বক ফর্সাকারী ক্রিম সাময়িকভাবে ফর্সা ভাব দিলেও আপনার ত্বকের জন্য এগুলো খুবই ক্ষতিকর। আপনি প্রায়ই বিভিন্ন বিজ্ঞাপনে দ্রুত রং ফর্সা করার লোভনীয় অফার দেখে থাকবেন। এগুলো কোনটাই দীর্ঘ মেয়াদী নয়। ত্বক বিশেষজ্ঞরা দীর্ঘদিন ধরেই এই সাবধানবাণী দিয়ে আসছেন।
বাংলাদেশে বিশেষ করে কোরিয়ান সৌন্দর্য বর্ধক পণ্যগুলোর অনেক চাহিদা। মনে রাখতে হবে, কোরিয়ান পণ্য মানেই কিন্তু ভালো পণ্য নয়। চলুন, এ ধরনের ত্বক ফর্সাকারী ক্রিম ব্যবহারে কি কি ক্ষতি হতে পারে তা জেনে নেয়া যাক।
ফর্সা হওয়ার ক্রিম ব্যবহারের ক্ষতিকর দিকগুলো
লালচে ফুস্কুড়ি
এর আরেক নাম রোসেসিয়া, যা আপনার মুখে লালচে ফুস্কুড়ি সৃষ্টি করে এবং চামড়ার ভেতরের রক্তনালীকে দৃশ্যমান করে তোলে। আপনার ত্বক যদি হাল্কা হয়ে থাকে আর সেই ত্বকে আপনি নিয়মিত ক্রিম ব্যবহার করেন, তাহলে আপনি এই সমস্যার সম্মুখীন হবেন।
ত্বকের রং হারিয়ে ফেলা
এটি ক্রিম ব্যবহারের সবচেয়ে ক্ষতিকর দিকগুলোর মধ্যে একটি। এর ফলে আপনার শুধু ত্বক-ই নয়, ধীরে ধীরে সমস্ত শরীর ফ্যাকাসে হয়ে যেতে শুরু করবে। চূড়ান্ত অবস্থায় এটি স্কিন ক্যান্সারের দিকে নিয়ে যায়।
চুলকানি
ঘন ঘন ক্রিম ব্যবহার আপনার ত্বকে প্রাকৃতিক ভাবে তৈরি হওয়া তেল শুষে নেয়। ফলে ত্বক হয়ে পড়ে শুষ্ক। আর চুলকানি মাত্রা ছাড়ায় এই শুষ্ক ত্বকেই। আপনার সংবেদনশীল ত্বককে চুলকানির মাধ্যমে স্থায়ী ভাবে নষ্ট করার জন্য একটি ক্রিম-ই যথেষ্ঠ।
ব্রণ
‘আপনার ব্রণের দাগ দূর করবে’ আপনি হয়ত ক্রিমের গায়ে এই কথাটি দেখেই কিনে ফেলছেন। কিন্তু এই ধরনের ক্রিমগুলোতে থাকে বিষাক্ত রাসায়নিক পদার্থ। এগুলো প্রতিদিন ব্যবহারে আপনার ব্রণের কালচে দাগ দূর করবে না। বরং পরবর্তীতে যখন আপনি ব্রণের চিকিৎসার জন্য কোনো ওষুধ ব্যবহার করবেন, তখন সেগুলোর কার্যকারিতা কমিয়ে দিবে।
আরও পড়ুন: সুস্থ থাকতে কলা নয়, খোসা খান
রোদে জ্বালা পোড়া
অতিরিক্ত মাত্রায় ফর্সা হওয়ার ক্রিম ব্যবহারে আপনার ত্বক হয়ে যায় পাতলা। আর পাতলা ত্বক সূর্যের অতি বেগুনী রশ্মি দ্বারা তুলনামুলকভাবে বেশী ক্ষতিগ্রস্ত হয়। অতঃপর এর প্রভাবে খুব কম বয়সেই মুখে বলিরেখা পড়ে যাওয়া থেকে শুরু করে স্কিন ক্যান্সার পর্যন্ত হতে পারে।
ত্বকে প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাওয়া
মুখে ত্বক ফর্সাকারী ক্রিম ব্যবহারের ফলে ত্বকের উপরই যে শুধু আলাদা একটা স্তর পড়ে- তা নয়। বরং তা আপনার ত্বকের রোগ প্রতিরোধী কোষগুলোর স্বাভাবিক ক্ষমতাও নষ্ট করে দেয়। ফলশ্রুতিতে আপনার ত্বক অরক্ষিত হয়ে পড়ে ব্যাকটেরিয়া ও ফাঙ্গালের কাছে।
কিডনী এবং স্নায়ুজনিত জটিলতা
বাজারে আপনি যে ফেয়ারনেস ক্রিমগুলো পাচ্ছেন তার অধিকাংশগুলোতেই অধিক মাত্রায় থাকে পারদ। আর এই পারদ আপনার কিডনী নষ্ট করে দেয়ার পাশাপাশি স্নায়ুজনিত নানাবিধ সমস্যার জন্য দায়ী।
আরও পড়ুন: সুস্থ থাকতে কলা নয়, খোসা খান